ফতোয়া: কসম-মান্নত

ফতোয়া নং: ৭৩১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি দাড়ি রাখার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে গিয়ে...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি দাড়ি রাখার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে গিয়ে এভাবে বলে, আমি যদি আর দাড়ি কাটি তাহলে আমি মুসলমান না। পরে সে দাড়ি কেটেছে। এখন তার বিধান কী? তার ঈমান ও বৈবাহিক সম্পর্কের কী হবে? কেউ কেউ বলেন, তার এ কথা কোনো হলফই হয়নি। কারণ দাড়ি যে একেবারে কাটা যায় না এমন তো নয়। এক মুষ্ঠির বেশি হলে তো কাটা যায়। উল্লেখ্য, তার উদ্দেশ্য ছিল দাড়ি যত বড়ই হোক মোটেই কাটবে না। এক মুষ্ঠির বেশি হলে কাটা যায়- এটা তার জানা ছিল না।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করার দ্বারা ঐ ব্যক্তির ঈমান নষ্ট হয়নি এবং বিবাহও ভাঙ্গেনি। তবে এ কথা বলার দ্বারা দাড়ি না কাটার হলফ হয়েছে। অতএব হলফ ভাঙ্গার কারণে তার উপর কসমের কাফ্ফারা আদায় করা ওয়াজিব। যারা বলেছে, এক মুষ্ঠির বেশি হলে দাড়ি কাটা যায় বিধায় হলফ হবে না তাদের কথা ঠিক নয়। কেননা বৈধ কাজ না করার উপরও হলফ হয়।

আর কোনো অঙ্গীকারের ক্ষেত্রেও ‘আমি মুসলমান নই’ এমন কথা বলা মারাত্মক অন্যায় ও গুনাহ। অতএব ঐ কথা বলার কারণে তাকে তাওবা করতে হবে।

-বাদায়েউস সনায়ে ৩/১৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১৩, ৭১৭; এলাউস সুনান ১১/৩৫৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৭৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

চাচার কাছে শুনেছি দাদীর অনেক জায়গা-জমি ছিল। চাচার বর্ণনা অনুযায়ী...

প্রশ্ন

চাচার কাছে শুনেছি দাদীর অনেক জায়গা-জমি ছিল। চাচার বর্ণনা অনুযায়ী বুঝলাম, দাদীর এ পরিমাণ প্রয়োজনাতিরিক্ত জমি ছিল যার একাংশও বিক্রি করে তিনি হজ্ব করতে পারতেন। কিন্তু সকল সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তিনি হজ্ব করেননি। চাচাকে এ ব্যাপারে বুঝালে তিনি দাদীর পক্ষ থেকে হজ্ব করতে রাজি হলেন। পরে চাচা বললেন, আম্মা আমাকে তো এ ব্যাপারে কিছু বলে যায়নি। এখন কীভাবে কী করি। আর সামনে আমার ব্যস্ততা বাড়তে পারে তখন অন্য কাউকে দিয়ে মায়ের পক্ষ থেকে হজ্ব করালে হবে কি না? এ দুটি প্রশ্নের উত্তর আমার জানা ছিল না। তাই হুযুরের কাছে এর উত্তর জানতে চাচ্ছি।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার দাদীর উপর হজ্ব ফরয ছিল। তাই তিনি যদিও অসিয়্যত করে যাননি, কিন্তু ওয়ারিশদের উচিত হবে তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করানো। বদলী হজ্ব ওয়ারিশকেই করতে হবে এমন কোনো বিধান নেই। তাই আপনার চাচা যদি নিজে দাদীর পক্ষ থেকে হজ্ব করেন, কিংবা অন্য কাউকে দিয়ে বদলী হজ্ব করান, উভয় অবস্থায় তা আপনার দাদীর পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে এবং এর দ্বারা আপনার দাদী উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।

হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এক লোক এসে বলল, আমার বোন হজ্বের মান্নত করেছিল। কিন্তু হজ্ব করার আগে সে মারা গেছে। তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার উপর কোনো ঋণ থাকলে তা তুমি আদায় করতে না? লোকটি বলল, হাঁ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কাজেই আল্লাহর হক আদায় করে দাও। কেননা তা আদায়ের বেশি উপযোগী। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৬৯৯)

-বাদায়েউস সনায়ে ২/৪৬৯; ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৮; মানাসিক, মুল্লা আলী আলকারী পৃ.৪৩৬; রদ্দুল মুহতার ২/৫৯৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৪৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক লোক মান্নত করলো, আল্লাহ যদি এই অসুস্থ গরুটি ভাল...

প্রশ্ন

এক লোক মান্নত করলো, আল্লাহ যদি এই অসুস্থ গরুটি ভাল করে দেন তাহলে তা সদকা করে দিবো। এখন গরুটি সুস্থ। এখন এই গরুটি সদকা করতে হবে নাকি বিক্রি করে একাধিক মাদরাসার গোরাবা ফান্ডে দান করা যাবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সরাসরি গরুটিই সদকা করে দেওয়া উত্তম। তবে সেটি বিক্রি করেও এর মূল্য গরীব মিসকীনকে সদকা করতে পারবে। আবার বিভিন্ন গোরাবা ফাণ্ডেও দিতে পারবে।

-আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৭, ২৯২; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৪০; ইমদাদুল আহকাম ৩/৩১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৪৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

গত বছর একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমি রমযানের শেষ দশকে...

প্রশ্ন

গত বছর একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমি রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফের মানত করি। কিন্তু অসুস্থতার দরুণ গতবার তা করতে পারিনি। এবার রমযানে আমি ইতিকাফ করেছি। এর দ্বারা কি আমার সেই মানত পুরা হয়েছে? নাকি সেই ইতিকাফ ভিন্ন করে কাযা করতে হবে?

উত্তর

পরবর্তী রমযানে ইতিকাফ করার দ্বারা আপনার উক্ত মানত পুরো হয়নি। কারণ নির্দিষ্ট রমযানে যেহেতু আপনি ইতিকাফ করতে পারেননি তাই তা কাযা হয়ে গেছে। আর কাযা ইতিকাফ রমযানের বাইরে পৃথক রোযা রেখে আদায় করতে হয়।

অতএব আপনাকে ঐ মানত পুরো করার জন্য রমযান ছাড়া অন্য মাসে রোযা রেখে আদায় করতে হবে।

-মাবসূত, সারাখসী ৩/১২১; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৭৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮৩; আদ্দুরুল মুখতার ২/৪৪৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৩৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

ক. কসমের কাফফারার রোযা কি লাগাতার ধারাবাহিকভাবে রাখতে হয়, নাকি...

প্রশ্ন

ক. কসমের কাফফারার রোযা কি লাগাতার ধারাবাহিকভাবে রাখতে হয়, নাকি মাঝে বিরতি দিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গেও রাখা যায়।

খ) একাধিক কসমের জন্য কি একাধিক কাফফারাই লাগবে, নাকি একটি কাফফারাই যথেষ্ট হবে?

উত্তর

ক) কসমের কাফফারা দরিদ্রদের খাবার বা কাপড় প্রদানের মাধ্যমে আদায় করার সামর্থ্য নাথাকলে তিনটি রোযা ধারাবাহিকভাবে রাখতে হবে। কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে তাকাফফারার রোযা হিসেবে আদায় হবে না। সেক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে তিনটি রোযা পূর্ণ করতেহবে।

খ) প্রতিটি কসমের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কাফফারা আদায় করতে হবে। একাধিক কসমের জন্য একটিকাফফারা যথেষ্ট নয়। -ফাতহুল কাদীর ৪/৩৬৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৪৩২; ফাতাওয়াহিন্দিয়া ২/৬৮; আলইখতিয়ার ৩/৩৮৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১৪; বেহেশতী জেওর ৩/৫৩;ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/৫৪৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার ছোট ছেলে যখন গর্ভে তখন আমি মানত করেছিলাম, যদি...

প্রশ্ন

আমার ছোট ছেলে যখন গর্ভে তখন আমি মানত করেছিলাম, যদি আমার গর্ভস্থ সন্তান ছেলে হয় তাহলে ওকে সিলেটের নির্দিষ্ট একটি মাদারাসায় পড়াব। পরবর্তীতে দেখা যায়, আমার ছেলে সন্তানই হয়েছে। কিন্তু ওর জন্মের ছ মাস পরেই ওর আবক্ষু সরকারি চাকরির সুবাদে যশোর বদলি হয়ে যায়। যার কারণে আমরা সপরিবারে যশোরে এসে বসবাস শুরু করি। জানতে চাচ্ছি, আমার ছেলেকে কি এখন যশোরের কোনো মাদরাসায়ও পড়াতে পারব, নাকি যে মাদরাসার নামে মানত করেছিলাম সেখানেই পড়াতে হবে? বিষয়টি নিয়ে আমরা পরিবারের সবাই ভীষণ পেরেশানিতে ভুগছি। তাছাড়া লেখাপড়ার জন্য ছেলেকে একাকী সিলেট পাঠানোও আমাদের জন্য অসম্ভবপ্রায়। তাই আমাদের এখন কী করণীয়? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ছেলেকে যশোরে বা অন্য কোথাও পড়াতে পারবেন। নির্দিষ্ট ঐমাদরাসাতে পড়ানো জরুরি নয়।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১২৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

কিছুদিন আগে আমার মা একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন।...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার মা একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। আমি তখন মানত করেছিলাম, মা যদি সুস্থ হন তাহলে একটি ছাগল যবাই করে গরীবদের খাওয়াব। আল্লাহর রহমতে আমার মা ঐ রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

এদিকে আমার ছোট ভাইকে ছাগল কিনতে দিয়েছিলাম। সে যে ছাগল নিয়ে এসেছে তা ছোট। ৭/৮ মাস বয়স। আমাদের ইমাম সাহেব বলছেন, এই ছাগল দিয়ে মানত আদায় হবে না। হুযুরের কাছে জানতে চাই, আমাদের ইমাম সাহেবের কথা কি সঠিক? আর এই ছাগলটি আমরা কী করব?

উত্তর

আপনাদের ইমাম সাহেব ঠিকই বলেছেন। ছাগল যবাই করে গরীবদের খাওয়ানোর মানত করলে ছাগলের বয়স অন্তত এক বছর হওয়া আবশ্যক।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ৭/৮ মাসের ছাগল দ্বারা এখন আপনার মানত আদায় হবে না। তা এখন আপনি বিক্রিও করে দিতে পারবেন বা এর বয়স এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর এটি দ্বারাও মানত আদায় করতে পারবেন।

-বাদায়েউস সনায়ে ৪/২৩৩; ইমদাদুল আহকাম ৩/২৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১২৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার ছেলে গত মাসে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে। সুস্থতার কোনো...

প্রশ্ন

আমার ছেলে গত মাসে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে। সুস্থতার কোনো লক্ষণ না দেখে তার মা মানত করে যে, ছেলে সুস্থ হলে আগামী মাসের প্রথম বৃহস্পতি ও শুক্রবার রোযা রাখবে। পাঁচ-ছয়দিন পর আল্লাহ তাআলা ছেলেকে সুস্থ করে দেন। তার মা বৃহস্পতি ও শুক্রবারে রোযা রাখার জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ঘটনাক্রমে বুধবার থেকে তার মাসিক শুরু হয়ে যায়। এখন ঐ রোযা কি আদায় করা লাগবে? যদি আদায় করতে হয় তাহলে কি পবিত্র হওয়ার পর বৃহস্পতি-শুক্রবারেই রাখতে হবে নাকি যে কোনোদিন রাখলেই চলবে?

উত্তর

পবিত্র হওয়ার পর মানতের ঐ রোযা তাকে রাখতে হবে। অবশ্য পবিত্রতার পর যে কোনোদিন রোযাদুটি রাখতে পারবে। পরবর্তী বৃহস্পতি-শুক্রবার দিন রাখা আবশ্যক নয়।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১০; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৯২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার বড় মেয়ের বিবাহ নিয়ে বেশ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। তখন...

প্রশ্ন

আমার বড় মেয়ের বিবাহ নিয়ে বেশ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। তখন আমি মনে মনে এই সংকল্প করি, বিয়েটা সুষ্ঠুভাবে হয়ে গেলে হাজার খানেক টাকা সদকা করব। আল্লাহর রহমতে সুষ্ঠুভাবেই বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে ইমাম সাহেবের সাথে আলোচনা করতে গেলে তিনি বললেন, আপনি যেহেতু মুখে কিছু উচ্চারণ করেননি। শুধু মনে মনে স্থির করেছেন তাই এটা মান্নত হয়নি এবং এক হাজার টাকা সদকা করা আপনার জন্য আবশ্যকও নয়। আমার জানার বিষয় হল, টাকা সদকা করা কি আসলেই আমার জন্য আবশ্যক নয়?

উত্তর

আপনি যেহেতু মনে মনে আল্লাহর রাস্তায় খরচ করতে সংকল্প করেছেন তাই তা পূর্ণ করাই উচিত হবে। তবে আপনি যেহেতু মুখে উচ্চারণ না করে শুধু মনে মনে নিয়ত করেছেন তাই সেটা মান্নত হয়নি। কেননা মান্নতের জন্য মুখে উচ্চারণ করা জরুরি। সুতরাং ঐ এক হাজার টাকা সদকা করা আপনার জন্য ওয়াজিব নয়। ইমাম সাহেবের ঐ কথা ঠিক আছে।

-হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ৩৮৩; আহকামুল কুরআন, ইবনে আরাবী ১/২৬৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২৩২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৯১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

কিছুদিন আগে আমার ছেলে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়। তার আশঙ্কাজনক...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার ছেলে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়। তার আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে আমি বলেছিলাম, সে সুস্থ হলে আল্লাহর রাস্তায় একটা ছাগল সদকা করব। তার সুস্থতায় বেশ বিলম্ব হচ্ছিল। আমি তার আশু সুস্থতা কামনা করে সে সুস্থ হয়ে উঠার আগেই একটি ছাগল সদকা করে দেই। হুজুরের কাছে জানতে চাই, সুস্থ হয়ে উঠার আগেই ছাগল সদকা করা কি সহীহ হয়েছে এবং আমার মান্নত পূর্ণ হয়েছে?

উত্তর

হাঁ, আপনার ঐ ছাগল সদকা করা সহীহ হয়েছে এবং তা সাধারণ সদকার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তা দ্বারা মান্নত আদায় হয়নি। কেননা আপনি যেহেতু ছেলে সুস্থ হলে ছাগল সদকা করার মান্নত করেছেন তাই ছেলে সুস্থ হওয়ার আগে ছাগল সদকা করার দ্বারা উক্ত মান্নত আদায় হবে না। অতএব সন্তান সুস্থ হওয়ার পর মান্নত পূরণের জন্য আপনাকে নতুন করে ছাগল সদকা করতে হবে। উল্লেখ্য, বিপদ-মুসিবতে আল্লাহর জন্য দান করার ক্ষেত্রে মান্নত না করে সরাসরি নগদ দান করাই উত্তম। এটিই হাদীসের শিক্ষা। হাদীসে আছে,মান্নতের দ্বারা কৃপণের মাল বের হয়।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৩৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৮৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার খালাত ভাই তিনটি বিষয়ে পৃথক পৃথক কসম করেছিল এবং...

প্রশ্ন

আমার খালাত ভাই তিনটি বিষয়ে পৃথক পৃথক কসম করেছিল এবং সে প্রত্যেকটি বিষয়েই কসম ভঙ্গ করেছে। এখন হুযুরের নিকট আমার জানার বিষয় হল, ঐ তিনটি কসম ভঙ্গের জন্য কি একটি কাফফারা যথেষ্ট হবে, নাকি প্রত্যেকটির জন্য ভিন্ন ভিন্ন কাফফারা দিতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রত্যেক কসম ভঙ্গের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কাফফারা আদায় করা জরুরি। কেননা প্রত্যেক কসম ভঙ্গের জন্য পৃথক কাফফারা ওয়াজিব। সবগুলোর জন্য একটি কাফফারা যথেষ্ট নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার খালাত ভাইকে তিনটি কসম ভঙ্গের জন্য তিনটি কাফফারা আদায় করতে হবে।

-কিতাবুল আছল ২/২৯৭; মাবসূত, সারাখসী ৮/১৫৭; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯১; আদ্দুররুল মুহীত ৩/৭১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৮৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

কিছুদিন আগে আমার ছোট ছেলে একটি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার ছোট ছেলে একটি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তখন আমি মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ তাআলা যদি আমার ছেলেকে সুস্থ করে দেন তাহলে আমি আমাদের ছাগলটি প্রতিবেশী আবদুল ওয়াহাবকে দিব। আলহামদু লিল্লাহ, আমার ছেলে এখন সুস্থ হয়েছে। এদিকে আমার অন্য এক প্রতিবেশী শফিকও অত্যন্ত গরিব। সে বিপদে পড়ে আমার নিকট কিছু টাকা চাচ্ছে। হুযুরের নিকট জানতে চাই-

ক) আমি কি আমার মান্নত আবদুল ওয়াহাবকে না দিয়ে শফিককে দিতে পারব?

খ) ঐ ছাগলটি দেওয়াই কি জরুরি? ছাগলের পরিবর্তে টাকা দিলে কি মান্নত আদায় হবে?

উত্তর

ক) সুনির্দিষ্টভাবে কোনো গরিবকে দেওয়ার মান্নত করলেও তাকে দেওয়া জরুরি হয়ে যায় না। বরং অন্য গরিবকেও দেওয়া যায়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ছাগলটি আবদুল ওয়াহাবকে না দিয়ে শফিককেও দিতে পারবেন। -আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৪০

উত্তর : খ) আপনি যেহেতু ছাগল দেওয়ার মান্নত করেছেন তাই বিশেষ কোনো ওজর না হলে ছাগলটিই দান করবেন। তবে ছাগলের ন্যায্যমূল্য মান্নত হিসেবে দিলেও মান্নত আদায় হয়ে যাবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৭; ফাতহুল কাদীর ২/১৪৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/১১৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৮৫-২৮৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৫৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার এক সহপাঠী কিছুদিন আগে একটি বিষয়ে কসম করে পরে...

প্রশ্ন

আমার এক সহপাঠী কিছুদিন আগে একটি বিষয়ে কসম করে পরে তা ভঙ্গ করেছে। কিন্তু বর্তমানে টাকা দিয়ে বা খানা খাইয়ে কসমের কাফ্ফারা আদায় করার মত সামর্থ্য তার নেই। এখন কি সে রোযার মাধ্যমে কাফ্ফারা দিতে পারবে নাকি টাকা হাতে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে?

উত্তর

আপনার ঐ সহপাঠী বর্তমানে টাকা দিয়ে বা খানা খাইয়ে কাফ্ফারা আদায়ের সামর্থ্য না রাখলে সে রোযার মাধ্যমে কাফ্ফারা আদায় করতে পারবে। কেননা যখন কাফ্ফারা আদায় করছে তখন অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে কাফ্ফারা আদায়ের সামর্থ্য না থাকলেই রোযার মাধ্যমে কাফ্ফারা আদায় করা জায়েয। কাফ্ফারা আদায়ের জন্য টাকা হাতে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা জরুরি নয়। তবে রোযা রেখে কাফ্ফারা আদায় করা অবস্থায় সামর্থ্যবান হয়ে গেলে রোযার কাফ্ফারা যথেষ্ট হবে না। সেক্ষেত্রে টাকা দিয়ে বা খানা খাইয়েই নতুন করে কাফ্ফারা আদায় করা জরুরি হবে।

Ñফাতহুল কাদীর ৪/৩৬৭; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭২৭; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৫৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একবার কুরআনের কসম খেয়ে বলি, আমি ... একাজটা অবশ্যই...

প্রশ্ন

আমি একবার কুরআনের কসম খেয়ে বলি, আমি ... একাজটা অবশ্যই করবো। কিন্তু পরে আমি আর ঐ কাজটা করতে পারিনি। এখন জানার বিষয় হলো, আমার ঐ কথার কারণে কি কসম হয়েছিল? এখন আমার করণীয় কি?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত কথার কারণে আপনার কসম সংঘটিত হয়েছে। পরবর্তীতে ঐ কাজটি না করার কারণে আপনার কসমটি ভঙ্গ হয়েছে। এখন আপনার কর্তব্য হলো, কসম ভঙ্গের কাফ্ফারা আদায় করা। কসমের কাফ্ফারা হলো, দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুইবেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানো বা এর মূল্য দিয়ে দেওয়া। অথবা দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে পোশাক দেওয়া। তবে কেউ যদি এর কোনেটির সামর্থ্য না রাখে তাহলে সে লাগাতার তিনটি রোযা রাখবে। Ñসুরা মায়েদা : ৮৯; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৫৬;ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ২/৫৩, ২/৬১; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৭২৬

প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত কোনো কিছুর কসম করা নিষেধ। তাই কেউ কসম করতে চাইলে আল্লাহর নামেই কসম করা আবশ্যক।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৫৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি দীর্ঘদিন যাবৎ চাকুরী তালাশ করছিলাম। কিন্তু কোথাও মনমত চাকুরী...

প্রশ্ন

আমি দীর্ঘদিন যাবৎ চাকুরী তালাশ করছিলাম। কিন্তু কোথাও মনমত চাকুরী খুঁজে পাচ্ছিলাম না। একবার একটা ভাল চাকুরির ইন্টারভিউয়ে উত্তীর্ণ হই। কিন্তু চাকুরী হবে কি না তা নিয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তায় ভুগছিলাম। তখন আমি এই বলে মান্নত করি যে, যদি আমার এই চাকুরিটা হয়ে যায় তাহলে আমি প্রতি জুমার দিন রোযা রাখবো। ঘটনাক্রমে আমার ঐ চাকুরিটা হয়ে যায়। তাই আমি প্রত্যেক জুমার দিন রোযা রেখে যাচ্ছি। কিন্তু বর্তমানে আমার সাংসারিক ঝামেলা অনেক বেড়ে গেছে। তাই মাঝেমধ্যে জুমআর দিনে রোযা রাখা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। হুযুরের নিকট আমার জানার বিষয় হলো, রোযা না রাখতে পারলে আমার করণীয় কী? যে দিনগুরোর রোযা ছুটেছে সেগুলোর জন্য কী করতে হবে? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হবো।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত মান্নতের কারণে আপনার উপর প্রতি জুমাবার রোযা রাখা ওয়াজিব। কোনো কারণে জুমাবারে রোযা রাখা সম্ভব না হলে পরবর্তীতে অন্য কোনোদিন তা কাযা করে নিতে হবে। আর বিগত যে কয়দিনের রোযা ছুটেছে সেগুলোও কাযা করতে হবে। অবশ্য ভবিষ্যতে বার্ধক্য বা জটিল কোনো অসুস্থতার কারণে রোযা রাখা সম্ভব না হলে এবং পরবর্তীতে কাযা করার সামর্থ্যও ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে তখন প্রত্যেক রোযার জন্য একটি করে ফিদয়া দিতে হবে। ফিদয়া হলো, একজন দরিদ্রকে তৃপ্তি সহকারে দুইবেলা খাওয়ানো বা এর মূল্য দিয়ে দেওয়া।

Ñআলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৭৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৫৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার চাচাত ভাই নাবালেগ বয়সে টেলিভিশন না দেখার কসম করেছিল।...

প্রশ্ন

আমার চাচাত ভাই নাবালেগ বয়সে টেলিভিশন না দেখার কসম করেছিল। আবার নাবালেগ অবস্থায়ই টেলিভিশন দেখে ফেলে। এখন তার উপর কসমের কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে কি না। জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

আপনার চাচাত ভাই যেহেতু নাবালেগ অবস্থায় কসম করেছে তাই তার উপর ঐ কসম ভঙ্গের কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না। কিন্তু নাবালেগদের জন্যও নিজেদের অঙ্গিকার পুরা করা কাম্য। বিশেষ কসম করুক বা না করুক গুনাহের কাজ থেকে তো বেঁচে থাকা এমনিতেই জরুরী।

Ñমুসনাদে আহমদ, হাদীস ৯৪০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৪০৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৮২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার বড় ভাই কিছুদিন আগে একটি সমস্যায় পড়ে মান্নত করেছিলেন,...

প্রশ্ন

আমার বড় ভাই কিছুদিন আগে একটি সমস্যায় পড়ে মান্নত করেছিলেন, যদি আল্লাহ আমার সমস্যা দূর করে দেন তাহলে আমি চিল্লায় বের হব। ভাইয়ার ঐ সমস্যাটা আল্লাহর রহমতে চলে গেছে। এখন জানতে চাচ্ছি, ভাইয়ার জন্য কি চল্লিশ দিনের চিল্লায় বের হওয়া আবশ্যক? বের না হলে কি গুনাহ হবে?

উত্তর

চিল্লায় বের হওয়ার মান্নত করলে শরীয়তের দৃষ্টিতে তা মান্নত হয় না। অতএব আপনার ভাইয়ের জন্য চিল্লায় বের হওয়া আবশ্যক নয়। তবে সমস্যা না থাকলে এমন ইচ্ছা পূরণ করাই উচিত।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৮১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

চাকরি পাওয়ার জন্য কি মান্নত করা জায়েয আছে? কেউ যদি...

প্রশ্ন

চাকরি পাওয়ার জন্য কি মান্নত করা জায়েয আছে? কেউ যদি চাকরি পাওয়ার/ভবিষ্যতে কোনো কিছু পাওয়ার আশায় বলে, আমি পঞ্চাশ হাজার অথবা এক লক্ষ টাকা মসজিদ/এতিমখানা অথবা কোনো গরীব মানুষকে দেব। তার এই কথা কি শরীয়তসম্মত হবে?

উত্তর

কোনো বৈধ বস্তু অর্জনের আশায় মান্নত করা জায়েয আছে। তাই চাকরি পাওয়ার আশায় মান্নত করা যাবে এবং চাকরি পেলে তা পূর্ণ করতে হবে।

তবে মান্নত সহীহ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। সেসব শর্তের আলোকে মসজিদের জন্য মান্নত করা সহীহ নয়। তাই মসজিদের জন্য মান্নত করলে তা ওয়াজিব হয় না। তবে মান্নত না হলেও এ ধরনের ওয়াদা পূর্ণ করা উত্তম।

উল্লেখ্য যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে মান্নতের চেয়ে নগদ দান-সদকার ফযীলত ও গুরুত্ব অনেক বেশি। সদকা দ্বারা আল্লাহ অধিক সন্তুষ্ট হন। আর মান্নত শরীয়তসম্মত। তবে সদকার চেয়ে উত্তম নয়। হাদীসে আছে, মান্নত দ্বারা কৃপণের মাল বের হয়। অর্থাৎ মান্নত কৃপণ লোকের কাজ।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মান্নত এমন কোনো কিছুকে আদম সন্তানের নিকটবর্তী করে দিতে পারে না যা আল্লাহ তাআলা তার জন্য তাকদীরে নির্দিষ্ট করেননি। তবে মান্নত কখনো তাকদীরের সাথে মিলে যায়। এর মাধ্যমে কৃপণের নিকট হতে ঐ সম্পদ বের করে নিয়ে আসা হয় যা কৃপণ (এমনিতে) বের করতে চায় না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬৪০

অতএব কাক্সিক্ষত বস্তু অর্জনের জন্য মানত করা জায়েয। তবে মানত করা ছাড়া সামর্থ্য অনুযায়ী পূর্বেই দান-খয়রাত করা অধিক উত্তম কাজ।

-সূরা হজ্ব ২৯; আলইখতিয়ার ৩/৪৪৫; আলমুগনী ১৩/৬২১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪১, ৪/২২৮; মিনহাতুল খালিক ৪/২৯৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৭৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

একবার আমি একটি বিষয়ে আল্লাহ তাআলার নামে শপথ করে বলি...

প্রশ্ন

একবার আমি একটি বিষয়ে আল্লাহ তাআলার নামে শপথ করে বলি যে, আমি এ কাজ কখনো করব না। কিন্তু পরে আমি তা ভুলে যাই এবং কাজটি করে ফেলি। আমি জানতে চাচ্ছি যে, উক্ত কাজটি ভুলে করার দ্বারাও কি আমার কসম ভঙ্গ হয়ে গেছে? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কসম ভঙ্গ হয়ে গেছে। কারণ কোনো বিষয় না করার শপথ করার পর ভুলে করার দ্বারাও কসম ভঙ্গ হয়ে যায়। তাই আপনাকে ঐ কসমের কাফফারা আদায় করতে হবে।

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৪২৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮১; রদ্দুল মুহতার ৩/৭০৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/৩৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৬৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একবার খুব জটিল রোগে আক্রান্ত হলাম। তখন মানত করলাম...

প্রশ্ন

আমি একবার খুব জটিল রোগে আক্রান্ত হলাম। তখন মানত করলাম যে, আল্লাহ তাআলা যদি আমাকে সুস্থ করেন তাহলে আমি হজ্ব করব। তখন আমার আর্থিক অবস্থা এমন ছিল যে, আমার উপর হজ্ব ফরয। প্রশ্ন হল, আমার জন্য কি পৃথক দুটি হজ্ব করা জরুরি? নাকি শুধু ফরয হজ্ব আদায় করলেই হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ফরয হজ্ব আদায় করলেই চলবে। মানতের জন্য পৃথকভাবে আরেকটি হজ্ব আদায় করতে হবে না। অবশ্য আপনি যদি ফরয হজ্ব ছাড়াও ভিন্ন একটি মানতের হজ্ব করবেন বলে সুনির্দিষ্টভাবে নিয়ত করে থাকেন তবে মানতের জন্য পৃথক হজ্ব করতে হবে। এক্ষেত্রে ফরয হজ্ব দ্বারা মানতের হজ্ব আদায় হবে না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৯৩; ফাতহুল কাদীর ৩/৮৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬৭৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৬৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮২৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক ব্যক্তি কসমের কাফফারা আদায় করবে। সে খাবারের মূল্য দিয়ে...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি কসমের কাফফারা আদায় করবে। সে খাবারের মূল্য দিয়ে কাফফারা আদায় করতে চায়। তার নিকটস্থ একজন গরীব ব্যক্তি আছে। তার ইচ্ছা, এই কাফফারার টাকাগুলো দশজনকে না দিয়ে শুধু ঐ গরীব ব্যক্তিকে দিয়ে দিবে। যদি এমনটি করে তবে কি তার কাফফারা আদায় হবে?

উত্তর

কসমের কাফফারার নিয়ম হল, দশজন মিসকিনের প্রত্যেককে পূর্ণ তৃপ্তি সহকারে দু’ বেলা খানা খাওয়ানো অথবা প্রত্যেককে এর মূল্য দেওয়া। কাফফারার পুরো টাকা একত্রে এক ব্যক্তিকে দিয়ে দিলে তা আদায় হবে না; বরং পুরো টাকা একজনকে দিতে চাইলে প্রত্যেকের টাকা ভিন্নভাবে দশ দিনে দিতে হবে। একদিনেই কাফফারার পুরো টাকা একজনকে দিয়ে দিলে তা একদিনের বলে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে বাকি নয়দিনের টাকা ভিন্নভাবে আবার আদায় করতে হবে। মোটকথা, পুরো টাকা একজনকে দিলে দশ দিনে দিতে হবে। আর দশজনকে দিলে একদিনেই দেওয়া যাবে।

-কিতাবুল আছল ২/২৪৭; আলমাসূত, সারাখসী ৮/১৫৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৭২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৮৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক দরিদ্র ব্যক্তির ছেলে অসুস্থ হলে সে মান্নত করে, ছেলে...

প্রশ্ন

এক দরিদ্র ব্যক্তির ছেলে অসুস্থ হলে সে মান্নত করে, ছেলে সুস্থ হলে গরিব-মিসকিনদেরকে খাবার খাওয়াবে। কিছুদিন আগে তার ছেলে সুস্থ হয়েছে।

জানার বিষয় হল, তার জন্য কতজন গরিব-মিসকিনকে খাবার খাওয়াতে হবে? আর ঐ খাবার কি তার ছেলেকে খাওয়াতে পারবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির মান্নত পূরণের জন্য অন্তত দশজন মিসকিনকে খাবার খাওয়াতে হবে। তবে ঐ দশ জনের মাঝে ছেলেকে বা পরিবারের অন্য কোনো সদস্যকে গণ্য করা যাবে না। উল্লেখ্য, মান্নত আদায়ের জন্য মান্নতের খাবার ভিন্নভাবে রান্না করা জরুরী নয়। একই রান্না থেকে ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা খেতে পারবে এবং দশজন মিসকিনকেও খাওয়াতে পারবে।

Ñআলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৩, ৩৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪২; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৫; রদ্দুল মুহতার ২/৩৪৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমরা জানি, রমযানের রোযা ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃত ভেঙ্গে ফেললে কাফফারার...

প্রশ্ন

আমরা জানি, রমযানের রোযা ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃত ভেঙ্গে ফেললে কাফফারার রোযা এক নাগাড়ে দু মাস রাখতে হয়। মাঝখানে ছুটে গেলে তা আদায় হয় না। এখন জানার বিষয় হল, দু’মাস রোযা রাখার সময় মাঝখানে ঈদ বা আইয়ামে তাশরীক তথা রোযার জন্য নিষিদ্ধ দিন যদি চলে আসে এবং নিষেধ থাকার পরও রোযা রাখা হয় তাহলে কাফফারা আদায় হবে কি? এতে মাঝখানে বিরতি হয় না। কারণ আমরা আরেকটা মাসআলা জানি যে, কেউ যদি নিষিদ্ধ দিনে রোযার মান্নত করে তাহলে নিষেধাজ্ঞার পরও কেউ যদি রোযা রাখে তাহলে মান্নত পুরো হয়ে যায়। যদিও তাতে গুনাহ হয়। সে হিসেবে কাফফারাও আদায় হয়ে যাবে কি না? সঠিক মাসআলাটি জানানোর অনুরোধ রইল।

উত্তর

কাফফারার রোযা এমন সময় শুরু করতে হবে যেন তার মধ্যে শাওয়ালের ১ তারিখ অথবা যিলহজ্বের ১০ থেকে ১৩ তারিখ-এ দিনগুলো না আসে। কাফফারা আদায়ের দু’মাসের ভেতর উক্ত নিষিদ্ধ দিন পড়লে সে দিনগুলোতে রোযা রাখলেও কাফফারা আদায় হবে না; বরং এক্ষেত্রে পুনরায় নতুন করে লাগাতার দু মাস রোযা রাখতে হবে।

উল্লেখ্য যে, নিষিদ্ধ দিনসমূহে রোযা রাখার মান্নত সংক্রান্ত মাসআলার সাথে কাফফারার রোযার কোনো মিল নেই। উভয়ের মধ্যে মৌলিকভাবে পার্থক্য রয়েছে। এজন্য দুটোর হুকুমও ভিন্ন।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১১৫১৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/১০৫, ২৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫১২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৪, ৩/৪৭৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬২৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমাদের এলাকায় একটি বিষয় নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তা হল,...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় একটি বিষয় নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তা হল, আমরা এতদিন জেনে এসেছি যে, ইস্তেঞ্জার সময় টুপি, রুমাল বা গামছা ইত্যাদি দ্বারা মাথা ঢেকে নেওয়া মুস্তাহাব। খালি মাথায় ইস্তেঞ্জায় যাওয়া ঠিক নয়। কিন্তু আমাদের এলাকার এক আহলে হাদীস ভাই বললেন, খালি মাথায় পেশাব-পায়খানা করতে কোনো অসুবিধা নেই। এ সময় মাথা ঢেকে রাখতে হবে- এমন কথা ঠিক নয়। এ ধরনের কথা হাদীস-আসারে প্রমাণিত নয়।

আমি এ ব্যাপারে সঠিক নির্দেশনা জানতে চাই।

উত্তর

ওই ব্যক্তির কথা ঠিক নয়; বরং ইস্তেঞ্জার সময় মাথায় কোনো কাপড় রাখা উত্তম। একেবারে খালি মাথায় ইস্তেঞ্জায় যাওয়া ঠিক নয়। ইস্তেঞ্জার সময় কাপড় ইত্যাদি দ্বারা মাথা আবৃত করে রাখার কথা সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে প্রমাণিত।

যেমন : উরওয়া রাহ.তাঁর পিতা বিখ্যাত সাহাবী যুবায়ের রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, একবার আবু বকর সিদ্দীক রা. লোকদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিতে গিয়ে বলেন, হে মুসলমান লোকসকল! তোমরা আল্লাহ তাআলার সাথে লজ্জা বজায় রাখ। ঐ সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, নিশ্চয়ই আমি যখন প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের জন্য লোকালয় থেকে দূরে যাই তখন আমি আমার রবের থেকে লজ্জাবনত হয়ে মাথা ঢেকে নিই। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১১৩৩

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবার অন্য এক বর্ণনায় ইবনে তাউস রাহ. বলেন, আমি যখন ইস্তেঞ্জাখানায় প্রবেশ করতাম আমার পিতা আমাকে মাথা ঢেকে নিতে আদেশ করতেন। -হাদীস : ১১৪১

এছাড়াও সাহাবায়ে কেরাম যে স্বাভাবিকভাবেই ইস্তেঞ্জার সময় কাপড় দ্বারা মাথা আবৃত করে রাখতেন তা সহীহ বুখারীতে ইহুদী আবু রাফের হত্যা সম্পর্কিত বর্ণনা থেকেও বুঝা যায়। তা হল, সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আতীক রা. বলেন, আমি (তাকে হত্যার জন্য) দুর্গের অভ্যন্তরে প্রবেশের সুযোগ খুঁজছিলাম। ঠিক সে মুহূর্তে দূর্গের কিছু লোক তাদের একটি গাধার খোঁজে লণ্ঠন নিয়ে দুর্গের বাইরে বের হল। তিনি বলেন, তখন আমার আশঙ্কা হল যে, তারা আমাকে চিনে ফেলবে। তাই আমি আমার মাথা ঢেকে নিলাম। যেন মনে হয় আমি প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারছি। -সহীহ বুখারী, হাদীস : ৪০৪০

সুতরাং ইস্তেঞ্জার সময় মাথা আবৃত করে নেয়ার ব্যাপারে আবু বকর সিদ্দীক রা.-এর নিজ আমল, বিখ্যাত তাবেয়ী তাউস রাহ. কর্তৃক নিজ ছেলেকে আদেশ প্রদান এবং সহীহ বুখারীর বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবনে আতীক রা.-এর বক্তব্য দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, ইস্তেঞ্জার সময় কাপড় ইত্যাদি দ্বারা মাথা আবৃত রাখা উত্তম কাজ। ফিকহবিদগণ এ সকল বর্ণনার ভিত্তিতেই ইস্তেঞ্জার সময় মাথা আবৃত রাখাকে ইস্তেঞ্জার আদব ও মুস্তাহাব গণ্য করেছেন এবং মাথা অনাবৃত রাখাকে অনুত্তম বলেছেন। তাই হাদীস ও আসারে এ বিষয়ে প্রমাণ নেই প্রশ্নের এ বক্তব্য সহীহ নয়। না জেনে এমন বলাটা অন্যায় হয়েছে।

-আস সুনানুল কুবরা, বায়হাকী ১/৯৬; মুগনীল মুহতাজ ১/৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৭৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একবার মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ যদি আমাকে পুত্রসন্তান দান করেন...

প্রশ্ন

আমি একবার মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ যদি আমাকে পুত্রসন্তান দান করেন তাহলে দুটি গরু দিয়ে তার আকীকা করব। আল্লাহ আমাকে পুত্রসন্তান দিয়েছেন। পরে আমি জানতে পেরেছি যে, ছেলেসন্তানের আকীকার জন্য দুটি ছাগলই যথেষ্ট। তাই জানার বিষয় হল, আমার জন্য দুটি গরু দিয়ে আকীকা করা কি জরুরি? নাকি দুটি ছাগল দিলেই মান্নত আদায় হয়ে যাবে?

উত্তর

আকীকা করার মান্নত করলে তা মান্নত হয় না। তাই গরু দ্বারা আকীকা করা অপরিহার্য হয়ে যায়নি। বরং ছাগল, দুম্বা ইত্যাদি পশু দ্বারাও আকীকা করা যাবে।

-আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৫; ইমদাদুল আহকাম ৪/২০৬-৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৫০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমাদের দেশের সাধারণ লোকজন এভাবে কসম করে থাকে, আমি আল্লাহর...

প্রশ্ন

আমাদের দেশের সাধারণ লোকজন এভাবে কসম করে থাকে, আমি আল্লাহর কালাম কুরআন মাজীদের কসম করে বলছি, আমি অমুক কাজ করব না। অনেকে কুরআন শরীফ মাথায় নিয়ে বা হাতে স্পর্শ করে বলে, আমি কুরআন শরীফ মাথায় নিয়ে বা হাতে স্পর্শ করে বলছি, আমি অমুক কাজ করব না। হুযুরের কাছে জানতে চাই, কুরআন শরীফের কসম করা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন? উপরোক্ত বাক্যগুলো দ্বারা কসম করলে কি তা সংঘটিত হবে? হলে সেক্ষেত্রে করণীয় কী?

উত্তর

কুরআন শরীফের কসম করা জায়েয নয়। হযরত সাহাম ইবনে মিনজাব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি কুরআন শরীফের কোন একটি সূরার কসম করবে সে ঐ সূরার প্রত্যেকটি আয়াতের বদলায় একটি করে গুনাহ নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা হাদীস ১২৩৬০ অবশ্য নাজায়েয হলেও কেউ যদি বলে, আমি কুরআন শরীফের কসম করে বলছি, তাহলে এর দ্বারা কসম সংঘটিত হয়ে যাবে। এ শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারাও ওয়াজিব হবে। আর যদি কসম শব্দ না বলে শুধু বলে যে, কুরআন শরীফ ছুঁয়ে কিংবা মাথায় নিয়ে বলছি, তবে এর দ্বারা কসম সংঘটিত হবে না।

-ফাতহুল কাদীর ৪/৩৫৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১৩; ইমদাদুল আহকাম ৩/৩৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫১৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

বর্তমানে এক ধরণের পায়জামার প্রচলন রয়েছে যা অত্যন্ত টাইটফিট ও...

প্রশ্ন

বর্তমানে এক ধরণের পায়জামার প্রচলন রয়েছে যা অত্যন্ত টাইটফিট ও আঁটসাঁট হওয়ার কারণে শরীরের সাথে একেবারে লেগে থাকে। যা চূস পায়জামা নামে পরিচিত। পুরুষ বা মহিলার জন্য এ ধরনের পায়জামা পরা জায়েয কি না জানাবেন।

উত্তর

পোশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রে শরীয়তের একটি মূলনীতি হল, পোশাক এমন হতে হবে যার দ্বারা সতর পূর্ণভাবে আবৃত হয়ে যায়। যা পরিধান করলে শরীরের আকার আকৃতি বাহির থেকে ফুটে উঠে না। পোশাক এমন পাতলা বা আঁটসাঁট না হতে হবে যা পরলে সতরের রঙ বা আকৃতি বাহির থেকে বুঝা যায়।

হাদীস শরীফে এ ধরনের আঁটসাঁট ও পাতলা পোশাক পরিধানকারীদের প্রতি কঠোর ধমকি ও অভিসম্পাত এসেছে।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : দুই শ্রেণীর জাহান্নামীকে আমি দেখিনি, (অর্থাৎ পরবর্তী যুগে এদের সন্ধান পাওয়া যাবে) এক শ্রেণী ঐ সকল মানুষ যাদের সাথে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকবে, যার দ্বারা তারা মানুষকে প্রহার করবে। দ্বিতীয় শ্রেণী হল ঐ সকল নারী যারা পোশাক পরিহিতা হয়েও উলঙ্গ (কেননা তারা এমন পোশাক পরবে যার দ্বারা সতর পূর্ণরূপে ঢাকা হয় না। পাতলা হওয়ার কারণে সতরের আকৃতি ফুটে উঠে।) যারা নিজে গুনাহর দিকে ধাবিত এবং অন্যকেও অশ্লীলতার প্রতি আকৃষ্ট করে। তাদের মাথা হবে লম্বা গর্দান বিশিষ্ট উটের হেলে পড়া কুঁজের ন্যায়। (অর্থাৎ তারা চুল কিংবা কৃত্রিম কোনো বস্তু মাথায় পেঁচাবে। যার ফলে তাদের মস্তক ফুলে থাকবে) এরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ অনেক অনেক দূর থেকেও পাওয়া যায়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১২৮; শরহে নববী ১৪/১১০

উসামা ইবনে যায়েদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, দিহয়া কালবী রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যে কাপড় হাদিয়া দিয়েছেন সেগুলোর মধ্য থেকে একটি মোটা কুবতী কাপড় (যা খুব নরম হয়ে থাকে) তিনি আমাকে পরিধান করার জন্য দেন। আমি কাপড়টি আমার স্ত্রীকে পরতে দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, কী ব্যাপার, তুমি কুবতী কাপড়টি পরিধান করনি কেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তা আমার স্ত্রীকে পরতে দিয়েছি। তখন তিনি আমাকে বললেন, তুমি তাকে নির্দেশ দাও সে যেন এর নিচে আরেকটা কাপড় পরে নেয়। কারণ, আমার ভয় হচ্ছে যে, ঐ কাপড়টি তার হাড়ের আকৃতি বর্ণনা করবে। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২১৭৮৬

উল্লেখিত বর্ণনাগুলো থেকে একথা স্পষ্ট হয় যে, এমন পোশাক পরা যাবে না যার দ্বারা সতর যথাযথভাবে আবৃত হয় না বা যা পরার পরও সতরের আকৃতি বুঝা যায়।

অতএব প্রশ্নোক্ত পায়জামা যেহেতু আঁটসাঁট হওয়ার কারণে তা পরলে সতরের আকৃতি বাহির থেকে ফুটে উঠে। তাই এটিও হাদীসের নিষিদ্ধ পোশাকেরই অন্তর্ভুক্ত। অতএব এ ধরনের পায়জামার উপর কিছু না পরে তা পরা যাবে না।

অবশ্য কেউ যদি ঐ পায়জামার উপর এমন লম্বা জামা পরে নেয় যার দ্বারা সতরের অংশ ঢেকে থাকে এবং চলাফেরা উঠাবসার সময় সতরের অবস্থা প্রকাশ না পায় তবে তা পরতে পারবে।

উল্লেখ্য, এ ধরনের পায়জামার আরেকটি সমস্যা হল তা সাধারণত টাখনু গিরার নিচ পর্যন্ত পরা হয়। অথচ পুরুষের জন্য টাখনু গিরা আবৃত করে জামা বা পায়জামা পরা নাজায়েয। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে কঠোর ধমকি এসেছে।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, টাখনু গিরার নিচের যে অংশ ইযার (পায়জামা বা লুঙ্গি) দ্বারা আবৃত থাকবে তা জাহান্নামে যাবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৭৮৭

আবু যর গিফারী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না। তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করবেন না। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ...

১.টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরিধানকারী

২.কারো উপর অনুগ্রহ করে খোঁটা দানকারী

৩.মিথ্যা কসম করে পণ্য বিক্রয়কারী। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১

সুতরাং টাখনু গিরা আবৃত করে এমন পায়জামা বা পোশাক পরিধান করা থেকেও পুরুষের জন্য বিরত থাকা জরুরি।

-তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৪/২০০; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস ৮৬১২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫০৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

কয়েক সপ্তাহ আগে আমার ছোট ছেলে জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হলে...

প্রশ্ন

কয়েক সপ্তাহ আগে আমার ছোট ছেলে জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হলে আমি মান্নত করি আমার ছেলে সুস্থ হলে এক খতম কুরআন শরীফ পড়ব। হুজুরের কাছে জানতে চাই এমতাবস্থায় কি এক খতম কুরআন শরীফ পড়া আমার উপর ওয়াজিব?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ছেলে সুস্থ হলে এক খতম কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা ওয়াজিব হবে।

-রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৮; বেহেশতী যেওর ৩/২৪১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৭৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার ছেলে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। আমি আল্লাহর কাছে...

প্রশ্ন

আমার ছেলে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। আমি আল্লাহর কাছে মান্নত করেছি যে, আমার ছেলের পরীক্ষার ফলাফল ভালো হলে আমার এ ছাগলটি আমাদের মাদরাসার গরীব ছাত্রদের জন্য দান করব। প্রশ্ন হল, আমার জন্য কি উক্ত ছাগলের পরিবর্তে তার মূল্য সদকা করা জায়েয হবে? আর এ মাদরাসা ছাড়া অন্য কোনো মাদরাসায় দান করলে কি মান্নত আদায় হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত ছাগলের মূল্য সদকা করলেও মান্নত আদায় হয়ে যাবে। আর তা অন্য মাদরাসাতেও দান করা যাবে। তবে যে মাদরাসায় দেওয়ার জন্য মান্নত করা হয়েছিল সেখানে দেওয়াই উত্তম হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৫-৬৬; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক ব্যক্তি দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মান্নত করল যে, যদি...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মান্নত করল যে, যদি আল্লাহ তাকে আরোগ্য দান করেন তাহলে যতদিন বেঁচে থাকবে প্রতিদিন দুই রাকাত করে শোকরিয়ার নামায আদায় করবে। পরবর্তীতে আল্লাহর মেহেরবানিতে লোকটি আরোগ্য লাভ করে। প্রশ্ন হল, এখন কি তাকে প্রতিদিন দুই রাকাত শোকরিয়ার নামায পড়তে হবে, নাকি এর পরিবর্তে কাফফারা দিলেই যথেষ্ট হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত মান্নত সহীহ হয়েছে। তাই তাকে প্রতিদিন দুই রাকাত করে নামায আদায় করতে হবে। নামায আদায়ের সামর্থ্য থাকা পর্যন্ত তাকে নামাযই পড়তে হবে। সামর্থ্য থাকলে নামায না পড়ে এর পরিবর্তে কাফফারা দেওয়া যাবে না। প্রকাশ থাকে যে, এমন বিষয়ের মান্নত করা উচিত, যা পরবর্তীতে সহজে পূর্ণ করা যায়। পরবর্তীতে আদায় করা কষ্টকর হয়-এমন মান্নত করা উচিত নয়।

-আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪১-২৪২; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৫; হেদায়া ৪/৩৭৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৫৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছিল, তার অসুস্থ মা সুস্থ হলে দশজন...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছিল, তার অসুস্থ মা সুস্থ হলে দশজন ফকিরকে দাওয়াত করে খাওয়াবে। আল্লাহ তার মাকে সুস্থ করে দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল, তাকে কি দশজন ফকিরকেই খাওয়াতে হবে, নাকি খুব ভাল করে চার-পাঁচজনকে এক বেলা খাওয়ালেই চলবে?

উত্তর

ঐ ব্যক্তি যেহেতু দশজন ফকিরকে খাওয়ানোর মান্নত করেছে, তাই দশজন ফকিরকে এক বেলা খাওয়াতে হবে। এক্ষেত্রে পাঁচজনকে এক বেলা ভালভাবে খাওয়ালে মান্নত আদায় হবে না। তবে হ্যাঁ, পাঁচজনকে দুই বেলা খাওয়ালে মান্নত আদায় হয়ে যাবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৩৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৫৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার উপর তিনটি কসমের কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। এখন আমাকে কি...

প্রশ্ন

আমার উপর তিনটি কসমের কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। এখন আমাকে কি প্রত্যেক কসমের জন্য ভিন্ন ভিন্ন করে কাফফারা আদায় করতে হবে? নাকি সবগুলোর জন্য একটি কাফফারা আদায় করলেই যথেষ্ট হবে? আর এক কাফফারার জন্য দশ মিসকিনকে না খাইয়ে যদি এক মিসকিনকে দশদিন খাওয়ানো হয় তাহলে কি কাফফারা আদায় হবে?

উত্তর

যতবার কসম ভঙ্গ হয়েছে প্রত্যেকটির জন্য ভিন্ন ভিন্ন করে কাফফারা দিতে হবে। একাধিক কসম ভঙ্গের জন্য একটি কাফফারা যথেষ্ট নয়। আর একবার কসম ভঙ্গের জন্য এক মিসকিনকে দশদিন দুবেলা খাওয়ালেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।

আলমাবসূত, সারাখসী ৮/১৫৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/৩০৩; ফাতাওয়া খানিয়া ২/২; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১৪ -তাকরীরাতে রাফেয়ী ৩/১৩;

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৫৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

একবার একটি কাজ পূর্ণ হওয়ার জন্য আমি এই বলে মান্নত...

প্রশ্ন

একবার একটি কাজ পূর্ণ হওয়ার জন্য আমি এই বলে মান্নত করলাম। যদি আমি এই কাজে সফল হই তাহলে শাহজালাল রাহ.-এর দরগাহ মসজিদে ২০ রাকাত নামায পড়ব। আল্লাহর মেহেরবানিতে আমার সেই কাজ পূর্ণ হয়েছে। বর্তমানে আমি ঢাকায় থাকি। মান্নত পূর্ণ করার জন্য কি আমাকে সিলেট দরগাহ মসজিদেই যেতে হবে? এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?

উত্তর

কোনো নির্দিষ্ট স্থানে নামায আদায়ের মানত করলে সেই স্থানে নামায পড়া জরুরি হয়ে যায় না। বরং অন্য যে কোনো স্থানে নামায পড়ে নিলেও মান্নত আদায় হয়ে যায়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মান্নত আদায়ের জন্য সিলেট দরগাহ মসজিদে না গিয়ে অন্য কোনো মসজিদে মান্নত আদায়ের নিয়তে ২০ রাকাত নামায পড়ে নিলেই মান্নত আদায় হয়ে যাবে।

উলেস্নখ্য, মসজিদে হারাম, মসজিদে নববী এবং মসজিতে আকসা- এ তিন মসজিদ ছাড়া সকল মসজিদ সমান মর্যাদাসম্পন্ন। কোনো মসজিদের কাছে কোনো বুযুর্গের কবর থাকার কারণে তার ফযীলত কোনোভাবেই বৃদ্ধি পায় না। তাই এ ধারণা নিয়ে কোনো মসজিদে নামায পড়ার মান্নত করা বা ঐ মসজিদের জন্য কোনো মান্নত করা বিদআতের শামীল। আর কোনো মাযারের জন্য মান্নত করা তো সম্পূর্ণ হারাম।

- রদ্দুল মুহতার ৩/৭৪১; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৫; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৯৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

মানতের ইতিকাফ আদায়ের জন্য কি রোযা রাখা শর্ত? শর্ত হলে...

প্রশ্ন

মানতের ইতিকাফ আদায়ের জন্য কি রোযা রাখা শর্ত? শর্ত হলে আমি দুদিন ইতিকাফ করার মানত করেছিলাম অন্যদিকে আমার উপর গত রমযানের দুটি কাযা রোযাও রয়েছে। এ অবস্থায় আমি কি ঐ কাযা রোযা দুটি আদায়ের সাথে আমার মানতের ইতিকাফ আদায় করতে পারব?

উত্তর

ইতিকাফের মানত করলে রোযাসহ ইতিকাফ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। তাই মানতের ইতিকাফ আদায়ের জন্য স্বতন্ত্র্য রোযা রাখা আবশ্যক। এক্ষেত্রে পূর্বের কাযা রোযার নিয়ত করা সহীহ নয়।

অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে ঐ দুই দিনের ইতিকাফ স্বতন্ত্র্য রোযাসহ আদায় করতে হবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৯৭১২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪২-৪৪৩; কিতাবুল আছল ২/১৯৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৮৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমাদের বাড়ির পাশে একটি ছোট হেফযখানা আছে। ছাত্র সংখ্যা প্রায়...

প্রশ্ন

আমাদের বাড়ির পাশে একটি ছোট হেফযখানা আছে। ছাত্র সংখ্যা প্রায় ৬০ জনের কাছাকাছি। কিছুদিন আগে আমি এক বিষয়ে ঐ মাদরাসার সকল ছাত্রকে একবেলা খাওয়ানোর মানত করেছিলাম। পরবর্তীতে আমার উদ্দেশ্য হাসিল হলে আমি মুহতামিম সাহেবের সাথে আলোচনা করলাম। তিনি বললেন, এখানে একজন অসহায় ছাত্র আছে। সকলকে এক বেলা খাওয়ানোর পরিবর্তে আপনি তার এক মাসের খানার খরচ দিয়ে দিন। এটা বেশি ভালো হবে। জানতে চাই, এক্ষেত্রে একজনের জন্য এক মাসের খানার ব্যবস্থা করলে আমার মানত আদায় হবে কি? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ষাটজনকে খাওয়াতে যে পরিমাণ টাকা লাগবে তা একজনকে দিয়ে দিলেও আপনার মানত আদায় হয়ে যাবে।

-রদ্দুল মুহতার ৩/৭৪১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৭; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/২৭১; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৭০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

কিছুদিন আগে আমার পিতা মাদরাসায় একটি গরু দেওয়ার মানত করেন।...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার পিতা মাদরাসায় একটি গরু দেওয়ার মানত করেন। বর্তমানে আমাদের একটি গরু আছে, যার বয়স দুই বছর থেকে সামান্য কম। এ গরু দান করলে আমার পিতার মানত আদায় হবে কি?

উত্তর

নির্দিষ্ট গরু সদকা করার মানত না করলে সেক্ষেত্রে মানত আদায়ের জন্য গরুর বয়স দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। দুই বছরের কম বয়সী গরু সদকা করলে তা দ্বারা মানত আদায় হবে না। তাই আপনাদের ঐ গরু দ্বারা দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মানত আদায় করা যাবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৩৩; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৪০; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৬৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক ব্যক্তি দুপুরে কর্মস্থল থেকে বাড়িতে এসে দেখে যে, দুপুরের...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি দুপুরে কর্মস্থল থেকে বাড়িতে এসে দেখে যে, দুপুরের খাবার রান্না হয়নি। এতে সে স্ত্রীকে রাগ করে বলে যে, ‘তোমার রান্না আর খামু না। যদি তোমার হাতের খানা খাই তাহলে হারাম খাই।’

পরবর্তীতে স্বামী তার ঐ কথার জন্য অনুতপ্ত হয়েছে এবং স্ত্রীর হাতের রান্নাই খাচ্ছে। এটা জানতে পেরে এক ব্যক্তি স্বামীকে বলল, তোমার উক্ত কথার দ্বারা কসম হয়েছিল? জানতে চাই, কসম হয়ে থাকলে এখন করণীয় কী?

উত্তর

যদি তোমার হাতের খানা খাই তাহলে হারাম খাই-এ কথার দ্বারা কসম সংঘটিত হয়েছে। এরপর স্বামী স্ত্রীর হাতের রান্না খাওয়ার দ্বারা তার কসম ভঙ্গ হয়ে গেছে। এ কারণে তার উপর কসম ভঙ্গের কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে।

তাই কাফফারা হিসেবে দশজন মিসকীনকে দু বেলা তৃপ্তিসহকারে খানা খাওয়াতে হবে। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া করে বস্ত্র দিতে হবে। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) সুতরাং কসমের (ভঙ্গের) কাফফারা হল দশজন মিসকীনকে মধ্যম ধরনের খাবার খাওয়ানো, যা তোমরা তোমাদের পরিবারবর্গকে খাইয়ে থাক, অথবা দশজন মিসকীনকে বস্ত্র প্রদান করা, অথবা গোলাম আযাদ করা।-সূরা মায়েদা : ৮৯

তবে কারো পক্ষে এ তিন পদ্ধতির কোনোটি দ্বারা কাফফারা আদায় করা সম্ভব না হলে তার কর্তব্য হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে তিন দিন রোযা রাখা। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) তবে যে (উপরোল্লেখিত তিনটির কোনোটিরই) সমার্থ্য না রাখে তার করণীয় হচ্ছে তিনদিন (ধারাবাহিক) রোযা রাখা। এটা তোমাদের কসম ভঙ্গের কাফফারা, যখন তোমরা কসম করবে (এবং পরে তা ভেঙ্গে ফেলবে)।

-সূরা মায়িদা : ৮৯; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭২; রদ্দুল মুহতার ৩/৭২৯; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৪৬১; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৭/৩৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৪৩০-৪৩২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৩৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক লোকের দুটি ছেলে আছে। দুজনেরই ভিন্ন ভিন্ন সংসার। বাবা-মাও...

প্রশ্ন

এক লোকের দুটি ছেলে আছে। দুজনেরই ভিন্ন ভিন্ন সংসার। বাবা-মাও ছেলেদের থেকে আলাদা থাকেন। দু ছেলের উপার্জন থেকে বাবামাকে কিছু কিছু দেওয়া হয়। এতে তাদের সংসার চলে।

একদিন বাবা বড় ছেলের সাথে ঝগড়া লেগে প্রচন্ড রাগের মাথায় বলে ফেলে, আমি আর তোর কামাই খাব না। তোর কামাই আমার জন্য হারাম।

কয়েকদিন পর প্রতিবেশী লোকজন বাবা-ছেলের মাঝে মিল-মীমাংসা করে দেয়। এখন বাবা ঐ ছেলের উপার্জনও গ্রহণ করে। প্রশ্ন হল, বাবার ঐ কথা বলার কারণে কি কসম হয়ে গেছে? আর এখন তার উপার্জন গ্রহণ করতে কোনো সমস্যা হবে কি?

উত্তর

‘তোর কামাই আমার জন্য হারাম’-এ কথার দ্বারা কসম সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং এরপর বাবা ঐ ছেলের উপার্জন গ্রহণ করার দ্বারা কসম ভঙ্গ হয়ে গেছে। অতএব তাকে এর কাফফারা দিতে হবে। কাফফারা হল, দশজন মিসকীনকে দু বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়ানো বা প্রত্যেককে এক জোড়া করে বস্ত্র দেওয়া। আর তাতে সক্ষম না হলে লাগাতার তিনটি রোযা রাখা।

-সূরা মায়েদা : ৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৫; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭২৫, ৭২৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক মহিলা কোনো কারণে মান্নত করেছিল যে, আগামী সপ্তাহে রোযা...

প্রশ্ন

এক মহিলা কোনো কারণে মান্নত করেছিল যে, আগামী সপ্তাহে রোযা রাখবে। কিন্তু ঘটনাক্রমে ঐ সপ্তাহের শেষ দিকে তার মাসিক এসে যায়। যার কারণে শেষের দুই দিন সে রোযা রাখতে পারেনি। এখন তার করণীয় কী? সে ঐ মান্নত কীভাবে পূর্ণ করবে?

উত্তর

উক্ত মহিলা পবিত্র হওয়ার পর ঐ রোযাটি রেখে নিবে। এতে তার মান্নত পুরা হয়ে যাবে।

-কিতাবুল আছল ২/১৬৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৮৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক ব্যক্তি তার ছেলে সন্তান হলে একটি গরু আকীকা করার...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি তার ছেলে সন্তান হলে একটি গরু আকীকা করার মানত করেছে। এখন তার ছেলেসন্তান হয়েছে। তার জন্য উক্ত মানত পূর্ণ করা কি জরুরি? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার জন্য গরু দ্বারা আকীকা করা জরুরি নয়। কেননা আকীকার মানত করলে তা মানত হয় না এবং তা পূরণ করা ওয়াজিব হয় না। আকীকা করা মুস্তাহাব। ছেলেসন্তানের জন্য দুটি ছাগল আর মেয়ের জন্য একটি ছাগল দ্বারা আকীকা করা উত্তম। অবশ্য কেউ যদি ছেলের জন্য একটি ছাগলও জবাই করে তবুও আকীকা আদায় হয়ে যাবে। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. ছেলেসন্তানের জন্য একটি ছাগল দ্বারা আকীকা করেছেন। (মুয়াত্তা, ইমাম মালেক, পৃষ্ঠা : ৪০৯)

আর যদি কেউ ছাগল ছাড়া অন্য কোনো পশু দ্বারা আকীকা করতে চায় তাও জায়েয আছে। হাসান রাহ. থেকে বর্ণিত আনাস রা. সন্তানের আকীকা উট দ্বারা করেছেন।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৪৭৫৫; ইলাউস সুনান ১৭/১০৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৯৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮১; ইমদাদুল আহকাম ৪/২০৭; সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৬৯৬; উমদাতুল কারী ২৩/২০৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৫৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক ব্যক্তি বাইতুল মুকাররম মসজিদে দুই রাকাত নামায আদায় করার...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি বাইতুল মুকাররম মসজিদে দুই রাকাত নামায আদায় করার মান্নত করেছে। অতপর সেখানে আদায় না করে অন্য মসজিদে আদায় করেছে। প্রশ্ন হল, তার মান্নত কি আদায় হয়েছে?

উত্তর

হ্যাঁ, তার মান্নত আদায় হয়ে গেছে। কেননা কোনো নির্ধারিত মসজিদে নামায আদায়ের মান্নত করলে সেখানেই তা আদায় করা জরুরি হয় না। বরং অন্য মসজিদে আদায় করলেও ঐ মান্নত পূর্ণ হয়ে যায়।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৭/৫৮৯, হাদীস : ১২৫৮০; আততাজরীদ ১২/৬৫১৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৫৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১২৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১৫; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৪১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৮৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক দরিদ্র মহিলা কসমের কাফফারা হিসাবে তিন দিন রোযা রাখে।...

প্রশ্ন

জনৈক দরিদ্র মহিলা কসমের কাফফারা হিসাবে তিন দিন রোযা রাখে। তৃতীয় দিন রোযা অবস্থায় তার অপবিত্রতা শুরু হয়। ফলে পবিত্র হওয়ার পর সে আরো একদিন রোযা রাখে। জানতে চাই, তার কসমের কাফফারা কি আদায় হয়েছে?

উত্তর

না, মহিলাটির কসমের কাফফারা আদায় হয়নি। কেননা রোযার মাধ্যমে কসমের কাফফারা আদায়ের জন্য তিন দিন লাগাতার রোযা রাখা শর্ত। মাঝে বিরতি হলে তা দ্বারা কাফফারার রোযা আদায় হয় না।

মহিলাটি বাস্তবেই যদি দশজন মিসকীনকে দুই বেলা পেট ভরে খানা খাওয়ানোর অথবা তাদেরকে এক জোড়া করে বস্ত্র দান করার সামর্থ্য না রাখে তাহলে পুনরায় তাকে লাগাতার তিনটি রোযা রাখতে হবে।

-সূরা মায়েদ : ৮৯; তাফসীরে রূহুল মাআনী ৭/১৪; কিতাবুল আছার ২/৬০০; কিতাবুল আছল ২/২৯৫; আলমাবসূত, সারাখসী ৮/১৫৫; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭২৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৭৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার পিতার উপর হজ্ব ফরয ছিল। তিনি হজ্ব না করেই...

প্রশ্ন

আমার পিতার উপর হজ্ব ফরয ছিল। তিনি হজ্ব না করেই মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি হজ্ব করার অসিয়ত করে যাননি। তার মৃত্যুর পর আমরা তার সম্পদ ভাগ করে নিয়েছি। আমার পিতা যেহেতু হজ্ব করেননি তাই আমি তার পক্ষ থেকে বদিল হজ্ব করার জন্য টাকা জমা করতে থাকি। চাকরির টাকা ও কিছু জমি বিক্রি করে হজ্ব করার মতো টাকা জমা করেছি। ইতিপূর্বে আমার উপর হজ্ব ফরয ছিল না। একজন আলেম বলেছেন, এই সম্পদ জমা করার কারণে তোমার উপর হজ্ব ফরয হয়ে গেছে। তুমি নিজের হজ আদায় করে নাও। তোমার পিতার বদলি হজ্ব করা তোমার উপর জরুরি নয়। এখন আমি আমার নিজের হজ্ব আদায় করব নাকি পিতার বদলি হজ্ব আদায় করব? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

উক্ত আলেম ঠিকই বলেছেন। আপনার গচ্ছিত ঐ টাকার কারণে আপনার নিজের উপরই হজ্ব ফরয হয়ে গেছে। তাই আগে আপনার নিজের হজ্ব আদায় করা জরুরি।

প্রকাশ থাকে যে, আপনার পিতা যদিও তার পক্ষ থেকে হজ্ব করার অসিয়ত করে যাননি। কিন্তু যেহেতু তার উপর হজ্ব ফরয ছিল আর তিনি ফরয হজ্ব আদায় না করেই ইন্তিকাল করেছেন এবং পর্যাপ্ত সম্পদও রেখে গেছেন তাই তার ওয়ারিসদের কর্তব্য হবে তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব আদায় করানো। বালেগ ওয়ারিসদের স্বতঃস্ফূর্ত ব্যয়ের মাধ্যমে এই হজ্ব করানো উচিত। হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, এক মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমার মা মান্নত করেছিলেন যে, তিনি হজ্ব করবেন। কিন্তু তা পূর্ণ করার আগেই তিনি মারা গেছেন। (এখন আমার করণীয় কী?) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, অর্থ : তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব আদায় করে নাও। বল তো, যদি তোমার মা কারো নিকট ঋণী হতেন তুমি কি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? মহিলাটি বলল, হ্যাঁ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা আল্লাহর ঋণ পরিশোধ কর। কেননা তিনি প্রাপ্য পাওয়ার অধিক হকদার।

-সহীহ বুখারী ১/২৪৯; আলমানাসিক ৪২, ৪৩২; গুনইয়াতুন নাসিক ২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৫৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একটি গুনাহের কাজ থেকে তাওবার নিয়তে এভাবে কসম করি...

প্রশ্ন

আমি একটি গুনাহের কাজ থেকে তাওবার নিয়তে এভাবে কসম করি যে, আল্লাহর কসম আমি আর এই কাজ করব না। কখনো বলি, আল্লাহর কসম আমি আর করব না। কখনো বলি, আল্লাহর জালালিয়াতের কসম, আমি আর এই কাজ করব না। তবে কি করব না তা মুখে উল্লেখ করিনি। কিন্তু অন্তরে ঐ কাজের নিয়ত ছিল। শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে প্রতি বারই আমার দ্বারা ঐ কাজ সংঘটিত হয়ে যায় এবং একবার কসম করে ভঙ্গ করার মাঝে কয়েকবার এভাবে কসম করি।

এখন প্রশ্ন হল, আমি কসম ভঙ্গকারী হয়েছি কি না? হলে কয়টি কাফফারা আদায় করতে হবে? যে কয়বার ভঙ্গ হয়েছে সে কয়টি নাকি যে কয়বার কসম করেছি সে কয়টি। জানিয়ে বাধিত করবেন।

উল্লেখ্য, আমি এভাবে কতবার যে কসম করে ভঙ্গ করেছি তা জানা নেই। এখন কী করতে পারি? সুপরামর্শ চাই।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কসম ভঙ্গ করার কারণে আপনাকে কাফফারা আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে একবার কসম করে তা ভাঙ্গার পূর্বে সেই বিষয়ের কসম বারবার পুনরাবৃত্তি করার দ্বারা যদি আপনি ভিন্ন করে কসমের উদ্দেশ্য না নিয়ে থাকেন; বরং পূর্বের কসমেরই পুনরাবৃত্তি করা এবং তা দৃঢ় করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে এক্ষেত্রে প্রতি কসমের উপর কাফফারা আসবে না। বরং এভাবে কসমগুলো করার পর যখন কসম ভঙ্গ হয়েছে তখন একটি কাফফারা দিতে হবে। এরপর যদি আবার কসম করা হয় এবং তা ভঙ্গ করা হয় তাহলে পুনরায় কাফফারা দিতে হবে।

একটি কসমের কাফফারা হল, দশজন গরীব মিসকীনকে দু বেলা তৃপ্তিসহ খানা খাওয়ানো। অথবা তাদের প্রত্যেককে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। এ দুটির সমার্থ্য না থাকলে এক নাগাড়ে তিনটি রোযা রাখা।

এখন আপনার কর্তব্য হল, উপরোক্ত মাসআলা অনুযায়ী কতবার কসম ভঙ্গ করেছেন যথাসম্ভব তার সঠিক হিসাব বের করার চেষ্টা করা। সঠিক হিসাব বের করা না গেলে প্রবল ধারণার ভিত্তিতে কাফফারার সংখ্যা নির্ধারণ করে তা আদায় করবেন এবং আল্লাহ তাআলার নিকট ভুলভ্রান্তির জন্য ইস্তিগফার করবেন।

প্রকাশ থাকে যে, গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার সংকল্পের ক্ষেত্রে বান্দার দায়িত্ব হল বারবার কসম না করে বরং আল্লাহ তাআলার প্রতি মুতাওয়াজ্জেহ হওয়া এবং তার তাওফীক কামনা করা এবং কোন আল্লাহওয়ালা বুযুর্গের সংশ্রব অবলম্বন করা ও বেশি বেশি দুআ করতে থাকা

।-সূরা মায়েদা : ৮৯; কিতাবুল আসল ৩/২৩৮, ৩/১৯৬; আলমাবসূত, সারখসী ৮/১৫৭; ইলাউস সুনান ১১/৪২৬; রুহুল মাআনী ৭/১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৪৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক ব্যক্তির দুই মেয়ে। বড় জনের নাম আয়েশা। ছোটজনের নাম...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তির দুই মেয়ে। বড় জনের নাম আয়েশা। ছোটজনের নাম হালীমা। আয়েশার তুলনায় হালীমা সুন্দরী। আয়েশার বিয়ের কথাবার্তা চলছে। মেয়ের আত্মীয় স্বজন পাত্রী দেখানোর সময় আয়েশাকে না দেখিয়ে হালীমাকে দেখায়। পাত্র জানতে পারে যে, সে আয়েশাকেই দেখছে। পরবর্তীতে বিয়ের তারিখ ধার্য হয় এবং আয়েশার সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পাত্রকে বলা হয় যে, অমুকের মেয়ে আয়েশাকে তোমার বিবাহে এত দেন মোহরের এওয়াজে দিলাম। তখন পাত্র কবুল করে। পরবর্তীতে যখন তাদের সাক্ষাত হয় তখন দেখা গেল যে, যেই মেয়েকে সে দেখেছিল সেই মেয়ের সাথে তার বিবাহ হয়নি। ধীরে ধীরে মেয়ে পক্ষের কারসাজি সম্পর্কে ছেলে সবই অবগত হয়। এখন পাত্র জানতে চায়, তার এ বিবাহ সহীহ হয়েছে কি? আয়েশার সাথেই বিয়ে হয়েছে? না কি তার ছোট বোন, যাকে সে দেখেছিল তার সাথে বিবাহ হয়েছে। কেননা সে তো হালীমাকেই দেখেছে এবং সে তাকেই বিয়ে করছে। পাত্র যদি আয়েশাকে মেনে নিতে না পারে তবে তার তালাক দেওয়া কি বৈধ হবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী বিয়ের আকদের সময় যেহেতু আয়েশার নাম উল্লেখ করে প্রস্তাব করা হয়েছে এবং এই প্রস্তাবের উপরই পাত্র কবুল বলেছে তাই আয়েশার সাথেই তার বিবাহ সংঘটিত হয়েছে। এক্ষেত্রে মনে অন্য মেয়ের কথা থাকলেও সেটা ধর্তব্য হবে না। কেননা যার নাম উল্লেখ করে প্রস্তাব ও কবুল করা হয় তার সাথেই বিবাহ হয়ে যায়। তবে পাত্রী পক্ষের এহেন ধোঁকাপূর্ণ আচরণ মারাত্মক অন্যায় হয়েছে। এ জন্য তাদের উচিত পাত্রের কাছে ক্ষমা চাওয়া। প্রকাশ থাকে যে, এ অবস্থায় পাত্র যদি উক্ত ভুলকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে আয়েশাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়ে দাম্পত্য জীবন চালিয়ে যায় তবে সে সওয়াবের অধিকারী হবে। অবশ্য সে যদি মানতে না পারে তবে তার জন্য আয়েশাকে তালাক দেওয়াও বৈধ হবে।

-রদ্দুল মুহতার ৩/২৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩২৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৭৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার ছোটভাই একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে আমার মা কুতুববাগ...

প্রশ্ন

আমার ছোটভাই একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে আমার মা কুতুববাগ দরবার শরীফে গিয়ে মানত করেছিলেন যে, যদি আমার ছেলে সুস্থ হয় তাহলে পীর কেবলার নামে একটা ছাগল দিব। আমার ভাই এখন পূর্ণ সুস্থ। জানার বিষয় হল, এ মানত কি সহীহ হয়েছে এবং তা পূর্ণ করা কি জরুরি? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

মানত একটি ইবাদত। যা একমাত্র আল্লাহরই হক। কোনো মাজার বা পীরের নামে মানত করা হারাম ও শিরক। তাই আপনার মার প্রশ্নোক্ত মানত সম্পূর্ণ হারাম ও শিরকি কাজ হয়েছে। এ জন্য তাকে সকল প্রকার আকিদাগত ও আমলী শিরক পরিহার করে পূর্ণ তাওহীদের আকিদা ও আমল গ্রহণ করতে হবে এবং খালেছ দিলে তওবা ও ইস্তিগফার করতে হবে। আর ঐ মানত যেহেতু সহীহ হয়নি তাই ছেলে সুস্থ হলেও এখন ঐ মানতের কারণে তাকে কিছুই করতে হবে না। হ্যাঁ, আপনার মা যদি এ উপলক্ষে সদকা করতেই চান তবে গরীব-মিসকিনকে সদকা করবেন, মাজারে দিবেন না।

-তাফসীরে রূহুল মাআনী ১৭/২১২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি নির্দিষ্ট একটি মোরগ গরিব-মিসকিনকে দিয়ে দেওয়ার মানত করেছি। কিন্তু...

প্রশ্ন

আমি নির্দিষ্ট একটি মোরগ গরিব-মিসকিনকে দিয়ে দেওয়ার মানত করেছি। কিন্তু মানত করার এক দিনের মধ্যেই সেই মোরগটা রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মানতকৃত মোরগটি যেহেতু মরে গেছে তাই এর পরিবর্তে কিছুই দিতে হবে না।

-রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০২৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

শুনেছি, মাখলুকের নামে কসম করা জায়েয নয়। অথচ কুরআন মজীদে...

প্রশ্ন

শুনেছি, মাখলুকের নামে কসম করা জায়েয নয়। অথচ কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জিনিসের নামে কসম করেছেন। এর দ্বারা কি মাখলুকের নামে কসম করার বৈধতা প্রমাণিত হয় না? তাছাড়া এ সকল জিনিস দ্বারা কসম করার কারণই বা কী? যদি মাখলুকের নামে কসম করা হারাম হয় তাহলে তার দলিল কী? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

মানুষের জন্য কোনো মাখলুকের নামে কসম করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এ ব্যাপারে হাদীস শরীফে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এবং এটাকে শিরকতুল্য গুনাহ বলা হয়েছে।

আর আল্লাহ তাআলা মাখলুকের নামে কসম করেছেন-এর দ্বারা মানুষের জন্য মাখলুকের নামে কসম করা জায়েয প্রমাণিত হয় না। কেননা আল্লাহ তাআলা শরীয়তের বিধানদাতা। তার দেওয়া বিধান মানুষের জন্যই প্রযোজ্য। আল্লাহ তাআলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তিনি মাখলুকের নামে কসম করতে পারেন। এটা তার ইচ্ছাধীন। যেমন অহংকার তার বৈশিষ্ট্য। কিন্তু মানুষের জন্য তা হারাম।

মানুষের জন্য মাখলুকের নামে কসম করা হারাম হওয়া সম্পর্কে কিছু দলিল নিম্নে পেশ করা হল।

১. হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, (অর্থ) নিশ্চই আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে তোমাদের পূর্বপুরুষের নামে (সুনানে আবু দাউদের বর্ণনা অনুযায়ী, মাতা ও মূর্তির নামেও) কসম করতে নিষেধ করেছেন। সুতরাং কসম করতে হলে কেবল আল্লাহ তাআলার নামে করবে, অন্যথায় চুপ থাকবে।-সহীহ মুসলিম ১/৪৬

২. আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. এক ব্যক্তিকে কাবা শরীফের নামে কসম করতে শুনে বললেন, আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত কারো নামে কসম করার অবকাশ নেই। আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত অন্য কারো নামে কসম করল সে নির্ঘাত একটি কুফরী বা শিরকী কাজ করল।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৫৩৫

আর মাখলুকের নামে আল্লাহ তাআলার কসম করার মাঝে কী রহস্য ও তাৎপর্য নিহিত আছে, তা তিনিই ভালো জানেন। অবশ্য মুহাদ্দিস ও মুফাসসিরগণ কিছু কিছু হেকমত বয়ান করেছেন। যেমন, একটি হেকমত হল, কসমকৃত বস্ত্তর গুরুত্ব ও মহত্ব বুঝানো। উদারহণ স্বরূপ, আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে সময়ের কসম করেছেন। এর দ্বারা সময়ের মূল্য ও গুরুত্ব বুঝানো উদ্দেশ্য।

-তাফসীরে কুরতুবী ২০/১২২; রূহুল মাআনী ৩০/২২৮; ফাতহুল বারী ১১/৫৪৪; উমদাতুল কারী ২৩/১৭৫; আলইসতিযকার ৪/২০৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০২৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে পাশের বাড়িতে এক মহিলার সাথে কথা...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে পাশের বাড়িতে এক মহিলার সাথে কথা না বলার জন্য কসম করতে বলে। স্বামীর আদেশ পালনার্থে মহিলাটি বলে যে, আল্লাহর কসম, আমি ঐ মহিলার সাথে কোনো কথা বলব না।

দুদিন পর পাশের বাড়ির ঐ মহিলা তার কাছে আসলে সে বলে যে, আমার স্বামী তোমার সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছে। তাই আমি তোমার সাথে কোনো কথা বলতে পারব না।

একথা শুনে ঐ মহিলাটি কোনো কথা না বলে চলে যায়। এখন ঐ কথা বলার দ্বারা তার কসম কি ভঙ্গ হয়ে গেছে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ মহিলাকে সম্বোধন করে উক্ত কথা বলার কারণে কসমটি ভঙ্গ হয়ে গেছে। কেননা কাউকে সম্বোধন করে কিছু বলাই তার সাথে কথা বলার অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তাকে কসমের কাফফারা আদায় করতে হবে।

কসমের কাফফারা হল, দশজন মিসকীনকে তৃপ্তিসহকারে দু বেলা খানা খাওয়ানো। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। আর এ দুটির সামর্থ্য না থাকলে এক নাগাড়ে তিনটি রোযা রাখতে হবে।

-আরবাহরুর রায়েক ৪/৩৩২; মাবসূত, সারাখসী ৯/২২; ফাতহুল কাদীর ৪/৪১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৭৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

কয়েক মাস আগে আমি অসুস্থ ছিলাম। তখন মানত করেছি, সুস্থ...

প্রশ্ন

কয়েক মাস আগে আমি অসুস্থ ছিলাম। তখন মানত করেছি, সুস্থ হলে আমাদের বাজার মসজিদে একটি আইপিএস কিনে দিব। আলহমাদুলিল্লাহ, আমি এখন সুস্থ হয়েছি। কিছুদিন পূর্বে আমাদের মসজিদে আইপিএস কেনা হয়েছে। এখন আমি অন্য কোনো মসজিদে আইপিএস কিনে দিলে ঐ মানত পুরা হবে কি? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার ঐ কথা মূলত নফল দানের ওয়াদা। নির্দিষ্ট মসজিদে না দিয়ে অন্য মসজিদে আইপিএস দিলেও ঐ ওয়াদা পূর্ণ হয়ে যাবে। এতে কোনো অসুবিধা হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৫; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৭৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার মরহুম পিতার উপর হজ্ব ফরয ছিল। তিনি প্রচুর সম্পত্তি...

প্রশ্ন

আমার মরহুম পিতার উপর হজ্ব ফরয ছিল। তিনি প্রচুর সম্পত্তি রেখে মারা যান। নিজের ফরয হজ্বটা করে যেতে পারেননি। এবং বদলি হজ্ব করার অসিয়তও করে যাননি। ফলে তাঁর পক্ষ থেকে হজ্বের ব্যবস্থা না করেই সকল সম্পত্তি ভাগ করে নিয়েছি। এখন আমি একা তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করার জন্য চাকরির টাকা ও কিছু জমি বিক্রি করে হজ্ব করার মতো টাকা জমা করেছি। আমার নিয়ত হল, আগে পিতার হজ্ব করব এরপর আমার নিজের হজ্ব করব। কেননা আমার ধারণা যে আমার উপর হজ্ব ফরয হয়নি, কিন্তু একজন আলেম বললেন, আমার উপরও হজ্ব ফরয। তাই আগে নিজের হজ্ব আদায় কর। এরপর সম্ভব হলে তোমার পিতার বদলি হজ্ব আদায় করবে।

এখন আমি আমার নিজের হজ্ব আদায় করব নাকি পিতার বদলি হজ্ব আদায় করব? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

ওই আলেম ঠিকই বলেছেন। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার নিজের উপরই হজ্ব ফরয। তাই আগে আপনার নিজের হজ্ব আদায় করা জরুরি। এরপর কখনো সম্ভব হলে পিতার বদলি হজ্ব করবেন। আর আপনার পিতা যদিও বদলি হজ্বের অসিয়ত করে যাননি, কিন্তু তিনি যেহেতু ফরয হজ্ব আদায় না করে ইন্তেকাল করেছেন এবং পর্যাপ্ত সম্পদও রেখে গেছেন তাই তার ওয়ারিশদের উচিত হবে তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করানো। বালেগ ওয়ারিশদের স্বতঃস্ফূর্ত ব্যয়ের মাধ্যমে তার বদলি হজ্ব করানো উচিত। হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, এক মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, আমার মা হজ্বের মানত করেছিলেন। তিনি হজ্ব না করেই মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে হজ্ব করব?

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তাঁর পক্ষ থেকে হজ্ব কর। তোমার কী ধারণা, যদি তোমার মা কারো নিকট ঋণী হতেন তুমি কি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? তোমরা আল্লাহর হক আদায় করে দাও। কেননা আল্লাহর হক তো আদায়ের বেশি উপযুক্ত।

-সহীহ বুখারী ১/২৪৯; মানাসিক, পৃ. ৪৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১৭৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৬২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি মানত করেছিলাম, যদি আমি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাই...

প্রশ্ন

আমি মানত করেছিলাম, যদি আমি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাই তাহলে কিশোরগঞ্জ পাগলা মসজিদে দু রাকাত নামায পড়ব। আল্লাহর রহমতে ঐ নাম্বারই পেয়েছি। এবং পরবর্তীতে আমি দু রাকাত নামায পাগলা মসজিদে না পড়ে শহীদী মসজিদে পড়ে নিয়েছি। এখন আমার জানার বিষয় হল, আমার মানত কি আদায় হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে তাহলে কি পুনরায় আদায় করতে হবে?

উত্তর

শহিদী মসজিদে দু রাকাত নামায পড়ার দ্বারা আপনার মানতটি আদায় হয়ে গেছে। কারণ কোনো নির্দিষ্ট মসজিদে নামায পড়ার মানত করলে সে মসজিদে পড়া জরুরি হয়ে যায় না। অন্য মসজিদে কিংবা অন্য কোথাও পড়ে নিলেও তা আদায় হয়ে যায়। তাই নির্দিষ্ট মসজিদে গিয়ে পুনরায় তা আদায় করতে হবে না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৫; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৮৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমাদের এক দূর-সম্পর্কের আত্মীয় কয়েকদিন আগে মারা গেছেন। মারা যাওয়ার...

প্রশ্ন

আমাদের এক দূর-সম্পর্কের আত্মীয় কয়েকদিন আগে মারা গেছেন। মারা যাওয়ার অনেক আগে থেকেই তার অসিয়ত ছিল যে, তাকে যেন তার গ্রামের বাড়ি বরিশালে তার মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পর তার ছেলেরা যাতায়াত সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে তাকে ঢাকাতেই দাফন করে। এখন এ নিয়ে মৃতের ভাই-বোনদের সাথে তার ছেলেদের গন্ডগোল হচ্ছে। তারা বলছেন যে, অসিয়ত পূরণ না করাটা অনেক বড় অন্যায় হয়েছে। ছেলেরা তা মানতে নারাজ। দয়া করে সঠিক বিষয়টি জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাকে ঢাকায় দাফন করা ঠিক হয়েছে। কেননা মানুষ যে এলাকায় মারা যায়তাকে ঐ এলাকার বা পার্শ্ববর্তী এলাকার কবরস্থানে দাফন করা উত্তম। আর বরিশালে দাফন নাকরাটা অন্যায় হয়নি। কারণ মৃতের এই অসিয়তটি শরীয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। তাইওয়ারিসদের জন্য তা পূর্ণ করাও জরুরি নয়।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৪০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৩৫; রদ্দুল মুহতার ২/২২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৮১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৭৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

কোনো ব্যক্তি নির্দিষ্ট কোনো মাসের, যেমন মুহাররম মাসের দশ দিন...

প্রশ্ন

কোনো ব্যক্তি নির্দিষ্ট কোনো মাসের, যেমন মুহাররম মাসের দশ দিন ইতিকাফের মান্নত করে, তাহলে কি রমযানের শেস দশকে ইতিকাফ করলে তার মান্নত আদায় হবে? অর্থাৎ রমযানের রোযা কি ঐ মান্নতের জন্য যথেষ্ট হবে না অন্য মাসে নফল রোযাসহ তা আদায় করতে হবে?

প্রশ্ন : খ) আর যদি কোনো নির্দিষ্ট মাসে নয়; বরং যে কোনো মাসের ১০ দিন ইতিকাফের মান্নত করল তাহলে সে কি রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করলে মান্নত আদায় হবে, না নফল রোযাসহ অন্য মাসে তা আদায় করতে হবে?

উত্তর

ক ও খ) রমযান ছাড়া অন্য কোনো নির্দিষ্ট মাসে ইতিকাফের মান্নত করলে রমযানে ইতিকাফ করার দ্বারা মান্নত আদায় হবে না। রমযান ছাড়া অন্য কোনো মাসে নফল রোযাসহ তা আদায় করা আবশ্যক। তদ্রূপ মাস উল্লেখ না করে কিছুদিনের ইতিকাফের মান্নত করলেও রমযান ছাড়া অন্য মাসে নফল রোযাসহ ইতিকাফ করতে হবে। এক্ষেত্রেও রমযানের ইতিকাফ যথেষ্ট নয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মান্নতকৃত দশ দিনের ইতিকাফ রমযানের শেষ দশকের ইতিকাফ দ্বারা আদায় করা যাবে না; বরং অন্য কোনো মাসে নফল রোযাসহ তা আদায় করতে হবে।

উল্লেখ্য, রমযানের ইতিকাফ ছাড়া অন্য কোনো মাসের ইতিকাফের মান্নত করলে তাতে একত্রে দুটি কাজের মান্নত হয়ে যায় : ১. ইতিকাফ করা ও ২. ইতিকাফের দিনে রোযা রাখা।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১/১২১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮৩; উমদাতুল ফিকহ ৩/৩১৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৫০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একজনের বাড়িতে গেলে সে আমাকে ভাত খাওয়ার জন্য জোরাজুরি...

প্রশ্ন

আমি একজনের বাড়িতে গেলে সে আমাকে ভাত খাওয়ার জন্য জোরাজুরি করে। আমি তার বাড়িতে খাব না এজন্য মিথ্যা কসম করে বলি, আমি খানা খেয়ে এসেছি। এতে আমার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে কি?

উত্তর

কোনো বিষয়ে মিথ্য কসম করা নিকৃষ্টতর কবীরা গুনাহ। প্রশ্নোক্ত মিথ্যা কসমের কারণে আপনার কবীরা গুনাহ হয়েছে।

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কবীরা গুনাহ হল, আল্লাহর সাথে শিরক করা, মাতাপিতার অবাধ্যতা করা, মানুষ হত্যা করা ও মিথ্যা কসম করা।’-সহীহ বুখারী ২/৯৮৭

অতএব ঐ গুনাহ থেকে কায়মনোবাক্যে তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। অবশ্য প্রশ্নোক্ত মিথ্যা কসমের কারণে আপনার উপর কোনো কাফফারা ওয়াজিব হয়নি। কাফফারা ওয়াজিব হয় ভবিষ্যতে কোনো বিষয়ের কসম করে তা ভঙ্গ করলে।

-আসসুনানুল কুবরা ১০/৩৮; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৭; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৪৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১২৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮২৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একটি মান্নত করেছি এভাবে যে, চাকরিটা যদি হয়ে যায়...

প্রশ্ন

আমি একটি মান্নত করেছি এভাবে যে, চাকরিটা যদি হয়ে যায় তাহলে ৪০ দিন ১০০ বার দরূদ শরীফ পড়ব। আলহামদুলিল্লাহ চাকরিটা আমার হয়ে গেছে। এখন জানতে চাই, ৪০ দিন দরূদ শরীফ পড়া কি আমার উপর ওয়াজিব হয়ে গেছে?

উত্তর

হ্যাঁ, উক্ত মান্নতের কারণে আপনার উপর ৪০ দিন ১০০ বার করে দরূদ শরীফ পড়া ওয়াজিব হয়ে গেছে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ২/৩৩৯; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/৫৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮২৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক লোকের কাছে আমি পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ চেয়েছিলাম। কিন্তু...

প্রশ্ন

এক লোকের কাছে আমি পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ চেয়েছিলাম। কিন্তু এক মাস পর যেহেতু তার টাকার প্রয়োজন ছিল তাই সে আমাকে টাকা দিতে চাচ্ছিল না। আমি বললাম, কসম করে বলছি, এক মাস পর আপনার টাকা দিয়ে দিব। একথা বলার পর সে আমাকে ঋণ দেয়। কিন্তু কারণবশত এক মাস পর আমি তার ঋণ পরিশোধ করতে পারিনি। আরো দুই মাস পর পরিশোধ করেছি। আমাকে এক লোক বলেছে, কসমের সাথে আল্লাহর নাম না বললে কসম হয় না। জানতে চাই, তার কথা কি ঠিক? আমার উল্লেখিত কসমটি কি সংঘটিত হয়নি?

উত্তর

ঐ ব্যক্তির কথা ঠিক নয়। আল্লাহ তাআলার নাম নিয়ে কসম করলে যেমনিভাবে কসম সংঘটিত হয় তদ্রূপ আল্লাহ তাআলার নাম না নিয়ে শুধু কসম শব্দ ব্যবহার করলেও তা সংঘটিত হয়ে যায়। প্রখ্যাত তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, আমি শপথ করছি আর আল্লাহ তাআলার নামে শপথ করছি-উভয়টি দ্বারাই কসম সংঘটিত হয়।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৪৭২

সুতরাং আপনার প্রশ্নোক্ত কথা দ্বারা কসম হয়ে গেছে। এরপর সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করার কারণে কসমটি ভঙ্গ হয়েছে। এজন্য আপনাকে কসমের কাফফারা আদায় করতে হবে।

-কিতাবুল আছল ৩/১৭৫; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১৬; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮১৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার নানার উপর হজ্ব ফরয। তিনি এখনো তা আদায় করেননি।...

প্রশ্ন

আমার নানার উপর হজ্ব ফরয। তিনি এখনো তা আদায় করেননি। আমরা তাকে হজ্বের জন্য তাগাদা দিয়ে আসছিলাম। এরই মধ্যে গত বছর তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে অনেকদিন যাবত শয্যাশায়ী ছিলেন। একদিন আমরা তার হজ্বের বিষয়ে আলোচনা করছিলাম তখন তিনি মান্নত করেছিলেন যে, আল্লাহ তাআলা আমাকে সুস্থ করলে আগামী বছরই ইনশাআল্লাহ হজ্ব করব। আল্লাহর রহমতে তিনি এখন সুস্থ।

প্রশ্ন হল, উক্ত মান্নতের কারণে কি নানাজানের ফরয হজ্ব ছাড়াও আরেকটি হজ্ব করতে হবে? যদি দুটি হজ্ব করতে হয় তবে কোনটি আগে করবে। ফরয হজ্ব নাকি মান্নতের হজ্ব? জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার নানাজানের ঐ কথার কারণে পৃথক কোনো হজ্ব তার উপর ওয়াজিব হয়নি। তাই এখন তিনি হজ্ব করলে তার ফরয হজ্বটিই আদায় হবে। অতএব আপনার নানার কর্তব্য হল, আগামী হজ্বের মৌসুমেই তার ফরয হজ্বটি আদায় করে নেওয়া।

-আতাজনীস ওয়ালমাযীদ ২/৪৭৩; আলবাহরুল আমীক ৪/২২১৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮০৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক ব্যক্তি রমযান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফের নিয়ত করেছেন। তবে...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি রমযান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফের নিয়ত করেছেন। তবে অনিবার্য কারণবশত তিনি ইতিকাফ করতে পারেননি। এখন নিয়ত ভঙ্গ হওয়ার ফলে তার করণীয় কী?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ ব্যক্তি যেহেতু ইতিকাফের শুধু নিয়ত করেছে, মান্নত করেনি তাই এ কারণে তার উপর ইতিকাফ করা ওয়াজিব হয়নি। তাই ইতিকাফ না করার কারণে তার উপর কিছুই ওয়াজিব হয়নি।

-রদ্দুল মুহতার ২/৪৪১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৪২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ৩৮২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৯৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একটি বিষয়ে কসম করেছিলাম। কিন্তু কোনো কারণে তা রক্ষা...

প্রশ্ন

আমি একটি বিষয়ে কসম করেছিলাম। কিন্তু কোনো কারণে তা রক্ষা করতে পারিনি। এখন কাফফারা আদায় করতে চাই। আমি জানি, কসমের কাফফারা হল ১০জন মিসকীনকে দু বেলা খানা খাওয়ানো। আমি জানতে চাই, আমার সুবিধার জন্য যদি একজন ফকীরকে ১০ দিন দু বেলা খানা খাইয়ে দেই তাহলে এতে আমার কাফফারা আদায় হবে কি না।

উত্তর

হ্যাঁ, একজন মিসকীনকে দশদিন দু বেলা তৃপ্তির সাথে খানা খাওয়ালেও আপনার কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৬৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৪৩০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৭৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একটি বিষয়ে মান্নত করেছিলাম যে, অমুক বিষয়টি সমাধা হলে...

প্রশ্ন

আমি একটি বিষয়ে মান্নত করেছিলাম যে, অমুক বিষয়টি সমাধা হলে তিনদিন রোযা রাখব। জানতে চাই, এক্ষেত্রে আমাকে ধারাবাহিকভাবে তিন দিন রোযা রাখতে হবে নাকি ভিন্ন ভিন্ন করে রাখলেও চলবে। উল্লেখ্য, মান্নতের সময় ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখার নিয়ত ছিল না।

উত্তর

মান্নতের সময় যেহেতু ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখার নিয়ত ছিল না তাই ভিন্ন ভিন্ন করেও রাখতে পারবেন। এতে মান্নত আদায় হয়ে যাবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২১৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৬২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক ব্যক্তির মদ পানের পুরনো নেশা আছে। অনেকবার প্রতিজ্ঞা করেও...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তির মদ পানের পুরনো নেশা আছে। অনেকবার প্রতিজ্ঞা করেও তা ছাড়তে পারেনি। একপর্যায়ে সে শপথ করে বলল, আর কখনোও মদ পান করব না। তার এই কথা কি কসম হয়েছে?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত কথা দ্বারা কসম সংগঠিত হয়েছে। প্রখ্যাত তাবেয়ী হযরত ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. (মৃত : ৯৬ হি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শপথ করছি এবং আমি আল্লাহর নামে শপথ করছি উভয়টা দ্বারাই কসম সংগঠিত হয়। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৪৭২)

সুতরাং ঐ ব্যক্তি উক্ত কসমের পর মদ পান করলে মদপানের গুনাহ তো হবেই সাথে সাথে কসম ভঙ্গেরও গুনাহ হবে এবং তাকে কাফফারাও আদায় করতে হবে। তাই এখন তার জন্য অপরিহার্য কর্তব্য হল ভবিষ্যতে আর কখনোও মদ পান না করা এবং স্বীয় শপথের উপর অবিচল ও অনড় থাকা।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৬৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭০৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার এক বন্ধু মান্নত করেছে, তার অমুক কাজ সমাধা হলে...

প্রশ্ন

আমার এক বন্ধু মান্নত করেছে, তার অমুক কাজ সমাধা হলে সে মাযারে একটি ছাগল দিবে। পরে কাজটি সমাধা হওয়ার পর সে জানতে চাচ্ছে, ঐ মান্নত আদায় করা তার জন্য জরুরি কি না? আর ছাগলটি মাযারে না দিয়ে অন্য কোথাও দেওয়া যাবে কি না?

উত্তর

মাযারের নামে মান্নত করলে মান্নত হয় না। মান্নত একটি ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহর নামেই করা যায়। আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কারো নামে, যেমন পীরের নামে, মাযারের নামে মান্নত করা হারাম। অতএব প্রশ্নোক্ত নিয়ত পূর্ণ করা যাবে না; বরং অবৈধ মান্নত করার জন্য তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৫৭৫; সুনানে আবু দাউদ ২/৪৬৯; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৪৮৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৬৪৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪৩৯; ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ২৭/৭৭, ২৬/৩০৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৯৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

ক) এক মহিলার ছেলের নামে মামলা হয়েছে। আদালত ঘোষণা করেছে,...

প্রশ্ন

ক) এক মহিলার ছেলের নামে মামলা হয়েছে। আদালত ঘোষণা করেছে, মঙ্গলবার এ মামলার ফয়সালা হবে। এ কথা শুনে মহিলা মান্নত করেছে যে, যদি তার ছেলের পক্ষে ফয়সালা হয় তাহলে তিনি সারা জীবন প্রতি মঙ্গলবার রোযা রাখবেন। মঙ্গলবার দিন আদালত তার ছেলের পক্ষেই ফয়সালা দিয়েছে। এখন কি সারা জীবন প্রতি মঙ্গলবার তাকে রোযা রাখতে হবে?

খ) কসম ভঙ্গের কারণে আমার উপর একটি কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। আমরা জানি, দশজন মিসকীনের প্রত্যেককে এক সদকাতুল ফিতর পরিমাণ গম বা এর মূল্য দিলে কাফফারা আদায় হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আমার জানার বিষয় হল, আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব প্রতি জুমআয় মসজিদের জেনারেটরের তেলের জন্য টাকা তোলেন। কাফফারার টাকা গরীবকে না দিয়ে জেনারেটরের তেলের জন্য দিয়ে দিলে আমার কাফফারা আদায় হবে কি?

উত্তর

ক) হ্যাঁ, ঐ মহিলাকে সারা জীবন মঙ্গলবার দিন রোযা রাখতে হবে। ওজরের কারণে কোনো মঙ্গলবার রোযা রাখতে না পারলে অন্যদিন তা কাযা করতে হবে। আর ভবিষ্যতে বার্ধক্য বা অসুস্থতার কারণে রোযা রাখা সম্ভব না হলে প্রতি মঙ্গলবারের রোযার পরিবর্তে ফিদয়া দিতে হবে।-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৭৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৯

খ) মসজিদে দান করা অনেক সওয়াবের কাজ। তবে এতে কাফফারা আদায় হবে না। তা নফল সদকা বলেই গণ্য হবে। কেননা, কাফফারা আদায়ের জন্য শর্ত হল, দশজন গরীবের প্রত্যেককে নির্ধারিত সম্পদের মালিক বানিয়ে দেওয়া। অর্থাৎ দশজন মিসকীনের প্রত্যেককে দুই বেলা পরিতৃপ্ত হয়ে খাবার খাওয়ানো বা এর মূল্য দিয়ে দেওয়া। কিংবা প্রত্যেককে জোড়া করে কাপড় দেওয়া অথবা একটি গোলাম আযাদ করা।

কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) কসমের কাফফারা হল দশজন মিসকীনকে মধ্যম ধরনের খাবার দিবে। যা তোমরা তোমাদের পরিবারবর্গকে খাইয়ে থাক। অথবা তাদেরকে বস্ত্র দান করবে কিংবা একজন গোলাম আযাদ করবে। তরে কারো কাছে যদি (এসব জিনিসের মধ্য হতে) কিছুই না থাকে তবে সে তিন দিন রোযা রাখবে।-সূরা মায়েদা : ৮৯; কিতাবুল আছল, ইমাম মুহাম্মাদ ৪/২২০; আলমাবসূত, সারাখসী ৮/১৫৪; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৯৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার উপর একটি কসমের কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। শুনেছি, দশ জন...

প্রশ্ন

আমার উপর একটি কসমের কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। শুনেছি, দশ জন ফকিরকে দু’ বেলা তৃপ্তি সহ খাবার খাওয়ালে কাফফারা আদায় হয়। আমি যদি দশজনকে দু’ বেলা খাওয়ানোর পরিবর্তে বিশজনকে এক বেলা খাওয়াই তাহলে কি কাফফারা আদায় হবে?

উত্তর

না, এভাবে কাফফারা আদায় হবে না। প্রত্যেককে দু’ বেলা খাবার খাওয়াতে হবে। এক বেলা খাওয়ানো যথেষ্ট নয়। কাফফারা আদায়ের জন্য শর্ত হল, দশজন মিসকীনকে দু’ বেলা খাবার খাওয়ানো। তদ্রূপ একজন মিসকীনকে দশ দিন দু’ বেলা করে খাবার খাওয়ালেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে।

হারেস রাহ. বলেন, হযরত আলী রা. কুরআন মজীদের আয়াত (তরজমা) (কসমের কাফফারা এই যে, দশজন মিসকীনকে মধ্যমমানের খাবার দেবে, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক।) এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, দশ জনের প্রত্যেককে দিনে ও রাতে (দু’ বেলা) খাওয়াবে।-ইবনে কাসীর ২/১৪৩; জাসসাস ২/৪৫৭

বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত কাতাদা রাহ. বলেন, প্রত্যেক মিসকীনকে দিনে ও রাতে (দু বেলা) খাওয়াবে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৩৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৬১; মাবসূত, সারাখসী ৭/১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৮৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার এক বন্ধু মান্নত করেছে, তার অমুক কাজ সমাধা হলে...

প্রশ্ন

আমার এক বন্ধু মান্নত করেছে, তার অমুক কাজ সমাধা হলে সে মাযারে একটি ছাগল দিবে। পরে কাজটি সমাধা হওয়ার পর সে জানতে চাচ্ছে, ঐ মান্নত আদায় করা তার জন্য জরুরি কি না? আর ছাগলটি মাযারে না দিয়ে অন্য কোথাও দেওয়া যাবে কি না?

উত্তর

মাযারের নামে মান্নত করলে মান্নত হয় না। মান্নত একটি ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহর নামেই করা যায়। আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কারো নামে, যেমন পীরের নামে, মাযারের নামে মান্নত করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। অতএব প্রশ্নোক্ত মান্নত পুরা তো করা যাবেই না; বরং অবৈধ মান্নত করার কারণে তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।

মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৫৭৫; সুনানে আবু দাউদ ২/৪৬৯; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৪৮৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৬৪৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪৩৯; ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ২৭/৭৭, ২৬/৩০৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৮৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

দীর্ঘ দিন পর্যন্ত আমাদের কোনো সন্তান হচ্ছিল না। ফলে আমার...

প্রশ্ন

দীর্ঘ দিন পর্যন্ত আমাদের কোনো সন্তান হচ্ছিল না। ফলে আমার স্বামী মান্নত করলেন যে, আমাদের সন্তান হলে আমরা তাকে নিয়ে শাহজালাল রাহ.-এর মাযার যিয়ারত করতে যাব এবং সেখানকার গরীবদেরকে একটি গরু জবাই করে খাওয়াব। আল্লাহ তাআলার মেহেরবানীতে আমাদের একটি কন্যা সন্তান হয়েছে। কিন্তু আমার স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার দরুণ মাযারে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আমাদের মান্নতটি কিভাবে আদায় করব?

উত্তর

আপনার স্বামী মাযারে যাওয়ার মান্নত করে ঠিক কাজ করেননি। এ ধরনের মান্নত শরীয়তে নিষিদ্ধ। তবে গরীবদেরকে গরু জবাই করে খাওয়ানোর যে মান্নত করা হয়েছে তার জন্য একটি গরু জবাই করে গরীব-মিসকীনকে খাইয়ে দিতে হবে অথবা এর গোশত তাদেরকে বিলিয়ে দিতে হবে। হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার কোনো ইবাদতের মান্নত করে সে যেন তা পুরা করে। আর যে কোনো গুনাহর মান্নত করে সে যেন তা থেকে বিরত থাকে। (সহীহ বুখারী ২/৯৯১)

উল্লেখ্য, মাযারে গিয়ে গরু জবাই করার মান্নত করা ঠিক নয়। কেননা, বর্তমানে মাযারগুলোতে নানাপ্রকার শিরকী ও বিদআতী কাজ হয়ে থাকে। যার কারণে এসব মাযারে গিয়ে পশু জবাই করে খাওয়ানোর ইচ্ছা করা কিছুতেই বাঞ্ছনীয় নয়।

এক্ষেত্রে আপনারা একটি গরু জবাই করে নিজ এলাকার বা আশপাশের অথবা অন্য কোনো স্থানের গরীব-মিসকীনের মাঝে গোশত বণ্টন করে দিয়ে মান্নত আদায় করতে পারেন। মাযারে গিয়ে জবাই করবেন না।

আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৮৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি মান্নত করেছি যে, দাখিল পরীক্ষায় এ প্লাস পেলে একদিন...

প্রশ্ন

আমি মান্নত করেছি যে, দাখিল পরীক্ষায় এ প্লাস পেলে একদিন ইতিকাফ করব। পরে আল্লাহর রহমতে আমি এ প্লাস পেয়েছি। এখন জানতে চাই, ঐ একদিনের ইতিকাফের জন্য কি রোযাও রাখতে হবে? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

হ্যাঁ। মান্নতের ইতিকাফটি নফল রোযাসহ আদায় করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, হযরত উমর রা. জিয়িররানা-দিবসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমি ইতিপূর্বে একদিনের ইতিকাফের মান্নত করেছিলাম। এখন তা পুরা করতে চাই। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে রোযাসহ ইতিকাফ আদায়ের নির্দেশ দিলেন। (সুনানে কুবরা, বায়হাকী ৪/৭৭৩; মুসতাদরাকে হাকেম ২/৮১; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৫২)

হযরত আয়েশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘রোযা ছাড়া ইতিকাফ নেই।’

সুনানে আবু দাউদ ১/৩৩৫; মুসতাদরাকে হাকিম ২/৮১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২১১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮৩; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক ব্যক্তি রমযান মাসে সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করেছেন।...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি রমযান মাসে সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করেছেন। কিন্তু সূর্য তখনও ডোবেনি। তার রোযা কি ভেঙ্গে গেছে? ভেঙ্গে গিয়ে থাকলে একটি রোযা কাযা করাই কি যথেষ্ট হবে নাকি কাফফারাও দিতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির রোযা ভেঙ্গে গেছে। এ ধরনের ক্ষেত্রে হুকুম হল, ভুল সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকবে এবং পরবর্তীতে একটি রোযা কাযা করে নিবে। তবে কাফফারা আদায় করতে হবে না। হযরত হানযালা রা. বলেন, আমি রমযান মাসে হযরত উমর রা.-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। সেখানে কিছু পানীয় পেশ করা হল এবং কেউ কেউ সূর্য ডুবে গেছে মনে করে তা পান করল। তখন মুয়াজ্জিন উচ্চস্বরে বললেন, আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহর কসম, সূর্য এখনো ডোবেনি, তা উদিত অবস্থায় আছে। তখন হযরত উমর রা. বললেন, যারা ইফতার করে ফেলেছে তারা যেন তার পরিবর্তে আরেকটি রোযা রাখে। আর যারা ইফতার করেনি তারা যেন সূর্য ডুবা পর্যন্ত তা পূর্ণ করে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/১৫০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪০৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৩৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ৩৬৯; ফাতহুল কাদীর ২/২৯০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৩১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক মহিলা তার পুত্রের ঘরে খানা খেত। একদিন ঝগড়া লেগে...

প্রশ্ন

জনৈক মহিলা তার পুত্রের ঘরে খানা খেত। একদিন ঝগড়া লেগে তার পুত্রকে বলেছে যে, তোর ঘরে খাওয়া আমার জন্য হারাম। এর কিছুদিন পর দুজনের মধ্যে মিল-মিশ হয়ে যায় এবং ঐ মহিলা তার পুত্রের ঘরে পুনরায় খাবার-দাবার করতে থাকেন। জানার বিষয় হল, মহিলার এ কথা কি কসম হয়েছে? কসম হয়ে থাকলে এখন তাকে কী করতে হবে?

উত্তর

হ্যাঁ, ‘তোর ঘরে খাওয়া আমার জন্য হারাম’ মহিলার এ কথা দ্বারা কসম সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং এর পর সেখানে খাওয়ার কারণে কসমটি ভেঙ্গে গেছে। এজন্য তাকে একটি কসমের কাফফারা দিতে হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭২৯; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯২, ৪/২৯০; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৪৬৬, ২/৪৫৯; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৩০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

কিছুদিন আগে ছেলের এসএসসি পরীক্ষা ছিল। তার ভালো ফলাফলের জন্য...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে ছেলের এসএসসি পরীক্ষা ছিল। তার ভালো ফলাফলের জন্য মান্নত করেছিলাম যে, সে যদি জিপিএ ফাইভ পায় তাহলে আমি একটি মান্নাত আদায় করব। আলহামদুলিল্লাহ, সে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। এখন আমি উক্ত মান্নতটি কীভাবে আদায় করব? উল্লেখ্য, মান্নত করার সময় কী দিয়ে মান্নত আদায় করব তা স্থির করিনি।

উত্তর

হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত উকবা বিন আমের রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মান্নত করল এবং কিছু নির্দিষ্ট করল না তাকে কসমের কাফফারা দিতে হবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৩১১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২১২৭

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে কসমের কাফফারা আদায় করতে হবে। অর্থাৎ পূর্ণ আহার গ্রহণ করতে পারে এমন দশজন মিসকীনকে তৃপ্তিসহ দু বেলা খানা খাওয়াতে হবে। অথবা এর মূল্য দান করে দিতে হবে কিংবা দশজনের প্রত্যেককে এক জোড়া করে কাপড় দিতে হবে। আর এ দুটির সামর্থ্য না থাকলে ধারাবাহিকভাবে তিনটি রোযা রাখতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪৫; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬১১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

রফিক তার দুই ছেলের মাথায় হাত রেখে বলেছে, আমি কসম...

প্রশ্ন

রফিক তার দুই ছেলের মাথায় হাত রেখে বলেছে, আমি কসম করছি, জীবনে আর জুয়া খেলব না। পরবর্তীতে সে জুয়া খেলেছে। প্রশ্ন হল, এই কসম ভাঙ্গার কারণে কি তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে?

উত্তর

হ্যাঁ, উক্ত কসম ভাঙ্গার কারণে তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। কাফফারা হল, পূর্ণ আহার গ্রহণ করতে পারে এমন দশজন মিসকীনের প্রত্যেককে দু’ বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানো। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া কাপড় প্রদান করা। আর যদি তার এ পরিমাণ আর্থিক সামর্থ্য না থাকে তাহলে ধারাবাহিকভাবে তিনটি রোযা রাখা।

প্রকাশ থাকে যে, কসম কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলার নামেই করা জায়েয। আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য কিছুর নামে কসম করা জায়েয নয়। তদ্রূপ সন্তান বা কোনো মানুষের নামে বা মাথা ছুঁয়ে কসম করাও গুনাহ। অবশ্য এ ধরনের কসম করা অন্যায় হলেও তা অনেক ক্ষেত্রে সংগঠিত হয়ে যায় এবং ভেঙ্গে ফেললে কাফফারাও দিতে হয়।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৬৫, ৬/৩৬৭; বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৪; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া ২৪২; হেদায়া-ফাতহুল কাদীর ৪/৩০৮; রদ্দুল মুহতার ৩/৭১২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

ক) বর্তমান বাজারগুলোতে যেসব পারফিউম বা বডি স্প্রে পাওয়া যায়...

প্রশ্ন

ক) বর্তমান বাজারগুলোতে যেসব পারফিউম বা বডি স্প্রে পাওয়া যায় এগুলো ব্যবহার করা ঠিক হবে কি? এবং এগুলো ব্যবহার করে নামায পড়লে নামায সহীহ হবে কি না?

খ) এক লোক জনসম্মুখে তার কিছু উন্মুক্ত জমি মসজিদের জন্য ওয়াকফ করেছে। সে বলেছিল, মসজিদের জন্য এই জমি ওয়াকফ করে দিলাম। আপনারা এতে নামায পড়তে পারেন। কিছুদিন পর ঐ লোক উক্ত জমি মাদরসার জন্য ওয়াকফ করার ইরাদা করেছে। এখন জানার বিষয় হল, মসজিদের জন্য ওয়াকফ করার পর পুনরায় তা মাদরাসার জন্য ওয়াকফ করা কি সহীহ হবে? উল্লেখ্য, মসজিদের জন্য ওয়াকফ করার পর তাতে মসজিদ নির্মাণ হয়নি এবং নামাযও আদায় করা হয়নি।

গ) এক লোকের নিকট পর্যাপ্ত টাকা না থাকার কারণে খানা বা বস্ত্র দ্বারা কসমের কাফফারা আদায় করতে পারেনি। তাই রোযা রাখা শুরু করেছে। দুদিন রোযা রাখার পর তার হাতে বেশ টাকা আসে। এখন সে ১০ জন মিসকীনকে দু’ বেলা খাবার খাওয়াতে সক্ষম। এখন তৃতীয় রোযা রাখার দ্বারা লোকটির কাফফারা আদায় হয়ে যাবে নাকি নতুন করে ১০ জন মিসকীনকে খাবার খাওয়াতে হবে?

উত্তর

ক : বর্তমান অধিকাংশ পারফিউম ও স্প্রেতে এ্যালকোহল থাকে। তাবে এ্যালকোহলমুক্ত পারফিউমও পাওয়া যায়। তাই পারফিউম বা স্প্রে ব্যবহার করতে চাইলে এ্যালকোহলমুক্তগুলোই খরিদ করবেন। এ্যালকোহলযুক্ত স্প্রে ব্যবহার করা অনুত্তম। নাজায়েয বা নাপাক নয়। তাই কাপড় বা শরীরে স্প্রে লাগিয়ে নামায পড়লে নামায সহীহ হয়ে যাবে।-মাবসূতে সারাখসী ২৪/৯; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৩০; তাকমিলাতু ফাতহুল মুলহিম ১/৫৫১, ৩/৬০০; মাজমুআতুল ফাতাওয়া শারইয়্যাহ ১/১৮৪, ৪/৪৫

খ : প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী জনসম্মুখে ঐ জমি মসজিদের জন্য দিয়ে দেওয়ার দ্বারা তা মসজিদের হয়ে গেছে। এবং তা দাতার মালিকানা থেকে বের হয়ে মসজিদের মালিকানায় এসে গেছে। সুতরাং পরবর্তীতে ঐ জমি মাদরাসার জন্য দেওয়া বৈধ হবে না। বরং তাতে মসজিদই করতে হবে।-হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ২/৫৩৫; কিতাবুল ওয়াফক পৃ. ৩২৫; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৩৮

গ : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তিনটি রোযা সম্পন্ন করার আগেই যেহেতু লোকটি খানা খাওয়ানোর মাধ্যমে কাফফারা আদায়ে সক্ষম হয়েছে তাই এখন রোযা দ্বারা তার কাফফারা আদায় হবে না। কাফফারা আদায়ের জন্য এখন তাকে ১০ জন মিসকীনকে দু’ বেলা পেটভরে খাবার খাওয়াতে হবে। অথবা তাদের প্রত্যেককে পরিধেয় বস্ত্র দিতে হবে। আর লোকটি যে দুটি রোযা রেখেছে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে।-কিতাবুল আছল ৩/২০৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭২৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছে, পরীক্ষায় পাশ করলে আজীবন দৈনিক দু...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছে, পরীক্ষায় পাশ করলে আজীবন দৈনিক দু রাকাত নফল নামায আদায় করবে। এখন পরীক্ষায় পাশ করার পর জানতে চাচ্ছে, প্রতিদিন দু রাকাত নফল নামায পড়া কি তার জন্য জরুরি? নামায না পড়ে কাফফারা দিলে কি যথেষ্ট হবে? দ্রুত জানতে আগ্রহী।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রতিদিন মান্নতের দুই রাকাত নামায পড়া জরুরি। কাফফারা দেওয়া যথেষ্ট হবে না। অসুস্থতা বা কোনো কারণে কোনে দিন ছুটে গেলে ঐ নামায কাযা করে নিতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪১-২৪২; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/৫৫৬; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৯/২৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৭৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

এক লোক মান্নত করেছে যে, তার চাকুরি হলে ৪ হাজার...

প্রশ্ন

এক লোক মান্নত করেছে যে, তার চাকুরি হলে ৪ হাজার টাকা মূল্যের একটি ছাগল ফকীরদেরকে সদকা করবে। চাকুরি হওয়ার পর মান্নত আদায়ের জন্য লোকটি তার এক নিকটাত্মীয় থেকে ৩ হাজার টাকা দিয়ে একটি ছাগল ক্রয় করে, যার বাজার মূল্য চার হাজার টাকা। এখন সে জানতে চায়, ৪ হাজার টাকা মূল্যের ছাগল ৩ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করে তা সদকা করলে মান্নত আদায় হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী বাস্তবেই যদি ঐ ছাগলের বাজারমূল্য ৪ হাজার টাকা হয়ে থাকে তাহলে সেটি সদকা করলেও তার মান্নত আদায় হয়ে যাবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৬২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৫২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৫৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছে যে, মসজিদে একটি মুরগি দিবে। জানার...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছে যে, মসজিদে একটি মুরগি দিবে। জানার বিষয় হল, ঐ মুরগি সে কীভাবে দিবে? বিক্রি করে টাকা মসজিদে দিবে? নাকি গরিবদেরকে দিবে?

উত্তর

ঐ ব্যক্তি ইচ্ছা করলে মুরগি বিক্রি করে তার মুল্য মসজিদে দিতে পারে। আবার মুরগিও দিতে পারে। সেক্ষেত্রে মসজিদকর্তপক্ষ তা বিক্রি করে মসজিদের কাজে লাগাবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৮/১৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; মাজমাউল আনহুর ২/২৭৪; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬-২৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৫; আলমাওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ ৪০/১৪৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৪৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

ক) জনৈক ব্যক্তি ইমামের সাথে নামায আদায় করছিল। দাড়ানো অবস্থায়...

প্রশ্ন

ক) জনৈক ব্যক্তি ইমামের সাথে নামায আদায় করছিল। দাড়ানো অবস্থায় তার ঘুম এসে যায়। এদিকে ইমাম সাহেব রুকু শেষে সিজদায় যাচ্ছিলেন। তখন সে জেগে উঠে এবং নিজে নিজে রুকু করে ইমামের সাথে সিজদায় শরিক হয়। জানার বিষয় হল, এই ব্যক্তির নামায হয়েছে কি

খ) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলে শপথ করলে শপথ হবে কি না? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

ক) ঐ ব্যক্তির নামায সহীহ হয়েছে। নামাযে থাকা অবস্থায় ইমামের সাথে কোনো রোকন আদায় করা না হলে ছুটে যাওয়া রোকন একাকী আদায় করে ইমামের সাথে শরিক হওয়াই নিয়ম। তবে নামাযে এভাবে ঘুমিয়ে পড়া উদাসীনতার অন্তর্ভুক্ত। তাই আর কখনো এমনটি না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ঘুমের চাপ নিয়ে নামাযে না দাঁড়ানোই উচিত।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯২; রদ্দুল মুহতার ১/৫৯৪

খ) হ্যাঁ, এভাবে কালিমা পড়ে শপথ করলে তা শরীয়তের দৃষ্টিতে কসম বলে গণ্য হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৭১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪১২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

যদি কোনো ব্যক্তি কুরআন মজীদের উপর হাত রেখে কোনো কাজ...

প্রশ্ন

যদি কোনো ব্যক্তি কুরআন মজীদের উপর হাত রেখে কোনো কাজ করার কসম করে তাহলে কি কসম হয়ে যাবে? ঐ কাজ না করতে পারলে কি কাফফারা দিতে হবে?

উত্তর

কুরআন মজীদের উপর হাত রেখে কসম করলে কসম হয়ে যায়। যে বিষয়ের কসম করা হয়েছে তা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ হলে কৃত কসম পূরণ করা জরুরি। কসম ভঙ্গ করলে কাফফারা দিতে হবে।

মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৭/৫৩৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১২; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৫৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৬; আননাহরুল ফায়েক ৩/৫৫; তাকরীরাতুর রাফেয়ী পৃ. ১৩; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৫; হেদায়া ২/৪৭৯, ৪৮১; মাবসূত সারাখসী ৮/১৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৬৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১২৭; রদ্দুল মুহতার ৩/৭২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একটি মসজিদের মুআযযিন। মসজিদ কমিটি আমাকে সকালে মক্তবে পড়ানোর...

প্রশ্ন

আমি একটি মসজিদের মুআযযিন। মসজিদ কমিটি আমাকে সকালে মক্তবে পড়ানোর দায়িত্বও দিয়েছে। আমার বেতন ধার্য করা হয়েছে চার হাজার টাকা, যা দিয়ে আমার সংসার কোনো মতে চলে যায়। একবার আমি বিপদে পড়ে মান্নত করি, বিপদ কেটে গেলে আমি এক মাস ইতেকাফ করব। আল্লাহ তাআলা আমার বিপদটি দূর করে দিয়েছেন। তাই মান্নত আদায়ের জন্য মসজিদে ইতেকাফে বসি। ইতেকাফের কারণে আমি মক্তবে পড়ানো বন্ধ করে দেই। কেননা, মক্তবটি মসজিদের বাহিরে অবস্থিত। কিন্তু মসজিদ কমিটি আমাকে বলল, প্রয়োজনে মসজিদে বসে মক্তব পড়ান। এক মাস পড়া বন্ধ রাখতে পারেন না। অন্যথায় আপনার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে। বেতন বন্ধ হলে বা কমে গেলে আমার সংসার চালানো মুশকিল হবে। তাই আমি মসজিদে বসে মক্তব পড়ানো শুরু করি। কোনো এক ব্যক্তি বলল, মসজিদে পড়িয়ে বিনিময় নেওয়া ঠিক নয়। আমার প্রশ্ন হল, উল্লেখিত কারণেও কি আমি মসজিদে পড়িয়ে পারিশ্রমিক নিতে পারব না? দয়া করে সঠিক বিষয়টি জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

উল্লেখিত ওযরের কারণে আপনি ইতেকাফের দিনগুলোতে মসজিদে পড়াতে পারবেন এবং আপনার নির্ধারিত বেতনও নিতে পারবেন।

হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৩৮৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৩২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

একবার আমার বোন খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন আমার মা...

প্রশ্ন

একবার আমার বোন খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন আমার মা শাহজালালের মাজারে একটি ছাগল মেনেছিল। বোন পরে সুস্থ হয়েছে। কিন্তু মার মান্নতটি এখনো পূর্ণ করা হয়নি। জানতে চাই, আমাদের এখন কী করা উচিত। বিলম্বের কারণে কোনো গুনাহ হচ্ছে কি না?

উত্তর

‘মান্নত’ একটি ইবাদত। নামায, রোযা, দুআ করা এগুলো যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যেই তাকে সন্তুষ্ট করার জন্যই করা জরুরি। তদ্রূপ ‘মান্নত’ও কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে তাঁর নামেই হতে হবে। কোনো মাজার, পীর বা কোনো সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বা তার সন্তুষ্ট কামনার্থে মান্নত করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। তাই মাজারের জন্য ছাগল মানা সম্পূর্ণ নাজায়েয হয়েছে। শিরকি হয়েছে। এ থেকে বিরত থাকা জরুরি। অতএব মাজারে বা অন্য কোনো মাজারে ছাগল দেওয়া জায়েয হবে না। উপরন্তু মাজারে দেওয়ার নিয়তের কারণে আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।

সুনানে আবু দাউদ ২/৪৬৯; রদ্দুল মুহতার ২/৪৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৬; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৬৪৩

প্রকাশ থাকে যে, কোনো মাখলুক, অলী-পীর বা মাজারবাসী কারো কোনো প্রয়োজন পূরণ করতে পারে না। কাউকে সুস্থতা দিতে পারে না। আরোগ্য দান করা, মসীবত দূর করা এগুলো কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলারই বৈশিষ্ট্য। কোনো মাখলুকের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্য আছে মনে করা শিরক। মাজারে মান্নত করলে মাজারওয়ালা খুশি হবেন, অসুখ ভালো হয়ে যাবে এমন ধরাণা সম্পূর্ণ শিরক। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, (তরজমা) আল্লাহ যদি তোমাদের উপর কোনো কষ্ট আরোপ করতে চান তাহলে তিনি ব্যতীত তা খণ্ডানোর মতো কেউ নেই। আর যদি তিনি কোনো কল্যাণ দিতে চান তাহলে তাঁর অনুগ্রহ রহিত করার মতো কেউ নেই। তিনি স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন । তিনিই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।-সূরা ইউনুস : ১০৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩২৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমরা ওয়াযে শুনে থাকি, নবীজী একবার আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়ের প্রতি...

প্রশ্ন

আমরা ওয়াযে শুনে থাকি, নবীজী একবার আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ করলে হযরত আবু বকর রা. নিজের সমুদয় সম্পদ পেশ করেছিলেন। আর হযরত ওমর রা. তার সম্পদের অর্ধেক পেশ করেছিলেন। এই কথাটি সহীহ হাদীসে আছে কি না? থাকলে সেই প্রসঙ্গটি কী ছিল? জানালে খুশি হব।

উত্তর

হ্যাঁ, এটি সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। পূর্ণ হাদীসটি এই, ওমর রা. বলেন, নবীজী একদিন আমাদের সদকার আদেশ দিলেন। সে সময় আমার সম্পদের পরিমাণও ভালো ছিল। আমি মনে মনে বললাম, আজ আমি ছওয়াবের কাজে আবু বকরের চেয়ে অগ্রগামী হতে পারব। অতএব আমি আমার অর্ধেক সম্পদ নিয়ে এলাম। নবীজী আমাকে বললেন, তোমার পরিবার-পরিজনের জন্য কী রেখেছ? আমি বললাম, এর সমপরিমাণ। এরপর বলেন, হযরত আবু বকর তাঁর সমুদয় সম্পদ নিয়ে হাযির হলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, পরিবারের জন্য কী রেখে এসেছ? তিনি বললেন, আমি তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে রেখে এসেছি। হযরত ওমর রা. বলেন, আমি বললাম, খোদার কসম! আমি কখনো তাঁকে অতিক্রম করতে পারব না।

ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি সহীহ-হাসান পর্যায়ের।-জামে তিরমিযী হাদীস ৩৯২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৬৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

দুই বছর পূর্বে চাচাত ভাইদের সাথে ঝগড়া হওয়ায় আমি কুরআন...

প্রশ্ন

দুই বছর পূর্বে চাচাত ভাইদের সাথে ঝগড়া হওয়ায় আমি কুরআন মজীদ হাতে নিয়ে বলেছিলাম, কুরআন মজীদের কসম, আমি চাচাত ভাইদের বাড়িতে আর যাব না। এখন তাদের সাথে আমার ঝগড়া মিটে গেছে।

জানতে চাই, কুরআন মজীদের নামে কসম করলে তা কার্যকর হয় কি না এবং আমি তাদের বাড়িতে গেলে আমার কসম ভঙ্গ হবে কি না?

উত্তর

জ্বী, কুরআন মজীদের কসম করলে কসম সংঘটিত হয়ে যায়। তাই আপনি চাচাত ভাইদের বাড়ি গেলে কসম ভেঙ্গে যাবে এবং কাফফারা আদায় করা ফরয হবে।

কসমের কাফফারা হল, দশ জন মিসকীনকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানো। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া কাপড় দেওয়া। আর তা সম্ভব না হলে এক নাগাড়ে তিন দিন রোযা রাখা।

উল্লেখ্য, কসম একমাত্র আল্লাহ তাআলার নামেই করা যায়। আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত অন্য কোনো জিনিসের কসম করা নাজায়েয। এমনকি কুরআন মজীদের কসম করাও নিষিদ্ধ।

বাদায়েউস সানায়ে ৩/৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২২৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমাদের এখানে প্রতি বছর জলসা হয়। এক বক্তা বললেন, হাদীসে...

প্রশ্ন

আমাদের এখানে প্রতি বছর জলসা হয়। এক বক্তা বললেন, হাদীসে আছে, হযরত সুলায়মান আ.-এর আংটিতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলূল্লাহ লেখা ছিল। একথার দলীল জানতে চাই। কেউ কেউ বিষয়টি মানতে চায় না। হাদীসটি কোন কিতাবে আছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কথাটি ভিত্তিহীন। হাদীস বিশারদগণ এ সম্পর্কিত বর্ণনাকে মিথ্যা ও প্রক্ষিপ্ত বলেছেন।

আলকামিল ৪/৪৭; কিতাবুল মাজরূহীন ১/৩৬৪; আল মাওযূআত ইবনুল জাওযী ১/১৪৩; আললাআলিল মাসনূআ ১/১৭১; মাজমাউয যাওয়াইদ ৫/২৭১ হা.: ৮৭২৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৫৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি গত বছর ভীষণ অসুস্থ ছিলাম। তখন আমি মান্নত করেছিলাম...

প্রশ্ন

আমি গত বছর ভীষণ অসুস্থ ছিলাম। তখন আমি মান্নত করেছিলাম যে, যদি আমি সুস্থ হই তবে গরীব-দুঃখীকে একটি ছাগল ছদকা করব। সে অনুযায়ী গত সপ্তাহে আমাদের এলাকার সেলিম ফকিরকে একটি এক বছর বয়সী ছাগল ছদকা করি। সে তা নিজের কাছে রেখে বড় করার নিয়ত করে। কিন্তু ঘটনাক্রমে গত রাতে তার বাড়ি থেকে ছাগলটিকে শিয়াল খেয়ে ফেলে। এখন জানতে চাই, আমার মান্নত পূর্ণ হয়েছে কি না? আমার উপর ছাগল যবাই করে গোশত করে দেওয়া জরুরি ছিল কি? এলাকার কেউ কেউ এমন মন্তব্য করেছেন। বিষয়টি বুঝিয়ে বলবেন।

উত্তর

ওই গরীব ব্যক্তিকে ছাগলটি দেওয়ার দ্বারাই আপনার মান্নত পূর্ণ হয়ে গেছে। তা যবাই করে গোশত করে দেওয়া আপনার উপর জরুরি ছিল না। সুতরাং তাকে দেওয়ার পর শিয়াল নিয়ে যাওয়ার কারণে আপনার মান্নত আদায়ে কোনো ত্রুটি আসেনি।

-আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫১; আননাহরুল ফায়েক ৩/৬২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৪০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৫৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার দাদা আমার অসুস্থতার সময় মান্নত করেছিলেন যে, নাতি ভালো...

প্রশ্ন

আমার দাদা আমার অসুস্থতার সময় মান্নত করেছিলেন যে, নাতি ভালো হলে মসজিদের মুসল্লীদেরকে মিষ্টি খাওয়াব।

আল্লাহর রহমতে আমি সুস্থ হয়েছি। এখন আমার দাদার ওই মান্নত কি পূরণ করা জরুরি? জানতে চাই, এ মসজিদের সর্বস্তরের মুসল্লীগণ তা খেতে পারবে কি? নাকি শুধু গরীব শ্রেণীর লোকজন খেতে পারবে? বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ওইভাবে বলার দ্বারা গরীব মুসল্লীদের অংশ পরিমাণ মান্নত হয়েছে। তাই তা পূর্ণ করা জরুরি। আর মসজিদের সর্বস্তরের মুসল্লীদেরকে দেওয়া হলে ধনী-গরীব সকলেই ওই মিষ্টি খেতে পারবে। কারণ এক্ষেত্রে ধনীদের অংশ হাদিয়া গণ্য হবে। আর গরীবদের অংশ মান্নত ধর্তব্য হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৭; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/৫৫৯-৫৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৪১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একবার খুব জটিল রোগে আক্রান্ত হলাম। তো অসুস্থ অবস্থায়...

প্রশ্ন

আমি একবার খুব জটিল রোগে আক্রান্ত হলাম। তো অসুস্থ অবস্থায় মান্নত করলাম, আল্লাহ তাআলা যদি আমাকে সুস্থতা দান করেন তাহলে আমি হজ্ব করব। তখন আমার আর্থিক অবস্থায় এমন ছিল যে, আমার উপর হজ্ব ফরয। প্রশ্ন হল, আমার উপর আগে থেকেই হজ্ব ফরয হয়ে আছে। এখন যদি আমি হজ্ব করি তাহলে কোনটি হবে? আমার ফরয হজ্ব এবং মান্নতের হজ্ব উভয়টিই কি আদায় হবে?

উত্তর

আপনি যদি নিজের ফরয হজ্ব ও মান্নতের হজ্ব উভয়টির নিয়তে হজ্ব আদায় করেন তাহলে এক হজ্ব দ্বারাই দুটিই আদায় হয়ে যাবে।

-মানাসিকে মুল্লা আলী পৃ. ৪৬৭-৪৬৮; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ৩৪৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৯৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তির ছেলে হারিয়ে গিয়েছিল। তখন সে মান্নত...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তির ছেলে হারিয়ে গিয়েছিল। তখন সে মান্নত করল যে, যদি ছেলে পাওয়া যায় তাহলে আজমীর শরীফ যাবে ও মাযারে শিরনি দিবে। তার এই মান্নত সহীহ হয়েছে কি না?

উত্তর

না, মান্নত হয়নি; বরং এমন নিয়ত করা গুনাহ হয়েছে। কারণ কোনো উদ্দেশ্য হাসিল হলে মাযারে যাওয়ার নিয়ত করা, সেখানে শিরনি দেওয়া ইত্যাদি শিরক ও কঠোর গুনাহর কাজ। মান্নত শুধু আল্লাহ তাআলার নামেই করা যায়। কোনো মাযার বা পীরের নামে মান্নত করা শিরক। তাই কেউ এমন নিয়ত করলেও তা পালন করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। উপরন্তু উক্ত নিয়তের কারণে তওবা-ইস্তেগফার করা জরুরি।

-সহীহ বুখারী ২/৯৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৮০
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

বিশজন ফকীরকে খানা খাওয়ানোর মান্নত করে দুজনকে দশ বেলা খাওয়ানো ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার ছেলে অসুস্থ থাকা অবস্থায় আমার মা মান্নত করেছিল, আমার ছেলে সুস্থ হলে বিশজন ফকিরকে দাওয়াত করে খাওয়াবে। আল্লাহ আমার ছেলেকে সুস্থ করে দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল, বিশজন ফকিরকেই খাওয়াতে হবে? যদি দুজন কে দশবেলা অথবা পাচজনকে চার বেলা খাওয়ায় তাহলে মান্নত আদায় হবে কি না?
উত্তর
আপনার মা যেহেতু বিশজন ফকিরকে খাওয়ানোর মান্নত করেছে, তাই বিশজন ফকিরকে এক বেলা খাওয়াতে হবে। অবশ্য দুজনকে দশ বেলা অথবা পাঁচজনকে চার বেলা খাওয়ালেও মান্নত আদায় হয়ে যাবে।
- বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৩৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৭৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী:জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৯৪
তারিখ: ২৭-জুন-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

কসমের কাফফারার পুর্ন টাকা একদিনে একজনকে দিয়ে দেওয়া ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার একটি কসমের কাফ্ফারা রয়েছে ৷ আমি দশজন মিসকীনকে খানা না খায়িয়ে আমার নিকটস্থ একজন ব্যক্তি যে খুব বেশি দরিদ্র তাকে পুর্ন দশজনের খাবারের টাকা দিয়ে দিতে চাই ৷ এটা কি বৈধ হবে? এতে কি আমার কাফফারা আদায় হবে? জানালে খুশি হব ৷
উত্তর
কসমের কাফ্ফারার টাকা একত্রে এক ব্যক্তিকে দিয়ে দিলে তা আদায় হবে না ৷ তবে পুরো টাকা একজনকে দিতে চাইলে প্রত্যেকের টাকা ভিন্নভাবে দশ দিনে দিতে হবে। একদিনেই কাফফারার পুরো টাকা একজনকে দিয়ে দিলে তা একদিনের বলে বিবেচিত হবে। এবং বাকি নয়দিনের টাকা ভিন্নভাবে পুনরায় আদায় করতে হবে। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কাফফারার পুরো টাকা একজনকে দিলে দশ দিনে দিতে হবে। আর দশজনকে দিলে একদিনেই দেওয়া যাবে ৷
- আলমাসূত, সারাখসী ৮/১৫৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৭২৫ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৫৩
তারিখ: ২১-মে-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

মাজারে বা পীর মুর্শীদের নামে মান্নত করা ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার বড় আপু কোন এক কারণে কিছুদিন আগে মান্নত করেছিল যে, তার উদ্দেশ্যে পুরন হলে মাজারে একটি ছাগল দিবে ৷ তাই জানার বিষয় হলো, তার উক্ত মান্নত পুরনের বিধান কি? জানালে উপকৃত হবো ৷
উত্তর
মাজারে কিংবা মৃত বা জীবীত পীর মুর্শীদ বা আল্লাহর ওলী কিংবা নবী রাসূল যেই হোক না কেন একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো নামে মান্নত করা জায়েয নেই ৷ সম্পুর্ন হারাম। এবং সুষ্পষ্ট শিরকের শামিল।
অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বোনের মান্নত সহিহ হয়নি বিধায় তা পালন করতে হবে না ৷
-রদ্দুল মুহতার-২/৪৩৯ ৷ মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী: জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৯৮
তারিখ: ৮-ফেব্রুয়ারি-২০১৭
বিষয়: কসম-মান্নত

গরুর পেশাব পাক না নাপাক !

প্রশ্ন
একজন আহলে হাদীস আলেম আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ মাসআলার জবাব দিতে গিয়ে বলেছেন গরুর " প্রস্রাব "পাক "এবং গরুর প্রস্রাব সহ নামাজ পড়লে নামাজ হবে। এ বিষয়ে শরীয়তের বিধান কি? রেফারেন্স দিয়ে জানালে আমি এবং সবাই খুবই উপকৃত হতাম ৷ শুকরিয়া।
উত্তর
যে সকল প্রাণীর গোশত খাওয়া জায়েজ সে সকল প্রাণীর পেশাব পাক না নাপাক এ বিষয়ে হাদীসের মাঝে ভিন্নতা থাকার কারণে ইমামদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে।
তবে এ বিষয়ে গ্রহনযুগ্য ফতওয়া ও শক্তিশালী মত হল এসকল প্রানীর পেশাব পাক নয়, নাপাক।
এর স্বপক্ষের দলিল হল-
হযরত আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, কবরের অধিকাংশ আযাবই পেশাব এর কারণে হয়ে থাকে।
মুস্তাদরাকে হাকেম হাদীস নং ৬৫৩ ৷
হযরত আবু উমামা রা.থেকে বর্ণিত তিনি রাসূল সাঃ থেকে ইরশাদ করেছেন, “তোমরা পেশাব থেকে বেচে থাক। কেননা কবরে সর্বপ্রথম এ বিষয়ে হিসাব নেওয়া হবে।”
মাজমাউয যাওয়ায়েদ ১/২০৯ হাদীস নং ১০৩৪৷
অন্য আরেকটি বর্ননায় এসেছে হযরত আবু হুরায়রা রা. রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে ইরশাদ করেছেন, তোমরা পেশাব থেকে পবিত্র থাক বা বেচে থাক। কেননা কবরের অধিকাংশ আযাবই পেশাব থেকে না বাচার কারণে হবে। সহীহ ইবনে খুযায়মা ৷
এসব হাদীসে যে পেশাবের কথা বলা হয়েছে তা কোন নির্দিষ্ট প্রানীর কথা বলা হয়নি বরং ব্যাপক অর্থে এসেছে। চাই মানুষ হোক বা মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণী হোক , গোশত খাওয়া বৈধ এমন প্রাণীর পেশাব হোক বা গোশত খাওয়া বৈধ নয় এমন প্রাণীর পেশাব হোক সবই এই নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভোভূক্ত।
হযরত ইবনে উমর রা.থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাঃ জাল্লালা প্রাণীর গোশত ও দুধ খেতে নিষেধ করেছেন।
তিরমীযী হাদীস নং ১৮২৪
জাল্লালা হলো, যে সকল প্রাণী নাপাকী, বিষ্ঠা ইত্যাদি খায়। সুতরাং এ হাদীসটি গোশত খাওয়া বৈধ এমন প্রাণীর বর্জ্য নাপাক হওয়া প্রমাণিত হয়। কেননা শরীয়াত জাল্লালা প্রাণীর গোশত ও দুধ খেতে নিষেধ করেছে। আর জাল্লালা হলো যে সকল উট বকরী ও অন্যান্য প্রাণী যারা বিষ্ঠা খায়।
যেহেতু উট, বকরী বিষ্ঠা খেলে তাদের দুধ ও ঘাম দুর্গন্ধ হয়ে যায়। যদি এ সকল বর্জ্য ও বিষ্ঠা পাক হয় তাহলে এ সকল প্রাণীর গোশত ও দুধ খেতে নিষেধ করা হবে
কেন? অতএব বুঝা গেল এ সকল প্রাণীর বর্জ্য নাপাক। এবং গোশত খাওয়া বৈধ এমন প্রানীর পেশাবও নাপাক, গরুর পেশাবও নাপাক ।
ইলাউস সুনান ১/৪১২-৪১৭৷ আদদুররুল মুখতার ১/ ২৯৬ ৷
এছাড়া যুক্তিও গরুর পেশাব নাপাক হওয়ার দাবী রাখে।
কারন মানুষের গোশত পাক। কিন্তু মানুষের রক্ত নাপাক, এজন্যই মানুষের পেশাবও নাপাক। ঠিক তেমনি গরুর গোস্ত সর্বসম্মতিক্রমে পাক ৷ কিন্তু তার রক্ত নাপাক৷ সুতরাং তার পেশাবও নাপাক হবে। কারণ তার রক্ত নাপাক। যেমনভাবে মানুষের রক্ত নাপাক তাই তার পেশাবও নাপাক।
আপনি তথাকথিত আহলে হাদীস আলেম আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ সাহেবের কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে, তিনি বলেন গরুর পেশাব পাক ৷ আপনি তাকে আদবের সাথে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, গরুর পেশাব পাক এ মর্মে তিনি কোনধরনের কিয়াসের আশ্রয় ছাড়া কোন সহীহ হাদীস দেখাতে পারবেন কি? তিনি তো শরীয়তে কিয়াস মানতে চান না বরং কিয়াস নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ ও উপহাস করেন।
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৭৯
তারিখ: ২৮--২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করলে সেই বউ তিন তালাক" বললে করনীয় ৷

প্রশ্ন
হুজুর, আমার একটি মেয়ের সাথে অনেকদিন যাবত সম্পর্ক ছিল৷ মেয়েটি আমাকে কথা দিয়েছিল সে আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবে না ৷ আমিও বলেছিলাম আমি তাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবো না ৷ এক পর্যায়ে একথাও বলে ফেলি, আমি যদি তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করি সে তিন তালাক ৷ এর ছ'মাস পর মেয়েটির বিয়ে হয়ে যায় অন্য জায়গায় ৷ তার পরিবার তাকে অন্য জায়গায় জোর করে বিয়ে দেয়৷ এখন আমার জানার বিষয় হলো আমি যে বলেছি তাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করলে সে তিন তালাক, এখন কি আমি অন্য কাউকে বিয়ে করলে তিন তালাক হয়ে যাবে? এখন আমার করনীয় কি? জানালে খুব উপকৃত হবো ৷
উত্তর
প্রশ্নে বর্নিত সুরতে আপনি অন্য মেয়েকে বিয়ে করার পর তিন তালাকের সম্বন্ধ করার কারনে অন্য মেয়েকে বিয়ে করলেই স্ত্রী তিন তালাক হয়ে যাবে।
তা থেকে বাঁচার একটি পদ্ধতি রয়েছে , তা হলো আপনাকে কিছু না বলে তৃতীয় কোন ব্যক্তি পছন্দমত পাত্রীর কাছে গিয়ে দু'জন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম শাক্ষীর সামনে বলবে যে, “আমি এত টাকা মোহরের বিনিময়ে অমুক ব্যক্তির সাথে বিবাহের প্রস্তাব দিলাম”। তখন মেয়ে উক্ত প্রস্তাব গ্রহণ করবে। অতপর বিয়ে সম্পাদনকারী তৃতীয় ব্যক্তি আপনার কাছে এসে বলবে যে, আমি তোমার বিবাহ ওমুক মেয়ের সাথে এত টাকা মোহরের বিনিময়ে দিয়েছি। সুতরাং তুমি কিছু মোহর প্রদান কর। তখন আপনি কোন কথা বলে কিছু মোহর প্রদান করবেন। যা তৃতীয় ব্যক্তিটি মেয়েকে প্রদান করবে, এতে করে বিবাহ পূর্ণ হয়ে যাবে। সেই সাথে কসমও ভঙ্গ হবে না।
রদ্দুল মুহতার ৫/ ৬৭২; মাজমাউল আনহুর ২/৫৯; ফতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/৪১৯; ফাতাওয়া মাহমূদিয়া-১৯/১৯৭ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৭৬
তারিখ: ২৩--২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

প্রতি শুক্রবার রোজা রাখার মান্নত করে পরবর্তিতে কোন কারনে না রাখতে পারলে করনীয় ৷

প্রশ্ন
আমি বহু দিন যাবৎ বিয়ে করার জন্য মেয়ে খুজছিলাম, কিন্তু পছন্দমত পাচ্ছিলাম না ৷ এক পর্যায়ে একটি মেয়ে কে পছন্দ হয় ৷ কিন্তু মেয়ে পক্ষ বিয়ে দিতে তেমন আগ্রহী নয় ৷ আমারো মেয়েটি কে অনেক পছন্দ হয় কিন্তু মেয়ে পক্ষের অনাগ্রহের কারনে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল ৷ তখন আমি এই বলে মান্নত করি যে, যদি এই মেয়েটার সঙ্গে আমার বিয়ে হয় তাহলে আমি প্রতি শুক্রবার রোযা রাখবো। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ঐ মেয়েটির সঙ্গে বিয়ে আমার হয়ে যায়। তাই আমি প্রত্যেক শুক্রবার রোযা রেখে যাচ্ছি। কিন্তু বর্তমানে আমার বিভিন্ন ঝামেলা অনেক বেড়ে গেছে। তাই মাঝেমধ্যে শুক্রবার রোযা রাখা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। আপনার নিকট আমার জানার বিষয় হলো, রোযা না রাখতে পারলে আমার করণীয় কী? এবং ছুটে যাওয়া রোজার হুকুম কী? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হবো।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত সুরতে আপনার মান্নত সহীহ হওয়া কারণে আপনার উপর প্রতি শুক্রবার রোযা রাখা ওয়াজিব হয়ে গেছে । কোনো কারণে শুক্রবারে রোযা রাখা সম্ভব না হলে পরবর্তীতে অন্য কোনোদিন তা কাযা করে নিতে হবে। আর ছুটে যাওয়া রোজাগুলোও কাযা করতে হবে। তবে ভবিষ্যতে বার্ধক্য বা জটিল কোনো অসুস্থতার কারণে রোযা রাখা সম্ভব না হলে এবং পরবর্তীতে কাযা করার সামর্থ্যও ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে তখন প্রত্যেক রোযার জন্য একটি করে ফিদয়া দিতে হবে। ফিদয়া হলো, একজন দরিদ্রকে তৃপ্তি সহকারে দুইবেলা খাওয়ানো বা এর মূল্য দিয়ে দেওয়া।
খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৭৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৫৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৭৪
তারিখ: ২৩--২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

কুরআন শরীফের নামে কসম খাওয়া ৷

প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি একবার কুরআনের কসম খেয়ে বলল যে, আমি ... একাজটা অবশ্যই করবো। কিন্তু পরে সে আর ঐ কাজটা করতে পারেনি। জানার বিষয় হলো,
তার ঐ কথার কারণে কি কসম হয়েছিল? এখন তার করণীয় কি?
উত্তর
জ্বী হাঁ, প্রশ্নে বর্নিত সূরতে জৈনক ব্যক্তির কসম সংঘটিত হয়েছে। পরবর্তীতে ঐ কাজটি না করার কারণে তার কসমটি ভঙ্গ হয়েছে। এখন তার জন্য আবশ্যক হলো, কসম ভঙ্গের কাফ্ফারা আদায় করা। কসমের কাফ্ফারা হলো, দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুইবেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানো বা এর মূল্য দিয়ে দেওয়া। অথবা দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে পোশাক দেওয়া। আর যদি এর কোনেটির সামর্থ্য না রাখে তাহলে সে লাগাতার তিনটি রোযা রাখবে।
উল্লেখ্য যে, আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত অন্য কোনো কিছুর কসম করা নিষেধ। তাই কেউ কসম করতে চাইলে আল্লাহর নামেই কসম করবে ।
সুরা মায়েদা : ৮৯; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৫৬; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ২/৫৩৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬০৮
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

গরু-ছাগল সদকার মান্নত করার পর তার মূল্য পরিশোধ করা৷

প্রশ্ন
কেউ যদি এই বলে মান্নত করে যে, যদি সে সুস্থ্য হয়, তাহলে উক্ত গরু বা ছাগলটি দান করে দিবে। এখন সুস্থ্য হওয়ার পর তার বদলে যদি মূল্য দান করে, তাহলে তার মান্নত পূর্ণ হবে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, উক্ত ছাগলের মূল্য পরিশোধ করেলেও তার মান্নত পূর্ণ হবে। এবং ছাগলও সদকা করতে পারে। এমনি
দলিলঃ
ফতওয়ায়ে খানিয়া আলা হামেশে হিন্দিয়া ১/৬৯; তাতারখানিয়া ৫/৪১৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫২৮
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

মাযারে যাওয়া বা মাযারে শিররি দেওয়ার মান্নত৷

প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তির ছেলে হারিয়ে গিয়েছিল। তখন সে মান্নত করল যে, যদি ছেলে পাওয়া যায় তাহলে আজমীর শরীফ যাবে ও মাযারে শিরনি দিবে। তার এই মান্নত সহীহ হয়েছে কি
না?
উত্তর
না, মান্নত হয়নি; বরং এমন নিয়ত করা গুনাহ হয়েছে। কারণ কোনো উদ্দেশ্য হাসিল হলে মাযারে যাওয়ার নিয়ত করা, সেখানে শিরনি দেওয়া ইত্যাদি শিরক ও কঠোর গুনাহর কাজ। মান্নত শুধু আল্লাহ তাআলার নামেই করা যায়। কোনো মাযার বা পীরের নামে মান্নত করা শিরক। তাই কেউ এমন নিয়ত করলেও তা পালন করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। উপরন্তু উক্ত নিয়তের কারণে তওবা- ইস্তেগফার করা জরুরি। -সহীহ বুখারী ২/৯৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৪০
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

এক দরিদ্র ব্যক্তির ছেলে অসুস্থ হলে সে মান্নত করে ,...

প্রশ্ন
এক দরিদ্র ব্যক্তির ছেলে অসুস্থ হলে সে মান্নত করে , ছেলে সুস্থ হলে গরিব-
মিসকিনদেরকে খাবার খাওয়াবে। কিছুদিন
আগে তার ছেলে সুস্থ হয়েছে।
জানার বিষয় হল , তার জন্য কতজন গরিব-
মিসকিনকে খাবার খাওয়াতে হবে? আর ঐ খাবার
কি তার ছেলেকে খাওয়াতে পারবে ?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির মান্নত পূরণের জন্য অন্তত দশজন মিসকিনকে খাবার খাওয়াতে হবে। তবে ঐ দশ জনের মাঝে ছেলেকে বা পরিবারের অন্য কোনো
সদস্যকে গণ্য করা যাবে না। উল্লেখ্য , মান্নত
আদায়ের জন্য মান্নতের খাবার ভিন্নভাবে রান্না
করা জরুরী নয়। একই রান্না থেকে ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা খেতে পারবে এবং দশজন মিসকিনকেও খাওয়াতে পারবে। আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৩, ৩৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪২; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৫; রদ্দুল মুহতার ২/৩৪৬৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪২৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক দরিদ্র মহিলা কসমের কাফফারা হিসাবে তিন দিন রোযা রাখে।...

প্রশ্ন
জনৈক দরিদ্র মহিলা কসমের কাফফারা হিসাবে তিন দিন রোযা রাখে। তৃতীয়
দিন রোযা অবস্থায় তার অপবিত্রতা শুরু
হয়। ফলে পবিত্র হওয়ার পর সে আরো
একদিন রোযা রাখে। জানতে চাই, তার
কসমের কাফফারা কি আদায় হয়েছে?
উত্তর
না, মহিলাটির কসমের কাফফারা আদায় হয়নি। কেননা রোযার মাধ্যমে কসমের কাফফারা আদায়ের জন্য তিন দিন লাগাতার রোযা রাখা শর্ত। মাঝে বিরতি হলে তা দ্বারা কাফফারার রোযা আদায় হয় না। মহিলাটি বাস্তবেই যদি দশজন মিসকীনকে দুই বেলা পেট ভরে খানা খাওয়ানোর অথবা তাদেরকে এক জোড়া করে বস্ত্র দান করার সামর্থ্য না রাখে তাহলে পুনরায় তাকে লাগাতার তিনটি রোযা রাখতে হবে। -সূরা মায়েদ : ৮৯; তাফসীরে রূহুল মাআনী ৭/১৪; কিতাবুল আছার ২/৬০০; কিতাবুল আছল ২/২৯৫; আলমাবসূত, সারাখসী ৮/১৫৫;
আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭২৭; আলমুহীতুল বুরহানী
৬/৩৭৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১৪২
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার চাচাত ভাই নাবালেগ বয়সে টেলিভিশন না দেখার কসম করেছিল।...

প্রশ্ন
আমার চাচাত ভাই নাবালেগ বয়সে টেলিভিশন না দেখার কসম করেছিল।
আবার নাবালেগ অবস্থায়ই টেলিভিশন দেখে ফেলে। এখন তার উপর কসমের
কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে কি না। জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
আপনার চাচাত ভাই যেহেতু নাবালেগ অবস্থায় কসম করেছে তাই তার উপর ঐ কসম
ভঙ্গের কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না। কিন্তু নাবালেগদের জন্যও নিজেদের
অঙ্গিকার পুরা করা কাম্য। বিশেষ কসম করুক বা না করুক গুনাহের কাজ থেকে তো
বেঁচে থাকা এমনিতেই জরুরী।
মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৯৪০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৪০৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫১
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১৪১
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি দীর্ঘদিন যাবৎ চাকুরী তালাশ করছিলাম। কিন্তু কোথাও মনমত চাকুরী...

প্রশ্ন
আমি দীর্ঘদিন যাবৎ চাকুরী তালাশ করছিলাম। কিন্তু কোথাও মনমত চাকুরী
খুঁজে পাচ্ছিলাম না। একবার একটা ভাল চাকুরির ইন্টারভিউয়ে উত্তীর্ণ হই।
কিন্তু চাকুরী হবে কি না তা নিয়ে অনেকটা অনিশ্চয়তায় ভুগছিলাম। তখন
আমি এই বলে মান্নত করি যে, যদি আমার এই চাকুরিটা হয়ে যায় তাহলে আমি
প্রতি জুমার দিন রোযা রাখবো। ঘটনাক্রমে আমার ঐ চাকুরিটা হয়ে যায়।
তাই আমি প্রত্যেক জুমার দিন রোযা রেখে যাচ্ছি। কিন্তু বর্তমানে আমার
সাংসারিক ঝামেলা অনেক বেড়ে গেছে। তাই মাঝেমধ্যে জুমআর দিনে
রোযা রাখা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। হুযুরের নিকট আমার জানার বিষয়
হলো, রোযা না রাখতে পারলে আমার করণীয় কী? যে দিনগুরোর রোযা
ছুটেছে সেগুলোর জন্য কী করতে হবে? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হবো।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত মান্নতের কারণে আপনার উপর প্রতি জুমাবার রোযা রাখা ওয়াজিব।
কোনো কারণে জুমাবারে রোযা রাখা সম্ভব না হলে পরবর্তীতে অন্য কোনোদিন
তা কাযা করে নিতে হবে। আর বিগত যে কয়দিনের রোযা ছুটেছে সেগুলোও কাযা
করতে হবে। অবশ্য ভবিষ্যতে বার্ধক্য বা জটিল কোনো অসুস্থতার কারণে রোযা
রাখা সম্ভব না হলে এবং পরবর্তীতে কাযা করার সামর্থ্যও ফিরে পাওয়ার
সম্ভাবনা না থাকলে তখন প্রত্যেক রোযার জন্য একটি করে ফিদয়া দিতে হবে।
ফিদয়া হলো, একজন দরিদ্রকে তৃপ্তি সহকারে দুইবেলা খাওয়ানো বা এর মূল্য
দিয়ে দেওয়া।
আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৭৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৯; আদ্দুররুল
মুখতার ৩/৭৩৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১৪০
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একবার কুরআনের কসম খেয়ে বলি, আমি ... একাজটা অবশ্যই...

প্রশ্ন
আমি একবার কুরআনের কসম খেয়ে বলি, আমি ... একাজটা অবশ্যই করবো।
কিন্তু পরে আমি আর ঐ কাজটা করতে পারিনি। এখন জানার বিষয় হলো,
আমার ঐ কথার কারণে কি কসম হয়েছিল? এখন আমার করণীয় কি?
উত্তর
হাঁ, প্রশ্নোক্ত কথার কারণে আপনার কসম সংঘটিত হয়েছে। পরবর্তীতে ঐ কাজটি
না করার কারণে আপনার কসমটি ভঙ্গ হয়েছে। এখন আপনার কর্তব্য হলো, কসম
ভঙ্গের কাফ্ফারা আদায় করা। কসমের কাফ্ফারা হলো, দশজন দরিদ্র ব্যক্তিকে
দুইবেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানো বা এর মূল্য দিয়ে দেওয়া। অথবা দশজন
দরিদ্র ব্যক্তিকে এক জোড়া করে পোশাক দেওয়া। তবে কেউ যদি এর কোনেটির
সামর্থ্য না রাখে তাহলে সে লাগাতার তিনটি রোযা রাখবে।
সুরা মায়েদা :
৮৯; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৫৬;ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ২/৫৩, ২/৬১; আলবাহরুর রায়েক
৪/২৮৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৭২৬
প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত কোনো কিছুর কসম করা নিষেধ।
তাই কেউ কসম করতে চাইলে আল্লাহর নামেই কসম করা আবশ্যক।
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১৩৪
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

আমরা জানি, রমযানের রোযা ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃত ভেঙ্গে ফেললে কাফফারার...

প্রশ্ন
আমরা জানি, রমযানের রোযা ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃত ভেঙ্গে ফেললে কাফফারার
রোযা এক নাগাড়ে দু মাস রাখতে হয়।
মাঝখানে ছুটে গেলে তা আদায় হয় না।
এখন জানার বিষয় হল, দু’মাস রোযা রাখার
সময় মাঝখানে ঈদ বা আইয়ামে তাশরীক তথা
রোযার জন্য নিষিদ্ধ দিন যদি চলে আসে
এবং নিষেধ থাকার পরও রোযা রাখা হয় তাহলে কাফফারা আদায় হবে কি? এতে মাঝখানে
বিরতি হয় না। কারণ আমরা আরেকটা মাসআলা জানি যে, কেউ যদি নিষিদ্ধ দিনে রোযার মান্নত
করে তাহলে নিষেধাজ্ঞার পরও কেউ যদি
রোযা রাখে তাহলে মান্নত পুরো হয়ে
যায়। যদিও তাতে গুনাহ হয়। সে হিসেবে
কাফফারাও আদায় হয়ে যাবে কি না?
সঠিক মাসআলাটি জানানোর অনুরোধ রইল।
উত্তর
কাফফারার রোযা এমন সময় শুরু করতে হবে যেন তার মধ্যে শাওয়ালের ১ তারিখ অথবা যিলহজ্বের ১০ থেকে ১৩ তারিখ-এ দিনগুলো না আসে। কাফফারা আদায়ের দু’মাসের ভেতর উক্ত নিষিদ্ধ দিন পড়লে সে দিনগুলোতে রোযা রাখলেও কাফফারা আদায় হবে না; বরং এক্ষেত্রে পুনরায় নতুন করে লাগাতার দু মাস রোযা রাখতে হবে। উল্লেখ্য যে, নিষিদ্ধ দিনসমূহে রোযা
রাখার মান্নত সংক্রান্ত মাসআলার সাথে কাফফারার
রোযার কোনো মিল নেই। উভয়ের মধ্যে মৌলিকভাবে পার্থক্য রয়েছে।
এজন্য দুটোর হুকুমও ভিন্ন। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস :
১১৫১৯;
বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৭৪; আলবাহরুর
রায়েক
৪/১০৫, ২৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫১২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৪, ৩/৪৭৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২১৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৩৪
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

এক ব্যক্তি কসমের কাফফারা আদায় করবে। সে খাবারের মূল্য দিয়ে...

প্রশ্ন
এক ব্যক্তি কসমের কাফফারা আদায় করবে। সে
খাবারের মূল্য দিয়ে কাফফারা আদায় করতে চায়। তার নিকটস্থ একজন গরীব ব্যক্তি আছে। তার ইচ্ছা, এই
কাফফারার টাকাগুলো দশজনকে না দিয়ে শুধু ঐ গরীব
ব্যক্তিকে দিয়ে দিবে। যদি এমনটি করে তবে কি তার
কাফফারা আদায় হবে?
উত্তর
কসমের কাফফারার নিয়ম হল, দশজন মিসকিনের
প্রত্যেককে পূর্ণ তৃপ্তি সহকারে দু’ বেলা খানা খাওয়ানো
অথবা প্রত্যেককে এর মূল্য দেওয়া। কাফফারার পুরো টাকা
একত্রে এক ব্যক্তিকে দিয়ে দিলে তা আদায় হবে না; বরং
পুরো টাকা একজনকে দিতে চাইলে প্রত্যেকের টাকা
ভিন্নভাবে দশ দিনে দিতে হবে। একদিনেই কাফফারার
পুরো টাকা একজনকে দিয়ে দিলে তা একদিনের বলে
বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে বাকি নয়দিনের টাকা ভিন্নভাবে
আবার আদায় করতে হবে। মোটকথা, পুরো টাকা একজনকে দিলে দশ দিনে দিতে হবে। আর দশজনকে দিলে একদিনেই দেওয়া যাবে।
-কিতাবুল আছল ২/২৪৭; আলমাসূত, সারাখসী ৮/১৫৪; রদ্দুল
মুহতার ৩/৭২৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭০২
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার বড় ভাই কিছুদিন আগে একটি সমস্যায় পড়ে মান্নত করেছিলেন,...

প্রশ্ন
আমার বড় ভাই কিছুদিন আগে একটি সমস্যায় পড়ে মান্নত করেছিলেন, যদি
আল্লাহ আমার সমস্যা দূর করে দেন তাহলে আমি চিল্লায় বের হব। ভাইয়ার ঐ
সমস্যাটা আল্লাহর রহমতে চলে গেছে। এখন জানতে চাচ্ছি, ভাইয়ার জন্য কি
চল্লিশ দিনের চিল্লায় বের হওয়া আবশ্যক? বের না হলে কি গুনাহ হবে?
উত্তর
চিল্লায় বের হওয়ার মান্নত করলে শরীয়তের দৃষ্টিতে তা মান্নত হয় না। অতএব
আপনার ভাইয়ের জন্য চিল্লায় বের হওয়া আবশ্যক নয়। তবে সমস্যা না থাকলে এমন
ইচ্ছা পূরণ করাই উচিত।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৮; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭০১
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: কসম-মান্নত

চাকরি পাওয়ার জন্য কি মান্নত করা জায়েয আছে? কেউ যদি...

প্রশ্ন
চাকরি পাওয়ার জন্য কি মান্নত করা জায়েয আছে? কেউ যদি চাকরি পাওয়ার/ভবিষ্যতে
কোনো কিছু পাওয়ার আশায় বলে, আমি পঞ্চাশ হাজার অথবা এক লক্ষ টাকা মসজিদ/এতিমখানা
অথবা কোনো গরীব মানুষকে দেব। তার এই কথা কি শরীয়তসম্মত হবে?
উত্তর
কোনো বৈধ বস্তু অর্জনের আশায় মান্নত করা জায়েয আছে। তাই চাকরি পাওয়ার আশায় মান্নত
করা যাবে এবং চাকরি পেলে তা পূর্ণ করতে হবে।
তবে মান্নত সহীহ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। সেসব শর্তের আলোকে
মসজিদের জন্য মান্নত করা সহীহ নয়। তাই মসজিদের জন্য মান্নত করলে তা ওয়াজিব হয় না।
তবে মান্নত না হলেও এ ধরনের ওয়াদা পূর্ণ করা উত্তম।
উল্লেখ্য যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে মান্নতের চেয়ে নগদ দান-সদকার ফযীলত ও গুরুত্ব
অনেক বেশি। সদকা দ্বারা আল্লাহ অধিক সন্তুষ্ট হন। আর মান্নত শরীয়তসম্মত। তবে সদকার
চেয়ে উত্তম নয়। হাদীসে আছে, মান্নত দ্বারা কৃপণের মাল বের হয়। অর্থাৎ মান্নত কৃপণ
লোকের কাজ।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, মান্নত এমন কোনো কিছুকে আদম সন্তানের নিকটবর্তী করে দিতে পারে
না যা আল্লাহ তাআলা তার জন্য তাকদীরে নির্দিষ্ট করেননি। তবে মান্নত কখনো
তাকদীরের সাথে মিলে যায়। এর মাধ্যমে কৃপণের নিকট হতে ঐ সম্পদ বের করে নিয়ে
আসা হয় যা কৃপণ (এমনিতে) বের করতে চায় না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬৪০
অতএব কাক্সিক্ষত বস্তু অর্জনের জন্য মানত করা জায়েয। তবে মানত করা ছাড়া সামর্থ্য
অনুযায়ী পূর্বেই দান-খয়রাত করা অধিক উত্তম কাজ।
-সূরা হজ্ব ২৯; আলইখতিয়ার ৩/৪৪৫; আলমুগনী ১৩/৬২১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪১, ৪/২২৮; মিনহাতুল খালিক ৪/২৯৬
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৪৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কসম-মান্নত

আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তির ছেলে হারিয়ে গিয়েছিল। তখন সে মান্নত...

প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তির ছেলে হারিয়ে গিয়েছিল। তখন সে মান্নত করল যে, যদি ছেলে পাওয়া যায় তাহলে আজমীর শরীফ যাবে ও মাযারে শিরনি দিবে। তার এই মান্নত সহীহ হয়েছে কি
না?
উত্তর
না, মান্নত হয়নি; বরং এমন নিয়ত করা গুনাহ হয়েছে। কারণ কোনো উদ্দেশ্য হাসিল হলে মাযারে যাওয়ার নিয়ত করা, সেখানে শিরনি দেওয়া ইত্যাদি শিরক ও কঠোর গুনাহর কাজ। মান্নত শুধু আল্লাহ তাআলার নামেই করা যায়। কোনো মাযার বা পীরের নামে মান্নত করা শিরক। তাই কেউ এমন নিয়ত করলেও তা পালন করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। উপরন্তু উক্ত নিয়তের কারণে তওবা-ইস্তেগফার করা
জরুরি।
-সহীহ বুখারী ২/৯৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৯
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২২০
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একটি বিষয়ে কসম করেছিলাম। কিন্তু কোনো কারণে তা রক্ষা...

প্রশ্ন
আমি একটি বিষয়ে কসম করেছিলাম। কিন্তু কোনো কারণে তা রক্ষা করতে পারিনি। এখন কাফফারা আদায় করতে চাই। আমি জানি, কসমের কাফফারা হল ১০জন মিসকীনকে দু বেলা খানা খাওয়ানো। আমি জানতে চাই, আমার সুবিধার জন্য যদি একজন ফকীরকে ১০ দিন দু বেলা খানা খাইয়ে দেই তাহলে এতে আমার কাফফারা আদায় হবে কি না।
উত্তর
হ্যাঁ, একজন মিসকীনকে দশদিন দু বেলা তৃপ্তির সাথে খানা খাওয়ালেও আপনার কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৬৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৪৩০
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩০২৬
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৫
বিষয়: কসম-মান্নত

আমরা জানি, রমযানের রোযা ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃত ভেঙ্গে ফেললে কাফফারার...

প্রশ্ন
আমরা জানি, রমযানের রোযা ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃত ভেঙ্গে ফেললে কাফফারার রোযা এক নাগাড়ে দু মাস রাখতে হয়। মাঝখানে ছুটে গেলে তা আদায় হয় না। এখন জানার বিষয় হল, দু’মাস রোযা রাখার সময় মাঝখানে ঈদ বা আইয়ামে তাশরীক তথা রোযার জন্য নিষিদ্ধ দিন যদি চলে আসে
এবং নিষেধ থাকার পরও রোযা রাখা হয় তাহলে কাফফারা আদায় হবে কি? এতে মাঝখানে
বিরতি হয় না। কারণ আমরা আরেকটা মাসআলা জানি যে, কেউ যদি নিষিদ্ধ দিনে রোযার মান্নত
করে তাহলে নিষেধাজ্ঞার পরও কেউ যদি রোযা রাখে তাহলে মান্নত পুরো হয়ে যায়। যদিও তাতে গুনাহ হয়। সে হিসেবে কাফফারাও আদায় হয়ে যাবে কি না? সঠিক মাসআলাটি জানানোর অনুরোধ রইল।
উত্তর
কাফফারার রোযা এমন সময় শুরু করতে হবে যেন তার মধ্যে শাওয়ালের ১ তারিখ অথবা যিলহজ্বের ১০ থেকে ১৩ তারিখ-এ দিনগুলো না আসে। কাফফারা আদায়ের দু’মাসের ভেতর উক্ত নিষিদ্ধ দিন পড়লে সে দিনগুলোতে রোযা রাখলেও কাফফারা আদায় হবে না; বরং এক্ষেত্রে পুনরায় নতুন করে লাগাতার দু মাস রোযা রাখতে হবে। উল্লেখ্য যে, নিষিদ্ধ দিনসমূহে রোযা
রাখার মান্নত সংক্রান্ত মাসআলার সাথে কাফফারার
রোযার কোনো মিল নেই। উভয়ের মধ্যে মৌলিকভাবে পার্থক্য রয়েছে।
এজন্য দুটোর হুকুমও ভিন্ন। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস :
১১৫১৯;
বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৭৪; আলবাহরুর
রায়েক
৪/১০৫, ২৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫১২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৪, ৩/৪৭৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২১৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮২৩
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: কসম-মান্নত

আমি একবার মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ যদি আমাকে পুত্রসন্তান দান করেন...

প্রশ্ন
আমি একবার মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ যদি আমাকে পুত্রসন্তান দান করেন তাহলে দুটি গরু দিয়ে তার আকীকা করব। আল্লাহ আমাকে পুত্রসন্তান
দিয়েছেন। পরে আমি জানতে পেরেছি যে, ছেলেসন্তানের আকীকার জন্য দুটি ছাগলই যথেষ্ট। তাই জানার বিষয় হল,
আমার জন্য দুটি গরু দিয়ে আকীকা করা কি জরুরি? নাকি দুটি ছাগল দিলেই মান্নত আদায় হয়ে যাবে?
উত্তর
আকীকা করার মান্নত করলে তা মান্নত হয় না। তাই গরু দ্বারা আকীকা করা অপরিহার্য হয়ে যায়নি। বরং ছাগল, দুম্বা ইত্যাদি পশু দ্বারাও আকীকা করা যাবে।
-আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৫; ইমদাদুল আহকাম ৪/২০৬-৭
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৫২
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার ছেলে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। আমি আল্লাহর কাছে...

প্রশ্ন
আমার ছেলে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। আমি আল্লাহর কাছে মান্নত করেছি যে, আমার ছেলের পরীক ্ষার ফলাফল ভালো হলে আমার এ ছাগলটি আমাদের মাদরাসার গরীব ছাত্রদের জন্য দান করব। প্রশ্ন হল, আমার জন্য কি উক্ত ছাগলের পরিবর্তে তার মূল্য সদকা করা জায়েয হবে? আর এ মাদরাসা ছাড়া অন্য কোনো মাদরাসায় দান করলে কি মান্নত আদায় হবে? জানিয়ে বাধিত
করবেন।
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত ছাগলের মূল্য
সদকা করলেও মান্নত আদায় হয়ে যাবে। আর তা অন্য মাদরাসাতেও দান করা যাবে। তবে যে মাদরাসায় দেওয়ার জন্য মান্নত করা হয়েছিল সেখানে দেওয়াই উত্তম হবে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৫-৬৬; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৪; আদ্দুররুল মুখতার
৩/৭৪১
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৫১
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক ব্যক্তি দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মান্নত করল যে, যদি...

প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মান্নত করল যে, যদি আল্লাহ তাকে আরোগ্য দান করেন তাহলে যতদিন বেঁচে থাকবে প্রতিদিন দুই রাকাত করে শোকরিয়ার নামায আদায় করবে। পরবর্তীতে আল্লাহর মেহেরবানিতে লোকটি আরোগ্য লাভ করে। প্রশ্ন হল, এখন কি তাকে প্রতিদিন দুই রাকাত শোকরিয়ার নামায পড়তে হবে,
নাকি এর
পরিবর্তে কাফফারা দিলেই যথেষ্ট
হবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত মান্নত সহীহ হয়েছে। তাই তাকে প্রতিদিন দুই রাকাত করে নামায আদায় করতে হবে। নামায আদায়ের সামর্থ্য থাকা পর্যন্ত তাকে নামাযই পড়তে হবে। সামর্থ্য থাকলে নামায না পড়ে এর পরিবর্তে কাফফারা দেওয়া যাবে না। প্রকাশ থাকে যে, এমন বিষয়ের মান্নত করা উচিত, যা পরবর্তীতে সহজে পূর্ণ করা যায়। পরবর্তীতে আদায় করা কষ্টকর হয়-এমন মান্নত করা উচিত নয়। -আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪১-২৪২; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৫; হেদায়া ৪/৩৭৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫১৩
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক ব্যক্তি দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মান্নত করল যে, যদি...

প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মান্নত করল যে, যদি আল্লাহ তাকে আরোগ্য দান করেন তাহলে যতদিন বেঁচে থাকবে প্রতিদিন দুই রাকাত করে শোকরিয়ার নামায আদায় করবে। পরবর্তীতে আল্লাহর মেহেরবানিতে লোকটি আরোগ্য লাভ করে। প্রশ্ন হল, এখন কি তাকে প্রতিদিন দুই রাকাত শোকরিয়ার নামায পড়তে হবে, নাকি এর পরিবর্তে কাফফারা দিলেই যথেষ্ট হবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত মান্নত সহীহ হয়েছে। তাই তাকে প্রতিদিন দুই রাকাত করে নামায আদায় করতে হবে। নামায আদায়ের সামর্থ্য থাকা পর্যন্ত তাকে নামাযই পড়তে হবে। সামর্থ্য থাকলে নামায না পড়ে এর পরিবর্তে কাফফারা দেওয়া যাবে না। প্রকাশ থাকে যে, এমন বিষয়ের মান্নত করা উচিত, যা
পরবর্তীতে সহজে পূর্ণ করা যায়। পরবর্তীতে
আদায় করা কষ্টকর হয়-এমন মান্নত করা উচিত নয়। -আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪১-২৪২; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৫; হেদায়া ৪/৩৭৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫১২
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার ছেলে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। আমি আল্লাহর কাছে...

প্রশ্ন
আমার ছেলে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। আমি আল্লাহর কাছে মান্নত করেছি যে, আমার ছেলের পরীক্ষার ফলাফল ভালো হলে আমার এ
ছাগলটি আমাদের মাদরাসার গরীব ছাত্রদের জন্য
দান করব। প্রশ্ন হল, আমার জন্য কি উক্ত
ছাগলের পরিবর্তে তার মূল্য সদকা করা জায়েয
হবে? আর এ মাদরাসা ছাড়া অন্য কোনো মাদরাসায় দান করলে কি মান্নত আদায় হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত ছাগলের মূল্য
সদকা করলেও মান্নত আদায় হয়ে যাবে। আর তা অন্য মাদরাসাতেও দান করা যাবে। তবে যে
মাদরাসায় দেওয়ার জন্য মান্নত করা হয়েছিল
সেখানে দেওয়াই উত্তম হবে।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৫-৬৬; ফাতাওয়া খানিয়া
২/১৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৫;
আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৪; আদ্দুররুল মুখতার
৩/৭৪১
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩১৯
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: কসম-মান্নত

জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছিল, তার অসুস্থ মা সুস্থ হলে দশজন...

প্রশ্ন
জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছিল, তার অসুস্থ মা সুস্থ হলে দশজন ফকিরকে দাওয়াত করে খাওয়াবে। আল্লাহ তার মাকে সুস্থ করে দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল, তাকে কি দশজন ফকিরকেই খাওয়াতে হবে, নাকি খুব ভাল করে চার-পাঁচজনকে এক বেলা খাওয়ালেই চলবে?
উত্তর
ঐ ব্যক্তি যেহেতু দশজন ফকিরকে খাওয়ানোর মান্নত করেছে, তাই দশজন ফকিরকে এক বেলা খাওয়াতে হবে। এক্ষেত্রে পাঁচজনকে এক বেলা ভালভাবে খাওয়ালে মান্নত আদায় হবে না। তবে হ্যাঁ, পাঁচজনকে দুই বেলা খাওয়ালে মান্নত আদায় হয়ে যাবে। -আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৩৫৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৩৫

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩১৮
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: কসম-মান্নত

আমার উপর তিনটি কসমের কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। এখন আমাকে কি...

প্রশ্ন
আমার উপর তিনটি কসমের কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। এখন আমাকে কি প্রত্যেক কসমের জন্য ভিন্ন ভিন্ন করে কাফফারা আদায় করতে হবে? নাকি সবগুলোর জন্য একটি কাফফারা আদায় করলেই যথেষ্ট হবে? আর এক কাফফারার
জন্য দশ
মিসকিনকে না খাইয়ে যদি এক মিসকিনকে দশদিন খাওয়ানো হয় তাহলে কি কাফফারা আদায় হবে?
উত্তর
যতবার কসম ভঙ্গ হয়েছে প্রত্যেকটির জন্য ভিন্ন ভিন্ন করে কাফফারা দিতে হবে। একাধিক কসম ভঙ্গের জন্য একটি কাফফারা যথেষ্ট নয়। আর একবার কসম ভঙ্গের জন্য এক মিসকিনকে দশদিন দুবেলা খাওয়ালেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। আলমাবসূত, সারাখসী ৮/১৫৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/৩০৩; ফাতাওয়া খানিয়া ২/২; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১৪ - তাকরীরাতে রাফেয়ী ৩/১৩;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০৩১
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কসম-মান্নত

মানতের ইতিকাফ আদায়ের জন্য কি রোযা রাখা শর্ত? শর্ত হলে...

প্রশ্ন
মানতের ইতিকাফ আদায়ের জন্য কি রোযা রাখা শর্ত? শর্ত হলে আমি দুদিন ইতিকাফ করার মানত করেছিলাম অন্যদিকে আমার উপর গত রমযানের দুটি কাযা রোযাও রয়েছে। এ অবস্থায় আমি কি ঐ কাযা রোযা দুটি আদায়ের সাথে আমার মানতের ইতিকাফ আদায় করতে পারব?
উত্তর
ইতিকাফের মানত করলে রোযাসহ ইতিকাফ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। তাই মানতের ইতিকাফ আদায়ের জন্য স্বতন্ত্র্য রোযা রাখা আবশ্যক। এক্ষেত্রে পূর্বের কাযা রোযার নিয়ত করা সহীহ নয়। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে ঐ দুই দিনের ইতিকাফ স্বতন্ত্র্য রোযাসহ আদায় করতে হবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৯৭১২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪২-৪৪৩; কিতাবুল আছল ২/১৯৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন