আল ফিতন

হযরত কাতাদা রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আমি সাঈদ ইবনে মুসাইয়িব রাযিয়াল্লাহু আনহু কে বললাম মাহদী কি হক বা সত্য? তিনি উত্তরে বললেন হক বা সত্য। তিনি বলেন আমি বললাম সে কাদের থেকে হবে? তিনি উত্তরে বললেন কুরাইশ থেকে। আমি বললাম কুরাইশের কোন শাখা হতে? তিনি উত্তরে বললেন বনী হাশেম হতে। আমি বললাম বনী হাশেমের কোন শাখা হতে? উত্তরে তিনি বলেন বনী আব্দুল মুত্তালিব হতে। আমি বললাম কোন আব্দুল মুত্তালিব হতে? উত্তরে তিনি বললেন ফাতেমা রাযিয়াল্লাহু আনহু এর বংশধর হতে।

হযরত আবু সাঈদ থুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করে বলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন মাহদী আলাইহিস সালাম হল আমার বংশধর হতে এক ব্যক্তি অথবা তিনি বলেণ মাহদী হল আমার পরিবারের থেকে এক ব্যক্তি।

হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মাহদী আলাইহিস সালাম হবে আমার হতে। (আমার বংশধর হতে।)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আমাদের থেকে হবে সঠিক পথের দিশারী ও সঠিক পথ প্রাপ্ত। আর আমাদের থেকেই হবে পথ ভ্রষ্ট ও বিপদগামী।

হযরত ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মাহদী আলাইহিস সালাম আমাদের পরিবারের থেকে এক যুবক হবে। তিনি বলেন আমি বললাম তা থেকে তোমাদের বৃদ্ধরা হতাশ হয়ে যাবে। আর তোমাদের যুবকরা উহার আশা করবে। উত্তরে সে বলল আল্লাহ তা’আলা যা চান তাই করেন।

হযরত আবান ইবনে ওয়ালীদ হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন আমি ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমাকে বলতে শুনেছি আর তখন তিনি হযরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু এর নিকটে ছিলেন। আল্লাহ তা’আলা আমাদের বংশধরের থেকে মাহদী আলাইহিস সালামকে প্রেরণ করবেন।

হযরত ইব্্নে আব্বাছ রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদি আমাদের বংশ থেকে হবে, পরবর্তীতে তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হযরত ঈসা আঃ এর হাতে সমর্পন করবেন।

হযরত আলী ইবনে আবি তালেব রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদিন রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বললাম, ইমামুল হুদা মাহদি আমাদের বংশধর থেকে হবে, নাকি অন্য কোনো বংশ থেকে।
জবাবে তিবি বললেন, হ্যাঁ তিনি আমাদের বংশধর থেকে হবে। আমাদের মাধ্যমে যেমনিভাবে দ্বীনের সমাপ্তি হয়েছে তেমনিভাবে আমাদের মাধ্যমে বিজয় অর্জনও হবে। আমাদের সহায়তায় ফিতনা পথভ্রষ্টতা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে যেমনিভাবে শিরকের পথভ্রষ্টতা থেকে মুক্তি পাওয়া গিয়েছিল। আমাদের মাধ্যমে ফেৎনা শত্রুতার পর দ্বীনের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে আন্তরিকতা সৃষ্টি করে দিয়েছেন যেমনিভাবে আল্লাহ তাআলা তাদের অন্তরে দ্বীনের ব্যাপারে শিরকের দুশমনীর পর আন্তরিকতা সৃষ্টি করে দিয়েছেন।

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবুত্্ তোফায়েল রাযিঃ থেকে বর্র্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেছেন, অন্য বর্ণনায় হযরত আলী রাযিঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃ এরশাদ করেন, আমাদের মাধ্যমে যেমনিভাবে বিজয় অর্জন হয়েছে তেমনিভাবে দ্বীনের সমাপ্তিও হবে। আমাদের মাধ্যমে গুমরাহী কিংবা শিরক থেকে মুক্তি পেয়েছে, আমাদের সহায়তায় গুমরাহী কিংবা শিরকের দুশমনীতে লিপ্ত থাকার পর পূনরায় তাদের অন্তরে আল্লাহ তাআলা ইসলামের প্রতি মহব্বত সৃষ্টি করে দিবেন।

হযরত আলী রাঃ রাসূল সাঃ থেকে বর্ণনা করেন যে, হযরত মাহদী হলেন আমার আহলে বাইত তথা আমার বংশের একজন ব্যক্তি।

হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত নবী করীম সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, হযরত মাহদী হলো আমার পরিবারের একজন ব্যক্তি, সে আমার সুন্নতের উপর ভিত্তি করে জিহাদ করবে, যেমনি ভাবে আমি জিহাদ করেছি ওয়াহির উপর ভিত্তি করে।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ রাসূল সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, মাহদী হলো আমার উম্মতের মধ্য থেকে একজন ব্যক্তি।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ নবী করীম (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, মাহদী হলো আমার পরিবারের একজন ব্যক্তি।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, পশ্চিম দিক থেকে হুসাইনের বংশধর থেকে জনৈক লোক বের হবে। কোনো পাহাড় তার সামনে এগিয়ে আসলে তিনি সেটাকে উড়িয়ে দিয়ে রাস্তা বানিয়ে ফেলবেন।

আফলাত ইবনে ছলেহ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি মুহাম্মদ ইবনে হানাফিয়্যাহকে মাহদী সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেন যে, যদি মাহদী আগমন করেন, তাহলে তিনি আবদে শাম্স-এর বংশের থেকে হবেন।

হযরত আব্দুল্লাহ ইব্্নে ওমর রাযিঃ থেকে বর্ণিত, তিনি একদিন ইবনুল হানাফিয়াকে বললেন, তোমরা যে ভাবে মাহদি বলে থাক সেটা কেমন? জবাবে তিনি বলেন, কোনো মানুষ ভালো হলে এবং তার স্বভাব-চরিত্র উন্নত মানের হলে তাকে ‘মাহদি’ বলা হয়। একথা শুনে হযরত ইবনে ওমর রাযিঃ খুবই নারাজ ও অসন্তুষ্ট হলেন।

আশআল ইবনে আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি আবু ক্বিলাবাকে বলতে শুনেছেন যে, ওমর ইবনে আব্দুল আযীযই রহঃ হলেন সত্যিকারের মাহদী।

হযরত হাসান থেকে বর্ণিত, তাকে মাহদী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো, অতঃপর তিনি বল্লেন, মাহদী সম্পর্কে আমার কোন মতামত নেই, যদি মাহদী হয়ে থাকে তাহলে ওমর ইবনে আব্দুল আযীযই হলেন সেই মাহদী।

হযরত তাউয রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত ওমর ইব্্নে আব্দুল আবীয রহঃ যুগের মাহদি ছিলেন, তিনি ্আসল মাহদী না হলেও মূলতঃ সে যুগে যারা অধিকহারে ভালো কাজ করে এবং খারাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকে তাদেরকে মাহদি বলা হয়।

হযরত আবু কুবাইল রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হোসাইন এর সন্তানদের থেকে জনৈক লোক আত্মপ্রকাশ করবে তার প্রতি কোনো উচ্চ পাহাড় ধেয়ে আসলেও তিনি সেটাকে ধূলিস্যাৎ করে রাস্তা বের করে নিবেন।

আবু জা’ফর থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদী বনী হাশেম গোত্রের হযরত ফাতেমা রাঃ এর বংশের থেকে হবেন।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদী হলেন ঐ ব্যক্তি যার নিকট হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম আঃ অবতরণ করবেন এবং তাঁর পিছনে হযরত ঈসা আঃ নামায আদায় করবেন।

ইবনে যারির আল-গাফেকী থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত আলী রাঃ -কে বলতে শুনেছেন যে, মাহদী হলেন নবী করীম সাঃ -এর পরিবারের একজন।

হযরত কা’ব রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদী হলেন হযরত আব্বাস রাঃ এর বংশের একজন ব্যক্তি।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি রাসূল সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, মাহদী হলো আমার মধ্য থেকে একজন ব্যক্তি।

মুহাম্মদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদী হলো এই উম্মতের মধ্য থেকে একজন ব্যক্তি আর তিনি হলেন ঐ ব্যক্তি যিনি হযরত ঈসা আঃ এর ইমামতি করবেন।

হযরত হাসান থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদী হলেন হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম আঃ।

(্এই হাদীসটি ১০০৮ নং হাদীসের অনুরুপ)।

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদী হলেন যিনি হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর বংশের থেকে হবেন।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ নবী সাঃ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, মাহদী হলো আমার আহলে বাইত তথা আমার পরিবারের একজন ব্যক্তি।

হযরত কা’ব রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদী হলেন যিনি হযরত ফাতেমা রাঃ এর বংশের থেকে হবেন।

হযরত আলী ইবনে আবু তালেব রাঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, নবী করীম সাঃ হাসানের নাম রেখেছেন সায়্যেদ। আর অচিরেই তাঁর বংশের থেকে একজন ব্যক্তি জন্মলাভ করবে, যার নাম হবে তোমাদের নবীর নামে। তিনি গোটা পৃথিবীতে ন্যায় বিচারে ভরপুর করে দিবেন যেমন পৃথিবী জুলুমে ভরে গেছে।

হযরত জুহরী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদী হবেন হযরত ফাতেমা রাঃ বংশের থেকে।

হযরতে কা’বে আহবাব রহঃ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদি কুরাইশ বংশ থেকে হবে এবং খেলাফতও তাদের মধ্যে বাকি থাকবে। তবে কতক ইয়ামানীও খলীফা হবেন, যাদের সাথে কুরাইশের বৈবাহিক বা আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।

হযরত সালেম রহঃ বলেন, একদা নাজদায়ে হারুরী বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ রাযিঃ এর কাছে মাহদী সম্বন্ধে জানতে চেয়ে লিখে পাঠায়। তিনি জবাব দেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা, আহলে বাইতের প্রথম মানুষের মাধ্যমে এ উম্মতকে হেদায়েত দান করেছেন এবং উক্ত আহলে বাইতের সর্বশেষ খলীফা দ্বারাও এ উম্মতকে মুক্তি দান করবেন। তার মধ্যে শিং বিশিষ্ট দ্ইুটি বস্তু এক সাথে আঘাত করবেনা। তিনি আরো বলেন, বনু আব্্দে শাম্্স থেকে দুইজন মাহদির আত্ম প্রকাশ হবে, তাদের একজন হচ্ছে, ওমর আল আসাজ্জ।
মাহদির মৃত্যুর পরের ঘটনা

হযরত যার ইবনে হুবাইশ থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত আলী রাঃ কে বলতে শুনেছেন যে মাহদী হলেন যিনি আমাদের মধ্য হতে হযরত ফাতেমা রাঃ এর বংশের থেকে হবেন।

হযরত আলী ইবনে আবু তালেব রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, মাহদী হবে আমাদের আহলে বাইতের মধ্য হতে।

মানসূর হযরত হাসান থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, মাহদী হলেন হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম আঃ।

হযরত আরত্বাত থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, মাহদী চল্লিশ বছর জিবিত থাকবে।