আমাদের এলাকার মসজিদটি প্রথমে ওয়াকফকৃত ছিল না। বরং প্রবাসী এক...
আমাদের এলাকার মসজিদটি প্রথমে ওয়াকফকৃত ছিল না। বরং প্রবাসী এক ব্যক্তির জায়গার উপর তার অনুমতি না নিয়েই মসজিদ নির্মাণ করা হয়। আমাদের ধারণা ছিল যেহেতু তিনি অনেক দানশীল মানুষ তাই তাকে মসজিদের কথা বললে তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তা ওয়াক্ফ করে দিবেন। কিছুদিন হল তিনি দেশে এসেছেন। তাকে না জানিয়ে তার জায়গার উপর মসজিদ নির্মাণের কারণে মনক্ষুন্ন হন। তবে এলাকায় মসজিদের প্রয়োজন দেখে এবং লোকদের অনুরোধের কারণে ঐ জায়গাকে মসজিদের জন্য প্রথমে মৌখিকভাবে ওয়াকফ করে দেন এবং পরবর্তীতে লিখিত ওয়াকফও করেন। কিন্তু ওয়াকফ দলীলে একটি শর্ত রাখেন এমন যে, ওয়াকফকৃত ভূমি আমার নিজ দখলে থাকিবে। আমার জানার বিষয় হল,
ক. মালিকের প্রতি সুধারণার ভিত্তিতে তার অনুমতি ছাড়া ঐ জায়গায় মসজিদ বানানো কি ঠিক হয়েছে?
খ. মালিকের অনুমতি নিয়ে যেহেতু মসজিদটি নির্মাণ করা হয়নি তাই ওয়াকফ করে দেয়ার পর কি তা শরয়ী মসজিদ হবে?
গ. ওয়াকফ দলীলের ঐ শর্ত কি ঠিক আছে? জানালে উপকৃত হব।
(ক, খ) জায়গার মালিকের অনুমতি ছাড়া মসজিদ বানানো জায়েয হয়নি। মসজিদ বানানোর আগে মালিকের অনুমতি নেওয়া জরুরি ছিল। অবশ্য পরবর্তীতে মালিকের অনুমোদনের কারণে এবং জায়গাটিকে মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে দেওয়ার কারণে তা শরয়ী মসজিদ হয়ে গেছে। তা ভেঙ্গে পুননির্মাণ করা লাগবে না।
গ) ওয়াকফ দলীলের এ শর্তটি- “ওয়াকফকৃত ভূমি আমার নিজ দখলে থাকিবে” ঠিক নয়। বরং তা বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। কেননা শরীয়ার ওয়াকফ-নীতি হল, কোনো জমি ওয়াকফ করা হলে ঐ জমি ওয়াকফকারীর মালিকানা এবং দখল থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে যায়। তবে দখল দ্বারা কর্তৃত্ব বুঝিয়ে থাকলে তা সহীহ গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে মসজিদের স্বার্থ ও কল্যাণে সার্বিক দেখাশুনার দায়িত্ব তার উপর থাকবে। -আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৭; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৮;রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫৫
আমাদের এলাকার মসজিদটি প্রায় ৬০ বছর আগের। মসজিদটি টিনশেড ছিল।...
আমাদের এলাকার মসজিদটি প্রায় ৬০ বছর আগের। মসজিদটি টিনশেড ছিল। মুসল্লিসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় টিনশেড ভেঙ্গে তিন তলা বিশিষ্ট মসজিদ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে কমিটির কেউ কেউ চাচ্ছে নিচ তলা মার্কেট বানাবে। আর দোতলা থেকে মসজিদ শুরু হবে। যেন নিচ তলার আয় দিয়ে মসজিদের কার্যক্রম চালানো যায়।
আপনাদের নিকট জানতে চাই, নিচ তলাকে কি মসজিদের উন্নয়নের স্বার্থে মার্কেট বানানো যাবে? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মসজিদটি যেহেতু নিচ তলা থেকেই মসজিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয়েছে তাই পুণঃনির্মাণের সময় নিচ তলাকে মার্কেট বানানো জায়েয হবে না। এ ধরনের পরিকল্পনা থেকে কর্তৃপক্ষের বিরত থাকা আবশ্যক। কেননা মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গায় নিচতলা থেকে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হলে ঐ স্থানের উপর-নিচ পুরোটা মসজিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। তাই মসজিদ কমিটির কর্তব্য হল, মসজিদের নিচতলার অংশসহ উপর নিচ পুরোটাই মসজিদ হিসেবে বহাল রাখা। মসজিদের সার্বিক জরুরত মুসলমানদের সাধারণ দান দ্বারা পূর্ণ করা হবে। মসজিদের নির্মাণ কাজ থেকে শুরু করে মসজিদের যে কোনো প্রয়োজন পূরণে এগিয়ে আসা মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলার ঘরে দান-সদকা করতে পারা পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার ও অনেক সওয়াবের কাজ।
-আল মুহীতুল বুরহানী ৯/১২৮, ১৩৭; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯৩; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫৮
আমাদের মহল্লায় একটি নতুন মসজিদ নির্মিত হয়েছে। আমি তাতে কিছু...
আমাদের মহল্লায় একটি নতুন মসজিদ নির্মিত হয়েছে। আমি তাতে কিছু পাখা ওয়াকফ করতে চাচ্ছি। কেউ কেউ বলছে, পাখা যেহেতু স্থানান্তরযোগ্য জিনিস তাই তা ওয়াকফ হবে না; বরং সাধারণ দান বলেই বিবেচ্য হবে। দয়া করে শরীয়তের আলোকে বিষয়টির সমাধান জানাবেন।
আপনি যািদ মসজিদে পাখা দান করেন তাহলে সেগুলো ওয়াকফের মতোই স্থায়ীভাবে মসজিদের মালিকানায় চলে যাবে। এবং আপনিও স্থায়ীভাবে এগুলোর সওয়াব পেতে থাকবেন। সুতরাং এগুলো ওয়াকফ না সাধারণ দান এই প্রশ্ন করা অর্থহীন।
Ñআলমাবসূত সারাখসী ১২/৪৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৫০২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৬৪; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ৫/৪৩১
একদিন মসজিদে গিয়ে দেখি, ইমাম সাহেব রুকুতে চলে গিয়েছেন। তখন...
একদিন মসজিদে গিয়ে দেখি, ইমাম সাহেব রুকুতে চলে গিয়েছেন। তখন আমি রুকুতে গিয়ে এক তাসবীহ পড়ার আগেই ইমাম সাহেব দাঁড়িয়ে যান। এ অবস্থায় আমি ঐ রাকাত পেয়েছি বলে ধর্তব্য হবে কি?
