ফতোয়া: বিবিধ

ফতোয়া নং: ৭৩৩৮
তারিখ: ১৯-ডিসেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির জন্য দুআ, ইস্তেগফার করা ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার বোন কোনো এক কারণে আত্মহত্যা করেছে ৷ আমরা জানি আত্মহত্যা করলে জাহান্নামী ৷ আমার বোনো জাহান্নাম থেকে বাচার জন্য আমরা কি করতে পারি? আমরা কি তার জন্য দুআ, ইস্তেগফার করতে পারব?
উত্তর
আত্মহত্যা করা কবীরা গুনাহ ৷ আর যত বড় গুনাহগারই হোক না কেন যদি ঈমান থাকা অবস্থায় মারা যায়, তাহলে তার জন্য দুআ করা যাবে ৷ অতএব আত্মহত্যাকারীর জন্য দুআ করা যাবে। সুতরাং আপনারা আপনার বোনের জন্য দুআ, ইস্তিগফার করতে পারবেন। এছাড়া এখন আপনাদের আর কিছু করার নেই৷
জাবির রা: থেকে বর্ণিত, তুফাইল ইবনে আমর রা: এর গোত্রের এক ব্যক্তি আত্মহত্যার পর রাসূলুল্লাহ সা: তার জন্য মাগফেরাতের দুআ করেছিলেন ৷
-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৷
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা: থেকে বর্নিত তিনি বলেন-
‘আমরা কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিদের জন্য মাগফেরাতের দুআ করতাম না। পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যখন শুনলাম- “আল্লাহ তাআলা তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করবেন না। শিরক ছাড়া যে কোনো গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন।” আর আমি উম্মতের মধ্যে কবীরা গুনাহে জড়িয়ে যাওয়া লোকদের জন্য আমার সুপারিশের ক্ষমতাকে জমা করে রেখেছি" এরপর থেকে আমরা তাদের জন্য দুআ করতাম।
-মুসনাদে বাযযার, হাদীস ৫৮৪০; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৭৬০১৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৭৩২৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

বিড়াল পালা কি জায়েয? অনেকের ঘরেই দেখা যায় বিড়াল থাকে।...

প্রশ্ন

বিড়াল পালা কি জায়েয? অনেকের ঘরেই দেখা যায় বিড়াল থাকে। কেউ তা ইচ্ছা করেই পালে। এটা কি বৈধ? আর কুকুর পালার কী হুকুম? কোনো প্রয়োজনে বা প্রয়োজন ছাড়া এমনিতেই কুকুর পালা কি জায়েয? বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর

বিড়াল পালা জায়েয। হাদীস শরীফে আছে, আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ، فَدَخَلَتْ فِيهَا النَّارَ، لاَ هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَلاَ سَقَتْهَا، إِذْ حَبَسَتْهَا، وَلاَ هِيَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ.

জনৈক মহিলাকে একটি বিড়ালের কারণে আযাব দেওয়া হয়। সে বিড়ালটিকে বন্দি করে রাখে, এ অবস্থায় সেটি মারা যায়। সে এটিকে বন্দি করে রেখে পানাহার করায়নি এবং তাকে ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে (নিজে) জমিনের পোকা-মাকড় খেতে পারে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৪৮২

এ হাদীসের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনে হাজার রাহ. বলেন, কুরতুবি রাহ. বলেছেন, এ হাদীস থেকে বিড়াল পালা ও বিড়ালকে বেধে রাখা জায়েয বলে প্রমাণিত হয়, যদি তাকে খানা-পিনা দেওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি না করা হয়। -ফাতহুল বারি ৬/৪১২

এ ছাড়া আরো কিছু হাদীস রয়েছে যা থেকে বিড়াল পালা জায়েয প্রমাণিত হয়।

আর শরীয়তসম্মত ওজর ছাড়া কুকুর পালা মারাত্মক গুনাহের কাজ। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

لاَ تَدْخُلُ المَلاَئِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلاَ تَصَاوِيرُ.

‘যে ঘরে কুকুর বা (প্রাণির) ছবি রয়েছে তাতে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করেন না’। -সহীহ বুখারী,হাদীস ৫৯৪৯

আরেক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি শিকার করা বা গবাদি পশু বা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কুকুর পালে তার প্রতিদিন দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৭৫

আর এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে কোনো কোনো ফকীহ বলেছেন, ঘর-বাড়ি পাহারার প্রয়োজনেও কুকুর রাখা জায়েয।

এ সব প্রয়োজন ছাড়া কুকুর পালা জায়েয নয়। বিশেষত বর্তমানে বিজাতীয় ফ্যাশনের অনুকরণে কুকুর পালার যে রেওয়াজ হয়েছে তা সম্পূর্ণ হারাম।

-আলইসতিযকার ১/২০৩; ফয়যুল কাদীর ৩/৫২২; উমদাতুল কারী ১৫/১৯৮; শরহে মুসলিম, নববী ৩/১৮৬; মিরকাতুল মাফাতীহ ২/৪৫৬; ফাতহুল কাদীর ৫/৩৪৬; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৭৩; রদ্দুল মুহতার ৫/২২৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭৩২৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

মহিলাদের জন্য নকল চুল ব্যবহারের হুকুম কী? শুনেছি তাদের জন্য...

প্রশ্ন

মহিলাদের জন্য নকল চুল ব্যবহারের হুকুম কী? শুনেছি তাদের জন্য নাকি কোনো ধরনের নকল চুল ব্যবহার করা জায়েয নয়। এ কথা কি ঠিক?

উত্তর

মহিলাদের জন্য কোনো মানুষের চুল পরচুলা হিসাবে ব্যবহার করা নাজায়েয। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে কঠিন ধমকি এসেছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

لَعَنَ اللَّهُ الوَاصِلَةَ وَالمُسْتَوْصِلَةَ.

আল্লাহ তাআলা লা‘নত করেন ঐ নারীর প্রতি যে (অন্য নারীকে) চুল লাগিয়ে দেয় এবং যে নারী নিজে চুল লাগায়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৯৩৩)

অবশ্য পরচুলা যদি কোনো মানুষের চুল না হয়ে শুকর ব্যতীত কোনো পশুর হয় অথবা কৃত্রিম চুল হয় তাহলে তা ব্যবহার করা অবৈধ নয়।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন,

لاَ بَأْسَ بِالْوِصَالِ إِذَا كَانَ صُوفًا.

পশম দিয়ে তৈরি পরচুলা ব্যবহার করতে সমস্যা নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ২৫৭৪৩)

সুনানে আবু দাউদের বর্ণনায় এসেছে সাঈদ ইবনে যুবায়ের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- لَا بَأْسَ بِالْقَرَامِلِ

‘করমাল’ ব্যবহারে কোনো সমস্যা নেই। (হাদীস ৪১৬৮)

‘করমাল’ আরবী শব্দ। অর্থ হল রেশম বা পশমের সুতা দিয়ে তৈরি কেশগুচ্ছ যা মহিলারা চুলের সাথে যুক্ত করে ব্যবহার করে।

সুতরাং কেনো ধরনের নকল চুল ব্যবহার করা জায়েয নেই- এ কথা ব্যাপকভাবে বলা ঠিক নয়।

প্রকাশ থাকে যে, কৃত্রিম চুল লাগালে তখনই জায়েয হবে যখন তা শুধুই সৌন্দর্যচর্চা পর্যন্ত সীমিত থাকবে। কিন্তু এ ধরনের চুল ব্যবহার করার দ্বারা যদি প্রতারণা উদ্দেশ্য থাকে তাহলে তা নাজায়েয হবে।

-রাদ্দুল মুহতার ৬/৩৭২; বাযলুল মাজহুদ ১৭/৫৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৮২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি একজন হেফজখানার শিক্ষক। আমার হেফজখানায় কয়েকজন নাবালেগ বাচ্চাও পড়াশোনা...

প্রশ্ন

আমি একজন হেফজখানার শিক্ষক। আমার হেফজখানায় কয়েকজন নাবালেগ বাচ্চাও পড়াশোনা করে। আমি জানতে চাই, নাবালেগ ছেলে যদি সেজদার আয়াত তেলাওয়াত করে, তাহলে কি আমার উপর সেজদা ওয়াজিব হবে?

উত্তর

বুঝমান নাবালেগ শিশু থেকে সেজদার আয়াত শুনলে সেজদা ওয়াজিব হয়। হেফজখানার বাচ্চারা সাধারণত বুঝমানই হয়ে থাকে। সুতরাং তাদের মুখে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪; বাদায়েউস সনায়ে ১/৪৪০; ফাতহুল কাদীর ১/৪৬৮; রদ্দুল মুহতার ২/১০৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৬২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার একটি ছেলে জন্মের সতের দিন পরে মারা গেছে। এখন...

প্রশ্ন

আমার একটি ছেলে জন্মের সতের দিন পরে মারা গেছে। এখন আমি তার আকীকা করতে চাই। এতে শরীয়তের কোনো বাধা আছে কি না?

উত্তর

আকীকা মূলত জীবিত সন্তানের জন্য করা মুস্তাহাব। অবশ্য কোনো কোনো ফকীহ মৃত সন্তানের জন্য করার কথাও বলেছেন তাই আপনি চাইলে আপনার মৃত সন্তানের আকীকা করতে পারবেন। তবে সন্তান মারা যাওয়ার পর তার আকীকার বিষয়টি ততটা গুরুত্ব থাকে না।

-আলমাজমূ ৮/৪১২; আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ আলকুয়াইতিয়্যাহ ৩০/২৭৭; ফাতাওয়া রহীমিয়া ১০/৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৫৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

১. যাকে দেখা নাজায়েয তার ছবিও কি দেখা নাজায়েয?২. বিভিন্ন...

প্রশ্ন

১. যাকে দেখা নাজায়েয তার ছবিও কি দেখা নাজায়েয?

২. বিভিন্ন পণ্যের গায়ে নারীদের ছবি দেয়া থাকে। এগুলোর দিকে তাকানোর হুকুম কী?

উত্তর

১. হাঁ, যাকে দেখা নাজায়েয তার ছবি দেখাও নাজায়েয।

২. পণ্যের গায়ে নারীদের যে সব ছবি দেয়া থাকে সেগুলোর দিকে তাকানোও গুনাহ। তাই এগুলো থেকে দৃষ্টি হেফাযতের চেষ্টা করতে হবে। তবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে গেলে গুনাহ হবে না। তবে এক্ষেত্রে দৃষ্টি পড়ার সাথে সাথে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে হবে। এধরনের পণ্য ঘরে এমনভাবে রাখবে যেন ছবি দৃশ্যমান না থাকে। প্রয়োজনে ছবির মুখ কালি দিয়ে মুছে দিবে, অথবা অন্য কিছু দিয়ে ঢেকে দিবে।

প্রকাশ থাকে যে, পণ্যের গায়ে এবং বিজ্ঞাপনে নারীর ছবি ব্যবহার করা হারাম। এতে যেমন নারীর অসম্মান হয় তেমনি এর কারণে বদনযরীর গুনাহও হয়। তেমনিভাবে পণ্যের গায়ে পুরুষের ছবি ব্যবহার করাও নাজায়েয। এসব শরীয়ত পরিপন্থী ও কুরুচিপূর্ণ কাজ থেকে সকল মুসলমানদের বিরত থাকা আবশ্যক। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১৫৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২৯৭৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৭২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪/২৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২০১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আকীকা করা মূলত কার দায়িত্ব? বাবার বর্তমানে দাদা, নানা বা...

প্রশ্ন

আকীকা করা মূলত কার দায়িত্ব? বাবার বর্তমানে দাদা, নানা বা অন্য কেউ যদি আকীকা করে তাহলে কি আকীকা আদায় হবে?

ছোটবেলায় কারো যদি আকীকা না হয়ে থাকে তাহলে বড় হয়ে সে কি নিজের আকীকা নিজে করতে পারবে?

উত্তর

সন্তানের আকীকার দায়িত্ব বাবার। বাবার সামর্থ্য না থাকলে যদি মা সামর্থ্যবান হন তবে মা সন্তানের আকীকা করবেন। অবশ্য বাবা-মা সামর্থ্যবান হোক বা না হোক উভয় অবস্থায় তাদের সম্মতিতে দাদা, নানা বা যে কেউ আকীকা করলে আকীকা সহীহ হয়ে যাবে।

আকীকা সপ্তম দিনে করা উত্তম, তা না পারলে চৌদ্দতম দিনে বা একুশতম দিনে করবে। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

وَلْيَكُنْ ذَاكَ يَوْمَ السَّابِعِ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ فَفِي أَرْبَعَةَ عَشَرَ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ فَفِي إِحْدَى وَعِشْرِينَ.

আর তা (আকীকা) যেন সপ্তম দিনে করা হয়, যদি সপ্তম দিনে করা না হয় তবে চৌদ্দতম দিনে এবং চৌদ্দতম দিনে করা না হলে একুশতম দিনে করবে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯

আর এ সময়ের ভেতর যদি আকীকা করা না হয় তাহলে পরেও করা যাবে।

কারো যদি ছোটবেলায় আকীকা করা না হয়ে থাকে এবং সে বড় হয়ে নিজের আকীকা নিজে করতে চায় তাহলে সেটারও সুযোগ আছে। বিখ্যাত তাবেয়ী মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন রাহ. বলেন, আমি যদি জানতাম যে, আমার আকীকা করা হয়নি তাহলে আমি নিজেই আমার আকীকা করতাম। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৪৭১)

-জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫২২;; ফয়যুল বারী ৪/৩৩৭; তুহফাতুল মুহতাজ ১২/২৯৩; ফাতাওয়া রহীমিয়া ১০/৬১-৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২০০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার বড় ভাই একটি ছাগল যবাই করছিলেন। তখন আমি তাকে...

প্রশ্ন

আমার বড় ভাই একটি ছাগল যবাই করছিলেন। তখন আমি তাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য জোরে বিসমিল্লাহ বলি। পরবর্তীতে তাকে জিজ্ঞাসা করি, আপনি কি বিসমিল্লাহ বলেছিলেন? তিনি বললেন, তুমি তো বলেছই, তাই আমি ইচ্ছা করেই আর বলিনি। একজন বললেই তো যথেষ্ট। এখন তার যবাইকৃত এ ছাগলের গোশত কি হালাল হবে?

উত্তর

যবাই করার সময় যবাইকারীর বিসমিল্লাহ বলা জরুরি। যবাইকারী না বলে অন্য কেউ বললে তা যথেষ্ট হবে না। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ভাই যবাই করার সময় যেহেতু বিসমিল্লাহ বলেননি তাই ঐ ছাগলের যবাই সহীহ হয়নি। অতএব তার গোশত হালাল হবে না।

-সূরা আনআম (৬) : ১২১; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৩; বাদায়েউস সনায়ে ৪/১৭০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩০২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৮৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

এক ব্যক্তি ১০ যিলহজ্ব সকালে মুযদালিফা থেকে মিনায় যাওয়ার সময়...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি ১০ যিলহজ্ব সকালে মুযদালিফা থেকে মিনায় যাওয়ার সময় পায়ে আঘাত পায়। এক জায়গায় হোঁচট খেয়ে পা মচকে যায়। যার কারণে ঐ দিন মিনায় গিয়ে কংকর মারা তার জন্য সম্ভব ছিল না। তাই সে ঐ দিন তার এক সঙ্গীকে দিয়ে রমি করায়। সেদিন ওষুধ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরের দিন এগারো তারিখ বিকেলে সে অনেকটা সুস্থ হয়ে যায় এবং ঐ দিনের রমি রাতের বেলা সে নিজেই গিয়ে আদায় করে।

প্রশ্ন হল, প্রথম দিন সে যে আরেকজনকে দিয়ে রমি করিয়েছে তা কি সহীহ হয়েছে? আর পরের দিন তো সে সুস্থ হয়ে গেছে। তাহলে কি ঐ দিনের রমি পরের দিন তাকে আবার করে নিতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি যেহেতু ১০ যিলহজ্ব অসুস্থ ছিল। ফলে নিজে গিয়ে কংকর মারতে সক্ষম ছিল না তাই ঐ দিন অন্যকে দিয়ে কংকর মারানো সহীহ হয়েছে। সুতরাং পরের দিন সুস্থ হলেও বিগত দিনের কংকর নিক্ষেপ করতে হবে না। আর এগারো তারিখে নিজে গিয়ে কংকর মারা ঠিক হয়েছে।

-কিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনাহ ১/৫৮১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩৬; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ১৮৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার দুআ কুনূত মুখস্থ নেই। এখন বিতরের তৃতীয় রাকাতে দুআ...

প্রশ্ন

আমার দুআ কুনূত মুখস্থ নেই। এখন বিতরের তৃতীয় রাকাতে দুআ কুনূতের সময় আমি কী করব?

উত্তর

আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুআ কুনূত মুখস্থ করে নিন। আর দুআ কুনূত মুখস্থ করার আগ পর্যন্ত নিম্নোক্ত দুআটি পড়তে পারেন-

رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَةً وَّ فِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ

অথবা কয়েকবার أَللّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا বা أَسْتَغْفِرُ اللهَ পড়বেন।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৭০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩৪৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৪২-৪৩; রদ্দুল মুহতার ২/৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১০৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি ফুটপাতের দোকান থেকে বিভিন্ন জিনিস ক্রয় করি। অনেক সময়...

প্রশ্ন

আমি ফুটপাতের দোকান থেকে বিভিন্ন জিনিস ক্রয় করি। অনেক সময় দোকানির সাথে দরকষাকষি হয়। আমি একটি দাম বলি। সে আমার কাক্সিক্ষত দামে না দেওয়ায় সেখান থেকে আমি চলে আসি। কিন্তু দূরে আসার পর ঐ দামেই পণ্যটি কেনার জন্য দোকানি আমাকে ডাকতে থাকে। আমার প্রশ্ন হল, এরূপ ক্ষেত্রে শরীয়তের দৃষ্টিতে ঐ পণ্যটি কেনা কি আমার জন্য জরুরি?

উত্তর

ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এক পক্ষ পণ্যের মূল্য প্রস্তাব করার পর অপর পক্ষ তাতে রাজি না হলে ঐ প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। তদ্রূপ এক পক্ষ মূল্য প্রস্তাবের পর অপর পক্ষ রাজি হওয়ার আগে দুজনের কেউ ঐ জায়গা থেকে চলে গেলেও ঐ প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু আপনি মূল্য প্রস্তাব করার পর দোকানি অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং আপনিও সেখান থেকে চলে এসেছেন তাই আপনার আগের প্রস্তাব বাতিল হয়ে গেছে। অতএব এক্ষেত্রে আপনার প্রস্তাবিত মূল্যে দিতে চাইলেও আপনার না নেওয়ার সুযোগ আছে। তাই না নেওয়াতে আপনার কোনো ত্রুটি হয়নি। বরং এক্ষেত্রে বিক্রেতা ঐ মূল্যে দিতে চাইলে তা নতুন প্রস্তাব হিসেবে ধর্তব্য হবে। সুতরাং পণ্যটি ক্রয় করা বা না করা উভয় এখতিয়ার আপনার থাকবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২৪; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৬০-৪৬১, ৪৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৭২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৬০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের মাদরাসায় এমন অনেক সামান আছে, যেগুলো পূর্বের কোনো ছাত্র...

প্রশ্ন

আমাদের মাদরাসায় এমন অনেক সামান আছে, যেগুলো পূর্বের কোনো ছাত্র রেখে চলে গেছে। কিন্তু আর নিতে আসেনি। যেমন, ট্রাংক, লেপ-তোষক, কিতাব ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে কোনোটার মালিক জানা আছে। আবার কোনোটার মালিক জানা নেই। যে সকল সামানার মালিক জানা আছে তাদের সাথে মাদরাসার পক্ষ থেকে তা নিয়ে যাওয়ার জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তারা তা নিতে আসছে না। আমার জানার বিষয় হল, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এ সামানাগুলো কী করবে? মালিক জানা থাকা না থাকার বিষয়ে কি কোনো পার্থক্য হবে? দলীলসহ জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

যে সমস্ত জিনিসপত্রের মালিক জানা আছে, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাঁকে নিয়ে যেতে বলবে। যদি তারা নিতে না চায় তাদের থেকে অনুমতি নিয়ে কোনো গরিবকে দান করে দিবে।

আর যে সমস্ত সামানার মালিক জানা নেই এবং মালিকের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই সেগুলো মাদরাসা কর্তৃপক্ষ গরিব ছাত্রদেরকে দান করে দিতে পারবে।

উল্লেখ্য যে, একজন তালিবুল ইলম যে সময় প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে শুধু সে সময়ই প্রয়োজনীয় মাল-সামানা রাখতে পারবে। মাদরাসা থেকে চলে যাওয়ার পর সেখানে তার সামানা রাখা ঠিক নয়। কেননা এর দ্বারা অন্যদের অসুবিধা হয়।

অবশ্য অল্প সময়ের জন্য রাখলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সযত্নে রাখবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নিজের জিনিসপত্র মাদরাসায় রেখে দেওয়া অন্যায়।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৮৯; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৮৬৩১; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৫৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/২৮৯; আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৭৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৫৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমরা অনেক সময় দোকানে গিয়ে বলি, ‘ভাই, অমুক মালটা দেন।’...

প্রশ্ন

আমরা অনেক সময় দোকানে গিয়ে বলি, ‘ভাই, অমুক মালটা দেন।’ দোকানদার মাল দেওয়ার পর কখনো মূল্য জিজ্ঞাসা করে পরিশোধ করি। কখনো পরে দেওয়ার কথা বলে চলে আসি। আবার কখনো মূল্য জিজ্ঞাসা না করেই বলি যে, মূল্য পরবর্তীতে আমি দিয়ে যাব বা অমুকে দিয়ে যাবে। তো আমার জানার বিষয় হল, ভাই অমুক মালটা দেন- কথাটা আদেশসূচক হয়েছে। সুতরাং ক্রয়-বিক্রয় শুদ্ধ হবে কি না? না হলে কীভাবে বলব? শেষে মূল্য জিজ্ঞাসা না করেই পরে দেওয়ার কথা বললে মূল্যটা অস্পষ্ট থেকে যায়। তাই এই বিক্রয় শুদ্ধ হবে কি না?

উত্তর

দোকানে গিয়ে কেউ যখন বলে, ভাই অমুক মালটা দেন এবং বিক্রেতা তা দিয়ে দেয়। ক্রেতাও মূল্য জেনে (তা আদায় করে কিংবা বাকি রেখে) পণ্য নিয়ে নেয় তাহলে এই বেচাকেনা সহীহ। এখানে প্রথম কথাটা বাহ্যত আদেশসূচক হলেও আমাদের সমাজ ও ভাষারীতি অনুযায়ী এটা ইজাব তথা ক্রয়ের প্রস্তাব। অতএব এ নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। এছাড়া ক্রয়ের প্রস্তাব ও গ্রহণের বাক্য ছাড়াও পণ্য গ্রহণ ও মূল্য প্রদানের দ্বারা বেচাকেনা হয়ে যায়। বেচাকেনা সহীহ হওয়ার জন্য মৌখিক ঈজাব-কবুল জরুরি নয়।

পণ্যের মূল্য যদি সুনির্ধারিত হয়- যেমন বাজারে ঐ পণ্যের মূল্য নির্ধারিত আছে কিংবা পূর্ব থেকে নির্ধারিত মূল্যে সে ব্যক্তি দোকানদার থেকে ঐ পণ্যটি ক্রয় করে থাকে। তাহলে বেচাকেনার সময় নতুন করে আবার দাম না জেনে নিলেও সমস্যা নেই। আর যদি মূল্য কোনোভাবেই নির্ধারিত না থাকে তাহলে দাম জেনে নেওয়া ছাড়া বেচাকেনা সহীহ নয়। এ ধরণের ক্ষেত্রে দাম না জেনে পণ্য নিয়ে যাওয়া বৈধ হবে না।

-ফাতহুল কাদীর ৫/৪৫৮, ৪৬৭; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৫১১, ৫২৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৪৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

দেখাদেখি ও বিয়ের তারিখ হওয়ার পর কি ছেলে-মেয়ে পরস্পর দেখাসাক্ষাৎ...

প্রশ্ন

দেখাদেখি ও বিয়ের তারিখ হওয়ার পর কি ছেলে-মেয়ে পরস্পর দেখাসাক্ষাৎ ও কথাবার্তা বলতে পারবে?

উত্তর

বিয়ের দিন-তারিখ ধার্য হলেও বিয়ের আকদ না হওয়া পর্যন্ত ছেলেমেয়ে উভয়ে পূর্বের মতোই গায়রে মাহরাম থাকে। তাই এ সময়ে তাদের পরস্পর দেখাসাক্ষাৎ করা নাজায়েয। আর এ সময়ে তারা বিনা প্রয়োজনে কথা বলা থেকেও বিরত থাকবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৯; কেফায়াতুল মুফতী ৬/৪৮৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমরা শুনে আসছি যে, মাথা মাসাহর পদ্ধতি হল প্রথমে তিন...

প্রশ্ন

আমরা শুনে আসছি যে, মাথা মাসাহর পদ্ধতি হল প্রথমে তিন আঙ্গুল সামনের দিক থেকে পিছনে নিবে। এরপর হাতের তালু পিছন থেকে সামনের দিকে আনবে। বাকি দুই আঙ্গুল দিয়ে কান মাসাহ করবে। কিন্তু এক আলেম বললেন, মাথা মাসাহর এই পদ্ধতিটি ঠিক নয়। সঠিক পদ্ধতি হল, পূর্ণ হাত সামনের দিক থেকে পিছনে নিবে এবং পুনরায় পিছন থেকে সামনে আনবে। আরেকজন আলেম বললেন, এভাবে করলে মাসাহ দুইবার হয়ে যাবে। তাই উত্তম পদ্ধতি হল, হাতের আঙ্গুলসমূহ সামনে থেকে পিছনে নেওয়া এবং হাতের তালু পিছন থেকে সামনে আনা। এখন মুফতী সাহেবের নিকট আমার প্রশ্ন, মাথা মাসাহর সঠিক এবং উত্তম পদ্ধতি কোনটি?

উত্তর

মাসাহ করার সঠিক পদ্ধতি হল, উভয় হাতের আঙ্গুলসমূহ এবং তালু মাথার অগ্রভাগে রেখে মাথার শেষ পর্যন্ত টেনে নেওয়া। এরপর উভয় হাত পুনরায় পেছন থেকে সামনের দিকে টেনে আনা। আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ রা. হতে বর্ণিত আছে,

بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ ثم ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ، ثُمَّ رَدَّهُمَا حتى رجع إلى المَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উভয় হাত মাথার অগ্রভাগ থেকে পিছন দিকে টেনে নিয়েছেন। এরপর উভয় হাত ঐ স্থান পর্যন্ত টেনে নেন, যেখান থেকে মাসাহ শুরু করেছিলেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩২

এভাবে মাসাহ করলে মাসাহ দুই বার হয়ে যায়- এ কথা ঠিক নয়। কারণ, শরীয়তের দৃষ্টিতে এই উভয় কাজের পরই একবার মাসেহ সম্পন্ন হয়। আর মাসাহর শুরুতে হাতের কিছু অংশ আলাদা করে রাখতে হবে এ কথাও ঠিক নয়। কেননা ফিকহের বিভিন্ন কিতাবে এই পদ্ধতিকে ভুল বলা হয়েছে।

-মুআত্তা মুহাম্মাদ ৪৬-৪৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৫; ফাতহুল কাদীর ১/১৭; আসসিআয়াহ ১/১৩৩; মাআরিফুস সুনান ১/১৭৫; ফয়যুল বারী ১/২৯৪; আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৬; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০২৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

গত ডিসেম্বর প্রচলিত ভুল বিভাগে একটি ভিত্তিহীন কথা শিরোনামে লেখা...

প্রশ্ন

গত ডিসেম্বর প্রচলিত ভুল বিভাগে একটি ভিত্তিহীন কথা শিরোনামে লেখা হয়েছিল ‘সাত আসমানের কোনোটি লোহা দিয়ে তৈরি কোনোটি ... । লোকমুখে শোনা যায় যে, সাত আসমানের প্রথম আসমান লোহা দিয়ে তৈরি দ্বিতীয় আসমান তামা দিয়ে তৈরি ইত্যাদি। এটি একটি অলীক কল্পনামাত্র এর কোনো ভিত্তি নেই...।

অথচ কিছুদিন আগে মাজমাউয যাওয়াইদ কিতাবে এ সংক্রান্ত একটি হাদীস পেয়েছি। যাতে কোন আসমান কী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তার বর্ণনা আছে। তাই উক্ত হাদীসটির মান উল্লেখ করে সঠিক বিষয়টি জানানোর অনুরোধ রইল।

উত্তর

মাজমাউয যাওয়াইদ-এর যে বর্ণনাটির কথা আপনি উল্লেখ করেছেন তা এই-

عن الربيع بن أنس قال: السماء الدنيا لوح مكفوف، والثانية صخرة، والثالثة حديد، والرابعة نحاس، والخامسة فضة، والسادسة ذهب، والسابعة ياقوت.

রবী ইবনে আনাস রাহ. বলেন, প্রথম আসমান হল চির ও ফাটলহীন সুবিস্তৃত জমাট বস্তু, দ্বিতীয় আসমান পাথর, তৃতীয়টি লোহা, চতুর্থটি তামা, পঞ্চমটি রূপা, ষষ্ঠটি স্বর্ণ, সপ্তমটি ইয়াকূত পাথর।-আলমুজামুল আওসাত, মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস ১৩৩৬৫

এখানে প্রথম লক্ষণীয় বিষয় হল, এটি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোনো হাদীস নয়। বরং তাবেয়ী রবী ইবনে আনাস রাহ.-এর কথা। কোনো কোনো বর্ণনায় রবী ইবনে আনাস রাহ. কথাটি কাব আলআহবারের বরাতেও বর্ণনা করেছেন। (সাআলিবী রচিত তাফসীর গ্রন্থ আলকাশফু ওয়াল বায়ান ৯/৩৫৭, মাআলিমুত তানযীল, বাগাবী ৪/৩৭০; তাফসীরে খাযেন ৭/১২৪)

রবী ইবনে আনাস রাহ. থেকে প্রচুর ইসরাঈলী বর্ণনা পাওয়া যায়, যার বিশদ বিবরণের জন্য ড. মুহাম্মাদ ইবনে আলী আলখাযীরী রচিত তাফসীরুত তাবেয়ীন দেখা যেতে পারে। আর কাব আল আহবার রাহ. ইসলাম গ্রহণের পূর্বে অনেক বড় ইহুদী প-িত ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পরও তিনি ইসরাঈলী বিভিন্ন কথা বর্ণনা করতেন। তাই এটি একটি ইসরাঈলী বর্ণনা। এজন্যই আবু শাহবা রাহ. ইসরাঈলিয়্যাতের বিষয়ে তার লিখিত প্রসিদ্ধ গ্রন্থ আলইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাওযূআত-এ বর্ণনাটি উল্লেখ করেছেন। এবং একে ভিত্তিহীন ইসরাঈলী বর্ণনাসমূহের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। (দেখুন, ২৮৩ পৃষ্ঠা)

বলাবাহুল্য যে, কোন আসমান কী দিয়ে তৈরি- এটা আমাদের জ্ঞানের উর্ধ্বের বিষয়। তাই সহীহ সূত্রে বর্ণিত কোনো হাদীসে এর বিবরণ পাওয়া না গেলে এ বিষয়ে কিছু বলার সুযোগ নেই। এজন্যই প্রসিদ্ধ মুফাসসির আবু হাইয়্যান আন্দুলুসী রাহ. বলেছেন-

ما ذكر من مواد هذه السموات ... يحتاج إلى نقل صحيح.

অর্থাৎ আসমানসমূহের যে উপাদানের কথা উল্লেখ করা হয় তা প্রমাণিত হওয়ার জন্য সহীহ বর্ণনা থাকা আবশ্যক। -আলবাহরুল মুহীত ১০/২২১

প্রখ্যাত মুফাসসির মাহমুদ আলূসী রাহ. রূহুল মাআনীতে উক্ত বর্ণনাটি সম্পর্কে বলেছেন-

ليس بمعتبر أصلا، ولم يرد يما تضمنه من التفصيل حديث صحيح.

অর্থাৎ এটি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। কোনো সহীহ হাদীসে এ বিষয়ে এমন বিবরণ আসেনি।

-রূহুল মাআনী ২৮/১৪৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০০৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কোনো ব্যক্তি যদি ফরয গোসলে নাকের ভেতর পানি প্রবেশ না...

প্রশ্ন

কোনো ব্যক্তি যদি ফরয গোসলে নাকের ভেতর পানি প্রবেশ না করিয়ে শুধু আঙ্গুল ভিজিয়ে নাকের ভেতরটা তিনবার মুছে নেয় তাহলে তার গোসল হবে কি এবং নাকের ভেতরে পানি প্রবেশ করানো ও তা পরিষ্কার করার পদ্ধতি কী?

উত্তর

ফরয গোসলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো জরুরি। শুধু ভেজা আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভেতর মুছে নেওয়া যথেষ্ট নয়। এর দ্বারা নাকে পানি পৌঁছানোর ফরয আদায় হবে না।

নাকের ভেতর পানি পৌঁছানোর উত্তম তরীকা হল, ডান হাতে পানি নিয়ে তা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত টেনে নেওয়া। হাত দিয়েও পানি ভেতরে দেওয়া যেতে পারে। অতপর বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভেতরটা পরিষ্কার করে নেওয়া। যেন কোনো অংশ শুকনা না থেকে যায়। এভাবে তিনবার পানি প্রবেশ করানো।

-সুনানে আবু দাউদ ১/১৯; আলবাহরুর রায়েক ১/২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/১০৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৯২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

পেশাব করতে গিয়ে চামড়ার মোজার উপর পেশাব লেগেছে। এখন তা...

প্রশ্ন

পেশাব করতে গিয়ে চামড়ার মোজার উপর পেশাব লেগেছে। এখন তা ভিজা হাতে মুছে নিলে পবিত্র হয়ে যাবে কি?

উত্তর

না, ভিজা হাতে মুছে নিলে তা পবিত্র হবে না। পবিত্র করতে হলে মোজার উপর ভালোভাবে পানি গড়িয়ে দিতে হবে। তবেই তা পবিত্র হবে।

Ñফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫; রদ্দুল মুহতার ১/৩১০, ৩৩৩; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৫১১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৭৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

দোকান থেকে কোনো কিছু কিনতে গেলে দোকানদার কখনো এ কথা...

প্রশ্ন

দোকান থেকে কোনো কিছু কিনতে গেলে দোকানদার কখনো এ কথা বলে যে, যা দেখার এখনই দেখে নিন। পরে কোনো সমস্যার কারণে ফেরত দিতে পারবেন না। এভাবে বলার পর যদি পণ্যের মধ্যে কোনো দোষ ধরা পড়ে তাহলে কি ফিরিয়ে দেওয়ার অধিকার থাকবে?

উত্তর

বিক্রেতা প্রশ্নোক্ত কথাটি বলার পর ক্রেতা যদি তা মেনে নিয়ে পণ্য ক্রয় করে তাহলে পরবর্তীতে কোনো দোষের কারণে ঐ পণ্য ফেরত দেওয়ার অধিকার থাকবে না।

প্রকাশ থাকে যে, বিক্রিত পণ্য ফেরত নেওয়া বড় ফযীলতপূর্ণ কাজ। হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের সাথে বেচাকেনা করে তা ফিরিয়ে নেয় আল্লাহ তাআলা তার গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস৩৪৫৪; কিতাবুল আসল ২/৪৮৮; মাবসূত, সারাখসী ১৩/৯১; আলবাহরুর রায়েক ৬/৬৬; রদ্দুল মুহতার ৫/৪২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮১০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

সুতরার সর্বনিম্ন পরিমাণ কতটুকু?

প্রশ্ন

সুতরার সর্বনিম্ন পরিমাণ কতটুকু?

উত্তর

সুতরা কমপক্ষে একহাত পরিমাণ হওয়া উচিত। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সুতরা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে (সেটা কতটুকু হবে) তিনি বললেন, হাওদার লাঠির মতো। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫০০

আর আতা রাহ. বলেন, হাওদার লাঠির দৈর্ঘ্য হল, এক হাত বা তার চেয়ে বেশি।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৬৮৬; আলমাবসূত ১/১৯০; উমদাতুল কারী ৪/২৬৭; আল বাহরুর রায়েক ২/১৭; শরহুল মুনইয়াহ ৩৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৮৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

খুতবা চলাবস্থায় খুতবা প্রদানকারী এবং শ্রোতাদের জন্য আমর বিল মারূফ...

প্রশ্ন

খুতবা চলাবস্থায় খুতবা প্রদানকারী এবং শ্রোতাদের জন্য আমর বিল মারূফ এবং নাহী আনিল মুনকারের হুকুম কী? এ সময় কি তাদের উপর এ হুকুম প্রযোজ্য নয়?

উত্তর

খুতবা চলা অবস্থায় উপস্থিত মুসল্লিদের জন্য চুপ থেকে মনোযোগসহ খুতবা শোনা ওয়াজিব। এ সময় শ্রোতাদের জন্য দ্বীনী-দুনিয়াবী কোনো ধরনের কথা বলা নাজায়েয এবং কাউকে কথাবার্তা বলতে দেখলে তাকে মৌখিকভাবে বারণ করাও নিষেধ। মুসল্লিদের জন্য এ সময়ে শরীয়তের হুকুম হল, চুপ থাকা এবং মনোযোগসহ খুতবা শোনা।

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ইমাম খুতবা দেওয়ার সময় তুমি যদি পাশের ব্যক্তিকে বল ‘চুপ থাক’ তবে তুমি তা একটি অনর্থক কাজ করলে।-সহীহ বুখারী, হাসীস ৯৩৪

সুতরাং খুতবা চলা অবস্থায় শ্রোতাদের জন্য মৌখিকভাবে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার কোনো সুযোগ নেই।

অবশ্য ফিকহবিদগণ বলেন, প্রয়োজন হলে মুখে নিষেধ না করে হাত বা মাথার ইশারা-ইঙ্গিতে পাশের ব্যক্তিকে কথাবার্তা বলা বা অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা যাবে। দেখুন : হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৪৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৯

কেননা ইশারা-ইঙ্গিতে নিষেধ করার বিষয়টি একাধিক সাহাবা-তাবেয়ীর আমল ও আসার দ্বারা প্রমাণিত আছে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আবদুল্লাহ ইবনে উমার রা., আবদুর রহমান ইবনে আবী লায়লা, যায়েদ বিন সূহান, সুফিয়ান সাওরী, আলকামা, ইবরাহীম নাখায়ী প্রমুখ। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৫২৫৯-৫২৬৩

আর খুতবা প্রদানকারী খুতবার মাঝে প্রয়োজনে লোকদেরকে কোনো দরকারি কথা বা আদেশ-নিষেধ করতে পারবেন। এটি হাদীস-আসার দ্বারা প্রমাণিত আছে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৫২৫৫, ৫২৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৭৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার পর আমরা শহরের মানুষ...

প্রশ্ন

নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার পর আমরা শহরের মানুষ তা কোথায় ফেলব? কেননা শহরে দাফনের জায়গা পাওয়া কঠিন। কমোডে ফেলা যাবে কি না? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার পর তা মাটিচাপা দেওয়াই উত্তম। তবে শহরে বা যেখানে মাটিচাপা দেওয়ার সুযোগ নেই সেখানে বাসার ময়লার ঝুড়িতে ফেলা যাবে। কিন্তু তা কমোডে না ফেলাই উচিত।

আর যেসব পশম শরীরে থাকা অবস্থায় অন্যের জন্য দেখা নাজায়েয শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পর বা কাটার পরও তা দেখা নাজায়েয। তাই এ ধরনের পশম পরিষ্কার করে টয়লেটের ভেতর ফেলে দেওয়া যাবে। আর অন্য কোথাও ফেলতে চাইলে আলাদা কোনো কিছুতে ফেলা উচিত, যেন তা দেখা না যায়।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৬১৭১, ২৬১৭৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৯, ৫/৩৫৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৪১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪১১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৭১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৫১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি বাজার থেকে এক হালি ডিম কিনে আনি। ভাঙ্গার পর...

প্রশ্ন

আমি বাজার থেকে এক হালি ডিম কিনে আনি। ভাঙ্গার পর ২টি ডিম পুরোপুরি নষ্ট পাই। দোকানদারের কাছে তা পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য নিয়ে গেলে সে ফেরত নিতে অস্বীকার করে। প্রশ্ন হল, শরীয়তের দৃষ্টিতে আমার জন্য নষ্ট ডিম ফেরত দেওয়ার অধিকার আছে কি? যদি বিক্রেতা মূল্য ফেরত দিতে অথবা ডিম পরিবর্তন করে দিতে না চায় তাহলে কি সে গুনাহগার হবে?

উত্তর

নষ্ট ডিমের বিক্রি নাজায়েয। বিক্রেতার জন্য এর মূল্য ভোগ করা বৈধ নয়। তাই নষ্ট ডিম ফেরত দেওয়ার অধিকার ক্রেতার রয়েছে। বিক্রেতা হয়ত মূল্য ফেরত দিবে কিংবা এর পরিবর্তে ভালো ডিম দিবে। তা না করলে সে গুনাহগার হবে।

Ñআলমুহীতুল বুরহানী ১০/১২৩, ১২১-১২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৯/১৬৭; ফাতহুল কাদীর ৬/১৮; আদ্দুররুল মুখতার ৫/২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৩৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হায়েয অবস্থায় মহিলারা সিজদার আয়াত শুনলে পবিত্র হওয়ার পর তাদেরকে...

প্রশ্ন

হায়েয অবস্থায় মহিলারা সিজদার আয়াত শুনলে পবিত্র হওয়ার পর তাদেরকে কি সেই সিজদা আদায় করে নিতে হবে? আশা করি উত্তর জানাবেন।

উত্তর

হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা ওয়াজিব হয় না। তাই পবিত্র হওয়ার পর তাকে সেই সিজদা আদায় করতে হবে না।

Ñমাবসূত, সারাখসী ২/৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৬৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৩৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৬৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭২৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

নবজাতক বাচ্চার চুল ৭ম দিন কাটা কী? ৭ম দিনের আগে...

প্রশ্ন

নবজাতক বাচ্চার চুল ৭ম দিন কাটা কী? ৭ম দিনের আগে বা পরে কাটা যাবে কি না? চুলের ওজন পরিমাণ রূপা-সোনা সদকা করার বিধান কী? আর এর মধ্যে কোনো হিকমত আছে কি? যদি এক বছর পরে আকীকা করা হয় তাহলে ঐ সময়ও কি চুল কেটে তার সমান রূপা-সোনা সদকা করতে হবে?

এই চুল কাটা এবং আকীকা উভয়টি একসাথে করতে হবে নাকি আগে পিছে করলেও হবে। অর্থাৎ ৭ম দিনে চুল কাটা হল আর ১ বছর পর আকীকা করা হল। দয়া করে বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

সন্তান জন্মের ৭ম দিনে অভিভাবকের দায়িত্ব হল, সন্তানের আকীকা করা, মাথার চুল মুণ্ডন করা এবং তার সুন্দর নাম রাখা।

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সন্তান আকীকার সাথে দায়বদ্ধ থাকে। তার পক্ষ থেকে সপ্তম দিনে পশু জবাই করবে, নাম রাখবে ও মাথা মুণ্ডন করে দিবে।-জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫২২

সপ্তম দিনে আকীকা করা, মাথা মুণ্ডন করা এবং নাম রাখা মুস্তাহাব। তবে এ তিনটির কোনোটি অপরটি সাথে শর্তযুক্ত নয়। তাই কারো আর্থিক সামর্থ্য না থাকার কারণে সে যদি ৭ম দিনে আকীকা করতে না পারে তাহলেও ঐ দিন সন্তানের মাথা মুণ্ডন করে দিবে এবং নামও রাখবে। আকীকা করতে বিলম্ব হলেও এসব কাজে বিলম্ব করবে না।

আর হাদীস শরীফে যেহেতু সপ্তম দিনে মাথা মুণ্ডন করতে বলা হয়েছে তাই সপ্তম দিনের আগে মুণ্ডন না করাই উচিত।

মাথা মুণ্ডন করার পর চুলের ওজন পরিমাণ রূপা বা স্বর্ণ সদকা করা মুস্তাহাব।

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান রা.-এর আকীকা দিয়ে ফাতেমা রা.-কে বললেন, তার মাথা মুণ্ডন করে দাও এবং চুলের ওজন পরিমাণ রূপা সদকা করে দাও। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫১৯

অপর এক হাদীসে রূপা বা স্বর্ণ সদকা করার কথাও এসেছে। -আলমুজামুল আওসাত, হাদীস ৫৫৮; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস ৬২০৪; ইলাউস সুনান ১৭/১১৯

রূপা বা স্বর্ণ সদকা করার হেকমত সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রথম কথা হল, উক্ত সদকার হেকমত সম্পর্কে হাদীস শরীফে যেহেতু কিছু বলা হয়নি তাই এর রহস্য বা হেকমত অনুসন্ধানের পিছনে না পড়াই ভালো। বান্দার কাজ হল, বিধি-বিধানের হেকমতের পিছনে না পড়ে শরীয়তের হুকুম পালন করে যাওয়া।

অবশ্য শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী রাহ.-এর একটি কারণ এই লিখেছেন যে, সন্তান যে চুলসহ ভূমিষ্ট হয়েছিল তা কেটে ফেলার মাধ্যমে সন্তান একটি অবস্থানে পদার্পণ করে। তাই এর শুকরিয়াস্বরূপ ঐ চুলের বিনিময়ে সদকা করার হুকুম দেওয়া হয়েছে (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা ২/১৪৫)। আর কোনো কারণবশত বাচ্চার চুল যদি সপ্তম দিনে কাটা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে সপ্তম দিনের চুলের ওযন অনুমানে রূপা বা স্বর্ণ সদকা করে দিবে।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭১৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

৪ ভাইয়ের ১টি শরিকানা পুকুর আছে। ১ম ভাইয়ের জায়গা আছে...

প্রশ্ন

৪ ভাইয়ের ১টি শরিকানা পুকুর আছে। ১ম ভাইয়ের জায়গা আছে ঐ পুকুরে ৪ অংশ, ২য় ভাইয়ের ৩ অংশ, ৩য় ভাইয়ের ২ অংশ আর ৪র্থ ভাইয়ের ১ অংশ। ঐ পুকুরে কেউ কখনো মাছ চাষ করেনি। তবে মাছ চাষ না করা হলেও এমনিতেই কিছু মাছ পাওয়া যায়। এখন আমার প্রশ্ন হল, মাছগুলো কি সমান সমান ভাগ হবে? নাকি জায়গার অংশ অনুযায়ী হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পুকুরের ঐ মাছ প্রত্যেক শরিকের অংশ অনুপাতেই বণ্টন করতে হবে। আর মাছ ধরতে কোনো খরচ হলে তাও প্রত্যেকে নিজ নিজ অংশ অনুপাতে তা বহন করবে। -মাজাল্লাাহ ১০৭৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭১২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হযরত সাদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রা. (মৃত্যু : ৫৫ হিজরী)...

প্রশ্ন

হযরত সাদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রা. (মৃত্যু : ৫৫ হিজরী) কি হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মামা ছিলেন? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

ঐতিহাসিক বর্ণনামতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাতা আমেনার চাচাতো ভাই আবু ওয়াক্কাসের ছেলে হল সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস। এ হিসেবে হযরত সাদ রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মামাতো ভাই হন। তবে জামে তিরমিযীর এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদ রা.-কে নিজের মামা বলেছেন। ইমাম তিরমিযী রা.সহ হাদীস ভাষ্যকারগণ এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, বনু যুহরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মাতুল বংশ। হযরত সাদ রা. সেই বংশেরই লোক। এদিকে লক্ষ্য রেখেই হয়ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মামা বলেছেন।

Ñজামে তিরমিযী, হাদীস ৩৭৫২; ফাতহুল বারী ৬/৬১৯, ৭/১০৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৫৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আকীকার হাদীসের মধ্যে যে রাহীনাতুন শব্দ আছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য...

প্রশ্ন

আকীকার হাদীসের মধ্যে যে রাহীনাতুন শব্দ আছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য কি? যে আকীকা করবে না, সে কি শাফাআত থেকে মাহরূম হবে?

উত্তর

প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসটি হল-

عن سمرة بن جندب عن النبي صلى الله عليه وسلم أنه قال : كل غلام رهينة بعقيقته تذبح عنه يوم سابعه ويحلق ويسمى.

অর্থ : প্রতিটি সন্তান আকীকার সাথে আবদ্ধ থাকে। সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে পশু যবাই করবে, তার মাথা মুণ্ডিয়ে দিবে এবং তার নাম রাখবে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৮৩১; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২০০৮৩

হাদীসে উল্লেখিত রাহীনাতুন শব্দের আভিধানিক অর্থ, আবদ্ধ, বন্ধকী বস্তু। (মাজমাউ বিহারিল আনওয়ার ২/৪০৭; লিসানুল আরব ৫/৩৪৮) হাদীস ভাষ্যকারগণ এক্ষেত্রে শব্দটির বিভিন্ন ব্যাখ্যা উল্লেখ করেছেন- ক) পিতামাতার জন্য নাবালেগ সন্তানের সুপারিশ আকীকার সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ সন্তান যদি নাবালেগ অবস্থায় মারা যায় এবং তার আকীকা করা না হয়ে থাকে তবে সে তার পিতামাতার জন্য সুপারিশ করবে না। প্রশ্নে শাফাআত থেকে মাহরূম হবে বলে যে কথা বলা হয়েছে এর অর্থ সন্তানের শাফাআত।

খ) সন্তানের নিরাপত্তা, শারীরিক সুস্থতা ও বৃদ্ধি আকীকার সাথে সম্পৃক্ত।

গ) সন্তান লাভ করা আল্লাহর পক্ষ থেকে নিআমত। এর প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন আকীকার সাথে আবদ্ধ। এছাড়াও রাহীনাতুনের আরো অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে।

-মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/৭৭-৭৮; ফায়যুল কাদীর ৪/৪১৫; ফাতহুল বারী ৯/৫০৮; উমদাতুল কারী ২১/৮৮; আততালীকুল মুমাজজাদ ২/৬৫৭; বাযলুল মাজহূদ ১৩/৮২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬২৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

জনৈক ব্যক্তি এক অবিবাহিতা নারীর সাথে ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় ফলে...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি এক অবিবাহিতা নারীর সাথে ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় ফলে একটি পুত্রসন্তান জন্ম হয়। বিষয়টি এলাকার অনেক মানুষই জানে। সেই ব্যক্তি মারা গেলে তার অবৈধ সন্তান উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পত্তির দাবি করে। তখন মৃতের বৈধ ছেলে-মেয়ে ও অন্যান্য ওয়ারিসগণ তাকে সম্পত্তি দিতে অস্বীকার করে। শরীয়তের দৃষ্টিতে এর সমাধান কী? জারজ সন্তান কি এক্ষেত্রে মিরাসের অধিকার লাভ করবে? আশা করি উত্তর জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারের দাবিদার উক্ত সন্তান ঐ ব্যভিচারী থেকে মিরাস পাবে না। তার বংশসূত্র তার মা থেকে প্রমাণিত হবে এবং সে তার থেকে মিরাস পাবে। হাদীস শরীফে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোনো স্বাধীন নারী অথবা বাদীর সথে ব্যভিচারে লিপ্ত হল (এবং তাতে সন্তান জন্ম নিল) তাহলে সেটা জারজ সন্তান। সে ব্যভিচারী থেকে মিরাস পাবে না, ব্যভিচারীও তার থেকে মিরাস পাবে না। -জামে তিরমিযী,হাদীস : ২১১৩

সুতরাং এক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির মিরাসের দাবি গ্রহণযোগ্য হবে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৩২০৬৫; ইলাউস সুনান ৮/৭৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/৫০৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৩৬৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৪৯১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২০/৩৪৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬২৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হজ্বের একটি বইয়ের মধ্যে দেখতে পাই, ফরয তাওয়াফে অতিরিক্ত ভীড়...

প্রশ্ন

হজ্বের একটি বইয়ের মধ্যে দেখতে পাই, ফরয তাওয়াফে অতিরিক্ত ভীড় হলে আল্লাহুম্মা ওয়াক্বিয়াতান কাওয়াক্বিয়াতিল ওয়ালীদ- এ দুআ পড়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলে গায়েব থেকে সাহায্য আসবে। আমি কয়েকজনকে এর অর্থ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলতে পারেননি। দয়া করে বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

এ দুআটি তাওয়াফের সময় পড়ার কথা হাদীসে পাওয়া যায়নি; বরং এটি সাধারণ সময়ের একটি দুআ হিসেবে হাদীসে এসেছে। একটি যয়ীফ সূত্রে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআর মধ্যে বলতেন-

اللهم واقية كواقية الوليد

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে হেফাযত করুন যেমনি আপনি নবজাতক শিশুকে হেফাযত করেন। -আদ দুআ, তাবারানী,হাদীস ১৪৪৬; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ৫৫০২

আল্লামা আসকারী রাহ. উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, অর্থাৎ নবজাতকের অক্ষমতা ও দুর্বলতাবশত আল্লাহ তাআলা তাকে যেভাবে কীট-পতঙ্গ ও জীব-জন্তুর অনিষ্ট থেকে হেফাযত করেন ঠিক তেমনি আমাকে হেফাযত করুন। -ফয়যুল কাদীর ২/১২০

তাই উক্ত দুআকে তাওয়াফের ভীড় থেকে রক্ষা পাওয়ার আমল বা ওযীফা মনে করা ঠিক হবে না। তবে সাধারণ দুআ হিসেবে ঐ সময় তা পড়তে নিষেধ নেই।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬২৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

অনেক সময় দেখা যায়, বিভিন্ন দোকান থেকে পণ্য যেমন,বই,খাতা ইত্যাদি...

প্রশ্ন

অনেক সময় দেখা যায়, বিভিন্ন দোকান থেকে পণ্য যেমন,বই,খাতা ইত্যাদি ক্রয়ের পর যে প্যাকেটে করে তারা পণ্য দেয় তার গায়ে বিসমিল্লাহ লেখা থাকে। এ ধরনের প্যাকেটে বিসমিল্লাহ লেখা এবং তাতে পণ্য আদান-প্রদান করার হুকুম কী?

উত্তর

বই, খাতা বা যে কোনো পণ্য বহনের জন্য যে প্যাকেট দেওয়া হয় তা সাধারণত হেফাযত করা হয় না। এক দুবার ব্যবহারের পর তা ফেলে দেওয়া হয়। রাস্তাঘাটে যত্রতত্র তা পড়ে থাকে। এতে আল্লাহ তাআলার পবিত্র নামের অসম্মান হয়। তাই এগুলোতে আল্লাহ তাআলার নাম বা বিসমিল্লাহ ইত্যাদি লেখা অন্যায়। কেননা আল্লাহ তাআলার নামের সম্মান রক্ষা করা সকলের ঈমানী দায়িত্ব।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৩১; রদ্দুল মুহতার ২/২৪৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬০৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কুরআন মজীদে বিভিন্ন স্থানে যে সাকীনাহ শব্দ এসেছে এর অর্থ...

প্রশ্ন

কুরআন মজীদে বিভিন্ন স্থানে যে সাকীনাহ শব্দ এসেছে এর অর্থ কী? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

সাকীনার শাব্দিক অর্থ হল, রহমত, স্বস্তি-প্রশান্তি, স্থিরতা ও সংশয় দূরিভূত হওয়া।

ইমাম কুরতুবী রাহ. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.-এর বরাতে উল্লেখ করেছেন যে, সূরা বাকারায় উল্লেখিত সাকীনাহ ব্যতীত অন্য সকল সাকীনাহ দ্বারা উদ্দেশ্য স্বস্তি ও প্রশান্তি। -তাফসীরে কুরতুবী ৬/১৭৫

আর মুফাসসিরগণ বলেছেন, সূরা বাকারায় সাকীনাহ অর্থ স্থিরতা ও সংশয় দূরীভূত হওয়া। অবশ্য কেউ কেউ সকল স্থানে স্বস্তি ও প্রশান্তি অর্থ করেছেন।

-সূরা ফাতহ ৪৮ : ৪; তাফসীরে কুরতুবী ৬/১৭৫, ৩/১৬২; তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৪৫০; তাফসীরে তবারী ৬/৩৪৪; তাফসীরে রূহুল মাআনী ১০/৮৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৭২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি দুবাই থাকি। আমার এক প্রতিবেশী আমাকে কল করে দেশে...

প্রশ্ন

আমি দুবাই থাকি। আমার এক প্রতিবেশী আমাকে কল করে দেশে ফেরার সময় তার জন্য একটা উন্নতমানের ভেন্ডার মেশিন আনতে বলে। আমি আসার সময় তার জন্য একটি ভেন্ডার মেশিন কিনে আমার আসবাবপত্রের সাথে সেটাও লাগেজের মধ্যে বেঁধে দেই। বাড়িতে এসে লাগেজ খুলে দেখি মেশিনের গ্লাসটা ভেঙ্গে গেছে। এখন আমার প্রতিবেশী ঐ ভেন্ডার মেশিনটি গ্রহণ করতে চাচ্ছে না। জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় আমার জন্য শরীয়তের বিধান কী? উক্ত মেশিনের ক্ষতিপূরণ আমাকে বহন করতে হবে কি? দয়া করে বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রতিবেশীর জন্য মেশিনটি কেনার পর থেকে তা আপনার কাছে আমানত হিসেবে ছিল। মেশিনটি যত্নসহকারে নিয়ে আসা আপনার দায়িত্ব ছিল। অতএব আপনি যদি লাগেজের মধ্যে যত্নসহকারেই তা নিয়ে থাকেন তাহলে গ্লাসের ক্ষতিপূরণ আপনাকে দিতে হবে না। প্রতিবেশীকে মেশিনটি ত্রুটিসহই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু যদি লাগেজে যেভাবে নেওয়া দরকার ছিল সেভাবে না নেওয়ার কারণে বা আপনার ত্রুটির কারণে তা ভেঙ্গে থাকে তবে এর ক্ষতিপূরণ আপনাকে বহন করতে হবে। ক্ষতিপূরণের সাথে আপনার প্রতিবেশী মেশিনটি গ্রহণ করতে বাধ্য। এক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরও মেশিন গ্রহণ না করা বৈধ হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/৩৮; মাজাল্লাহ, মাদ্দাহ : ১৪৬৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৫৬৭; রদ্দুল মুহতার ৭/৩৬৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৫৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

নামাযের বৈঠকে দু’ হাত কীভাবে রাখব? বসা অবস্থায় হাত হাঁটু...

প্রশ্ন

নামাযের বৈঠকে দু’ হাত কীভাবে রাখব? বসা অবস্থায় হাত হাঁটু স্পর্শ করবে নাকি করবে না?

জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

নামাযের বৈঠকে দুই হাত দুই উরুর উপর কীভাবে রাখবে এ ব্যাপারে একাধিক হাদীস রয়েছে। যেমন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহহুদের জন্য বসতেন তখন ডান হাত ডান উরুর উপর এবং বাম হাত বাম উরুর উপর রাখতেন।... -সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৮০ (১১৬)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে আরেক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাশাহহুদের জন্য বসতেন তখন বাম হাত বাম হাঁটুর উপর এবং ডান হাত ডান হাঁটুর উপর রাখতেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৮০ (১১৫)

উভয় হাদীসের উপর যেন আমল হয়ে যায় এজন্য উপরোক্ত হাদীসের আলোকে ফিকহবিদগণ বলেছেন যে, উভয় হাত এমনভাবে উরুর উপর রাখবে যেন হাতের আঙ্গুলগুলো হাঁটুর নিকটবর্তী থাকে।

-ইলাউস সুনান ৩/১০৯; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ১/২৭১; আসসিআয়াহ ২/২১৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩২৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৮১; শরহুল মুনইয়াহ ৩২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৯৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

সিজদা আদায়ের ক্ষেত্রে নাক আগে মাটিতে রাখবে নাকি কপাল? এ...

প্রশ্ন

সিজদা আদায়ের ক্ষেত্রে নাক আগে মাটিতে রাখবে নাকি কপাল? এ বিষয়ে হাদীস শরীফের নির্দেশনা কী? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

হাদীস শরীফে নাক ও কপাল দ্বারা সিজদা করার নির্দেশ এসেছে। কিন্তু নাক ও কপালের মধ্যে কোনটি আগে রাখবে-এ বিষয়ের সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা হাদীস-আছারে পাওয়া যায়নি।

অবশ্য ফকীহগণ থেকে এ বিষয়ে দুই ধরনের বক্তব্যই আছে। কোনো কোনো ফকীহ আগে কপাল রাখা অতপর নাক রাখার কথা বলেছেন। যেমন আলাউদ্দীন সমরকান্দী রাহ. (তুহফাতুল ফুকাহা ১/১৩৪), ইমাম কাসানী রাহ. (বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৯২), দামাদ আফেন্দী রাহ. (মাজমাউল আনহুর ১/১৪৭), আলেম ইবনুল আলা রাহ. (ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৭২), ইবনে আবেদীন শামী রাহ. (রদ্দুল মুহতার ১/৪৯৮)

আবার কোনো কোনো ফকীহ আগে নাক রাখার কথা বলেছেন। যেমন ফখরুদ্দীন যায়লায়ী রাহ. (তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩০২), যাইন ইবনে নুজাইম রাহ. (আলবাহরুর রায়েক ১/৩১৭), উমর ইবনে নুজাইম (আননাহরুল ফায়েক ১/২১৫), আলাউদ্দীন হাসকাফী রাহ. (আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৯৮)

সুতরাং এ সম্পর্কে যেহেতু সুস্পষ্ট কোনো বর্ণনা নেই এবং ফকীহগণ থেকেও দু ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায় তাই যে কোনোটির উপর আমল করা যাবে। উভয় পদ্ধতিই সহীহ। এর কোনোটিকে ভুল বলা যাবে না।

অবশ্য আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রাহ. সিজদার মধ্যে কপাল আগে রাখার মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আর আল্লামা যফর আহমদ উসমানী রাহ. ইমদাদুল আহকামে এ মতের উপর ফাতাওয়াও দিয়েছেন। (ইমদাদুল আহকাম ১/৪৮৪)

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৮৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হযরত থানভী রাহ.কৃত ‘কামালাতে আশরাফীয়া’ কিতাবে (পৃষ্ঠা ২৪২) উল্লেখ রয়েছে-حديث...

