গাছ থেকে নারিকেল পাড়িয়ে নারিকেল দিয়েই বিনিময় দেওয়া ৷
-ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২৯; আলমুহীতুল বুরহানী১১/৩৩৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/১১৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
কাঁকড়া খাওয়ার বিধান ৷
-ফাতাওয়া শামী-৬/৩০৮, আলবাহরুর রায়েক-৬/৮০৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে মাঝে মাঝে মেসে দাবা খেলতাম। একদিন...
আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে মাঝে মাঝে মেসে দাবা খেলতাম। একদিন আমার এক বন্ধুর ভাই (যে মাদরাসায় পড়ে) আমাদেরকে দাবা খেলতে দেখে বলল, দাবা খেলা জায়েয নেই।
আমারা জানার বিষয় হল, এ ব্যাপারে ইসলামের হুকুম কী?
দাবা খেলা নাজায়েয। এক বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ مَرَّ عَلَى قَوْمٍ يَلْعَبُونَ الشِّطْرَنْجَ فَقَالَ: مَا هَذِهِ التَّمَاثِيلُ الَّتِي أَنْتُمْ لَهَا عَاكِفُونَ؟ لَأَنْ يَمَسَّ جَمْرًا حَتَّى يُطْفَأَ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَمَسَّهَا.
হযরত আলী রা. একবার দাবা খেলায় রত কিছু মানুষের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদের কে বললেন, এই মুর্তিগুলো কী, যাদের সামনে তোমরা বসে আছো? এগুলো স্পর্শ করার চেয়ে জলন্ত অঙ্গার নির্বাপিত হওয়া পর্যন্ত তাতে হাতে রেখে দেওয়া ভাল। -সুনানে কুবরা, বাইহাকী ১০/২১২
আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-কে দাবা খেলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন,
هُوَ شَرٌّ مِنَ النَّرْدِ
সেটা ‘নারদ’ (নামক খেলা) থেকে নিকৃষ্ট।
(প্রাগুক্ত)
আর নারদ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدِ فَقَدْ عَصَى اللَّهَ وَرَسُولَهُ
যে নারদ দ্বারা খেলল সে আল্লাহ ও তার রাসূলের নাফরমানি করল। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৩৮
মুসলমানদের জন্য এ ধরনের খেলা থেকে বিরত থাকা উচিত ।
-শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৮/৫৪৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১৯৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৯৪
কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করে মারা গেলে সেই মৃত ব্যক্তির জন্য...
কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা করে মারা গেলে সেই মৃত ব্যক্তির জন্য তার আত্মীয়-স্বজনেরা দুআ করতে পারবে কি?
আত্মহত্যাকারীর জন্য দুআ করা যাবে। কেননা, যত বড় গুনাহগারই হোক যদি সে ঈমান অবস্থায় মারা যায় তবে তার জন্য ইস্তিগফার করা জায়েয। তাই আত্মহত্যা কাবীরা গুনাহ হলেও ঐ ব্যক্তির জন্য দুআ করা যাবে। একটি হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন-
كُنَّا نُمْسِكُ عَنِ الاسْتِغْفَارِ لأَهْلِ الْكَبَائِرِ، حَتَّى سَمِعْنَا نَبِيَّنَا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ لا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَقَالَ: أَخَّرْتُ شَفَاعَتِي لأَهْلِ الْكَبَائِرِ مِنْ أُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
‘আমরা কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিদের জন্য মাগফেরাতের দুআ করতাম না। পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যখন শুনলাম- “আল্লাহ তাআলা তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করবেন না। শিরক ছাড়া যে কোনো গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন।” আর আমি উম্মতের মধ্যে কবীরা গুনাহে জড়িয়ে যাওয়া লোকদের জন্য আমার সুপারিশের ক্ষমতাকে জমা করে রেখেছি এরপর থেকে আমরা তাদের জন্য দুআ করতাম। (মুসনাদে বাযযার, হাদীস ৫৮৪০; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৭৬০১)
অন্য এক হাদীসে এসেছে, জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় হিযরত করলেন, তখন তুফাইল ইবনু আমর এবং তার গোত্রের একজন লোকও তাঁর সঙ্গে মদীনায় হিজরত করেন। কিন্তু মদীনার আবহাওয়া তাদের অনুকূল হয়নি। তুফাইল ইবনু আম্র রা.-এর সাথে আগত লোকটি অসুস্থ হয়ে পড়ল। রোগযন্ত্রণা বরদাশত করতে না পেরে তীর নিয়ে তার হাতের আঙুলগুলো কেটে ফেলল। এতে উভয় হাত থেকে রক্ত নির্গত হতে থাকে। অবশেষে সে মারা যায়।
তুফাইল ইবনু আম্র দাওসী রা. স্বপ্নে তাকে ভাল অবস্থায় দেখতে পেলেন, কিন্তু তিনি তার উভয় হাত আবৃত দেখে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার রব তোমার সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন? সে বলল, আল্লাহর জন্য তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে হিজরত করার কারণে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তুফাইল রা. তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কী হয়েছে যে, আমি তোমার হাত দুটি আবৃত দেখছি? সে বলল, আমাকে বলা হয়েছে যে, আমি তা দুরস্ত করব না, তুমি স্বেচ্ছায় যা নষ্ট করেছ। তুফাইল রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করলেন, ইয়া আল্লাহ! আপনি তার হাত দুটিকেও ক্ষমা করে দিন।
-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬
কিছুদিন আগে আমি এক দোকান থেকে হাফ লিটার মিল্কভিটা দুধ...
কিছুদিন আগে আমি এক দোকান থেকে হাফ লিটার মিল্কভিটা দুধ কিনেছিলাম। বাসায় এসেই দুধ জ্বাল দেই এবং দুধ নষ্ট পাই। তখন মনে মনে ভাবি যে, পরে গিয়ে দোকানী থেকে আধা লিটার দুধ নিয়ে আসব। আর ঐ নষ্ট দুধ জ্বাল দিয়ে ছানা বানিয়ে খেয়ে ফেলি।
আমার ঐ নষ্ট দুধ ছানা বানিয়ে খাওয়া দেখে এক ভাই বললেন যে, আপনি তো আর দোকানদার থেকে দুধ ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। কারণ আপনি দুধ ছানা বানিয়ে খেয়ে ফেলেছেন।
এখন আমার প্রশ্ন হল, ঐ ভাইয়ের কথা কি ঠিক? আমার জন্য কি দোকানী থেকে দুধ ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ দুধ নষ্ট জানার পরও যেহেতু তা ছানা বানিয়ে খেয়েছেন তাই এক্ষেত্রে আপনার জন্য দোকানী থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করা জায়েয হবে না। আপনার ভাই ঠিকই বলেছেন।
-শরহুল মাজাল্লা ২/৩০৭, ৩৩৫, মাদ্দা : ৩৪৪, ৩৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৬/৫৫; রদ্দুল মুহতার ৫/২৫
আমরা সাধারণত নখ, চুল কেটে ফেলে দিই। কেউ কেউ বলে,...
আমরা সাধারণত নখ, চুল কেটে ফেলে দিই। কেউ কেউ বলে, এগুলো নাকি মাটিকে পুঁতে রাখতে হয়। এক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনা কী?
নখ, চুল কাটার পর যেখানে সেখানে ফেলে দেওয়া উচিত নয়। বরং তা মাটির নিচে পুঁতে দেওয়া উত্তম। নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. নখ, চুল কাটার পর তা মাটির নিচে পুঁতে দিতেন। -কিতাবুত তারাজ্জুল ৬০
তবে নখ, চুল মাটিতে পোঁতা কষ্টকর হলে ডাস্টবিনে বা সংরক্ষিত জায়গায় ফেলে দিলে তাতেও সমস্যা নেই। তবে যেসব লোম শরীরে থাকা অবস্থায় অন্যের জন্য দেখা না জায়েয শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পরও তা অন্যকে দেখানো জায়েয নয়। তাই এ ধরনের পশম ফেলার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৬১৭১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪১১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২১০; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪
আমার বুকে ও পিঠে অনেক পশম, আজকাল জেন্টস পার্লারে গিয়ে...
আমার বুকে ও পিঠে অনেক পশম, আজকাল জেন্টস পার্লারে গিয়ে বুক-পিঠের পশম উঠানো যায়। জানার বিষয় হল, আমার জন্য ঐ পশমগুলো উঠানো জায়েয হবে কি?
বুক ও পিঠের পশম উঠানো অনুত্তম ও অনর্থক কাজ। আজকাল বিজাতীয়দের মাঝে এই ফ্যাশন চালু হয়েছে। এতে অনর্থক কাজে অর্থ ব্যয় করা হয়। তাই এ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
-আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২১১; রদ্দুল মুহতার ৬/৪০৭
মশা মারার জন্য বাজারে এক ধরনের ইলেক্ট্রিক র্যাকেট পাওয়া যায়।...
মশা মারার জন্য বাজারে এক ধরনের ইলেক্ট্রিক র্যাকেট পাওয়া যায়। উক্ত র্যাকেট মশাতে লাগলে আঘাত করলে তা থেকে স্ফুলিঙ্গ বের হয় এবং মশা মারা যায়। আমার জানার বিষয় হল, এ ধরনের র্যাকেট দ্বারা মশা মারা জায়েয হবে কি না?
কোনো ক্ষতিকর প্রাণীকেও আগুনে পুড়িয়ে মারা জায়েয নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
وَإِنَّ النَّارَ لاَ يُعَذِّبُ بِهَا إِلَّا اللَّهُ
আল্লাহ ব্যতীত আর কারো অধিকার নেই আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়ার। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩০১৬
উক্ত র্যাকেট দিয়ে আঘাত করলে যেহেতু মশা পুড়ে মারা যায় তাই তা দ্বারা মশা মারা জায়েয হবে না।
-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৩৬১; ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ২/৩৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৫২
পুরুষের জন্য অলঙ্কার ব্যবহারের হুকুম কী? তারা কি যে কোনো...
পুরুষের জন্য অলঙ্কার ব্যবহারের হুকুম কী? তারা কি যে কোনো ধাতবের অলঙ্কার এবং যে কোনো ধাতবের আংটি ব্যবহার করতে পারবে? মহিলারা কী সোনা-রূপা, তামা-পিতল, কাঁচ-হীরা এবং ইমিটেশনের আংটি ব্যবহার করতে পারবে? দয়া করে জানাবেন।
পুরুষের জন্য সকল প্রকার অলঙ্কার নিষিদ্ধ। আর আংটির মধ্যে কেবলমাত্র রূপার আংটি ব্যবহার করা জায়েয আছে। তবে তা এই শর্তে যে, রূপার পরিমাণে এক মিসকালের চেয়ে কম অর্থাৎ সাড়ে চার মাশার চেয়ে কম হতে হবে। গ্রামের হিসাবে এক মিসকালের পরিমাণ হল ৪.৩৭৪ গ্রাম। রূপা ছাড়া অন্য কোনো ধাতব বা বস্তুর আংটি ব্যবহার করা পুরুষের জন্য নিষেধ। হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে স্বর্ণের আংটি পরিহিত দেখে তার থেকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। লোকটি দেখে তা খুলে ফেলল। এরপর সে লোহার আংটি বানাল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা তো আরো মন্দ,এটা জাহান্নামীদের অলঙ্কার। তখন ঐ ব্যক্তি তা খুলে ফেলল এবং একটি রূপার আংটি বানাল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন নিরব থাকলেন।Ñমুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৫১৮
সুনানে আবু দাউদের এক বর্ণনায় আছে, এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তবে কিসের আংটি বানাব? তিনি বললেন, রূপার আংটি বানাও। তবে এক মিসকাল পূর্ণ করো না।
আর মহিলাদের জন্যও লোহা, তামা ও পিতলের আংটি ব্যবহার করা নিষেধ। এসব ধাতবের আংটি ব্যতীত তাদের জন্য সোনা-রূপার আংটি ব্যবহার করা জায়েয। তদ্রƒপ পাথর, হীরা, মাটি, পুতি, কাঁচ ও ইমিটেশনের আংটিও তারা ব্যবহার করতে পারবে। আর আংটি ছাড়া অন্যান্য অলঙ্কারের ক্ষেত্রে তারা যে কোনো ধাতব বা বস্তু ব্যবহার করতে পারবে।
Ñমুআত্তা ইমাম মুহাম্মাদ ৩/৩৭৬; কিতাবুল আসার ২/৭২৬; ফাতাওয়া কাযী খান ৩/৪১৩; হেদায়া ৪/৪৪১; ইমদাদুল আহকাম ৪/৩৫৮ ফাতাওয়া রহীমিয়া ১০/১৫৮
বাথরুমে একাকী গোসল করার সময় অনাবৃত হওয়া যাবে কি না?
বাথরুমে একাকী গোসল করার সময় অনাবৃত হওয়া যাবে কি না?
আবদ্ধ গোসলখানায় একাকি অনাবৃত হয়ে গোসল করা জায়েয। তবে বিনা প্রয়োজনে একেবারে পুরো শরীর খুলে ফেলা অনুত্তম।
Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৮; উমদাতুল কারী ৩/২২৮; শরহুল মুনইয়াহ ১/৫১; ইলাউস সুনান ২/১৭০; রদ্দুল মুহতার ১/৪০৪
আমরা জানি, গোবর নাপাক। কিন্তু আমাদের এলাকার লোকেরা গোবর জমা...
আমরা জানি, গোবর নাপাক। কিন্তু আমাদের এলাকার লোকেরা গোবর জমা করে তা বিক্রি করে। হুজুরের কাছে জানতে চাই, এভাবে নাপাক বস্তুর বেচাকেনা বৈধ কি না?
গোবর নাপাক হলেও তার ব্যবহারের বৈধ ক্ষেত্র রয়েছে। যেমন, জ্বালানী কাজে ও মাটির সার হিসেবে তা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই গোবর বেচাকেনা করা জায়েয।
-আলজামিউস সগীর ৪৮০; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৩৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১০২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৮৫
আমি জানুয়ারি মাস থেকে মাসিক আলকাউসারের নিয়মিত পাঠক। আলহামদুলিল্লাহ আমার...
আমি জানুয়ারি মাস থেকে মাসিক আলকাউসারের নিয়মিত পাঠক। আলহামদুলিল্লাহ আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। দুআ করি আল্লাহ তাআলা যেন আপনাদের দ্বারা আরো বেশি দ্বীনের খেদমত নেন এবং একে নাজাতের কারণ বানান। আমীন।
আমার জানার বিষয় হল, ক) আকীকা কী ও তার হুকুম কী? খ) আকীকা আদায়ের সময় নির্দিষ্ট আছে কি না এবং তা আদায়ের নিয়ম কী? গ) নিজের আকীকা নিজেই আদায় করতে পারবে নাকি তা পিতাকেই আদায় করতে হবে এবং এ আকীকার গোশত পিতামাতা ও আত্মীয়রা খেতে পারবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।
সন্তান জন্মের পর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের লক্ষ্যে জন্মের সপ্তম দিনে পশু যবাই করাকে আকীকা বলে। আকীকা করা মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে এর প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সন্তানের আকীকা করার ইচ্ছা করে সে যেন তা পালন করে। ছেলের জন্য সমমানের দুটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭৯৬১
অন্য হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সন্তানের সাথে আকীকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (অর্থাৎ পশু যবাই কর) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৪৭২
সন্তান জন্মের সপ্তম দিন আকীকা করা উত্তম। জামে তিরমিযীর এক হাদীসে সপ্তম দিনে আকীকা করার কথা বলা হয়েছে। -হাদীস : ১৫২২
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দৌহিত্রদ্বয় হাসান ও হুসাইন রা.-এর আকীকা সপ্তম দিনে করেছেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮৩৪
তাই সম্ভব হলে সপ্তম দিনেই আকীকা করা উত্তম।
সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে চৌদ্দতম দিনে বা একুশতম দিনে করা ভালো। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন, আকীকা সপ্তম দিনে হওয়া উচিত। তা সম্ভব না হলে চৌদ্দতম দিনে। এবং তাও সম্ভব না হলে একুশতম দিনে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯
অবশ্য একুশ দিনের মধ্যে করা না হলে পরবর্তীতেও তা আদায় করা যাবে।
সন্তানের আকীকা করার দায়িত্ব তার পিতার। অবশ্য অন্য কেউ বা নিজেও নিজের আকীকা করা জায়েয আছে।
আকীকার গোশত সন্তানের পিতামাতা, আত্মীয়স্বজন সকলেই খেতে পারবে। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আকীকার গোশত নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং কিছু সদকা করবে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯
সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রাহ. বলেন, আমি আতা রাহ.-কে বলতে শুনেছি, ... আকীকার গোশত তার পরিবার খেতে পারবে এবং হাদিয়াও দিতে পারবে। ... আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তা কি সদকা করে দিতে হবে? তিনি বললেন, না,তুমি চাইলে খেতে পার এবং হাদিয়াও দিতে পার।... (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৭৯৬৯)
-ফাতহুল বারী ৯/৫০৭; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৩/৩৭০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; আলমাওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ, কুয়েত ৩০/২৭৬; তুহফাতুল মাওদূদ বিআহকামিল মাওলূদ ৭৮
বর্তমানে অনেক পণ্যের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য গ্যারান্টি দিয়ে থাকে।...
বর্তমানে অনেক পণ্যের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য গ্যারান্টি দিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে যদি ঐ জিনিস নষ্ট হয়ে যায় এক্ষেত্রে ক্রেতা কোনো শর্ত লঙ্ঘন না করলে গ্যারান্টি কার্ডের সাথে ঐ পণ্য নিয়ে গেলে তা ফেরত নিয়ে নতুন পণ্য দেয়। এবং এক্ষেত্রে বিক্রেতা দিতে বাধ্য থাকে।
আবার অনেক পণ্য ক্রয় করলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ওয়ারেন্টি দিয়ে থাকে। তখন নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে ঐ জিনিস নষ্ট হয়ে গেলে শর্তসাপেক্ষে তা ঠিক করে দেয়।
জানার বিষয় হল, গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টির শর্তে ক্রয়বিক্রয় করা জায়েয কি না? আর এক্ষেত্রে বিক্রেতা নতুন পণ্য দেওয়া বা পুরাতন পণ্য ঠিক করে দেওয়ার ব্যাপারে বাধ্য থাকবে কি না?
হাঁ, গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টির শর্তে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয আছে। অতএব এ ধরনের পণ্যে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টির শর্ত অনুযায়ী বিক্রেতা নতুন পণ্য দিতে বা পুরাতন পণ্য ঠিক করে দিতে বাধ্য থাকবে। উল্লেখ্য যে, ক্রয়-বিক্রয়ের সময় গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টির শর্তাবলি ও নিয়মাবলি সম্পূর্ণভাবে লিখে উভয় পক্ষ স্বাক্ষর করে নিতে হবে। যেন পরবর্তীতে এ নিয়ে কোনো ঝগড়া বা বিতর্ক না হয়।
শরহুল মাজাল্লাহ ২/৬৪, মাদ্দাহ : ১৮৮; রদ্দুল মুহতার ৫/৮৮; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৬৩৫
বর্তমানে দেখা যায়, বরপক্ষের না বলার পরও কনেপক্ষ ফার্নিচার ইত্যাদি...
বর্তমানে দেখা যায়, বরপক্ষের না বলার পরও কনেপক্ষ ফার্নিচার ইত্যাদি দিয়ে থাকে। তাই জানার বিষয় হল, এসব আসবাবপত্র গ্রহণ করা জায়েয হবে কি?
বরপক্ষের দাবি কিংবা সামাজিক চাপ ছাড়া কনেপক্ষের লোকজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে কনের ঘরে ব্যবহারের জন্য কোনো আসবাবপত্র দিলে তা গ্রহণ করা যাবে।
তবে বরপক্ষের দাবি কিংবা চাপের কারণে অথবা সামাজিক প্রচলনের কারণে বাধ্য হয়ে কোনো কিছু দিলে তা গ্রহণ করা জায়েয হবে না।
-মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৫৪৮৮; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৪৮-৩৫৩
স্বর্ণের চামচ ও রূপার গ্লাস ব্যবহার করা কি জায়েয আছে?...
স্বর্ণের চামচ ও রূপার গ্লাস ব্যবহার করা কি জায়েয আছে? নারীদের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার করা তো জায়েয। তাহলে তাদের জন্য এগুলোর ব্যবহার কি জায়েয হবে? এছাড়া আজকাল কিছু কিছু গ্লাস এবং প্লেট এমন পাওয়া যায় যেগুলো স্বর্ণের পানি দ্বারা প্রলেপযুক্ত। উপর থেকে দেখতে স্বর্ণের মতোই লাগে, কিন্তু বাস্তবে স্বর্ণ নয়। এগুলো ব্যবহারের হুকুম কী?
-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৮৩৭; ইলাউস সুনান ১৭/২৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩১৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬
মহিলাদের জন্য স্বর্ণের অলংকার ব্যবহার করা জায়েয হলেও স্বর্ণ-রূপার তৈরি চামচ, গ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার করা পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যই নাজায়েয।
আর স্বর্ণ-চাঁদির পানি দ্বারা প্রলেপযুক্ত আসবাবপত্র ব্যবহার করা জায়েয আছে। এগুলো হাদীসের নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে এগুলোও ব্যবহার না করা উত্তম। কেননা এতে বিজাতিদের সাথে কিছুটা হলেও সাদৃশ্য হয়।
-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৮৩৭; ইলাউস সুনান ১৭/২৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩১৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬
আমাদের গ্রামে লোকেরা সাধারণত গাছ থেকে সুপারি পাড়ায় এ শর্তে...
আমাদের গ্রামে লোকেরা সাধারণত গাছ থেকে সুপারি পাড়ায় এ শর্তে যে, এক গাছ সুপারি পেড়ে দিলে দু গণ্ডা সুপারি দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুম কী?
প্রশ্নোক্ত শর্তে সুপারি পাড়ানো জায়েয। তবে এক্ষেত্রে তার পাড়া সুপারি থেকেই বিনিময় দেওয়া হবে এমন শর্ত করা যাবে না এবং বিনিময় হিসেবে কোন মানের সুপারি দেওয়া হবে তা আগেই ঠিক করে নিতে হবে।
অবশ্য পাড়া সুপারি থেকে দেওয়ার শর্ত না করা হলে পরবর্তীতে ঐ সুপারি থেকেও পারিশ্রমিক দেওয়া যাবে।
-আলমুহীতুল বুরহানী ১১/৩৩৮; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ২/৫৩৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/১১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২৯-৩৩০
আমাদের বাড়ির পাশে রাস্তায় এক ব্যক্তি বিভিন্ন ধরণের বড়ই বিক্রি...
আমাদের বাড়ির পাশে রাস্তায় এক ব্যক্তি বিভিন্ন ধরণের বড়ই বিক্রি করে। তার কাছ থেকে বড়ই কিনতে গেলে মিষ্টি না টক তা যাচাই করার জন্য খেয়ে দেখতে বলে এবং বলে যে, খেয়ে পছন্দ হলে কিনবেন অন্যথায় নয়।
এখন তার থেকে বড়ই কেনার পূর্বে ভালো-মন্দ, টক-মিষ্টি ইত্যাদি যাচাই করার জন্য তা থেকে কি খেয়ে দেখতে পারব? কেননা টক বা মন্দ হলে সেক্ষেত্রে তো আমি তার কাছ থেকে কিনব না। এ অবস্থায় তার তো এক দুইটা বড়ই বিনা মূল্যেই চলে গেল।
বিক্রেতা বড়ইয়ের স্বাদ দেখার জন্য খাওয়ার অনুমতি দিলে ক্রেতার জন্য দু-একটি বড়ই খেয়ে দেখা জায়েয আছে।
এক্ষেত্রে স্বাদ যাচাইয়ের পর পছন্দ না হলে তার থেকে বড়ই না কিনলেও অন্যায় হবে না।
কিন্তু বাসত্মবে যদি ফল ক্রয়ের ইচ্ছা না থাকে; বরং ক্রেতার ভান ধরে বিনা পয়সায় অন্যের ফল খাওয়াই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে তা জায়েয হবে না। এভাবে খেলে বিক্রেতাকে এর মূল্য দিয়ে দিতে হবে। অথবা তার থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২২৫৪৬; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৯/১৭
আমরা বিভিন্ন পাঠাগার থেকে অনেক সময় কিতাব নিয়ে আসি। কখনো...
আমরা বিভিন্ন পাঠাগার থেকে অনেক সময় কিতাব নিয়ে আসি। কখনো কোনো কোনো কিতাবে ভুল পরিলক্ষিত হয়।
এক্ষেত্রে ভুলগুলো কেটে সহীহ করে দেওয়া কি জায়েয হবে?
পাঠাগার কিংবা কোনো ব্যক্তির বই এনে অনুমতি ছাড়া তাতে কোনোরূপ দাগ দেওয়া, কাটাকাটি করা বা ভুল সংশোধন করা জায়েয নয়। কর্তৃপক্ষের অনুমতি থাকলেও শুধু নিজ ধারণাবশত এরূপ করা অনুচিত। তাই কোনো ভুল ধরা পড়লে তা যথাযথ তাহকীকের পর ভিন্ন একটি কাগজে লিখে কিতাবের ঐ স্থানে রেখে দেওয়া যেতে পারে এবং কর্তৃপক্ষকেও তা অবহিত করা যেতে পারে।
-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৮৮; শরহু মানযুমাতে ইবনে ওহবান ২/৫৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৮৬
আমাদের বাসায় মাঝেমধ্যেই ইঁদুরের উপদ্রব দেখা যায়। অনেক সময় প্রয়োজনীয়...
আমাদের বাসায় মাঝেমধ্যেই ইঁদুরের উপদ্রব দেখা যায়। অনেক সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও দামি কাপড়চোপড়ও কেটে ফেলে। তাই আমরা ইঁদুর নিধনের জন্য বিভিন্ন কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করে থাকি। এতে অনেক ইঁদুর মারা যায়। প্রশ্ন হল, এভাবে ইঁদুর মারা কি জায়েয হবে? দয়া করে এ বিষয়ে শরীয়তের বিধান জানিয়ে উপকৃত করবেন।
ইঁদুর যেহেতু ঘরবাড়ির আসবাবপত্র নষ্ট করে ফেলে তাই কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করে তা মেরে ফেলা জায়েয।
উল্লেখ্য, ক্ষতিকারক প্রাণীকে মারার জন্য এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যা তার জন্য কম কষ্টদায়ক হয় এবং তুলনামূলক সহজ হয়। বিনা প্রয়োজনে অধিক কষ্ট দেওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৭১৮৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৯৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২২৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬১; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৫২
একটা ঘটনা শুনেছি যে, হযরত ফাতেমা রা.কে দাফন করার সময়...
একটা ঘটনা শুনেছি যে, হযরত ফাতেমা রা.কে দাফন করার সময় আবু যর গিফারী রা. কবরকে সম্বোধন করে বলেছিলেন, হে কবর! তুমি কি জানো, তোমার উদরে কাকে রাখা হচ্ছে? ইনি হলেন, প্রিয় নবীর কন্যা। এ কথা বলার সাথে সাথে কবর থেকে আওয়াজ এল, আমি কাউকে চিনি না। আমি প্রত্যেকের আমল অনুযায়ী আচরণ করি। এ ঘটনাটি কতটুকু সঠিক? জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্নোক্ত ঘটনাটি সত্য নয়। এটি লোকমুখে প্রচলিত বানানো ঘটনা। হাদীস-আছার ও নির্ভরযোগ্য কোনো ইতিহাস গ্রন্থে এ ঘটনা পাওয়া যায় না।
সুতরাং দলিল-প্রমাণহীন এ কথাগুলো বর্ণনা করা জায়েয হবে না। এ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
প্রকাশ থাকে যে, আখেরাতের হিসাব-কিতাবের বিষয়টি যে ঈমান ও আমলের ভিত্তিতেই হবে তা দ্বীনের একটি সর্বজনবিদিত শিক্ষা, যা মুসলমান মাত্রেরই জানা আছে। এজন্য সাহাবায়ে কেরাম কবরকে সম্বোধন করে উপরোক্ত কথা বলতে পারেন এই কল্পনাও মূর্খতা। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায়ই প্রিয়তম কন্যা ফাতেমা রা.কে বলে গেছেন, হে ফাতেমা! জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা কর। কেননা আমি উপকার-অপকারের মালিক নই।-সহীহ মুসলিম ২/১১৪; জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩১৮৫
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই সুস্পষ্ট শিক্ষার পর সাহাবীগণ কবরকে উপরোক্ত কথা কীভাবে বলতে পারেন?
কিছুদিন আগে আমি একটি মুরগি যবাই সম্পন্ন করার পর সেটি...
কিছুদিন আগে আমি একটি মুরগি যবাই সম্পন্ন করার পর সেটি লাফাতে লাফাতে পাশের ডোবায় পড়ে যায়। উঠাতে বিলম্ব হওয়ায় পানির মধ্যেই তার জান চলে যায়। পরে সেটিকে পানি থেকে উঠানো হয়। এ ব্যাপারে জনৈক আলেমকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আপনাদের যবাই সহীহ হয়েছে। এর গোশত খেতে কোনো সমস্যা নেই। প্রশ্ন হল, উক্ত আলেমের কথা কি সঠিক? আসলেই কি এই মুরগির গোশত খাওয়া জায়েয হবে? জানানোর অনুরোধ রইল।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মুরগির গোশত খাওয়া যাবে। উক্ত আলেম ঠিকই বলেছেন। যবাই সম্পন্ন হওয়ার পর প্রাণী পানিতে পড়ে গেলেও যবাইয়ে কোনো ত্রুটি আসে না। সুতরাং পানিতে পড়ার পর জান গেলেও কোনো অসুবিধা নেই।
-আলমাবসূত, সারাখসী ১২/৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯০; ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ৩/৭২; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৯; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৫৯
খুলনার বাগেরহাট জেলায় আমার দাদার বাড়ি। সেখানে অনেক বনজঙ্গল আছে।...
খুলনার বাগেরহাট জেলায় আমার দাদার বাড়ি। সেখানে অনেক বনজঙ্গল আছে। আর বনজঙ্গলে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। এছাড়া বর্ষার পানি কমে গেলে ঝাঁকে ঝাঁকে বক নামে ফসলী মাঠে। বছরের একটা সময় আমি ও আমার বন্ধু সাদিক জঙ্গলে পাখি শিকার করে থাকি। কখনো গুলি কখনো গুলতি দিয়ে। গুলি ছোড়ার আগে আমরা বিসমিল্লাহ পড়ে নেই। এরপর শিকারকৃত পাখিটাকে জীবিত ধরতে পারলে পুনরায় বিসমিল্লাহ বলে তা যবাই করি। কিন্তু কখনো কখনো শিকারকৃত পাখি গুলির আঘাতে মারা যায়। তখন আর যবাই করা সম্ভব হয় না। প্রশ্ন হল, গুলি বা গুলতি দ্বারা শিকারকৃত পাখি যবাইয়ের আগে মারা গেলে তা খাওয়া জায়েয হবে কি?
ধারবিহীন গুলি বা গুলতি দ্বারা শিকারকৃত পাখি যবাইয়ের আগে মারা গেলে তা খাওয়া জায়েয হবে না। অবশ্য গুলির অগ্রভাগ যদি ধারালো হয় এবং তা ছোড়ার সময় বিসমিল্লাহ পড়ে নেওয়া হয় এবং ঐ ধারালো গুলির আঘাতে প্রাণী জখম হয়ে রক্ত বের হয় তবে ঐ প্রাণী যবাইয়ের পূর্বে মারা গেলেও তা খাওয়া জায়েয হবে।
-ইলাউস সুনান ১৮/৬০; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৩/৪৮৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৬০; আলবাহরুর রায়েক ৮/২২৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪৭১
জনৈক মহিলা তার বাসায় কোন পুরুষ লোক না থাকায় সে...
জনৈক মহিলা তার বাসায় কোন পুরুষ লোক না থাকায় সে ছোট বাচ্চার সহায়তা নিয়ে নিজেই মুরগী যবেহ করেছে। তার জন্য মুরগী যবেহ করা জায়েয হয়েছে কি? জানালে কৃতজ্ঞ হব।
হ্যাঁ, জায়েয হয়েছে। কেননা যবেহের জন্য পুরুষ হওয়া শর্ত নয়; বরং মহিলার যবাইও সহীহ। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে কাব রা. তার পিতা কাব রা. থেকে বর্ণনা করেন, এক মহিলা ধারাল পাথর দ্বারা ছাগল যবেহ করেন, অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তা খেতে বললেন।
-সহীহ বুখারী ২/৮২৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩০৫; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৭/৩০৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/২৯৭
জনৈক ব্যক্তিকে এক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে তার কবরের...
জনৈক ব্যক্তিকে এক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে তার কবরের উপর বাঁশ, গাছ ইত্যাদি উদগত হয়। এখন জানার বিষয় হল, উক্ত বাঁশ, গাছ কাটার হুকুম কী? কাটলে তার হকদার কে হবে? মৃত ব্যক্তির ওয়ারিসগণ নাকি কবরস্থান ফান্ড? জানিয়ে বাধিত করবনে।
প্রশ্নোক্ত কবরস্থানটি যদি ওয়াকফিয়া হয় তাহলে বাঁশের মালিক হবে ঐ কবরস্থান নিজে। মৃতের ওয়ারিছদের জন্য তা নেওয়া জায়েয হবে না। কবরস্থান কর্তৃপক্ষ ঐ বাঁশ কেটে তা কবরস্থানের কল্যাণে ব্যয় করতে পারবে। আর যদি কবরের জায়গা ব্যক্তি মালিকানাধীন হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে জায়গার মালিকই ঐ বাঁশের মালিক হবে। তখন তারা নিজ প্রয়োজনে তা কাটতে পারবে।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৭৩
আমাদের এলাকার শরীফ সাহেব তার বন্ধুকে কথা দিয়েছিলেন যে নিজের...
আমাদের এলাকার শরীফ সাহেব তার বন্ধুকে কথা দিয়েছিলেন যে নিজের বড় মেয়েকে বন্ধুর ভাতিজার সাথে বিয়ে দিবেন। দুই পরিবার মিলে যখন বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করার উদ্যোগ নেয় তখন হঠাৎ মেয়ে এ বিয়েতে অসম্মতি জানায়। মেয়ের বয়স ২১ বছর। এখন শরীফ সাহেব চাচ্ছেন, মেয়ের অমতেই বিয়ে পড়িয়ে দিবেন। এভাবে বিয়ে দেওয়া বৈধ হবে কি?
প্রাপ্ত বয়স্কা মেয়ের সম্মতি ব্যতীত তাকে বিয়ে দেওয়া জায়েয নেই। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মেয়ের অনুমতি ছাড়া তাকে সেখানে বিয়ে দেওয়া বৈধ হবে না। অবশ্য পিতা যদি এ অবস্থায় বিয়ে পড়িয়েই দেন তাহলে এ বিয়ে সহীহ হওয়া মেয়ের সম্মতির উপর নির্ভর করবে। সে যদি এ বিয়েকে মেনে নেয় তাহলে তা সহীহ হবে। অন্যথায় তা বাতিল গণ্য হবে।
প্রকাশ থাকে যে, পিতামাতার পছন্দের ব্যাপারে মেয়ে বা ছেলের অমত থাকলে তা শুরুতেই বলা উচিত। আলোচনা অগ্রসর হয়ে যাওয়ার পর ছেলে বা মেয়ের অসম্মতি প্রকাশ করা ঠিক নয়। তাই আলোচনা একেবারে অগ্রসর হয়ে গেলে অভিভাবকের সিদ্ধান্তকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।
এছাড়া এমনিতেও মা বাবার সিদ্ধান্ত যেমনিভাবে মমতাপূর্ণ হয় তেমনি তা অভিজ্ঞতার কারণে মূল্যবানও হয়ে থাকে। তাই তাদের সিদ্ধান্ত ও পছন্দের মূল্যায়ন করা উচিত। অমত করলেও তা ভেবে চিন্তে করা উচিত।
-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৪১৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/১১০; ফাতহুল কাদীর ৩/১৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৮
আমি আমাদের বাড়ির পাশের স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার পথে একটি...
আমি আমাদের বাড়ির পাশের স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার পথে একটি বাড়ি আছে। সে বাড়িতে একটি আম গাছ রয়েছে। গাছটির নিচে আম পড়লে সেখান থেকে আমরা অনেকেই আম কুড়িয়ে খাই। গাছের মালিক দেখেও নিষেধ করেন না। জানতে চাই, এমতাবস্থায় ঐ গাছের ফল কুড়িয়ে খাওয়া জায়েয হয়েছে কি না?
আম কুড়িয়ে নিতে যেহেতু মালিকের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার বাধা বা নিষেধ করা হয় না তাই আপনাদের জন্য উক্ত গাছের নিচে পড়ে থাকা ফল কুড়িয়ে খাওয়া জায়েয হয়েছে। অবশ্য কখনো যদি এ ব্যাপারে মালিকের অসম্মতি বা অসন্তুষ্টি বুঝা যায় তখন পড়ে থাকা ফলও কুড়িয়ে নেওয়া জায়েয হবে না।
-আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৮৪; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৫৪; আননাহরুল ফায়েক ৩/২৮৪
আমার ছোট বোন পায়ে মেহেদী ব্যবহার করলে কিছু মহিলার তার...
আমার ছোট বোন পায়ে মেহেদী ব্যবহার করলে কিছু মহিলার তার সমালোচনা করে এবং বলে, মেহেদী যেহেতু দাড়িতে ব্যবহার করা হয় তাই তা পায়ে ব্যবহার করা আদব পরিপন্থী। জানতে চাই, আসলেই কি মেয়েদের জন্য পায়ে মেহেদী ব্যবহার করা আদব পরিপন্থী? আবার কখনো ছেলেদেরকেও বিয়ে, খতনা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময় হাতে-পায়ে মেহেদী ব্যবহার করতে দেখা যায়। এটি কতটুকু সঠিক?
মেয়েদের জন্য পায়ে মেহেদী ব্যবহার করা জায়েয, আদব পরিপন্থী নয়। আর প্রশ্নোক্ত যুক্তিটিও ঠিক নয়। দাড়িতে লাগানো হয় এ কারণে পায়ে লাগানো যাবে না-এটি মনগড়া কথা। আর পুরুষদের জন্য হাতে-পায়ে মেহেদী ব্যবহার করা জায়েয নেই। তবে তারা চুল ও দাড়িতে ব্যবহার করতে পারবে।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪৮৯০; ফাতহুল বারী ১০/৩৬৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৪২২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৭৩; সহীহ মুসলিম ২/১৯৯
আমরা জানি যে, পুরুষের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম। এখন...
আমরা জানি যে, পুরুষের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম। এখন প্রশ্ন হল, পুরুষকে স্বর্ণের গহনা উপহার দিলে সে কি তা উপহার হিসেবে নিতে পারবে? নাকি ব্যবহারের মত তা নেওয়া ও মালিক হওয়াও নিষিদ্ধ?
পুরুষের জন্য স্বর্ণের গহনা উপহার হিসেবে নেওয়া জায়েয। কেননা পুরষের জন্য শুধু স্বর্ণের ব্যবহার নিষিদ্ধ। মালিক হওয়া নিষিদ্ধ নয়। তাই তারা স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে, অন্যকে হাদিয়া দিতে পারবে এবং নিতেও পারবে।
-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৪৮৮০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২৩২; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৫৬৪৯
সিদ্দীক সাহেব চীন থেকে গার্মেন্টসে তৈরি বিভিন্ন ধরনের মাল নিয়ে...
সিদ্দীক সাহেব চীন থেকে গার্মেন্টসে তৈরি বিভিন্ন ধরনের মাল নিয়ে এসে মিসরে বিক্রি করেন। যদি চীন থেকে মাল সরাসরি মিসরে নিয়ে আসেন সেক্ষেত্রে তাকে পূর্ণ মূল্যের উপর ৩০% ট্যাক্স দিতে হয়।
পক্ষান্তরে একই মাল আরবের কোনো দেশ থেকে নিয়ে আসলে ট্যাক্স দিতে হয় মাত্র ৫% থেকে ৭%। সেক্ষেত্রে বিক্রির সময়ও মূল্য অনেক কমে যায়, যা ক্রেতার জন্য সুবিধা হয় এবং তার লাভও একটু বেশি হয়। তাই সিদ্দীক সাহেব চীন থেকে মাল প্রথমে দুবাই নিয়ে আসেন। দুবাই এনে মালগুলোর সব লেভেল খুলে নতুনভাবে মেড ইন ইমারত লেভেল লাগান। পরবর্তীতে একই মাল যখন চীনের পরিবর্তে মেড ইন ইমারত লেভেলে মিসরে যায় সেক্ষেত্রে ট্যাক্স দিতে হয় মাত্র ৭%। এ ধরনের কাজ জায়েয কি না? দয়া করে দলিলসহ জানাবেন।
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী চীন থেকে মাল আনার জন্য এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা শরীয়তসম্মত নয়। কেননা চীনে তৈরিকৃত মালের উপর মেড ইন ইমারত লেভেল লাগানো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ধোঁকার শামিল। তাই এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি দুধ সম্পর্কীয় ভাতিজির মেয়ে অর্থাৎ আপন...
আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি দুধ সম্পর্কীয় ভাতিজির মেয়ে অর্থাৎ আপন ভাইয়ের দুধ মেয়ের মেয়েকে বিয়ে করে। গ্রামের কিছু লোক বলছে, বিয়ে সঠিক হয়েছে। আর কেউ বলছে, সঠিক হয়নি। দয়া করে সঠিক সিদ্ধান্ত জানিয়ে উপকৃত করবেন।
উল্লেখ্য, তারা এ অবস্থায় কয়েক বছর যাবত সংসার করছে।
দুধ সম্পর্কীয় ভাতিজির মেয়ে মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। তার সাথে বিয়ে জায়েয নয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত বিয়েটি সঠিক হয়নি। তাদের এখনি পৃথক হয়ে যাওয়া জরুরি এবং এত দিন অবৈধভাবে থাকার কারণে তাওবা-ইস্তিগফার করা জরুরি।
-সহীহ মুসলিম ১/৪৬৬; আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১৯৯; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৯৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৯৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৫; রদ্দুল মুহতার ৩/৩১
শুধু পানি দিয়ে বড় ইস্তিঞ্জা করার হুকুম কী? যদি ঢিলা...
শুধু পানি দিয়ে বড় ইস্তিঞ্জা করার হুকুম কী? যদি ঢিলা থাকা সত্ত্বেও শুধু পানি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করে তাহলে পবিত্রতার ক্ষেত্রে কোনো ক্ষতি হবে কি না?
ঢিলা-কুলুখ বা টয়লেট টিস্যু থাকা সত্ত্বেও ইস্তিঞ্জায় শুধু পানি ব্যবহার করে পবিত্রতা অর্জন করা জায়েয। তবে প্রথমে ঢিলা বা কুলুখ ব্যবহার করে এরপর পানি ব্যবহার করা উত্তম।
-আলবাহরুর রায়েক ১/২৪১; ফাতহুল কাদীর ১/১৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৩৬
আমার একটি ইলেক্ট্রনিক্স দোকান আছে। তাতে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য ওয়ারেন্টি...
আমার একটি ইলেক্ট্রনিক্স দোকান আছে। তাতে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য ওয়ারেন্টি ও গ্যারান্টির সাথে বিক্রি করি। এখন জানার বিষয় হল, এভাবে ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টির শর্তে বিক্রি করা জায়েয হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।
ওয়ারেন্টি ও গ্যারান্টির শর্তে ক্রয়-বিক্রয় করা এবং এর দ্বারা উপকৃত হওয়া উভয়টি জায়েয। এটি পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য একটি সহায়ক শর্ত।
-আদ্দুররুল মুখতার ৫/৮৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/৩৮৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩৮০; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ১/৬৩৫
আমার একটি ইলেক্ট্রনিক্স দোকান আছে। তাতে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য ওয়ারেন্টি...
আমার একটি ইলেক্ট্রনিক্স দোকান আছে। তাতে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য ওয়ারেন্টি ও গ্যারান্টির সাথে বিক্রি করি। এখন জানার বিষয় হল, এভাবে ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টির শর্তে বিক্রি করা জায়েয হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।
ওয়ারেন্টি ও গ্যারান্টির শর্তে ক্রয়-বিক্রয় করা এবং এর দ্বারা উপকৃত হওয়া উভয়টি জায়েয। এটি পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য একটি সহায়ক শর্ত।
-আদ্দুররুল মুখতার ৫/৮৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/৩৮৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩৮০; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ১/৬৩৫
আমার এক মুরববী অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু কোনো চিকিৎসা নিতে...
আমার এক মুরববী অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু কোনো চিকিৎসা নিতে চান না। তাঁর কথা হল, চিকিৎসা নেওয়া তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী। অথচ তার রোগের উন্নত ও শরীয়তসম্মত চিকিৎসা রয়েছে। জানতে চাই, শরীয়তে চিকিৎসা গ্রহণের বিধান কী? চিকিৎসা গ্রহণ করা কি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী?
অসুস্থ হলে চিকিৎসা নেওয়া জায়েয। এটি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়। কারণ তাওয়াক্কুল হল, এই বিশ্বাস রাখা যে, উপায়-উপকরণ আল্লাহরই সৃষ্টি এবং তা আল্লাহর আদেশেই কাজ করে। তাই ফলাফলের জন্য আল্লাহর উপরই ভরসা করতে হবে। আল্লাহ যদি ইচ্ছা করেন তাহলে সুস্থতা আসবে অন্যথায় নয়। হাদীসে আছে, প্রতিটি রোগের চিকিৎসা রয়েছে। যখন রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয় তখন আল্লাহ তাআলার হুকুমে আরোগ্য লাভ হয়।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৬৯৭
আর স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন এবং অন্যদেরকেও চিকিৎসা গ্রহণ করতে বলেছেন সেখানে একে তাওয়াক্কুলের পরিপন্থি মনে করা আদৌ ঠিক নয়। এ সম্পর্কিত কিছু হাদীস-আছার নিম্নে পেশ করা হল।
হযরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলাই রোগ ও ঔষধ সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেক রোগের চিকিৎসাও তিনি সৃষ্টি করেছেন। অতএব তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ কর।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩৮৬৪
হযরত উসামা ইবনে শুরাইক বলেন, কতিপয় মরুবাসী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা কি অসুস্থ হলে চিকিৎসা নিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। আল্লাহর বান্দারা! তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ করো।-জামে তিরমিযী
এক আনসারী সাহাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আহত ব্যক্তিকে দেখতে গেলেন। দেখে বললেন, তার জন্য অমুক গোত্রের চিকিৎসককে ডেকে আন।-মুসনাদে আহমদ ৫/৩৭১
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিঙা লাগিয়েছেন এবং নাকে বিশেষ ঔষধ দিয়েছেন যেন হাঁচির মাধ্যমে রোগ সেরে যায়।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৬৯১
এছাড়া আরো অনেক হাদীস রয়েছে। এসব হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, চিকিৎসা গ্রহণ করা জায়েয এবং এটি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়।
-আসসিয়ারুল কাবীর ১/৯২; শরহুন নববী ২/২২৫; ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ১৮/১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৮০; আযযাখীরাহ ১২/৩০৭; আহকামুল আদবিয়্যিহ ৩৫; বাসায়িরে হাকীমুল উম্মত ৩৭১; আলমাওসূআতুল ফিকহিয়্যা ১১/১১৬
আমাদের বাসায় কাজের লোক কাজ করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে কাঁচের গ্লাস,...
আমাদের বাসায় কাজের লোক কাজ করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে কাঁচের গ্লাস, কাপ ইত্যাদি ভেঙ্গে ফেলে। এ কারণে তাদের উপর ক্ষতিপূরণ আরোপ করা যাবে কি?
কাজের লোক ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো বস্ত্ত নষ্ট করলে কিংবা তার কোনো ত্রুটির কারণে নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ নেওয়া বৈধ। কিন্তু নষ্ট হওয়ার পিছনে যদি তার ত্রুটি না থাকে তবে ক্ষতিপূরণ নেওয়া জায়েয হবে না। বিখ্যাত তাবেয়ী মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন রাহ. শ্রমিকের উপর ঐ সময় ক্ষতিপূরণ আরোপ করতেন যখন শ্রমিকের ত্রুটি প্রমাণিত হত।
-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২০৮৬৭; শরহুল মাজাল্লাহ ২/৬০১, ৬০৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৭০
আমি মাদরাসার ছাত্র। লাইব্রেরী থেকে অনেক খন্ডের একটি কিতাব ক্রয়...
আমি মাদরাসার ছাত্র। লাইব্রেরী থেকে অনেক খন্ডের একটি কিতাব ক্রয় করেছি। ক্রয়ের সময় বিক্রেতা বলেছিলেন-ভালোভাবে দেখে নিন। কোন খন্ডে সমস্যা থাকলে অন্য সেট নিন। নিয়ে যাওয়ার পর কোনো সমস্যা বের করে নিয়ে আসলে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে না। সময়ের সল্পতার দরুন সবকটি খন্ড ভালোভাবে দেখতে পারিনি। নিয়ে আসার একদিন পর সবকটি খন্ড ভালোভাবে দেখলাম তাতে দুটি খন্ডের তিন-চারটি পৃষ্ঠা কিছু ছিড়া ও একটি খন্ডের এক পার্শের বাইন্ডিং ছোট পেলাম। প্রশ্ন হল, উক্ত খন্ডগুলোর ত্রুটির কারণে এ সেটটি ফেরত দিয়ে অন্য সেট আনতে পারব কি না?
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী কিতাব বিক্রেতা যেহেতু বিক্রির সময় এ কথা বলেই বিক্রি করেছে যে, এখন ভালোভাবে দেখে নিন, ক্রয়ের পর কোনো ত্রুটি পেলে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে না। আর আপনি সে কথা মেনে নিয়েই তা ক্রয় করেছেন তাই এখন কিতাবগুলোতে কোনো ত্রুটি থাকলেও তা ফেরত বা পরিবর্তনের অধিকার আপনার নেই। তবে বিক্রেতা যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরিবর্তন করে দেয় তাহলে তা গ্রহণ করা আপনার জন্য জায়েয এবং তার জন্য এমনটি করা সহানুভূতি বলে বিবেচিত হবে।
-মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ ৩৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৫৪৮; আলবাহরুর রায়েক ৬/৬৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৭৯৪; রদ্দুল মুহতার ৫/৪২; ইতরুল হেদায়া, পৃ. ১০৮
আমাদের এলাকায় কয়েক বিঘা জমি নিয়ে চিংড়ি মাছের ঘের করা...
আমাদের এলাকায় কয়েক বিঘা জমি নিয়ে চিংড়ি মাছের ঘের করা হয়। সেখানে মাছ চাষ করা হয়। আর ঘেরের উপর মুরগীর ফার্ম তৈরি করা হয়। মুরগীর বিষ্ঠা ঐ মাছের খাদ্য। প্রশ্ন হল, ঐ মাছের হুকুম কী? তা কী হালাল? জানিয়ে বাধিত করবেন।
চিংড়ি মাছের চাষ করা হয় অনেক বড় জায়গাজুড়ে বেশি পানিতে। তাই মুরগীর বিষ্ঠা খাওয়ালেও মাছের মধ্যে কোনো দুর্গন্ধ হয় না এবং তার স্বাদও পরিবর্তন হয় না। সুতরাং এই চাষের চিংড়ি খাওয়া জায়েয। বিষ্ঠা খাওয়ানোর কারণে চাষের মাছ খাওয়া নিষিদ্ধ হবে না।
-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৪৩২, হাদীস : ২৫০৯৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৪৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০৬, ৩৪০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৯; মুগনীল মুহতাজ ৪/৩৮৪; হাওয়াশি শারওয়ানী ১২/৩২১; আযযখীরাহ ৪/১০৪; আলমুগনী ১৩/৩২৮
ছেলেদের সামনের চুল বড় রেখে পিছনের চুল ছোট রাখা কিংবা...
ছেলেদের সামনের চুল বড় রেখে পিছনের চুল ছোট রাখা কিংবা সম্পূর্ণ মাথার চুল সমান রেখে সাইডে ক্ষুর দিয়ে কাটা জায়েয আছে কি?
মাথার সামনের দিকে চুল বড় রেখে পিছন বা মাথার পাশের চুল ছোট করে রাখা যদিও নাজায়েয নয় তবে তা নেক লোকদের রীতিবিরোধী। তাই এ থেকে বিরত থাকা উচিত। (কিতাবুত তারাজ্জুল, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল ৭৭; বাযলুল মাজহূদ ১৭/৮৩)
আর পুরো মাথার চুল সমান করে কেটে ঘাড় ও কানের পাশের চুলের মাথা সমান করার জন্য ক্ষুর ব্যবহার করার অবকাশ আছে। (ফাতহুল বারী ১০/৩৭৮; তালিফাতে রশীদিয়া ৪৮৪; ইমদাদুল আহকাম ৪/৩৩৪)
উল্লেখ্য, চুলের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করা যেতে পারে। ১. বাবরি চুল রাখা। অর্থাৎ কানের লতি পর্যন্ত ঘাড়ের অর্ধেক পর্যন্ত, অধিক লম্বা হয়ে গেলে কাধের কাছাকাছি পর্যন্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় বাবরি চুল রেখেছেন।
২. পুরো মাথার চুল মুন্ডিয়ে ফেলা।
৩. পুরো মাথার চুল সমানভাবে ছোট করে রাখা।
শাশুড়ির মামার সাথে দেখা সাক্ষাত করা যাবে কি?
শাশুড়ির মামার সাথে দেখা সাক্ষাত করা যাবে কি?
শাশুড়ির মামা মাহরাম নয়। তাই তার সাথে দেখা সাক্ষাত করা জায়েয হবে না।
সূরা নিসা : ২২-২৪; তাফসীরে কুরতুবী ৫/১০৩; তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৭১১; আলমুফাসসাল, মাদ্দাহ : ৫৪৫২
ময়ুরের গোশত খাওয়া জায়েয আছে কি?
ময়ুরের গোশত খাওয়া জায়েয আছে কি?
হ্যাঁ, ময়ুর হালাল প্রাণী এবং এর গোশত খাওয়া হালাল।
ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪১৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৫৫; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৩২৭; আশশারহুল কাবীর ৬/৩৮; আযযখীরা ৪/১০৫; হায়াতুল হায়াওয়ান ৩/৫-১৫; আলমুহাল্লা বিলআছার ৬/৮৪; আপকে মাসায়েল আওর উনকা হাল ৪/২৫৩
আমাদের এলাকায় অনেকে ছুরি বা দা দিয়ে রাতে মাছ শিকার...
আমাদের এলাকায় অনেকে ছুরি বা দা দিয়ে রাতে মাছ শিকার করে। অর্থাৎ জমির পানিতে মাছ দেখলে ছুরি দিয়ে মাছের শরীরে আঘাত করে। অনেক সময় ছুরির কোপে মাছ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। এভাবে মাছ শিকার করা এবং তা খাওয়া জায়েয আছে কি?
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে মাছ শিকার করা জায়েয এবং তা খাওয়া বৈধ।
সুনানে আবু দাউদ ১/১৯; মুসনাদে আহমদ ২/২৩৭; আলমুগনী ১৩/২৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৪২৮
আমার এক বন্ধু একটি রোপার আংটি দিয়েছে যার উপর হীরার...
আমার এক বন্ধু একটি রোপার আংটি দিয়েছে যার উপর হীরার পাথর লাগানো আছে। আমর জানার বিষয় হল, পুরুষের জন্য কি হীরার ঐ আংটি ব্যবহার করা জায়েয আছে? দয়া করে জানিয়ে উপকার করবেন।
হ্যাঁ, হীরার পাথর বিশিষ্ট রোপার আংটি ব্যবহার করা পুরুষের জন্যও জায়েয।
-জামে তিরমিযী ৪/২১৮; আলজামিউস সগীর ৪৭৭; হিদায়া (ফাতহুল কাদীর) ৮/৪৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৫০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৩৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৭০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৬০
আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত পুরাতন কবরস্থান রয়েছে। তাতে ১০...
আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত পুরাতন কবরস্থান রয়েছে। তাতে ১০ থেকে ৩০ বছরের পুরানো কবর আছে। এখন আমি সেখানে বাড়ি নির্মাণ করতে চাচ্ছি। এটি ছাড়া বাড়ি করার উপযোগী আর কোনো স্থান নেই। জানার বিষয় হল, সে স্থানে বাড়ি করতে শরীয়তের কোনো নিষেধ আছে কি না?
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ কবরস্থানটি যেহেতু অধিক পুরাতন এবং আপনাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন তাই কবরগুলো সমান করে দিয়ে তাতে বাড়ি নির্মাণ করা জায়েয হবে।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩৮
আমি একটি প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষক। আমার একটি কারখানাও রয়েছে। মাঝে...
আমি একটি প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষক। আমার একটি কারখানাও রয়েছে। মাঝে মধ্যে ব্যস্ততার কারণে স্কুলে ক্লাস নিতে যেতে পারি না। তখন আমার ছোট ভাইকে (বি.এ অনার্স) ক্লাস নিতে পাঠাই। প্রশ্ন হল, আমার ভাইকে দিয়ে ক্লাস করালে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা আছে কি না?
স্কুল কর্তৃপক্ষ যেহেতু আপনাকে নিয়োগ দিয়েছে তাই আপনাকেই ক্লাস নিতে হবে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত ভাই বা অন্য কাউকে দিয়ে ক্লাস করানো জায়েয হবে না এবং এর দ্বারা আপনি দায়িত্বমুক্ত হতে পারবেন না। অবশ্য স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি আপনার অপারগতায় আপনার ভাইকে ক্লাস করার অনুমতি দেয় তবে তাকে দিয়ে ক্লাস করানো বৈধ হবে।
-শরহুল মাজাল্লা খালেদ আতাসী ২/৬৭১, মাদ্দাহ ৫৭১; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/১৮
কোনো জিনিষ ক্রয়ের পুর্বে তা থেকে কিছু খেয়ে দেখার বিধান ৷
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস: ২২৫৪৬; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৯/১৭৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
যুবকের অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে চুল-দাড়ি পেকে গেলে কালো খেযাব ব্যবহার করা ৷
তবে হাদীসে যেহেতু কালো খেযাবকে বিশেষভাবে নিষেধ করা হয়েছে তাই আপনার জন্যও একেবারে কালো খেযাব ব্যবহার না করে লাল কালো মিশ্রিত খেযাব ব্যবহার করা উত্তম।
-ফাতহুল বারী ১০/৩৬৭; হাশিয়া সহীহ বুখারী ১/৫৩০; তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/১৫৪; ফায়যুল কাদীর ১/৩৩৬; ইমদাদুল আহকাম ৩/৩৭৬ ৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
গ্যারান্টি ওয়ারেন্টির শর্তে পন্য ক্রয়-বিক্রয় ও নির্ধারিত সময়ের ভিতরে পন্য ফেরত বা ঠিক করে দেয়া ৷
-তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৬৩৫ ;শরহুল মাজাল্লাহ ২/৬৪; রদ্দুল মুহতার ৫/৮৮ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
চুল ও দাড়িতে খেজাব লাগানো ৷
কিন্তু চুল কালো করার জন্য ঘুর কালো খেজাব ব্যবহার করা জায়েয নয় ৷ তবে মুজাহিদের জন্য নিজেকে শত্রুদের সামনে যুবক প্রদর্শনার্থে জায়েয আছে ৷
-আবু দাউদ শরীফ-২/৫৭৮; বজলুল মাজহুদ-৫/৮০; ফাতওয়ায়ে শামী-৯/৬০৪; ফাতওয়ায়ে আলমগীরী- ৫/৩৫৯; ইমদাদুল ফাতওয়া-৪/২১৪৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
বাথরুমে হাই কমোড বানানো ও হাই কমোডে পেশাব পায়খানা করা ৷
তিরমিযি শরীফ, হাদীসঃ ১২; রদ্দুল মুহতার ১/৩১; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/৫০; জাদিদ ফিক্বহী মাসায়েল-১/৫৭৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
হালাল-হারাম মিশ্রিত মালের তৈরি ঘর ব্যবহার ৷
মাবসূত সারাখসী ১০/১৯৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪২৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393
দাড়ি রাখা, দাড়ি কাটা ও এক মুষ্ঠির পরিমান ৷
সহীহ বুখারী হাদীস : ৫৮৯২;উমদাতুল কারী ২২/৪৭; ফাতহুল বারীস১০/৩৬২ ; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪০৭; ফাতহুল মুলহিম ১/৪২১ ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৮; ৮/২০৪৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393
কুইজ প্রতিযোগিতা ও লটারির মাধ্যমে পুরুষ্কার বিতরন৷
১৷ কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা কি জায়েয?
২৷ সঠিক উত্তর দাতা বেশি হয়ে গেলে তাদের মাঝে লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত পরিমান বিজয়ীকে যেমন তিন দনকে পুরুষ্কার দেয়া হয়৷ এটা কি শরীয়তসম্মত?
২৷ প্রতিযোগিদের মাঝে লটারির মাধ্যমে পুরুষ্কার বিতরন করাও শরীয়তসম্মত৷
তবে যদি প্রতিযোগিদের থেকে কুইজ বিক্রি করে ন্যায্য মূল্যের চেয়ে বেশি নেয় বা কুইজের মূল্য দিয়ে পুরুষ্কার প্রদানের উদ্যেশ্য হয়, তাহলে তা বৈধ হবে না৷ কেননা তা জুয়া হিসেবে গন্য হবে৷ যা সম্পুর্ন হারাম৷
মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ৫/২৮৮; মাবসূত লিস সারাখসী ৫/২১; রদ্দুল মুহতার ৭/১১; ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া ৩/৪১৮; জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/৩৪৩৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া
01756473393
পুরুষের জন্য হীরার পাথর বিশিষ্ট রোপার আংটি ব্যবহার করা৷
ঢিলা বা টয়লেট টিস্যু থাকা সত্বেও শুধু পানি দিয়ে ইস্তিঞ্জা করা৷
কি না?
01756473393
কোন প্রতিষ্ঠানে নিজের দায়িত্ব অন্যকে দিয়ে করানো৷
এবং এর দ্বারা আপনি দায়িত্বমুক্ত হতে পারবেন না।
অবশ্য স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি আপনার অপারগতায়
আপনার ভাইকে ক্লাস করার অনুমতি দেয় তবে তাকে দিয়ে ক্লাস করানো বৈধ হবে।
-শরহুল মাজাল্লা খালেদ আতাসী ২/৬৭১, মাদ্দাহ
৫৭১; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/১৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
আমরা জানি, গোবর নাপাক। কিন্তু আমাদের এলাকার লোকেরা গোবর জমা...
করে তা বিক্রি করে। হুজুরের কাছে জানতে চাই, এভাবে নাপাক বস্তুর
বেচাকেনা বৈধ কি না?
ও মাটির সার হিসেবে তা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই গোবর বেচাকেনা করা জায়েয।
-আলজামিউস সগীর ৪৮০; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৩৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১০২; আদ্দুররুল মুখতার
৬/৩৮৫
বাথরুমে একাকী গোসল করার সময় অনাবৃত হওয়া যাবে কি না?
একেবারে পুরো শরীর খুলে ফেলা অনুত্তম।
সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৮; উমদাতুল কারী ৩/২২৮; শরহুল মুনইয়াহ ১/৫১; ইলাউস সুনান ২/১৭০; রদ্দুল মুহতার
১/৪০৪
আমি একটি প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষক। আমার একটি কারখানাও রয়েছে। মাঝে...
কি না?
আমি একটি প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষক। আমার একটি কারখানাও রয়েছে। মাঝে...
কি না?
আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত পুরাতন কবরস্থান রয়েছে। তাতে ১০...
আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত পুরাতন কবরস্থান রয়েছে। তাতে ১০...
বর্তমানে দেখা যায়, বরপক্ষের না বলার পরও কনেপক্ষ ফার্নিচার ইত্যাদি...
ইত্যাদি দিয়ে থাকে। তাই জানার বিষয় হল, এসব আসবাবপত্র গ্রহণ করা
জায়েয হবে কি?
তবে বরপক্ষের দাবি কিংবা চাপের কারণে
অথবা সামাজিক প্রচলনের কারণে বাধ্য হয়ে কোনো কিছু দিলে তা গ্রহণ করা জায়েয হবে না।
-মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৫৪৮৮; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৪৮-৩৫৩
বর্তমানে অনেক পণ্যের সাথে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য গ্যারান্টি দিয়ে থাকে।...
মেয়াদের জন্য গ্যারান্টি দিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট
সময়ের আগে যদি ঐ জিনিস নষ্ট হয়ে যায় এক্ষেত্রে ক্রেতা কোনো শর্ত লঙ্ঘন না
করলে গ্যারান্টি কার্ডের সাথে ঐ পণ্য নিয়ে
গেলে তা ফেরত নিয়ে নতুন পণ্য দেয়। এবং এক্ষেত্রে বিক্রেতা দিতে বাধ্য থাকে।
আবার অনেক পণ্য ক্রয় করলে নির্দিষ্ট সময়ের
জন্য ওয়ারেন্টি দিয়ে থাকে। তখন নির্দিষ্ট
সময়ের পূর্বে ঐ জিনিস নষ্ট হয়ে গেলে শর্তসাপেক্ষে তা ঠিক করে দেয়।
জানার বিষয় হল, গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টির শর্তে
ক্রয়বিক্রয় করা জায়েয কি না? আর এক্ষেত্রে
বিক্রেতা নতুন পণ্য দেওয়া বা পুরাতন পণ্য ঠিক
করে দেওয়ার ব্যাপারে বাধ্য থাকবে কি না?
করা জায়েয আছে। অতএব এ ধরনের পণ্যে
কোনো ত্রুটি দেখা দিলে গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টির
শর্ত অনুযায়ী বিক্রেতা নতুন পণ্য দিতে বা পুরাতন
পণ্য ঠিক করে দিতে বাধ্য থাকবে। উল্লেখ্য
যে, ক্রয়-বিক্রয়ের সময় গ্যারান্টি বা ওয়ারেন্টির
শর্তাবলি ও নিয়মাবলি সম্পূর্ণভাবে লিখে উভয় পক্ষ
স্বাক্ষর করে নিতে হবে। যেন পরবর্তীতে এ নিয়ে কোনো ঝগড়া বা বিতর্ক না হয়।
শরহুল মাজাল্লাহ ২/৬৪, মাদ্দাহ : ১৮৮; রদ্দুল মুহতার
৫/৮৮; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ১/৬৩৫
স্বর্ণের চামচ ও রূপার গ্লাস ব্যবহার করা কি জায়েয আছে?...
আমাদের গ্রামে লোকেরা সাধারণত গাছ থেকে সুপারি পাড়ায় এ শর্তে...
সুপারি পেড়ে দিলে দু গণ্ডা সুপারি দেওয়া হবে।
এক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুম কী?
তবে এক্ষেত্রে তার পাড়া সুপারি থেকেই বিনিময়
দেওয়া হবে এমন শর্ত করা যাবে না এবং বিনিময়
হিসেবে কোন মানের সুপারি দেওয়া হবে তা আগেই
ঠিক করে নিতে হবে। অবশ্য পাড়া সুপারি থেকে দেওয়ার শর্ত না করা হলে পরবর্তীতে ঐ সুপারি থেকেও পারিশ্রমিক দেওয়া যাবে। -আলমুহীতুল বুরহানী ১১/৩৩৮; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ২/৫৩৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/১১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২৯-৩৩০
পবিত্র অবস্থায় তাওয়াফে যিয়ারাহ আদায় করার পর জনৈকা মহিলার হায়েয...
করার পর জনৈকা মহিলার হায়েয শুরু হয়ে যায়।
ফলে সে অপবিত্র অবস্থায় সায়ী করে। উক্ত মহিলার সায়ী কি আদায় হয়েছে? এই জন্য কি তাকে দম দিতে হবে?
আমাদের বাড়ির পাশে রাস্তায় এক ব্যক্তি বিভিন্ন ধরণের বড়ই বিক্রি...
নয়।
এখন তার থেকে বড়ই কেনার পূর্বে ভালো-মন্দ, টক- মিষ্টি ইত্যাদি যাচাই করার জন্য তা থেকে কি খেয়ে দেখতে পারব? কেননা টক বা মন্দ হলে সেক্ষেত্রে তো আমি তার কাছ থেকে কিনব না। এ অবস্থায় তার তো এক দুইটা বড়ই বিনা মূল্যেই চলে গেল।
আমি একটি হাইস্কুলের ধর্মীয় শিক্ষক। এ হাই স্কুলে অনেক হিন্দু...
স্কুলে অনেক হিন্দু ছাত্রও আছে। বিভিন্ন সময় দেখা-সাক্ষাতে হিন্দু ছাত্ররা আমাকে সালাম দেয়। প্রশ্ন হল,
তাদের সালামের জওয়াব দেওয়া কি জায়েয হবে?
ওয়া আলাইকুম বলা যাবে। পুরো উত্তর দেওয়া যাবে না। -সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬২৫৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/২০; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৫; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১২