মহিলারা যদি রমযান মাসে কোনো ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ...
মহিলারা যদি রমযান মাসে কোনো ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখে তাহলে ওই দিনগুলোতে রোযা রাখতে পারবে কি না এবং এতে রোযার কোনো ক্ষতি হবে কি না?
রমযান মাসে কোনো মহিলা ওষুধ খেয়ে স্রাব বন্ধ রাখলে ওই দিনগুলোতেও তাকে রোযা রাখতে হবে। তার এ রোযাগুলো ত্রুটিযুক্ত হবে না; বরং পূর্ণ সহীহ বলেই গণ্য হবে।
উল্লেখ্য, ঋতুস্রাব মহিলাদের স্বভাবজাত বিষয়। এ অবস্থায় রোযা না রাখার বিধান রয়েছে এবং এর পরিবর্তে অন্য সময় রোযা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং রমযানে স্রাব বন্ধকারী ওষুধ ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। কেননা রমযানে ¯্রাবের কারণে রোযা না রাখলেও শরীয়তের কোনো বিধান লঙ্ঘন হয় না। উপরন্তু ঔষধ ব্যবহারে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শারীরিক ক্ষতির আশংকা থাকে। তাই এ থেকে বিরত থাকাই উচিত।
-জামিউ আহ্কামিন নিসা ১/১৯৮; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৮/১৩৬
আম্মুকে দেখেছি ঋতুস্রাবের দিনগুলোতেও বিভিন্ন মাসনুন দুআ পড়েন। মাঝেমধ্যে অল্পস্বল্প...
আম্মুকে দেখেছি ঋতুস্রাবের দিনগুলোতেও বিভিন্ন মাসনুন দুআ পড়েন। মাঝেমধ্যে অল্পস্বল্প তাসবিহও পড়েন। আম্মুর দেখাদেখি আমরাও এ সময়গুলোতে মাসনুন দুআসমূহ আদায় করি। কিন্তু একজন বলল, মেয়েদের জন্য এ সময়ের দুআ-দরূদ পড়া কিংবা যিকির-আযকার করা কোনোটিই জায়েয নেই। তাই বিষয়টির সমাধান জানতে চাই।
ঐ লোকের কথা ঠিক নয়। মাসিক স্রাবের দিনগুলোতে নারীগণ দুআ-দরূদ, যিকির-আযকার, তাসবীহ-ইস্তিগফার সবই করতে পারবে। তবে এ অবস্থায় কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত করা যাবে না। এক বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ مَعْمَرٍ قَالَ: سَأَلْتُ الزُّهْرِيَّ، عَنِ الْحَائِضِ وَالْجُنُبِ أَيَذْكُرَانِ اللَّهَ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْتُ: أَفَيَقْرَآنِ الْقُرْآنَ؟ قَالَ: لَا.
মা‘মার রাহ. বলেন, আমি যুহরী রাহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ঋতুমতী নারী ও যার উপর গোসল ফরয হয়েছে সে আল্লাহর যিকির করতে পারবে? তিনি বললেন, হাঁ, পারবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারবে? তিনি বললেন, না। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৩০২
عَنْ إِبْرَاهِيمَ قَالَ: الْحَائِضُ وَالْجُنُبُ يَذْكُرَانِ اللَّهَ وَيُسَمِّيَانِ.
ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ঋতুমতী নারী ও যার উপর গোসল ফরয হয়েছে সে আল্লাহর যিকির করতে পারবে এবং বিসমিল্লাহও পড়তে পারবে।
-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৩০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১৬৫; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ৭৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৩
আমার বয়স যখন ১৭ বছর ছিল তখন রমযানের একটি রোযা...
আমার বয়স যখন ১৭ বছর ছিল তখন রমযানের একটি রোযা রেখে ভেঙ্গে ফেলেছিলাম। রোযা ভাঙ্গার শরীয়তসম্মত কোনো ওজর ছিল না। এখন আমি সে রোযার কাফফারা আদায় করতে চাচ্ছি। কিন্তু সমস্যা হল, আমাদের জন্য তো ধারাবাহিক ষাটটি রোযা রাখা সম্ভব নয়। কারণ প্রতিমাসেই ছয়-সাতদিন ঋতুস্রাব হয়। এখন আমার করণীয় কী?
কাফফারার রোযা আদায়ের ক্ষেত্রে মহিলারা তাদের ঋতুস্রাবের দিনগুলো বাদ দিয়ে ধারাবাহিকভাবে ষাটটি রোযা পূর্ণ করবে। মাসিকের দিনগুলোতে রোযা না রাখার কারণে ধারাবাহিকতা ভঙ্গ হবে না। তবে কাফফারার রোযা শুরু করার পর ঋতুস্রাবের দিনগুলো ছাড়া ষাটদিন পূর্ণ হওয়ার আগে কোনো দিন যদি রোযা ছুটে যায় তাহলে কাফফারা আদায় হবে না। সেক্ষেত্রে নতুন করে ধারাবাহিকভাবে আবার ষাটটি রোযা রাখতে হবে।
-কিতাবুল আছার, ইমাম আবু ইউসুফ, হাদীস ৭৯৮; কিতাবুল আছল ২/১৬০; মাবসূত, সারাখসী ৩/৮১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭
আমাদের এক আত্মীয়ার বিবাহ হয় গত বছর। মেয়েটির গর্ভে সন্তান...
আমাদের এক আত্মীয়ার বিবাহ হয় গত বছর। মেয়েটির গর্ভে সন্তান আসার পর তার স্বামী তাকে তালাক দিয়ে দেয়। এ দুঃখে ও ক্ষোভে মেয়েটি ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তার গর্ভস্থ সন্তানকে নষ্ট করে দেয়। এখন সে ইদ্দত কীভাবে পালন করবে? এই গর্ভপাতের দ্বারা কি ইদ্দত শেষ হয়ে গেছে? নাকি ঋতুস্রাবের মাধ্যমে ইদ্দত পালন করতে হবে?
গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন, হাত-পা, নখ, চুল ইত্যাদি হয়ে থাকলে তা ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ফেলে দিলেও ইদ্দত পূর্ণ হয়ে যায়।
عَنِ الْحَارِثِ، أَنَّهُ قَالَ فِي الْمُطَلَّقَةِ، وَالْمُتَوَفَّى عَنْهَا، إِذَا رَمَتْ بِوَلَدِهَا قَبْلَ أَنْ يَتِمَّ خَلْقُهُ، قَالَ: إِذَا اسْتَبَانَ مِنْهُ شَيْءٌ حَلَّتْ لِلزَّوْجِ.
তালাকপ্রাপ্তা এবং স্বামী মৃত্যুবরণ করেছে এমন মহিলা যদি তার গর্ভস্থ সন্তানের আকৃতি পূর্ণতা লাভ করার আগে তা ফেলে নষ্ট করে তার সম্পর্কে তাবেয়ী হারেস রাহ. বলেন, তার যদি কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়ে থাকে তাহলে ঐ মহিলা (র ইদ্দত পূর্ণ হয়ে যাবে এবং সে) অন্য স্বামীর জন্য হালাল হয়ে যাবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৯৬২৩
আর গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ না হয়ে থাকলে তা ফেলে দেওয়ার দ্বারা ইদ্দত পূর্ণ হবে না। এক্ষেত্রে তাকে নতুন করে তিনটি পূর্ণ ঋতুস্রাবের মাধ্যমে ইদ্দত পালন করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হোক বা না হোক মায়ের মৃত্যু বা শারীরিক মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা ছাড়া গর্ভ নষ্ট করে ফেলা নাজায়েয। আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়ে গেলে এবং রূহ সঞ্চার হওয়ার পর হলে তা নষ্ট কর ফেলা আরো বড় গুনাহ এবং মানুষ হত্যার শামিল। জেনে রাখা দরকার যে, তালাক হয়ে যাওয়ার কারণে গর্ভ নষ্ট করা বৈধ হয়ে যায় না।
-বাদায়েউস সানায়ে ১/১৬১; আলবাহরুর রায়েক ১/২১৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৭৬
আমার প্রতিবেশী এক লোক এক মাস আগে কাদিয়ানী হয়ে গেছে।...
আমার প্রতিবেশী এক লোক এক মাস আগে কাদিয়ানী হয়ে গেছে। নাউযুবিল্লাহ। তার স্ত্রী ও এলাকার লোকজন তাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছে। তবুও সে ইসলামে ফিরে আসেনি। তখন স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যায়। এখন তার স্ত্রী জানতে চায়, স্বামী কাদিয়ানী হয়ে যাওয়ার কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক কি ছিন্ন হয়ে গেছে? যদি তাই হয় তাহলে সে অন্যত্র বিবাহ করতে চাইলে তার করণীয় কী? তাকে ইদ্দত পালন করতে হবে কি না? ইদ্দত পালন করতে হলে কীভাবে পালন করবে?
কাদিয়ানী স¤প্রদায় কাফের। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ব্যক্তি কাদিয়ানী হয়ে যাওয়ার কারণে সে মুরতাদ ও কাফের হয়ে গেছে। এবং কাদিয়ানী হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কও ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন স্ত্রীকে তালাকের ইদ্দতের মতো ইদ্দত পালন করতে হবে। অর্থাৎ সে অন্তঃসত্ত¡া হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত আর ঋতুমতী হলে পূর্ণ তিনটি ঋতুস্রাব শেষ হওয়া পর্যন্ত ইদ্দত পালন করতে হবে। ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে সে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এর আগে অন্যত্র বিবাহ করা বৈধ হবে না।
Ñআলমাবসূত ৫/৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৯৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৬৫৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/১৯৫ আলহীলাতুন নাজিযা ১৮১
মহিলাদের অপবিত্রতার সময় তিলাওয়াতের নিয়ত ব্যতীত দলিল পেশ করার উদ্দেশ্যে...
মহিলাদের অপবিত্রতার সময় তিলাওয়াতের নিয়ত ব্যতীত দলিল পেশ করার উদ্দেশ্যে এক শ্বাসে অথবা শ্বাস ছেড়ে ছেড়ে একাধিক আয়াত একসাথে পড়া যাবে কি?
না, হায়েয বা নেফাস অবস্থায় দলিল-প্রমাণ পেশ করার উদ্দেশ্যেও এক শ্বাসে বা শ্বাস ছেড়ে ছেড়ে কুরআনের কোনো আয়াত পড়া যাবে না। কেননা হায়েয-নেফাস অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করা জায়েয নয়। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন,ঋতুমতি মহিলা ও গোসল ফরয হয়েছে এমন ব্যক্তি যেন কুরআন মাজীদ না পড়ে।
Ñআল ইলাল, ইবনে আবী হাতিম ১/৪৯; রদ্দুল মুহতার ১/২৯৩
আজকাল অনেক মহিলার সিজারের মাধ্যমে সন্তান হয়। সন্তান পরবর্তী যে...
আজকাল অনেক মহিলার সিজারের মাধ্যমে সন্তান হয়। সন্তান পরবর্তী যে স্রাব দেখা যায় তা কি নেফাসের রক্ত হিসেবে গণ্য হবে?
সন্তান স্বাভাবিক নিয়মে ভূমিষ্ট হোক বা সিজার করে হোক এরপর মহিলার যে রক্তস্রাব আসে তা নেফাস বলেই গণ্য হবে।
-আলবাহরুর রায়েক ১/২১৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৯
আমার প্রতিবেশী সাদেক তার স্ত্রী সুহানাকে বিভিন্ন কারণে একের পর...
আমার প্রতিবেশী সাদেক তার স্ত্রী সুহানাকে বিভিন্ন কারণে একের পর এক তিন তালাক দেয়। তৃতীয় তালাক দেওয়ার পর ইদ্দতের ভেতরেই সুহানাকে আশিক বিয়ে করে। সুহানা বিশ দিন যাবত আশিকের কাছে ছিল। এবং তাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীসূলভ আচরণও হয়। বিশ দিন পর আশিক সুহানাকে তালাক দিয়ে দেয়। পরে আশিক জানতে পারে যে, সুহানার সাথে তার বিবাহ ইদ্দতের ভেতরেই সংগঠিত হয়েছিল। জানার বিষয় হল, সুহানার সাথে আশিকের এই বিবাহ কি শুদ্ধ হয়েছিল? যদি শুদ্ধ না হয় তাহলে এখন মহিলাটি ইদ্দত পালন করবে কীভাবে? আর এ বিবাহের কারণে কি সাদেকের জন্য সুহানাকে দ্বিতীয়বার বিবাহ করা বৈধ হবে? আর আশিক মহিলাটির জন্য বিবাহের সময় যে মোহর নির্ধারণ করেছিল তা কি দিতে হবে?
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আশিকের সাথে মহিলাটির বিবাহ যেহেতু ইদ্দতের ভেতর হয়েছে তাই এ বিবাহ শুদ্ধ হয়নি। এক্ষেত্রে মহিলাটিকে আশিক থেকে পৃথক হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে পূর্ণ ইদ্দত পালন করতে হবে। যদি অমত্মঃসত্ত্বা হয় তাহলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত, আর অন্তসত্ত্বা না হলে তিনটি ঋতুস্রাব পর্যন্ত ইদ্দত পালন করতে হবে। আর দ্বিতীয় বিবাহ যেহেতু শুদ্ধ হয়নি তাই এক্ষেত্রে ইদ্দত শেষে প্রথম স্বামী সাদেকের সাথে মহিলাটির বিবাহ জায়েয হবে না।
উল্লেখ্য যে, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আশিকের সাথে মহিলাটির বিবাহের সময় যে মোহর ধার্য করা হয়েছিল মহিলা তা পাবে না; বরং ধার্যকৃত ঐ মোহর এবং মোহরে মিসিল (অর্থাৎ মহিলার সমপর্যায়ের পিতৃবংশীয় নারীদের মোহর) এর মধ্যে যেটা কম হবে সেটাই মোহর হিসেবে পাবে।
-সূরা বাকারা ২ : ২৩৫; আহকামুল কুরআন, থানভী রাহ. ১/৫৯৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪০৯-৪১০; হেদায়া, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৭৩; আদ্দুররুল মুনতাকা ২/৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৩০; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৭২
যোহর নামাযের সময় প্রায় আধা ঘণ্টা বাকি থাকতেই একজন মহিলার...
যোহর নামাযের সময় প্রায় আধা ঘণ্টা বাকি থাকতেই একজন মহিলার ঋতুস্রাব দেখা দেয়। মহিলাটি তখনও যোহর নামায আদায় করেনি। জানতে চাই, পবিত্র হওয়ার পর তাকে কি ঐ দিনের যোহর নামায কাযা
করতে হবে?
না, মহিলাটিকে ঐ দিনের যোহর নামাযের কাযা পড়তে হবে না। কেননা যোহরের ওয়াক্ত বাকি থাকা অবস্থায় ঋতুস্রাব শুরু হয়েছে। ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, নামাযের সময়ের মধ্যে কোনো মহিলার অপবিত্রতা শুরু হলে ঐ নামায তাকে কাযা করতে হবে না।-কিতাবুল আছার ১/৮৪
হাসান বছরী রাহ., মুহাম্মাদ ইবনে সীরিন রাহ. প্রমুখ থেকেও অনুরূপ বর্ণনা এসেছে।
-কিতাবুল আছার ১/৮৪; কিতাবুল আছল ১/২৮৬; ফাতহুল কাদীর ১/১৫২; আলবাহরুর রায়েক ১/২০৫; রদ্দুল মুহতার ১/২৯১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৪৮৩
ডিএনসি-এর পর যে রক্তস্রাব দেখা যায় তার কারণে কি নামায...
ডিএনসি-এর পর যে রক্তস্রাব দেখা যায় তার কারণে কি নামায রোযা বন্ধ রাখতে হবে? এটা হায়েয নাকি নেফাস? কিছু দিন আগে আমার গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়। গর্ভ খুব অল্প দিনের। তাই কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়নি। জমাট রক্ত ছিল কেবল। ডিএনসির পর থেকে আজ ১১ দিন স্রাব চলছে। আমি প্রতিমাসে ৮দিন অপবিত্র থাকি। এখন আমার করণীয় কী?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ডিএনসির পর আট দিন পর্যন্ত হায়েয ধর্তব্য হবে। এরপর থেকে ইস্তিহাযার হুকুমে হবে। তাই প্রথম আট দিনের পর থেকে স্রাব থাকলেও নিয়মিত নামায পড়তে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, গর্ভটির যেহেতু কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিল না তাই ডিএনসি পরবর্তী স্রাব হায়েযের হুকুমে হয়েছে। যদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থাকত তাহলে এ স্রাব নেফাস গণ্য হত।
-আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪৭০; ফাতহুল কাদীর ১/১৬৫; আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯
জনৈক মহিলার দুই মাসের গর্ভাবস্থায় প্রচন্ড জ্বরের কারণে গর্ভ নষ্ট...
জনৈক মহিলার দুই মাসের গর্ভাবস্থায় প্রচন্ড জ্বরের কারণে গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ডাক্তারের পরামর্শে তা ফেলে দেওয়া হয়। গর্ভটির কোনো আকার আকৃতি হয়নি। তা একটি গোশতের টুকরার মতো। অতপর একদিন পর থেকে তার রক্ত দেখা দেয় এবং তা এক সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে থাকে।
প্রশ্ন হল, এ রক্ত কি নেফাস হবে, না ইস্তেহাযা হিসেবে গণ্য হবে? জানালে উপকৃত হব।
উল্লেখ্য, উক্ত এক সপ্তাহ সে মহিলা নামায থেকে বিরত ছিল।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গর্ভটির যেহেতু কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়নি তাই ওই এক সপ্তাহের রক্ত নেফাস হবে না; তবে তা হায়েয হিসেবে গণ্য হবে। সুতরাং সে সময় নামায না পড়া ঠিকই হয়েছে।
-আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪৭০; আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; ফাতহুল কাদীর ১/১৬৫-১৬৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫৪২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩০২
মহিলারা যদি রমযান মাসে কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ...
মহিলারা যদি রমযান মাসে কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখে তাহলে ওই দিনগুলোতে রোযা রাখতে পারবে কি এবং এতে রোযার কোনো ক্ষতি হবে কি না?
রমযান মাসে কোন মহিলা ওষুধ সেবন করে স্রাব বন্ধ রাখলে তাকে রোযা রাখতে হবে এবং তার এ রোযাগুলো সহীহ গণ্য হবে।
উল্লেখ্য, ঋতুস্রাব মহিলাদের একটি স্বাভাবিক বিষয়। কোন ওষুধ ইত্যাদির মাধ্যমে তা বন্ধ করলে শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই রমযানেও স্রাববন্ধকারী ওষুধ ব্যবহার না করাই উচিত।
(দেখুন : জামিউ আহকামিন নিসা ১/১৯৮; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৮/১৩৬)
আমি জানি, রমযানের দিবসে ঋতু অবস্থায় মহিলারা পানাহার করতে পারে।...
আমি জানি, রমযানের দিবসে ঋতু অবস্থায় মহিলারা পানাহার করতে পারে। কিন্তু গত রমযানে আমার খালা বলেছেন, ঋতু অবস্থায় রমযানের দিবসে মহিলারা পানাহার করতে পারবে না। রমযানের ইহতিরামের জন্য অনাহারে থাকতে হবে। খালার এ কথা কি সঠিক? দয়া করে জানাবেন।
না, আপনার খালার ঐ কথা ঠিক নয়। রমযানে দিনের বেলায় ঋতু অবস্থায় মহিলারা পানাহার করতে পারবে। তবে প্রকাশ্যে পানাহার না করা উত্তম। অবশ্য রমযানের দিনের বেলা যদি কোনো মহিলার ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ওই দিনের অবশিষ্ট সময় তার জন্য পানাহার থেকে বিরত থাকা জরুরি। পরবর্তীতে ছুটে যাওয়া রোযার সাথে শেষের দিনের রোযারও কাযা করতে হবে।
-হেদায়া ১/২২৫; কিফায়া ৩/২৮৩; ফাতহুল বারী ২/২৮২
মহিলাগণ ঋতুস্রাব অবস্থায় হাদীসে বর্ণিত বিভিন্ন প্রকারের দোয়া, যিকির-আযকার এবং...
মহিলাগণ ঋতুস্রাব অবস্থায় হাদীসে বর্ণিত বিভিন্ন প্রকারের দোয়া, যিকির-আযকার এবং তাসবীহ-তাহলীল ইত্যাদি পড়তে পারবে কি?
হ্যাঁ, ঋতুস্রাব অবস্থায় মহিলাগণ হাদীসে বর্ণিত দোয়া, যিকির-আযকার, তাসবীহ-তাহলীল ইত্যাদি পড়তে পারবে। কিন্তু কুরআন মজীদের তিলাওয়াত করতে পারবে না।
-আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৮; আননাহরুল ফায়েক ১/১৩৩; ফাতহুল কাদীর ১/১৪৯
জনৈকা মহিলা ঋতুস্রাব অবস্থায় তাওয়াফে যিয়ারত ও সাঈ করে ফেলে।...
জনৈকা মহিলা ঋতুস্রাব অবস্থায় তাওয়াফে যিয়ারত ও সাঈ করে ফেলে। অতপর আইয়ামে নহরের ভিতরে তিনি ঋতুস্রাব থেকে পবিত্র হন। জানার বিষয় হল, এখন তাকে তাওয়াফে যিয়ারত ও সাঈ উভয়টি পুনরায় করতে হবে না শুধু তাওয়াফে যিয়ারত করলেই যথেষ্ট হবে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মহিলাকে শুধু তাওয়াফে যিয়ারত করতে হবে। সাঈ পুনরায় করা জরুরি নয়। তবে এ বিষয়ে যেহেতু মতানৈক্য আছে তাই সম্ভব হলে সাঈও পুনরায় করে নেওয়া ভালো।
-গুনইয়াতুন নাসিক ২৭৩; যুবদাতুল মানাসিক ৩৭১; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫১; আলবাহরুল আমীক ২/১১২৫
আমার এক আত্মীয়া জানতে চান, ঋতুমতী মহিলার কি ইহরাম বাঁধার...
আমার এক আত্মীয়া জানতে চান, ঋতুমতী মহিলার কি ইহরাম বাঁধার আগে গোসল করা মুস্তাহাব?
হ্যাঁ, ঋতুমতী মহিলারও ইহরামের আগে গোসল করা মুস্তাহাব। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো নারী হায়েয বা নেফাস অবস্থায় মীকাতে পৌঁছলে গোসল করবে। এরপর ইহরাম গ্রহণ করবে। অতপর হজ্বের যাবতীয় কাজ করতে থাকবে শুধু বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া।
সুনানে আবু দাউদ ১/২৪৩; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৬৯
জনৈকা মহিলার প্রতি ইংরেজি মাসের ১৫ তারিখে ঋতুস্রাব হয়। রমযান...
জনৈকা মহিলার প্রতি ইংরেজি মাসের ১৫ তারিখে ঋতুস্রাব হয়। রমযান মাসে এক দিন সকাল বেলা সে রোযা অবস্থায় ছিল। এক পর্যায়ে তার স্মরণ হল আজ ইংরেজি মাসের ১৫ তারিখ। অর্থাৎ তার ঋতুস্রাব হওয়ার দিন। ফলে সে রোযা ভেঙ্গে ফেলে। কিন্তু সেদিন তার স্রাব আসেনি। প্রশ্ন হল, ঐ দিনের রোযা ভেঙ্গে ফেলার কারণে তার উপর কি কাফফারা ওয়াজিব হবে?
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মহিলার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। তবে যদি ঐ দিন ঋতুস্রাব হত তাহলে শুধু কাযা করা ওয়াজিব হত। কাফফারা ওয়াজিব হত না।
উল্লেখ্য যে, হায়েয আসতে পারে-এই সন্দেহের উপর ভিত্তি করে রোযা ভেঙ্গে ফেলা জায়েয নয়; বরং নিয়ম হল, রক্ত দেখে রোযা-নামায ছাড়বে। অতএব ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সতর্ক থাকা কর্তব্য।
-আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২০৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৭
মহিলারা যদি রমযান মাসে কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ...
মহিলারা যদি রমযান মাসে কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখে তাহলে ওই দিনগুলোতে রোযা রাখতে পারবে কি না এবং এতে রোযার কোনো ক্ষতি হবে কি না?
রমযান মাসে কোনো মহিলা ওষুধ সেবন করে স্রাব বন্ধ রাখলে তাকে রোযা রাখতে হবে। এ রোযাগুলো ত্রুটিযুক্ত হবে না; বরং পূর্ণ সহীহ বলেই গণ্য হবে। উল্লেখ্য, ঋতুস্রাব মহিলাদের একটি স্বাভাবিক বিষয়। তাই শরীয়ত এ অবস্থায় রোযা না রাখার হুকুম দিয়েছে এবং এর পরিবর্তে অন্য সময় রোযা রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সুতরাং রমযানে স্রাববন্ধকারী ওষুধ ব্যবহার না করাই শ্রেয়। কারণ এতে শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
-জামিউ আহকামিন নিসা ১/১৯৮; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৬/৪০৪
ক) জনৈক মহিলা হায়েয ও নিফাসের করণে বিগত ৭/৮ বছর...
ক) জনৈক মহিলা হায়েয ও নিফাসের করণে বিগত ৭/৮ বছর কিছু রোযা রাখতে পারেনি এবং কোন বছরের কয়টি রোযা অনাদায়ী রয়েছে তাও স্মরণ নেই। এখন এ রোযাগুলো কীভাবে আদায় করা হবে?
খ) মুসল্লির সামনে কয় হাত জায়গার ভিতর চলাচল করলে গুনাহ হয় এবং সুতরা কত হাত সামনে রাখতে হয়?
গ) যদি নামাযের সামনে দিয়ে কাপড়/রুমাল ঝুলিয়ে অতিক্রম করা হয় তবে তা বৈধ হবে কি?
ঘ) যদি ২ফুট উুঁচ খাটের উপর নামায পড়ে তবে তার সামনে দিয়ে চলাচর করা যাবে কি না?
ক) ঐ মহিলা হায়েয ও নেফাস সাধারণত যতদিন থাকে ততদিন হিসাব করে পেছনের বছরের রোযা কাযা করবে। যদি একেক মাসে একেক রকম হয় তাহলে সতর্কতামূলক অধিক দিন ধরে হিসাব করবে।-হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী পৃ. ২৪৩; রদ্দুল মুহতার ২/৭৬-৭৭
খ) যে মসজিদের প্রশস্ততা ৪০ হাতের বেশি এমন মসজিদে নামাযরত ব্যক্তির দুই কাতার সামনে দিয়ে অতিক্রম করা জায়েয। আর এর চেয়ে ছোট মসজিদে মুসল্লীর সামনে দিয়ে সুতরা ছাড়া অতিক্রম করা যাবে না। সুতরা সিজদার জায়গা থেকে সামান্য সামনে রাখবে। কোনো কোনো কিতাবে মুসল্লী থেকে তিন হাত দূরে রাখার কথা আছে।-মাবসূত, সারাখসী ১/১৯২; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭; ফাতহুল কাদীর ১/৩৫৪; রদ্দুল মুহতার ১/৬৩৭
গ) এভাবে রুমাল ঝুলিয়ে দেওয়াটা সুতরা হিসাবে যথেষ্ট হয় না। তবে বিশেষ ওজরের মুহূর্তে সামনে রাখার মতো কোনো কিছু পাওয়া না গেলে ঐভাবে যাওয়া যাবে।-শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৩৬৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫০৯
ঘ) না, এক্ষেত্রেও নামাযীর সামনে দিয়ে সুতরা ছাড়া অতিক্রম করা যাবে না। তবে খাটের সমতলের নীচ দিয়ে অতিক্রম করলে (যেন শরীরের অংশ উপরে না উঠে) কোনো অসুবিধা নেই।-সহীহ বুখারী ১/৭১;ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৪; ফাতহুল কাদীর ১/৩৪৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭; আদ্দুররুল মুহতার ১/৬৩৪
কারো যদি অসময়ে গর্ভপাত হয়। যাতে একটি গোশতের টুকরা বের...
কারো যদি অসময়ে গর্ভপাত হয়। যাতে একটি গোশতের টুকরা বের হয়েছে। কোনো অঙ্গ প্রকাশ পায়নি। এরপর যদি সে রক্ত দেখে। তাহলে উক্ত রক্ত কি নেফাস হিসাবে গণ্য হবে? দয়া করে জানিয়ে উপকার করবেন।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে গর্ভপাত পরবর্তী রক্ত নেফাস নয়; বরং এই স্রাব শুরু হওয়ার আগে ১৫ দিন পবিত্র অবস্থায় কাটলে তা হায়েযের রক্ত হিসাবে গণ্য হবে। তবে যদি বর্তমান স্রাব তিন দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়িত না হয় তাহলে তা ইসতিহাযার রক্ত হিসাবে গণ্য হবে। এমতাবস্থায় হায়েয মনে করে ছেড়ে দেওয়া নামাযগুলো কাযা করে নিতে হবে।
আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৩৯৪; রদ্দুল মুহতার ১/৩০২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৪৫
রমযানের কাযা রোযার সঙ্গে শাওয়ালের ছয় রোযার নিয়ত করা ৷
-বাদায়েউস সানায়ে ২/২২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯৭৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
ডিএনসির পর রক্তস্রাবের হুকুম ও নামায রোযার বিধান ৷
-আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; ফাতহুল কাদীর ১/১৬৫; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪৭০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
ডিএনসির পর রক্তস্রাবের হুকুম ও নামায রোযার বিধান ৷
-আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; ফাতহুল কাদীর ১/১৬৫; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪৭০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
পিরিয়ড অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে পবিত্র হয়ে তা আদায় করা ৷
-বাদায়েউস সানায়ে: ১/৪৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী: ২/৩৬৫; আলবাহরুর রায়েক: ২/১১৯ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
সিজারে সন্তান হলে পরবর্তী স্রাব হায়েজ হিসেবে গন্য হবে নাকি নেফাস হিসেবে?
-আলবাহরুর রায়েক ১/২১৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করলে করণীয়৷
করবেন।
সূরা বাকারা : ২২২
সুতরাং প্রথমত আপনি আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা-ইস্তিগফার করুন। তাছাড়া হায়েযের শুরুর দিকে সহবাস হলে এক দীনার আর শেষ দিকে হলে অর্ধ দীনার সদকা করার কথা কোনো কোনো হাদীসে বর্ণিত
হয়েছে। তাই এক্ষেত্রে তাওবা-ইস্তিগফারের পাশাপাশি উপরোক্ত নিয়মে সদকা করে দেওয়া উত্তম হবে।
প্রকাশ থাকে যে, দীনার একটি স্বর্ণমুদ্রা। যা বর্তমান হিসেবে ৪.৩৭৪ গ্রাম সমপরিমাণ স্বর্ণ।
জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২২০১; বাযলুল মাজহূদ ২/২৭৮; আলবাহরুর রায়েক ১/১৯৭; ফাতহুল কাদীর ১/১৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৮৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া
01756473393
পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব চলাকালে গিলাফ বা কাপড় দিয়ে কুরআন শরীফ স্পর্শ করা৷
01756473393
পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবগ্রস্থা নারীর কোন অঙ্গ স্পর্শ করা৷
আর স্বামীর জন্য স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের তিন সূরত।
যথা-
১- সহবাস করা। এটি নিঃসন্দেহে হারাম।
২-নাভির উপরের অংশ এবং হাটুর নিচের অংশ স্পর্শ করা জায়েজ। তাতেও কোন মতভেদ নেই।
৩- নাভির নিচ থেকে হাটু পর্যন্ত স্পর্শ করা কাপড়ের উপর দিয়ে।
এটিও জায়েজ আছে। কোন সমস্যা নেই।
তবে নাভির নিচ থেকে হাটু পর্যন্ত কাপড় ছাড়া স্পর্শ করা।তাতে মতভেদ আছে। কারো কারো মতে সহবাস না করলে জায়েজ আছে। বাকি ইমাম আবূ হানীফা রহঃ, ইমাম শাফেয়ী রহঃ, ইমাম মালিক রহঃ সহ অধিকাংশ আলেমদের মতে তা জায়েজ নয়।
তাই কাপড় ছাড়া তা পরিহার করা আবশ্যক৷
দলিলঃ
আউজাযুল মাসালিক ১/৩২৬; ফতওয়ায়ে শামী ১/৪৮৬; ফতওয়াযে হিন্দিয়া ১/৩৯; বাহরুর রায়েক ১/১৯৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
মহিলাদের অপবিত্রতার সময় তিলাওয়াতের নিয়ত ব্যতীত দলিল পেশ করার উদ্দেশ্যে...
করার উদ্দেশ্যে এক শ্বাসে অথবা শ্বাস ছেড়ে ছেড়ে একাধিক আয়াত একসাথে পড়া যাবে কি ?
01756473393
আমার প্রতিবেশী এক লোক এক মাস আগে কাদিয়ানী হয়ে গেছে।...
তার স্ত্রী ও এলাকার লোকজন তাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছে। তবুও সে ইসলামে ফিরে আসেনি। তখন স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যায়। এখন তার স্ত্রী জানতে চায়, স্বামী কাদিয়ানী হয়ে যাওয়ার কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক কি ছিন্ন হয়ে গেছে ? যদি তাই হয় তাহলে সে অন্যত্র বিবাহ করতে চাইলে তার করণীয় কী ? তাকে ইদ্দত পালন করতে হবে কি না? ইদ্দত পালন করতে হলে কীভাবে পালন করবে ?
ব্যক্তি কাদিয়ানী হয়ে যাওয়ার কারণে সে মুরতাদ
ও কাফের হয়ে গেছে। এবং কাদিয়ানী হয়ে
যাওয়ার সাথে সাথে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কও
ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন স্ত্রীকে তালাকের ইদ্দতের মতো ইদ্দত পালন করতে হবে।
অর্থাৎ সে অন্তঃসত্তা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া
পর্যন্ত আর ঋতুমতী হলে পূর্ণ তিনটি ঋতুস্রাব
শেষ হওয়া পর্যন্ত ইদ্দত পালন করতে হবে। ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে সে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এর আগে অন্যত্র বিবাহ করা বৈধ হবে না। আলমাবসূত ৫/৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৯৩;
বাদায়েউস সানায়ে ২/৬৫৫; আলমুহীতুল বুরহানী
৪/১৯৫ আলহীলাতুন নাজিযা ১৮১৷
ডিএনসি-এর পর যে রক্তস্রাব দেখা যায় তারকারণে কি নামায রোযা...
রোযা বন্ধ রাখতে হবে? এটা হায়েয নাকি নেফাস? কিছু দিন আগে আমার গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়। গর্ভ খুব অল্প দিনের। তাই কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়নি। জমাট রক্ত ছিল কেবল। ডিএনসির পর থেকে আজ ১১ দিন স্রাব চলছে। আমি প্রতিমাসে ৮দিন অপবিত্র থাকি। এখন আমার করণীয় কী?
মহিলাদের অপবিত্রতার সময় তিলাওয়াতের নিয়ত ব্যতীত দলিল পেশ করার উদ্দেশ্যে...
যাবে কি?
আমার প্রতিবেশী এক লোক এক মাস আগে কাদিয়ানী হয়ে গেছে।...
হায়েয অবস্থায় মহিলারা সিজদার আয়াত শুনলে পবিত্র হওয়ার পর তাদেরকে...
২/১১৯
ডিএনসি-এর পর যে রক্তস্রাব দেখা যায় তারকারণে কি নামায রোযা...
আজকাল অনেক মহিলার সিজারের মাধ্যমে সন্তান হয়। সন্তান পরবর্তী যে...
আমার প্রতিবেশী সাদেক তার স্ত্রী সুহানাকে বিভিন্ন কারণে একের পর...
উল্লেখ্য যে, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আশিকের সাথে মহিলাটির বিবাহের সময় যে মোহর ধার্য করা হয়েছিল মহিলা তা পাবে না; বরং ধার্যকৃত ঐ মোহর এবং মোহরে মিসিল (অর্থাৎ মহিলার সমপর্যায়ের পিতৃবংশীয় নারীদের মোহর) এর মধ্যে যেটা কম হবে সেটাই মোহর হিসেবে পাবে।
-সূরা বাকারা ২ : ২৩৫; আহকামুল কুরআন, থানভী রাহ. ১/৫৯৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৪০৯-৪১০; হেদায়া, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৭৩; আদ্দুররুল মুনতাকা ২/৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৩০; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৭২
জনৈক মহিলার দুই মাসের গর্ভাবস্থায় প্রচন্ড জ্বরের কারণে গর্ভ নষ্ট...
হায়েয চলাকালীন কাউকে কুরআন শিখানো জায়েয আছে কি এবং এক্ষেত্রে...
১/৪৯
তাই যে সকল মহিলা কুরআন মজীদ শেখা- শেখানোর সাথে সম্পৃক্ত তারা অপবিত্রতার সময় তা থেকে বিরত থাকবে। প্রয়োজনে অন্য মহিলা দ্বারা কাজ সমাধা করে নিবে। যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে তারা কেবল শিার্থীদের পড়া শুনতে পারবে এবং প্রয়োজনের সময় দু-এক শব্দ বলে দিতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে পূর্ণ আয়াত একত্রে তিলাওয়াত করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। -মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১৩০৩; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১০৯০; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৭২; আলবাহরুর রায়েক ১/১৯৯; ফাতহুল কাদীর ১/১৪৮;