ফতোয়া: স্বামী-স্ত্রী

ফতোয়া নং: ৭৩৩৭
তারিখ: ১৯-ডিসেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে ঘুম থেকে জাগ্রত করার উদ্দেশ্যে পানি ছিটানো ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার একটি প্রশ্ন,আমার বান্ধবীর কাছ থেকে শুনেছি স্বামীকে নামাযের জন্য জাগ্রত করার উদ্দেশ্যে পানি ছিটাও দেয়া যাবে ৷ এটা কতটুকু সঠিক? জানালে উপকৃত হবো ৷
উত্তর
স্বামী যদি বদমেজাজী না হয় , পানি ছিটালে স্ত্রীর উপর রাগান্বিত না হয় ৷ বরং খুশি হয়ে এটাকে গনিমত মনে করে ৷ তাহলে স্বামি-স্ত্রী একে অপরকে নিদ্রা থেকে জাগানোর উদ্দেশ্যে পানি ছিটালেও আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন ৷ কেননা হাদীস শরীফে আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্নিত আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি রাতে ঘুম থেকে জেগে তাহাজ্জুদ নামায পড়ে এবং সে তার স্ত্রীকেও ঘুম থেকে জাগ্রত করে নামায পড়ায় এমনকি না উঠলে, তার মুখে সামান্য পানি ছিটিয়ে দেয়, তাহলে তার উপর আল্লাহ তায়ালা রহমত বর্ষণ করেন । অনুরুপ কোন স্ত্রী যদি রাত্রিকালে জাগ্রত হয়ে তাহাজ্জুদ নামায পড়ে এবং তার স্বামীকে নামাযের জন্য জাগ্রত করে, এমনকি না জাগলে স্ত্রী তার চেহারায় হালকা পানি ছিটিয়ে দেয়, তাহলে তার প্রতিও আল্লাহ তায়ালা রহমত বর্ষন করেন ৷
-সুনানে আবি দাউদ, ১/২০৫, হাদীস নং ১৪৫০; সুনানে নাসাঈ,১/ ১৮৩, হাদীস নং ১৬০৯; মেশকাত শরীফ,১/১০৯৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৭২৮৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার এক বন্ধু মাঝেমধ্যে রসিকতার ছলে স্ত্রীকে আপু বলে ডাকে।...

প্রশ্ন

আমার এক বন্ধু মাঝেমধ্যে রসিকতার ছলে স্ত্রীকে আপু বলে ডাকে। আমিও দু একদিন আমার স্ত্রীকে আপু বলে ডেকেছি। আমার প্রশ্ন হল, স্ত্রীকে আপু বলে ডাকলে বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হয় কি?

উত্তর

স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকা মাকরূহ। হাদীস শরীফে এসেছে,

عَنْ أَبِي تَمِيمَةَ الْهُجَيْمِيِّ، أَنَّ رَجُلًا قَالَ لِامْرَأَتِهِ: يَا أُخَيَّةُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أُخْتُكَ هِيَ؟ فَكَرِهَ ذَلِكَ وَنَهَى عَنْهُ.

এক লোক তার স্ত্রীকে বোন বলে ডাকলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনতে পেয়ে তা অপছন্দ করেন এবং তাকে এভাবে ডাকতে নিষেধ করেছেন। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২২০৪

তবে কেউ এমন বলে ফেললে এর কারণে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।

-ফাতহুল কাদীর ৪/৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫০৭; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৫০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

গত কয়েক মাস আগে আমার স্ত্রী মারা যায়। এরপর আমি...

প্রশ্ন

গত কয়েক মাস আগে আমার স্ত্রী মারা যায়। এরপর আমি নতুন বিবাহ করি। জানতে চাই, আমার প্রথম স্ত্রীর মা তথা প্রথম শাশুড়ির সাথে এখন কি দেখা করতে পারব? সঠিক উত্তর জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

স্ত্রী বেঁচে থাক বা না থাক সর্বাবস্থায় স্ত্রীর মা মুহাররামাতের অন্তর্ভুক্ত। তাই আপনার ঐ শাশুড়ির সাথে এখনও দেখা করতে পারবেন।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১০৮২১; কিতাবুল আছল ৪/৩৬১; মাবসূত, সারাখসী ৪/১৯৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৯১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার এক চাচাত ভাইয়ের সাথে এক মেয়ের অবৈধ সম্পর্ক ছিল।...

প্রশ্ন

আমার এক চাচাত ভাইয়ের সাথে এক মেয়ের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। প্রথমদিকে মেয়ের পরিবার জানত না। কিন্তু কিছুদিন পর মেয়েটি অন্তস্বত্তা হয়ে যায়। পরিবারের চাপাচাপিতে সে সব খুলে বলে। ওরা মামলা করে। এখন মেয়ের পরিবার ঐ ছেলের সাথেই বিয়ে দিতে চায়। জানার বিষয় হল, তাদের বিবাহ সহীহ হবে কি না? এবং তাদের দাম্পত্য জীবন সহীহ হবে কি না? নাকি এতে অন্য কোনো বিধান রয়েছে।

উত্তর

আপনার চাচাত ভাইয়ের জন্য ঐ মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া সহীহ হবে, এবং বিয়ের পরে তাদের জন্য স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে কোনো বাধা নেই।

عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ قَالَ : سُئِلَ عَنِ الرَّجُلِ يَفْجُرُ بِالْمَرْأَةِ ثُمَّ يَتَزَوَّجُهَا، قَالَ : هُوَ أَحَقُّ بِهَا، هُوَ أَفْسَدَهَا.

হযরত জাবের ইবনে যায়েদ রা.-কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে পুরুষ কোনো নারীর সাথে ব্যভিচার করেছে সে কি তাকে বিয়ে করতে পারবে? তিনি বললেন, যে তার সম্ভ্রম নষ্ট করেছে সেই তো তার বেশি হকদার। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,হাদীস : ১৭০৫৪

প্রকাশ থাকে যে, ব্যভিচার জঘন্যতম গুনাহের কাজ। বড় মাপের কবীরা গুনাহ। আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেন-

وَ لَا تَقْرَبُوا الزِّنٰۤی اِنَّهٗ كَانَ فَاحِشَةً وَ سَآءَ سَبِیْلًا

আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। সেটা অশ্লীলতা ও নিকৃষ্ট পন্থা। -সূরা বনী ইসরাইল ( ১৭) : ৩০

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

لَا يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ

কোন ব্যক্তি মুমিন থাকা অবস্থায় ব্যভিচার করতে পারে না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭

সুতরাং তাদের উভয়ের কর্তব্য খাঁটি দিলে তাওবা ইস্তিগফার করা।

-ফাতহুল কাদীর ৩/১৪৫; আলবাহরুর রায়েক ৩/১০৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৪৮৫; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০২০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

কোনো মহিলার স্বামী খোলা তালাক দিলে খোলা তালাকদাতা স্বামী তার...

প্রশ্ন

কোনো মহিলার স্বামী খোলা তালাক দিলে খোলা তালাকদাতা স্বামী তার স্ত্রী থেকে কী পরিমাণ বিনিময় নিতে পারবে? উত্তরটা জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

খোলা তালাক যদি স্বামীর দোষের কারণে হয়ে থাকে তাহলে তালাকদাতার জন্য খোলার বিনিময়ে স্ত্রী থেকে কোনো কিছু গ্রহণ করা বৈধ হবে না। আর স্ত্রীর দোষের কারণে হয়ে থাকলে মহর সমপরিমাণ নেওয়া বৈধ হবে। এরচেয়ে বেশি নেওয়া মাকরূহ বা অনুত্তম হবে।

প্রখ্যাত তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন,

إذا جاء الأمر من قبلها حل له ما أخذ منها، فإن جاء من قبله لم يحل له ما أخذ منها.

‘খোলা তালাক যদি মহিলার দোষের কারণে হয়ে থাকে তাহলে স্বামীর জন্য তার থেকে যা নিবে তা বৈধ হবে। আর যদি স্বামীর দোষে হয় তাহলে স্ত্রী থেকে যা নিবে তা বৈধ হবে না।’ -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১১৮২৫

আর ইমাম যুহরী রাহ. বলেন,

لا يحل للرجل أن يأخذ من امرأته شيئا من الفدية حتى يكون النشوز من قبلها، قيل له: وكيف يكون النشوز؟ قال: النشوز: أن تظهر له البغضاء، وتسيء عشرته، وتظهر له الكراهية، وتعصي أمره.

‘তালাকের বিনিময়ে স্ত্রী থেকে কিছু নেওয়া স্বামীর জন্য বৈধ হবে না যতক্ষণ না অবাধ্যতা স্ত্রীর পক্ষ থেকে না হবে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, অবাধ্যতা কখন সাব্যস্ত হবে? তিনি বললেন, সে যদি স্বামীর সাথে বিদ্বেষ প্রকাশ করে, তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, তার প্রতি অপছন্দ প্রকাশ করে ও তার হুকুম অমান্য করে।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১১৮১৫; কিতাবুল আছল ৪/৫৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৩৫; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ৪/৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৮৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪৪৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৮১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমাদের এলাকায় প্রচলন আছে, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামী ফিতরা আদায়...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় প্রচলন আছে, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামী ফিতরা আদায় করে দেয়। স্ত্রী নিজে তার ফিতরা আদায় করে না। এতে কি স্ত্রীর সদাকাতুল ফিতর আদায় হবে? অথচ তার সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়ার মতো সম্পদ আছে। আর স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া আদায় করলে আদায় হবে কি না?

উত্তর

হাঁ, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর সদাকাতুল ফিতর আদায় করে দেওয়ার যেহেতু প্রচলন আছে তাই স্বামী স্ত্রীর সদাকাতুল ফিতর আদায় করে দিলে আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তার অনুমতি নেওয়া জরুরি নয়। এবং এ কারণে স্বামী সওয়াবের অধিকারী হবে। নাফে রাহ. বলেন,

كَانَ ابْنُ عُمَرَ يُعْطِيهِ عَمَّنْ يَعُولُ مِنْ نِسَائِهِ

‘আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. তাঁর স্ত্রীদের পক্ষ থেকে সদাকাতুল ফিতর প্রদান করতেন।’ -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১০৪৫৫

তবে স্ত্রীর দায়িত্ব হল, হয়ত সদাকাতুল ফিতর নিজে আদায় করা, বা তার পক্ষ থেকে তা আদায় করা হয়েছে কি না এর খোঁজ নেওয়া।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১০৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৬১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৭৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি দিনের বেলা ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুম থেকে ওঠার পর স্ত্রী...

প্রশ্ন

আমি দিনের বেলা ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুম থেকে ওঠার পর স্ত্রী বলছে, আমি নাকি ঘুমন্ত অবস্থায় অস্ফুট স্বরে তোমাকে তালাক দিলাম কথাটি বলেছি। কিন্তু আমি এর কিছুই জানি না। আমার মামা শশুর বলছেন, এর দ্বারা আমার স্ত্রী নাকি তালাক হয়ে গেছে। হুযুরের কাছে জানতে চাই, ঘুমের ঘোরে আমি কী বলেছি তা তো জানি না। তবুও আমার স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে?

উত্তর

ঘুমন্ত ব্যক্তির তালাক পতিত হয় না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দিলেও তা পতিত হয়নি। হাদীস শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ: عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ، وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَحْتَلِمَ، وَعَنِ الْمَجْنُونِ حَتَّى يَعْقِلَ.

‘তিন শ্রেণীর মানুষ থেকে কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে; ঘুমন্ত ব্যক্তি জাগ্রত হওয়ার আগ পর্যন্ত, নাবালেগ বালেগ হওয়ার আগ পর্যন্ত ও পাগল ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত।’-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩০১৬

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ঘুমন্ত ব্যক্তির তালাক ধর্তব্য নয়।

-কিতাবুল আসার ২/৪৫১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১১৪২৫; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৫/১৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৩৯১; রদ্দুল মুহতার ৩/২৪৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি নিয়মিত মসজিদেই নামায পড়ি। কখনো মসজিদে যেতে দেরি হয়ে...

প্রশ্ন

আমি নিয়মিত মসজিদেই নামায পড়ি। কখনো মসজিদে যেতে দেরি হয়ে গেলে বাড়িতে আমার স্ত্রীকে নিয়ে জামাত করি। এক্ষেত্রে তাকে আমার ডান পাশে একটু পেছনে দাঁড় করাই। অর্থাৎ তার পায়ের আঙ্গুল আমার গোড়ালির পরে হয়ে থাকে। আমার এ নিয়ম কি ঠিক আছে?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত নিয়ম ঠিক নয়। এক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম হল, স্ত্রীকে নিজের এক কাতার পেছনে দাঁড় করানো। হাদীস শরীফে আছে, আনাস রা. বলেন,

صَلَّيْتُ أَنَا وَيَتِيمٌ فِي بَيْتِنَا خَلْفَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَأُمِّي أُمُّ سُلَيْمٍ خَلْفَنَا

‘আমাদের ঘরে আমি এবং এক ইয়াতিম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পেছনে (জামাতের সাথে) নামায পড়েছি। আর আমাদের পেছনে আমার মা উম্মে সুলাইম (ইকতিদা করেন)। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৭২৭

তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নিয়মসম্মত না হলেও আপনাদের ঐ নামাযগুলো আদায় হয়ে গেছে। উল্লেখ্য যে, উম্মে সুলাইম রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাহরাম ছিলেন।

-সহীহ বুখারী, হাদীস ৭২৭; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৯৫; রদ্দুল মুহতার ১/৫৭২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯২৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে হায়েয অবস্থায় সহবাস করে। এখন...

প্রশ্ন

কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে হায়েয অবস্থায় সহবাস করে। এখন তার করণীয় কী? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

হায়েয অবস্থায় জেনেশুনে স্ত্রী সহবাস করা হারাম। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) তারা আপনাকে হায়েয সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে দিন, তা অপবিত্রতা। অতএব তোমরা হায়েযের সময় স্ত্রীদের থেকে পৃথক থাক এবং তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়। Ñসূরা বাকারা (২) : ২২২

সুতরাং ঐ ব্যক্তির কর্তব্য হল, আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা-ইস্তিগফার করা।

আর এক্ষেত্রে হায়েযের শুরুর দিকে সহবাস হলে এক দীনার আর শেষ দিকে হলে অর্ধ দীনার সদকা করার কথা কোনো কোনো হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তাই এক্ষেত্রে তাওবা-ইস্তিগফারের পাশাপাশি উপরোক্ত নিয়মে সদকা করে দেওয়া উত্তম হবে।

প্রকাশ থাকে যে, দীনার একটি স্বর্ণমুদ্রা। যা বর্তমান হিসেবে ৪.৩৭৪ গ্রাম সমপরিমাণ স্বর্ণ।

Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ১৩৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২২০১; বাযলুল মাজহূদ ২/২৭৮; আলবাহরুর রায়েক ১/১৯৭; ফাতহুল কাদীর ১/১৪৭; ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৫৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯২১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

গত জানুয়ারি মাসে আমার স্বামী আমাকে তিন তালাক দিয়েছে। ইদ্দতের...

প্রশ্ন

গত জানুয়ারি মাসে আমার স্বামী আমাকে তিন তালাক দিয়েছে। ইদ্দতের এক হায়েয অতিবাহিত হওয়ার পরপরই অন্য একজন পুরুষের সঙ্গে আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। এরপর থেকে দুই সপ্তাহ যাবত আমরা একসঙ্গেই থাকছি। এখন জানতে পারলাম যে, ইদ্দতের মাঝখানে হওয়ায় আমাদের বিবাহটি সহীহ হয়নি। কথাটি কি সঠিক? সঠিক হলে এখন আমাদের করণীয় কী? উল্লেখ্য, বর্তমান স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক জীবন যাপন করতে আমার পূর্ণ আগ্রহ রয়েছে।

উত্তর

ইদ্দত চলাকালীন অন্য কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া নিষিদ্ধ। তাই ইদ্দত অবস্থায় আপনাদের উক্ত বিবাহটি সহীহ হয়নি। এতদিন একত্রে বসবাস করা হারাম হয়েছে। আপনাদের কর্তব্য হল, এখনই আলাদা হয়ে যাওয়া এবং আল্লাহ তাআলার নিকট তওবা-ইস্তেগফার করা। তবে তালাক প্রদানের পর পূর্ণ ইদ্দত (তিনটি মাসিক স্রাব) অতিবাহিত হলে আপনি বর্তমান লোকটির সঙ্গে নতুনভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দাম্পত্য জীবন যাপন করতে পারবেন।

Ñবাদায়েউস সানায়ে ৩/৩২৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৬৯; রদ্দুল মুহতার ৩/৫১৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৭৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

একদিন কোনো একটি বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আমার ঝগড়া বেধে যায়।...

প্রশ্ন

একদিন কোনো একটি বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আমার ঝগড়া বেধে যায়। একপর্যায়ে আমি বলি, তুই যদি আর একটা কথা বলিস তাহলে তোকে ছেড়ে দেব। তারপরও সে কথা বলে। তখন আমি বলি, যা তোকে ছেড়ে দিলাম। উক্ত কথার দ্বারা আমার তালাক দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল না। তাকে চুপ করানোর জন্য বলেছিলাম। আমি জানতে চাচ্ছি, উক্ত কথার কারণে আমার স্ত্রী কি তালাক হয়ে গেছে?

উত্তর

আমাদের সমাজে তোকে ছেড়ে দিলাম বাক্যটি তালাকের জন্যই ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত কথা দ্বারা তালাকের উদ্দেশ্য না থাকলেও আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে। এখন আপনি পুণরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে ইদ্দতের মধ্যে রজআত অর্থাৎ স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবেন।

রজআতের উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে, ইদ্দতের ভিতরে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করা। যেমন, এ কথা বলবেন যে, তোমাকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করলাম। এর দ্বারাই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুণঃবহাল হয়ে যাবে।

আর যদি আপনি ইদ্দতের ভিতরে (ঋতুমতী মহিলার জন্য তিনটি হায়েয অতিক্রান্ত হওয়া পর্যন্ত আর অন্তঃসত্তা মহিলার জন্য সন্তান প্রসব পর্যন্ত) রজআত না করেন তবে ইদ্দত শেষ হওয়ার সাথে সাথে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আবার ঘর-সংসার করতে

চাইলে নতুন মোহর ধার্য করে দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নতুন করে বিবাহ করতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, এই স্ত্রীকে ইদ্দতের ভিতরে কিংবা ইদ্দত শেষ হয়ার পর পুণরায় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলে পরবর্তীতে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। তাই পরবর্তীতে এই স্ত্রীকে কখনো দুই তালাক দিলে পূর্বের এক তালাকের সাথে মিলে তিন তালাক হয়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে বিবাহ করেও একত্রিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। তাই সামনে থেকে তালাক বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া অন্যায়। অনেক ক্ষেত্রে তালাক স্ত্রী-সন্তানের উপর এবং নিজের উপরও জুলুমের কারণ হয়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা কর্তব্য।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪৩১; আলবাহরুর রায়েক ৩/৩০০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪৬৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২৯৯; আলবাহরুররায়েক ৪/৫০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৮৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি এক লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য হয়নি। এ অবস্থায়...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি এক লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য হয়নি। এ অবস্থায় লোকটি তাকে তালাক দেয়। জানতে চাই, ঐ ব্যক্তির উপর কি পূর্ণ দেন মোহর আদায় করা জরুরি?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্তক্ষেত্রে স্বামীকে পূর্ণ মোহর আদায় করতে হবে। কেননা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মিলন না হলেও শুধু নির্জনবাসের দ্বারাই পূর্ণ মোহর ওয়াজিব হয়ে যায়। তবে যদি সহবাসের প্রতিবন্ধক কোনো ওজর থাকা প্রমাণিত হয় যেমন, স্ত্রী হায়েয অবস্থা থাকা বা উভয়ের কেউ যদি এমন অসুস্থ থাকে, যা সহবাসের প্রতিবন্ধক হয় তাহলে অর্ধেক মোহর আবশ্যক হবে।

-কিতাবুল আসল ৪/৪৩৬-৪৩৭; হেদায়া ফাতহুল কাদীর ৩/২১৭ বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৮৪, ৫৮৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১১৪, ১১৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৩১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার একজন ছোট বোন আছে। এক দেড় বছর আগে তার...

প্রশ্ন

আমার একজন ছোট বোন আছে। এক দেড় বছর আগে তার স্বামী তাকে তিন তালাক দিয়ে দেয়। ফলে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। অনেক দিন পর তারা আবার একসঙ্গে থাকতে আগ্রহী হয়। তখন আমার স্বামী আমার বোনকে বিয়ে করে এবং তার সঙ্গে রাত যাপন করে। এরপর তাকে তিন তালাক দিয়ে দেয়। এখন ইদ্দত শেষ হওয়ার পর আমার বোন তার প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে আর কোনো বাধা আছে কি?

উত্তর

স্ত্রীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকা অবস্থায় তার বোনকে বিবাহ করা বৈধ নয়। করলেও সে বিবাহ শুদ্ধ হয় না। তাই আপনার স্বামীর সাথে আপনার বোনের বিবাহটি শুদ্ধ হয়নি এবং তার সাথে একত্রে থাকাও হারাম হয়েছে। সুতরাং এগুলোর উপর ভিত্তি করে আপনার বোনের জন্য তার পূর্বের স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াও বৈধ হবে না।

উল্লেখ্য, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, বর্তমানে উম্মতের একটা বড় অংশের মাঝে ইসলামী শিক্ষার চর্চা এতটাই কমে এসেছে যে, ইসলামের মৌলিক বিধানাবলির জ্ঞানটুকুও অনেক মানুষের থাকে না।

হালাল-হারাম বিষয়ক বিধানাবলি তো ঐসব জরুরিয়াত (অপরিহার্য জ্ঞান)-এর অন্তর্ভুক্ত, যা অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরয। আর এক বোন বিবাহে থাকা অবস্থায় তার বোনকে বিবাহ করা যে হারাম তা তো এতই স্পষ্ট মাসআলা যে, সকলেরই তা জানা।

মোটকথা, এই মারাত্মক গুনাহের কারণে এর সাথে সম্পৃক্ত সকলকেই খাঁটি মনে তাওবা-ইস্তেগফার করা উচিত। এবং দ্বীনী ইলম অর্জন করা ও তা আমলে বাস্তবায়নের জন্য সবাইকেই পুরোপুরি সচেষ্ট হওয়া উচিত।

- সূরা নিসা (৪) : ২৩; সহীহ বুখারী, হাদীস ৫১০৭; মুখতাসারুত তহাবী ৪/৩৩০; আলমাবসূত, সারাখসী ৬/৯; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৯৬;

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৭১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্বামী স্ত্রীকে খোলা তালাক দিলে ইদ্দত চলাকালীন স্ত্রীর ভরণ-পোষণ কে...

প্রশ্ন

স্বামী স্ত্রীকে খোলা তালাক দিলে ইদ্দত চলাকালীন স্ত্রীর ভরণ-পোষণ কে বহন করবে?

উত্তর

সাধারণ তালাকের মতো খোলা তালাকের ক্ষেত্রেও ইদ্দত চলাকালীন স্ত্রীর ভরণ-পোষণ স্বামীকেই বহন করতে হবে। তবে যদি খোলা তালাকের চুক্তির সময় ইদ্দতের মধ্যে ভরণ-পোষণ না দেওয়ার শর্ত করা হয় তাহলে তা সহীহ হবে এবং সেক্ষেত্রে স্ত্রী ইদ্দতকালীন ভরণ-পোষণ পাবে না।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৮৮১১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪৫২-৪৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৩৯; ফাতহুল কাদীর ৪/৭৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/৮৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৭০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি জানি, বিয়ে করার জন্য কাবিন শর্ত। বর্তমানে দেখা যায়,...

প্রশ্ন

আমি জানি, বিয়ে করার জন্য কাবিন শর্ত। বর্তমানে দেখা যায়, অনেকে বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ার পর মা-বাবা কিংবা গার্ডিয়ানদের সম্মতিতে কাবিন না করে শুধু আংটি পরিয়ে রাখে। এখন ঐ ছেলে-মেয়ে পরস্পরে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবে কি? অনুগ্রহ করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

আংটি পরানোর দ্বারা বিবাহ সংঘটিত হয় না। এটি উভয় পক্ষের মাঝে সামাজিকভাবে কেবলমাত্র বিবাহের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা বুঝায়। সুতরাং ইজাব-কবুল ছাড়া শুধু আংটি পরানোর কারণে তারা স্বামী-স্ত্রী গণ্য হবে না। তাই ইজাব-কবুলের আগে তাদের দেখা-সাক্ষাৎ ও মেলামেশা বৈধ নয়।

প্রকাশ থাকে যে, বর্তমানে বিবাহের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর আকদ না করিয়ে আংটি পরিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এভাবে রেখে দেওয়ার রেওয়াজটি ঠিক নয়। এ কারণে ছেলে-মেয়ে ও তাদের নিকটজনদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও মেলামেশা করার গুনাহ বাড়তে থাকে।

উল্লেখ্য যে, বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য কাবিন করা শর্ত নয়; বরং দু’জন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাক্ষীর সামনে বিয়ের ইজাব-কবুল করার দ্বারাই বিবাহ সংঘটিত হয়ে যায়।

-রদ্দুল মুহতার ১/১১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১ ও ৩/১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৬৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দিলে কি তালাক হবে? না হলে এর...

প্রশ্ন

ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দিলে কি তালাক হবে? না হলে এর কারণ কী? দলিলপ্রমাণসহ জানানোর অনুরোধ রইল।

উত্তর

তালাকের সাথে ইনশাআল্লাহ বললে তালাককে আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার সাথে শর্তযুক্ত করা হয়। তাই ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দেওয়ার অর্থ হল আল্লাহ যদি চান তাহলে স্ত্রী তালাক। এই শর্তটি পাওয়া যাওয়ার বিষয়ে যেহেতু নিশ্চিত হওয়া যায় না তাই ইনশাআল্লাহ বলে তালাক দিলে তালাক কার্যকর হয় না।

ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. তার কিতাবুল আছারে ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণনা করেন যে, কোনো ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে ইনশাআল্লাহ তুমি তিন তালাক। তার এ কথার দ্বারা স্ত্রীর উপর কোনো তালাক পতিত হবে না। -কিতাবুল আছার ৫১১

ইমাম আবদুর রাযযাক রাহ. তার মুসান্নাফে অনুরূপ বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন, আবু হানীফা এমনই বলতেন, মানুষরাও এ মতের উপর প্রতিষ্ঠিত। আমার মতও এটিই।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১১৩২৭; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৫/৮৬; ফাতহুল কাদীর ৩/৪৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৬৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি পড়ালেখা করে। উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের উদ্দেশে দেশের একটি...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি পড়ালেখা করে। উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের উদ্দেশে দেশের একটি বড় প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করে। ঐ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য অবিবাহিত হওয়া শর্ত। কিন্তু সে বিবাহিত ছিল। তাই বিবাহিত হওয়া সত্তে¡ও ভর্তি হওয়ার জন্য সে তার জীবন বৃত্তান্তে অবিবাহিত লিখে এবং পরবর্তীতে মৌখিকভাবেও একথা স্বীকার করে যে, সে অবিবাহিত, তার কোনো স্ত্রী নেই। বর্তমানে সে ঐ প্রতিষ্ঠানের একজন ছাত্র।

জানার বিষয় হল, এভাবে বলা ও লিখার কারণে তার স্ত্রীর উপর কি কোনো তালাক পতিত হয়েছে?

উত্তর

বিবাহিত হওয়া সত্তে¡ও মিথ্যা বলে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দেওয়া এবং স্ত্রী নেই বলা মারাত্মক অন্যায় ও কবীরা গুনাহ হয়েছে। এজন্য আল্লাহ তাআলার নিকট কায়মনোবাক্যে ইস্তিগফার করতে হবে। অবশ্য এভাবে মিথ্যা বলা ও লেখার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেনি এবং স্ত্রীর উপর কোনো তালাকও পতিত হয়নি। তাদের বিবাহ যথারীতি বহাল রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, নিজে অবিবাহিত প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানের শর্ত ভঙ্গ করে সেখানে ভর্তি হওয়া মারাত্মক অন্যায় হয়েছে। এটি ধোঁকা ও প্রতারণার শামিল। যা কোনো মুসলমানের কাজ নয়।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৭১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৮৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২৮৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬২১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

মাস কয়েক আগে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের দিন আমার শাশুড়ি...

প্রশ্ন

মাস কয়েক আগে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের দিন আমার শাশুড়ি কিছু অলংকার নিয়ে এসে বলেন, এটা আমার পক্ষ থেকে গিফট, এটা আমার বড় ছেলের পক্ষ থেকে, এটা আমার ছোট ছেলের পক্ষ থেকে। আমাকে ঐ অলংকারগুলো পরিয়েও দেন।

আমার জানার বিষয় হল, এ অলংকারগুলোর কি আমি মালিক হয়ে গেছি, নাকি আমার স্বামী চাইলে এগুলোকে মহর হিসেবে গণ্য করতে পারবেন? বিষয়টির সমাধান জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ অলংকারগুলো দেওয়ার সময় আপনার শাশুড়ি যেহেতু তার পক্ষ থেকে এবং স্বামীর দুই ভাইয়ের পক্ষ থেকে গিফটের (হাদিয়ার) বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন তাই ঐ অলংকারগুলো আপনার জন্য হাদিয়া হিসেবেই গণ্য হবে। সেগুলোর মালিক সরাসরি আপনিই। আপনার স্বামীর জন্য এ অলংকারগুলো মহর হিসেবে গণ্য করা জায়েয হবে না। কেননা মহর দেওয়ার দায়িত্ব স্বামীর উপর। স্বামী নিজে কিংবা তার পক্ষ থেকে কেউ মহর হিসেবে আদায় করলেই তা মহর হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু স্বামী পক্ষের আত্মীয়স্বজন স্ত্রীকে হাদিয়া হিসেবে কোনো কিছু দিলে তা স্বামী দিয়েছে বলে ধর্তব্য হবে না। সুতরাং স্বামীর জন্য সেগুলোকে মহর হিসেবে গণ্য করার সুযোগ নেই।

-মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ পৃ. ১৬২; শরহুল মাজাল্লাহ, খালেদ আতাসী ৩/৩৪৭-৮; রদ্দুল মুহতার ৩/১৫৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬০৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার স্ত্রী দেড়মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার...

প্রশ্ন

আমার স্ত্রী দেড়মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়। আর তা কিছু গোশতের টুকরার আকারে বেরিয়ে আসে। এরপর ৫/৬ দিন পর্যন্ত রক্ত আসে। স্রাবের সময়ও তার এমনই দেখা যায়। ঐ দিনগুলোতে সে নামায পড়েনি। আমার স্ত্রী মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চায় যে, তার ঐ নামায কি কাযা করতে হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গর্ভটির যেহেতু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়নি তাই ৫/৬ দিন পর্যন্ত যে রক্ত এসেছে তা হায়েয হিসেবে গণ্য হবে;নেফাস নয়। আর উভয় অবস্থাতেই যেহেতু মহিলাদের নামায পড়া থেকে বিরত থাকা জরুরি তাই আপনার স্ত্রী ঐ দিনগুলোর নামায ছেড়ে দিয়ে ঠিকই করেছেন। তা কাযা করতে হবে না।

-আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; ফাতহুল কাদীর ১/১৬৫-১৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/ ৩০২-৩০৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৮৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার প্রতিবেশী বকর তার স্ত্রীর প্রতি জুলুমের আচরণ করে। স্ত্রী...

প্রশ্ন

আমার প্রতিবেশী বকর তার স্ত্রীর প্রতি জুলুমের আচরণ করে। স্ত্রী অতিষ্ঠ হয়ে তার কাছে তালাক চায়। কিন্তু বকর শর্ত দিয়েছে যে, তালাক দিলে তাকে তার দেওয়া মহর ফেরত দিতে হবে। এতে স্ত্রী সম্মত হলে বকর তাকে সে মহরের বিনিময়ে এক তালাক দিয়ে দেয়। প্রশ্ন হল, উক্ত অবস্থায় বকরের জন্য তার দেওয়া মহর তালাকের বিনিময়ে ফেরত নেওয়া বৈধ হবে কি?

উত্তর

প্রশ্নের বক্তব্য অনুযায়ী বাস্তবেই বকরের জুলুমের কারণে যদি তার স্ত্রী তালাক নিতে বাধ্য হয়ে থাকে তবে বকরের জন্য এ স্ত্রী থেকে তালাকের কারণে মহর ফেরত নেওয়া বা অন্য কিছু নেওয়া বৈধ হবে না।

কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা সূরা নিসার ১৯ ও ২০ নং আয়াতে এ ধরনের ক্ষেত্রে স্ত্রী থেকে সম্পদ গ্রহণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।

আমর বিন দীনার রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্বামী যদি তার স্ত্রীর সাথে অসদাচরণ করে তাহলে স্ত্রী কোনো কিছুর বিনিময়ে তালাক চাইলেও স্বামীর জন্য তা নেওয়া বৈধ হবে না। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক,হাদীস : ১১৮২২

ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্বামীর জন্য তার স্ত্রী থেকে তালাকের বিনিময়ে কোনো কিছু নেওয়া তখনি বৈধ হবে যখন স্ত্রীর অবাধ্যতার কারণেই স্বামী তাকে তালাক দিয়ে থাকে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১১৮১৫

অনুরূপ বক্তব্য হযরত উরওয়া, আতা, আমর বিন শুআইব প্রমুখ তাবেয়ী থেকেও বর্ণিত আছে।

(দেখুন : মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৮৭৩৭-১৮৭৪২) -বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৩৫; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৮৮; আহকামুল কুরআন, থানবী ১/৪৮৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৬৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আবদুল্লাহ ও তার স্ত্রী মাঝেমধ্যেই ঝগড়া করে। স্ত্রী সর্বদা ঝগড়ার...

প্রশ্ন

আবদুল্লাহ ও তার স্ত্রী মাঝেমধ্যেই ঝগড়া করে। স্ত্রী সর্বদা ঝগড়ার সময় বলে,আমাকে ছেড়ে দাও। এ কথাটি তার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। আবদুল্লাহ একবার রাগের মাথায় বলে ফেলে যে,এই কথা তুমি আর একবার বললে তুমি তালাক। এখন জানার বিষয় হল,

ক) স্ত্রী যদি আবার রাগের মাথায় ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কথাটি বলে তবে তার কী হুকুম? তালাক হলে কয় তালাক হবে এবং সেক্ষেত্রে তারা একত্রিত হতে চাইলে কী করণীয়?

খ) স্বামীর জন্য তার উক্ত কথা থেকে ফিরে আসার কোনো উপায় আছে কি?

দয়া করে বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আবদুল্লাহ ঐ কথা বলার পর তার স্ত্রী যদি পরবর্তীতে কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ঐ কথা বলে তবে তার উপর এক তালাক রজয়ী পতিত হয়ে যাবে। এরপর ইদ্দতের ভেতরেই আবদুল্লাহ যদি তাকে আবার স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে নেয় তবে সে তার স্ত্রী হয়ে যাবে। নতুন করে বিবাহ করা লাগবে না। কিন্তু ইদ্দতের ভেতরে যদি স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ না করে বা স্বামী-স্ত্রী সুলভ আচরণও না হয় তবে তালাকটি বায়েন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে উভয়ে একত্রিত হতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করত পুনরায় বিবাহ করতে হবে।

এভাবে এক তালাক হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তীতে আবদুল্লাহ দুই তালাকের অধিকারী থাকবে। এক্ষেত্রে স্ত্রী যদি আবারও ঐ কথা বলে তাহলে পূর্বের শর্তের কারণে পুনরায় তালাক হবে না। আরো উল্লেখ্য যে, আবদুল্লাহর ঐ শর্ত একবার কার্যকর হওয়ার আগে তা বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই। তাই তালাক থেকে বাঁচতে চাইলে স্ত্রীকে উক্ত কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪২০, ১/৪১৬;ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৫৪;আলবাহরুর রায়েক ৪/৮,৪/১৪;আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩৫৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৬৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমাদের গ্রামের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে...

প্রশ্ন

আমাদের গ্রামের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। গত তিন মাস আগে দুই পক্ষের মুরব্বিরা বসে উভয়কে বিবাহ পড়িয়ে দেয়। বিবাহের তিন মাস পরেই উক্ত মেয়ে একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে। এ নিয়ে গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আমরা জানতে চাচ্ছি যে, উক্ত সন্তানের নসব কি ঐ ছেলের দিকে সাব্যস্ত হবে? আর গর্ভবতী অবস্থায় সংঘটিত উক্ত বিবাহ কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত বিবাহ সহীহ হয়েছে। আর ঐ নারীর স্বামী (বিবাহের পূর্বে যার সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল সে) যদি নবজাতককে নিজের সন্তান হিসেবে মেনে নেয় তাহলে শিশুটি তার সন্তান বলেই বিবেচিত হবে এবং এ সন্তানের বংশসূত্র তার সাথেই সম্পৃক্ত হবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৬৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১৭২-১৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৪০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৪০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

দুই মাস পূর্বে আমার বিয়ে হয়। আমার স্ত্রীর আচরণে আমরা...

প্রশ্ন

দুই মাস পূর্বে আমার বিয়ে হয়। আমার স্ত্রীর আচরণে আমরা সবাই অতিষ্ঠ। তার সাথে আমার সম্পর্ক ভাল না। তাই আমি তাকে সন্তান-সন্তুতি হওয়ার আগেই তালাক দিতে চাচ্ছি। আমার ছোট ভাই মাদরাসায় লেখাপড়া করে। তার সাথে এ ব্যাপারে পরামর্শ করলে সে আমাকে তিন তুহুরে তিন তালাক দিতে বলে। এ পদ্ধতি কি উত্তম হবে? আর এভাবে তিন তালাক দিয়ে দিলে মহিলার ইদ্দত শুরু হবে কখন থেকে? প্রথম তালাকের পর নাকি তৃতীয় তালাকের পর? দয়া করে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

শরীয়তের দৃষ্টিতে তালাক খুবই অপছন্দনীয়। ক্ষেত্রবিশেষে এর প্রয়োগ স্ত্রী-সন্তানের প্রতি জুলুমও বটে। তাই অত্যন্তভেবেচিন্তে মুরবিব ও আলেমদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্তনেওয়া উচিত। আর তালাকের আগে উভয় পক্ষের মুরবিবদের নিয়ে সমঝোতা ও মীমাংসার চেষ্টা করা কর্তব্য। এরপরও যদি উভয়ের মাঝে সম্পর্কের উন্নতি না ঘটে এবং একত্রে থাকলে একে অপরের হক আদায় করা এবং শরীয়তের হুকুম অনুযায়ী চলা সম্ভব না হয় তখন চাইলে তালাক দিতে পারবে। আর তালাক দেওয়ার সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হল, হায়েয/নেফাস থেকে পবিত্র হওয়ার পর তার সাথে মিলন থেকে বিরত থাকা অবস্থায় এক তালাক দেওয়া। এরপর আর তালাক না দেওয়া। এবং ইদ্দত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ততার সাথে স্বামী-স্ত্রীসূলভ কোনো আচরণও না করা। এক্ষেত্রে ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে তালাকটি বায়েনে পরিণত হয়ে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। এরপর মহিলাটি অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এটি স্ত্রী থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সবচেয়ে উত্তম পন্থা। (আল আওসাত, ইবুনল মুনযির ৯/১৩৯)

অবশ্য প্রত্যেক পবিত্রতায় একটি করে তালাক দেওয়ার পদ্ধতিও জায়েয। আর এভাবে তিন তালাক দিলে মহিলার ইদ্দত শুরু হবে প্রথম তালাকের পর থেকেই।

অবশ্য এভাবে তিন তালাক দেওয়ার চেয়ে পূর্বোক্ত নিয়মে এক তালাক দেওয়ার পদ্ধতি অধিক উত্তম। এ ছাড়া এক তালাক দিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তীতে কখনো একত্রিত হতে চাইলে নতুন বিবাহের মাধ্যমে এরও সুযোগ থাকে।

-সূরা নিসা ৪ : ৩৪-৩৫; রদ্দুল মুহতার ৩/২২৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৪০-১৪২, ৩/২৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫১১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

দুই মাস আগে আমার এক সহকর্মীর স্ত্রী মারা যান। মারা...

প্রশ্ন

দুই মাস আগে আমার এক সহকর্মীর স্ত্রী মারা যান। মারা যাওয়ার পর এক লোক আমার ঐ সহকর্মীকে বলেছে যে, স্ত্রী মারা গেলে স্বামী আর শাশুড়ির সাথে দেখা দিতে পারে না। এখন আমার সহকর্মী জানতে চাচ্ছে, ঐ লোকের কথা কি ঠিক? স্ত্রী মারা যাওয়ার পর স্বামী কি স্ত্রীর মায়ের সাথে দেখা দিতে পারবে?

উত্তর

শাশুড়ি (স্ত্রীর আপন মা) স্থায়ী মাহরামের অন্তুর্ভুক্ত। স্ত্রী মারা গেলে কিংবা তালাকপ্রাপ্তা হলেও স্বামীর জন্য স্ত্রীর মার সাথে দেখাসাক্ষাৎ করা বৈধ এবং তাকে বিবাহ করা হারাম।

-সূরা নিসা, ৪ : ২৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৬৭; রদ্দুল মুহতার ৩/২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫১০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি ছোট বেলায় যার দুধ পান করেছি তার স্বামীর ছোট...

প্রশ্ন

আমি ছোট বেলায় যার দুধ পান করেছি তার স্বামীর ছোট বোন অর্থাৎ আমার দুধ মায়ের ননদের সাথে আমার বিবাহের আলোচনা চলছে। গ্রামের এক মুরুববী এসে বললেন, এ বিয়ে শুদ্ধ হবে না। কারণ, সে আমার মাহরাম। আবার অন্য এক মুরুববী বললেন, এতো দূরের সম্পর্কে বিবাহ হতে কোনো সমস্যা নেই। শরীয়তের দৃষ্টিতে এই বিবাহের হুকুম কী? আমার দুধ মাতার ননদের সাথে আমার বিবাহ কি শুদ্ধ হবে?

উত্তর

আপনার দুধ মাতার স্বামী আপনার দুধ পিতা। তার বোন আপনার দুধ সম্পর্কের ফুফু। আপন ফুফুর মতোই দুধ ফুফুর সাথে বিবাহ হারাম। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জন্ম সূত্রের কারণে যাদের সাথে বিবাহ হারাম, দুধের সম্পর্কের কারণেও তাদের সাথে বিবাহ হারাম।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৪৪; শরহে মুসলিম, নববী ১০/১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৯৩-৯৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

অসুস্থ অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কি?

প্রশ্ন

অসুস্থ অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, স্বামী স্ত্রী একে অন্যকে রক্ত দিতে পারবে। এতে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

পুরুষদের জন্য তাদের দাদী শাশুড়ি বা নানী শাশুড়ির সাথে দেখা...

প্রশ্ন

পুরুষদের জন্য তাদের দাদী শাশুড়ি বা নানী শাশুড়ির সাথে দেখা করার কী হুকুম? অনেকে মনে করে তাদের সাথে দেখা করার অনুমতি নেই। আসলে শরীয়ত এ ব্যাপারে কী বলে?

উত্তর

দাদী শাশুড়ি ও নানী শাশুড়ির সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা জায়েয। তারা মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) এবং তোমাদের স্ত্রীদের মা’দেরকে তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে।-সূরা নিসা : ২৩ সকল মুফাসসির ও ফকীহগণ একমত যে উক্ত বিধানে স্ত্রীর মায়ের মা ও স্ত্রীর পিতার মাও অন্তর্ভুক্ত।

তাফসীরে মাযহারী ২/২৭০; কিতাবুল আছল ৪/৩৬১; হেদায়া ৮/৪৬৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২৮;

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৫৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি ছয় বছর দাম্পত্য জীবন যাপনের পর একপর্যায়ে তার...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি ছয় বছর দাম্পত্য জীবন যাপনের পর একপর্যায়ে তার স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাদের চার বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান আছে। বর্তমানে তার স্ত্রী অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে এবং সে তার ছেলেকে নিজের কাছে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। অপরদিকে ছেলের বাবা সন্তানকে তার কাছেই রাখতে চায়। এক্ষেত্রে সন্তান লালন-পালনের অধিকারী কে হবে? আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন। উলেস্নখ্য, মহিলার দ্বিতীয় স্বামীর সাথে উক্ত সন্তানের কোনো ধরনের আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই।

উত্তর

সন্তান লালন-পালনের অধিকার মূলত মায়ের। তবে মা সন্তানের মাহরাম ব্যতীত অন্য কাউকে বিয়ে করলে তার আর সন্তান লালন-পালনের অধিকারী থাকে না। সেক্ষেত্রে এ অধিকার ক্রমান্বয়ে নিম্নে বর্ণিত আত্মীয়গণ লাভ করে। যথা-ক) শিশুর নানী খ) শিশুর দাদী গ) শিশুর খালা ঘ) শিশুর ফুফু ঙ) আসাবা (শরীয়ত নির্ধারিত নিকটাত্মীয়)-এর ক্রমানুসারে পুরুষ আত্মীয়গণ। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মহিলা গায়রে মাহরামকে বিয়ে করার কারণে তার লালন-পালনের অধিকার বাতিল হয়ে গিয়েছে। এখন উপরে বর্ণিত শিশুর নারী আত্মীয়গণ অর্থাৎ নানী, দাদী, খালা, ফুফু যদি বিদ্যমান না থাকে কিংবা তারা দায়িত্ব গ্রহণে অসম্মত বা অসমর্থ্য হয় তাহলে সেক্ষেত্রে পিতা নিজে তার সন্তান লালন-পালনের অধিকারী হবে।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২৭০; বাযলুল মাজহূদ ১১/১৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৬৭-১৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৫৫-৫৫৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৭৫-২৭৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৫৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি ছোট বেলায় যার দুধ পান করেছি তার স্বামীর ছোট...

প্রশ্ন

আমি ছোট বেলায় যার দুধ পান করেছি তার স্বামীর ছোট বোন অর্থাৎ আমার দুধ মায়ের ননদের সাথে আমার বিয়ের আলোচনা চলছে। গ্রামের এক মুরববী বললেন, এ বিয়ে শুদ্ধ হবে না। কারণ দুধ সম্পর্কের কারণে সে আমার মাহরাম। কিন্তু অন্য এক মুরববী বলেছেন, এই বিয়েতে কোনো সমস্যা নেই। জানার বিষয় হল, শরীয়তের দৃষ্টিতে এ বিয়ের হুকুম কী? আমার দুধমায়ের ননদের সাথে আমার বিবাহ কি শুদ্ধ হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

আপনার দুধ মায়ের স্বামী আপনার দুধ সম্পর্কের পিতা। আর তার বোন আপনার দুধ সম্পর্কের ফুফু। আপন ফুফুর মতোই সে আপনার মাহরাম এবং তার সাথে আপনার বিবাহ হারাম। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রক্তের সম্পর্কের কারণে যাদের সাথে বিবাহ হারাম, দুধের সম্পর্কের কারণেও তাদের সাথে বিবাহ হারাম।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৪৪৪

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি দুধ মায়ের ননদকে বিয়ে করতে পারবেন না।

-শরহুল মুসলিম, নববী ১০/১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৯৩-৯৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৯৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৪৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার এক সাথী গত কয়েকমাস আগে বিবাহ করেছে। বেশ কয়েকদিন...

প্রশ্ন

আমার এক সাথী গত কয়েকমাস আগে বিবাহ করেছে। বেশ কয়েকদিন পর আমার সাথে দেখা হলে আমি তাকে বলি, তোমার বিয়ের ওলিমা খাওয়াতে হবে। তখন সে রসিকতা করে বলল, তোর ভাবিকে তো অনেক আগে তালাক দিয়ে দিয়েছি। অথচ সে তালাক দেয়নি। জানার বিষয় হল, এ কারণে কি তার স্ত্রী তালাকপ্রাপ্তা হয়ে গেছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার সাথী যদি বাস্তবেই তার স্ত্রীকে আগে তালাক না দিয়ে থাকে তবে এভাবে মিথ্যা বলার দ্বারা তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়নি। তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পূর্বের মতোই বহাল আছে। তবে তালাকের বিষয়ে এভাবে রসিকতা করা অন্যায়। অনেক ক্ষেত্রে রসিকতা করতে গিয়ে তালাক হয়ে যায়। এছাড়া এতে মিথ্যা বলার গুনাহ তো হয়েছেই। তাই এজন্য তাকে তওবা করতে হবে।

-কিতাবুল আছল ৪/৫১৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২৩৬; ফাতহুল কাদীর ৩/৩৫৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৪৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪০১; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/১৭৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক ব্যক্তি দুটি বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রীর কয়েকজন সন্তান হওয়ার...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি দুটি বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রীর কয়েকজন সন্তান হওয়ার পর সে মারা যায়। এরপর লোকটি আরেকটি বিয়ে করে। এর কিছুদিন পর ঐ ব্যক্তির বড় ছেলে পিতার দ্বিতীয় স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করে। এখন প্রশ্ন হল, ঐ ছেলের জন্য সৎ মায়ের বোনকে বিয়ে করা কি বৈধ হয়েছে? সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

হ্যাঁ, ঐ ছেলের জন্য বাবার স্ত্রীর (সৎ মায়ের) বোনকে বিয়ে করা বৈধ হয়েছে। কেননা সে মাহরামের অন্তর্ভুক্ত নয়।

-রদ্দুল মুহতার ৩/৩১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪০৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে মুহাববত করে কখনো কখনো আপু মনি...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে মুহাববত করে কখনো কখনো আপু মনি বলে ডাকে। শরীয়তের দৃষ্টিতে এতে কোনো অসুবিধা আছে কি? এ কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি? স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকার হুকুম কী? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

স্ত্রীকে এভাবে সম্বোধন করা মাকরূহ ও গুনাহের কাজ। হাদীস শরীফে এসেছে, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বোন বলে সম্বোধন করল। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনে এ থেকে তাকে নিষেধ করলেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২০৪

তাই এমন বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। অবশ্য উক্ত কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হয়নি।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২০৪; বাযলুল মাজহূদ ১০/৩২২; ফাতহুল কাদীর ৪/৯১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪৭০; আলবাহরুর রায়েক ৪/৯৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৪০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি মারা যায়। তার বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি মারা যায়। তার বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন কেউ নেই। শুধু তার চাচাত ভাইয়ের তিনজন মেয়ে আছে। এছাড়া তার নিকটাত্মীয় বলতে আর কেউ নেই। অপরদিকে সে জীবিত অবস্থায় তার অধিকাংশ সম্পদই মসজিদের জন্য অসিয়ত করে যায়। এখন প্রশ্ন হল, তার এ অসিয়তের কী হুকুম? তা কি পুরোটাই কার্যকর হবে? আমরা তো জানি, ওয়ারিসগণ না মানলে অসিয়ত মৃতের এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কার্যকর হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে মৃতের উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো ওয়ারিস নেই তাই এক্ষেত্রে কি ভিন্ন কোনো হুকুম হবে, না একই হুকুম? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চাচাত ভাইয়ের মেয়েরা মৃতের ওয়ারিস। তাই নিয়ম অনুযায়ী মৃতের এক তৃতীয়াংশ সম্পদের ভেতর তার অসিয়ত সহীহ হয়েছে। এটা আদায় করা ওয়ারিসদের উপর কর্তব্য। আর এক তৃতীয়াংশ সম্পদের অতিরিক্ত অংশের অসিয়ত যদি ওয়ারিশগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেনে নেয় এবং তা কার্যকর করতে চায় তবে তা করতে পারবে। কিন্তু তারা সম্মতি না দিলে শুধু এক তৃতীয়াংশের ভেতরেই তা কার্যকর হবে এর অতিরিক্তের অসিয়ত বাতিল গণ্য হবে। এক্ষেত্রে বাকি সকল সম্পদ তার ঐ তিন ভাতিজির মাঝে সমানভাবে বণ্টন হয়ে যাবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৪৭, ৪৫৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৬৪-৭৬৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আমার মেয়ের স্বামী আমার নাতির আকীকা করেনি।...

প্রশ্ন

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আমার মেয়ের স্বামী আমার নাতির আকীকা করেনি। অদূর ভবিষ্যতে আকীকা করার সম্ভাবনাও কম। নানা হিসেবে আমি নিজ টাকায় নাতির আকীকা করলে আকীকা হবে কি না এবং তা জায়েয কি না? আমি আমার বাড়িতে নাতির আকীকা করতে চাই, আমার বাড়িতে আকীকা করলে হবে কি না? গরু বা ছাগল কোন্ পশু দিয়ে আকীকা করা উত্তম? নাতি জন্মের পর পরই আমার মেয়ের শ্বাশুড়ি আকীকা করার গরু নানা বাড়ি থেকে দিতে হয় বলে আমার মেয়ের নিকট গরু দাবী করেছে। এ প্রসঙ্গে ফতোয়া কী? মেয়ের শ্বাশুড়ির দাবির প্রেক্ষিতে আমি আমার নাতির আকীকা করার জন্য গরু বা ছাগল দিলে তা কি যৌতুক হিসেবে গণ্য হবে? আমার মেয়ের স্বামী সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আকীকা করছে না। এতে শরীয়তের বিধান কী? আকীকার গোশত নাতির দাদার বাড়িতে না পাঠালে আকীকা কবুল হবে কি না? তাছাড়া আকীকার পশু জবাই করে গোশত কোনো আত্মীয়স্বজনকে না দিয়ে সব গোশত এতিমখানায় দিয়ে দিলে আকীকা হবে কি? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

আকীকা করা মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে আকীকা করার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সন্তানের আকীকা করা পিতার দায়িত্ব; নানার দায়িত্ব নয়। কেননা সন্তানের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব যার উপর শরীয়ত তাকেই আকীকা করার নির্দেশ দিয়েছে। অবশ্য পিতার অনুমতিক্রমে নানা নাতির আকীকা করলে তা সহীহ হবে। কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দৌহিত্র হাসান-হুসাইনের আকীকা করেছিলেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮৩৪)

আর এক্ষেত্রে নানা চাইলে তার নিজ বাড়িতেও আকীকা করতে পারবেন।

ছেলের আকীকার জন্য দুটি ছাগল দেওয়া উত্তম। কেননা উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছেলের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৫১৩)

প্রকাশ থাকে যে, মেয়ের শ্বাশুড়ির ঐ কথা ঠিক নয়। শ্বাশুড়ির জন্য পুত্রবধুর কাছে আকীকার গরু দাবি করা জায়েয হয়নি। এটি যৌতুকের অন্তর্ভুক্ত।

আর আকীকার পুরো গোশত এতিমখানায় দিয়ে দিলেও তা আদায় হয়ে যাবে।

তবে উত্তম হলো তিন ভাগ করে একভাগ নিজেদের জন্য রাখা, একভাগ প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনকে দেওয়া এবং একভাগ ফকীর-মিসকীনকে দেওয়া। আর আত্মীয়দের অংশ থেকে সন্তানের দাদা ও অন্যান্য আত্মীয়দেরকেও দেওয়া উচিত।

-আলমওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ ৩০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৩৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি বাংলা এক বইয়ে তিরমিযী শরীফের বরাত দিয়ে উল্লেখ দেখতে...

প্রশ্ন

আমি বাংলা এক বইয়ে তিরমিযী শরীফের বরাত দিয়ে উল্লেখ দেখতে পেলাম যে, বিভিন্ন দিন সম্পর্কে বলেছেন, এই দিন স্ত্রী সহবাস করলে সন্তান পিতামাতার নাফরমান হয়। ঐদিন সহবাস করলে সন্তান অন্ধ হয়। আরো অনেক কিছু।

আমার জানার বিষয় হল, হাদীসে এমন কোনো দিন বা সময়ের ব্যাপারে বিধিনিষেধ আছে কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বইয়ের ঐ কথাগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। এগুলো হাদীস নয়। তিরমিযী শরীফ বা অন্য কোনো হাদীসের কিতাবে এ ধরনের কোনো বর্ণনা নেই। মানুষের বানানো কথাবার্তাকে হাদীসের কিতাবের মিথ্যা উদ্ধৃতি দিয়ে হাদীস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া ভয়াবহ কবীরা গুনাহ।

হাদীস শরীফে এসেছে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, অর্থ : যে ব্যক্তি জেনেশুনে আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করল সে যেন নিজের ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নেয়।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১০৭

প্রকাশ থাকে যে, স্ত্রী মিলনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় বা দিন তারিখের সীমাবদ্ধতা নেই। মাসিকের দিনগুলো ছাড়া অন্য যে কোনো সময় স্ত্রী মিলন বৈধ।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৩৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমাদের এলাকার এক লোক পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকার এক লোক পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে। একপর্যায়ে সে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি যদি তোমার মেয়ের বাড়িতে কোনো জিনিস দাও তাহলে তোমাকে তোমার পিতার বাড়িতে চলে যেতে হবে। বৃদ্ধকালেও স্ত্রী যদি কোনো জিনিস দেয় তখনও কি এ কথার কারণে স্ত্রী তালাকপ্রাপ্ত হবে?

জানার বিষয় হল, ক) এই শর্ত কতদিন বাকি থাকবে এবং এই শর্ত হতে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?

খ) স্ত্রীর ছেলেরা যদি বোনের বাড়িতে কোনো জানিস দেয় তাহলে তখন স্বামীর এই শর্ত পাওয়া যাবে কি না এবং স্বামীর এই শর্ত পাওয়া গেলে কী করতে হবে?

গ) স্বামী যদি স্ত্রীকে বলে তুমি তোমার মেয়ের বাড়িতে কোনো জিনিস দিতে পার তখন স্ত্রী যদি কোনো জিনিস দেয় তখন স্বামীর পূর্বের শর্ত পাওয়া যাবে কি না? দলিল-প্রমাণের সাথে জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কথাটি (অর্থাৎ যদি তোমার মেয়ের বাড়িতে কোনো জিনিস দাও তাহলে তোমাকে তোমার পিতার বাড়ি চলে যেতে হবে) স্বামী যদি তালাক প্রয়োগের নিয়তেই বলে থাকে তাহলে ঐ মহিলাটি মেয়ের বাড়িতে ভবিষ্যতে কখনো কিছু দিলেই এক তালাকে বায়েন হয়ে যাবে। এমনকি স্বামীর আদেশক্রমে নিজে কিছু দিলেও তালাক হয়ে যাবে। হ্যাঁ, স্বামী নিজে দিতে চাইলে তাকে জিনিস পত্র জোগাড় করে বা প্রস্ত্তত করে দিতে পারবে। আর তার ছেলে নিজ থেকে বোনের বাসায় কিছু দিলেও কোন অসুবিধা নেই, একারণে তালাক পতিত হবে না।

আর উপরোক্ত কথাটি যদি তালাকের নিয়তে না বলে থাকে তাহলে মহিলাটি মেয়ের বাড়িতে কোনো কিছু দিলে তালাক পতিত হবে না। এখানে উল্লেখ্য যে, ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য মা-ববার উপর বিভিন্ন হক রয়েছে। তারা উভয়ে মা-বাবা থেকে ভালো আচরণ পাওয়ার অধিকার রাখে। তবে এক্ষেত্রে অসমতা বা সীমালঙ্ঘন কোনোটিই ঠিক নয়। সুতরাং স্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো সীমালঙ্ঘন হয়ে থাকলে সেটা সুন্দরভাবে বোঝানো যেত। তা না করে স্বামী যে পন্থা অবলম্বন করেছে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪৬১; রদ্দুল মুহতার ৩/৩০১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪২০; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার স্ত্রীকে নিয়ে আমার বাবা মায়ের সাথে দীর্ঘদিন যাবত ঝগড়া...

প্রশ্ন

আমার স্ত্রীকে নিয়ে আমার বাবা মায়ের সাথে দীর্ঘদিন যাবত ঝগড়া বিবাদ লেগেই আছে। কিছুদিন আগে আমার সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে আমি রাগ করে বললাম, ঠিক আছে, আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দিব তখন আপনারা বিপদমুক্ত হয়ে যাবেন। প্রশ্ন হল, আমার উক্ত কথা দ্বারা কি আমার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়েছে? দয়া করে তাড়াতাড়ি জানালে উপকৃত হব। উল্লেখ্য, উক্ত কথা দ্বারা আমার তালাক দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল না। বরং উদ্দেশ্য ছিল আমার আম্মাকে ভয় দেখানো।

উত্তর

ঐ কথা বলার দ্বারা আপনার স্ত্রীর উপর কোনো তালাক পতিত হয়নি। কেননা ঐ বাক্যে স্ত্রীকে পরবর্তীতে তালাক দেওয়া হবে শুধু এতটুকুই বলা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো তালাক দেওয়া হয়নি।

প্রকাশ থাকে যে, তালাক শরীয়তের দৃষ্টিতে ঘৃণ্যতম বিষয়। মা-বাবা আদেশ করলেও যথাযথ কারণ ছাড়া তালাক দেওয়া যাবে না। বর্তমান সময়ে তালাক স্ত্রীর প্রতি অনেক ক্ষেত্রে যুলুম। উভয় পরিবারে ফেতনারও কারণ হয়ে যায়। তাই শুধু ঝগড়া-ঝাটির কারণে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। মুরববীদের সাথে ঝগড়া না করা এবং তাদেরকে সম্মান করা প্রত্যেকের দায়িত্ব। স্ত্রীকে তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে। আর শ্বশুর-শাশুড়ির কর্তব্য বউয়ের ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দেওয়া এবং তার সাথে স্নেহ-মমতার আচরণ করা।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৮৪; তানকীহুল ফাতাওয়াল হামীদিয়া ১/৩৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২২১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

কিছুদিন আগে আমার স্ত্রী তার বাপের বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমার...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার স্ত্রী তার বাপের বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমার থেকে অনুমতি চায়। আমি তাকে সাফ মানা করে দেই। তারপর কথার এক পর্যায়ে সে আমার সাথে তর্কে লিপ্ত হয়। আমি তাকে বারবার তর্ক করতে নিষেধ করা সত্ত্বেও সে আমার সাথে তর্ক করেই যাচ্ছে। ফলে এক পর্যায়ে আমি রাগের মাথায় তালাকের নিয়তে বলে ফেলি, যাও, তুমি আজ থেকে স্বাধীন। পরক্ষণেই আমি ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হই। এখন আমি জানতে চাই, আমার উক্ত কথার দ্বারা তালাক পতিত হয়েছে কি না? আর হয়ে থাকলে এখন আমাদের ঘর-সংসার করার জন্য করণীয় কী? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ কথা বলার দ্বারা আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে বায়েন পতিত হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। সুতরাং তাকে ঐ দিন থেকেই ইদ্দত পালন করতে হবে। অবশ্য আপনারা যদি উভয়ে পুনরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর সংসার করতে চান তাহলে ইদ্দতের ভিতরে বা পরে নতুন করে মোহর ধার্য করে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন। এভাবে দ্বিতীয়বার তাকে বিবাহ করলে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এই স্ত্রীকে কখনো দুই তালাক প্রদান করলেই তার সাথে স্থায়ীভাবে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। তখন এভাবে নতুন বিবাহ করেও একত্রে থাকার সুযোগ থাকবে না।

উল্লেখ্য যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে তালাক খুবই অপছন্দনীয়। তাই সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে তালাক দিয়ে দেওয়া অন্যায়। ক্ষেত্রবিশেষে তা স্ত্রী-পুত্রের প্রতি যুলুমও বটে। তাই তালাক দিতে চাইলে ভেবে-চিন্তে মুরববীদের সাথে পরামর্শ করে এবং বিজ্ঞ আলেম থেকে মাসআলা জেনে নিবে। রাগের বশবর্তী হয়ে কখনো তালাক দিবে না। কেননা এর পরিণাম অনেক ভয়াবহ ও লজ্জাকর।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৯৫, ২/৫৫৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/১৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৭২; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩০০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৯৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার নাবালেগ মেয়ের সাথে আমার বন্ধু রায়হানের নাবালেগ ছেলে রাকিবের...

প্রশ্ন

আমার নাবালেগ মেয়ের সাথে আমার বন্ধু রায়হানের নাবালেগ ছেলে রাকিবের বিবাহ হয় গত দুই বছর আগে। কিছুদিন আগে তার সাথে আমার ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরে সে তার নাবালেগ ছেলের পক্ষ থেকে আমার মেয়েকে তালাক দেয়। কিন্তু এখন পুনরায় আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়েছে। তাই সে তার ছেলের সাথে আমার মেয়ের পূর্বের বিবাহকে বহাল রাখতে চাচ্ছে। আমার জানার বিষয় হল, তার পূর্বের ঐ তালাক কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। ছেলে নাবালেগ হলেও পিতা ছেলের স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার রাখেন না। তাই রায়হান সাহেব তার নাবালেগ সন্তানের স্ত্রীকে যে তালাক দিয়েছেন তা কার্যকর হয়নি। অতএব আপনার মেয়ের ঐ বিবাহ পূর্বের মতোই বহাল আছে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৯৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৫৪; আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ ২৯/১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৯৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার এক বন্ধু গত তিন মাস আগে বিয়ে করেছে। কিন্তু...

প্রশ্ন

আমার এক বন্ধু গত তিন মাস আগে বিয়ে করেছে। কিন্তু বউকে নিজের বাড়িতে তুলে আনেনি। কারণ বাড়ি নির্মাণ কাজ এখনো পুরাপুরি শেষ হয়নি। তাই আরো কয়েক মাস পরে তুলে আনবে। তবে সে তার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া-আসা করে। এখন তার স্ত্রী তার কাছে খরচাদি চেয়েছে। তাই জানার বিষয় হল, স্ত্রীর খরচাদি দেওয়া তার উপর জরুরি কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্ত্রীর খরচাদি দেওয়া স্বামীর উপর ওয়াজিব। কেননা এক্ষেত্রে স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর বাড়ি যেতে অসম্মতি নেই। স্বামীই বরং স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেনি। সুতরাং এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামী থেকে খোরপোষ দাবি করতে পারবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪২২; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/২৭৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৫৭৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৮২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমাকে আমার স্বামী তালাক দিয়ে দিয়েছে। আমার ১৪ মাসের একটি...

প্রশ্ন

আমাকে আমার স্বামী তালাক দিয়ে দিয়েছে। আমার ১৪ মাসের একটি পুত্র সন্তান আছে তাকে লালন পালনের জন্য নিজের কাছে রেখে দেই। কিছুদিন আগে তার বাবা (আমার তালকদাতা স্বামী) এসেছে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি তাকে দেইনি। তার সন্তান তাকে না দেওয়া কি আমার জন্য অন্যায় হয়েছে? কুরআন-হাদীসের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় এ শিশুকে নিজের কাছে রেখে দেওয়া আপনার অন্যায় হয়নি। বরং আপনার অন্যত্র বিবাহ না হলে শিশুর বয়স সাত বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তার লালনপালনের সর্বাধিক অধিকারী আপনিই। হাদীস শরীফে এসেছে, জনৈক মহিলা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, এটা আমার পুত্র। আমার উদর ছিল তার গর্ভাশয়, আমার স্তন ছিল তার পানপাত্র, আমার কোল ছিল তার বিশ্রামস্থল। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়ে দিয়েছে। এখন আমার কাছ থেকে তাকে কেড়ে নিতে চাচ্ছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার অন্যত্র বিবাহ হওয়ার আগ পর্যন্ত তুমিই তার লালনপালনের অধিক হক রাখ।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২৭০

অবশ্য মায়ের কাছে থাকলেও ঐ শিশুর যাবতীয় খরচ পিতাকেই বহন করতে হবে। আর সাত বছর বয়স হওয়ার পর পিতা চাইলে ছেলেটিকে নিজ দায়িত্বে নিয়ে যেতে পারবেন।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২৭০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৭৩, ৪১১; ফাতহুল কাদীর ৪/১৮৪, ১৮৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৬৬, ৬১৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৫১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার স্বামী আশুলিয়ায় এক গার্মেন্টসে কাজ করত। আমরা সেই গার্মেন্টসের...

প্রশ্ন

আমার স্বামী আশুলিয়ায় এক গার্মেন্টসে কাজ করত। আমরা সেই গার্মেন্টসের নিকটে একটি বাসা ভাড়া করে থাকি। গত দু মাস পূর্বে হঠাৎ সে মারা যায়। এখন আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে বাসার ভাড়া দিতে পারছি না। তাই এ অবস্থায় ইদ্দতের বাকি দিনগুলো বাপের বাড়ি গিয়ে অতিবাহিত করতে পারব কি? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বাসার ভাড়া প্রদান করা যেহেতু আপনার জন্য কষ্টকর তাই এ পরিস্থিতিতে পিত্রালয়ে গিয়ে ইদ্দতের বাকি দিন অতিবাহিত করা জায়েয হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩২৫-২৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৪৭; আলমওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ ২৯/৩৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৩৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

অনেক সময় আমার স্ত্রী ও আট বছরের নাবালেগ ছেলেকে নিয়ে...

প্রশ্ন

অনেক সময় আমার স্ত্রী ও আট বছরের নাবালেগ ছেলেকে নিয়ে জামাতে নামায পড়ি। জানতে চাই, এভাবে শুধু স্ত্রী ও নাবালেগ ছেলে কিংবা তাদের একজনকে নিয়ে জামাতে নামায পড়া যাবে কি? যদি জামাত করা সহীহ হয় তাহলে এক্ষেত্রে দাঁড়ানোর পদ্ধতি কী?

উত্তর

পুরুষের জন্য মসজিদের জামাতে নামায পড়া জরুরি। বিনা ওযরে ফরয নামায ঘরে আদায় করা ঠিক নয়। একাধিক হাদীসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে এবং কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। তবে কখনো মসজিদের জামাত না পেলে সেক্ষেত্রে একাকী নামায না পড়ে বাসায় স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে জামাতে নামায পড়াই উত্তম।

এক্ষেত্রে দাঁড়ানোর পদ্ধতি হল, মহিলারা ইমামের পিছনে দাঁড়াবে। আর নাবালেগ ছেলে ইমামের ডান পাশে দাঁড়াবে।

হাদীস শরীফে আছে, আবু বকরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদিন) মদীনার উপকণ্ঠ থেকে নামায পড়ার জন্য এসে দেখেন সবাই (জামাতের সাথে মসজিদে) নামায পড়ে ফেলেছে। তখন তিনি ঘরে গিয়ে লোকজন জমা করে তাদের নিয়ে (জামাতের সাথে) নামায পড়ে নেন।-আলমুজামুল আওসাত, তবারানী ৪৬১

আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এবং আমার পরিবারস্থ একজন মহিলাকে নিয়ে নামায পড়েছেন। তখন আমাকে তাঁর ডান পাশে এবং ঐ মহিলাকে পিছনে দাঁড় করিয়েছেন।

-সুনানে নাসায়ী ১/৯২; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা, ৩/৫৬৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৮৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৪৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৫৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১০৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি বিবাহ করে ১৯৭১ সালে। তার বিবাহের মোহর ধার্য...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি বিবাহ করে ১৯৭১ সালে। তার বিবাহের মোহর ধার্য করা হয় ১০০ রুপি। কিন্তু সে এখনো তার মোহর পরিশোধ করেনি। এখন তার জন্য করণীয় কী? সে কি ১০০ রুপিই মোহর দিবে না বেশি দিবে?

উল্লেখ্য, সে সময় ১০০ রুপির মূল্য ১০ দিরহামের বেশি ছিল।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি যে মুদ্রা দ্বারা মহর ধার্য করেছিল তা পরবর্তীতে যেহেতু অচল হয়ে গেছে এবং নতুন মূল্যমানের নতুন মুদ্রা চালু হয়েছে তাই এখন ঐ ব্যক্তি স্ত্রীর মহর রূপার মূল্য হিসেবে আদায় করবে। অর্থাৎ মহর ধার্য করার সময় ১০০ রুপি দিয়ে যতটুকু রূপা পাওয়া যেত ততটুকু রূপা বা তার বর্তমান বাজারমূল্য পরিশোধ করে দিবে। এছাড়া মার্কিন ডলারের হিসেবেও তা পরিশোধ করা যাবে। অর্থাৎ ১৯৭১ সালে ১০০ রুপিতে যে কয় ডলার পাওয়া যেত এখন তত ডলার বা তার সমমূল্যের টাকা প্রদান করেও মহর আদায় করতে পারবে।

উল্লেখ্য যে, মহর স্ত্রীর প্রাপ্য অধিকার। স্বামীর কর্তব্য হল যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি স্ত্রীর মহর আদায় করে দেওয়া। কিন্তু বর্তমান সমাজে এ বিষয়ে অনেক অবহেলা করা হয়। লোক দেখানোর জন্য মোটা অংকের মহর ধার্য করা হয়। তারপর তা আদায়ের ক্ষেত্রে গড়িমসি করা হয়। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তা আদায়ও করা হয় না। এসব কিছুই জুলুম এর অন্তর্ভুক্ত।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩৩৫৪; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৫১০; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৫৩৩; রদ্দুল মুহতার ৩/১০০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৮৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

প্রতিদিন সকালে আমি কিছুক্ষণ কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করি। কোনো দিন...

প্রশ্ন

প্রতিদিন সকালে আমি কিছুক্ষণ কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করি। কোনো দিন ঠিক সে সময় আমার এক বছরের ছেলেটি বুকের দুধের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে। অযু ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কায় সহসা বাচ্চাকে দুধ দিই না, অন্য কিছু দিয়ে ভোলানোর চেষ্টা করি। কিন্তু এতে সব সময় কাজ হয় না। তখন আমার স্বামীও খুব বিরক্ত হন। এমতাবস্থায় আমি কী করতে পারি। জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

শিশুকে বুকের দুধ পান করালে অযু নষ্ট হয় না। তাই কুরআন তিলাওয়াতের সময় বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন হলে খাওয়াতে পারবেন। অতপর পুনরায় অযু না করে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারবেন।

-আননুতাফ ফিলফাতাওয়া ২৬; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ১/৩৭০; আলআউসাত ১/২৬৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০১৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক ব্যক্তি ঢাকায় সরকারি চাকরি করে। তাকে তার পিতা অনেক...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি ঢাকায় সরকারি চাকরি করে। তাকে তার পিতা অনেক টাকা পয়সা খরচ করে পড়াশোনা করিয়েছে এই আশায় যে, সে বড় হয়ে চাকরি করে তাদেরকে টাকা-পয়সা উপার্জন করে দিবে। এখন তার স্ত্রী, স্বামীর মাতাপিতার সঙ্গে যৌথ পরিবারে থাকে। ছেলে পিতা থেকে আলাদা হয়নি। ছেলে, স্ত্রী ও মাতাপিতার খরচ বাবদ প্রতি মাসেই টাকা পাঠিয়ে থাকে। তারপরও তার কাছে অনেক টাকা থেকে যায়। জানার বিষয় হল, তার অতিরিক্ত টাকার মালিক কে? এক ব্যক্তি বলেছেন, যৌথ পরিবারে থাকা অবস্থায় সন্তানের সব উপার্জনের মালিক পিতা। এ কথাটি কতটুকু ঠিক? এ সম্পর্কে বিস্তারিতত জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ছেলে চাকরি থেকে যা উপার্জন করবে এর মালিক ছেলেই। সংসারের জন্য খরচ করার পর যা অবশিষ্ট থাকবে সেগুলোর মালিকানা ছেলের। অবশ্য ছেলের দায়িত্ব হল, মা-বাবার প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রাখা এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

আর প্রশ্নে বর্ণিত ঐ ব্যক্তির কথা ঠিক নয়। শুধু যৌথ পরিবারে থাকলেই পিতা ছেলের উপার্জনের মালিক হয়ে যায় না। বরং এর জন্য আরো কিছু শর্ত রয়েছে, যা এক্ষেত্রে বিদ্যমান নেই।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৩০/১৩৯; শরহুল মাজাল্লা ৪/৩২০; আলফাতাওয়াল খাইরিয়্যাহ ২/৯৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তির বিবাহের কথাবার্তা চলছিল। অতপর পাত্রী দেখতে গিয়ে কথা...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তির বিবাহের কথাবার্তা চলছিল। অতপর পাত্রী দেখতে গিয়ে কথা প্রসঙ্গে মেয়েকে বলে ফেলে যে, বিয়ের পর আমার কথা (হুকুম) না শুনলে তালাক। এখন তার জানার বিষয় হল, সত্যিই কি তার সঙ্গে বিয়ের পর যদি কখনো ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় বা ভুলে তার হুকুম না মানে তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে? যদি হয় তাহলে কয় তালাক পতিত হবে এবং সে অবস্থায় করণীয় কী?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মেয়েটি যদি বিয়ের পর কখনো স্বামীর কথা অমান্য করে তবুও ঐ কথার কারণে কোনো তালাক পতিত হবে না।

উল্লেখ্য যে, এ ধরনের কথাবার্তা বলা অন্যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে তা বিবাহ নষ্ট হওয়ার কারণও হয়ে যায়। তাই এরূপ বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ৪/৮; আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ ২৯/২০; হীলায়ে নাজেযা ২০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩৪৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৭৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আদর সোহাগ করে বা ভুলে স্বামী স্ত্রীকে বোন বললে শরীয়তের...

প্রশ্ন

আদর সোহাগ করে বা ভুলে স্বামী স্ত্রীকে বোন বললে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা আছে কি না? এবং এতে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে কি না?

উত্তর

স্ত্রীকে বোন বলে সম্বোধন করা ঠিক নয়। কেননা হাদীস শরীফে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। হাদীসে আছে, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বোন সম্বোধন করলে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা অপছন্দ করেন এবং এমনটি বলতে নিষেধ করেন। (সুনানে আবু দাউদ ১/৩০১; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৭/১৫২)

সুতরাং এমন সম্বোধন থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে এ কারণে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১৮; ফাতহুল কাদীর ৪/৯১; আলবাহরুর রায়েক ৪/৯৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমাদের এলাকায় অনেক বিয়েতে বিশাল অংকের মোহরানা ধার্য করা হয়,...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় অনেক বিয়েতে বিশাল অংকের মোহরানা ধার্য করা হয়, যা পরিশোধ করা হয় না। অনেক সময় তা পরিশোধ করা ছেলের সাধ্যাতীত থাকে। ধার্যের সময় বলা হয়, মোহরানা দেয়ইবা কে, নেয়ই বা কে? তবে বংশ মর্যাদা অনুযায়ী বড় মোহরানা ধার্য করতে হবে। এটা কি বৈধ?

উত্তর

বিবাহের সময় যে মোহর ধার্য করা হবে স্বামীকে তার পুরোটাই পরিশোধ করতে হবে। কাবিনে লিখিত পুরো মোহর স্ত্রীর প্রাপ্য হক। যদি বাস্তবে মোহর আদায়ের ইচ্ছা না থাকে বরং শুধু লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে বেশি পরিমাণ মোহর ধরা হয় তবে তা জায়েয হবে না। কিন্তু এরপরও যেই মোহরই ধার্য করা হবে তা পুরোটাই পরিশোধ করতে হবে। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত মোহর ধার্যের সময়ের কথা মোহর দেয়ইবা কে, নেয়ই বা কে-বললেও মোহর হিসাবে যা ধরা হবে তা পুরোটাই আদায় করতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, মোহর ধার্য করার ক্ষেত্রে উত্তম পন্থা হল, স্ত্রীর বংশে তার সমমানের নারীদের বাস্তবসম্মত মোহর এবং স্বামীর আর্থিক সামর্থ্য এ দুটি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে মোহর নির্ধারণ করা এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্ত্রীকে তা পরিশোধ করে দেওয়া।

-রদ্দুল মুহতার ৩/১০২; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৭৫০৭; তাফসীরে কুরতুবী ৫/৬৭; ফাতহুল মুলহিম ৩/৪৭৬; মাজমূ ফাতাওয়া, লাখনবী ৩/৪৮; ইমদাদুল আহকাম ২/৩৬৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৫১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক মহিলাকে তার স্বামী তালাক দেয়। সে সময় তাদের একটি...

প্রশ্ন

এক মহিলাকে তার স্বামী তালাক দেয়। সে সময় তাদের একটি পুত্রসন্তান ছিল। দুই মাস আগে গ্রামের এক লোকের সাথে ঐ মহিলার দ্বিতীয় বিবাহ হয়েছে। ঐ লোকটির সাথে এদের ইতিপূর্বে আত্মীয়তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। সন্তানের বর্তমান বয়স তিন বছর। এখন পিতা তার সন্তানকে নেওয়ার জন্য পিড়াপীড়ি করছে। এক্ষেত্রে শরয়ী হুকুম কী? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্তক্ষেত্রে সন্তানের মা অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কারণে তার ঐ সন্তান লালনপালনের অধিকার শেষ হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় শিশুর নিম্নোক্ত আত্মীয়গণের কেউ থাকলে ক্রমান্বয়ে তারা ঐ শিশুর লালনপালনের অধিকারী হবে-১. নানী ২. দাদী ৩. বোন ৪. খালা ও ৫. ফুফু।

যদি এদের কেউ না থাকে বা তারা সন্তানের দায়িত্ব নিতে না চায় তবে পিতা শিশুটিকে নিজের কাছে নিয়ে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে মা তাকে আটকে রাখতে পারবে না। উল্লেখ্য যে, সর্বক্ষেত্রে সন্তানের লালন-পালনের খরচাদি পিতাকেই বহন করতে হবে।

-সুনানে আবু দাউদ ৩/১১০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/২৯১; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৬৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৯৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমরা জানি, মদ খেয়ে তালাক দিলে তালাক পতিত হয়ে যায়।...

প্রশ্ন

আমরা জানি, মদ খেয়ে তালাক দিলে তালাক পতিত হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের এলাকার একজন মুফতী সাহেব বললেন, মদ খেয়ে পাগলের মতো মাতাল হয়ে গেলে ঐ পর্যায়ে পৌঁছার পর তালাক দিলে তালাক পতিত হবে না। এই ফতোয়াটি কতটুকু সঠিক? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মদ বা নেশাদ্রব্য সেবনের কারণে বেহুঁশ বা মাতাল হয়ে কোনো ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রীকে তালাক দিলেও তাকার্যকর হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তালাক পতিত না হওয়ার কথাটি সঠিক নয়।

প্রখ্যাত তাবেয়ী সায়ীদ ইবনে মুসাইয়িব রাহ. ও সুলাইমান ইবনে ইয়াসার রাহ.কে মাতাল ব্যক্তির(তালাক প্রদান) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা উভয়ে জবাবে বলেছেন, মাতাল ব্যক্তির তালাকপতিত হয়ে যাবে।-মুয়াত্তা ইমাম মালেক ২১৬

উল্লেখ্য যে, নেশাদ্রব্যের সেবন বা ব্যবহারকে আল্লাহ তাআলা সম্পূর্ণরূপে হারাম করেছেন এবং এথেকে বিরত থাকার জন্য কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া মদ পানের পার্থিব ক্ষতিও অনেক। তাইসকলকে এ থেকে বিরত থাকতে হবে।

-মুয়াত্তা ইমাম মালেক ২১৬; বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৫৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৪৭; ফাতহুল কাদীর ৩/৩৪৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৭০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

গতমাসে স্ত্রীর সাথে আমার ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সে আমাকে বলল,...

প্রশ্ন

গতমাসে স্ত্রীর সাথে আমার ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সে আমাকে বলল, ‘আমারে ছাইড়া দে। তোর ভাত আমি খামু না। তোর ঘরও আমি করমু না।’ উত্তরে আমি ক্ষিপ্ত হয়ে বললাম, ঠিক আছে, আমিও তোরে ছাইড়া দিলাম। জানার বিষয় হল, এর দ্বারা কি তালাক হয়েছে? যদি তালাক হয়ে থাকে তাহলে কীভাবে আমার স্ত্রীকে স্ত্রীরূপে পেতে পারি?

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে আমাদের মাঝে তালাক বিষয়ক কোনো ঘটনা ঘটেনি।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজঈ পতিত হয়েছে। ইদ্দতের ভিতরে মৌখিক বা লিখিতভাবে তাকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করে নিলেই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুনর্বহাল হয়ে যাবে। এভাবে ইদ্দতের ভিতরে ফিরিয়ে নিলে নতুন করে বিবাহ করা লাগবে না। কিন্তু ইদ্দত অবস্থায় তাকে এভাবে ফিরিয়ে না নিলে কিংবা তার সাথে স্ত্রী সুলভ আচরণও না হলে এই ইদ্দত শেষে তালাকটি বায়েনে পরিণত হবে এবং আপনারা একে অপরের জন্য হারাম হয়ে যাবেন। তখন পুনরায় সুষ্ঠুভাবে দাম্পত্যজীবন গড়তে চাইলে নতুন মোহর ধার্য করে যথানিয়মে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪৩১; রদ্দুল মুহতার ৩/২৯৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/১৩৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭৯, ১/৪৬৮; আলবাহরুর রায়েক ৪/৪৯; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৫/১৪৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৬৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

পাঁচ বছর আগে মুহাম্মাদ আদনান নাজিবের সাথে আমার বিয়ে হয়।...

প্রশ্ন

পাঁচ বছর আগে মুহাম্মাদ আদনান নাজিবের সাথে আমার বিয়ে হয়। ইতিমধ্যে আমাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে হয়েছে। বিয়ের কাবিন নামার ১৮ নং ধারায় আমার স্বামী আমাকে তালাক গ্রহণের অধিকার দেয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে মৌখিকভাবে আমাকে এই বলে তালাক গ্রহণের অনুমতি দিয়েছে যে, আমি যদি কোনো দিন তোমার গায়ে হাত তুলি অর্থাৎ মারধর করি তাহলে তুমি স্বেচ্ছায় তালাক গ্রহণ করতে পারবে। গত বছর থেকে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। সে ঠিকমতো ভরণ-পোষণ দেয় না। আমার ছেলে মেয়ের যত্ন নেয় না। আমি খরচ চাইলে রাগারাগি করে। বেশ কয়েকবার সে আমাকে খুব মারধরও করেছে। তাই আমি গত ২/১/২০১২ তারিখে আমাকে তালাক গ্রহণের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এক তালাকে বায়েন গ্রহণ করেছি। কিন্তু এখন সে আমার ও আমার পরিবারের কাছে কান্নাকাটি করে ও বার বার ক্ষমা চেয়ে আমাকে পুনরায় নিতে চাচ্ছে। জানার বিষয় হল, উল্লেখিত অবস্থায় আমার তালাক গ্রহণ সঠিক হয়েছে কি না? যদি হয়ে থাকে তাহলে আমার জন্য তার কাছে পুনরায় ফিরে যাওয়ার শরীয়তসম্মত কোনো পন্থা আছে কি না? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা সত্য হলে আপনি যেহেতু স্বামীপ্রদত্ত ক্ষমতাবলেই এক তালাকে বায়েন গ্রহণ করেছেন তাই এর দ্বারা আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। ইদ্দত শেষে আপনি ইচ্ছা করলে অন্যত্র বিবাহ করতে পারেন। আর পূর্বের স্বামীর সাথে পুনরায় ঘরসংসার করতে

চাইলে ইদ্দতের ভিতরে বা পরে নতুন মোহর ধার্য করে যথানিয়মে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪০১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৫১৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৩২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৩১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

যায়েদের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সে সায়েমাকে বিবাহ করেছে। পূর্বে...

প্রশ্ন

যায়েদের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সে সায়েমাকে বিবাহ করেছে। পূর্বে সায়েমার বিবাহ হয়েছিল লাবীবের সাথে। লাবীব থেকে তার একজন সন্তানও আছে। যার নাম রাকীব। জানার বিষয় হল, সায়েমার বর্তমান স্বামী যায়েদ থেকে রাকীব মিরাছ পাবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী রাকীব যায়েদের ওয়ারিশ নয়। তাই সে যায়েদ থেকে মিরাছ পাবে না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/২৮৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৬২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২০/২১৬; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া ৫১০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৪৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮২০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার এক চাচার বিয়ে হয়েছে বছর খানেক আগে। বিয়েতে মোহর...

প্রশ্ন

আমার এক চাচার বিয়ে হয়েছে বছর খানেক আগে। বিয়েতে মোহর ধার্য করা হয়নি। এখন ঐ চাচির পরিবার হতে মোহর পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। চাচার সম্পদ থেকে চাচির মোহর দেওয়া কি ওয়াজিব?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার চাচার সম্পদ থেকে চাচির মোহর আদায় করা জরুরি। কেননা, মোহর স্ত্রীর প্রাপ্য হক। মোহর আদায় না করে স্বামী মারা গেলে স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে সম্পদ বণ্টনের পূর্বেই অন্যান্য ঋণের ন্যায় এটিও আদায় করতে হয়। মোহর যদি পূর্বে ধার্য করা না হয় (যেমন প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পূর্বে মোহর ধার্য ছিল না) তাহলে সেক্ষেত্রে মোহরে মিছিল আদায় করতে হয়। মোহরে মিছিল হল, স্ত্রীর পিতার দিকের বিবাহিতা মহিলা আত্মীয় অর্থাৎ বোন, ফুফু ও চাচাতো বোনদের মধ্যে যারা দ্বীনদারী, বয়স, সৌন্দর্য, গুণাবলি, বংশ মর্যাদা ও জ্ঞান-গরিমা ইত্যাদিতে তার মতো হয় তাদের মোহরের অনুপাতে অনুরূপ মোহর নির্ধারণ করা।

-মাবসূত, সারাখসী ৫/৬২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৫৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩০৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৪৬; রদ্দুল মুহতার ৩/১৩৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক মহিলা তার স্বামীর কাছে মহরের টাকা পেত। বিয়ের এক...

প্রশ্ন

এক মহিলা তার স্বামীর কাছে মহরের টাকা পেত। বিয়ের এক বছর পর মহিলা স্বামীকে স্বেচ্ছায় বলল, আমার মহরের টাকা দিতে হবে না। তা তোমাকে দিয়ে দিলাম। এর কিছুদিন পর কোনো এক বিষয় নিয়ে পরস্পর ঝগড়া হয়েছে। তখন থেকে মহিলা মহরের টাকা দাবি করছে। এখনও মহিলা স্বামীর কাছে মহরের টাকা চায়।

প্রশ্ন হল, স্বামীর জন্য ঐ মহরের টাকা পরিশোধ করতে হবে কি? উল্লেখ্য, মহিলা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এ কথা বলেছিল যে, মহরের টাকা দিতে হবে না।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী বাস্তবেই যদি ঐ মহিলা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মহর মাফ করে দিয়ে থাকে তাহলে তা মাফ হয়ে গেছে। সুতরাং এরপর মহিলার জন্য পুনরায় মহর দাবি করা অন্যায়। স্বামীর জন্য তার মহরের দাবি পূরণ করা জরুরি নয়। তবে সামর্থ্য থাকলে তা পুরো বা আংশিক আদায় করে দিলেই ভালো।

উল্লেখ্য যে, মহর স্ত্রীর প্রাপ্য হক। তার উপর কোনো চাপ প্রয়োগ করে বা তাকে লজ্জায় ফেলে এ হক মাফ করানো যাবে না। অবশ্য মহিলা যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিনা চাপে নিজ থেকে মহরের হক ছেড়ে দেয় তাহলে তা মাফ হয়ে যাবে।

-সূরা নিসা : ৪; আহকামুল কুরআন, কুরতুবী ৫/১৮; সহীহ বুখারী ১/৩৫২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৯১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৯৫, ৩৯৬, ৪০২; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৫০; হেদায়া ৩/২৯০; রদ্দুল মুহতার ৩/১১৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৯৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক মহিলা চার ছেলে দুই মেয়ে রেখে মারা গেছে। তার...

প্রশ্ন

এক মহিলা চার ছেলে দুই মেয়ে রেখে মারা গেছে। তার পিতামাতা ও স্বামী পূর্বেই মারা গেছে। এখন আমার প্রশ্ন হল, ঐ মহিলার সম্পত্তি তার ছেলেমেয়ের মাঝে কীভাবে বণ্টন

করা হবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মৃতের রেখে যাওয়া সমুদয় সম্পদ থেকে প্রথমে প্রয়োজন হলে তার কাফন-দাফন সংক্রান্ত খরচ আদায় করবে। এরপর তার কোনো ঋণ থাকলে তাও আদায় করতে হবে। এরপর তার শরীয়তসম্মত কোনো অসিয়ত থাকলে অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে তা আদায় করতে হবে। তারপর তার অবশিষ্ট সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জীবিত ওয়ারিশদের মাঝে (প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে) নিম্নে বর্ণিত শতকরা হারে বণ্টিত হবে।

প্রত্যেক ছেলে শতকরা ২০% আর প্রত্যেক মেয়ে ১০% করে পাবে।

-সূরা নিসা : ১১; সহীহ বুখারী ২/৯৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৭৫; মাবসূত সারাখসী ২৯/১৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/২৮৮; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৮৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি হঠাৎ বিয়ে করে ফেলেছে। বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর সুযোগ পায়নি।...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি হঠাৎ বিয়ে করে ফেলেছে। বন্ধু-বান্ধবদের জানানোর সুযোগ পায়নি। একদিন সে তার স্ত্রীকে নিয়ে কোথাও যাচ্ছিল পথিমধ্যে তার এক বন্ধু তাকে বলল, তোমার সাথে এই মেয়েটি কে? সে তখন কৌশলগতভাবে বলল, সে আমার বোন। আমার প্রশ্ন হল, উল্লেখিত অবস্থায় কি তার স্ত্রী হারাম হয়ে গেছে? যদি হারাম হয়ে থাকে তাহলে করণীয় কী?

উত্তর

স্ত্রীকে বোন বলার কারণে সে স্বামীর জন্য হারাম হয়ে যায়নি। তবে বোন বলার কারণে দুটি গুনাহ হয়েছে : ১. স্ত্রীকে বোন বলা, যা শরীয়তে নিষিদ্ধ। ২. মিথ্যা বলা, যা হারাম কাজ। সুতরাং লোকটিকে তাওবা করে নিতে হবে।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২১০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪৭০; আলবাহরুর রায়েক ৪/৯৮; ফাতহুল কাদীর ৪/৯১; আননাহরুল ফায়েক ২/৪৫৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৩১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আবদুল করীমের মা মারা গেলে তার পিতা এক বিধবা মহিলাকে...

প্রশ্ন

আবদুল করীমের মা মারা গেলে তার পিতা এক বিধবা মহিলাকে বিবাহ করে। ঐ মহিলাটির পূর্বের স্বামী থেকে একটি মেয়ে ছিল, সেও এখন থেকে মায়ের সাথে বাড়িতে থাকে, মেয়েটি বড় হলে আবদুল করীম তাকে বিবাহ করতে চায়। এলাকার সাধারণ জনগণ বলল, তুমি তাকে কিভাবে বিবাহ করবে? সে তো তোমার সৎ বোন। জনগণের বাধা দেওয়া সত্ত্বেও আবদুল করীম ঐ মেয়েটিকে বিবাহ করে ঘর সংসার করছে।

এখন আমার জানার বিষয় হল, আবদুল করীম ও তার সৎ বোনের (সৎ মায়ের পূর্বের স্বামীর মেয়ে) মাঝে বিবাহ সহীহ হয়েছে কি না এবং বর্তমান ঘর সংসার করার কারণে তারা গুনাহগার হচ্ছে কি না? উল্লেখ্য, আবদুল করীমও ঐ মেয়েটির মাঝে কোনো দুধ সম্পর্কও নেই।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ মেয়েটির সাথে আবদুল কারীমের বিবাহ সহীহ হয়েছে। কারণ উভয়ের বাবা-মা ভিন্ন এবং তাদের মাঝে রক্তের সম্পর্ক নেই।

-সূরা নিসা : ২৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৩২; আলমুগনী ৯/৫২৫; তানকীহুল ফাতাওয়া হামীদিয়া ১/১৬; ইমদাদুল আহকাম ২/২৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমাদের এলাকায় এক ছেলে এ শর্তে বিয়ে করেছে যে, মেয়ে...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় এক ছেলে এ শর্তে বিয়ে করেছে যে, মেয়ে পক্ষ তাকে বিদেশ পাঠাবে। বিবাহের মধ্যে এ ধরনের শর্ত করা কি জায়েয?

উত্তর

না। এ ধরনের শর্ত করা জায়েয নয়। কেননা, মেয়ে বা মেয়েপক্ষ থেকে শর্ত করে বা চাপ প্রয়োগ করে কোনো অর্থ, সম্পদ বা সেবা গ্রহণ করা সম্পূর্ণ হারাম। এটা পরিষ্কার ঘুষ। আর সহীহ হাদীসে আছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহিতা উভয়ের প্রতি অভিশাপ করেছেন।’ (সুনানে আবু দাউদ ৪/২১০; জামে তিরমিযী ১/১৫৯; ইবনে মাজাহ ২/৩২৩; সুনানে বায়হাকী ১০/২৬৫; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮/১৪৮)

সুতরাং আকদের সময় এ ধরনের শর্ত করা হলেও তা বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য। আর এই শর্তের সুবাদে স্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো কিছু নেওয়া হলে তা ফেরত দেওয়া অপরিহার্য।

আলফাতাওয়াল খাইরিয়্যাহ ১/৪৮; রদ্দুল মুহতার ৫/৭০১; আলবাহরুর রায়েক ৬/২৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমরা জানতাম, চুলের খোপা বেঁধে নামায পড়া যায়। কিছু দিন...

প্রশ্ন

আমরা জানতাম, চুলের খোপা বেঁধে নামায পড়া যায়। কিছু দিন পূর্বে আমাদের গ্রামের জনৈক মহিলা বলল, তার স্বামী কোনো হুজুরের কাছে শুনেছে যে, খোপা বেঁধে নামায পড়লে নামায হয় না। চুল ছেড়ে নামায পড়তে হয়। ঐ মহিলার স্বামীর কথা সঠিক কি না জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

না, তার কথা ঠিক নয়। মহিলারা খোপা বেঁধেও নামায পড়তে পারবে। এতে দোষের কিছু নেই।

উল্লেখ্য যে, নামায অবস্থায় মহিলাদের চুল পরিপূর্ণরূপে ঢেকে রাখা জরুরি। সুতরাং তারা চুল এভাবে রাখবে, যেন রুকু-সিজদা বা অন্য কোনো অবস্থায় তা বেরিয়ে না পড়ে।

-নাইলুল আওতার ২/৩৮৬; তুহফাতুল আহওয়াযী ২/৩২৬; মাআরিফুস সুনান ৩/৪৭০; রদ্দুল মুহতার ১/৪০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৫; আলইনায়া ১/১২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬০৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

হযরত যাকারিয়া আ. সম্পর্কে লোকমুখে শুনা যায় যে, তাকে কাফেররা...

প্রশ্ন

হযরত যাকারিয়া আ. সম্পর্কে লোকমুখে শুনা যায় যে, তাকে কাফেররা হত্যার জন্য ঘিরে নিলে তিনি নিরুপায় হয়ে গাছের কাছে আশ্রয় চাইলে গাছ দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। তিনি ঐ গাছের মধ্যে আশ্রয় নেন। গাছ পূর্ববৎ হয়ে যায়। কিন্তু তাঁর জামার আচল বের হয়ে থাকায় কাফেররা চিনে ফেলে এবং অস্ত্র দিয়ে গাছ চিরে, এতে নবীও দুই ভাগ হয়ে যান। এরূপ একটি কাহিনী শুনা যায়। এটা কতটুকু সত্য?

উত্তর

প্রশ্নে বর্ণিত ঘটনাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সহীহ হাদীসে তা পাওয়া যায় না। ইবনে কাছীর রাহ. আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া(২/২২৮-২২৯) গ্রন্থে এই ঘটনাটি খুবই আপত্তিকর বলে মন্তব্য করেছেন। সুতরাং তা বর্ণনা করা যাবে না। হযরত যাকারিয়া আ. ও অন্যান্য নবীদের সম্পর্কে করআন মজীদ ও সহীহ হাদীসে যতটুকু বর্ণনা আছে ততটুকু জানাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। তাই হযরত যাকারিয়া আ.-এর সম্পর্কে কুরআন মজীদের কয়েকটি আয়াতের তরজমা ও একটি সহীহ হাদীসের অনুবাদ পেশ করা হল। (তরজমা) আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহের বিবরণ, তার বান্দা যাকারিয়া আ.-এর প্রতি, যখন তিনি নিজ পালনকর্তাকে গোপনে আহবান করেছিলেন। তিনি প্রার্থনা করলেন, হে আমার পালনকর্তা! আমার অস্থিসমূহ দুর্বল হয়ে পড়েছে। বার্ধক্যে মস্তক সুশুভ্র হয়ে গেছে। (মাথার সমস্ত চুল পেকে সাদা হয়ে গেছে)। হে আমার পালনকর্তা! আপনাকে ডেকে আমি কখনো বিফল মনোরথ হইনি। আর আমি আমার পরে স্বজনবর্গ হতে আশঙ্কা করছি ( যে, তারা শরীয়তের এবং ধর্মের সেবা করবে না।) এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। অতএব আপনি বিশেষভাবে আপনার পক্ষ থেকে আমাকে একজন ওয়ারিশ (পুত্র) দান করুন। সে আমার এবং ইয়াকুব-এর বংশের উত্তরাধিকারী হবে। হে আমার পালনকর্তা! তাকে আপনি সন্তোষজনক করুন। (আল্লাহ তাআলা বললেন,) যে যাকারিয়া! আমি তোমাকে একটি পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি। তার নাম হবে ইয়াহইয়া। ইতিপূর্বে আমি এ নামে কারো নামকরণ করিনি। তিনি বললেন, হে আমার পালনকর্তা! কেমন করে আমার পুত্র হবে, অথচ আমার স্ত্রী যে বন্ধ্যা। আর আমিও যে বার্ধক্যের শেষ প্রান্তে উপনীত। তিনি বললেন, এমনিতেই হবে। তোমার পালনকর্তা বলে দিয়েছেন, এটা আমার জন্য সহজ। ... (সূরা মারইয়াম : ১-১১)

সহীহ মুসলিমে (২/২৬৮) হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, তিনি নিজ হাতে জীবিকা নির্বাহ করতেন এবং পেশায় তিনি ছিলেন একজন ছুতার।-শরহুন নববী মুসলিম ১৫/১৩৫

কুরআন মজীদের নিম্নোক্ত সূরাগুলোতেও তার সম্বন্ধে আলোচনা আছে। সূরা আলইমরান : ৩৭-৪১; সূরা আম্বিয়া : ৯০-৯৮; সূরা আনআম : ৮৫; সূরা হুদ : ৭২-৭৩।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৪১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি বিবাহের কয়েক মাস পর কয়েকজন লোকের সামনে স্ত্রীর...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি বিবাহের কয়েক মাস পর কয়েকজন লোকের সামনে স্ত্রীর অনুপস্থিতে তাকে তালাক গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করে। তালাক গ্রহণের ক্ষমতা প্রদানের বিষয়টি স্ত্রীর কাছে পৌঁছার আগেই মহিলাটি নিজ থেকে তালাকে বায়েন গ্রহণ করে।

জানতে চাই, ঐ মহিলার তালাক গ্রহণ করা সহীহ হয়েছে কি না?

উল্লেখ্য যে, তাদের বিবাহের কাবীননামার ১৮ নং ধারায় লেখা আছে যে, না, তালাকের অধিকার দেওয়া হয়নি।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাস্তবেই যদি মহিলাটি তালাক গ্রহণের অধিকার দেওয়ার বিষয়টি অবগত হওয়ার আগেই তালাক গ্রহণ করে থাকে তাহলে তার তালাক গ্রহণ সহীহ হয়নি এবং ঐ তালাক কার্যকর হয়নি। কারণ স্ত্রী তালাক গ্রহণের অনুমতি না জেনে তালাক গ্রহণ করলে তা কার্যকর হয় না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫২১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৭৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

শ্বশুর-শাশুড়িকে আব্বা-আম্মা বলা যাবে কি? যদি বলা যায় তাহলে ওই...

প্রশ্ন

শ্বশুর-শাশুড়িকে আব্বা-আম্মা বলা যাবে কি? যদি বলা যায় তাহলে ওই হাদীসের ব্যাখ্যা কী হবে, যে হাদীসে অন্যকে পিতা বলে সম্বোধন করতে নিষেধ করা হয়েছে?

উত্তর

হাদীসে যে অন্যকে পিতা বলে সম্বোধন করতে নিষেধ করা হয়েছে এর অর্থ বংশপরিচয় প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আসল পরিচয় গোপন রেখে নিজের পিতার নাম উল্লেখ না করে, অন্যের নাম প্রকাশ করা। যেমন-আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন অথবা এমন কোনো দলিল বা স্থান যেখানে কোনো ব্যক্তির জন্মদাতা পিতার নাম প্রকাশ করা জরুরি হয়। আর স্বামী বা স্ত্রীর পিতা-মাতাকে সম্মানার্থে আব্বা-আম্মা বলে সম্বোধন করার দ্বারা বংশপরিচয় গোপন হয় না। তাই শ্বশুর-শাশুড়িকে আব্বা-আম্মা বলা হাদীসের নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত নয় এবং তা জায়েয।

আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৩৫৪; সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৭৬৬; ৬৭৬৮, ৪৩২৬, ৪৩২৭,৩৫০৮; উমদাতুল কারী ১৬/৭৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১২-১১৫; ইকমালুল মুলিম ১/৩১৯; তাফসীরে রূহুল মাআনী ৯/২১০; তাফসীরে কুরতুবী ১২/৬৭; ফাতহুল মুলহিম ১/২৩৬; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৯/৪৯-৫২; মুসনাদে আহমদ ১/১৭৪, ৩/৮৯; ফয়যুল কাদীর ৬/৪৬; কেফায়াতুল মুফতী ৯/১১৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৮৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক মহিলার স্বামী মারা যাওয়ায় সে ইদ্দত পালন করছে। এ...

প্রশ্ন

এক মহিলার স্বামী মারা যাওয়ায় সে ইদ্দত পালন করছে। এ অবস্থায় কি সে নাকফুল পরতে পারবে? রঙিন কাপড় পরতে পারবে? চুল আচড়াতে পারবে? একজন বললেন, চুল আচড়ানো নিষেধ। তাহলে এত লম্বা চুল না আচড়ালে তো জট বেঁধে যাবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর জন্য ইদ্দত অবস্থায় সকল প্রকার সাজসজ্জা ত্যাগ করা জরুরি। তাই অলংকার পরা যাবে না। এমনকি নাকফুলও খুলে রাখতে হবে। আর রঙিন সাধারণ ব্যবহৃত কাপড় পরতে পারবে। সাদা কাপড় পরা বাধ্যতামূলক নয়। তবে পুরাতন কাপড় থাকলে নতুন কাপড় পরবে না। তদ্রূপ ঝলমলে কাপড় থেকেও বিরত থাকবে। সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে চুল আচড়াতে পারবে না। তবে চুলের স্বাভাবিকতা রক্ষা করার জন্য আচড়ানোর প্রয়োজন হলে তা পারবে। এটা নিষিদ্ধ নয়।

সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৩০৪; মুসনাদে আহমদ ৬/৩০২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৩৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/২৬৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৭২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক ব্যক্তি তার ১৩ বছর বয়সের সাবালিকা কন্যার নিকট স্থানীয়...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি তার ১৩ বছর বয়সের সাবালিকা কন্যার নিকট স্থানীয় একটি ছেলের সঙ্গে তার বিবাহের ব্যাপারে তার মতামত জানতে চায়। মেয়ে হ্যাঁ, না কিছুই না বলে চুপ থাকে। তবে মেয়ে মনে মনে উক্ত বিবাহের ব্যাপারে সম্পূর্ণ নারাজ ছিল। এ অবস্থায় তাদের আকদ হয় এবং এখনো মেয়েটি নারাজ হয়েই ঘর-সংসার করছে। জানতে চাই, তাদের বিবাহ সহীহ হয়েছে কি না? এবং তাদের জন্য এখন ঘর-সংসার করা কি বৈধ হচ্ছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বর্ণনা মতে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। কারণ বিয়ে সম্পর্কে মতামত জানতে চাওয়ার সময় মেয়ের চুপ থাকা এবং প্রত্যাখ্যান না করা এবং পরবর্তীতে ঘর-সংসার করা মেয়েটির সম্মতির প্রকাশ্য প্রমাণ। সুতরাং এক্ষেত্রে নারাজ থাকার অর্থ এই বিয়ে তার মনোপুত না হওয়া এবং এ স্বামীর সঙ্গে ঘর-সংসারে সন'ষ্ট না হওয়া। এটি বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার জন্য প্রতিবন্ধক নয়। অসন'ষ্টচিত্তে সম্মতি দিলেও বিয়ে সহীহ হয়ে যায়।

সহীহ মুসলিম ১/৪৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৮৭; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৩৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া পৃ. ৩৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/২৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৬৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৪৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার বড় ভাইয়ের বিয়েশাদির আলোচনা চলছিল। পাত্রী দেখতে বিলম্ব হয়ে...

প্রশ্ন

আমার বড় ভাইয়ের বিয়েশাদির আলোচনা চলছিল। পাত্রী দেখতে বিলম্ব হয়ে যায়। ইতিমধ্যে মুহররম মাস এসে পড়ে। কথা ছিল পাত্রী দেখে পছন্দ হলে ৫/১০ দিনের মধ্যে বিয়ে হয়ে যাবে। কিন্তু মুরব্বীগণ সতর্ক করে দিলেন, এটা মুহাররম মাস। এ মাসে বিয়ে অশুভ। তাই আমরা বিয়ের বিষয়টা স্থগিত রেখেছিলাম। জানতে চাই, এ ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশনা কী?

উত্তর

মুহাররম মাসে বিয়ে-শাদী অশুভ মনে করা একটি কু-ধারণা, যা সম্পূর্ণ অবাস্তব। কোনো দিন বা মাসকে অলক্ষুণে মনে করা জাহেলী যুগের ধারণা। শরীয়ত এ ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ও শিরকী ধারণা বলে অভিহিত করেছে। হাদীস শরীফে এসেছে, কুলক্ষণ গ্রহণ করা শিরক। (সুনানে আবু দাউদ ২/১৯০)

মুহাররম মাসে হযরত হুসাইন রা.-এর শাহাদতের কারণে একশ্রেণীর লোক এ মাসকে অশুভ মনে করে থাকে, যা তাদের মনগড়া বিষয়। হযরত হুসাইন রা.-এর শাহাদত অবশ্যই মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত হৃদয় বিদারক, কিন্তু এ কারণে কোনো মাস বা সময়কে অশুভ মনে করার অবকাশ নেই। পৃথিবীতে যা কিছু ঘটে সব আল্লাহর ইচ্ছাতেই ঘটে। কোনো দিবস-রজনী, সপ্তাহ, মাসের এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। জাহেলী যুগে শাওয়াল মাসে বিবাহ-শাদি করাকে অশুভ মনে করা হত। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. এই ধারণাকে এই বলে খণ্ডন করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শাওয়াল মাসেই বিয়ে করেছেন এবং এ মাসেই বিবাহ-রজনী উদযাপন করেছেন। অথচ তাঁর অনুগ্রহ লাভে আমার চেয়ে অধিক সৌভাগ্যবতী স্ত্রী আর কে আছে? (সহীহ মুসলিম হাদীস : ১৪২৩)

অতএব প্রমাণিত হল, কোনো দিন বা মাসকে কোনো কাজের জন্য অশুভ মনে করা ঠিক নয়। এ ধারণা সম্পূর্ণ অলীক, শিরকপ্রসূত।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৪৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি বিবাহের সময় স্ত্রীর মহর বাবদ ধার্য টাকা কিছু পরিশোধ...

প্রশ্ন

আমি বিবাহের সময় স্ত্রীর মহর বাবদ ধার্য টাকা কিছু পরিশোধ করি এবং অবশিষ্ট টাকা পরে দেব বলে ওয়াদা দেই। আমার জানার বিষয় হল, আমি কি এখন আমার স্ত্রীকে স্পর্শ করতে পারব?

উত্তর

হ্যাঁ, পারবেন। মহরের টাকা বাকি থাকলে স্বামী স্ত্রীকে স্পর্শ করতে পারে না-এ ধারণা ভুল। তবে নগদ আদায়যোগ্য মহর পরিশোধ করা না হলে, স্ত্রী শুরু থেকেই স্বামীকে নিজের নিকট আসা থেকে বারণ করতে পারে। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নগদ মহর তো আপনি দিয়েই দিয়েছেন। সুতরাং স্পর্শ না করার বিষয়টি আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১৫৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১১৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৭৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৮০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩১৬; রদ্দুল মুহতার ৩/১১৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩১১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি এক মাসের চুক্তিতে ২,৫০০/- টাকার বিনিময়ে ১টি রুম ভাড়া...

প্রশ্ন

আমি এক মাসের চুক্তিতে ২,৫০০/- টাকার বিনিময়ে ১টি রুম ভাড়া নিয়েছি। ৭/৮ দিন থাকার পর বাসার পানির পাইপ ফেটে যাওয়ার কারণে পানি এতই খারাপ হয়েছে যে, খাওয়া-দাওয়া, অযু-গোসল ইত্যাদি কোনো কাজে ব্যবহারের যোগ্য ছিল না। এমনকি এ কারণে আমার এক বাচ্চার ডায়রিয়া হয়েছে এবং আমার স্ত্রী ও আরেক বাচ্চা অসুস্থ হয়েছে। তারপরও আমি ৪/৫ দিন বাহির থেকে পানি এনে সকল কাজ করি। পরবর্তীতে পানির লাইন ঠিক না করার কারণে ১২ দিন পর বাসা ছেড়ে দিই। এখন বাড়িওয়ালা বলছে, ঐ মাসের পূর্ণ ভাড়া দেওয়ার জন্য। আমি বলছি যে, আমি যুক্তিসঙ্গত কারণে বাসা ছেড়েছি। বিনা কারণে বাসা ছাড়িনি। তাই যতদিন ছিলাম ততদিনের ভাড়া দিব।

জানিয়ে বাধিত করবেন যে, শরীয়তের আলোকে কার কথা সঠিক?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী বাসার পাইপ ফিটিংসের ত্রুটির কারণেই যদি পানি খারাপ হয়ে থাকে, আর বাড়িওয়ালাকে অবগত করার পরও তা ঠিক না করে থাকে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পুরো মাসের ভাড়া দেওয়া আপনার জন্য জরুরি নয়; বরং ১২ দিনের পূর্ণ ভাড়া সকল বিলসহ আদায় করতে হবে। অবশ্য পানি যতদিন ব্যবহার উপযোগী ছিল ততদিনের পানির বিল আদায় করতে হবে।

হেদায়া ৩/২৯৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৯, ৮০ ও ৮১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১২২, ১৬১; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩৫২; মাজমাউল আনহুর ৩/৫৫৫; আলকিফায়া ৮/৮৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩৫; ফাতাওয়া খায়রিয়া ২/২০৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৮; শরহুল মাজাল্লা, খালিদ আতাসী ২/৬০৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৬৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

গত কিছুদিন আগে আমাদের সিলেট শহরে একটি গানের আয়োজন করা...

প্রশ্ন

গত কিছুদিন আগে আমাদের সিলেট শহরে একটি গানের আয়োজন করা হয়েছিল। এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ তাতে বাধা দিলেও তারা তা করেছে। একপর্যায়ে মুসলমান সন্তানদের কেউ কেউ গানকে খুব ভালো বলে হাত তালি দেয়। এতে এলাকার এক লোক বলেন, গুনাহকে ভালো বলার কারণে তাদের ঈমান নষ্ট হয়ে গেছে এবং তাদের বউ তালাক হয়ে গেছে। একথা ঠিক কি না? তাদের এখন করণীয় কী?

উত্তর

গান গাওয়া, গান শোনা এবং কোনো গানকে ভালো বলা নিঃসন্দেহে কবীরা গুনাহ। হাদীস শরীফে গান শোনা এবং গান গাওয়ার ব্যাপারে কঠোর শাস্তির কথা এসেছে। তবে কোনো গানকে ভালো বললেই ঈমান চলে যাবে একথা ঠিক নয়। কেননা গান ভালো বলার অর্থ এও হতে পারে যে, গানটি তাদের কাছে শুনতে ভালো লাগে। তাই প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী গানের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের তওবা-ইস্তিগফার করা জরুরি। তবে উপরোক্ত কথার দ্বারা তাদের ঈমান নষ্ট হয়নি এবং তাদের স্ত্রীও তালাক হয়নি।

সহীহ বুখারী ৮৩৭; ফাতহুল মুলহিম ২/৪৩৬; ফাতহুল বারী ১০/৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৭৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৪৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৬৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি ত্রিশ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে একটি মেয়েকে...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি ত্রিশ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে একটি মেয়েকে বিয়ে করে এবং তার সাথে বাসর হয়। তবে তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী সূলভ কোনো আচরণ হয়নি। এ অবস্থায় লোকটি তাকে তালাক দেয়। জানতে চাই, মেয়েকে কি ইদ্দত পালন করতে হবে এবং ঐ ব্যক্তিকে কি মোহর দিতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু বাসর হওয়ার পর তালাক দেওয়া হয়েছে তাই মেয়েটির উপর ইদ্দত পালন করা জরুরি এবং লোকটির উপর পূর্ণ মোহর (ত্রিশ হাজার টাকা) দেওয়াও জরুরি। কেননা, ইদ্দত হওয়া এবং পূর্ণ মোহর প্রাপ্তির জন্য স্বামী-স্ত্রী সুলভ আচরণ শর্ত নয়; একত্রে নির্জন কক্ষে অবস্থানই যথেষ্ট।

মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৯/২০৬; ইলাউস সুনান ১১/৮৯; হিদায়া ২/৩৪৫; ফাতহুল কাদীর ৩/২১৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/৩৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৫৪৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৫৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া হলে স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে, তুমি আমার বাবা...

প্রশ্ন

স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া হলে স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে, তুমি আমার বাবা অথবা আমি তোমার মা তাহলে ইসলামের বিধান অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক থাকে কি না?

উত্তর

এ ধরনের কথা বলা গুনাহ। তবে স্ত্রীর ঐ কথার কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। তাদের বৈবাহিক বন্ধন অটুট রয়েছে।

সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ২২১০; আসসুনানুল কুবরা বায়হাকী ৭/৩৬৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৪৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

হাদীসে যে ‘দৈয়জ’ শব্দ এসেছে এর অর্থ কী? ‘দৈয়জ’ সম্পর্কে...

প্রশ্ন

হাদীসে যে ‘দৈয়জ’ শব্দ এসেছে এর অর্থ কী? ‘দৈয়জ’ সম্পর্কে হাদীসে কী বলা হয়েছে? বিস্তারিত জানাবেন বলে আশা করি।

উত্তর

হাদীস শরীফের ঐ শব্দটি হল দাইয়ূছ। এর অর্থ হল, এমন স্বামী যে স্ত্রী বা পরিবারের কোনো মহিলাকে পাপাচার, ব্যভিচার করতে বাধা দেয় না। এককথায় বলা যায়, অসতী স্ত্রী বা নারীর আত্মমর্যাদাহীন নির্বিকার স্বামী বা অভিভাবক।

এ সম্পর্কিত একটি হাদীস হল, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তিন ব্যক্তির উপর আল্লাহ তাআলা জান্নাতকে হারাম করেছেন : ১। মদে অভ্যস্ত ব্যক্তি ২। পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান এবং ৩। দাইয়ূছ- যে তার পরিবার বা স্ত্রীর পাপাচারকে সমর্থন করে।

মুসনাদে আহমদ হাদীস : ৫৩৭২; বুলূগুল আমানী ৩/৩৫৫৬ হাদীস : ৯৯৭৫; মাজমাউ বিহারিল আনওয়ার ২/২২২; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৭০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার চেহারায় গোঁফের স্থানে বড় আকারে লোম রয়েছে এবং আমার...

প্রশ্ন

আমার চেহারায় গোঁফের স্থানে বড় আকারে লোম রয়েছে এবং আমার ভ্রূ কিছুটা চওড়া। আমার স্বামী সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আমার ভ্রূ জোড়া চিকন করতে ও চেহারার অন্যান্য লোমগুলো তুলে ফেলতে বলছেন। জানতে চাই, এভাবে ভ্রূতে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা ও চেহারার অন্যান্য লোম তুলে ফেলার অনুমতি আছে কি না?

উত্তর

মহিলাদের গোঁফ, দাড়ি বা এর আশপাশের স্থানে কোনো লোম গজালে তা তুলে ফেলার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু ভ্রূ চিকন করা বৈধ নয়। স্বামী চাইলেও তা করা জায়েয হবে না। কেননা হাদীস শরীফে এ জাতিয় মহিলাদের উপর অভিসম্পাত করা হয়েছে।

সহীহ বুখারী হাদীস : ৫৫৩৯; সহীহ মুসলিম হাদীস : ৫৫২৯; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৪/১৯৫; ফাতহুল বারী ১০/৩৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৭৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৫; হাশিয়া তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৮৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৫৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি এবং আমার স্ত্রীর মাঝে বিয়ের পর থেকেই ঝগড়া লেগে...

প্রশ্ন

আমি এবং আমার স্ত্রীর মাঝে বিয়ের পর থেকেই ঝগড়া লেগে থাকত। এর মধ্যে আমাদের একটি পুত্র সন-ান জন্ম লাভ করে। ছেলে জন্মের পর থেকে আমাদের ঝগড়া আরো বেড়ে যায়। তার সাথে বনিবনা না হওয়ায় তাকে তালাক না দিয়ে আমার শ্যালিকা তার ছোট বোনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। তারপর আমরা ঢাকায় এসে বাসা নিয়ে থাকি। ঢাকা যাওয়ার ১৫দিন পর আমার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে মোহরানা পরিশোধ করে বিদায় করে দিয়েছি। এখন আমার (প্রথম স্ত্রীর বোন) ২য় স্ত্রীকে নিয়ে ঘর-সংসার করছি। জানতে চাই, এতে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা আছে কি না?

উত্তর

কোনো মহিলার সাথে বিবাহ বহাল থাকা অবস'ায় তার আপন বোনকে বিবাহ করা হারাম। বিবাহ করলে তা শুদ্ধ হয় না। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী শ্যালিকার সাথে আপনার বিবাহ শুদ্ধ হয়নি। তার সাথে দাম্পত্য মেলামেশা সম্পূর্ণ হারাম। এখনই পৃথক হয়ে যাওয়া জরুরি। শ্যালিকার সাথে বৈধভাবে সংসার করতে চাইলে স্ত্রীর ইদ্দত শেষ হওয়ার পর শ্যালিকাকে নতুনভাবে মহর ধার্য করে যথা নিয়মে বিবাহ করতে হবে। আর এতদিনের হারাম কার্যকলাপের জন্য আল্লাহর দরবারে তওবা-ইসি-গফার করতে হবে।

আহকামুল কুরআন জাসসাস ২/১৩২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৬৪; মাজমাউল আনহুর ১/৪৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১; মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ৯/২১৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫০৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৪৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখে স্বীয় স্ত্রীর সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখে স্বীয় স্ত্রীর সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া হয়েছে এবং এক পর্যায়ে সে স্বপ্নে তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দিয়েছে। জানতে চাই, এই ব্যক্তি তার স্ত্রীকে স্বপ্নে তালাক দেওয়ার কারণে তালাক হয়েছে কি না?

উত্তর

ঘুমন্ত অবস্থায় বা স্বপ্নে স্ত্রীকে তালাক দিলে তা কার্যকর হয় না । অতএব প্রশ্নোক্ত ব্যক্তির স্বপ্নে দেওযা তালাকও কার্যকর হয়নি। তাদের বিবাহ পূর্বের মতো যথারীতি বহাল রয়েছে।

-সুনানে নাসায়ী ৬/১৫৬; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৬/৪১১; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৩৯১; হাশিয়াতুত্তাহতাবী আলাদ্দুর ২/১১০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৫৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৩০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

একব্যক্তি তার স্ত্রীর আগের ঘরের মেয়ের মেয়েকে বিবাহ করতে চাচ্ছে।...

প্রশ্ন

একব্যক্তি তার স্ত্রীর আগের ঘরের মেয়ের মেয়েকে বিবাহ করতে চাচ্ছে। আমার প্রশ্ন হল, তার জন্য ঐ মেয়েকে বিবাহ করা জায়েয হবে কি? জানালে উপকৃত হব।

উল্লেখ্য যে, সে তার স্ত্রীর সাথে ঘরসংসার করছে।

উত্তর

স্ত্রীর পূর্বের স্বামী থেকে যে সন্তানাদি হয়েছে পরবর্তী স্বামীর জন্য তারাও মাহরাম। তাই প্রশ্নোক্ত ব্যক্তির জন্য আগের ঘরের মেয়ের মেয়েকে বিবাহ করা সম্পূর্ণ হারাম। তার সাথে স্ত্রী হিসাবে বসবাস করলে ব্যভিচারের গুনাহ হবে এবং বর্তমান স্ত্রীর সাথেও বৈবাহিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে।

-সূরা নিসা ২৩; রূহুল মাআনী ৪/৬৩৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৩১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৯২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

দাদার বিবাহকৃত কোনো নারীকে (সৎ দাদী) বিয়ে করা বৈধ হবে...

প্রশ্ন

দাদার বিবাহকৃত কোনো নারীকে (সৎ দাদী) বিয়ে করা বৈধ হবে কি?

উত্তর

দাদার স্ত্রী মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। তাকে বিবাহ করা জায়েয নয়।

-সূরা নিসা ২২; তাফসীরে মাযহারী (সূরা নিসা অংশ) ২/৫৪; আহকামুল জাসসাস ২/১১২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৫; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৪; ফাতহুল কাদীর ৩/১২০; রদ্দুল মুহতার ৩/২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৩২
তারিখ: ২৭-জুলাই-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

একজন ব্যক্তির উপর কার কার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব? এবং কার পক্ষ থেকে ওয়াজিব নয়?

প্রশ্ন
শ্রদ্ধেয় মুফতী সাহেব! আমার জানার বিষয় হল, একজন ব্যক্তি ফিতরা দেয়া উপযুক্ত হওয়ার পর তার জন্য আর কার কার ফিতরা আদায় করা আবশ্যক? স্ত্রী, প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মা বাবার ফিতরা কি তার জন্য আদায় করা ওয়াজিব? আর যদি সে তাদের ফিতরা আদায় করে দেয় তাহলে কি তাদের অনুমতি লাগবে? অনুমতি ছাড়া আদায় হবে কি না? স্ববিস্তারে জানতে চাই ৷
উত্তর
ব্যক্তির উপর ফেতরা ওয়াজিব হওয়ার পর তাদের ফেতরাও তার জন্য আদায় করা ওয়াজিব যাদের উপর তার পুর্ন কর্তৃত্ব রয়েছে ৷ যেমন নাবালেগ ছেলে মেয়ে ৷ পাগল বালেগ ছেলে মেয়ে ৷
অবশ্য নাবালেগ ছেলে মেয়ে বা বালেগ পাগল ছেলে মেয়েরা যদি মালদার হয় তাহলে তাদের মাল থেকে আদায় করলেও চলবে ৷
অতএব বাবা তার নিজের ও তার নাবালেগ সন্তান , বালেগ পাগল সন্তানদের ফিতরা আদায় করা আবশ্যক ৷ স্ত্রী কিংবা প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের ফিতরা তার মাল থেকে আদায় করা আবশ্যক নয় ৷ তবে যদি সে তার নিজ মাল থেকে আদায় করে দেয় তাহলে আদায় হয়ে যাবে ৷ যদিও তাদের অনুমতি না নেওয়া হয় ৷
বলা বাহুল্য যে, যদি স্ত্রী কিংবা প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের ফিতরার নেসাব পরিমান ব্যক্তিগত মাল থাকে তাহলে তাদের ফিতরা আদায় করতে হবে ৷ অন্যথায় ফিতরা দিতে হবে না ৷
তেমনি বাবা না থাকলে দাদার জন্য তার নাবালেগ নাতি নাত্নী এবং বালেগ পাগল নাতি নাত্নী গরীব হলে তাদের ফিতরা আদায় করা আবশ্যক ৷
সন্তানদের জন্য মা বাবা দাদা দাদীর ফিতরা দেওয়া আবশ্যক নয় ৷ তারা মালদার হলে, নিজ মাল থেকে আদায় করবে ৷ মাল না থাকলে আদায় করতে হবে না ৷ তবে যদি সন্তান মা বাবা দাদা দাদীর ফিতরা দিয়ে দেয় তাহলে আদায় হয়ে যাবে ৷ এ ক্ষেত্রে এক সংসার হলে, অনুমতির প্রয়োজন নেই ৷ ভিন্ন সংসার হলে অনুমতি নিয়ে আদায় করতে হবে ৷
-বাদায়েউস সানায়ে ২/২০২; রদ্দুল মুহতার,৩/১১৫; ইলমুল ফিকহ,৩/৫২; ফতওয়ায়ে দারুল উলুম, ৬/৩২৪৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯২২
তারিখ: ১১-জুলাই-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

রোযা অবস্থায় স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরা ও চুমু খাওয়া ৷

প্রশ্ন
হুজুর রোযা রেখে স্ত্রীকে চুমু দিলে কি কোন সমস্যা হবে? স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিলে কি রোযা ভেঙ্গে যাবে? জড়িয়ে ধরার সময় পুরুষাঙ্গ দিয়ে পাতলা পানি বের হলে রোযার কি হুকুম? জানালে উপকৃত হবো ৷
উত্তর
রোযা অবস্থায় স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরলে বা চুমু খেলে রোযা ভাঙ্গবে না ৷ এবং এমতাবস্থায় পুরুষাঙ্গ দিয়ে মযি তথা পাতলা পানি বের হলেও রোযার কোনো ক্ষতি হবে না ৷ তবে যদি জড়িয়ে ধরলে বা চুমু খেলে বীর্য বের হয়ে যায় তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে ৷
অবশ্য, রোযা অবস্থায় যদি কেউ স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরলে বা চুমু খেলে নিজেকে কন্ট্রোল রাখতে সমস্যা হয় বা সহবাসে লিপ্ত হওয়ার উপক্রম হয় তাহলে জড়িয়ে ধরা বা চুমু খাওয়া মাকরুহ ৷
-আদদুররুল মুখতার ২/১১২; আননাহরুল ফায়েক ২/২৭; আল মারাকি আলত ত্বাহতাবী, পৃ: ৫৬০; ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া ১৫/১৮৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯১৭
তারিখ: ৩-জুলাই-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্ত্রী সহবাস করে গোসল না করে সেহরী খাওয়া ও সেহরীর পর স্ত্রী সহবাস করা ৷

প্রশ্ন
হযরত স্ত্রী সহবাসের পর গোসল না করে কি সেহরী খাওয়া যাবে? আর সেহরী খাওয়ার পর যদি আযানের পুর্বে স্ত্রী সহবাস করা হয় তাহলে কি রোযার কোনো ক্ষতি হবে? অনুগ্রহপুর্বক জানাবেন ৷
উত্তর
ফরজ গোসল অবস্থায় পানাহার করা বৈধ ৷ তবে অযু করে নেয়া সুন্নত ৷ অতএব স্ত্রী সহবাসের পর গোসল না করে সেহরী খাওয়া যাবে ৷ তবে উত্তম হল, সময় থাকলে আগে গোসল করে নেয়া, তারপর সেহরী খাওয়া ৷
আর রমযানে সুবহে সাদেকের পুর্ব পর্যন্ত খানাপীনা, স্ত্রী-সহবাস সবকিছু বৈধ। যদিও সেহরী খাওয়ার পর হয়। তবে অবশ্যই নামাযের আগে গোসল করে মসজিদে জামাতের সহিত নামায আদায় করতে হবে ৷
-মেশকাত শরীফ পৃষ্ঠা ১৭৪; ফতোয়ায়ে দারুল উলুম। ৬/৪৯৬; মাসায়েলে রোজা ৫৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷




উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯১৪
তারিখ: ৩-জুলাই-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

গর্ভবতী মহিলার রোযা না রাখার হুকুম ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার স্ত্রী গর্ভবতী ৷ ডাক্তার বলেছে এখন রোযা রাখলে বাচ্চার ক্ষতি হওয়া আশংকা রয়েছে ৷ তাই সে যেন রোযা না রাখে ৷ জানাতে তাই শরীয়ত এ ব্যপারে কি বলে? আমার স্ত্রীর রোযা না রাখার সুযোগ আছে কি না? জানালে উপকৃত হব ৷
উত্তর
ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী গর্ভবতী নারীর রোযা রাখার কারণে গর্ভের বাচ্চার ক্ষতির আশংকা হলে রোযা না রাখার সুযোগ রয়েছে ৷ এবং তার জন্য রোযা ভাঙ্গা জায়েজ আছে । অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রী রোযা না রাখার সুযোগ আছে ৷ তবে পরবর্তীতে উক্ত রোযা কাযা আদায় করতে হবে।

-ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়া-৩/৪০৪; ফাতওয়ায়ে শামী,৩/৪০২; ফাতওয়ায়ে রহিমীয়া-৭/২৭০ ৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯১৩
তারিখ: ৩-জুলাই-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

রোযা অবস্থায় বমি হলে কি রোযা ভেঙ্গে যায়?

প্রশ্ন
মুফতী সাহেব! আমার স্ত্রী গর্ভবতী ৷ প্রায় সময়-ই বমি হয় ৷ তাই জানতে চাই রমযান মাসে রোযা অবস্থায়
বমির কারণে রোযার কি হুকুম?। এর দ্বারা কি রোযা ভেঙ্গে যায়? এখন তার কী করণীয়?
উত্তর
রোযা অবস্থায় অনিচ্ছাকৃত বমি হলে যদিও তা মুখ ভরে হয় এর দ্বারা রোযা ভাঙ্গবে না। তবে কেউ যদি অনিচ্ছাকৃত বমি করার পর তা পুরনায় ইচ্ছাকৃত গিলে ফেলে তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে ৷ তেমনিভাবে যদি কেউ ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করে তাহলেও রোযা ভেঙ্গে যাব।
অবশ্য ইচ্ছাকৃত অল্প বমি হলে রোযা ভাঙ্গবে না ৷
-জামে তিরমিযী, হাদীস ৭২০; ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া১/২০২; মাসায়েলে রোযা পৃ: ৬৭৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৯২
তারিখ: ২০-জুন-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দত পালন ও পালন না করার ভয়াবহতা ৷

প্রশ্ন
মুফতী সাহেব! আমার বাবা মারা গেছে দেড় মাস হলো, বাবার মৃত্যুর পর আমার মা ঠিকমত ইদ্দত পালন করছেন না। বিভিন্ন সময় আত্বীয়-স্বজনদের বাসায় চলে যান ৷ তিনি একটা চাকরী করেন, সেখানেও চলে যান । তাকে বললে তিনি শোনেন না। আপনার নিকট ইদ্দত পালনের সময়সীমা ও না পালন করলে তার ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে চাই ৷
উত্তর
স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর ইদ্দত পালনের সময় হল, থেকে চার মাস দশ দিন ৷ এই সময়ে স্ত্রীর জন্য নিজ গৃহে ইদ্দত পালন করা শরীয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব বিধান। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করে এবং স্ত্রীদেরকে রেখে যায়, উক্ত স্ত্রীগণ নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় রাখবে অর্থাৎ ইদ্দত পালন করবে।
-সূরা বাকারা : ২৩৪ ৷
অতএব স্ত্রীর ইদ্দত চলাকালীন বিনা ওজরে ঘর থেকে বাইরে যাওয়া জায়েয নেই । আর শরীয়তের এমন গুরুত্বপুর্ন হুকুমের লঙ্ঘন করা কবিরাহ গুনীহ । আর একটি কবিরাহ গুনাহ ই জাহান্নামে পৌছার জন্য যথেষ্ট৷
তবে জীবিকা বা অন্য কোনো বিশেষ প্রয়োজনে দিনের বেলা বাইরে যাওয়ার অনুমতি আছে। এবং কাজ শেষে বাড়ি ফিরে আসা জরুরী ৷ দিনেের বেলা কোন বিশেষ ওজরে বের হলে রাতে অবশ্যই নিজ গৃহে চলে আসতে হবে ৷
-আলমুহীতুল বুরহানী ৫/২৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২২৮ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮২৯
তারিখ: ৪-এপ্রিল-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

চাচার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী তথা চাচীকে বিবাহ করা ৷

প্রশ্ন
আমাদের এলাকার এক লোক তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেয়। তালাকের পর তার আপন ভাতিজা উক্ত মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে। এখন জানার বিষয় হল, চাচীকে ভাতিজার এ বিবাহ হয়েছে কি না?
উত্তর
চাচার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী তথা চাচীকে বিবাহ করা জায়েজ আছে। তবে শর্ত হল ইদ্দত শেষ হবার পর বিবাহ করতে হবে। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি ঐ ভাতিজা চাচীকে তার ইদ্দতের পর বিবাহ করে থাকে তাহলে বিবাহ সঠিক হয়েছে ৷
- সূরা নিসা: আয়াত ২৪; আহমাকামুল কুরআম লিল জাস্সাস ২/১৩৯ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮২৮
তারিখ: ৪-এপ্রিল-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

মৃত স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে দেখা ও গোসল দেয়া ৷

প্রশ্ন
স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে একে অপরের লাশ দেখতে পারবে কিনা? এবং একে অপরকে গোসল দিতে পারবে কি না? কুরআন হাদীসের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন ৷
উত্তর
স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে একে অপরকে দেখতে পারবে ৷ এতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই ৷ এবং স্ত্রী তার মৃত স্বামীকে গোসল দিতে পারবে। কেননা বিশুদ্ধ সত্রে বর্নিত আছে যে, হযরত আবু বকর রা.-এর ইন্তিকালের পর তার স্ত্রী আসমা বিনতে উমাইস রা. তাকে গোসল দিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে স্ত্রী মারা গেলে স্বামী তার মৃত স্ত্রীকে গোসল দিতে পারবে না ৷
সুনানে আবু দাউদ ৪/৩০, হাদীস ৩১৩৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩; রদ্দুল মুহতার ২/১৯৮৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮১৩
তারিখ: ১২-মার্চ-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর জন্য অলংকার ব্যবহার ও সাজগুজ করা ৷

প্রশ্ন
হুজুর কিছুদিন আগে আমার খালু মারা গেছে ৷ আমার খালার চুড়ি চেইন হাতের বালা নাকফুল সহ ইত্যাদি অনেক স্বর্নের অলংকার আছে ৷ জানার বিষয় হলো, খালা এখন এসব অলংকার ব্যবহার করতে পারবে কি না?
উত্তর
স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দত শেষ হবার আগ পর্যন্ত কোন প্রকার সাজগুজ বা অলংকার পরিধান করা জায়েজ নেই । তাই আপনার খালার জন্য তার ইদ্দত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত চুড়ি, চেইন হাতের বালা ইত্যাদি কোন কিছুই পরা যাবে না। তবে ইদ্দত শেষ হবার পর জায়েজ৷ তখন সব ধরণের অলংকার পরিধান ও সাজগুজ করতে পারবে ।
উল্লেখ্য যে, স্বামীর মৃত্যুর পর মহিলার ইদ্দতের সময় হল ৪মাস ১০দিন। চার মাস দশদিন পর্যন্ত সাজগুজ এবং অলংকার পরিধান করা নিষেধ। এর পর সবকিছু বৈধ ৷
-সূরা বাকারা , আয়াত: ২৩৫; আবু দাউদ, হাদীস নং-২৩০২; তাবয়ীনুল হাকায়েক-৩/২৬৬৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮০১
তারিখ: ১৪-ফেব্রুয়ারি-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্ত্রী স্বামীকে তুমি আমার বাবা আমি তোমার মা বললে করনীয় ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার বড় ভাই ভাবির সাথে ঝগড়া করে এক পর্যায়ে ভাবি ভাইকে বলে,তুমি আমার বাবা আর আমি তোমার মা লাগি ৷ তাই জানার বিষয় হলো, এমতাবস্থায় আমার ভাই ও ভাবির ইসলামের বিধান অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক থাকে কি না? দায়া করে জানাবেন ৷
উত্তর
স্ত্রী স্বামীকে এ ধরনের কথা বলা মারাত্বক গুনাহ। তাই আপনার ভাবির জন্য তৌবা করা উচিত এবং ভবিষ্যতে এসব কথা থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য ৷ তবে উক্ত কথার কারণে আপনার ভাই ও ভাবির বৈবাহিক সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। তাদের বৈবাহিক বন্ধন বহাল আছে।
সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ২২১০; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭০৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৯৩
তারিখ: ২-ফেব্রুয়ারি-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

গর্ভবতী-নারীর নামাজ ও চাল-চলন ৷

প্রশ্ন
হুজুর, আমার স্ত্রী ৭ মাসের গর্ভবতী ৷ এখন খুব বেশি অসুস্থ থাকে , বিশেষ করে সকাল বেলায় ৷ ডাক্তার বলেছেন সকালে ঘুম থেকে দেরিতে উঠতে ৷ তাই আপনার নিকট জানতে চাই, গর্ভবতী মহিলাদের নামাজের সময়ের ব্যাপারে কোন শীথিলতা আছে কি না? বিশেষ করে ফজর নামাজ দেরিতে পড়তে পারবে কি না?
উত্তর
কোনভাবেই নামাজের নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত করা বৈধ নয়। কেননা আল্লাহ্ তা’আলা বলেন,
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻛِﺘَﺎﺑًﺎ
ﻣَﻮْﻗُﻮﺗًﺎ
“নিশ্চয় নিদিষ্ট সময়ে ছালাত আদায় করা মুমিনদের উপর ফরয করা হয়েছে।
সূরা নিসা- ১০৩
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি নামাজের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং ঐ সময়ে আদায় করাটাই আবশ্যক। ফজর নামাজের সময় সুবহে সাদিক হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত। সুতরাং এই
সময়ের ভেতরেই আদায় করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো প্রকারের শীথিলতার অনুমোদন নেই৷ এমনকি গর্ভবতী মহিলাদের জন্যও নেই।
হ্যাঁ, শিশু গর্ভে থাকা অবস্থায় একজন নারী ও শিশুর
শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য ঘুম অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গর্ভাবস্থায় রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে স্বাস্থ্যহানী ঘটে। কিন্তু নামাযের গুরুত্ব এত বেশি যে এর কারনে ফজর- নামাজ সময় মত আদায়ের ব্যাপারে অবহেল প্রদর্শনের কোনো সুযোগ নেই।
তাই আপনার স্ত্রীর জন্য পরামর্শ হলো,
১৷ তার মনোবল দৃঢ় রাখতে হবে যে, আমি অবশ্যই ফজরের নামাজ আদায় করবো।
২৷ সে ইশার নামাজ সময়ের শুরুতে পড়ে নিবে। তারপর প্রয়োজনীয় কাজ সেরে যত দ্রুত সম্ভব ঘুমিয়ে পড়বে। দেরি করে ঘুমোতে যাওয়া যাবে না অন্তত এতটা আগে রাতের বিছানায় যাবে যাতে করে কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা নিশ্চিন্তে ঘুমানো যায় এবং ফজর যথাসময় পড়া যায়।
৩৷ প্রতিদিন দুপুরের খাবারের পর আসর পর্যন্ত ঘুুমাবে। এতে ‘কাইলুলাহ্’র সুুন্নাত আদায় হবে। স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
৪৷ গর্ভাবস্থায় যে ব্যাপারটি পরিবারের সকলকে মনে রাখতে হবে, সেটি হল, গর্ভবতী নারির এবং তার ভেতরে বেড়ে ওঠা শিশুর যত্ন নেয়া সকলেরই কর্তব্য। সুুতরাং তার শারীরিক- মানসিক সুুস্থতার প্রতি যত্নশীল-দৃষ্টি পরিবারের সকলকে বিশেষত স্বামীকে সবসময় রাখতে হবে। এতে গর্ভবতী মা যেমন সুস্থ থাকবে, সুস্থ থাকবে তার সন্তানও। মনে রাখা উচিত, সুস্থ-সন্তান যেমন অবশ্য-কাম্য, অনুরূপভাবে সন্তান নেক হওয়াও অপরিহার্য-কাম্য। আর গর্ভবতী নারির চাল-চলন ও গতিবিধির বিস্তর প্রভাব সন্তানের ওপর পড়ে। সুতরাং গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ইবাদত করার পাশাপাশি গোনাহ ছেড়ে দেয়ার ফিকির অধিক করাটাই হবে বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। এতে গর্ভবতী মা যেমন মহান আল্লাহর কাছে প্রিয় হয়ে ওঠবে, এমনিভাবে তার ভেতরে বেড়ে ওঠা সন্তানও নেক, ভাল হবে। ইনশাআল্লাহ্।
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৮৮
তারিখ: ২-ফেব্রুয়ারি-২০১৭
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্ত্রী স্বামিকে তালাক বা ডিভোর্স প্রদান করা ও পুনরায় সংসার করা ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমাকে একটু হেল্প করবেন! আমি বিয়ে করেছি দুই বৎসর হয়েছে ৷ বিয়ের ছ'মাস পর বিদেশে চলে আসি ৷ আমাদের স্বামি-স্ত্রীর সংসার ভাল-ই চলছি ৷ কিন্তু আমি বিদেশে আসার সাত মাস পর থেকে আমার স্ত্রীর অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে বলে জানতে পারি৷ একদিন তার ফোন অনেক্ষন বিজি পেয়ে তাকে অনেক গালাগালি করি ও ধমক দেয় ৷ একপর্যায় সে আমাকে বলে তাকে তালাক দিয়ে দিতে ৷ না দিলে সে নিজেই নিজেকে তালাক দিয়ে চলে যাবে ৷ আমি বললাম আমি তো তোমাকে তালাক দেয়ার অধিকার দেইনি ৷ তুমি তালাক দিলেও তালাক হবে না ৷ তথাপিও সে নিজেকে নিজে তালাক দিয়েছে ৷ এবং কোর্টে গিয়ে ডিভোর্স লেটার তৈরি করেছে ৷ আমি ঐ ডিভোর্স লেটারে কোন স্বাক্ষর করি নি, সে একা-ই স্বাক্ষর করেছে এবং বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে ৷ অতপর পাচ মাসতার বাবার বাড়ি ছিল, ততদিন পর্যন্ত তার সাথে কোন যোগাযোগ নেই ৷ পাচ মাস পর আমার শাশুরী আমার সাথে যোগাযোগ করে আমাদের মাঝে সম্পর্ক গড়ানোর কথা বলেন ৷ আমার স্ত্রীও রাজি হয় ৷ এ অবস্থায় আমরা আবার কিভাবে এক হতে পারি ৷ নতুন করে বিয়ে করতে হবে কিনা? বিস্তারিত জানালে খুব উপকৃত হবো ৷
উত্তর
স্ত্রী তখনি নিজের উপর তালাক পতিত করতে পারে, যখন স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেবার অধিকার প্রদান করে থাকে। তাছাড়া স্ত্রী চাইলেই নিজের উপর তালাক প্রদানের অধিকার রাখে না।
বাংলাদেশের আইন অনুপাতে বিয়ের সময় যে কাবিন নামা করা হয়ে থাকে, উক্ত সরকারি কাবিননামার ১৮ ও ১৯ ধারায় স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে কি না? দিলে কী কী শর্তে অধিকার প্রদান করেছে? এ মর্মে একটি অপশন রয়েছে।
যদি উক্ত ধারায় স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক পতিত করার অধিকার প্রদান করে থাকে, এবং স্বামী উক্ত কাবিন
নামার নিচে সাইন করে থাকে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করার অধিকারপ্রাপ্তা হয়। তখন কাবিনের উপরোক্ত ধারা অনুপাতে শর্ত পাওয়া গেলে স্ত্রী নিজের উপর তালাক পতিত করার অধিকার পাবে। যদি শর্ত না পাওয়া যায়, কিংবা স্বামী স্ত্রীকে তালাকের অধিকার প্রদান না করে থাকে, তাহলে স্ত্রী
নিজের উপর তালাক পতিত করার অধিকার পায় না।
এবং ডিভোর্স লেটারে স্বামির স্বাক্ষর ছাড়া স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয় না ৷
অতএব প্রশ্নোক্ত সুরতে আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে তালাকের অধিকার না দিয়ে থাকেন বা কাবিন নামায় তালাক প্রদানের অপশনে তালাক দেবার অধিকার না থাকে, এবং ডিভোর্স লেটারে স্বাক্ষর না করে থাকেন ৷ তাহলে আপনার স্ত্রী নিজেকে নিজে তালাক দেয়ার কারনে উক্ত তালাক পতিত হয়নি ৷ আপনি নতুন বিয়ে ছাড়া এমনি পরস্পরে মিলেমিশে পুনরায় ঘর সংসার করতে পারবেন ৷
উল্লেখ্য, ভবিষ্যতে যেন এধরেন ঘটনা পুনরাবৃত্ত না হয় সেদিকে স্বচেষ্ট হোন ৷ দুজনেই ইসলামি নিয়মাবলি পুর্নাঙ্গরুপে মেনে সঠিক ভাবে চলার পুর্ন চেষ্টা করবেন ৷
রদ্দুল মুহতার ৪/৪৫৬; ফতওয়ায়ে আলমগীরি ১/৩৭৯; মুহীতুল বুরহানী ৪/৪৮৬; ফাতাওয়াযে তাতারখানিয়া ৩৮০ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৮৭
তারিখ: ২৮--২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

মহিলাদের দাড়ি, গোঁফের পশম তুলে ফেলা ও ভ্রু প্লাক করা ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার একটি প্রশ্ন, আমার গোঁফের পশম বড়,
এবং ভ্রূ কিছুটা চওড়া। তাই সুন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আমার স্বামী ভ্রূ প্লাক করতে ও চেহারার অন্যান্য পশম তুলে ফেলতে বলছেন। আপনার কাছে জানতে চাই, আমি কি স্বামির কথা মত ভ্রূ প্লাক করতে ও চেহারার অন্যান্য
লোম তুলে ফেলতে পারব?
উত্তর
মহিলাদের দাড়ি, গোঁফে লোম গজালে তা তুলে ফেলা বৈধ ৷ তাই আপনি আপনার গোঁফের পশম তুলে ফেলতে পারবেন ৷ কিন্তু ভ্রূ প্লাক করা বৈধ নয়।
স্বামী বললেও সুন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ভ্রু প্লাক করা বৈধ হবে না। তাই ভ্রু প্লাক করতে পারবেন না ৷ কারন হাদীসে ভ্রু প্লাক কারী মহিলাদের উপর অভিসম্পাত করা হয়েছে।
সহীহ বুখারী হাদীস : ৫৫৩৯; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৪/১৯৫; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৫; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৭৩৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৮৪
তারিখ: ২৮--২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক সাথে দুই স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করা ৷ 

প্রশ্ন
মুফতী সাহেব আমার একটি প্রশ্ন ছিল৷ আমার এক বন্ধু দুই বিয়ে করেছে ৷ দুই স্ত্রী ই আছে ৷ সে লজ্জায় অন্য কারো কাছে বলতে পারছে না ৷ সে জানতে চায় সে কি এক সাথে দুইজন স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করতে পারবে?
উত্তর
স্ত্রী সহবাস নির্জনে করা আবশ্যক৷ যেমনি অন্য লোকের সামনে স্ত্রী সহবাস করা হারাম তেমনি এক স্ত্রীর সামনে অন্য স্ত্রীর সাথে সহবাস করাও হারাম । এগুলো পাশ্চাত্যের নোংরামী ও পশুত্বের আলামত। এসব ঘৃণ্য কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ৪/৩৮৮; আল মুগনী ৮/১৩৭ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৮১
তারিখ: ২৮--২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

ধৌত না করে নতুন জামা পরে নামায পড়া ৷

প্রশ্ন
কদিন আমি নতুন একটি তৈরি পাঞ্জাবী কিনে আনি৷ জুমার দিন উক্ত জামা পরে নামাযে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রী বলে উঠলো তুমি নতুন জামা পরে নামাযে যাচ্ছো? নতুন জামা পরে না ধুয়ে যে নামায পড়া যায় না তুমি জানো না? অতপর জামা খুলে অন্য কাপড় পরে নামায যাই ৷ আমার জানার বিষয় হলো, নতুন জামা কি নাপাক? না ধুয়ে তা পরে কি নামায পড়া যায় না?
উত্তর
নতুন কাপড়ে দৃশ্যমান নাপাকি না থাকলে বা নাপাক লেগেছে বলে সুনিশ্চিত জামা না থাকলে শুধু সন্দেহের বশে কাপড়কে নাপাক সাব্যস্ত করা হবে না। এমতাবস্থায় উক্ত কাপড় পরে নামায পড়া যাবে ৷
যদি কোন নাপাক দেখা যায়, বা উক্ত কাপড়ে নাপাক আছে মর্মে জানা থাকে, তাহলেই কেবল উক্ত কাপড়কে নাপাক সাব্যস্থ হবে। এবং উক্ত কাপড় পরে নামায হবে না ৷ ধৌত করে নামায পড়তে হবে ৷
তবে সর্বাবস্থায় নতুন কাপড় ধুয়ে পরিধান করাই উত্তম।
আল আশবাহ ওয়ান নাজায়ের ১/১৮৩; রদ্দুুল মুহতার ১/১৫১ ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৮০
তারিখ: ২৮--২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

ধৌত না করে নতুন জামা পরে নামায পড়া ৷

প্রশ্ন
কদিন আমি নতুন একটি তৈরি পাঞ্জাবী কিনে আনি৷ জুমার দিন উক্ত জামা পরে নামাযে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রী বলে উঠলো তুমি নতুন জামা পরে নামাযে যাচ্ছো? নতুন জামা পরে না ধুয়ে যে নামায পড়া যায় না তুমি জানো না? অতপর জামা খুলে অন্য কাপড় পরে নামায যাই ৷ আমার জানার বিষয় হলো, নতুন জামা কি নাপাক? না ধুয়ে তা পরে কি নামায পড়া যায় না?
উত্তর
নতুন কাপড়ে দৃশ্যমান নাপাকি না থাকলে বা নাপাক লেগেছে বলে সুনিশ্চিত জামা না থাকলে শুধু সন্দেহের বশে কাপড়কে নাপাক সাব্যস্ত করা হবে না। এমতাবস্থায় উক্ত কাপড় পরে নামায পড়া যাবে ৷
যদি কোন নাপাক দেখা যায়, বা উক্ত কাপড়ে নাপাক আছে মর্মে জানা থাকে, তাহলেই কেবল উক্ত কাপড়কে নাপাক সাব্যস্থ হবে। এবং উক্ত কাপড় পরে নামায হবে না ৷ ধৌত করে নামায পড়তে হবে ৷
তবে সর্বাবস্থায় নতুন কাপড় ধুয়ে পরিধান করাই উত্তম।
আল আশবাহ ওয়ান নাজায়ের ১/১৮৩; রদ্দুুল মুহতার ১/১৫১ ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৭৮
তারিখ: ২৩--২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

বিয়ের কথা পাকাপাকির পর আংটি পরিয়ে রাখা৷

প্রশ্ন
আমার ছোটবোনের বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ার পর উভয় পক্ষের সম্মতিতে কাবিন না করে শুধু আংটি পরিয়ে রাখতে চায়। এটা কি শরীয়তসম্মত কিনা? এমতাবস্থায় ছেলে- মেয়ে পরস্পরে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবে কি? অনুগ্রহ করে জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
শুধু আংটি পরানোর মাধ্যমে বিবাহ সংঘটিত হয় না। আংটি পরানো দ্বারা উভয় পক্ষের মাঝে সামাজিকভাবে বিবাহের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা বুঝায় মাত্র। অতএব ইজাব- কবুলের মাধ্যমে বিবাহ পড়ানো ছাড়া শুধু আংটি পরানোর দ্বারা তারা স্বামী-স্ত্রী গণ্য হবে না। তাই বিবাহ পড়ানোর আগে তাদের দেখা-সাক্ষাৎ, কথা-বার্তা ও মেলামেশা কোন কিছুই বৈধ হবে না ।
সুতরাং আপনার ছোট বোনের বিবাহের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর আকদ না করিয়ে আংটি পরিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এভাবে রেখে দেওয়া শরীয়তসম্মত নয়। এ
কারণে ছেলে-মেয়ে ও তাদের নিকটজনদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও মেলামেশা করলে সবাই গুনাহগার হবে ৷
উল্লেখ্য যে, বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য কাবিন করা শর্ত নয়,বরং দু’জন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাক্ষীর সামনে বিয়ের ইজাব-কবুল করার দ্বারাই বিবাহ সংঘটিত হয়ে যায়। তাই আপনার বোনের আংটি পরানোর সময় যদি কাবীন নাও করেন, দু'জন শাক্ষীর সামনে ইজাব কবুলের মাধ্যমে বিবাহ পরিয়ে দিলে দেখা-সাক্ষাৎ মেলামেশা সহ সব কিছু বৈধ হয়ে যাবে ৷
আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১, ৩/১৪৷ মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৭৫
তারিখ: ২৩--২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

তিন তালাক প্রাপ্তা মেয়েকে নিজ ভগ্নিপতির সাথে বিয়ের পর প্রথম স্বামির নিকট পুনরায় বিবাহ দেয়া ৷

প্রশ্ন
মুফতী সাহেব! আমার একটি প্রশ্ন আছে, তা হলো, আমার ছোট বোনকে দুই বছর আগে তার স্বামী তিন তালাক দিয়ে দিয়েছিল। অতপর তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এখন তারা আবার একসঙ্গে থাকতে আগ্রহী হয়েছে । তাই আমার স্বামী আমার বোনকে বিয়ে করে তার সঙ্গে এক রাত যাপন করে তাকে তিন তালাক দিয়ে দেয়। এখন ইদ্দত শেষ হওয়ার পর আমার বোন তার পুর্বের স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে কিনা?
উত্তর
স্ত্রীর আপন বোনকে বিবাহ করা বৈধ নয়। করলেও সে বিবাহ শুদ্ধ হয় না। তাই আপনার স্বামীর সাথে আপনার বোনের বিবাহটি শুদ্ধ হয়নি এবং তার সাথে রাত যাপন করাও হারাম হয়েছে। অতএব এর উপর ভিত্তি করে আপনার বোনের জন্য তার পূর্বের স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ হবে না।
উল্লেখ্য, স্ত্রীর ছোট বোনের সাথে রাত যাপন করার কারণে তারা মারাত্মক গুনাহগার হয়েছে ৷ অতএব এর সাথে সম্পৃক্ত সকলকেই খাঁটি মনে তাওবা-ইস্তেগফার
করা উচিত। এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে সচেষ্ট হয়ে প্রয়োজনিয় দ্বীনী ইলম অর্জন করে তা আমলে বাস্তবায়নের জন্য সবাইকেই পুরোপুরি সচেষ্ট হওয়া উচিত।
সূরা নিসা : ২৩; সহীহ বুখারী, হাদীস ৫১০৭; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৯৬; মুখতাসারুত তহাবী ৪/৩৩০৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৬৩
তারিখ: ১২--২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

দুনিয়াতে একাধিক স্বামী ওয়ালি মহিলার জান্নাতে যে হবে তার স্বামী ৷

প্রশ্ন
আমরা জানি দুনিয়াতে যার সঙ্গে যার বিবাহ হয়েছে মুমিন হলে আখেরাতেও সেই স্বামী-স্ত্রী বহাল থাকবে৷ তাহলে দুনিয়াতে যে মহিলার একাধিক বিবাহ হয়েছে। অর্থাৎ তালাকের পর বা স্বামী মারা যাওয়ার পর পুনরায় বিবাহ বসছে৷ জান্নাতের যাওয়ার পর উক্ত মহিলার স্বামী হবে কে?
উত্তর
দুনিয়াতে একাধিক স্বামী ওয়ালি মহিলার জান্নাতে স্বামী কে হবে এ নিয়ে দুটি মত রয়েছে৷ যথা-
১৷ মহিলার সর্বশেষ স্বামী যে হবে সেই হবে জান্নাতে তার স্বামী৷
হয়রত মুযযাবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান রাঃ যখন উম্মে দারদা কে স্বামি মারা যাওয়ার পর বিবাহের প্রস্তাব দিলেন, তিনি অস্বিকার করে বললেন আমি আবু দারদা থেকে শুনিছে, নবীজি সাঃ বলেছেন মহিলাদের দুনিয়ার সর্বশেষ স্বামী হবে তার আখেরাতে স্বামী ৷ অতএব তুমি যদি আখেরাতে আমাকে স্বামী হিসেবে পেতে চাও আর কারো কাছে বিয়ে বসবে না৷
২৷ মহিলাকে এখতিয়ার দেয়া হবে যে, তুমি যাকে
ইচ্ছা তাকেই স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে
পারো৷
উম্মে হাবীবা রাঃ থেকে বর্নিত তিনি নবীজি সাঃ কে জিজ্ঞেস করলে ইয়া রাসূলাল্লাহ আমাদের মাঝে মহিলার দুনিয়াতে একাধিক স্বামি রয়েছে৷ আখেরাতে তার স্বামী কে হবে? নবীজি সাঃ বললেন আখেরাতে তাকে ইচ্ছাধীকার দেয়া হবে যাকে ইচ্ছা তাকে স্বামী হিসেবে গ্রহন করতে পারবে৷
বুস্তানুল আরেফীন: ২৪৮; আত তাযকিরা ২/১৪৫; ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া ৩/৪৩০৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া৷
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৪৬
তারিখ: ৩--২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর জান্নাত’ কথাটির সত্যতা৷

প্রশ্ন
ভাইয়া আমি জানতে চাই, ‘স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর জান্নাত’ এ কথাটি সত্য? এটি কি হাদীস?
উত্তর
এই কথাটির আরবী হলো, الجنة تحت اقدام الازواج হুবহু এ শব্দে-বাক্যে হাদীস নয়৷ অনেকে কথাটাকে হাদীস হিসেবে পেশ করে থাকে। যা উচিত নয়৷
তবে কিছু হাদীসে এর মর্মার্থ পাওয়া যায় বিধায় কথাটাকে সম্পূর্ণ মিথ্যাও বলা যাবেনা। যেমন এক হাদীসে এসেছে- একবার এক নারী সাহাবী রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, জী, আছে। নবীজী বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন,
ﻓﺎﻧﻈﺮﻱ ﺃﻳﻦ ﺃﻧﺖ ﻣﻨﻪ، ﻓﺈﻧﻤﺎ ﻫﻮ ﺟﻨﺘﻚ ﻭﻧﺎﺭﻙ
তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম।
মুআত্তা মালেক, হাদীস ৯৫২; মুসনাদে আহমাদ, ৪/৩৪১
হাদীস ১৯০০৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৭৬৯৷
অপর হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
ﺇﺫﺍ ﺻﻠﺖ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﺧﻤﺴﻬﺎ ، ﻭﺻﺎﻣﺖ ﺷﻬﺮﻫﺎ ، ﻭﺣﺼﻨﺖ ﻓﺮﺟﻬﺎ ، ﻭﺃﻃﺎﻋﺖ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﻗﻴﻞ ﻟﻬﺎ : ﺍﺩﺧﻠﻲ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻣﻦ ﺃﻱ ﺃﺑﻮﺍﺏ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﺷﺌﺖ
নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামায ঠিকমত আদায় করবে, রমযানের রোযা রাখবে, আপন লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে, স্বামীর আনুগত্য করবে তখন সে জান্নাতের যেই দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।
সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৪১৬৩৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ মাজিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া৷
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৩৬
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্ত্রী স্বামীকে বাপ বলার হুকুম৷

প্রশ্ন
স্বামী-স্ত্রীর মাঝে প্রচন্ড ঝগড়া হয়৷ এক পর্যায়ে স্বামী স্ত্রীকে প্রহার করতে থাকে। এরই মাঝে স্ত্রী স্বামীকে বাপ বলে সম্বোধন করে। জানার বিষয় হলো, এতে শরয়ী কোনো সমস্যা হয়েছে কি না? তাদের এখন বিবাহ বন্ধন বহাল আছে কি না?
উত্তর
প্রশ্নে বর্নিত সুরতে প্রশ্নোক্ত স্বামী- স্ত্রীর বৈবাহিক বন্ধন নষ্ট হয় নাই৷ এবং তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক বাহল রয়েছে। তবে স্মরণ রাখতে হবে স্ত্রীর জন্য
স্বামীকে এ ধরনের কথা বলা সম্পূর্ণ শরিয়ত পরিপন্থী, জঘন্য গুনাহ ও গর্হিত কাজ। অতএব তাকে তওবা ইস্তিগফার করতে হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কথার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে সর্তক থাকতে হবে। এবং স্বামির জন্যও কর্তব্য অগত্যা স্ত্রীর সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত না হওয়া ৷ এবং কোন ধরনের মারপিট না করা৷
- আল বাহরুর রায়েক : ৪/১৫৯; ফাতওয়া শামি : ৩/৪৬৭৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭২৫
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্বামী ও স্ত্রী একসাথে জামাতে সালাত অাদায় করা ৷

প্রশ্ন
বাড়িতে স্বামী ও স্ত্রী কি একসাথে জামাতে
সালাত অাদায় করতে পারেন? যদি পারেন তাহলে কিভাবে পড়বে?
উত্তর
পুরুষের জন্য মসজিদের জামাতে নামায পড়া জরুরি। বিনা ওযরে ফরয নামায ঘরে আদায় করা ঠিক নয়। একাধিক হাদীসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে এবং কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
তবে কখনো মসজিদের জামাত না পেলে সেক্ষেত্রে একাকী নামায না পড়ে বাসায় স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে জামাতে নামায পড়াই উত্তম। এক্ষেত্রে দাঁড়ানোর পদ্ধতি হল, স্ত্রী ইমামের পিছনে দাঁড়াবে।
হাদীস শরীফে আছে, আবু বকরা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন মদীনার উপকণ্ঠ থেকে নামায পড়ার জন্য এসে দেখেন সবাই জামাতের সাথে মসজিদে নামায পড়ে ফেলেছে। তখন তিনি ঘরে গিয়ে লোকজন জমা করে তাদের নিয়ে জামাতের সাথে নামায পড়ে নেন।
আলমুজামুল আওসাত, তবারানী ৪৬১
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এবং আমার পরিবারস্থ একজন মহিলাকে নিয়ে নামায পড়েছেন। তখন আমাকে তাঁর ডান পাশে এবং ঐ মহিলাকে পিছনে দাঁড় করিয়েছেন।
নাসায়ী ১/৯২৷ যোগাযোগ
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭২৩
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্ত্রীকে বোন,স্বামীকে ভাই বলে সম্বোধন করা৷

প্রশ্ন
স্ত্রী বা স্বামী আদর করে ভাই বা বোন বলতে পারে কিনা ইসলামের দৃষ্টিতে জানাবেন।
উত্তর
মহব্বত করে স্ত্রীকে বোন,স্বামীকে ভাই বলে সম্বোধন করা ঠিক নয়। কেননা হাদীস৷শরীফে এ থেকে নিষেধ করা হয়েছে। হাদীসে আছে, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বোন সম্বোধন করলে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা অপছন্দ করেন এবং এমনটি বলতে নিষেধ করেন।
সুনানে আবু দাউদ ১/৩০১; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৭/১৫২।
সুতরাং এমন সম্বোধন থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে এ কারণে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।
–আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১৮; ফাতহুল কাদীর ৪/৯১; আলবাহরুর রায়েক ৪/৯৮৷
উল্লেখ্য, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি নাহলেও এক্ষেত্রে বিশেষত স্ত্রীকে বোন সম্বোধন করা দ্বারা একটি ক্ষতির আশঙ্কাও কিন্তু আছে তাহল,স্বামী যদি স্ত্রীকে বোন সম্বোধন করা দ্বারা এরূপ নিয়ত করে যে,আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম, তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম; তাহলে ‘যিহার’ হয়ে যায়। এমতাবস্থায় স্ত্রী হারাম হয়ে যায় যতক্ষণ না স্বামী ‘কাফ্ফারা’ আদায় করে।
আর যিহারের কাফ্ফারা হচ্ছে- ধারাবাহিকভাবে দু’মাস ছিয়াম পালন করা বা ৬০ জন মিসকীনকে খাওয়ানো।
– সুরা আল- মুজাদালাহ-০৩ সুতরাং এজাতীয় অনাকাঙ্ক্ষিত অহেতুক ঝামেলা এড়াতে স্ত্রীকে বোন সম্বোধন করা থেকে বিরত থাকাই নিরাপদ।
প্রয়োজনে
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭১৮
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

বিবাহিত মেয়েকে তালাক বা ডিভোর্স ছাড়া অন্যত্রে বিবাহ দেওয়া৷

প্রশ্ন
এক মেয়ের একবার বিয়ে হওয়ার পর স্বামি খারাপ হওয়ার কারনে, মেয়ের পরিবার মেয়েকে স্বামির বাড়ি থেকে নিয়ে এসে দ্বিতীয় বার বিবাহ দেয়, অতঃপর পরিবার জানতে পারলো যে প্রথম স্বামি তালাক না দিলে বা ডিভোর্স না হলে দ্বিতীয় বার বিবাহ দেওয়া যায় না । আর এ বিষয়টি তারা ১বছর পর জানতে পারলো । এখন তাদের করণীয় কী ? জানালে অনেক উপকার হয়৷
উত্তর
কারো বিবাহে থাকা অবস্থায় অন্য কারো সাথে বিবাহ করলে তা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে সহীহ হয় না। তাই মেয়েটি স্বামী ছাড়া আন্যজনের সাথে রাত্রি যাপনের কারণে কঠিন গোনাহগার হয়েছে। মেয়েটি আরেকজনের বিবাহে আছে জেনেও যদি পরিবারের
লোকজন দ্বিতীয় বিবাহ দিয়ে থাকে, তাহলে পরিবারের লোকজন ও মারাত্মক গোনাহের কাজ করেছে। এর জন্য সবাইকে তওবা করতে হবে।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু দ্বিতীয় বিবাহই শুদ্ধ হয়নি। তাই দ্রুত দ্বিতীয় স্বামী থেকে স্ত্রীকে আলাদা করতে হবে।
এবং উক্ত মহিলাকে প্রথম স্বামীর কাছেই ফেরত পাঠাতে হবে। তবে নিয়ম অনুযায়ী প্রথম স্বামী থেকে তালাক নেয়ার পর ইদ্দত পালন শেষে অন্য কারো সাথে বা যার সাথে দ্বিতীয়বার পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়েছিল তার সাথে বিবাহ দিতে পারবে।
প্রথম স্বামীর কাছে ফেরত যাবার ক্ষেত্রে স্মরণ রাখতে হবে যে, যদি প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ হয়েছে একথা না জেনে দ্বিতীয় স্বামী বিবাহ করে থাকে, তাহলে এক্ষেত্রে দ্বিতীয় বিবাহ হয়নি জানার পর প্রথম স্বামীর কাছে যখন স্ত্রী ফেরত যাবে, তখন প্রথম স্বামীর জন্য বিবাহ করা জরুরী নয়। কিন্তু উক্ত মহিলার ইদ্দত পালন করে প্রথম স্বামীর কাছে যাওয়া জরুরী। ইদ্দত পালনের আগে যাওয়া জায়েজ নয়।
তবে যদি দ্বিতীয় স্বামী জেনে- শুনেই বিবাহ করে থাকে। অর্থাৎ উক্ত মহিলা আরেকজনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ আছে একথা জেনেই বিবাহ করে থাকে। তাহলে উক্ত মহিলার প্রথম স্বামীর কাছে ফেরত যাওয়ার জন্য ইদ্দত পালনের কোন প্রয়োজন নেই। এমনিতেই ফেরত চলে যাবে। এমতাবস্থায় দ্বিতীয় স্বামীর জন্য মহিলার সাথে সহবাস করা জায়েজ নয়। হারাম হবে।
বাদায়েউস সানায় ২/৫৪৭; রদ্দুল মুহতার ৫/১৫৭; কাযিখান ফিল হিন্দিয়া ১/৩৬৬; ২৮০; খোলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১১৮; হিন্দিয়া ১/১৮০৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭১৭
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জন্মদিন বা মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা৷

প্রশ্ন
জন্ম দিন বা মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা যায়েজ আছে কি?
উত্তর
জন্মদিন বা হ্যাপি বার্থ ডে পালন করা এবং সেদিনে বিশেষ দোআ, সালাম বা উপহার পেশ করা, বয়স অনুসারে বছর গুনতি করে মোমবাতি জ্বালিয়ে তা ফুঁ দিয়ে নিভানো অতঃপর কেক কেটে খাওয়া প্রভৃতি
বিধর্মীয় প্রথা, মুসলিমদের জন্য তা বৈধ নয়।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি যে জাতির আনুরূপ্য অবলম্বন করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই দলভুক্ত।”
সহীহুল জামে হা/ ৬০২৫
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান, ইসলামে শোক পালনেরও নির্দিষ্ট নিয়মনীতি রয়েছে। তা হলো কেউ মারা গেলে শোক পালন করবে তিন দিন। তিন দিন পরে শোক পালনের কোনো সুযোগ নেই, বরং চতুর্থ দিন থেকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করবে, তবে স্বামী মারা গেলে স্ত্রী চার মাস দশ দিন অথবা গর্ভস্থিত সন্তান যদি থাকে প্রসব হওয়া পর্যন্ত শোক পালন করবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘কোনো মহিলা যে আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাস করে, সে যেন তিন দিনের অতিরিক্ত শোক পালন না করে, তবে স্বামী মারা গেলে চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে। (বুখারি, মুসলিম)।
অতএব ইসলামের বিধান হলো কেউই তিন দিনের অতিরিক্ত শোক পালন করবে না। শুধু মহিলারা স্বামী মারা গেলে চার মাস দশ দিন অথবা সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত শোক পালন করবেন ।
ইসলামে মৃত্যুর চতুর্থ দিনে কুলখানি করা এবং চল্লিশতম দিবসে চেহলাম করার কোনো বিধান নেই এমনিভাবে মৃত্যু দিবস পালন করা, মৃত্যু দিবস উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদের বিশেষ আয়োজন করা, নতুন করে আবার শোক দিবস পালন করা ইসলামে নেই। এসব অনিসলামিক কাজ৷ এসব কাজ থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য৷
মৃত ব্যক্তিদের ব্যাপারে যা করণীয় ইসলামে রয়েছে তা হলো, সব সময়ই তাদের জন্য দোয়া করা।
মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭১২
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

ইসলামি দৃষ্টিকোণে জন্ম নিয়ন্ত্রন৷

প্রশ্ন
পরিবার পরিকল্পনা বা জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে
চাইলে ইসলামের নির্দেশনা কি?দলিল সহ জানালে
উপকৃত হব।
উত্তর
জন্ম নিয়ন্ত্রনের মৌলিকভাবে তিনটি পদ্ধতি রয়েছে—
এক.স্থায়ী পদ্ধতি– যার দ্বারা নারী বা পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ অবৈধ। আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (র.) বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন:
‎ﻭ ﻫﻮ ﻣﺤﺮﻡ ‎ﺑﺎﻻﺗﻔﺎﻕ
অথাৎ স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন সর্বসম্মতক্রমে হারাম।
উমদাতুল ক্বারীঃ ১৪/১৪ পৃঃ
দুই.অস্থায়ী পদ্ধতি– যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর কেউ প্রজনন ক্ষমতাহীন হয়ে যায় না। যেমন : আযল করা (সহবাসের চরম পুলকের মুহুর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো), Condom Jelly, Cream, Foam, Douche ইত্যাদি ব্যবহার করা, পিল (Pill) খাওয়া,জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন নেয়া ইত্যাদি।
এ পদ্ধতি কেবল নিম্মোক্ত ক্ষেত্রে বৈধ হবে।
—দুই বাচ্চার জন্মের মাঝে কিছু সময় বিরতি দেওয়া যাতে প্রথম সন্তানের লালন-পালন, পরিচর্যা ঠিকমত হয়।
— কোন কারণে মহিলার বাচ্চা লালন-পালনের সামর্থ না থাকলে।
—মহিলা অসুস্থ ও দূর্বল হওয়ার কারণে গর্ভধারণ বিপদজনক হলে।
হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমরা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আযল যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও অস্থায়ী পদ্ধতি করতাম।
বুখারী ২/৭৮৪
তিন.গর্ভপাত ঘটানো ( Abortion)।এটি জন্মনিয়ন্ত্রণের বহু পুরাতন একটি পদ্ধতি। জন্মনিয়ন্ত্রণের (Contraceptives) উপায়- উপাদানের অনেক উন্নতি সত্ত্বেও আজ অবধি দুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে এপদ্ধতিও চালু আছে। এ পদ্ধতিও নাজায়েয। তবে যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য
আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।
আল্লামা ইবনে তাইমিয়া বলেন,উম্মতে মুসলিমার সকল ফুকাহা এব্যপারে একমত, রূহ আসার পর গর্ভপাত করা সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও হারাম। কারণ এটা ﺍﻟﻮﺃﺩ (সূক্ষ সমাহিত) এর অন্তরভুক্ত; যে ব্যপারে আল্লাহ তাআলা বলেন,
‎ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺍﻟْﻤَﻮْﺀُﻭﺩَﺓُ ﺳُﺌِﻠَﺖْ – ﺑِﺄَﻱِّ ﺫَﻧْﺐٍ ﻗُﺘِﻠَﺖْ
যখন (কেয়ামতের দিন) জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে,কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে…….’
তাকবীর ৮-৯। ফিকহী মাসায়েল ৪/২১৭৷
উক্ত আলোচনা থেকে আশা করি এটা পরিস্কার হয়েছে যে, ইসলাম জন্মনিয়ন্ত্রণের সকল পদ্ধতি নয়;বরং বিশষ
পদ্ধতির এবং সাধারণ অবস্থাতে নয়;বরং বিশেষ অবস্থাতে এর অনুমোদন দেয়। অন্যথায় সাধারণ অবস্থায় ইসলাম মানুষকে অধিক সন্তানলাভের প্রতি উৎসাহ দিয়েছে এবং যে সব নারীরা অধিক সন্তানের প্রসবনী হয়ে থাকে, তাদের বিবাহ করতে নির্দেশ দিয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “তোমরা অধিক সন্তানের প্রসবনী ও স্বামীদের অধিক ভালোবাসে এ ধরনের মেয়েদের বিবাহ কর, কারণ, কিয়ামতের দিন আমি আমার উম্মত বেশি হওয়ার কারণে আল্লাহর দরবারে গর্ব করব।”
আবু দাউদ, নাসায়ী। হায়াতুল মুসলিমিন, পৃষ্ঠা-১৮৯
সুতরাং খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে ,কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে পরিবার পরিকল্পনার কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে না।
বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।আল্লাহ বলেছেন ‘’দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…
’’ সূরা ইসরা, আয়াত-৩১ অন্যত্র তিনি বলেন, ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﻳَﻌِﺪُﻛُﻢُ ‎ﺍﻟْﻔَﻘْﺮَ .
“শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-
বাক্বারা)
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে,আজকাল যদিও সন্তান হত্যার পরিবর্তে নানাবিধ উপায়ে তাদের জন্মের পর বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, তবুও সন্তান জন্মানোর ফলে আর্থিক আশংকাজনিত ভুল ধারণা জন্মনিরোধের অন্যতম
কারণ। সুতরাং এবিষয়ে প্রত্যেক মুসলমানকে ভেবে চিন্তে সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে,দুনিয়ার সামান্য ভোগবিলাস, কষ্ট বা লজ্জার ভয়ে আমরা যেন আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ ঈমান ও আখেরাতকে বরবাদ না করে দেই। আল্লাহ সহীহ সমঝ দান করুন ।আমীন।
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭০৭
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্বামী-স্ত্রী একে অপরের লজ্জাস্থানে মুখ দেয়া৷

প্রশ্ন
স্ত্রী কি তার স্বামীর লজ্জাস্থানে মুখ দিতে পারবে? অথবা স্বামীর জন্য কি তার স্ত্রীর লজ্জাস্থানে মুখ দেয়া
কি বৈধ?
উত্তর
স্বামী তার স্ত্রীর বা স্ত্রী তার স্বামীর যৌনাঙ্গে মুখ
দেয়া মাকরুহে তাহরীমি৷ এগুলো নোংরামী এবং পশুত্বের নিদর্শন। মনুত্ববান ও সুরুচিপুর্নবান মানুষ এগুলো করতে পারবে না৷
ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৩৭২; ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৯/১৪২৷ মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৬৪
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

উকীল বাপের জন্য কথিত কন্যাকে বিবাহ করা৷

প্রশ্ন
আস সালাই মুলাই কম আমি মোঃ কামরুজ্জামান খান পিতা মৃত হাজী গোলাম মাওলা থান বয়স ৩৫ গত ১মাস আগে আমার এক বন্ধুর সাথে আমারই এক বান্ধবীর বিয়ের ব্যবস্থা করি তবে কি কেউ কাউকে আগে থেকে চিন্তনা এবং আমি তাদের উকিল বাপ হই। বিয়ের পড় তাদের মাঝে জগড়া সাবক্ষনিক লেগেই থাকে । আমার সেই বান্ধবী আমাকে বলে সে নাকি আত্ব হত্যা করবে। কারন আমার সেই বন্ধু জুয়া ণেশ এবং নারীর প্রতি একটু দুর্বল। ঘড় ভাংগনের পর্যায় ।আমি চাই ছিলাম একটি বিপথ গামী বৈক্তিকে যদি ভালো করা যায়। কিন্তু আমি তাদের মাঝে বিয়ে দিয়ে এখন আমি নিজেকে নিজে অনেক বড় অপরাধী মনে করি । আমার প্রশ্ন হলো আমি আমার সেই বান্ধীর কে বিয়ে করতে পারবো কি না। যেহেতু আমার সেই বান্ধবীকে আমি আমার সেই বন্ধুর ব্যাপারে সকল প্রকার তত্থ্য মিথ্যা ‍দিয়েছিলাম।
উত্তর
বিয়ে করা যায় তথা গায়রে মাহরাম কোন মেয়ে কোন ছেলের বান্ধবী হতে পারে না। এসব বন্ধু বান্ধবী বানিয়ে কথা বলা, একসাথে চলাফেরা করা বিধর্মীয়ানা কালচার। এসব থেকে মুক্ত থাকা প্রতিটি মুসলিমের জন্য আবশ্যক। যদি উক্ত মেয়েটির স্বামী তাকে তালাক দেয়, তাহলে মেয়েটি উদ্দত শেষে আপনি তাকে বিয়ে করতে
পারেন।
কিন্তু আপনার কথিত বন্ধু কর্তৃক তার স্ত্রী তালাকপ্রাপ্তা হওয়া এবং তার ইদ্দত পালন শেষ হবার আগে তাকে কিছুতেই বিয়ে করতে পারবেন না। তালাকপ্রাপ্তা হবার পর এবং ইদ্দত (তিন হায়েজ অতিক্রম হওয়া) শেষ হবার পর তাকে বিয়ে করতে পারবেন। উকীল বাপ বলতে ইসলামে কিছু নেই। এগুলো সামাজিক কুপ্রথা। এসব পরিত্যাগ করা উচিত। এসবের কোন ভিত্তি নেই। সুতরাং যে মেয়ের উকীল বাপ সেজেছে তাকে শরয়ী কোন বাঁধা না থাকলে বিয়ে করাতে কোন সমস্যা নেই।
দলিলঃ
সুরা বাকারা আঃ ২২৮; ফতওয়াযে হিন্দিয়া ১/২৮০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৪৭; বাহরুর রায়েক ৩/ ১০৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৫৬
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

পরকিয়ার মাধ্যমে জন্ম নেয়া সন্তানের জনক কে হবে?

প্রশ্ন
আমাদের এলাকার জনৈক ব্যক্তি অপরের বিবাহিতা স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে এবং তার স্বামীর অজান্তে দৈহিক মেলামেশার ফলে একটি পুত্রসন্তান জন্ম নেয়, ছেলেটির বয়স বর্তমানে ৬-৭ বছর। বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমেও ছেলেটি তার বলে প্রমাণিত হয়েছে। এখন সে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত। এমতাবস্থায় জানার বিষয় হচ্ছে ১. বর্তমানে তার করণীয় কী? ওই মহিলার সাথে কোনোরূপ যোগাযোগ বা সাক্ষাৎ বৈধ হবে কি না? ২. সন্তানের প্রকৃত পিতা শরীয়তের দৃষ্টিতে কে? এবং কার উত্তরসূরি হিসেবে মিরাছ পাবে?
উত্তর
১. অতীতের অবৈধ সম্পর্কের কারণে যে গোনাহ হয়েছে তার জন্য খাঁটি মনে তাওবা করবে। ওই মহিলার সাথে কোনোরূপ যোগাযোগ বা সাক্ষাৎ বৈধ হবে না। সূরা নিসা-৬৩, সূরা নূর-৩০, আদ্দুররুল মুখতার ১/২৪১৷ ২. শরীয়তের দৃষ্টিতে ওই মহিলার স্বামীই সন্তানের প্রকৃত পিতা বলে গণ্য হবে এবং তারই উত্তরসূরি হিসেবে মিরাছ পাবে। আবু দাউদ ১/৩১০, রদ্দুল মুখতার ২/৫৫০, ফতাওয়া দারুল উলুম ১১/৫১১৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৩৫
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বিবাহের বিধান৷ ও বিপরীতমুখি হাদীসের জবাব৷

প্রশ্ন
রাসুল সাঃ বলেছেন: যে নারী তার অভিভাবকের সম্মতি ছাড়াই বিবাহ করে,
তার বিবাহ বাতিল বাতিল বাতিল৷ আবু দাউদ তিরমিযি মেশকাত হাদিস নং ৩১৩১৷
কিন্তুু কিছুদিন আগে একটা আপু বল্লো এই
হাদিসের ব্যাখ্যা আছে। মেয়ে যদি প্রাপ্তবয়স্কা
হয় তাহলে আভিভাবকের অনুমতি না নিলেও বিয়ে জায়েয হবে। অবশ্য মা বাবাকে কষ্ট দিলে তার জন্য গোনাহ্গারও হবে। কিছুদিন আগে আমার একটা বান্ধবী বাসায়
না জানিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করে বিয়ে করে ফেলেছে। আমি ওকে হাদিসটা দেখিয়েছিলাম এবং মা
বাবাকে জানিয়ে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছিলাম
কিন্তুু সে বল্লো ওরা রাজি হবেনা। বিয়ে করে
ফেল্লে পরে মেনে নেবে। তো আমার কথা আর শোনেনি। তখন আমি জানতামনা এই হাদিসের
ব্যাখা আছে। এর আরো পরে শোনেছি। যাইহোক এখন জানতে চাই ওদের বিয়ে কি
শরিয়ত সম্মতভাবে হালাল হয়েছে? এই হাদিসের ব্যাখাটা জানতে চাই।
উত্তর
যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং
অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়া মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা
না জানুক। তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রকে বিবাহ করে, যার কারণে মেয়ের
পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি
কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না। সুতরাং আপনারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত
বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করে
থাকেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়া মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে গেছে। যদিও আপনাদের পরিবার
কিছুই জানে না। কিংবা যদি তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।
‎ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ؛ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
‎ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ، ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﺍﻟْﺄَﻳِّﻢُ ﺃَﺣَﻖُّ ﺑِﻨَﻔْﺴِﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﻭَﻟِﻴِّﻬَﺎ .
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬ ৷
‎ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻠَﻤَﺔَ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﻗَﺎﻝَ : ” ﺟَﺎﺀَﺕِ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ
‎ﺇِﻟَﻰ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ : ﻳَﺎ
‎ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﺇِﻥَّ ﺃَﺑِﻲ ﻭَﻧِﻌْﻢَ ﺍﻟْﺄَﺏُ ﻫُﻮَ، ﺧَﻄَﺒَﻨِﻲ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻋَﻢُّ
‎ﻭَﻟَﺪِﻱ ﻓَﺮَﺩَّﻩُ، ﻭَﺃَﻧْﻜَﺤَﻨِﻲ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻭَﺃَﻧَﺎ ﻛَﺎﺭِﻫَﺔٌ . ﻓَﺒَﻌَﺚَ ﺭَﺳُﻮﻝُ
‎ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺑِﻴﻬَﺎ، ﻓَﺴَﺄَﻟَﻪُ ﻋَﻦْ
‎ﻗَﻮْﻟِﻬَﺎ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺻَﺪَﻗَﺖْ، ﺃَﻧْﻜَﺤْﺘُﻬَﺎ ﻭَﻟَﻢْ ﺁﻟُﻬَﺎ ﺧَﻴْﺮًﺍ . ﻓَﻘَﺎﻝَ
‎ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﻟَﺎ ﻧِﻜَﺎﺡَ ﻟَﻚِ،
‎ﺍﺫْﻫَﺒِﻲ ﻓَﺎﻧْﻜِﺤِﻲ ﻣَﻦْ ﺷِﺌْﺖِ
হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল সাঃ এর
কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে
ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের
সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”।
সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১
‎2469 – ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣُﺴَﻴْﻦٌ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺟَﺮِﻳﺮٌ، ﻋَﻦْ ﺃَﻳُّﻮﺏَ، ﻋَﻦْ
‎ﻋِﻜْﺮِﻣَﺔَ، ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ : ” ﺃَﻥَّ ﺟَﺎﺭِﻳَﺔً ﺑِﻜْﺮًﺍ ﺃَﺗَﺖِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ
‎ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﺬَﻛَﺮَﺕْ ﺃَﻥَّ ﺃَﺑَﺎﻫَﺎ ﺯَﻭَّﺟَﻬَﺎ ﻭَﻫِﻲَ
‎ﻛَﺎﺭِﻫَﺔٌ ﻓَﺨَﻴَّﺮَﻫَﺎ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ”
‎ﺇﺳﻨﺎﺩﻩ ﺻﺤﻴﺢ ﻋﻠﻰ ﺷﺮﻁ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ . ‎ﻭﺃﺧﺮﺟﻪ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ‏(2096 ‏) ، ﻭﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ‏( 1875 ‏) ، ‎ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ﻓﻲ “ ﺍﻟﻜﺒﺮﻯ ” ‏( 5387 ‏) ، ﻭﺃﺑﻮ ﻳﻌﻠﻰ ‎‏(2526 ‏) ، ﻭﺍﻟﻄﺤﺎﻭﻱ 4/365 ، ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻗﻄﻨﻲ ‎3/234 235- ، ﻭﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻲ 7/117 ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﺣﺴﻴﻦ ‎ﺑﻦ ﻣﺤﻤﺪ ﺍﻟﻤﺮﻭﺫﻱ، ﺑﻬﺬﺍ ﺍﻹﺳﻨﺎﺩ . ‎ﻭﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ‏( 1875 ‏) ، ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ ‏(5389 ‏) ، ‎ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻗﻄﻨﻲ 3/235 ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﻣُﻌﻤﺮ ﺑﻦ ﺳﻠﻴﻤﺎﻥ، ‎ﻋﻦ ﺯﻳﺪ ﺑﻦ ﺣﺒﺎﻥ، ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻗﻄﻨﻲ 3/235 ﻣﻦ ﻃﺮﻳﻖ ‎ﺃﻳﻮﺏ ﺑﻦ ﺳﻮﻳﺪ، ﻋﻦ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﺍﻟﺜﻮﺭﻱ، ﻛﻼﻫﻤﺎ ﻋﻦ ‎ﺃﻳﻮﺏ ﺍﻟﺴﺨﺘﻴﺎﻧﻲ، ﺑﻪ .
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। কুমারী মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমার
অপছন্দ সত্বেও বিয়ে দিয়েছে, তখন রাসূল সাঃ সে মেয়েকে অধিকার দিলেন, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করতে পারে বা এ বিয়ে রাখতেও পারে।
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৬৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৬, সুনানুল কুবরা নাসায়ী, হাদীস নং-৫৩৬৬, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৬৬
‎ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺑُﺮَﻳْﺪَﺓَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَﺕْ ﻓَﺘَﺎﺓٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ
‎ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ : ” ﺇِﻥَّ ﺃَﺑِﻲ ﺯَﻭَّﺟَﻨِﻲ ﺍﺑْﻦَ
‎ﺃَﺧِﻴﻪِ، ﻟِﻴَﺮْﻓَﻊَ ﺑِﻲ ﺧَﺴِﻴﺴَﺘَﻪُ، ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﺠَﻌَﻞَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮَ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ،
‎ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ : ﻗَﺪْ ﺃَﺟَﺰْﺕُ ﻣَﺎ ﺻَﻨَﻊَ ﺃَﺑِﻲ، ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺃَﺭَﺩْﺕُ ﺃَﻥْ ﺗَﻌْﻠَﻢَ
‎ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀُ ﺃَﻥْ ﻟَﻴْﺲَ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﺂﺑَﺎﺀِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮِ ﺷَﻲْﺀٌ “
হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা নবীজী সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাবী বলেন, তখন রাসূল সাঃ বিষয়টি মেয়ের ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, অর্থাৎ ইচ্ছে করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে ভেঙ্গেও দিতে পারবে তখন মহিলাটি বললেন, আমার পিতা যা
করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের চূড়ান্ত মতের অধিকার নেই ৷
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৫৫
উল্লেখিত হাদীস ছাড়াও আরো এমন অনেক হাদীস রয়েছে, যা স্পষ্ট ভাষায় প্রমাণ করে যে, বিয়ের
ক্ষেত্রে অভিভাবক নয়, প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে পিতা বা অভিভাবকের
হস্তক্ষেপের অধিকার নেই। সুতরাং প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা
অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করে নিলে তা সম্পন্ন হয়ে যাবে।
বিপরীতমুখী হাদীসের জবাব৷
যে সকল হাদীস দ্বারা একথা বুঝা যায় যে, অভিভাবক ছাড়া বিয়ে সম্পন্ন হয় না, সেগুলোর অনেকগুলো জবাব মুহাদ্দিসীনে কেরাম ও ফুক্বাহায়ে কেরাম দিয়েছেন। প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসটি আমরা দেখে নেই, তাহলে উত্তর দিতে সুবিধা হবে
‎ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ، ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
‎ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏«ﺃَﻳُّﻤَﺎ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٍ ﻧَﻜَﺤَﺖْ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺇِﺫْﻥِ ﻣَﻮَﺍﻟِﻴﻬَﺎ،
‎ﻓَﻨِﻜَﺎﺣُﻬَﺎ ﺑَﺎﻃِﻞ«ٌ، ﺛَﻠَﺎﺙَ ﻣَﺮَّﺍﺕٍ ‏« ﻓَﺈِﻥْ ﺩَﺧَﻞَ ﺑِﻬَﺎ ﻓَﺎﻟْﻤَﻬْﺮُ
‎ﻟَﻬَﺎ ﺑِﻤَﺎ ﺃَﺻَﺎﺏَ ﻣِﻨْﻬَﺎ، ﻓَﺈِﻥْ ﺗَﺸَﺎﺟَﺮُﻭﺍ ﻓَﺎﻟﺴُّﻠْﻄَﺎﻥُ ﻭَﻟِﻲُّ ﻣَﻦْ
‎ﻟَﺎ ﻭَﻟِﻲَّ ﻟَﻪُ »
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে মহিলাকে তার অভিভাবক বিয়ে দেয়নি, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল। এরপর স্বামী যদি তার তার সাথে মিলামিশা করে তবে সে মহরের অধিকারী হবে স্বামী তার সাথে হালাল পদ্ধতিতে মেলামেশা করার কারণে। আর যদি তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে যার অভিভাবক নেই, বাদশাই তার অভিভাবক বলে বিবেচিত হবে।
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৮৭৯, সুনানে তিরামিজী, হাদীস নং-১১০২, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস
নং-১৮৭৯
হাদীসটির বিষয়ে মন্তব্য
ইমাম বুখারী রহঃ বলেন, হাদীসটি মুনকার। আলইলালুল কাবীর-২৫৭
ইমাম তিরমিজী রহঃ বলেন, হাসান। সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০২
ইমাম তাহাবী রহঃ বলেন, হাদীসটি ফাসিদ। শরহু মাআনিল আসার-৩/৭
ইবনে কাত্তান রহঃ বলেন, হাদীসটি হাসান। আলওয়াহমু ওয়ালইহামু-৪/৫৭৭
জবাব নং ১
আমরা শক্তিশালিত্বের দিক থেকে আমাদের বর্ণিত হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ থেকে বর্ণিত হাদীসটির বিষয়ে ইমাম বুখারী রহঃ থেকে মুনকার হওয়ার এবং ইমাম তাহাবী রহঃ থেকে ফাসিদ হওয়ার কালাম রয়েছে। তাই আমরা এর উপর আমল করি না। পক্ষান্তরে আমাদের উপরে বর্ণিত সহীহ মুসলিম ও মুয়াত্তা মালিকের বর্ণনাটি সহীহ।
জবাব নং-২
এ হাদীস দ্বারাই বুঝা যাচ্ছে যে, এখানে বিবাহ বাতিল হয়ে যাওয়া উদ্দেশ্য নয়। কারণ হাদীসের শেষাংশে বলা হচ্ছে, স্ত্রী মহরের অধিকারী হবে। যদি বিবাহ শুদ্ধই না হতো, তাহলে মোহর আবশ্যক হওয়ার কথা আসছে কেন? মোহরতো বিবাহের মাধ্যমে আবশ্যক হয়। বিবাহ ছাড়া আর্থিক জরিমানার জন্য ব্যবহৃত হয় আরবী ﻋﻘﺮﺍ শব্দ ব্যবহৃত হয়। অথচ এখানে ব্যবহৃত করা হয়েছে। মোহর শব্দ। যা বিবাহের সাথে খাস। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে এখানে আসলেই বিবাহ বাতিল হয়ে যায়, এটি উদ্দেশ্য নয়। বরং ধমকী দেয়া উদ্দেশ্য। যেন অভিভাবকদের না জানিয়ে মেয়েরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না হয়।
জবাব নং ৩
‎ﺃَﻥَّ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ، ﺯَﻭْﺝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ، ﺯَﻭَّﺟَﺖْ
‎ﺣَﻔْﺼَﺔَ ﺑِﻨْﺖَ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤﻦِ، ﺍﻟْﻤُﻨْﺬِﺭَ ﺑْﻦَ ﺍﻟﺰُّﺑَﻴْﺮِ . ﻭَﻋَﺒْﺪُ
‎ﺍﻟﺮَّﺣْﻤﻦِ ﻏَﺎﺋِﺐٌ ﺑِﺎﻟﺸَّﺄْﻡِ .
যেমন প্রশ্নে উল্লেখিত অভিভাবক ছাড়া মহিলা কর্তৃক বিয়ে সম্পন্ন না হওয়ার হাদীসটি হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ এর। অথচ খোদ আয়শা রাঃ তার ভাই আব্দুর রহমানের মেয়ে হাফসাকে তার অভিভাবক আব্দুর রহমানকে ছাড়াই নিজে বিয়ে দিয়েছিলেন মুনজির বিন যুবায়েরের সাথে।
মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-২০৪০৷ তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৪২৫৫, সুনানুস সাগীর লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২৩৭৪, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৩৫২২৷
সুতরাং বুঝা গেল যে, উক্ত হাদীস দ্বারা খোদ বর্ণনাকারী হযরত আয়শা রাঃ নিজেই বিবাহ শুদ্ধ হয় না একথা বুঝেন নি। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বিয়ে অসম্পূর্ণ হয় অভিভাবক ছাড়া। কারণ, যে অভিভাবক মেয়েকে লালন পালন করল, তাকে না জানিয়ে বিয়ে করাটাতো অসম্পূর্ণই। তাই বলা হয়েছে তা বাতিল। বাতিল মানে অসম্পূর্ণ।
যেমন আরেক হাদীসে এসেছে-
‎ﻋَﻦْ ﺟَﺎﺑِﺮِ ﺑْﻦِ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
‎ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﺃَﻳُّﻤَﺎ ﻣَﻤْﻠُﻮﻙٍ ﺗَﺰَﻭَّﺝَ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺇِﺫْﻥِ ﺳَﻴِّﺪِﻩِ،
‎ﻓَﻬُﻮَ ﻋَﺎﻫِﺮ«ٌ
অনুবাদ- হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে গোলাম মনীবের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করে তাহলে সে জিনাকারী।
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৭৮, তিরমিজী, হাদীস নং-১১১১৷
আসলে কি গোলাম জিনাকারী হবে? একথাতো কেউ বলেন না। এখানে যেমন সবাই বলেন যে, এর দ্বারা ধমকী দেয়া উদ্দেশ্য। ঠিক তেমনি যেন কোন মেয়ে তার অভিভাবক ছাড়া বিয়ে না করে, কারণ মেয়ে মানুষ হওয়ার কারণে সে পাত্র নির্ণিত করতে ভুল করতে পারে, তাই সতর্ক করে বলা হয়েছে তার বিবাহ বাতিল হওয়ার সমতূল্য। যেমন গোলামের বিবাহ জিনার সমতূল্য। আসলে যিনা নয়।
জবাব নং ৪
আসলে বাতিল বলে হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে, যদি মেয়ে গায়রে কুফুতে বিয়ে করে, তাহলে তার বিয়ে অভিভাবক এসে বাতিল করে দিতে পারে। সে হিসেবে তার বিয়েকে বাতিল বলা হয়েছে।
জবাব নং-৫
বাতিল দ্বারা উদ্দেশ্য হল, যদি নাবালেগ বা পাগল মেয়ে বিয়ে করে, তাহলে তার বিবাহ বাতিল। এভাবে আমরা উভয় হাদীসের উপর আমল করতে পারি।
বিস্তারিত জানতে পড়ুন- ১- ইলাউস সুনান-১১/৬৫-৭০, ২- মিরকাতুল মাফাতীহ-৬/২৬৫-২৭৪, ৩- তুহফাতুল আলমায়ী-৩/৫১৫-৫১৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া মাদহারুল হক দারুল উলুম দেবগ্রাম আখাউড়া ব্রাক্ষণবাড়িয়া৷
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৩০
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্ত্রী তার মৃত স্বামীকে গোসল দেওয়া৷

প্রশ্ন
আমার স্বামী মৃত্যুশয্যায় শায়িত। আমি সবসময় তার খেদমতে নিয়োজিত। এখন আমার একান্ত ইচ্ছা, তার ইন্তিকালের পর তাকে নিজ হাতে গোসল দিব। আমি জানতে চাই, আমার জন্য এটা জায়েয
হবে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, আপনার মৃত স্বামীকে আপনি গোসল দিতে পারবেন। বিশুদ্ধ বর্ণনায় এসেছে যে, হযরত আবু বকর রা.-এর ইন্তিকালের পর তার স্ত্রী আসমা বিনতে উমাইস রা. তাকে গোসল দিয়েছিলেন। আবু দাউদ ৪/৩০, হা : ৩১৩৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩; আলমাবসূত সারাখসী ২/৬৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭৪; রদ্দুল মুহতার
২/১৯৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬১২
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

উত্তেজনাবশত লজ্জাস্থান দিয়ে হালকা পানি বের হলে করনীয়৷

প্রশ্ন
অনেক সময় দেখা যায় স্ত্রীর সাথে কথা বলার সময় বা খেলা করার সময় বা স্পর্শ করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, আবার কখনো এমনি উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে লজ্জাস্থান দিয়ে হালকা পাতলা পানি বের হয়৷ এমতাবস্থায় করনীয় কি? তখন গোসল ফরজ হয়ে যায়? নাকি অযু করলেই চলবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত সুরতে উত্তেজনার ফলে বীর্য বের হবার আগে যে পানি লজ্জাস্থান দিয়ে বের হয়, নারী হোক পুরুষ হোক সেটিকে মযী বলা হয়৷ মযী বের হলে অজু ভেঙ্গে যায়। যেমন প্রস্রাব বের হলে অযু ভেঙ্গে সায়৷
তবে গোসল করা ফরজ হয় না। তাই যে স্থানে বা কাপড়ের যেই অংশে তা লেগেছে তা ধুয়ে নামায পড়া যাবে।
দলিলঃ
হেদায়া ১/৫৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪২৯; ফতওয়ায়ে শামী ১/৩১৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৩৭
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

সৎ দাদীকে বিয়ে করা৷

প্রশ্ন
আমার দাদা বৃদ্ধ বয়সে এক যুবতীকে বিয়ে করেছেন, পরে দাদা মারা যান ৷ আমার স্ত্রীও রোড এক্সিডেন্টে মারা যায়৷ আমি চেয়েছিলাম শরিয়তসম্মত হলে দাদার স্ত্রীকে বিয়ে করতে ৷ তাই জানার বিষয় হলো, দাদার বিবাহকৃত কোনো নারীকে (সৎ দাদী) বিয়ে করা বৈধ হবে কি?
উত্তর
দাদার স্ত্রী ( সৎ দাদী) মাহরামের অন্তর্ভুক্ত।
তাকে বিবাহ করা জায়েয নয়, হারাম৷ অতএব আপনি আপনার সৎ দাদীকে বিয়ে করতে পারবেন না৷
-সূরা নিসা ২২; তাফসীরে মাযহারী (সূরা নিসা অংশ) ২/৫৪; আহকামুল জাসসাস ২/১১২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৫; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৪৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৩৫
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

ওয়ারিসের জন্য সম্পত্বির অসিয়ত৷

প্রশ্ন
মাস্টার আবদুর রউফের তিন ছেলে। বড় দুই ছেলেকে লেখা-পড়া করিয়ে ও বিদেশ পাঠিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু ছোট ছেলের জন্য তেমন কিছু করতে পারেননি। এজন্য মৃত্যুর সময় স্ত্রীকে ডেকে বিশ্বরোড সংলগ্ন পাঁচ গন্ডা জমি ছোট ছেলের জন্য অসিয়ত করে গেছেন। বড় ছেলেরা বিদেশ থাকায় তাদেরকে বলে যেতে পারেননি। পরবর্তীতে তারা শুনে বলল, আমাদের ছোট ভাই হিসেবে আমরা তার সার্বিকভাবে সহযোগিতা করব। তবে বাপ-দাদার মিরাসী সম্পত্তি তাকে এককভাবে দিতে পারব না। এখন প্রশ্ন হল, এ অসিয়ত পূর্ণ করতে হবে কি না? এ অসিয়ত অমান্য করতে কোনো সমস্যা হবে কি না?
উত্তর
ওয়ারিসের জন্য সম্পদের অসিয়ত শরীয়তসম্মত নয়। কেউ করলেও তা কার্যকর হয় না। তাই ঐ ব্যক্তির অসিয়তটি সহীহ হয়নি। তা আমলযোগ্য নয়। হ্যাঁ, সকল ওয়ারিস স্বতস্ফূর্তভাবে নিজেদের অংশ থেকে মৃতের ছোট ছেলেকে অতিরিক্ত যদি কিছু দিতে চায়, তাহলে এর অবকাশ আছে। -সহীহ বুখারী ১/৩৮৩; সুনানে নাসাঈ ২/১১৩; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৪২৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/১৮২; তাকমিলা ফাতহুল কাদীর ৯/৩৪৬৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৫৮
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি জানি, বিয়ে করার জন্য কাবিন শর্ত। বর্তমানে দেখা যায়,...

প্রশ্ন
আমি জানি, বিয়ে করার জন্য কাবিন শর্ত। বর্তমানে দেখা যায়, অনেকে
বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ার পর মা- বাবা কিংবা গার্ডিয়ানদের সম্মতিতে কাবিন না করে শুধু আংটি পরিয়ে রাখে। এখন ঐ ছেলে-মেয়ে পরস্পরে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবে কি? অনুগ্রহ করে জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
আংটি পরানোর দ্বারা বিবাহ সংঘটিত হয় না। এটি উভয় পক্ষের মাঝে সামাজিকভাবে কেবলমাত্র বিবাহের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা বুঝায়। সুতরাং ইজাব-কবুল ছাড়া শুধু আংটি পরানোর কারণে তারা স্বামী-স্ত্রী গণ্য
হবে না। তাই ইজাব-কবুলের আগে তাদের দেখা-সাক্ষাৎ ও মেলামেশা বৈধ নয়।
প্রকাশ থাকে যে, বর্তমানে বিবাহের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর আকদ না করিয়ে আংটি পরিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত
এভাবে রেখে দেওয়ার রেওয়াজটি ঠিক নয়। এ কারণে ছেলে-মেয়ে ও তাদের নিকটজনদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও মেলামেশা করার গুনাহ বাড়তে থাকে।
উল্লেখ্য যে, বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য কাবিন করা শর্ত নয়; বরং দু’জন প্রাপ্ত
বয়স্ক পুরুষ সাক্ষীর সামনে বিয়ের ইজাব- কবুল করার দ্বারাই বিবাহ সংঘটিত হয়ে যায়।
-রদ্দুল মুহতার ১/১১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১
ও ৩/১৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৫৭
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

স্বামী স্ত্রীকে খোলা তালাক দিলে ইদ্দত চলাকালীন স্ত্রীর ভরণ-পোষণ কে...

প্রশ্ন
স্বামী স্ত্রীকে খোলা তালাক দিলে
ইদ্দত চলাকালীন স্ত্রীর ভরণ-পোষণ কে বহন করবে?
উত্তর
সাধারণ তালাকের মতো খোলা তালাকের ক্ষেত্রেও ইদ্দত চলাকালীন
স্ত্রীর ভরণ-পোষণ স্বামীকেই বহন করতে হবে। তবে যদি খোলা তালাকের চুক্তির
সময় ইদ্দতের মধ্যে ভরণ-পোষণ না দেওয়ার শর্ত করা হয় তাহলে তা সহীহ হবে এবং সেক্ষেত্রে স্ত্রী ইদ্দতকালীন ভরণ পোষণ: পাবে না।
-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস
১৮৮১১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪৫২-৪৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৩৯; ফাতহুল
কাদীর ৪/৭৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/৮৯
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৪১
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার আব্বা দুই বিবাহ করেন। প্রথম পক্ষে তিন মেয়ে হওয়ার...

প্রশ্ন
আমার আব্বা দুই বিবাহ করেন। প্রথম পক্ষে তিন মেয়ে হওয়ার পর ঐ স্ত্রী ইন্তেকাল
করেন। পরবর্তীতে আমার আম্মাকে বিবাহ
করেন। আব্বার প্রথম পক্ষের বড়
মেয়ের মেয়ের মেয়ে তথা বড়
মেয়ের নাতনীর সাথে আমি কিছুদিন পূর্বে
বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হই। কিন্তু ধর্মীয় দিক
থেকে কেউ কেউ এ বিষয়ে প্রশ্ন
উঠালে আমি বিব্রতকর অবস্থায় পতিত হই।
অতএব মহোদয়ের কাছে আমি এ বিষয়ে
মাযহাব বর্ণনাসহ ফকীহদের বিস্তারিত মতামত
জানতে একান্ত আগ্রহী।
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ মেয়েটি আপনার
মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। তার সাথে আপনার বিবাহ
শুদ্ধ হয়নি। কুরআন মাজীদের সূরা নিসার ২৩ নং
আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন , ( তরজমা) তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা , তোমাদের কন্যা, তোমাদের বোন , তোমাদের
ফুফু , তোমাদের খালা, ভ্রাতৃকন্যা, ভগ্নিকন্যা ...।
উক্ত আয়াতে মাহরামের আলোচনায় যে ভগ্নিকন্যা এসেছে তাতে বোনের
মেয়েসহ তার অধস্তন সকল কন্যা অন্তর্ভুক্ত।
এতে আপন বোনের মেয়ে , বৈপিত্রেয় বোনের মেয়ে এবং বৈমাত্রেয় বোনের মেয়ে এবং এদের অধস্তন সকল কন্যার হুকুম
সমান।
তাই এখন আপনাদের কর্তব্য হল, এখনি পৃথক হয়ে যাওয়া এবং নিজেদের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে তাওবা-ইস্তিগফার করা।
উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত হুকুমটি (ভগ্নিকন্যার
অধস্তনগণ মাহরাম হওয়া) সর্বসম্মত মাসআলা।
এতে কোনো ইমাম বা কোনো মাযহাবের দ্বিমত নেই। আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/১২৩; তাফসীরে মাযহারী ২/২৬৫; কিতাবুল আছল ৪/৩৮৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৬০; ফাতহুল কাদীর ৩/১১৭৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪২৮
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আসসালামু আলাইকুম, মুরগির নারি ভুরি খাওয়া জায়েজ নয়, তাহলে গরুর...

প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম, মুরগির নারি ভুরি খাওয়া জায়েজ নয়, তাহলে
গরুর নারি ভুরি খাওয়া কি জায়েজ না কি না
জায়েজ? এই দুই টার মধ্যে পারথক্ক কি ?
রেফেরেন্স সহ জানালে খুশি হব।
উত্তর
‎ﻭﻋﻠﻴﻜﻢ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺭﺣﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺑﺮﻛﺎﺗﻪ ‎ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ গরুর নাড়ি তথা রগ খাওয়া জায়েজ নয়। তবে ভুরি খাওয়া জায়েজ আছে। তবে ময়লা থেকে পরিস্কার করে নেয়া আবশ্যক। মুরগীর নাড়ি থাকে, কিন্তু ভুরি বলতে কিছু থাকে কি না? আমাদের জানা নেই। হালাল পশুর ৭টি অঙ্গ হারাম। যথা- ১- প্রবাহিত রক্ত। ২- নর প্রাণীর পুং লিঙ্গ। ৩- অন্ডকোষ। ৪- মাদী প্রাণীর স্ত্রী লিঙ্গ। ৫- মাংসগ্রন্থি। ৬- মুত্রথলি। ৭- পিত্ত। এছাড়া বাকি সবই খাওয়া জায়েজ।
‎ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺑَﻴَﺎﻥُ ﻣَﺎ ﻳَﺤْﺮُﻡُ ﺃَﻛْﻠُﻪُ ﻣِﻦْ ﺃَﺟْﺰَﺍﺀِ ﺍﻟْﺤَﻴَﻮَﺍﻥِ ﺍﻟْﻤَﺄْﻛُﻮﻝِ
‎ﻓَﺎَﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺤْﺮُﻡُ ﺃَﻛْﻠُﻪُ ﻣِﻨْﻪُ ﺳَﺒْﻌَﺔٌ : ﺍﻟﺪَّﻡُ ﺍﻟْﻤَﺴْﻔُﻮﺡُ، ﻭَﺍﻟﺬَّﻛَﺮُ،
‎ﻭَﺍﻟْﺄُﻧْﺜَﻴَﺎﻥِ، ﻭَﺍﻟْﻘُﺒُﻞُ، ﻭَﺍﻟْﻐُﺪَّﺓُ، ﻭَﺍﻟْﻤَﺜَﺎﻧَﺔُ، ﻭَﺍﻟْﻤَﺮَﺍﺭَﺓُ ﻟِﻘَﻮْﻟِﻪِ
‎ﻋَﺰَّ ﺷَﺄْﻧُﻪُ } ﻭَﻳُﺤِﻞُّ ﻟَﻬُﻢُ ﺍﻟﻄَّﻴِّﺒَﺎﺕِ ﻭَﻳُﺤَﺮِّﻡُ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢُ
‎ﺍﻟْﺨَﺒَﺎﺋِﺚَ { [ ﺍﻷﻋﺮﺍﻑ : 157 ] ﻭَﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﺄَﺷْﻴَﺎﺀُ ﺍﻟﺴَّﺒْﻌَﺔُ ﻣِﻤَّﺎ
‎ﺗَﺴْﺘَﺨْﺒِﺜُﻪُ ﺍﻟﻄِّﺒَﺎﻉُ ﺍﻟﺴَّﻠِﻴﻤَﺔُ ﻓَﻜَﺎﻧَﺖْ ﻣُﺤَﺮَّﻣَﺔً . ( ﺑﺪﺍﺋﻊ
‎ﺍﻟﺼﻨﺎﺋﻊ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺘﻀﺤﻴﺔ، ﺑﺎﺏ ﺻﻔﺔ ﺍﻟﺘﻀﺤﻴﺔ، ﻓَﺼْﻞٌ
‎ﻓِﻲ ﺑَﻴَﺎﻥُ ﻣَﺎ ﻳَﺤْﺮُﻡُ ﺃَﻛْﻠُﻪُ ﻣِﻦْ ﺃَﺟْﺰَﺍﺀِ ﺍﻟْﺤَﻴَﻮَﺍﻥِ
‎ﺍﻟْﻤَﺄْﻛُﻮﻝِ - 5/61 ، ﻭﻛﺬﺍ ﻓﻰ ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ - 5/290 ،
‎ﻭﻓﻰ ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻷﺿﺤﻴﺔ )
‎ﺍﻟﻐُﺪَّﺓُ ﻭﺍﻟﻐُﺪﺩَﺓُ : ﻛُﻞُّ ﻋُﻘْﺪَﺓٍ ﻓِﻲ ﺟَﺴَﺪِ ﺍﻹِﻧﺴﺎﻥ ﺃَﻃﺎﻑ
‎ﺑِﻬَﺎ ﺷَﺤْﻢ . ﻭﺍﻟﻐُﺪَﺩُ : ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻓِﻲ ﺍﻟﻠَّﺤْﻢِ، (ﻟﺴﺎﻥ ﺍﻟﻌﺮﺏ،
‎ﻓﺼﻞ ﺍﻟﻐﻴﻦ ﺍﻟﻤﻌﺠﻤﺔ ) ‎ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১৪৯
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে হায়েয অবস্থায় সহবাস করে। এখন...

প্রশ্ন
কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে হায়েয অবস্থায় সহবাস করে। এখন তার করণীয় কী? দয়া
করে জানাবেন।
উত্তর
হায়েয অবস্থায় জেনেশুনে স্ত্রী সহবাস করা হারাম। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা
ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) তারা আপনাকে হায়েয সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে
দিন, তা অপবিত্রতা। অতএব তোমরা হায়েযের সময় স্ত্রীদের থেকে পৃথক থাক এবং
তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়। Ñসূরা বাকারা (২) : ২২২
সুতরাং ঐ ব্যক্তির কর্তব্য হল, আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা-ইস্তিগফার করা।
আর এক্ষেত্রে হায়েযের শুরুর দিকে সহবাস হলে এক দীনার আর শেষ দিকে হলে
অর্ধ দীনার সদকা করার কথা কোনো কোনো হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তাই
এক্ষেত্রে তাওবা-ইস্তিগফারের পাশাপাশি উপরোক্ত নিয়মে সদকা করে দেওয়া উত্তম হবে।
প্রকাশ থাকে যে, দীনার একটি স্বর্ণমুদ্রা। যা বর্তমান হিসেবে ৪.৩৭৪ গ্রাম সমপরিমাণ স্বর্ণ।
জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২২০১; বাযলুল মাজহূদ ২/২৭৮; আলবাহরুর রায়েক ১/১৯৭;
ফাতহুল কাদীর ১/১৪৭; ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৫৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১২২
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

সেহরী খাওয়ার পর আমার স্বামী আমার সঙ্গে সহবাস করেন। তখনো...

প্রশ্ন
সেহরী খাওয়ার পর আমার স্বামী আমার সঙ্গে সহবাস করেন। তখনো আযান হয়নি, সেহরীর সময় বাকি ছিল, জানতে চাই আমাদের রোজার হুকুম কি? রোজা কি ভেঙ্গে গেছে? ভেঙ্গে গেলে কাফফারা দিতে হবে কিনা?
উত্তর
না। প্রশ্নে বর্নিত অবস্থায় রোজা
ভাঙ্গে নি। কারন সুবহে সাদেকের পুর্ব পর্যন্ত খানাপীনা, স্ত্রী-সহবাস সবকিছু বৈধ। যদিও স্ত্রী সহবাস সেহরী! খাওয়ার পর হয়।
#মেশকাত পৃষ্ঠা ১৭৪; ফতোয়ায়ে দারুল উলুম। ৬/৪৯৬; মাসায়েলে রোজা ৫৭
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১১৪
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার স্ত্রী দেড়মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার...

প্রশ্ন
আমার স্ত্রী দেড়মাসের অন্তঃসত্ত্বা
ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়। আর তা কিছু গোশতের টুকরার আকারে বেরিয়ে আসে। এরপর ৫/৬ দিন পর্যন্ত রক্ত আসে। স্রাবের সময়ও তার এমনই দেখা যায়। ঐ দিনগুলোতে সে নামায পড়েনি। আমার স্ত্রী মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চায় যে , তার ঐ নামায কি কাযা করতে হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গর্ভটির যেহেতু অঙ্গ-
প্রত্যঙ্গ হয়নি তাই ৫/৬ দিন পর্যন্ত যে রক্ত এসেছে তা হায়েয হিসেবে গণ্য
হবে;নেফাস নয়। আর উভয় অবস্থাতেই যেহেতু মহিলাদের নামায পড়া থেকে বিরত থাকা জরুরি তাই আপনার স্ত্রী ঐ দিনগুলোর নামায ছেড়ে দিয়ে ঠিকই করেছেন। তা কাযা করতে হবে না।
-আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; ফাতহুল কাদীর ১/১৬৫-১৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/ ৩০২-৩০৩
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১১২
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে হায়েয অবস্থায় সহবাস করে। এখন...

প্রশ্ন
কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে হায়েয অবস্থায় সহবাস করে। এখন তার করণীয় কী? দয়া
করে জানাবেন।
উত্তর
হায়েয অবস্থায় জেনেশুনে স্ত্রী সহবাস করা হারাম। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা
ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) তারা আপনাকে হায়েয সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে
দিন, তা অপবিত্রতা। অতএব তোমরা হায়েযের সময় স্ত্রীদের থেকে পৃথক থাক এবং
তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়।
সূরা বাকারা (২) : ২২২
সুতরাং ঐ ব্যক্তির কর্তব্য হল, আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা-ইস্তিগফার করা।
আর এক্ষেত্রে হায়েযের শুরুর দিকে সহবাস হলে এক দীনার আর শেষ দিকে হলে
অর্ধ দীনার সদকা করার কথা কোনো কোনো হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তাই
এক্ষেত্রে তাওবা-ইস্তিগফারের পাশাপাশি উপরোক্ত নিয়মে সদকা করে দেওয়া উত্তম হবে।
প্রকাশ থাকে যে, দীনার একটি স্বর্ণমুদ্রা। যা বর্তমান হিসেবে ৪.৩৭৪ গ্রাম সমপরিমাণ স্বর্ণ।
জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২২০১; বাযলুল মাজহূদ ২/২৭৮; আলবাহরুর রায়েক ১/১৯৭;
ফাতহুল কাদীর ১/১৪৭; ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৫৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৮

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৮১
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি জানি, বিয়ে করার জন্য কাবিন শর্ত। বর্তমানে দেখা যায়,...

প্রশ্ন
আমি জানি, বিয়ে করার জন্য কাবিন শর্ত। বর্তমানে দেখা যায়, অনেকে বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ার পর মা-বাবা কিংবা গার্ডিয়ানদের সম্মতিতে কাবিন না করে শুধু আংটি পরিয়ে রাখে। এখন ঐ ছেলে- মেয়ে পরস্পরে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবে কি? অনুগ্রহ করে জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
আংটি পরানোর দ্বারা বিবাহ সংঘটিত হয় না। এটি উভয় পক্ষের মাঝে সামাজিকভাবে কেবলমাত্র বিবাহের
সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা বুঝায়। সুতরাং ইজাব-
কবুল ছাড়া শুধু আংটি পরানোর কারণে তারা স্বামী-স্ত্রী গণ্য হবে না। তাই ইজাব-কবুলের আগে তাদের দেখা-সাক্ষাৎ ও মেলামেশা বৈধ নয়। প্রকাশ থাকে যে, বর্তমানে বিবাহের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পর আকদ না করিয়ে আংটি পরিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত এভাবে রেখে দেওয়ার রেওয়াজটি ঠিক নয়। এ কারণে ছেলে-মেয়ে ও তাদের নিকটজনদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ ও মেলামেশা করার গুনাহ বাড়তে
থাকে।
উল্লেখ্য যে, বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য কাবিন করা শর্ত নয়; বরং দু’জন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাক্ষীর সামনে বিয়ের ইজাব-কবুল করার দ্বারাই বিবাহ সংঘটিত হয়ে যায়। -রদ্দুল মুহতার ১/১১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১ ও ৩/১৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৩৭
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার একজন ছোট বোন আছে। এক দেড় বছর আগে তার...

প্রশ্ন
আমার একজন ছোট বোন আছে। এক দেড় বছর আগে তার স্বামী তাকে তিন তালাক দিয়ে
দেয়। ফলে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। অনেক
দিন পর তারা আবার একসঙ্গে থাকতে আগ্রহী হয়। তখন আমার স্বামী আমার বোনকে বিয়ে করে এবং তার সঙ্গে রাত যাপন করে। এরপর তাকে তিন তালাক দিয়ে দেয়। এখন ইদ্দত শেষ হওয়ার পর আমার বোন তার প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে আর কোনো বাধা
আছে কি?
উত্তর
স্ত্রীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল থাকা
অবস্থায় তার বোনকে বিবাহ করা বৈধ নয়। করলেও
সে বিবাহ শুদ্ধ হয় না। তাই আপনার স্বামীর সাথে
আপনার বোনের বিবাহটি শুদ্ধ হয়নি এবং তার সাথে একত্রে থাকাও হারাম হয়েছে। সুতরাং এগুলোর উপর ভিত্তি করে আপনার বোনের জন্য
তার পূর্বের স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ
হওয়াও বৈধ হবে না। উল্লেখ্য, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, বর্তমানে উম্মতের একটা বড় অংশের মাঝে ইসলামী শিক্ষার চর্চা এতটাই কমে এসেছে যে, ইসলামের মৌলিক বিধানাবলির জ্ঞানটুকুও অনেক মানুষের থাকে না। হালাল-হারাম বিষয়ক বিধানাবলি তো ঐসব
জরুরিয়াত (অপরিহার্য জ্ঞান)-এর অন্তর্ভুক্ত, যা
অর্জন করা প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরয। আর এক
বোন বিবাহে থাকা অবস্থায় তার বোনকে বিবাহ করা যে হারাম তা তো এতই স্পষ্ট মাসআলা যে, সকলেরই তা জানা। মোটকথা, এই মারাত্মক গুনাহের কারণে এর সাথে
সম্পৃক্ত সকলকেই খাঁটি মনে তাওবা-ইস্তেগফার
করা উচিত। এবং দ্বীনী ইলম অর্জন করা ও তা আমলে বাস্তবায়নের জন্য সবাইকেই পুরোপুরি সচেষ্ট হওয়া উচিত। - সূরা নিসা (৪) : ২৩; সহীহ বুখারী, হাদীস ৫১০৭; মুখতাসারুত তহাবী ৪/৩৩০; আলমাবসূত, সারাখসী ৬/৯; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৯৬;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৩৬
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

বাবার মৃত্যুর পর আমার মা ইদ্দত পালন করছেন না। তিনি...

প্রশ্ন
বাবার মৃত্যুর পর আমার মা ইদ্দত পালন করছেন না। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে বাসার বাইরে চলে যান। তাকে বললে তিনি শোনেন না। তাই ইদ্দত পালন না করলে কী আযাব এবং
জাহান্নামের ভয়াবহতা রয়েছে তা জানতে চাই।
যাতে করে আমার মাকে জানালে তিনি সঠিকভাবে ইদ্দত পালন করতে পারেন।
উত্তর
স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে চার মাস দশ দিন স্ত্রীর
জন্য নিজ গৃহে ইদ্দত পালন করা শরীয়তের একটি
গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব বিধান। কুরআন মজীদে আল্লাহ
তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) তোমাদের
মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করে এবং স্ত্রীদেরকে রেখে
যায়, উক্ত স্ত্রীগণ নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন
প্রতীক্ষায় রাখবে (ইদ্দত পালন করবে)। -সূরা
বাকারা (২) : ২৩৪ খুসাইফ রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি
সায়ীদ ইবনুল মুসাইয়্যিব রাহ.-কে জিজ্ঞাসা
করলাম,যে মহিলার স্বামী মারা গেছে সে (ইদ্দত
অবস্থায়) কি ঘর থেকে বের হতে পারবে? তিনি
বললেন,না। -মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস
১৯১৯৮
সুতরাং বিনা ওজরে ঘর থেকে বাইরে যাওয়া
জায়েয হবে না। আর শরীয়তের হুকুমের লঙ্ঘন করাই
পাপ। আর পাপ বলতেই ঈমানের উন্নতির পথে বাধা এবং আখেরাত ও কবরের যিন্দেগী সুখময় হতে
বাধা। মুমিনের জন্য শুধু এতটুকু কথাই কোনো ফরয-
ওয়াজিব বিধান পালনের জন্য যথেষ্ট। অবশ্য জীবিকা কিংবা অন্য কোনো মানবিক
প্রয়োজনে দিনের বেলা বাইরে যাওয়ার অবকাশ
আছে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন শেষ হওয়ার পর আবার
বাড়িতে ফিরে আসা জরুরি। আর দিনে কোনো বিশেষ ওজরে বের হলেও রাতে অবশ্যই নিজ গৃহেই অবস্থান করতে হবে।
-ফাতহুল কাদীর ৪/১৬৬-১৬৭; আলমুহীতুল বুরহানী
৫/২৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২২৮; আদ্দুররুল
মুখতার ৩/৫৩৬
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭১২
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার মহল্লার এক মহিলার ইন্তেকালের পর স্বামী তাকে দেখতে আসলে...

প্রশ্ন
আমার মহল্লার এক মহিলার ইন্তেকালের পর স্বামী তাকে দেখতে আসলে লোকজন তাকে দেখতে দেয়নি এবং তারা বলে, স্বামীর জন্য তার মৃত স্ত্রীর চেহারা দেখা জায়েয নেই। জানতে চাই, স্ত্রীর ইন্তেকালের পর স্বামী স্ত্রীর চেহারা দেখতে পারে কি না? তেমনিভাবে স্বামীর ইন্তেকালের পর স্ত্রী তার চেহারা দেখতে পারবে কি?
উত্তর
মৃত স্ত্রীর চেহারা স্বামী দেখতে পারবে। তদ্রূপ মৃত স্বামীর চেহারাও স্ত্রী দেখতে পারবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকটিকে তার মৃত স্ত্রীর চেহারা দেখতে না দেওয়া অন্যায় হয়েছে।
-মুয়াত্তা ইমাম মালেক ৭৭; ইলাউস সুনান ৫/২২৩;
আদ্দুররুল মুখতার ২/১৯৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া
২/১৩৭; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৩/৪০৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭০৪
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

একদিন কোনো একটি বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আমার ঝগড়া বেধে যায়।...

প্রশ্ন
একদিন কোনো একটি বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আমার ঝগড়া বেধে যায়। একপর্যায়ে আমি বলি, তুই যদি আর একটা কথা বলিস তাহলে তোকে ছেড়ে দেব। তারপরও সে কথা বলে। তখন আমি বলি, যা তোকে ছেড়ে দিলাম। উক্ত কথার দ্বারা আমার তালাক দেওয়া উদ্দেশ্য ছিল না। তাকে চুপ করানোর জন্য বলেছিলাম। আমি জানতে চাচ্ছি, উক্ত কথার কারণে আমার স্ত্রী কি তালাক হয়ে গেছে?
উত্তর
আমাদের সমাজে তোকে ছেড়ে দিলাম বাক্যটি তালাকের জন্যই ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত কথা দ্বারা তালাকের উদ্দেশ্য না থাকলেও আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে। এখন আপনি পুণরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে ইদ্দতের মধ্যে রজআত অর্থাৎ স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবেন। রজআতের উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে, ইদ্দতের ভিতরে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করা। যেমন, এ কথা বলবেন যে, তোমাকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করলাম। এর দ্বারাই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুণঃবহাল হয়ে যাবে। আর যদি আপনি ইদ্দতের ভিতরে (ঋতুমতী মহিলার জন্য তিনটি হায়েয অতিক্রান্ত হওয়া পর্যন্ত আর অন্তঃসত্তা মহিলার জন্য সন্তান প্রসব পর্যন্ত) রজআত না করেন তবে ইদ্দত শেষ হওয়ার সাথে সাথে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আবার ঘর-সংসার
করতে
চাইলে নতুন মোহর ধার্য করে দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে নতুন করে বিবাহ করতে হবে। প্রকাশ থাকে যে, এই স্ত্রীকে ইদ্দতের ভিতরে কিংবা ইদ্দত শেষ হয়ার পর পুণরায় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলে পরবর্তীতে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। তাই পরবর্তীতে এই স্ত্রীকে কখনো দুই তালাক দিলে পূর্বের এক তালাকের সাথে মিলে তিন তালাক হয়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে বিবাহ করেও একত্রিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। তাই সামনে থেকে তালাক বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া অন্যায়। অনেক ক্ষেত্রে তালাক স্ত্রী- সন্তানের উপর এবং নিজের উপরও জুলুমের কারণ হয়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা কর্তব্য। -বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪৩১; আলবাহরুর রায়েক ৩/৩০০;
ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪৬৩; রদ্দুল মুহতার
৩/২৯৯; আলবাহরুররায়েক ৪/৫০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৮৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৭৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি ছয় বছর দাম্পত্য জীবন যাপনের পর একপর্যায়ে তার...

প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি ছয় বছর দাম্পত্য জীবন যাপনের পর একপর্যায়ে তার স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাদের চার বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান আছে। বর্তমানে তার স্ত্রী অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে এবং সে তার ছেলেকে নিজের কাছে নিয়ে যেতে চাচ্ছে।অপরদিকে ছেলের বাবা সন্তানকে তার কাছেই
রাখতে চায়। এক্ষেত্রে সন্তান লালন-পালনের অধিকারী কে হবে? আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন। উলেস্নখ্য, মহিলার দ্বিতীয় স্বামীর সাথে উক্ত সন্তানের কোনো
ধরনের আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই।
উত্তর
সন্তান লালন-পালনের অধিকার মূলত মায়ের। তবে মা সন্তানের মাহরাম ব্যতীত অন্য কাউকে বিয়ে করলে তার আর সন্তান লালন- পালনের অধিকারী থাকে না। সেক্ষেত্রে এ অধিকার ক্রমান্বয়ে নিম্নে বর্ণিত আত্মীয়গণ লাভ করে।
যথা-ক) শিশুর নানী খ) শিশুর দাদী গ) শিশুর খালা ঘ) শিশুর ফুফু
ঙ) আসাবা (শরীয়ত নির্ধারিত নিকটাত্মীয়)-এর ক্রমানুসারে পুরুষ আত্মীয়গণ। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মহিলা গায়রে মাহরামকে বিয়ে করার কারণে তার লালন-পালনের অধিকার বাতিল হয়ে গিয়েছে। এখন উপরে বর্ণিত শিশুর নারী আত্মীয়গণ অর্থাৎ নানী, দাদী, খালা, ফুফু
যদি বিদ্যমান না থাকে কিংবা তারা দায়িত্ব গ্রহণে অসম্মত বা অসমর্থ্য হয় তাহলে সেক্ষেত্রে পিতা নিজে তার সন্তা লালন-পালনের অধিকারী হবে।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২৭০;
বাযলুল
মাজহূদ ১১/১৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৬৭-১৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৫৫-৫৫৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৭৫-২৭৬
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৬৮
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক মহিলা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কিছুদিন পর ইন্তেকাল করেন। তার...

প্রশ্ন
জনৈক মহিলা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কিছুদিন পর ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তেকালের পর শিশুটির ছোট খালা তাকে লালন-পালন করেন এবং তাকে তার দুধও পান করান। কয়েক বছর পর শিশুটির খালু ইন্তেকাল করেন। বর্তমানে ছেলেটির পিতা তার দুধ মা (খালা)-কে বিবাহ করতে চাচ্ছে। উভয় পরিবারের পক্ষ থেকেও সম্মতি রয়েছে। প্রশ্ন হল, তাদের এ বিবাহ কি শরীয়তসম্মত হবে?
উত্তর
হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পিতার জন্য সন্তানের দুধ মাতা-খালাকে বিবাহ করা জায়েয হবে। কেননা কোনো মহিলা সন্তানের দুধ মা হলেই তার সাথে পিতার বিবাহ নাজায়েয হয়ে যায় না। তবে তাদের এ বিবাহ উক্ত মহিলার স্বামীর মৃত্যুর ইদ্দত শেষ হওয়ার পর হতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬৫; ফাতাওয়া খানিয়া
১/৪১৭
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৬৭
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি পড়ালেখা করে। উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের উদ্দেশে দেশের একটি...

প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি পড়ালেখা করে। উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের উদ্দেশে দেশের একটি বড়
প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করে। ঐ প্রতিষ্ঠানে
ভর্তি হওয়ার জন্য অবিবাহিত হওয়া শর্ত। কিন্তু সে বিবাহিত ছিল। তাই
বিবাহিত হওয়া সত্তে¡ও ভর্তি হওয়ার জন্য সে তার জীবন
বৃত্তান্তে অবিবাহিত লিখে এবং পরবর্তীতে
মৌখিকভাবেও একথা স্বীকার করে যে, সে অবিবাহিত, তার কোনো স্ত্রী নেই। বর্তমানে
সে ঐ প্রতিষ্ঠানের একজন
ছাত্র। জানার বিষয় হল, এভাবে বলা ও লিখার কারণে তার স্ত্রীর
উপর কি কোনো তালাক পতিত হয়েছে?
উত্তর
বিবাহিত হওয়া সত্তে¡ও মিথ্যা বলে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দেওয়া এবং স্ত্রী নেই বলা মারাত্মক অন্যায় ও কবীরা গুনাহ হয়েছে। এজন্য আল্লাহ তাআলার নিকট কায়মনোবাক্যে ইস্তিগফার করতে হবে। অবশ্য এভাবে মিথ্যা বলা ও লেখার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেনি এবং স্ত্রীর উপর কোনো তালাকও
পতিত হয়নি। তাদের বিবাহ যথারীতি বহাল রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, নিজে অবিবাহিত প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানের শর্ত ভঙ্গ করে সেখানে ভর্তি হওয়া
মারাত্মক অন্যায় হয়েছে। এটি ধোঁকা ও প্রতারণার শামিল। যা কোনো মুসলমানের কাজ নয়।
-বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৭১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৮৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২৮৩
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৫৬
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি এবং আমার স্ত্রীর মাঝে বিয়ের পর থেকেই ঝগড়া লেগে...

প্রশ্ন
আমি এবং আমার স্ত্রীর মাঝে বিয়ের পর থেকেই ঝগড়া লেগে থাকত। এর মধ্যে আমাদের একটি পুত্র সন-ান জন্ম লাভ করে। ছেলে জন্মের পর থেকে আমাদের ঝগড়া আরো বেড়ে যায়। তার সাথে বনিবনা না হওয়ায় তাকে তালাক না দিয়ে আমার শ্যালিকা তার ছোট বোনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। তারপর আমরা ঢাকায় এসে বাসা নিয়ে থাকি। ঢাকা যাওয়ার ১৫দিন পর আমার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে মোহরানা পরিশোধ করে বিদায় করে দিয়েছি। এখন আমার (প্রথম স্ত্রীর বোন) ২য় স্ত্রীকে নিয়ে ঘর-সংসার করছি। জানতে চাই, এতে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা আছে
কি না?
উত্তর
কোনো মহিলার সাথে বিবাহ বহাল থাকা অবস'ায় তার আপন বোনকে বিবাহ করা হারাম। বিবাহ করলে তা শুদ্ধ হয় না। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী শ্যালিকার সাথে আপনার বিবাহ শুদ্ধ হয়নি। তার সাথে দাম্পত্য মেলামেশা সম্পূর্ণ হারাম। এখনই পৃথক হয়ে যাওয়া জরুরি। শ্যালিকার সাথে বৈধভাবে সংসার করতে চাইলে স্ত্রীর ইদ্দত শেষ হওয়ার পর শ্যালিকাকে নতুনভাবে মহর ধার্য করে যথা নিয়মে বিবাহ করতে হবে। আর এতদিনের হারাম কার্যকলাপের জন্য আল্লাহর দরবারে তওবা-ইসি-গফার করতে হবে। আহকামুল কুরআন জাসসাস ২/১৩২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৬৪; মাজমাউল আনহুর ১/৪৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১; মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ৯/২১৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫০৩

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২২১
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক মহিলা তার স্বামীর কাছে মহরের টাকা পেত। বিয়ের এক...

প্রশ্ন
এক মহিলা তার স্বামীর কাছে মহরের টাকা পেত। বিয়ের এক বছর পর মহিলা স্বামীকে স্বেচ্ছায় বলল, আমার মহরের টাকা দিতে হবে না। তা তোমাকে দিয়ে দিলাম। এর কিছুদিন পর কোনো এক বিষয় নিয়ে পরস্পর ঝগড়া হয়েছে। তখন থেকে মহিলা মহরের টাকা দাবি করছে। এখনও মহিলা স্বামীর কাছে মহরের টাকা চায়। প্রশ্ন হল, স্বামীর জন্য ঐ মহরের টাকা পরিশোধ করতে হবে কি? উল্লেখ্য, মহিলা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এ কথা বলেছিল যে, মহরের টাকা দিতে হবে না।
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী বাস্তবেই যদি ঐ মহিলা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মহর মাফ করে দিয়ে থাকে তাহলে তা মাফ হয়ে গেছে। সুতরাং এরপর মহিলার জন্য পুনরায় মহর দাবি করা অন্যায়। স্বামীর জন্য তার মহরের দাবি পূরণ করা জরুরি নয়। তবে সামর্থ্য থাকলে তা পুরো বা আংশিক আদায় করে দিলেই ভালো। উল্লেখ্য যে, মহর স্ত্রীর প্রাপ্য হক। তার উপর কোনো চাপ প্রয়োগ করে বা তাকে লজ্জায় ফেলে এ হক মাফ করানো যাবে না। অবশ্য মহিলা যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিনা চাপে নিজ থেকে মহরের হক ছেড়ে দেয় তাহলে তা মাফ হয়ে যাবে। -সূরা নিসা : ৪; আহকামুল কুরআন, কুরতুবী ৫/১৮; সহীহ বুখারী ১/৩৫২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৯১;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২১৯
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক মহিলা চার ছেলে দুই মেয়ে রেখে মারা গেছে। তার...

প্রশ্ন
এক মহিলা চার ছেলে দুই মেয়ে রেখে মারা গেছে। তার পিতামাতা ও স্বামী পূর্বেই মারা গেছে। এখন আমার প্রশ্ন
হল, ঐ মহিলার সম্পত্তি তার ছেলেমেয়ের মাঝে কীভাবে
বণ্টন করা হবে?
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মৃতের রেখে যাওয়া সমুদয় সম্পদ থেকে প্রথমে প্রয়োজন হলে তার কাফন-দাফন সংক্রান্ত খরচ আদায় করবে। এরপর তার কোনো ঋণ থাকলে তাও আদায় করতে হবে। এরপর তার শরীয়তসম্মত কোনো অসিয়ত থাকলে অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে তা আদায় করতে হবে। তারপর তার অবশিষ্ট সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জীবিত ওয়ারিশদের মাঝে (প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে) নিম্নে বর্ণিত শতকরা হারে বণ্টিত
হবে।
প্রত্যেক ছেলে শতকরা ২০% আর প্রত্যেক মেয়ে ১০% করে পাবে। -সূরা নিসা : ১১; সহীহ বুখারী ২/৯৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৭৫; মাবসূত সারাখসী ২৯/১৩৯;

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩০৫৪
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার এক স্ত্রী, কয়েকজন ছেলেমেয়ে আছে। আমার কিছু স্থাবর সম্পত্তি,...

প্রশ্ন
আমার এক স্ত্রী, কয়েকজন ছেলেমেয়ে আছে। আমার কিছু স্থাবর সম্পত্তি, জমা- জমি ও বাড়িঘর আছে। দেনাকর্জও আছে। এ অবস্থায় আমার উক্ত ওয়ারিশদের মধ্যে সহায় সম্পত্তি ইত্যাদি বণ্টন করে যেতে চাই। সামান্য নিজের নামে রাখতে ইচ্ছুক। এ অবস্থায় আমাকে শরয়ী আইন মোতাবেক কী করতে হবে? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
প্রশ্নের বক্তব্য অনুসারে আপনার উপর যেহেতু মানুষের দেনা-পাওনা আছে তাই প্রথমে তা পরিশোধ করে দিতে হবে। এরপর অবশিষ্ট সম্পত্তি থেকে স্ত্রী, ছেলে- মেয়ে তথা সম্ভাব্য ওয়ারিশদেরকে দান করতে চাইলে সেক্ষেত্রে এটি যেহেতু
আপনার উদ্দেশ্যের বিবেচনায় মৃত্যুপরবর্তী
মীরাছেরই পূর্ববণ্টন তাই এক্ষেত্রে মীরাছের নীতিমালা অনুসারে প্রত্যেককে তার অংশ লিখে দখল বুঝিয়ে দিবেন। আর আপনি নিজের নামেও কিছু সম্পত্তি রাখতে চাইলে রাখতে পারবেন। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে ছাড়া আপনার আর কোনো ওয়ারিশ (এক্ষেত্রে পিতামাতা) না থাকলে এদের মাঝে নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে সম্পদ বণ্টন করবেন। স্ত্রীকে শতকরা ১২.৫ অংশ। অতপর অবশিষ্ট সম্পত্তি ছেলেমেয়েদের মাঝে ‘ছেলে, মেয়ের দ্বিগুণ পাবে’- এই মূলনীতির ভিত্তিতে বণ্টন করবেন। আর যতটুকু সম্পত্তি নিজের নামে রাখবেন, আপনার মৃত্যুর পর কেবল ঐ অংশের মধ্যে মীরাছের বিধান প্রযোজ্য হবে। -তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ২/৭৫; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৮/২৫৯-২৬০; আলমাদখালুল ফিকহিল আম ২/৯৫৪; আলমাবসূত, সারাখসী ২৯/১৪০, ২৯/১৪৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩০৫৩
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জায়েদ ইন্তেকালের সময় মা, বাবা, দুই ছেলে, এক মেয়ে, একজন...

প্রশ্ন
জায়েদ ইন্তেকালের সময় মা, বাবা, দুই ছেলে, এক মেয়ে, একজন বাপ-শরিক ভাই, একজন মা-শরিক ভাই ও স্ত্রী রেখে যায়। মাননীয় মুফতী সাহেবের খেদমতে অধমের জানার বিষয় হল, জায়েদের রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে কে কতটুকু পাবে?
উত্তর
মৃত জায়েদের স্থাবর-অস্থাবর যাবতীয় সম্পদ থেকে প্রথমে তার কাফন-দাফনের খরচ (প্রয়োজন হলে) সম্পন্ন করবে। অতপর তার কোনো ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করতে হবে। এরপর তার কোনো বৈধ অসিয়ত থাকলে তা অবশিষ্ট সম্পদের এক তৃতীয়াংশ থেকে পূর্ণ করতে হবে। এরপর অবশিষ্ট সম্পদ তার ওয়ারিশদের মাঝে বণ্টন করতে হবে। এক্ষেত্রে জায়েদের বাবা ও মা প্রত্যেকে সমুদয় সম্পদের এক ষষ্ঠাংশ করে পাবে এবং স্ত্রী পাবে এক অষ্টমাংশ। তাদের অংশ দেওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পদ তার ছেলেমেয়েগণ ‘‘এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান’’ হিসেবে লাভ করবে। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ
করেছেন-
‎ﻳُﻮﺻِﻴﻜُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓِﻲ ﺃَﻭْﻟَﺎﺩِﻛُﻢْ ﻟِﻠﺬَّﻛَﺮِ ﻣِﺜْﻞُ ﺣَﻆِّ ﺍﻟْﺄُﻧْﺜَﻴَﻴْﻦِ
(তরজমা) আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন, এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান। ... তার (মৃতের) সন্তান থাকলে তার পিতামাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পদের এক ষষ্ঠাংশ; ... আর তোমাদের সন্তান থাকলে তাদের (স্ত্রীদের) জন্য তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পদের এক অষ্টমাংশ।-সূরা নিসা ৪ : ১১-১২
সুতরাং প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী জায়েদের
সমুদয় সম্পদ তার ওয়ারিশদের মাঝে নিম্নবর্ণিত শতকরা হারে বণ্টিত হবে- ১। জায়েদের বাবা : শতকরা ১৬.৬৬৬ ভাগ ২। জায়েদের মা : শতকরা ১৬.৬৬৬ ভাগ ৩। জায়েদের স্ত্রী : শতকরা ১২.৫০ ভাগ ৪। জায়েদের প্রত্যেক ছেলে : শতকরা ২১.৬৬৬ ভাগ ৫। জায়েদের মেয়ে : শতকরা ১০.৮৩
ভাগ।
উল্লেখ্য যে, জায়েদের বাবা ও ছেলে জীবিত থাকার কারণে প্রশ্নোক্ত অবস্থায় তার বাপ-শরিক ভাই ও মা-শরিক ভাই কোনো অংশ পাবে না। -সূরা নিসা ৪ :
১১-১২
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩০৪৬
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার স্ত্রী দেড়মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার...

প্রশ্ন
আমার স্ত্রী দেড়মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়। আর তা কিছু গোশতের টুকরার আকারে বেরিয়ে আসে। এরপর ৫/৬ দিন পর্যন্ত রক্ত আসে। স্রাবের সময়ও তার এমনই দেখা যায়। ঐ দিনগুলোতে সে নামায পড়েনি। আমার স্ত্রী মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চায় যে , তার ঐ নামায কি কাযা করতে হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গর্ভটির যেহেতু অঙ্গ-
প্রত্যঙ্গ হয়নি তাই ৫/৬ দিন পর্যন্ত যে রক্ত
এসেছে তা হায়েয হিসেবে গণ্য হবে;নেফাস নয়। আর উভয় অবস্থাতেই যেহেতু মহিলাদের নামায পড়া থেকে বিরত থাকা জরুরি তাই আপনার স্ত্রী ঐ দিনগুলোর নামায ছেড়ে দিয়ে ঠিকই করেছেন। তা কাযা করতে হবে না। -আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; ফাতহুল কাদীর ১/১৬৫-১৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/ ৩০২-৩০৩
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩০৩৫
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

সেহরী খাওয়ার পর আমার স্বামী আমার সঙ্গে সহবাস করেন। তখনো...

প্রশ্ন
সেহরী খাওয়ার পর আমার স্বামী আমার সঙ্গে সহবাস করেন। তখনো আযান হয়নি, সেহরীর সময় বাকি ছিল, জানতে চাই আমাদের রোজার হুকুম কি? রোজা কি ভেঙ্গে গেছে? ভেঙ্গে গেলে কাফফারা দিতে হবে কিনা?
উত্তর
না। প্রশ্নে বর্নিত অবস্থায় রোজা ভাঙ্গে
নি।
কারন সুবহে সাদেকের পুর্ব পর্যন্ত খানাপীনা, স্ত্রী-সহবাস সবকিছু বৈধ। যদিও স্ত্রী সহবাস সেহরী! খাওয়ার পর হয়। ঃ- মেশকাত পৃষ্ঠা ১৭৪; ফতোয়ায়ে দারুল উলুম। ৬/৪৯৬; মাসায়েলে রোজা ৫৭
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৫৯
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

দুই মাস পূর্বে আমার বিয়ে হয়। আমার স্ত্রীর আচরণে আমরা...

প্রশ্ন
দুই মাস পূর্বে আমার বিয়ে হয়। আমার স্ত্রীর আচরণে আমরা সবাই অতিষ্ঠ। তার সাথে আমার সম্পর্ক ভাল না। তাই আমি তাকে সন্তান-সন্তুতি হওয়ার আগেই তালাক দিতে চাচ্ছি। আমার ছোট ভাই মাদরাসায় লেখাপড়া করে। তার সাথে এ ব্যাপারে পরামর্শ করলে সে আমাকে তিন তুহুরে তিন তালাক দিতে বলে। এ পদ্ধতি কি উত্তম হবে? আর এভাবে তিন তালাক দিয়ে দিলে মহিলার ইদ্দত শুরু হবে কখন থেকে? প্রথম তালাকের পর নাকি তৃতীয় তালাকের পর? দয়া করে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
শরীয়তের দৃষ্টিতে তালাক খুবই অপছন্দনীয়।
ক্ষেত্রবিশেষে এর প্রয়োগ স্ত্রী-সন্তানের
প্রতি জুলুমও বটে। তাই অত্যন্তভেবেচিন্তে মুরবিব ও আলেমদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্তনেওয়া উচিত। আর তালাকের আগে উভয় পক্ষের মুরবিবদের নিয়ে সমঝোতা ও মীমাংসার চেষ্টা করা কর্তব্য। এরপরও যদি উভয়ের মাঝে সম্পর্কের উন্নতি না ঘটে এবং একত্রে থাকলে একে অপরের হক আদায় করা এবং শরীয়তের হুকুম অনুযায়ী চলা সম্ভব না হয় তখন চাইলে তালাক দিতে পারবে। আর তালাক দেওয়ার সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হল, হায়েয/নেফাস থেকে পবিত্র হওয়ার পর তার সাথে মিলন থেকে বিরত থাকা অবস্থায় এক তালাক দেওয়া। এরপর আর তালাক না দেওয়া। এবং ইদ্দত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ততার সাথে স্বামী-স্ত্রীসূলভ কোনো আচরণও না করা। এক্ষেত্রে ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে তালাকটি বায়েনে পরিণত হয়ে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। এরপর মহিলাটি অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এটি স্ত্রী থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সবচেয়ে উত্তম পন্থা। (আল আওসাত, ইবুনল মুনযির ৯/১৩৯) অবশ্য প্রত্যেক পবিত্রতায় একটি করে তালাক দেওয়ার পদ্ধতিও জায়েয। আর এভাবে তিন তালাক দিলে মহিলার ইদ্দত শুরু হবে প্রথম তালাকের পর থেকেই। অবশ্য এভাবে তিন তালাক দেওয়ার চেয়ে
পূর্বোক্ত নিয়মে এক তালাক দেওয়ার পদ্ধতি
অধিক উত্তম। এ ছাড়া এক তালাক দিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তীতে কখনো একত্রিত হতে চাইলে নতুন বিবাহের মাধ্যমে এরও সুযোগ থাকে। -সূরা নিসা ৪ : ৩৪-৩৫; রদ্দুল মুহতার ৩/২২৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৪০-১৪২, ৩/২৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৫৬
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক মহিলার স্বামী কুয়েতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। গত...

প্রশ্ন
জনৈক মহিলার স্বামী কুয়েতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। গত ২৫ রজব কর্মস্থলে যাওয়ার পথে এক মর্মামিত্মক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন। প্রাথমিকভাবে তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে উদঘটিত হয় যে, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তখন উভয় দেশের দূতাবাসের আলোচনার ফলে তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়। গত ২৪ শাবান বাংলাদেশ দূতাবাস মৃত ব্যক্তির পরিবারকে খবরটি নিশ্চিত করে। জানার বিষয় হল, উক্ত ব্যক্তির স্ত্রী কবে থেকে ইদ্দত গণনা শুরু করবে? মৃত্যুবরণ করার সময় থেকে নাকি সংবাদ পাওয়ার পর থেকে? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মহিলা মৃত্যুর দিন থেকেই ইদ্দত গণনা করবে। কেননা স্ত্রী স্বামীর মৃত্যুর খবর না পেলেও স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই ইদ্দত শুরু হয়ে যায়। সুতরাং উক্ত মহিলা অন্তঃসত্ত্বা না হলে স্বামীর মৃত্যুর দিন ২৫ রজব থেকে চার মাস দশদিন ইদ্দত পালন করবে। আর অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্তইদ্দত পালন করবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৯২৪৬; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৫/২৪৮-২৪৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/২৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫২০; আলবাহরুর রায়েক
৪/১৪৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৪২
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি এ বছর হজ্বে যাওয়ার নিয়ত করেছি। আমার কাছে হজ্বের...

প্রশ্ন
আমি এ বছর হজ্বে যাওয়ার নিয়ত করেছি। আমার কাছে হজ্বের খরচ পরিমাণ টাকা আছে। তবে আমার উপর স্ত্রীর মোহর বাবদ ১ লক্ষ টাকা ঋণ আছে, যা বিয়ের সময় পরে আদায়ের কথা হয়েছিল। এখন মহরের ঐ টাকা আদায় করলে হজ্বের যথেষ্ট পরিমাণ টাকা অবশিষ্ট থাকবে না। এ অবস্থায় আমার উপর কি হজ্ব করা ফরয হবে, নাকি আগে মোহর আদায় করতে হবে? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্ত্রীর মোহর বাকি থাকলেও তা আদায়ের আগে হজ্বে যেতে পারবেন এবং এর দ্বারা আপনার ফরয হজ্বই আদায় হবে। বকেয়া মোহর যেহেতু আপনাকে এখনই আদায় করতে হচ্ছে না তাই এ কারণে হজ্ব বিলম্বিত করা ঠিক হবে না। হ্যাঁ, আপনি যদি এ টাকা থেকেই স্ত্রীর মোহর আদায় করে দেন তাহলে অবশিষ্ট টাকা দ্বারা যেহেতু হজ্বের খরচ হবে না তাই এক্ষেত্রে হজ্বও ফরয হবে না। কিন্তু যদি এখন মোহর আদায়ের নিয়ত না থাকে তবে ঐ টাকার কারণে হজ্ব ফরয হবে।
-আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬১; আলমানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৩; আলবাহরুল আমীক ১/৩৭৭; ইরশাদুস সারী ৫৯; আলজাওহারাতুন নাইয়্যিরাহ ১৯২
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৩৯
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আবদুল্লাহ ও তার স্ত্রী মাঝেমধ্যেই ঝগড়া করে। স্ত্রী সর্বদা ঝগড়ার...

প্রশ্ন
আবদুল্লাহ ও তার স্ত্রী মাঝেমধ্যেই ঝগড়া করে। স্ত্রী সর্বদা ঝগড়ার সময় বলে,আমাকে ছেড়ে দাও। এ কথাটি তার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। আবদুল্লাহ একবার রাগের মাথায় বলে ফেলে যে,এই কথা তুমি আর একবার বললে তুমি তালাক। এখন জানার বিষয় হল, ক) স্ত্রী যদি আবার রাগের মাথায় ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কথাটি বলে তবে তার কী হুকুম? তালাক হলে কয় তালাক হবে এবং সেক্ষেত্রে তারা একত্রিত হতে চাইলে কী করণীয়? খ) স্বামীর জন্য তার উক্ত কথা থেকে ফিরে আসার কোনো উপায় আছে কি? দয়া করে বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আবদুল্লাহ ঐ কথা বলার
পর তার স্ত্রী যদি পরবর্তীতে কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ঐ কথা বলে তবে তার উপর এক তালাক রজয়ী পতিত হয়ে যাবে। এরপর ইদ্দতের ভেতরেই আবদুল্লাহ যদি তাকে আবার স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে নেয় তবে সে তার স্ত্রী হয়ে যাবে। নতুন করে বিবাহ করা লাগবে না। কিন্তু ইদ্দতের ভেতরে যদি স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ না করে বা স্বামী- স্ত্রী সুলভ আচরণও না হয় তবে তালাকটি বায়েন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে উভয়ে একত্রিত হতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করত পুনরায় বিবাহ করতে হবে। এভাবে এক তালাক হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তীতে আবদুল্লাহ দুই তালাকের অধিকারী থাকবে। এক্ষেত্রে স্ত্রী যদি আবারও ঐ কথা বলে তাহলে পূর্বের শর্তের কারণে পুনরায় তালাক হবে না। আরো উল্লেখ্য যে, আবদুল্লাহর ঐ শর্ত একবার কার্যকর হওয়ার আগে তা বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই। তাই তালাক থেকে বাঁচতে চাইলে স্ত্রীকে উক্ত কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪২০, ১/৪১৬;ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৫৪;আলবাহরুর রায়েক ৪/৮,৪/১৪;আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩৫৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৩৭
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমাদের গ্রামের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে...

প্রশ্ন
আমাদের গ্রামের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। গত তিন মাস
আগে দুই পক্ষের মুরব্বিরা বসে উভয়কে বিবাহ
পড়িয়ে দেয়। বিবাহের তিন মাস পরেই উক্ত মেয়ে
একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে। এ নিয়ে গ্রামে
উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আমরা জানতে চাচ্ছি যে, উক্ত সন্তানের নসব কি
ঐ ছেলের দিকে সাব্যস্ত হবে? আর গর্ভবতী
অবস্থায় সংঘটিত উক্ত বিবাহ কি সহীহ হয়েছে?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত বিবাহ সহীহ হয়েছে। আর ঐ
নারীর স্বামী (বিবাহের পূর্বে যার সাথে অবৈধ
সম্পর্ক ছিল সে) যদি নবজাতককে নিজের সন্তান
হিসেবে মেনে নেয় তাহলে শিশুটি তার সন্তান বলেই
বিবেচিত হবে এবং এ সন্তানের বংশসূত্র তার সাথেই সম্পৃক্ত হবে। -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৬৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১৭২-১৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৪০
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮০৮
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার প্রতিবেশী বকর তার স্ত্রীর প্রতি জুলুমের আচরণ করে। স্ত্রী...

প্রশ্ন
আমার প্রতিবেশী বকর তার স্ত্রীর প্রতি জুলুমের আচরণ করে। স্ত্রী অতিষ্ঠ হয়ে তার কাছে তালাক চায়। কিন্তু
বকর শর্ত দিয়েছে যে, তালাক দিলে তাকে তার দেওয়া মহর ফেরত দিতে
হবে। এতে স্ত্রী সম্মত হলে বকর তাকে সে মহরের বিনিময়ে এক তালাক দিয়ে দেয়। প্রশ্ন হল, উক্ত অবস্থায় বকরের জন্য তার দেওয়া মহর তালাকের
বিনিময়ে ফেরত নেওয়া বৈধ হবে কি?
উত্তর
প্রশ্নের বক্তব্য অনুযায়ী বাস্তবেই বকরের জুলুমের কারণে যদি তার স্ত্রী তালাক নিতে
বাধ্য হয়ে থাকে তবে বকরের জন্য এ স্ত্রী থেকে তালাকের কারণে মহর ফেরত নেওয়া বা অন্য কিছু নেওয়া বৈধ হবে না। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা সূরা নিসার
১৯ ও ২০ নং আয়াতে এ ধরনের ক্ষেত্রে স্ত্রী থেকে সম্পদ গ্রহণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আমর বিন দীনার রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, স্বামী যদি তার স্ত্রীর সাথে অসদাচরণ করে তাহলে স্ত্রী কোনো কিছুর বিনিময়ে তালাক চাইলেও স্বামীর জন্য তা
নেওয়া বৈধ হবে না। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক,হাদীস : ১১৮২২
ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্বামীর জন্য তার
স্ত্রী থেকে তালাকের বিনিময়ে কোনো কিছু
নেওয়া তখনি বৈধ হবে যখন স্ত্রীর অবাধ্যতার কারণেই স্বামী তাকে তালাক দিয়ে থাকে। -মুসান্নাফে আবদুর
রাযযাক, হাদীস : ১১৮১৫
অনুরূপ বক্তব্য হযরত উরওয়া, আতা, আমর বিন শুআইব প্রমুখ তাবেয়ী থেকেও বর্ণিত আছে। (দেখুন : মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা,
হাদীস : ১৮৭৩৭-১৮৭৪২)
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৫৫
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

পুরুষদের জন্য তাদের দাদী শাশুড়ি বা নানী শাশুড়ির সাথে দেখা...

প্রশ্ন
পুরুষদের জন্য তাদের
দাদী শাশুড়ি বা নানী শাশুড়ির সাথে দেখা করার
কী হুকুম? অনেকে মনে করে তাদের সাথে দেখা করার অনুমতি নেই। আসলে শরীয়ত এ ব্যাপারে কী বলে?
উত্তর
দাদী শাশুড়ি ও নানী শাশুড়ির সাথে দেখা সাক্ষাৎ
করা জায়েয। তারা মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) এবং তোমাদের স্ত্রীদের মা’দেরকে তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে।- সূরা নিসা : ২৩ সকল মুফাসসির ও ফকীহগণ একমত যে উক্ত বিধানে স্ত্রীর মায়ের মা ও স্ত্রীর পিতার মাও অন্তর্ভুক্ত। তাফসীরে মাযহারী ২/২৭০; কিতাবুল আছল ৪/৩৬১; হেদায়া ৮/৪৬৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২৮;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৫৩
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

অসুস্থ অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কি?

প্রশ্ন
অসুস্থ অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, স্বামী স্ত্রী একে অন্যকে রক্ত দিতে পারবে। এতে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫১১
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

অসুস্থ অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কি?

প্রশ্ন
অসুস্থ অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে রক্ত দিতে পারবে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, স্বামী স্ত্রী একে অন্যকে রক্ত দিতে পারবে। এতে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না।
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫১০
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

পুরুষদের জন্য তাদের দাদী শাশুড়ি বা নানী শাশুড়ির সাথে দেখা...

প্রশ্ন
পুরুষদের জন্য তাদের দাদী শাশুড়ি বা নানী শাশুড়ির সাথে দেখা করার কী হুকুম? অনেকে মনে করে তাদের সাথে দেখা করার অনুমতি নেই। আসলে শরীয়ত এ ব্যাপারে কী বলে?
উত্তর
দাদী শাশুড়ি ও নানী শাশুড়ির সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা জায়েয। তারা মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) এবং তোমাদের স্ত্রীদের মা’দেরকে তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে।-সূরা নিসা : ২৩ সকল মুফাসসির ও ফকীহগণ একমত যে উক্ত বিধানে স্ত্রীর মায়ের মা ও স্ত্রীর পিতার মাও অন্তর্ভুক্ত। তাফসীরে মাযহারী ২/২৭০; কিতাবুল আছল ৪/৩৬১; হেদায়া ৮/৪৬৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২৮;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৩৮
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

এক ব্যক্তি দুটি বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রীর কয়েকজন সন্তান হওয়ার...

প্রশ্ন
এক ব্যক্তি দুটি বিয়ে করেছে। প্রথম স্ত্রীর কয়েকজন সন্তান হওয়ার পর সে মারা যায়। এরপর লোকটি আরেকটি বিয়ে করে। এর কিছুদিন পর ঐ ব্যক্তির বড় ছেলে পিতার দ্বিতীয় স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করে। এখন প্রশ্ন হল, ঐ ছেলের জন্য সৎ মায়ের বোনকে বিয়ে করা কি বৈধ হয়েছে? সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত
করবেন।
উত্তর
হ্যাঁ, ঐ ছেলের জন্য বাবার স্ত্রীর (সৎ মায়ের) বোনকে বিয়ে করা বৈধ হয়েছে। কেননা সে মাহরামের অন্তর্ভুক্ত নয়। -রদ্দুল মুহতার ৩/৩১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪৯
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩২২
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমার এক সাথী গত কয়েকমাস আগে বিবাহ করেছে। বেশ কয়েকদিন...

প্রশ্ন
আমার এক সাথী গত কয়েকমাস আগে বিবাহ করেছে। বেশ কয়েকদিন পর আমার সাথে দেখা হলে আমি তাকে বলি, তোমার বিয়ের ওলিমা খাওয়াতে হবে। তখন সে রসিকতা করে বলল, তোর ভাবিকে তো অনেক আগে তালাক দিয়ে দিয়েছি। অথচ সে তালাক দেয়নি। জানার বিষয় হল, এ কারণে কি তার স্ত্রী তালাকপ্রাপ্তা হয়ে গেছে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার সাথী যদি বা স্তবেই তার স্ত্রীকে আগে তালাক না দিয়ে থাকে তবে এভাবে মিথ্যা বলার দ্বারা তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়নি। তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পূর্বের মতোই বহাল আছে। তবে তালাকের বিষয়ে এভাবে রসিকতা করা অন্যায়। অনেক
ক্ষেত্রে রসিকতা করতে গিয়ে তালাক হয়ে যায়।
এছাড়া এতে মিথ্যা বলার গুনাহ তো হয়েছেই। তাই এজন্য তাকে তওবা করতে হবে। -কিতাবুল আছল ৪/৫১৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২৩৬; ফাতহুল কাদীর ৩/৩৫৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৪৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৪০১; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/১৭৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩২১
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি ছয় বছর দাম্পত্য জীবন যাপনের পর একপর্যায়ে তার...

প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি ছয় বছর দাম্পত্য জীবন যাপনের পর একপর্যায়ে তার স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তাদের চার বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান আছে। বর্তমানে তার স্ত্রী অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে এবং সে তার ছেলেকে নিজের কাছে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। অপরদিকে ছেলের বাবা সন্তানকে তার কাছেই রাখতে চায়। এক্ষেত্রে সন্তান লালন-পালনের অধিকারী কে হবে? আশা করি জানিয়ে বাধিত
করবেন। উলেস্নখ্য, মহিলার দ্বিতীয় স্বামীর
সাথে উক্ত সন্তানের কোনো ধরনের আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই।
উত্তর
সন্তান লালন-পালনের অধিকার মূলত মায়ের। তবে মা সন্তানের মাহরাম ব্যতীত অন্য কাউকে বিয়ে করলে তার আর সন্তান লালন- পালনের অধিকারী থাকে না। সেক্ষেত্রে এ
অধিকার ক্রমান্বয়ে নিম্নে বর্ণিত আত্মীয়গণ
লাভ করে। যথা-ক) শিশুর নানী খ) শিশুর দাদী গ) শিশুর খালা ঘ) শিশুর ফুফু ঙ) আসাবা (শরীয়ত নির্ধারিত নিকটাত্মীয়)-এর ক্রমানুসারে পুরুষ আত্মীয়গণ। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মহিলা গায়রে মাহরামকে বিয়ে করার কারণে তার লালন-পালনের অধিকার বাতিল হয়ে গিয়েছে। এখন উপরে বর্ণিত শিশুর
নারী আত্মীয়গণ অর্থাৎ নানী, দাদী, খালা, ফুফু
যদি বিদ্যমান না থাকে কিংবা তারা দায়িত্ব গ্রহণে অসম্মত বা অসমর্থ্য হয় তাহলে সেক্ষেত্রে পিতা নিজে তার সন্তান লালন-পালনের অধিকারী হবে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২৭০; বাযলুল মাজহূদ ১১/১৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৬৭-১৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৫৫-৫৫৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৭৫-২৭৬
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩২০
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

আমি ছোট বেলায় যার দুধ পান করেছি তার স্বামীর ছোট...

প্রশ্ন
আমি ছোট বেলায় যার দুধ পান করেছি তার স্বামীর ছোট বোন অর্থাৎ আমার দুধ মায়ের ননদের সাথে আমার বিয়ের আলোচনা চলছে। গ্রামের এক মুরববী বললেন, এ বিয়ে শুদ্ধ হবে না। কারণ দুধ সম্পর্কের কারণে সে আমার মাহরাম। কিন্তু অন্য এক মুরববী বলেছেন, এই বিয়েতে কোনো সমস্যা নেই। জানার বিষয় হল, শরীয়তের দৃষ্টিতে এ বিয়ের হুকুম কী? আমার দুধমায়ের ননদের সাথে আমার বিবাহ কি শুদ্ধ হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
আপনার দুধ মায়ের স্বামী আপনার দুধ সম্পর্কের পিতা। আর তার বোন আপনার দুধ সম্পর্কের ফুফু। আপন ফুফুর মতোই সে আপনার মাহরাম এবং তার সাথে আপনার বিবাহ হারাম। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, রক্তের সম্পর্কের কারণে যাদের সাথে বিবাহ হারাম, দুধের সম্পর্কের কারণেও তাদের সাথে বিবাহ হারাম।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৪৪৪
সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি দুধ মায়ের
ননদকে বিয়ে করতে পারবেন না। -শরহুল মুসলিম, নববী ১০/১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৯৩-৯৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৯৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৬
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০৪৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

অসুস্থ মহিলার জন্য জন্মনিয়ন্ত্রন শরিয়তে জায়েজ আছে কি?

প্রশ্ন
অসুস্থ মহিলার জন্য জন্মনিয়ন্ত্রন শরিয়তে জায়েজ আছে কি?
উত্তর
অসুস্থতা যদি এমন হয় যে, বাচ্চা নিলে মৃত্যুর আশংকা আছে। তাহলে স্বামীর অনুমতি ছাড়া ই জন্ম নিয়ন্ত্রন করা জায়েজ আছে। আর যদি এমন অসুস্থ হয় যে, মৃত্যুর আশংকা নেয়, তবে কষ্ট বেশি বা রুগ বৃদ্বি হবে, তাহলে স্বামীর অনুমতি নিয়ে নিয়ন্ত্রন ব্যাবস্তা গ্রহন করতে পারবে। নতুবা পারবে না। আর যদি এই বিশ্বাস রেখে জন্ম নিয়ন্ত্রন করে যে, বাচ্চা বেশি হয়ে গেলে খাওয়াতে পারবে না। দারিদ্রতা আসবে তাহলে জন্ম নিয়ন্ত্রন করা হারাম হবে।
দলিলঃ-
নাহরুল ফায়েক। শামী ২/৩৯০.(বাবুন নেকাহির রাকিক) এমদাদুল মুফতিয়িন পৃঃ৮০৯

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০১৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে মুহাববত করে কখনো কখনো আপু মনি...

প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে মুহাববত করে কখনো কখনো আপু মনি বলে ডাকে। শরীয়তের দৃষ্টিতে এতে কোনো অসুবিধা আছে কি? এ কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি? স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকার হুকুম কী? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
স্ত্রীকে এভাবে সম্বোধন করা মাকরূহ ও গুনাহের কাজ। হাদীস শরীফে এসেছে, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বোন বলে সম্বোধন করল। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনে এ থেকে তাকে নিষেধ করলেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২০৪ তাই এমন বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। অবশ্য উক্ত কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হয়নি। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২২০৪; বাযলুল মাজহূদ ১০/৩২২; ফাতহুল কাদীর ৪/৯১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪৭০; আলবাহরুর রায়েক ৪/৯৮

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০০৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: স্বামী-স্ত্রী

প্রায় ২৫ বছর আগে জনৈক ব্যক্তি এক ছেলে, দুই মেয়ে...

প্রশ্ন
প্রায় ২৫ বছর আগে জনৈক ব্যক্তি এক ছেলে, দুই মেয়ে ও এক স্ত্রী রেখে ইন্তেকাল করেন। এত বছর পর্যন্ত তাদের স্থাবর সম্পত্তি (জমিজমা) ওয়ারিসদের মাঝে বণ্টন করা হয়নি। এখন সে সম্পত্তি শরীয়ত মোতাবেক বণ্টন করা হবে। অতীতে মরহুমের ছেলে ঐ স্থাবর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কিছু টাকা খরচ করেছে (কারণ কিছু জমি নিয়ে মামলা মুকাদ্দমা সংক্রান্ত ঝামেলা ছিল, যা নিষ্পত্তি করতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে ইত্যাদি) তবে মেয়েরাও মাঝেমধ্যে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে খরচে শরিক হয়েছিল। এখন সম্পত্তি বণ্টনে ছেলে দাবি করছে যে, যত টাকা সে অতীতে খরচ করেছে তার সমান ভাগ মেয়েদেরকে নিতে হবে এবং ঐ টাকার যে অংশ তাদের ভাগে পড়বে তারা এর দ্বিগুণ পরিশোধ করতে হবে। সে এর কারণ দেখাচ্ছে যে, অতীতের চেয়ে বর্তমানে টাকার মূল্য কমে গেছে। তাই জানতে চাচ্ছি যে, ছেলের দাবি মোতাবেক মেয়েদেরকে তাদের অংশের চেয়ে বেশি আদায় করতে হবে কি? শরীয়ত মোতাবেক তারা এখন কত টাকা পরিশোধ করবে? বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ এজমালি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করতে যত টাকা খরচ হয়েছে অর্থাৎ ছেলে যা খরচ করেছে এবং মেয়েরা মাঝেমধ্যে যা দিয়েছে সবগুলো হিসাব করে প্রত্যেক ওয়ারিসের উপর তাদের হিস্যা অনুপাতে বর্তাবে। প্রশ্নোক্ত ওয়ারিসদের হিস্যা হল : স্ত্রী : ১২.৫%, ছেলে : ৪৩.৭৫% এবং প্রত্যেক মেয়ে : ২১.৮৭৫% করে। অতএব মরহুমের স্ত্রী তার হিস্যা অনুসারে উক্ত খরচের এক অষ্টমাংশ বহন করবে। অতপর অবশিষ্ট খরচের দুই চতুর্থাংশ ছেলে, একভাগ প্রথম মেয়ে এবং অপর ভাগ দ্বিতীয় মেয়ে বহন করবে। মেয়েরা পূর্বে যা খরচ করেছে তা বাদ দিয়ে তাদের অংশের বাকি টাকা তাদের ভাইকে পরিশোধ করবে। এজমালি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করতে ছেলে অন্যদের পক্ষ থেকে যা খরচ করেছে তা ঋণ হিসেবে ধর্তব্য হবে। তাই প্রত্যেক ওয়ারিসের হিস্যা অনুপাতে যত টাকা আসে তত টাকাই তার প্রাপ্য। এক্ষেত্রে টাকার মূল্যমান কমে যাওয়ার অজুহাতে মেয়েদের থেকে তাদের হিস্যার অতিরিক্ত দাবি করা জায়েয হবে না। অবশ্য ছেলে সকলের পক্ষ থেকে নিজ টাকা দ্বারা কাজটি সমাধা করার জন্য সওয়াবের অধিকারী হবে। -আলমাবসূত, সারাখসী ১৪/৩০; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬২; রাসাইলে ইবনে আবেদীন ২/৬২; মাজাল্লাতু আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দাহ : ১৩০৮; আলমাবসূত, সারাখসী ২৯/১৪৮; আসসিরাজী ফিলমিরাছ ১২

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন