আল বিদায়া ওয়া আন্নিহায়া

পৃষ্ঠা - ৮৭৮৪
[ হিজরি ২৫৩ সাল ]
[ এ বছরের ঘটনাবলী ]
এর পর ২৫৩ হিজরী শুরু হল।
এ বছর রজব মাসের ঘটনা। খলিফা মু’তায্য মূসা ইবনে বুগা আল-কাবীরের নেতৃত্বে প্রায় চার হাজার সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী আব্দুল আজিজ ইবনে আবূ দুলাফের সাথে যুদ্ধ করার জন্য হামাযানের এক অঞ্চলে পাঠাল। কারণ সে খলিফার সাথে বিদ্রহ করে আনুগত্য করতে অস্বিকার করেছিল। সে প্রায় বিশ হাজার লোকের বাহিনী নিয়ে মুকাবেলার জন্য প্রস্তুত হল। অবশেষে এই মাসের শেষে মূসা ইবনে বুগা আব্দুল আজিজ কে শোচনীয় ভাবে পরাজিত করল। তারপর রমাযান মাসে কারাজ নামক এলাকায় উভয় গ্রুফের মধ্যে আবার লড়াই হয়। আব্দুল আজিজ আবারও পরজিত হয়। তার দলের অনেক লোক মারা যায়। অনেক অল্প বয়সী বাচ্চাদের বদ্ধি করা হয়। এমনকি আব্দুল আজিজের মাও বন্ধি হয়। নিহতদের মাথা ও অনেক নেতাদের কে সত্তরটা উটে উঠায়ে খলিফার কাছে পাঠানো হয়। আর যে সমস্ত এলাকা আব্দুল আজিজে অধিনে ছিল তা দখল করে নেয়া হয়।

এ বছর রমযানে মু’তয্য বুগা শারানী কে শাহী পোশাক ও তাজ পরিয়ে দেন। এবং দুটি দামী কোমর বন্ধনী দেন।

এ বছর ঈদুল ফিতরের দিন বাওয়াঝিজ নামক স্থানে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটল। তাহল মুসাবির ইবনে আব্দুল হামীদ কে ঐ এলাকার হাকেম নিযুক্ত করা হয়। প্রায় সাত শত খারেজী তার সাথে লড়াই করার জন্য তৈরি হল।
[سَنَةُ ثَلَاثٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ] [الْأَحْدَاثُ الَّتِي وَقَعَتْ فِيهَا] ثُمَّ دَخَلَتْ سَنَةُ ثَلَاثٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ فِي رَجَبٍ مِنْهَا عَقَدَ الْمُعْتَزُّ لِمُوسَى بْنِ بُغَا الْكَبِيرِ عَلَى جَيْشٍ قَرِيبٍ مِنْ أَرْبَعَةِ آلَافٍ ; لِيَذْهَبُوا إِلَى قِتَالِ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي دُلَفٍ بِنَاحِيَةِ هَمَذَانَ ; وَذَلِكَ لِأَنَّهُ خَرَجَ عَنِ الطَّاعَةِ، وَهُوَ فِي نَحْوٍ مِنْ عِشْرِينَ أَلْفًا، فَهَزَمُوا عَبْدَ الْعَزِيزِ فِي أَوَاخِرِ هَذَا الشَّهْرِ هَزِيمَةً فَظِيعَةً. ثُمَّ كَانَتْ بَيْنَهُمَا وَقْعَةٌ أُخْرَى فِي رَمَضَانَ عِنْدَ الْكَرَجِ فَهُزِمَ عَبْدُ الْعَزِيزِ أَيْضًا، وَقُتِلَ مِنْ أَصْحَابِهِ بَشَرٌ كَثِيرٌ، وَأَسَرُوا ذَرَارِيَّ كَثِيرَةً حَتَّى أَسَرُوا أَمَّ عَبْدِ الْعَزِيزِ، وَبَعَثُوا إِلَى الْخَلِيفَةِ سَبْعِينَ حِمْلًا مِنَ الرُّءُوسِ وَأَعْلَامًا كَثِيرَةً، وَأُخِذَ مِنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ مَا كَانَ اسْتَحْوَذَ عَلَيْهِ مِنْ بِلَادِ الْخَلِيفَةِ. وَفِي رَمَضَانَ مِنْهَا خَلَعَ الْمُعْتَزُّ عَلَى بُغَا الشَّرَابِيِّ وَأَلْبَسَهُ التَّاجَ وَالْوِشَاحَيْنِ. وَفِي يَوْمِ عِيدِ الْفِطْرِ كَانَتْ وَقْعَةٌ هَائِلَةٌ عِنْدَ الْبَوَازِيجِ ; وَذَلِكَ أَنَّ رَجُلًا يُقَالُ لَهُ: مُسَاوِرُ بْنُ عَبْدِ الْحَمِيدِ حَكَمَ فِيهَا وَالْتَفَّ عَلَيْهِ نَحْوٌ مَنْ سَبْعِمِائَةٍ مِنَ
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৫
মুসাবিরের সাহায্যের জন্য বুনদার নামের একজন লোক এগিয়ে আসল। সে তিন শত লোক নিয়ে আসছিল। এই দিনে তারা পরস্পর মুখমুখি হল। কঠিন যুদ্ধ হল। খারেজীদের পাঁচশর মত লোক নিহত হল। এবং বুনদারের সঙ্গিদের মধ্যে দুশত লোক নিহত হল। আর কেউ বলেন পঞ্চাশ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বুনদারও ছিল। আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর রহম করুন।

এর পরে মুসাবির হুলওয়ান নমক এলাকায় যান। ঐ এলাকার অধিবাসীদের সাথে যুদ্ধ করেন। খুরাসান এলাকার হাজীগণ ঐ সময় তাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। মুসাবির তাদের প্রায় চারশত লোককে হত্যা করেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে অমঙ্গল করুক। মুসাবিরের দলেরও অনেক লোক মারা যায়।

এ বছরের শাওয়াল মাসের ২৭ তারিখ ওসিফ তুর্কী কেও হত্যা করা হয়। জনসাধারণ তার বাড়ি ও তার সন্তানদের বাড়ি লুট করতে চাইল। কিন্তু সফলকাম হতে পারেনি। ঐ সময় তার উপর যে সমস্ত দায়িত্ব ছিল তা বুগা আশ-শারাবীর উপর অর্পণ করা হল।

এ বছরেই জিলকদ মাসের ১৪ তারিখ চন্দ্র গ্রহন হয়েছিল। চাদের অধিকাংশ বিলিন হয়ে গেছিল। চরিদিকে অন্ধকার হয়ে গেছিল। চন্দ্র গ্রহনের শেষের দিকে ইরাকের প্রতিনিধি মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের মারা যান। মৃত্যুর কারণ হল তার মাথা ও গলায় ক্ষত ছিল। আর সে ক্ষতের কারণেই তার মৃত্যু হয়। যখন তার জানাযা পড়ার জন্য উপস্থিত করা হল তখন তার ভাই ওবাইদুল্লাহ ও তার ছেলে তাহের মধ্যে মত বিরোধ হল। তাদের দুজনের মধ্যে কে জানাযা পড়াবেন? এ মতবিরেধ এক পর্যায়ে ঝগড়ায় রূপ নিল এবং তারা তরবারি বের করল। মানুষের উপর পাথরের বর্ষন হতে লাগল (অথাৎ মানুষ এলো মেলো পাথর ছুড়তে লাগল)। মানুষ হে তাহের হে মানসুর বলে বলে চিৎকার করতে লাগল। এ অবস্থা দেখিয়া তার ভাই পূর্ব দিকে নিজের বাড়িতে চলে গেলেন। তার সাথে বড় বড় নেতা ও দায়িত্বশীলগণও ছিলেন। অবশেষে তার ছেলে তাহের তার বাপের জানাযা পড়ান। তার বাপ তাকে জানাযা পড়ানোর অসিয়ত করেছিল।

যখন খলীফা মু’তায্য এ খবর শুনল তখন ওবাইদুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহেরের কাছে শাহী পেশাক ও রাষ্টের কিছু দায়িত্ব দিয়ে লোক পাঠাল। যে এই সুখবর নিয়ে আসল তাকে ওবাইদুল্লাহ পঞ্চাশ হাজার দেরহাম পুরষ্কার দিল।

এ বছর খলিফা মু’তায্য তার ভাই আবূ আহমাদ কে র্সুরা মান রআ (সামাররা) এলাকা থেকে ওসেত নামক এলাকায় তারপর ওখান থেকে বসরায় নির্বাসিত করলেন।
الْخَوَارِجِ، فَقَصَدَ لَهُ رَجُلٌ يُقَالُ لَهُ: بُنْدَارٌ الطَّبَرِيُّ. فِي نَحْوِ ثَلَاثِمِائَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ، فَالْتَقَوْا فِي هَذَا الْيَوْمِ فَاقْتَتَلُوا قِتَالًا شَدِيدًا، فَقُتِلَ مِنَ الْخَوَارِجِ نَحْوٌ مِنْ خَمْسِينَ، وَقُتِلَ مِنْ أَصْحَابِ بُنْدَارٍ مِائَتَانِ، وَقِيلَ: وَخَمْسُونَ رَجُلًا. وَقُتِلَ بُنْدَارٌ فِي مَنْ قُتِلَ، رَحِمَهُ اللَّهُ. ثُمَّ صَمَدَ مُسَاوِرٌ إِلَى حُلْوَانَ فَقَاتَلَهُ أَهْلُهَا، وَأَعَانَهُمْ حُجَّاجُ أَهْلِ خُرْسَانَ، فَقَتَلَ مُسَاوِرٌ مِنْهُمْ نَحْوًا مِنْ أَرْبَعِمِائَةِ إِنْسَانٍ، قَبَّحَهُ اللَّهُ. وَقُتِلَ مِنْ أَصْحَابِهِ جَمَاعَةٌ كَثِيرُونَ أَيْضًا. وَلِثَلَاثٍ بَقِينَ مِنْ شَوَّالٍ قُتِلَ وَصِيفٌ التُّرْكِيُّ وَأَرَادَتِ الْعَامَّةُ أَنْ تَنْهَبَ دَارَهُ بِسَامَرَّا وَدُورَ أَوْلَادِهِ، فَلَمْ يُمْكِنْهُمْ ذَلِكَ، وَجَعَلَ الْخَلِيفَةُ الْمُعْتَزُّ مَا كَانَ إِلَيْهِ إِلَى بُغَا الشَّرَابِيِّ. وَفِي لَيْلَةِ أَرْبَعَ عَشْرَةَ مِنْ ذِي الْقَعْدَةِ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ خَسَفَ الْقَمَرُ حَتَّى غَابَ أَكْثَرُهُ وَغَرِقَ نُورُهُ، وَعِنْدَ انْتِهَاءِ خُسُوفِهِ مَاتَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ نَائِبُ الْعِرَاقِ بِبَغْدَادَ. وَكَانَتْ عِلَّتُهُ قُرُوحًا فِي رَأْسِهِ وَحَلْقِهِ فَذَبَحَتْهُ، وَلَمَّا أُتِيَ بِهِ لِيُصَلَّى عَلَيْهِ اخْتَلَفَ أَخُوهُ عُبَيْدُ اللَّهِ وَابْنُهُ طَاهِرٌ، أَيُّهُمَا يُصَلِّي عَلَيْهِ، وَتَنَازَعَا حَتَّى جُذِبَتِ السُّيُوفُ وَتَرَامَى النَّاسُ بِالْحِجَارَةِ، وَصَاحَتِ الْغَوْغَاءُ: يَا طَاهِرُ، يَا مَنْصُورُ. فَمَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ إِلَى الشَّرْقِيَّةِ وَمَعَهُ الْقُوَّادُ وَأَكَابِرُ النَّاسِ، فَدَخَلَ دَارَهُ وَكَانَ أَخُوهُ قَدْ أَوْصَى إِلَيْهِ. وَحِينَ بَلَغَ الْمُعْتَزَّ مَا وَقَعَ بَعَثَ بِالْخِلَعِ وَالْوِلَايَةِ إِلَى عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ، فَأَطْلَقَ عُبَيْدُ اللَّهِ لِلَّذِي قَدِمَ بِالْخِلَعِ خَمْسِينَ أَلْفَ دِرْهَمٍ. وَفِيهَا نَفَى الْخَلِيفَةُ الْمُعْتَزُّ أَخَاهُ أَبَا أَحْمَدَ مِنْ سُرَّ مَنْ رَأَى إِلَى وَاسِطَ ثُمَّ إِلَى
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৬
অতঃপর তাকে বাগদাদে পাঠিয়ে দেন। তখন তিনি বাগদাদের পূর্বাঞ্চলে দিনার ইবনে আব্দুল্লাহ বাড়িতে অবস্থান করতে থাকেন।

এ সময় আলী ইবনে মু’তাসিম কেও নির্বাসিত করে প্রথমে ওসেত নামক এলাকায় পাঠানো হয়। তারপরে তাকেও বাগদাদে পাঠানো হয়।

জিলকদাহ মাসের শেষে সেমবারের দিন মূসা ইবনে বুগা আল-কাবীর এবং হুসাইন ইবনে আহমাদ আল-কাওকাবী আত-তালী এ দুজনের মাঝে কঠিন যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে হুসাইন পরাজিত হয়। (এই হুসাইনের আত্মপ্রকাশ হয়েছিল হিজরী ২৫১ সালে কাযবিন নামক এলাকায়।) তিনি যুদ্ধে পরাজয় বরণ করলে মূসা ইবনে বুগা কাযবিন এলাকা দখল করে নেন। হুসাইন কাওকাবী পালিয়ে দায়লাম নামক এলাকায় চলে যান।

ইবনে জারির যারা এ ঘটনায় উপস্থিত ছিল তাদের থেকে বর্ণনা করেন যে, যুদ্ধের সময় হুসাইন কাওকাবী তার সাথিদের কে বললেন চামড়ার তৈরি ঢাল ব্যবহার করতে। তির যা ভেদ করতে পারে না। অপর দিকে মূসা ইবনে বুগা তার সাথিদের বললেন, তাদের কাছে যে পেট্রল আছে তা জমিনে ঢেলে দিতে। আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাকতে। যুদ্ধের মাঝে এমন ভাব প্রকাশ করবে যাতে প্রতিপক্ষ মনে করে তারা পরাজিত হয়েছে। আর এমনই করা হল। তখন হুসাইন আল-কাওকাবীর বাহিনী তাদের পিছনে ধাওয়া করল। অতঃপর যখন তারা পেট্রল ঢালা জমিনে পৌছল তখন মূসা ইবনে বুগা ঐ পেট্রলে আগুন জ্বালিয়ে দিতে বললেন। ফলে হুসাইন কাওকাবীর অনেক সঙ্গিরা আগুনে পুড়তে লাগল। আর বাকিরা দ্রুত পালায়ন করতে লাগল। তখন মূসা ইবনে বুগা ও তার বাহিনী তাদের উপর পুনরায় হামলা করেন। তাদের অনেককে হত্যা করেন। আর হুসাইন কাওকাবী পালিয়ে দায়লামে যান। মূসা ইবনে বুগা কাযবিন দখল করে নেন।

এ বছর আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে সুলাইমান মানুষদের হজ্জ করান।

[ এ বছরে যারা মৃত্যু বরণ করে ]
বিশেষ ব্যক্তিবর্গ যারা এ বছরে মৃত্যু বরণ করেন :
আবুল আশআস
আহমাদ ইবনে সাঈদ আদ-দারেমী
الْبَصْرَةِ ثُمَّ رُدَّ إِلَى بَغْدَادَ فَأُنْزِلَ فِي الشَّرْقِيَّةِ فِي قَصْرِ دِينَارِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ. وَفِيهَا نَفُيِ عَلِيُّ ابْنُ الْمُعْتَصِمِ إِلَى وَاسِطَ ثُمَّ رُدَّ إِلَى بَغْدَادَ أَيْضًا. وَفِي يَوْمِ الْإِثْنَيْنِ سَلْخَ ذِي الْقَعْدَةِ الْتَقَى مُوسَى بْنُ بُغَا الْكَبِيرِ هُوَ وَالْحُسَيْنُ بْنُ أَحْمَدَ الْكَوْكَبِيُّ الطَّالِبِيُّ الَّذِي خَرَجَ فِي سَنَةِ إِحْدَى وَخَمْسِينَ عِنْدَ قَزْوِينَ فَاقْتَتَلَا قِتَالًا شَدِيدًا، ثُمَّ هُزِمَ الْكَوْكَبِيُّ وَأَخَذَ مُوسَى بْنُ بُغَا قَزْوِينَ وَهَرَبَ الْكَوْكَبِيُّ إِلَى الدَّيْلَمِ. وَذَكَرَ ابْنُ جَرِيرٍ عَنْ بَعْضِ مَنْ حَضَرَ هَذِهِ الْوَقْعَةَ أَنَّ الْكَوْكَبِيَّ حِينَ الْتَقَى أَمَرَ أَصْحَابَهُ أَنْ يَتَتَرَّسُوا بِالْحَجَفِ، وَكَانَتِ السِّهَامُ لَا تَعْمَلُ فِيهِمْ، فَأَمَرَ مُوسَى بْنُ بُغَا أَصْحَابَهُ عِنْدَ ذَلِكَ أَنْ يَطْرَحُوا مَا مَعَهُمْ مِنَ النِّفْطِ بِالْأَرْضِ، ثُمَّ جَاوَلُوهُمْ وَأَرَوْهُمْ أَنَّهُمْ قَدِ انْهَزَمُوا مِنْهُمْ، فَتَبِعَهُمْ أَصْحَابُ الْكَوْكَبِيِّ، فَلَمَّا تَوَسَّطُوا الْأَرْضَ الَّتِي فِيهَا النِّفْطُ أَمَرَ عِنْدَ ذَلِكَ بِإِلْقَاءِ النَّارِ فِيهِ، فَجَعَلَتِ النَّارُ تَحْرِقُ أَصْحَابَ الْكَوْكَبِيِّ، فَفَرُّوا سِرَاعًا هَارِبِينَ، وَكَرَّ عَلَيْهِمْ مُوسَى وَأَصْحَابُهُ فَقَتَلُوا مِنْهُمْ مَقْتَلَةً عَظِيمَةً، وَهَرَبَ الْكَوْكَبِيُّ إِلَى الدَّيْلَمِ، وَتَسَلَّمَ مُوسَى بْنُ بُغَا قَزْوِينَ. وَفِيهَا حَجَّ بِالنَّاسِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ سُلَيْمَانَ الزَّيْنَبِيُّ. [مَنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ] وَمِمَّنْ تُوُفِّيَ مِنَ الْأَعْيَانِ: أَبُو الْأَشْعَثِ. وَأَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ.
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৭
হযরত সারিয়্যী আস-সাকতী রহ. এর আলোচনা।

তিনি হলেন সারিয়্যী ইবনে মুগাল্লিস আবুল হাসান আস-সাকতী বাগদাদী। যিনি একজন বড় সুফী বুযুর্গ ছিলেন। হযরত মা’রুফ কারখী রহ. এর ছাত্র ছিলেন। তিনি হুশাইম, আবূ বকর ইবনে আইয়াশ, আলী ইবনে গুরাব, ইয়াহইয়া ইবনে ইয়ামান, ইয়াযিদ ইবনে হারুন আরে অনেক মুহাদ্দীস থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তার অনেক ছাত্র ছিল। তারা ভাগিনা জুনাইদ ইবনে মুহাম্মাদ, আবুল হাসান আন-নুরী, মুহাম্মাদ ইবনে ফয্ল ইবনে জাবের আস-সাকতী আরো অনেকে। সবাই তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

তার একটা দোকান ছিল যাতে তিনি ব্যাবসা করতেন। এক দিনের ঘটনা : এক বাদি তার দোকানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে বাদির কাছে একটা পাত্র ছিল। পাত্রটা ভেঙ্গে গেল। সে ঐ পাত্রে তার মুনিবের জন্য কিছু কেনার জন্য এসেছিল। তখন পাত্রটা ভাঙ্গার কারণে ঐ বাদি কাঁদছিল। তাকে দেখে সারিয়্যী রহ. তাকে কিছু পয়সা দিলেন। যা দিয়ে সে আরেকটা পাত্র কিনতে পারে। বাদির সাথে তার এ ব্যবহার তার উস্তাদ মা’রুফ রহ. দেখছিলেন। তখন তার উস্তাদ দুআ করলেন যে, আল্লাহ তায়ালা তোমার কাছে দুনিয়া তুচ্ছ করে দিক।

সারিয়্যী রহ. বলেন একদা ঈদের দিন আমি পথ চলছি। হটাৎ মা’রুফ কারখী কে দেখি। তার সাথে একটা খুব গরিব ছোট ছেলে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম আপনার সাথে এ বাচ্চা কেন? তিনি উত্তর দিলেন, দেখলাম কিছু ছেলে আখরোট নিয়ে খেলছে। আর পাশে এ ছেলেটি মন খারাপ করে দাড়িয়ে আছে। আমি তাকে বললাম : তোমার কি হয়েছে? খেলছ না কেন? ছেলেটি উত্তর দিল : আমি এতিম, আমার কোন পয়সা নেই। যা দিয়ে আমি আখরোট কিনে খেলব। তাই আমি তার হাত ধরে নিয়ে আসলাম। তাকে কিছু বীচি জমা করে দিব। যা দিয়ে সে আখরোট কিনতে পারে। ফলে সে আনন্দিত হবে। সারিয়্যী রহ. বলেন, আমি বললাম : আমি কি তাকে কিছু কাপড় কিনে দিব? এবং আখরোট কেনার জন্য কিছু পয়সা দিব? তিনি বললেন তুমি পারবে? আমি বললাম হ্যাঁ পারব।
وَسَرِيٌّ السَّقَطِيُّ. أَحَدُ كِبَارِ مَشَايِخِ أَئِمَّةِ الصُّوفِيَّةِ، وَهُوَ السَّرِيُّ بْنُ الْمُغَلِّسِ أَبُو الْحَسَنِ السَّقَطِيُّ الْبَغْدَادِيُّ، تِلْمِيذُ مَعْرُوفٍ الْكَرْخِيِّ حَدَّثَ عَنْ هُشَيْمٍ، وَأَبِي بَكْرِ بْنِ عَيَّاشٍ، وَعَلِيِّ بْنِ غُرَابٍ، وَيَحْيَى بْنِ يَمَانٍ، وَيَزِيدَ بْنِ هَارُونَ، وَغَيْرِهِمْ. وَعَنْهُ ابْنُ أُخْتِهِ الْجُنَيْدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، وَأَبُو الْحَسَنِ النُّورِيُّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْفَضْلِ بْنِ جَابِرٍ السَّقَطِيُّ، وَجَمَاعَةٌ. وَكَانَتْ لَهُ دُكَّانٌ يَتَّجِرُ فِيهَا، فَمَرَّتْ بِهِ جَارِيَةٌ قَدِ انْكَسَرَ إِنَاءٌ كَانَ مَعَهَا تَشْتَرِي فِيهِ شَيْئًا لِسَادَتِهَا، فَجَعَلَتْ تَبْكِي، فَأَعْطَاهَا سَرِيٌّ شَيْئًا تَشْتَرِي بِهِ بَدَلَهُ، فَنَظَرَ مَعْرُوفٌ إِلَيْهِ وَمَا صَنَعَ بِتِلْكَ الْجَارِيَةِ، فَقَالَ لَهُ: بَغَّضَ اللَّهُ إِلَيْكَ الدُّنْيَا. وَقَالَ سَرِيٌّ: مَرَرْتُ فِي يَوْمِ عِيدٍ، فَإِذَا مَعْرُوفٌ وَمَعَهُ صَبِيٌّ صَغِيرٌ شَعِثُ الْحَالِ، فَقُلْتُ: مَا هَذَا؟ فَقَالَ: هَذَا كَانَ وَاقِفًا وَالصِّبْيَانُ يَلْعَبُونَ وَهُوَ مُنْكَسِرٌ، فَقُلْتُ لَهُ: مَا لَكَ لَا تَلْعَبُ؟ فَقَالَ: أَنَا يَتِيمٌ وَلَا شَيْءَ مَعِي أَشْتَرِي بِهِ جَوْزًا أَلْعَبُ بِهِ. فَأَخَذْتُهُ لِأَجْمَعَ لَهُ نَوًى يَشْتَرِي بِهِ جَوْزًا يَفْرَحُ بِهِ، فَقُلْتُ: أَلَا أَكْسُوهُ وَأُعْطِيهِ شَيْئًا يَشْتَرِي بِهِ جَوْزًا؟ فَقَالَ: أَوَتَفْعَلُ؟ فَقُلْتُ:
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৮
অতঃপর বললেন : লও, নিয়ে যাও। তারপর আমার জন্য দুআ করলেন, বললেন : আল্লাহ তায়ালা তোমার অন্তরকে ধনী বানিয়ে দিক। সিরী রহ. বলেন, এরপর থেকে দুনিয়া আমার নিকটে একেবারে তুচ্ছ নগন্য হয়ে গেছে।

সারিয়্যী রহ. এর আরেকটি ঘটনা : তার কাছে কিছু বাদাম ছিল এক ব্যক্তি তা কিনতে চাইল। তাদের মাঝে দরা-দরি হল যে, প্রতি কুর (এক ধরণের পরিমাপপাত্র) বাদাম ৬৩ দিনার। অতঃপর লোকটি বাদাম না কিনেই চলে গেল। তখন হটাৎ বাদামের দাম বেড়ে প্রতি কুর ৯০ দিনার হল। তারপর ঐ লোকটি আবার আসল এবং বলল আমি আপনার থেকে এক কুর বাদাম নিব ৯০ দিনার দিয়ে। সারিয়্যী রহ. বললেন : আপনার সাথে দরা-দরি হয়েছে ৬৩ দিনার। আমি তার থেকে বেশিতে বেচব না। আর লেকটি বলল : আমি ৯০ দিনার দিয়ে কিনব। তিনি বললেন আমাদের মাঝে যে দাম নির্ধরিত হয়েছিল সে দাম ছাড়া বেচব না। লোকটি বলল : ইনসাফ হল বাজারী মূলে অর্থাৎ ৯০ দিনার দিয়েই ক্রয় করা। শেষ পর্যন্ত লোকটি বাদাম না কিনেই চলে গেল।

তার আরেকটি ঘটনা : একদা এক মহিলা সারিয়্যী রহ. এর কাছে আসল। তাকে বলল : আমার ছেলে কে পাহারাদার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আমি চাই আপনি কাউকে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দিন। যাতে আমার ছেলে কে মারা না হয়। এ কথা শুনে তিনি নামাযে দাড়িয়ে গেলেন। দীর্ঘ সময় নামায পড়তে লাগলেন। এ অবস্থা দেখে মহিলা মনে মনে খুব রাগান্বিত হলেন। যখন তিনি নামায শেষ করেন মহিলাটি তখন বলল আল্লাহ ওয়াস্তে আমার ছেলের জন্য কিছু করেন। তিনি বললেন : ঐ সময় থেকে এ পর্যন্ত আপনার ছেলেকে ছাড়ানোর জন্যই চেষ্টা করেছি। সারিয়্যী রহ. এখনোও তার মজলিস থেকে উঠে নাই, এর মধ্যেই অন্য এক মহিলা ঐ মহিলার কাছে আসল এবং বলল : সুসংবাদ গ্রহন কর। তোমার ছেলে কে পুলিশ মুক্তি দিছে। তখন মহিলা খুশি হয়ে চলে গেল।

সারিয়্যী রহ. বলেন : আমি চাই এমন খাদ্য খেতে যা খেলে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কোন প্রকার পাকড়াও হবে না। না তাতে আমার উপর কারো অনুগ্রহ থাকবে। কিন্তু আমার ইচ্ছা পুরণ করতে পারিনি।
نَعَمْ. فَقَالَ: خُذْهُ، أَغْنَى اللَّهُ قَلْبَكَ. قَالَ: فَسَوِيَتِ الدُّنْيَا عِنْدِي أَقَلَّ شَيْءٍ. وَكَانَ عِنْدَهُ مَرَّةً لَوْزٌ، فَسَاوَمَهُ رَجُلٌ عَلَى الْكُرِّ بِثَلَاثَةٍ وَسِتِّينَ دِينَارًا، ثُمَّ ذَهَبَ الرَّجُلُ، فَإِذَا اللَّوْزُ يُسَاوِي الْكُرُّ مِنْهُ تِسْعِينَ دِينَارًا، فَقَالَ لَهُ: إِنِّي أَشْتَرِي مِنْكَ الْكُرَّ بِتِسْعِينَ دِينَارًا. فَقَالَ: إِنِّي سَاوَمْتُكُ بِثَلَاثَةٍ وَسِتِّينَ، وَإِنِّي لَا أَبِيعُهُ إِلَّا بِذَلِكَ. فَقَالَ الرَّجُلُ: وَأَنَا أَشْتَرِي مِنْكَ بِتِسْعِينَ. فَقَالَ: لَا أَبِيعُهُ إِلَّا بِمَا سَاوَمْتُكَ عَلَيْهِ. فَقَالَ الرَّجُلُ: إِنَّ مِنَ النُّصْحِ أَنْ لَا أَشْتَرِيَ مِنْكَ إِلَّا بِتِسْعِينَ دِينَارًا. وَذَهَبَ فَلَمْ يَشْتَرِ مِنْهُ. وَجَاءَتِ امْرَأَةٌ يَوْمًا إِلَى سَرِيٍّ فَقَالَتْ: إِنَّ ابْنِي قَدْ أَخَذَهُ الْحَرَسُ، وَإِنِّي أُحِبُّ أَنْ تَبْعَثَ إِلَى صَاحِبِ الشُّرْطَةِ لِئَلَّا يُضْرَبَ. فَقَامَ فَكَبَّرَ وَطَوَّلَ فِي الصَّلَاةِ وَجَلَعَتِ الْمَرْأَةُ تَحْتَرِقُ فِي نَفْسِهَا، فَلَمَّا انْصَرَفَ مِنَ الصَّلَاةِ قَالَتِ الْمَرْأَةُ: اللَّهَ اللَّهَ فِي وَلَدِي. فَقَالَ: هَاأَنَذَا فِي حَاجَتِكِ. فَمَا قَامَ مِنْ مَجْلِسِهِ حَتَّى جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى تِلْكَ الْمَرْأَةِ فَقَالَتْ: أَبْشِرِي، فَقَدْ أَطْلَقَ الْمُتَوَلِّي وَلَدَكِ. فَانْصَرَفَتْ إِلَيْهِ. وَقَالَ سَرِيٌّ: أَشْتَهِي أَنْ آكُلَ أَكْلَةً لَيْسَ لِلَّهِ عَلَيَّ فِيهَا تَبِعَةٌ، وَلَا
পৃষ্ঠা - ৮৭৮৯
অন্য বর্ণনায় আছে তিনি বলেন : ত্রিশ বছর ধরে আমার সবজি খাওয়ার আগ্রহ হয়েছে কিন্তু খেতে পারিনি।

সারিয়্যী রহ. বলেন : আমাদের বাজারে একদিন আগুন লাগে। আমার দোকান দেখার জন্য বের হলাম। পথিমধ্যে একজন লেকের সাথে সাক্ষাত হল। সে বলল : সুসংবাদ গ্রহন করুন, আপনার দোকান সম্পূর্ন ভালো আছে। সুখবর শুনে আমি আলহামদুল্লিাহ বললাম। তারপর আমার স্বরণ হল, আমার দোকান ভালো আছে তাই শুকরিয়া আদায় করলাম অথচ অন্যের দোকানের চিন্তা তো করলাম না ! তিনি বলেন, আমার এ ভুলের কারণে ত্রিশ বছর ধরে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করছি।
এ ঘটনা খতীবে বাগদাদী বর্ণনা করেছেন।

সারিয়্যী রহ. বলেন : এক রাতে আমি আমার অজিফা আদায় করছিলাম। অজিফা শেষে আমার পা মেহরাবের দিকে লম্বা করে দিলাম। তখন গায়েব থেকে আওয়াজ শুনলাম, কেউ আমাকে বলছে : হে সারিয়্যী তুমি কি বাদশাদের সামনে এভাবে বসবে? সারিয়্যী রহ. বলেন, আমি তখন আমার পা গুটিয়ে নিলাম। অতঃপর বললাম তোমার ইজ্জতের কসম ! আমার পা আর কখনো লম্বা করব না।

জুনাইদ ইবনে মুহাম্মাদ বলেন : হযরত সারিয়্যী আস-সাকতী রহ. এর থেকে আল্লাহ তায়ালার বড় ইবাদাতকারী আমি দেখি নাই। তার বয়স ৯৮ বছর হয়েছিল। কিন্তু মৃত্যু ব্যধির সময় ছাড়া কখনো তাকে শোয়া দেখিনি।

খতীবে বাগদাদী আবূ নুআইম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি জা’ফর জুলদী থেকে, তিনি জুনাইদ ইবনে মুহাম্মাদ থেকে বর্ণনা করেন যে, জুনাইদ বলেন : একদিন আমি তার অসুস্থতা দেখতে গেলাম। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম : এখন আপনার কেমন লাগছে? উত্তরে তিনি একটি কবিতা আবৃতি করেন। যার অর্থ : আমি আমার অসুস্থতার অভিযোগ আমার ডাক্তারের কাছে কিভাবে করব  ۞  যে অসুস্থতা আমার ডাক্তারের কারণেই হয়েছে।
অতঃপর জুনাইদ বলেন : আমি একটা পাখা নিয়ে তাকে বাতাশ করতে লাগলাম। তখন তিনি বললেন : পাখার বাতাশে ঐ ব্যক্তি কিভাবে ঠান্ডা হবে যা ভিতরে আগুন জ্বলছে। এরপর তিনি নিচের কবিতাগুলি আবৃতি করলেন :
لِأَحَدٍ عَلَيَّ فِيهَا مِنَّةٌ، فَمَا أَجِدُ إِلَى ذَلِكَ سَبِيلًا. وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: إِنِّي لَأَشْتَهِي الْبَقْلَ مِنْ ثَلَاثِينَ سَنَةً، فَمَا أَقْدِرُ عَلَيْهِ. وَعَنِ السَّرِيِّ أَنَّهُ قَالَ: احْتَرَقَ سُوقُنَا، فَقَصَدْتُ الْمَكَانَ الَّذِي فِيهِ دُكَّانِي، فَتَلَقَّانِي رَجُلٌ فَقَالَ: أَبْشِرْ ; فَإِنَّ دُكَّانَكَ قَدْ سَلِمَتْ. فَقُلْتُ: الْحَمْدُ لِلَّهِ. ثُمَّ تَذَكَّرْتُ ذَلِكَ التَّحْمِيدَ، فَأَنَا أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ مُنْذُ ثَلَاثِينَ سَنَةً. رَوَاهَا الْخَطِيبُ. وَقَالَ السَّرِيُّ: صَلَّيْتُ وِرْدِي ذَاتَ لَيْلَةٍ ثُمَّ مَدَدْتُ رِجْلِي فِي الْمِحْرَابِ، فَنُودِيتُ: يَا سَرِيُّ، كَذَا تُجَالِسُ الْمُلُوكَ؟ قَالَ: فَضَمَمْتُ رِجْلِي ثُمَّ قُلْتُ: وَعِزَّتِكَ لَا مَدَدْتُ رِجْلِي أَبَدًا. وَقَالَ الْجُنَيْدُ بْنُ مُحَمَّدٍ: مَا رَأَيْتُ أَعْبَدَ لِلَّهِ مِنَ السَّرِيِّ السَّقَطِيِّ ; أَتَتْ عَلَيْهِ ثَمَانٍ وَتِسْعُونَ سَنَةً مَا رُئِيَ مُضْطَجِعًا إِلَّا فِي عِلَّةِ الْمَوْتِ. وَقَالَ الْخَطِيبُ: عَنْ أَبِي نُعَيْمٍ، عَنْ جَعْفَرٍ الْخُلْدِيِّ، عَنِ الْجُنَيْدِ بْنِ مُحَمَّدٍ قَالَ: دَخَلْتُ عَلَيْهِ أَعُودُهُ، فَقُلْتُ: كَيْفَ تَجِدُكَ؟ فَقَالَ: كَيْفَ أَشْكُو إِلَى طَبِيبِي مَا بِي، وَالَّذِي قَدْ أَصَابَنِي مِنْ طَبِيبِي. قَالَ: فَأَخَذْتُ الْمِرْوَحَةَ أَرَوِّحُهُ، فَقَالَ لِي: كَيْفَ يَجِدُ رَوْحَ الْمِرْوَحَةِ مَنْ جَوْفُهُ يَحْتَرِقُ مِنْ دَاخِلٍ؟ ثُمَّ أَنْشَأَ يَقُولُ:
পৃষ্ঠা - ৮৭৯০
অন্তর জ্বলতেছে চোখ থেকে অশ্রু ঝরছে  ۞  সমস্ত বিপদ জমা হচ্ছে, আর ধৈর্য ক্ষমতার বাহিরে চলে যাচ্ছে।
ঐ ব্যক্তি কিভাবে স্থির হবে যার কোন ঘর নেই  ۞  ঐ সমস্ত কাজের কারণে যা নফসের তাড়নায় আগ্রহ অস্থিরাতার মধ্যে করেছে।
হে আল্লাহ যদি আমার ভাগ্যে প্রশান্তি থাকে  ۞  তাহলে মৃত্যু পর্যন্ত আমাকে প্রশান্তি দান কর।

জুনাইদ বলেন, আমি তাকে বললাম : আমকে কিছু নসিহাত করেন। তিনি বললেন : খারাপ লোকদের সহচার্যে যেও না। আর ভালো লোকদের সহচার্যে থেকে আল্লাহ তায়ালার স্বরণ থেকে গাফেল থেক না।

খতীবে বাগদাদী বর্ণনা করেন, তিনি ৬ ই রমযান ২৫৩ হিজরী সালে সোমবারের দিন ফজরের আযানের পরে ইন্তেকাল করেন। তাকে আসরের পরে শুনিঝিয়্যাহ কবর স্থানে দাফন করা হয়। তার কবর প্রশিদ্ধ সবাই চেনে। তার কবরের পাশে জুনাইদ বাগদাদীর কবর দেয়া হয়।

আবূ ওবাইদা ইবনে হারবাওয়াই থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি স্বপ্নে হযরত সারিয়্যী রহ. কে দেখলাম। আমি তাকে বললাম : আল্লাহ তায়ালা আপনার সাথে কেমন আচারণ করেছে? উত্তরে তিনি বলেন : আল্লাহ তায়ালা আমাকে মাফ করে দিছে। আর আমার জানাযায় যারা উপস্থিত হয়েছিল সবাই কে মাফ করে দিছে। আমি বললাম : আমিও আপনার জানাযায় উপস্থিত হয়েছিলাম, জানাযার নামাযও পড়েছি। আবূ ওবাইদা বলেন : এ কথা শুনে তিনি একটি রেজিষ্টার বের করে দেখলেন। কিন্তু তার মধ্যে আমার নাম পেলেন না। আমি বললাম বাস্তবে আমি আপনার জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। তখন রেজিষ্টরের টিকায় আমার নাম পাওয়া গেল।

ইবনে খিল্লিকান ভিন্ন একটি মত বর্ণনা করেন যে, সারী রহ. ২৫১ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। আর কেউ বলেন ২৫৬ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। সঠিকটা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন।
الْقَلْبُ مُحْتَرِقٌ وَالدَّمْعُ مُسْتَبِقٌ ... وَالْكَرْبُ مُجْتَمِعٌ وَالصَّبْرُ مُفْتَرِقُ كَيْفَ الْقَرَارُ عَلَى مَنْ لَا قَرَارَ لَهُ ... مِمَّا جَنَاهُ الْهَوَى وَالشَّوْقُ وَالْقَلَقُ يَا رَبِّ إِنْ كَانَ شَيْءٌ فِيهِ لِي فَرَجٌ ... فَامْنُنْ عَلَيَّ بِهِ مَا دَامَ بِي رَمَقُ قَالَ: وَقُلْتُ لَهُ: أَوْصِنِي. قَالَ: لَا تَصْحَبِ الْأَشْرَارَ، وَلَا تَشْتَغِلْ عَنِ اللَّهِ بِمُجَالَسَةِ الْأَخْيَارِ. وَقَدْ ذَكَرَ الْخَطِيبُ وَفَاتَهُ يَوْمَ الثُّلَاثَاءِ لِسِتٍّ خَلَوْنَ مِنْ رَمَضَانَ سَنَةَ ثَلَاثٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ بَعْدَ أَذَانِ الْفَجْرِ، وَدُفِنَ بَعْدَ الْعَصْرِ. قَالَ: وَدُفِنَ بِمَقْبَرَةِ الشُّونِيزِيَّةِ، وَقَبْرُهُ ظَاهِرٌ مَعْرُوفٌ، وَإِلَى جَنْبِهِ قَبْرُ الْجُنَيْدِ. وَرُوِيَ عَنِ الْقَاضِي، عَنْ أَبِي عَبُيْدِ بْنِ حَرْبَوَيْهِ قَالَ: رَأَيْتُ سَرِيًّا فِي الْمَنَامِ، فَقُلْتُ: مَا فَعَلَ اللَّهُ بِكَ؟ فَقَالَ: غَفَرَ لِي وَلِكُلِّ مَنْ شَهِدَ جِنَازَتِي. قُلْتُ: فَإِنِّي مِمَّنْ حَضَرَ جِنَازَتَكَ وَصَلَّى عَلَيْكَ. قَالَ: فَأَخْرَجَ دُرْجًا فَنَظَرَ فِيهِ، فَلَمْ يَرَ فِيهِ اسْمِي، فَقُلْتُ: بَلَى، قَدْ حَضَرْتُ، فَإِذَا اسْمِي فِي الْحَاشِيَةِ. وَحَكَى ابْنُ خِلِّكَانَ قَوْلًا ; أَنَّ سَرِيًّا تُوَفِّي سَنَةَ إِحْدَى وَخَمْسِينَ. وَقِيلَ: سَنَةَ سِتٍّ وَخَمْسِينَ. فَاللَّهُ أَعْلَمُ. قَالَ ابْنُ خِلِّكَانَ: وَمِمَّا كَانَ يُنْشِدُهُ السَّرِيُّ، رَحِمَهُ اللَّهُ:
পৃষ্ঠা - ৮৭৯১
ইবনে খিল্লিকান বলেন হযরত সারিয়্যী আস-সাকতী রহ. বেশি বেশি নিচের কবিতাগুলো পড়তেন।
যখন আমি মহাব্বতের দাবী করতাম তখন আমার মহাব্বতের মানুষ বলত তুমি মিথ্যা বলছ  ۞  কেননা তোমার অঙ্গ-প্রতঙ্গে এখনো গোশত আছে।
আর যতক্ষন শরিরে গোশত থাকে ততক্ষন মহব্বতের দাবী করা ভুল  ۞  আর যতক্ষন এমন বেখেয়াল না হবে যে কারো ডাকে সাড়া দিতে পারবে না, ততক্ষন মহব্বতের দাবী করা ঠিক নয়।
إِذَا مَا شَكَوْتُ الْحُبَّ قَالَتْ كَذَبْتَنِي ... فَمَا لِي أَرَى الْأَعْضَاءَ مِنْكَ كَوَاسِيَا فَلَا حُبَّ حَتَى يَلْصَقَ الْجِلْدُ بِالْحَشَا ... وَتَذْهَلَ حَتَى لَا تُجِيبَ الْمُنَادِيَا
পৃষ্ঠা - ৮৭৯২
[ হিজরি ২৫৪ সাল ]
[ এ বছরের ঘটনাবলী ]
এরপর ২৫৪ হিজরী শুরু হল।

এ বছর খলিফা মু’তায্য বুগা শারাবিয়্যী কে হত্যা করার নির্দেশ দেন। তাকে হত্যা করার পরে তার মাথা প্রথমে সার্মারা তারপর বাগদাদে জনসম্মুখে ঝুলিয়ে রাখেন। তার শরিরের বাকি অংশ জালিয়ে দেন। তার সমস্ত মাল সম্পদ দখল করেন।

এ বছরে আহমাদ ইবনে তুলুন কে মিসরের গভর্ণর হিসেবে নিয়োগ দেন। ইনিই ঐখানের প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

এ বছরে আলী ইবনে হুসাইন ইবনে ইসমাইল ইবনে আব্বাস ইবনে মুহাম্মাদ মানুষদের হজ্জ করান।

[ এ বছরে যারা মৃত্যু বরণ করে ]
বিশেষ ব্যক্তিবর্গ যারা এ বছরে মৃত্যু বরণ করেন :
যিয়াদ ইবনে ইয়াহইয়া আল-হাস্সানী।
আলী ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে মূসা আর-রেজা। যিনি ২৬ শে জমাদিউল সানি সোমবারের দিন বাগদাদে মৃত্যু বরণ করেন। তার জানাযার নামায পড়ান আবূ আহমাদ আল-মুতাওয়াক্কিল। তারা জানাযা আবূ আহমাদ নামক সড়কে অনুষ্ঠিত হয়। বাগদাদে তার বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।
[سَنَةُ أَرْبَعٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ] [الْأَحْدَاثُ الَّتِي وَقَعَتْ فِيهَا] ثُمَّ دَخَلَتْ سَنَةُ أَرْبَعٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ فِيهَا أَمَرَ الْخَلِيفَةُ الْمُعْتَزُّ بِقَتْلِ بُغَا الشَّرَابِيِّ وَنَصَبَ رَأْسَهُ بِسَامَرَّا ثُمَّ بِبَغْدَادَ وَحُرِّقَتْ جُثَّتُهُ وَأُخِذَتْ أَمْوَالُهُ وَحَوَاصِلُهُ. وَفِيهَا وَلِيَ أَحْمَدُ بْنُ طُولُونَ الدِّيَارَ الْمِصْرِيَّةَ وَهُوَ بَانِي الْجَامِعِ الْمَشْهُورِ بِهَا. وَحَجَّ بِالنَّاسِ فِيهَا عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ بْنِ الْعَبَّاسِ بْنِ مُحَمَّدٍ. [مَنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ] وَمِمَّنْ تُوُفِّيَ فِيهَا مِنَ الْأَعْيَانِ: زِيَادُ بْنُ يَحْيَى الْحَسَّانِىُّ. وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ مُوسَى الرِّضَا يَوْمَ الْإِثْنَيْنِ لِأَرْبَعٍ بَقِينَ مِنْ جُمَادَى الْآخِرَةِ بِبَغْدَادَ. وَصَلَّى عَلَيْهِ أَبُو أَحْمَدَ الْمُتَوَكِّلُ فِي الشَّارِعِ الْمَنْسُوبِ إِلَى أَبِي أَحْمَدَ وَدُفِنَ بِدَارِهِ بِبَغْدَادَ. وَمُحَمَّدُ بْنُ
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৩
এ সালে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ আল-মুখাররিমী ও মুআম্মিল ইবনে ইহাব মৃত্যু বরন করেন।

আবূল হাসান আলী আল-হাদী
নাম ও বংশ : ইবনে মুহাম্মাদ আল-জাওয়াদ ইবনে আলী আর-রেজা ইবনে মুসা আল-কাযেম ইবনে জা’ফার আস-সাদেক ইবনে মুহাম্মাদ আল-বাকের ইবনে আলী যাইনুল আবিদীন ইবনে হুসাইন শহীদ ইবনে আলী ইবনে আবূ তালেব। যিনি বার ইমামের একজন ছিলেন। হুসাইন ইবনে আলী আল-আসকারীর পিতা ছিলেন। যাকে মূর্খ, বাতিল গোমরাহ ফেরকারা মুনতাজির উপাধি দিছিল।

আবূল হাসান আলী আল-হাদী বড় মুত্তাকী পরহেজগার ছিলেন। মুতাওয়াক্কিল তাকে সামাররায় পাঠিয়ে ছিলেন। সেখানে বিশ বছর থেকেও কয়েক মাস বেশি অবস্থান করেন। ঐখানে এ বছর ইন্তেকাল করেন।

একদা খলীফা মুতাওয়াক্কিলের কাছে কেউ বলল যে, আবূল হাসান আলী আল-হাদীর বাড়িতে অনেক অস্ত্র মানুষের অনেক চিঠি আছে (সে যে কোন সময় বিদ্রহ করার আশাংঙ্খা আছে)। খলীফা তার বাড়িতে অতর্কিত হামলা করার জন্য কিছু লোক পাঠান। তারা যেয়ে দেখল, পুরাতন একটা জুব্বা পরে কিবলা মূখী হয়ে খালি জমিনের উপর বসে আছে। লোকেরা তাকে ঐ অবস্থায় গ্রেফতার করে খলীফার সামনে নিয়ে আসল। তখন তিনি মদ পানে মশগুল ছিলেন। তাকে দেখে খলীফা অনেক ইজ্জত সম্মান করেন। তাকে নিজের পাশে বসালেন। খলীফার হাতে যে মদের পিয়ালা ছিল তা তাকে পান করার জন্য দিলেন। তখন তিনি বললেন : হে আমীরুল মুমিনীন, আমার শরিরে কখনো মদ প্রবেশ করেনি। আমাকে ক্ষমা করবেন, এ ক্ষেত্রে আমাকে বাধ্য করেন না। তাকে আর বাধ্য করলেন না। অতঃপর খলীফা তাকে বলল কিছু কবিতা শুনান। তখন তিনি আবৃতি করেন। যার অর্থ-
#    মানুষ পাহাড়ের চুড়াই রাত যাপন করে এবং বড় বীর বাহদুর তাকে পাহারা দেয়। তখন সে ভাবে তার কোন কিছুই হবে না। কিন্তু বাস্তবতা হল পাহাড়ের চুড়া তার কোন কাজে আসবে না। তাকে রক্ষা করতে পারবে না।
#    বড় ইজ্জত ওয়ালা ও সম্মানী হওয়ার পরেও তাকে তার আবাসস্থল থেকে বের করা হয়েছে। এরপর তাকে গর্তে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কত খারাপ অবস্থানে তাকে নামানো হয়েছে।
#    কবরে দাফন করার পর তাকে ডেকে বলা হবে। কোথায় শাহী সিংহাসন, শাহী মুকুট ও শাহী পোশাক।
عَبْدِ اللَّهِ الْمُخَرِّمِيُّ. وَمُؤَمِّلُ بْنُ إِهَابٍ. وَأَمَّا أَبُو الْحَسَنِ عَلِيٌّ الْهَادِي. فَهُوَ ابْنُ مُحَمَّدٍ الْجَوَادِ بْنِ عَلِيٍّ الرِّضَا بْنِ مُوسَى الْكَاظِمِ بْنِ جَعْفَرٍ الصَّادِقِ بْنِ مُحَمَّدٍ الْبَاقِرِ بْنِ عَلِيٍّ زَيْنِ الْعَابِدِينَ بْنِ الْحُسَيْنِ الشَّهِيدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ أَحَدُ الْأَئِمَّةِ الِاثْنَيْ عَشَرَ، وَهُوَ وَالِدُ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ الْعَسْكَرِيِّ الْمُنْتَظَرِ عِنْدَ الْفِرْقَةِ الضَّالَّةِ الْجَاهِلِيَّةِ الْكَاذِبَةِ الْخَاطِئَةِ. وَقَدْ كَانَ عَابِدًا زَاهِدًا، نَقَلَهُ الْمُتَوَكِّلُ إِلَى سَامَرَّا فَأَقَامَ بِهَا أَزْيَدَ مِنْ عِشْرِينَ سَنَةً بِأَشْهُرٍ، وَمَاتَ بِهَا فِي هَذِهِ السَّنَةِ. وَقَدْ ذُكِرَ لِلْمُتَوَكِّلِ أَنَّ بِمَنْزِلِهِ سِلَاحًا وَكُتُبًا كَثِيرَةً مِنَ النَّاسِ فَأَرْسَلَ فَكَبَسَهُ فَوَجَدُوهُ جَالِسًا مُسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةِ، وَعَلَيْهِ مِدْرَعَةٌ مِنْ صُوفٍ وَهُوَ عَلَى بَسِيطِ الْأَرْضِ لَيْسَ دُونَهَا حَائِلٌ فَأَخَذُوهُ كَذَلِكَ فَحَمَلُوهُ إِلَى الْمُتَوَكِّلِ وَهُوَ عَلَى شَرَابِهِ، فَلَمَّا مَثُلَ بَيْنَ يَدَيْهِ أَجَلَّهُ وَعَظَّمَهُ وَأَجْلَسَهُ إِلَى جَانِبِهِ وَنَاوَلَهُ الْكَأْسَ الَّذِي فِي يَدِهِ فَقَالَ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ إِنَّهُ لَمْ يُخَالِطْ لَحْمِي وَدَمِي قَطُّ، فَأَعْفِنِي مِنْهُ. فَأَعْفَاهُ ثُمَّ قَالَ لَهُ: أَنْشِدْنِي شِعْرًا. فَأَنْشَدَهُ: بَاتُوا عَلَى قُلَلِ الْأَجْبَالِ تَحْرُسُهُمْ ... غُلْبُ الرِّجَالِ فَمَا أَغْنَتْهُمُ الْقُلَلُ وَاسْتُنْزِلُوا بَعْدَ عِزٍّ عَنْ مَعَاقِلِهِمْ ... فَأُودِعُوا حُفَرًا يَا بِئْسَ مَا نَزَلُوا نَادَاهُمْ صَارِخٌ مِنْ بَعْدِ مَا قُبِرُوا ... أَيْنَ الْأَسِرَّةُ وَالتِّيجَانُ وَالْحُلَلُ
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৪
#    সে সমস্ত বড় বড় ব্যক্তিরা কোথায়? যাদের কে অনেক নেয়মত দেয়া হয়েছিল। যাদের সামনে অনেক পর্দা দেয়া থাকত (যাতে কেউ চাইলেই সাক্ষাত করতে পারত না।) এবং অনেক সুসজ্জিত রাখা হত।
#    যখন কবর তাদের খারাপ লাগবে তখন কবর তাদের কে স্পষ্টভাবে বলে দিবে। এ সমস্ত লোক কে পোকা মাকড় খেয়ে শেষ করে দিছে।
#    তারা দুনিয়াতে অনেক দীর্ঘ সময় অনেক কিছু খাইছে পরছে পান করছে। দীর্ঘ দিন ধরে এত কিছু খাওয়ার পরেও এখন সে নিজেই পোকা মাকড়ের খাদ্যে পরিনত হয়েছে।

বর্ণনাকারী বলেন : এই কবিতা শুনে মুতাওয়াক্কিল এত কাঁতছে যে জমিন ভিজে গেছে। এবং তার চারপাশের লোকজনও অনেক কাঁদছে। এরপর খলীফা মদের পাত্র উঠায়ে নিতে বলেন। এবং তাকে চার হাজার দিনার হাদিয়া দিতে নির্দেশ দিলেন। তাকে সম্মানের সাথে বাড়িতে পৌছে দিয়ে আসলেন। আল্লাহ তায়ালা তার উপর রহমত বর্ষন করুক।
أَيْنَ الْوُجُوهُ الَّتِي كَانَتْ مُنَعَّمَةً ... مِنْ دُونِهَا تُضْرَبُ الْأَسْتَارُ وَالْكِلَلُ فَأَفْصَحَ الْقَبْرُ عَنْهُمْ حِينَ سَاءَلَهُمْ ... تَلْكَ الْوُجُوهُ عَلَيْهَا الدُّودُ يَقْتَتِلُ قَدْ طَالَ مَا أَكَلُوا دَهْرًا وَمَا شَرِبُوا ... فَأَصْبَحُوا بَعْدَ طُولِ الْأَكْلِ قَدْ أُكِلُوا قَالَ: فَبَكَى الْمُتَوَكِّلُ حَتَّى بَلَّ الثَّرَى وَبَكَى مَنْ حَوْلَهُ بِحَضْرَتِهِ وَأَمَرَ بِرَفْعِ الشَّرَابِ وَأَمَرَ لَهُ بِأَرْبَعَةِ آلَافِ دِينَارٍ وَرَدَّهُ إِلَى مَنْزِلِهِ مُكَرَّمًا رَحِمَهُ اللَّهُ.
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৫
[ হিজরি ২৫৪ সাল ]
[ এ বছরের ঘটনাবলী ]
এরপর ২৫৪ হিজরী শুরু হল।

এই বছর মুফলিহ ও হাসান ইবনে যায়েদ আত-তালীর মাঝে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে মুফলিহ জয় লাভ করেন। তারপর আমুল ও তবারিসতানে প্রবেশ করেন। হাসান ইবনে যায়েদের ঘব-বাড়ি জালিয়ে দেন। এরপর তিনি দায়লামে প্রবেশ করেন।।

এ বছর ইয়াকুব ইবনে লায়েছ ও আলী ইবনে হুসাইন ইবনে কুরাইশ ইবনে শিবলির মধ্যে ভিষণ যুদ্ধ হয়। আলী ইবনে হুসাইন তার পক্ষ থেকে তওক ইবনে মুগাল্লিস কে পাঠান। তিনি ইয়াকুব ইবনে লায়েছের সাথে দীর্ঘ এক মাস মোকাবেলা করেন। অবশেষে ইয়াকুব ইবনে লায়েছ তওকের উপর বিজয় লাভ করেন। তাকে এবং তার অধিকংশ সাথীদের কে বন্ধি করেন। এরপর আলী ইবনে হুসাইনের দিকে রওয়ানা হন। সেখানে পৌছে তাকেও বন্ধি করেন। তার শহর দখল করে নেন। যে শহরের নাম ছিল কারমান। এছাড়াও তার অধিনে থাকা অন্যান্য শহরও নিজ আয়ত্বে নিয়ে নেন। অতঃপর ইয়াকুব ইবনে লায়েছ অনেক মূল্যবান উপঢৌকন খলীফা মু’তাযযের কাছে পাঠান। যেমন ঘোড়, শিকারে জন্য বাজপাখি, মূল্যবান কাপড় ইত্যাদি।

এ বছর রবিউল আওয়াল মাসে সুলাইমান ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহের কে বাগদাদের প্রতিনিধি বানান।

এ বছর সালেহ ইবনে ওসিফ, মু’তাযযের কাতেব (লেখক) আহমাদ ইবনে ইসরাইল কে এবং মু’তাযযের মা ফারিহার কাতেব (লেখক) হাসান ইবনে মাখলাদ আর আবু নুহ ঈসা ইবনে ইবরাহীম কে গ্রেফতার করেন। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাইতুলমালের সম্পদ ভক্ষন করতেন। এ সকল ব্যক্তিগণ বাইতুলমালের হিসাব রক্ষক ও অন্যান্য পদে দায়িত্বরত ছিলেন।
[سَنَةُ خَمْسٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ] [الْأَحْدَاثُ الَّتِي وَقَعَتْ فِيهَا] ثُمَّ دَخَلَتْ سَنَةُ خَمْسٍ وَخَمْسِينَ وَمِائَتَيْنِ فِيهَا كَانَتْ وَقْعَةٌ بَيْنَ مُفْلِحٍ وَبَيْنَ الْحَسَنِ بْنِ زَيْدٍ الطَّالِبِيِّ فَهَزَمَهُ مُفْلِحٌ وَدَخَلَ آمُلَ طَبَرِسْتَانَ وَحَرَقَ مَنَازِلَ الْحَسَنِ بْنِ زَيْدٍ، ثُمَّ سَارَ وَرَاءَهُ إِلَى الدَّيْلَمِ. وَفِيهَا كَانَتْ مُحَارَبَةٌ شَدِيدَةٌ بَيْنَ يَعْقُوبَ بْنِ اللَّيْثِ وَبَيْنَ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ قُرَيْشِ بْنِ شِبْلٍ فَبَعَثَ عَلِيُّ بْنُ الْحُسَيْنِ رَجُلًا مِنْ جِهَتِهِ يُقَالُ لَهُ: طَوْقُ بْنُ الْمُغَلِّسِ فَصَابَرَهُ أَكْثَرَ مِنْ شَهْرٍ، ثُمَّ ظَفِرَ يَعْقُوبُ بِطَوْقٍ فَأَسَرَهُ وَأَسَرَ وُجُوهَ أَصْحَابِهِ، ثُمَّ سَارَ إِلَى عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ هَذَا فَأَسَرَهُ أَيْضًا، وَأَخَذَ بِلَادَهُ - وَهِيَ كَرْمَانُ - فَأَضَافَهَا إِلَى مَا بِيَدِهِ مِنْ مَمْلَكَةِ سِجِسْتَانَ ثُمَّ بَعَثَ يَعْقُوبُ بْنُ اللَّيْثِ بِهَدِيَّةٍ سَنِيَّةٍ إِلَى الْمُعْتَزِّ بِاللَّهِ ; دَوَابًّ وَبُزَاةٍ وَثِيَابٍ فَاخِرَةٍ. وَفِيهَا وَلَّى الْخَلِيفَةُ سُلَيْمَانَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ نِيَابَةَ بَغْدَادَ وَالسَّوَادِ فِي رَبِيعٍ الْأَوَّلِ مِنْهَا. وَفِيهَا أَخَذَ صَالِحُ بْنُ وَصِيفٍ أَحْمَدَ بْنَ إِسْرَائِيلَ كَاتِبَ الْمُعْتَزِّ وَالْحَسَنَ بْنَ مَخْلَدٍ كَاتِبَ قَبِيحَةَ أَمِّ الْمُعْتَزِّ، وَأَبَا نُوحٍ عِيسَى بْنَ إِبْرَاهِيمَ، وَكَانُوا قَدْ تَمَالَئُوا عَلَى أَكْلِ أَمْوَالِ بَيْتِ الْمَالِ، وَكَانُوا دَوَّاوِينَ وَغَيْرَهُمْ فَضَرَبَهُمْ وَأَخَذَ
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৬
তিনি তাদেরকে মারধর করলেন। তারা যে বাইতুল মাল থেকে অনেক মাল নিয়েছেন এ বিষয়ে তাদের থেকে দস্তরখত নিয়ে নিলেন। তিনি এসস্ত কাজ খলীফা মু’তাযযের জানানো ছাড়াই গোপনে করেছেন। তাদের স্থবর অস্থবর সমস্ত মাল-সম্পদ নিয়ে নিলেন। তাদেরকে খিয়ানতকারী নাম রাখলেন। তাদের থেকে দায়িত্ব জোর ছিনিয়ে নিয়ে অন্যদের দিয়ে দিলেন।

এ বছর রজব মাসে ঈসা ইবনে জা’ফারের এবং আলী ইবনে যায়েদ কুফাতে আত্মপ্রকাশ করেন। বংশীয় দিক থেকে উভয়ে হাসান রা. এর বংশধর ছিলেন। এবং উভয়ে মিলে ঐখানে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে দাউদ ইবনে ঈসা কে হত্যা করেন। সেখানে তাদের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।

খলীফা মু’তাযযের মৃত্যু :
এ বছর ২৭ শে রজব খলীফা মু’তায্য বিল্লাহ খেলাফতের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। শাবানের ২ তারিখে তার মৃত্যুর ঘেষণা দেওয়া হয়। পদত্যাদের কারণ হল, সমস্ত সৈন্য বাহিনী একসাথে তাদের বকেয়া মাসিত ভাতা চাইল। তখন তার কাছে দেওয়ার মত কিছুই ছিল না। তাই সে তার মার কাছে কিছু করজ চাইল। যাতে সৈন্য বাহিনীদের কে কিছু দিতে পারে। কিন্তু তার মা করজ দিল না। এমন ভাব প্রকাশ করল যে, তার কাছে দেওয়ার মত কিছু নেই। তখন সমস্ত তুর্কীগণ তার খেলাফত থেকে অব্যহতির ব্যপারে একমত হয়ে গেল। তারা তার কাছে খবর পাঠাল যেন তিনি তাদের সামনে আসেন। কিন্তু তিনি ওজর পেশ করলেন যে, তিনি ঔষধ সেবন করেছেন। শরির অনেক দুর্বল সে বের হতে পারবেন না। তিনি বলে পাঠালেন যে, তোমাদের কয়েকজন আমার কাছে আসুক। তখন কয়েকজন আমীর তার কাছে গেলেন। তারা লোহার পিন নিয়ে ঢুকল। তাকে অনেক মারল। তার পা ধরে টেনে বাহিরে নিয়ে আসল। যখন বাহিরে নিয়ে আসল তখন তার গায়ে ছেড়া জামা ছিল। যা রক্তে রঞ্জিত ছিল। কঠিন গরমে দারুল খেলাফাতের মাঝে তাকে দাড় করিয়ে রাখল। কঠিন গরমের কারণে পা পরিবর্তন করে করে এক পায়ে দাড়াচ্ছিল। আর কেউ কেউ তাকে চড় মারতে লাগল। আর সে কাঁদছিল। যারা তাকে মারছিল তারা মারতে মারতে বলছিল খেলাফতের দায়িত্ব থেকে পদত্যাদ কর পদত্যাগ কর। অন্যরা তাকে ঘিরে দাড়িয়ে ছিল।
خُطُوطَهُمْ بِأَمْوَالٍ جَزِيلَةٍ يَحْمِلُونَهَا، وَذَلِكَ بِغَيْرِ رِضًا مِنَ الْمُعْتَزِّ فِي الْبَاطِنِ، وَاحْتِيطَ عَلَى أَمْوَالِهِمْ وَحَوَاصِلِهِمْ وَضِيَاعِهِمْ، وَسُمُّوا الْكُتَّابَ الْخَوَنَةَ وَوَلَّى الْخَلِيفَةُ عَنْ قَهْرٍ غَيْرَهُمْ. وَفِي رَجَبٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ ظَهَرَ عِيسَى بْنُ جَعْفَرٍ، وَعَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ الْحَسَنِيَّانِ بِالْكُوفَةِ، وَقَتَلَا بِهَا عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مُحَمَّدِ بْنِ دَاوُدَ بْنِ عِيسَى وَاسْتَفْحَلَ أَمْرُهُمَا بِهَا. مَقْتَلُ الْخَلِيفَةِ الْمُعْتَزِّ بِاللَّهِ وَلِثَلَاثٍ بَقِينَ مِنْ رَجَبٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ خُلِعَ الْخَلِيفَةُ الْمُعْتَزُّ بِاللَّهِ وَلِلَيْلَتَيْنِ مَضَتَا مِنْ شَعْبَانَ أُظْهِرَ مَوْتُهُ. وَكَانَ سَبَبَ خَلْعِهِ أَنَّ الْجُنْدَ اجْتَمَعُوا فَطَلَبُوا مِنْهُ أَرْزَاقَهُمْ، فَلَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ مَا يُعْطِيهِمْ فَسَأَلَ مِنْ أُمِّهِ أَنْ تُقْرِضَهُ مَالًا يَدْفَعُهُمْ عَنْهُ بِهِ فَلَمْ تُعْطِهِ وَأَظْهَرَتْ أَنَّهُ لَا شَيْءَ عِنْدَهَا فَاجْتَمَعَ الْأَتْرَاكُ عَلَى خَلْعِهِ فَأَرْسَلُوا إِلَيْهِ ; لِيَخْرُجَ إِلَيْهِمْ فَاعْتَذَرَ بِأَنَّهُ قَدْ شَرِبَ دَوَاءً وَأَنَّ عِنْدَهُ ضَعْفًا، وَلَكِنْ لِيَدْخُلْ إِلَيَّ بَعْضُكُمْ. فَدَخَلَ إِلَيْهِ بَعْضُ الْأُمَرَاءِ فَتَنَاوَلُوهُ بِالدَّبَابِيسِ يَضْرِبُونَهُ وَجَرُّوا بِرِجْلِهِ وَأَخْرَجُوهُ وَعَلَيْهِ قَمِيصٌ مُخَرَّقٌ مُلَطَّخٌ بِالدَّمِ فَأَقَامُوهُ فِي وَسَطِ دَارِ الْخِلَافَةِ فِي حَرٍّ شَدِيدٍ حَتَّى جَعَلَ يُرَاوِحُ بَيْنَ قَدَمَيْهِ مِنْ شِدَّةِ الْحَرِّ، وَجَعَلَ بَعْضُهُمْ يَلْطِمُهُ وَهُوَ يَبْكِي، وَيَقُولُ لَهُ الضَّارِبُ: اخْلَعْهَا وَالنَّاسُ مُجْتَمِعُونَ. ثُمَّ
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৭
তারপর তাকে এক সংকির্ণ ঘরে ঢুকালো। সেখানে তাকে বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দিতে লাগল। অবশেষে সে নিজেই খেলাফাতের দায়িত্ব থেকে পদত্যাদ করেন। তার পরে মুহতাদী বিল্লাহ খেলাফাতের দায়িত্ব গ্রহন করেন। পরবর্তীতে তার সম্পর্কে আলোচনা আসছে। তারপর তাকে এমন কিছু ব্যক্তিদের কাছে অর্পন করা হল যারা তাকে বিভিন্ন ধরনের কঠিন শাস্তি দিতে লাগল। তিন দিন পর্যন্ত তাকে কোন খাদ্য পানি খেতে দেয়নি। এমন কি তিনি কুপ থেকে এক ঢোক পানি চাইতে লাগলেন। কিন্তু তাকে এক ঢোক পানিও পান করানো হল না। তারপর তাকে চুন ভর্তি এক গর্তে ফেলে দিল। ওখানেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। তারা তাকে চুনা থেকে ভালো শরিরে বের করা হল। আমীর-ওমারদের এক দল কে সাক্ষী রাখলেন যে তিনি সাভাবিক ভাকে মারা গেছেন। তার উপর কঠোরতার কোন চি‎হ্ন রাখলেন না। এটা এ বছর ২ রা শাবান শনিবারের দিনের ঘটনা। মুহতাদী বিল্লাহ তার জানাযা পড়ালেন। কসরুস ছওয়ামে’ এর পাশে তার ভাই মুনতাসের পাশে দাফন করা হয়। তার বয়স ২৪ বছর হয়েছিল। তিনি চার বছর ছয় মাস তেইশ দিন খেলাফাতের দায়িত্ব পালন কারেন।

খলীফা মু’তায্য লম্বা সাস্থ্যবান ছিলেন। নাক লম্বা ছিল। চেহারা গেলাকার হাস্যউজ্জল ছিল। শরিরের রং সাদা ছিল। চুল খুব কালো ছিল। তার দাড়ি খুব ঘন ছিল। চোখ ও চেহারা খুব সুন্দুর ছিল। কপাল ছোট ছিল  চেহারার লাল বর্ণের ছিল। আল্লাহ তায়ালা তার উপর রহম করুক।

একবার তার পিতার জীবতদশায় পিতার সাথে হযরত ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বালের কছে যান। তখন ইমাম আহমাদ তার ভালো মেধা সুন্দর বুঝশক্তি আদব-আখলাকের প্রসাংশা করেন।

খতীব বাগদাদী আলী ইবনে হারব থেকে বর্ণনা করেন, আলী ইবনে হারব বলেন : আমি খলীফা মু’তাযযের কাছে গেলাম তার থেকে সুন্দর চেহারার কোন খলীফা আমি দেখিনি। আমি যখন তাকে দেখলাম তখন তাকে সেজদা করলাম। তিনি বলেন : আপনি আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সেজদা করছেন? আমি বললাম :
أَدْخَلُوهُ حُجْرَةً مُضَيَّقًا عَلَيْهِ فِيهَا. وَمَا زَالُوا عَلَيْهِ بِأَنْوَاعِ الْعَذَابِ حَتَّى خَلَعَ نَفْسَهُ مِنَ الْخِلَافَةِ وَوَلِيَ بَعْدَهُ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ، كَمَا سَيَأْتِي، ثُمَّ سَلَّمُوهُ إِلَى مَنْ يَسُومُهُ سُوءَ الْعَذَابِ بِأَنْوَاعِ الْمَثُلَاتِ وَمُنِعَ مِنَ الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ حَتَّى جَعَلَ يَطْلَبُ شَرْبَةً مِنْ مَاءِ الْبِئْرِ فَلَمْ يُسْقَ ثُمَّ أَدْخَلُوهُ سِرْبًا فِيهِ جَصُّ جِيرٍ فَدَسُّوهُ فِيهِ فَأَصْبَحَ مَيِّتًا فَاسْتَلُّوهُ مِنَ الْجَصِّ سَلِيمَ الْجَسَدِ فَأَشْهَدُوا عَلَيْهِ جَمَاعَةً مِنَ الْأَعْيَانِ أَنَّهُ مَاتَ وَلَيْسَ بِهِ أَثَرٌ، وَكَانَ ذَلِكَ فِي الْيَوْمِ الثَّانِي مِنْ شَعْبَانَ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ وَكَانَ يَوْمَ السَّبْتِ وَصَلَّى عَلَيْهِ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ وَدُفِنَ مَعَ أَخِيهِ الْمُنْتَصِرِ إِلَى جَانِبِ قَصْرِ الصَّوَامِعِ، عَنْ أَرْبَعٍ وَعِشْرِينَ سَنَةً. وَكَانَتْ خِلَافَتُهُ أَرْبَعَ سِنِينَ وَسِتَّةَ أَشْهُرٍ وَثَلَاثَةً وَعِشْرِينَ يَوْمًا وَكَانَ طَوِيلًا جَسِيمًا وَسِيمًا أَقْنَى الْأَنْفِ مُدَوَّرَ الْوَجْهِ حَسَنَ الضَّحِكِ أَبْيَضَ، أَسْوَدَ الشَّعْرِ جَعْدَهُ كَثِيفَهُ كَثِيفَ اللِّحْيَةِ حَسَنَ الْعَيْنَيْنِ وَالْوَجْهِ ضَيِّقَ الْجَبِينِ أَحْمَرَ الْوَجْنَتَيْنِ رَحِمَهُ اللَّهُ. وَقَدْ أَثْنَى الْإِمَامُ أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ عَلَى جَوْدَةِ ذِهْنِهِ وَحُسْنِ فَهْمِهِ وَأَدَبِهِ حِينَ دَخَلَ عَلَيْهِ فِي حَيَاةِ أَبِيهِ الْمُتَوَكِّلِ بِسَامَرَّا، كَمَا قَدَّمْنَا فِي تَرْجَمَةِ الْإِمَامِ أَحْمَدَ. وَرَوَى الْخَطِيبُ الْبَغْدَادِيُّ عَنْ عَلِيِّ بْنِ حَرْبٍ قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى الْمُعْتَزِّ بِاللَّهِ فَمَا رَأَيْتُ خَلِيفَةً أَحْسَنَ وَجْهًا مِنْهُ، فَلَمَّا رَأَيْتُهُ سَجَدْتُ فَقَالَ: يَا شَيْخُ تَسْجُدُ لِأَحَدٍ مِنْ دُونِ اللَّهِ؟ فَقُلْتُ: حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ النَّبِيلُ،
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৮
আবূ আসেম জহ্হক ইবনে মাখলাদ আন-নাবীল বর্ণনা করেছেন, তিনি বাক্কার ইবনে আব্দুল আযিয ইবনে বাকরাহ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি তার পিতা থেকে, তার পিতা তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন : রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন আনন্দের কোন কিছু দেখতেন বা তাকে খুশির কোন সংবাদ দেয়া হত তখন তিনি শুকরিয়া স্বরূপ আল্লাহ তায়ালার সেজদা করতেন।

যাবাইর ইবনে বাক্কার বলেন : আমি মু’তাযযের কাছে গেলাম। তখন তিনি খলীফা ছিলেন। তিনি যখন আমার আসার খবর শুনলেন তখন তাড়াতাড়ি আমার দিকে আসলেন। হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন। এর পর কিছু কবিতা আবৃতি করলেন যার অর্থ :
জবানের হোঁচটেই মানুষের প্রকৃত মৃত্যু হয়  ۞  পায়ের হোঁচটে প্রকৃত মৃত হয় না।
মুখের কারণে যে হোঁচট খায় তাতে মাথাকে নিক্ষেপ করে দেয়। অর্থাৎ অপমানিত হতে হয়  ۞  আর পায়ে যে হোঁচট খায় তা কয়েকদিন পরে ঠিক হয়ে যায়।

ইবনে আসাকির বর্ণনা করেন মু’তাযযের পিতার জিবতদশায়ের কথা। যখন তিনি কুরআন খতম করেন তখন তার পিতা আমীর-উমারা ও বড় বড় সম্মানী ব্যক্তিবর্গদের কে নিয়ে সুররা মান রাআ (সামাররা) নামক এলাকায় বড় এক অনুষ্ঠান করনে। কয়েকদিন ধরে মানুষ আসা যাওয়া করতে থাকে। অনেক বড় আকারে অনুষ্ঠানের আয়োজন হতে থাকে। এ সময় ছোট মু’তায্য মেম্বারে বসে তার পিতাকে সালাম দিলেন। মানুষের সামনে বয়ান করলেন। তখন দারুল খেলাফাতে হিরা জাওহার স্বর্ণ চাদি ধনী গরীব সকলের মাঝে বিলিয়ে দেন। যে হিরা জাওহার বিলিয়ে দিয়েছিল তার মূল্য এক লক্ষ্য দিনার। এবং সে পরিমান স্বর্ণ ও আরো দশ লক্ষ্য দিরহামও মানুষকে দিয়েছিল। তাছাড়াও আরো অনেক মূল্যবাদ পেশাক মানুষের মাঝে দেন। এ দিনটি মানুষের কাছে স্বরণীয় ছিল। কারণ এমন খুশির দিন দারুল খেলাফাতে আগে আসে নাই। এবং মু’তাযযের মা কবিহাকে অনেক মূল্যবান পোশাক পরিয়েছিলেন। অনুরূপভাবে তার উস্তাদ মুহাম্মাদ ইবনে ইমরান কেও মূল্যবান পেশাক জাওহার স্বর্ণ অন্যান্য আরো অনেক কিছু দিয়েছিলেন।
ثَنَا بَكَّارُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا رَأَى مَا يَفْرَحُ بِهِ، أَوْ بُشِّرَ بِمَا يَسُرُّهُ، سَجَدَ شُكْرًا لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ» . وَقَالَ الزُّبَيْرُ بْنُ بَكَّارٍ: صِرْتُ إِلَى الْمُعْتَزِّ وَهُوَ أَمِيرٌ، فَلَمَّا سَمِعَ بِقُدُومِي خَرَجَ مُسْتَعْجِلًا إِلَيَّ فَعَثَرَ، فَأَنْشَأَ يَقُولُ: يَمُوتُ الْفَتَى مِنْ عَثْرَةٍ بِلِسَانِهِ ... وَلَيْسَ يَمُوتُ الْمَرْءُ مِنْ عَثْرَةِ الرِّجْلِ فَعَثْرَتُهُ مِنْ فِيهِ تَرْمِي بِرَأْسِهِ ... وَعَثْرَتُهُ فِي الرِّجْلِ تَبْرَأُ عَلَى مَهْلِ وَذَكَرَ الْحَافِظُ ابْنُ عَسَاكِرَ: أَنَّ الْمُعْتَزَّ لَمَّا حَذَقَ الْقُرْآنَ فِي حَيَاةِ أَبِيهِ الْمُتَوَكِّلِ اهْتَمَّ أَبُوهُ لِذَلِكَ وَاجْتَمَعَتِ الْأُمَرَاءُ الْكُبَرَاءُ وَالرُّؤَسَاءُ بِسُرَّ مَنْ رَأَى، وَاخْتَلَفُوا لِذَلِكَ أَيَّامًا عَدِيدَةً وَجَرَتْ أَحْوَالٌ عَظِيمَةٌ. وَلَمَّا جَلَسَ وَهُوَ صَبِيٌّ عَلَى الْمِنْبَرِ وَسَلَّمَ عَلَى أَبِيهِ بِالْخِلَافَةِ، وَخَطَبَ النَّاسَ نُثِرَتِ الْجَوَاهِرُ فِي الصَّوَانِيِ، وَالذَّهَبُ وَالْفِضَّةُ عَلَى الْخَوَاصِّ وَالْعَوَامِّ بِدَارِ الْخِلَافَةِ، فَكَانَ قِيمَةُ مَا نُثِرَ مِنَ الْجَوَاهِرِ مَا يُسَاوِي مِائَةَ أَلْفِ دِينَارٍ، وَمِثْلَهَا ذَهَبًا، وَأَلْفَ أَلْفِ دِرْهَمٍ، غَيْرَ مَا كَانَ مِنْ خِلَعٍ وَأَسْمِطَةٍ وَأَقْمِشَةٍ مِمَّا يَفُوتُ الْحَصْرَ وَكَانَ وَقْتًا مَشْهُودًا لَمْ يَكُنْ سُرُورٌ بِدَارِ الْخِلَافَةِ أَبْهَجَ مِنْهُ وَلَا أَحْسَنَ وَخَلَعَ الْخَلِيفَةُ عَلَى أُمِّ وَلَدِهِ الْمُعْتَزِّ - وَهِيَ قَبِيحَةُ - خِلَعًا سَنِيَّةً وَأَعْطَاهَا وَأَجْزَلَ لَهَا الْعَطَاءَ، وَكَذَلِكَ خَلَعَ عَلَى مُؤَدَّبِ الْمُعْتَزِّ - وَهُوَ مُحَمَّدُ بْنُ عِمْرَانَ - مِنَ الْجَوْهَرِ وَالذَّهَبِ وَغَيْرِ ذَلِكَ شَيْئًا كَثِيرًا جِدًّا وَاللَّهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى أَعْلَمُ.
পৃষ্ঠা - ৮৭৯৯
মুহতাদী বিল্লাহ এর খেলাফাত কাল :
নাম ও বংশ : আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ওছেক হারুন ইবনে মু’তাসেম।
এ বছর ২৬ রজব তিনি বায়াত গ্রহন করেন। তা এভাবে যে, মু’তায্য নিজেই পদত্যাগ করেন। এবং নিজের বিপরিতে এ স্বিকার উক্তি করতে বাধ্য হলেন যে, তিনি এখন খেলাফাতের দায়িত্ব পালন করতে অক্ষম। আর একথাও স্বিকার করেন যে, তিনি নিজেই খেলাফাতের জন্য এমন ব্যক্তিকে নির্বাচন করেছেন যে খেলাফাতের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে পারবে। তিনি হলেন মুহাম্মাদ ইবনে ওছেক বিল্লাহ। তারপর সর্বপ্রথম মু’তায্য নিজেই হাত বাড়িয়ে তার হাতে বায়াত হন। তারপর বিশেষ ব্যক্তিবর্গ বায়াত হন। তারপর জনসাধারণ বায়াত হন। মু’তাযযের খেলাফাত থেকে পদত্যাগ ও মুহতাদী বিল্লাহের বায়াতের ব্যাপারে তার থেকে লিখিতভাবে নেন।

এ বছর রজব মাসের শেষে বাগদাগে এক ভয়ানক ফেতনা দেখা দেয়। তা হল বাগদাদের অধিবাসীরা এখানের খলীফার প্রতিনিধি আবূ আহমাদ ইবনে মুতাওয়াক্কিলের কাছে একত্রিত হল। যিনি মু’তাযযের ভাই ছিলেন। বাগদাদের লোকেরা তার হাতে বায়াত হওয়ার জন্য সবাইকে আহবান করতে লাগল। এ ঘটনা এ জন্য হল যে বাগদাদের অধিবাসীরা জানত না যে সামাররাতে মুহতাদী বিল্লাহ ইবনে ওছেক বায়াত গ্রহন করেছেন। এ সময় বাগদাদ ও ইরাকের অনেক লোক কে হত্যা করা হল এবং অনেক লোককে ডুবিয়ে মারা হল। এরপর ৭ই শাবান ব্যাপকভাবে মুহতাদী বিল্লাহের হাতে মানুষ বায়াত হতে শুরু করল। আর এ খবর বাগদাদে পৌছলে তখন বাগদাদবাসী জানার পর চুপ হয়ে গেল আবূ আহমাদের হাতে বায়াতের আহবান বন্ধ করে দিল। আর মুহতাদী বিল্লাহের খেলাফাত দৃঢ় হল।

এ বছর রমযান মাসে মু’তাযযের মা কবিহার কাছে অনেক সম্পদ ও অগনিত জওহার পাওয়া গেল। যার মূল্য প্রায় বিশ লাখ দিনার। এবং এক মাক্কুল (চার শত সাতাত্তর কেজিরও বেশি) মূল্যবান ঝামরাদ পাথর ছিল যা সাধারণত মানুষ দেখেনি। এবং এক মাক্কুল দামী বড় মণি-মুক্তা। এক কলিজা পরিমান লাল ইয়াকুত পাথর ছিল যা সাধারণত মানুষ দেখত পেত না। এ সমস্ত মাল সালেহ ইবনে ওসিফের কাছে গোপনে রেখেছিল।
خِلَافَةُ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدِ بْنِ الْوَاثِقِ هَارُونَ بْنِ الْمُعْتَصِمِ وَكَانَتْ بَيْعَتُهُ يَوْمَ الْأَرْبِعَاءِ لِلَّيْلَةِ بَقِيَتْ مِنْ رَجَبٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ بَعْدَ خَلْعِ الْمُعْتَزِّ نَفْسَهُ بَيْنَ يَدَيْهِ وَإِشْهَادِهِ عَلَى نَفْسِهِ بِأَنَّهُ عَاجِزٌ عَنِ الْقِيَامِ بِأَمْرِ الْخِلَافَةِ، وَأَنَّهُ قَدْ رَغِبَ إِلَى مَنْ يَقُومُ بِأَعْبَائِهَا مُحَمَّدِ بْنِ الْوَاثِقِ بِاللَّهِ. ثُمَّ مَدَّ يَدَهُ فَبَايَعَهُ قَبْلَ النَّاسِ كُلِّهِمْ، ثُمَّ بَايَعَهُ الْخَاصَّةُ ثُمَّ كَانَتْ بَيْعَةُ الْعَامَّةِ وَكُتِبَ عَلَى الْمُعْتَزِّ كِتَابٌ أُشْهِدَ عَلَيْهِ فِيهِ بِالْخَلْعِ وَالْعَجْزِ وَالْمُبَايَعَةِ لِلْمُهْتَدِي. وَفِي آخِرِ يَوْمٍ مِنْ رَجَبٍ هَذَا وَقَعَتْ بِبَغْدَادَ فِتْنَةٌ هَائِلَةٌ وَثَبَتَ فِيهَا الْعَامَّةُ عَلَى نَائِبِهَا سُلَيْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاهِرٍ وَدَعَوْا إِلَى بَيْعَةِ أَبِي أَحْمَدَ ابْنِ الْمُتَوَكِّلِ أَخِي الْمُعْتَزِّ ; وَذَلِكَ لِعَدَمِ عِلْمِ أَهْلِ بَغْدَادَ بِمَا وَقَعَ بِسَامَرَّا مِنْ بَيْعَةِ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ ابْنِ الْوَاثِقِ، وَقُتِلَ مِنْ أَهْلِ بَغْدَادَ وَغَرِقَ مِنْهُمْ خَلْقٌ كَثِيرٌ، ثُمَّ لَمَّا بَايَعَ النَّاسُ بَيْعَةَ الْعَامَّةِ لِلْمُهْتَدِي بِاللَّهِ فِي سَابِعِ شَعْبَانَ، وَبَلَغَ أَهْلَ بَغْدَادَ ذَلِكَ، سَكَنُوا وَاسْتَقَرَّتِ الْأُمُورُ وَاسْتَقَلَّ الْمُهْتَدِي بِالْخِلَافَةِ، وَلِلَّهِ الْحَمْدُ. وَفِي رَمَضَانَ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ ظَهَرَ عِنْدَ قَبِيحَةَ أُمِّ الْمُعْتَزِّ أَمْوَالٌ عَظِيمَةٌ، وَجَوَاهِرُ نَفِيسَةٌ ; كَانَ مِنْ جُمْلَةِ ذَلِكَ مَا يُقَارِبُ أَلْفَيْ أَلْفِ دِينَارٍ وَمِنَ الزُّمُرُّدِ الَّذِي لَمْ يُرَ مِثْلُهُ مِقْدَارُ مَكُّوكٍ، وَمِنَ الْحَبِّ الْكِبَارِ مَكُّوكٌ وَكَيْلَجَةُ يَاقُوتٍ أَحْمَرَ مِمَّا لَمْ يُرَ مِثْلُهُ أَيْضًا. وَقَدْ كَانَتْ قَبْلَ ذَلِكَ مُخْتَفِيَةً عِنْدَ صَالِحِ بْنِ وَصِيفٍ
পৃষ্ঠা - ৮৮০০
তারপর তার সাথে বিবাহ বসেন। (অন্য মুদ্রনে نزحت এর স্থানে تزوجت আছে। এখানে تزوجت ধরেই অনুবাদ করা হয়ে)। কিন্তু তিনি সবসময় সালেহ ইবনে ওসিফের জন্য বদ দুআ করতেন যে, হে আল্লাহ তুমি তাকে বদলা দাও। যেমন সে আমার গোপন রহস্য প্রকাশ করে দিছে। আমার ছেলে কে হত্যা করেছে। আমার সুখ-শান্তি শেষ করে দিছে। আমার সমস্ত মাল-সম্পদ ছিনিয়ে নিছে। আমাকে ঘর ছাড়া করেছে। আমাকে জোর করে তার বিছানায় নিয়ে গেছে। এ সব ঐ অবস্থার কথা যখন তার ছেলে মু’তাযযের কাছে তুর্কীরা তাদের বকেয়া ভাতা পঞ্চাশ হাজার টাকা চেয়েছিল। আর মু’তায্যকে মারার জন্য সালেহ ইবনে ওসিফের দায়িত্ব দিছিল। কিন্তু তার কাছে টাকা ছিল না। তাই তার মা কবিহার কাছে কর্জ চাইছিলেন (আল্লাহ তায়ালা তার মাকে অঙ্গল করুক) কিন্তু তার মা এমন ভাব প্রকাশ করেছিল যে, তার কাছে কিছুই নেই। অতঃপর তার ছেলে কে হত্যা করার পরে তার থেকে এ সমস্ত মাল-সম্পদ বের হয়ে আসল। ঐ সময় তার যে বৎসরিক খোরাকী নির্ধারিত ছিল তার মূল্য দশ হাজার দিনার। (এত কিছু থাকার পরেও তিনি তার ছেলে কে সহায্য করেন নাই।)

মোট কথা মুহতাদী বিল্লাহ খলীফা হিসেবে স্থির হয়ে গেলেন। আলহামদুলিল্লাহ তিনি একজন নেককার খলীফা ছিলেন। একদিন তিনি আমীর-উমারাদের বললেন আমার মা এমন না যে তার খোরাকী শুধু দশ লাখ দিনার পরিমাণ। আমি তো শুধু পেট ভরা পরিমাণ রুজি চাই। এর থেকে বেশি নিজের জন্য কিছু চাই না। তবে আমার কয়েক জন ভাই আছে যারা গরীব। তাদের প্রয়োজন মিটাতে চাই।

২৭ শে রমযান বৃহস্পতিবার আহমাদ ইবনে ইসরাইল কে যিনি উজির ছিলেন এবং ঈসা ইবনে ইবরাহীম কে যিনি বাস্তবে খৃষ্টান ছিলেন কিন্তু নিজেকে মুসলমান হিসেবে প্রকাশ করতেন, এবং তিনি কবিহার লেখকও ছিলেন। এদের উভয় কে মারার জন্য সালেহ ইবনে ওসিফ হুকুম দিলেন। হুকুম অনুপাতে প্রথমে তাদের মাল সম্পদ নিয়ে নেয়া হল। তারপর প্রত্যেক কে পাঁচশত বেত্রাঘাত মারা হল। তারপর তাদেরে কে উল্টা করে গাধার পিঠে চড়ায়ে শহরে ঘুরানো হয়। অবশেষে এ অবস্থায় তারা মারা যায়। তাদের সাথে এ ব্যবহারে খলীফা মুহতাদী বিল্লাহের রাজি ছিলেন না।
ثُمَّ نَزَحَتْ عَنْهُ، فَكَانَتْ تَدْعُو عَلَيْهِ ; تَقُولُ: اللَّهُمَّ أَخْزِ صَالِحَ بْنَ وَصِيفٍ كَمَا هَتَكَ سِتْرِي، وَقَتَلَ وَلَدِي وَبَدَّدَ شَمْلِي وَأَخَذَ مَالِي وَغَرَّبَنِي عَنْ بَلَدِي، وَرَكِبَ الْفَاحِشَةَ مِنِّي. هَذَا وَقَدْ كَانَ الْأَتْرَاكُ قَدْ طَلَبُوا مِنَ ابْنِهَا الْمُعْتَزِّ خَمْسِينَ أَلْفَ دِينَارٍ تُصْرَفُ فِي أَرْزَاقِهِمْ وَضَمِنُوا لَهُ أَنْ يَقْتُلُوا صَالِحَ بْنَ وَصِيفٍ فَلَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ مِنْ ذَلِكَ شَيْءٌ فَطَلَبَ مِنْ أُمِّهِ قَبِيحَةَ - قَبَّحَهَا اللَّهُ - أَنْ تُقْرِضَهُ ذَلِكَ، فَأَظْهَرَتْ أَنَّهُ لَا شَيْءَ عِنْدَهَا. ثُمَّ لَمَّا قُتِلَ ابْنُهَا - وَكَانَ مَا كَانَ - ظَهَرَ عِنْدَهَا مِنَ الْأَمْوَالِ مَا ذَكَرْنَا. وَقَدْ كَانَ لَهَا مِنَ الْغَلَّاتِ فِي كُلِّ سَنَةٍ مَا يَعْدِلُ عَشَرَةَ آلَافِ أَلْفِ دِينَارٍ. وَاسْتَقَرَّتِ الْخِلَافَةُ لِلْمُهْتَدِي بِاللَّهِ وَكَانَ - وَلِلَّهِ الْحَمْدُ - خَلِيفَةً صَالِحًا. قَالَ يَوْمًا لِلْأُمَرَاءِ: إِنِّي لَيْسَتْ لِي أُمٌّ لَهَا مِنَ الْغَلَّاتِ مَا يُقَاوِمُ عَشَرَةَ آلَافِ أَلْفِ دِينَارٍ، وَلَسْتُ أُرِيدُ إِلَّا الْقُوتَ فَقَطْ، وَلَا أُرِيدُ فَضْلًا عَلَى ذَلِكَ إِلَّا لِإِخْوَتِي فَإِنَّهُمْ قَدْ مَسَّتْهُمُ الْحَاجَةُ. وَفِي يَوْمِ الْخَمِيسِ لِثَلَاثٍ بَقِينَ مِنْ رَمَضَانَ أَمَرَ صَالِحُ بْنُ وَصِيفٍ بِضَرْبِ أَحْمَدَ بْنِ إِسْرَائِيلَ الَّذِي كَانَ وَزِيرًا، وَأَبِي نُوحٍ عِيسَى بْنِ إِبْرَاهِيمَ الَّذِي كَانَ نَصْرَانِيًّا فَأَظْهَرَ الْإِسْلَامَ، وَكَانَ كَاتِبَ قَبِيحَةَ فَضُرِبَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا خَمْسَمِائَةِ سَوْطٍ بَعْدَ اسْتِخْلَاصِ أَمْوَالِهِمَا، ثُمَّ طِيفَ بِهِمَا عَلَى بَغْلَيْنِ مُنَكَّسَيْنِ فَمَاتَا، وَهُمَا كَذَلِكَ وَلَمْ يَكُنْ ذَلِكَ عَنْ رِضَا الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ، وَلَكِنْ لَا يَقْدِرُ عَلَى
পৃষ্ঠা - ৮৮০১
কিন্তু সালেহ ইবনে ওসিফের কাজে সরাসরি বাধা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না।

এ বছর রমযান মাসে বাগদাদে বড় গেলযোগ শুরু হয়। যার এক পক্ষে ছিল মুহাম্মাদ ইবনে আউস ও তার অনুসারী এবং সৈন্য বাহিনী। অপর পক্ষে ছিল সাধারণ জনগণ। জনসাধারণ প্রায় এক লক্ষ ছিল। তীর, বর্শা, তরবারী ইত্যাদি দ্বারা যুদ্ধ হয়। এখানে অনেক মানুষ মারা যায়। অবশেষে মুহাম্মাদ ইবনে আউস ও তার সাথি সঙ্গিরা পরাজিত হয়। তখন জনগণ তার যে মাল-সম্পদ পেয়েছিল সব লুটে নিল। যা আনুমানিক বিশ লাখ হবে। এরপর সবাই একমত হল যে, মুহাম্মাদ ইবনে আউস কে বাগদাদ থেকে বের করে দেওয়া হবে। তারপর সে দেশের যেখানে ইচ্ছা চলে যাবে। তখন সে ভীত-সন্ত্রাস্ত হয়ে একাই বাগদাদ থেকে বের হয়ে গেলেন। জনসাধারণ এ হাঙ্গামা করার কারণ হল, তার ব্যবহার মানুষের পছন্দনীয় ছিল না। তিনি অহঙ্কারী, জেদী, সেচ্ছাচারী শাসক, বড় ফাসেক ছিলেন।

খলীফা মুহতাদী বিল্লাহ নাচ গানকারীদের কে সামাররা থেকে বের করে দিতে নির্দেশ দিলেন। শাহী বালাখানায় বিনেদনের জন্য যে সমস্ত হিংস্র জন্তু চিতা ইত্যাদি তা মেরে ফেলতে বলেন। অনুরূপভাবে শিকারের জন্য যে সমস্ত কুকুর রাখা ছিল তাও মেরে ফেলতে নির্দেশ দেন। খেল-ধুলার জিনিসপত্র নষ্ট করে ফেলতে বলেন। মাজলুমের অধিকার তাকে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। সৎ কাজে আদেশ অসৎ কাজে নিষেধের উপদেশ দেন। খলীফা নিজে জনসাধারণের অবস্থা জানার জন্য সাধারণ মানুষের সাথে বৈঠক করতে লাগলেন।
এভাবে শাম ও দুনিয়ার অনেক এলাকায় তার রাজত্ব কায়েম হয়ে গেল। অতঃপর খলীফা মুহতাদী মূসা ইবনে বুগা আল-কাবীর কে তার দরবারে ডাকলেন। যাতে তার মাধ্যমে তার এলাকায় যে সমস্ত তুর্কীগণ আছে তাদেকে আয়ত্বে আনতে পারেন। যাতে তার হুকুমত মজবুত হয়ে যায়। কিন্তু মূসা ইবনে বুগা আল-কাবীর তার নিজের এলাকায় যুদ্ধ জিহাদ হওয়ার ভয়ে খলীফার ডাকে সাড়া দিতে অস্বিকৃতী জানালেন।
الْإِنْكَارِ عَلَى صَالِحِ بْنِ وَصِيفٍ فِي بَادِئِ الْأَمْرِ. وَفِي رَمَضَانَ فِي هَذِهِ السَّنَةِ وَقَعَتْ فِتْنَةٌ بِبَغْدَادَ أَيْضًا بَيْنَ مُحَمَّدِ بْنِ أَوْسٍ وَمَنِ اتَّبَعَهُ مِنَ الشَّاكِرِيَّةِ وَالْجُنْدِ وَغَيْرِهِمْ وَبَيْنَ الْعَامَّةِ وَالرَّعَاعِ فَاجْتَمَعَ مِنَ الْعَامَّةِ نَحْوٌ مَنْ مِائَةِ أَلْفٍ، وَكَانَ بَيْنَ النَّاسِ قِتَالٌ بِالنِّبَالِ وَالرِّمَاحِ وَالسُّيُوفِ، وَقُتِلَ خَلْقٌ كَثِيرٌ، ثُمَّ انْهَزَمَ مُحَمَّدُ بْنُ أَوْسٍ وَأَصْحَابُهُ فَنَهَبَتِ الْعَامَّةُ مَا وَجَدُوا مِنْ أَمْوَالِهِ، وَكَانَ مِنْهُ شَيْءٌ يُعَادِلُ أَلْفَيْ أَلْفٍ، أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ. ثُمَّ اتَّفَقَ الْحَالُ عَلَى إِخْرَاجِ مُحَمَّدِ بْنِ أَوْسٍ مِنْ بَغْدَادَ إِلَى أَيْنَمَا أَرَادَ مِنْ سَائِرِ الْبِلَادِ فَخَرَجَ مِنْهَا خَائِفًا طَرِيدًا ; وَذَلِكَ لِأَنَّهُ لَمْ يَكُنْ عِنْدَ النَّاسِ مَرْضِيَّ السِّيرَةِ بَلْ كَانَ جَبَّارًا عَنِيدًا، وَشَيْطَانًا مَرِيدًا وَفَاسِقًا شَدِيدًا وَأَمَرَ الْخَلِيفَةُ الْمُهْتَدِي بِاللَّهِ بِأَنْ يُنْفَى الْقِيَانُ وَالْمُغَنِّيُونَ مَنْ سَامَرَّا، وَأَمَرَ بِقَتْلِ السِّبَاعِ وَالنُّمُورِ الَّتِي فِي دَارِ السُّلْطَانِ، وَالْكِلَابِ الْمُعَدَّةِ لِلصَّيْدِ أَيْضًا، وَإِبْطَالِ الْمَلَاهِي وَرَدِّ الْمَظَالِمِ، وَأَنْ يُؤْمَرَ بِالْمَعْرُوفِ وَيُنْهَى عَنِ الْمُنْكَرِ وَجَلَسَ لِلْعَامَّةِ. وَكَانَتْ وِلَايَتُهُ وَالدُّنْيَا كُلُّهَا مِنْ أَرْضِ الشَّامِ وَغَيْرِهَا مُفْتَرِقَةٌ، ثُمَّ اسْتَدْعَى الْخَلِيفَةُ الْمُهْتَدِي مُوسَى بْنَ بُغَا الْكَبِيرِ إِلَى حَضْرَتِهِ ; لِيَتَقَوَّى بِهِ عَلَى مَنْ عِنْدَهُ مِنَ الْأَتْرَاكِ ; لِتَجْتَمِعَ كَلِمَةُ الْخِلَافَةِ وَاعْتَذَرَ مِنَ اسْتِدْعَائِهِ بِمَا هُوَ فِيهِ مِنَ الْجِهَادِ بِتِلْكَ الْبِلَادِ.
পৃষ্ঠা - ৮৮০২
বসরাতে এক খারেজী আহলে বাইতের দাবী করেন :
এ বছর শাওয়াল মাসে বসরাতে এক খারেজী দাবী করেন সে আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত। সে তার বংশ এভাবে বর্ণনা করেন যে, আলী ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ ইবনে ঈসা ইবনে যায়েদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবূ তালেব। কিন্তু সে এ ক্ষেত্রে সে মিথ্যা বলেছেন। বাস্তবে সে আব্দুল কয়েস গেত্রের লোক। তার বংশক্রম মূলত এমন যে, আলী ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুর রহীম। তার মা হল কুরাহ বিনতে আলী ইবনে রাহীব ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে হাকীম। তার মা বনি আসাদ ইবনে খুজাইমার গোত্রের। রায় নামক শহরের কোন এক অঞ্চল হল তার আসল ঠিকানা।  -ঐতিহাসী ইবনে জারির এমনই বর্ণনা করেছেন।
ইবনে জারির আরো বলেন : ২৪৯ সালে আরো একবার তিনি আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। তখন সে দাবী করেছিলেন তার বংশক্রম হল- মুহাম্মাদ ইবনে ফযল ইবনে হুসাইন ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ইবনে আলী ইবনে আবী তালেব। তখন তিনি হিজর নামক এলাকার লোকদের কে তার আনুগত্য করার আহবান করেন। তখন ঐখানের কিছু লোক তার আহবানে সাড়া দিয়ে তার অনুস্বরণ করে। যার কারণে সেখানে অনেক যুদ্ধ-বিগ্রহ অনেক বড় বড় ফেতনা সৃষ্টি হয়।
ذِكْرُ خَارِجِيٍّ آخَرَ ادَّعَى أَنَّهُ مِنْ أَهْلِ الْبَيْتِ ظَهَرَ بِالْبَصْرَةِ وَفِي النِّصْفِ مِنْ شَوَّالٍ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ ظَهَرَ رَجُلٌ بِظَاهِرِ الْبَصْرَةِ زَعَمَ أَنَّهُ عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَحْمَدَ بْنِ عِيسَى بْنِ زَيْدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، وَلَمْ يَكُنْ صَادِقًا فِي دَعْوَاهُ هَذَا النَّسَبَ، وَإِنَّمَا كَانَ عَبْقَسِيًّا - مَنْ عَبْدِ الْقَيْسِ - وَاسْمُهُ عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحِيمِ، وَأُمُّهُ قُرَّةُ بِنْتُ عَلِيِّ بْنِ رَحِيبِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ حَكِيمٍ مِنْ بَنِي أَسَدِ بْنِ خُزَيْمَةَ، وَأَصْلُهُ مِنْ قَرْيَةٍ مِنْ قُرَى الرَّيِّ. قَالَهُ ابْنُ جَرِيرٍ. قَالَ: وَقَدْ خَرَجَ أَيْضًا فِي سَنَةِ تِسْعٍ وَأَرْبَعِينَ وَمِائَتَيْنِ بِالْبَحْرَيْنِ فَادَّعَى أَنَّهُ عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْفَضْلِ بْنِ الْحُسَيْنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، فَدَعَا النَّاسَ بِهَجَرَ إِلَى طَاعَتِهِ فَاتَّبَعَهُ جَمَاعَةٌ مِنْ أَهْلِهَا، فَوَقَعَ بِسَبَبِهِ قِتَالٌ كَثِيرٌ وَفِتَنٌ كِبَارٌ وَحُرُوبٌ كَثِيرَةٌ وَمُنْتَشِرَةٌ.
পৃষ্ঠা - ৮৮০৩
তিনি যখন দ্বিতীয় বার বসরাতে ভিন্নভাবে আত্মপ্রকাশ করেন তখনও কিছু লোক তার শাগরেদ হয়ে যায়। তারা কৃষক ও শ্রমিক ছিল। তারপর তিনি ঐ সমস্ত লোকদের নিয়ে দজলার তিরে গেলেন। সেখানে দীনারী নামক এলাকাতে অবস্থান করেন। তিনি দাবী করতেন যে, কুরআনের কয়েকটা বড় বড় সূরা তিনি একবার দেখে মুখস্ত করে ফেলেছেন। যে সুরাগুলো অন্য কেউ অনেক লম্বা সময়েও মুখস্ত করতে পারবে না। সে সুরাগুলো হল- সূরা ইসরা, সূরা কাহাফ, সূরা সদ।
তার সম্পর্কে আরো বলা হয়, একদা গ্রামে বসে চিন্তা করছিলেন যে, তিনি কোন শহরে যাবেন? তখন আসমান থেকে বলা হল বসরা যেতে। তখন তিনি বসরাতে যান। যখন তিনি বসরার নিকটবর্তী হন তখন বসরাবাসীকে সা’দিয়া ও বিলালিয়া নামে দুই গ্রুফে বিভক্ত পান। তখন তিনি চাইলেন দু গ্রুফের এক গ্রুফের সাথে মিশে অপর গ্রুফের উপর হামলা করতে। কিন্তু তিনি তাতে সফল হতে পারেন নি।

তারপর তিনি বাগদাদে যান। এখানে এক বছর অবস্থান করেন। এখনে এসে তার বংশ পরিচয় এভাবে দেন- মুহাম্মাদ ইবনে আহমাদ ইবনে ঈসা ইবনে যায়েদ। তার সম্পর্কে ধারণা করা হত যে, তিনি তার শাগরেদদের মনের কথা জানেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে এ সব জানিয়ে দেন। এ কথা শুনে কিছু মুর্খ্য নিচু শ্রিণির সাধারণ লোক তার অনুসারী হয়ে যায়।

তারপর তিনি এ বছর রমযান মাসে আবার বসরায় ফিরে আসেন। তখন বেশ কিছু লোক তার শাগরেদ হয়ে যায়। কিন্তু এখনো তার শাগরেদ এ পরিমান হয়নি যা নিয়ে কারো সাথে লড়াই করা যায়। তারপর বসরার একপ্রান্ত থেকে এক সৈন্য বাহিনী তার সাথে লড়াই করার জন্য আসে। তখন এই খারেজীর বাহিনীতে মাত্র তিনটি তরবারি ছাড়া আর কিছু ছিল না। অপর দিকে ঐ সৈন্য বহিনীতে অনেক সৈন্য ছিল এবং যুদ্ধের আসবাব পত্রও যতেষ্ঠ পরিমাণে ছিল। তারপরেও এই খারেজী বাহিনী এই বিশাল বাহিনীকে পারাজিত করল। অথচ তার বাহিনীতে মাত্র চার হাজার যোদ্ধা ছিল। তারপর এই খারেজী তার শাগরেদদের নিয়ে বসরাতে গেলেন।
وَلَمَّا خَرَجَ خَرْجَتَهُ هَذِهِ الثَّانِيَةَ بِظَاهِرِ الْبَصْرَةِ الْتَفَّ عَلَيْهِ خَلْقٌ مِنَ الزَّنْجِ الَّذِينَ كَانُوا يَكْسَحُونَ السِّبَاخَ فَعَبَرَ بِهِمْ دِجْلَةَ فَنَزَلَ الدِّينَارِيَّ، وَكَانَ يَزْعُمُ لِبَعْضِ الْجَهَلَةِ مِنْ أَتْبَاعِهِ أَنَّهُ يَحْيَى بْنُ عُمَرَ أَبُو الْحُسَيْنِ الْمَقْتُولُ بِنَاحِيَةِ الْكُوفَةِ وَكَانَ يَدَّعِي أَنَّهُ حَفِظَ سُوَرًا مِنَ الْقُرْآنِ فِي سَاعَةٍ وَاحِدَةٍ جَرَى بِهَا لِسَانُهُ لَا يَحْفَظُهَا غَيْرُهُ فِي مُدَّةٍ ; وَهُنَّ " سُبْحَانَ " وَالْكَهْفُ " وَص " وَأَنَّهُ فَكَّرَ يَوْمًا وَهُوَ فِي الْبَادِيَةِ إِلَى أَيِّ الْبِلَادِ يَصِيرُ، فَخُوطِبَ مِنْ سَحَابَةٍ أَنْ يَقْصِدَ الْبَصْرَةَ فَقَصَدَهَا، وَلَمَّا اقْتَرَبَ مِنْهَا وَجَدَ أَهْلَهَا مُفْتَرِقِينَ عَلَى شُعْبَتَيْنِ ; سَعْدِيَّةٍ وَبِلَالِيَّةٍ فَطَمِعَ أَنْ يَنْضَمَّ إِلَيْهِ إِحْدَاهُمَا فَيَسْتَعِينَ بِهَا عَلَى الْأُخْرَى فَلَمْ يَقْدِرْ عَلَى ذَلِكَ، فَارْتَحَلَ إِلَى بَغْدَادَ فَأَقَامَ بِهَا سَنَةً وَانْتَسَبَ بِهَا إِلَى مُحَمَّدِ بْنِ أَحْمَدَ بْنِ عِيسَى بْنِ زَيْدٍ، وَكَانَ يَزْعُمُ بِهَا أَنَّهُ يَعْلَمُ مَا فِي ضَمَائِرِ أَصْحَابِهِ، وَأَنَّ اللَّهَ يُعْلِمُهُ بِذَلِكَ فَتَبِعَهُ عَلَى ذَلِكَ جَهَلَةٌ مِنَ الطَّغَامِ، وَطَائِفَةٌ مِنْ رَعَاعِ النَّاسِ الْعَوَامِّ. ثُمَّ عَادَ إِلَى أَرْضِ الْبَصْرَةِ فِي رَمَضَانَ مِنْ هَذِهِ السَّنَةِ فَاجْتَمَعَ مَعَهُ بَشَرٌ كَثِيرٌ، وَلَكِنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُمْ عُدَدٌ يُقَاتِلُونَ بِهَا فَأَتَاهُمْ جَيْشٌ مِنْ نَاحِيَةِ الْبَصْرَةِ فَاقْتَتَلُوا جَمِيعًا، فَلَمْ يَكُنْ فِي جَيْشِ هَذَا الْخَارِجِيِّ سِوَى ثَلَاثَةِ أَسْيَافٍ وَأُولَئِكَ الْجَيْشُ مَعَهُمْ عُدَدٌ وَعَدَدٌ وَلَبُوسٌ وَمَعَ هَذَا هَزَمَ أَصْحَابُ هَذَا الْخَارِجِيِّ ذَلِكَ الْجَيْشَ وَكَانُوا فِي أَرْبَعَةِ آلَافِ مُقَاتِلٍ ثُمَّ مَضَى نَحْوَ الْبَصْرَةِ بِمَنْ
পৃষ্ঠা - ৮৮০৪
ওখানে যাওয়ার পর একজন তাকে একটি ঘোড়া হাদিয়া দিল। কিন্তু সে ঘেড়ার জিন ছিল না, লেগামও ছিল না। কিন্তু সে একটা রশি বেধে ঐ ঘোড়াই সওয়ার হলেন। এবং খেজুরের ছাল দ্বারা তৈরি রশি দ্বারা ঘোড়ার মুখ বেধে নিলেন। পথি মধ্যে এক ব্যক্তির উপর হামলা করেন। তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে তার থেকে একশত পঞ্চাশ দিনার ও এক হাজার দেরহাম নিলেন। এটাই তার এ এলাকা থেকে প্রথম গনিমতের মাল অর্জন হল। তারপর অপর আরেক ব্যক্তির উপর হামলা করেন। তার থেকে তিনিটি তুর্কী ঘোড়া ছিনিয়ে নিলেন। অন্য এক জায়গা থেকে অনেক অস্ত্র ও আসবাবপত্র লুটে নিলেন। এভাবে তার তার বাহিনীতে কিছু ঘোড়া কিছু অস্ত্র আসল। তারপর তার মাঝে ও বসরার প্রতিনিধির সৈন্য বাহিনীর মাঝে কয়েক বার যুদ্ধ হল। আর প্রত্যেকবারই তিনি তাদের কে পরাজিত করেন। প্রতি বারই তিনি এমন কিছু মাল-সম্পদ পান যাতে তার শক্তি বাড়তে থাকে। তার শাগরেদও দিন দিন বাড়তে থাকে। তার সৈন্য বাহিনী বড় হতে থাকে। তার এ ক্ষমতা ও সফলতা সত্তেও সে সাধারণ মানুষের মালের দিকে হাত বাড়াতেন না। তার উদ্দেশ্য ছিল শুধু মাত্র বাদশা ও শাসকদের মাল ছিনিয়ে নেয়া।

ঘটনাক্রমে একবার তার শাদরেদগন এক যুদ্ধে পরাজিত হয়। তারপর সবাই তার কাছে ফিরে আসে এবং তার চারপাশে একত্রিত হয়। তখন তিনি পুনঃরায় আবার বসরাতে হামলা করতে পাঠান। তাদেরকে পরাজিত করনে। তাদের অনেক লোককে হত্যা করেন। আর অনেককে বন্ধি করেন। তার কাছে যে বন্ধিকে আনা তাকে সাথে সাথে কতল করেন। এভাবে তার ক্ষমতা আরো মজবুত হল। বসরাবাসী তকে ভয় পেতে লাগল। তখন খলীফা এক বিশেষ সৈন্য বাহিনীকে পাঠান। এই হবশী খারেজীর বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার জন্য। আল্লাহ তায়ালা তাকে অমঙ্গল করুক। এ সময় তার বিশেষ কিছু শাগরেদ তাকে পরামর্শ দিল যে, তিনি নিজেই যেন হটাৎ বসরাতে হামলা করে জোর পূর্বক বসরা দখল করে নেন। কিন্তু তিনি এ পরামর্শ গ্রহন করেননি। তিনি বললেন আমরা আস্তে আস্তে তাদের নিকটতম হয়ে যাব। তখন বসরাবাসী নিজেরাই তাদের সৈন্য বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের কে ডাকবে। এই খারেজী ও বসরাবসী সম্পর্কে আরো আলোচনা পরবর্তী বছরের আলোচনায় আসবে। ইনশাআল্লাহ।
مَعَهُ فَأَهْدَى لَهُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ جُبَّا فَرَسًا، فَلَمْ يَجِدْ لَهَا سَرْجًا وَلَا لِجَامًا، فَأَلْقَى عَلَيْهَا حَبْلًا وَرَكِبَهَا، وَشَنَقَ حَنَكَهَا بِلِيفٍ، ثُمَّ صَادَرَ رَجُلًا فَتَهَدَّدَهُ بِالْقَتْلِ فَأَخَذَ مِنْهُ مِائَةً وَخَمْسِينَ دِينَارًا وَأَلْفَ دِرْهَمٍ فَكَانَ هَذَا أَوَّلَ مَالٍ غَنِمَهُ مِنْ هَذِهِ الْبِلَادِ، وَأَخَذَ مِنْ آخَرَ ثَلَاثَةَ بَرَاذِينَ، وَأَخَذَ مِنْ مَوْضِعٍ آخَرَ شَيْئًا مِنَ الْأَسْلِحَةِ وَالْأَمْتِعَةِ، فَسَارَ فِي جَيْشِهِ قَلِيلُ سِلَاحٍ وَخُيُولٍ، ثُمَّ جَرَتْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ جُيُوشٍ مِنْ جِهَةِ نَائِبِ الْبَصْرَةِ وَقْعَاتٌ مُتَعَدِّدَةٌ يَهْزِمُهُمْ فِيهَا وَكُلُّ مَا لِأَمْرِهِ يَقْوَى وَيَتَزَايَدُ أَصْحَابُهُ وَيَعْظُمُ جَيْشُهُ، وَهُوَ مَعَ ذَلِكَ لَا يَتَعَرَّضُ لِأَمْوَالِ النَّاسِ، وَإِنَّمَا يُرِيدُ أَخْذَ أَمْوَالِ السُّلْطَانِ. وَقَدِ انْهَزَمَ أَصْحَابُهُ فِي بَعْضِ تِلْكَ الْحُرُوبِ هَزِيمَةً فَظِيعَةً ثُمَّ تَرَاجَعُوا إِلَيْهِ وَاجْتَمَعُوا حَوْلَهُ، ثُمَّ كَرُّوا إِلَى أَهْلِ الْبَصْرَةِ فَهَزَمُوهُمْ وَقَتَلُوا مِنْهُمْ خَلْقًا وَأَسَرُوا آخَرِينَ، فَكَانَ لَا يُؤْتَى بِأَحَدٍ مِنَ الْأَسْرَى إِلَّا قَتَلَهُ، ثُمَّ قَوِيَ أَمْرُهُ بَعْدَ ذَلِكَ، وَخَافَهُ أَهْلُ الْبَصْرَةِ وَبَعَثَ الْخَلِيفَةُ إِلَيْهَا مَدَدًا يَكُونُونَ لَهُمْ عَلَى صَاحِبِ الزَّنْجِ - هَذَا الْخَارِجِيِّ قَبَّحَهُ اللَّهُ - ثُمَّ أَشَارَ عَلَيْهِ رُءُوسُ أَصْحَابِهِ أَنْ يَهْجُمَ بِهِمْ عَلَى أَهْلِ الْبَصْرَةِ فَيَدْخُلُونَهَا عَنْوَةً، فَهَجَّنَ آرَاءَهُمْ، وَقَالَ: بَلْ نَكُونُ مِنْهَا قَرِيبًا حَتَّى يَكُونُوا هُمُ الَّذِينَ يَطْلُبُونَنَا إِلَيْهَا، وَيَخْطُبُونَنَا عَلَيْهَا. وَسَيَأْتِي مَا كَانَ مِنْ أَمْرِهِ،