আল বিদায়া ওয়া আন্নিহায়া

كتاب سيرة رسول الله صلى الله عليه وسلم

قصة الإراشي

পৃষ্ঠা - ১৮২৫


সিজদাতেই থেকে গেলেন ৷ অবশেষে হযরত ফাতিমা (রা) এসে সেটি তার পিট থেকে সরিয়ে
ফেললেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এ বলে তাদের বিরুদ্ধে বদ-দৃআ করলেন : হে আল্লাহ!
কুরায়শের নেতৃস্থানীয় এই লোকগুলোকে আপনি শাস্তি দিন হে আল্লাহ্৷ উতবা ইবন রাবীআকে
শান্তি দিন, হে আল্লাহ শায়বা ইবন রাবীআকে শাস্তি দিন! হে আল্লাহ! আবু জাহ্ল ইবন
হিশামকে শাস্তি দিন ৷ হে আল্লাহ উকবা ইবন আবী মুআইতকে শাস্তি দিন : হে আল্লাহ উবাই
ইবন খাল্ফকে শাস্তি দিন ! বংনািকারী শুবা বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) উবাই ইবন খালফের
জন্যে বদ-দৃআ করেছেন, নাকি উমাইয়া ইবন খালফের কথা বলেছেন ৷ এ ব্যাপার রাবীর
সন্দেহ আছে ৷ আবদুল্লাহ্ বলেন, আমি বদরের যুদ্ধে দেখেছি যে, ওরা সবাই সে দিন নিহত
হয়েছে ৷ এরপর উবাই ইবন খাল্ফ মতাম্ভরে উমাইয়া ইবন খালফ ব্যতীত অন্য সবাইকে টেনে
নিয়ে কুয়োর মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছিল ৷ উবাই ইবন খাল্ফ মােটাসােটা লোক ছিল ৷ তাই
তাকে কেটে কেটে খণ্ড খণ্ড করা হয় ৷ ইমাম বুখারী তার সহীহ্ গ্রন্থের একাধিক স্থানে এবং
ইমাম মুসলিম (র) তার কিভাবে একাধিক স্থানে ইবন ইসহাক থেকে উক্ত হাদীছ বর্ণনা
করেছেন ৷ বর্ণনায় উমাইয়া ইবন খড়াল্ফ হওয়াটাই বিশুদ্ধ ৷ কারণ, বদর দিবসে সে-ই নিহত
হয়েছিল ৷ তার ভাই উবাই ইবন খাল্ফ নিহত হয়েছে উহুদ দিবসে ৷ এ বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ
অবিলম্বে আসবে ৷ সহীহ্ গ্রন্থে বর্ণিত কোন কোন হাদীছের বিষয়বস্তু এই যে, তারা যখন এ
অপকর্ম করল, তখন তারা হাসতে হাসতে একে অন্যের গায়ে চলে পড়ছিল ৷

উক্ত বর্ণনায় আরও এসেছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর উপর থেকে নাড়িভুড়ি ফেলে দিয়ে
হযরত ফাতিমা (রা ) ওদের নিকট গেলেন এবং তিনি তাদেরকে গালমন্দ করলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্
(সা) নামায শেষ করে দৃ’হাত তুলে তাদের বিরুদ্ধে বদ-দৃআ করলেন ৷ তা’ দেখে তাদের হাসি
থেমে যায় এবং তার বদ-দৃআর প্রেক্ষিতে তারা শংকিত হয়ে পড়ে ৷ তিনি সামগ্রিক ভাবে দলের
সবার জন্যে এবং নির্দিষ্টভাবে সাত জনের নাম উল্লেখ করে বদ-দৃ’আ করেছিলেন ৷ অধিকাৎশ
বর্ণনায়, ওই সাত জনের মধ্যে ছয় জনের নাম পাওয়া যায় ৷ তারা হল, উতবা ইবন রাবীআ,
শায়বা ইবন রাবীআ, ওশীদ ইবন উতবা, আবু জাহ্ল ইবন হিশাম, উকবা ইবন আবী মুআয়ত
এবং উমাইয়া ইবন খাল্ফ ৷ ইবন ইসহাক বলেন, সপ্তম ব্যজ্যি নাম আমি ভুলে গিয়েছি ৷ আমি
বলি, ওই সপ্তম ব্যক্তি হল আম্মারা ইবন ওয়ালীদ, সহীহ্ বুখারীতে তার নাম উল্লিখিত হয়েছে ৷

ইরড়াশী১ এর বর্ণনা

ইউনুস ইবন বুকায়ৱ বলেন, মুহাম্মদ ইবন ইসহাক আবদুল মালিক ইবন আবু
সুফিয়ান ছাকাফী থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, বাবেল তথা ব্যাবিলনের ইরাশ অঞ্চলের
একজন লোক কতক উট নিয়ে মক্কায় এসেকাি ৷ আবু জাহ্ল ইবন হিশাম তার নিকট থেকে
উটগুলো ক্রয় করে ৷ কিন্তু মুল্য পরিশোধে সে অযথা বিলম্ব করতে থাকে ৷ ইরাশী লোকটি
কুরায়শের গণ্যমান্য লোকদের সভায় আসে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন মসজিদের একপাশে বসা
ছিলেন ৷ সে বলল, হে কুরায়শ গোত্র! আমার পক্ষে আপনাদের মধ্য থেকে কে আবু জাহ্ল
ইবন হিশামের উপর শক্তি প্রয়োগ করতে পারবেন ? সে আমার পাওনা পরিশোধ করছে না ৷



১ ইরাশী শব্দটি ইরাশ নামক স্থানের সাথে সম্পর্কযুক্ত ৷


[قِصَّةُ الْإِرَاشِيِّ] قَالَ يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي سُفْيَانَ الثَّقَفِيُّ قَالَ: «قَدِمَ رَجُلٌ مِنْ إِرَاشٍ بِإِبِلٍ لَهُ مَكَّةَ، فَابْتَاعَهَا مِنْهُ أَبُو جَهْلِ بْنُ هِشَامٍ فَمَطَلَهُ بِأَثْمَانِهَا، فَأَقْبَلَ الْإِرَاشِيُّ حَتَّى وَقَفَ عَلَى نَادِي قُرَيْشٍ وَرَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - جَالِسٌ فِي نَاحِيَةِ الْمَسْجِدِ، فَقَالَ: يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ، مَنْ رَجُلٌ يُعْدِينِي عَلَى أَبِي الْحَكَمِ بْنِ هِشَامٍ ; فَإِنِّي غَرِيبٌ وَابْنُ سَبِيلٍ، وَقَدْ غَلَبَنِي عَلَى حَقِّي؟ فَقَالَ أَهْلُ الْمَجْلِسِ: تَرَى ذَلِكَ الرَّجُلَ؟ وَهُمْ يَهْزَؤُونَ بِهِ، إِلَى رَسُولِ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - ; لِمَا يَعْلَمُونَ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ أَبِي جَهْلٍ مِنَ الْعَدَاوَةِ: اذْهَبْ إِلَيْهِ، فَهُوَ يُؤَدِّيكَ عَلَيْهِ، فَأَقْبَلَ الْإِرَاشِيُّ حَتَّى وَقَفَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ، فَقَامَ مَعَهُ، فَلَمَّا رَأَوْهُ قَامَ مَعَهُ، قَالُوا لِرَجُلٍ مِمَّنْ مَعَهُمْ: اتْبَعْهُ فَانْظُرْ مَاذَا يَصْنَعُ؟ فَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - حَتَّى جَاءَهُ، فَضَرَبَ عَلَيْهِ بَابَهُ، فَقَالَ: مَنْ هَذَا؟ قَالَ: " مُحَمَّدٌ، فَاخْرُجْ ". فَخَرَجَ إِلَيْهِ، وَمَا فِي وَجْهِهِ قَطْرَةُ دَمٍ، وَقَدِ انْتُقِعَ لَوْنُهُ، فَقَالَ: " أَعْطِ هَذَا الرَّجُلَ حَقَّهُ ". فَقَالَ: لَا تَبْرَحْ حَتَّى أُعْطِيَهُ الَّذِي لَهُ. قَالَ: فَدَخَلَ، فَخَرَجَ إِلَيْهِ بِحَقِّهِ فَدَفَعَهُ إِلَيْهِ، ثُمَّ انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَقَالَ
পৃষ্ঠা - ১৮২৬


আমি একজন ভিনদেশী মুসাফির ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দিকে ইঙ্গিত করে তারা বলল, ওই যে
লোকটি ৫দখছ, তুমি তার নিকট যাও ৷ তিনিই পারবেন তোমার পাওনা উসুল করে দিতে ৷
রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) ও আবু জাহ্লের মধ্যে বিরাজমান বিরোধপুর্ণ সম্পর্কের কারণে তারা এমনটি
বলেছিল ৷ ইরাশী এসে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পাশে দীড়ায় ৷ সে তাকে সকল বৃত্তান্ত অবহিত
করে ৷ তিনি তার সাথে রওনা হন ৷ লোকজন যখন (দখল, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ইরাশী লোকটির
সাথে যাচ্ছেন, তখন তারা একজন লোককে বলল, তৃমিও তার পেছনে পেছনে যাও এবং তিনি
কি করেন তা লক্ষ্য কর ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) আবু জাহ্লের বাড়ীতে উপস্থিত হন এবং দরজায়
আঘাত করেন ৷ আবু জাহ্ল বলে “কে ? “আমি মুহাম্মাদ তুমি বেরিয়ে এসো ৷ রাসুলুল্লাহ্
(সা) বললেন, যে বেরিয়ে, আসে ৷ তখন তার মুখমণ্ডল ছিল রক্তহীন ফ্যাকাশে ৷ ভয়ে তার
চােহারা বিবর্ণ হয়ে গিয়েছিল ৷ রাসুলুল্পাহ্ (সা) বললেন, এ লোকটির পাওনা চুকিয়ে দাও ৷ সে
বলল, ঠিক আছে, দীড়াও, এখনি আমি ওর পাওনা চুকিয়ে দিচ্ছি ৰু সে ঘরে যায় এবং ফিরে
এসে ইরাশী লোকটির পাওনা দিয়ে বুঝিয়ে দেয় ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) ফিরে আসেন এবং
লোকটিকে বলেন, এবার তুমি তোমার পথে চলে যেতে পার ৷ ইরাশী পুনরায় কুরায়শীদের
মজলিসে এসে উপস্থিত হয় ৷ সে বলে, ওই লোকটিকে আল্লাহ্ তাআলা উত্তম প্ৰতিদান দিন !
আমার পাওনা আমি বুঝে নিয়েছি ৷ ওরা যে লোকটিকে পাঠিয়েছিল সে ওদের নিকট ফিরে
আসে ৷ তারা তাকে জিজ্ঞেস করে, তুমি কী দেখলে ? সে বলে, যা ঘটেছে তা তো এক অতীব
আশ্চর্য ঘটনা ৷ আল্লাহ্র কলম, মুহাম্মাদ (সা) গিয়ে তার দরজায় আঘাত করেন ৷ তাতে আবু
জাহ্ল দরজা খুলে বেরিয়ে আসে ৷ যেন তার দেহে তখন প্রাণ ছিল না ৷ মুহাম্মদ বললেন, এই
লোকের পাওনা চুকিয়ে দাও ! আবু জাহ্ল বললেন, ইদ্র৷ তাই হবে, তুমি দড়াড়াও , আমি তার
পাওনা নিয়ে আসছি ৷ এরপর সে ঘরে প্রবেশ করে এবং তার পাওনা এসে তাকে দিয়ে দেয় ৷
তাদের কথাবার্তা শেষ হওয়ার পর অবিলম্বে আবু জাহ্ল সেখানে হাযির হয় ৷ তারা বলে, হায়
হায়, তোমার কী হয়েছিল ? যে কাজ তুমি করেছ, আল্লাহ্র কসম আমরা তো ইতোপুর্বে কখনো
তা হতে দেথিনি ৷ সে বলল, হয়ে ! আল্লাহ্র কলম, প্রকৃত ঘটনা এই যে, মুহাম্মাদ আমার
দরজায় আঘাত করে এবং আমি তার কণ্ঠস্বর শুনতে পাই ৷ তাতে আমি ভীতশ্সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি ৷
এরপর আমি তার নিকট বেরিয়ে আসি ৷ তখন আমি তার মাথার উপর দিয়ে একটি বিশালাকার
উট দেখতে পইি ৷ ওই উটের মাথা, ঘাড় ও দীতের ন্যায় ভয়ংকর ও বিরাট মাথা ঘাড় ও দীত
আমি কখনো দেখিনি ৷ আল্লাহর কলম, যদি আমি ওই পাওনা দিতে অস্বীকার করতাম, তাহলে
ওই উট নিশ্চয়ই স্লামাকে খেয়ে ফেলত ৷
পরিহেদ
ইমাম বুখারী (র) বলেন, আইয়াশ ইবন ওয়ালীদট্রু উরওয়া ইবন যুৰায়র থেকে বর্ণনা
করেন ৷ তিনি বলেন, আমি ইবন আসকে বলেছিলাম, মুশরিকগণ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর প্রতি
কঠোরতম যে আচরণ করেছে, তা আমাকে একটু বলুন ৷ তিনি বললেন, একদিন কা’বাগৃহের
হাতীম অংশে রড়াসুলুল্লাহ (সা) নামায আদায় করছিলেন ৷ তখন উকবা ইবন আবু মুআয়ত


لِلْإِرَاشِيِّ: " الْحَقْ بِشَأْنِكَ ". فَأَقْبَلَ الْإِرَاشِيُّ حَتَّى وَقَفَ عَلَى ذَلِكَ الْمَجْلِسِ، فَقَالَ: جَزَاهُ اللَّهُ خَيْرًا ; فَقَدْ أَخَذْتُ الَّذِي لِي. وَجَاءَ الرَّجُلُ الَّذِي بَعَثُوا مَعَهُ، فَقَالُوا: وَيْحَكَ، مَاذَا رَأَيْتَ؟ قَالَ: عَجَبًا مِنَ الْعَجَبِ، وَاللَّهِ مَا هُوَ إِلَّا أَنْ ضَرَبَ عَلَيْهِ بَابَهُ، فَخَرَجَ وَمَا مَعَهُ رُوحُهُ، فَقَالَ: " أَعْطِ هَذَا الرَّجُلَ حَقَّهُ ". فَقَالَ: نَعَمْ، لَا تَبْرَحْ حَتَّى أُخْرِجَ إِلَيْهِ حَقَّهُ، فَدَخَلَ فَأَخْرَجَ إِلَيْهِ حَقَّهُ فَأَعْطَاهُ. ثُمَّ لَمْ يَلْبَثْ أَنْ جَاءَ أَبُو جَهْلٍ فَقَالُوا لَهُ: وَيْلَكَ مَا لَكَ؟ ! فَوَاللَّهِ مَا رَأَيْنَا مِثْلَ مَا صَنَعْتَ؟ فَقَالَ: وَيْحَكُمُ، وَاللَّهِ مَا هُوَ إِلَّا أَنْ ضَرَبَ عَلَيَّ بَابِي، وَسَمِعْتُ صَوْتَهُ، فَمُلِئْتُ رُعْبًا، ثُمَّ خَرَجْتُ إِلَيْهِ، وَإِنَّ فَوْقَ رَأْسِهِ لَفَحْلًا مِنَ الْإِبِلِ، مَا رَأَيْتُ مِثْلَ هَامَتِهِ، وَلَا قَصَرَتِهِ، وَلَا أَنْيَابِهِ لِفَحْلٍ قَطُّ، فَوَاللَّهِ لَوْ أَبَيْتُ لَأَكَلَنِي.»