রাকাত পাওয়ার জন্য রুকু পাওয়া জরুরি। আর রুকু পাওয়ার জন্য অল্প সময় ইমামের সাথে রুকুতে শরিক হওয়াই যথেষ্ট। ইমামকে এক তাসবীহ পরিমাণ পাওয়া জরুরি নয়। তবে ইমামের সাথে রুকুতে শরিক হওয়ার পর অন্তত এক তাসবীহ পরিমাণ বিলম্ব করে উঠবে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৫৩৪; শরহুল মুনইয়াহ ৩০৫; হালবাতুল মুজাল্লী ২/১২৬
ক) মসজিদে কোনো ফ্যান, মাইক, বদনা ইত্যাদি দান করলেই কি...
ক) মসজিদে কোনো ফ্যান, মাইক, বদনা ইত্যাদি দান করলেই কি তা ওয়াকফ হয়ে যাবে, নাকি মুখেও পৃথকভাবে ওয়াকফের কথা উচ্চারণ করা ওয়াকফের জন্য শর্ত?
প্রশ্ন : খ) মসজিদের চাঁদার দ্বারা যে ফ্যান, মাইক ইত্যাদি ক্রয় করা হয় তা কি ওয়াকফ হয়ে যাবে?
প্রশ্ন : গ) মসজিদের নারিকেল, আম ইত্যাদি যা অন্যদের কাছে বিক্রি করা হয় তা কি ইমাম-মুয়াযযিনের জন্য বিনামূল্যে খাওয়া জায়েয হবে?
অনুগ্রহপূর্বক উপরের মাসআলাগুলোর সমাধান শরীয়তের বিধান মোতাবেক দিয়ে আমাদের বিবাদ নিরসনে হযরতের সুমর্জি কামনা করছি।
ক) মসজিদে ফ্যান, মাইক ইত্যাদি কোনো জিনিস দান করলে তা মসজিদের ওয়াকফের অন্তর্ভুক্ত। এজন্য ওয়াকফ শব্দ উচ্চারণ করা জরুরি নয়।
উত্তর : খ) মসজিদের চাঁদা দিয়ে ফ্যান, মাইক ইত্যাদি ক্রয় করলে তা-ও মসজিদের নিজস্ব মালিকানা হিসেবে ধর্তব্য হবে এবং এর উপরও ওয়াকফের হুকুম আরোপিত হবে।
উত্তর : গ) মসজিদের গাছের ফল মসজিদের মালিকানাধীন সম্পদ। যথাসম্ভব এগুলো বিক্রি করে এর মূল্য মসজিদের প্রয়োজনে ব্যয় করতে হবে। এগুলো ইমাম-মুয়াযযিন বা অন্য কারো জন্য মুতাওয়াল্লির অনুমোদন ছাড়া বিনামূল্যে খাওয়া বৈধ হবে না।
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪১৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৩০-১৩১, ৯/১৩৮; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪১৭; আলইসআফ পৃ. ২২,৫৬
মসজিদের জায়গায় মসজিদের উন্নয়নের জন্য নিচ তলায় মার্কেট রেখে ২য়...
মসজিদের জায়গায় মসজিদের উন্নয়নের জন্য নিচ তলায় মার্কেট রেখে ২য় তলা থেকে মসজিদ বানানো যাবে কি না? আমাদের দেশে প্রায় জায়গায় এমন দেখা যায়। এ বিষয়ে শরীয়তের হুকুম কী?
মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত স্থানে নিচ তলা মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করা হলে পরবর্তীতে বহুতল ভবন করার সময় নিচতলা বা অন্য কোনো ফ্লোরে দোকান-পাট করা জায়েয হবে না।
তবে জায়গাটি মসজিদ হিসেবে ব্যবহারের আগেই যদি নিচের দুই এক তলায় দোকান করার সিদ্ধান্ত থাকে কিংবা ওয়াকফ দলিলেই এমন লেখা থাকে তাহলে তা জায়েয আছে। তদ্রƒপ মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত স্থানে মসজিদ নির্মাণের আগে প্রথম থেকেই যদি নিচ তলায় মার্কেট বানানো হয় তবে জায়েয হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে জায়েয থাকলেও মসজিদের নিচে দোকান-পাট না করাই উচিত। কেননা, মসজিদ হল সর্বোৎকৃষ্ট স্থান আর বাজার হল নিকৃষ্টতম স্থান। তাই মসজিদ ভবনে শপিং মল, দোকান-পাট থাকলে মসজিদের পরিবেশ মারাত্মকভাবে নষ্ট হয়। তাই মসজিদের আয়ের জন্যও মসজিদের নিচ তলায় দোকান-পাট করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
উল্লেখ্য যে, মসজিদের ব্যয় নির্বাহের জন্য মসজিদের জমিতে শপিং মল, দোকানপাট ইত্যাদি করতে চাইলে মসজিদের জন্য বেশি জমি ওয়াকফ করে মসজিদর ভবন থেকে দূরে পৃথক ভবন নির্মাণ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তা ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে মসজিদের পরিবেশও বজায় থাকবে এবং মসজিদের আয়েরও একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এছাড়া মসজিদের নিয়মিত জরুরি ব্যয় মুসল্লি ও সাধারণ মুসলমানের স্বতঃস্ফূর্ত দান থেকে নির্বাহ করা হবে।
-সূরা জিন (৭২) : ১৮; আলমুহাররারুল ওয়াজিয ১৫/১৪৫; হাশিয়াতুশ শিলবী আলাত তাবয়ীন ৪/২৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬২; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৫৮
আমরা কোনো একটি ভবনের শুধু মাঝের এক তলা মসজিদ এবং...
আমরা কোনো একটি ভবনের শুধু মাঝের এক তলা মসজিদ এবং উপর তলা এবং নিচ তলায় মাদরাসা হিসেবে তৈরি করতে চাই। এভাবে শুধু মাঝের তলাকে মসজিদ বানানোর দ্বারা উক্ত মসজিদ ‘‘মসজিদে শরয়ী’’ হবে কি না?
কোনো স্থান শরয়ী মসজিদ হওয়ার জন্য ঐ স্থানের উপর-নিচ পুরোটাই মসজিদের জন্য ওয়াকফ হওয়া শরীয়তের নিয়ম। তাই কোনো স্থানে মসজিদ বানাতে হলে ঐ স্থানের উপর-নিচ পুরোটাই মসজিদের জন্য নির্ধারণ করে দিবে। নিচে বা উপরে মসজিদ ব্যতীত অন্য কিছু বানাবে না। তবে জায়গা সংকটের কারণে একটি ভবনের কোনো এক তলাকে মসজিদের জন্য স্থায়ীভাবে ওয়াকফ করে দিলেও কোনো কোনো ফকীহের নিকট তা শরয়ী মসজিদ হয়ে যায়।
এ মত অনুযায়ী প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ভবনের মাঝের এক তলাকে মসজিদের জন্য ওয়াকফ করলে সেটা শরয়ী মসজিদ হিসেবে গণ্য হবে এবং মসজিদের যাবতীয় হুকুম তাতে প্রযোজ্য হবে।
Ñফাতহুল কাদীর ৫/৪৪৪-৪৪৫; আলইসআফ ফী আহকামিল আওকাফ ৭২-৭৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৭২; দুরারুল হুককাম ২/১৩৫
বিগত ৫০ বছর আগে দুই বাড়ি ও দুই পুকুরের মধ্যখানে...
বিগত ৫০ বছর আগে দুই বাড়ি ও দুই পুকুরের মধ্যখানে ছোট একটি পাঞ্জেগানা মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন যারা প্রতিষ্ঠা করেন মসজিদের জায়গাসহ তার পাশের আরো অনেক জায়গা তাদের মালিকানায় ও দখলে ছিল। পরবর্তীতে এই পুরো জায়গার মালিকানা নিয়ে পাশের বাড়ির লোকজনের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হলে আদালতে মামলা গড়ায়। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর মসজিদের জায়গাসহ পাশের জায়গার মালিকানা আদালতের রায় অনুসারে পরবর্তী দাবিদারদের সাব্যস্ত হয়। তবে পরিবর্তিত মালিকরাও মসজিদকে মসজিদ হিসেবে মেনে নিয়েছেন এবং সবার জন্যই মসজিদ উন্মুক্ত রেখেছেন, শুধু তারা তত্ত¡াবধান করেন, এ ছাড়া সবকিছুই আগের মতোই আছে। এই মসজিদের খরচের জন্য মসজিদের পাশের বাড়ির একজন এক খÐ জমি মৌখিকভাবে ওয়াকফ করে যান প্রায় ২৫ বছর আগে এবং দীর্ঘ ২০-২২ বছর যাবৎ মসজিদ এই জমির আয়ও ভোগ করে। উল্লেখ্য দাতা জমি দানের কিছুদিন পর মারা যান এবং দাতার কোনো ছেলে সন্তান নেই। মেয়েদের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দাতার ওয়ারিশদের মধ্যে অনেক ভ্রাতুষ্পুত্র রয়েছেন তাদের থেকে দুই একজন নিজেদের উদ্যোগে মসজিদের জন্য দানকৃত জমিতে নিজেদের বাড়ির সামনে পূর্বের মসজিদের অনতিদূরে আরেকটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে।
এখন জানার বিষয় হল,
১। পূর্বের মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গায় নতুন মসজিদ নির্মাণ করা বৈধ হবে কি না?
২। রেজিস্ট্রি ব্যতীত শুধু মৌখিক ওয়াকফ পূর্ণাঙ্গ ওয়াকফ হিসেবে গণ্য হবে কি?
বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ জানালে খুব উপকৃত হব।
কোনো জমি মৌখিকভাবে ওয়াকফ করলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে তার ওয়াকফ সহীহ ও সম্পন্ন হয়ে যায়। সুতরাং প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু উক্ত জমিটি পুরাতন মসজিদের খরচ নির্বাহের জন্যই মৌখিকভাবে ওয়াকফ করা হয়েছে তাই এ জমি ওয়াকফকারীর মালিকানা থেকে বের হয়ে গেছে এবং এতে সম্পূর্ণরূপে মসজিদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। তাই জমিটি যে জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে সে কাজেই তা লাগানো জরুরি। অতএব ওয়াকফকারীর ওয়ারিশদের জন্য তাতে নতুন মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা জায়েয হবে না।
-দুরারুল হুককাম ২/১৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৬০-৩৬১; শরহুল মুনইয়া ৬১৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৬/৫১৪
আমাদের এলাকার এক ভদ্রলোক মসজিদের জন্য একটি জায়গা ওয়াকফ করেছেন।...
আমাদের এলাকার এক ভদ্রলোক মসজিদের জন্য একটি জায়গা ওয়াকফ করেছেন। জায়গাটিতে মসজিদ নির্মাণের পর একপাশে কিছু জায়গা খালি থেকে যায়। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন ঐ খালি জায়গায় কবর দেওয়া শুরু করে। দীর্ঘদিন পর মসজিদ বড় করার প্রয়োজন দেখা দিলে মসজিদ কমিটি প্রায় দু’বছর আগে থেকে উক্ত জায়গায় কবর দেওয়া নিষেধ করে দেয়।
এখন জানার বিষয় হল, উক্ত জায়গাটিতে কবর দেওয়া কি ঠিক হয়েছে? এখন ঐ জায়গায় মসজিদ করা যাবে কি না?
প্রশ্নোক্ত জায়গাটি যেহেতু মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত তাই সেখানে কবর দেওয়া ঠিক হয়নি। কোনো স্থান যে উদ্দেশ্যে ওয়াকফ করা হয় সেখানে তা-ই করা আবশ্যক। অতএব ঐ জায়গায় মসজিদ স¤প্রসারণ করতে কোনো অসুবিধা নেই। আর স¤প্রসারণ করতে চাইলে কবরগুলো নিশ্চিহ্ন করে দিবে।
উল্লেখ্য, মৃত ব্যক্তিকে এলাকার কবরস্থান থাকলে সেখানেই কবর দিবে। যত্রতত্র কবর দেওয়াও ঠিক নয়। আর কবরস্থান না থাকলে এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে কবরস্থান বানাবে এবং সেখানেই কবর দিবে।
-দুরারুল হুককাম ২/১৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৬০; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৬১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৮৮; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫
এক ব্যক্তি মসজিদ এবং মাদরাসা করার জন্য নিজ বাড়ির পাশে...
এক ব্যক্তি মসজিদ এবং মাদরাসা করার জন্য নিজ বাড়ির পাশে ৬ ডিশিমেল জায়গা দিতে চাচ্ছে। কিন্তু জমিটা গ্রামের মূল রাস্তা থেকে একটু ভিতরে। মসজিদ ও মাদরাসা করার উপযোগী নয়। গ্রামে এমনিতেই মানুষ কম। তারপর জমিটা মানুষের চলাচলের রাস্তা থেকে দূরে এবং বাড়ির সাথেই লাগানো। সেখানে মসজিদ করলে নিয়মিত ৩/৪ জন মুসল্লির বেশি পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন এলাকার মুরব্বী ও বিজ্ঞজনেরা। লোকটির পরিবারের অন্য সদস্যগণও তার এ সিদ্ধান্তে একমত নয় এবং বাড়ির লোকেরা সেখানে মসজিদ হওয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এলাকায় এমন কিছু স্থান আছে, যেখানে মাদরাসা ও মসজিদের খুবই প্রয়োজন। আশেপাশে বাড়িঘর বেশি এবং এলাকার বেশির ভাগ মানুষের চলাচলের রাস্তার পাশে কিছু জমিও আছে। এ অবস্থায় যদি লোকটি জমিটি ওয়াকফ করে তাহলে পরবর্তীতে রাস্তার নিকটে মসজিদ ও মাদরাসার উপযোগী কোনো জমি ক্রয় করে সেখানে মসজিদ ও মাদরাসা করার জন্য উক্ত জমিটি বিক্রয় করা যাবে কি না?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু এখনো জমিটি ওয়াকফ করা হয়নি বরং শুধু মনে মনে ইচ্ছা করা হয়েছে তাই এ অবস্থায় উত্তম পন্থা হল, তিনি নিজেই তার মালিকানাধীন জমিটি বিক্রি করে উপযুক্ত স্থানে একটি জমি খরিদ করে মসজিদের নামে ওয়াকফ করে দিবেন।
আমাদের গ্রামের পূর্ব পাড়ায় একটি মসজিদ আছে। যা ৫০-৬০ বছর...
আমাদের গ্রামের পূর্ব পাড়ায় একটি মসজিদ আছে। যা ৫০-৬০ বছর পুরনো। আমাদের পশ্চিম পাড়ায় ঐ মসজিদেরই একটি জমি আছে। যা এক ব্যক্তি ঐ মসজিদের খরচ নির্বাহের জন্য ঐ মসজিদের নামে ওয়াকফ করেছিল। বর্তমানে মুসল্লি সংখ্যা বাড়ায় ঐ মসজিদে জায়গা সংকুলান হয় না। দ্বিতীয়ত প্রতি ওয়াক্তে পশ্চিম পাড়া থেকে পূর্ব পাড়ায় আসাও কষ্টকর। তাই এলাকার লোকজন চাচ্ছে পশ্চিম পাড়ায় অবস্থিত জমিটিতে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করতে।
জানার বিষয় হল, এলাকাবাসীর জন্য এমনটি করা কি বৈধ হবে? ঐ মসজিদের জায়গায় আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করা কি জায়েয হবে?
প্রশ্নের বক্তব্য অনুযায়ী পশ্চিম পাড়ার জায়গাটি যেহেতু পূর্ব পাড়ার ঐ মসজিদের আয়ের জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে তাই এ জমিতে পৃথক মসজিদ নির্মাণ করা বৈধ হবে না। ওয়াকফের শর্ত অনুযায়ী এ জায়গাটি পূর্ব পাড়ার মসজিদের উন্নয়ন ও আয়ের জন্যই ব্যবহার করতে হবে। পশ্চিম পাড়ায় নতুন মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজন থাকলে ভিন্ন জায়গার ব্যবস্থা করে নির্মাণ করতে হবে।
-রদ্দুল মুহতার ৪/৩৬০; দুরারুল হুক্কাম ২/১৩৬
কয়েকদিন আগে আমাদের মাদরাসা সংলগ্ন মহল্লার মসজিদের জায়গা মাপা হলে...
কয়েকদিন আগে আমাদের মাদরাসা সংলগ্ন মহল্লার মসজিদের জায়গা মাপা হলে দেখা গেল, মসজিদের অনেক জায়গা পাশের এক বিত্তবান প্রভাবশালী ব্যক্তির বাড়ির ভেতর চলে গেছে। তিনি আমাদের মাদরাসায় প্রচুর পরিমাণ দান করে থাকেন এবং মসজিদের প্রয়োজনীয় খরচও বহন করে থাকেন। তাকে জানানো হলে তিনি বললেন, মসজিদের যে পরিমাণ জায়গা তার বাড়ির ভেতরে চলে গেছে তা তাকে বিক্রি করে দিতে বা এর পরিবর্তে অন্য কোনো জায়গা নিয়ে নিতে।
জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় মসজিদের জায়গা তার কাছে বিক্রি করা বা অন্য আরেকটি জায়গার সাথে বদল করা জায়েয হবে কি? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
মসজিদের জমি বিক্রি করা জায়েয নেই। অন্যায়ভাবে মসজিদের জায়গা ভোগ-দখলের কারণে উক্ত ব্যক্তি গুনাহগার হবে। এখন তার কর্তব্য, মসজিদের যে পরিমাণ জায়গা তার বাড়ির ভেতর চলে গেছে তার দখল ছেড়ে দিয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষের নিকট তা বুঝিয়ে দেওয়া। আর উক্ত জায়গার বদলে অন্য জায়গা নেওয়ার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা করা বৈধ হবে কি না, তা বলার জন্য মসজিদের জায়গার দলীল ও নকশা লাগবে এবং ঐ ব্যক্তি যে জায়গা দিতে চাচ্ছেন তার অবস্থান কী এবং তা মসজিদের জন্য কতটা উপকারী, এসব বিষয়ে অবগত হলে এ সম্পর্কে কী করণীয় তা নির্ধারণ করা সম্ভব হতে পারে ইনশাআল্লাহ।
-সহীহ বুখারী ১/৩৮৭; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩০৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪০১; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৮৬
কিছুদিন আগে আমার চাচির পূর্ণ দেহবিশিষ্ট একটি মৃত সন্তান ভূমিষ্ট...
কিছুদিন আগে আমার চাচির পূর্ণ দেহবিশিষ্ট একটি মৃত সন্তান ভূমিষ্ট হয়। আমরা তার কাফন-দাফনের ব্যাপারে আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেবকে জিজ্ঞাসা করি। তিনি বলেন, তাকে গোসল দিয়ে একটি কাপড়ে পেঁচিয়ে কবর দিয়ে দিতে হবে। তখন আমরা হুযুরের কথামতো তাই করি। প্রশ্ন হল, আমাদের জন্য কি মৃত শিশুটিকে গোসল দেওয়া ঠিক হয়েছে?
হাঁ, ঐ মৃত সন্তানটিকে গোসল দেওয়া ঠিক হয়েছে। কেননা পূর্ণ সন্তান মৃত ভূমিষ্ট হলে তাকে গোসল দেওয়া এবং কাফন পরিয়ে দাফন করাই শরীয়তের বিধান।
-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৮৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২১৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫৯; ইমদাদুল ফাত্তাহ ৬২৮
আমি মসজিদে গিয়ে যখন ইমাম সাহেবকে রুকুতে পাই তখন কি...
আমি মসজিদে গিয়ে যখন ইমাম সাহেবকে রুকুতে পাই তখন কি তাকবীরে তাহরীমা বলে হাত বেঁধে তারপর রুকুতে যাব, নাকি হাত না বেঁধে সোজা রুকুতে চলে যাব? এ অবস্থায় তাকবীরে তাহরীমার পর রুকুর জন্য কি আলাদা করে তাকবীর বলতে হবে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দাঁড়ানো অবস্থায় তাকবীরে তাহরীমা বলবেন। অতপর হাত না বেঁধে তাকবীর বলে রুকুতে চলে যাবেন। অবশ্য এক্ষেত্রে রুকুর জন্য আলাদা করে তাকবীর না বললেও চলবে। সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে এক্ষেত্রে রুকুর তাকবীর বলা না বলা উভয় ধরনের বক্তব্য ও আমল আছে।
-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ২/২৭৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ২/৪৩১-২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫২; ফাতহুল কাদীর ১/৪২০
আমাদের মসজিদের জায়গা মোট চার শতক। কিন্তু মসজিদের জন্য ব্যবহার...
আমাদের মসজিদের জায়গা মোট চার শতক। কিন্তু মসজিদের জন্য ব্যবহার হচ্ছে কেবল দুই শতক। বাকি দুই শতক অনেক দিন ধরে পাশের কবরস্থানের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে মুসল্লি সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মসজিদ আরো বড় করা দরকার। তাই এখন জানার বিষয় হল, কবরস্থানের ঐ দুই শতক জায়গায় কি মসজিদটি সম্প্রসারণ করা জয়েয হবে?
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী কবরস্থানের ঐ দুই শতক জায়গাটুকু যেহেতু মসজিদের, কবরস্থানের নয় তাই কর্তৃপক্ষ তাতে মসজিদ সম্প্রসারণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে ঐ জায়গায় যেসব কবর রয়েছে সেগুলো সমান করে দিয়ে এর উপর মসজিদ নির্মাণ করবে।
-আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ২/২২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৭২; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৫; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৪৩৩
কিছুদিন পূর্বে আমাদের গ্রামের কয়েকজন মুসল্লি ফজরের পর মসজিদের পাশের...
কিছুদিন পূর্বে আমাদের গ্রামের কয়েকজন মুসল্লি ফজরের পর মসজিদের পাশের কবরস্থানে গিয়ে যিয়ারত করেন। যিয়ারতের পর তারা কবরস্থানকে পিছনে রেখে হাত উঠিয়ে দুআ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে এ বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন লোক বিতর্ক করে যে, কবর যিয়ারতের পর ভিন্ন করে হাত উঠিয়ে দুআ করা লাগবে কি না? আর হাত উঠিয়ে দুআ করলে কীভাবে করবে, কবরকে সামনে করে দাঁড়াবে না পেছন করে? প্রমাণসহ বিষয়টি জানতে চাই।
কবর যিয়ারত শেষে কিবলামুখী হয়ে হাত উঠিয়ে দুআ করা জায়েয আছে, জরুরী নয়। তাই এ সময় কেউ দুআ করতে চাইলে কবরকে পেছনে বা পাশে রেখে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় হাত উঠিয়ে দুআ করবে। হাদীস শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘‘বাকী’’কবরস্থান যিয়ারত শেষে তিনবার হাত উঠিয়ে ছিলেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৯৭৪); সহীহ মুসলিমের ভাষ্যগ্রন্থ ‘আলমিনহাজে’ ইমাম নববী রাহ. বলেন, এই হাদীস দ্বারা হাত উঠিয়ে দুআ করা মুস্তাহাব প্রমাণিত হয়। (আলমিনহাজ, শরহু মুসলিম, নববী ৭/৪৩)
আরেকটি হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল্লাহ যুলবিজাদাইন রা. এর দাফনের কাজ শেষ করার পর কিবলামুখী হন, এবং উভয় হাত উঠিয়ে তার জন্য দুআ করেন যে, ইয়া আল্লাহ, আমি তার উপর সন্তুষ্ট, আপনিও তার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান। (হিলয়াতুল আউলিয়া ১/১২২; ফাতহুল বারী ১১/১৪৮)
-আলবেনায়াহ ৩/৩০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫০; শরহুল মুনইয়া ৬০৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৫০০
আমাদের বাড়ির সাথে আমাদের পারিবারিক একটি কবরস্থান আছে। যা ওয়াকফকৃত...
আমাদের বাড়ির সাথে আমাদের পারিবারিক একটি কবরস্থান আছে। যা ওয়াকফকৃত নয়। এতে প্রায় ১৩/১৪ বছর যাবত কাউকে দাফন করা হয়নি। এবং ভবিষ্যতেও দাফন করার ইচ্ছা নেই।
এখন আমাদের জানার বিষয় হল, উক্ত কবরস্থানে মসজিদ কিংবা মাদরাসা বানানো যাবে কি না? বা প্রয়োজনে নিজস্ব কাজে ব্যবহার করা যাবে কি না জানালে কৃতজ্ঞ হব।
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী কবরস্থানের জায়গাটি যেহেতু ওয়াকফকৃত নয়; বরং তা মালিকানাধীন জায়গা এবং তাতে কোন নতুন কবরও নেই তাই মালিকগণ চাইলে সেখানে মসজিদ-মাদরাসা বানাতে পারবে। তদ্রূপ অন্য কোনো কাজেও ব্যবহার করতে পারবে।
-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৪২৮; উমদাতুল কারী ৪/১৭৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৮৯; শরহুল মুনইয়াহ ৫৬১
আমাদের এলাকায় মাদরাসার জন্য একটি জমি ক্রয় করা হয়। তাতে...
আমাদের এলাকায় মাদরাসার জন্য একটি জমি ক্রয় করা হয়। তাতে এখনো মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। ভবিষ্যতে মাদরাসা করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর পাশেই একটি মসজিদ আছে। মাদরাসার জমিতে যে সকল ফলমূল হয় তা বিক্রি করে এর মূল্য মসজিদের জন্য ব্যয় করা হয়। ঐ জমির ফলমূল যেমন কলা, পেঁপে ইত্যাদি মসজিদের ভেতরে নিয়ে বিক্রি করা হয়। এখন প্রশ্ন হল-ক) এভাবে মসজিদের ভিতরে নিয়ে এসে ক্রয়বিক্রয় করার কী বিধান?
খ) মাদরাসার জমিতে উৎপাদিত ফসলাদি মসজিদের কাজে লাগানো জায়েয কি না? জানালে উপকৃত হব।
ক) মসজিদ ইবাদতের জন্য নির্ধারিত স্থান। মসজিদে বেচাকেনা করার ব্যাপারে হাদীসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আমর ইবনে শুআইব তার পিতা থেকে, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে ক্রয়বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১০৭২
তাই কোনো অবস্থায় মসজিদের ভিতর মালামাল হাজির করে বেচাকেনা করা যাবে না।
খ) মাদরাসার জমির ফসল মাদরাসার জন্যই ব্যয় করতে হবে। মসজিদের জন্য ব্যয় করা যাবে না। তাই সেখানে এখনো মাদরাসা প্রতিষ্ঠা না হলেও ঐ জমির আয় মাদরাসার জন্যই সংরক্ষণ করতে হবে।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩২২; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৪; হেদায়া ২/৩১২; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৫৯; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৯/৮৮
আমাদের মসজিদের উত্তরপার্শ্বে মসজিদের জমিতে বেশ কয়েকটি পেয়ারা গাছ আছে।...
আমাদের মসজিদের উত্তরপার্শ্বে মসজিদের জমিতে বেশ কয়েকটি পেয়ারা গাছ আছে। তাতে প্রচুর পেয়ারা ধরে। অনেক সময় দেখা যায় কিছু মুসল্লি পেয়ারা ছিড়ে খেয়ে ফেলে। কেউ কেউ সাথে করে নিয়ে যায়। আমার জানার বিষয় হল, এভাবে মসজিদের গাছের ফল খাওয়া কি বৈধ?
মসজিদের ঐ গাছগুলোর ফল মুসল্লি বা অন্য কারো জন্য বিনামূল্যে খাওয়া জায়েয হবে না। মসজিদ কর্তৃপক্ষ ফলগুলো বিক্রি করে তার মূল্য মসজিদের কাজে ব্যয় করবে।
-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩১০; আলবাহরুর রায়েক ৫/২০৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৪৩২
আমার ৩ কাঠার একটি জায়গা আছে, যার বিবরণ হল, পূর্ব...
আমার ৩ কাঠার একটি জায়গা আছে, যার বিবরণ হল, পূর্ব পার্শ্বে আনুমানিক ১৬ ফিট রাস্তা। আমার জায়গার উত্তর পার্শ্বে ৩য় তলা মসজিদ অবস্থিত। মসজিদের পশ্চিম পার্শ্বে কবর স্থান আছে। আমার জায়গার পশ্চিম পার্শ্বে লাগোয়া মসজিদের আরো ৩ কাঠা খরিদকৃত জমি উন্মুক্ত/খালি অবস্থায় আছে। আর আমার জায়গার দক্ষিণ পার্শ্বে মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত আনুমানিক ১ কাঠা জায়গায় টিনশেড ঘর আছে। এ অবস্থায় আমি মসজিদের এবং মসজিদের মুসল্লিদের সার্বিক সুবিধার্থে, মসজিদের গঠন সুন্দর হওয়ার জন্য আমার জায়গার সাথে মসজিদের খরিদকৃত সম্পত্তি ও ওয়াকফকৃত সম্পত্তির সাথে বদল করে মসজিদের একেবারে দক্ষিণ দিকে সমপরিমাণ জায়গায় অবস্থান নিয়ে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করতে চাই। মানব সমাজের সার্বিক কল্যাণ বিবেচনায় এ ব্যাপারে ইসলাম ধর্মের ফতোয়া প্রার্থনা করছি।
প্রশ্নের বর্ণনা মতে বাস্তবেই যদি প্রশ্নোক্ত ওয়াকফিয়া জমিটি আপনার জমির সাথে পরিবর্তন করলে সার্বিকভাবে মসজিদ লাভবান হয় এবং এর দ্বারা ওয়াকফিয়া সম্পদ কোনো প্রকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে ওয়াকফিয়া জমিটি আপনার জমির সাথে পরিবর্তন করার অবকাশ আছে। তবে এ ধরনের পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রে রেজিষ্ট্রি সংক্রান্ত আইনানুগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করে নেওয়া আবশ্যক।
-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩০৬; আলবাহরুর রায়েক ৫/২২৩
আমাদের এলাকার মসজিদের অনেক ফলজগাছ আছে এবং এগুলোতে প্রচুর ফল...
আমাদের এলাকার মসজিদের অনেক ফলজগাছ আছে এবং এগুলোতে প্রচুর ফল হয়। এখন প্রশ্ন হল, মুসল্লীদের জন্য বিনামূল্যে মসজিদের গাছের ফল খাওয়া বৈধ হবে কি না?
মসজিদের জায়গার গাছের ফলমূল মসজিদের সম্পদ। তাই মুসল্লী বা অন্য কারো জন্য বিনামূল্যে তা খাওয়া বৈধ হবে না। এ সকল ফল বিক্রি করে তার মূল্য মসজিদ ফান্ডে জমা দিতে হবে।
-আলইসআফ ২২; আলবাহরুর রায়েক ৫/২০৪-২০৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩১০-৩১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৭৫, ৪৭৭; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৪৩২
আমরা অনেককে মসজিদে বিয়ে পড়াতে দেখি। শরীয়তে কি মসজিদে বিয়ে...
আমরা অনেককে মসজিদে বিয়ে পড়াতে দেখি। শরীয়তে কি মসজিদে বিয়ে পড়াতে উৎসাহিত করা হয়েছে?
মসজিদে বিয়ে পড়ানো মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে মসজিদে বিয়ে সম্পাদনের জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।
-সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ১০৯৫; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১০৪৪৮; ইলামুস সাজিদ বিআহকামিল মাসাজিদ ৩৬০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৮; ফাতহুল কাদীর ৩/১০২
আমাদের মসজিদের খতীব সাহেব আল্লাহর মহববতের কথা বলতে গিয়ে বলেন,...
আমাদের মসজিদের খতীব সাহেব আল্লাহর মহববতের কথা বলতে গিয়ে বলেন, আল্লাহ তাআলা যখন কোনো বান্দাকে মহববত করেন তখন জিবরাঈল আ.কে ডেকে বলেন যে, আমি অমুক ব্যক্তিকে মহববত করি। তুমিও তাকে মহববত কর। অতপর জিবরাঈল আ. আসমানে ঘোষণা করেন, অমুক ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা মহববত করেন। সুতরাং তোমরা তাকে মহববত কর। তখন আসমানবাসী তাকে মহববত করতে থাকে। অতপর জমিনেও তার প্রতি কবুলিয়ত ঢেলে দেওয়া হয়। আর আল্লাহ তাআলা যখন কোনো বান্দাকে অপছন্দ করেন তখন জিবরাঈল আ.কে ডেকে বলেন, আমি অমুক ব্যক্তিকে অপছন্দ করি। সুতরাং তুমিও তাকে অপছন্দ কর। তখন জিবরাঈল আ. তাকে অপছন্দ করতে থাকেন। অতপর তিনি আসমানবাসীদের কাছে ঘোষণা করেন যে, অমুক ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা অপছন্দ করেন তোমরাও তাকে অপছন্দ করো। তখন আসমানবাসীরাও তাকে অপছন্দ করতে থাকে। অতপর জমিনে তার প্রতি ঘৃণা ছড়িয়ে পড়ে। খতীব সাহেবের উপরোক্ত বয়ান সহীহ কি না এবং সহীহ হলে তার কবুলিয়্যাত ঢেলে দেওয়া হয়-এ কথার অর্থ কী?
হ্যাঁ, খতীব সাহেবের ঐ বক্তব্য সঠিক। সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিমসহ অন্যান্য হাদীসের কিতাবে সহীহ সনদে তা বর্ণিত আছে। আর উক্ত হাদীসে যে কবুলিয়াতের কথা বলা হয়েছে তার অর্থ হল, ভূপৃষ্ঠে তার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তাআলার পছন্দনীয় বান্দা হওয়ার কারণে নেককার মানুষও তাকে মহববত করে এবং সর্বজনের অন্তরে তার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জন্মে।
-সহীহ বুখারী ৬০৪০; সহীহ মুসলিম ২/৩৩১; ইকমালুল মুলিম ৮/১১৬; ফাতহুল বারী ১০/৪৭৬; জামে তিরমিযী ২/১৪৯; মুসনাদে আহমদ ৫/২৭৯; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৫/৪৫৯; তাফসীরে কুরতুবী ৪/৬৯
জনৈক ব্যক্তি একটি চারতলা মার্কেট নির্মাণ করেছে। তৃতীয় ও চতুর্থ...
জনৈক ব্যক্তি একটি চারতলা মার্কেট নির্মাণ করেছে। তৃতীয় ও চতুর্থ তলাকে মসজিদ বানাতে চায়। জানার বিষয় হল, উক্ত মসজিদটি শরঈ মসজিদ হিসাবে গণ্য হবে কি না?
হ্যাঁ, ঐ দুই তলা স্থায়ীভাবে মসজিদের জন্য ছেড়ে দিলে তা শরঈ মসজিদ হিসাবে গণ্য হবে। উল্লেখ্য, সম্ভব হলে এক্ষেত্রে মসজিদের জন্য পৃথক সিড়ির ব্যবস্থা করা উত্তম হবে।
ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৮৪৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫১; ফাতহুল কাদীর ৬/২১৮; আদ্দুররুল মুখথার ২/৫৯৪
আমার নানু তার একটি জায়গা মসজিদের জন্য ওয়াকফ করার নিয়ত...
আমার নানু তার একটি জায়গা মসজিদের জন্য ওয়াকফ করার নিয়ত করেছেন এবং তিনি এ কথাও বলেছেন, ধরে নাও আমি এ জায়গা মসজিদে দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু পরবর্তীতে ঐ জায়গার পাশেই আরেকটি মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বিধায় এ জায়গায় মসজিদ করার কোনো প্রয়োজন নেই। তাই তিনি নিয়ত করেছেন, এ জায়গা বিক্রি করে দেশে যেখানে মসজিদ নেই সেখানে মসজিদ নির্মাণ করবেন। আমার প্রশ্ন হল, বর্তমান জায়গা বিক্রি করে দেশে জায়গা ক্রয় করে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে কি না?
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার নানু যেহেতু মৌখিক বা লিখিতভাবে ঐ জমি ওয়াকফ করে দেননি তাই শুধু নিয়তের কারণে বা ধরে নাও আমি এ জায়গা মসজিদের জন্য দিয়ে দিয়েছি’ বলার কারণে ঐ জমিটি ওয়াকফ হয়ে যায়নি। অতএব জমিটি বিক্রি করে অন্যত্র যেখানে প্রয়োজন আছে তা দ্বারা মসজিদ নির্মাণ করতে পারবেন।
হিদায়া ২/৬৪৪; ফাতহুল কাদীর ৬/২১৭
আমাদের মসজিদ সংলগ্ন পূর্ব দিকে একটি মাঠ ও পশ্চিম দিকে...
আমাদের মসজিদ সংলগ্ন পূর্ব দিকে একটি মাঠ ও পশ্চিম দিকে একটি মাঠ আছে। পূর্ব দিকের মাঠটি মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত। আর পশ্চিম দিকেরটি আমাদের নিজস্ব। আমরা এতে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য আমরা নিয়ত করেছি, পশ্চিম দিকের মাঠটি মাদরাসার জন্য দান করব। এরপর মসজিদটি পশ্চিম পার্শ্বে মাদরাসার জায়গায় নিয়ে আসব এবং মাদরাসাটি পূর্ব দিকে মসজিদের জায়গায় নিয়ে যাব।
কেননা আমাদের পশ্চিম দিকের মাঠটির আয়তন একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট নয়। আর মসজিদের খালি মাঠটি বেশ বড়সড়। যেখানে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। জমির আয়তন প্রায় উনিশ শতাংশ এবং এটি নিকটবর্তী সময়ে মসজিদের কাজে আসার সম্ভাবনা নেই।
খ) যদি মসজিদের জায়গা রদবদল করা না যায় তাহলে পশ্চিমের মাঠটিতে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে পূর্ব দিকে মসজিদের ওয়াকফকৃত জায়গায় মদারাসার জন্য কোনো ঘর বা ভবন নির্মাণ করা যাবে কি?
ক) প্রশ্নোক্ত মসজিদটি স্থানান্তর করা জায়েয হবে না। বরং মসজিদটিকে তার স্থানেই বহাল রাখতে হবে। কেননা কোনো স্থানে মসজিদ হয়ে গেলে তা মসজিদের জন্যই নির্ধারিত হয়ে যায়। তাই তা মসজিদ হিসেবে বহাল রাখা জরুরি।-আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৯; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪০; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৮৪; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৯৩
খ) মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গা মসজিদের কাজে ব্যবহার করাই শরীয়তের বিধান। সুতরাং প্রশ্নোক্ত মসজিদের খালি জায়গাতে স্থায়ীভাবে মাদরাসা ভবন নির্মাণ করা যাবে না। তবে উক্ত খালি জায়গাটি যেহেতু এখনি মসজিদের প্রয়োজন হচ্ছে না আর দ্বীনী তালীমও যেহেতু মসজিদের মাকসাদের অন্তর্ভুক্ত তাই মসজিদ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সাময়িকভাবে সেখানে মাদরাসার জন্য ঘর বানানো যাবে এবং তাতে মাদরাসার কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে। পরবর্তীতে যখন ঐ জায়গা মসজিদের প্রয়োজন হবে তখন তা মসজিদের জন্য ছেড়ে দিতে হবে।-আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৬২, ৩৬২; নিযামুল ফাতাওয়া ৪/২/৪৮
মসজিদের গাছের ফল ইমাম মুয়াযযিন বা অন্য কারো জন্য বিনামুল্যে খাওয়া বা তা বিক্রি করে ইমাম মুয়যযিনের বেতন দেওয়া ৷
-আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৩৮; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪১৭ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷
মসজিদের গাছের ফল মুসল্লি খাওয়া৷
01756473393
আমাদের মহল্লায় একটি নতুন মসজিদ নির্মিত হয়েছে। আমি তাতে কিছু...
ওয়াকফ করতে চাচ্ছি। কেউ কেউ বলছে, পাখা যেহেতু স্থানান্তরযোগ্য
জিনিস তাই তা ওয়াকফ হবে না; বরং সাধারণ দান বলেই বিবেচ্য হবে। দয়া করে শরীয়তের আলোকে বিষয়টির সমাধান জানাবেন।
স্থায়ীভাবে মসজিদের মালিকানায় চলে যাবে। এবং আপনিও স্থায়ীভাবে
এগুলোর সওয়াব পেতে থাকবেন। সুতরাং এগুলো ওয়াকফ না সাধারণ দান এই প্রশ্ন
করা অর্থহীন।
আলমাবসূত সারাখসী ১২/৪৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৫০২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৬৪; হেদায়া,
ফাতহুল কাদীর ৫/৪৩১
আমাদের মহল্লায় একটি নতুন মসজিদ নির্মিত হয়েছে। আমি তাতে কিছু...
পাখা ওয়াকফ করতে চাচ্ছি। কেউ কেউ বলছে, পাখা যেহেতু
স্থানান্তরযোগ্য জিনিস তাই তা ওয়াকফ হবে না; বরং সাধারণ দান বলেই বিবেচ্য হবে। দয়া করে শরীয়তের আলোকে বিষয়টির সমাধান জানাবেন।
স্থায়ীভাবে মসজিদের মালিকানায় চলে যাবে। এবং আপনিও
স্থায়ীভাবে এগুলোর সওয়াব পেতে থাকবেন। সুতরাং এগুলো ওয়াকফ না
সাধারণ দান এই প্রশ্ন করা অর্থহীন।
আলমাবসূত সারাখসী ১২/৪৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৫০২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৬৪;
হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ৫/৪৩১
ক) মসজিদে কোনো ফ্যান, মাইক, বদনা ইত্যাদি দান করলেই কি...
করলেই কি তা ওয়াকফ হয়ে যাবে, নাকি মুখেও
পৃথকভাবে ওয়াকফের কথা উচ্চারণ করা ওয়াকফের জন্য
শর্ত?
খ) মসজিদের চাঁদার দ্বারা যে ফ্যান, মাইক ইত্যাদি
ক্রয় করা হয় তা কি ওয়াকফ হয়ে যাবে? গ) মসজিদের নারিকেল, আম ইত্যাদি যা
অন্যদের কাছে বিক্রি করা হয় তা কি ইমাম-মুয়াযযিনের
জন্য বিনামূল্যে খাওয়া জায়েয হবে? অনুগ্রহপূর্বক উপরের মাসআলাগুলোর সমাধান
শরীয়তের বিধান মোতাবেক দিয়ে আমাদের বিবাদ
নিরসনে হযরতের সুমর্জি কামনা করছি।
ওয়াকফ শব্দ উচ্চারণ করা জরুরি নয়।
খ) মসজিদের চাঁদা দিয়ে ফ্যান, মাইক ইত্যাদি ক্রয়
করলে তা-ও মসজিদের নিজস্ব মালিকানা হিসেবে ধর্তব্য
হবে এবং এর উপরও ওয়াকফের হুকুম আরোপিত হবে।
গ) মসজিদের গাছের ফল মসজিদের মালিকানাধীন
সম্পদ। যথাসম্ভব এগুলো বিক্রি করে এর মূল্য মসজিদের
প্রয়োজনে ব্যয় করতে হবে। এগুলো ইমাম-মুয়াযযিন বা
অন্য কারো জন্য মুতাওয়াল্লির অনুমোদন ছাড়া বিনামূল্যে খাওয়া বৈধ হবে না।
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪১৭; আলমুহীতুল বুরহানী
৯/১৩০-১৩১, ৯/১৩৮; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া
২/৪১৭; আলইসআফ পৃ. ২২,৫৬
মসজিদের জায়গায় মসজিদের উন্নয়নের জন্য নিচ তলায় মার্কেট রেখে ২য়...
উচিত।
উল্লেখ্য যে, মসজিদের ব্যয় নির্বাহের জন্য মসজিদের জমিতে শপিং মল, দোকানপাট ইত্যাদি করতে চাইলে মসজিদের জন্য বেশি জমি ওয়াকফ করে মসজিদর ভবন থেকে দূরে পৃথক ভবন নির্মাণ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তা ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে মসজিদের পরিবেশও বজায় থাকবে এবং মসজিদের আয়েরও একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এছাড়া মসজিদের নিয়মিত জরুরি ব্যয় মুসল্লি ও সাধারণ মুসলমানের স্বতঃস্ফূর্ত দান থেকে নির্বাহ করা হবে। -সূরা জিন (৭২) : ১৮; আলমুহাররারুল ওয়াজিয ১৫/১৪৫; হাশিয়াতুশ শিলবী আলাত তাবয়ীন ৪/২৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬২; আদ্দুররুল মুখতার
৪/৩৫৮
একদিন মসজিদে গিয়ে দেখি, ইমাম সাহেব রুকুতে চলে গিয়েছেন। তখন...
২৫৩৪; শরহুল মুনইয়াহ ৩০৫; হালবাতুল মুজাল্লী
২/১২৬
আমাদের গ্রামের পূর্ব পাড়ায় একটি মসজিদ আছে। যা ৫০-৬০ বছর...
এমনটি করা কি বৈধ হবে? ঐ মসজিদের জায়গায় আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করা কি জায়েয হবে?
না। ওয়াকফের শর্ত অনুযায়ী এ জায়গাটি
পূর্ব পাড়ার মসজিদের উন্নয়ন ও আয়ের জন্যই
ব্যবহার করতে হবে। পশ্চিম পাড়ায় নতুন
মসজিদ নির্মাণের প্রয়োজন থাকলে ভিন্ন জায়গার ব্যবস্থা করে নির্মাণ করতে হবে।
-রদ্দুল মুহতার ৪/৩৬০; দুরারুল হুক্কাম
২/১৩৬
কয়েকদিন আগে আমাদের মাদরাসা সংলগ্ন মহল্লার মসজিদের জায়গা মাপা হলে...
বাড়ির
ভেতরে চলে গেছে তা তাকে বিক্রি করে দিতে বা এর পরিবর্তে অন্য কোনো জায়গা নিয়ে নিতে। জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় মসজিদের জায়গা তার কাছে বিক্রি করা বা অন্য আরেকটি জায়গার সাথে বদল করা জায়েয হবে কি? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
আমি মসজিদে গিয়ে যখন ইমাম সাহেবকে রুকুতে পাই তখন কি...
সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে এক্ষেত্রে রুকুর তাকবীর
বলা না বলা উভয় ধরনের বক্তব্য ও আমল
আছে।
-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ২/২৭৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, ২/৪৩১-২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫২; ফাতহুল কাদীর ১/৪২০
কিছুদিন আগে আমার চাচির পূর্ণ দেহবিশিষ্ট একটি মৃত সন্তান ভূমিষ্ট...
হয়েছে?
আমাদের এলাকায় মসজিদের ছাদে স্থানীয় লোকজন ধান কিংবা বিভিন্ন জিনিষ...
দলিলঃ-
বাহরুর রায়েক ৫/৪২১ (জাকারিয়া). আলমগিরী ৫/৩২২ (দারুল কিতাব) দুররুল মুখতার ২/৪২৬ (জাকারিয়া).