প্রশ্ন

হযরত থানভী রাহ.কৃত ‘কামালাতে আশরাফীয়া’ কিতাবে (পৃষ্ঠা ২৪২) উল্লেখ রয়েছে-

حديث میں آيا ہے كہ اے عائشہ كسی نيك عمل كو حقير نہ سمجهنا ہر نيك عمل میں خاصيت مغفرت كی ہے، اسى طرح ہر گناہ میں خاصيت عذاب كی ہے چاہے چهوٹا ہو چاہے بڑا ہو

এ হাদীসটি কোন কিতাবে আছে? হাদীসের পূর্ণ আরবী পাঠ এবং হাদীসের মান সম্পর্কে পূর্ণ তাহকীক জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত উর্দু ইবারতের মধ্যে

كسی نيك عمل كو حقير نہ سمجهنا

‘কোনো নেক কাজকে নগণ্য মনে করো না।’ এ অংশের সমার্থক হাদীসটি হল, لا تحقرن من المعروف شيئا

পূর্ণ হাদীসটি নিম্নরূপ :

لا تحقرن من المعروف شيئا ولو أن تلقى أخاك بوجه طلق

অর্থ : কোনো পুণ্যকাজকে নগণ্য ভেবো না। যদিও তা তোমার ভাইয়ের সাথে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় সাক্ষাৎ করার মতো নেক কাজ হোক। কোনো কোনো সূত্রে হাদীসটি আরো দীর্ঘভাবেও এসেছে।

হাদীসটি সহীহ মুসলিম (হাদীস : ২৬২৬), মুসনাদে আহমদ (হাদীস : ২১৫১৯), সুনানে আবু দাউদ (হাদীস : ৪০৮১) ও জামে তিরমিযী (হাদীস : ১৮৩৩)-এ বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। হাদীসের বর্ণনাকারী হলেন আবু যর রা. ও জাবের ইবনে সুলাইম রা.।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে হাদীসটিকে আমরা আয়েশা রা.-এর সূত্রে বর্ণিত পাইনি এবং যাদের সূত্রে উপরোক্ত কিতাবসমূহে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে সেগুলোতে আয়েশা রা.-কে সম্বোধন করার কথাও পাওয়া যায়নি।

অবশ্য আয়েশা রা.-কে সম্বোধন করে কাছাকাছি অর্থের যে হাদীসটি পাওয়া যায় তা হল-

يا عائشة إياك ومحقرات الذنوب فإن لها من الله طالبا

অর্থ : হে আয়েশা! ছোট ছোট গুনাহসমূহ থেকে সতর্ক থাকো। কেননা এগুলো সম্পর্কেও আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসিত হতে হবে।

এ বর্ণনাটি সুনানে ইবনে মাজাহ (হাদীস : ৪২৪৩) ও মুসনাদে আহমদ (হাদীস : ২৫১৭৭)-এ রয়েছে। এ হাদীসটির সনদও সহীহ।

আর উর্দু ইবারতের বাকি অংশ-

ہر نيك عمل میں خاصيت مغفرت كی ہے، اسى طرح ہر گناہ میں خاصيت عذاب كی ہے چاہے چهوٹا ہو چاہے بڑا ہو

অর্থ : ‘প্রত্যেক নেক কাজে মাগফিরাতের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অনুরূপ প্রত্যেক গুনাহের মধ্যে আযাবের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। চাই তা ছোট হোক বা বড়।’ এটি উক্ত হাদীসের অংশ নয়; বরং এটি থানভী রাহ.-এর নিজের বক্তব্য, যা তিনি উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যাস্বরূপ পেশ করেছেন।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৮৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কিছুদিন আগে আমি দশটি মেহগনি গাছ বিক্রি করি। ক্রেতা গাছগুলো...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমি দশটি মেহগনি গাছ বিক্রি করি। ক্রেতা গাছগুলো শেকড়সুদ্ধ কেটে নিতে চায়। এ নিয়ে আমাদের মাঝে ঝগড়া হয়। আমি চাচ্ছি, ক্রেতা সেগুলো মাটির উপর থেকেই কেটে নিয়ে যাক। কেননা দুটো গাছ একেবারে আমার বাড়ি লাগোয়া। যেগুলো শেকড়সুদ্ধ উপড়াতে গেলে আমার বাড়ির দেয়াল ধ্বসে পড়ার প্রবল আশঙ্কা আছে।

এ ব্যাপারে ইসলামী শরীয়তের আলোকে সঠিক সিদ্ধান্ত জানালে কৃতার্থ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাড়ির সাথে লাগোয়া গাছ দুটো শেকড়সহ কেটে নিলে যেহেতু মালিকের ক্ষতি হবে তাই ক্রেতার জন্য গাছ দুটো শেকড়সহ কেটে নেওয়া বৈধ হবে না। মাটির উপর থেকেই কেটে নিতে হবে।

আর অবশিষ্ট গাছগুলো আপনার এলাকার প্রচলন অনুসারে ক্রেতা কেটে নিতে পারবে। যদি শেকড়সহ নেওয়ার প্রচলন থাকে তবে ক্রেতার এ অধিকার থাকবে।

-রদ্দুল মুহতার ৪/৫৫৪; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৯৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/২৮৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৩৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কিছুদিন আগে আমি এক ব্যক্তির কাছে কিছু জমি বিক্রি করি।...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমি এক ব্যক্তির কাছে কিছু জমি বিক্রি করি। জমিগুলোর মধ্যে একটি জমিতে বাঁশঝাড় ছিল। বিক্রির সময় আমার নিয়ত ছিল, দু-একদিনের মধ্যেই আমি তা কেটে নিব। তবে বিক্রির সময় সেটা বলা হয়নি। এখন ক্রেতা বলছে, সে বাঁশসহ পুরো জমিটাই কিনেছে সুতরাং বাঁশগুলো তার। মূলত বাঁশগুলো কে পাবে? এ ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশনা জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

জমি বিক্রির সময় যেহেতু বাঁশ বিক্রির কথা উল্লেখ করা হয়নি তাই বাঁশগুলোর মালিক জমি বিক্রেতাই। অতএব বিক্রেতার কর্তব্য হল, বাঁশগুলো কেটে নিয়ে ক্রেতাকে জমি বুঝিয়ে দেওয়া।

এ ক্ষেত্রে ক্রেতার জন্য বাঁশগুলো দাবি করা বৈধ হবে না।

-রদ্দুল মুহতার ৪/৫৫১; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৩৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/২৮৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৪৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করার নিয়ম কী? লোমনাশক ওষুধ ব্যবহার...

প্রশ্ন

নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করার নিয়ম কী? লোমনাশক ওষুধ ব্যবহার করা যাবে কি না? অথবা কেউ যদি কেচি দিয়ে একেবারে ছোট করে রাখে তবে কোনো অসুবিধা আছে কি? কোনো কোনো অংশ মুন্ডানো কষ্টকর হয়। বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

এগুলো পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে উত্তম হল, তা মুন্ডিয়ে ফেলা। আর কেউ মুন্ডাতে না পারলে কেচি দ্বারা একেবারে খাটো করারও অবকাশ রয়েছে। অবশ্য এক্ষেত্রে লোমনাশক ওষুধও ব্যবহার করা যাবে।

-ফাতহুল মুলহিম ১/৪১৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/১০; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ২৮৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৪৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার ভাতিজার বাম হাতে স্বাভাবিক পাঁচটি আঙ্গুলের অতিরিক্ত একটি আঙ্গুল...

প্রশ্ন

আমার ভাতিজার বাম হাতে স্বাভাবিক পাঁচটি আঙ্গুলের অতিরিক্ত একটি আঙ্গুল আছে। আমরা অপারেশনের মাধ্যমে অতিরিক্ত আঙ্গুলটি কেটে ফেলতে চাচ্ছি। এতে শরীয়তের কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা না থাকলে অতিরিক্ত আঙ্গুলটি কেটে ফেলতে পারবেন।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২৮৮; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৪/১৯৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬০; আলমওসূআতুত তিবিবয়্যাহ আলফিকহিয়্যাহ ২৩৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩২৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

এক ব্যক্তি তাওয়াফে যিয়ারতের পাঁচ চক্কর পূর্ণ করার পর অজ্ঞান...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি তাওয়াফে যিয়ারতের পাঁচ চক্কর পূর্ণ করার পর অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। তখন সে বাকি দুই চক্কর আদায় করতে পারেনি। যিলহজ্বের ১২ তারিখের পর সে সুস্থ হয়। এ ব্যক্তির জন্য কী করণীয়? তাকে কি তাওয়াফে যিয়ারত আবার করতে হবে? আর এ কারণে কোনো দম দিতে হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি তাওয়াফে যিয়ারতের অবশিষ্ট দুই চক্কর আদায় করে নিবে। এতেই তার তাওয়াফে যিয়ারত পূর্ণ হয়ে যাবে। আর এই অবশিষ্ট দুই চক্কর ১২ যিলহজ্বের পর আদায় করার কারণে তার উপর দম ওয়াজিব হবে না। তবে এ কারণে প্রত্যেক চক্করের জন্য একটি করে মোট দুইটি সদকাতুল ফিতর সমপরিমাণ নির্ধারিত খাদ্যদ্রব্য বা এর মূল্য সদকা করতে হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ৩/২০; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৩৪৭; গুনইয়াতুন নাসিক ২৭৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩১৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার আত্মীয়স্বজনের সংখ্যা অনেক বেশি। কিছুদিন পর আমার ছেলের আকীকা।...

প্রশ্ন

আমার আত্মীয়স্বজনের সংখ্যা অনেক বেশি। কিছুদিন পর আমার ছেলের আকীকা। আমি কি তিন বা ততোধিক ছাগল দ্বারা তার আকীকা করতে পারব? এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী? জানানোর অনুরোধ রইল।

উত্তর

হাদীস শরীফে ছেলে সন্তানের ক্ষেত্রে দুইটি ছাগল দ্বারা আকীকা করার কথা এসেছে। হযরত উম্মে কুরয রা. রাসূলুলাহ সালালাহু আলাইহি ওয়াসালামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বলেন, ছেলের জন্য দুটি ছাগল আর মেয়ের জন্য একটি ছাগল (দ্বারা আকীকা করবে)। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৫১৫; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৭১৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮৩৬; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৭৬৬৫)

উক্ত হাদীসের নির্দেশনা মোতাবেক ছেলের জন্য দুটি ছাগল দ্বারাই আকীকা করা নিয়ম। তাই আকীকার নিয়তে তিন বা ততোধিক ছাগল যবাই না করাই বাঞ্ছনীয়। উল্লেখ্য, আকীকার মুস্তাহাব আদায়ের জন্য দাওয়াতের আয়োজন জরুরি নয়।

-ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

একজন আলেমকে বলতে শুনেছি যে, কেউ যদি হারাম খাদ্য খাওয়ার...

প্রশ্ন

একজন আলেমকে বলতে শুনেছি যে, কেউ যদি হারাম খাদ্য খাওয়ার সময় আলাহ তাআলার নামের সাথে উপহাস করার জন্য বিসমিল্লাহ বলে তবে সে কাফের হয়ে যাবে। তবে কারো যদি উপহাস উদ্দেশ্য না হয় তবে সে কাফের হবে না।

কিন্তু দুটি ইসলামী পত্রিকায় এর বিপরীত বক্তব্য দেখলাম। সেখানে বলা হয়েছে, ‘হারাম খাদ্য খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ বললেই কাফের হয়ে যাবে। স্বয়ং এ কাজটিই এক ধরনের উপহাস। তাই তার নিয়ত কী ছিল তা ধর্তব্য হবে না।

এ বিষয়ে সঠিক সমাধান জানিয়ে কৃতার্থ করবেন।

উত্তর

প্রশ্নে বর্ণিত আলেমের বক্তব্যই সঠিক। পত্রিকা দুটির এ সম্পর্কিত বক্তব্য সঠিক নয়। নিশ্চিতভাবে হারাম জানা সত্ত্বেও কোনো হারাম খাদ্য (যা হারাম হওয়ার বিষয়টি অকাট্য ও সকলেরই জানা) বিসমিলাহ বলে খাওয়া মারাত্মক গুনাহ ও কুফরি কাজ। তবে উপহাস বা ঠাট্টা উদ্দেশ্য না হলে এ কারণে কাউকে কাফের বলা যাবে না। অবশ্য এক্ষেত্রে লোকটি মারাত্মক গুনাহগার ও ফাসেক বলে গণ্য হবে।

আর উপহাস বা ঠাট্টার উদ্দেশ্যে কেউ এরূপ করলে সে কাফের হয়ে যাবে। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত হারাম বস্ত্তর উপর কেউ উপহাস বা ঠাট্টার সাথে বিসমিলাহ বলেছে এটা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কাফের বলা যাবে না।

-হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ২/৪৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৭/৩২৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/১২৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৯২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কয়েকজন শ্রমিককে ধান কাটার জন্য বাড়িতে...

প্রশ্ন

আমি নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কয়েকজন শ্রমিককে ধান কাটার জন্য বাড়িতে নিয়ে আসি। কিন্তু বাড়িতে পৌঁছার পরই বৃষ্টি শুরু হয়। বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি চলতে থাকে। এ কারণে তারা কোনো কাজই করতে পারেনি। প্রশ্ন হল, তাদেরকে এ অবস্থায় পারিশ্রমিক দেওয়া আমার উপর জরুরি কি না? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শ্রমিকরা যেহেতু বৃষ্টির কারণে কোনো কাজই করতে পারেনি তাই তারা কোনো পারিশ্রমিক পাবে না। তাদেরকে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছু দেওয়া জরুরি নয়।

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/১৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৬৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/২৯; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ২/৪৮৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৬৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

একদিন আমার বোনের মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে তার...

প্রশ্ন

একদিন আমার বোনের মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে তার রক্তের প্রয়োজন দেখা দেয়। ঘটনাক্রমে তার রক্তের গ্রুপের সাথে আমার রক্তের গ্রুপও মিলে যায়। আমি রক্ত দেওয়ার জন্য প্রস্ত্তত হয়ে যাই। কিন্তু আমার বোনের সাথে আমার মায়ের ব্যক্তিগত বৈরিতা থাকায় তিনি আমাকে রক্ত দিতে নিষেধ করেন। কিন্তু জীবন বাঁচানোর তাকিদে মায়ের কথা উপেক্ষা করে রক্ত দিতে যাই। এখন প্রশ্ন হল, আমার এ কাজটি কি ভালো হয়েছে, নাকি মায়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার কারণে আমি গুনাহগার হব।

উত্তর

এ কারণে আপনি গুনাহগার হবেন না। বোনের এই প্রয়োজনের মুহূর্তে ভাই হিসেবে সহযোগিতা করা আপনার দায়িত্ব ছিল। এমন ক্ষেত্রে তার সাহায্য করতে বাধা দেওয়া মায়ের জন্যও ঠিক নয়। তাই আপনি রক্ত দিয়ে ঠিকই করেছেন।

অবশ্য আপনার মায়ের নিষেধাজ্ঞার প্রতি খেয়াল রেখে আপনি নিজে রক্ত না দিয়ে অন্যের থেকেও ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে পারতেন।

-ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকীন ৬/৩২১; ফযলুল্লাহিস সামাদ ১/৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৪৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

এক ব্যক্তি ভুলে তাওয়াফে বিদা করেনি। তাওয়াফে যিয়ারতের পর অন্য...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি ভুলে তাওয়াফে বিদা করেনি। তাওয়াফে যিয়ারতের পর অন্য কোনো তাওয়াফও করেনি। দেশে আসার পর এ ভুল ধরা পড়েছে। এখন তার করণীয় কি? তাকে কি দম দিতে হবে?

উত্তর

হ্যাঁ, কোনো ওজর ছাড়া তাওয়াফে বিদা ছেড়ে দিলে দম ওয়াজিব হয়। অতএব প্রশ্নোক্ত ব্যক্তিকে এ ভুলের জন্য হেরেমের এলাকায় একটি ছাগল বা দুম্বা যবাই করতে হবে। সেখানে কারো মাধ্যমে যবাই করালেও চলবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/২১; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৩৫০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৪৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

নাবালেগ ছেলের হাত পায়ে মেহেদি ব্যবহার করার হুকুম কি? জানালে...

প্রশ্ন

নাবালেগ ছেলের হাত পায়ে মেহেদি ব্যবহার করার হুকুম কি? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

পুরুষের হাত পায়ে মেহেদি লাগানো নাজায়েয। এমনিভাবে নাবালেগ ছেলের হাত পায়ে মেহেদি লাগানোও নিষেধ।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৭৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৮৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১০৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৩৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

এক ব্যক্তি থেকে শুনলাম যে, কোনো ব্যক্তির যখন হাই আসে...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি থেকে শুনলাম যে, কোনো ব্যক্তির যখন হাই আসে সে সময় মুখে হাত না দিলে মুখের ভিতরে শয়তান প্রবেশ করে এবং মুখের ভিতরে সে হাসতে থাকে। কথাটি কতটুকু সত্য?

এ সম্পর্কে হাদীসে কিছু থাকলে জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কথা সঠিক। এটি হাদীস শরীফেরই ভাষ্য।

আবু সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কারো হাই আসলে সে যেন মুখে হাত রাখে। কেননা, (এ সময়) শয়তান মুখে প্রবেশ করে। (আল আদাবুল মুফরাদ ৯৫৯)

সহীহ বুখারীতে এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা হাঁচি পছন্দ করেন, হাই তোলা অপছন্দ করেন। কেননা হাই শয়তান থেকে আসে। সুতরাং তোমাদের কারো যদি হাই আসে সে যেন যথাসাধ্য তা দমন করার চেষ্টা করে। কেননা হাই তোলার কারণে শয়তান হাসতে থাকে। (সহীহ বুখারী ২/৯১৯)

সহীহ ইবনে হিববানের একটি বর্ণনায় এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কারো যদি হাই আসে সে যেন যথাসাধ্য মুখ বন্ধ রাখে অথবা মুখের উপর হাত রাখে। কেননা কোনো ব্যক্তি যখন হাই তোলে এবং আহ বলে তখন শয়তান তার মুখের ভেতর হাসতে থাকে।

-সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ২৩৫৬; জামে তিরমিযী, হাদীস : ২৭৪৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৯৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হজ্বের মধ্যে কোনো ত্রুটির কারণে দম ওয়াজিব হলে তা কি...

প্রশ্ন

হজ্বের মধ্যে কোনো ত্রুটির কারণে দম ওয়াজিব হলে তা কি হেরেমের ভিতরেই জবাই করতে হবে? নাকি দেশে ফিরে জবাই করলেও চলবে? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

হজ্বের সকল প্রকার দম হেরেমের ভিতরেই জবাই করা জরুরি। হেরেমের বাইরে দমের নিয়তে জবাই করলে তা আদায় হবে না। তাই দম আদায় না করে দেশে এসে গেলে কারো মাধ্যমে দমের পশু হেরেমের মধ্যেই জবাই করাতে হবে।

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৪৩৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৪; ফাতহুল কাদীর ২/৪৫২; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৬০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি ফরয গোসলে মাঝে মাঝে কুলি করতে ও নাকে পানি...

প্রশ্ন

আমি ফরয গোসলে মাঝে মাঝে কুলি করতে ও নাকে পানি দিতে ভুলে যাই। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে আমর করণীয় কি? পুনরায় কি গোসল করতে হবে, নাকি কুলি করে নিলে ও নাকে পানি দিলেই চলবে?

উত্তর

ফরয গোসলে কুলি করতে বা নাকে পানি দিতে ভুলে গেলে স্মরণ হওয়ার পর নাকে পানি দিলে বা কুলি করে নিলেই চলবে, নতুন করে গোসল করতে হবে না। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর সূত্রে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে, এক ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করল যে, এক ব্যক্তি ফরয গোসল করেছে, কিন্তু তার কোনো একটি অঙ্গে পানি পৌঁছেনি। (এখন তার করণীয় কি?) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে ঐ অঙ্গটি ধুয়ে নিয়ে নাযায পড়বে।

-আলমুজামুল কাবীর, তবারানী ১০/২৩১; মাজমাউয যাওয়াইদ ১/৬০৯; শরহুল মুনইয়া ৫০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৫৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

ডিম কেনার পর ভাঙ্গলে অনেক সময় পঁচা বের হয়, যা...

প্রশ্ন

ডিম কেনার পর ভাঙ্গলে অনেক সময় পঁচা বের হয়, যা খাওয়ার উপযুক্ত নয়। অনেক দোকানদার তা পরিবর্তন করে দেয় আর কেউ কেউ দিতে চায় না। জানতে চাই, এ ধরনের ডিম পরিবর্তন করতে পারব কি না? আর দোকানদারের জন্য তা পরিবর্তন করে দেওয়া জরুরি কি না?

উত্তর

ডিম ক্রয় করে তা ভাঙ্গার পর যদি একেবারে নষ্ট ও পঁচা পাওয়া যায় তাহলে তা দোকানদারকে দেখিয়ে মূল্য ফেরত নিতে পারবেন। কিংবা অন্য ডিম আনতে পারবেন। এক্ষেত্রে দোকানদার ডিম পাল্টে না দিলে তার জন্য এর মূল্য ভোগ করা বৈধ হবে না। তবে ক্রেতার হাতে আসার পর রেখে দেওয়ার কারণে নষ্ট হলে তা ফেরত দেওয়া বৈধ হবে না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১০/১২১; রদ্দুল মুহতার ৫/২৫; ফাতহুল কাদীর ৬/১৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৯/১৬৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৫২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

বিবাহের সময় ফাতেমা রা.-এর বয়স কত ছিল?

প্রশ্ন

বিবাহের সময় ফাতেমা রা.-এর বয়স কত ছিল?

উত্তর

বিবাহের সময় হযরত ফাতেমা রা.-এর বয়স কত ছিল এ ব্যাপারে একাধিক মত রয়েছে। তবে অধিকাংশের মত হল, ঐ সময় তার বয়স ছিল প্রায় সাড়ে পনেরো বছর।

আলইস্তিয়াব, তাহযীবুল কামাল ২২/৩৮৬; তাহযীবুত তাহযীব ইত্যাদি গ্রন্থে এ মতটিই উল্লেখ করা হয়েছে।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

অনেককেই বলতে শুনি, বিদায়ের সময় মুসাফাহা করা ঠিক নয়। কেননা...

প্রশ্ন

অনেককেই বলতে শুনি, বিদায়ের সময় মুসাফাহা করা ঠিক নয়। কেননা তা প্রমাণিত নয়। কথাটি কতটুকু সত্য? দলিলপ্রমাণসহ জানতে চাই।

উত্তর

কথাটি ঠিক নয়। বিদায়ের সময় মুসাফাহা করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কাযাআ রাহ. বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. এর নিকট ছিলাম। যখন সেখান থেকে ফিরে আসবো তখন তিনি আমাকে বললেন, থামো, আমি তোমাকে এভাবে বিদায় দিবো যেভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিদায় দিয়েছেন। তখন তিনি আমার হাত ধরে মুসাফাহা করলেন এরপর বললেন,

أًسْتَوْدِعُ اللهَ دِيْنَكَ وَأَمَانَتَكَ وَخَوَاتِمَ عَمَلِكَ

(আসসুনানুল কুবরা, নাসায়ী, হাদীস : ১০৩৪৭)

আর হাকীমুল উম্মত থানভী রাহ. এর প্রমাণ হিসেবে নিম্নোক্ত হাদীসটিও উল্লেখ করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কাউকে বিদায় দিতেন তখন তার হাত ধরতেন। অতপর ঐ ব্যক্তি হাত টেনে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি তার হাত ছাড়তেন না।

(জামে তিরমিযী, হাদীস : ৩৪৪২) মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১৮৪, হাদীস : ১৭০৯২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪/৪৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৮৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

ঈদের প্রথম খুতবার শুরুতে লাগাতার ৯ বার এবং দ্বিতীয় খুতবার...

প্রশ্ন

ঈদের প্রথম খুতবার শুরুতে লাগাতার ৯ বার এবং দ্বিতীয় খুতবার শুরুতে সাতবার এবং খুতবার শেষে ১৪ বার তাকবীর বলার হুকুম কী? হাদীস-আসারে এর কোনো প্রমাণ আছে কি? আর এক্ষেত্রে শুধু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার বলবে, না পূর্ণ তকবীরে তাশরীকই পড়বে? দলিল-প্রমাণসহ বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর

ঈদের প্রথম খুতবা শুরু করার আগে শুরুতে আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার এভাবে লাগাতার নয় বার তাকবীর বলা এবং দ্বিতীয় খুতবার শুরু করার আগে সাতবার তাকবীর বলা

মুস্তাহাব। উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উতবাহ রাহ. ও ইসমাঈল ইবনে উমাইয়া রাহ. থেকে এটি বর্ণিত আছে। (আলআওসাত ৪/৩২৮; কিতাবুল উম ১/২৭৩)

দ্বিতীয় খুতবার শেষে ১৪ বার তাকবীর বলার কথা হাদীস-আসারে পাওয়া যায়নি। (এলাউস সুনান ৮/১৬১)

-আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৩/২৭৭; মাজমূ ৫/২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫০; এলাউস সুনান ৮/১৬১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৭৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

পুরুষের কণ্ঠে গাওয়া কোনো হামদ, নাত, কেরাত, ওয়াজ মহিলাদের জন্য...

প্রশ্ন

পুরুষের কণ্ঠে গাওয়া কোনো হামদ, নাত, কেরাত, ওয়াজ মহিলাদের জন্য শোনার শরয়ী বিধান কী?

জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

পর্দার আড়ালে থেকে শুনতে পারবে।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার পিতা তিন মাস ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। সে সময় তার...

প্রশ্ন

আমার পিতা তিন মাস ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। সে সময় তার ব্যবহারের মোটর সাইকেলটি তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ফয়সাল চাচার জন্য অসিয়ত করেছিলেন। ইতিমধ্যে ফয়সাল চাচা হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এর সপ্তাহ দুয়েক পর আমার পিতাও ইন্তিকাল করেন। এখন ফয়সাল চাচার ছেলেরা সেই মোটর সাইকেলটি দাবি করছে। কিন্তু আমার বড় ভাই বলছেন, আববা যেহেতু সেটা ফয়সাল চাচার জন্য অসিয়ত করেছিলেন, তার ছেলেদের জন্য নয়, আর ফয়সাল চাচা তো বাবার আগেই মারা গেছেন, তাই তার ছেলে তা পাবে না।

প্রশ্ন হল, এখন আমাদের করণীয় কী? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

আপনার বড় ভাই ঠিকই বলেছেন। ফয়সাল সাহেবের ছেলেরা মোটর সাইকেলটি পাবে না। কেননা যার জন্য অসিয়ত করা হয়েছে সে যদি অvাসয়তকারীর আগে মারা যায় তাহলে অসিয়ত বাতিল হয়ে যায়। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতার পূর্বে ফয়সাল সাহেব মারা যাওয়ার কারণে আপনার পিতার ঐ অসিয়তটি বাতিল হয়ে গেছে। সুতরাং ফয়সাল সাহেবের ছেলেদের জন্য তা দাবি করা বৈধ নয়।

-আলবাহরুর রায়েক ৮/৪৫৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৪১৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৬৯৩; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৫; হেদায়া ৪/৬৮৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৭৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

বর্তমানে অনেক হোটেলে খাওয়ার পর হাত মোছার জন্য পেপারের টুকরা...

প্রশ্ন

বর্তমানে অনেক হোটেলে খাওয়ার পর হাত মোছার জন্য পেপারের টুকরা দেওয়া হয়। এর দ্বারা হাত মোছা যাবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

পেপারের টুকরো বা কাগজ সম্মানিত বস্ত্ত। ইলমের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। হাত মোছার কাজে তা ব্যবহার করা অনুচিত। অবশ্য টিস্যু পেপার যা মূলত এই ধরনের উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে তা দ্বারা হাত মোছা যাবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১২৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৭১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের বাড়ি নদীর পাড়ে। নদী ভাঙ্গনের সময় বড় গাছের গুড়ি,...

প্রশ্ন

আমাদের বাড়ি নদীর পাড়ে। নদী ভাঙ্গনের সময় বড় গাছের গুড়ি, ডালপালা ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে ভেসে আসে। এগুলির কোনো দাবিদার থাকে না। আমরা এগুলো তুলে নিয়ে ব্যবহার করি, লাকড়ি বানিয়ে বিক্রি করি। এটা কি শরীয়তসম্মত?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ভেসে আসা গাছের গুঁড়ি, ডালপালা ইত্যাদি যদি বাস্তবেই এত কম মূল্যের হয় যে, মালিক তা খোঁজবে না, তাহলে যে পাবে সে তা ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু তা যদি এমন মূল্যমানের হয়, যা সাধারণত ফেলে দেওয়া হয় না তাহলে এগুলোর মালিক জানা থাকলে তাকে ফেরত দিতে হবে। আর মালিক পাওয়া না গেলে মালিকের পক্ষ থেকে কোনো গরিবকে সদকা করে দিতে হবে। আর যে পেয়েছে সে গরিব হলে নিজেও ব্যবহার করতে পারবে।

-সহীহ বুখারী, হাদীস : ২৪৩১; ফাতহুল বারী ৫/১০৩-১০৪; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৫৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৭/৪১৬; রদ্দুল মুহতার ৪/২৭৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি যোহরের প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদ পূর্ণ করার আগে ইমাম সাহেব...

প্রশ্ন

আমি যোহরের প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদ পূর্ণ করার আগে ইমাম সাহেব তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যান। আমি তৎক্ষণাৎ না দাঁড়িয়ে তাশাহহুদ পূর্ণ করার পর দাঁড়াই। এরূপ করা কি আমার জন্য সঠিক হয়েছে? না ইমাম সাহেবের সাথেই দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত ছিল?

উত্তর

উক্ত ক্ষেত্রে তাশাহহুদ পূর্ণ করে দাঁড়ানোই সঠিক হয়েছে। কেননা মুকতাদির জন্যও পূর্ণ তাশাহহুদ পড়া ওয়াজিব। তাই মুকতাদির তাশাহহুদ শেষ হওয়ার আগে ইমাম তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেলেও মুকতাদি তখন দাঁড়াবে না। বরং সে তাশাহহুদ পূর্ণ করেই দাঁড়াবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৯৬; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১০৮; রদ্দুল মুহতার ২/১০; শরহুল মুনইয়া ৫২৭; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৩১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৮৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

শুনেছি, কোনো তালিবে ইলম যদি কোনো কবরস্থানের পাশ দিয়ে অতিক্রম...

প্রশ্ন

শুনেছি, কোনো তালিবে ইলম যদি কোনো কবরস্থানের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে তবে আল্লাহ তাআলা তার বরকতে চল্লিশ দিন পর্যন্ত ঐ কবরস্থানের আযাব মাফ করে দেন। এটি কি হাদীস? যদি তা-ই হয় তবে তা কি সহীহ? জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কথাটি হাদীস হিসেবে লোকমুখে প্রচলিত থাকলেও মূলত তা হাদীস নয়। হাদীস বিশারদগণ এটাকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও জাল বলে আখ্যায়িত করেছেন। অতএব এ ধরনের কথা বর্ণনা করা ও প্রচার করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।

-আলমাছনূ’ ফী মারিফাতিল হাদীসিল মাওযূ’ পৃ. ৬৫; কাশফুল খাফা ১/১৯৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

যদি কোনো ব্যক্তি ফরয গোসলে নাকের ভেতরে পানি প্রবেশ না...

প্রশ্ন

যদি কোনো ব্যক্তি ফরয গোসলে নাকের ভেতরে পানি প্রবেশ না করিয়ে শুধু আঙ্গুল ভিজিয়ে নাকের ভিতরটা তিনবার ভিজিয়ে নেয় তাহলে তার গোসল হবে কি না? এবং নাকের ভিতরে পানি প্রবেশ করানো ও তা পরিষ্কার করার পদ্ধতি কি?

উত্তর

ফরয গোসলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো ফরয। শুধু আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতরটা ভিজিয়ে নেয়া যথেষ্ট নয়। এর দ্বারা নাকে পানি পৌঁছানোর ফরয আদায় হবে না। আর নাকে প্রথমে পানি পৌঁছাবে। এরপর বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতরটা পরিষ্কার করে নিবে যেন কোনো অংশ শুকনা না থেকে যায়। এভাবে তিনবার নাকের নরম অংশ পর্যন্ত পানি প্রবেশ করাবে।

-সুনানে আবু দাউদ ১/১৯; সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২২২, ২৭৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৫১, ১১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৫৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

লোকমুখ শুনেছি, মুসা আ. আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু...

প্রশ্ন

লোকমুখ শুনেছি, মুসা আ. আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত হওয়ার জন্য। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেননি। এ কথা ঠিক কি না জানালে খুশি হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কথাটির যথেষ্ট জনশ্রুতি থাকলেও তা সঠিক নয়। বিখ্যাত হাদীস শাস্ত্রজ্ঞ হাফেয যাহাবী রাহ.সহ একাধিক হাদীস বিশারদ এ সংক্রান্ত বর্ণনাটিকে জাল আখ্যা দিয়েছেন।

-মীযানুল ইতিদাল ২/১৫২; লিসানুল মীযান ৩/৪৪; তানযীহুশ শরীয়াতিল মারফুআহ ১/২৪৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৫৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হযরত ফাতেমা রা.-এর ইন্তিকালের পর হযরত আবু যর গিফারী রা....

প্রশ্ন

হযরত ফাতেমা রা.-এর ইন্তিকালের পর হযরত আবু যর গিফারী রা. ফাতেমা রা.-এর কবরে নেমে বললেন, হে কবর! তুমি কি জান, আজ তোমার মাঝে কাকে রাখা হবে? তিনি হলেন খাতুনে জান্নাত, হাসান-হুসাইনের মা, নবীজীর কলিজার টুকরা। তিনি তিন বার এ কথাগুলো বললেন। পরে কবর আওয়াজ দিল, আমি এগুলো কিছুই চিনি না। আমল যদি ভালো হয় তাহলে আমি তার জন্য প্রশস্ত হয়ে যাব। আর আমল যদি খারাপ হয় তাহলে তাকে এমনভাবে চাপ দিব ...। এই ধরনের কোনো রেওয়ায়েত সহীহ কি না এবং তা কোথায় পাওয়া যাবে?

উত্তর

উক্ত রেওয়ায়েত সম্বন্ধে মাসিক আলকাউসার, মার্চ ২০০৭ ঈ. সংখ্যায় প্রচলিত ভুল বিভাগে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার সারসংক্ষেপ হল, এটি একটি ভিত্তিহীন কেচ্ছা। বাস্তবতার সাথে এর দূরবর্তী সম্পর্কও নেই। আমাদের জানামতে কোনো নির্ভরযোগ্য হাদীস বা ইতিহাস গ্রন্থে এর কোনো সনদ উল্লেখ নেই। সাহাবায়ে কেরাম তো অনেক উর্ধ্বে, সাধারণ মুসলমানও কাউকে দাফন করার সময় এ ধরনের কথা বলতে পারে না। কেননা, আখিরাতে হিসাব-কিতাবের বিষয়টি যে ঈমান ও আমলের ভিত্তিতেই হবে তা দ্বীনের মৌলিক শিক্ষা। এছাড়া রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায়ই প্রিয়তম কন্যা ফাতেমা রা.কে বলে গেছেন-

يا فاطمة! أنقذي نفسك من النار، فإني لا أملك ضرا ولا نفعا.

হে ফাতিমা! জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা কর। কেননা, আমি উপকার-অপকারের মালিক নই। (সহীহ মুসলিম ২/১১৪)

অতএব রেওয়ায়েতটি যেহেতু সহীহ নয় তাই তা বর্ণনা করা যাবে না।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮১৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

ফাতেমা ও সামিয়া আপন বোন। ফাতেমা আমার দুধ বোন। সে...

প্রশ্ন

ফাতেমা ও সামিয়া আপন বোন। ফাতেমা আমার দুধ বোন। সে আমার মায়ের দুধ পান করেছে। সামিয়ার সাথে আমার বিয়ের কথা হচ্ছে। আমি জানতে চাই, সামিয়ার সাথে আমার বিয়ে সহীহ হবে কি না?

উত্তর

হ্যাঁ, সামিয়ার সাথে আপনার বিয়ে সহীহ হবে। কারণ তার সাথে আপনার আত্মীয়তার বা দুধের কোনো সম্পর্ক নেই। দুধের সম্পর্ক তার বোন ফাতেমার সাথে সামিয়ার সাথে নয়।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০০; রদ্দুল মুহতার ৩/২১৭; আলমুফাসসাল ফী আহকামিল মারআ ৬/২৪১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৯৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

জনৈক ব্যক্তি তাওয়াফে যিয়ারতের পর অসুস্থ হওয়ার কারণে আইয়ামে নাহরে...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি তাওয়াফে যিয়ারতের পর অসুস্থ হওয়ার কারণে আইয়ামে নাহরে সায়ী করতে পারেনি। অতপর পনের দিন পর সে আরোগ্য লাভ করে। জানার বিষয় হল, এখন যদি সে সায়ী করে তবে তা আদায় হবে কি না আর এ কারণে তাকে কোনো দম বা সদকা দিতে হবে কি না।

উত্তর

হ্যাঁ, ঐ ব্যক্তি এখন সায়ী করে নিলে তা আদায় হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য যে, তাওয়াফে যিয়ারতের পর ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগেই সায়ী করে নেওয়া উত্তম। এর চেয়ে বিলম্ব করা মাকরূহ। তবে পরে আদায় করলেও তা সহীহ হয়ে যাবে। বিলম্বের কারণে কোনো দম বা সদকা ওয়াজিব হবে না।

-গুনইয়াতুন নাসিক ১৩২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩২০; যুবদাতুল মানাসিক ১৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৭; মানাসিক ১৭৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৯৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আকীকা কী? আকীকার হুকুম কী? আকীকার সময় কি নির্ধারিত? কেউ...

প্রশ্ন

আকীকা কী? আকীকার হুকুম কী? আকীকার সময় কি নির্ধারিত? কেউ কি নিজের আকীকা নিজেই করতে পারবে? আকীকা আদায়ের নিয়ম কী? আকীকার গোশত কি পিতা-মাতা ও আত্মীয়স্বজনরা খেতে পারবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

সন্তান জন্মগ্রহণের শুকরিয়াস্বরূপ যে পশু যবাই করা হয় তাকে আকীকা বলে। আর আকীকা করা মুস্তাহাব।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, সন্তানের জন্য আকীকা করতে হয়। সুতরাং তোমরা তার পক্ষ থেকে যবাই কর এবং তার ‘জঞ্জাল’ শ দূর কর (অর্থাৎ চুল চেছে ফেল)। (সহীহ বুখারী ২/৮২২)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন, যার সন্তান ভূমিষ্ট হয় সে যদি শিশুটির পক্ষ থেকে আকীকা করা পছন্দ করে তাহলে যেন তাই করে। (সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭)

জন্মের সপ্তম দিনে আকীকা করা উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে ১৪ বা ২১ তম দিনে করা ভালো। কেননা হাদীস শরীফে এই তিন দিনের উল্লেখ আছে। এ তিন দিনেও করা না হলে পরে যে কোনো দিন আকীকা করা যেতে পারে।

হযরত আমর ইবনে শুআইব-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবজাতকের সপ্তম দিনে আকীকা করা, নাম রাখা ও তার জঞ্জাল দূর করার (অর্থাৎ মাথার চুল কাটার) নির্দেশ দিয়েছেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২৬)

হযরত বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আকীকার পশু সপ্তম বা চৌদ্দতম বা একুশতম দিনে যবাই করা হবে। (আলমুজামুল আওসাত ৫/৪৫৭)

কারো আকীকা করা না হলে বড় হয়ে নিজের আকীকা নিজেও করতে পারবে।

হযরত আনাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়ত প্রাপ্তির পর নিজের আকীকা নিজে করেছেন। (প্রাগুক্ত ১/৫২৯; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৬২০৩; আলমুফাসসাল ফী আহকামিল আকীকা, ড. হুসামুদ্দীন ইবনে মূসা, জামেয়াতুল কূদস, পৃ. ১৪২)

হাসান বসরী রাহ. বলেন, তোমার যদি আকীকা না করা হয়ে থাকে তাহলে তুমি নিজের আকীকা করে নাও। যদিও তুমি ইতিমধ্যেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেছ। (আলমুহাল্লা ৬/২৪০)

পুত্র সন্তান হলে দুটি আর কন্যাসন্তান হলে একটি ছাগল/ভেড়া/দুম্বা দ্বারা আকীকা করা উত্তম। তবে পুত্রসন্তানের ক্ষেত্রে একটি যবাই করলেও আকীকার হক আদায় হয়ে যাবে। এছাড়া উট, মহিষ, গরু ইত্যাদি দ্বারা আকীকা করা যায়।

হযরত উম্মে কুরয রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, পুত্রসন্তানের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর কন্যাসন্তানের পক্ষ থেকে একটি ছাগল যবাই করবে। (জামে তিরমিযী ১/১৮৩)

হযরত ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত হাসান ও হুসাইন রা-এর পক্ষ থেকে একটি একটি ভেড়া আকীকা করেছেন। (আবু দাউদ ২/৩৯২)

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যার কোনো সন্তান জন্মলাভ করে সে যেন উট, গরু অথবা ছাগল দ্বারা আকীকা করে। (আলমুজামুল আওসাত ২/৩৭১,

হাদীস : ৩৭১)

আকীকার গোশত পিতা-মাতা ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলেই খেতে পারবে।

হযরত আয়েশা রা. বলেন, (আকীকার গোশত) নিজে খাবে, অন্যদের খাওয়াবে এবং সদকা করবে।

-মুসতাদরাকে হাকেম ৫/৩৩৮; আলমুগনী ১৩/৩৯৩, ৩৯৭, ৪০০; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২৭, হাদীস : ২৪৭৪৩, ২৪৭৩৭; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩২৯, ৩৩০, ৩৩১; তুহফাতুল মাওদূদ বি আহকামিল মাওলূদ ৭৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৮৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

‘মুমিনের নিয়ত তার আমলে চেয়ে শ্রেয়’ এটা কি হাদীস? হাদীস...

প্রশ্ন

‘মুমিনের নিয়ত তার আমলে চেয়ে শ্রেয়’ এটা কি হাদীস? হাদীস হলে হুকুমসহ জানাবেন।

উত্তর

‘মুমিনের নিয়ত তার আমল অপেক্ষা শ্রেয়’-এটি জয়ীফ সনদে বর্ণিত একটি হাদীস। ইমাম বায়হাকী রাহ. হাদীসটিকে জয়ীফ বলেছেন। তবে ইমাম সাখাভী রাহ. এর সপক্ষে আরো হাদীস পেশ করেছেন, যদ্বারা তা ফাযায়েলের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়।

-মাজমাউয যাওয়াইদ ১/৩০১; আলমাকাসিদুল হাসানাহ পৃ. ৭০১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৫৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার এক আত্মীয়ের এক পালকপুত্র আছে। গ্রামের এক গরীব নারীর...

প্রশ্ন

আমার এক আত্মীয়ের এক পালকপুত্র আছে। গ্রামের এক গরীব নারীর সন্তানকে নিয়ে পালকপুত্র বানিয়েছে। আমি জানতে চাই, পিতার ঔরসজাত সন্তানের মতো পালকপুত্রও কি পিতার মীরাস পাবে? শরীয়তের বিধান কী?

উত্তর

পালকপুত্র ঔরসজাত সন্তানের মতো নয়। সে মীরাসের হকদার নয়।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৩৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

জনৈক ব্যক্তি আইয়ামে নহরের শেস দিন তাওয়াফে যিয়ারতের ছয় চক্কর...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি আইয়ামে নহরের শেস দিন তাওয়াফে যিয়ারতের ছয় চক্কর করার পর সূর্য অস্তমিত হয়ে যাওয়ায় সপ্তম চক্করটি সে সূর্যাস্তের পর সম্পন্ন করে। জানার বিষয় হল, এ কারণে তাকে দম দিতে হবে কি না?

উত্তর

না। দম দিতে হবে না। তবে তার উপর একটি সদকা ওয়াজিব। অর্থাৎ একটি সদকাতুল ফিতরের সমপরিমাণ মূল্য সদকা করে দিতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, এ সদকা হারামের বাইরের এলাকায় যেমন এদেশের মিসকীনদেরও দেওয়া যাবে। তবে হারামের মিসকীনদেরকে দেওয়া উত্তম।

-গুনইয়াতুন নাসিক ২৭৩; মানাসিক ৩৯১; আলমাসালেক ১/৮৭৫; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬০৮; যুবদাতুল মানাসিক ৩৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭২৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

শুনেছি, হাদীসে নাকি আছে, শেষ যমানায় দালান-কোঠা, সম্পদ হবে গরীবদের।...

প্রশ্ন

শুনেছি, হাদীসে নাকি আছে, শেষ যমানায় দালান-কোঠা, সম্পদ হবে গরীবদের। জানতে চাই, এটি হাদীস কি না? হাদীস হলে কোন কিতাবের হাদীস? মর্মসহ জানতে আগ্রহী।

উত্তর

হ্যাঁ, এ ধরনের কথা সহীহ হাদীসে আছে। আবু হুরাইরা রা. বলেন, (কিয়ামতের আলামত বর্ণনা করতে গিয়ে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের একটি আলামত হল, বকরীর রাখালরা বড় বড় অট্টালিকা নিয়ে গর্ব করবে। (সহীহ বুখারী ১/১২; সহীহ মুসলিম ১/২৯)

উক্ত হাদীসের মর্ম হল, সমাজে তখন বড় ধরনের পরিবর্তন হবে। মূর্খ ও নিম্ন শ্রেণীর লোকেরা নেতৃত্বের আসনে সমাসীন হবে। দরিদ্র লোকেরা বড় বড় দালান-কোঠার মালিক হবে এবং এসব নিয়ে গৌরব করতে থাকবে।

-উমদাতুল কারী ১/২৮৯; তরজুমানুস সুন্নাহ ১/৫৬৬-৫৬৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭১২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমরা জানি, সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সপ্তম দিন চুল কাটা, আকীকা...

প্রশ্ন

আমরা জানি, সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সপ্তম দিন চুল কাটা, আকীকা এবং নাম রাখতে হয়। আমার জানার বিষয় হল, এ তিনটির মধ্যে কোনটি আগে আর কোনটি পরে করতে হয়। এক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করার কোনো নিয়ম শরীয়তে আছে কি?

উত্তর

এই তিনটি কাজের মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি নয়। আগে পরে যেভাবেই করা হোক তা আদায় হয়ে যায়। তবে সন্তানের মাথার চুল কাটার আগে আকীকা করা মুস্তাহাব। হযরত ইবনে জুরাইজ রাহ. বলেন, বাচ্চার মাথার চুল কাটার পূর্বে যবাই করবে। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৩০)

আর আকীকার আগে বা পরে এমনকি সপ্তম দিনের আগেও সন্তানের নাম রাখা যায়। তবে আকীকা করার আগেই নাম রেখে নেওয়া উত্তম।

তাবেয়ী কাতাদাহ রাহ. বলেন, প্রথমে বাচ্চার নাম রাখা হবে। অতপর সপ্তম দিন (পশু) যবাই করা হবে এবং এরপর মাথা মুন্ডানো হবে।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৩৩; কিতাবুল মাজমূ’ ৪/৪০৭, ৮/৪১৫; আলমুফাসসাল ফী আহকামিল আকীকাহ; তুহফাতুল মাওদূদ বিআহকামিল মাওলূদ ৮৬, ৯৯; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৩৯৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭১০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমরা জানি, হাবশার বিখ্যাত বাদশা নাজাশী মুসলমানদেরকে আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং...

প্রশ্ন

আমরা জানি, হাবশার বিখ্যাত বাদশা নাজাশী মুসলমানদেরকে আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং তিনি ইসলাম কবুল করেছিলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে কি তাঁর মুলাকাত হয়েছিল বা তিনি কি সাহাবী বলে গণ্য হবেন? জানতে চাই।

উত্তর

হাবশার বাদশা নাজাশী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তার সাক্ষাৎ হয়নি। তাই তিনি সাহাবী নন; বরং তাবেয়ী।

-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ২৭২৭৬; রাফউ শানিল হাবশান পৃ. ১২০; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪/১১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭০৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি জানতে চাই, الساكت عن الحق شيطان أخرى (সত্য গোপনকারী...

প্রশ্ন

আমি জানতে চাই, الساكت عن الحق شيطان أخرى (সত্য গোপনকারী বোবা শয়তান।) এ বাক্যটি হাদীস কি না? হাদীস হলে কোন কিতাবে আছে এবং সনদের মান কী? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত উক্তিটি হাদীস হিসেবে প্রমাণিত নয়। আল্লামা কুশাইরী রাহ., ইমাম নববী রাহ. ও আবদুর রউফ

মুনাভী রাহ. একে প্রখ্যাত ফকীহ ও বুযুর্গ আবু আলী আদ্দাক্বাক রাহ. (মৃত্যু ৪০৬ হি.) এর উক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

-আররিসালাতুল কুশাইরিয়া পৃ. ১২০; শরহুন নববী ২/১৯; শাযারাতুয যাহাব ৩/১৮০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার এক চাচাতো বোন বলেছে যে, ঘরে মাহরামের সামনে নাকি...

প্রশ্ন

আমার এক চাচাতো বোন বলেছে যে, ঘরে মাহরামের সামনে নাকি ওড়না পরতে হয় না। তার এ কথা কি ঠিক? মাহরামের সামনে কোন অঙ্গগুলো খোলা রাখা যায়?

উত্তর

মাহরাম পুরুষের জন্য মহিলার মাথা, চেহারা, হাত, গলদেশ ও হাঁটুর নিচের অংশ সতর নয়। তবে তাদের সামনেও যতটুকু সম্ভব আবৃত থাকাই উত্তম। বিশিষ্ট তাবেয়ী হাসান বসরী বলেছেন, ‘নিজ ভাইয়ের সামনেও নারীর ওড়না ছাড়া থাকা উচিত নয়।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৯/৩৭৩)

প্রখ্যাত তাবেয়ী আতা ইবনে আবী রাবাহ রাহ. বলেছেন, ‘মাহরাম পুরুষের সামনে মেয়েদের মাথা ঢেকে রাখাই আমার কাছে অধিক পছন্দনীয়। অবশ্য মাহরাম তা দেখে ফেললে গুনাহ হবে না।’

প্রাগুক্ত, কিতাবুল আসল ৩/৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৯১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৬৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

ইহরাম অবস্থায় মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য সুগন্ধিযুক্ত তেল ব্যবহার করা...

প্রশ্ন

ইহরাম অবস্থায় মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য সুগন্ধিযুক্ত তেল ব্যবহার করা যাবে কি?

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার নিষেধ। তাই সুগন্ধিযুক্ত তেল ব্যবহার করা যাবে না। বিখ্যাত তাবেয়ী আতা রাহ. বলেন, ‘ইহরাম গ্রহণকারী তার শরীরে কিংবা কাপড়ে সুগন্ধিযুক্ত তেল লাগালে তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হবে।’

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৪৮৩৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৫২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

ডাক্তাররা বিভিন্ন রোগের ব্যাপারে বলেন, অমুক রোগটি ছোঁয়াচে। কিন্তু বুখারী...

প্রশ্ন

ডাক্তাররা বিভিন্ন রোগের ব্যাপারে বলেন, অমুক রোগটি ছোঁয়াচে। কিন্তু বুখারী শরীফের বাংলা অনুবাদে একটি হাদীস দেখলাম, ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই। ইসলামে কি ছোঁয়াচে রোগকে অস্বীকার করা হয়েছে? অথচ এটি একটি বাস্তব বিষয়। মুফতী সাহেবের নিকট বিষয়টির সমাধান কামনা করছি।

উত্তর

মূল উত্তরের আগে কয়েকটি কথা জেনে নেয়া উচিত।

ক) ইসলামের কোনো বিষয়ই সঠিক বাস্তবতার পরিপন্থী নয়। কেননা, এ বিশ্বজগত যিনি সৃষ্টি কছেন তিনিই শরীয়ত দিয়েছেন। অতএব ইসলামের কোনো বিষয়ের সাথে সঠিক বাস্তবতার সংঘর্ষ হতে পারে না।

খ) এ বিশ্ব জগতে যা কিছু হয় সবই আল্লাহ তাআলার ফয়সালাতে হয়ে থাকে। এর পিছনে যেসব আসবাবকে বাহ্যিক কার্যকারণ হিসেবে দেখা যায় এগুলো যদিও বাস্তব, তবে এসবের কার্য ও ক্রিয়া করার ক্ষমতা আল্লাহপ্রদত্ত। আল্লাহ তাআলা ক্রিয়া করার ক্ষমতা না দিলে এগুলো ক্রিয়া করতে পারবে না। এজন্যই ইবরাহীম আ.কে আগুনে নিক্ষেপের পরও আল্লাহর হুকুম না হওয়ার কারণে আগুন কোনো ক্রিয়া করতে পারেনি।

গ) সুস্থতা-অসুস্থতা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়। সুস্থতার যেমন বিভিন্ন কারণ রয়েছে তদ্রূপ অসুস্থতারও বিভিন্ন কারণ আছে। যেমন-মাত্রাতিরিক্ত ঠান্ডায় সর্দি বা জ্বর হয়। তেমনিভাবে রোগাক্রান্ত হওয়ার একটি কারণ এটিও যে, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে যাওয়া। এটি একটি বাস্তব বিষয়। শরীয়ত একে অস্বীকার করেনি। তবে অন্যান্য আসবাবের ব্যাপারে যে কথা এখানেও একই কথা-কার্য ও ক্রিয়া করার ক্ষমতা আল্লাহপ্রদত্ত। রোগের মধ্যে ক্রিয়া করার নিজস্ব ক্ষমতা নেই। তাই আল্লাহ চাইলে রোগাক্রান্ত হবে নতুবা হবে না। এজন্যই দেখা যায়, সংস্পর্শে যাওয়ার পরও অনেকে রোগাক্রান্ত হয় না।

ভূমিকার পর মূল উত্তর দেওয়া হল।

প্রশ্নে যে হাদীসের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে এর মূল আরবী পাঠ এর সঠিক তরজমা এই, ‘রোগ-ব্যধি (তার নিজস্ব ক্ষমতায়) একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে লেগে যায় না।’ (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৭৪২)

ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই-হাদীসের এ তরজমা বিশুদ্ধ নয়। কেননা, এর থেকে বোঝা যায়, বাস্তব ছোঁয়াচে রোগকে ইসলাম অস্বীকার করেছে। অথচ রোগাক্রান্ত হওয়ার অন্যান্য কারণ যেমনিভাবে বাস্তব তদ্রূপ রোগাক্রান্ত হওয়ার এই কারণটিও বাস্তব। ইসলাম একে অস্বীকার করেনি। এক্ষেত্রে যে বিষয়টিকে ভ্রান্ত ও বাতিল সাব্যস্ত করা হয়েছে তা হল, কোনো ব্যাধিকে এমন মনে করা যে, তা নিজে নিজেই সংক্রমিত হয়। যেমনটি জাহেলী যুগে মনে করা হত। উপাকার ও অপকারের একমাত্র মালিক আল্লাহ তাআলা। হায়াত-মওত, সুস্থতা-অসুস্থতা সবই তাঁর হুকুমে হয়ে থাকে। মোটকথা, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে রোগাক্রান্ত হওয়া একটি বাস্তব বিষয়। তবে সংক্রমনের এই ক্ষমতা রোগের নিজস্ব নয়; বরং আল্লাহপ্রদত্ত। তাই তিনি চাইলে সংক্রমণ হবে নতুবা হবে না এবং এটি যেহেতু রোগাক্রান্ত হওয়ার একটি বাস্তব কারণ তাই রোগাক্রান্ত হওয়ার অন্যান্য কারণ থেকে বেঁচে থাকতে যেমনিভাবে কোনো দোষ নেই তেমনি এক্ষেত্রেও উপযুক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা দোষের নয়। বরং কিছু হাদীসে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

-বাযলুল মাজহূদ ১৬/২৪২; শরহুন নববী ২/২৩০; ফয়যুল কাদীর ৬/৪৩৩; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৪/৩৭০; তরজুমানুস সুন্নাহ ২/৪১৬; বুলুগুল আরাব ফী মারিফাতি আহওয়ালিল আরব ২/৩১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬১২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

জনৈক আলেম বলেছেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্মের সময় তাঁর...

প্রশ্ন

জনৈক আলেম বলেছেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্মের সময় তাঁর মাতা স্বপ্নে একটি নূর দেখেছেন, বাস্তবে কোনো নূর দেখেননি। আরেকজন আলেম বলেছেন, নবীজীর জন্মের সময় বাস্তবেই নবীজীর মাতা নূর দেখেছেন। কার কথা সঠিক?

উত্তর

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্মের সময় তার মাতা নূর দেখেছেন এ কথাই সঠিক। মুসনাদে আহমদ, সুনানে দারেমীসহ অনেক কিতাবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে তা বর্ণিত হয়েছে।

হযরত উতবা ইবনে আবদুস সুলামী রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তাঁর মাতা বলেছেন যে, আমার ভূমিষ্ট হওয়ার সময় তিনি এমন একটি নূর দেখেছেন, যাদ্দারা সিরিয়ার প্রাসাদগুলো আলোকিত হয়ে গিয়েছিল।- মুসনাদে আহমদ ৪/১৮৪; সুনানে দারেমী ১/২৫০-৫১; দালাইলুন নুবুওয়াহ, বাইহাকী ২/৮; মাজমাউয যাওয়াইদ ৮/৪০৭)

সুতরাং নবীজীর জন্মের সময় তাঁর মাতা নূর দেখেননি-একথা ঠিক নয়।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬০৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

শুনেছি, মৃত ব্যক্তিকে কবরে রেখে ফিরে আসার সময় মৃত ব্যক্তি...

প্রশ্ন

শুনেছি, মৃত ব্যক্তিকে কবরে রেখে ফিরে আসার সময় মৃত ব্যক্তি লোকদের পায়ের জুতার আওয়াজ শুনতে পায়। একথা বিশ্বাস করা কি ঠিক? হাদীসে এ ধরনের কোনো কথা আছে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, এ কথা বিশুদ্ধ সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত। হাদীস শরীফে আছে, হযরত আনাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, বান্দাকে কবরে রাখার পর তার সঙ্গীরা যখন চলে যায় (এমনকি ফিরার সময়) মৃত ব্যক্তি তাদের পায়ের জুতোর আওয়াজ শুনতে পায় তখন দু’ জন ফেরেশতা তার নিকট আসেন। ...।

-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৩৭৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৮৭০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৯৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

শুনেছি যে, আকীকায় মাদা বকরি যবাই করতে হয়। কেউ যদি...

প্রশ্ন

শুনেছি যে, আকীকায় মাদা বকরি যবাই করতে হয়। কেউ যদি মাদা বকরির পরিবর্তে নর ছাগল যবাই করে তাহলে কি কোনো সমস্যা হবে?

উত্তর

মাদা বকরি বা নর ছাগল যে কোনোটি দ্বারা আকীকা করা যায়। মাদা বকরি দিয়েই আকীকা করতে হয়-এ কথা ভিত্তিহীন।

-জামে তিরমিযী ১/১৮২-১৮৩; সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭; মুয়াত্তা ইমাম মালেক ১৮৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৯২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি একজন আলেমকে স্বাস্থ্য রক্ষার গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে নিম্নোক্ত...

প্রশ্ন

আমি একজন আলেমকে স্বাস্থ্য রক্ষার গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে নিম্নোক্ত হাদীসটি বলতে শুনেছি।

المعدة بيت الداء، والحمية رأس الدواء، وأعط كل بدن ما عودته

(অর্থাৎ) উদর হল সর্বরোগের কেন্দ্র। আর খাদ্য-সংযম সর্বরোগের মহৌষধ। দেহকে তা-ই দাও, যাতে তাকে অভ্যস্ত করেছ। জানার বিষয় হল, এটি কি হাদীস। হাদীস হলে তা কোন কিতাবে আছে? জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কথাটি কোথাও হাদীস হিসেবে উল্লেখেতি হলেও হাদীস বিশারদগণ বলেছেন, এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস হিসেবে প্রমাণিত নয়; বরং তা আরবের প্রসিদ্ধ চিকিৎসক হারিস ইবনে কালদাহ-এর উক্তি।

অতএব তা হাদীস হিসেবে বর্ণনা করা যাবে না।

-আলমাকাসিদুল হাসানাহ পৃ. ৬১১; কাশফুল খাফা ২/৯৩; আদ্দুরারুল মুনতাছিরাহ ১৬৮; আল লাআলিল মানসুরাহ ১৪৫; আলফাওয়াইদুল মাজমূআহ ১৬৬; যাদুল মাসীর ৩/১৮৮; রুহুল মাআনী ৫/১১০; তাফসীরে কুরতুবী ৭/১৯২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৬৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হাবশার বিখ্যাত বাদশা নাজাসী যিনি মুসলমানদেরকে আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং নিজেও...

প্রশ্ন

হাবশার বিখ্যাত বাদশা নাজাসী যিনি মুসলমানদেরকে আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং নিজেও মুসলমান হয়েছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাঁর সাক্ষাত হয়েছিল কি? অর্থাৎ তিনি কি সাহাবী? জানতে চাই।

উত্তর

হাবশার বাদশা নাজাশী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে যেহেতু তার সাক্ষাৎ হয়নি তাই তিনি সাহাবী নন; বরং তাবেয়ী। কেননা সাহাবী হওয়ার জন্য শর্ত হল, ঈমানের সাথে জীবদ্দশায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সাক্ষাত হওয়া।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৭২৭৬; আলইসাবা ১/২০৫; শরহুল মুহাযযাব ৫/২১০; উসদুল গাবা ১/১১৮; তুহফাতুল আহওয়াযী ৪/১১৪; রাফউ শানিল হুবশান ১২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৬২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হজ্ব শিক্ষার একটি বইয়ে পড়েছি, হাজরে আসওয়াদ একটি জান্নাতী পাথর,...

প্রশ্ন

হজ্ব শিক্ষার একটি বইয়ে পড়েছি, হাজরে আসওয়াদ একটি জান্নাতী পাথর, যা প্রথমে খুব সাদা ছিল। এরপর মানুষের গুনাহের কারণে তা কালো হয়ে যায়। মানুষের গুনাহ যদি তাকে স্পর্শ না করত তাহলে যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি তাকে স্পর্শ করামাত্র সুস্থ হয়ে যেত। আমি জানতে চাই, কথাগুলো সহীহ কি না? হাদীস বা আছারে এ ধরনের কথা আছে কি না?

উত্তর

হ্যাঁ, কথাগুলো সহীহ। সহীহ সূত্রে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাজরে আসওয়াদ জান্নাতের পাথর। প্রথমে এটি দুধের চেয়েও অধিক সাদা ছিল। পরে মানুষের গুনাহ তাকে কালো করে দিয়েছে। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ৮৭৮; সহীহ ইবনে খুযাইমা ৪/২২০; মুসনাদে আহমাদ ১/৩০৭, ৩২৯, ৩৭৩)

অন্য হাদীসে আছে, মানুষের গুনাহ যদি হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহীমের পাথরকে স্পর্শ না করত তাহলে যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি তা স্পর্শ করলে (আল্লাহর পক্ষ হতে) তাকে সুস্থতা দান করা হত। (সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৫/৭৫; শরহুল মুহাযযাব ৮/৫১)

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৫৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

জনৈক ওয়ায়েয এক ওয়াজ মাহফিলে বলেছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে একশতটি...

প্রশ্ন

জনৈক ওয়ায়েয এক ওয়াজ মাহফিলে বলেছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে একশতটি মহববত আছে। তার মধ্যে নিরানববইটি মহববত নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। আর একটিমাত্র মহববত দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, যার কারণে দুনিয়ায় মানুষ একে অপরকে মহববত করে এবং মা তার সন্তানকে মহববত করে। তেমনি পশুপাখি তাদের শাবক ও ছানাদেরকে মহববত করে। জানিয়ে বাধিত করবেন যে, তার এই কথা কি কোনো সহীহ হাদীসে আছে? বরাতসহ জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

হ্যাঁ, ওই ব্যক্তির কথার মর্ম সঠিক। সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিমসহ অন্যান্য হাদীসের কিতাবে সহীহ সনদে তা বর্ণিত হয়েছে। তবে হাদীসে মহববত শব্দটি নেই; বরং রহমত শব্দ আছে। নিম্নে হাদীসটির তরজমা দেওয়া হল। হযরত আবু হুরাইরা রা. বলেন, আমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা রহমতকে এক শত ভাগ করেছেন। তন্মধ্য থেকে নিরানববই ভাগ রহমত নিজের কাছে রেখেছেন। আর একভাগ রহমত জমিনে অবতীর্ণ করেছেন। যার কারণে সমস্ত সৃষ্টি একে অপরের প্রতি দয়া করে থাকে। এমনকি ঘোড়া তার পায়ের খুর এই আশংকায় উঠিয়ে রাখে যে, তার দ্বারা বাচ্চা ব্যথা পাবে।

-সহীহ বুখারী ২/৮৮৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৩৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হজ্ব শিক্ষার একটি বইয়ে পড়েছি, হাজরে আসওয়াদ একটি জান্নাতী পাথর,...

প্রশ্ন

হজ্ব শিক্ষার একটি বইয়ে পড়েছি, হাজরে আসওয়াদ একটি জান্নাতী পাথর, যা প্রথমে খুব সাদা ছিল। এরপর মানুষের গুনাহের কারণে তা কালো হয়ে যায়। মানুষের গুনাহ যদি তাকে স্পর্শ না করত তাহলে যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি তাকে স্পর্শ করামাত্র সুস্থ হয়ে যেত। আমি জানতে চাই, কথাগুলো সহীহ কি না? হাদীস বা আছারে এ ধরনের কথা আছে কি না?

উত্তর

হ্যাঁ, কথাগুলো সহীহ। বিশুদ্ধ সূত্রে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাজরে আসওয়াদ জান্নাতের পাথর। প্রথমে এটি দুধের চেয়েও অধিক সাদা ছিল। পরে মানুষের গুনাহ তাকে কালো করে দিয়েছে। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ৮৭৭; সহীহ ইবনে খুযাইমা ৪/২২০; মুসনাদে আহমাদ ১/৩০৭, ৩২৯, ৩৭৩)

অন্য হাদীসে আছে, মানুষের গুনাহ যদি হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহীমের পাথরকে স্পর্শ না করত তাহলে যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি তা স্পর্শ করলে (আল্লাহর পক্ষ হতে) তাকে সুস্থতা দান করা হত। (সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৫/৭৫; শরহুল মুহাযযাব ৮/৫১)

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৩০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

--- একটি প্রসিদ্ধ নাম। এর সঠিক উচ্চারণ কী? অনেকে এ...

প্রশ্ন

--- একটি প্রসিদ্ধ নাম। এর সঠিক উচ্চারণ কী? অনেকে এ নামটির প্রথম অক্ষর অর্থাৎ ফা যের দিয়ে পড়েন। আবার অনেকে যবর উচ্চারণ করেন। কোনটি সঠিক এবং এর অর্থ কী? এটি সাহাবী-তাবেয়ীদের কারো নাম ছিল কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

-- শব্দটির প্রথম অক্ষর যবর দিয়ে ‘ফাইরুয’ বলা যায়। আবার যের দিয়ে ‘ফীরুয’ ও বলা যায়। উভয় উচ্চারণ সহীহ। এটি মূলত ফার্সী শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে, বিজয়ী, সফল, কৃতকার্য। এটি একজন সাহাবীর নাম। তাঁর উল্লেখযোগ্য একটি কৃতিত্ব হল, তিনি নবুওয়তের মিথ্যা দাবীদার আসওয়াদ আনাসীকে হত্যা করেছিলেন।

সহীহ বুখারী ২/৬২৮; আলইসাবা ৫/৩৭৯; আলইস্তিআব ৩/১২৬৪; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৫/১৩; ফাইরুযুল লুগাত ৯৪১; গিয়াসুল লুগাত ৩৮১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৯১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের এলাকায় মাগরিবের পর থেকে পরদিন সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় মাগরিবের পর থেকে পরদিন সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত স্বপ্ন বলা ও ব্যাখ্যা দেওয়া কুলক্ষণ বা দোষ মনে করা হয়। শরীয়তের এর কোনো ভিত্তি আছে কি?

উত্তর

না, এসময় স্বপ্ন বলতে এবং এর ব্যাখ্যা করতে শরীয়তের দৃষ্টিতে দোষের কিছু নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের পর পর সাহাবায়ে কেরাম থেকে স্বপ্ন শুনতেন এবং তার তা’বীর বর্ণনা করতেন।

কেউ স্বপ্নের ব্যাখ্যা বা তা’বীর জানতে চাইলে তার জন্য স্বপ্ন বলার উত্তম সময় এটিই। কেননা, এতে স্বপ্ন দেখা ও বলার মাঝে সময়ের ব্যবধান কম থাকে। ফলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

উমদাতুল কারী ২৪/১৭১;ইরশাদুস সারী ১৪/৪৯০; ফাতহুল বারী ১২/৪৫৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৮১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

জনৈক বক্তা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদার বর্ণনা দিতে...

প্রশ্ন

জনৈক বক্তা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, হাদীসে আছে ‘হাশরের দিন সর্বপ্রথম আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর থেকে উঠবেন।’ উক্ত কথাটি কি হাদীসে আছে? থাকলে সেই হাদীসটি উদ্ধৃতিসহ জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

উত্তর

হ্যাঁ, কথাটি হাদীসে আছে। হযরত আবু হুরায়রা রা.-এর সূত্রে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘কেয়ামতের দিন আমি হব সকল আদম-সন্তানের সরদার এবং আমিই প্রথম কবর থেকে উঠব। আল্লাহর নিকট আমিই প্রথম সুপারিশ করব এবং আমার সুপারিশই প্রথম কবুল হবে।’

সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২২৭৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৬৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

তাওয়াফের সময় হাজরে আসওয়াদ চুমু দেওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’...

প্রশ্ন

তাওয়াফের সময় হাজরে আসওয়াদ চুমু দেওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলার প্রচলন আছে। এটা কি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত? ফিকহ-ফাতাওয়ার কিতাবে কী আছে? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই।

উত্তর

হ্যাঁ, প্রতি চক্করে হাজরে আসওয়াদ বরারব এসে সরাসরি বা ইশারায় চুমু খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলা প্রমাণিত। সহীহ বুখারীসহ অন্যান্য কিতাবে আছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাওয়াফের মধ্যে যখনই হাজরে আসওয়াদে আসতেন তাকবীর অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে চুমু দিতেন, কিংবা লাঠি ইত্যাদি দিয়ে ইশারা করতেন। কিন্তু বিসমিল্লাহ বলাটা মারফূ হাদীসে নেই। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত আছে যে, তিনি ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে হাজরে আসওয়াদে চুমু দিতেন।

সহীহ বুখারী ১/২১৯; মুসনাদে আহমদ ৫/৭২; মুসান্নাফ আবদুর রাযযযাক ৫/৩৩;সুনানে বায়হাকী ৫/৭৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৬৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

মাওলানা ওমর আলী রাহ. সম্পর্কে মাওলানা ইসহাক ওবায়দীর অভিব্যক্তিটি পড়ে...

প্রশ্ন

মাওলানা ওমর আলী রাহ. সম্পর্কে মাওলানা ইসহাক ওবায়দীর অভিব্যক্তিটি পড়ে বেশ উপকৃত হয়েছি। আল্লাহ তাআলা তাঁকে জাযায়ে খায়ের দান করুন আমীন। কিন্তু এই প্রবন্ধে ‘ইসলামী বিশ্বকোষ’কে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ আমি আগে এটিকে এতটা গুরুত্ব দিতাম না। তাই প্রশ্ন জাগে, বাস্তবিকই কি এটি নির্ভরযোগ্য? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

সার্বিক বিবেচনায় এই বিশ্বকোষটিকে নির্ভরযোগ্য বলা মুশকিল। তবে এটাও ঠিক যে, কিছু বিষয়ের উত্তম ও নির্ভরযোগ্য কিছু প্রবন্ধ এতে রয়েছে। বিশেষত সঠিক চিন্তা-চেতনার অধিকারী মুহাক্কিক আলেম কর্তৃক যেসব প্রবন্ধ রচিত হয়েছে তা নিঃসন্দেহে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, এর অধিকাংশই হচ্ছে প্রাচ্যবিদদের রচিত বিভিন্ন প্রবন্ধের হুবহু অনুবাদ। আর কিছু প্রবন্ধ এমনও আছে, যা অপরিপক্ক আলেম কর্তৃক রচিত, যাদের সরাসরি ইসলামী মাসাদির থেকে জ্ঞান অর্জনের যোগ্যতা নেই। যারা বিভিন্ন অনুবাদ ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কিতাবগুলো সামনে রেখে লিখে থাকেন। এ জাতীয় রচনা তথ্যের দিক থেকেও গ্রহণযোগ্য নয়, দ্বীন শিখা তো পরের কথা।

মাওলানা ওমর আলী রাহ.-এর একটি বিশেষ কীর্তি এই যে, যখন তিনি মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভীসহ অন্যান্য মুহাক্কিক আলেমের সোহবত লাভ করেন আর তাঁর কাছে প্রাচ্যবিদদের ইসলাম-বিদ্বেষ স্পষ্ট হয় সাথে এই রচনার অন্যান্য ত্রুটি-বিচ্যুতির প্রতিও তার দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় তখন তিনি অনেক মেহনত করে এই মর্মে রেজুলেশন পাশ করিয়ে নেন যে, রচনাটি নতুনভাবে সংশোধন করা হবে। এর জন্য একটি‘সম্পাদনা বোর্ড’ও গঠন করা হয়।

আমার জানা মতে, এই বোর্ড এখনও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যদি তাঁরা গভীরভাবে পুনঃসম্পাদনা করেন এবং সে অনুযায়ী সংকলনটি পুনঃপ্রকাশ করা হয় তাহলে ইনশাআল্লাহ রচনাটির অবস্থাআগের চেয়ে ভালো হবে বলে আশা করা যায়।

মাওলানা ইসহাক ওবায়দী সাহেবও এই রচনাটিকে নির্ভরযোগ্য বলেননি; বরং তাঁর উদ্দেশ্য হল বাংলা ভাষা-যার রচনা-ভাণ্ডার ‘ইলমী’ কাজ থেকে প্রায় শূন্য-সে ভাষায় এই বিরাট সংকলন তৈরি হওয়াও কম কথা নয়?

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৬২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

করআন মজীদ তিলাওয়াতের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র নাম...

প্রশ্ন

করআন মজীদ তিলাওয়াতের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র নাম এলে তিলাওয়াত বন্ধ করে তাৎক্ষণিক দরূদ পড়তে হবে কি না?

উত্তর

উত্তম হল তিলাওয়াত বন্ধ না করা এবং তিলাওয়াত শেষে দরূদ পড়া। কারণ পরে পড়লেও দরূদ পড়ার হক আদায় হয়ে যায়। এছাড়া তিলাওয়াতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম এলে দরূদ পড়া জরুরি নয়।

রদ্দুল মুহতার ১/৫১৯; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/২২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৫৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

জনৈক ব্যক্তি বলেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শরীর ও...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি বলেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শরীর ও ঘাম থেকে কুদরতিভাবে সুগন্ধি বের হত। আর তিনি যে পথে চলতেন সে পথ সুরভিত হয়ে যেত। জানতে চাই, এ কথাটি সঠিক কি না?

উত্তর

হ্যাঁ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর একটি বৈশিষ্ট্য এই ছিল যে, তাঁর শরীর মুবারক ও ঘাম অত্যন্ত সুরভিপূর্ণ ছিল। এ বিষয়ে কয়েকটি হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল।

হযরত আনাস রা. বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘ্রাণ মেশক-আম্বরের সুঘ্রাণ থেকে অধিক সুবাসিত পেয়েছি। (সহীহ মুসলিম ২/২৫৭; সহীহ বুখারী ১/৫০৩; সুনানে দারেমী ১/৩৪)

হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে সুলাইম রা.-এর ঘরে (দুপুর বেলা) ঘুমালেন। উম্মে সুলাইম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘাম নিয়ে শিশিতে সংরক্ষণ করলেন এবং ঘরের সুগন্ধির সাথে মিশিয়ে রাখলেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগ্রত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, কী করছ? তিনি বললেন, আপনার ঘাম আমাদের আতরের সাথে মিশিয়ে রাখছি। কেননা, তা সকল আতরের চেয়ে অধিক সুবাসিত। (সহীহ মুসলিম ২/২৫৭)

হযরত জাবির রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ঘাম এত সুবাসিত ছিল যে, তিনি কোনো পথ অতিক্রম করার পর অন্য কোনো ব্যক্তি যদি ওই পথ অতিক্রম করত তাহলে সে বুঝতে পারত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই পথ অতিক্রম করেছেন।-সুনানে দারেমী ১/৩৪; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ১৪০৫৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৩৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

গ্রামদেশে একটি কথা বেশ প্রসিদ্ধ যে, পুরো পৃথিবী একটি ষাঁড়ের...

প্রশ্ন

গ্রামদেশে একটি কথা বেশ প্রসিদ্ধ যে, পুরো পৃথিবী একটি ষাঁড়ের শিংয়ের উপর অবসি'ত। ষাঁড় যখন শিং নাড়া দেয় তখন পৃথিবীতে ভূমিকম্প হয়। এটা নাকি হাদীস। আমাদের দেশের কোনো কোনো বক্তা খুব মুখরোচকভাবে বলে থাকেন। জানতে চাই তা সহীহ কি না?

উত্তর

এমন কথা কোনো হাদীসে নেই। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আল্লামা ইবনুল কাইয়েম রাহ. এবং আবু হাইয়ান রাহ. একে ভিত্তিহীন ও জাল বলেছেন।

-আলমানারুল মুনীফ পৃ. ৭৮; আলইসরাঈলিয়্যাত ওয়ালমাওযূআত ৩০৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমদের এলাকায় প্রচলন রয়েছে যে, বিয়ে উপলক্ষে কনের ইজিন নেওয়ার...

প্রশ্ন

আমদের এলাকায় প্রচলন রয়েছে যে, বিয়ে উপলক্ষে কনের ইজিন নেওয়ার সময় কনের দু’জন কফিল এবং বরের দু’জন কফিল উপস্থিত থাকতে হয়। তাদের উপসি'তিতে কোনো আলেম সাহেব খুতবা পড়ে নিয়মানুযায়ী ইজিন নেন। বরপক্ষে কফিলের উপস্থিতির কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল, সাক্ষী স্বরূপ তাদের উপস্থিতি জরুরি।

জানার বিষয় এই যে, কনের ইজিন নেওয়ার সময় বরপক্ষের উকিলের সাক্ষীস্বরূপ উপসি'তি শরীয়তসম্মত কি না? ইজিন নেওয়ার সময় বরপক্ষের সাক্ষীর থাকা জরুরি কি না।

উত্তর

মেয়ে থেকে বিয়ের ইজিন তথা অনুমতি নেওয়ার জন্য সাক্ষী থাকা অপরিহার্য নয়। একজন ব্যক্তিও মেয়ে থেকে অনুমতি নিয়ে এসে তার পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব বা কবুল করতে পারে। অবশ্য এক্ষেত্রে সাক্ষী রাখা জরুরি নয়, তবে সাক্ষী থাকা ভালো। গায়রে মাহরাম পুরুষদের জন্য সরাসরি মেয়ে থেকে অনুমতি (ইজিন) নিতে যাওয়া বৈধ হবে না। আর ইজনের জন্য পাত্র পক্ষ থাকতেই হবে এমন কোনে আবশ্যকতা নেই।

-আলবাহরুর রায়েক ৩/৮২; রদ্দুল মুহতার ৩/২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৩০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আড়তে যে সকল মালামাল বিক্রি করা হয় এর বিনিময়ে আড়তদার...

প্রশ্ন

আড়তে যে সকল মালামাল বিক্রি করা হয় এর বিনিময়ে আড়তদার ক্রেতা বিক্রেতা উভয় থেকে কমিশন গ্রহণ করে থাকে। এটা বৈধ কি না জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

আড়তের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য আড়তদার কর্তৃক ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় থেকে কমিশন নেওয়া নাজায়েয নয়। কেননা তারা উভয়ই আড়ত ব্যবহার করছে। তবে কমিশনের পরিমাণ যুক্তিসঙ্গত হতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/১১,২৫; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪১৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

লোকমুখে শোনা যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিদরাতুল...

প্রশ্ন

লোকমুখে শোনা যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত পৌঁছলেন তখন হযরত জিবরাঈল আ. এই বলে সামনে অগ্রসর হতে অক্ষমতা প্রকাশ করেন যে, আমি আর এক কদম অথবা আর এক চুল পরিমাণ অগ্রসর হলে আমার ডানাসমূহ জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে-একথা সহীহ কি না?

উত্তর

একথা ভিত্তিহীন। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আবদুল্লাহ ইবনে সিদ্দীক আলগুমারী রাহ. বলেন, ‘‘এরূপ ধারণা করা নিকৃষ্টতম বাড়াবাড়ি যে, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছলেন তখন জিবরাঈল আ. পিছনে সরে গেলেন এবং বললেন, যদি আমি আর এক পা অগ্রসর হই তাহলে জ্বলে যাব। এটি একটি মিথ্যা ও বাজে কথা। বস্তুত সে রাতে জিবরাঈল আ. এক মুহূর্তের জন্যও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গ ত্যাগ করেননি। সিদরাতুল মুনতাহা এবং অন্যান্য স্থানেও তিনি তাঁর সাথেই ছিলেন।

শরহুল মাওয়াহেবে এই বর্ণনা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এগুলো নিঃসন্দেহে মিথ্যা।

শরহুল মাওয়াহিব ৮/২০০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪১০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

অনেকে বড়শিতে কেঁচো বা ছোট মাছ বিদ্ধ করে মাছ শিকার...

প্রশ্ন

অনেকে বড়শিতে কেঁচো বা ছোট মাছ বিদ্ধ করে মাছ শিকার করেন। এটা জায়েয আছে কি না?

উত্তর

বড়শিতে মাছ বা কেঁচো গাঁথার আগে তা মেরে নিলে তা দ্বারা মাছ ধরা জায়েয হবে। কিন্তু জ্যান্ত মাছ বা কেঁচো বড়শিতে গেঁথে মাছ শিকার করা জায়েয নয়।

সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৫১৩; সহীহ মুসলিম হাদীস : ৫০১৭; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৪/৫৪০; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/২৮৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪০৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

অনেককে বলতে শোনা যায় যে, ইমাম সাহেব রুকু থেকে উঠার...

প্রশ্ন

অনেককে বলতে শোনা যায় যে, ইমাম সাহেব রুকু থেকে উঠার সময় শুধু سمع الله لمن حمده বলবেন। ربنا لك الحمد বলবেন না। এ কথাটি কি সঠিক?

উত্তর

ইমাম সাহেব রুকু থেকে দাঁড়িয়ে ربنا لك الحمد বলবে কি না-এ বিষয়ে একাধিক মত রয়েছে। তবে অগ্রগণ্য মত অনুযায়ী ইমামের জন্যও ربنا لك الحمد বলা উত্তম।

সহীহ বুখারী ১/১০৯; ফাতহুল কাদীর ১/২৬০; আলবাহরুর রায়েক ১/৩১৬; আসসিআয়াহ ২/১৮৬; সহীহ মুসলিম ১/১৯০; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৩/৪৪৩, হাদীস : ২৫৬২; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৩১৯; ফাতহুল বারী ২/৩৩১; মাআরিফুস সুনান ৩/২৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫৩৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৯০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

১৯৬১ সালে রচিত পারিবারিক আইনে দাদা থাকা অবস্থায় বাবা মারা...

প্রশ্ন

১৯৬১ সালে রচিত পারিবারিক আইনে দাদা থাকা অবস্থায় বাবা মারা গেলে নাতী চাচাদের সাথে সম্পত্তি পাবে। প্রশ্ন হল সরকারী এ আইনের বলে নাতীর জন্য সম্পত্তি দাবি করা বৈধ হবে কি?

উত্তর

মোটেই না। তবে ওয়ারিশগণ স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে যদি কিছু দেয় তবে তা নেওয়া জায়েয হবে।

সূরা নিসা : ৭; আসসিরাজী ফিলমিরাছ পৃ. ২২; সহীহ বুখারী ২/৯৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৮৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

নামাযের প্রথম সারিতে দাঁড়ানো ব্যক্তি সম্পর্কে হাদীস শরীফে বিভিন্ন ফযিলত...

প্রশ্ন

নামাযের প্রথম সারিতে দাঁড়ানো ব্যক্তি সম্পর্কে হাদীস শরীফে বিভিন্ন ফযিলত বর্ণিত হয়েছে। প্রশ্ন হল কোনো নেতৃস্থানীয় লোক যেমন মন্ত্রী, এমপি বা অন্য কেউ যদি সামনের কাতারে দাঁড়ানো লোককে সরিয়ে দেয় এবং সে স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সামনের কাতার থেকে সরে আসে তাহলে তাদের দু’জনের মধ্য থেকে বর্ণিত সওয়াবের অধিকারী কে হবে?

উত্তর

এক্ষেত্রে সামনে উপবিষ্ট মুসল্লীর সম্মতি থাকলে কিংবা সে নিজেই জায়গা ছেড়ে দিলে দু’জনই সামনের কাতারের সওয়াব পাবে। আর পূর্ব থেকে বসে থাকা মুসল্লীর সম্মতি ছাড়া তাকে সরিয়ে দিয়ে অন্য কেউ বসলে পরবর্তী ব্যক্তি সামনের কাতারের সওয়াব পাবে না; বরং অন্যের হক নষ্ট করার জন্য গুনাহগার হবে।

রদ্দুল মুহতার ১/৫৬৯; ইলাউস সুনান ৪/৩৬৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৮৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

বিশ বছর পূর্বে বাড়ি বানানোর উদ্দেশ্যে ঢাকা শহরে একটি জমি...

প্রশ্ন

বিশ বছর পূর্বে বাড়ি বানানোর উদ্দেশ্যে ঢাকা শহরে একটি জমি ক্রয় করি। এখন আমি ঐ জমিতে বাড়ি বানানোর কাজ শুরু করেছি। কিন্তু এক স্থানে গর্ত করতে গিয়ে মাটির নিচে একটি কঙ্কাল পাওয়া গেল। জমি-বিক্রেতাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলল, আমার জানামতে এখানে কোনো কবর ছিল না। যা দ্বারা বুঝা যায় এটি অনেক পুরাতন কবর।

আমার জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় শরীয়তের দৃষ্টিতে আমার কী করণীয়? উল্লেখ্য, ঐ স্থানে আমার বাড়ি বানানো খুবই প্রয়োজন।

উত্তর

প্রশ্নোল্লিখিত অবস্থায় আপনি ঐ কঙ্কাল উঠিয়ে অন্যত্র দাফন করে দিতে পারেন। অথবা সেখানেও মাটির নিচে পুঁতে রেখে সমান করে দিয়ে উপরে বাড়ি নির্মাণ করতে পারবেন।

পারবেন।-ফাতহুল কাদীর ২/১০১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৭১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৭৫; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৮০; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৮২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের এলাকায় প্রসিদ্ধ আছে যে, কারো বাড়িতে পেঁচা বসলে সেখানে...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় প্রসিদ্ধ আছে যে, কারো বাড়িতে পেঁচা বসলে সেখানে কোনো বিপদ হবে। পেঁচাকে অমঙ্গলজনক মনে করা হয়। জানতে চাই ঐ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় কী?

উত্তর

আপনাদের এলাকার ঐ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পেঁচা অন্যান্য পাখির মতোই একটি পাখি। এর সাথে কোনো অনিষ্ট জড়িত নেই এবং এটি কোনো অমঙ্গলের নিদর্শনও নয়। একে অমঙ্গলজনক মনে করা সম্পূর্ণ ভুল। ইসলামপূর্ব জাহেলী যুগেও একে অমঙ্গলজনক মনে করা হত। হাদীস শরীফে এই ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে খণ্ডন করা হয়েছে এবং এই ধারণাকে শিরকী বলে অভিহিত করা হয়েছে। তাই তা পরিহার করা কর্তব্য।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৫২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

ফুল সম্পর্কে জ্ঞানী-গুণীদের অনেক মন্তব্য পড়েছি, শুনেছি। নিশ্চয়ই নবী সাল্লাল্লাহু...

প্রশ্ন

ফুল সম্পর্কে জ্ঞানী-গুণীদের অনেক মন্তব্য পড়েছি, শুনেছি। নিশ্চয়ই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও ফুল সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। আমি এ বিষয়ে একটি সহীহ হাদীস জানতে চাই।

উত্তর

হ্যাঁ, ফুল নিয়ে নবীজীর অনেক কথা হাদীসের গ্রন্থসমূহে রয়েছে। তন্মধ্যে একটি সহীহ হাদীস হল, হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কাউকে যদি ফুল পেশ করা হয় তাহলে ফিরিয়ে দিও না। কারণ ফুল বহন করতে সহজ এবং এতে সুঘ্রাণ রয়েছে।’

সহীহ মুসলিম হাদীস ২২৫৩; ফাতহুল বারী ১০/৩৮৩-৩৮৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৫১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

একটি সীরাত-গ্রন্থের শুরুর দিকে লেখা হয়েছে, ‘প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি...

প্রশ্ন

একটি সীরাত-গ্রন্থের শুরুর দিকে লেখা হয়েছে, ‘প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যা হযরত রূকাইয়্যা রা. নিঃসন্তান অবস্থায় দুনিয়া থেকে বিদায় নেন।’ ঐ গ্রন্থেই শেষের দিকে লেখা হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে উসমান নামে রূকাইয়্যা রা.-এর একজন পুত্রসন্তান ছিল। জানতে চাই, কোন তথ্যটি সঠিক?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত গ্রন্থের দ্বিতীয় বক্তব্যই সঠিক। প্রথম বক্তব্যটি লেখা হয়েছে একটি দুর্বল বর্ণনার ভিত্তিতে, যা ঠিক নয়।

আলইসতিযকার ৪/১৮৪০; আলইসাবা ৭/৬৪৯; আলবিদায়া ওয়াননিহায়া ৮/২৪২; সীরাতুন্নবী আল্লামা শীবলী নুমানী ২/২৭০; তারীখুল ইসলাম আল্লামা যাহাবী ৩/৬৭৭; আলমুনতাযাম ৩/১৩৮; উয়ূনুল আছার ২/৩৮০; আলকামিল ফিত তারীখ ২/১৭৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৪৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের দেশে কোনো কোনো পীরের সামনে সিজদা করতে দেখা যায়।...

প্রশ্ন

আমাদের দেশে কোনো কোনো পীরের সামনে সিজদা করতে দেখা যায়। পীর গদ্দীনাশীন আর মুরীদ তাকে সামনে নিয়ে যমিনের উপর সিজদাবনত। এই দৃশ্য আমাদের দেশের এক পীরের আস্তানায় দেখতে পেলাম। এটা দেখে আমার মনে খুব ঘৃণার উদ্রেক হয়েছে। তাই আমি সেখান থেকে চলে আসি। জানতে চাই, যে সিজদা করেছে তার ঈমান কি নষ্ট হয়ে গেছে?

উত্তর

আল্লাহ তাআলা আপনার ঈমানী গায়রত আরো বৃদ্ধি করে দিন। তাদের উক্ত কুফরী আচরণকে ঘৃণা করে সেখান থেকে চলে আসা আপনার ঈমানের দলীল। এরা ছোট দাজ্জাল। সুকৌশলে মানুষের ঈমানকে ধ্বংস করার জন্য প্রতারণার জাল বিছিয়ে রেখেছে। এদের ফাঁদ থেকে আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হেফাযত করুন। আমীন।

সিজদা একমাত্র আল্লাহ তাআলারই হক। কোনো মানুষকে বা কারো মাজারকে কিংবা অন্য কোনো মাখলুককে সিজদা করা সম্পূর্ণ হারাম। যদি ইবাদত-উপাসনার নিয়তে সিজদা করে তাহলে কাফের হয়ে যাবে। যদি আদব ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য করে থাকে তাহলে শুধু এ কারণে সরাসরি কাফের না হলেও সে কুফুরির নিকটবর্তী হয়ে যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই কর্মের সঙ্গে এমন কিছু আকীদা-বিশ্বাসও থাকে, যা তাকে ঈমান থেকে খারিজ করে দেয়। তাই এ থেকে খালিস দিলে তওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।

রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮৩; ইমদাদুস সায়েল পৃ. ১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬৮; ইমদাদুল মুফতীন পৃ. ১৬৭-১৭০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

নামাযের মধ্যে কতটুকু অংশ জোরের জায়গায় আস্তে বা আস্তের জায়গায়...

প্রশ্ন

নামাযের মধ্যে কতটুকু অংশ জোরের জায়গায় আস্তে বা আস্তের জায়গায় জোরে পড়লে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে?

উত্তর

ছোট তিন আয়াত বা বড় এক আয়াত পরিমাণ আস্তে পড়ার স্থানে জোরে বা জোরে পড়ার স্থানে আস্তে তিলাওয়াত করলে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।

তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১৯৪; ফাতহুল কাদীর ১/৪৪১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

বিয়েতে যে সাক্ষী রাখা হয় তার জন্য কী কী শর্ত...

প্রশ্ন

বিয়েতে যে সাক্ষী রাখা হয় তার জন্য কী কী শর্ত রয়েছে? একজন বললেন, মেয়ের মাহরামদের থেকে একজনকে সাক্ষী রাখা আবশ্যক। আরেক ব্যক্তি বললেন, সাক্ষী একজন ছেলের পক্ষ থেকে একজন মেয়ের পক্ষ থেকে রাখতে হয়। উক্ত শর্তগুলো কি সঠিক? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য সাক্ষীর মাঝে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা আবশ্যক।

ক) জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া খ) প্রাপ্তবয়ষ্ক হওয়া গ) মুসলমান হওয়া ঘ) শ্রবণশক্তিসম্পন্ন হওয়া ঙ) দুইজন পুরুষ, অন্যথায় একজন পুরুষ ও দুইজন নারী হওয়া ও চ) উভয় সাক্ষী একত্রে একই বৈঠকে সরাসরি ইজাব-কবুল শ্রবণ করা।

বর বা কনেপক্ষ থেকে সাক্ষী থাকতেই হবে-এটা আবশ্যকীয় নয়। এ ধরনের শর্তের কোনো শরয়ী ভিত্তি নেই। সাক্ষী বর ও কনেপক্ষ থেকে না হয়ে অন্য কেউ হতে পারে।

মাবসূত সারাখসী ৫/৩১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৭; রদ্দুল মুহতার ৩/২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩২৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমি যেখানে থাকি সেখানে কয়েকটি অমুসলিম পরিবার রয়েছে। তাদের কেউ...

প্রশ্ন

আমি যেখানে থাকি সেখানে কয়েকটি অমুসলিম পরিবার রয়েছে। তাদের কেউ অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া যাবে কি? এক্ষেত্রে শরয়ী কোনো বাধা আছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

অমুসলিম প্রতিবেশী বা আত্মীয়দের কেউ অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাওয়া, খোঁজখবর নেওয়া শুধু জায়েযই নয়; বরং ইসলামের নির্দেশ ও প্রতিবেশীর হক হিসাবে গণ্য। নিষিদ্ধ হল অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়া, বা এমনভাবে মেলা-মেশা করা যে, নিজের দ্বীনের ক্ষতি হয়। তবে সেখানে গিয়ে নাজায়েয কোনো কিছুর সম্মুখীন হতে হলে যাবে না। এক্ষেত্রে দূর থেকেই খোঁজখবর নিবে। প্রয়োজনে সাহায্য-সহযোগিতাও করতে পারবে।

মুসনাদে আহমদ ৩/১৭৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৭১; হেদায়া (ফাতহুল কাদীর) ৮/৪৯৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৩৫; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮৮ আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৮৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩০৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার এক বন্ধু বলেছে যে, আমাকে একটি প্লট কিনে দে।...

প্রশ্ন

আমার এক বন্ধু বলেছে যে, আমাকে একটি প্লট কিনে দে। আমি তাকে আমার এলাকার একটি প্লট দেখিয়েছি। তা সে পছন্দ করেছে এবং দর-দাম ঠিক করে বায়না করেছে। তখন আমি তাকে বলেছি যে, তোকে আমি জায়গা কিনে দিলাম তুই আমাকে চার রুমের বিদ্যুত সরবরাহের ক্ষমতা ধারণ করে এমন একটি আইপিএস কিনে দে। সে বলেছে যে, জায়গা বুঝে নেই তারপর কিনে দিব। তো সে আমাকে একটি আইপিএস দিয়েছে।

জানালে কৃতজ্ঞ হব যে, আমার জন্য কি তা নেওয়া ঠিক হয়েছে? আমি কি তা ব্যবহার করতে পারি?

উত্তর

হ্যাঁ, আপনার বন্ধু সন্তুষ্ট চিত্তে দিলে তা নেওয়া বৈধ হয়েছে। এক্ষেত্রে এটি আপনার কাজের পারিশ্রমিক গণ্য হবে। উল্লেখ্য, এ ধরনের কারবারে পারিশ্রমিক গ্রহণের ইচ্ছা থাকলে তা কাজের আগেই নির্ধারণ করে নেওয়া জরুরি। যেন পরবর্তীতে এ নিয়ে দ্বন্দ না হয়।

হ্যাঁ, আপনার বন্ধু সন্তুষ্ট চিত্তে দিলে তা নেওয়া বৈধ হয়েছে। এক্ষেত্রে এটি আপনার কাজের পারিশ্রমিক গণ্য হবে। উল্লেখ্য, এ ধরনের কারবারে পারিশ্রমিক গ্রহণের ইচ্ছা থাকলে তা কাজের আগেই নির্ধারণ করে নেওয়া জরুরি। যেন পরবর্তীতে এ নিয়ে দ্বন্দ না হয়।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩০৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

একবার অস্ত্র-যাদুঘরের সামনে সিগনালের সময় এক পানিওয়ালার কাছ থেকে এক...

প্রশ্ন

একবার অস্ত্র-যাদুঘরের সামনে সিগনালের সময় এক পানিওয়ালার কাছ থেকে এক বোতল পানি কিনেছিলাম। কিন্তু মূল্য পরিশোধের আগেই গাড়ি ছেড়ে দেয়। ফলে তাকে পানির মূল্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। সিগনাল পার হয়ে গাড়ি থামিয়ে তাকে খুঁজেছি কিন্তু তাকে পাইনি। এখনও তাকে খুঁজি তবে ক্ষণিকের দেখায় তার চেহারাও আমার মনে নেই, হয়তবা আমার চেহারাও তার মনে নেই। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু বিক্রেতার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাই আপনার করণীয় হল ঐ পানির মূল্য বিক্রেতার পক্ষ থেকে ছদকা করে দেওয়া।

আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৮৩; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ১০/১৩৯; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১০/৬৬৬; মওসূআহ, ইবনে মাসউদ রা. পৃ. ৪৪১; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৫৩, ১৫৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/২৭১, ৩১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৯৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

গ্রামে সাধারণত বাজার-হাট দূরে থাকে। তাই প্রয়োজনের সময় বাড়ির মহিলারা...

প্রশ্ন

গ্রামে সাধারণত বাজার-হাট দূরে থাকে। তাই প্রয়োজনের সময় বাড়ির মহিলারা একে অপরের কাছ থেকে আলু, পেয়াজ, বেগুন ইত্যাদি গণনার হিসাবে ধার নেয়। পরে নিজেদের বাজার এলে তা গণনা করে সমপরিমাণ পরিশোধ করে দেয়। এক্ষেত্রে সাধারণত ঐ বস'গুলো কিছু ছোট বড় হয়েই থাকে, তবে এর কারণে তাদের মাঝে কোনো ঝগড়া বা মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় না। এখন প্রশ্ন হল, এইভাবে করজ নেওয়া-দেওয়া জায়েয কি না?

উত্তর

কম-বেশির শর্ত না করে এমন লেনদেন করা জায়েয। তবে আগে শর্ত না করে সম্ভব হলে আদায় করার সময় কিছু বেশি দিয়ে দেওয়া ভালো।

আলমুগনী ইবনে কুদামা ৬/৪৩৫; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১১/৫৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৮৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০২; কিতাবুল মাজমূ’ ১২/২৬৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৮৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

বাম হাতে পানি পান করার হুকুম কী? যদি ডান হাতে...

প্রশ্ন

বাম হাতে পানি পান করার হুকুম কী? যদি ডান হাতে ওজর থাকে তখন কিভাবে পান করবে?

উত্তর

বিনা ওজরে বাম হাতে পানি পান করা মাকরূহ। একাধিক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাম হাতে পানাহার করতে নিষেধ করেছেন এবং ইরশাদ করেছেন যে, শয়তান বাম হাতে পানাহার করে। তবে ডান হাত ব্যবহারে অক্ষম হলে বাম হাতেও পানাহার করা যাবে।

সহীহ মুসলিম ২/১৭২; শরহে মুসলিম, ইমাম নববী ২/১৭২; ফাতহুল বারী ৯/৪৩৩; আততামহীদ, ইবনে আবদুল বার ১১/১১১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৮০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের দেশে বিভিন্ন ধাতুর তৈরি নানা প্রকারের মূর্তি-ভাষ্কর্য ইত্যাদি পাওয়া...

প্রশ্ন

আমাদের দেশে বিভিন্ন ধাতুর তৈরি নানা প্রকারের মূর্তি-ভাষ্কর্য ইত্যাদি পাওয়া যায়। যা বাসা-বাড়িতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাজিয়ে রাখা হয়। প্রশ্ন হল, এসব প্রতিকৃতি ভাষ্কর্য ক্রয় করা ও সাজিয়ে রাখা বৈধ হবে কি?

উত্তর

যে কোনো প্রাণীর মূর্তি, প্রতিকৃতি, ভাষ্কর্য ইত্যাদি তৈরি করা হারাম। এগুলো ক্রয়-বিক্রয় করা, প্রদর্শনী করা বা ঘরে দৃশ্যমান অবস্থায় সাজিয়ে রাখা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে। সুতরাং এসব থেকে বিরত থাকা জরুরি।

সূরা মায়েদা : ৯০; সহীহ বুখারী ২/৮৮০; ফাতহুল বারী ১০/৩৯৭; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৪/১৫৫; উমদাতুল কারী ২২/৭০; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২১৫, ৫/৩৫৯; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭; আলমাদখাল, ইবনুল হাজ্জ ১/২৭৩; আলমুগনী ইবনে কুদামা ১০/২০২; রদ্দুল মুহতার ১/৬৪৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৭৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার এক বন্ধু আছে। সে মেঘমালা, গাছপালা, নদী-নালা ইত্যাদি প্রাকৃতিক...

প্রশ্ন

আমার এক বন্ধু আছে। সে মেঘমালা, গাছপালা, নদী-নালা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দৃশ্য আর্ট করে। এমনিভাবে বিভিন্ন আল্পনা ও নকশা তৈরি করে। তবে সে প্রাণীর ছবি আঁকে না। জানার বিষয় এই যে, প্রাণীর ছবিমুক্ত এ ধরনের চিত্রাঙ্কন করা বা এগুলো ঘরে সাজিয়ে রাখার শরঈ বিধান কী?

উত্তর

প্রাণীর ছবি অঙ্কন করা নাজায়েয। কিন্তু গাছ-তরুলতা ও প্রাণীর ছবিমুক্ত প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলি আঁকা নাজায়েয নয়। এ ধরনের চিত্র ঘরে সাজিয়ে রাখাও বৈধ।

সহীহ মুসলিম ২/২০২; শরহে মুসলিম নববী ২/২০১; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৪/১৬৫; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ১০/৪০০, হাদীস ১৯৪৯৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩০৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭-২৮; আল মুহীতুল বুরহানী ৮/৮৮; আলমুগনী ইবনে কুদামা ১০/১৯৯, ২০১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৪৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৭১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের এলাকার জনৈক ব্যক্তি তার ছেলের নাম ‘আবদুন নবী’ রেখেছে।...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকার জনৈক ব্যক্তি তার ছেলের নাম ‘আবদুন নবী’ রেখেছে। জানতে চাই, এই নাম রাখা বৈধ কি না? ‘নবীর বান্দা’ অর্থের কারণে ঈমান নষ্ট হবে কি না?

উত্তর

‘আবদুন নবী’ নাম রাখা জায়েয নয়। হাদীস শরীফে এ ধরনের নাম রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। ‘আবদ’ অর্থ বান্দা গোলাম। মানুষ আল্লাহর বান্দা, রাসূলের নয়। আল্লাহ তাআলার নামের শুরুতেই কেবল ‘আবদ’ সংযোজন করে নাম রাখা যায়। আবদুল্লাহ, আবদুর রহমান, আবদুল করীম ইত্যাদি।

আর আবদ শব্দ যেহেতু অনুগামী অর্থেও ব্যবহৃত হয় তাই এ ধরনের ব্যাখ্যার অবকাশ থাকার কারণে উক্ত নাম রাখা দ্বারা ঈমান নষ্ট হবে না।

মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১৩/২৪৩; তুহফাতুল মওদুদ পৃ. ১০০; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬২; রদ্দুল মুহতার ৬/৪১৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

...

প্রশ্ন

...

উত্তর

শেয়ার সংক্রান্ত আপনার প্রশ্নটি স্পষ্ট নয়। আপনি ফোনে অথবা সরাসরি সাক্ষাতে মাসআলা জেনে নিতে পারেন।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৫৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের বাড়িতে একটি পিতলের গ্লাস আছে। আমরা তাতে পানি পান...

প্রশ্ন

আমাদের বাড়িতে একটি পিতলের গ্লাস আছে। আমরা তাতে পানি পান করি। কিছু দিন আগে একটি বইয়ে পেলাম যে, পিতলের পাত্রে পানি পান করা নিষেধ। এরপর থেকে আমি ঐ গ্লাসে পানি পান করি না। এ ব্যাপারে সঠিক মাসআলা জানতে চাই।

উত্তর

পিতলের পাত্রে পানাহার করা জায়েয আছে। তাই পিতলের ঐ গ্লাসটি ব্যবহার করতে পারবেন।

সহীহ বুখারী ১/৩২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৪৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

৫/৬ বছর ধরে একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। তা হল, জরায়ু...

প্রশ্ন

৫/৬ বছর ধরে একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। তা হল, জরায়ু বের হয়ে যায়। সন্তান গর্ভে থাকাকালীন সমস্যাটা বাড়তে থাকে। বৃদ্ধ বয়সে সমস্যাটা আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ...

উত্তর

আপনার প্রশ্নের উত্তর সরাসরি ফতোয়া বিভাগে যোগাযোগ করে কিংবা ফোনে জেনে নিতে পারেন।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৪৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কাবা গৃহ পুনঃনির্মাণের সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বয়স...

প্রশ্ন

কাবা গৃহ পুনঃনির্মাণের সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বয়স কত ছিল? হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের বিষয়ে সৃষ্ট বিবাদ কীভাবে নিরসন হল? এর পিছনে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভূমিকা কী ছিল?

উত্তর

কাবা গৃহ পুনঃনির্মাণের সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বয়স ছিল ৩৫ বছর। হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের বিষয়ে সৃষ্ট বিবাদ নিরসন কল্পে একটি সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত হয় যে, আগামীকাল যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম কাবাঘরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে সেই এ ব্যাপারে ফয়সালা পেশ করবে। তার ফয়সালাকে সকলে খোদায়ী ফয়সালা হিসেবে মেনে নিবে। আল্লাহ তাআলার কুদরতে পরের দিন সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করলেন। তাকে দেখে সকলে সমবেত কণ্ঠে বলে উঠল এই যে আমাদের প্রিয় ‘আল আমীন’! আমরা সকলে তার প্রতি সন্তুষ্ট। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে স্বহস্তে পাথরটি চাদরের উপর রেখে দিলেন। এরপর প্রত্যেক গোত্রের প্রতিনিধিকে বললেন, তারা যেন প্রত্যেকে চাদরের এক প্রান্ত ধরে পাথরটি দেয়ালের কাছে নিয়ে যায়। তারা যখন নিয়ে গেল তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বহস্তে পাথরটি উঠিয়ে যথাস্থানে স্থাপন করলেন।

আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ২/২৬৩; আলকামিল ফিততারীখ ২/৪২, ৪৫; তারীখুল ইসলাম যাহাবী ১/৫৩-৫৪; আলমুনতাযাম ফী তারীখিল মুলূকি ওয়ালউমাম ইবনে জাওযী ২/৩২১, ৩২৪; সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ২/১৭২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৪১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

জনৈক ব্যক্তি হালাল-হারাম উভয় ধরনের সম্পদ দ্বারা একটি ঘর তৈরি...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি হালাল-হারাম উভয় ধরনের সম্পদ দ্বারা একটি ঘর তৈরি করেছে এবং এতে হারাম মালের পরিমাণ কম। জানতে চাই, সে ঘর ব্যবহার করা শরীয়তসম্মত কি না? শরীয়তসম্মত না হলে জায়েয হওয়ার কোনো পন্থা আছে কি?

উত্তর

হারাম মাল অল্প হোক বা বেশি তা ভোগ করা যাবে না। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঘরটি তৈরিতে যেহেতু কম হলেও হারাম মালের মিশ্রণ রয়েছে; তাই পূর্ণ হালাল উপায়ে উপকৃত হতে চাইলে যে পরিমাণ হারাম মাল ব্যয় করা হয়েছে তার মালিক জানা থাকলে তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। আর মালিক জানা না থাকলে তার পক্ষ হতে ঐ পরিমাণ অর্থ সদকা করে দিতে হবে। এ পন্থা অবলম্বন করলে ঐ ঘর থেকে উপকৃত হওয়া বৈধ হবে।

মাবসূত সারাখসী ১০/১৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪২; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯২; হাশিয়া তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৯২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৩৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

দাড়ি এক মুষ্ঠি রাখা ওয়াজিব। তা কি চার আঙ্গুল পরিমাণ...

প্রশ্ন

দাড়ি এক মুষ্ঠি রাখা ওয়াজিব। তা কি চার আঙ্গুল পরিমাণ রাখলেই যথেষ্ট কি না? কেউ বলেন, পাঁচ আঙ্গুলে এক মুষ্ঠি। তাই পাঁচ আঙ্গুল পরিমাণ লম্বা হতে হবে। এখন এর শরয়ী সমাধান কী? উত্তর দিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

উত্তর

মুষ্ঠি আর চার আঙ্গুল এক কথা নয়। হাতের মুষ্ঠি চার আঙ্গুলের চেয়ে লম্বা। হাদীসে মুষ্ঠি দাড়ির অতিরিক্ত কাটার কথা আছে। তাই থুতনির নিচ থেকে দাড়ি মুঠ করে ধরে মুষ্ঠির নিচের দাড়ি কাটতে পারবে।

সহীহ বুখারী হাদীস : ৫৮৯২; ফাতহুল বারী ১০/৩৬২; উমদাতুল কারী ২২/৪৭; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১৩/১১২; শরহু মুসলিম নববী ১/১২৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪০৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮০, ৮/২০৪; ফাতহুল মুলহিম ১/৪২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২১৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কাফেরদের সন্তান যদি নাবালেগ অবস্থায় মারা যায় তাহলে তারা জান্নাতে...

প্রশ্ন

কাফেরদের সন্তান যদি নাবালেগ অবস্থায় মারা যায় তাহলে তারা জান্নাতে যাবে না জাহান্নামে? এ বিষয়ে আমাদের মাঝে বিতর্ক রয়েছে। দয়া করে বরাতসহ জানাবেন।

উত্তর

কাফের-মুশরিকদের নাবালেগ সন্তান মারা গেলে তাদরে সাথে কি আচরণ করা হবে-এ বিষয়ে উলামায়ে কেরামের বিভিন্ন মত রয়েছে। জান্নাতে যাবে-এ মতটি অধিক শক্তিশালী। তবে এর সঠিক ফয়সালা আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন। এটি এমন কোনো বিষয় নয়, যা জানার উপর শরীয়তের কোনো আমল নির্ভরশীল। তদ্রূপ এটা এমন কোনো আকীদাগত বিষয় নয়, যা জানা জরুরি; বরং এ জাতীয় বিষয় নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া ঠিক নয়। এটা অনর্থক কাজে লিপ্ত হওয়ার অন-র্ভুক্ত।

উমদাতুল কারী ৮/২১২-২১৩, তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৫/৫০২; লামিউদ দারারী ২/১৩৭; রদ্দুল মুহতার ২/১৯২; ফাতাওয়া উসমানী ১/৫২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২১৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কালিমা তাইয়্যিবার সঙ্গে দরূদ পড়া যাবে কি? এ বিষয়ে দুই...

প্রশ্ন

কালিমা তাইয়্যিবার সঙ্গে দরূদ পড়া যাবে কি? এ বিষয়ে দুই ধরনের বক্তব্যই শুনতে পাওয়া যায়।

উত্তর

দরূদ শরীফ কালিমা তাইয়্যিবার অংশ নয়। কালিমা তাইয়্যিবা হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম উচ্চারণ করলে দরূদ পড়তে হয় এই নিয়ম হিসাবে কালিমা তাইয়্যিবার পর দরূদ শরীফ পড়া যাবে। তবে কিছুটা বিরতি দিয়ে পড়বে। যেন দরূদ শরীফ কালিমার অংশ বলে মনে না হয়।

ফাতাওয়া উসমানী ১/৫৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২০০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কোনো ব্যক্তি যদি ফরয গোসলে নাকের ভিতর পানি প্রবেশ না...

প্রশ্ন

কোনো ব্যক্তি যদি ফরয গোসলে নাকের ভিতর পানি প্রবেশ না করিয়ে শুধু আঙ্গুল ভিজিয়ে নাকের ভিতরটা তিনবার মুছে নেয় তাহলে তার গোসল হবে কি এবং নাকের ভিতরে পানি প্রবেশ করানো ও তা পরিষ্কার করার পদ্ধতি কী?

উত্তর

ফরয গোসলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো জরুরি। শুধু ভেজা আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতর মুছে নেওয়া যথেষ্ট নয়। এর দ্বারা নাকে পানি পৌঁছানোর ফরয আদায় হবে না।

নাকের ভিতর পানি পৌঁছানোর উত্তম তরীকা হল, ডান হাতে পানি নিয়ে তা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত টেনে নেওয়া। হাত দিয়েও পানি ভেতরে দেওয়া যেতে পারে। অতঃপর বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতরটা পরিষ্কার করে নেওয়া। যেন কোনো অংশ শুকনা না থেকে যায়। এভাবে তিনবার পানি প্রবেশ করানো।

সুনানে আবু দাউদ ১/১৯; আলবাহরুর রায়েক ১/২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/১০৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৮৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের এলাকায় ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র মিষ্টি আলু অথবা পিয়াজের বিনিময়ে বিক্রি...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র মিষ্টি আলু অথবা পিয়াজের বিনিময়ে বিক্রি হয়। অর্থাৎ এক পাল্লায় ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র রাখা হয় অপর পাল্লায় মিষ্টি আলু অথবা পিয়াজ রেখে পাল্লার দণ্ডি সমান করা হয়। এভাবে মিষ্টি আলু অথবা পিয়াজের বিনিময়ে ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র বিক্রি করা কতটুকু শরীয়তসম্মত?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে ভাঙ্গাচোরার পরিবর্তে আলু বা পিয়াজের লেনদেন বৈধ

হেদায়া ৩/২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের এলাকায়া ব্যভিচারের মাধ্যমে এক সন-ান জন্ম লাভ করে। পরবর্তী...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায়া ব্যভিচারের মাধ্যমে এক সন-ান জন্ম লাভ করে। পরবর্তী ওই ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর সে উত্তরাধিকার সূত্রে মালের দাবি করলে মৃতের মূল ওয়ারিছগণ তাকে অংশ দিতে অস্বীকার করে। এখন আমার জানার বিষয় হল, আসলে কি সে ওই ব্যক্তির পরিত্যাক্ত সম্পদ থেকে কিছু পাবে না? যদি না পায় তাহলে কেন? বিস-ারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

অবৈধ সন-ান ব্যভিচারীর পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে কোনো অংশ পাবে না। কেননা শরীয়ত এক্ষেত্রে বংশ সূত্রের স্বীকৃতি দেয় না। আর বংশ সূত্র ছাড়া মিরাসের অধিকারী হয় না। হাদীস শরীফে এসেছে, ‘অবৈধ সন-ান ব্যভিচারী ব্যক্তি থেকে মিরাস পাবে না এবং ওই ব্যক্তিও ঐ সন-ানের মিরাস পাবে না।’

- জামে তিরমিযী ২/৩৩; মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ১৬/৩২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৫২; মাবসূত সারাখসী ২৯/১৯৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৩৬৪; তাকমিলা আলবাহরুর রায়েক ৮/৫০৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৩২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হাঁচি দেওয়ার পর হাঁচিদাতার জন্য আলহামদুলিল্লাহ বলার হুকুম কী? এবং...

প্রশ্ন

হাঁচি দেওয়ার পর হাঁচিদাতার জন্য আলহামদুলিল্লাহ বলার হুকুম কী? এবং তা কি উচ্চস্বরে বলবে না নিম্নস্বরে?

উত্তর

হাঁচি দেওয়ার পর হাঁচিদাতার জন্য উচ্চ স্বরে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন হাঁচি দেয় তখন সে যেন আলহামদুলিল্লাহ বলে। এবং তার সাথী যেন উত্তরে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলে। যখন তার সাথী ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলবে তখন হাঁচিদাতা যেন উত্তরে ‘ইয়াহদিকুমুল্লাহু ওয়া ইউসলিহু বালাকুম’ বলে।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬২২৪ অন্য হাদীসে এসেছে, ইয়াহইয়া ইবনে আবী কাছির তার এক উস্তাদ থেকে বর্ণনা করেন, হাঁচিদাতার জন্য উচিত হল উচ্চস্বরে আলহামদুলিল্লাহ বলা, যাতে করে আশপাশের লোকেরা তা শুনতে পায়। আর ঐ ব্যক্তির আলহামদুলিল্লাহ বলার পর শ্রোতাদের জন্য জরুরি হল ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১৯৬৮০; কিতাবুল আযকার পৃ. ৪৪১; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৪/২৪৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৪১৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৮৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৩০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

...।

প্রশ্ন

...।

উত্তর

আপনার প্রশ্নের উত্তর সরাসরি কিংবা ফোনে জেনে নিন।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১২৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

হুজুর শব্দ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে খাছ নাকি যে...

প্রশ্ন

হুজুর শব্দ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে খাছ নাকি যে কারো সাথে ব্যবহার করা যাবে? বিস্তারিত প্রমাণাদিসহ জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

বাংলা ভাষায় জনাব, মহাশয় যেমনভাবে সম্মানসূচক শব্দ অনুরূপভাবে হুজুর শব্দটিও ফার্সী, উর্দু ও বাংলাভাষায় একটি সম্মানসূচক শব্দ। যা সাধারণত আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তিন ভাষার অভিধান গ্রন্থগুলো দেখলেই এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায়। যেমন ফার্সী অভিধান গিয়াসুল লুগাতে (পৃ. ১৭৪) দেখুন : ‘‘হুজুর শব্দটির অর্থ হল, উপস্থিত হওয়া। তবে পরিভাষায় এটি বুযুর্গ ব্যক্তিদের সম্মানসূচক সম্বোধনের জন্য ব্যবহার করা হয়।’’ একই কথা উর্দু অভিধান ফীরুযুল লুগাত (পৃ. ৫৭১) এবং বাংলা অভিধান বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (পৃ. ১২১২) ও সংসদ বাংলা অভিধান (পৃ. ৭২৩) এ উল্লেখ করা হয়েছে।

উপরোল্লেখিত অভিধানগুলোর আলোকে একথাই স্পষ্ট হয় যে, হুজুর শব্দটি ফার্সী, উর্দু ও বাংলা ভাষায় নিছক একটি সম্মানসূচক শব্দ। আর এ অর্থেই এই তিন ভাষার অনেক মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্যও এটি ব্যবহার করে থাকে। শরয়ী পরিভাষা হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয় না।

শব্দটি যেহেতু ব্যাপক তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য তা ব্যবহার করা হলে সাধারণত অধিক সম্মান বোঝানোর জন্য এর সাথে আকরাম শব্দ যোগ করে হুজুরে আকরাম বলা হয়।

মোটকথা, হুজুর শব্দটি সম্মানসূচক বটে তবে এটি এমন কোনো শব্দ নয়, যা শুধু রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য ব্যবহৃত হয়। বরং তা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত একটি শব্দ।

-গিয়াসুল লুগাত ১৭৪; ফীরুযুল লুগাত ৫৭১; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ৩/৩৪২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৪৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

বর্তমান বিশ্বে বিড়িসিগারেটের ব্যাপক ব্যবহার চলছে। এ ব্যাপারে ইসলামের হুকুম...

প্রশ্ন

বর্তমান বিশ্বে বিড়িসিগারেটের ব্যাপক ব্যবহার চলছে। এ ব্যাপারে ইসলামের হুকুম কী? দ্বিতীয়ত বিড়ি-সিগারেট খাওয়া ও বিক্রির ব্যাপারে ইসলামের হুকুম কী?

উত্তর

বিড়িসিগারেট পান করা নাজায়েয। কেননা এতে নিজের শারীরিক ক্ষতি তো আছেই, পাশাপাশি অন্যেরও ক্ষতি করা হয়। মুখের দুর্গন্ধের দরুন মানুষ ও ফেরেশতাকে কষ্ট দেওয়া হয়। অপচয়ের বিষয়টিও রয়েছে। তাই তা যেমনিভাবে পান করা যাবে না। তেমনিভাবে তা বিক্রি করাও যাবে না।

-আদ্দররুল মুখতার ৬/৪৫৯; রদ্দুল মুহতার ৫/২৯৫; তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২২৭; ফাতাওয়া ফী শুরবিন দুখান

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৩৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমাদের দেশে অনেক সময় ফুটপাত বা নিম্ন মানের দোকানগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার...

প্রশ্ন

আমাদের দেশে অনেক সময় ফুটপাত বা নিম্ন মানের দোকানগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে পণ্যের দরকষাকষি হয়। ক্রেতা একটি দাম বলে কিন্তু দেখা যায় যে, ক্রেতা তার কাঙ্খিত দামে পণ্যটি না পেয়ে সেখান থেকে চলে আসে। কিছু দূরে আসার পর বিক্রেতা ঐ দামেই পণ্যটি নেওয়ার জন্য ক্রেতাকে ডাকতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতা ফিরে না আসলে তাকে বকাবকি পর্যন্ত করে থাকে। আমার প্রশ্ন হল, এরূপ ক্ষেত্রে শরীয়তের দৃষ্টিতে ক্রেতা ওই পণ্যটি ক্রয় করতে বাধ্য কি না? এবং ক্রয় না করলে সে ভৎর্সনার যোগ্য হবে কি না?

উত্তর

ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে একপক্ষ পণ্যের মূল্য প্রস্তাব করার পর অপর পক্ষ তাতে সম্মত না হলে ঐ প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। তদ্রূপ একপক্ষ মূল্য প্রস্তাবের পর অপর পক্ষ সম্মত হওয়ার পূর্বে দুজনের কেউ প্রস্থান করলে বা অস্বীকৃতি জানালেও ঐ প্রস্তাব বাতিল গণ্য হয়।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের উভয় দিক পাওয়া গেছে। তাই ক্রেতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়ে গেছে। ফলে ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন হয়নি। সুতরাং পরবর্তীতে বিক্রেতা ঐ মূল্যে বিক্রির জন্য রাজি হওয়াটা তার পক্ষ থেকে নতুন প্রস্তাব বলে বিবেচিত হবে। অতএব এখন ক্রেতা ঐ মূল্যে পণ্যটি ক্রয় করতে বাধ্য নয়; বরং এক্ষেত্রে সে পূর্ণ স্বাধীন। ঐ মূল্যে সে ক্রয় করতেও পারে এবং নাও করতে পারে। ক্রয় না করলে তাকে ভৎর্সনা করা বকাবকি করা অন্যায় হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২৪; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৭২; হিদায়া ২/২৩; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৫২৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

অযুতে হাত পায়ের আঙ্গুল খিলাল করার বিধান কী? পায়ের আঙ্গুল...

প্রশ্ন

অযুতে হাত পায়ের আঙ্গুল খিলাল করার বিধান কী? পায়ের আঙ্গুল খিলাল করার সঠিক নিয়ম জানতে চাই।

উত্তর

স্বাভাবিকভাবে আঙ্গুলের ফাঁকে পানি পৌঁছে গেলে খিলাল করা সুন্নাত। আর খিলাল ব্যতীত পানি না পৌঁছলে খিলাল করা ফরয।

পায়ের আঙ্গুল খিলাল করার নিয়ম হল, খিলালের জন্য বাম হাতের কনিষ্ঠা ব্যবহার করবে এবং ডান পায়ের কনিষ্ঠা থেকে শুরু করবে। খিলালের সময় পায়ের উপর দিক দিয়ে আঙ্গুল প্রবেশ করাবে অতঃপর আঙুলের গোড়া থেকে উপরের দিকে টেনে নিয়ে যাবে।

-সুনানে আবু দাউদ ১/১৯-২০; জামে তিরমিযী ১/১৬; মুসনাদে আহমদ ২৯/৩৮৮, ২৬/৩০৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২; বাদায়েউস সানায়ে ১/১১৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৭; রদ্দুল মুহতার ১/১১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০২৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

এক ব্যক্তির ফরয গোসল শেষ হওয়ার পর মনে পড়ল যে,...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তির ফরয গোসল শেষ হওয়ার পর মনে পড়ল যে, সে নাকে পানি পৌঁছায়নি। এ অবস্থায় কি সে পুনরায় শুরু থেকে গোসল করবে না শুধু নাকে পানি দেওয়াই যথেষ্ট হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শুধু নাকে পানি দেওয়াই যথেষ্ট। পুনরায় গোসল করতে হবে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ১/৩৭৪; ইলাউস সুনান ১/২১৬; শরহুল মুনয়া পৃ. ৫০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০২১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

আমার অনেক সময় জামাতে এক দুই রাকাত ছুটে যায়। জানার...

প্রশ্ন

আমার অনেক সময় জামাতে এক দুই রাকাত ছুটে যায়। জানার বিষয় হল, ছুটে যাওয়া রাকাতগুলো আদায় করার সময় শুরুতে সূরা ফাতেহা পাঠ করব নাকি সানা পড়ে তারপর সূরা ফাতিহা পড়ব?

উত্তর

ছুটে যাওয়া রাকাত আদায়ের সময় সানা দিয়ে শুরু করা উত্তম।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৮৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কুরবানীর দিন এলাকার লোকজন নিজ নিজ পশু যবাইয়ের জন্য আমার...

প্রশ্ন

কুরবানীর দিন এলাকার লোকজন নিজ নিজ পশু যবাইয়ের জন্য আমার চাচাকে নিয়ে যায়। এখন তিনি বৃদ্ধ হয়ে গেলেও লোকজন তবুও আসে। চাচা তাদের মন রক্ষার্থে গেলেও একা যবাই করতে পারেন না। তাই আমাকে সাথে নিয়ে যান। চাচা বিসমিল্লাহ বলে একটু ছুরি চালিয়ে দিলে বাকিটুকু আমি করে দিই। জানার বিষয় হল, চাচার বিসমিল্লাহ পড়াই যথেষ্ট হবে? নাকি আমাকেও বিসমিল্লাহ পড়তে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকেও বিসমিল্লাহ পড়তে হবে। অন্যথায় যবাই সহীহ হবে না। কেননা এক্ষেত্রে আপনিও যবাইকারী। আর যবাইকারী একাধিক হলে প্রত্যেকেরই বিসমিল্লাহ বলা জরুরি। অবশ্য প্রথম জবাইকারী যদি জবাই সম্পন্ন করে ফেলে, অর্থাৎ স্বাশনালী, খাদ্যনালী এবং দুই শাহরগের কোন একটি কেটে ফেলে, এরপর দ্বিতীয় ব্যক্তি ছুরি চালায় সেক্ষেত্রে তার জন্য বিসমিল্লাহ পড়া জরুরি নয়। এক্ষেত্রে প্রথম ব্যক্তির দ্বারাই জবাই সম্পন্ন হয়ে যায়। সুতরাং পরবর্তীতে কেউ যদি ছুরি চালায় তাহলে জবাইকারীর অন্তর্ভুক্ত হবে না। তাই সে বিসমিল্লাহ না বললেও কোনো ক্ষতি হবে না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৩৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৫৭
তারিখ: ২৮-অগাষ্ট-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

খুতবা চলাবস্থায় কথা বলা ও কাউকে কথা বলতে নিষেধ করা ৷

প্রশ্ন
হযরত ! আজকাল জুমার দিন খুতবা চলাকালীন ব্যপক ভাবে মানুষ কথা বলতে দেখা যায়৷ এক হুজুর কে বলতে শুনেছি,খুতবা চলাকালিন কথা বলাও যাবে না৷ পাশে কাউকে কথা বলতে দেখলে নিষেধও করা যাবে না৷ একথাটি কতটুকু সঠিক? এ বিষয়ে বিস্তারিত দলিলসহ জানতে চাই৷
উত্তর
খুতবা চলাকালীন উপস্থিত মুসল্লিদের জন্য চুপ থেকে মনোযোগসহ খুতবা শোনা ওয়াজিব। তখন মুসল্লিদের জন্য সব ধরনের কথা বলা নাজায়েয৷ এমনকি কাউকে কথা বলতে দেখলে তাকে মৌখিকভাবে বারণ করাও নাজায়েয। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেন, ইমাম খুতবা দেওয়ার সময় তুমি যদি পাশের ব্যক্তিকে বল ‘চুপ থাক’ তবে তুমি তা একটি অনর্থক কাজ করলে।
-সহীহ বুখারী, হাসীস ৯৩৪৷ তবে প্রয়োজন হলে মুখে নিষেধ না করে হাত বা
মাথা দ্বারা ইশারা- ইঙ্গিতে পাশের ব্যক্তিকে কথাবার্তা বলা বা অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা যাবে। কেননা কেননা এ বিষয়টি আবদুল্লাহ ইবনে উমার রাঃ আবদুর রহমান ইবনে আবী লায়লা, সুফিয়ান সাওরী, আলকামা, ইবরাহীম নাখায়ী সহ একাধিক সাহাবা-তাবেয়ীর আমল ও আসার দ্বারা প্রমাণিত আছে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৫২৫৯; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৪৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৯৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৫৪
তারিখ: ১৪-অগাষ্ট-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

মহিলাদের জন্য স্বর্ন-রুপার চামচ গ্লাস বাটি ইত্যাদি ব্যবহার করার হুকুম ৷

প্রশ্ন
আমরা জানি পুরুষের জন্য স্বর্ন-রুপা ব্যবহার করা হারাম ৷ কিন্তু মহিলাদের জন্য হালাল ৷ তাই মহিলাদের ব্যবহৃত আসবাব যেমন চামচ গ্রাস বাটি যদি স্বর্ন বা রুপা দিয়ে তৈরি করা হয় তাহলে কি তা ব্যবহার করা জায়েয হবে? এমনি ভাবে যদি এগুলো স্বর্ণের পানি দ্বারা প্রলেপযুক্ত হয়। যা দেখতে স্বর্ণের মতোই লাগে, কিন্তু বাস্তবে স্বর্ণ নয়। এগুলো ব্যবহারের হুকুম কী?
উত্তর
মহিলাদের জন্য স্বর্ণ-রুপার অলংকার ব্যবহার করা জায়েয হলেও স্বর্ণ-রূপার তৈরি চামচ, গ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার করা পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যই হারাম। অবশ্য স্বর্ণ-রুপার পানি দ্বারা প্রলেপযুক্ত আসবাবপত্র ব্যবহার করা জায়েয আছে । তবে এগুলোও ব্যবহার না করা উত্তম। কেননা এতে বিজাতিদের সাথে কিছুটা হলেও সাদৃশ্য হয়।
-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৮৩৭; ইলাউস সুনান ১৭/২৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩১৫৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেরগ্রানম ব্রহ্মণবাড়িয়া ৷


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৬৯
তারিখ: ১২-জুন-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

কালিমা তাইয়্যিবার সাথে দরুদ পাঠ করা ৷

প্রশ্ন
আমরা জানি রাসূল সাঃ এর নাম উচ্চারন করলে দরুদ পড়তে হয় ৷ কালিমা তাইয়্যিবার মধ্যেও রাসূল সাঃ এর নাম আছে ৷ তাই জানার বিষয় হলো, কালিমায়ে তাইয়্যিবার সাথে দরূদ পড়া যাবে কি না?
উত্তর
রাসূল সাঃ এর নাম উচ্চারণ করলে দরূদ পড়তে হয় এই নিয়ম হিসাবে কালিমা তাইয়্যিবার পর দরূদ শরীফ পড়া যাবে। তবে কিছুটা বিরতি দিয়ে পড়বে। যেন দরূদ শরীফ কালিমার অংশ বলে মনে না হয়। কারন দরূদ শরীফ কালিমা তাইয়্যিবার অংশ নয়। কালিমা তাইয়্যিবা হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’। এ পর্যন্ত পড়ে একটু বিরতি দিয়ে দরুদ পড়বে ৷ তবে কালিমার পর দরুদ পড়া আবশ্যক নয় ৷ আর যেহেতু দরুদ কালিমার অংশ নয় তাই অনেক আলেমগন অংশ মনে করে ফেলার আশংকায় দরুদ না পড়ার মত পোষন করেন ৷
-ফাতাওয়া উসমানী ১/৫৮ ৷ মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী: জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৬৮
তারিখ: ১২-জুন-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

নাবালেগ অবস্থায় কাফেরদের সন্তান মারা গেলে জান্নাতী নাকি জাহান্নামী?

প্রশ্ন
এক লোকের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে কথা উঠে কাফেরদের নাবালেগ সন্তান তো কোন দোষ করেনি ৷ সে কি জান্নাতে যাবে নাকি জাহান্নামে যাবে? ইতিপুর্বেও এ বিষয়ে কয়েকজনের মাঝে তর্ক হয় ৷ আমার এ বিষয়ে জানা না থাকায় কিছু বলতে পারিনি ৷ তাই এ বিষয়ে যদি কিছু বলতেন ৷
উত্তর
এটি এমন কোনো বিষয় নয়, যা জানার উপর শরীয়তের কোনো আমল নির্ভরশীল। এবং আকীদাগত কোন বিষয়ও নয়, যা জানা জরুরি ৷ তাই এ জাতীয় বিষয় নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া ঠিক নয়।
কাফের-মুশরিকদের নাবালেগ সন্তান মারা গেলে তাদের সাথে কি আচরণ করা হবে এ বিষয়ে বিভিন্ন মত আছে। যেমন কেউ বলেন জান্নাতে যাবে ৷ কেউ বলে জাহান্নামে যাবে ৷ কেউ বলে আ'রাফে থাকবে ৷ কেউ বলে জান্নাতীদের সেবক-সেবিকা হবে ৷ তবে জান্নাত যাবে- এ মতটি অধিক শক্তিশালী। এর সঠিক
ফয়সালা আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন।
-লামিউদ দারারী ২/১৩৭; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ৫/৫০২; রদ্দুল মুহতার ২/১৯২; ফাতাওয়া উসমানী ১/৫২ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী: জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৪২
তারিখ: ১৪-মে-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

ব্যভিচারের মাধ্যমে জন্ম লাভ হওয়া সন্তান ব্যভিচার কারির পরিত্যক্ত সম্পত্বির উত্তরাধিকার হবে কিনা?

প্রশ্ন
হুজুর আমার এলাকায় ব্যভিচারের মাধ্যমে এক ব্যক্তির সন্তান জন্ম লাভ হয়। কয়েক মাস পর ওই ব্যক্তি
মারা যায় ৷ অতপর উক্ত সন্তানের মা তার বাবার উত্তারাধিকারী হিসেবে সম্পত্বি দাবী করে ৷ মৃত ব্যক্তি ছেলেরা তাকে অংশ দিতে অস্বীকার করে। তাই জানার
বিষয় হল, আসলে কি সে ওই ব্যক্তির পরিত্যাক্ত সম্পদ থেকে কিছু পাবে না? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
অবৈধ সন্তান ব্যভিচারীর পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে কোনো অংশ পায় না। কারন শরীয়ত এক্ষেত্রে বংশ সূত্রের স্বীকৃতি দেয় না। আর বংশ সূত্র ছাড়া উত্তারাধিকারের অধিকারী হয় না। অতএব প্রশ্নোক্ত সুরতে উক্ত অবৈধ সন্তান ব্যভিচার কারির পরিত্যক্ত সম্পত্বি থেকে কোন অংশ পাবে না ৷
-জামে তিরমিযী ২/৩৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৩৬৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৫২; তাকমিলা আলবাহরুর রায়েক ৮/৫০৩৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৩৬
তারিখ: ১৪-মে-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

স্বপ্নে আল্লাহ তায়ালাকে দেখা ৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার একটি প্রশ্ন জানার ছিল ৷ অনেক ওয়াজ মাহফীলে শোনা যায়, অনেক আল্লাহর ওলিরা আল্লাহকে স্বপ্নে দেখেছেন ৷ আমার জানার বিষয় হলো, আল্লাহ তায়ালাকে কি স্বপ্নে দেখা সম্ভব? যদি সম্ভব হয় সেটা কিভাবে এবং কি আকারে দেখান? জানিয়ে বাধিত করবেন ৷
উত্তর
বাস্তবে এ জগতে জাগ্রত অবস্থায় যদিও আল্লাহ তাআলার দর্শন সম্ভব নয়। কিন্তু স্বপ্নযুগে আল্লাহ তায়ালা কে দেখা সম্ভব ৷ আল্লাহ তায়ালা অনেক সময় অনেক ওলি, বুজুর্গদেরকে স্বপ্নে দর্শন করিয়ে দেন। তবে কীভাবে , কি আকারে দর্শন করান এটা আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন। এ বিষয়ে চিন্তা-ফিকির করা, হাদীসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে ৷ তাই আল্লাহ কে নিয়ে চিন্তা-ফিকির করা থেকে বিরত থাকা উচিত ৷
-তিরমিযি শরীফ, হাদীস: ৩২৩৫; মুসনাদে আহমদ, হাদীস: ২২১০৯; মাজমূয়ুল ফাতাওয়া ৩/৩৯০ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮০৮
তারিখ: ২১-ফেব্রুয়ারি-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

"লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ কি ভুল? তাতে শিরক আছে?

প্রশ্ন
হুজুর এক আহলে হাদীসের সাথে কথা বলতেছিলাম এক পর্যায়ে সে বলল আমরা যে কালিমা পড়ি " লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ" এই কালিমাটি নাকি ভুল ৷ এভাবে বললে নাকি শিরক হবে ৷ কোন হাদীসে নাকি এভাবে নেই৷ বরং ওয়া মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ এভাবে নাকি সহীহ ৷ এ বিষয়ে আপনার নিকট সঠিক সমাধান জানতে চাই ৷
উত্তর
উম্মতের ইজমা ও হাজার বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন আমলী সূত্র পরম্পরায় কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ হিসেবে স্বীকৃত বিষয়ে ভুল ধরে তাকে শিরক বলে দেয়া কত বড় দৃষ্ঠতা প্রদর্শন আন্দাজ করুন৷ নিজেদের মুর্খতা ও অজ্ঞতার কারনে “লা ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ এর স্বপক্ষে কোন হাদীস না পেয়ে কালিমাটিকেই অস্বিকার করে শিরক বলে দিল। ইহা উম্মতের মুসলিমাহ এর উপর অপবাদ লাগানো বৈকিছু হতে পারে না ৷
নিম্নে "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ " কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ এর স্বপক্ষে সংক্ষিপ্ত আকারে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হলোঃ
ﻋﻦ ﻳﻮﺳﻒ ﺑﻦ ﺻﻬﻴﺐ، ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺑﻦ ﺑﺮﻳﺪﺓ، ﻋﻦ
ﺃﺑﻴﻪ، ﻗﺎﻝ : ﺍﻧﻄﻠﻖ ﺃﺑﻮ ﺫﺭ ﻭﻧﻌﻴﻢ ﺍﺑﻦ ﻋﻢ ﺃﺑﻲ ﺫﺭ، ﻭﺃﻧﺎ
ﻣﻌﻬﻢ ﻳﻄﻠﺐ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺻﻠّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺁﻟﻪ ﻭﺳﻠّﻢ
ﻭﻫﻮ ﻣﺴﺘﺘﺮ ﺑﺎﻟﺠﺒﻞ، ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺃﺑﻮ ﺫﺭ : ﻳﺎ ﻣﺤﻤﺪ،
ﺃﺗﻴﻨﺎﻙ ﻟﻨﺴﻤﻊ ﻣﺎ ﺗﻘﻮﻝ، ﻗﺎﻝ : ﺃﻗﻮﻝ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠَّﻪ
ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪ، ﻓﺂﻣﻦ ﺑﻪ ﺃﺑﻮ ﺫﺭ ﻭﺻﺎﺣﺒﻪ .
বুরাইদা (রা.) বলেন, আবুজর ও নুআইম তারা দুজন রাসূল (সা.)-এর খুঁজে বের হন। আমি তাঁদের সাথে ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সা.) তখন এক পাহাড়ের আড়ালে ছিলেন। তখন আবুজর তাঁকে বলেন, হে মুহাম্মদ আপনি কি বলেন আমরা শুনতে এসেছি। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি বলি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ”।
আল ইসাবা ইবনে হাজর ৬/৩৬৫, হাদীস নং
৮৮০৯৷
এই হাদীসের সনদ সহীহ, এবং সব বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য।
ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺑﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺩَﺧَﻠْﺖُ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ﻓَﺮَﺃﻳْﺖُ ﻓِﻲ ﻋﺎﺭِﺿَﺘِﻲ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ
ﻣَﻜْﺘُﻮﺑﺎً ﺛﻼﺛﺔ ﺃﺳﻄﺮ ﺑﺎﻟﺬﻫﺐ : ﺍﻟﺴﻄﺮ ﺍﻷﻭﻝ ﻻ ﺇﻟﻪ ﺇِﻟَّﺎ
ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤَّﺪٌ ﺭَﺳﻮُﻝُ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﻟﺴَّﻄﺮُ ﺍﻟﺜَّﺎﻧِﻲ ﻣﺎ ﻗﺪﻣﻨﺎ
ﻭَﺟَﺪْﻧﺎ ﻭَﻣَﺎ ﺃﻛَﻠْﻨﺎ ﺭَﺑِﺤْﻨﺎ ﻭَﻣَﺎ ﺧَﻠَّﻔْﻨﺎ ﺧَﺴِﺮْﻧﺎ ﻭﺍﻟﺴَّﻄْﺮُ
ﺍﻟﺜَّﺎﻟِﺚُ ﺃُﻣَّﺔٌ ﻣُﺬْﻧِﺒَﺔٌ ﻭَﺭَﺏٌّ ﻏَﻔُﻮﺭٌ
“হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মেরাজকালে আমি বেহেশতে প্রবেশের সময় এর দু’পাশে দেখি তিনটি লাইনে স্বর্ণাক্ষরে লেখা :
প্রথম লাইন. লা ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।
দ্বিতীয় লাইন. আমরা যে ভালো কর্ম পেশ করেছি, তা পেয়েছি। যা খেয়েছি তা থেকে উপকৃত হয়েছি। যা ছেড়ে এসেছি, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
তৃতীয় লাইন, উম্মত হলো গোনাহগার, আর রব হলো ক্ষমাশীল।
জামেউস সগীর সুয়ূতী ১/৮৭১ হাদীস নং ৪১৮৬, ইমাম সুয়ূতী রঃ হাদীসটি সহীহ বলেছেন ৷
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻛَﺎﻧَﺖْ ﺭَﺍﻳَﺔُ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺳَﻮْﺩَﺍﺀَ ﻭَﻟِﻮَﺍﺅُﻩُ ﺃَﺑْﻴَﺾُ، ﻣَﻜْﺘُﻮﺏٌ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ : ﻟَﺎ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣُﺤَﻤَّﺪٌ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ »
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ঝান্ডাটি ছিল কালো এবং পতাকাটি ছিল সাদা রঙের। এই পতাকায় লেখা ছিল “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ”।
আল মু’জামুল আওসাত তাবরানী ১/১২৫ হাদীস নং ২২১৷
এই হাদীসের বর্ণনাকারীগণ সবাই নির্ভরযোগ্য।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত দীর্ঘ এক হাদীসে রাসূল (সা.) তখনকার কাফের ও সত্যিকারের মুসলমানদের অবস্থার বিবরণ দিতে গিয়ে নিম্নে বর্ণিত আয়াতের আলোকে বলেন-
ﺇِﺫْ ﺟَﻌَﻞَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍ ﻓِﻲ ﻗُﻠُﻮﺑِﻬِﻢُ ﺍﻟْﺤَﻤِﻴَّﺔَ ﺣَﻤِﻴَّﺔَ
ﺍﻟْﺠَﺎﻫِﻠِﻴَّﺔِ ﻓَﺄَﻧْﺰَﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺳَﻜِﻴﻨَﺘَﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺭَﺳُﻮﻟِﻪِ ﻭَﻋَﻠَﻰ
ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ ﻭَﺃَﻟْﺰَﻣَﻬُﻢْ ﻛَﻠِﻤَﺔَ ﺍﻟﺘَّﻘْﻮَﻯ ﻭَﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﺃَﺣَﻖَّ ﺑِﻬَﺎ
ﻭَﺃَﻫْﻠَﻬَﺎ ﻭﻫﻰ ﻻ ﺍﻟﻪ ﺇﻻ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺤﻤﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ”
কাফেররা মুসলমানদের সাথে সেই অজ্ঞ যুগের বাড়াবাড়িতে লিপ্ত ছিল। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা’আলা মুসলমানদের একত্মবাদের ফলে রাসূল (সা.) ও মুমিনদের ওপর স্বীয় প্রশান্তি অবতরণ করেন। আর তাদের জন্য তাকওয়ার কালিমা আবশ্যক করে দেন। যার সত্যিকার ধারক তারাই৷ এই তাকওয়ার কালিমাটি হলো “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ”।
বায়হাকী পৃ. ১৩১ কিতাবুল আসমা ওয়াসসিফাত৷
এই হাদীসের সব বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য, হাদীসটি সহীহ৷
তাছাড়া উম্মতের ইজমা ও নিরবচ্ছিন্ন আমলী সূত্র পরম্পরায়ও তা কালিমায়ে তাইয়্যিবাহ হিসেবে স্বীকৃত ৷
এর পরও যারা এই কালিমাটি হাদীসে নেই বলে ৷ উক্ত কালিমায় শিরকের গন্ধ পায় ৷ বুঝতে হবে তারা নিজেরা ই শিরকে ডুবন্ত ৷ তারা উম্মতে মুহাম্মদীর দুশমন ৷ ইসলামের শত্রু ৷ ইসলামকে ধ্বংশকারী ৷ এ যুগ সেরা ফেতনাবাজ ৷
আল্লাহ সকলকে সহীহ বুঝে আমল করে উভয় জগতে ধন্য হওয়ার তৌফীক দান করুন ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮০৫
তারিখ: ১৪-ফেব্রুয়ারি-২০১৭
বিষয়: বিবিধ

নখ চুল পশম ইত্যাদি কেটে কোথায় ফেলবে?

প্রশ্ন
আমরা জানি নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কেটে মাটিতে দাফন করে দিতে হয়৷ কিন্তু আমরা যারা শহরের মানুষ তা কোথায় ফেলব? কারন শহরে দাফনের জায়গা পাওয়া কঠিন। কমোডে ফেলা যাবে কি না?
উত্তর
নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কেটে তা মাটির নিচে দাফন করে দেওয়াই উত্তম। তবে শহরে বা যেখানে মাটিচাপা দেওয়ার সুযোগ নেই সেখানে বাসার ময়লার ঝুড়িতে ফেলা যাবে। কিন্তু তা কমোডে ফেলা উচিত নয়।
আর যেসব পশম শরীরে থাকা অবস্থায় অন্যের জন্য দেখা নাজায়েয শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পর বা কাটার পরও তা দেখা নাজায়েয। তাই এ ধরনের পশম পরিষ্কার করে টয়লেটের ভেতর ফেলে দেওয়া যাবে। আর অন্য কোথাও ফেলতে চাইলে আলাদা কোনো কিছুতে ফেলা উচিত, যেন তা দেখা না যায়।
আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৭১ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৯, ৫/৩৫৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৪১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪১১৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৮৬
তারিখ: ২৮--২০১৬
বিষয়: বিবিধ

রাস্তায় পড়ে থাকা মূল্যবান বস্তু কুড়িয়ে পেলে করনীয়৷

প্রশ্ন
মুফতী সাহেব আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিবেন৷ রাস্তা-ঘাট বা অন্য কোথাও কোন মূল্যবান জিনিষ পড়ে থাকতে দেখা গেলে উহা কি করবো? উঠাবো নাকি যেভাবে আছে সেভাবেই রেখে দিবো? উঠালে করনীয় কি? জানাবেন প্লীজ ৷
উত্তর
পড়ে থাকা মূল্যবান বস্তু নষ্ট হয়ে যাওয়া বা কোন চোর ডাকাতের হাতে চলে যাওয়ার আশংকা হলে তা উঠাতে হবে ৷ উঠিয়ে যথা সম্ভব উক্ত বস্তুর মালিকের কাছে ফেরত পাঠানোর জন্য চেষ্টা করবে। নিকটস্থ কোন দোকান, বাসাবাড়ি, আশপাশে ভাল করে মালিকের খোঁজ খবর নিবে। বেশি মূল্যবান বস্তু হলে মাইকে এলান করবে বা পত্রিকায় এ্যাড দিবে। শেষ পর্যন্ত যদি মনে হয়, মালিককে কোনভাবেই পাওয়া সম্ভব নয়। তাহলে উক্ত সম্পদকে তার মালিকের নামে দান করে দিবে। যে পেয়েছে সে নিজেই গরীব হলে, নিজেও ব্যবহার করতে পারবে৷ ধনী হলে তার জন্য ব্যবহার করা জায়েজ নয় ।
দান বা নিজে ব্যবহার করার পর যদি কোনদিন বস্তুর
মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়, তাহলে মালিককে জানাতে হবে যে, আপনার উক্ত বস্তুটি আপনার সন্ধান না পেয়ে দান করে দেয়া হয়েছে, সে মেনে নিলে ফেরত দিতে হবে না ৷ না মানলে উক্ত বস্ত বা তার মূল্য মালিককে ফেরত দিতে হবে।
রদ্দুল মুহতার ৬/৪৩৭; ফতাওয়ায়ে আলমগীরী ২/২৮৯৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৭১
তারিখ: ১৭--২০১৬
বিষয়: বিবিধ

ইমামকে রুকু অবস্থায় কতটুকু পেলে রাকাত হিসেবে গন্য হবে?

প্রশ্ন
হুজুর! আমি ফজরের জামাতে রুকুতে এমন সময় শামিল হয়েছি যে, একবারও পূর্ণভাবে রুকুর তাসবীহ পড়তে পারিনি। তবে তসবীর শুরু করেছিলাম, তখনি ইমাম সাহেব দাড়িয়ে যান ৷ এ অবস্থায় আমি রুকু ও রাকাত পেয়েছি বলে ধরা হবে কি না? নাকি একবার পূর্ণ তাসবীহ পড়ার সুযোগ পেলে রাকাত পেয়েছি ধরা হবে?
উত্তর
রাকাত পাওয়ার জন্য রুকু পাওয়া জরুরি। আর রুকু পাওয়ার জন্য এক মুহূর্ত হলেও ইমামের সাথে রুকুতে শরিক হওয়া জরুরী । ইমামের সাথে রুকুর পুর্ন তাসবীহ পাওয়া জরুরি নয়। তবে যদি ইমামকে রুকু অবস্থায় এক মুর্তের জন্যও না পায় তাহলে এ রাকাত পায়নি বলে ধরা হবে।
অতএব প্রশ্ন বর্নিত সুরতে যেহেতু আপনি এক মুহুর্তের জন্যও ইমামকে রুকুতে পেয়েছেন যদিও পুর্ন এক তাসবীহ পরিমান পান নি, তাই রাকায়াত পেয়েছেন বলে ধরা হবে ৷
মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা, হাদীস নং ২৫৩৭-২৫৩৭;আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০; ফাতহুল কাদীর ১/৪২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২০৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷
01756473393


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৬২
তারিখ: ১২--২০১৬
বিষয়: বিবিধ

ভাঙ্গাচোরা জিনিষপত্র আলু, পিয়াজ ইত্যাদির বিনিময়ে বিক্রি করা ৷

প্রশ্ন
হুজুর! আমাদের এলাকায় প্রচলন আছে, ভাঙ্গাচোরা লোহা লংকর টিন ইত্যাদি জিনিসপত্র আলু, পিয়াজের বিনিময়ে কিছু লোক বাড়ি বাড়ি হেটে হেটে বিক্রি করে। বিক্রির পদ্ধতিটি এমন যে, এক পাল্লায় ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র রাখা হয় অপর পাল্লায় আলু অথবা পিয়াজ রাখা হয়৷ এবংপাল্লার দণ্ডি সমান করা হয়। এভাবে মিষ্টি আলু অথবা পিয়াজের বিনিময়ে
ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র বিক্রি করা কি শরীয়তসম্মত?
উত্তর
জ্বী হ্যাঁ, প্রশ্নে বর্নিত পদ্ধতিতে ভাঙ্গাচোরা লোহা লংকর টিন ইত্যাদির পরিবর্তে আলু বা পিয়াজের লেনদেন বৈধ ও শরীয়তসম্মত৷
হেদায়া ৩/২১৷ আউনুল মা'বুদ ৭/৩৩০; ফতহুল বারি ৭/৬৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন৷ মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া৷
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৬১
তারিখ: ১২--২০১৬
বিষয়: বিবিধ

শয়তানের পরিচয় ও জিনদের বিয়ে সাদী৷

প্রশ্ন
শয়তান কোন জাতির? সে কি জিন নাকি আলাদা অন্য কোন জাতির? সকল মানুষকে কি সে একাই
ধোঁকা দেয় নাকি তার সাঙ্গ পাঙ্গ আছে? তারা কিসের তৈরি? তাদের কি মানুষের মত বিয়ে সাদী হয়? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন৷
উত্তর
শয়তানের পরিচয় হলো, সে জিন জাতির অন্তর্ভূক্ত, ভিন্ন কোন জাতি নয়৷ আর জিন জাতি আগুনের সৃষ্টি। মানুষ সৃষ্টির অনেক আগে তাদেরকে সৃষ্টি করা হয়৷ তাদের মানুষের মত নাক কান চোখ মন শরীর ইত্যাদি আছে৷ তারা পানাহারও করে৷ তাদের মাঝে বিয়ে সাদী হয়৷ সন্তানাদি হয় ৷ শয়তান একাই ধোঁকা দেয় না, তার অসংখ্য সঙ্গপাঙ্গ আছে৷ তবে ইবলিস হলো জিন জাতির পিতা৷
সূরা হিজর: ২৬- ২৭; সূরা আরাফ ১৭৯; সূরা কাহাফ ৫০; সূরা রহমান ৫৬; সহীহ মুসলিম হাদীসঃ ২০২০; ফতওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া ৪/২৩৫,৩৪৬৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া৷
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৩৯
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

হুজুর শব্দের ব্যবহার৷

প্রশ্ন
হুজুর শব্দ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে খাছ নাকি যে কারো সাথে ব্যবহার করা যাবে? বিস্তারিত প্রমাণাদিসহ জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
বাংলা ভাষায় জনাব, মহাশয় যেমনভাবে সম্মানসূচক শব্দ অনুরূপভাবে হুজুর শব্দটিও ফার্সী, উর্দু ও বাংলাভাষায় একটি সম্মানসূচক শব্দ। যা সাধারণত আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তিন ভাষার অভিধান গ্রন্থগুলো দেখলেই এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায়। যেমন ফার্সী অভিধান গিয়াসুল লুগাতে (পৃ. ১৭৪) দেখুন : ‘‘হুজুর শব্দটির অর্থ হল, উপস্থিত হওয়া। তবে পরিভাষায় এটি বুযুর্গ ব্যক্তিদের সম্মানসূচক সম্বোধনের জন্য ব্যবহার করা হয়।’’ একই কথা উর্দু অভিধান ফীরুযুল লুগাত (পৃ. ৫৭১) এবং বাংলা অভিধান বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (পৃ. ১২১২) ও সংসদ বাংলা অভিধান (পৃ. ৭২৩) এ উল্লেখ করা হয়েছে। উপরোল্লেখিত অভিধানগুলোর আলোকে একথাই স্পষ্ট হয় যে, হুজুর শব্দটি ফার্সী, উর্দু ও বাংলা ভাষায় নিছক একটি সম্মানসূচক শব্দ। আর এ অর্থেই এই তিন ভাষার অনেক মানুষ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর জন্যও এটি ব্যবহার করে থাকে। শরয়ী পরিভাষা হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয় না। শব্দটি যেহেতু ব্যাপক তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য তা ব্যবহার করা হলে সাধারণত অধিক সম্মান বোঝানোর জন্য এর সাথে আকরাম শব্দ যোগ করে হুজুরে আকরাম বলা হয়। মোটকথা, হুজুর শব্দটি সম্মানসূচক বটে তবে এটি এমন কোনো শব্দ নয়, যা শুধু রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- এর জন্য ব্যবহৃত হয়। বরং তা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত একটি শব্দ। -গিয়াসুল লুগাত ১৭৪; ফীরুযুল লুগাত ৫৭১; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ৩/৩৪২৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৩৮
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

হাচি দেওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ বলার হুকুম৷

প্রশ্ন
হাঁচি দেওয়ার পর হাঁচিদাতার জন্য আলহামদুলিল্লাহ বলার হুকুম কী? এবং তা কি উচ্চস্বরে বলবে না নিম্নস্বরে?
উত্তর
হাঁচি দেওয়ার পর হাঁচিদাতার জন্য উচ্চ স্বরে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন হাঁচি দেয় তখন সে যেন আলহামদুলিল্লাহ বলে। এবং তার সাথী যেন উত্তরে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলে। যখন তার সাথী ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলবে তখন হাঁচিদাতা যেন উত্তরে ‘ইয়াহদিকুমুল্লাহু ওয়া ইউসলিহু বালাকুম’ বলে।-সহীহ বুখারী, হাদীস :
৬২২৪৷
অন্য হাদীসে এসেছে, ইয়াহইয়া ইবনে আবী কাছির তার এক উস্তাদ থেকে বর্ণনা করেন, হাঁচিদাতার জন্য উচিত হল উচ্চস্বরে আলহামদুলিল্লাহ বলা, যাতে করে আশপাশের লোকেরা তা শুনতে পায়। আর ঐ ব্যক্তির আলহামদুলিল্লাহ বলার পর শ্রোতাদের জন্য জরুরি হল ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা। -মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১৯৬৮০; কিতাবুল আযকার পৃ. ৪৪১; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৪/২৪৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৪১৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৮৭৷ মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭০৯
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

পশ্চিম দিকে পা দিয়ে বসা ৷

প্রশ্ন
পশ্চিম দিকে পা দিয়ে বসা কি জায়েজ? দলিলসহ জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
কিবলার দিকে পা দিয়ে বসা বেআদবী। এবং মাকরুহে তাহরিমী। তাই কিবলা তথা আমাদের জন্য পশ্চিম দিকে পা দিয়ে বসা থেকে বিরত থাকতে হবে৷
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন-তোমরা কিবলামুখী মুখ করে পায়খানা প্রস্রাব করো না, বরং উত্তর-দক্ষিণ
হয়ে বস।
তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৬০৯১, সহীহ বুখারী, হাদীস
নং-৩৮৬; ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩১৯;আল মুহিতুল বুরহানী-৮/১০৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারিল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া৷
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৬৬
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

জমজমের পানি ছাড়া অন্য পানি দাঁড়িয় পান করা৷

প্রশ্ন
এক মাত্র জম জম কূপের পানি ছাড়া অন্য কোন পানি কেন দাড়িয়ে পান করা যায় না ?
উত্তর
জমজমের পানি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করেছেন। তা’ই আমরাও জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম মনে করি।বাকি এভাবে জমজমের পানি পান করা জরুরী নয়।
আর স্বাভাবিক অবস্থায় অন্যান্য পানি দাঁড়িয়ে
পান করাকে মাকরূহে তানজিহী মনে করি।
কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দাঁড়িয়ে পানি পান করাতে নিষেধ করেছেন।
বাকি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে
এবং তার কতিপয় সাহাবী কর্তৃক দাঁড়িয়ে পানি করা সম্পর্কিত হাদীস পাওয়া যায়। যা প্রমাণ করে দাঁড়িয়ে পানি পান করা হারাম বা মাকরূহে তাহরীমি নয়। বরং সর্বোচ্চ তানজিহী তথা অনুত্তম বলা যায়। বিস্তারিত দেখুন-রদ্দুল মুহতার-১/২৫৪-২৫৬
‎ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ، ‏« ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
‎ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺷَﺮِﺏَ ﻣِﻦْ ﺯَﻣْﺰَﻡَ ﻭَﻫُﻮَ ﻗَﺎﺋِﻢٌ হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০২৬
‎ﺃَﺑَﺎ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ، ﻳَﻘُﻮﻝُ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
‎ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ‏« ﻟَﺎ ﻳَﺸْﺮَﺑَﻦَّ ﺃَﺣَﺪٌ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻗَﺎﺋِﻤًﺎ، ﻓَﻤَﻦْ ﻧَﺴِﻲَ
‎ﻓَﻠْﻴَﺴْﺘَﻘِﺊْ » হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ যেন দাড়িয়ে পান না করে, তবে যদি ভুলে যায়, তাহলে পান করতে পারে। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০২৬
‎ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺷُﻌَﻴْﺐٍ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ، ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺃَﻳْﺖُ
‎ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻳَﺸْﺮَﺏُ ﻗَﺎﺋِﻤًﺎ ﻭَﻗَﺎﻋِﺪًﺍ
আমর বিন শুয়াইব তিনি তার পিতা, তিনি তার দাদা
থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দাড়িয়ে ও বসে পান করতে দেখেছি। সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৮৮৩৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৫৭
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

হাত-পা ও বুক ইত্যাদি অঙ্গের পশম কাটা৷

প্রশ্ন
হাত-পা ও বুকের পশম কাটার হুকুম কি? এসব কাটা কি জায়েজ?
উত্তর
হাত-পা,বুক,পেট-পিঠ ইত্যাদি অঙ্গের পশম কাটা হারাম নয়, তবে উত্তমও নয়। তাই না কাটাই শ্রেয়৷
‎ﻭﻓﻲ ﺣﻠﻖ ﺷﻌﺮ ﺍﻟﺼﺪﺭ ﻭﺍﻟﻈﻬﺮ ﺗﺮﻙ ﺍﻷﺩﺏ ‏( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ،
‎ﻛﺘﺎﺏ
‎ﺍﻟﺤﻈﺮ ﻭﺍﻻﺑﺎﺣﺔ، ﻓﺼﻞ ﻓﻰ ﺍﻟﺒﻴﻊ - 9/583 ، ﻃﺤﻄﺎﻭﻯ
‎ﻋﻠﻰ
‎ﺍﻟﻤﺮﺍﻗﻰ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ، ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ -431 ‏) উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬২৬
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

তাবীজ কবজ ঝাড়ফুক ইত্যাদির ব্যবহার৷

প্রশ্ন
ঝাড়ফুক, তাবিজ, কবজের শরঈ বিধান কি? ¤ঝাড়ফুক, তাবিজ, কবজ দিয়ে বিনিময় নেওয়া কি জায়েয আছে?
উত্তর
ঝাড়ফুক তাবিজ কবজ চার শর্তে জায়েয আছে; (১) কুফুরী কালাম না হওয়া। (২) লেখাগুলো অস্পষ্ট না হওয়া। (৩) কোন নাজায়েয কাজের জন্য না হওয়া। (৪) এমন আক্বীদা না থাকা যে, তাবিজের মধ্যে ই ভালো করার ক্ষমতা রয়েছে। কারন ভালো করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। ¤উল্যেখিত শর্ত অনুযায়ী রুগ মসিবতে ঝাড়ফুক, তাবিজ, কবজ গ্রহন করাও বৈধ৷ তাবীজ কহজ দিয়ে বিনিময় নেওয়া জায়েয আছে। মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ৫৬৭, মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা- হাদিস নং ২৪০১৩, ফতোয়ায়ে শামী - ৬/৩৬৩৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসিন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬১৩
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

নিজ নামে রেজিস্ট্রেশ করে সিম হস্তান্তর৷

প্রশ্ন
সিম ক্রয়ের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন করা জরুরি।
এখন কোনো ব্যক্তি নিজ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে
সিম ক্রয় করে কোম্পানীর অনুমোদন এবং
পুনঃ রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অন্য ব্যক্তির কাছে
সিম বিক্রি করা বৈধ কি না?
উত্তর
জ্বী,সিম নিজ নামে রেজিস্টেশন করে পুনঃ রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অন্য ব্যক্তির নিকট বিক্রি করা বা দিয়ে দেওয়া বৈধ। তবে কিন্তু বর্তমানে এ বিষয়টি যুকিপুর্ন হওয়ায় পুনঃ রেজিস্ট্রেশন ছাড়া না বিক্রি না করা উচিত৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫০৪
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

কন্যা সন্তান লালপালনের ফযীলত৷

প্রশ্ন
কন্যা সন্তান লালন পালনে নাকি ইসলামে অনকে ফযীলত রয়েছ ।
এছাড়া যার প্রথম সন্তান কন্যা হবে, তার জন্য
নাকী বিশেষ ফযীলত আছ? এ সম্পর্কে বিস্তারতি জানতে চাই।
উত্তর
হ্যাঁ, কন্য সন্তান লালন পালনে অনেক ফযীলত রয়েছে। এ ছাড়া কারো প্রথম সন্তান কন্যা হলে তার জন্য হাদীস শরীফে বিশেষ ফযীলতের কথা রয়েছে। মেয়ে সন্তানের ফযীলত বিষয়ে নিম্নে কয়কেটি হাদীস পেশ করা হল। (১) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলনে,
রাসূল (সা.) ইরশাদ করনে, যার গৃহে কন্যা সন্তান
জন্মগ্রহন করল,অতঃপর সে ঐ কন্যাকে কষ্টও দেয়নি,তার উপর অসন্তুষ্টও হয়নি এবং পুত্র সন্তানকে তার উপর প্রধান্য দেয়নি,তাহলে ঐ
কন্যার কারনে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে
প্রবশে করাবেন।(মুসনাদে আহমদ ১;২২৩) (২) রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,যে ব্যাক্তি দ"টি
মেয়েকে বয়ঃপ্রাপ্ত হ্ওয়া পর্যন্ত লালন পালন
করল সে কিয়ামতের দিন এরূপ অবস্থায় উঠবে যে আমি আর সে এরকম মিলিত অবস্থায় থাকব,এই বলে তিনি স্বীয় আঙ্গুলসমূহ মিলিয়ে দেখালেন।(মুসলিম শরীফ) (৩) রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,"কন্যা সন্তান হল
উত্তম সন্তান। কেননা,তারা হচ্চে অধিক গুনের
অধিকারিনী বিনম্র ও মিস্ঠভাষী । এছাড়া তারা পিতা-
মাতার সেবা -শুশ্রষার জন্য সদাসর্বদা প্রস্তুত
থাকে এবং তারা মায়া মমতাকারীনী,স্নেহময়ী,বিনয়ী ও বরকতময়ী।"(ফিরদাউস ৪;২৫৫) আর প্রথম সন্তান মেয়ে হ্ওয়ার ফযীলত সম্পর্কে হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল,
হযরত আব্দুল্লাহ উমর (রা.) বর্ণনা করেন,রাসুল
(সা.) ইরশাদ করেন,ঐ মহিলা বরকতময়ী ও সৌবাগ্যশালী,যার প্রথম সন্তান মেয়ে হয়। কেননা, সন্তানদানের নিয়ামত বর্ণনা করার ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা মেয়েকে আগে উল্লেখ করে বলেন,তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা
সন্তান দান করেন আর যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান
দান করেন।"কানযুল উম্মাহ ১৬:৬১১৷

উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৫৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

আমাদের কলেজে মেয়েদের সংখ্যা অনেক বেশি। এমনকি পরীক্ষার সময় মেয়েদের...

প্রশ্ন
আমাদের কলেজে মেয়েদের সংখ্যা অনেক বেশি। এমনকি পরীক্ষার সময় মেয়েদের সাথে বসতে হয়। কারণ
আমাদের রোল অনুযায়ী সিট প্ল্যান
করা হয়। এ অবস্থায় আমি কীভাবে
আমার মহামূল্যবান ঈমান ঠিক রাখতে
পারি?
উত্তর
আমাদের দেশে সরকারী/বেসরকারী বিভিন্ন মানের একাধিক বয়েজ কলেজ
আছে। আপনার কর্তব্য ছিল প্রথম থেকেই বয়েজ কলেজে এডমিশন নেয়া। সেক্ষেত্রে আর এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হত না। এখন যদি আপনার জন্য বয়েজ কলেজে ট্রান্সফার হওয়া সম্ভব হয় তাহলে তাই সমীচীন হবে। যতদিন তা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনি যথাসম্ভব দৃষ্টিকে সংযত রাখবেন। মেয়েদের সাথে উঠাবসা ও অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকবেন। আর কখনো ভুল হয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করবেন। দৃষ্টি ও মন হেফাযত রাখার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার সাহায্য প্রার্থনা করবেন। সময় পেলে হক্কানী আলেম ও আল্লাহ ওয়ালাদের
সাথে উঠাবসা করবেন এবং তাদের ওয়ায- নসীহত শুনবেন৷
প্রকাশ থাকে যে, সহশিক্ষার প্রচলিত পদ্ধতি সম্পূর্ণ শরীয়ত পরিপন্থী। এতে
পর্দার হুকুম লঙ্ঘনের গুনাহ ছাড়াও আরো অনেক গুনাহর আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ
ধরনের পরিবেশ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা মুসলমানের কর্তব্য।
-সূরা নূর : ৩০; তাফসীরে কুরতুবী ১২/১৪৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৩৭৩; ফাতহুল বারী ২/৩৯২; আলমাবসূত, সারাখসী ১০/১৫২
১৬/৪০; আলমাজমু ৪/৩৫০ আদিল্লাতুল হিজাব ৪৫৬-৪৭৪৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৫৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার পর আমরা শহরের মানুষ...

প্রশ্ন
নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার পর আমরা শহরের মানুষ তা কোথায় ফেলব?
কেননা শহরে দাফনের জায়গা পাওয়া
কঠিন। কমোডে ফেলা যাবে কি না?
দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার পর তা মাটিচাপা দেওয়াই উত্তম। তবে শহরে বা যেখানে মাটিচাপা দেওয়ার সুযোগ নেই সেখানে বাসার ময়লার ঝুড়িতে ফেলা যাবে। কিন্তু তা কমোডে না ফেলাই
উচিত।
আর যেসব পশম শরীরে থাকা অবস্থায় অন্যের জন্য দেখা নাজায়েয শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পর বা কাটার পরও তা দেখা নাজায়েয। তাই এ ধরনের পশম পরিষ্কার করে টয়লেটের ভেতর ফেলে দেওয়া যাবে। আর অন্য কোথাও ফেলতে চাইলে আলাদা কোনো কিছুতে ফেলা উচিত, যেন তা দেখা না যায়। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৬১৭১, ২৬১৭৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৯, ৫/৩৫৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৪১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪১১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৭১৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৩২
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

ঝাড়ফুক, তাবিজ, কবজের শরঈ বিধান কি? ¤ঝাড়ফুক, তাবিজ, কবজ দিয়ে...

প্রশ্ন
ঝাড়ফুক, তাবিজ, কবজের শরঈ বিধান কি?
¤ঝাড়ফুক, তাবিজ, কবজ দিয়ে বিনিময় 
নেওয়া কি জায়েয আছে?
উত্তর
ঝাড়ফুক তাবিজ কবজ চার শর্তে জায়েয আছে; (১) কুফুরী কালাম না হওয়া। (২) লেখাগুলো অস্পষ্ট না হওয়া। (৩) কোন নাজায়েয কাজের জন্য না হওয়া। (৪) এমন আক্বীদা না থাকা যে, তাবিজের মধ্যে ই ভালো করার ক্ষমতা রয়েছে। কারন ভালো করার মালিক একমাত্র আল্লাহ। ¤উল্যেখিত শর্ত অনুযায়ী ঝাড়ফুক, তাবিজ, কবজ দিয়ে বিনিময় নেওয়া জায়েয আছে। মুসলিম শরিফ, হাদিস নং ৫৬৭, মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা- হাদিস নং ২৪০১৩, ফতোয়ায়ে শামী - ৬/৩৬৩৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসিন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৭৮
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার পর আমরা শহরের মানুষ...

প্রশ্ন
নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার পর আমরা শহরের মানুষ তা কোথায় ফেলব? কেননা শহরে দাফনের জায়গা পাওয়া কঠিন। কমোডে ফেলা যাবে কি না? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
নখ, চুল বা পশম ইত্যাদি কাটার পর তা মাটিচাপা দেওয়াই উত্তম। তবে শহরে বা যেখানে মাটিচাপা দেওয়ার সুযোগ নেই সেখানে বাসার ময়লার ঝুড়িতে ফেলা যাবে। কিন্তু তা কমোডে না ফেলাই
উচিত।
আর যেসব পশম শরীরে থাকা অবস্থায় অন্যের জন্য দেখা নাজায়েয শরীর থেকে পৃথক হওয়ার পর বা কাটার পরও তা দেখা নাজায়েয। তাই এ ধরনের পশম পরিষ্কার করে টয়লেটের ভেতর ফেলে দেওয়া যাবে। আর অন্য কোথাও ফেলতে চাইলে আলাদা
কোনো কিছুতে ফেলা উচিত, যেন তা দেখা না যায়।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৬১৭১, ২৬১৭৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৯, ৫/৩৫৮; আলবাহরুর রায়েক
৮/২০৪;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৬৯
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

খুতবা চলাবস্থায় খুতবা প্রদানকারী এবং শ্রোতাদের জন্য আমর বিল মারূফ...

প্রশ্ন
খুতবা চলাবস্থায় খুতবা প্রদানকারী এবং শ্রোতাদের জন্য আমর বিল মারূফ এবং নাহী আনিল মুনকারের হুকুম কী? এ সময় কি তাদের উপর এ হুকুম প্রযোজ্য নয়?
উত্তর
খুতবা চলা অবস্থায় উপস্থিত মুসল্লিদের জন্য চুপ থেকে মনোযোগসহ খুতবা শোনা ওয়াজিব। এ সময় শ্রোতাদের জন্য দ্বীনী-দুনিয়াবী কোনো ধরনের কথা বলা নাজায়েয এবং কাউকে কথাবার্তা বলতে দেখলে তাকে মৌখিকভাবে বারণ করাও নিষেধ। মুসল্লিদের জন্য এ সময়ে শরীয়তের হুকুম হল, চুপ থাকা এবং মনোযোগসহ খুতবা
শোনা।
হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ইমাম খুতবা দেওয়ার সময় তুমি যদি পাশের ব্যক্তিকে বল ‘চুপ থাক’ তবে তুমি তা একটি অনর্থক কাজ করলে।-সহীহ বুখারী, হাসীস
৯৩৪
সুতরাং খুতবা চলা অবস্থায় শ্রোতাদের জন্য মৌখিকভাবে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার কোনো সুযোগ
নেই।
অবশ্য ফিকহবিদগণ বলেন, প্রয়োজন হলে মুখে নিষেধ না করে হাত বা মাথার ইশারা- ইঙ্গিতে পাশের ব্যক্তিকে কথাবার্তা বলা বা অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা যাবে। দেখুন : হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৪৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৯ কেননা ইশারা-ইঙ্গিতে নিষেধ করার বিষয়টি একাধিক সাহাবা-তাবেয়ীর আমল ও আসার দ্বারা প্রমাণিত আছে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আবদুল্লাহ ইবনে উমার রা., আবদুর রহমান ইবনে আবী লায়লা, যায়েদ বিন সূহান, সুফিয়ান সাওরী, আলকামা, ইবরাহীম নাখায়ী প্রমুখ। - মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৫২৫৯-৫২৬৩ আর খুতবা প্রদানকারী খুতবার মাঝে প্রয়োজনে লোকদেরকে কোনো দরকারি কথা বা আদেশ-নিষেধ করতে পারবেন। এটি হাদীস-আসার দ্বারা প্রমাণিত আছে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৫২৫৫, ৫২৫৭
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭৩৫
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: বিবিধ

যদি কোনো ব্যক্তি ফরয গোসলে নাকের ভেতরে পানি প্রবেশ না...

প্রশ্ন
যদি কোনো ব্যক্তি ফরয গোসলে নাকের ভেতরে পানি প্রবেশ না করিয়ে শুধু আঙ্গুল ভিজিয়ে নাকের ভিতরটা তিনবার ভিজিয়ে নেয় তাহলে তার গোসল হবে কি না? এবং নাকের ভিতরে পানি প্রবেশ করানো ও তা পরিষ্কার করার পদ্ধতি কি?
উত্তর
ফরয গোসলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো ফরয। শুধু আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতরটা ভিজিয়ে নেয়া যথেষ্ট নয়। এর দ্বারা নাকে পানি পৌঁছানোর ফরয আদায় হবে না। আর নাকে প্রথমে পানি পৌঁছাবে। এরপর বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতরটা পরিষ্কার করে নিবে যেন কোনো অংশ শুকনা না থেকে যায়। এভাবে তিনবার নাকের নরম অংশ পর্যন্ত পানি প্রবেশ করাবে। -সুনানে আবু দাউদ ১/১৯; সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২২২, ২৭৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৫১, ১১৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৬৬
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: বিবিধ

অনেক পুরুষ লোকদেরকে বিভিন্ন ধাতূর, লোহার, পিতলের, রৌপ্যের আংটি পরতে...

প্রশ্ন
অনেক পুরুষ লোকদেরকে বিভিন্ন ধাতূর, লোহার, পিতলের, রৌপ্যের আংটি পরতে দেখা যায়। এধরনের আংটি পরার বিধান কি?
উত্তর
পুরুষদের জন্য রৌপ্যের আংটি ছাড়া অন্য কোন ধরনের ধাতূর আংটি ব্যাবহার করা শরীয়ার দৃষ্টিতে জায়েয নেই। এবং রৌপ্যের পরিমান পাচ মাশা =
৪.৮৬ গ্রামের কম হতে হবে।
দলিলঃ-
আবু দাউদ, হাদিস নং ৪২২০; বাহার ৮/২৫০;মুহিত ৮/৪৯.
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৬৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: বিবিধ

ছোট ছেলে বাচ্চাদের হাতে মেহেদী লাগানোর শরয়ী বিধান কি? জানালে...

প্রশ্ন
ছোট ছেলে বাচ্চাদের হাতে মেহেদী লাগানোর শরয়ী বিধান কি? জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
বিনাপ্রয়োজনে ছেলে বাচ্ছাদের হাতে মেহেদী লাগানো মাকরুহ। তবে মেয়েরা তাদের সকল অঙ্গে মেহেদী লাগাতে পারবে।
দলিলঃ-
খানিয়া ৩/৪১৩; রদ্দুর মুহতার ৯/৫২২; হিন্দিয়া ৫/৩৫৯.
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২২৬
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: বিবিধ

বর্তমান বিশ্বে বিড়িসিগারেটের ব্যাপক ব্যবহার চলছে। এ ব্যাপারে ইসলামের হুকুম...

প্রশ্ন
বর্তমান বিশ্বে বিড়িসিগারেটের ব্যাপক ব্যবহার চলছে। এ ব্যাপারে
ইসলামের হুকুম কী? দ্বিতীয়ত বিড়ি-সিগারেট খাওয়া ও বিক্রির ব্যাপারে ইসলামের হুকুম কী?
উত্তর
বিড়িসিগারেট পান করা নাজায়েয। কেননা এতে নিজের শারীরিক ক্ষতি তো আছেই, পাশাপাশি অন্যেরও ক্ষতি করা হয়। মুখের দুর্গন্ধের দরুন মানুষ ও ফেরেশতাকে কষ্ট দেওয়া হয়। অপচয়ের বিষয়টিও রয়েছে। তাই তা যেমনিভাবে পান করা যাবে না। তেমনিভাবে তা বিক্রি করাও যাবে না। -আদ্দররুল মুখতার ৬/৪৫৯; রদ্দুল মুহতার ৫/২৯৫; তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২২৭; ফাতাওয়া ফী শুরবিন দুখান
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৪৪
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: বিবিধ

আমাদের গ্রামে লোকেরা সাধারণত গাছ থেকে সুপারি পাড়ায় এ শর্তে...

প্রশ্ন
আমাদের গ্রামে লোকেরা সাধারণত গাছ থেকে সুপারি পাড়ায় এ শর্তে যে, এক গাছ সুপারি পেড়ে দিলে দু গণ্ডা সুপারি দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুম কী?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত শর্তে সুপারি পাড়ানো জায়েয। তবে এক্ষেত্রে তার পাড়া সুপারি থেকেই বিনিময় দেওয়া হবে এমন শর্ত করা যাবে না এবং বিনিময় হিসেবে কোন মানের সুপারি দেওয়া হবে তা আগেই ঠিক করে নিতে হবে। অবশ্য পাড়া সুপারি থেকে দেওয়ার শর্ত না করা হলে পরবর্তীতে ঐ সুপারি থেকেও পারিশ্রমিক দেওয়া যাবে। -আলমুহীতুল বুরহানী ১১/৩৩৮; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ২/৫৩৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/১১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২৯-৩৩০
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৩৯
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: বিবিধ

স্বর্ণের চামচ ও রূপার গ্লাস ব্যবহার করা কি জায়েয আছে?...

প্রশ্ন
স্বর্ণের চামচ ও রূপার গ্লাস ব্যবহার করা কি জায়েয আছে? নারীদের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার করা তো জায়েয। তাহলে তাদের জন্য এগুলোর ব্যবহার কি জায়েয হবে? এছাড়া আজকাল কিছু কিছু গ্লাস এবং প্লেট এমন পাওয়া যায় যেগুলো স্বর্ণের পানি দ্বারা প্রলেপযুক্ত। উপর থেকে দেখতে স্বর্ণের মতোই লাগে, কিন্তু বাস্তবে স্বর্ণ নয়। এগুলো ব্যবহারের হুকুম কী?
উত্তর
মহিলাদের জন্য স্বর্ণের অলংকার ব্যবহার করা জায়েয হলেও স্বর্ণ-রূপার তৈরি চামচ, গ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার করা পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যই নাজায়েয। আর স্বর্ণ-চাঁদির পানি দ্বারা প্রলেপযুক্ত আসবাবপত্র ব্যবহার করা জায়েয আছে। এগুলো হাদীসের নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে এগুলোও ব্যবহার না করা উত্তম। কেননা এতে বিজাতিদের সাথে কিছুটা হলেও সাদৃশ্য হয়। -সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৮৩৭; ইলাউস সুনান ১৭/২৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩১৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩০৯
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: বিবিধ

যদি কোনো ব্যক্তি ফরয গোসলে নাকের ভেতরে পানি প্রবেশ না...

প্রশ্ন
যদি কোনো ব্যক্তি ফরয গোসলে নাকের ভেতরে পানি প্রবেশ না করিয়ে শুধু আঙ্গুল ভিজিয়ে নাকের ভিতরটা তিনবার ভিজিয়ে নেয় তাহলে তার গোসল হবে কি না? এবং নাকের ভিতরে পানি প্রবেশ করানো ও তা পরিষ্কার করার পদ্ধতি কি?
উত্তর
ফরয গোসলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো ফরয। শুধু আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতরটা ভিজিয়ে নেয়া যথেষ্ট নয়। এর দ্বারা নাকে পানি পৌঁছানোর ফরয আদায় হবে না। আর নাকে প্রথমে পানি পৌঁছাবে। এরপর বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতরটা পরিষ্কার করে নিবে যেন কোনো অংশ শুকনা না থেকে যায়। এভাবে তিনবার নাকের নরম অংশ পর্যন্ত পানি প্রবেশ করাবে। -সুনানে আবু দাউদ ১/১৯; সুনানে ইবনে মাজাহ ৩৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২২২, ২৭৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৫১, ১১৫
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০৬৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: বিবিধ

কিছুদিন আগে আমি দশটি মেহগনি গাছ বিক্রি করি। ক্রেতা গাছগুলো...

প্রশ্ন
কিছুদিন আগে আমি দশটি মেহগনি গাছ বিক্রি করি। ক্রেতা গাছগুলো শেকড়সুদ্ধ কেটে নিতে চায়। এ নিয়ে আমাদের মাঝে ঝগড়া হয়। আমি চাচ্ছি, ক্রেতা সেগুলো মাটির উপর থেকেই কেটে নিয়ে যাক। কেননা দুটো গাছ একেবারে আমার বাড়ি লাগোয়া। যেগুলো শেকড়সুদ্ধ উপড়াতে গেলে আমার বাড়ির দেয়াল ধ্বসে পড়ার প্রবল আশঙ্কা আছে। এ ব্যাপারে ইসলামী শরীয়তের আলোকে সঠিক সিদ্ধান্ত জানালে কৃতার্থ হব।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাড়ির সাথে লাগোয়া গাছ দুটো শেকড়সহ কেটে নিলে যেহেতু মালিকের ক্ষতি হবে তাই ক্রেতার জন্য গাছ দুটো শেকড়সহ কেটে নেওয়া বৈধ হবে না। মাটির উপর থেকেই কেটে নিতে হবে। আর অবশিষ্ট গাছগুলো আপনার এলাকার
প্রচলন
অনুসারে ক্রেতা কেটে নিতে পারবে। যদি শেকড়সহ নেওয়ার প্রচলন থাকে তবে ক্রেতার এ অধিকার থাকবে। -রদ্দুল মুহতার ৪/৫৫৪; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৯৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/২৮৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৩৫

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০৪৯
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: বিবিধ

ফরজ গোসলে নাকের নরম জায়গায় পানি দেওয়া ফরজ? নাকি নাকে...

প্রশ্ন
ফরজ গোসলে নাকের নরম জায়গায় পানি দেওয়া ফরজ? নাকি নাকে পানি দেওয়া ফরজ ? জানতে চাই।
উত্তর
হ্যাঁ। ফরয গোসলে নাকের নরম জায়গায় পানি পৌঁছানো ফরয।
সুত্রঃআলমগীরি ১/৬-১৩, বাহর ১/৮৭, শামী ১/১১৬, বাদায়ে ১/১৪২, হাক্কানিয়া ৫/৫২১-২২

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০০২
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: বিবিধ

আমরা বিভিন্ন পাঠাগার থেকে অনেক সময় কিতাব নিয়ে আসি। কখনো...

প্রশ্ন
আমরা বিভিন্ন পাঠাগার থেকে অনেক সময় কিতাব নিয়ে আসি। কখনো কোনো কোনো কিতাবে ভুল পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে ভুলগুলো কেটে সহীহ করে দেওয়া কি জায়েয হবে?
উত্তর
পাঠাগার কিংবা কোনো ব্যক্তির বই এনে অনুমতি ছাড়া তাতে কোনোরূপ দাগ দেওয়া, কাটাকাটি করা বা ভুল সংশোধন করা জায়েয নয়। কর্তৃপক্ষের অনুমতি থাকলেও শুধু নিজ ধারণাবশত এরূপ করা অনুচিত। তাই কোনো ভুল ধরা পড়লে তা যথাযথ তাহকীকের পর ভিন্ন একটি কাগজে লিখে কিতাবের ঐ স্থানে রেখে দেওয়া যেতে পারে এবং কর্তৃপক্ষকেও তা অবহিত করা যেতে পারে। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৮৮; শরহু মানযুমাতে ইবনে ওহবান ২/৫৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৮৬

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন