ফতোয়া: সফর

ফতোয়া নং: ৭২৪৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার এক মাসের এক দুগ্ধপোষ্য সন্তান রয়েছে। তার মা শারীরিকভাবে...

প্রশ্ন

আমার এক মাসের এক দুগ্ধপোষ্য সন্তান রয়েছে। তার মা শারীরিকভাবে দুর্বল। রোযা অবস্থায় দুধ খাওয়ালে তার রোযা রাখতে খুব কষ্ট হয়। মাঝে মাঝে সন্তান দুধই পায় না। মাঝে দুটি রোযা রেখে পরে ভেঙ্গে ফেলেছে। ডাক্তারের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বাচ্চাকে সাগু ও সেরেলাক খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু বাচ্চা এগুলো খেতে চায় না। এদিকে তার মা রোযাও রাখতে চায় ওদিকে সন্তানের সমস্যা হয়।

এক্ষেত্রে শরয়ী সমাধান জানালে আমরা কৃতজ্ঞ হবো। আর যে দুটি রোযা রেখে ভেঙ্গে ফেলেছে তার কাযা কাফফারা দিতে হবে কি না?

উত্তর

সন্তানের দুগ্ধদানের প্রয়োজনে তার মা রোযা ভাঙ্গতে পারবে। তবে রমযানের যে কয়টি রোযা রাখা না হয় তা পরবর্তীতে কাযা করতে হবে। কাফফারা আদায় করতে হবে না।

এক সফরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আনাস ইবনে মালেক রা.-কে কিছু খেতে দিলে তিনি বললেন, আমি রোযাদার। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

اجْلِسْ أُحَدِّثْكَ عَنِ الصَّوْمِ أَوِ الصَّائِمِ، إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ وَضَعَ عَنِ الْمُسَافِرِ شَطْرَ الصَّلَاةِ، وَعَنِ الْمُسَافِرِ وَالْحَامِلِ وَالْمُرْضِعِ الصَّوْمَ أَوِ الصِّيَامَ.

তুমি বসো, আমি তোমাকে রোযা ও রোযাদার সম্পর্কে কিছু বলব, আল্লাহ তাআলা মুসাফিরের অর্ধেক নামায কমিয়ে দিয়েছেন এবং মুসাফির, গর্ভবর্তী ও দুগ্ধদানকারিনীর জন্য রোযায় ছাড় দিয়েছেন। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৯০৪৭

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

تُفْطِرُ الْحَامِلُ وَالْمُرْضِعُ فِي رَمَضَانَ، وَتَقْضِيَانِ صِيَامًا، وَلَا تُطْعِمَانِ.

গর্ভবর্তী ও দুগ্ধদানকারিনী রমযানের রোযা ভাঙ্গতে পারবে। তবে পরে তা কাযা করে নিবে। রোযার বদলে (মিসকীনদেরকে) খাওয়াবে না। (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, বর্ণনা ৭৫৬৪)

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২০২; ফাতহুল কাদীর ২/২৭২; রদ্দুল মুহতার ২/৪২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২১৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বড় ভাইজান ভালো আলেম ও বুযুর্গ ছিলেন। সমাজে তার...

প্রশ্ন

আমার বড় ভাইজান ভালো আলেম ও বুযুর্গ ছিলেন। সমাজে তার বেশ সুনাম-সুখ্যাতি ছিল। বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে তিনি বাতিলের বিরুদ্ধে সাহসী বয়ান করতেন। এভাবে তার কিছু শত্রুও গড়ে ওঠেছিল। ভাইজান সিলেট শহরেই থাকতেন। একবার তিনি সীমান্ত পার্শ্ববর্তী গোয়াইঘাটে একটি দ্বীনী প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার জন্য সফর করছিলেন। গাড়ি কোম্পানিগঞ্জ পার হয়ে সামনে এগুলে এক জনমানবহীন সড়কে পৌঁছলে একদল দুর্বৃত্ত ভাইজানের ওপর সশস্ত্র হামলা করে বসে। তারা বুলেটের আঘাতে ভাইজানের দেহ ঝাঁজরা করে দেয়। এম্বুলেন্সে করে লাশ এলাকায় আনা হলে ভাইজানকে গোসল দেওয়া হবে কি না এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক মতানৈক্য দেখা দেয়। অবশেষে ইমাম সাহেবের ফয়সালাক্রমে গোসল করিয়ে ভাইজানকে আলাদা কাফন পরানো হয়। এরপর জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়। কিন্তু তারপরও গোসলের বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে কানাঘুষা চলতে থাকে। তাদের বক্তব্য, শহীদকে গোসল দেওয়ার কোনো বিধান নেই। তাকে তার রক্ত মাখা কাপড়ই দাফন করা নিয়ম। এখন মাননীয় মুফতী সাহেবের কাছে বিষয়টির প্রকৃত সমাধান জানতে চাচ্ছি। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার ভাই শহীদের অন্তর্ভুক্ত। কেননা ডাকাত ও দুর্বৃত্তদের হাতে নিহতব্যক্তি শহীদের হুকুমে। তাকে গোসল দিতে হয় না। তাই তাকে গোসল না দিয়ে পরিহিত পোশাকেদাফন করাই উচিত ছিল। ভুল হলেও যেহেতু দাফন হয়ে গেছে তাই এখন বিষয়টি নিয়ে বিতর্কেলিপ্ত হওয়া ঠিক হবে না।

عَنِ الشَّعْبِيِّ قَالَ: سُئِلَ عَنْ رَجُلٍ قَتَلَهُ اللُّصُوصُ فَقَالَ: لَا يُغَسَّلُ

শাবী রাহ.-কে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে চোরদের হাতে নিহত হয়েছে। তিনিবললেন, তাকে গোসল দেওয়া হবে না।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৬৬৪৮, ৯৫৯৪; কিতাবুল আছল ১/৩৩৯; আলজামিউস সগীর ১১৮-১১৯; শরহুয যিয়াদাত ১/১৮৬-১৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৪৭-২৫০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২০৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কিছুদিন আগে বিশেষ এক প্রয়োজনে আমরা কয়েকজন খুলনা থেকে ঢাকায়...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে বিশেষ এক প্রয়োজনে আমরা কয়েকজন খুলনা থেকে ঢাকায় আসি। এখানে আমার ভগ্নিপতির মাদরাসা আছে। জুমআর দিন তিনি উপস্থিত না থাকায় আমাদের সাথে আসা একজন জুমার নামায পড়িয়ে দেন। পরে আমার মনে হল, তিনি তো মুসাফির। তার নিজের উপরই যখন জুমা ওয়াজিব নয় তখন তিনি মুকীমদের ইমাম হবেন কীভাবে? তাই জানতে চাই, মুসাফিরের জন্য জুমার ইমামতি করার বিধান কী?

উত্তর

মুসাফির ব্যক্তির উপর জুমা ফরয নয়। তবে সে জুমা আদায় করলে তা জুমা হিসেবেই সহীহ হবে।তাই সফর অবস্থায় তার জুমা আদায় করাও জায়েয এবং জুমার ইমামতি করাও জায়েয। সুতরাংঐ ব্যক্তির জুমার ইমামতি করা যথাযথ হয়েছে।

-আলজামিউস সগীর ১১২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৪৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৫৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫২; শরহুল মুনইয়াহ ৫৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২০৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

মুসাফির ব্যক্তি যদি মুকীম ইমামের পিছনে মাসবুক হয় তবে সে...

প্রশ্ন

মুসাফির ব্যক্তি যদি মুকীম ইমামের পিছনে মাসবুক হয় তবে সে দুই রাকাত পেলে কি আরো দইু রাকাত একাকী পড়বে, নাকি দইু রাকাতেই নামায শেষ করবে? আর যদি এক রাকাত পায় তাহলে কয় রাকাত পড়বে?

উত্তর

মুসাফির ব্যক্তি মুকীম ইমামের পিছনে ইক্তেদা করলে চার রাকাত পড়া জরুরি হয়ে যায়।

তাই মুকীমইমামের পেছনে মাসবুক হলেও তাকে চার রাকাতই পড়তে হবে।

আবু মিজলায রাহ. বলেন,

قلت لابن عمر : ادركت ركعة من صلاة المقيمين وأنا مسافر؟ قال : صل بصلاتهم.

আমি আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, মুসাফির অবস্থায় যদি আমি মুকীমের পেছনে এক রাকাত পাই তাহলে করণীয় কী?

জবাবে তিনি বললেন, মুকীমের মতো (পুরা) নামায পড়বে।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৪৩৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৮৭৫; কিতাবুল আছল ১/২৫৬; বাদায়েউস সনায়ে ১/২৭৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৯৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

একবার দীর্ঘদিন সফরে থাকার কারণে হাত পায়ের নখ কাটার সুযোগ...

প্রশ্ন

একবার দীর্ঘদিন সফরে থাকার কারণে হাত পায়ের নখ কাটার সুযোগ পাইনি। ফলে তা বেশ লম্বা হয়ে যায়। এবং সফরের দরুণ তাতে ময়লা জমে যায়। সফর শেষে এক বন্ধু আমাকে বললেন, নখের ভেতর ময়লা থাকলে অযু হয় না। তাই তোমার নামাযও হয়নি। তার কথা শুনে আমি বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই।

জানার বিষয় হল, আমার বিগত দিনের নামায কি কাযা করতে হবে?

উত্তর

নখের ভেতর ময়লা জমে থাকলেও অযুর সময় সে অংশ ভিজে গেলে অযু হয়ে যায়। তাই আপনার ঐ নামাযগুলো আদায় হয়ে গেছে। তা কাযা করতে হবে না।

উল্লেখ্য, হাত পায়ের নখ সপ্তাহে একবার কাটা উত্তম। নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ، كَانَ يُقَلِّمُ أَظْفَارَهُ وَيَقُصُّ شَارِبَهُ فِي كُلِّ جُمُعَةٍ.

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. প্রত্যেক জুমআর দিনে মোঁচ ও নখ কাটতেন।

-সুনানে কুবরা, বায়হাকী ৩/২৪৪; আলবাহরুর রায়েক ১/৪৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২৭৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৫৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৯২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি স্বামী-সন্তানসহ প্রায় সারা জীবনই কাটিয়েছি আমেরিকায়। আল্লাহর রহমতে কয়েক...

প্রশ্ন

আমি স্বামী-সন্তানসহ প্রায় সারা জীবনই কাটিয়েছি আমেরিকায়। আল্লাহর রহমতে কয়েক বছর আগে আমার দ্বীনের বুঝ আসে। কিন্তু আমার স্বামী তা মেনে নেয় না। তাই এক পর্যায়ে আমাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আর আমি বাংলাদেশে চলে আসি। এখানে আমার শুধু মা ও ছোট বোনেরা থাকে। আল্লাহ আমাকে অনেক সম্পদ দান করেছেন। এখন আমি হজ্ব করতে চাই। কিন্তু আমার সঙ্গে কোনো মাহরাম নেই। আমি কি একাকী হজ্ব করতে পারব?

উত্তর

মহিলাদের জন্য মাহরাম ব্যতীত হজ্বের সফরে যাওয়া নিষেধ।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

لاَ يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ، وَلاَ تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ، فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، اكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَاوَكَذَا، وَخَرَجَتِ امْرَأَتِي حَاجَّةً، قَالَ: اذْهَبْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ.

কোনো পুরুষ যেন কোনো মহিলার সাথে নির্জনে অবস্থান না করে এবং কোনো মহিলা যেন মাহরাম ব্যতীত সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি অমুক যুদ্ধে নাম লিখিয়েছি আর আমার স্ত্রী হজ্বের জন্য বের হচ্ছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যাও। তুমিও তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্ব কর। -সহীহ বুখারী,হাদীস ৩০০৬

আরেক হাদীসে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

لَا تَحُجَّنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا ذُو مُحْرِمٍ

কখনো কোনো নারী মাহরাম ছাড়া হজ্ব করবে না। -সুনানে দারা কুতনী ২/২২২

অতএব মাহরাম ছাড়া আপনার জন্য হজ্বে যাওয়া জায়েয হবে না। যতদিন শারীরিকভাবে নিজে হজ্ব করতে সক্ষম থাকেন ততদিন মাহরামের অপেক্ষা করবেন। অবশেষে মাহরাম না পেলে কারো দ্বারা বদলি হজ্ব করাতে হবে। আর এ ব্যাপারে পূর্ব থেকেই অসিয়ত করে রাখবেন। যেন হঠাৎ মৃত্যু হয়ে গেলে আত্মীয়-স্বজন আপনার সম্পদ দ্বারা বদলি হজ্ব করিয়ে নেয়।

উল্লেখ্য যে, বোনের ছেলে এবং আপন মামা মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। আপনার এমন কোনো উপযুক্ত আত্মীয় থাকলে তাদের কাউকে সাথে নিয়ে হজ্বে যেতে পারবেন।

-ফাতহুল কাদীর ২/৩২৭, ৩/৬৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৯; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী পৃ. ৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

এক ব্যক্তি বিকালের দিকে সফরের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়।...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি বিকালের দিকে সফরের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। ১৫/২০ কিলোমিটার অতিক্রম করার পর আসরের সময় হলে এক জায়গায় সে একাকী আসরের নামায দুই রাকাত কসর পড়ে নেয়। কিন্তু ৩০/৩২ কিলোমিটার যাওয়ার পর কোনো এক কারণে সে সফর মুলতবি করে দেয়। আর ঐ জায়গায় তার একটি কাজ আছে। সেটি সেরে বাড়ি যেতে যেতে রাত ১০/১১ টা হয়ে যেতে পারে।

এখন জানার বিষয় হল, সে তো সফর পুরো করেনি। তাই সে যে রাস্তায় আসরের নামায কসর পড়েছে তা কি আদায় হয়েছে এবং সে রাতে যে জায়গায় থেমেছে সেখানে ইশার নামায একাকী পড়লে তা কসর করবে না পুরোই পড়বে? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকটি সফরের উদ্দেশ্যে নিজ এলাকা থেকে বের হওয়ার পর সফর মুলতবির নিয়ত করার আগ পর্যন্ত মুসাফির ছিল। তাই এ অবস্থায় তার আসরের নামায কসর পড়া ঠিকই হয়েছে। অতএব এরপর সফর মুলতবি করার কারণে ওই নামাযের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে সফরের দূরত্ব (প্রায় ৭৮ কিলোমিটার) অতিক্রম করার আগেই যেহেতু সফর মুলতবি করার নিয়ত করেছে তাই এর দ্বারাই তখন থেকে সে মুকিম হয়ে গেছে। এরপর থেকে সে ঐখানে এবং ফেরার পথেও মুকিম গণ্য হবে। সুতরাং তখন থেকে মুকীম হিসাবে পুরো নামায পড়বে। কসর করবে না।

-কিতাবুল আছল ১/২৩৫; আলমাবসূত, সারাখসী ১/২৩৮; বাদায়েউস সনায়ে ১/২৮২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৪৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমরা কয়েকজন সাথী একদিন ট্রেনে ঢাকা থেকে সিলেট যাচ্ছিলাম। পথে...

প্রশ্ন

আমরা কয়েকজন সাথী একদিন ট্রেনে ঢাকা থেকে সিলেট যাচ্ছিলাম। পথে জুমার সময়ে ট্রেন না থামায় আমরা আর জুমার নামায পড়তে পারিনি। সিলেট শহরে পৌঁছে ট্রেন থেকে নেমে এক মসজিদে ঢুকে আমরা যোহরের নামায জামাতের সাথে আদায় করি। জানতে চাচ্ছি, জামাতের সাথে এভাবে যোহরের নামায আদায় করা কি ঠিক হয়েছে? নাকি পৃথকভাবে আদায় করা উচিত ছিল?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের যোহর পড়া ঠিক হয়েছে। তবে জামাতে পড়া ঠিক হয়নি। কারণ যে এলাকায় জুমা হয় সেখানে যোহরের জামাত নিষেধ। মাযুর, মুসাফির এবং অন্য যারা জুমার জামাতে শরিক হতে পারেনি তারা প্রত্যেকে আলাদাভাবে যোহরের নামায আদায় করবে; জামাত করবে না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৪৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

ক) মুকীম ও মুসাফির কাকে বলে?খ) তাবলীগ জামাতের মারকায ঢাকা...

প্রশ্ন

ক) মুকীম ও মুসাফির কাকে বলে?

খ) তাবলীগ জামাতের মারকায ঢাকা কাকরাইল মসজিদ থেকে ৬০, ৪০, ৩৫, ৩০, ২৫, ২০, ১০, ৭, ৩ দিনের জন্য বিভিন্ন মহল্লা, গ্রাম, শহর, পৌরসভা, থানা বা জেলাভিত্তিক জামাত পাঠানো হয়ে থাকে। এ অবস্থায় তাবলীগ জামাতের ভাইদের নামাযের হুকুম কী হবে?

কিছু ভাই বলে থাকেন, তাবলীগ জামাতে বের হয়ে যেহেতু একই মসজিদে ১৫ দিনের বেশি অবস্থান করা হয় না তাই সদা সর্বদা মুসাফির থাকবে। তাদের এ কথা কতটুকু সঠিক?

এখানে আরো উল্লেখ্য যে, একই মসজিদ বা একই মহল্লা, গ্রাম, ইউনিয়ন, থানা বা জেলার ভিতর ১৫ দিনের বেশি থাকলে নামাযের হুকুম কী হবে?

আর বর্তমানে মহল্লা, গ্রাম, ইউনিয়ন, থানা, পৌরসভা, শহর ও জেলার ঐ সীমানা কতটুকু, যার ভেতর থাকলে মুসাফির বা মুকীম বলে গণ্য হবে?

উত্তর

ক) শরীয়তে মুসাফির ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়, যে ৪৮ মাইল তথা (প্রায় ৭৮ কিলোমিটার) বা তার বেশি দূরত্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ এলাকা ত্যাগ করে।

আর যে নিজ এলাকায় অবস্থান করছে বা ৭৮ কিলোমিটারের কম দূরত্বে সফর করেছে সে মুকীম। তেমনিভবে ৭৮ কিলোমিটার কিংবা তারচেয়ে বেশি দূরত্বে সফর করলে পথিমধ্যে মুসাফির হলেও কোনো এক গ্রাম বা এক শহরে ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি সময় অবস্থানের নিয়ত করলে ঐ স্থানে সে মুকীম হবে।

খ) যে ব্যক্তি ঢাকা সিটিতে মুকীম সে কাকরাইল থেকে সফরসম দূরত্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলে ঢাকা সিটির সীমানা ত্যাগ করার পর থেকে সে মুসাফির গণ্য হবে এবং পথিমধ্যে মুসাফির ইমামের পেছনে বা একাকী নামায পড়লে কসর করতে হবে। অর্থাৎ চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায দুই রাকাত পড়তে হবে। আর মুকীমের পিছনে পড়লে পুরো চার রাকাত পড়তে হবে।

২. গন্তব্যস্থলে পৌঁছে কোনো এক গ্রাম নির্দিষ্ট না করে একাধিক গ্রামের মসজিদে ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করলে গন্তব্যস্থলেও সে মুসাফির গণ্য হবে। তদ্রূপ শহর ও শহরতলী মিলে ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করলেও মুসাফির থাকবে।

৩. একটি গ্রাম বা একটি শহরের বিভিন্ন মসজিদে এক নাগাড়ে ১৫ দিন বা তার বেশি থাকার নিয়ত করলে ঐ গ্রাম বা শহরে সে মুকীম গণ্য হবে। কিন্তু এক গ্রাম বা এক শহর না হয়ে পুরো জেলা বা উপজেলায় কিংবা ভিন্ন ভিন্ন একাধিক গ্রাম বিশিষ্ট ইউনিয়নে, ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করলে সে মুকীম হবে না; বরং মুসাফিরই থাকবে।

৪. এক গ্রাম বা এক শহরের বিভিন্ন মসজিদে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে ঐ গ্রাম বা শহরেও সে মুসাফির গণ্য হবে।

৫. মুকীম ব্যক্তি কাকরাইল থেকে ৭৮ কিলোমিটারের কম দূরত্বে সফরের জন্য বের হলে পথিমধ্যে এবং গন্তব্যস্থলে মুকীম গণ্য হবে।

তবে যে কাকরাইলে মুসাফির থাকবে সে কাকরাইল থেকে ৭৮ কিলোমিটারের কম দূরত্বে গেলেও মুসাফিরই থাকবে।

সফরসম দূরত্বের উদ্দেশ্যে গ্রামের বাসিন্দা নিজ গ্রামের সীমানা ত্যাগ করার পর এবং শহরের বাসিন্দা শহরের সীমানা ত্যাগ করার পর থেকে কসর শুরু করবে। আর সফর থেকে ফেরার পথে নিজ গ্রাম বা শহরের সীমানায় প্রবেশ করার পর মুকীম হয়ে যাবে।

কোনো এক মসজিদে ১৫ দিনের বেশি অবস্থান না করলে সর্বদা মুসাফির থাকবে- এমন ব্যক্তব্য সঠিক নয়।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬১, ২৬৮-২৭০; কিতাবুল আছল ১/২৩১-২৩৩, ২৫৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩০-১৩২; রদ্দুল মুহতার ২/১২১-১২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৯৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

গত বছর হজ্বের সফরে একদিন তাওয়াফের পর তাওয়াফের দুই রাকাত...

প্রশ্ন

গত বছর হজ্বের সফরে একদিন তাওয়াফের পর তাওয়াফের দুই রাকাত নামায পড়তে ভুলে যাই। বাসায় আসার পর স্মরণ হলে ঐ দুই রাকাত নামায পড়ে নিই। প্রশ্ন হল, তাওয়াফের দুই রাকাত নামায পড়তে বিলম্ব হওয়ায় আমার উপর কোনো দম আবশ্যক হয়েছে কি না?

উত্তর

তাওয়াফের পর দুই রাকাত নামায পড়া ওয়াজিব। এই দুই রাকাত নামায মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে তাওয়াফের পরপরই পড়া সুন্নত। বিনা কারণে তাওয়াফের দুই রাকাত নামায পড়তে দেরি করা ঠিক নয়। তবে ঐ দুই রাকাত নামায বিলম্বে পড়লেও কোনো দম ওয়াজিব হয়নি। এমনকি কেউ ঐ দু রাকাত না পড়লেও দম ওয়াজিব হবে না। তবে ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার গুনাহ হবে। অতএব আপনার উপর কোনো দম ওয়াজিব নয়।

-গুনইয়াতুন নাসিক ১১৬; মানাসিক, মুল্লা আলী আলক্বারী ১৫৫; ইলাউস সুনান ১০/৮০; রদ্দুল মুহতার ২/৪৭০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৯১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি গত রযমানে সফর অবস্থায় একদিন রোযা রাখি। এরপর কোনো...

প্রশ্ন

আমি গত রযমানে সফর অবস্থায় একদিন রোযা রাখি। এরপর কোনো কারণ ছাড়াই আবার তা ভেঙ্গে ফেলি। জানতে চাই, উক্ত কারণে আমাকে এই রোযার কাযা-কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হবে? নাকি শুধু কাযা করলেই হয়ে যাবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ রোযার শুধু কাযা করলেই হবে। কাফফারা আদায় করতে হবে না।

উল্লেখ্য যে, সুবহে সাদিকের সময় থেকেই যে ব্যক্তি সফরে থাকে, তার জন্য রোযা না রাখার সুযোগ রয়েছে। তবে রোযা শুরু করার পর শরীয়তসম্মত ওজর ব্যতীত তা ভেঙ্গে ফেলা জায়েয নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে রোযা রেখে বিনা ওজরে ভেঙ্গে ফেলা ঠিক হয়নি।

-কিতাবুল আছল ২/১৫৩; ফাতহুল কাদীর ২/২৮৪; মাবসূত, সারাখসী ৩/৭৬; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯০; ইলাউস সুনান ৯/১৫২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৫২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

এক মহিলা উমরাহ করতে যায়। কিন্তু উমরার তাওয়াফ করার আগেই...

প্রশ্ন

এক মহিলা উমরাহ করতে যায়। কিন্তু উমরার তাওয়াফ করার আগেই ঐ মহিলার মাসিক স্রাব এসে যায়। পাঁচ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। এখনও স্রাব বন্ধ হয়নি। এদিকে সফরের আর দুই দিন বাকি। দুই দিন পরই তার ফ্লাইট। দেশে চলে আসতে হবে। এখন সে কী করবে? এ অবস্থায়ই কি তাওয়াফ-সায়ী করে উমরা সম্পন্ন করে ফেলবে? মাসআলাটি বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মহিলাটি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। যদি এ সময়ের ভেতরে তার মাসিক বন্ধ হয়ে যায় তাহলে পবিত্র হয়ে তাওয়াফ-সায়ী সম্পন্ন করবে। আর যদি মাসিক বন্ধ না হয় তাহলে সফরের শেষের দিকে ঐ অবস্থাতেই উমরার তাওয়াফ করে নিবে। অতপর উমরার সায়ী করবে এবং চুল কেটে হালাল হয়ে যাবে। আর অপবিত্রতার অবস্থায় উমরার তাওয়াফ করার কারণে তাকে একটি দম দিতে হবে। অর্থাৎ হেরেমের এলাকায় তাকে একটি ছাগল বা দুম্বা যবাই করতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৫৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪৭; মানাসিক, মুল্লা আলি কারী, পৃ. ৩৫২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৩৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

নিজ বাসস্থান থেকে বের হয়ে কী পরিমাণ রাস্তা অতিক্রম করলে...

প্রশ্ন

নিজ বাসস্থান থেকে বের হয়ে কী পরিমাণ রাস্তা অতিক্রম করলে মুসাফির হয়?

উত্তর

সফরসম দূরত্ব (৭৮ কিলোমিটার বা তার বেশি) অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে নিজ এলাকা, গ্রাম বা শহর অতিক্রম করার পর থেকে সফরের বিধান আরোপিত হবে।

-শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮; ফাতহুল কাদীর ২/৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৩৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

মুসাফির অবস্থায় নামায পড়ার বিধান কী? অর্থাৎ মুসাফির ফরয ও...

প্রশ্ন

মুসাফির অবস্থায় নামায পড়ার বিধান কী? অর্থাৎ মুসাফির ফরয ও সুন্নত নামায কীভাবে আদায় করবে? সফর অবস্থায় কোন কোন নামায কসর করতে হয়?

উত্তর

মুসাফিরের জন্য সফর অবস্থায় কোনো মুকীমের ইক্তিদা না করলে কসর করা অর্থাৎ চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায দুই রাকাত পড়া জরুরি।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন,

فَرَضَ اللهُ الصَّلَاةَ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْحَضَرِ أَرْبَعًا، وَفِي السَّفَرِ رَكْعَتَيْنِ.

আল্লাহ তাআলা তোমাদের নবীর যবানে নামাযকে মুকীম অবস্থায় চার রাকাত ও সফর অবস্থায় দুই রাকাত ফরয করেছেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৬৮৭

আর মুকিমের পিছনে ইকতিদা করলে পূর্ণ নামাযই পড়তে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন,

إِذَا دَخَلَ الْمُسَافِرُ فِي صَلَاةِ الْمُقِيمِينَ صَلَّى بِصَلَاتِهِمْ.

মুসাফির যদি মুকিমদের সাথে নামাযে শরীক হয় তবে সে তাদের মত (চার রাকাত) নামায পড়বে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৮৪৯

আর মাগরিব, বিতর ও ফজরের নামায পূর্ণই আদায় করতে হবে। এগুলোর কসর নেই। তেমনিভাবে সুন্নত নামাযেরও কসর হয় না। তাই সুন্নত পড়লে পুরোই পড়বে।

প্রকাশ থাকে যে, সফর অবস্থায় পথিমধ্যে তাড়াহুড়া ও ব্যস্ততার সময় সুন্নত পড়বে না। আর গন্তব্যে পৌঁছার পর সুন্নত নামায পড়াই উত্তম।

উল্লেখ্য যে, বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী সফর অবস্থায় সুন্নতে মুআক্কাদা নামাযগুলো মুকীম অবস্থার ন্যায় আবশ্যক থাকে না; বরং সাধারণ সুন্নতের হুকুমে হয়ে যায়।

-শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০১৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

এক মহিলা হজ্ব করবে। তার বড় ভাই সৌদীতে চাকরি করে।...

প্রশ্ন

এক মহিলা হজ্ব করবে। তার বড় ভাই সৌদীতে চাকরি করে। ঢাকা বিমান বন্দর পর্যন্ত তার সঙ্গে তার ছোট ভাই থাকবে। ঢাকা থেকে জেদ্দা বিমানবন্দর পর্যন্ত মামাতো বোন ও তার স্বামী সাথে থাকবে। জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে তার বড় ভাই তাকে নিয়ে যাবে এবং তার সঙ্গেই হজ্ব করবে। প্রশ্ন হল, সে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে জেদ্দা পর্যন্ত তার মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্ব করার জন্য যেতে পারবে কি?

উত্তর

মাহরাম ছাড়া নারীর জন্য হজ্বের সফরে যাওয়াও নিষেধ। মামাতো বোনের স্বামী মাহরাম নয়। তাই প্রশ্নোক্ত মহিলা মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্বে যেতে পারবে না। বরং স্বামী বা কোনো মাহরামের সাথেই যেতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

لا تسافر المرأة إلا مع ذي محرم، ولا يدخل عليها رجل إلا ومعها محرم، فقال رجل: يا رسول الله إني أريد أن أخرج في جيش كذا وكذا، وامرأتي تريد الحج، فقال: اخرج معها.

কোনো মহিলা তার মাহরাম ব্যতিরেকে সফর করবে না এবং কোনো পুরুষ মাহরাম ছাড়া কোনো মহিলার নিকট যাবে না। অতপর এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক সৈন্যদলের সাথে জিহাদে যেতে চাই আর আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চায়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমিও তার সাথে হজ্বে যাও। -সহীহ বুখারী ১/১৪৭, ১/২৫০

আরেক হাদীসে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

لا تحجن امرأة إلا ومعها ذو محرم.

কোনো মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া হজ্ব করতে না যায়। (সুনানে দারাকুতনী ২/২২৩)

-বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৪; মুখতাসারুত তহাবী ৫৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; যুবদাতুল মানাসিক ৩২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৫১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বয়স ১৮ বছর। আমি আম্মা ও বড় বোন এবার...

প্রশ্ন

আমার বয়স ১৮ বছর। আমি আম্মা ও বড় বোন এবার আমাদের বড় দুলাভাইয়ের সঙ্গে হজ্ব আদায় করেছি। হজ্ব থেকে ফেরার পর জানতে পারলাম যে, দুলাভাইয়ের সঙ্গে হজ্বে যাওয়া আমার জন্য বৈধ হয়নি। তাহলে কি আমার হজ্ব সহীহ হয়নি?

উত্তর

মাহরাম ব্যতীত হজ্বের সফরে যাওয়া জায়েয নয়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া হজ্বে না যায়। Ñসুনানে দারাকুতনী, হাদীস : ২৪৪০

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো পুরুষ যেন কোনো মহিলার সাথে নির্জনে অবস্থান না করে এবং কোনো মহিলা যেন মাহরাম ব্যতীত সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি অমুক যুদ্ধে নাম লিখিয়েছি আর আমার স্ত্রী হজ্বের জন্য বের হচ্ছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যাও। তুমিও তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্ব কর। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৩০০৬

সুতরাং মাহরাম ছাড়া হজ্বের সফরে যাওয়া আপনার জন্য নাজায়েয হয়েছে। এজন্য তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। তবে এভাবে যাওয়া নাজায়েয হলেও আপনার হজ্ব আদায় হয়ে গেছে।

Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৩৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৯; আললুবাব ১/১৬৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

ক. যারা তাবলীগে লম্বা সময়ের জন্য সফরসম দূরত্বে বের হয়...

প্রশ্ন

ক. যারা তাবলীগে লম্বা সময়ের জন্য সফরসম দূরত্বে বের হয় তারা মুসাফির কি না?

খ. চিল্লা চলাকালীন সময়ে কোনো কাজে কেউ যদি বাড়িতে যায় এবং বাড়িতে ১-২ দিন থাকে তাহলে ঐ ১-২ দিনের জন্য মুকীম হবে কি না?

উত্তর

ক. কেউ সফরসম দূরত্বের জন্য বের হলে নিজ এলাকা ত্যাগ করার পর থেকে পথিমধ্যে সে মুসাফির থাকবে। আর গন্তব্যে পৌঁছে কোনো এক গ্রাম নির্দিষ্ট না করে একাধিক গ্রামের মসজিদে ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করলে গন্তব্যস্থলেও সে মুসাফির থাকবে। তদ্রƒপ শহর ও শহরতলী মিলে ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করলেও সে মুসাফির থাকবে। অবশ্য যদি এক গ্রাম বা এক শহরেরই মসজিদে মিলে এক নাগাড়ে ১৫ দিন বা তার বেশি থাকার নিয়ত করে তাহলে সেক্ষেত্রে ঐ গ্রাম বা শহরে সে মুকীম গণ্য হবে।

খ. চিল্লা চলাকালীন সময়ে কেউ মুসাফির থাকা অবস্থায় ১/২ দিন বা অল্প সময়ের জন্যও যদি বাড়িতে যায় তাহলে নিজ এলাকায় প্রবেশের সাথে সাথেই মুকীম হয়ে যাবে। এবং নিজ এলাকা ত্যাগ করা পর্যন্ত পূর্ণ নামায আদায় করবে। Ñআলআসল ১/২৩৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৭০, ৭৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩২; রদ্দুল মুহতার ২/১২৪, ২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

বরিশাল যাওয়ার উদ্দেশ্যে যদি কেউ মিরপুর-২ থেকে সদরঘাট যায় তাহলে...

প্রশ্ন

বরিশাল যাওয়ার উদ্দেশ্যে যদি কেউ মিরপুর-২ থেকে সদরঘাট যায় তাহলে সদরঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়ার আগে কি সে নামায কসর করতে পারবে?

উত্তর

না, সদরঘাটে লঞ্চ নোঙর করা অবস্থায় তাতে নামায কসর করা যাবে না। কেননা, লঞ্চ পাড়ে বা পাড়ের নিকটে ভিড়ানো থাকলে তা ঐ পাড়ের হুকুমে গণ্য হয়। আর সদরঘাট যেহেতু ঢাকা সিটির অন্তর্ভুক্ত তাই ঘাটে লঞ্চ ভিড়ানো থাকা অবস্থায় ঐ ব্যক্তি মুকীমই থাকবে। লঞ্চ সদরঘাট ত্যাগ করার পর থেকে কসরের হুকুম আরম্ভ হবে।

Ñশরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৯৩, ২/৫৪০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১; ফাতহুল কাদীর ২/৮; ইমদাদুল আহকাম ১/৭১০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯০১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

ক) সফর অবস্থায় সুন্নত নামায পড়ার হুকুম কি?খ) আমরা জানি...

প্রশ্ন

ক) সফর অবস্থায় সুন্নত নামায পড়ার হুকুম কি?

খ) আমরা জানি যে, সফরে চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে দুই রাকাত পড়তে হয়। ফরয এবং সুন্নত উভয় নামাযের জন্যই কি এই হুকুম? জানালে পেরেশানী মুক্ত হব।

উত্তর

ক) সফর অবস্থায় সুন্নত নামায পড়া-না পড়ার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামের রা. দুই ধরনের আমলই বর্ণিত হয়েছে। কোনো কোনো বর্ণনায় সুন্নত পড়ার কথা এসেছে। আবার কোনো কোনো বর্ণনায় সুন্নত না পড়ার কথাও এসেছে।

তবে ফজরের সুন্নতের ব্যাপারে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ-অসুস্থ, মুসাফির-মুকিম কোনো অবস্থাতেই তা ছাড়তেন না। Ñমুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ ৩৯৫০

অতএব ফজরের সুন্নত গুরুত্বের সাথেই আদায় করবে। অন্যান্য সুন্নতের ক্ষেত্রে হুকুম হল, যাত্রাপথে তাড়াহুড়ো ও ব্যস্ততার সময় সুন্নত পড়বে না। আর যদি যাত্রাপথে তাড়াহুড়ো ও ব্যস্ততা না থাকে এবং সুন্নত পড়ার অবকাশ থাকে তাহলে সম্ভব হলে পড়ে নিবে। আর গন্তব্যস্থলে নিরাপদে স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলে সুন্নত পড়ে নেওয়াই উত্তম। এক্ষেত্রে সুন্নত ছাড়বে না।

খ) সফর অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট নামায দুই রাকাত পড়ার বিধান কেবল ফরয নামাযের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সুন্নত নামাযের কসর নেই। তাই সফর অবস্থায় সুন্নত পড়লে পূর্ণ চার রাকতই পড়তে হবে। Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ৫৫০, ৫৫২; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ৯৪৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১২৫২; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৩-৩৮৪; ইলাউস সুনান ৭/৩২৯-৩৩২; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯০০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

মাঝে মধ্যেই দেশের বাইরে আমার সফর হয়ে থাকে। আমার বাসা...

প্রশ্ন

মাঝে মধ্যেই দেশের বাইরে আমার সফর হয়ে থাকে। আমার বাসা ঝিগাতলা। আমি যখন ঝিগাতলা থেকে এয়ারপোর্ট যাব তখন এয়ারপোর্টে থাকাবস্থায় নামায কি কসর পড়ব না পূর্ণ পড়ব।

উত্তর

এয়ারপোর্টে আপনাকে পূর্ণ নামায অর্থাৎ চার রাকাত বিশিষ্ট নামায চার রাকাতই পড়তে হবে। বিমান এয়ারপোর্ট ত্যাগ করার পর থেকে কসরের হুকুম হবে।

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৮২৫৩; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪৩২৩; কিতাবুল আছল ১/২৩২; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৯৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

১. কসর সালাতের দূরত্ব ও সময়সীমা অর্থাৎ কী পরিমাণ দূরত্বের...

প্রশ্ন

১. কসর সালাতের দূরত্ব ও সময়সীমা অর্থাৎ কী পরিমাণ দূরত্বের সফর করলে কছর পড়তে হয় এবং কত দিন পর্যন্ত সফরের হুকুম বলবৎ থাকবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

২. কছর নামায সম্পর্কে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

১ ও ২ : ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার বা এর বেশি সফর করার নিয়তে কেউ যদি নিজ গ্রাম বা শহরের সীমানা অতিক্রম করে তবে সে তখন থেকে মুসাফির গণ্য হবে এবং নামায কসর করবে। অর্থাৎ যোহর, আসর ও ইশার ফরয নামায দুই রাকাত করে আদায় করবে।

আর সফর অবস্থায় কোনো স্থানে একসাথে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত না করা পর্যন্ত মুসাফির থাকবে।

আর কোনো স্থানে একসাথে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করলে মুকীম গণ্য হবে এবং পূর্ণ নামায পড়তে হবে।

Ñশরহুল মুনয়াহ ৫৩৫, ৫৩৬, ৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭, ২/৩৮৮-৩৮৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮, ২/১৩১; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১, ২/১২৪-১২৫; জাওয়াহিরুল ফিক্হ ৩/৪২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮১৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

সফর থেকে বাড়িতে আসি। যোহরের সময় তখনও আধা ঘণ্টার মতো...

প্রশ্ন

সফর থেকে বাড়িতে আসি। যোহরের সময় তখনও আধা ঘণ্টার মতো বাকি ছিল। ক্লান্তির দরুণ নামাযের কথা ভুলে যাই। হঠাৎ আসরের আযান শুনি। প্রশ্ন হল, উক্ত যোহরের কাযা কি আমাকে চার রাকাত পড়তে হবে, নাকি দুই রাকাত? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত যোহর নামাযের কাযা চার রাকাতই আদায় করতে হবে। কেননা ওয়াক্তের শেষে আপনি মুকীম ছিলেন। তখন পুরো চার রাকাতই পড়া জরুরি ছিল। তাই আদায় করতে হবে পুরো চার রাকাতই।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৭; অদদুররুল মুখতার ২/১৩১; শরহুল মুনইয়াহ ৫৪৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮০৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

যায়েদ যে স্থানে চাকরি করে সেখান থেকে তার বাড়ি শরীয়ত...

প্রশ্ন

যায়েদ যে স্থানে চাকরি করে সেখান থেকে তার বাড়ি শরীয়ত নির্ধারিত মুসাফিরের সীমার অনেক উপরে। এখন প্রশ্ন হল, সে বাড়িতে যাওয়ার সময় এবং বাড়ি থেকে আসার সময় রাস্তায় কছর নামায পড়বে কি? যদি কছর পড়তে হয় তাহলে সে তার বাড়ি/চাকরিস্থলে পৌঁছার কতটুকু সীমানা পর্যন্ত পড়বে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় যায়েদের চাকরিস্থল যেহেতু সফরসম দূরত্বে তাই সেখানে যাতায়াতের সময় তার বাসস্থানের এলাকা ত্যাগ করার পর পথিমধ্যে সে মুসাফির গণ্য হবে এবং নামায কছর করবে। আর চাকরিস্থলে ১৫ দিনের নিয়তে কখনো থাকা না হলে সেখানেও সে মুসাফির থাকবে।

অবশ্য চাকরিস্থলে যদি কখনো ১৫ দিনের নিয়তে অবস্থান করে থাকে তবে তখন থেকে চাকরিস্থলে সে মুকীম। এক্ষেত্রে নিজ গ্রামের সীমানা অতিক্রম করার পর থেকে চাকরিস্থলের এলাকায় প্রবেশের আগ পর্যন্ত সে মুসাফির গণ্য হবে। আর চাকরিস্থলে একবার মুকীম হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তীতে কখনো অল্প সময়ের জন্য গেলেও সেখানে সে মুকীম হবে।

আর এক্ষেত্রে চাকরিস্থলে সে যেহেতু মুকীম তাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়ে চাকরিস্থলের এলাকা অতিক্রম করার পর থেকে সে মুসাফির গণ্য হবে।

-শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৯৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; ফাতহুল কাদীর ২/৮; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮, ২/১৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ৩/৩৩৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৬৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বাসা ঢাকার মূল শহরে। বিদেশ সফরকালিন বাসা থেকে এয়ারপোর্ট...

প্রশ্ন

আমার বাসা ঢাকার মূল শহরে। বিদেশ সফরকালিন বাসা থেকে এয়ারপোর্ট যাওয়া-আসার সময় আমি কি মুকীম হব, নাকি মুসাফির?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি বিমানবন্দরের পথে ও বিমান বন্দরে মুকীম থাকবেন তাই পুরো নামাযই পড়তে হবে। কেননা মুসাফির হওয়ার জন্য নিজ শহরের আবাদি অতিক্রম করা শর্ত। তদ্রূপ সফর থেকে ফিরে বিমান বন্দরে অবতরণ করলেই মুকীম হয়ে যাবেন।

নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. মদীনার ঘর-বাড়ি অতিক্রম করলে তখন নামায কসর পড়তেন এবং সফর থেকে ফেরার সময় মদীনার বসতিতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত কসর পড়তেন।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস ৪৩২৩, ৪৩১৯, ৪৩২১; কিতাবুল আছল ১/২৩২; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৪, ২৭৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৯৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭, ৪০১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৬৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

এক ছেলে রমযানের ২০ তারিখ বালেগ হয়। প্রায়ই এমন হত...

প্রশ্ন

এক ছেলে রমযানের ২০ তারিখ বালেগ হয়। প্রায়ই এমন হত যে, তার রোযা রাখার ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও মায়ের পীড়াপীড়িতে রোযা রাখত না। তদুপরি কাযা-কাফফারার মাসআলার ব্যাপারে সে ছিল উদাসীন। কয়েকদিন সে মায়ের কারণে আর কিছুদিন নিজেই রোযা রাখেনি। আর কিছুদিন সে রোযা রেখেছে। এ দশদিনের মধ্যে কতদিন সে রোযা রেখেছে আর কতদিন রাখেনি তার পুরো স্মরণ নেই এখন সে কী করবে?

উত্তর

রমযানের রোযা রাখার পর বিনা ওযরে তা ভেঙ্গে ফেললে কাযা কাফফারা উভয়টিই আদায় করা জরুরি। আর যদি রমযানের কোনো রোযা একেবারে নাই রাখে তাহলে তাকে শুধু ঐ রোযার কাযা করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, শরয়ী কোনো ওযর ছাড়া রমযানের রোযা না রাখা অনেক বড় কবীরা গুনাহ।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ ও আলী রা. থেকে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি অসুস্থতা বা সফর ছাড়া ইচ্ছাকৃত রমযানের একটি রোযা ছেড়ে দিল সে আজীবন রোযা রাখলেও এ রোযার হক আদায় হবে না। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৯৮৯৩, ১২৭১১

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এ ছেলে বালেগ হওয়ার পর তার প্রবল ধারণা অনুযায়ী যে কয়টা রোযা রাখেনি বা রেখে ভেঙ্গে ফেলেছে উপরোক্ত নিয়মে সে ঐ রোযাগুলোর কাযা ও কাফফারা আদায় করবে এবং এজন্য সে আল্লাহ তাআলার নিকট কায়োমনোবাক্যে তওবা ও ইস্তেগফার করবে।

আর একাধিক রোযা রেখে তা ভেঙ্গে ফেললে সেক্ষেত্রে কাফফারার নিয়ম জানতে হলে পরবর্তীতে আবার বিস্তারিত প্রশ্ন করে জেনে নিবেন।

-রদ্দুল মুহতার ২/৩৮০; হাশিয়াতুশ শিলবী ১/৪৬৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ২৪৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৬১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কোনো মুসাফির সফর থেকে নিজ ঘরের দিকে ফিরে আসার নিয়ত...

প্রশ্ন

কোনো মুসাফির সফর থেকে নিজ ঘরের দিকে ফিরে আসার নিয়ত করার পর পথিমধ্যে কোথাও দু’ এক দিনের নিয়তে অবস্থান করলে সেখানে কি সে কসর করবে, নাকি পুরা চার রাকাত পড়বে?

উত্তর

মুসাফির নিজ বাড়িতে ফিরে আসার নিয়ত করলেই মুকীম হয়ে যায় না; বরং নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশ করার পর থেকে মুকীম গণ্য হয়।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় নিজ গ্রামে প্রবেশের আগে পথিমধ্যে দু’এক দিনের জন্য কোথাও অবস্থান করলে মুসাফিরই থাকবে এবং নামায কসর করবে।

-শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৩৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কাকরাইল থেকে একটি তিন চিল্লার জামাতকে দিনাজপুরের এক ইউনিয়নে ৪০...

প্রশ্ন

কাকরাইল থেকে একটি তিন চিল্লার জামাতকে দিনাজপুরের এক ইউনিয়নে ৪০ দিনের জন্য রোখ দিয়েছে। সে ইউনিয়নের একাধিক গ্রামের মসজিদে তিন দিন করে থাকা হবে। এভাবে ৪০ দিন পূর্ণ হওয়ার পর জামাতটি আবার কাকরাইলে ফিরে আসবে। আমরা জানি, ১৫ দিনের নিয়তে কোথাও অবস্থান করলে মুকীম গণ্য হয়। তাহলে সেই ইউনিয়নে ৪০ দিন অবস্থানের নিয়ত করলে জামাতের সকলেই কি মুকীম গণ্য হবে?

উল্লে­খ্য, কাকরাইল থেকে চিল্লার রোখ দেওয়া হলে সাধারণত চিল্লা পূর্ণ করেই ফিরে আসা হয়।

উত্তর

মুকীম হওয়ার জন্য এক গ্রামে বা এক শহরে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করা জরুরি। একাধিক গ্রাম মিলে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করলে মুকীম হয় না। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চিল্লার জামাতটির যেহেতু একই গ্রামে ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি থাকা হচ্ছে না; বরং এক ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে থাকা হচ্ছে, তাই এক্ষেত্রে তারা মুকীম হবে না;বরং মুসাফিরই থাকবে। তবে কোনো জামাত যদি এক গ্রামের এক বা একাধিক মসজিদে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করে থাকে তবে তারা মুকীম গণ্য হবে।

Ñবাদায়েউস সানায়ে ১/২৭০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৯১-৩৯২; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৫-১২৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৯৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমাদের দেশে কারো কারো থেকে শুনা যায় কাবা শরীফ দেখামাত্রই...

প্রশ্ন

আমাদের দেশে কারো কারো থেকে শুনা যায় কাবা শরীফ দেখামাত্রই নাকি হজ্ব ফরয হয়ে যায়। এটা সঠিক কি না? আমি উত্তরটা জানার জন্য আপনাদের নিকট খুবই আগ্রহী। আর উমরাতে যারা যান তাদের জন্য কি হজ্ব করা ফরয? যদি তার সামর্থ্য না থাকে তাহলে তার কী করণীয়?

উত্তর

‘কাবা শরীফ দেখলে কিংবা উমরা করতে গেলে হজ্ব ফরয হয়ে যায়’ এ ধারণা ঠিক নয়। কাবা শরীফ দেখা না দেখার সাথে হজ্ব ফরয হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। হজ্ব ফরয হওয়ার জন্য সামর্থ্য থাকা শর্ত। আল্লাাহ তাআলা বলেছেন, (তরজমা) যাদের নিকট এই ঘর (কাবা শরীফ) পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য আছে তাদের উপর এই ঘরের হজ্ব করা ফরয। -সূরা আলে ইমরান : ৯৭

তাই হজ্ব ফরয হওয়ার জন্য হজ্বের মৌসুমে হজ্বে যাওয়া-আসার খরচসহ সফরে থাকাকালীন দিনগুলোতে পরিবারের লোকদের স্বাভাবিক খরচের ব্যবস্থা থাকা জরুরি। এছাড়া বর্তমানে হজ্বের জন্য সৌদি সরকার কর্তৃক অনুমতি থাকা এবং বৈধ ভিসাও প্রয়োজন। উমরা ভিসায় গিয়ে হজ্ব করার অনুমতি থাকে না। তাই উমরা করতে গিয়ে হজ্বের জন্য থেকে যাওয়া আইনত নিষেধ। সুতরাং উমরা করতে যাওয়ার কারণে হজ্ব ফরয হবে না।

-লুবাবুন নাসিক ৪২-৪৩; গুনইয়াতুন নাসিক ১৮, ২২; মাসালিক ১/২৬২; মানাসিক ৪২-৪৩, ৫৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৬৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

একজন নিঃসন্তান বিধবা নারীর উপর হজ্ব ফরয হয়েছে। তার আপন...

প্রশ্ন

একজন নিঃসন্তান বিধবা নারীর উপর হজ্ব ফরয হয়েছে। তার আপন ভাই আছে, কিন্তু তাদের উপর হজ্ব ফরয নয়। তবে বিধবার ছোট বোন ও তার স্বামী হজ্বের সফরে যাচ্ছে। উক্ত বিধবা তাদের সাথে হজ্বের জন্য নিয়ত করেছে।

এখন প্রশ্ন হল, ছোট বোন ও তার স্বামীর সাথে বিধবার হজ্বের জন্য যাওয়ার বিষয়ে শরীয়তের বিধান কী?

উত্তর

হজ্বের সফরেও মহিলাদের জন্য মাহরাম থাকা আবশ্যক। সহীহ মুসলিমে হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী কোনো নারীর জন্য তার পিতা, ছেলে, স্বামী বা ভাই অথবা অন্য কোনো মাহরাম ছাড়া তিনদিন (৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার) বা তার চেয়ে বেশি দূরত্বের কোথাও সফর করা বৈধ নয়।-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৪০

হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুতবায় বলতে শুনেছি, .. কোনো মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া কোথাও সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার স্ত্রী তো (মাহরাম ছাড়াই) হজ্বের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। আর আমি তো অমুক যুদ্ধে যাব বলে নাম লিখিয়েছি। আল্লাহর রাসূল বললেন, যাও, তুমিও তোমার স্ত্রীর সাথে গিয়ে হজ্ব কর। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৪১

সুতরাং প্রশ্নোক্ত মহিলার জন্য তার বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্বে যাওয়া জায়েয হবে না। মাহরামের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হবে। আর শারীরিক সক্ষমতা থাকা পর্যন্ত যদি মাহরামের ব্যবস্থা না হয় তাহলে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে গেলে কাউকে দিয়ে বদলি হজ্ব করাতে হবে বা বদলি হজ্বের অসিয়ত করে যেতে হবে।

উল্লেখ্য যে, শরীয়তের বিধান অনুযায়ী যেমন মহিলাদের জন্য হজ্বের সফরে স্বামী বা মাহরাম থাকা জরুরি তেমনি বাস্তবতার আলোকেও হজ্বের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দেওয়ার জন্য পুরো সফরে মহিলার জন্য মাহরামের প্রয়োজন। তাছাড়া সৌদি সরকারের আইন অনুযায়ী মহিলার সাথে মাহরাম থাকা বাধ্যতামূলক। মাহরাম সাথে না থাকলে হজ্ব এজেন্সিগুলো ভুয়া মাহরাম বানিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকে। হজ্বের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত আদায় করতে গিয়ে এমন গর্হিত কাজে লিপ্ত হওয়া কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

-রদ্দুল মুহতার ২/৪৫৮; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৫৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৪৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কিছুদিন আগে এক দাওয়াতি সফরে রাঙামাটি গিয়েছিলাম। সেখানে কাদিয়ানীদের দাওয়াতে...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে এক দাওয়াতি সফরে রাঙামাটি গিয়েছিলাম। সেখানে কাদিয়ানীদের দাওয়াতে এক গ্রামের ৯-১০টি পরিবার একসাথে একই সময়ে কাদিয়ানী হয়ে যায়। আমরা খবর পেয়ে সেখানে যাই এবং তাদেরকে দীর্ঘদিন বোঝানোর পর তারা আবার ফিরে আসে।

এখন প্রশ্ন হল, তাদের পূর্বের বৈবাহিক সম্পর্কের কী হবে? প্রথমে ইসলাম ধর্ম থেকে সপরিবারে কাদিয়ানী হয়ে যাওয়া পরে আবার ইসলাম ধর্মে ফিরে আসায় কি তাদের পূর্বের বিবাহ সম্পর্ক বহাল থাকবে? যদি না থাকে তাহলে তাদের ব্যাপারে এখন করণীয় কী?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী তারা যেহেতু সপরিবারে একসঙ্গে একই সময় কাদিয়ানী হয়ে গেছে এবং পরে আবার তওবা করে একসঙ্গে সপরিবারে ইসলাম ধর্মে ফিরে এসেছে তাই তাদের পূর্বের বিবাহ বহাল আছে। এখন তারা পূর্বের ন্যায় দাম্পত্য জীবন চালিয়ে যেতে পারবে। নতুন করে বিবাহ করতে হবে না।

-মুখতাসারুত তহাবী ২৫/-২৫৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১৯৫; আলমাবসূত, সারাখসী ৫/৪৯; আততাজরীদ ৯/৪৫৫১; বাদায়েউস সানায়ে ২/৬৫৬; রদ্দুল মুহতার ৩/১৯৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৪৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,যে মহিলা আল্লাহর উপর এবং...

প্রশ্ন

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,যে মহিলা আল্লাহর উপর এবং পরকালের উপর ঈমান রাখে তার জন্য মাহরাম সাথে না থাকা অবস্থায় একদিন একরাতের পথ সফর করা হালাল নয়। এক্ষেত্রে আমার জানার বিষয় হল,মহিলাদের বংশীয় মাহরাম কতজন এবং তাদের নামের একটি তালিকা জানতে চাই।

উত্তর

‘মাহরাম’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল,মহিলার ঐ সকল আত্মীয়,যাদের সাথে সবসময়ের জন্য বিবাহ হারাম। এদের মধ্যে বংশীয় মাহরাম হলেন-

১) পিতা,দাদা,নানা,প্রমুখ ঊর্ধ্বতন পুরুষগণ।

২) ছেলে,নাতি (ছেলের ঘরের নাতি এবং মেয়ের ঘরের নাতি,এভাবে নিচের দিকের পুরুষগণ)

৩) আপন ভাই, (বৈপিত্রেয় ভাই এবং বৈমাত্রেয় ভাইও এর অন্তর্ভুক্ত)

৪) মামা, (মায়ের আপন, বৈমাত্রেয় এবং বৈপিত্রেয় ভাই)

৫) চাচা, (পিতার আপন, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই)

৬) ভাতিজা (আপন, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাইয়ের ছেলে) ও তধস্তন ছেলে সন্তানাদি।

৭) ভাগিনা (আপন, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনের ছেলে) ও তধস্তন ছেলে সন্তানাদি।

-শরহু মুসলিম, নববী ৯/১০৫; উমদাতুল কারী ৭/১২৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০০; রদ্দুল মুহতার ২/৪৬৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২৪৩; তাফসীরে রুহুল মাআনী ৪/২৫২; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬১৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি একজন ট্রাক চালক। ট্রাক নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সফর...

প্রশ্ন

আমি একজন ট্রাক চালক। ট্রাক নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সফর করতে হয়। অনেক সময় জুমার দিন সফরে বের হতে হয়। এ অবস্থায় আমার জন্য কি জুমার দিন ১০/১২ টার সময় সফরে বের হওয়া জায়েয হবে?

উল্লেখ্য যে, পথে জুমার নামায আদায় করা সম্ভব হয় না।

উত্তর

জুমার দিন সফরে বের হয়ে পথিমধ্যে জুমা আদায় করা সম্ভব হলে জুমার দিন যে কোনো সময় সফরে বের হওয়া জায়েয আছে। আর সূর্য ঢলার পূর্বে সর্বাবস্থায় সফরে বের হওয়া জায়েয আছে। কিন্তু সফরে বের হলে পথিমধ্যে জুমা পড়া সম্ভব না হওয়ার আশঙ্কা হলে সূর্য ঢলার পর বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সফরে বের হওয়া মাকরূহ। তবে বিশেষ কোনো ওজরের ক্ষেত্রে আবশ্যক হয়ে পড়লে বের হতে পারবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৫১৫০; শরহুস সিয়ারিল কাবীর ১/৪৯; শরহুল মুনইয়া ৫৬৫; ইলাউস সুনান ৮/৭৯; রদ্দুল মুহতার ২/১৬২; আলমাওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ, কুয়েত ২৫/৩৯; আলমাজমূ ৪/৩৬৫;

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬১০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

বাড়ির কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতে পারি না। তাই...

প্রশ্ন

বাড়ির কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতে পারি না। তাই আমি প্রায় সময়ই ফজর ও যোহরের নামাযের পর মসজিদে কিছুক্ষণ কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করি। অনেক সময় ঝিমুনি এলে মসজিদে ঘুমিয়ে পড়ি।

জানার বিষয় হল, উক্ত অবস্থায় মসজিদে ঘুমানো কি দোষণীয়? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

না, তিলাওয়াত, যিকির ইত্যাদি ইবাদত করতে গিয়ে মসজিদে ঘুম এসে গেলে তা দোষণীয় হবে না। তবে এ সময়ও নফল ইতিকাফের নিয়ত করে নেওয়া উত্তম। আর সাধারণ অবস্থায় মুসাফির ও ইতিকাফকারী ছাড়া কিংবা দ্বীনী কাজের জরুরত ছাড়া অন্যদের জন্য মসজিদে ঘুমানো মাকরূহ। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, তোমরা মসজিদকে ঘুমানোর স্থান বানিও না।

-জামে তিরমিযী ১/৪৩; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬; রদ্দুল মুহতার ১/৬৬১; শরহুল মুনইয়াহ ৬১২; আততাজনীস ১/৩৬৯; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/২৭৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৫৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার নিকট এ পরিমাণ টাকা আছে যে, আমার উপর হজ্ব...

প্রশ্ন

আমার নিকট এ পরিমাণ টাকা আছে যে, আমার উপর হজ্ব ফরয। আমার স্বামীর দ্বীনের বুঝ নেই। তার উপর হজ্ব ফরয হওয়া সত্তে¡ও তিনি হজ্ব করছেন না। আমি অনুমতি চাচ্ছি আমাকেও অনুমতি দিচ্ছেন না। আমার জানার বিষয় হল, আগামী বছর আমার ভাই হজ্বে যাবেন। স্বামীর অনুমতি ছাড়াই আমি ভাইয়ের সাথে হজ্বে যেতে পারব কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

হজ্ব আল্লাহ তাআলার মহান হুকুম। শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ ফরয। হজ্ব ফরয হলে বিলম্ব করা গুনাহ। তাই আপনাদের উভয়েরই অনতিবিলম্বে হজ্বে যাওয়া আবশ্যক। কোনো কারণে স্বামীর যেতে যদি বিলম্ব হয় আর আপনার মাহরামের ব্যবস্থাও হয়ে যায় তবে স্বামীর জন্য আপনাকে বাধা দেওয়া ঠিক হবে না। তাই স্বামীকে এ বিষয় বোঝাতে চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে তাকে রাজি করে তার সাথেই হজ্বে যান। যদি তিনি না যান তবে আপনি ভাইয়ের সঙ্গে ফরয হজ্ব আদায়ের জন্য যেতে পারবেন। কেননা ফরয হজ্ব আদায়ের ক্ষেত্রে স্বামীর অনুমতি বাধ্যতামূলক নয়। তবে নফল হজ্ব কিংবা ওমরা আদায়ের জন্য সফর করতে চাইলে অবশ্যই স্বামীর অনুমতি নিতে হবে। তার অনুমতি ছাড়া যাওয়া যাবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৫; গুনইয়াতুন নাসিক ২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

হজ্ব করার মতো কোনো আর্থিক সামর্থ্য আমার ছিল না। কিন্তু...

প্রশ্ন

হজ্ব করার মতো কোনো আর্থিক সামর্থ্য আমার ছিল না। কিন্তু মনে হজ্ব করার খুব আগ্রহ ছিল। এরপর মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ দামাত বারাকাতুহুম-এর হজ্ব সফরনামা ‘‘বাইতুল্লাহর মুসাফির’’ পড়ে আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। ফলে ২০১০ সালে আমার এক বন্ধুর সাথে হজ্বে যাই। আমার হজ্বের যাবতীয় খরচ সে বহন করেছে এ শর্তে যে, পরবর্তীতে সময়-সুযোগমতো তাকে আমি ঐ টাকা পরিশোধ করে দিব। হজ্ব করে আসার পর দুই বছরের মধ্যে আমি তাকে ঐ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। এখন আমার কাছে অনেক টাকা পয়সা আছে। এ বছর আমি আবার হজ্ব করতে চাচ্ছি। তাই হুযুরের নিকট জানতে চাই যে, আমার অস্বচ্ছল অবস্থায় আদায়কৃত হজ্ব কি ফরয হিসেবে আদায় হয়েছে? আর এ বছর আমি কোন হজ্বের নিয়ত করব, ফরয নাকি নফল হজ্বের? দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

অস্বচ্ছল অবস্থায় কেউ ঋণ করে হজ্ব আদায় করলেও তা ফরয হিসেবেই আদায় হবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ঐ হজ্ব ফরয হিসেবেই আদায় হয়েছে। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে হজ্ব করলে তা নফল গণ্য হবে। তবে ঐ হজ্বের এহরামের সময় আপনি যদি সুনির্দিষ্টভাবে নফল হজ্বের নিয়ত করে থাকেন তা নফল হিসেবেই আদায় হয়েছে। ফরয হজ্ব আদায হয়নি। সামনে তা আদায় করে নিতে হবে।

-গুনইয়াতুন নাসিক ৩২; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৪; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪১; আলবাহরুল আমীক ১/৩৮৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫২৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

জামান সাহেবের বাড়ি রংপুর। ব্যবসার উদ্দেশ্যে তিনি চট্টগ্রাম শহরে গেছেন।...

প্রশ্ন

জামান সাহেবের বাড়ি রংপুর। ব্যবসার উদ্দেশ্যে তিনি চট্টগ্রাম শহরে গেছেন। সেখানে তিনি বিশ দিন থাকবেন। কিন্তু দশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর হঠাৎ বাড়ি থেকে তার মেয়ের অসুস্থতার খবর আসে। তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে আরো একদিন থেকে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্তনেন। পেছনের দশদিনের চার রাকাত বিশিষ্ট নামায তো তিনি মুকীম হিসেবে আদায় করেছেন কিন্তু এখন যেহেতু তার বিশ দিন থাকা হচ্ছে না বরং সামনের একদিনসহ মোট এগারো দিন থাকা হবে তাই এ অবস্থায় আগামী একদিনের নামায চট্টগ্রাম শহরে থাকা অবস্থায় কীভাবে পড়বেন? কসর, নাকি পূর্ণ নামায পড়বেন?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম শহরে থাকাকালীন আগামী একদিনের নামাযও তাকে মুকীম হিসেবেই আদায় করতে হবে। কসর করা যাবে না। কেননা চট্টগ্রাম শহরে পনেরো দিন বা তার অধিক থাকার নিয়তে প্রবেশ করার দ্বারা তিনি সেখানে মুকীম হয়ে গেছেন। সফরসম দূরত্বের উদ্দেশ্যে ঐ স্থান ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তিনি মুকীমই থাকবেন। শুধু নিয়ত পরিবর্তনের কারণে ইকামতের হুকুম বাতিল হবে না। তাই রংপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে যখন তিনি চট্টগ্রাম সিটি শহরের সীমানা অতিক্রম করবেন তখন থেকে তিনি মুসাফির গণ্য হবেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৪; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৫/১৭৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৯৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

জন্মস্থান কি ওয়াতনে আসলী? আমি আমার নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেছি...

প্রশ্ন

জন্মস্থান কি ওয়াতনে আসলী? আমি আমার নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেছি আমি কি তাহলে নানা বাড়ীতে গেলে মুকীম থাকব? প্রকাশ থাকে যে, আমি আমার পিতা-মাতার সাথে তাদের বাড়িতেই থাকি। নানা বাড়িতে থাকি না।

উত্তর

কোথাও জন্মগ্রহণের দ্বারাই ঐ স্থান ওয়াতনে আসলী হয়ে যায় না। বরং স্থায়ীভাবে বসবাস করলে তা ওয়াতনে আসলী হিসেবে গণ্য হয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু নানা বাড়ী বসবাস করেন না বরং পিত্রালয়ই হচ্ছে আপনার স্থায়ী আবাসস্থল তাই পিত্রালয়ই আপনার ওয়াতনে আসলী গণ্য হবে এবং সেখানে আপনি মুকীম হবেন।

-আলমাবসূত ১/২৫২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/১৬৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৭২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি।...

প্রশ্ন

আমার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। প্রতি এক মাস পর পর গ্রামের বাড়িতে যাই। জানার বিষয় হল, আসা-যাওয়ার পথে মুসাফির হিসেবে নামায পড়ব, নাকি মুকীম হিসেবে? দলিল-প্রমাণসহ জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার গ্রাম থেকে ঢাকা শহর যেহেতু সফরসম দূরত্বে অবস্থিত তাই যাওয়ার সময় ঢাকা সিটি থেকে বের হওয়ার পর থেকে আপনার গ্রামে প্রবেশের আগ পর্যন্ত এবং ফেরার সময় আপনার গ্রাম থেকে বের হওয়ার পর হতে ঢাকা সিটিতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত পুরো সময় মুসাফির থাকবেন। তাই এ সময় আপনি মুসাফির হিসেবে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায দুই রাকাত পড়বেন। তবে মুকীম ইমামের পিছনে পড়লে চার রাকাত বিশিষ্ট নামায পুরোই পড়তে হবে।

-মুসনাদে আবু ইয়ালা ৫/৩৩০; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ২/৫৩১; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬৪; আলমাবসূত, সারাখসী ২/১০৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৩৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি একজন ব্যবসায়ী। বিনিয়োগকারীদের টাকা দিয়ে মুদারাবার ভিত্তিতে আমি ব্যবসা...

প্রশ্ন

আমি একজন ব্যবসায়ী। বিনিয়োগকারীদের টাকা দিয়ে মুদারাবার ভিত্তিতে আমি ব্যবসা করি। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে প্রায়ই আমাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যেতে হয়। যাতায়াত খরচ ও সফর অবস্থায় থাকা-খাওয়ার খরচ ব্যবসার টাকা থেকেই নিয়ে থাকি। কিছুদিন পূর্বে ব্যবসার কাজে ঢাকা যাওয়ার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় আমি মারাত্মকভাবে আহত হই। চিকিৎসার পেছনে অনেক টাকা ব্যয় হয়। এখন জানার বিষয় হল, উক্ত চিকিৎসার খরচ আমি ব্যবসার টাকা থেকে নিতে পারব কি না? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের অনুমতি ব্যতীত আপনার চিকিৎসা খরচ ব্যবসার টাকা থেকে নেওয়া জায়েয হবে না। হ্যাঁ, তারা অনুমতি দিলে নিতে পারবেন।

অবশ্য ব্যবসার প্রয়োজনে সফর করলে যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার সাধারণ খরচ ব্যবসার টাকা থেকে নিতে পারবেন।

-কিতাবুল আছল ৪/১৭-১৮০; আততাজরীদ ৭/৩৫১৭; মুজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়াহ, মাদ্দাহ : ১৪১৯; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ৪/৩৫৩, ৩৫৪; আলমাবসূত, সারাখসী ২২/৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ১৮/১৯৯; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১৪৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৩২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

(ক) মহিলারা বদলী হজ্ব করতে পারবে কি?(খ) এক মহিলার স্বামী...

প্রশ্ন

(ক) মহিলারা বদলী হজ্ব করতে পারবে কি?

(খ) এক মহিলার স্বামী ও সন্তান নেই। তার বয়স ৬৮ বছর। চলাফেরা করতে পারেন। তিনি কি তার হজ্ব কাউকে দিয়ে করাতে পারবেন?

উত্তর

(ক) স্বামী বা যথাযথ অভিভাবকের অনুমতি থাকলে এবং মাহরাম পুরুষ সাথে থাকলে মহিলারাও বদলী হজ্বে যেতে পারবে।-গুনইয়াতুন নাসিক ৩৩৭; মানাসিক মোল্লা আলী কারী, ৩৩৭; আল মাসালিক ফিল মানাসিক ২/৮৯৩; আলবাহরুল আমীক ৪/২২৬৮

(খ) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মহিলা বয়স্কা হলেও যেহেতু তিনি চলাফেরা করতে পারেন সুতরাং তার সাথে হজ্ব করার মত কোনো মাহরাম পুরুষ থাকলে তার জন্য বদলী হজ্ব করানো জায়েয হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাহরামের ব্যবস্থা না হলে তার জন্য বদলী হজ্ব করানো বা বদলী হজ্বের ওসিয়ত করে যাওয়া জরুরি হবে।

আর হজ্বের সফরে স্বামী বা পুত্র থাকা জরুরি নয়। বরং অন্য যে কোনো মাহরাম সঙ্গী (যেমন : ভাই, চাচা, মামা ইত্যাদি) পাওয়া গেলেও বদলী করানো যাবে না, নিজেই যাওয়া ফরয হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬১; ফাতহুল কাদীর ৩/৬৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৩১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

হুযুর গত তিন বছর আগে আমার দাদা মৃত্যুবরণ করেন। দাদার...

প্রশ্ন

হুযুর গত তিন বছর আগে আমার দাদা মৃত্যুবরণ করেন। দাদার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে দাদি হজ্ব করতে পারবেন এ পরিমাণ সম্পদ মিরাস হিসেবে পেয়েছেন। গত বছর দাদি তাঁর প্রতিবেশী এক লোকের সাথে হজ্ব করতে যান। জানার বিষয় হলো, বৃদ্ধা মহিলার জন্য কি পর-পুরুষের সাথে হজ্ব করতে যাওয়া বৈধ হবে? যদি বৈধ না হয় তাহলে তার হজ্ব কি আদায় হয়ে যাবে?

উত্তর

বৃদ্ধা মহিলার জন্যও মাহরাম ছাড়া হজ্বে যাওয়ার অনুমতি নেই। হাদীস শরীফে এসেছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া সফর না করে এবং মাহরাম না থাকা অবস্থায় কোনো পুরুষ যেন তার কাছে গমন না করে। তখন এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি অমুক সেনাদলের সাথে জিহাদে যেতে চাচ্ছি। কিন্তু আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চাচ্ছে। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে তুমি তার (স্ত্রীর) সাথেই হজ্বে যাও। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৮৬২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৩৮

আরেক হাদীসে এসেছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া হজ্ব করতে না যায়। সুনানে দারাকুতনী ২/২২৩

তারপরও কোনো মহিলা যদি মাহরাম ছাড়া হজ্ব আদায় করে তাহলে তার হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। তবে মাহরাম ছাড়া যাওয়ার কারণে গুনাহগার হবে।

উল্লেখ্য যে, মাহরাম ছাড়া হজ্বে গেলে অনেক জায়গায় মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়। সৌদী দূতাবাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় অন্যকে মাহরাম দেখাতে হয়। এজেন্সিওয়ালারা পরপুরুষকে মাহরাম হিসেবে দেখিয়ে তার ভিসার ব্যবস্থা করে থাকে। একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত করতে গিয়ে এভাবে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া খুবই ঘৃণিত কাজ এবং অন্যায়।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০০; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদদুর ১/৪৮৪; গুনয়াতুন নাসিক পৃ ২৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪০৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

এক মহিলা হজ্ব করবে। তার বড় ভাই সৌদীতে চাকরি করে।...

প্রশ্ন

এক মহিলা হজ্ব করবে। তার বড় ভাই সৌদীতে চাকরি করে। ঢাকা বিমান বন্দর পর্যন্ত তার সঙ্গে তার ছোট ভাই থাকবে। ঢাকা থেকে জেদ্দা বিমানবন্দর পর্যন্ত মামাতো বোন ও তার স্বামী সাথে থাকবে। জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে তার বড় ভাই তাকে নিয়ে যাবে এবং তার সঙ্গেই হজ্ব করবে। প্রশ্ন হল, সে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে জেদ্দা পর্যন্ত তার মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্ব করার জন্য যেতে পারবে কি?

উত্তর

মাহরাম ছাড়া নারীর জন্য হজ্বের সফরে যাওয়াও নিষেধ। মামাতো বোনের স্বামী মাহরাম নয়। তাই প্রশ্নোক্ত মহিলা মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্বে যেতে পারবে না। বরং স্বামী বা কোনো মাহরামের সাথেই যেতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুলস্নাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো মহিলা তার মাহরাম ব্যতিরেকে সফর করবে না এবং কোনো পুরুষ মাহরাম ছাড়া কোনো মহিলার নিকট যাবে না। অতপর এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক সৈন্যদলের সাথে জিহাদে যেতে চাই আর আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চায়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমিও তার সাথে হজ্বে যাও।

-সহীহ বুখারী ১/১৪৭, ১/২৫০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৪; মুখতাসারুত তহাবী ৫৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; যুবদাতুল মানাসিক ৩২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৮৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

গত রমযানে একদিন আমি রোযা রাখার পর ঢাকায় সফর করি।...

প্রশ্ন

গত রমযানে একদিন আমি রোযা রাখার পর ঢাকায় সফর করি। যাওয়ার পথে পিপাসা লাগায় সফরে আছি বলে পানি পান করি এবং অল্প নাস্তাও করি। পরে মনে পড়ে, আমি তো মুকীম অবস্থায় রোযা রেখেছি। তাই হুযুরের কাছে জানতে চাই, ঐ রোযা ভাঙ্গার কারণে কি আমার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় রোযা রাখার পর সফরের অজুহাতে রোযা ভেঙ্গে ফেলা জায়েয হয়নি। রোযা ভাঙ্গার কারণে গুনাহ হয়েছে। ঐ রোযাটি কাযা করে নিতে হবে এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

উল্লেখ্য, সফর অবস্থায় রোযা না রাখার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু মুকীম বা মুসাফির অবস্থায় রোযা রাখলে শুধু সফরের অজুহাতে তা ভেঙ্গে ফেলা জায়েয নয়।

-কিতাবুল আছল ২/১৬৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪০৩; ফাতহুল কাদীর ২/২৮৪; রদ্দুল মুহতার ২/৪৩১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২১৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৮৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

প্রায় দুই মাস আগে একটা ছেলের সাথে মালিহার বিবাহ হয়।...

প্রশ্ন

প্রায় দুই মাস আগে একটা ছেলের সাথে মালিহার বিবাহ হয়। বিবাহের একমাস পর সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্বামী মারা যায়। মালিহা এখন তার বাবার বাড়িতে ইদ্দত পালন করছে। ইতোমধ্যে তার বিবাহের প্রস্তাব আসা শুরু হয়েছে। মালিহার কানাডা প্রবাসী খালাতো ভাই সপনের পক্ষ থেকেও প্রস্তাব এসেছে। সপন একমাস পর আবার কানাডায় চলে যাবে। তাই সে চাচ্ছে, এই মাসের মধ্যেই বিবাহের কার্য সম্পন্ন করে ফেলতে। কিন্তু মালিহার ইদ্দত শেষ হতে এখনো প্রায় তিন মাস বাকি। জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় সপনের জন্য কি মালিহাকে বিবাহ করা জায়েয হবে?

উত্তর

স্ত্রী অন্তসত্ত্বা না হলে স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রীর জন্য চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব।

ইদ্দতকাল পূর্ণ হওয়ার আগে তাদেরকে বিয়ে করা ও বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া সবই নাজায়েয। ইদ্দতের ভেতর কোনো নারী বিবাহ করলে তা সহীহ হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) তোমরা (ইদ্দতের) নির্দিষ্টকাল পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ কার্য সম্পন্ন করার সংকল্পও করো না।-সূরা বাকারা : ২৩৫

অন্যত্র ইরশাদ করেন, (তরজমা) তোমাদের মধ্য হতে যারা স্ত্রীদের রেখে মৃত্যুবরণ করে তাদের স্ত্রীগণ চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে।-সূরা বাকারা : ২৩৪

অতএব প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সপনের জন্য মালিহাকে ইদ্দতের ভেতর বিবাহ করা জায়েয হবে না। এক্ষেত্রে সুযোগ থাকলে সপন তার সফরকে বিলম্বিত করবে। অন্যথায় মালিহার ইদ্দত চার মাস দশ দিন শেষ হওয়ার পর সপন তার কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন করিয়ে নিবে।

-তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৪২৬, ১/৪৩০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৩৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩১৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বাসা ঢাকা শহরের সিদ্ধেশ্বরীতে। আমি যখন বিদেশ যাই তখন...

প্রশ্ন

আমার বাসা ঢাকা শহরের সিদ্ধেশ্বরীতে। আমি যখন বিদেশ যাই তখন ঢাকা এয়ারপোর্টে মুকীম হব নাকি মুসাফির? অনুরূপভাবে যখন নৌপথে কোথাও যাব তখন সদরঘাটে অথবা নৌযানের উপর (ঘাট না ছাড়া পর্যন্ত) আমি মুকীম হব নাকি মুসাফির?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঢাকা এয়ারপোর্টে এবং সদরঘাটে আপনি পুরো নামায পড়বেন।

-কিতাবুল আছল ১/২৩২; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩০৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বাড়ি থেকে খুলনা শহর ৭১ কি. মি. এবং শহরের...

প্রশ্ন

আমার বাড়ি থেকে খুলনা শহর ৭১ কি. মি. এবং শহরের ভেতর ৫ কি.মি. দূরে আমার ভাইয়ের বাসা। আমি বাড়ি থেকে খুলনা গেলে মুকীম হব নাকি মুসাফির?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে খুলনা শহরে এবং আপনার ভাইয়ের বাড়িতে আপনি মুকীম থাকবেন। কেননা আপনার বাড়ি থেকে খুলনা শহর ও ভাইয়ের বাড়ির দূরত্ব সফর পরিমাণ (অর্থাৎ ৪৮ মাইল বা প্রায় ৭৮ কি.মি.) নয়। তাই আপনার বাড়ি থেকে সেখানে গেলে আপনাকে পূর্ণ নামাযই পড়তে হবে।

-রদ্দুল মুহতার ২/১২২; ফাতহুল কাদীর ২/৪; জাওয়াহিরুল ফিকহ ৩/৪২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২১৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

ক) কোনো ব্যক্তি শরয়ী মুসাফির হবে কোন জায়গা থেকে? নিজ...

প্রশ্ন

ক) কোনো ব্যক্তি শরয়ী মুসাফির হবে কোন জায়গা থেকে? নিজ ইউনিয়ন অথবা ওয়ার্ড থেকে বের হলে, নাকি শহর থেকে বের হলে? উদাহরণ স্বরূপ আমার বাড়ি ঢাকার জুরাইনে ৮৯ নং ওয়ার্ডে। এখানে যাবতীয় নাগরিক সুবিধা পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান। যথা-বাজার-ঘাট, চেয়ারম্যান-মেম্বার, সালিশ ও বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসনিক সকল সুবিধা ইত্যাদি। এ অবস্থায় আমি জুরাইন থেকে বের হলেই মুসাফির হব, নাকি জুরাইন থেকে আবদুল্লাহপুর (উত্তর দিকে ঢাকার শেষ প্রান্ত) পর্যন্ত প্রায় ৩০ কি.মি. পার হওয়ার পর ঢাকার বাইরে বের হলে মুসাফির হব?

খ) আমরা তাবলীগ জামাতে যাই। কাকরাইল থেকে আমাদেরকে ১টি ইউনিয়নে রোখ দেয় এবং আমরা ঐ ইউনিয়নে পৌঁছার পর স্থানীয় যিম্মাদার সাথীরা ঐ ইউনিয়নের ১৩টি মসজিদে (৩ দিন ঢ ১৩ দিন = ৩৯ দিন) ঠিক করে দেন। তখন সকল সাথী পূর্ণ ইতমিনানের সাথে ঐ মসজিদগুলোতে ৪০ দিন পূর্ণ করেন। কখনো মনে আসে না যে, আমাদেরকে কাকরাইল থেকে ডেকে নিবে এবং আমাদেরকে এমন হেদায়াত দেওয়াও হয় না যে, যে কোনো মুহূর্তে ডেকে আনা হবে। আর কখনো এমন দেখা যায়নি যে, কাকরাইল কোনো জামাতকে ফিরিয়ে এনেছে। আর যদি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা ঘটেও যায় তাহলে তা ধর্তব্য নয়। সুতরাং এ অবস্থায় কি চিল্লার জামাতে কসর পড়তে হবে নাকি পূর্ণ নামায পড়তে হবে? দয়া করে সঠিক সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

ক) সফরসম দূরত্বের উদ্দেশে নিজ এলাকার বসতি ত্যাগ করলে অর্থাৎ গ্রামের অধিবাসী নিজ গ্রাম ছাড়লে, শহরের অধিবাসী শহর ত্যাগ করলে এবং সিটি শহরে বসবাসকারী সিটি শহর থেকে বের হওয়ার পর থেকে মুসাফির গণ্য হবে।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনি জুরাইন থেকে বের হওয়ার পর মুসাফির গণ্য হবেন না। বরং উত্তর দিক দিয়ে ঢাকা সিটির শেষ অংশ টঙ্গী ব্রিজ থেকে মুসাফির গণ্য হবেন। কেননা জুরাইন ঢাকা সিটির অংশ।

খ) মুকীম হওয়ার জন্য একটি এলাকা অর্থাৎ একটি গ্রাম বা একটি শহরে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করতে হবে। এক ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে ১৫ দিনের নিয়ত করলে মুকীম হবে না।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় চিল্লার জামাত যদি ১টি ইউনিয়নের উদ্দেশে রোখ দেওয়া হয় তাহলেও তারা সেখানে মুকীম হবে না। মুসাফিরই থাকবে। তবে কোনো বড় গ্রাম বা শহরে যদি ১৫ দিন থাকার নিয়ত করা হয় তখন মুকীম গণ্য হবে।

-কিতাবুল আসল ১/২৬৭; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৯১; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৭০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২০৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বাড়ি চট্টগ্রামে। সেটাই আমার স্থায়ী ঠিকানা। আমি এখনো তা...

প্রশ্ন

আমার বাড়ি চট্টগ্রামে। সেটাই আমার স্থায়ী ঠিকানা। আমি এখনো তা ত্যাগ করিনি। তবে চাকরির সুবাদে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকি। মাঝেমধ্যে বাড়িতে যাই। সেখানে আববা-আম্মা ও ভাইবোনেরা থাকেন। কিছুদিন ধরে একটি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির মাধ্যমে আমাদের বাড়িটির পুননির্মাণ কাজ চলছে। এজন্য আববা-আম্মা, ভাইবোনেরা পাশেই একটি বাসা ভাড়া করে আছেন। এ অবস্থায় আমি যদি কোনো কাজে স্ত্রীকে নিয়ে ৪/৫ দিনের জন্য চট্টগ্রাম যাই তাহলে আমি কি মুসাফির হব, নাকি মুকীম?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনি যেহেতু চট্টগ্রামের ঐ বাড়ি পরিপূর্ণভাবে ত্যাগ করে ঢাকা বা অন্য কোথাও স্থায়ীভাবে থাকার নিয়ত করেননি তাই পূর্বের মতো সেখানে আপনি মুকীম থাকবেন।

সুতরাং ঐ এলাকার অন্য কোনো ভাড়া বাসায় অবস্থান করলেও আপনি মুকীম গণ্য হবেন।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯, ১/১৪২; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬, ২/১৩৮; রদ্দুল মুহতার ২/১২৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৮৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমাদের গ্রাম ফেনী শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। ঢাকা যাওয়ার...

প্রশ্ন

আমাদের গ্রাম ফেনী শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে আমি গ্রামের বাড়ি থেকে ফেনী শহর পর্যন্ত আসি। তখন যোহরের সময় হলে দুই রাকাত কসর পড়ে গাড়িতে উঠি। কিছুদূর যাওয়ার পর বাড়ি থেকে একটি জরুরি ফোন আসে। ফলে সেখান থেকে বাড়ি চলে আসি। বাড়ি ফেরার পরও যোহরের সময় বাকি ছিল। এতে আমার মনে সংশয় সৃষ্টি হয় যে, আমি সফরের উদ্দেশে বের হলেও যেহেতু সফরসম দূরত্ব অতিক্রম করার আগেই যোহরের সময়ের মধ্যে বাড়ি ফিরে এসেছি তাই আমাকে পুনরায় ঐ যোহরের নামায পড়তে হবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যখন যোহরের নামায আদায় করেছেন তখন যেহেতু আপনি সফর মুলতবি করেননি বরং ঐ সসয় মুসাফির অবস্থায়ই ছিলেন তাই আপনার ঐ যোহর নামায যথাযথভাবে আদায় হয়েছে। তাই পরবর্তীতে যোহরের ওয়াক্তের মধ্যে সফর বাতিল করে মুকীম হয়ে গেলেও ঐ নামায পুনরায় পড়তে হবে না।

-রদ্দুল মুহতার ২/১২২, ১১৫; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ১২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৩৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালি। আমি ঢাকায় একটি মাদরাসাতে অনেক বছর...

প্রশ্ন

আমার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালি। আমি ঢাকায় একটি মাদরাসাতে অনেক বছর যাবত পড়ালেখা করছি। একবার মাদরাসার বিরতিতে বাড়ি যাই এবং পরে বিশেষ প্রয়োজনে একদিনের জন্য বাড়ি থেকে মাদরাসায় আসি। সেদিনের নামায সম্পর্কে আমার এক শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করি যে, আমি নামায কসর করব, না পূর্ণ পড়ব? তিনি বললেন, তুমি এখন মুকীম। তাই পূর্ণ নামায আদায় কর। ফলে আমি পূর্ণ নামায পড়ে নিলাম। প্রশ্ন হল, আমার জন্য মুকীমের নামায আদায় করা কি যথার্থ হয়েছে?

উত্তর

আপনার শিক্ষক ঠিকই বলেছেন। আপনি ঢাকা সিটিতে প্রবেশ করলেই মুকীম হয়ে যাবেন। ঢাকা ত্যাগ করার নিয়তে সামানপত্র নিয়ে অন্যত্র চলে না যাওয়া পর্যন্ত শুধু সফরের কারণে অতনে ইকামত বাতিল হবে না। তাই অতনে ইকামত বহাল থাকা অবস্থায় সেখানে এক দু’ দিনের জন্য আসলেও আপনি মুকীম গণ্য হবেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১২১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তির হজ্ব কাফেলা আছে। তিনি বলেন, মাহরাম...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তির হজ্ব কাফেলা আছে। তিনি বলেন, মাহরাম ছাড়াও মহিলাদের হজ্বে যাওয়া জায়েয আছে। তিনি নিজেও গত বছর এমন দুজন মহিলাকে হজে নিয়ে গেছেন, যাদের সাথে কোনো মাহরাম ছিল না।

তাই আমি জানতে চাই-

ক) মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের হজ্বে যাওয়া জায়েয কি না এবং মাহরাম ব্যতীত মহিলাদেরকে হজ্বের সফরে নিয়ে যাওয়াটা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন হয়েছে? অর্থাৎ কী ধরনের অন্যায় হয়েছে?

উত্তর

মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের হজ্বের সফরে যাওয়া নাজায়েয। এ ব্যাপারে হাদীস শরীফে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন যে, কোনো পুরুষ বেগানা মহিলার নিকট একাকীত্বে অবস্থান করবে না এবং কোনো মহিলা মাহরাম পুরুষ ব্যতীত সফর করবে না। তখন জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তো অমুক যুদ্ধে যাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছি অথচ আমার স্ত্রী হজ্বের সফরে বের হয়ে গেছে (এখন আমি কী করব?) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্বে যাও। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৩০০৬)

আরেক বর্ণনায় এসেছে, আবু হুবায়রা রাহ. বলেন, ‘রাই’ এলাকার অধিবাসীনি জনৈকা মহিলা ইবরাহীম নাখায়ী রাহ.-এর নিকট এ মর্মে পত্র প্রেরণ করলেন যে, তিনি একজন বিত্তবান নারী। তার স্বামী ও কোনো মাহরাম পুরুষ নেই এবং এ পর্যন্ত তিনি হজ্বও করেননি। (এখন তিনি স্বামী বা মাহরাম পুরুষ ব্যতীত হজ্বে যেতে পারবেন কি?) প্রতি উত্তরে ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. লিখেছেন-

إن هذا من السبيل الذي قال الله وليس لك محرم فلا تحجي إلا مع بعل أو محرم

অর্থাৎ স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা হওয়া মহিলাদের হজ্বের সামর্থ্যের অন্তর্ভুক্ত, যে সামর্থ্যের কথা আল্লাহ তাআলা নিম্নোক্ত আয়াতে বলেছেন-

ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا

(তরজমা : মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বাইতুল্লাহ শরীফ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ্ব করা ফরয।) আর আপনার যেহেতু কোনো মাহরাম নেই তাই আপনি স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষ ব্যতীত হজ্ব করতে যাবেন না।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৫৪০০

সুতরাং স্বামী বা মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত মহিলা অপেক্ষা করবে। অবশেষে যদি মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা না হয় আর সে হজ্বে যেতে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়ে তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি হজ্ব করাবে কিংবা বদলি হজ্বের জন্য অসিয়ত করে যাবে। এর দ্বারাই তার হজ্বের ফরয দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে।

অতএব মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের হজ্বে যাওয়া জায়েয- এ সংক্রান্ত প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি ঠিক নয়। আর মাহরাম ব্যতীত মহিলাদেরকে হজ্বে নিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয কাজ ও অন্যায় হয়েছে। তাছাড়া মাহরাম ব্যতীত মহিলাকে হজ্বে নিয়ে যেতে হলে সৌদী দূতাবাস ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অফিসগুলোতে অন্যকে মাহরাম পরিচয় দিতে হয়, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ধোঁকা। তাই ঐ ব্যক্তির কর্তব্য হল, এ সকল গুনাহ থেকে খাঁটি মনে তওবা করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৮৭, ২/২৯৯, ১/৩৮৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৫৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমাদের বাড়ি কুড়িগ্রাম। আমি স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকি। মাঝেমধ্যে স্ত্রীকে...

প্রশ্ন

আমাদের বাড়ি কুড়িগ্রাম। আমি স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকি। মাঝেমধ্যে স্ত্রীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার খুব প্রয়োজন দেখা দেয়। আমার ব্যস্ততার কারণে স্ত্রীর সাথে যেতে পারি না। আর মাহরাম কেউ নেই, যাকে তার সঙ্গে পাঠাতে পারি। তাই আমার স্ত্রীকে ভালো গাড়িতে মহিলার পাশে বসিয়ে দেই। এভাবে সে কয়েকবার বাড়িতে গিয়েছে। এতে তার কোনো সমস্যা হয়নি। এভাবে বাড়ি পাঠানো শরীয়তসম্মত কি?

উত্তর

মাহরাম ব্যতীত স্ত্রীকে এভাবে একাকী পাঠানো জায়েয নয়। কেননা এক্ষেত্রে বাহ্যত কোনো সমস্যা দেখা না হলেও মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের এভাবে একাকী সফর করা শরীয়তে নিষদ্ধ। কারণ রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া সফর না করে।

-সহীহ মুসলিম ১/৪৩৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১১৪; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪০৭; রদ্দুল মুহতার ২/২৬৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৪৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পূর্বে সফর থেকে বাসায় পৌঁছে আসরের নামায...

প্রশ্ন

আমি সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পূর্বে সফর থেকে বাসায় পৌঁছে আসরের নামায আদায় করছিলাম। দুই রাকাত পড়ার পর মাগরিবের আযান হয়ে গেছে। অতপর বাকি নামায আদায় করেছি।

আমার ঐ নামায কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

হ্যাঁ, আপনার আসরের নামায আদায় হয়ে গেছে। তবে যথাসময়ে আদায় না করার কারণে আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। যথাসময়ে নামায আদায়ে যত্নবান হতে হবে।

-কিতাবুল আছল ১/১৫৪; কিতাবুল মাবসূত, সারাখসী ১/১৫২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৪০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার পিতামাতার বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার মোহাম্মদপুর গ্রামে। আমার...

প্রশ্ন

আমার পিতামাতার বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার মোহাম্মদপুর গ্রামে। আমার বিবাহ হয় রামগঞ্জ থানার হিরাপুর গ্রামে। স্বামী-সন্তানসহ আমি স্থায়ীভাবে হিরাপুরেই বসবাস করি। কখনো ঢাকায় এসে সফর শেষে আমার পৈত্রিক বাড়ি অর্থাৎ রামগঞ্জ থানাধীন মোহাম্মাদপুর গ্রামে এসে ৪-৫ দিন থেকে পরবর্তীতে স্বামীর সাথে হিরাপুর আসি। আমার জানার বিষয় হল, পৈত্রিক বাড়িতে অর্থাৎ মুহাম্মাদপুরে অবস্থানকালীন সময় আমি নামায পূর্ণ আদায় করব নাকি কসর করব?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনি যেহেতু স্থায়ীভাবে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করেন, পিত্রালয়ে বসবাস করেন না, তাই সফর থেকে এসে আপনি স্বামীর গ্রামে প্রবেশ না করে যদি সরাসরি আপনার পিত্রালয়ে যান এবং সেখানে পনের দিন অবস্থানের নিয়ত না করেন তবে আপনি মুসাফির থাকবেন এবং নামায কসর পড়বেন। কিন্তু যদি সফর থেকে এসে স্বামীর বাড়ির এলাকায় আগে প্রবেশ করেন তাহলে ঐ গ্রামে যাওয়ামাত্র মুকীম হয়ে যাবেন। সুতরাং সেখান থেকে নিজ পিত্রালয়ে গেলে মুকীমই থাকবেন।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩৮৮; শরহুল মুনইয়াহ ৫৪৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২০৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৩৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

রাশেদ কিছুদিন আগে তার নিজ বাড়ি (চট্টগ্রাম) থেকে ঢাকায় তিন...

প্রশ্ন

রাশেদ কিছুদিন আগে তার নিজ বাড়ি (চট্টগ্রাম) থেকে ঢাকায় তিন দিনের সফরে আসে। সে সময় তার দ্বিতীয় দিনের আসরের নামায কাযা হয়ে যায়। এখন সে নিজ বাড়িতে এসে তা কাযা করলে চার রাকাত কাযা করবে না দুই রাকাত?

উত্তর

রাশেদ সেই দিনের আসরের নামায বাড়িতে এসে আদায় করলেও দুই রাকাতই পড়বে, চার রাকাত নয়। কারণ সফর অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায কাযা হয়ে গেলে তা মুকীম অবস্থায় আদায় করলেও দুই রাকাতই পড়তে হয়।

-কিতাবুল আছল ১/২৬৮; রদ্দুল মুহতার ২/১৩৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫১৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৩৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

মুসাফির ব্যক্তি যদি চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামাযে দুই রাকাত...

প্রশ্ন

মুসাফির ব্যক্তি যদি চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামাযে দুই রাকাত কসর না পড়ে ভুলে চার রাকাত পড়ে ফেলে তাহলে তার নামায আদায় হবে কি?

উত্তর

মুসাফির ব্যক্তি কসর না করে যদি ভুলে চার রাকাতই পড়ে নেয় সেক্ষেত্রে দেখতে হবে সে দুই রাকাতের পর বৈঠক করেছে কি না, যদি করে থাকে তাহলে তার ঐ ফরয নামায আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে প্রথম দুই রাকাত ফরয এবং শেষ দুই রাকাত নফল হবে। আর ঐ ভুলের কারণে তাকে সাহু সিজদা করতে হবে। হাসান বসরী রাহ. বলেন, কোনো মুসাফির ভুলে যোহরের নামায চার রাকাত পড়ে নিলে সাহু সিজদা করবে।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৫৪১

আর দুই রাকাত শেষে যদি বৈঠক না করে তবে তার ফরয বাতিল হয়ে ঐ নামায নফল হয়ে যাবে। তাই এ অবস্থায় তাকে পুনরায় দুই রাকাত ফরয পড়ে নিতে হবে।-মারাকিল ফালাহ ২৩১; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০১২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কাকরাইল মসজিদ থেকে ৪০ দিনের জন্য কোনো জামাত ৪৮ মাইলের...

প্রশ্ন

কাকরাইল মসজিদ থেকে ৪০ দিনের জন্য কোনো জামাত ৪৮ মাইলের বেশি দূরের এলাকায় গেলে তারা কি সেখানে মুসাফির গণ্য হবে না মুকীম হবে?

উত্তর

কোনো জামাত সফরসম দূরত্ব অতিক্রম করে কোনো এলাকায় পৌঁছার পর যদি একটি গ্রাম বা সিটিতে ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করে, তবে তারা মুকীম গণ্য হবে এবং পূর্ণ নামাযই আদায় করবে।

আর যদি এক ইউনিয়নের কয়েক গ্রামে কিংবা শহর ও গ্রাম মিলে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করে তবে তারা মুসাফির গণ্য হবে। তখন মুসাফির ইমামের পিছনে অথবা একাকী নামায পড়লে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায দুই রাকাত কছর পড়বে। অবশ্য মুকীম ইমামের পিছনে জামাতে নামায আদায় করলে পুরো চার রাকাতই পড়তে হবে।

-কিতাবুল আছল ১/২৬৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৭০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৯১; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩০; শরহুল মুনইয়াহ ৫৪২; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৬৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি চামড়ার মোজা পরিধান করলে মুকীম অবস্থায় পূর্ণ একদিন মাসাহ...

প্রশ্ন

আমি চামড়ার মোজা পরিধান করলে মুকীম অবস্থায় পূর্ণ একদিন মাসাহ করি। মাঝেমধ্যে অযু থাকাবস্থায় মাসহের সময়সীমা শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় পবিত্রতার জন্য পুনরায় অযু করতে হবে, নাকি মোজা খুলে শুধু পা ধুয়ে নিলেই চলবে?

উত্তর

অযু থাকা অবস্থায় মোজার উপর মাসহের সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে মোজা খুলে শুধু পা ধুয়ে নিলেই চলবে। নতুন করে অযু করা জরুরি নয়। তবে এ অবস্থায় নতুনভাবে অযু করে নেওয়া উত্তম।

-কিতাবুল আছার ১/৫৪; কিতাবুল আছল ১/৯২; আলমাবসূত ১/১০৩; রদ্দুল মুহতার ১/২৭৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৫২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

এ বছর আমার আববার উপর হজ্ব ফরয হয়েছে। তাই তিনি...

প্রশ্ন

এ বছর আমার আববার উপর হজ্ব ফরয হয়েছে। তাই তিনি বিলম্ব না করে এ বছরই হজ্বের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু পথিমধ্যেই তিনি মারা যান। ফলে তিনি ফরয হজ্ব আদায় করে যেতে পারেননি। জানার বিষয় হল, আমার আববার যিম্মায় ঐ ফরয হজ্ব থেকে গেছে কি না? তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করানো জরুরি কি না?

উল্লেখ্য, মৃত্যুর সময় এ ব্যাপারে তিনি কোনো অসিয়ত করে যাননি।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার পিতা যেহেতু হজ্ব আদায়ে বিলম্ব করেননি; বরং হজ্ব ফরয হওয়ার পর সে বছরই হজ্বের সফরে বেরিয়ে গেছেন তাই এই পরিস্থিতিতে তার জন্য বদলি হজ্বের অসিয়ত করে যাওয়া জরুরি ছিল না। আর তিনি যেহেতু অসিয়ত করে যাননি তাই আপনাদের উপরও তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করানো জরুরি নয়। তবে আপনারা চাইলে তার পক্ষ থেকে নফল হিসেবে হজ্ব করাতে পারবেন।

-ফাতহুল কাদীর ২/৩২৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৮৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক আমাদের বাড়ি থেকে শত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গত...

প্রশ্ন

সীতাকুন্ড ইকোপার্ক আমাদের বাড়ি থেকে শত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গত রমযানে আমরা দুই বন্ধু সেখানে ঘুরতে গেলাম। দুপুরের দিকে কষ্ট হচ্ছিল বলে আমি রোযা ভেঙ্গে ফেলি। কিন্তু আমার বন্ধু ভাঙ্গেনি। তার মত ছিল আনন্দ ভ্রমণের সামান্য কষ্টের অজুহাতে রোযার মতো গুরুত্বপূর্ণ আমল নষ্ট করা কিছুতেই সঙ্গত হবে না। জানার বিষয় হল, আমার বন্ধুর মত ঠিক কি না? ঠিক হলে আমার উপর কাফফারা আসবে কি না?

উত্তর

রমযানে রোযা রাখা অবস্থায় দিনের বেলা সফরে বের হলে সাধারণ কষ্টের কারণে রোযা ভাঙ্গাজায়েয নয়। তবে এক্ষেত্রে কেউ রোযা ভেঙ্গে ফেললে এর কারণে তাকে কাযা আদায় করতে হবে।কাফফারা আদায় করতে হবে না।

উল্লেখ্য যে, সফর অবস্থায় রোযার বিধান সম্পর্কে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে। এক্ষেত্রে মাসআলাহল, সফরে থাকা অবস্থায় দিনের শুরু থেকে রোযা না রাখার সুযোগ আছে। কিন্তু সফর অবস্থায়রোযা শুরু করে দিলে অথবা রোযা রেখে দিনের বেলায় সফরে বের হলে কঠিন ওজর ছাড়া রোযাভাঙ্গার অনুমতি নেই।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/২৭০, হাদীস : ৭৭৬৬; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/৪৬৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪০৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমাদের ফ্যাক্টরির ভেতরই কর্মচারীদের থাকার ব্যবস্থা আছে। মুরগীর জন্য মহাক্ষতিকর...

প্রশ্ন

আমাদের ফ্যাক্টরির ভেতরই কর্মচারীদের থাকার ব্যবস্থা আছে। মুরগীর জন্য মহাক্ষতিকর ভাইরাসজনিত সমস্যার কারণে কর্মচারীদের বাইরে যাওয়া নিষেধ থাকে। ফলে সকলেই পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফ্যাক্টরির ওয়াক্তিয়া নামায ঘরেই আদায় করে থাকে। একই সমস্যার কারণে তাদেরকে জুমআর জন্যও বাইরের মসজিদে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না। এখন তাদের জন্য ফ্যাক্টরির ওয়াক্তিয়া নামায ঘরে জুমআ পড়া জায়েয হবে কি না? না কি যোহর পড়তে হবে। নামায ঘরটি ওয়াকফিয়া মসজিদ নয়। অনেকের ধারণা, জুমআ আদায়ের জন্য জামে মসজিদে যেতে হবে। শুধু মসজিদ হলেও চলবে না। এটা ঠিক কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কারণে কর্মচারী ও ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে অবস্থানকারী অন্যান্য মুসল্লিদের জন্য উক্ত নামায ঘরে জুমআ আদায় করা সহীহ হবে। জুমআর জন্য ওয়াকফিয়া মসজিদ হওয়া শর্ত নয়। তদ্রূপ জামে মসজিদ হওয়াও শর্ত নয়। তবে নিয়ম হল, যে কোনো ফরয নামাযই ওয়াকফকৃত শরয়ী মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করা। তদ্রূপ জুমআর ক্ষেত্রেও সাধারণ নিয়ম হল, ছোট ছোট জামাত না করে একত্রে এলাকার বড় কোনো জামে মসজিদে আদায় করা।

উল্লেখ্য, ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে জুমআ পড়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও জুমআ না পড়ে যোহর পড়া জায়েয হবে না। কারণ যে জায়গার জন্য জুমআর বিধান প্রযোজ্য সেখানে মুকীমদের জন্য জুমআ পড়া ফরয। বিনা ওযরে জুমআ না পড়ে যোহর পড়া বৈধ নয়।

-সহীহ বুখারী ১/৪৭; ফাতহুল বারী ১/৫৭১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫১; রদ্দুল মুহতার ২/১৫২; মিনহাতুল খালিক ২/১৫১; ফাতাওয়া উসমানী ১/৫৭৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮২৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

ঈদ ও বিভিন্ন ছুটির দিনগুলোতে দেখা যায়, এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী...

প্রশ্ন

ঈদ ও বিভিন্ন ছুটির দিনগুলোতে দেখা যায়, এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী ট্রেনের আগাম টিকেট ক্রয় করে তা ক্রয়মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে। আবার কখনো এমন হয় যে, কোনো যাত্রী ট্রেনের আগাম টিকেট ক্রয়ের পর সফরের সিদ্ধান্ত বাদ দেওয়ার কারণে তা অন্যত্র বিক্রি করতে বাধ্য হন। এখন আমার জানার বিষয় হল, এই উভয় ক্ষেত্রে টিকেট অন্যত্র বিক্রি করা যাবে কি না? আর বিক্রি করা গেলে ক্রয়মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করতে পারবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোল্লিখিত উভয় ক্ষেত্রে ক্রয়মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে টিকেট বিক্রি করা যাবে না। অবশ্য প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ক্রয়মূল্যে বা তার চেয়ে কমে বিক্রি করা যাবে। আর অন্যের কাছে বেশি মূল্যে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে টিকেট ক্রয় করা এবং এ ধরনের কারবারকে পেশা বানানো জায়েয নয়।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১৪৯৭৩; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১৩/৬৯৩, হাদীস : ২৩৭৬০; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২৬৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৯১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৭২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি একটি কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। ব্যবসায়িক কাজে আমাকে প্রায় রমযানেই...

প্রশ্ন

আমি একটি কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। ব্যবসায়িক কাজে আমাকে প্রায় রমযানেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সফর করতে হয়। সফর অপেক্ষাকৃত আরামদায়ক হলেও সফর তো সফরই। তদুপরি ক্ষুধা-তৃষ্ণাসহ শারীরিক দুর্বলতা জনিত কারণে সফর আরো কষ্টকর হয়ে উঠে। এ রমযানেও সফর করতে হয়েছে। প্রশ্ন হল, দিনের শুরুতে যেহেতু আমি মুকীম, তাই আমি রোযা রাখি। এখন সফরে বের হওয়ার পর সফরের ওজরে আমি রোযা ভাঙ্গতে পারব কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মুকীম অবস্থায় রোযা শুরু করার পর সফরে বের হয়ে সাধারণ কষ্টের কারণে রোয ভাঙ্গা জায়েয নয়। তবে কখনো রোযা রাখা যদি অস্বাভাবিক কষ্টকর হয়ে যায় এবং পানাহার না করলে অসুস্থ হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে তখন রোযা ভাঙ্গা জায়েয। এ হুকুমটি সকল রোযাদারের জন্যই প্রযোজ্য। বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত হাসান বসরী রাহ. বলেন, যখন রমযান মাসে কোনো ব্যক্তি রোযা রাখে, অতপর সফরের ইচ্ছায় বাহির হয় তবে সে যেন ওই দিন রোযা না ভাঙ্গে। অবশ্য তার যদি অধিক পিপাসিত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা হয় তাহলে রোযা ভাঙ্গবে এবং পরবর্তীতে এর কাযা করে নিবে।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/২৭০, হাদীস : ৭৭৬৬; উমদাতুল কারী ১১/৪৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪৩১; ফাতহুল কাদীর ২/২৮৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৪৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৭০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

একজন ব্যক্তির উপর হজ্ব ফরয হয়নি। কিন্তু তিনি যদি হাদিয়ার...

প্রশ্ন

একজন ব্যক্তির উপর হজ্ব ফরয হয়নি। কিন্তু তিনি যদি হাদিয়ার টাকা দিয়ে হজ্ব করেন তাহলে তার ফরয হজ্ব আদায় হবে কি? পরবর্তীতে তিনি বদলি হজ্ব করতে পারবেন কি না? একই সময়ে অর্থাৎ একই সফরে ফরয হজ্ব এবং বদলি হজ্ব করা যায় কি না? আবার একই সফরে নফল হজ্ব ও বদলি হজ্ব করা যায় কি না?

উত্তর

সুনির্দিষ্টভাবে নিজের নফল হজ্ব বা অন্য কারো বদলি হজ্বের নিয়ত না করলে হাদিয়ার টাকা দিয়ে হজ্ব করলেও তা দ্বারা নিজের ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। সুতরাং ঐ ব্যক্তি পরবর্তীতে হজ্ব আদায়ে সামর্থবান হলেও তার উপর দ্বিতীয়বার হজ্ব করা ফরয হবে না। আর এই ব্যক্তি পরবর্তীতে বদলি হজ্বও করতে পারবে।-মানাসিক ৬২; গুনইয়াতুন নাসিক ৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৭৫

এক বছরে এক ব্যক্তি কেবল একটি হজ্ব আদায় করতে পারে। তাই কেউ যদি নিজের ফরয বা নফল হজ্ব আদায়ের নিয়ত করে তাহলে ঐ বছর সে অন্য কারো পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করতে পারবে না। এমনিভাবে কারো পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব আদায় করলে তা বদলিই হবে। হজ্বকারী সওয়াবের ভাগী হবে বটে, কিন্তু ঐ হজ্ব দ্বারা নিজের ফরয বা নফল হজ্ব আদায় হবে না।

-মানাসিক ৪৪৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০২; রদ্দুল মুহতার ২/৬০১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৬১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

মোজার উপর মাসাহ করার সময়সীমা মুকীমের জন্য একদিন একরাত আর...

প্রশ্ন

মোজার উপর মাসাহ করার সময়সীমা মুকীমের জন্য একদিন একরাত আর মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত। এখন জানার বিষয় হল, পবিত্র অবস্থায় মোজা পরার পর মুকীমের জন্য মাসাহর সময়সীমা ২৪ ঘণ্টা নাকি পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করা পর্যন্ত। জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

মোজার উপর মাসেহর সময়সীমা মুকীমের জন্য ২৪ ঘণ্টা ও মুসাফিরের জন্য ৭২ ঘণ্টা। এটি পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের ওয়াক্তের সাথে সম্পৃক্ত নয়। আর মাসেহর সময়সীমা শুরু হবে পবিত্রতা হাসিল করে মোজা পরিধান করার পর উক্ত পবিত্রতা ভঙ্গ হওয়ার সময় থেকে। এ প্রসঙ্গে আলী রা. হতে বর্ণিত হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মোজার উপর মাসেহর সময়সীমা) মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত আর মুকীমের জন্য একদিন একরাত নির্ধারণ করেছেন।

-সহীহ মুসলিম ১/১৩৫; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১১২৬; শরহুল মুনইয়া ১০৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৭১; আসসিআয়াহ ১/৫৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৫৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমাদের বাড়ি থেকে বি বাড়িয়া শহর দুই কিলোমিটার দূরে এবংবি.বাড়িয়া...

প্রশ্ন

আমাদের বাড়ি থেকে বি বাড়িয়া শহর দুই কিলোমিটার দূরে এবং

বি.বাড়িয়া রেলস্টেশন আমাদের বাড়ি থেকে চার কিলোমিটার দূরে বি বাড়িয়া শহরে অবস্থিত। আমাদের বাড়ি থেকে বি বাড়িয়া শহর পর্যন্ত রাস্তার দু পার্শ্বে বাড়িঘর আছে। এখন আমার জানার বিষয় হল :

ক) আমি যদি চট্টগ্রামে যাই তাহলে যাওয়া এবং আসার সময় বি বাড়িয়া রেলস্টেশনে নামায কসর পড়ব কি না?

খ) সফরের উদ্দেশে বের হলে বলা হয়, এলাকার বাইরে থেকে কসর শুরু হয়। এক্ষেত্রে এলাকা বলতে কী বুঝায়?

উল্লেখ্য, বি বাড়িয়া শহর আমাদের ইউনিয়নের বাইরে।

উত্তর

বি.বাড়িয়া রেলস্টেশন যেহেতু আপনার গ্রামের বাইরে অবস্থিত তাই চট্টগ্রামে যাওয়া এবং চট্টগ্রাম থেকে আসার পথে বি বাড়িয়া রেলস্টেশনে আপনি মুসাফির গণ্য হবেন। সুতরাং উক্ত রেলস্টেশনে আপনি নামায কসর পড়বেন।

খ) এলাকা দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বসবাসের আবাদি অঞ্চল। অর্থাৎ গ্রামে বসবাসকারীর জন্য তার নিজের গ্রাম আর শহরে বসবাসকারীর জন্য শহরের নির্ধারিত সীমানা তার এলাকা হিসেবে গণ্য হবে।

-শরহুল মুনইয়া ৫৩৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১; মাজমাউল আনহুর ১/২৩৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭০১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার চাচা এক ব্যক্তির নিকট থেকে ৮ লক্ষ টাকায় একটি...

প্রশ্ন

আমার চাচা এক ব্যক্তির নিকট থেকে ৮ লক্ষ টাকায় একটি প্রাইভেট কার ক্রয় করেছে। নগদ ৪ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছে। আর বাকি ৪ লক্ষ টাকা এক বছর পর পরিশোধ করবেন বলে চুক্তি হয়েছে। কিন্তু চার মাস পর ঐ ব্যক্তির টাকার প্রয়োজন হওয়ায় চাচাকে অবশিষ্ট ৪ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে বলেন। তখন চাচা বলেছেন, যদি ৫০ হাজার টাকা কম নেওয়া হয় তাহলে তিনি বাকি মূল্য পরিশোধ করবেন। অন্যথায় এক বছর পরই টাকা নিতে হবে। ঐ ব্যক্তি চাচার কথায় ৫০ হাজার টাকা কম নিতে রাজি হয়েছে এবং চাচা তাকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দিয়েছেন।

জানার বিষয় হল, চাচার জন্য ৫০ হাজার টাকা কম দেওয়া কি ঠিক হয়েছে?

উত্তর

বাকি বা কিস্তিতে বেচা-কেনার ক্ষেত্রে নির্ধারিত মেয়াদের আগে মূল্য পরিশোধ করলে নির্ধারিত মূল্য থেকে কম নিবে-এমন শর্ত করা হারাম। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার চাচার জন্য নির্ধারিত মেয়াদের আগে পরিশোধের শর্তে ৫০ হাজার টাকা কম দেওয়া হারাম হয়েছে। ঐ টাকা বিক্রেতাকে ফেরত দেওয়া জরুরি।

হযরত আবু সালেহ রাহ. বলেন, আমি বাজারের লোকদের কাছে বাকিতে কিছু কাপড় বিক্রি করেছি। (চুক্তি হয়েছে) একটি নির্দিষ্ট সময় তারা মূল্য পরিশোধ করবে। অতপর আমি (যখন) কূফা সফরে যাওয়ার ইচ্ছা করলাম তখন (নির্ধারিত মেয়াদের আগে) তারা আমার কাছে এসে বলল, যদি তাদের থেকে মূল্যের কিছু অংশ কমিয়ে দেই তবে তারা এখনই পরিশোধ করে দিবে। (আবু সালেহ বলেন) আমি এ বিষয়টি যায়েদ ইবনে ছাবিত রা.কে জানালাম। তিনি বললেন, আমি তোমাকে এটি গ্রহণ করা কিংবা অন্যকে দেওয়ার অনুমতি দিতে পারি না। (সুনানে বায়হাকী, হাদীস : ১১৩৮)

আরেকটি বর্ণনায় এসেছে-হযরত মায়সারা রাহ. বলেন, আমি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা.কে জিজ্ঞাসা করলাম, এক ব্যক্তির নিকট আমার কিছু মেয়াদি ঋণ ছিল। (মেয়াদের আগেই) তাকে বললাম, আমার পাওনা দিয়ে দাও, কিছু কমিয়ে দিব। (এটা বৈধ কি না?) তিনি বললেন, এমনটি করা সুদ। (আহকামুল কুরআন জাসসাস ১/৪৬৭)

প্রকাশ থাকে যে, মেয়াদের আগে মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে যদি কম নেওয়ার বা দেওয়ার শর্ত না করা হয় এবং এমন কোনো প্রচলিত রীতিও না থাকে; বরং পাওনাদার নিজ থেকেই কিছু মূল্য কমিয়ে নেয় তবে তা সুদ বা নাজায়েয হবে না। এক্ষেত্রে বিক্রেতা স্বেচ্ছায় কিছু টাকা কম নিলে ক্রেতার জন্য ঐ পরিমাণ টাকা রেখে দেওয়া বৈধ হবে।

-মুয়াত্তা ইমাম মালেক ২৭৮-২৭৯; সুনানে বায়হাকী, হাদীস : ১১৩৮; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮/৭১; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ১/৪৬৭; হেদায়া ৩/২৫১; আলবাহরুর রায়েক ৭/২৫৭; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৬/১০৯; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যা মুআছিরা ১/২৫-২৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৯৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কোনো মুসাফির যদি রমযানের রোযা রেখে দিনের বেলা ইচ্ছাকৃত তা...

প্রশ্ন

কোনো মুসাফির যদি রমযানের রোযা রেখে দিনের বেলা ইচ্ছাকৃত তা ভেঙ্গে ফেলে তাহলে তার উপর কাযা ও কাফফারা উভয়টি ওয়াজিব হবে, নাকি কাযা করলেই যথেষ্ট?

উত্তর

মুসাফিরকে ঐ রোযার কাযা করতে হবে। কাফফারা আদায় করতে হবে না। তবে বিনা ওজরে এভাবে রোযা ভেঙ্গে ফেলা অন্যায়। কেননা মুসাফিরের জন্য সফর অবস্থায় দিনের শুরু থেকেই রোযা না রাখার অনুমতি আছে। সুতরাং কোনো মুসাফির রোযা না রাখার ইচ্ছা করলে রোযা না রাখা অবস্থায় দিন শুরু করবে। কিন্তু যদি এই ছাড়ের উপর আমল না করে রোযা শুরু করে দেয় তবে বিনা ওজরে তার জন্য তা ভঙ্গ করা জায়েয নয়; বরং ঐ রোযা পুরো করা তার উপর জরুরি হয়ে যায়। এতদসত্ত্বেও কেউ যদি এ রোযা ভেঙ্গে ফেলে তবে এর কারণে তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হবে না। পরবর্তীতে শুধু কাযা করে নিলেই চলবে।

-মুসনাদে আবু হানীফা ১০৯-১১০; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ২/৪৩২; কিতাবুল আছল ২/২০৬; ফাতহুল কাদীর ২/২৮৪; সহীহ বুখারী ১/২৬১; সহীহ মুসলিম ১/৩৫৫-৩৫৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৫০৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৪০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৮০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বন্ধু আমাকে মুদারাবা চুক্তিতে ৩ লক্ষ টাকা দিয়েছে। আমাদের...

প্রশ্ন

আমার বন্ধু আমাকে মুদারাবা চুক্তিতে ৩ লক্ষ টাকা দিয়েছে। আমাদের উভয়ের বাড়ি চট্টগ্রামে। ব্যবসার প্রয়োজনে আমাকে কখনো কখনো ঢাকা যেতে হয়। চুক্তিপত্রে শর্ত করা হয়েছে যে, প্রয়োজনে কখনো ঢাকা গেলে পানাহার খরচ নিজেকে বহন করতে হবে। তবে যাতায়াত খরচ ব্যবসার মূলধন থেকে নিতে পারবে। এই শর্ত কি ঠিক হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত চুক্তিতে সফরে খাবার খরচ ব্যবসায়ীকে দিতে হবে-এ শর্ত করা সহীহ হয়নি। কারণ মুদারাবা কারবারে ব্যবসার উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ী দূরে কোথাও গেলে তার যাতায়াত ও থাকা-খাওয়া সংক্রান্ত খরচ ব্যবসার খরচ হিসেবে ধর্তব্য হবে। এ খরচগুলো ব্যবসায়ীর উপর চাপানো জায়েয নয়। তবে এ কারণে চুক্তি বাতিল হবে না; শুধু শর্তটা বাতিল গণ্য হবে। বিশিষ্ট তাবেয়ী খালিদ ইবনে আবু ইমরান রাহ. বলেন, ‘আমি কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ ও সালেম ইবনে আবদুল্লাহকে জিজ্ঞাসা করেছি যে, মুদারিব (ব্যবসার মাল থেকে) ন্যায়সঙ্গতভাবে পানাহার, পরিধেয় বস্ত্র ও যাতায়াত খরচ নিতে পারবে কি না? উত্তরে তারা উভয়ে বলেছেন, হ্যাঁ, ব্যবসা সংক্রান্ত খরচ নিতে কোনো অসুবিধা নেই।’

মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১১/১৪২; মাবসূত, সারাখসী ২২/৬২; আলইখতিয়ার লিতালীলিল মুখতার ৩/২৪; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া পৃ. ৩৩০; শরহুল মাজাল্লাহ ৪/৩৫৩, মাদ্দাহ : ১৪১৯; রদ্দুল মুহতার ৫/৬৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৬২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি ঢাকায় চাকরি করি। আমার বাড়ি সিলেট। এক মাস পর...

প্রশ্ন

আমি ঢাকায় চাকরি করি। আমার বাড়ি সিলেট। এক মাস পর পর ৪/৫ দিনের ছুটিতে বাড়ি যাই। ছুটির মধ্যে কখনো ১/২ দিনের জন্য জরুরি কাজে চাকুরিস্থলে আসতে হয়। জানার বিষয় হল, দু’ একদিনের জন্য চাকরিস্থলে এলে আমি মুকিমের নামায পড়ব না মুসাফিরের?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চাকরিস্থল ঢাকায় দু’ একদিনের জন্য এলেও আপনি মুকিম গণ্য হবেন। তাই কসর নয়, পুরা নামাযই পড়তে হবে।

শরহুল মুনইয়া ৫৪৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৭২৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৪৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি একজনের কাছ থেকে এভাবে চুক্তিতে ১০ হাজার টাকা নিয়েছি...

প্রশ্ন

আমি একজনের কাছ থেকে এভাবে চুক্তিতে ১০ হাজার টাকা নিয়েছি যে, আমি কাপড়ের ব্যবসা করব। এতে যা লাভ হবে এর দুই তৃতীয়াংশ আমার আর এক তৃতীয়াংশ তার। সাথে সাথে পুঁজিদাতা এই শর্তও দিয়েছেন যে, কাপড় আনার জন্য যখন ঢাকায় যাবে তখন আসা বা যাওয়ার একটি ভাড়া তোমার পকেট থেকে দিবে। আরেকটির ভাড়া ব্যবসা থেকে যাবে। জানতে চাই, ভাড়ার ব্যাপারে উক্ত শর্তারোপ সঠিক হয়েছে কি না।

উত্তর

উত্তর : প্রশ্নোক্ত কারবারে ব্যবসার কাজে যাতায়াতের ভাড়ার বিষয়ে ঐ শর্ত করা ঠিক হয়নি। কারণ একজনের পুঁজি ও অন্যের শ্রম কারবারে একমাত্র ব্যবসার উদ্দেশ্যে কোথাও সফর হলে সফরের যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার বাস্তব খরচ ব্যবসা (মুদারাবা ফান্ড) থেকেই যাবে। এ খরচ ব্যবসায়ীর উপর আরোপ করা অন্যায়। বিখ্যাত তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, মুদারিব (ব্যবসায়ী) ন্যায্যভাবে খরচ করবে। এরপর ব্যবসায় লাভ হলে ঐ খরচ লভ্যাংশ থেকে বাদ যাবে নতুবা মূল পুঁজি থেকে বাদ যাবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২১৭০৭)

তাবেয়ী সালেম ও কাসেম রাহ. বলেন, ব্যবসার উদ্দেশ্যে সফর হলে ব্যবসায়ী ন্যায্যভাবে খানাপিনা ও বাহনের খরচ (ব্যবসা থেকে) নিতে অসুবিধা নেই।

-প্রাগুক্ত ২১৭১০; শরহুল মাজাল্লাহ ৪/৩৫৩, মাদ্দা : ১৪১৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৪৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কিছু দিন আগে এক দেশে আইন করা হয় যে, মহিলারা...

প্রশ্ন

কিছু দিন আগে এক দেশে আইন করা হয় যে, মহিলারা বোরকা পরতে পারবে, তবে চেহারা ঢাকতে পারবে না। তাদেরকে মুখমন্ডল খোলা রাখতে হবে। এ বিষয়ে একজন বললেন, এতে শরীয়ত-বিরোধী কিছু নেই। কারণ মহিলাদের চেহারা ঢাকতে হবে এমন কথা কুরআন-হাদীসে নেই। তাই চেহারার পর্দা জরুরি নয়। তার এ কথা কতটুকু সত্য? দলীল-প্রমাণসহ বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর

ঐ ব্যক্তির কথা ঠিক নয়। পরপুরুষের সামনে নারীকে তার চেহারা ঢেকে রাখতে হবে। এটি কুরআন-সুন্নাহর বিধান। উম্মাহাতুল মুমিনীন ও অন্যান্য সাহাবিয়ার আমল দ্বারাও তা প্রমাণিত। নিম্নে কয়েকটি দলীল উল্লেখ করা হল।

কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, হে নবী! আপনি বলুন, নিজের স্ত্রী-কন্যা ও মুমিনদের স্ত্রীগণকে, তারা যেন টেনে নেয় নিজেদের উপর তাদের চাদরের কিছু অংশ। (সূরা আহযাব : ৫৯)

এ আয়াতের তাফসীরে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, আল্লাহ তাআলা মুমিনদের স্ত্রীগণকে আদেশ করেছেন, তারা যখন কোনো প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে তখন যেন মাথার উপর থেকে চাদর টেনে নিজেদের চেহারা ঢেকে নেয়। এবং শুধু এক চোখ খোলা রাখে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর ৩/৮২৪)

ইমাম জাসসাস রাহ. বলেন, এই আয়াতে যুবতী নারীদেরকে পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখার আদেশ করা হয়েছে। (আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৩৭২)

আরো দেখুন : তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৫৬; জামেউল বয়ান, তবারী ১০/৩৩১; তাফসীরে রূহুল মাআনী ২২/৮৮

আম্মাজান হযরত আয়েশা রা. হজ্বের সফরের বিবরণ দিয়ে বলেন, আমরা ইহরাম অবস্থায় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। আমাদের পাশ দিয়ে অনেক কাফেলা অতিক্রম করত। তারা আমাদের সামনে এলে নিজেদের চেহারার উপর ওড়না ঝুলিয়ে দিতাম। তারা অতিক্রম করে চলে যাওয়ার পর ওড়না সরিয়ে ফেলতাম। (সুনানে আবু দাউদ ২/৪৫৭)

আম্মাজান হযরত আয়েশা রা. অন্য এক সফরের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, অতপর সাফওয়ান ইবনে মুআত্তাল আসসুলামী সকালে আমার অবস্থানস্থলে পৌঁছল। সে একজন ঘুমন্ত মানুষের আকৃতি দেখে আমার নিকট এল এবং আমাকে চিনে ফেলল। কেননা, পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার আগে সে আমাকে দেখেছিল। তখন সে জোরে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করল, যার শব্দে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। সাথে সাথে আমি ওড়না দ্বারা মুখমন্ডল আবৃত করে ফেলি। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৪৮৫০)

হযরত আসমা বিনতে আবু বকর রা. বলেন, আমরা পর পুরুষের সামনে আমাদের চেহারা ঢেকে রাখতাম। (মুসতাদরাকে হাকীম ২/১০৪)

আরো দেখুন : তাফসীরে ইবনে কাসীর ৩/৮০৪; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৩৬৯; সহীহ বুখারী, হাদীস : ৩২৪, ৪৭৫৭, ১৮৩৮; ফাতহুল বারী ২/৫০৫, ৮/৩৪৭; উমদাতুল কারী ৪/৩০৫; মাআরিফুস সুনান ৬/৯৮; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৪/২৬৮; মাজমুআতুল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়া ২২/১০৯, ১১৪

মোটকথা, কুরআন-হাদীসের ভাষ্য এটাই যে, মহিলারা পরপুরুষের সামনে নিজেদের মুখমন্ডল আবৃত রাখবে। এটা পর্দারই অংশ।

প্রকাশ থাকে যে, কোনো কোনো দেশে নারীর মুখমন্ডল খোলা রাখার যে আইন করা হয়েছে তা এ কারণে করা হয়নি যে, ইসলামের দৃষ্টিতে চেহারার পর্দা নেই। বরং এ আইনের পিছনে ইসলামের প্রতি তাদের অব্যাহত বিদ্বেষ এবং মুসলমানদের কোনঠাসা করার প্রবণতাও কার্যকর। এ আইন তাদেরই কথিত মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতার সম্পূর্ণ বিরোধী। তাই এই আইন আন্তর্জাতিক অঙ্গণেও ধিকৃত হয়েছে।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬২৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

হাবীব রাজশাহী তার গ্রামের বাড়িতেই থাকে। গত কয়েক দিন আগে...

প্রশ্ন

হাবীব রাজশাহী তার গ্রামের বাড়িতেই থাকে। গত কয়েক দিন আগে সে কোনো কাজে ঢাকা যায় এবং ঐ দিনই ফিরে আসে। কিন্তু সফর অবস্থায় যে চার রাকাত বিশিষ্ট নামায দুই রাকাত পড়তে হয় তা সে ভুলে যায়, তাই সে ঐ দিনের যোহর, আসর ও ইশা অন্য সময়ের মতো চার রাকাতই আদায় করে। পরে তার স্মরণ হলে জানতে চায়, তার ঐ নামাযগুলো কি হয়েছিল? না কাযা করতে হবে?

উত্তর

তার ঐ নামাযগুলো আদায় হয়ে গেছে। সেগুলোর কাযা করতে হবে না। কেননা সফর অবস্থায় কেউ যদি চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায চার রাকাতই পড়ে এবং যথারীতি প্রথম বৈঠক করে থাকে তাহলে ফরয আদায় হয়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রথম দুই রাকাত ফরয এবং দ্বিতীয় দুই রাকাত নফল হবে। উল্লেখ্য, সফর অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয দুই রাকাত পড়াই বিধান। তাই ইচ্ছাকৃত পূর্ণ নামায পড়া যাবে না।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৩; শরহুল মুনইয়া ৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বোনের বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে ১২০ কি.মি. দূরে। বিয়ের...

প্রশ্ন

আমার বোনের বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে ১২০ কি.মি. দূরে। বিয়ের পর থেকে সে নিয়মিত তার স্বামীর বাড়িতে থাকে। মাঝে মাঝে ১০-১২ দিনের জন্য আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। জানার বিষয় হল, আমাদের বাড়িতে আসলে নামায কসর পড়বে? না পুরো নামায আদায় করবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার বোন পিতার বাড়িতে মুসাফির হবে। সুতরাং সেখানে পনের দিনের কম সময় অবস্থানের নিয়ত করলে নামায কসর করবে। আর পনের দিন কিংবা তার চেয়ে বেশি সময় অবস্থানের নিয়ত করলে মুকীম হবে এবং পূর্ণ নামায পড়বে।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; ইমদাদুল আহকাম ১/৬৯৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৬৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কোনো ব্যক্তির ৪৮ মাইল ব্যবধানে দুটি বাড়ি আছে। সে দুই...

প্রশ্ন

কোনো ব্যক্তির ৪৮ মাইল ব্যবধানে দুটি বাড়ি আছে। সে দুই বাড়িতেই বসবাস করে। তবে প্রথম বাড়ির তুলনায় দ্বিতীয় বাড়িতে বেশি দিন অবস্থান করে। আমি জানতে চাই, সে তার কোনো বাড়িতে মুসাফির হবে কি না?

উল্লেখ্য, আমি জানি যে, ওয়াতনে আসলী দ্বারা ওয়াতনে আসলী বাতিল হয়ে যায়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এ হুকুম প্রযোজ্য হবে কি?

উত্তর

উত্তর : প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী যেহেতু ওই ব্যক্তি দুই বাড়িতেই বসবাস করে থাকে, কোনোটিকে পরিত্যাগ করেনি তাই লোকটি উভয় বাড়িতেই মুকিম থাকবে। এক্ষেত্রে উভয় বাড়িই তার জন্য ওয়াতনে আসলী বলে গণ্য হবে। কেননা, এক ব্যক্তির একাধিক ওয়াতনে আসলী হতে পারে। আর ওয়াতনে আসলী তখনই বাতিল হয় যখন সেটাকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করার নিয়ত করা হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সে কোনোটিকে পরিত্যাগ করেনি।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২১৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৮; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৯; শরহুল মুনইয়াহ ৫৪৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫১৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

ক) আমার স্বামী ২০০৭ সালে হজ্বে গিয়েছিলেন। তখন আমার নেসাব...

প্রশ্ন

ক) আমার স্বামী ২০০৭ সালে হজ্বে গিয়েছিলেন। তখন আমার নেসাব পরিমাণ সম্পদ ছিল। আমার স্বামী একজন মুফতী সাহেবের কাছে শুনে এসে বলেছেন যে, মহিলাদের মাহরামকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার মতো টাকা না থাকলে হজ্ব ফরয হয় না। কিন্তু মাহরাম এমনিতেই পেয়ে গেলে যে হজ্ব ফরয হবে সেটা তিনি বলেননি। এজন্য ২০০৭ সালে তিনি হজ্বে যাওয়ার সময় আমি বুঝিনি যে, আমার উপর হজ্ব ফরয এবং আমার স্বামীও তা খেয়াল করেননি। আমি হজ্ব ফরয না জেনেই তার সাথে হজ্বে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাচ্চা ছোট বলে আমাকে হজ্বে নিতে রাজি হননি। আমার বাচ্চার বয়স তখন ২ বছর পুরা হয়নি। তবে বুকের দুধ স্বামী হজ্বে যাওয়ার ১ মাস আগেই ছাড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাচ্চা আমাদের দুজন ছাড়া আর কারো কাছে থাকত না। আমি ওকে রেখে হজ্বে যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারিনি। তাই আমি ওকে নিয়েই হজ্বে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মুরববীরা এবং আমার স্বামী কেউ বাচ্চা নিয়ে যেতে রাজি হননি। আর বাচ্চা রেখে যাওয়ার কোনো উপায়ও ছিল না। কারণ শুধু ওর আববু হজ্বে যাওয়ার কারণেই ওর অবস্থা এমন হয়েছিল যে, আমি হাম্মামে (বাথরুমে) গেলেও সে কাঁদতে কাঁদতে বমি করে দিত। এখন এই (দুগ্ধপোষ্য) শিশু কি আমি হজ্বে না যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ওজর হিসেবে গণ্য হবে?

উল্লেখ্য, আমি আমার উপর হজ্ব ফরয সেটা না জানার কারণে গত এক বছর আগে উমরা করে এসেছি। এই জন্য আমার কাছে এখন হজ্বে যাওয়ার মতো নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। এখন আমি হজ্ব না করার কারণে কি আমার গুনাহ হচ্ছে? হয়ে থাকলে আমার কী করণীয়?

খ) আমার শ্বশুর প্রতি বছর হজ্বে যান। আমার যদি একা হজ্বে যাওয়ার মতো টাকা হয় তাহলে আমার উপর হজ্ব ফরয হবে কি? হজ্বের মতো কঠিন সফরে শ্বশুরের সাথে যাওয়া কি ঠিক হবে?

গ) কোনো মহিলা যদি বাচ্চা রেখে যাওয়ার মতো উপযুক্ত পরিবেশ না পায় আর তাকে হজ্বে নেওয়ার মতো সামর্থ্যও না থাকে তাহলে সে কী করবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার উপর ২০০৭ সালেই হজ্ব ফরয হয়েছে। তবে শিশু বাচ্চার জন্য হজ্ব বিলম্ব করার দ্বারা গুনাহ হয়নি। বর্তমানে বিলম্ব না করে যত দ্রুত সম্ভব আপনার হজ্ব করে নেওয়া আবশ্যক। শ্বশুর যদি পুরা দ্বীনদার হন তবে তার সাথেও হজ্বে যাওয়ার সুযোগ আছে। আর যদি কোনোভাবেই হজ্বের ব্যবস্থা না হয় বা উপযুক্ত মাহরাম না পাওয়া যায় তাহলে সেক্ষেত্রে বদলী হজ্বের অসীয়ত করে যেতে হবে।

-মানাসিক পৃষ্ঠা : ৩৭, ৬০; গুনইয়াতুন নাসিক পৃষ্ঠা : ১২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/১৫৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৯২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কোনো ব্যক্তি রমযানের দিনে সফর করার ইচ্ছা করেছে। রোযা রাখা...

প্রশ্ন

কোনো ব্যক্তি রমযানের দিনে সফর করার ইচ্ছা করেছে। রোযা রাখা কষ্টকর হবে ভেবে এবং সফরকালে রোযা না রাখার সুযোগ আছে বলে সে ঐ দিনের রোযার নিয়ত না করে সকাল বেলা পানাহার করে সফরে বের হয়। এভাবে সফর শুরুর পূর্ব থেকে রোযা না রাখা বৈধ হয়েছে কি না? আর এ অবস্থায় তার নাকি শুধু কাযা করা ওয়াজিব হবে?

উত্তর

এভাবে সফর শুরুর আগে থেকেই রোযা না রাখাটা বৈধ হয়নি। এজন্য তাকে ইস্তিগফার করতে হবে। কেননা সফরের কারণে রোযা না রাখার সুযোগ তখন প্রযোজ্য হবে যখন দিনের শুরু অর্থাৎ সুবহে সাদিকের সময়ই মুসাফির থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে তার উপর কাফফারা আসবে না। ঐ দিনের জন্য শুধু একটি রোযা কাযা করতে হবে।

আলবাহরুর রায়েক ২/২৯১; আননাহরুল ফায়েক ২/২৭; ফাতহুল কাদীর ২/২৮৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৯০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

একবার মুসাফির অবস্থায় আমি আসরের নামায আদায় করছিলাম। নামাযের দ্বিতীয়...

প্রশ্ন

একবার মুসাফির অবস্থায় আমি আসরের নামায আদায় করছিলাম। নামাযের দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহহুদের পর ভুলবশত দাঁড়িয়ে যাই। তৃতীয় রাকাতে দাঁড়ানো অবস্থায় ভুল বুঝতে পেরেও নামায চার রাকাতই পূর্ণ করি। প্রশ্ন হল, আমার নামায কি আদায় হয়েছে, না পুনরায় পড়তে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু দ্বিতীয় রাকাতের বৈঠক করেছেন তাই নামাযটি সম্পন্ন হয়ে গেছে। প্রথম দু’রাকাত ফরয আর শেষ দু’রাকাত নফল হয়েছে। তবে তৃতীয় রাকাতে ভুল বোঝার পরও না বসে চার রাকাত পূর্ণ করা মাকরূহ হয়েছে।

প্রকাশ থাকে যে, মুসাফিরের জন্য চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায দু’রাকাত পড়া জরুরি। দু’রাকাত না পড়ে ইচ্ছাকৃত চার রাকাত পূর্ণ করলে ওয়াজিব তরকের গুনাহ হয়। তাই মুসাফির দু’রাকাত পর ভুলে দাড়িয়ে গেলে স্মরণ হওয়ামাত্র বসে যাবে এবং সাহু সিজদা করে যথানিয়মে নামায শেষ করবে।

আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩০; ফাতহুল কাদীর ২/৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫১১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কাকরাইল থেকে ১৫ জনের একটি জামাত এক চিল্লার জন্য তাবলীগে...

প্রশ্ন

কাকরাইল থেকে ১৫ জনের একটি জামাত এক চিল্লার জন্য তাবলীগে বের হয়। মারকায থেকে তাদের প্রথম রোখ হয় চট্টগ্রাম শহরে। সেখানে ২০ দিন অবস্থানের পর তাদের দ্বিতীয় রোখ হয় শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি গ্রামে। গ্রামটিতে তারা ১০ দিন অবস্থান করবেন। সেখান থেকে অন্য এলাকায় যাবেন। চট্টগ্রাম শহরে আর ফিরে আসবেন না। জানার বিষয় হল, দ্বিতীয় স্থান তথা গ্রামটিতে তারা মুকীম থাকবেন, না মুসাফির?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি তারা পূর্ব থেকে একনাগাড়ে ২০ দিন (অথবা ন্যূনতম ১৫ দিন) অবস্থানের নিয়তে চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করে থাকেন তবে তারা শহরটিতে মুকীম ছিলেন। পরে সেখান থেকে তারা যেহেতু সফরসম দূরত্ব অতিক্রম করেননি তাই দ্বিতীয় গ্রামটিতেও তারা মুকীম থাকবেন এবং পূর্ণ নামায আদায় করবেন। কিন্তু যদি একনাগাড়ে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত ছাড়া কিছু দিন কিছু দিন করে চট্টগ্রাম শহরে তাদের ২০ দিন থাকা হয় তবে তারা সেখানে মুসাফির ছিলেন। তাই পরবর্তী গ্রামেও তারা মুসাফির থাকবেন এবং নামায কসর করবেন।

ফাতহুল কাদীর ২/১৬; আলইনায়াহ ২/১৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮১; রদ্দুল মুহতার ২/৩২১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ২৩৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০২;ফাতাওয়া দারুল উলূম ৪/৪৮২; মাজমূআতুল ফাতাওয়া ১/৩১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৭৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমরা জানি, সফরে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমের...

প্রশ্ন

আমরা জানি, সফরে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমের নিয়তে নিজ আবাদী ত্যাগ করার পর থেকে সফরের আহকাম শুরু হয়। প্রশ্ন হল, নিজ গ্রাম বা শহরের বাড়ি-ঘর যদি অনেক দূর পর্যন্ত লাগালাগি থাকে তাহলে সফরের আহকাম প্রযোজ্য হওয়ার জন্য কতটুকু দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে? আবাদী অতিক্রম করার অর্থ কী?

উত্তর

আবাদী অতিক্রমের অর্থ হল, নিজ গ্রাম বা শহর সম্পূর্ণরূপে অতিক্রম করা। নিজ গ্রাম বা শহরের ঘর-বাড়ি অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হলে সেগুলোও অতিক্রম করতে হবে। এর আগে সফরের হুকুম কার্যকর হবে না।

মাজমাউয যাওয়াইদ ১/২০৪; ইলাউস সুনান ৭/৩১০; কিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনা ১/১২১;আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৪৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমরা রমযানে ও তাবলীগের চিল্লার জন্য বের হয়ে থাকি। চিল্লা...

প্রশ্ন

আমরা রমযানে ও তাবলীগের চিল্লার জন্য বের হয়ে থাকি। চিল্লা থেকে ফিরে এসে মাদরাসায় ২/৩ দিন থাকতে হয়। আমরা জানি, মাদরাসা ওয়াতনে ইকামাত। অপর দিকে ওয়াতনে আছলী মাদরাসা থেকে মুদ্দতে সফর থেকেও বেশি দূরে। এখন প্রশ্ন হল, তাবলীগের সফর দ্বারা ওয়াতনে ইকামাত বাতিল হবে কি না এবং মাদরায় ফিরে এসে ২/৩ দিন থাকলে কসর করতে হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় মাদরাসায় অল্প সময়ের জন্য ফিরে এলেও আপনি মুকীম হবেন। কেননা, মাদরাসা আপনার জন্য ওয়াতনে ইকামত। আর ওতনে ইকামত শুধু সফর দ্বারা বাতিল হয় না; আপনি ঐ স্থান একেবারে ত্যাগ করার নিয়তে সামানপত্র নিয়ে সফর করলে তখনই এখানকার ইকামত বাতিল হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৪১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

মেরাজের ঘটনা কি কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত? মেরাজ অস্বীকার করলে কি...

প্রশ্ন

মেরাজের ঘটনা কি কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত? মেরাজ অস্বীকার করলে কি ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে? মেরাজ স্বপ্নে হয়েছিল এমন আকীদা রাখা কেমন? হযরত আয়েশা রা. নাকি স্বশরীরে মেরাজ স্বীকার করতেন না?

উত্তর

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মেরাজ কুরআন-হাদীস ও ইজমায়ে উম্মত-এর অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত। মেরাজ সত্য-এই বিশ্বাস রাখা ফরয। অস্বীকার করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। আর মেরাজ যে সশরীরে ও জাগ্রত অবস্থায় হয়েছিল তা যে শুধু রূহানী বিষয় ছিল না এ বিষয়টির উপরও ঈমান রাখা জরুরি। সকল সাহাবা, তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীনের বিশ্বাসও এটিই।

আম্মাজান হযরত আয়েশা রা.-এর থেকে যে কথা বর্ণনা করা হয় তা ঠিক নয়। একে তো সেটির সনদ দুর্বল। আর ইমাম আবুল আব্বাস ইবনে সুরাইজ বলেছেন, এ উক্তিটি হযরত আয়েশা রা.-এর উপর আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি তা বলেননি অথচ তার নামে একথা চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। (শরহুল মাওয়াহিব, যুরকানী ৮/৭)

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত সফরের কথা সূরা বনী ইসরাঈলের শুরুতে এবং উর্ধ্ব জগতের সফরের কথা সূরা নাজমের ১৩ থেকে ১৮ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআন মজীদের আয়াত, সহীহ হাদীস ও উম্মতের ইজমা দ্বার প্রমাণিত বিষয়ের বিপরীত ঐ ধরনের যয়ীফ বর্ণনার কোনো স্থান নেই তা বলাই বাহুল্য।

এ প্রসঙ্গে ইমাম আবুল খাত্তাব উমর ইবনে দিহইয়া বলেন, ইসরার হাদীসের উপর মুসলিমদের ইজমা রয়েছে এবং বেদ্বীন ও মুলহিদরা তা থেকে বিমুখ হয়েছে। তারা ফুঁৎকারে আল্লাহর নূর নিভিয়ে দিতে চায়। আর আল্লাহ তার নূরকে পূর্ণ করবেন। যদিও কাফেররা অপছন্দ করে।

বিস্তারিত জানার জন্য আলকাউসারে (আগস্ট ’০৬) প্রকাশিত হযরত মাওলানা আবদুল মালেক ছাহেব দামাত বারাকাতুহুমের প্রবন্ধটি পড়া যেতে পারে।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪১১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

অর্ধ রাত্রির পর এশার নামায পড়া মাকরূহ কি না? মাকরূহ...

প্রশ্ন

অর্ধ রাত্রির পর এশার নামায পড়া মাকরূহ কি না? মাকরূহ হলে মাকরূহ তাহরীমী না তানযিহী? যদি সফরের কারণে বিলম্ব হয় তাহলেও কি মাকরূহ?

উত্তর

বিনা ওজরে মধ্য রাতের পর পর্যন্ত ইশার নামায বিলম্বিত করা মাকরূহ। এ বিষয়ে ফকীহগণ একমত। তবে এটিকে কেউ কেউ মাকরূহে তাহরীমী বললেও আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রাহ. ইমাম তহাবী রাহ.-এর উদ্ধৃতিতে মাকরূহ তানযিহীর মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। পরবর্তী ফকীহদের অনেকে এ মতকে গ্রহণ করেছেন।

উল্লেখ্য যে, সফরের কারণে বিলম্বিত হলে তা ওজরের অন্তর্ভুক্ত।

শরহু মাআনিল আছার ১/১৮; মাবসূত সারাখসী ১/১৪৭; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৩৩৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৭৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৯; হেদায়া (ফাতহুল কাদীর) ১/২০১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২২৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৪০৬; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৪৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ৯৯; রদ্দুল মুহতার ১/৩৬৯; মুখতাসারুত তহাবী পৃ. ২৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪০৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

ক) মুসাফিরের জন্য জুমআর নামাযের হুকুম কী? অর্থাৎ বিষয়টি কি...

প্রশ্ন

ক) মুসাফিরের জন্য জুমআর নামাযের হুকুম কী? অর্থাৎ বিষয়টি কি এমন যে, তার জন্য জুমআর নামায না পড়ে যোহর পড়ারও অনুমতি আছে, তবে জুমআ পড়লেও পড়তে পারবে, নাকি জুমআর নামায না পড়া তার জন্য বাধ্যতামূলক। খ) মুসাফির জুমআর ইমামত করতে পারবে কি?

উত্তর

ক) মুসাফিরের জন্য জুমআ পড়া ফরয নয়। সে যোহর বা জুমআ যে কোনোটি পড়তে পারে।

খ) হ্যাঁ, মুসাফির জুমআর ইমামতিও করতে পারবে। এবং তার পিছনে মুকীমের ইক্তিদা সহীহ হবে।

খ) হ্যাঁ, মুসাফির জুমআর ইমামতিও করতে পারবে। এবং তার পিছনে মুকীমের ইক্তিদা সহীহ হবে।

আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৩, ১৫৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৫৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার জন্মস্থান ফরিদপুর। তবে ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় পড়াশুনা করেছি। অতঃপর...

প্রশ্ন

আমার জন্মস্থান ফরিদপুর। তবে ছোটবেলা থেকেই ঢাকায় পড়াশুনা করেছি। অতঃপর ঢাকায় এক মসজিদে ইমামতি করছি এবং বিয়ে-শাদি করে বাসা ভাড়া নিয়ে ঢাকাতেই থাকি। বছরে দু’একবার দু’ একদিনের জন্য বাড়িতে যাই। সেখানে আমার আব্বা ও ভাইয়েরা থাকেন। জানার বিষয় হল, আমি তো ঢাকাকে ওয়াতনে ইকামত বানিয়েছি। এখন আমি যখন বাড়িতে যাব সেখানে আমি মুসাফির হব কি না?

উল্লেখ্য, আমার পিতা যেখানে থাকেন সেটা নিজের বাড়ি নয়; বরং প্রায় চল্লিশ বছর যাবত মাদরাসার কোয়াটারে আছেন আমার জন্মস্থান এটিই এবং দু বছর পূর্বে আমার আম্মার ইনে-কালের পর তাঁকে ঐ এলাকাতেই দাফন করা হয়েছে। এখান থেকে পূর্বের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছাও নেই।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ফরিদপুরের বর্তমান বাসস্থান আপনাদের ওয়াতনে আসলী। আর ঢাকা আপনার ওয়াতনে ইকামত হলেও বাবার আবাসস'ল যেহেতু আপনি ত্যাগ করার নিয়ত করেননি তাই আপনি যখন আপনার বাবার ফরিদপুরের ঐ বাড়িতে যাবেন তখন মুকিম থাকবেন। আপনাকে সেখানে পূর্ণ নামায পড়তে হবে।

বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৫৪৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৯; রদ্দুল মুহতার ২/১৩১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৫৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি একজন থেকে মুদারাবা ব্যবসার জন্য টাকা নিয়েছি। ব্যবসার মাল...

প্রশ্ন

আমি একজন থেকে মুদারাবা ব্যবসার জন্য টাকা নিয়েছি। ব্যবসার মাল কিনতে আমাকে প্রায়ই ঢাকা, চট্টগ্রাম যাতায়াত করতে হয়। আসা-যাওয়ার পথে কখনো অসুস্থ হয়ে পড়ি। যেমন জ্বর, সর্দি-কাশি ইত্যাদি তাহলে চিকিৎসার জন্য মুদারাবা ফাণ্ড থেকে টাকা নিতে পারব কি না? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

ব্যবসার জন্য সফর করলে মুদারাবা কারবারি ব্যবসার ফাণ্ড থেকে কেবল সফর সংক্রান্ত খরচ নিতে পারবে। যেমন-যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার খরচ। চিকিৎসার খরচ নিতে পারবে না। তবে পুঁজিদাতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনুমতি দিলে চিকিৎসার খরচ নিতে পারবে।

বাদায়েউস সানায়ে ৫/১৪৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৩/৩৭১; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৭/১৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৫০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকালের পূর্বে যে অসুখে আক্রান্ত...

প্রশ্ন

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকালের পূর্বে যে অসুখে আক্রান্ত হয়েছিলেন তা কোন দিন শুরু হয়েছিল? সফর মাসের শেষ বুধবার তিনি আরোগ্য লাভ করেছিলেন-এ কথা কি ঠিক? সফর মাসের শেষ বুধবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ হয়েছিলেন এক ব্যক্তি এমন বক্তব্য দিলে শ্রোতাদের মধ্য থেকে একজন আপত্তি করে। সঠিক বিষয়টি কী জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

সফর মাসের শেষ বুধবার রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরোগ্য লাভ করেছিলেন-এ কথা ঠিক নয়; বরং সফর মাসের শেষ বুধবার তাঁর অসুস্থতা শুরু হয়েছিল এবং এই অসুখেই তিনি ইন্তেকাল করেন।

আসসীরাতুন নববিয়্যাহ, ইমাম যাহাবী পৃ. ৩৯৮; সুবুলুল হুদা ওয়াররাশাদ ১২/২৩৫; ফাতহুল বারী ৭/৭৩৫; আলবিদায়া ওয়াননিহায়া ৮/২৫-২৬; আলকামেল ফিত-তারীখ ২/৩১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৩৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি একজন অবিবাহিতা মেয়ে। আমার বয়স আঠারো। আমি এ বছর...

প্রশ্ন

আমি একজন অবিবাহিতা মেয়ে। আমার বয়স আঠারো। আমি এ বছর হজ্ব করতে চাচ্ছি। আমি কি আমার খালা, খালুর সঙ্গে হজ্বে যেতে পারব? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মহিলাদের জন্য মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর করাও নাজায়েয। এ ব্যাপারে সরাসরি হাদীসে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মহিলা যেন মাহরাম পুরুষ ছাড়া হজ্বের উদ্দেশ্যে না যায়।’

সুতরাং খালু যেহেতু মাহরাম নয়, তাই খালা সঙ্গে থাকলেও তাদের সাথে হজ্বে যাওয়া জায়েয হবে না। পরবর্তীতে কোনো মাহরামের সাথেই যেতে হবে।

সহীহ মুসলিম ১/৪৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; হেদায়া ১/২৩৩; ফাতহুল কাদীর ২/৩৩০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৫৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়টি উমরা করেছেন এবং কয়টি...

প্রশ্ন

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়টি উমরা করেছেন এবং কয়টি হজ্ব করেছেন? বিদায় হজ্ব কত সনে হয়েছিল?

উত্তর

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চারটি উমরা করেছেন। প্রত্যেকটি যিলকদ মাসে। প্রথমটি হুদায়বিয়ার উমরা, যা ষষ্ঠ হিজরীতে হয়েছে। কাফেরদের প্রতিরোধের কারণে বাইতুল্লাহ শরীফে এ বছর যাওয়া হয়নি। হুদায়বিয়াতেই ইহরাম ত্যাগ করেছিলেন। দ্বিতীয় উমরা পরবর্তী বছর হয়েছে। তৃতীয় উমরাতুল জি’রানা। হুনাইন থেকে ফেরার পথে জি’রানা থেকে ইহরাম বেঁধে ছিলেন। চতুর্থটি বিদায় হজ্বের সাথে করেছেন। তাহলে সর্বমোট উমরা চারটি হলেও পৃথক সফরে পূর্ণ উমরা হয়েছে মোট দুইটি।

আর হিজরতের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মাত্র হজ্ব করেছেন। সেটি হল বিদায় হজ্ব। বিদায় হজ্ব দশম হিজরীতে হয়েছে। হিজরতের আগে কয়টি হজ্ব করেছেন এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা বলা যায় না। জামে তিরমিযীর এক বর্ণনায় দুইটির কথা আছে। তবে অন্যান্য দলীল দ্বারা তাবেয়ীন ও মুহাদ্দিসগণ আরো বেশি সংখ্যক হজ্বের কথা উল্লেখ করেছেন। এমনকি ইবনুল আমীর রাহ. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরতের আগে প্রতি বছরই হজ্ব করতেন। এটাই স্বাভাবিক। এর সঠিক সংখ্যা আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন।

সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ৮/৪৪৪-৪৪৯; শরহুল মাওয়াহিবিল লাদুন্নিয়াহ ৪/১৪১; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৭/৪০৬; সহীহ বুখারী ১/২৩৮; সহীহ মুসলিম ১/৩৯৪; জামে তিরমিযী ১/১৬৮; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ২২০; মাআরিফুস সুনান ৬/২০; ফাতহুল বারী ৩/৭০২; উমদাতুল কারী ১০/১১৩; যাদুল মাআদ ৩/২৫৬; আল কামিল ফিততারীখ ২/৩০৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৬৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি কয়েক দিন আগে বরিশালের উদ্দেশে সফর করেছিলাম। যাওয়ার সময়...

প্রশ্ন

আমি কয়েক দিন আগে বরিশালের উদ্দেশে সফর করেছিলাম। যাওয়ার সময় সদরঘাট থেকে লঞ্চে উঠলাম। তখন লঞ্চটি ঘাটের সাথে বাঁধা অবস্থায় ছিল। ইতিমধ্যে আসরের সময় হয়ে গেলে আমি কসর নামায পড়িনি; বরং পূর্ণ চার রাকাত পড়েছি। জানতে চাই, আসর নামায পড়া কি ঠিক হয়েছে? উপরোক্ত অবস্থায় কি আমি মুসাফির ছিলাম নাকি মুকীম?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লঞ্চটি ঘাট ত্যাগ না করা পর্যন্ত আপনি মুকীম ছিলেন। তাই ঘাটে থাকা অবস্থায় পূর্ণ নামায আদায় করা সহীহ হয়েছে।

আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৫৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

বিষয় : মসজিদের বর্তমান আয়তন আনুমাণিক ১৫ হাত (উ. দ.)...

প্রশ্ন

বিষয় : মসজিদের বর্তমান আয়তন আনুমাণিক ১৫ হাত (উ. দ.) ২৭ (পূ. প.) এর সহিত (১৫হাত উ. দ.) (২০ হাত পূ. প.) সমপ্রসারিত টিনসেট ভবন সংযুক্ত মুসল্লীগণের স্থান সংকুলানের অসুবিধাহেতু এবং কতেক মুসল্লীগণের আসার জন্য চলাচলের পথের দূরত্ব বেশি বোধ হওয়া।

উপরোল্লিখিত বিষয় ও কারণে বর্তমান মসজিদ ভবনের সমপ্রসারণ ও উন্নয়ণ ব্যাহত হচ্ছে মর্মে জনমনে আশঙ্কার প্রেক্ষিতে এলাকার উত্তর-পূর্ব কোণায় অবস্থিত বাসস্থানের মুসল্লীগণ কর্তৃক মসজিদ ভবন স্থানান্তরের উদ্যোগী হয়। বর্তমান অবস্থিত বসবত-বাড়ি এলাকার একান্ত অভ্যন্তরে যাতায়াতে দূরত্ব মহিলাদের পর্দা রক্ষা, মসজিদের সীমিত পরিসরে পুকুর ভরাট ব্যতীত উত্তর দক্ষিণে (কাতা/সারি দীর্ঘায়িত করার জন্য) সমপ্রসারন করা সম্ভব হচ্ছে না। ঐ এলাকার জনগণ আর্থিকভাবেও অধিক দান-খায়রাত ও চাঁদার মাধ্যমে বর্ধিত ভবন নির্মাণে অধিকতর অবদান রাখতে পারবে বলেও মতামত প্রকাশ করা হয়। উল্লেখ্য যে, ১। মসজিদ ভবন বসতবাড়ি সংলগ্ন বিধায়, মসজিদে আগত মুসল্লীগণের যাতায়াতে আশ পাশে অনেক সময় মহিলাদের উপস্থিতিতে পর্দা রক্ষার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ২। মসজিদ ভবনের অনতিদূরে কোনো কোনো স্থানে গোয়ালঘর থাকায় মাঝে মধ্যে পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাও কষ্টকর হচ্ছে। ৩। মসজিদ থেকে আবাসিক এলাকার পূর্ব উত্তর কোণের বাসিন্দা অর্থাৎ এক চতুর্থাংশ লোকের জন্য বিদ্যমান দূরত্ব বেশি এবং নতুন/প্রস্তাবিত এলাকায় নতুন ভবন নির্মিত হলে সদর খোলামেলা জনসাধারণের চলাচলের পথি পার্শ্বে অবস্থান হবে, ঐ এলাকাবাসীর যাতায়াত পথ ও কষ্ট হ্রাস হবে এবং সর্বসাধারণের চলাচল পথের পার্শ্বে মুসল্লী স্যাখ্যাও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা। ৪। স্থানান্তরে মসজিদ এলাকার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাংশের জনসাধারণ/মুসল্লীগণের জন্য কোনো সুবিধা হবে না (বরং অসুবিধা হতে পারে বিধায়) তারা এ ব্যাপারে উৎসাহী নয় বলে বোধ হয়। ৫। মসজিদ এলাকার উত্তর-পশ্চিম এলাকায় অবস্থিত মুসল্লীগণের কতক অংশ স্থানান্তরের পক্ষে কতক অংশ স্থানান্তরের উৎসাহী নয় বলে প্রতীয়মান হয়। পুরাতন মসজিদ ভবন নির্মাণকারী মরহুম চৌধুরী পাটারীর স্ত্রী এবং ওয়াকফদাত্রী মেহেরজান ভানু কর্তৃক সম্পাদিত রেজিষ্টার্ড দলিলের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :

ওয়াকফ সম্পত্তি মোতাওয়াল্লী কর্তৃক কাহারও নিকট স্থায়ীভাবে লাগিত পত্তন করতে পারিবে না, করিলে তাহা অগ্রাহ্য ও অশুদ্ধ হইবে।

মোতাওয়াল্লী ওয়াফক সম্পত্তি দান বিক্রি বা রেহান বা কোনো প্রকার নামান্তর রূপান্তর এবং যে কার্যে সম্পত্তির হানি জনক হয় তাহা করিতে পারিবে না। মোতাওয়াল্লীর কৃত কার্যের ত্রুটিতে ওয়াকফ সম্পত্তির কোনো অংশের ক্ষতি হইলে মোতাওয়াল্লী তাহার ক্ষতিপূরণ করিতে মুসল্লী ও মহল্লার সরদারগণের নিকট বাধ্য থাকিবে। কোনো মোতাওয়াল্লী অন্যথা করিলে ওয়াকফ সম্পত্তি রেহান দিলে বা দান বিক্রি করিলে গ্রহীতা আমার ওয়াকফ নামার স্বত্ব ও মর্মানু-সন্ধান না করিয়া গ্রহণ করিলে গ্রহীতার পক্ষে তাহা অশুদ্ধ ও অকর্মন্য হইবে।

আমার অত্র ওয়াকফ নামা সম্বলিত নিয়ম প্রণালী ও স্বত্ত্বসমূহ আমার কোনো ওয়ারিশগণ স'লবর্ত্তীগণ কর্তৃক কেহ কোনো প্রকার রদবাতিল বা পণ্ড করিতে পারিবে না। তাহা চিরকাল অক্ষুণ্ন ও বলবৎ থাকিয়া কার্যে পরিণত থাকিবে। এতদার্থে ওয়াকফ নামাপত্র লিখিয়া দিলাম।

বর্ণিত পরিস্থিতিতে ওয়াকফ নামার শর্তের আলোকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদ্যমান মসজিদ ভবন নতুন স্থানে স্থানান্তরের শরীয়তসম্মত কি না সেই বিষয়ে মতামত/ফতোয় প্রদানের জন্য উপস্থাপন/দাখিল/পেশ করা হইল।

উত্তর

পূর্ব নৌওয়াগাঁও তিত্তল পাটারীবাড়ি জামে মসজিদ (থানা : রামগঞ্জ, জিলা : লক্ষীপুর) স্থানান্তরের সম্পর্কে উত্থাপিত প্রশ্নপত্রের বিবরণ ও প্রশ্নকারীর মৌখিক বর্ণনা এবং প্রশ্নপত্রের সাথে সংযুক্ত ওয়াকফ দলীলের বিশ্লেষণ দ্বারা যে বিষয়গুলো লক্ষ্য করা যায় তা নিম্নরূপ

১। ওয়াকফ দলীলের ৪ নং ধারার শেষাংশ : মোতাওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তি স্থায়ীভাবে কারো নিকট লাগিত পত্তন করতে পারবে না। করলেও তা অগ্রাহ্য ও অশুদ্ধ গণ্য হবে।

২। ৫নং ধারায় : মোতাওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তির দান, বিক্রি বা রেহান কিংবা কোনো প্রকার নামান্তর রূপান্তর এবং যে কার্যে সম্পত্তির হানি হয় তা করতে পারবে না। মোতাওয়াল্লীর কৃতকার্যের ত্রুটির কারণে ওয়াকফ সম্পত্তির কোনো অংশে ক্ষতি হলে সে মুসল্লী ও মহল্লার সরদারগণের নিকট তার ক্ষতিপূরণ আদায় করতে বাধ্য থাকবে। কোনো মোতাওয়াল্লী এর অন্যথা করলে ওয়াকফ সম্পত্তি রেহান দিলে বা দান বিক্রি করলে গ্রহীতা ওয়াকফ নামার শর্ত ও মর্মানুসন্ধান না করে গ্রহণ করলে তা অশুদ্ধ ও অগ্রাহ্য হবে।

৩। ৭ নং ধারা : ওয়াকফ নামার নিয়ম-প্রণালী ও স্বত্তসমূহ আমার কোনো ওয়ারিশ বা স'লবর্তীগণের কেউ কোনো প্রকার রদবদল বা পণ্ড করবে না ও করতে পারবে না। তা চিরকাল অক্ষুন্নভাবে বলবৎ থেকে বাস-ব কার্যে পরিণত হবে।

ওয়াকফনামার উপরোল্লিখিত ধারাগুলো ও উত্থাপিত বিষয়টির সার্বিক অবস্থা যাচাই-বাছাই এবং বিশ্লেষণপূর্বক নিম্নে প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া হল।

প্রথমতঃ শরীয়তসম্মত পন্থায় মসজিদ নির্মিত হয়ে গেলে তা সর্বদার জন্য মসজিদ হিসেবেই থাকবে। এর বিক্রি, স্থানান্তর রদবদল কোনোটিই জায়েয নয। হাদীস শরীফে এসেছে :

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যামানায় তার একটি ভূ সম্পদ সদকা (ওয়াক্‌ফ) করতে চাইলেন। এটি ছিল একটি খেজুর বাগান এবং এর নাম ছিল ‘ছামাগ’। উমর রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি একটি উত্তম সম্পদের মালিক হয়েছি এবং আমি তা সদকা করতে চাই। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তা এভাবে সদকা (ওয়াকফ) কর যে, তা বিক্রি করা যাবে না, দান করা যাবে না এবং এতে উত্তরাধিকার চলবে না। তবে এ থেকে উৎপন্ন ফলফলাদী (নির্ধারিত খাতে) ব্যয় করা হবে। ফলে উমর রা. এভাবে তাঁর উক্ত সম্পদ সদকা করেন যে, তা জিহাদ, দাসমুক্তি, মিসকীন, অতিথি সেবা, মুসাফির এবং আত্মীয়-স্বজনের জন্য (ব্যয়িত হবে)। (সহীহ বুখারী ১/৩৮৭)

দ্বিতীয়তঃ প্রশ্নে বর্ণিত ক্ষেত্রে ওয়াকফদাত্রী মহিলা স্পষ্ট ভাষায় ওয়াকফিয়া সম্পত্তির বিক্রি, রদবদল বা অন্য যে কোনো প্রকারের রূপান-র সম্পূর্ণ নিষেধ করে দিয়েছেন। আর শরীয়তে ওয়াকফকারীর শরীয়তসম্মত যে কোনো বৈধ শর্ত গ্রহণযোগ্য ও আমলযোগ্য। এর বরখেলাফ করা যাবে না। ইসলামী ফিকহবিদদের স্বীকৃত মূলনীতি হল : ওয়াকফকারীর (বৈধ) শর্তাবলি শরীয়তের দলীলের ন্যয় অবশ্য পালনীয়।

তৃতীয়তঃ প্রশ্নে বর্ণিত ওজর বা সমস্যাগুলোও এমন গুরুতর ও জটিল নয়, যার ভিত্তিতে একটি মসজিদ স্থানান্তরের প্রস্তাব করা যেতে পারে।

অতএব এসব দিক ও বিষয়ের বিবেচনায় উক্ত মসজিদ অন্য এলাকায় স্থানান্তরের করা জায়েয হবে না। আর বর্তমান মসজিদে যেহেতু মুসল্লীদের সংকুলান হচ্ছে না তাই উত্তর ও পূর্ব পার্শ্বে পুকুর থেকে মসজিদের যে জায়গা আছে তা ভরাট করে তাতে মসজিদ সমপ্রসারণ করা যেতে পারে। কিংবা প্রয়োজনে বহুতল মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে। এছাড়া অন্য যেসব সমস্যা রয়েছে মহল্লাবাসী ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ যৌথ উদ্যোগে সেগুলো সমাধানের ব্যবস্থা করবে। বিশেষ করে মসজিদে মুসল্লীদের যাতায়াতের দরুণ যেন মহিলাদের পর্দা বিঘ্নিত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং ময়লা-আবর্জনা ও দুর্গন্ধ থেকে মসজিদের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

তারপরও যদি কিছু সমস্যা থেকে যায় তবে দ্বীনের খাতিরে তা সহ্য করে নিতে হবে।

মসজিদ স্থানান্তরের: আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৯; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৮৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৫৮; হিদায়া ২/৬৪৫; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৫৮; মাবসূত সারাখসী ১২/৪২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২৪; ফাতহু কাদীর ৫/৪৪৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৭০; মাজমাউল আনহুর ২/৫৯৬ মসজিদ সমপ্রসারণ : ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪৫; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৭৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২১; আলইসআফ ফী আহকামিল আওকাফ পৃ. ৭৪; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৫৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৩৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমরা ৪ জন তামাত্তু হজ্বের নিয়তে উমরার ইহরাম করে মক্কা...

প্রশ্ন

আমরা ৪ জন তামাত্তু হজ্বের নিয়তে উমরার ইহরাম করে মক্কা এসেছি। আমরা মক্কাতে প্রায় ১৫ দিন থাকলাম। এখন মদীনা মুনাওয়ারা যাচ্ছি। মদীনা থেকে হজ্বের ১/২ দিন আগে মক্কা ফিরব। জানতে চাই, যারা মদীনা থেকে হজ্বের ইহরাম করবে তাদেরকে কি তাওয়াফে কুদূম করতে হবে?

উত্তর

না। তাদের তাওয়াফে কুদূম করতে হবে না। আপনারা যেহেতু এই সফরেই তামাত্তু হজ্বের উদ্দেশ্যে উমরা করেছেন তাই আপনারা তামাত্তুকারী। আর তামাত্তুকারীর উপর তাওয়াফে কুদূম নেই। তাওয়াফে কুদূম কেবল ইফরাদ ও কিরান হজ্বকারীদের জন্য সুন্নত। তামাত্তুকারীদের জন্য নয়।

মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ১৪১; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ১০৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৯২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২২৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

যদি কোনো মুকীম ব্যক্তি চার রাকাতবিশিষ্ট ফরয নামাযে কোনো মুসাফির...

প্রশ্ন

যদি কোনো মুকীম ব্যক্তি চার রাকাতবিশিষ্ট ফরয নামাযে কোনো মুসাফির ইমামের পিছনে ইকতিদা করে তাহলে মুসাফির ইমামের নামায শেষ করার পর অবশিষ্ট রাকাতদ্বয়ে মুকীম মুকতাদীকে কেরাত পড়তে হবে কি না?

উত্তর

চার রাকাতবিশিষ্ট ফরয নামযের শেষ দুই রাকাতে কারো জন্যই কেরাত নেই। মুসাফির ইমামের পেছনে মুকীম মুকতাদীর জন্যও একই হুকুম। তবে সে সূরা ফাতেহা পড়বে কি না এ বিষয়ে মতানৈক্য আছে। বিশুদ্ধ মত হল, এক্ষেত্রে মুকীম মুকতাদী শেষ দুই রাকাতে সূরা ফাতিহাও পড়বে না।

আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩২; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৭৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৫; ফাতহুল কাদীর ২/১৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২০১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২১৩; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৫৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২১৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি একবার খুব জটিল রোগে আক্রান্ত হলাম। অসুস্থ অবস্থায় মান্নত...

প্রশ্ন

আমি একবার খুব জটিল রোগে আক্রান্ত হলাম। অসুস্থ অবস্থায় মান্নত করলাম যে, আল্লাহ তাআলা যদি আমাকে সুস্থ করেন তাহলে আমি হজ্ব করব। তখন আমার আর্থিক অবস্থা এমন ছিল যে, আমার উপর হজ্ব ফরয়।

প্রশ্ন হল, আমার উপর আগে থেকেই হজ্ব ফরয হয়ে আছে এখন যদি হজ্ব করি তাহলে কি এর দ্বারা আমার ফরয হজ্ব এবং মান্নতের হজ্ব উভয়টি আদায় হবে? এক সফরেই উভয় হজ্ব আদায়ের কোনো পদ্ধতি আছে কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি নিজের ফরয হজ্ব এবং মান্নতের হজ্ব উভয়টির আদায়ের নিয়তে হজ্ব করবেন। এতে এক সাথে দুটি দায়িত্বই আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু যদি আপনি যে কোনোটি নির্দিষ্ট করে আদায় করেন তাহলে যেটির নিয়ত করবেন শুধু সেটিই আদায় হবে। অন্যটি আদায় হবে না।

গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৩৪৮; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৪৬৭-৪৬৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২১৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। আমরা স্থায়ীভাবে সেখানেই বসবাস করি। বর্তমানে...

প্রশ্ন

আমাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। আমরা স্থায়ীভাবে সেখানেই বসবাস করি। বর্তমানে আমি ঢাকার মিরপুর ১২ এর একটি মাদরাসায় লেখাপড়া করি। বিভিন্ন সময় ছুটিতে বাড়ি যাই। আর বাকি সময় ঢাকাতেই থাকি।

প্রশ্ন হল, বাড়িতে যাওয়ার সময় পথে আমাকে নামায পূর্ণ পড়তে হবে নাকি কসর? আর কসর করলে কখন থেকে শুরু করব এবং কোথায় গিয়ে কসর করা বন্ধ করব?

উত্তর

ঢাকা থেকে চাঁদপুরের দূরত্ব সফরসম। তাই এ পথে সফর অবস্থায় নামায কসর পড়তে হবে। আপনার বর্তমান আবাসস্থল ঢাকার সিটি কর্পোরেশনের সীমানা অতিক্রম করার পর থেকে মুসাফির গণ্য হবেন। অর্থাৎ নদীপথে পোস্ত-গোলা ব্রীজ এলাকা এবং সড়ক পথে যাত্রাবাড়ি-শনির আখড়া এলাকা অতিক্রম করলে (ঢাকা সিটির দক্ষিণাঞ্চলের জন্য) মুসাফিরের হুকুম শুরু হবে। শেষ হবে আপনার স্থায়ী বসবাসের এলাকা গ্রামে প্রবেশের পূর্ব পর্যন্ত। নিজ গ্রাম বা শহরে প্রবেশ করলেই মুকীম হয়ে যাবেন।

ইলাউস সুনান ৭/৩১০; ফাতহুল বারী ২/৪৭১; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৬২; মাবসূত সারাখসী ১/২৩৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৫৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬৪; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৭১; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২০৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৯৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

কারো ঢাকা শহরে ও গ্রামের বাড়িতে নিজস্ব বাসস্থান রয়েছে। গ্রামের...

প্রশ্ন

কারো ঢাকা শহরে ও গ্রামের বাড়িতে নিজস্ব বাসস্থান রয়েছে। গ্রামের বাড়ি সফরসম দূরত্বে। স্বামী ঢাকায় কর্মরত ছিলেন বিধায় ঢাকাতেই তারা বসবাস করেন। ছুটির সময় বা ঈদের সময় গ্রামের বাড়িতে গেলে গ্রামের বাড়িতেও থাকেন। স্বামী মৃত্যু বরণ করার পর গ্রামের বাড়িতে স্বামীকে দাফন করা হয়েছে। এখন স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে স্বামীর মালিকানাধীন ঘরে ইদ্দত পালন করতে পারবে কি না? অথবা কিছু দিন শহরের বাড়ি আর কিছু দিন গ্রামের বাড়িতে ইদ্দত পালন করতে পারবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা মতে যেহেতু স্ত্রী মৃত্যু পর্যন- স্বামীর শহরস্থ বাড়িতেই ছিল তাই তার জন্য সেখানে ইদ্দত পালন করা জরুরি। অবশ্য যদি স্ত্রী লাশের সাথে গ্রামের বাড়িতে চলে গিয়ে থাকে তাহলে শহরে না এসে গ্রামের বাড়িতেই ইদ্দত পালন করবে। তবে যে বাড়িতেই ইদ্দত শুরু করা হোক সেখানেই ইদ্দত পূর্ণ করবে। একান- কোনো ওজরে সেখানে ইদ্দত পালন করা কঠিন হয়ে গেলে এর কাছাকাছি কোনো উপযুক্ত স্থানে ইদ্দত পালন করবে। ইদ্দত অবস্থায় শরয়ী ওজর ছাড়া সফর করা নিষিদ্ধ। তদ্রূপ একাধিক স্থানে রাত্রি যাপনও নিষিদ্ধ। তাই ইদ্দত চলাকালীন শহর ও গ্রাম দুই জায়গা মিলে ইদ্দত পালন করা বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে শরয়ী ওজর ব্যতীত যাতায়াত করা যাবে না।

সূরা তালাক : ১; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৫২; ফাতহুল কাদীর ৪/১৬৬; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩২৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৩৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৯৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

তাবলীগে যখন চিল্লায় বের হই তখন কাকরাইলের বড়দের কাছে শুনেছি,...

প্রশ্ন

তাবলীগে যখন চিল্লায় বের হই তখন কাকরাইলের বড়দের কাছে শুনেছি, আমরা চিল্লায় মুসাফিরের হুকুমে থাকব। কিন্তু বেহেশতি জেওরে বা অন্যান্য কিতাবে দেখলাম যে, ১৫ দিনের নিয়ত করলে মুকীম হিসেবে গণ্য হবে। তবে এই ক্ষেত্রে ৪০ দিন থাকার নিয়ত করা সত্ত্বেও কিভাবে আমরা মুসাফিরের হুকুমে রইলাম?

উত্তর

সফর সম দূরত্ব অতিক্রম করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছলে মুকীম হওয়ার জন্য কোনো একটি গ্রাম বা একটি শহরে ১৫ দিন বা তার বেশি সময় অবস্থানের নিয়ত করা জরুরি। এক ইউনিয়নের একাধিক গ্রাম বা ভিন্ন ভিন্ন দুই সিটি কিংবা এক থানার বিভিন্ন স্থানে ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত করলে মুকীম হবে না। মুসাফিরই থাকবে।

অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চিল্লায় বের হয়ে যদি কোনো গ্রাম বা সিটিতে ১৫ দিন বা তার বেশি থাকার নিয়ত থাকে তবে মুকীম গণ্য হবে। চাই ঐ গ্রাম বা সিটির বিভিন্ন মসজিদ মিলেই ১৫ দিন থাকা হোক বা এক জায়গাতেই থাকা হোক। বেহেশতী জেওর-এ মুকীম হওয়ার অর্থও তাই।

চিল্লায় যেহেতু কোনো এক গ্রাম বা সিটিতে সাধারণত ১৫ দিন একাধারে থাকা হয় না তাই এক্ষেত্রে ১৫ দিনের বেশি সফর হলেও মুকীম হবে না। এজন্যই কাকরাইল থেকে মুসাফির হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৮-২৭০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৯১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১-১৩২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৫-১২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৫৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

এক ব্যক্তি রমযান মাসে সফর করার কারণে কয়েক দিনের রোযা...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি রমযান মাসে সফর করার কারণে কয়েক দিনের রোযা রাখতে পারেনি। রমযানের শেষ দিকে সে অসুস' হয়ে পড়ে এবং অনেক দিন অসুস' থাকার পর মারা যায়। প্রশ্ন এই যে, উক্ত ব্যক্তির এই রোযার উপর কি কোনো ধরনের কাফফারা দেওয়া ওয়াজিব?

উত্তর

ঐ রোযাগুলোর কাফফারা দিতে হবে না। কারণ সফর শেষে লাগাতার অসুস'তার দরুণ সে কাযা আদায়ের সুযোগ পায়নি। আর কাযা আদায়ের মতো সুস'তা ফিরে না পেলে ফিদয়া বা কাফফারা কোনোটি ওয়াজিব হয় না।

মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/২৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৬৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৩; হাশিয়াতু তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৩৭৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৩-৪২৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৯৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

এক মহিলা হজ্ব করবে। তার বড় ভাই সৌদীতে চাকরি করে।...

প্রশ্ন

এক মহিলা হজ্ব করবে। তার বড় ভাই সৌদীতে চাকরি করে। ঢাকা বিমান বন্দর পর্যন্ত তার সঙ্গে তার ছোট ভাই থাকবে। ঢাকা থেকে জেদ্দা বিমানবন্দর পর্যন্ত মামাতো বোন ও তার স্বামী সাথে থাকবে। জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে তার বড় ভাই তাকে নিয়ে যাবে এবং তার সঙ্গেই হজ্ব করবে। প্রশ্ন হল, সে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে জেদ্দা পর্যন্ত তার মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্ব করার জন্য যেতে পারবে কি?

উত্তর

মাহরাম ছাড়া নারীর জন্য হজ্বের সফরে যাওয়াও নিষেধ। মামাতো বোনের স্বামী মাহরাম নয়। তাই প্রশ্নোক্ত মহিলা মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্বে যেতে পারবে না। বরং স্বামী বা কোনো মাহরামের সাথেই যেতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে, ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো মহিলা তার মাহরাম ব্যতিরেকে সফর করবে না এবং কোনো পুরুষ মাহরাম ছাড়া কোনো মহিলার নিকট যাবে না। অতপর এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক সৈন্যদলের সাথে জিহাদে যেতে চাই আর আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চায়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমিও তার সাথে হজ্বে যাও।

-সহীহ বুখারী ১/১৪৭, ১/২৫০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৪; মুখতাসারুত তহাবী ৫৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; যুবদাতুল মানাসিক ৩২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৯১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমার বন্ধু সাঈদ। তার বাড়ি কুমিল্লা লাকসাম। সে চট্টগ্রামে এক...

প্রশ্ন

আমার বন্ধু সাঈদ। তার বাড়ি কুমিল্লা লাকসাম। সে চট্টগ্রামে এক ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করে। বাড়ি থেকে ঐ কোম্পানির দূরত্ব প্রায় দুইশত কিলোমিটার। তাই ওখানে অস্থায়ীভাবে একটি বাড়ি নির্মাণ করে এবং সেখানে সাত, আট দিন থাকার নিয়তে কুমিল্লা থেকে বের হয় এবং সাত আট দিন থাকার পর পরই কুমিল্লায় ফিরে আসে। এখন জানতে চাই, ঐ বাড়িতে থাকা অবস্থায় সে কি মুকীম হবে, নাকি মুসাফির? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব। উল্লেখ্য, ঐ বাড়িতে সে একাই থাকে।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার বন্ধু চট্টগ্রামের ঐ বাড়িতে এক নাগাড়ে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত না করা পর্যন্ত মুসাফির থাকবে। সুতরাং একবার যদি তিনি সেখানে ১৫ দিন বা তার বেশি সময় অবস্থানের নিয়ত করেন তাহলে পরবর্তীতে ঐ এলাকার বসবাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত অল্প সময়ের জন্যও সেখানে গেলে মুকীম গণ্য হবেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৮, ১/১৮০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১; মাজমাউল আনহুর ১/২৪৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: সফর

আমি একজন ড্রাইভার। ঢাকায় থাকি। কিন্তু দৈনিক গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রাম...

প্রশ্ন

আমি একজন ড্রাইভার। ঢাকায় থাকি। কিন্তু দৈনিক গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রাম আসা-যাওয়া করতে হয়। সেখানে নামায কসর পড়ব না পূর্ণ পড়ব? উল্লেখ্য, সেখানে আমার থাকার নির্ধারিত স্থান নেই। হোটেলে থাকি।

উত্তর

চট্টগ্রাম সফরকালে পথিমধ্যে আপনি মুসাফির গণ্য হবেন। আর গন্তব্যস্থলে পৌঁছে এক এলাকায় ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত না থাকলে সেখানেও মুসাফির হিসাবে নামায কসর করবেন।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৮৫২
তারিখ: ২১-মে-২০১৭
বিষয়: সফর

ঘুরতে গেলেও কি নামায কসর পড়তে হবে?

প্রশ্ন
মুফতী সাহেব! আমাদের বাড়ি ঢাকা ৷ আমরা কয়েকজন বন্ধু কয়েকদিনের জন্য কক্সবাজার এসেছি ঘুরতে ৷ আপনার নিকট জানার বিষয় হলো, ঘুরতে আসার কারনেও কি আমাদের নামায কসর পড়তে হবে? এবং আমরা জামাতে পড়লে কি পুর্ন পড়ব নাকি কসর পড়ব? জানিয়ে বাধিত করবেন ৷
উত্তর
সফর সমপরিমান রাস্তা অতিক্রম করার নিয়তে নিজ এলাকা থেকে বের হলেই মুসাফির ৷ অতএব আপনারা ঘুরতে যাওয়ার কারণেও মুসাফির হিসেবে গন্য হবেন ৷ অতএব আপনাদের নামায কসর তথা চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামায দু রাকাত করে পড়তে হবে ৷ এবং মুসাফির ইমামের পিছরে পড়লে নামায কসর পড়বেন ৷ মুকীম ইমামের পিছনে পড়লে পুর্ন পড়তে হবে৷
-ইলাউস সুনান ৭/৩১০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬১; ফাতাওয়া খানিয়া
১/১৬৪; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৭১ ৷ মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী: জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮১৪
তারিখ: ১২-মার্চ-২০১৭
বিষয়: সফর

লং ড্রাইভিংয়ে ড্রাইভারদের নামাযের বিধান ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমি ঢাকা সিলেট রোডে গাড়ি চালাই । আমার বাসা ঢাকায় । প্রতিদিন গাড়ি নিয়ে সিলেটে
আসা-যাওয়া করতে হয়। মাঝে মাঝে সিলেটে থাকি ৷ তবে নির্ধারিত কোন বাসা নেই ৷ হোটেলে থাকি ৷ জানার বিষয় হলো আমি সিলেটে আসা-যাওয়ার সময় ও সেখানে থাকলে নামায কসর পড়ব না পূর্ণ পড়ব?
উত্তর
প্রশ্নে বর্নিত ক্ষেত্রে সিলেটে সফরকালে পথিমধ্যে আপনি মুসাফির গণ্য হবেন। ঢাকা সীমানা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নামায কসর পড়বেন ৷ এবং সিলেটে পৌঁছে এক এলাকায় ১৫ দিন বা তার বেশি অবস্থানের নিয়ত না থাকলে সেখানেও মুসাফির হিসাবে নামায কসর করবেন। আর যদি ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি সময় অবস্থানের নিয়ত করেন তাহলে পুর্ন নামায পড়বেন ৷
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩০৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৭২
তারিখ: ২৩--২০১৬
বিষয়: সফর

মোজার উপর মাসাহ করার বিধান ৷

প্রশ্ন
মোজার উপর মাসাহ করার হুকুম কি? কি ধরনের মোজার উপর মাসাহ করা যাবে? আমাদের দেশে প্রচলিত কাপেড়র তৈরী মোজার উপর মাসেহ করা যাবে কি? অযু করে মোজাহ পরার পর কতদিন পর্যন্ত মাসাহ করা যাবে? বিস্তারিত জানাবেন!
উত্তর
মোজা যদি চামড়ার তৈরি হয় বা এমন কোন জিনিষের তৈরি হয় যা পরিধান করার পর পায়ে পানি পরলে পানি চামড়ায় পৌছে না যেমন পুলিশের বুট ইত্যাদি, অথবা মোজা এতটুকুই মোটা ও শক্ত কাপড়ের হয় যে, মোজাকে কোন কিছু দিয়ে বাঁধা ছাড়াই শুধু মোজা পা দিয়ে চার মাইলের মত হাটা যাবে, কিন্তু মোজা ছিড়বে না ৷ এসব মোজা যদি দিয়ে যদি টাখনু ঢাকা থাকে, এমকতাবস্থায় তার উপর মাসাহ করা বৈধ ৷
অতএব আমাদের দেশের প্রচলিত কাপড়ের পাতলা মোজার উপর মাসাহ করা কিছুতেই জায়েজ নয়।
পবিত্র অবস্থায় মোজা পরিধান করার পর মুকিম হলে একদিন এক রাত পর্যন্ত আর মুসাফির হলে তিনদিন তিন রাত পর্যন্ত উক্ত মোজার উপর মাসাহ করতে পারবে। অতপর মোজা খুলে পুনরায় পা ধুয়ে নিতে হবে৷
দলিলঃ
আবু দাউদ হাদীস নং ১৫৭, ১৫৯; হেদায়া ১/৬১; বাদায়েউস সানায়ে ১/১০১ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৫৪
তারিখ: ৬--২০১৬
বিষয়: সফর

মহিলারা মাহরাম ছাড়া হজ্বে যাওয়া৷

প্রশ্ন
আমাদের এলাকার এক মহিলার স্বামী মারা গেছে কয়েক বছর আগে। মহিলাটি এ বছর হজ্জ পালনের ইচ্ছা করেছে। অথচ তার মাহরাম বলতে এমন কেউ নেই, যে তাকে হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব নিয়ে যাবেন। তবে, এ বছর তার বোন আর বোনের স্বামী এ বছর হজ্জ পালনে যাবেন। এখন আমার জানার বিষয় হলো, মহিলাটি তার বোন আর বোনের স্বামীর সাথে কি হজ্জ পালন করতে যেতে পারবেন?
উত্তর
মহিলারা কোনো অবস্থাতেই মাহরাম পুরুষ ছাড়া হজ্জে যেতে পারবেন না। আর ভগ্নিপতি মাহরাম নয়। সুতরাং বোন সঙ্গে থাকলেও ভগ্নিপতির সঙ্গে হজে যাওয়া মহিলাদের জন্য জায়েজ নয়। সুতরাং উক্ত মহিলার নিজের মাহরাম সাথে থাকতে হবে৷ নিজ মাহরাম ব্যতিত হজ্জ পালনে যেতে পারবে না।
তবে এক ব্যক্তি কয়েকজনের মাহরাম হতে পারবে৷ যেমন একজন পিতা তার কয়েকজন মেয়েকে নিয়ে হজে যেতে পারে। মেয়েদের প্রত্যেকেরই যেহেতু পিতা মাহরাম । সুতরাং তাতে অসুবিধা নেই।
হাদীস শরীফে এসেছে, ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
কোনো মহিলা তার মাহরাম ব্যতিরেকে সফর করবে না এবং কোনো পুরুষ মাহরাম ছাড়া কোনো মহিলার নিকট
যাবে না। অতপর এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক সৈন্যদলের সাথে জিহাদে যেতে চাই আর আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চায়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,৷তুমিও তার সাথে হজ্বে
যাও।
সহীহ বুখারী ১/১৪৭, ১/২৫০; বাদায়েউস৷সানায়ে ২/২৯৯;৷আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৪৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭২২
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: সফর

বিয়ের আগে প্রেম করা ৷

প্রশ্ন
কিছু মনে করবেন না! ছেলে এবং মেয়ে দু’জনের মধ্য ইসলামিকভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলা যাবে কি না?
অর্থাৎ প্রেম ভালবাসা। উত্তর দিবেন..প্লিজ...
উত্তর
বিয়ের পূর্বে প্রেম- ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলা ইসলামি-শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ নয় এজন্য যে, ইসলামের বিধি- বিধান অনুযায়ী কোন পরনারী কোন পরপুরুষের সান্নিধ্যে আসতে পারেনা। দেখা-সাক্ষাৎ বা ফোন, নেট ইত্যাদির মাধ্যমে প্রেমালাপ করা যায়না। ইসলামি- শরিয়তের দৃষ্টিতে এগুলো একপ্রকার যিনা বা ব্যভিচার। এমনকি মনে মনে কল্পনা করে তৃপ্তি অনূভব করার দ্বারাও অন্তরের যিনা হয়। যা হারাম এবং কবিরা গুনাহ।
সহীহ মুসলিম ২/৩৩৬৷
মূলতঃ ছেলে এবং মেয়ে দু’জনের মধ্যে ইসলামিকভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলার একটাই পদ্ধতি-বিয়ে। সুতরাং শরীয়তের বাঁধা না থাকলে এবং বিয়ের জন্য উপযুক্ত মনে হলে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিবে। প্রস্তাব গৃহীত হলে বিয়ের মাধ্যমে স্বামী- স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে তুলবে প্রস্তাব গৃহীত না হলে ভুলে যাবে। ভুলে না যাওয়ার মানে হচ্ছে, শয়তানের পক্ষ থেকে বিপথগামী হওয়ার জন্য
ইবন আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, কোন পুরুষ যেন অপর কোন মহিলার সাথে নির্জনে অবস্থান না করে, কোন স্ত্রীলোক যেন কোন মাহরাম সঙ্গী ব্যতীত সফর না করে। এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূল (সাঃ)! অমুক অমুক যুদ্ধের জন্য আমার নাম তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আমার
স্ত্রী হজ্জে যাবে। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, ‘তবে যাও নিজ স্ত্রীর সঙ্গে হজ্জ কর’।
সহীহ বুখারি;হাদিস নং- 2798
অপর হাদিসে বলা হয়েছে, ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, “যখনই কোন পুরুষ পর নারীর সাথে নির্জনে দেখা করে তখনই শয়তান সেখানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত হয়
সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-২১৬৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-৫৫৮৬৷
প্রয়োজনে
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭১৬
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: সফর

তাবলীগের চিল্লায় মুকিম নাকি মুসাফির?

প্রশ্ন
আমার বাড়ি কুমিল্লা, আমি আল্লাহর রাস্তায় এক সালের জন্য বের হয়েছি, প্রতি চিল্লার পর কাকরাইলে আসি, সেখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়, যা আমার বাড়ি থেকে ৪৮ মাইলের দূর৷ কোথাও গিয়ে পনের দিন থাকা হয় না, এমতাবস্তায় আমরা মুকিম নাকি মুসাফির? নামায কসর পড়বো নাকি ফোল পড়বো? দয়া করে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব৷
উত্তর
কোন এক গ্রামে বা কোন এক সিটিতে লাগাতার পনের দিন থাকার নিয়ত না করলে মুসাফিরই থাকবে। তাই একাকী নামায পড়লে বা নিজেরা নামায পড়লে কসর তথা চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযগুলো দু রাকাত করে আদায় করতে হবে। কিন্তু মুকীম ইমামের পিছনে পড়লে পুরা নামাযই পড়তে হবে।
উল্লেখ্য যে, যদি এক সিটি বা এক গ্রামেরই একাধিক মসজিদে বা এক মসজিদেই পনের দিন থাকার নিয়ত করেন, তাহলে মুকীম হয়ে যাবেন৷ তখন নামায পূর্ণই পড়তে হবে। কসর করা যাবে না।
ফতওয়াযে কাজীখান ফিল হিন্দিয়া ১/১৬৪; আদ দুররুল মুখতার ২/৫৯৯,৬০৫৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৬৭
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: সফর

মেয়েদের জন্য মেডিকেল কলেজে পড়া সম্পর্কিত একটি বিষয়৷

প্রশ্ন
আমি একজন ৫ম বর্ষ মেডিকেল ছাত্রী। আমাদের একাডেমিক কোর্স ৬ বছর। তাবলীগের মেহনতের সাথে জড়ার পর আমি পূর্ণ শরয়ী পর্দা শুরু করি আল্লাহর ইচ্ছায়। এবং মাহরামের গুরুত্ব বুঝতে পারি। যেহেতু

আমাকে পড়াশোনার খাতিরে হাত মোজা খুলতে হতো এবং পুরুষ রোগী ধরতে হতো।

মাহরাম ছাড়া হোষ্টেলে থাকতে
হতো।

ক্লাস করতে বাসে করে ৩০ মিনিটের রাস্তা পাস করে কলেজ গেইট যেতে
হতো।

ভাইভা বোর্ড টিচাররা আমি যে প্রকৃত পরীক্ষার্থী এটা বুঝতে নেকাব খুলতে চাপ দিতো, মাঝে মাঝে ফেইলও করাতো। সেহেতু আমি গোনাহের ভয়ে পড়া বাদ দিয়ে চলে আসি। আমার হাজবেন্টও চায় না আমি পড়ি। কিন্তু আমার শ্বশুর শ্বাশুরী খুব চান আমি পড়াটা শেষ করি। ফেমিলি থেকে খুবমুখে আমি দেওবন্দের ওয়েব সাইটে প্রশ্ন করি। আর মুফতী মানসূরুল হক দা.বা. এর কাছে আমার স্বামী পরামর্শ চান। উনি বলেন, পড়া জায়েজ নেই। কিন্তু দেওবন্দ মাদরাসা থেকে পড়া শেষ করতে পারবো এ মর্মে এ্যানসার আসে। আমাদের স্থানীয় উলামাও বলেন পড়া শেষ করতে যা শুনে আমার পরিবার এবং শ্বশুরবাড়ীর পরিবার পক্ষ থেকে খুব চাপ আমার উপর। কিন্তু আমার একটুও ইচ্ছে করে না। এখন যেসব শ্রদ্ধেয় উলামাগণ পড়তে বলেছেন, তাদের যুক্তি হচ্ছে, বর্তমান জমানায় দ্বীনদার মহিলাদের খুব দরকার। যেহেতু আমি পড়েই ফেলেছি, তাই আমার পড়া কমপ্লিট করাটাই উম্মতের খিদমাত হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে হাত মোজা খুলতে সমস্যা নেই। এখন আমি কি করতে পারি শরীয়া
মতে?
আমার অনেক ফ্রেন্ড এরও একই জিজ্ঞাসা। উল্লেখ্য যে, আমার বাসা ঢাকায় আর কলেজ নোয়াখালী। মাহরাম গিয়ে আমার সাথে থাকবে এর কোন সুযোগ নেই।
উত্তর
বোন! আপনার পূর্ণ বিবরণ পড়ে আমাদের চোখের কোণের বেদনাশ্রু জমাট বেঁধেছে। হায়! একটি মুসলিম প্রধান দেশে একজন মুসলিম নারী তার ধর্ম পালন করতে প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়। এর চেয়ে বড় আফসোস ও হতাশার আর কী হতে পারে? আমরা সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত আবেদন রাখবোঃ নারীদের জন্য পৃথক মেডিকেল কলেজ এবং পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে পড়াশোনা করার পরিবেশ কায়েম করার জন্য। শুরুতে কয়েকটি মৌলিক কথা বলিঃ

পর্দা রক্ষা করা ফরজ। [সূরা নূর-৩০-৩১]

মাহরাম ছাড়া সফরের দূরত্বে ভ্রমণ করা বৈধ নয়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস
নং-৪২৩]

মাহরাম ছাড়া অনিরাপদ কোথাও নারীদের জন্য থাকা বৈধ নয়। [রদ্দুল মুহতার-২/১৫৭]

দ্বীনী শিক্ষার সাথে সাথে যে শিক্ষা মানুষের আবশ্যকীয় প্রয়োজনীয় বিষয়ের অন্তর্ভূক্ত। সেসব বিষয় শিক্ষা করাও ফরজে কেফায়া তথা একদলের উপর শিক্ষা করা ফরজ। ডাক্তারী পড়াশোনা মানুষের আবশ্যকীয় প্রয়োজন পূরণের অন্তর্ভূক্ত। তাই একদল মানুষের জন্য ডাক্তারী পড়াও ফরজ। সেই হিসেবে আপনার ডাক্তারী পড়াটি একটি শরয়ী ফরীজা আদায়েরই একটি মাধ্যম। তাই এটিকে একদম হেলাফেলা করার সুযোগ নেই। আপনার সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় আমাদের পরামর্শ হল, যেহেতু আপনার একাডেমিক পড়াশোনার ৬ বছরের কোর্সের মাঝে ৫ বছর ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। বাকি আছে আর মাত্র এক বছর। সেই সাথে আপনি বিবাহিত। পূর্ণ পর্দা রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করছেন। তা’ই আপনার উচিত বাকি পড়াশোনাটাও শেষ করা। বাকি প্রবল ইচ্ছে থাকা সত্বেও বাধ্য হয়ে শরীয়তের যেটুকু বিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে ইনশাআল্লাহ তা আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন। [মুস্তাফাদ- ফাতাওয়া উসমানী-১/১৬৯] বাকি সফরের দূরত্বের সফরের সময় একজন মাহরামকে সাথে রাখার চেষ্টা করুন। ঢাকায় বাসা থাকা অবস্থায় নোয়াখালী মেডিকেলে না পড়ে ঢাকায় বাকি পড়াটা শেষ করতে পারেন। কিংবা নোয়াখালীতে বাবা মায়ের সাথে বা শ্বশুর শ্বাশুরীর সাথে বাসা নিয়ে বাকি পড়াটা শেষ করতে পারেন। এক্ষেত্রে শরয়ী বিধান লঙ্ঘণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া আরো কমে
যাবে।
‎ﻗَﺎﻝَ ﻓِﻲ ﺗَﺒْﻴِﻴﻦِ ﺍﻟْﻤَﺤَﺎﺭِﻡِ : ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﻓَﺮْﺽُ ﺍﻟْﻜِﻔَﺎﻳَﺔِ ﻣِﻦْ
‎ﺍﻟْﻌِﻠْﻢِ، ﻓَﻬُﻮَ ﻛُﻞُّ ﻋِﻠْﻢٍ ﻟَﺎ ﻳُﺴْﺘَﻐْﻨَﻰ ﻋَﻨْﻪُ ﻓِﻲ ﻗِﻮَﺍﻡِ ﺃُﻣُﻮﺭِ
‎ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻛَﺎﻟﻄِّﺐِّ ﻭَﺍﻟْﺤِﺴَﺎﺏِ ‏( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻣﻘﺪﻣﺔ - 1/42 )
‎ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﺃَﺻَﺎﺑَﺘْﻬَﺎ ﻗُﺮْﺣَﺔٌ ﻓِﻲ ﻣَﻮْﺿِﻊٍ ﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ ﻟِﻠﺮَّﺟُﻞِ ﺃَﻥْ
‎ﻳَﻨْﻈُﺮَ ﺇﻟَﻴْﻪِ ﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞُّ ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﻈُﺮَ ﺇﻟَﻴْﻬَﺎ ﻟَﻜِﻦْ ﺗُﻌْﻠِﻢُ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً
‎ﺗُﺪَﺍﻭِﻳﻬَﺎ، ‏( ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻜﺮﺍﻫﻴﺔ، ﺍﻟْﺒَﺎﺏ
‎ﺍﻟﺜَّﺎﻣِﻦ ﻓِﻴﻤَﺎ ﻳَﺤِﻞّ ﻟِﻠﺮّﺟﻞِ ﺍﻟﻨَّﻈَﺮ ﺇﻟَﻴْﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﻟَﺎ ﻳَﺤِﻞّ
‎ﻟَﻪُ - 5/330 )
‎ﻭَﺍﻟﻄَّﺒِﻴﺐُ ﺇﻧَّﻤَﺎ ﻳَﺠُﻮﺯُ ﻟَﻪُ ﺫَﻟِﻚَ ﺇﺫَﺍ ﻟَﻢْ ﻳُﻮﺟَﺪْ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ
‎ﻃَﺒِﻴﺒَﺔٌ ﻓَﻠَﻮْ ﻭُﺟِﺪَﺕْ ﻓَﻠَﺎ ﻳَﺠُﻮﺯُ ﻟَﻪُ ﺃَﻥْ ﻳَﻨْﻈُﺮَ ﻟِﺄَﻥَّ ﻧَﻈَﺮَ
‎ﺍﻟْﺠِﻨْﺲِ ﺇﻟَﻰ ﺍﻟْﺠِﻨْﺲِ ﺃَﺧَﻒُّ ﻭَﻳَﻨْﺒَﻐِﻲ ﻟِﻠﻄَّﺒِﻴﺐِ ﺃَﻥْ ﻳُﻌَﻠِّﻢَ
‎ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً ﺇﻥْ ﺃَﻣْﻜَﻦَ ‏( ﺍﻟﺒﺤﺮ ﺍﻟﺮﺍﺋﻖ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻜﺮﺍﻫﻴﺔ، ﻓﺼﻞ
‎ﻓﻰ ﺍﻟﻨﻈﺮ ﻭﺍﻟﻠﻤﺲ، ﻟَﺎ ﻳَﻨْﻈُﺮُ ﻣَﻦْ ﺍﺷْﺘَﻬَﻰ ﺇﻟَﻰ ﻭَﺟْﻬِﻬَﺎ
‎ﺇﻟَّﺎ ﺍﻟْﺤَﺎﻛِﻢَ - 8/192 উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৫১
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: সফর

পুরুষ ও মহিলাদের নামাযে পার্থক্য৷

প্রশ্ন
কিছুদিন যাবৎ একটি মহল থেকে শুনা যাচ্ছে যে, পুরুষ মহিলার নামাযে কোন পার্থক্য নেই৷ কুরআন হাদীসে নাকি কোন পার্থক্যের কথা নেই৷ এতে জনসাধারন মারাত্বক বিভ্রান্তিতে পড়েছে৷ বিশেষ করে ইন্টার্নেটে একশ্রেনীর লোকেরা সরলমনা ইসলামপ্রীয় মেয়েদের কে বিভ্রান্ত করছে৷ তারা জর্জরিত হচ্ছে বহু সমস্যায়৷ মুফতী সাহেবের নিকট আকুল আবেদন এ বিষয়ে হাদীস মুতাবিক সঠিক সমাধান দিয়ে মুসলিম বোনদের বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করুন৷
উত্তর
আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের উদ্দেশ্যে৷ বিশেষ হেকমতের কারনেই মানুষকে পুরুষ ও মহিলা দুটি শ্রেনীভুক্ত করেছেন৷ মানুষ হিসেবে দুশ্রেনীর মাঝে ব্যবধান না থাকলেও বিশেষ কিছু দিক বিবেচনায় অনেক পার্থক্য রয়েছে৷ পার্থক্যের দিকটি বাহ্যিক জীবনে যেমন গুরত্ব দেয়া হয়েছে৷ ইবাদতের ক্ষেত্রেও পার্থক্যগুলো স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে৷ যেমন-
১৷ মহিলা পুরুষ উভয়ের উপর হজ্ব ফরজ৷ কিন্তু মহিলা যদি সফরের দুরত্ব থেকে আসে তাহলে পথ খরচ ছাড়াও হজ্বের সফরে তার সাথে মাহরাম পুরুষ থাকা শর্ত৷ (দলিল বুখারী হাঃ ১০৮৬; মুসলিম হাঃ ১৩৩৮)
২৷ ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য মাথা ঢাকা নিষেধ৷ অথচ মহিলাদের জন্য মাথা ঢাকা ফরজ৷ ( আবু দাউদ হাঃ ১৮৩৩; বায়হাকী ৯১২৮)
৩৷ পুরুষ উচু আওয়াজে তালবিয়া পড়বে, অথচ মহিলারা নিম্ন আওয়াজে পাঠ করা জরুরী ( দারাকুতনী হাঃ ২৮৪১)
৪৷ মহিলাদের রমল নিষেধ৷ পুরুষ রমল করবে৷ ( দারাকুতনী ২৭৪০)
৫) হালাল হওয়ার সময় পুরুষ মাথা মুন্ডাবে ৷ মহিলাদের মাথা মুন্ডানো হারাম ৷ ( দারাকুতনী ২৬৪০)
৬৷ পুরষের সতর নাভী থেকে হাটু পর্যন্ত৷ মহিলাদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুর্ন শরীর৷ ( তিরমিযি হাঃ ১১৭৩)
৭৷ আযান ইকামত পুরুষের জন্য মহিলাদের জন্য নয়৷ ( বায়হাকী হাঃ ১৯৫৯,১৯৬৩)
৮৷ ইমাম খতিব হওয়া পুরুষের কাজ মহিলাদের নয়৷ (বুখারী হাঃ ৪৪২৫, মুসতাদরাকে হাকেম,হাঃ ৭৯৫২)
৯৷ জুমার নামায পুরুষের জন্য ফরজ, মহিলাদের নয়৷ ( বায়হাকী ১৯৬০)
এছাড়াও বহু বিষয়ে পুরুষ মহিলার মাঝে পার্থক্য রয়েছে৷
উপরোক্ত মাসালাগুলোতে লক্ষনীয় বিষয় হলো, অনেক কাজ ফরজ হওয়া সত্বেও মহিলাদের পর্দার বিধানকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের জন্য সতন্ত্র হুকুম দেয়া হয়েছে৷
ঠিক তেমনি নামাযের মধ্যেও পুরুষ মহিলার বহু পার্থক্য রয়েছে৷ নিম্নে তা সংক্ষেপে হাদীস সহ উল্যেখ করা হলো৷
১৷ তাকবীরে তাহরীমার সময় পুরুষ কান পর্যন্ত হাত উঠাবে ৷ মহিলারা বুক পর্যন্ত৷ ( জুযয়ে রফয়ে ইদাইন পৃ ১৪, মুজামুল কাবীর হাঃ ২৪৯০, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা হাঃ ২৪৮৬, ২৪৮৭)
২৷ তাকবীরে তাহরীমার সময় পুরুষ চাদর থাকলে ভিতর থেকে হাত বের করবে মহিলারা ওড়নার ভিতর থেকে হাত বের করবে না৷ ( তিরমিযি হাঃ ১১৭৩, ইবনে হিব্বান হাল ৫৫৯৮, ৫৫৯৯,
৩৷ হাত উঠানোর সময় পুরুষ হাত বুকে মিলাবে না৷ মহিলারা বুকের সাতে মিলিয়ে রাখবে৷ ( মুসান্নাফে আব্দুর রজ্জাক ৫০৮০, ইবনে আবি শাইবা ২৪৮৯)
৪৷ পুরুষ হাতের আঙ্গুল সর্বাবস্থায় সাভাবিক রাখবে, মহিলারা মিলিয়ে রাখবে৷ ( ইবনে আবি শাইবা হাঃ ২৭৯৪)
৫৷ পুরুষ হাত নাভির নিচে বাধবে, মহিলাগন বুকের উপর বাধবে, কারন বুকে হাত বাধলে সতরের জন্য অধিক উপযুক্ত৷ ( তিরমিযি হাঃ ১১৭৩)
৬৷ পুরুষ ডান হাতের বৃদ্ধা ও কনিষ্ঠা আঙ্গুল দ্বারা বাম হাতকে শক্ত করে ধরবে৷ মহিলারা আলত ভাবে রাখবে৷ ( বুখারী হাঃ ৭৪১, ৪১৮)
৭৷ দাড়ানোর সময় মহিলারা দু পা মিলিয়ে রাখবে৷ পুরুষ দুপায়ে মাধ্যখানে ফাকা রাখবে৷ ( ইবনে আবি শাইবা হাঃ ২৭৯৪)
৮৷ মহিলারা সবসময় ক্বেরাত আস্তে পড়বে৷ ( বুখারী হাঃ ৬৮৪,১২০১, ১২০৪)
৯৷ রকুতে পুরুষের মাথা, কোমর, পিঠ সমান থাকবে৷ মহিলারা পুরোপুরি ঝুকবে না, হাত হাটু পর্যন্ত পৌছে পরিমান ঝুকবে৷ কারন এভাবে অধিক পর্দা হয়৷
১০৷ মহিলারা রুকুতে উভয় পায়ের গোড়ালি মিলিয়ে রাখবে, পুরুষ ফাকা করে রাখবে৷
১১৷ মহিলারা বাহুদ্বয় পাজরের সাথে মিলিয়ে রাখবে ৷ পুরুষ মিলাবে না৷
( ইবনে আবি শাইবা হাঃ ২৭৯৪)
১২৷ রুকুতে পুরুষ উভয় হাতে হাটু শক্ত করে ধরবে মহিলারা সাভাবিক রাখবে৷ ( বুখারী হাঃ ৫৬৭৩, ৬৪৬৩)
১৩৷ রুকুতে মহিলারা হাতের আঙ্গুল মিলিয়ে রাখবে৷ পুরুষ ছড়িয়ে রাখবে৷ ( ইবনে আবি শাইবা ২৭৯৪)
১৪৷ সিজদায় পুরুষ উভয় হাত কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত জমিন থেকে উপরে রাখবে, মহিলারা জমিনে বিছিয়ে রাখবে৷ (বায়হাকি হাঃ৩২৮৫,৩২৮৬)
১৫৷ সেজদায় পুরুষ পেট উরু থেকে পৃথক রাখবে৷ মহিলারা মিলিয়ে রাখবে৷ ( মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক হাঃ ৫০৮৬, ইবনে আবি শাইবা ২৭৯৬)
১৬৷ সেজদায় পুরুষ বাহু পাজর থেকে পৃথক রাখবে, মহিলারা মিলিয়ে রাখবে৷ ( ইবনে আবি শাইবা হাঃ২৭৯৭)
১৭৷ সেজদায় পুরুষ পায়ের পাতা খাড়া রাখবে৷ মহিলারা ডান দিক দিয়ে বের করে মাটিতে বিছিয়ে রাখবে৷ ( মুসান্নাফে আব্দুর রজ্জাক হাঃ ৫০৮২)
১৮৷ বসার ক্ষেত্রে পুরুষ বাম পায়ের উপর বসবে, মহিলারা নিতম্বের উপর বসবে৷ ( বায়হাকি ৩২৮৩, ইবনে আবি শাইবা ২৭৯৯)
১৯৷ পুরুষ বাম পা বিছিয়ে রাখবে, মহিলারা উভয় পা ডান দিকে বের করে মাটিতে বিছিয়ে রাখবে৷ ( ইলাউস সুনান ৩/২৭)
২০৷ পুরুষ উভয় উরু স্বাভাবিক রেখে বাম পায়ের পাতার উপর বসবে, মহিলারা উভয় পায়ের উরু মিলিয়ে রাখবে৷ (বায়হাকি হাঃ ৩২৮৩)
২১৷ পুরুষ বাম পায়ের পাতা বিছিয়ে ডান পা খাড়া রাখবে৷ মহিলারা ডান পায়ের গোছা বাম বায়ের গোছার উপর রাখবে৷ (বায়হাকী হাঃ ৩২৮৩)
২২৷ পুরুষ বসাবস্থায় হাতের আঙ্গুল স্বাভাবিক রাখবে৷ মহিলারা মিলিয়ে রাখবে৷ (যখীরা ২/১৯৩)
২৩৷ নামাযে পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাটুর নিচ পর্যন্ত ঢাকা ফরজ৷ আর মহিলাদের জন্য চেহারা হাত কব্জি পর্যন্ত ও পায়ের পাতা ব্যতিত সম্পুর্ন শরীর ঢেকে রাখা ফরজ৷ (তিরমিযি হাঃ ১১৭২)
উল্লিখিত বর্ননা থেকে হাদীসের আলোকেই স্পষ্টভাবে প্রমানিত যে, পুরুষ ও মহিলার নামায এক রকম নয়৷ বরং বহু পার্থক্য রয়েছে৷
যারা বলে পার্থ্য নেই৷ তাদের হাদীসের নুন্যতম জ্ঞান রাখে না৷ গ্রহনযুগ্য কোন দলিল প্রমানের উপর ভিত্তি না করেই এসব অবান্তর কথা বলে মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে৷
আল্লাহ তায়ালা এসব ফেতনাবাজদের ফেতনা থেকে সকলকে, বিশেষ করে মা বোনদের কে রক্ষা করুন৷ সহীহ বুঝে আমল করে উভয় জগতে ধন্য হওয়া তৌফীক দান করুন৷ আমীন৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৩১
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: সফর

অস্থায়ী বাড়িতে পনের দিনের কম থাকার নিয়তে গেলে কসর নামায পড়বে কিনা?

প্রশ্ন
আমার বন্ধু সাঈদ। তার বাড়ি কুমিল্লা লাকসাম। সে চট্টগ্রামে এক ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করে। বাড়ি থেকে ঐ কোম্পানির দূরত্ব প্রায় দুইশত কিলোমিটার। তাই ওখানে অস্থায়ীভাবে একটি বাড়ি নির্মাণ করে এবং সেখানে সাত, আট দিন থাকার নিয়তে কুমিল্লা থেকে বের হয় এবং সাত আট দিন থাকার পর পরই কুমিল্লায় ফিরে আসে। এখন জানতে চাই, ঐ বাড়িতে থাকা অবস্থায় সে কি মুকীম হবে, নাকি মুসাফির? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব। উল্লেখ্য, ঐ বাড়িতে সে একাই থাকে।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার বন্ধু চট্টগ্রামের ঐ বাড়িতে এক নাগাড়ে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত না করা পর্যন্ত মুসাফির থাকবে। সুতরাং একবার যদি তিনি সেখানে ১৫ দিন বা তার বেশি সময় অবস্থানের নিয়ত করেন তাহলে পরবর্তীতে ঐ এলাকার বসবাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত অল্প সময়ের জন্যও সেখানে গেলে মুকীম গণ্য হবেন। -বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৮, ১/১৮০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১; মাজমাউল আনহুর ১/২৪৩৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪২৬
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: সফর

আমাদের গ্রাম ফেনী শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। ঢাকা যাওয়ার...

প্রশ্ন
আমাদের গ্রাম ফেনী শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে। ঢাকা যাওয়ার
উদ্দেশে আমি গ্রামের বাড়ি থেকে
ফেনী শহর পর্যন্ত আসি। তখন যোহরের
সময় হলে দুই রাকাত কসর পড়ে গাড়িতে
উঠি। কিছুদূর যাওয়ার পর বাড়ি থেকে
একটি জরুরি ফোন আসে। ফলে সেখান
থেকে বাড়ি চলে আসি। বাড়ি ফেরার
পরও যোহরের সময় বাকি ছিল। এতে
আমার মনে সংশয় সৃষ্টি হয় যে, আমি
সফরের উদ্দেশে বের হলেও যেহেতু
সফরসম দূরত্ব অতিক্রম করার আগেই
যোহরের সময়ের মধ্যে বাড়ি ফিরে
এসেছি তাই আমাকে পুনরায় ঐ যোহরের
নামায পড়তে হবে কি? জানিয়ে বাধিত
করবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যখন যোহরের নামায আদায় করেছেন তখন যেহেতু আপনি সফর মুলতবি করেননি বরং ঐ সসয় মুসাফির অবস্থায়ই ছিলেন তাই আপনার ঐ যোহর নামায যথাযথভাবে আদায় হয়েছে। তাই পরবর্তীতে যোহরের ওয়াক্তের মধ্যে সফর বাতিল করে মুকীম হয়ে গেলেও ঐ নামায পুনরায় পড়তে হবে না। -রদ্দুল মুহতার ২/১২২, ১১৫; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ১২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫১৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১০৫
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: সফর

কোনো মুসাফির সফর থেকে নিজ ঘরের দিকে ফিরে আসার নিয়ত...

প্রশ্ন
কোনো মুসাফির সফর থেকে নিজ ঘরের দিকে ফিরে আসার নিয়ত করার পর পথিমধ্যে কোথাও দু’ এক দিনের নিয়তে অবস্থান করলে সেখানে কি সে কসর করবে, নাকি পুরা চার রাকাত পড়বে?
উত্তর
মুসাফির নিজ বাড়িতে ফিরে আসার
নিয়ত করলেই মুকীম হয়ে যায় না; বরং নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশ করার পর থেকে মুকীম গণ্য হয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় নিজ গ্রামে
প্রবেশের আগে পথিমধ্যে দু’এক দিনের জন্য কোথাও অবস্থান করলে মুসাফিরই থাকবে এবং নামায কসর করবে।
-শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১০২
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: সফর

আমার বাসা ঢাকার মূল শহরে। বিদেশ সফরকালিন বাসা থেকে এয়ারপোর্ট...

প্রশ্ন
আমার বাসা ঢাকার মূল শহরে। বিদেশ সফরকালিন বাসা থেকে এয়ারপোর্ট
যাওয়া-আসার সময় আমি কি মুকীম হব, নাকি মুসাফির?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি বিমানবন্দরের
পথে ও বিমান বন্দরে মুকীম থাকবেন তাই পুরো নামাযই পড়তে হবে। কেননা
মুসাফির হওয়ার জন্য নিজ শহরের আবাদি অতিক্রম করা শর্ত। তদ্রূপ সফর থেকে ফিরে বিমান বন্দরে অবতরণ করলেই মুকীম হয়ে যাবেন। নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. মদীনার ঘর-বাড়ি অতিক্রম করলে তখন নামায কসর পড়তেন এবং সফর থেকে ফেরার সময় মদীনার বসতিতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত কসর পড়তেন।
-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস ৪৩২৩, ৪৩১৯, ৪৩২১; কিতাবুল আছল ১/২৩২; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৪, ২৭৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৯৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭, ৪০১

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৮৩
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: সফর

আমার বাসা ঢাকার মূল শহরে। বিদেশ সফরকালিন বাসা থেকে এয়ারপোর্ট...

প্রশ্ন
আমার বাসা ঢাকার মূল শহরে। বিদেশ সফরকালিন বাসা থেকে এয়ারপোর্ট যাওয়া- আসার সময় আমি কি মুকীম হব, নাকি মুসাফির?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি বিমানবন্দরের পথে ও বিমান বন্দরে মুকীম থাকবেন তাই পুরো নামাযই পড়তে হবে। কেননা মুসাফির হওয়ার জন্য নিজ শহরের আবাদি অতিক্রম করা শর্ত। তদ্রূপ সফর থেকে ফিরে বিমান বন্দরে অবতরণ করলেই মুকীম হয়ে যাবেন। নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. মদীনার ঘর-বাড়ি অতিক্রম করলে তখন নামায কসর পড়তেন এবং সফর থেকে ফেরার সময় মদীনার বসতিতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত কসর পড়তেন। -মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস ৪৩২৩, ৪৩১৯, ৪৩২১; কিতাবুল আছল ১/২৩২; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৪

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৬২
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: সফর

যায়েদ যে স্থানে চাকরি করে সেখান থেকে তার বাড়ি শরীয়ত...

প্রশ্ন
যায়েদ যে স্থানে চাকরি করে সেখান থেকে তার বাড়ি শরীয়ত নির্ধারিত মুসাফিরের
সীমার অনেক উপরে। এখন প্রশ্ন হল, সে বাড়িতে যাওয়ার সময়
এবং বাড়ি থেকে আসার সময় রাস্তায় কছর নামায পড়বে কি? যদি কছর পড়তে হয় তাহলে সে
তার বাড়ি/চাকরিস্থলে পৌঁছার কতটুকু সীমানা পর্যন্ত পড়বে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় যায়েদের চাকরিস্থল যেহেতু সফরসম দূরত্বে তাই সেখানে যাতায়াতের সময় তার বাসস্থানের এলাকা ত্যাগ করার পর পথিমধ্যে সে মুসাফির গণ্য হবে এবং নামায কছর করবে। আর চাকরিস্থলে ১৫ দিনের নিয়তে কখনো থাকা না হলে সেখানেও সে মুসাফির থাকবে। অবশ্য চাকরিস্থলে যদি কখনো ১৫ দিনের নিয়তে অবস্থান করে থাকে তবে তখন থেকে চাকরিস্থলে সে মুকীম। এক্ষেত্রে নিজ গ্রামের সীমানা অতিক্রম করার পর থেকে চাকরিস্থলের এলাকায় প্রবেশের আগ পর্যন্ত সে মুসাফির গণ্য হবে। আর চাকরিস্থলে একবার মুকীম হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তীতে কখনো অল্প সময়ের জন্য গেলেও সেখানে সে মুকীম
হবে।
আর এক্ষেত্রে চাকরিস্থলে সে যেহেতু মুকীম তাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়ে চাকরিস্থলের এলাকা অতিক্রম করার পর থেকে সে মুসাফির গণ্য হবে। -শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৯৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৪৪
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: সফর

কোনো মুসাফির সফর থেকে নিজ ঘরের দিকে ফিরে আসার নিয়ত...

প্রশ্ন
কোনো মুসাফির সফর থেকে নিজ ঘরের দিকে ফিরে আসার নিয়ত করার পর পথিমধ্যে কোথাও দু’ এক দিনের নিয়তে অবস্থান করলে সেখানে কি সে কসর করবে, নাকি পুরা চার রাকাত পড়বে?
উত্তর
মুসাফির নিজ বাড়িতে ফিরে আসার নিয়ত করলেই মুকীম হয়ে যায় না; বরং নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশ করার পর থেকে মুকীম গণ্য হয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় নিজ গ্রামে প্রবেশের আগে পথিমধ্যে দু’এক দিনের জন্য কোথাও অবস্থান করলে মুসাফিরই থাকবে এবং নামায কসর করবে। -শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১; আদ্দুররুল মুখতার
২/১২৪

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৫১
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: সফর

আমি একজন ব্যবসায়ী। বিনিয়োগকারীদের টাকা দিয়ে মুদারাবার ভিত্তিতে আমি ব্যবসা...

প্রশ্ন
আমি একজন ব্যবসায়ী।
বিনিয়োগকারীদের টাকা দিয়ে মুদারাবার ভিত্তিতে আমি ব্যবসা করি। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে প্রায়ই আমাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যেতে হয়। যাতায়াত খরচ ও সফর অবস্থায় থাকা- খাওয়ার খরচ ব্যবসার টাকা থেকেই
নিয়ে থাকি। কিছুদিন পূর্বে ব্যবসার কাজে ঢাকা
যাওয়ার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় আমি মারাত্মক ভাবে আহত হই। চিকিৎসার পেছনে অনেক টাকা ব্যয় হয়। এখন জানার বিষয় হল, উক্ত চিকিৎসার খরচ আমি ব্যবসার টাকা থেকে নিতে পারব কি না? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কারীদের অনুমতি ব্যতীত আপনার চিকিৎসা খরচ ব্যবসার টাকা থেকে নেওয়া জায়েয হবে না। হ্যাঁ, তারা অনুমতি দিলে নিতে পারবেন। অবশ্য ব্যবসার প্রয়োজনে সফর করলে যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার সাধারণ খরচ ব্যবসার টাকা থেকে নিতে পারবেন।
-কিতাবুল আছল ৪/১৭-১৮০; আততাজরীদ
৭/৩৫১৭; মুজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়াহ, মাদ্দাহ : ১৪১৯; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী
৪/৩৫৩,
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২০৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: সফর

কোনো মুসাফির সফর থেকে নিজ ঘরের দিকে ফিরে আসার নিয়ত...

প্রশ্ন
কোনো মুসাফির সফর থেকে নিজ ঘরের দিকে ফিরে আসার নিয়ত করার পর পথিমধ্যে কোথাও দু’ এক দিনের নিয়তে অবস্থান করলে সেখানে কি সে কসর করবে, নাকি পুরা চার রাকাত পড়বে?
উত্তর
মুসাফির নিজ বাড়িতে ফিরে আসার নিয়ত করলেই মুকীম হয়ে যায় না; বরং নিজ এলাকার সীমানায় প্রবেশ করার পর থেকে মুকীম গণ্য হয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় নিজ গ্রামে প্রবেশের আগে পথিমধ্যে দু’এক দিনের জন্য কোথাও অবস্থান করলে মুসাফিরই থাকবে এবং নামায কসর করবে। -শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩১; আদ্দুররুল মুখতার
২/১২৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩০৪৮
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৫
বিষয়: সফর

বাড়ির কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করতে পারি না। তাই...

প্রশ্ন
বাড়ির কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে কুরআন মাজীদ
তিলাওয়াত করতে পারি না। তাই আমি প্রায় সময়ই ফজর
ও যোহরের নামাযের পর মসজিদে কিছুক্ষণ
কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করি। অনেক সময় ঝিমুনি
এলে মসজিদে ঘুমিয়ে পড়ি।
জানার বিষয় হল, উক্ত অবস্থায় মসজিদে ঘুমানো কি
দোষণীয়? জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
না, তিলাওয়াত, যিকির ইত্যাদি ইবাদত করতে গিয়ে
মসজিদে ঘুম এসে গেলে তা দোষণীয় হবে না। তবে এ সময়ও নফল ইতিকাফের নিয়ত করে
নেওয়া উত্তম। আর সাধারণ অবস্থায় মুসাফির ও
ইতিকাফকারী ছাড়া কিংবা দ্বীনী কাজের জরুরত ছাড়া
অন্যদের জন্য মসজিদে ঘুমানো মাকরূহ। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, তোমরা মসজিদকে ঘুমানোর স্থান বানিও না। -জামে তিরমিযী ১/৪৩; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬; রদ্দুল মুহতার ১/৬৬১; শরহুল মুনইয়াহ ৬১২;
আততাজনীস ১/৩৬৯; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর
১/২৭৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৬৯
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: সফর

জামান সাহেবের বাড়ি রংপুর। ব্যবসার উদ্দেশ্যে তিনি চট্টগ্রাম শহরে গেছেন।...

প্রশ্ন
জামান সাহেবের বাড়ি রংপুর। ব্যবসার উদ্দেশ্যে
তিনি চট্টগ্রাম শহরে গেছেন। সেখানে তিনি বিশ
দিন থাকবেন। কিন্তু দশ দিন অতিবাহিত হওয়ার
পর হঠাৎ বাড়ি থেকে তার মেয়ের অসুস্থতার খবর
আসে। তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে আরো একদিন থেকে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্তনেন। পেছনের দশদিনের চার রাকাত বিশিষ্ট নামায তো তিনি
মুকীম হিসেবে আদায় করেছেন কিন্তু এখন যেহেতু
তার বিশ দিন থাকা হচ্ছে না বরং সামনের একদিনসহ মোট এগারো দিন থাকা হবে তাই এ
অবস্থায় আগামী একদিনের নামায চট্টগ্রাম শহরে
থাকা অবস্থায় কীভাবে পড়বেন? কসর, নাকি পূর্ণ
নামায পড়বেন?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম শহরে থাকাকালীন
আগামী একদিনের নামাযও তাকে মুকীম হিসেবেই আদায় করতে হবে। কসর করা যাবে না। কেননা
চট্টগ্রাম শহরে পনেরো দিন বা তার অধিক থাকার
নিয়তে প্রবেশ করার দ্বারা তিনি সেখানে মুকীম
হয়ে গেছেন। সফরসম দূরত্বের উদ্দেশ্যে ঐ স্থান
ত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তিনি মুকীমই থাকবেন।
শুধু নিয়ত পরিবর্তনের কারণে ইকামতের হুকুম
বাতিল হবে না। তাই রংপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে
যখন তিনি চট্টগ্রাম সিটি শহরের সীমানা অতিক্রম করবেন তখন থেকে তিনি মুসাফির গণ্য
হবেন।
-বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৪; ফাতাওয়া রহীমিয়া
৫/১৭৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৬১
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: সফর

হজ্ব করার মতো কোনো আর্থিক সামর্থ্য আমার ছিল না। কিন্তু...

প্রশ্ন
হজ্ব করার মতো কোনো আর্থিক সামর্থ্য আমার ছিল না। কিন্তু মনে হজ্ব করার খুব আগ্রহ ছিল। এরপর মাওলানা আবু তাহের মিসবাহ দামাত বারাকাতুহুম- এর হজ্ব সফরনামা ‘‘বাইতুল্লাহর মুসাফির’’ পড়ে আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। ফলে ২০১০ সালে আমার এক বন্ধুর সাথে হজ্বে যাই। আমার হজ্বের যাবতীয় খরচ সে বহন করেছে এ শর্তে যে, পরবর্তীতে সময়-সুযোগমতো তাকে আমি ঐ টাকা পরিশোধ করে দিব। হজ্ব করে আসার পর দুই বছরের মধ্যে আমি তাকে ঐ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। এখন আমার কাছে অনেক টাকা পয়সা আছে। এ বছর আমি আবার হজ্ব করতে চাচ্ছি। তাই হুযুরের নিকট জানতে চাই যে, আমার অস্বচ্ছল অবস্থায় আদায়কৃত হজ্ব কি ফরয হিসেবে আদায় হয়েছে? আর এ বছর আমি কোন হজ্বের নিয়ত করব, ফরয নাকি নফল হজ্বের? দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
অস্বচ্ছল অবস্থায় কেউ ঋণ করে হজ্ব আদায় করলেও তা ফরয হিসেবেই আদায় হবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ঐ হজ্ব ফরয হিসেবেই আদায় হয়েছে। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে হজ্ব করলে তা নফল গণ্য হবে। তবে ঐ হজ্বের এহরামের সময় আপনি যদি সুনির্দিষ্টভাবে নফল হজ্বের নিয়ত করে থাকেন তা নফল হিসেবেই আদায় হয়েছে। ফরয হজ্ব আদায হয়নি। সামনে তা আদায় করে নিতে হবে। -গুনইয়াতুন নাসিক ৩২; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৪; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪১; আলবাহরুল আমীক ১/৩৮৬
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৪১
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: সফর

আমার নিকট এ পরিমাণ টাকা আছে যে, আমার উপর হজ্ব...

প্রশ্ন
আমার নিকট এ পরিমাণ টাকা আছে যে, আমার উপর হজ্ব ফরয। আমার স্বামীর দ্বীনের বুঝ নেই। তার উপর হজ্ব ফরয হওয়া সত্তে¡ও তিনি হজ্ব করছেন না। আমি অনুমতি চাচ্ছি আমাকেও অনুমতি দিচ্ছেন না। আমার জানার বিষয় হল, আগামী বছর আমার ভাই হজ্বে যাবেন। স্বামীর অনুমতি ছাড়াই আমি ভাইয়ের সাথে হজ্বে যেতে পারব কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
হজ্ব আল্লাহ তাআলার মহান হুকুম। শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ ফরয। হজ্ব ফরয হলে বিলম্ব করা গুনাহ। তাই আপনাদের উভয়েরই অনতিবিলম্বে হজ্বে যাওয়া আবশ্যক। কোনো কারণে স্বামীর যেতে যদি বিলম্ব হয় আর আপনার মাহরামের ব্যবস্থাও হয়ে যায় তবে স্বামীর জন্য আপনাকে বাধা দেওয়া ঠিক হবে না। তাই স্বামীকে এ বিষয়
বোঝাতে চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে তাকে রাজি করে তার সাথেই হজ্বে যান। যদি তিনি না যান তবে আপনি ভাইয়ের সঙ্গে ফরয হজ্ব আদায়ের জন্য যেতে পারবেন। কেননা ফরয হজ্ব আদায়ের ক্ষেত্রে স্বামীর অনুমতি বাধ্যতামূলক নয়। তবে নফল হজ্ব কিংবা ওমরা আদায়ের জন্য সফর করতে চাইলে অবশ্যই স্বামীর অনুমতি নিতে হবে। তার অনুমতি ছাড়া যাওয়া যাবে না।
-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৫; গুনইয়াতুন নাসিক ২৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৬১
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: সফর

আমি ঢাকার উত্তরায় থাকি। বাড়ি উত্তরবঙ্গের নাটোরে। গ্রামের বাড়ি যেতে...

প্রশ্ন
আমি ঢাকার উত্তরায় থাকি। বাড়ি উত্তরবঙ্গের নাটোরে। গ্রামের বাড়ি যেতে গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে বাসে উঠি। উত্তরা থেকে গাবতলী বেশ লম্বা পথ। মাঝপথে অনেক সময় নামায পড়তে হয়। বিপাকে পড়ে যাই নামায কীভাবে পড়ব। তাই জানার
বিষয় হল,
উত্তরা থেকে গাবতলী আসার পথে যেসব নামায পড়ব তা কি কসর পড়ব? সঠিক উত্তরটি জানালে কৃতজ্ঞ
থাকব।
উত্তর
সফরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেও ঢাকা সিটির ভিতরে আপনাকে পূর্ণ নামায আদায় করতে হবে। গাবতলীর দিকে আমিনবাজার ব্রীজ বর্তমান ঢাকা সিটির শেষ সীমানা। তাই আমিনবাজার ব্রীজ অতিক্রম করার পর থেকে কসর শুরু করবেন। -কিতাবুল আছল ১/২৩২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৯৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৫৯
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: সফর

আমার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি।...

প্রশ্ন
আমার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি। প্রতি এক মাস পর পর গ্রামের বাড়িতে যাই। জানার বিষয় হল, আসা-যাওয়ার পথে মুসাফির হিসেবে নামায পড়ব, নাকি মুকীম হিসেবে? দলিল-প্রমাণসহ জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার গ্রাম থেকে ঢাকা শহর যেহেতু সফরসম দূরত্বে অবস্থিত তাই যাওয়ার সময় ঢাকা সিটি থেকে বের হওয়ার পর থেকে আপনার গ্রামে প্রবেশের আগ পর্যন্ত এবং ফেরার সময় আপনার গ্রাম থেকে বের হওয়ার পর হতে ঢাকা সিটিতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত পুরো সময় মুসাফির থাকবেন। তাই এ সময় আপনি মুসাফির হিসেবে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায দুই রাকাত পড়বেন। তবে মুকীম ইমামের পিছনে পড়লে চার রাকাত বিশিষ্ট নামায পুরোই পড়তে হবে। -মুসনাদে আবু ইয়ালা ৫/৩৩০; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ২/৫৩১; শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬৪; আলমাবসূত, সারাখসী ২/১০৭
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৩০
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: সফর

জন্মস্থান কি ওয়াতনে আসলী? আমি আমার নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেছি...

প্রশ্ন
জন্মস্থান কি ওয়াতনে আসলী? আমি আমার নানা বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেছি আমি কি তাহলে নানা বাড়ীতে গেলে মুকীম থাকব? প্রকাশ থাকে যে, আমি আমার পিতা-মাতার সাথে তাদের বাড়িতেই থাকি। নানা বাড়িতে থাকি না।
উত্তর
কোথাও জন্মগ্রহণের দ্বারাই ঐ স্থান ওয়াতনে আসলী হয়ে যায় না। বরং স্থায়ীভাবে বসবাস করলে তা ওয়াতনে আসলী হিসেবে গণ্য হয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু নানা বাড়ী বসবাস করেন না বরং পিত্রালয়ই হচ্ছে আপনার স্থায়ী আবাসস্থল তাই পিত্রালয়ই আপনার ওয়াতনে আসলী গণ্য হবে এবং সেখানে আপনি মুকীম হবেন। -আলমাবসূত ১/২৫২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/১৬৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৪২
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: সফর

(ক) মহিলারা বদলী হজ্ব করতে পারবে কি? (খ) এক মহিলার...

প্রশ্ন
(ক) মহিলারা বদলী হজ্ব করতে পারবে কি? (খ) এক মহিলার স্বামী ও সন্তান নেই। তার বয়স ৬৮ বছর। চলাফেরা করতে পারেন। তিনি কি তার হজ্ব কাউকে দিয়ে করাতে পারবেন?
উত্তর
(ক) স্বামী বা যথাযথ অভিভাবকের অনুমতি থাকলে এবং মাহরাম পুরুষ সাথে থাকলে মহিলারাও বদলী হজ্বে যেতে পারবে।-গুনইয়াতুন নাসিক ৩৩৭; মানাসিক মোল্লা আলী কারী, ৩৩৭; আল মাসালিক ফিল মানাসিক ২/৮৯৩; আলবাহরুল আমীক
৪/২২৬৮
(খ) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মহিলা বয়স্কা হলেও যেহেতু তিনি চলাফেরা করতে পারেন সুতরাং তার সাথে হজ্ব করার মত কোনো মাহরাম পুরুষ থাকলে তার জন্য বদলী হজ্ব করানো জায়েয হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাহরামের ব্যবস্থা না হলে তার জন্য বদলী হজ্ব করানো বা বদলী হজ্বের ওসিয়ত করে যাওয়া জরুরি হবে। আর হজ্বের সফরে স্বামী বা পুত্র থাকা জরুরি নয়। বরং অন্য যে কোনো মাহরাম সঙ্গী (যেমন : ভাই, চাচা, মামা ইত্যাদি) পাওয়া গেলেও বদলী করানো যাবে না, নিজেই যাওয়া ফরয হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬১; ফাতহুল কাদীর ৩/৬৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৪১
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: সফর

হুযুর গত তিন বছর আগে আমার দাদা মৃত্যুবরণ করেন। দাদার...

প্রশ্ন
হুযুর গত তিন বছর আগে আমার দাদা মৃত্যুবরণ করেন। দাদার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে দাদি হজ্ব করতে পারবেন এ পরিমাণ সম্পদ মিরাস হিসেবে পেয়েছেন। গত বছর দাদি তাঁর প্রতিবেশী এক লোকের সাথে হজ্ব করতে যান। জানার বিষয় হলো, বৃদ্ধা মহিলার জন্য কি পর- পুরুষের সাথে হজ্ব করতে যাওয়া বৈধ হবে? যদি বৈধ না হয় তাহলে তার হজ্ব কি আদায় হয়ে যাবে?
উত্তর
বৃদ্ধা মহিলার জন্যও মাহরাম ছাড়া হজ্বে যাওয়ার অনুমতি নেই। হাদীস শরীফে এসেছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কোনো মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া সফর না করে এবং মাহরাম না থাকা অবস্থায় কোনো পুরুষ যেন তার কাছে গমন না করে। তখন এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি অমুক সেনাদলের সাথে জিহাদে যেতে চাচ্ছি। কিন্তু আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চাচ্ছে। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে তুমি তার (স্ত্রীর) সাথেই হজ্বে যাও। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৮৬২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৩৮ আরেক হাদীসে এসেছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া হজ্ব করতে না যায়। সুনানে দারাকুতনী ২/২২৩ তারপরও কোনো মহিলা যদি মাহরাম ছাড়া হজ্ব আদায় করে তাহলে তার হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। তবে মাহরাম ছাড়া যাওয়ার কারণে গুনাহগার হবে। উল্লেখ্য যে, মাহরাম ছাড়া হজ্বে গেলে অনেক জায়গায় মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়। সৌদী দূতাবাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় অন্যকে মাহরাম দেখাতে হয়। এজেন্সিওয়ালারা পরপুরুষকে মাহরাম হিসেবে দেখিয়ে তার ভিসার ব্যবস্থা করে থাকে। একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত করতে গিয়ে এভাবে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া খুবই ঘৃণিত কাজ এবং অন্যায়। -বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০০; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদদুর ১/৪৮৪; গুনয়াতুন নাসিক পৃ ২৯
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৩৬
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: সফর

আমি একজন ব্যবসায়ী। বিনিয়োগকারীদের টাকা দিয়ে মুদারাবার ভিত্তিতে আমি ব্যবসা...

প্রশ্ন
আমি একজন ব্যবসায়ী। বিনিয়োগকারীদের টাকা দিয়ে মুদারাবার ভিত্তিতে আমি ব্যবসা করি। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে প্রায়ই আমাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যেতে হয়। যাতায়াত খরচ ও সফর অবস্থায় থাকা-খাওয়ার খরচ ব্যবসার টাকা থেকেই নিয়ে থাকি। কিছুদিন পূর্বে ব্যবসার কাজে ঢাকা যাওয়ার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় আমি মারাত্মকভাবে আহত হই। চিকিৎসার পেছনে অনেক টাকা ব্যয় হয়। এখন জানার বিষয় হল, উক্ত চিকিৎসার খরচ আমি ব্যবসার টাকা থেকে নিতে পারব কি না? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের অনুমতি ব্যতীত আপনার চিকিৎসা খরচ ব্যবসার টাকা থেকে নেওয়া জায়েয হবে না। হ্যাঁ, তারা অনুমতি দিলে নিতে পারবেন। অবশ্য ব্যবসার প্রয়োজনে সফর করলে যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার সাধারণ খরচ ব্যবসার টাকা থেকে নিতে পারবেন। -কিতাবুল আছল ৪/১৭-১৮০; আততাজরীদ ৭/৩৫১৭; মুজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়াহ, মাদ্দাহ : ১৪১৯; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ৪/৩৫৩, ৩৫৪; আলমাবসূত, সারাখসী ২২/৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ১৮/১৯৯; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১৪৯
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০৬৮
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: সফর

গত রমযানে একদিন আমি রোযা রাখার পর ঢাকায় সফর করি।...

প্রশ্ন
গত রমযানে একদিন আমি রোযা রাখার পর ঢাকায় সফর করি। যাওয়ার পথে পিপাসা লাগায় সফরে আছি বলে পানি পান করি এবং অল্প নাস্তাও করি। পরে মনে পড়ে, আমি তো মুকীম অবস্থায় রোযা রেখেছি। তাই হুযুরের কাছে জানতে চাই, ঐ রোযা ভাঙ্গার কারণে কি আমার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় রোযা রাখার পর
সফরের
অজুহাতে রোযা ভেঙ্গে ফেলা জায়েয হয়নি। রোযা ভাঙ্গার কারণে গুনাহ হয়েছে। ঐ রোযাটি কাযা করে নিতে হবে এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে কাফফারা ওয়াজিব
হবে না।
উল্লেখ্য, সফর অবস্থায় রোযা না রাখার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু মুকীম বা মুসাফির অবস্থায় রোযা রাখলে শুধু সফরের অজুহাতে তা ভেঙ্গে ফেলা জায়েয নয়। -কিতাবুল আছল ২/১৬৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪০৩; ফাতহুল কাদীর ২/২৮৪; রদ্দুল মুহতার ২/৪৩১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২১৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০৬৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: সফর

প্রায় দুই মাস আগে একটা ছেলের সাথে মালিহার বিবাহ হয়।...

প্রশ্ন
প্রায় দুই মাস আগে একটা ছেলের সাথে মালিহার
বিবাহ হয়। বিবাহের একমাস পর সড়ক
দুর্ঘটনায় তার স্বামী মারা যায়। মালিহা এখন
তার বাবার বাড়িতে ইদ্দত পালন করছে। ইতোমধ্যে তার বিবাহের প্রস্তাব আসা শুরু
হয়েছে। মালিহার কানাডা প্রবাসী খালাতো ভাই
সপনের পক্ষ থেকেও প্রস্তাব এসেছে। সপন একমাস পর আবার কানাডায় চলে যাবে। তাই সে চাচ্ছে, এই মাসের মধ্যেই বিবাহের কার্য সম্পন্ন করে ফেলতে। কিন্তু মালিহার ইদ্দত শেষ হতে এখনো প্রায় তিন মাস বাকি। জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় সপনের জন্য কি মালিহাকে বিবাহ করা জায়েয হবে?
উত্তর
স্ত্রী অন্তসত্ত্বা না হলে স্বামীর
মৃত্যুতে স্ত্রীর জন্য চার মাস দশ দিন ইদ্দত
পালন করা ওয়াজিব। ইদ্দতকাল পূর্ণ হওয়ার আগে তাদেরকে বিয়ে করা ও বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া সবই নাজায়েয। ইদ্দতের ভেতর কোনো নারী বিবাহ করলে তা সহীহ হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) তোমরা (ইদ্দতের) নির্দিষ্টকাল পূর্ণ
না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ কার্য সম্পন্ন করার
সংকল্পও করো না।-সূরা বাকারা : ২৩৫ অন্যত্র ইরশাদ করেন, (তরজমা) তোমাদের মধ্য হতে যারা স্ত্রীদের রেখে মৃত্যুবরণ করে তাদের স্ত্রীগণ চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে।-সূরা বাকারা : ২৩৪ অতএব প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সপনের জন্য মালিহাকে ইদ্দতের ভেতর বিবাহ করা জায়েয হবে না। এক্ষেত্রে সুযোগ থাকলে সপন তার সফরকে বিলম্বিত করবে। অন্যথায় মালিহার ইদ্দত চার মাস দশ দিন শেষ হওয়ার পর সপন তার কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন করিয়ে নিবে। -তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৪২৬, ১/৪৩০; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৩৪


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০২৮
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: সফর

এক মহিলা হজ্ব করবে। তার বড় ভাই সৌদীতে চাকরি করে।...

প্রশ্ন
এক মহিলা হজ্ব করবে। তার বড় ভাই সৌদীতে চাকরি করে। ঢাকা বিমান বন্দর পর্যন্ত তার সঙ্গে তার ছোট ভাই থাকবে। ঢাকা থেকে জেদ্দা বিমানবন্দর পর্যন্ত মামাতো বোন ও তার স্বামী সাথে থাকবে। জেদ্দা বিমানবন্দর থেকে তার বড় ভাইতাকে নিয়ে যাবে এবং তার সঙ্গেই হজ্ব করবে। প্রশ্ন হল, সে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে জেদ্দা পর্যন্ত তার মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্ব করার জন্য যেতে পারবে কি?
উত্তর
মাহরাম ছাড়া নারীর জন্য হজ্বের সফরে যাওয়াও নিষেধ। মামাতো বোনের স্বামী মাহরাম নয়। তাই প্রশ্নোক্ত মহিলা মামাতো বোন ও তার স্বামীর সাথে হজ্বে যেতে পারবে না। বরং স্বামী বা কোনো মাহরামের সাথেই যেতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুলস্নাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো মহিলা তার মাহরাম ব্যতিরেকে সফর করবে না এবং কোনো পুরুষ মাহরাম ছাড়া কোনো মহিলার নিকট যাবে না। অতপর এক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক সৈন্যদলের সাথে জিহাদে যেতে চাই আর আমার স্ত্রী হজ্বে যেতে চায়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমিও তার সাথে হজ্বে যাও। -সহীহ বুখারী ১/১৪৭, ১/২৫০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৪; মুখতাসারুত তহাবী ৫৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; যুবদাতুল মানাসিক ৩২

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন