ফতোয়া: কুরবানী

ফতোয়া নং: ৭২৬১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এ বছর কোনো এক কারণে আমাদের কুরবানী বিলম্বিত হয়ে যায়।...

প্রশ্ন

এ বছর কোনো এক কারণে আমাদের কুরবানী বিলম্বিত হয়ে যায়। কুরবানীর ২য় দিন মাগরিবের পর আমরা কুরবানী করি। প্রশ্ন হল, রাতে কুরবানী করা সহীহ কি না? যদি সহীহ না হয় তাহলে এখন আমদের করণীয় কী?

উত্তর

দশ যিলহজ্ব ঈদের নামাযের পর থেকে বার তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত দিনে ও রাতে যে কোনো সময় কুরবানী করা সহীহ। আপনাদের কুরবানীও সহীহ হয়েছে।

অবশ্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকলে রাতে কোনো পশু যবাই করা অনুত্তম। কারণ অন্ধকারে করলে যবাইয়ে ভুলত্রুটি হতে পারে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে যবাই করা দোষণীয় নয়।

-কিতাবুল আছল ৫/৪১২; মাবসূত, সারাখসী ১২/১৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৬০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ের জন্য একটি গরু দিয়ে...

প্রশ্ন

আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ের জন্য একটি গরু দিয়ে আকীকা করতে চাচ্ছি। পরিবারে অনেকে সংশয় প্রকাশ করে বলছে, গরু দিয়ে আকীকা শুদ্ধ হবে কি না? আমার জানার বিষয় হল, গরু দিয়ে কি আকীকা করা জায়েয আছে? বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

হ্যাঁ। গরু, মহিষ ও উট দ্বারাও আকীকা করা জায়েয আছে। হযরত আনাস রা. উট দ্বারা সন্তানদের আকীকা করেছেন। -তবারানী, কাবীর, হাদীস ৬৮৫; মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/৯৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৪৭৫৫

বাকি থাকলো যে, প্রত্যেক সন্তানের জন্য একেকটি পশু দ্বারা আকীকা করা হবে, না কয়েকজনের জন্য একটি গরু-মহিষ দ্বারা আকীকা করলেও তা আদায় হয়ে যাবে এটি একটি ইজতেহাদী মাসআলা। কোন কোন আলেমের মতে কুরবানীর মত আকীকাও কয়েকজনের জন্য একটি গরু বা মহীষ দ্বারা করা যাবে।

উল্লেখ্য, গরু-মহিষ দ্বারা আকীকা করা জায়েয হলেও ছাগল দ্বারা আকীকা করা উত্তম। কেননা ছাগল দিয়ে আকীকা করার কথা হাদীস শরীফে বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে।

উম্মে কুরয ও আবু কুরয থেকে বর্ণিত আছে, তারা বলেন,

نَذَرَتِ امْرَأَةٌ مِنْ آلِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ إِنْ وَلَدَتِ امْرَأَةُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ نَحَرْنَا جَزُورًا، فَقَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: لَا بَلِ السُّنَّةُ أَفْضَلُ عَنِ الْغُلَامِ شَاتَانِ مُكَافِئَتَانِ، وَعَنِ الْجَارِيَةِ شَاةٌ.

আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর এর বংশের এক মহিলা এই বলেছিলেন যে, আবদুর রহমানের স্ত্রী সন্তান প্রসব করলে আমরা একটি উট যবাই করব। তখন আয়েশা রা. বললেন, না; বরং সুন্নাহর অনুসরণ উত্তম। ছেলের জন্য উপযুক্ত দুটি ছাগল আর মেয়ের জন্য একটি ছাগল। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯

হযরত উম্মে কুরয রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আকীকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,

عَنِ الغُلَامِ شَاتَانِ، وَعَنِ الأُنْثَى وَاحِدَةٌ

পুত্রসন্তানের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর কন্যাসন্তানের পক্ষ থেকে একটি ছাগল যবাই করবে। (জামে তিরমিযী ১/১৮৩)

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৪৭২৫; ইলাউস সুনান ১৭/১১৭; ফাতহুল বারী ৯/৫০৭; আলমাজমূ শরহুল মুহাযযাব ৮/৪৩১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৫৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় দুটি মসজিদ আছে। নিকটস্থ মসজিদে ঈদের দুটি জামাত...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় দুটি মসজিদ আছে। নিকটস্থ মসজিদে ঈদের দুটি জামাত হয়েছে। একটি ৭:৩০ মিনিটে, অপরটি ৮:৩০ মিনিটে।

আমরা সাত শরিকে কুরবানী দিয়েছি। এক শরিক দ্বিতীয় জামাতে নামায পড়েছে। আমাদের কথা ছিল সকলে প্রথম জামাতে নামায পড়ে এসে কুরবানীর পশু যবাই করব। সে অনুপাতে আমরা প্রথম জামাতে নামায পড়ে এসেই পশু যবাই করে দেই। পরে জানা গেল আমাদের এক শরিক তখনও ঈদের নামায পড়েনি। লোকজন বলছে শরিকের নামায পড়ার আগে কুরবানী করার কারণে আমাদের কুরবানী নাকি হয়নি। এখন আমাদের করণীয় কী?

উত্তর

লোকদের ঐ কথা ঠিক নয়। আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। কারণ এলাকার কোনো স্থানে ঈদের নামায হয়ে গেলেই উক্ত এলাকাবাসীর জন্য কুরবানী করা জায়েয হয়ে যায়। এমনকি ঐ সময় যে নামায পড়েনি তারও কুরবানী সহীহ। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু এলাকার ঈদগাহে নামায হয়েছে সুতরাং কোনো একজন শরিকের নামায পড়া না হলেও সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে।

-বাদায়েউস সনায়ে ৪/২১১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৭৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৩৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

ক) এক ব্যক্তির ছেলে খুব অসুস্থ ছিল। এক পর্যায়ে সে...

প্রশ্ন

ক) এক ব্যক্তির ছেলে খুব অসুস্থ ছিল। এক পর্যায়ে সে মানত করল যে, আমার সন্তান সুস্থ হলে একটা কুরবানী করব। এখন সে একটা গরুতে মানতের একভাগ দিতে চাচ্ছে। ঐ গরুতে অন্যদের কুরবানীর অংশ আছে। এভাবে কুরবানী করা কি জায়েয হবে?

খ) আর ঐ মানতের কুরবানী করার পর ঐ ব্যক্তিকে নিজ কুরবানীও কি আদায় করতে হবে? নাকি ঐ মানতের দ্বারাই তার নিজের কুরবানীও আদায় হয়ে যাবে?

উত্তর

ক) হাঁ, কুরবানীর গরুতে মানতের অংশ দেওয়া জায়েয হবে এবং এর দ্বারা কুরবানী ও মানতসবই আদায় হবে।

খ) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মানতের জন্য আপনাকে একটি কুরবানী দিতে হবে। আর আপনার উপরকুরবানী ওয়াজিব হলে আপনাকে ভিন্ন করে আরেকটি কুরবানীও দিতে হবে।

-বাদায়উেস সনায়ে ৪/২০৯, ১৯৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২২৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের কাফেলার কয়েকজন মুযদালিফা থেকে মিনায় না গিয়ে সরাসরি মক্কায়...

প্রশ্ন

আমাদের কাফেলার কয়েকজন মুযদালিফা থেকে মিনায় না গিয়ে সরাসরি মক্কায় চলে গেছে। মক্কায় গিয়ে তাওয়াফে যিয়ারত করেছে। অথচ তারা কংকর মারেনি, হালালও হয়নি। এ কারণে তাদের কি দম দিতে হবে? তাদের এ তাওয়াফে যিয়ারত কি আদায় হয়েছে?

উত্তর

হাঁ, তাদের তাওয়াফে যিয়ারত আদায় হয়েছে। তবে কংকর, কুরবানী ও হলক করার আগেতাওয়াফ করার কারণে মাকরূহ হয়েছে। সুন্নত হল, মুযদালিফা থেকে এসে আগে কংকর মারাএরপর কুরবানী করে হলক করে তাওয়াফে যিয়ারত করা।

-মানাসিক, মোল্লা আলি আলকারি পৃ. ২৩৩; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ১৭৮; রদ্দুল মুহতার ২/৫১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আম্মু বলেছিলেন এ বছর কুরবানী করবেন। তাই কয়েক মাসের টাকা...

প্রশ্ন

আম্মু বলেছিলেন এ বছর কুরবানী করবেন। তাই কয়েক মাসের টাকা জমিয়ে একটি ছাগল ক্রয় করেছি। কিন্তু কুরবানীর আগের দিন আম্মুর প্রচণ্ড পেট ব্যথা শুরু হয়। আম্মুকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়ঝাঁপ করতে করতে ৫-৭ দিন চলে যায়। এমনকি কুরবানীর সময়ও শেষ হয়ে যায়। কাউকে কুরবানী করার জন্য বলব সে খেয়ালটুকুও ছিল না। এ অবস্থায় উক্ত পশু দ্বারা আমি কী করব? যবাই করে খাওয়া বা বিক্রি করা কি জায়েয আছে? নাকি গরিব-মিসকীনকে দিয়ে দিতে হবে?

উত্তর

এখন ছাগলটি যবাই করে খাওয়া বা বিক্রি করা কোনোটিই জায়েয হবে না। কুরবানীর উদ্দেশ্যে ক্রয়ের পর কুরবানীর নির্ধারিত সময় (১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত) যেহেতু পার হয়ে গেছে এখন উক্ত পশু জীবিতই ফকির-মিসকীনকে সদকা করে দিতে হবে।

-শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৭/৩৪২; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৯৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি একজন লোকাল বাসচালক। কুরবানীর দিন আমার গাড়িতে কিছু গোশত...

প্রশ্ন

আমি একজন লোকাল বাসচালক। কুরবানীর দিন আমার গাড়িতে কিছু গোশত পাই। যার ওজন প্রায় ১০/১১ কেজি হবে। সাথে সাথে আমি বাসস্ট্যান্ডে ঘোষণা করে দিয়েছি। কিন্তু একদিন এক রাত পার হওয়ার পরও মালিকের কোনো খোঁজ পাইনি।

পরে এ বিষয়ে এক আলেমের সাথে কথা বললে তিনি জানালেন, যদি সম্ভব হয় বিক্রি করে টাকা রাখেন। মালিক এলে তাকে দিয়ে দিবেন। না হয় কোনো গরীবকে সদকা করে দিবেন।

কিন্তু কুরবানীর সময় ঘরে ঘরে তো গোশত তাই কাউকে বিক্রি করতে পারিনি। পরে আমার এক গরিব ছেলে যার সংসার ভিন্ন তাকে দিয়ে দিয়েছি।

জানার বিষয় হল, নিজ সন্তানকে প্রাপ্ত/কুড়ানো সম্পদ দেওয়া কি ঠিক হয়েছে? তার জন্য তা বৈধ হবে কি?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু ঘোষণার পরও মালিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি তাই গোশতগুলো আপনার গরীব সন্তানকে দিয়ে দেওয়া ঠিক হয়েছে এবং তার জন্য সেগুলো খাওয়া জায়েয।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৭/৪২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/২৯১; আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৭৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৯৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি ও আমার স্ত্রী দেশেই থাকি। কিন্তু আমাদের ছেলে-মেয়ে সবাই...

প্রশ্ন

আমি ও আমার স্ত্রী দেশেই থাকি। কিন্তু আমাদের ছেলে-মেয়ে সবাই লন্ডনে থাকে। আমরাও মাঝে মাঝে গিয়ে তাদের সাথে কিছুদিন থেকে আসি। দেশে যেহেতু আমাদের সন্তানাদি কেউ নেই তাই এখানে আমাদের জন্য কুরবানী দেওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার। তাই আমাদের সন্তানরা চাচ্ছে আমাদের পক্ষ থেকে তারা লন্ডনে কুরবানী করে দিবে। কিন্তু তারা আমাদের থেকে একদিন আগে কুরবানী করে। অতএব তারা যদি তাদের কুরবানীর সময় আমাদের পক্ষ থেকেও কুরবানী করে দেয় তবে কি তা সহীহ হবে? এবং এর দ্বারা কি আমাদের কুরবানী আদায় হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ছেলেরা যদি আপনার পক্ষ থেকে ঐ দেশে কুরবানী করে তাহলে বাংলাদেশে কুরবানীর সময় হওয়ার পরই সেটি করা সমীচিন হবে। অবশ্য ঐ দেশে কুরবানীর সময় হয়ে যাওয়ার পরও যদি তারা সেখানে আপনার কুরবানী আদায় করে দেয় তবে তা আদায় হয়ে যাবে। কেননা কুরবানী আদায়ের জন্য পশু যেখানে যবাই করা হবে সেখানকার সময় মুখ্য। পশু যবাইকারীর স্থানে কুরবানীর সময় হয়ে গেলেই কুরবানী করা সহীহ হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩/৩৪৫; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৮; ফাতাওয়া রহীমিয়া ১০/৪০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৯৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু কিনতে আমরা তিন ভাই হাটে গেলাম। কিন্তু পশুর...

প্রশ্ন

কুরবানীর পশু কিনতে আমরা তিন ভাই হাটে গেলাম। কিন্তু পশুর দাম বেশি হওয়ায় আমরা কিনতে পারছি না। এক ভাই বলল, আমাদের দুই চাচা তো এখনো কোনো পশু ক্রয় করেনি। তাদেরকে আমাদের সাথে শরিক করলে তো হয়ে যায়। এ বলে আমরা উক্ত পশু ক্রয় করে নিলাম। কিন্তু বাসায় আসার পর এক চাচা বলল, না, এ কুরবানী সহীহ হবে না। তিনি বললেন, শরিকের মাসআলা তোমরা বুঝ? এ বলে তিনি আমাদের সাথে শরিক হতে চাইলেন না। তাই জানার বিষয় হল, আসলেই কি এ পশু দ্বারা কুরবানী হবে না? সঠিক মাসআলা জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

কুরবানীর পশুটি ক্রয়ের সময় যেহেতু আপনার দুই চাচাকে শরিক করার নিয়ত ছিল তাই তাদেরকে উক্ত পশুতে শরিক নিতে কোনো সমস্যা নেই। অবশ্য পশু ক্রয়ের সময় শরিক করার নিয়ত না থাকলে পরবর্তীতে শরিক করা উচিত নয়। তবে সেক্ষেত্রেও শরিক নিলে সকলের কুরবানী হয়ে যাবে। আর এক্ষেত্রে (অর্থাৎ শরিক নেওয়ার নিয়ত না থাকলে) শরিকদের থেকে প্রাপ্ত টাকা সদকা করে দেওয়া বাঞ্ছনীয় হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৭; মাবসূত, সারাখসী ১২/১৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৫১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৯৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি ফার্মের মুরগি বিক্রি করি। কিছুদিন আগে এক লোক ২০টা...

প্রশ্ন

আমি ফার্মের মুরগি বিক্রি করি। কিছুদিন আগে এক লোক ২০টা মুরগির অর্ডার দিয়েছেন। ছোট থেকেই জানতাম যে, পশু যবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহ, আল্লাহু আকবার বলে যবাই করতে হয়। এটাই আমার বদ্ধমূল ধারণা ছিল। কিন্তু ঐদিন লোকটির সামনে মুরগিগুলো যবাইয়ের সময় শুধু বিসমিল্লাহ বলে যবাই করছিলাম। লোকটা জিজ্ঞাসাও করেছিল, আপনি কি বিসমিল্লাহ, আল্লাহু আকবার বলেন নাই? আমি বললাম, হাঁ, বলেছি। আমি মিথ্যা বললাম। কিন্তু পরে ভয় হল, আমি তো কাজটা ঠিক করিনি। এখন আমার কী করণীয় তাও বুঝতে পারছি না। দয়া করে আমার করণীয় কী তা জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

যবাইয়ের সময় শুধু বিসমিল্লাহ বললেও যবাই সহীহ হয়ে যায়। তাই আপনার যবাই করা সহীহ হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

فَكُلُوْا مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللهِ عَلَیْهِ.

সুতরাং এমন সব হালাল পশু থেকে খাও, যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে। -সূরা আনআম (৬) : ১১৮

তবে ফকীহগণ নিম্নোক্ত হাদীসের আলোকে بِسْمِ اللهِ اَللهُ أَكْبَر পুরাটা বলাকেই মুস্তাহাব বলেছেন। আনাস রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

ضَحَّى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِكَبْشَيْنِ أَمْلَحَيْنِ، فَرَأَيْتُهُ وَاضِعًا قَدَمَهُ عَلَى صِفَاحِهِمَا، يُسَمِّي وَيُكَبِّرُ، فَذَبَحَهُمَا بِيَدِهِ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি সাদা কালো রংয়ের ভেড়া দ্বারা কুরবানী করেছেন। দেখলাম, তিনি ভেড়া দুটোর গর্দানের পাশে পা রেখে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে নিজ হাতেই দুটোকে যবাই করলেন।

-সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৫৮; ফাতহুল বারী ১০/২০; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৬৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩০১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৭৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এবার কুরবানীর ঈদে আমাদের মহল্লায় ১০/১১ বছরের এক ছাত্র স্বাভাবিক...

প্রশ্ন

এবার কুরবানীর ঈদে আমাদের মহল্লায় ১০/১১ বছরের এক ছাত্র স্বাভাবিক নিয়মে একটি গরু যবাই করে। কিন্তু পরে একজন বলল, কুরবানীর পশু যবাইকারীর বালেগ হতে হবে। ১৫ বছরের কম বয়সের কেউ যবাই করলে কুরবানী সহীহ হয় না। জানতে চাই, এ লোকের কথা কি ঠিক? এক্ষেত্রে সঠিক মাসআলা কী আর উক্ত কুরবানীর কী হুকুম?

উত্তর

বুঝমান না-বালেগ যদি সঠিক পন্থায় পশু যবাই করে তাহলে তা সহীহ হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, বালেগ-না-বালেগ, পুরুষ-মহিলা যে-ই (পশু) যবাই করুক তা খাও। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক,হাদীস: ৮৫৫২) মুজাহিদ রাহ. বলেন, না-বালেগের জবাইয়ে কোনো সমস্যা নেই। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৮৫৫৪) তবে জবাই যেন সঠিকভাবে হয় তাই বালেগ সক্ষম ব্যক্তিরই জবাই করা উচিত।

-কিতাবুল আছল ৫/৪০০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৩৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/২৯৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৬৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত কুরবানীর ঈদে লঞ্চে বাড়ি যাওয়ার সময় ভুলক্রমে আমি একটি...

প্রশ্ন

গত কুরবানীর ঈদে লঞ্চে বাড়ি যাওয়ার সময় ভুলক্রমে আমি একটি টিকেট বেশি কিনে ফেলি। চারটার জায়গায় পাঁচটা কিনে ফেলি। পরে ঐ টিকেটটি কিছু বেশি টাকায় একজনের কাছে বিক্রি করি। আমি জানতে চাই, আমার জন্য অতিরিক্ত টাকাটা বৈধ হবে কি না?

উত্তর

ঐ টিকেটটি অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করা জায়েয হয়নি। তাই অতিরিক্ত মূল্য ব্যবহার করা আপনার জন্য না-জায়েয। মালিক জানা থাকলে তাকে ফেরত দিতে হবে। আর মালিক জানা না থাকলে তা কোনো গরীবকে সদকা করে দিতে হবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৩৭৬০, ২৩৭৫৩; মাবসূত, সারাখসী ১৫/১৩০; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৬৭; আলবাহরুর রায়েক ৭/৩০৪; রদ্দুল মুহতার ৬/২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এ বছর কুরবানীর ঈদের দিনের ঘটনা। আমি ঈদের নামায পড়তে...

প্রশ্ন

এ বছর কুরবানীর ঈদের দিনের ঘটনা। আমি ঈদের নামায পড়তে গিয়েছি। নামায শেষ করে এসে দেখি, আমার কুরবানীর পশু কুরবানী করা হয়ে গেছে। জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম, একটু আগে কসাইরা গরু বানানোর জন্য এসে পড়ে। তারা বলল, গরু যেহেতু আপনাদের একারই তাই এখনই কুরবানী করে ফেলি। তাহলে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হয়ে যাবে। আপনারাও আগেভাগে রান্না বান্না করে ফেলতে পারবেন। বাসার লোকদের সম্মতিক্রমে তারা কুরবানী করে ফেলে। এখন আমার উক্ত কুরবানী সহীহ হয়েছে কি?

উত্তর

আপনার পশুটি কুরবানী করার আগে ঐ এলাকার কোথাও যদি ঈদের নামায হয়ে থাকে কিংবা আপনাদের নামায শেষ হয়ে যাওয়ার পর তারা কুরবানী করে থাকে তাহলে কুরবানী সহীহ হয়েছে। কিন্তু যদি তারা কুরবানী করার আগে আপনাদের নামায কিংবা আপনার এলাকার নামায কোনোটাই শেষ না হয়ে থাকে তবে আপনার ঐ কুরবানী সহীহ হয়নি। সেক্ষেত্রে কুরবানীর দিনগুলোর মধ্যে আরেকটি পশু কুরবানী করতে হবে। আর কুরবানীর দিনগুলো অতিক্রম হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে আপনাকে একটি কুরবানীযোগ্য পশুর মূল্য সদকা করতে হবে। তাই আপনার উচিত ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে সময়টি যাচাই করে নেওয়া। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, জুনদুব বিন সুফিয়ান রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ঈদের নামাযে শরীক হয়েছি। নামায শেষে বাইরে এসে তিনি যবাইকৃত ছাগল দেখলেন। তখন বললেন,

مَنْ كَانَ ذَبَحَ أُضْحِيَّتَهُ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ -أَوْ نُصَلِّيَ- فَلْيَذْبَحْ مَكَانَهَا أُخْرَى، وَمَنْ كَانَ لَمْ يَذْبَحْ، فَلْيَذْبَحْ بِاسْمِ اللهِ.

যে নামাযের আগে যবাই করেছে সে যেন সেটির বদলে অন্য একটি ছাগল কুরবানী করে। আর যে কুরবানী করেনি সে যেন আল্লাহর নামে কুরবানী করে।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯৬০; কিতাবুল আছল ৫/৪০৫; মাবসূত, সারাখসী ১২/১০; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১১; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬১; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৩৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা জানি, গরুতে একাকী বা সাত শরীকে কুরবানী করা জায়েয।...

প্রশ্ন

আমরা জানি, গরুতে একাকী বা সাত শরীকে কুরবানী করা জায়েয। এর কমে জায়েয নয়। কিন্তু আমার বড় ভাই এ বছর ছয় শরীকে কুরবানী করেছেন। সুতরাং তার কুরবানী কি সহীহ হয়েছে? তাকে কি পুনরায় কুরবানী করতে হবে?

উত্তর

সাত শরীকের কমে গরু কুরবানী করা জায়েয নয়- এমন ধারণা ভুল। একটি গরুতে এক থেকে সাত পর্যন্ত যে কোনো অংশে কুরবানী করা যাবে। সুতরাং আপনার বড় ভাইয়ের কুরবানী আদায় হয়েছে।

-কিতাবুল আছল ৫/৪০৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৩৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা কয়েকজন মিলে এ বছর একটি ষাঁড় গরু কুরবানী করেছি।...

প্রশ্ন

আমরা কয়েকজন মিলে এ বছর একটি ষাঁড় গরু কুরবানী করেছি। গরুটি খুব শক্তিশালী ছিল। তাই কুরবানীর সময় বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে। একবার শোয়ানোর পর সেটি আচমকা লাফিয়ে উঠে। এরপর পায়ে রশি বেঁধে টান দেওয়া হয়। ফলে পশুটি সামনের পায়ের উপর পড়ে পা দুটি বাঁকা হয়ে মচকে যায়। এরপর গরুটি আর পা নাড়াতে পারেনি। সম্ভবত পা দুটি ভেঙ্গে গেছে। এখন উক্ত পশু দ্বারা আমাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে কি?

উত্তর

হাঁ, উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী সহীহ হয়েছে। কারণ যবাই করার সময় শোয়াতে গিয়ে কিংবা কোনো কারণে যদি পশুর কোনো অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে সেটি কুরবানীর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয় না। ঐ পশু দ্বারা কুরবানী সহীহ হয়ে যায়।

-কিতাবুল আছল ৫/৪১০; মাবসূত, সারাখসী ১২/১৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬-২১৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৭; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা তিনজনে সমান টাকা দিয়ে একটি গরু কিনে কুরবানী দিই।...

প্রশ্ন

আমরা তিনজনে সমান টাকা দিয়ে একটি গরু কিনে কুরবানী দিই। এক ভাই বললেন আমাদের কুরবানী আদায় হয়নি। কারণ হিসাবে তিনি বললেন সপ্তম ভাগটিতে আমরা তিনজনই শরীক। আর কোনো ভাগে একাধিক ব্যক্তির অংশ থাকলে কুরবানী সহীহ হয় না। তাই আপনাদের কুরবানীও আদায় হয়নি। লোকটির কথা কি ঠিক? আসলেই কি আমাদের কুরবানী আদায় হয়নি?

উত্তর

আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। লোকটির কথা ঠিক নয়। গরু, মহিষ, উটে এক সপ্তমাংশ বা তার বেশি একাধিক অংশ জোড় বেজোড় বা ভগ্নাংশেও কুরবানী দেওয়া জায়েয আছে। যেমন প্রশ্নোক্ত অবস্থায় প্রত্যেকের অংশ হয়- ২.৩৩ অংশ করে। এভাবে দেড়, আড়াই বা কমবেশী অংশ দেওয়াও জায়েয হবে। শুধু শর্ত হল কোনো শরীকের অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হওয়া।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১৭৪; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৫৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১৩৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের গরুর পাল আছে। একটি গরুর বয়স দুই বছর পূর্ণ...

প্রশ্ন

আমাদের গরুর পাল আছে। একটি গরুর বয়স দুই বছর পূর্ণ হয়নি। কিন্তু মোটা তাজা হওয়ার কারণে দুই বছর বয়সী গরুর চেয়েও বড় মনে হয়। এক ব্যক্তি বলল ঐ গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে। তাই তা দিয়ে আমি কুরবানী দিই। আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব বিষয়টি জানতে পেরে বললেন ঐ গরু দ্বারা আপনার কুরবানী সহীহ হয়নি। জানতে চাই বাস্তবেই কি আমার কুরাবনী সহীহ হয়নি? যদি না হয় তাহলে এখন আমার করণীয় কী?

উত্তর

জী, ঐ গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ হয়নি। ইমাম সাহেব ঠিকই বলেছেন। কেননা গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ হওয়ার জন্য গরুর বয়স চান্দ্রমাস হিসাবে কমপক্ষে দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। দুই বছরের কম বয়সী গরু মোটা তাজা হওয়ার কারণে বেশি বয়সের মনে হলেও তা দ্বারা কুরবানী সহীহ নয়। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

لَا تَذْبَحُوا إِلَّا مُسِنَّةً، إِلَّا أَنْ يَعْسُرَ عَلَيْكُمْ، فَتَذْبَحُوا جَذَعَةً مِنَ الضَّأْنِ.

তোমরা (কুরবানীতে ) ‘মুসিন্না’ ছাড়া যবেহ করবে না। তবে সংকটের সময় ছ’মাস বয়সী ভেড়া দুম্বা যবেহ করতে পারবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৯৬৩

হাদীস শরীফে যে ‘মুসিন্না’ পশু যবেহ করতে বলা হয়েছে, গরু মহিষের ক্ষেত্রে মুসিন্না হল যার বয়স দু’বছর পূর্ণ হয়ে তৃতীয় বৎসরে পড়েছে।

সুতরাং ঐ গরু দ্বারা যেহেতু আপনার কুরবানী আদায় হয়নি তাই এখন আপনার কর্তব্য হল কুরবানীযোগ্য যে কোনো একটি পশুর মূল্য সদকা করে দেয়া।

-শরহুন নববী আলা সহীহি মুসলিম ১৩/১১৭; আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৮৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৯৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের কাফেলায় সকলেই তামাত্তু হজ্বকারী। একজন বদলি আদায়কারী ছিল। আপনাদের...

প্রশ্ন

আমাদের কাফেলায় সকলেই তামাত্তু হজ্বকারী। একজন বদলি আদায়কারী ছিল। আপনাদের কাছে হজ্ব সংক্রান্ত একটি মাসআলা জানতে চাই তা হল, হাজ্বীগণ বড় জামরায় পাথর মারার পর কুরবানীর পূর্বেই কি মাথা মুণ্ডাতে পারবে? দু ধরনের কথাই শুনেছি। গতবার আমাদের সাথে এক ব্যক্তি বদলি হজ্ব করেছে সে হজ্বের কুরবানী দেয়নি। পাথর মারার পর আমাদের কুরবানীর আগেই সে মাথা মুণ্ডিয়ে নিল। তার এ কাজ কি ঠিক হয়েছে? সঠিক মাসআলা জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

ইফরাদ হজ্বকারীর উপর দমে শোকর অর্থাৎ হজ্বের কুরবানী করা ওয়াজিব নয়। বরং মুস্তাহাব। তাই ইফরাদ হজ্বকারী কুরবানী করলেও কুরবানীর পূর্বে তার জন্য চুল কাটা জায়েয। তবে কুরবানীর ইচ্ছা থাকলে তার জন্য কুরবানীর পরই চুল কাটা উত্তম। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বদলি আদায়কারী ইফরাদ হজ্বকারী হয়ে থাকলে তার এ কাজ ঠিক হয়েছে। আর কিরান বা তামাত্তুকারী হাজ্বী সাহেবগণের উপর দমে শোকর আদায় করা ওয়াজিব। তাদের জন্য কুরবানীর আগে চুল কাটা জায়েয নয়। তাদের জন্য চুল কাটার পূর্বে কুরবানী করা ওয়াজিব। এই ধারাবাহিকতা ভঙ্গ হলে দম দেওয়া জরুরি হবে।

-শরহু মাআনিল আছার ১/৪৪৮; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ২২৫; ফাতহুল কাদীর ২/৪৭২; মাজমাউল আনহুর ১/৪৩৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৫৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৬২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

ক) যদি কুরবানীর পশুর পেটে মৃত বাচ্চা পাওয়া যায় তবে...

প্রশ্ন

ক) যদি কুরবানীর পশুর পেটে মৃত বাচ্চা পাওয়া যায় তবে তার বিধান কি? সেটা খাওয়া যাবে, নাকি ফেলে দিবে?

খ) নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি কুরবানীর সময় সাময়িক ঋণগ্রস্ত হয় তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে কি?

উত্তর

ক) কুরবানীর পশুর পেটে মৃত বাচ্চা পাওয়া গেলে বাচ্চার গোশত খাওয়া যাবে না। তা ফেলে দিতে হবে। তবে মূল পশুর গোশত খাওয়া যাবে এবং কুরবানী সহীহ হবে। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৬৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৭; রদ্দুল মুহতার ৩/৬৫৬

প্রকাশ থাকে যে, যে পশুর গর্ভ অল্প দিনের ঐ পশু দ্বারা কুরবানী করা অনুত্তম। আর বাচ্চা হওয়ার সময় নিকটবর্তী হলে সে পশু দ্বারা কুরবানী করা মাকরূহ।

খ) নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি কুরবানীর দিনগুলোতে সাময়িক ঋণগ্রস্ত থাকে যা পরিশোধ করে দিলে তার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে না তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। আর যদি ঋণ আদায় করে দিলেও নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৩২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের মহল্লা-মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ প্রয়োজন।...

প্রশ্ন

আমাদের মহল্লা-মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ প্রয়োজন। আমার জানার বিষয় হল, চামড়ার মূল্য কি মসজিদ নির্মাণ কাজে লাগানো যাবে? শরীয়তের নির্দেশনা জানাতে অনুরোধ রইল।

উত্তর

কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য মসজিদে দান করা জায়েয নয় এবং এ টাকা মসজিদ নির্মাণের কাজে ব্যয় করাও জায়েয নয়। কারণ, কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য গরীব মিসকিনের হক। তা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিদেরকে সদকা করে দেয়া জরুরি। আর মসজিদ মুসলমানদের সাধারণ দান দ্বারাই নির্মাণ করতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; ফাতহুল কাদীর ৮/৪৩৮; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৩১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের একটি গরু আছে। সেটির অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে...

প্রশ্ন

আমাদের একটি গরু আছে। সেটির অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে দু’তিনটি দাঁত ছাড়া এর প্রায় সবক’টি দাঁতই পড়ে গেছে। তবে যে পরিমাণ দাঁত অবশিষ্ট আছে তা দ্বারা ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে। এ বছর এ গরুটিকে কুরবানী করতে চাচ্ছি। প্রশ্ন হল, এর দ্বারা কুরবানী করা কি সহীহ হবে?

উত্তর

এ অবস্থায়ও গরুটি যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে তাহলে তার দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে।

-শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫; ফাতওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৩০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের একটা গরু আছে। কোনো এক রোগের কারণে যার লেজের...

প্রশ্ন

আমাদের একটা গরু আছে। কোনো এক রোগের কারণে যার লেজের সামান্য অংশ লম্বা পশমসহ ঝরে পড়েছে। আগামী ঈদুল আযহায় গরুটি কুরবানী দিতে চাচ্ছি। শরীয়তের দৃষ্টিতে তা বৈধ হবে কি?

উত্তর

হাঁ, ঐ গরু দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে। কেননা কোনো গরুর লেজ যদি অর্ধেকের বেশি অবশিষ্ট থাকে তবে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয।

-মুখতাছারুত তহাবী ৭/৩৫৫; হেদায়া ৮/৪৩৩; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০২৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় কিছু লোক আছে, যারা সামর্থ্য না থাকার কারণে...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় কিছু লোক আছে, যারা সামর্থ্য না থাকার কারণে কুরবানী দিতে পারে না। তাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে, যারা কুরবানীর দিন মুরগী বা হাঁস যবাই করে থাকে। আমি জানতে চাই, কুরবানীর দিন হাঁস-মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয আছে কি?

উত্তর

কুরবানীর দিনেও কুরবানীর নিয়ত না করে কেবল খাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয। এতে দোষের কিছু নেই।

তবে কুরবানীর নিয়তে কিংবা কুরবানীর সাদৃশ্য অবলম্বনের উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী যবাই করা যাবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৩/২৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০২৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

প্রশ্ন

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী মুকীম ব্যক্তি, যার মালিকানায় ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। নেসাব হল : স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তবে স্বর্ণ-রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য বস্তুর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায়, সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে। স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার,নগদ অর্থ, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্র- এ সবই কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০২৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে।...

প্রশ্ন

কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে। যদি বিশেষ দু’টি দাঁত ওঠে তাহলে পছন্দ হলে কেনে, অন্যথায় ঐ গরু কেনে না। তারা মনে করে, বিশেষ দুই দাঁত না উঠলে সেই গরু দিয়ে কুরবানী করা যায় না।

এখন আমার জানার বিষয় হল, গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দু’টি দাঁত ওঠা কি জরুরি? আর যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায়, কোনো একটি গরুর দুই বছর হয়েছে, কিন্তু এখনও বিশেষ দু’টি দাঁত ওঠেনি তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করলে সহীহ হবে কি না?

উত্তর

গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। বিশেষ দাঁত ওঠা জরুরি নয়। তবে যেহেতু বিশেষ দু’টি দাঁত দুই বছর বয়স পূর্ণ হলেই উঠে থাকে তাই সাধারণত দুই দাঁত ওঠাকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আলামত মনে করা হয়। এ কারণেই মানুষ কুরবানীর পশু কিনতে গেলে তা পরীক্ষা করে। এতে আপত্তির কিছু নেই। তবে যদি কোনো গরুর ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, দুই বছর পূর্ণ হলেও এখনও বিশেষ দু’টি দাঁত ওঠেনি তাহলে সেই গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬১১-১৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০২৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী...

প্রশ্ন

আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী ক্রয় করেছি। কুরবানীর আগে সেই গাভীটির একটি বাচ্চা হয়েছে। জানার বিষয় হল, এ বাচ্চাটির ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কী?

উত্তর

উক্ত বাচ্চাটি সদকা করে দিতে হবে। অবশ্য জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি জবাই করে দেয় তবে তার গোশত সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০১৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত বছর আল্লাহর রহমতে পবিত্র হজ্ব আদায় করেছি। যিলহজ্বের ১০...

প্রশ্ন

গত বছর আল্লাহর রহমতে পবিত্র হজ্ব আদায় করেছি। যিলহজ্বের ১০ তারিখ আমরা কংকর নিক্ষেপ ও কুরবানী করার পর কাফেলার এক হাজ্বী ভাইয়ের মাথা মুণ্ডিয়ে দিই। তারপর তিনি আমার মাথা মুণ্ডিয়ে দেন। জানার বিষয় হল, ইহরাম অবস্থায় মাথা মুণ্ডানোর কারণে আমার উপর কি দম বা সদকা ওয়াজিব হয়েছিল?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অন্যের মাথা মুণ্ডিয়ে দেওয়া অন্যায় হয়নি এবং আপনার উপর এ কারণে কোনো কিছু ওয়াজিবও হয়নি। হলকের পূর্বের সকল কার্যাদী সম্পন্ন করার পর অন্যের মাথার চুল মুণ্ডিয়ে দেওয়া জায়েয। তাবেয়ী হযরত ইবনে জুরাইজ রাহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হযরত আতা রাহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, এক ব্যক্তি কংকর নিক্ষেপ করেছে কিন্তু হলক করেনি সে কি অন্যকে হলক করে দিতে পারবে? তিনি জবাবে বললেন, হাঁ পারবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, আসার নং ১৬১৩৯; মানসিক পৃ. ২৩০; যুবদাতুল মানাসিক ৩৭; গুনইয়াতুন নাসিক ১৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৯৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আলহামদু লিল্লাহ! আল্লাহ আমাকে যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ দান করেছেন। প্রতি...

প্রশ্ন

আলহামদু লিল্লাহ! আল্লাহ আমাকে যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ দান করেছেন। প্রতি বছর একাই একটি গরু কুরবানী দেওয়ার তাওফীক হয়। গত কুরবানীর ঈদে একাই কুরবানী দেওয়ার উদ্দেশ্যে একটি গরু ক্রয় করি। আমার এক চাচা বললেন, তোমার গরুটা যেহেতু বড়। তাই আলাদাভবে গরু কিনতে চাচ্ছি না। তোমার গরুর দুই ভাগ আমি নিতে চাচ্ছি। যা মূল্য হয় দিয়ে দেব। তখন আমি চাচাকে শরিক বানিয়ে নিই। মূল্য নিতে না চাইলেও জোর করে দিয়ে দেয়। প্রশ্ন হল, পশু ক্রয়ের পর কাউকে শরিক বানানো জায়েয আছে কি না এবং আমাদের উক্ত কুরবানী সহীহ হয়েছে কি না?

উত্তর

ভাগে কুরবানী দিতে চাইলে পশু ক্রয়ের সময়ই অন্যকে শরিক নেওয়ার নিয়ত করা উচিত। পশু ক্রয়ের সময় অন্যকে শরিক বানানোর নিয়ত না থাকলে ক্রয়ের পর কাউকে শরিক বানানো মাকরূহ। অবশ্য কাজটা মাকরূহ হলেও এক্ষেত্রেও সকল শরিকের কুরবানী সহীহ হয়ে যাবে।

ক্রয়ের সময় শরিক নেওয়ার নিয়ত না থাকলে অন্যকে শরিক করলে শরিক থেকে প্রাপ্ত টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম হবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার চাচাকে শরিক বানানো মাকরূহ হলেও কুরবানী সহীহ হয়ে গেছে। তবে তার কাছ থেকে প্রাপ্ত টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম হবে।

-কিতাবুল আছল ৫/৪০৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৫১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৪; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৮২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর ঈদের পর এক ব্যক্তি নেসাবের মালিক হয়। পরবর্তী বছর...

প্রশ্ন

কুরবানীর ঈদের পর এক ব্যক্তি নেসাবের মালিক হয়। পরবর্তী বছর আসার আগেই বসবাসের জন্য জায়গা ক্রয় করে। এতে তার সব টাকা খরচ হয়ে যায় এবং আরো ঋণ করতে হয়। বর্তমানেও পরিপূর্ণভাবে ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। এ অবস্থায় জানার বিষয় হল-

ক) নগদ টাকা খরচ হয়ে যাওয়ার কারণে ঐ ব্যক্তির নেসাব বাকি আছে কি না? শুনেছি, নেসাবের মালিক হওয়ার পর ঋণের কারণে যাকাত মাফ হয় না। তাহলে যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে ঋণ বাদ দেওয়ার পর বাকি সম্পদ নেসাব পরিমাণ না হলেও কি যাকাত, কুরবানী, ফিতরা আদায় করতে হবে? আর উক্ত কথাটির মর্ম কী?

উল্লেখ্য যে, উক্ত ব্যক্তির ছোট দোকানে ৭/৮ হাজার টাকার ব্যবসার মাল থাকে।

খ) নেসাব বাকি থাকলে কি যাকাতবর্ষ শেষে অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে ঋণ পরিশোধের জন্য জমাকৃত টাকারও যাকাত, কুরবানী আদায় করতে হবে? এবং কুরবানীর দিনগুলোতে ব্যবসার মাল ছাড়া নগদ অর্থ কুরবানীর সর্বাপেক্ষা ছোট পশুর মূল্যের পরিমাণ না হলে কি ধার করে কুরবানী করতে হবে?

উত্তর

ক) যাকাতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার সময় ঐ ব্যক্তির মালিকানায় যেহেতু নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকছে না তাই তার উপর এ বছরের যাকাত ফরয হবে না। কেননা প্রশ্নের বর্ণনামতে দোকানের মাত্র ৭/৮ হাজার টকার পণ্য ব্যতীত তার যাকাতযোগ্য সকল সম্পদ খরচ হয়ে গেছে। পাশাপাশি তার উপর প্রচুর ঋণও রয়েছে। এমনকি এক্ষেত্রে তার উপর কুরবানী ও সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে না। আর নেসাবের মালিক হওয়ার পর যাকাতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার আগেই যদি ঋণ হয়ে যায় এবং এ ঋণ বাদ দিলে বছর শেষে যাকাতের নেসাব না থাকে তাহলে তার উপর যাকাত ফরয হবে না। এক্ষেত্রে নেসাবের মালিক হওয়ার পর ঋণের কারণে যাকাত মাফ হবে না- এ কথা ঠিক নয়। হাঁ, যাকাতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার পর যাকাত ফরয হয়ে গেলে তা পরবর্তী ঋণের কারণে মাফ হবে না।

উত্তর : খ) কারো উপর ঋণ থাকলে যাকাত-বর্ষ শেষে ঐ ঋণ বাদ দিয়ে অবশিষ্ট সম্পদ নেসাব পরিমাণ হলে এর যাকাত আদায় করা ফরয। ঋণের টাকার উপর যাকাত আসে না। অনুরূপ ঋণের টাকা বাদ দেওয়ার পর যদি কুরবানীর নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে তার উপর কুরবানীও ওয়াজিব। আর যার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে তার নিকট কুরবানী করার মতো পর্যাপ্তÍ নগদ অর্থ না থাকলেও কুরবানী করা আবশ্যক। এক্ষেত্রে প্রয়োজন-অতিরিক্ত কোনো জিনিস, জমি ইত্যাদি বিক্রি করে অথবা ঋণ করে হলেও কুরবানী করতে হবে।

-মুআত্তা মুহাম্মাদ, হাদীস ৩২২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৯; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১০৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৭; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/২৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৫৮-৩৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৬০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার এক ভাই সৌদী আরব থাকে। গত কুরবানীর সময় সে...

প্রশ্ন

আমার এক ভাই সৌদী আরব থাকে। গত কুরবানীর সময় সে তার পক্ষ থেকে কুরবানী করার জন্য ৫০ হাজার টাকা পাঠায়। আমরা আমাদের কুরবানী প্রথম দিনেই করে ফেলি। কিন্তু তার কুরবানীটা করেছি তৃতীয় দিনে। প্রশ্ন হল, আমাদের তৃতীয় দিনে তো সৌদী আরবে কুরবানীর সময় ছিল না। এ অবস্থায় আমার ভাইয়ের কুরবানী আদায় হয়েছে কি?

উত্তর

যেখানে কুরবানী দেওয়া হয় মূলত ঐ স্থানের সময়ই ধর্তব্য হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেহেতু কুরবানীর সময়েই হয়েছে তাই ঐ কুরবানী সহীহ হয়েছে। অবশ্য যার পক্ষ থেকে কুরবানী করা হচ্ছে তার ওখানেও কুরবানীর সময় থাকে- এটা লক্ষ রেখে কুরবানী করা ভালো।

Ñফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৬; ফাতাওয়া শরইয়্যাহ ১১/১৫৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৫৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার আব্বা যৌবনে একবার আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন। তখন একজন দয়ার্দ্র...

প্রশ্ন

আমার আব্বা যৌবনে একবার আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন। তখন একজন দয়ার্দ্র ব্যক্তি আব্বাজানকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছিলেন। এখন সে ব্যক্তি দুনিয়াতে নেই। তার প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আব্বাজান প্রতি বছর তার নামে একটি কুরবানী দিয়ে থাকেন। প্রশ্ন হল, ঐ ব্যক্তির নামে আব্বাজান যে কুরবানী দিয়ে থাকেন তা থেকে আমরা খেতে পারবো, না পুরোটাই সদকা করে দিতে হবে?

উত্তর

ঐ মৃত ব্যক্তির সওয়াবের উদ্দেশ্যে আপনার পিতা যে কুরবানী করেন তা থেকে আপনার পিতা এবং আপনারা সকলেই খেতে পারবেন। এবং অন্যকেও দিতে পারবেন। কেননা অন্যের ইসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে নিজ অর্থ দ্বারা কুরবানী করলে এই গোশতের হুকুম সাধারণ কুরবানীর মতোই। তা নিজে খেতে পারবে এবং অন্যকে দিতে পারবে।

Ñফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ৩/২০১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯২৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার দাদা হজ্বে যাওয়ার আগে একটি ছাগল ক্রয় করে আমার...

প্রশ্ন

আমার দাদা হজ্বে যাওয়ার আগে একটি ছাগল ক্রয় করে আমার বাবাকে দিয়ে বলেন, আমার পক্ষ থেকে তুমি কুরবানীটা আদায় করে দিও। কিন্তু আমার বাবা কুরবানীর দিন ঐ ছাগল দিয়ে আমার পক্ষ থেকে কুরবানী আদায় করেন।

এখন আমার প্রশ্ন হল, উক্ত কুরবানী কার পক্ষ থেকে আদায় হবে? উল্লেখ্য যে, আমার দাদা ধনী।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বাবা আপনার পক্ষ থেকে কুরবানীর নিয়ত করলেও তা আপনার পক্ষ থেকে হয়নি। বরং তা আপনার দাদার পক্ষ থেকেই আদায় হয়েছে। কেননা ছাগলটির মালিক আপনার দাদা। তিনি কুরবানীর জন্য ক্রয় করেছেন এবং আপনার বাবাকে তার পক্ষ থেকে কুরবানী করার জন্য প্রতিনিধি বানিয়েছেন। তাই পশুটি আপনার দাদার পক্ষ থেকেই কুরবানী হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে।

প্রকাশ থাকে যে, আপনার দাদার সুস্পষ্ট নির্দেশের পরও তার পক্ষ থেকে কুরবানী না করে আপনার পক্ষ থেকে কুরবানী দেওয়া ঠিক হয়নি।

Ñআল মুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৩০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৮৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর সময় আমার মরহুম আব্বার পক্ষ থেকেও কুরবানী দিতে...

প্রশ্ন

আমি কুরবানীর সময় আমার মরহুম আব্বার পক্ষ থেকেও কুরবানী দিতে ইচ্ছুক। প্রশ্ন হল, এ কুরবানীর গোশত কি সদকা করে দিতে হবে?

উত্তর

নিজ থেকে মৃত ব্যক্তির ইসালে সওয়াবের জন্য কুরবানী করলে ঐ গোশত সদকা করতে হবে না; বরং এই গোশত নিজেদের সাধারণ কুরবানীর মতোই নিজেরা খেতে পারবে এবং অন্যদেরকেও দিতে পারবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৭১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

হজ্ব সম্পন্ন করার পর সাধারণত হাজ্বী সাহেবগণ মাথা মুণ্ডিয়ে থাকেন...

প্রশ্ন

হজ্ব সম্পন্ন করার পর সাধারণত হাজ্বী সাহেবগণ মাথা মুণ্ডিয়ে থাকেন বা চুল ছোট করে থাকেন। এটা করা কি জরুরি? জরুরি হয়ে থাকলে বার্ধক্যের কারণে যাদের মাথার চুল পড়ে টাক হয়ে গেছে তাদের করণীয় কী?

উত্তর

হাজ্বী সাহেবদের জন্য কুরবানীর পর মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছোট করা ওয়াজিব। কারো মাথা আগে থেকে মুণ্ডানো থাকলে অথবা পুরো মাথা টাক থাকলে হালাল হওয়ার জন্য মাথার উপর ক্ষুর ঘুরিয়ে নিতে হবে। প্রখ্যাত তাবেয়ী হযরত মাসরুক রাহ.-কে জিজ্ঞাসা করা হয়, যে ব্যক্তি উমরাহ করে মাথা মুণ্ডিয়ে ফেলেছে অতপর হজ্ব করেছে (সে হালাল হওয়ার জন্য কী করবে?) তিনি উত্তরে বললেন, মাথায় ক্ষুর ঘুরিয়ে নেবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৩৭৯৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩২৮; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪৬; আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৭০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৮০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫১৫, ৪৬৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

যদি কুরবানীর গরুর সাথে আকীকার নিয়ত করে তাহলে সে মাংস...

প্রশ্ন

যদি কুরবানীর গরুর সাথে আকীকার নিয়ত করে তাহলে সে মাংস বণ্টনের নিয়ম কী? যদি কুরবানী আর আকীকার উভয় ভাগ এক সাথে মিলিয়ে পরে তা তিন ভাগ করে কুরবানীর গোশতের নিয়মে বণ্টন করি তাহলে হবে কি?

উত্তর

আকীকার গোশত বণ্টনের হুকুম কুরবানীর মতোই।

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আকীকা সংক্রান্ত একটি দীর্ঘ হাদীসে এসেছে, ... অতপর (আকীকার গোশত থেকে) নিজে খাবে, অন্যকে খাওয়াবে এবং সদকা করবে। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৬৬৯

তাই কুরবানী ও আকীকা একই ব্যক্তির হলে গোশত পৃথক করার প্রয়োজন নেই; বরং চাইলে উভয় গোশত একত্রে মিলিয়ে তিনভাগে বণ্টন করতে পারবে।

-ইলাউস সুনান ১৭/১১৮, ১৭/১২৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৭; আলমুগনী ইবনে কুদামা ১৩/৩৯৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৪১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের বাসায় প্রতি ৬ মাসের জন্য একজন কর্মচারী রাখা হয়।...

প্রশ্ন

আমাদের বাসায় প্রতি ৬ মাসের জন্য একজন কর্মচারী রাখা হয়। তার খাওয়ার খরচ সম্পূর্ণ আমাদের। যার কারণে তার বেতন কিছুটা কম হয়ে থাকে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সে কি আমাদের কুরবানীর গোশত খেতে পারবে? কেননা তাকে খাওয়ানো হলে তো কুরবানীর গোশত বিনিময় হিসেবে দেওয়া হয়ে গেল? দয়া করে হাওয়ালাসহ জবাব দিয়ে উপকার করবেন।

উত্তর

পারিশ্রমিকের উদ্দেশ্য ছাড়া কর্মচারীকে কুরবানীর গোশত খাওয়ালে তা পারিশ্রমিক হিসেবে গণ্য হবে না।

-ইমদাদুল মুফতীন পৃ. ৮০২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত কুরবানী ঈদের আগের দিন আমার এক আত্মীয় মারা যায়।...

প্রশ্ন

গত কুরবানী ঈদের আগের দিন আমার এক আত্মীয় মারা যায়। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট এক সংখ্যা পরিমাণ কালিমা পড়া হয়। সম্ভবত ১ লক্ষ পরিমাণ। যে কারণে একে লাখ কালিমা বলা হয়। এ আমলকে এতই গুরুত্ব ও এহতেমামের সাথে পালন করা হয় যে, দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জনে জনে তা বণ্টন করে দেওয়া হয় এবং এ আমলের বরকতে নাকি মৃত ব্যক্তির কবর আযাব মাফ হয়ে যায়।

হযরত মুফতী সাহেবের সমীপে আমার জানার বিষয় হল, কুরআন-হাদীসের দৃষ্টিকোণ থেকে এ আমলের কোনো ভিত্তি আছে কি না? থাকলে তার গুরুত্ব কী পরিমাণ ও আদায়ের তরিকা কী? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

কালিমা তাইয়েবার ফযীলত, মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। এটি তাওহীদ ও ঈমানের কালেমা।

ইখলাসের সাথে এ কালেমা পাঠকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে। মীযানের পাল্লায় এ কালেমা সর্বাধিক ভারী হবে। হাদীস শরীফে বিশুদ্ধ সূত্রে এ ধরনের বিভিন্ন ফযীলত ও সওয়াবের কথা এ কালেমা সম্পর্কে এসেছে।

কিন্তু কোনো মৃতের ঈসালে সওয়াবের নিয়তে এ কালেমা এক লাখ পরিমাণ পাঠ করা হলে তার কবর আযাব মাফ হয়ে যায়-এ কথা সহীহ নয়। কুরআন-হাদীসের কোথাও এর প্রমাণ নেই।

সুতরাং মুসলমানদের এ ধরনের মনগড়া কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। মৃত ব্যক্তির ঈসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে তার জন্য দান-খয়রাত করা, ব্যক্তিগতভাবে নফল ইবাদত করে ঈসালে সওয়াব করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তাই শরীয়ত নির্দেশিত পদ্ধতিতেই আমল করা কাম্য।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৪৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আলহামদুলিল্লাহ, এ বছর আমি হজ্ব করার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। কিন্তু...

প্রশ্ন

আলহামদুলিল্লাহ, এ বছর আমি হজ্ব করার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। কিন্তু অনাকাংক্ষিতভাবে তাওয়াফে যিয়ারাতের সময় হায়েয এসে যায়। বুঝতে না পারার কারণে ঐ অবস্থাতেই আমি পূর্ণ তাওয়াফ সম্পন্ন করি। অবশ্য পরবর্তীতে ১৫ যিলহজ্ব পবিত্র হওয়ার পর তা পুনরায় আদায় করি।

হুযুরের নিকট আবেদন এই যে, এক্ষেত্রে আমার উপর কোনো জরিমানা ওয়াজিব হয়েছে কি না? মক্কায় আমাদের কাফেলার একজনকে জিজ্ঞাসা করার পর তিনি বলেছিলেন, একটি দুম্বা জবাই করলেই চলবে। তার কথামতো হারামে একটি দুম্বা জবাই করেছি। কিন্তু দেশে ফিরে আসার পর আরেকজন বললেন, একটি উট জবাই করা ওয়াজিব ছিল। সঠিক সমাধান ও এখন আমার করণীয় কী? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

ভুলক্রমে হায়েয-নেফাস অবস্থায় তাওয়াফে যিয়ারাত করলেও জরিমানা হিসেবে বাদানা অর্থাৎ একটি উট কিংবা একটি গরু জবাই করা ওয়াজিব হয়। অবশ্য পবিত্র অবস্থায় পুনরায় ঐ তাওয়াফ করে নিলে বাদানা মওকুফ হয়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্তের এত আগে যদি সে পবিত্র হয় যে, পবিত্রতা অর্জন করে সূর্যাস্তের আগে তাওয়াফের অন্তত চার চক্কর আদায় করা সম্ভব তাহলে তাকে এর ভেতরেই তা আদায় করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে সে যদি এসময়ের ভেতর তা আদায় না করে তাহলে তখন বিলম্ব করার কারণে একটি জরিমানা দম অর্থাৎ একটি ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা কুরবানী করতে হবে। অবশ্য যদি ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্তের ঐ পরিমাণ সময় আগে পবিত্র না হয় বা ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্তের পর পবিত্র হয় এবং এরপর সে পবিত্রতা অর্জন করে ঐ তাওয়াফ আবার আদায় করে নেয় তাহলে তার উপর কোনো জরিমানা দমও ওয়াজিব হবে না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু ১৫ যিলহজ্ব পবিত্র হয়েছেন এবং এরপর পবিত্র অবস্থায় ঐ তাওয়াফ পুনরায় আদায় করে নিয়েছেন তাই এক্ষেত্রে আপনার উপর কোনো জরিমানা দমও ওয়াজিব হয়নি। অতএব আপনি যে দুম্বা জবাই করেছেন তা জরিমানা দম হিসাবে আদায় হয়নি। বরং তা নফল কুরবানী গণ্য হবে এবং আপনি এর সওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।

Ñমানাসিক ৪৮৮, ১১৫ রদ্দুল মুহতার ২/৫৫১; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৮; গুনইয়াতুন নাসিক ২৭২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৩২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এক ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে তা...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে তা কুরবানী করতে পারেনি। এখন তার কী করণীয়? আর কেউ যদি পশু ক্রয়ই না করে এবং কুরবানীর সময় শেষ হয়ে যায় তখন তার কী করণীয়?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি ক্রয়কৃত পশুটি জীবিত সদকা করে দিবে। আর কোনো ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্তে¡ও যদি সে কুরবানীর পশু ক্রয় না করে এবং কুরবানীও না করে থাকে তাহলে তার উপর কুরবানীর যোগ্য একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব। আর উভয় ক্ষেত্রেই যথাসময়ে কুরবানী না করার কারণে তাওবা-ইস্তিগফার করবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; তুহফাতুল ফুকাহা ৩/৮৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৩১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের গ্রামের এক ব্যক্তি কুরবানী করার জন্য ঈদের দুদিন আগে...

প্রশ্ন

আমাদের গ্রামের এক ব্যক্তি কুরবানী করার জন্য ঈদের দুদিন আগে হাট থেকে একটি গাভি ক্রয় করে আনে। ঘটনাক্রমে বাড়ির আরেকটা গাভির সাথে ঐ গাভির লড়াই লেগে ক্রয়কৃত গাভির একটি শিং ভেঙ্গে যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, এমন শিং ভাঙ্গা গাভি দ্বারা কুরবানী করলে কুরবানী হবে কি না?

উত্তর

গাভিটির শিং যদি একেবারে গোড়া থেকে ভেঙ্গে গিয়ে থাকে, যার দরুণ মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায় তাহলে এ পশু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে না। পক্ষান্তরে শিং ভাঙ্গার কারণে মস্তিষ্কে যদি আঘাত না পৌঁছে থাকে তাহলে এ পশু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে।

-মুসনাদে আহমদ ১/৯৫, হাদীস ৭৩৪; ইলাউস সুনান ১৭/২৩৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭৩০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি।...

প্রশ্ন

আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। বড় ভাই এক ভাগ আর আমরা দুই ভাই তিন অংশ করে মোট ছয় ভাগ নিয়েছি। আমরা দুই ভাই সমান সমান টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু বড়ভাই আমাদের মধ্যে তুলনামূলক অসচ্ছল হওয়ায় তিনি তার অংশের পুরো টাকা দেন না। আমরা দুই ভাই বলেছি, আপনি যা পারেন দেন, বাকিটা আমরা দুজনে দিয়ে দিব। অবশ্য গোশত সকলের অংশ হারেই বণ্টন করা হয়। টাকা কম-বেশির কারণে তাতে ব্যবধান করা হয় না; বরং ধরে নেওয়া হয় যে, আমরা ছোট দুই ভাই বড় ভাইয়ের টাকার আংশিক আদায় করে দিই। জানতে চাই, উল্লেখিত পদ্ধতিতে আমাদের কুরবানী কি সহীহ হচ্ছে?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। কেননা কোন শরীকের পক্ষ থেকে যদি আরেক শরীক কুরবানীর টাকা আংশিক আদায় করে দেয়, আর কুরবানীতে তার অংশ একসপ্তমাংশের কম না হয়; বরং পুরোপুরি একসপ্তমাংশ বা তার বেশি হয় তবে তাদের কুরবানী সহীহ হবে। কিন্তু ঐ শরীকের অংশ যদি একসপ্তমাংশের কম হয় তাহলে তাদের কুরবানী সহীহ হবে না।

-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৪৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭২৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ...

প্রশ্ন

প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ বছরও কুরবানীর এক সপ্তাহ আগে ৫জন মিলে একটি গরু ক্রয় করি। কুরবানীর আগের দিন আমাদের এক প্রতিবেশী তাতে শরিক হতে চাইলে আমরা তাকে শরিক করে নিই। জানার বিষয় হল, এভাবে শরিক করার কারণে আমাদের কুরবানী আদায়ে কোনো ত্রæটি হয়েছে কি না? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে। তবে পাঁচ জনে মিলে কুরবানী দেওয়ার নিয়তে পশু ক্রয়ের পর নতুন করে শরিক নেওয়া অনুত্তম হয়েছে। এক্ষেত্রে ঐ শরিক থেকে প্রাপ্য টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১৭; মাবসূত, সারাখসী ১২/১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭১৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা স্বামী-স্ত্রী হজ্ব করতে যাই। মক্কায় পৌঁছার পর ওমরার তাওয়াফ...

প্রশ্ন

আমরা স্বামী-স্ত্রী হজ্ব করতে যাই। মক্কায় পৌঁছার পর ওমরার তাওয়াফ ও সায়ী আদায় করি। এরপর মাথা মুণ্ডিয়ে হালাল হব। তখন আমি নিজের মাথা মুণ্ডানোর আগে আমার স্ত্রীর চুল কেটে দিই। এরপর নিজের মাথা মুণ্ডন করি। আমার এ কাজের কারণে কি আমাকে কোনো জরিমানা আদায় করতে হবে?

উত্তর

না, এ কারণে আপনার উপর কোনো জরিমানা ওয়াজিব হয়নি। কেননা নিজের হালাল হওয়ার সময় হয়ে গেলে (অর্থাৎ ওমরার ক্ষেত্রে তাওয়াফ ও সায়ীর পর এবং হজ্বের ক্ষেত্রে দমে শোকর তথা হজ্বের কুরবানী করার পর) নিজের মাথার চুল কাটার আগে অন্যের চুল কেটে দেওয়া জায়েয আছে। এ কারণে জরিমানা ওয়াজিব হয় না।

-মানাসিক, মোল্লা আলী আল ক্বারী পৃ. ২৩০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭০৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের গ্রামে অনেক বাড়িতে এরকম প্রচলন আছে যে, কুরবানীর সময়...

প্রশ্ন

আমাদের গ্রামে অনেক বাড়িতে এরকম প্রচলন আছে যে, কুরবানীর সময় কসাইয়ের সাথে তারা এভাবে চুক্তি করে, এই গরুটা বানিয়ে দিলে এত টাকা পাবা আর এত কেজি গোশত পাবা।

প্রশ্ন হল, এভাবে টাকা ও গোশতের বিনিময়ে চুক্তি করা কি বৈধ? কেউ যদি এমনটি করে তাহলে সেক্ষেত্রে তার করণীয় কী?

উত্তর

কুরবানীর পশুর গোশত বা অন্য কোনো অংশ পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া বৈধ নয়। সহীহ মুসলিমে আলী রা. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আদেশ করেছেন, যেন আমি তাঁর উটের দায়িত্ব গ্রহণ করি এবং তার গোশত, চামড়া ও আনুষাঙ্গিক আচ্ছাদনবস্ত্র সদকা করি এবং (তিনি আদেশ করেছেন) এসব থেকে কোনো কিছু যেন কসাইকে না দেই। তিনি বলেছেন, তাকে (কসাইকে) তো আমরা নিজেদের থেকেই পারিশ্রমিক দিব।Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩১৭

সুতরাং কেউ যদি না জেনে এভাবে গোশতের মাধ্যমে পারিশ্রমিক আদায় করে দেয় তাহলে যে পরিমাণ গোশত পারিশ্রমিক হিসাবে দিয়েছে তার মূল্য গরীবদের মাঝে সদকা করা ওয়াজিব হবে।

Ñবাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭০৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কোনো কোনো গ্রামে দেখা যায়, ঈদুল আযহার দ্বিতীয় দিন অথবা...

প্রশ্ন

কোনো কোনো গ্রামে দেখা যায়, ঈদুল আযহার দ্বিতীয় দিন অথবা তৃতীয় দিন বিবাহ বা ওলিমা অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হয় এবং কুরবানীর গোশত দিয়েই এসব অনুষ্ঠানের দাওয়াত খাওয়ানো হয়। আমার প্রশ্ন হল, কুরবানীর গোশত দিয়ে বিবাহ বা ওলিমা অনুষ্ঠানের দাওয়াত খাওয়ানো কি জায়েয হবে এবং এ উদ্দেশ্যে কুরবানি করা কি বৈধ হবে?

উত্তর

কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তা কেবল আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই হতে হবে। বিবাহ বা ওলিমার গোশত লাভের উদ্দেশ্যে কুরবানী করা সহীহ নয়। অবশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরবানী করে সেই গোশত নিজে খেতে পারবে। অন্যকেও খাওয়াতে পারবে। তদ্রƒপ সেই গোশত দিয়ে বিবাহ বা ওলিমা অনুষ্ঠানে দাওয়াতও খাওয়াতে পারবে। এতে কোনো বাধা নেই।

Ñআলবাহরুর রায়েক ৩/৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭০৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ মনে করে, কুরবানীর গোশত তিনভাগে বণ্টন...

প্রশ্ন

আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ মনে করে, কুরবানীর গোশত তিনভাগে বণ্টন করা জরুরি এবং এতে সামান্য ত্রæটি করলেও কুরবানী হবে না। অথচ অনেক সময় এমন হয়, বিশেষ করে পরিবারের লোকজন বেশি হলে এবং অভাবী হলে নিজের অংশ থেকে এক ভাগ রেখে দুই ভাগ দিয়ে দিলে সে তার পরিবার-পরিজন নিয়ে তৃপ্তির সাথে খেতেই পারে না। আবার দূরের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবকে দাওয়াত করে খাওয়াতে বা তাদের জন্য কিছু গোশত পাঠাতে হিমশিম খেতে হয়। তাই প্রশ্ন হল, এভাবে প্রথমেই গোশত মেপে মেপে তিনভাগ করে এক ভাগ রেখে বাকি দুই ভাগ বিলিয়ে দেওয়া কতটুকু জরুরি? এতে কমবেশি করার হুকুম কী? বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ জানতে চাই।

উত্তর

কুরবানী করা এবং কুরবানীর গোশত দান করা ভিন্ন ভিন্ন দুটি আমল। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইখলাসের সাথে পশু জবাই করার দ্বারাই কুরবানীর ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়। আর কুরবানীকারীর জন্য তার কুরবানীর গোশতের ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা হল, সে নিজ পরিবার-পরিজনকে নিয়ে খাবে এবং পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, যারা কুরবানীর সামর্থ্য রাখে না তাদেরও দান করবে। সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ... (কুরবানীর গোশত) তোমরা খাও, জমা করে রাখো এবং (গরীব-অসহায়দেরও) দান করো।Ñহাদীস : ১৯৭১

অন্য বর্ণনায় আছে, তোমরা খাবে এবং অন্যদেরও খাওয়াবে। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৯৭৩

তবে দানের ব্যাপারে কুরবানীকারীর উপর শরীয়ত কোনো বাধ্যবাধকতা আরোপ করেনি;বরং প্রত্যেককে তার অবস্থা অনুপাতে দান করতে বলা হয়েছে। অবশ্য সামর্থ্যবানদের জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় উত্তম হল, মোটামুটি তিন ভাগ করে এক অংশ গরিব-মিসকিন ও অসহায়দেরকে দান করা, এক অংশ গরীব আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া। আর এক অংশ নিজের জন্য রাখা।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কুরবানীর গোশতের তিন ভাগের এক ভাগ পরিবার-পরিজনকে দিতেন। আরেক ভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং এক ভাগ ভিক্ষুক ও অসহায়দের দান করতেন। Ñআল মুগনী ১৩/৩৭৯

উল্লেখ্য, এ বণ্টন উত্তম জরুরি বা আবশ্যক নয়। তেমনি একেবারে ওজন করে তিন ভাগ করাও আবশ্যক নয়। বরং কুরবানীকারীর জন্য এতে তারতম্য করার অবকাশ আছে।

আরো উল্লেখ্য যে, এটি যেহেতু একটি মুস্তাহাব আমল তাই সামর্থ্যবানদের এর উপর আমল করা উচিত। আর কারো পরিবারের সদস্য বেশি হলে কিংবা নিজেদের প্রয়োজন বেশি থাকলে সেক্ষেত্রে তারা নিজেদের প্রয়োজন পরিমাণ গোশত রাখতে পারবে, এটা তাদের জন্য অনুত্তম হবে না।

Ñফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৩৭; বযলুল মাজহূদ ১৩/৪৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৮৬; ইলাউস সুনান ১৭/২৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কোন কোন প্রাণী দ্বারা কুরবানী করা যায় এবং ঐ প্রাণীসমূহের...

প্রশ্ন

কোন কোন প্রাণী দ্বারা কুরবানী করা যায় এবং ঐ প্রাণীসমূহের বয়সসীমা সম্পর্কে জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

গৃহপালিত পশু তথা উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল দ্বারা কুরবানী করা যায়। উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর হতে হবে। গরু বা মহিষ কমপক্ষে দু’বছরের হতে হবে। আর দুম্বা, ভেড়া বা ছাগল এক বছরের হতে হবে। তবে কোনো ভেড়া যদি ছয়মাস বা তদুর্ধ্ব বয়সের হয় কিন্তু শরীরের গঠনের দিক থেকে এক বছরের ভেড়ার মত হৃষ্টপুষ্ট হয়ে যায় তাহলে সেটি দ্বারাও কুরবানী সহীহ হবে।

Ñবাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭০১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর সময় আমাদের এলাকার অনেককেই এমন করতে দেখা যায়, ৬...

প্রশ্ন

কুরবানীর সময় আমাদের এলাকার অনেককেই এমন করতে দেখা যায়, ৬ শরীক মিলে একটি পশু কুরবানী করে। ঐ পশুতে নিজেদের ৬ অংশ রাখে আর ৭ম অংশ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য রাখে। এ ৭ম অংশের টাকা তারা সকলে মিলে দিয়ে থাকে। আমি জানতে চাই, এমনটি করা সহীহ কী না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে কুরবানী করা সহীহ। কেননা এ ক্ষেত্রে কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম নয়। প্রত্যেকের অংশ পুরো হওয়ার পর সপ্তমাংশ শরীকদের নফল কুরবানী হিসাবে গণ্য হবে এবং সকলের কুরবানী সহীহ হয়ে যাবে।

Ñবাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭০০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা তিন ভাই। মা জীবিত আছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর...

প্রশ্ন

আমরা তিন ভাই। মা জীবিত আছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি বণ্টন করা হয়নি। অবশ্য বাবা খুব বেশি সম্পত্তি রেখে যাননি। আমরা তিন ভাই চাকুরি করি। প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু কিছু সম্পদ আছে। কুরবানীর সময় আমরা তিনভাই মিলে মায়ের নামে একটি ছাগল কুরবানী করে থাকি। আমি জানতে চাই, এভাবে আমাদের কুরবানী করা সহীহ হচ্ছে কি না?

উত্তর

আপনার বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি বণ্টন করলে আপনারা প্রত্যেকে যে পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হবেন তার সাথে প্রত্যেকের নিজস্ব মালিকানাধীন সম্পত্তি যোগ করলে যার মালিকানায় মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্য সমপরিমাণ সোনা-রূপা, টাকা পয়সা বা অন্যান্য সম্পত্তি থাকবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। সে হিসেবে যার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে তাকে পৃথকভাবে অন্তত: একটি ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা অথবা বড় পশুতে এক সপ্তমাংশে শরীক হয়ে নিজের কুরবানী আদায় করতে হবে। কয়েক ভাই মিলে মায়ের নামে ছাগল কুরবানী করার দ্বারা আপনাদের ওয়াজিব কুরবানী আদায় হবে না। অবশ্য যদি আপনাদের কারো উপরোক্ত পরিমাণে সম্পদ না থাকে সেক্ষেত্রে কুরবানী ওয়াজিব হবে না। কেউ করলে তা নফল হিসাবে আদায় হবে।

-ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/১৮১; এলাউস সুনান ১৭/২১০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৯৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকার সাধারণ লোকজন মনে করে, একটা গরু বা একটা...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকার সাধারণ লোকজন মনে করে, একটা গরু বা একটা মহিষে কুরবানী আকীকা ইত্যাদি সাত ভাগই করা লাগে। সাত ভাগের কম হলে কুরবানী সহীহ হয় না। তাই তারা কখনো পশুতে শরীক কম হয়ে গেলে বাকি অংশগুলো তাদের মৃত আত্মীয়-স্বজনের নামে দিয়ে সাত ভাগ পূর্ণ করে থাকে।

এখন আমার জানার বিষয় হল, তাদের উক্ত ধারণা কি সঠিক? একটি পশুতে কি সাত ভাগই পূর্ণ করা লাগে এবং মৃত ব্যক্তির জন্য ইসালে সাওয়াবের নিয়তে কুরবানী করা যাবে কি? করা জায়েয হলে এ ভাগের গোশত কি সদকা করে দিতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ধারণাটি ঠিক নয়। গরু, মহিষ এ ধরনের পশু সাত ভাগে এবং তার কম যে কোনো অংশে কুরবানী বা আকীকা ইত্যাদি করা জায়েয। তবে কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হতে হবে। এক সপ্তমাংশের কম হলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না। আর এ ধরনের পশুতে মৃত ব্যক্তির জন্যও ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে অংশ নেওয়া যাবে এবং এই অংশ সদকা করা জরুরি নয়। বরং এর হুকুম নিজের সাধারণ কুরবানীর মতই। তা থেকে নিজেরাও খেতে পারবে এবং সদকাও করতে পারবে।

Ñবাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৩৭৪,৮৭৪; রদ্দুল মুহতার ৬/২৬৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫৩১, ৩১৬, ৩৩৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৯৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

একজন মহিলাকে বলতে শুনেছি, কুরবানীর দিন পশু জবাই করার আগ...

প্রশ্ন

একজন মহিলাকে বলতে শুনেছি, কুরবানীর দিন পশু জবাই করার আগ পর্যন্ত রোযা রাখতে হয়। শরীয়তে এরূপ কিছু আছে কি না?

উত্তর

কুরবানী দিনের অংশ বিশেষে রোযা রাখতে হবেÑ এ কথা ঠিক নয়। ঈদের দিনে রোযা রাখার বিধান নেই। তবে এক্ষেত্রে মাসআলা হল, কুরবানীর দিন কুরবানীর গোশত দিয়ে খাবার শুরু করা মুস্তাহাব। তাই এর আগ পর্যন্ত যথাসম্ভব খানাপিনা থেকে বিরত থাকা উত্তম।

হযরত বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ঈদুল আযহার দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর গোশত খাওয়ার আগ পর্যন্ত অন্য কিছু খেতেন না।

Ñসুনানে দারাকুতনী ২/৪৫; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ১১২৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২২৯৮৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩২৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৯৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গরু-ছাগলের যদি অধিকাংশ দাঁতই না থাকে, এমনকি দু-একটি ছাড়া সবগুলো...

প্রশ্ন

গরু-ছাগলের যদি অধিকাংশ দাঁতই না থাকে, এমনকি দু-একটি ছাড়া সবগুলো পড়ে যায় তবে তা দ্বারা কুরবানী করা কি সহীহ হবে?

উত্তর

গরু-ছাগলের অধিকাংশ দাঁত না থাকলেও যে কয়টি দাঁত আছে তা দ্বারা যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে তবে সেটি দ্বারা কুরবানী সহীহ হয়ে যায়। কিন্তু দাঁত পড়ে যাওয়ার কারণে যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে না পারে তবে ঐ পশু কুরবানীর উপযুক্ত নয়। সুতরাং দু-একটি ছাড়া সব দাঁত পড়ে গেলে সে পশু ঘাস চিবিয়ে খেতে না পারার সম্ভাবনাই যেহেতু বেশি তাই এমন জন্তু দ্বারা কুরবানী না করাই বাঞ্ছনীয়।

Ñশরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; ফাতাওয়া কাযী খান ৯৩/৩৫৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৯৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় দেখি যে, অনেক সময় কুরবানীর পশুকে মাটিতে শোয়ানোর...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় দেখি যে, অনেক সময় কুরবানীর পশুকে মাটিতে শোয়ানোর সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে পশুর পা ভেঙ্গে যায়। এমতাবস্থায় কেউ বলে যে, এ পশু দ্বারা কুরবানী করা যাবে না। কেউ বলে যাবে। মুফতী সাহেবের নিকট সঠিক মাসআলা জানতে চাই।

উত্তর

কুরবানীর পশু জবাইর সময় শোয়াতে গিয়ে পা ভেঙ্গে গেলে তা দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হবে।

Ñআলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; মাজমাউল আনহুর ৪/১৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৮৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

হজ্বের সফরে আমি একটি সমস্যায় পড়ে থাকি। তা হল, হজ্বের...

প্রশ্ন

হজ্বের সফরে আমি একটি সমস্যায় পড়ে থাকি। তা হল, হজ্বের সময় কখনও কখনও ঋতুস্রাব এসে যায়। এ নিয়ে খুব পেরেশান হয়ে যাই। মুফতী ছাহেবের নিকট আমার জিজ্ঞাসা হল, হজ্বের সময় যদি আমার স্রাব এসে যায় তাহলে হজ্বের আমলগুলো আদায়ের ক্ষেত্রে আমার কী হুকুম হবে। কোনটি স্রাব অবস্থায় আদায় করা যাবে আর কোনটি আদায় করা যাবে না। সুস্পষ্টভাবে জানালে আমি পেরেশানীমুক্ত হব। আল্লাহ আপনাদের খেদমতকে কবুল করুন।

উত্তর

স্রাব অবস্থায় কেবল বাইতুল্লাহর তাওয়াফ এবং মসজিদে হারামে প্রবেশ করা নিষেধ। বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ব্যতীত হজ্ব ও উমরার ইহরাম করা থেকে নিয়ে হালাল হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য সকল আমল আপনি স্রাব অবস্থায় আদায় করতে পারবেন। যেমন, মিনায় থাকা,মুযদালিফা ও আরাফার উকুফ, মিনার পাথর নিক্ষেপ, কুরবানী ইত্যাদি কাজ এ সময়েও আঞ্জাম দেওয়া যাবে। এমনকি উমরার তাওয়াফের পর স্রাব আসলে এ অবস্থায় সায়ীও করতে পারবেন। আর স্রাবের দরুন তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করতে বিলম্ব হয়ে গেলেও কোনো জরিমানা দম আসবে না।

-সহীহ বুখারী, হাদীস ৩০৫; রদ্দুল মুহতার ২/৫১৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৫২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত কুরবানীর ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকেট কিনেছিলাম। পরে...

প্রশ্ন

গত কুরবানীর ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকেট কিনেছিলাম। পরে ঐ সময় আর বাড়িতে যাওয়া হচ্ছে না বিধায় ঐ টিকেট আরেক ব্যক্তিকে পঞ্চাশ টাকা বেশিতে বিক্রি করেছি। হুজুরের নিকট জানতে চাই, আমার জন্য ঐ টিকেট অধিক মূল্যে বিক্রি করা জায়েয হয়েছে কি?

উত্তর

টিকেট বিক্রি করে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়া জায়েয হয়নি। তাই অতিরিক্ত পঞ্চাশ টাকা ঐ ব্যক্তিকে ফেরত দিবে। যদি তাকে পাওয়া সম্ভব না হয় তবে তা সদকা করে দিতে হবে।

-কিতাবুল আছল ৩/৪৬৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৬৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১১৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২৬৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/৫০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬০৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার বাড়ি কক্সবাজার। আমি চট্টগ্রামে লেখাপড়া করি। মাদরাসায় আসা-যাওয়ার সময়...

প্রশ্ন

আমার বাড়ি কক্সবাজার। আমি চট্টগ্রামে লেখাপড়া করি। মাদরাসায় আসা-যাওয়ার সময় গাড়িগুলোতে সাধারণত গান ছেড়ে দেওয়া হয়। তাই আমি গাড়িতে গান ছেড়ে দেওয়া হলে গান যেন শুনতে না হয় সেজন্য কুরআন তিলাওয়াত করতে থাকি। গত কুরবানীর বন্ধের পর মাদরাসায় আসার সময়ও গাড়িতে গান ছেড়ে দেওয়া হলে আমি তিলাওয়াত শুরু করি। আমার সাথে আমার এক সাথী ছিল। সে আমাকে বলে যে, গান চলাকালীন কুরআন তিলাওয়াত করলে আবার কুরআনের বেহুরমতি হবে না তো? তার এ কথা শুনে আমার দিলেও এ ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ জাগে।

দয়া করে উক্ত অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত বা যিকির করার হুকুম জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত পরিস্থিতিতে গান শোনা থেকে বিরত থাকার উদ্দেশ্যে কুরআন তিলাওয়াত করা বা যিকির আযকার করা জায়েয হবে। এতে কুরআন শরীফ বা যিকিরের অসম্মান হবে না; বরং এ অবস্থায় তিলাওয়াত ও যিকিরে ব্যস্ত থাকা আরো প্রশংসনীয় ও অধিক সওয়াবের কাজ হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩১৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৭/৫০৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৯৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু কেনার সময় এর সাথে অনেক সময় মোবাইল সেট,...

প্রশ্ন

কুরবানীর পশু কেনার সময় এর সাথে অনেক সময় মোবাইল সেট, কখনো ফ্রিজ ফ্রি দেয়। আমার জানার বিষয় হল, উক্ত মোবাইল বা ফ্রিজ কি ব্যবহার করা যাবে, নাকি সদকা করে দিতে হবে? দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

কুরবানীর পশুর সাথে মোবাইল, ফ্রিজ বা অন্য কিছু ফ্রি দিলে তা নিজে ব্যবহার করতে পারবে। তা সদকা করে দেওয়া জরুরি নয়। কারণ এটা কুরবানীর পশুর সাথে পেলেও তা কুরবানীর অংশ বা সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় নয়; বরং তা পৃথক ক্রয়কৃত পণ্যের মতোই।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৯৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার ছেলের বয়স ৫ বছর। এখন তার আকীকা করতে চাচ্ছি।...

প্রশ্ন

আমার ছেলের বয়স ৫ বছর। এখন তার আকীকা করতে চাচ্ছি। আকীকার হুকুম কী? অর্থাৎ কী দিয়ে আকীকা করতে হবে এবং এর বণ্টন বিধি কী? আকীকার গোশত কে কে খেতে পারবে? বাবা-মাও কি সে গোশত খেতে পারবে? আর আকীকা কি কুরবানীর সাথে দেওয়া যাবে? যদি যায় তাহলে কীভাবে ?

দয়া করে বিস্তারিত জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

আকীকা করা মুস্তাহাব। পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ছাগল আর কন্যার জন্য একটি ছাগল।

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম ছেলের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫১৩

আর কুরবানীর পশুতে আকীকার নিয়তে শরিক হওয়াও জায়েয। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন আকীকা ও কুরবানীর কোনো অংশ পশুর এক সপ্তমাংশের কম না হয়।

আকীকার গোশত সন্তানের মা-বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন এবং ধনী-গরীব সকলেই খেতে পারবে। আকীকার গোশতের বণ্টন ও ব্যবহার কুরবানীর মতোই। কিছু গোশত নিজেদের জন্য রাখা, কিছু আত্মীয়-স্বজনকে দেওয়া এবং কিছু গোশত গরীবদেরকে সদকা করা উত্তম।

-আততালীকুল মুমাজজাদ ২৮৯, ২৯০; ইলাউস সুনান ১৭/১১৮; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৩৯৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৪; আলমুসতাদরাক লিল হাকিম, হাদীস : ৭৬৬৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের মহল্লা মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ...

প্রশ্ন

আমাদের মহল্লা মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ প্রয়োজন। তাই মসজিদ কমিটি এ মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আমরা এ বারের কুরবানীতে এলাকার মানুষকে অনুরোধ করব, সকলেই যেন তাদের কুরবানীর পশুর চামড়ার পুরো না হলেও অন্তত অর্ধেক মূল্য যেন মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য দান করেন।

আমার জানার বিষয় হল, মসজিদ কমিটির উক্ত সিদ্ধান্ত কি সঠিক হয়েছে? চামড়ার মূল্য কি মসজিদ নির্মাণ কাজে লাগানো যাবে? শরীয়তের নির্দেশনা জানাতে অনুরোধ রইল।

উত্তর

মসজিদ কমিটির উক্ত সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য মসজিদে দান করা জায়েয নয়। এ টাকা মসজিদ নির্মাণের জন্য ব্যয় করা কিংবা মসজিদের অন্য কোনো কাজে লাগানো নাজায়েয। কেননা কুরবানীর পশুর চামড়ার টাকা গরীব-মিসকীনের হক। তা যাকাত গ্রহণের উপযুক্তদেরকেই দিতে হবে। আর মসজিদ মুসলমানদের স্বতঃস্ফ‚র্ত নফল দান দ্বারাই নির্মাণ করতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৭৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর সময় আমরা কুরবানীর পশু কিনতে হাটে যাই। প্রত্যেক পশু...

প্রশ্ন

কুরবানীর সময় আমরা কুরবানীর পশু কিনতে হাটে যাই। প্রত্যেক পশু কেনার পর হাসিল দিতে হয়। এখন জানার বিষয় হল, হাসিল কুরবানীর পশুর হক, নাকি হাটের ট্যাক্স? কেউ যদি হাসিলের টাকা না দিয়ে চলে আসে তাহলে তার কুরবানীতে কোনো সমস্যা হবে কি না?

উত্তর

হাসিল হাটের ভাড়া। এটি হাট কর্তৃপক্ষের হক। যা হাটের সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে নেওয়া হয়। তাই এ টাকা পরিশোধ করা জরুরি। হাসিল না দিলে হাট কর্তৃপক্ষের হক নষ্ট করার গুনাহ হবে। তাই কেউ হাসিল না দিয়ে থাকলে হাট কর্তৃপক্ষের নিকট তা পৌঁছে দিতে হবে। অবশ্য হাসিল না দেওয়ার কারণে কুরবানী নাজায়েয হয়ে যাবে না।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৫১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত বছর আমি হজ্ব করতে গিয়েছিলাম। তখন কুরবানীর জন্য টাকা...

প্রশ্ন

গত বছর আমি হজ্ব করতে গিয়েছিলাম। তখন কুরবানীর জন্য টাকা ব্যাংকে দিয়ে দিই। পরে আমার এক সাথীকে বলতে শুনেছি, ব্যাংকের মাধ্যমে কুরবানী করলে নাকি কুরবানী সহীহ হয় না। কারণ ব্যাংককে কুরবানী করার জন্য যতজন হাজ্বী টাকা দেয় ততটা কুরবানী তো করা হয় তবে পশু কোনটা কার জন্য তা নির্দিষ্ট করা হয় না। আর নির্দিষ্ট না করার কারণে তাদের কুরবানী সহীহ হয় না। তাই ব্যাংকের মাধ্যমে কুরবানী করা যাবে না।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বক্তব্য সঠিক নয়। কুরবানী সহীহ হওয়ার জন্য প্রত্যেকের পশু নির্দিষ্ট করা জরুরি নয়। বরং যতজন হাজ্বী টাকা জমা করবে ততটা পশু যবাই করলেই প্রত্যেকের কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। সুতরাং হাজ্বীদের জন্য সৌদি সরকারের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ব্যাংকের মাধ্যমে কুরবানী করা জায়েয। অবশ্য যারা ব্যাংকের মাধ্যমে দমে শোকর আদায় করবে তারা নির্দিষ্ট সময় থেকে বিলম্ব করে হলক করবে যেন হলক কুরবানীর পর হয়।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৫৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৮০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি সবার সাথে মাঠে না গিয়ে আমার নিজ বাড়িতে কুরবানী...

প্রশ্ন

আমি সবার সাথে মাঠে না গিয়ে আমার নিজ বাড়িতে কুরবানী করি এবং কুরবানীর পশু আমি নিজেই যবাই করি। সবার সাথে মাঠে কুরবানী না করায় এবং হুযুরকে দিয়ে যবাই না করার কারণে শরয়ী কোনো অসুবিধা হয়েছে কি?

উত্তর

সবার সাথে মাঠে গিয়ে কুরবানী করা জরুরি নয়। নিজ বাড়িতে কিংবা প্রত্যেকের সুবিধা মত স্থানে কুরবানী করা যাবে। আর কুরবানীর পশু নিজে জবাই করা উত্তম। এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল দ্বারা প্রমাণিত। আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হৃষ্ট-পুষ্ট দুটি ভেড়া দিয়ে কুরবানী করেছেন। আমি তাঁকে ভেড়ার উপর কদম মুবারক রেখে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলতে দেখেছি। অতপর তিনি নিজ হাতে ভেড়া দুটি জবাই করেছেন।

-সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২১; কাযী খান ৩/৩৫৫; আদ্ দুররুল মুখতার ৬/৩২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫২১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি ২১ দিনের মধ্যেই আমার ছেলেসন্তানের আকীকা করতে মনস্থ করেছি।...

প্রশ্ন

আমি ২১ দিনের মধ্যেই আমার ছেলেসন্তানের আকীকা করতে মনস্থ করেছি। কিন্তু আমার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় কোনো অনুষ্ঠান করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে আকীকার নিয়তে আমি কোনো এতিমখানায় দুটি ছাগল দিতে চাই। আমার পিতামাতা ও শ্বশুর-শাশুড়িও এতে একমত হয়েছেন। তাই জানার বিষয় হল, এভাবে ছাগল দিলে কি আকীকা আদায় হবে? দয়া করে বিস্তারিত দলিল-প্রমাণের আলোকে জানাবেন।

উত্তর

আকীকার পশু কোনো প্রতিষ্ঠানে দিলে এবং আকীকার জন্য তা যবাই করা হলে আকীকা আদায় হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, আকীকার জন্য অনুষ্ঠান করা জরুরি নয়; বরং আকীকার উদ্দেশ্যে পশু যবাই করলেই তা আদায় হয়ে যায়। আর আকীকার গোশতের ব্যবহার ও বণ্টনের নিয়ম কুরবানীর গোশতের মতোই।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫১২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনৈক ব্যক্তি তাওয়াফে বিদা না করে দেশে চলে এসেছে। এখন...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি তাওয়াফে বিদা না করে দেশে চলে এসেছে। এখন তার কী করণীয়? আগামী রমযানে তিনি ওমরায় যাওয়ার নিয়ত করেছেন। তখন কি ঐ তাওয়াফে বিদা আদায় করার সুযোগ আছে? বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি ওমরার পর তাওয়াফে বিদা করে নিতে পারবে। এর দ্বারা তার ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে এবং বিলম্বে আদায়ের কারণে কোনো জরিমানা আসবে না। আর যদি সেখানে যাওয়া না হয় তাহলে তাকে তাওয়াফে বিদা না করার কারণে একটি দম দিতে হবে। অর্থাৎ হেরেমের ভিতরে কুরবানীযোগ্য একটি ছাগল বা দুম্বা কারো মাধ্যমে জবাই করতে হবে।

উল্লেখ্য, প্রশ্নোক্ত ব্যক্তি যদি উক্ত হজ্বের তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোনো নফল তাওয়াফ করে থাকে তবে তার ঐ তাওয়াফ দ্বারা তাওয়াফে বিদার ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তাকে পুনরায় তাওয়াফ করতে বা দম দিতে হবে না।

-গুনইয়াতুন নাসিক ১৯১; আল বাহরুল আমীক ৪/১৯২০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৮৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুমিল্লায় থাকি। গত বছর কুরবানীর জন্য একটি খাসী ক্রয়...

প্রশ্ন

আমি কুমিল্লায় থাকি। গত বছর কুরবানীর জন্য একটি খাসী ক্রয় করি। ঈদের দিন বাড়িতে যাওয়ার প্রোগ্রাম থাকায় ফজরের পরপরই তা যবাই করে ফেলি তখনো কোথাও ঈদের নামায হয়নি। সপ্তাহখানেক পর জনৈক ব্যক্তি আমাকে বললেন আমার কুরবানী সহীহ হয়নি। প্রশ্ন হল, আমার উক্ত কুরবানী সহীহ হয়েছে কি না? যদি না হয় তাহলে এখন আমার করণীয় কী? দয়া করে বিস্তারিত দলিলপ্রমাণসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

ঐ ব্যক্তি ঠিকই বলেছে। আপনার উক্ত কুরবানী আদায় হয়নি। কেননা এলাকার কোথাও ঈদের নামায হওয়ার আগে কুরবানী করলে তা আদায় হয় না। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঈদের নামাযের আগে কুরবানীর পশু যবাই করবে সেটা তার নিজের জন্য হবে (কুরবানী হবে না।) আর যে ব্যক্তি ঈদের নামাযের পর কুরবানী করবে তার কুরবানী আদায় হবে এবং সে মুসলমানদের পথ অনুসরণ করেছে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫০৩১

হযরত বারা’ রা. থেকে বর্ণিত অন্য হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈদের দিন আমরা প্রথমে ঈদের নামায আদায় করি তারপর এসে কুরবানী করি। যে ব্যক্তি এভাবে আদায় করবে সে আমাদের তরীকা মোতাবেক করল। আর যে নামাযের আগেই পশু যবাই করল সেটা তার পরিবারের গোশতের প্রয়োজন পূরণ করবে। এটা নুসুক (কুরবানী) হবে না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫০৩৫

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কুরবানী যেহেতু আদায় হয়নি তাই এখন করণীয় হল, কুরবানীর যোগ্য একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে নামাযের আগে পশু যবাই করেছে সে যেন (নামাযের পর) অন্য আরেকটি পশু যবাই করে।

-সহীহ বুখারী ২/৮৩৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৮৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার এক ভাই কুরবানীর ঈদের পরপরই ওলিমার তারিখ নির্ধারণ করে।...

প্রশ্ন

আমার এক ভাই কুরবানীর ঈদের পরপরই ওলিমার তারিখ নির্ধারণ করে। এরপর কুরবানীর গোশত দিয়ে ওলিমার দাওয়াতে খানা খাওয়ায়। জানতে চাই, এভাবে কুরবানীর গোশত দিয়ে ওলিমার দাওয়াত খাওয়ালে কুরবানী আদায় হবে কি?

উত্তর

একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কুরবানী করার পর তা নিজে খাওয়া বা অন্যকে খাওয়ানো উভয়টিই জায়েয। তাই খালেস নিয়তে কুরবানী করার পর সে গোশত দ্বারা ওলিমার মেহমানদারি করলেও কুরবানীর কোনো সমস্যা হবে না। তবে যদি কুরবানী দ্বারা ওলিমার গোশত লাভ করাই উদ্দেশ্য হয় তাহলে তা দ্বারা কুরবানী আদায় হবে না।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৯; ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮, ২২৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার পিতা একজন মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। তার কুরবানী করার সামার্থ্য...

প্রশ্ন

আমার পিতা একজন মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। তার কুরবানী করার সামার্থ্য ছিলো। গত ঈদে তিনি কুরবানীর জন্য একটি গরুও কিনেছিলেন। কিন্তু সেটি কুরবানী করার সুযোগ তার আর হয়নি। ঈদের নামায পড়ে আসার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় ইন্তেকাল হয়। তার মৃত্যুতে পরিবারের সকলে শোকাহত ছিল। তাই কুরবানীর তিনদিনের ভেতর গরুটি আর কুরবানী করা হয়নি। এখন আমরা ঐ গরুটি কী করব? সেটি কি সদকা করে দিতে হবে? অথবা আগামী কুরবানীর ঈদে যবেহ করার জন্য রেখে দিতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতা যেহেতু কুরবানীর সময় (১২ যিলহজ্ব) শেষ হওয়ার আগেই ইন্তেকাল করেছেন, তাই এ বছরের কুরবানী তার উপর ওয়াজিব থাকেনি। সুতরাং তার ক্রয়কৃত ঐ পশুটিরও কুরবানী করা বা সদকা করা লাগবে না। বরং এই পশু এখন তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তি হিসাবে ধর্তব্য হবে। ওয়ারিশরা চাইলে সেটা বিক্রি করে দিয়ে এর মূল্য সকলের অংশ অনুযায়ী ভাগ করে নিতে পারেন। আবার চাইলে যবেহ করে এর গোশতও বণ্টন করে নিতে পারেন আর যদি সকল ওয়ারিশ বালেগ হয় এবং তারা একমত হয় তাহলে তারা গরুটি বা এর মূল্য সদকাও করে দিতে পারবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; আদ দুররুল মুখতার ৬/৩১৯; ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া ১৭/৪৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৪১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের একটি গরু আছে। সেটির অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে...

প্রশ্ন

আমাদের একটি গরু আছে। সেটির অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে দুতিনটি দাঁত ছাড়া এর প্রায় সবকটি দাঁতই পড়ে গেছে। তবে যে পরিমাণ দাঁত অবশিষ্ট আছে তা দ্বারা ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে। এবছর এ গরুটিকে কুরবানী করতে চাচ্ছি। প্রশ্ন হল, এর দ্বারা কুরবানী করা কি সহীহ হবে?

উত্তর

এ অবস্থায়ও গরুটি যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে।

-শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫; ফাতওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৪০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের মহল্লা মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ...

প্রশ্ন

আমাদের মহল্লা মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ প্রয়োজন। তাই মসজিদ কমিটি এ মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আমরা এবারের কুরবানীতে এলাকার মানুষদের অনুরোধ করব। তারা যেন সকলে তাদের কুরবানীর পশুর চামড়ার পুরো না হলেও অমত্মত অর্ধেক মূল্য মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য দান করেন।

আমার জানার বিষয় হল, মসজিদ কমিটির উক্ত সিদ্ধান্ত কি সঠিক হয়েছে? চামড়ার মূল্য কি মসজিদ নির্মাণ কাজে লাগানো যাবে? শরীয়তের নির্দেশনা জানাতে অনুরোধ রইল।

উত্তর

মসজিদ কমিটির উক্ত সিদ্ধান্ত সহীহ নয়। কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য মসজিদে দান করা জায়েয নয় এবং এ টাকা মসজিদ নির্মাণের কাজে ব্যয় করাও জায়েয নয়। কারণ, কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য গরীব মিসকিনের হক। তা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিদেরকে সদকা করে দেয়া জরুরি। আর মসজিদ মুসলমানদের সাধারণ দান দ্বারাই নির্মাণ করতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; ফাতহুল কাদীর ৮/৪৩৮; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৩৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

স্বামীর নিকট স্ত্রী মোহরের কিছু টাকা পাবে। কিছু টাকা নগদ...

প্রশ্ন

স্বামীর নিকট স্ত্রী মোহরের কিছু টাকা পাবে। কিছু টাকা নগদ আদায় করেছে। যে টাকা বাকী আছে তার পরিমাণ কুরবানীর নেসাবের চেয়ে অধিক। স্বামী এ টাকা এ বছর কুরবানীর আগে দিতে পারছে না। বরং সামনের বছর আদায় করবে বলে সম্ভাবনা রয়েছে।

এখন এ মহিলার উপর কি ঐ পাওনা টাকার কারণে এ বছর কুরবানী ওয়াজিব হবে? প্রকাশ থাকে যে, স্ত্রীর কাছে এছাড়া কোনো নগদ টাকা বা স্বর্ণ বা অন্য কোনো সম্পদ নেই।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মহিলার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। কেননা তার কাছে কোনো সম্পদই নেই। আর সে যে মহর পাবে সে কারণেও তার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। কারণ, মহরের টাকা হস্তগত হওয়ার আগে তাতে স্ত্রীর পূর্ণ মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। সুতরাং ভবিষ্যতে মোহর পাবে এ কারণে স্ত্রীর উপর এখন কুরবানী ওয়াজিব হবে না

-রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা চার ভাইবোন। আমরা ভাইবোনেরা মিলে প্রতি বছর একটি গরু...

প্রশ্ন

আমরা চার ভাইবোন। আমরা ভাইবোনেরা মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। এ বছর নিয়ত করেছি একটি গরু কিনে আমরা চার জনে চারভাগ দিবো আর আমাদের মৃত মা-বাবা, দুজনের নামে দুই ভাগ দিবো। আমাদের প্রশ্ন হলো- মৃত মা-বাবার নামে যে কুরবানী করব তার গোশত নিজেরা খেতে পারবো নাকি পুরোটা গরীবদেরকে সদকা করে দিতে হবে?

উত্তর

নিজেদের পক্ষ থেকে মা-বাবার সাওয়াবের উদ্দেশ্যে কুরবানী করলে সেই কুরবানীর গোশত নিজেরাও খেতে পারবেন এবং আত্মীয়-স্বজন ও অন্যান্যদেরও খাওয়াতে পারবেন। তাদের অংশের গোশত গরীবদেরকে সদকা করা আবশ্যক নয়।

-রদ্দুল মুহতার ২/৩২৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৪; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৩৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর কুরবানীর পর আমাদের বাসায় প্রচুর পরিমাণে চর্বি জমা...

প্রশ্ন

প্রতি বছর কুরবানীর পর আমাদের বাসায় প্রচুর পরিমাণে চর্বি জমা হয়। এসকল চর্বি উত্তমরূপে না নিজে ব্যবহার করা যায় না অন্যকে দেওয়া যায়। আমার প্রতিবেশী মহিলারা চর্বি কিনতে আসা ব্যক্তিদের নিকট তা বিক্রি করে দেন। কিন্তু আমার স্বামী একথা বলে আমাকে চর্বি বিক্রি থেকে বিরত রেখেছেন যে, ‘কুরবানীর পশুর চর্বি বিক্রি করা নাজায়েয।’ আমি জানতে চাচ্ছি যে, তার উক্ত কথা কি ঠিক? আর যেহেতু সুষ্ঠুভাবে চর্বিগুলোকে ব্যবহার না করার কারণে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় তাই তা বিক্রি করে গরীবদেরকে এর অর্থ দেওয়ার সুযোগ আছে কি না?

উত্তর

আপনার স্বামী ঠিকই বলেছেন। কুরবানীর গোশত, চর্বি, হাড্ডি ইত্যাদি বিক্রি করা নাজায়েয। এ ব্যাপারে একাধিক হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে।

তাই নিজে ব্যবহার করতে না পারলে গরীব-মিসকীনকে দিয়ে দিবে। অবশ্য কাউকে দেওয়ার সুযোগ না থাকার কারণে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা হলে বিক্রি করা যাবে। অতপর প্রাপ্ত অর্থ সদকা করে দিতে হবে।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৬২১১; মাজমাউয যাওয়াইদ, ৪/২৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫, শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৩৯, আলখানিয়া ৩/৩৫৪ খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪২৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত বছর আল্লাহর রহমতে পবিত্র হজ্ব আদায় করেছি। যিলহজ্বের ১০...

প্রশ্ন

গত বছর আল্লাহর রহমতে পবিত্র হজ্ব আদায় করেছি। যিলহজ্বের ১০ তারিখ আমরা কংকর নিক্ষেপ ও কুরবানী করার পর কাফেলার এক হাজ্বী ভাইয়ের মাথা মুণ্ডিয়ে দিই। তারপর তিনি আমার মাথা মুণ্ডিয়ে দেন। জানার বিষয় হল, ইহরাম অবস্থায় মাথা মুণ্ডানোর কারণে আমার উপর কি দম বা সদকা ওয়াজিব হয়েছিল?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অন্যের মাথা মুণ্ডিয়ে দেওয়া অন্যায় হয়নি এবং আপনার উপর এ কারণে কোনো কিছু ওয়াজিবও হয়নি। হলকের পূর্বের সকল কার্যাদী সম্পন্ন করার পর অন্যের মাথার চুল মুণ্ডিয়ে দেওয়া জায়েয। তাবেয়ী হযরত ইবনে জুরাইজ রাহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হযরত আতা রাহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, এক ব্যক্তি কংকর নিক্ষেপ করেছে কিন্তু হলক করেনি সে কি অন্যকে হলক করে দিতে পারবে? তিনি জবাবে বললেন, হ্যাঁ পারবে।

- মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, আসার নং ১৬১৩৯; মানসিক পৃ. ২৩০; যুবদাতুল মানাসিক ৩৭; গুনইয়াতুন নাসিক ১৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪১৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে।...

প্রশ্ন

কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে। যদি বিশেষ দুটি দাঁত উঠে তাহলে পছন্দ হলে কেনে, অন্যথায় ঐ গরু কেনে না। তারা মনে করে, বিশেষ দুই দাঁত না উঠলে সেই গরু দিয়ে কুরবানী করা যায় না।

এখন আমার জানার বিষয় হল, গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুটি দাঁত উঠা কি জরুরি? আর যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায়, কোনো একটি গরুর দুই বছর হয়েছে, কিন্তু এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করলে সহীহ হবে কি না?

উত্তর

গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। বিশেষ দাঁত উঠা জরুরি নয়। তবে যেহেতু বিশেষ দুটি দাঁত দুই বছর বয়স পূর্ণ হলেই উঠে থাকে তাই সাধারণত দুই দাঁত উঠাকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আলামত মনে করা হয়। এ কারণেই মানুষ কুরবানীর পশু কিনতে গেলে তা পরীক্ষা করে। এতে আপত্তির কিছু নেই। তবে যদি কোনো গরুর ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, দুই বছর পূর্ণ হলেও এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে সেই গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে।

-সহীহ মুসলিম ২/১৫৫; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬১১-১৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪১৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী...

প্রশ্ন

আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী ক্রয় করেছি। কুরবানীর আগে সেই গাভীটির একটি বাচ্চা হয়েছে। জানার বিষয় হল, এ বাচ্চাটির ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কী?

উত্তর

উক্ত বাচ্চাটি সদকা করে দিতে হবে। অবশ্য জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি জবাই করে দেয় তবে তার গোশত সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪১১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা...

প্রশ্ন

কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা কাটা থাকলে এর দ্বারা কুরবানী সহীহ হয় না?

উত্তর

কুরবানীর পশুর কান বা লেজ অর্ধেক বা এরচেয়ে বেশি না থাকলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ নয়। যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি অংশ থাকে তাহলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হবে।

-শরহু মাআনিল আছার ২/২৭১; কিতাবুল আসল ২/৪৯৪; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; ইলাউস সুনান ১৭/২৪০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪১০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি।...

প্রশ্ন

আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। বড় ভাই এক ভাগ আর আমরা দুই ভাই তিন অংশ করে মোট ছয় ভাগ নিয়েছি। আমরা দুই ভাই সমান সমান টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু বড়ভাই আমাদের মধ্যে তুলনামূলক অসচ্ছল হওয়ায় তিনি তার অংশের পুরো টাকা দেন না। আমরা দুই ভাই বলেছি, আপনি যা পারেন দেন, বাকিটা আমরা দুজনে দিয়ে দিব। অবশ্য গোশত সকলের অংশ হারেই বণ্টন করা হয়। টাকা কম-বেশির কারণে তাতে ব্যবধান করা হয় না; বরং ধরে নেওয়া হয় যে, আমরা ছোট দুই ভাই বড় ভাইয়ের টাকার আংশিক আদায় করে দিই।

জানতে চাই, উল্লেখিত পদ্ধতিতে আমাদের কুরবানী কি সহীহ হচ্ছে?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। গরু-মহিষে শরিকে কুরবানী দেওয়ার জন্য শর্ত হল, কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হওয়া। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বড় ভাই যদিও তার অংশের চেয়ে কম দিচ্ছেন কিন্তু অন্য দুই ভাই তার অংশের বাকিটা দিয়ে দিবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তাই বড় ভাইয়ের অংশ এক সপ্তমাংশের কম হয় না।

-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪০৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

প্রশ্ন

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী মুকীম ব্যক্তি, যে ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। নেসাব হল : স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তবে স্বর্ণ-রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য বস্ত্তর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে। স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, নগদ অর্থ, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্র-এ সবই কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬,আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪০৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

খালিদ ৭ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে, যার দ্বারা মোটামুটিভাবে...

প্রশ্ন

খালিদ ৭ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে, যার দ্বারা মোটামুটিভাবে তার সংসার চলে। গত কয়েকদিন পূর্বে তার আম্মা ইন্তেকাল করেন। পিতা আগেই মারা গেছেন। মায়ের মৃত্যুর পর তার মামারা তার আম্মার পৈত্রিক সম্পত্তি (৬ শতাংশ জমি, যার প্রতি শতাংশের মূল্য প্রায় এক লক্ষ টাকা) তার ও তার তিন বোনের নামে ১.৫ শতাংশ করে সমানভাবে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। এছাড়া খালিদের উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদ নেই। তবে বর্তমানে তার কাছে নগদ ৫০ হাজার টাকা আছে। জানার বিষয় হল, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় খালিদের উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী খালিদ মীরাস সূত্রে ১.৫ শতাংশ জমির মালিক হয়েছে তা যেহেতু তার প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ এবং তার মূল্যও নেসাব পরিমাণের বেশি (অর্থাৎ প্রায় এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা) তাই তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৮৬; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯

প্রকাশ থাকে যে, মায়ের সম্পত্তি তার ছেলেমেয়ের মাঝে সমানহারে বণ্টন করা বৈধ হয়নি। কুরআন মজীদের হুকুম হল, মেয়ের তুলনায় ছেলে দ্বিগুণ মীরাসের হকদার।

-সূরা নিসা ৪ : ১১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪০৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার...

প্রশ্ন

এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগেই স্ত্রীর সাথে থেকেছে এবং স্ত্রীসূলভ আচরণ করেছে। এরপর তারা তাওয়াফে যিয়ারত ও তাওয়াফে বিদা করার পর দেশে চলে আসে। এখন তাদের উক্ত ভুলের কারণে জরিমানা দিতে হবে কি? এক ব্যক্তি বলেছে, তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব। এটা কি ঠিক?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ভুলের কারণে স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেককে একটি করে জরিমানা-দম ছাগল বা দুম্বা মক্কার হেরেম এলাকায় জবাই করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব প্রশ্নের এ মন্তব্য ঠিক নয়। কেননা মাসআলা হল, উকূফে আরাফার পর হালাল হওয়ার আগে স্ত্রী মিলন হয়ে গেলে প্রত্যেককে একটি করে উট বা গরু জরিমানা দিতে হয়। আর যদি হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগে এই ভুল হয়ে যায় তবে একটি করে ছাগল বা দুম্বা জরিমানা দিতে হয়।

-মানাসিক, পৃ. ৩৩৯; ইলাউস সুনান ১০/৩৪০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা সাত ভাই। প্রতি বছর আমরা সবাই মিলে একটি গরু...

প্রশ্ন

আমরা সাত ভাই। প্রতি বছর আমরা সবাই মিলে একটি গরু কুরবানী করে থাকি। গত বছর আমরা প্রত্যেকে সমানভাবে টাকা দিয়ে দুইটি গরু খরিদ করেছি। উভয়টি সবার পক্ষ থেকে কুরবানী করে উভয়টির গোশত একত্র করে সবাই সমানভাবে ভাগ করে নিয়েছি। আমাদের এই কুরবানী কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

হ্যাঁ, আপনাদের সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৫৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

প্রশ্ন

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী মুকীম ব্যক্তি, যে ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। নেসাব হল : স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তবে স্বর্ণ-রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য বস্ত্তর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে গেলে সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে। স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, নগদ অর্থ, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্র-এ সবই কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৪১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার কাছে একটি জমি আছে। ঐ জমির উপার্জন দ্বারা আমার...

প্রশ্ন

আমার কাছে একটি জমি আছে। ঐ জমির উপার্জন দ্বারা আমার এবং আমার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। জানার বিষয় হল, ঐ জমির কারণে কি আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে?

উত্তর

না, উক্ত জমির কারণে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। কেননা তা আপনার প্রয়োজনের অতিরিক্ত নয়; বরং এর আয়ের উপর আপনার পরিবারের খরচ নির্ভরশীল। তাই কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে তা ধর্তব্য হবে না।

-রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২; আলবিনায়াহ ১৪/৩৫০; ফাতাওয়া খানিয়া ৬/২৮৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪০৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৩৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এক ব্যক্তি উমরা করতে যায়। কিন্তু সে উমরার তাওয়াফ সাঈ...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি উমরা করতে যায়। কিন্তু সে উমরার তাওয়াফ সাঈ করার পর মাথা হলক না করে জিদ্দায় চলে আসে এবং জিদ্দাতেই মাথা হলক করে নেয়। এখন তার কী করণীয়? এ কারণে তাকে কোনো জরিমানা দিতে হবে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হেরেমের এলাকায় হলক না করে জিদ্দায় হলক করার কারণে জরিমানা স্বরূপ তাকে একটি দম দিতে হবে। অর্থাৎ কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগল/দুম্বা হেরেমের ভিতরে যবাই করতে হবে। অবশ্য এক্ষেত্রে ঐ লোক যদি হেরেমে ফিরে এসে মাথা হলক করত তাহলে তার উপর দম ওয়াজিব হত না।

-গুনয়াতুন নাসিক পৃষ্ঠা : ১৭৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩১৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি প্রতি বছর একা একটা গরু কুরবানী করি। গত বছরও...

প্রশ্ন

আমি প্রতি বছর একা একটা গরু কুরবানী করি। গত বছরও একা কুরবানী করার নিয়তে গরু কেনার জন্য হাটে যাই। কিন্তু অস্বাভাবিক চড়ামূল্যের কারণে একা ক্রয় করা সম্ভব হয়নি। তাই গরু ক্রয়ের সময় শরিক নেওয়ার নিয়ত করে নেই এবং পরে আরেকজনকে শরিকে নিয়ে কুরবানী করি। প্রশ্ন হল, ঐভাবে কুরবানী করার দ্বারা কি আমার কুরবানী আদায় হয়েছে?

উত্তর

হ্যাঁ, আপনার কুরবানী সহীহ হয়েছে।

-কিতাবুল আছল ৫/৪০৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০; হেদায়া ৪/৪২৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩০৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের একটা গরু আছে। কোনো এক রোগের কারণে যার লেজের...

প্রশ্ন

আমাদের একটা গরু আছে। কোনো এক রোগের কারণে যার লেজের সামান্য অংশ লম্বা পশমসহ ঝরে পড়েছে। আগামী ঈদুল আযহায় গরুটি কুরবানী দিতে চাচ্ছি। শরীয়তের দৃষ্টিতে তা বৈধ হবে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, ঐ গরু দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে। কেননা কোনো গরুর লেজ যদি অর্ধেকের বেশি অবশিষ্ট থাকে তবে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয।

-মুখতাছারুত তহাবী ৭/৩৫৫; হেদায়া ৮/৪৩৩; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৬৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় কিছু লোক আছে, যারা সামর্থ্য না থাকার কারণে...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় কিছু লোক আছে, যারা সামর্থ্য না থাকার কারণে কুরবানী দিতে পারে না। তাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে, যারা কুরবানীর দিন মুরগী বা হাঁস যবাই করে থাকে। আমি জানতে চাই, কুরবানীর দিন হাঁস-মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয আছে কি?

উত্তর

কুরবানীর দিনেও কুরবানীর নিয়ত না করে কেবল খাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয। এতে দোষের কিছু নেই।

তবে কুরবানীর নিয়তে কিংবা কুরবানীর সাদৃশ্য অবলম্বনের উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী যবাই করা যাবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৩/২৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৬০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার বন্ধু ইফতেখার ও ইহতেশাম প্রতি বছর কুরবানীর ঈদে পঞ্চাশ...

প্রশ্ন

আমার বন্ধু ইফতেখার ও ইহতেশাম প্রতি বছর কুরবানীর ঈদে পঞ্চাশ হাজার করে এক লক্ষ টাকা দিয়ে চামড়া ব্যবসা করে। এবার তারা আমাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে তাদের ব্যবসায় শরিক হতে বলে। কিন্তু আমার কাছে এত টাকা না থাকায় আমি বিশ হাজার টাকা ও চামড়া বেচাকেনার কাজে শ্রম দিতে সম্মত হই। এরপর আমাদের মাঝে এভাবে চুক্তি হয় যে, ইফতেখার পঞ্চাশ হাজার টাকা ও শ্রম দিবে। আর বিনিময়ে সে লভ্যাংশের ৪০% পাবে। ইহতেশাম শ্রমহীন পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে লভ্যাংশের ৩০% পাবে। আর আমি বিশ হাজার টাকা ও শ্রম দিয়ে পাব লভ্যাংশের ৩০%। আর ব্যবসায় লোকসান হলে সবাই নিজ নিজ লভ্যাংশ হারে দায়ভার বহন করবে। জানার বিষয় হল, আমাদের উক্ত চুক্তিটি কি শরীয়তসম্মত হয়েছে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কারবারে লভ্যাংশ বণ্টনের চুক্তিটি সহীহ হয়েছে। কেননা শরিকানা কারবারে যে অংশিদার শ্রম দিবে তার লভ্যাংশ মূলধনের আনুপাতিক হারের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করা জায়েয আছে। তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকসানের দায়ভার বহনের চুক্তিটি শরীয়তসম্মত হয়নি। কেননা লোকসানের ক্ষেত্রে নিয়ম হল, প্রত্যেক অংশিদার তার মূলধন অনুপাতে লোকসানের দায়ভার বহন করবে। লভ্যাংশের হার অনুপাতে নয়। তাই আপনাদের ঐ চুক্তিতে লোকসানের দায়ভার লভ্যাংশের হার অনুযায়ী হবে না; বরং মূলধন অনুপাতেই লোকসান বহন করতে হবে। অতএব আপনাদের ঐ চুক্তিটি এ নিয়মে সংশোধন করে নিতে হবে।

-মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা ২৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৭৪; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩১১-৩১২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৫৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এক লোক গরু যবাই করার জন্য আমাকে তার বাসার কাছে...

প্রশ্ন

এক লোক গরু যবাই করার জন্য আমাকে তার বাসার কাছে নিয়ে যায়। কসাইরা গরুটাকে উত্তর দিকে মাথা ও পূর্ব দিকে পা দিয়ে শুইয়ে দেয় এবং আমিও অজ্ঞতাবশত ঐভাবে যবাই করে দেই। যবাইয়ের সময় কুরবানীদাতা উপস্থিত ছিলেন না। পরে সে জানতে পেরে আমাকে খুব বকাঝকা করে এবং বলতে থাকে, তুমি আমার কুরবানী নষ্ট করেছ। এখন তুমি জরিমানা দিবা ইত্যাদি। এখন আমার প্রশ্ন হল, উক্ত কুরবানী কি সহীহ হয়েছে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

হ্যাঁ, ঐ কুরবানী সহীহ হয়ে গেছে। পশু যবাইয়ের সময় পশুর মাথা দক্ষিণ দিকে এবং সীনা কিবলামুখী করে যবাই করা উত্তম।

হাদীস শরীফে আছে, জাবির রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন হৃষ্টপুষ্ট শিং বিশিষ্ট দুটি ভেড়া যবাই করেছেন। তিনি ভেড়া দুটির সীনা কিবলামুখী করে শুইয়ে দিলেন এবং বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে যবাই করলেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৭৮৮; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১৬

সহীহ মুসলিমের ভাষ্যগ্রন্থ ‘‘আলমিনহাজে’’ ইমাম নববী রাহ. বলেন, এ ব্যাপারে আলেমগণ একমত এবং মুসলমানদের আমলও এভাবে চলে আসছে যে, যবাইয়ের সময় পশুকে বাম পার্শ্বদেশের উপর শোয়াবে। কেননা এ পদ্ধতিতে যবাইকারীর জন্য ডান হাতে ছুরি নেওয়া এবং বাম হাত দিয়ে পশুর মাথা চেপে ধরে যবাই করা অধিকতর সহজ। (শরহে মুসলিম, নববী ১৩/১২২)

তাই ইচ্ছাকৃত এর ব্যতিক্রম করা উচিত নয়। ভুলবশত বা বেখেয়ালে হয়ে গেলে অসুবিধা নেই।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৫৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি একটি মসজিদের মুয়াযযিন। আমাদের এলাকার প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যে...

প্রশ্ন

আমি একটি মসজিদের মুয়াযযিন। আমাদের এলাকার প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যে কুরবানীর পশু যবাই করে দেয় তাকে এর বিনিময়ে কিছু হাদিয়াও দেওয়া হয়। জানতে চাই, কুরবানীর পশু যবাই করে বিনিময় নেওয়া জায়েয হবে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, কুরবানীর পশু যবাই করে এর বিনিময় নেওয়া জায়েয আছে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৬৪; কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৪৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের পার্শ্ববর্তী সমাজের কয়েকজন দ্বীনদার লোকের সাথে আমি শরিকে কুরবানী...

প্রশ্ন

আমাদের পার্শ্ববর্তী সমাজের কয়েকজন দ্বীনদার লোকের সাথে আমি শরিকে কুরবানী করে থাকি। আমাদের ঈদগাহে ঈদের নামায একটু বিলম্বে হয়। পাশের সমাজে সকাল সাতটার দিকেই হয়ে যায়। আমার শরিকরা তাদের সমাজে ঈদের জামাত হওয়ার পরপরই আমাদের কুরবানীর পশুটি যবাই করে ফেলে। তখনো আমাদের ঈদগাহে ঈদের নামায অনুষ্ঠিত হয়নি। জানার বিষয় হল, আমি ঈদের নামায পড়ার আগে তারা আমার কুরবানী করে ফেলার কারণে কোনো অসুবিধা হয়েছে কি? এক্ষেত্রে আমার কুরবানী কি আদায় হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কুরবানী আদায় হয়ে গেছে। কেননা এক এলাকার কোনো এক স্থানে ঈদের নামায হয়ে গেলে ঐ এলাকাবাসী সকলের জন্য কুরবানী করা সহীহ হয়ে যায়। তাই যে ব্যক্তি পরবর্তী জামাতে নামায পড়বে তার জন্যও কুরবানী করা সহীহ।

-কিতাবুল আছল ৫/৪০৫; শরহু মুখতাছারিত তহাবী ৭/৩৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১১; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৭৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৫৯৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৩৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

খালেদ এবং তার ছোট চার ভাই মোট পাঁচ জন মিলে...

প্রশ্ন

খালেদ এবং তার ছোট চার ভাই মোট পাঁচ জন মিলে প্রতিবছরই একটি গরু কুরবানী করে থাকে। খালেদ বলছে, কুরবানীর পশুর অর্ধেক মূল্য সে একাই দেয়। আর বাকি অর্ধেক মূল্য বাকি চারজন মিলে পরিশোধ করে। যার ফলে বাকি চারজনকে পূর্ণ এক সপ্তমাংশের কম মূল্য আদায় করতে হয়। খালেদ টাকা বেশি দিলেও গোশত বেশি দাবি করে না। সকলের মাঝে সমান বণ্টনই হয়। বরং এক ভাইয়ের পরিবারের সদস্য বেশি বিধায় তাকে সবচেয়ে বেশি গোশত দেওয়া হয়। এখন জানতে চাই এভাবে কুরবানী করা কি সহীহ হবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, যিনি টাকা বেশি দেন তিনি অন্য ভাইদের অংশের অবশিষ্ট টাকা নিজ থেকে পরিশোধ করে দেন তাই এমনটি হলে তাদের সকলের কুরবানী আদায় হয়ে যাবে।

তবে এক্ষেত্রে যদি প্রত্যেকের টাকা অনুযায়ী অংশ বণ্টন করা এবং সে অনুপাতে গোশত নেওয়া উদ্দেশ্য হয় তাহলে কারো কুরবানীই সহীহ হবে না। কারণ এক্ষেত্রে চারজনের প্রত্যেকের অংশ পশুর এক সপ্তমাংশের কম হয়ে যায়।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২২০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার পিতা গত বছর ইন্তেকাল করেছেন। আমি তার নামে কুরবানী...

প্রশ্ন

আমার পিতা গত বছর ইন্তেকাল করেছেন। আমি তার নামে কুরবানী করার নিয়ত করেছি। প্রশ্ন হল, মৃত ব্যক্তির নামে দেওয়া কুরবানীর গোশত কী করতে হবে? তার অংশের পুরো গোশতই কি সদকা করতে হবে, নাকি নিজেরাও তা খেতে পারব? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মৃত ব্যক্তি যদি কুরবানীর জন্য ওসিয়ত না করে থাকে তবে তার পক্ষ থেকে দেওয়া কুরবানীর গোশতের হুকুম সাধারণ কুরবানীর মতো; নিজেরাও খেতে পারবে অন্যদেরকেও দিতে পারবে। পুরোটা সদকা করা জরুরি নয়। তবে মৃত ব্যক্তি যদি অসিয়ত করে যায় এবং তার সম্পদ দ্বারাই কুরবানী করা হয়ে থাকে তাহলে এ কুরবানীর পুরো গোশত সদকা করা জরুরি। এ থেকে নিজেদের খাওয়া জায়েয হবে না।

-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৩৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২১৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা গরুর ভুঁড়ি খাই না। তাই আমার বাবা প্রতি বছর...

প্রশ্ন

আমরা গরুর ভুঁড়ি খাই না। তাই আমার বাবা প্রতি বছর তা বিক্রি করে দেন। আম্মা কুরবানীর গরু ও খাসির চর্বি জমা করে ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করেন। জানতে চাই, এই টাকা কি আমাদের ব্যবহার করা হালাল হবে?

উত্তর

নিজের কুরবানীর পশুর ভুঁড়ি, চর্বি, গোশত কিছুই বিক্রি করা জায়েয নেই। এতে কুরবানী ত্রুটিযুক্ত হয়ে যায়। বিগত দিনে নিজেদের কুরবানীর পশুর চর্বি, ভুড়ি বিক্রি করে যত টাকা পেয়েছেন তা গরীবদেরকে সদকা করে দিতে হবে। আর আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করতে হবে। ভুঁড়ি, চর্বি নিজেরা খেতে না পারলে সরাসরি গরীবদেরকে দান করে দিবে, বিক্রি করবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা জানি, কিরান ও তামাত্তুকারী হাজ্বীর যদি দমে শোকর আদায়ের...

প্রশ্ন

আমরা জানি, কিরান ও তামাত্তুকারী হাজ্বীর যদি দমে শোকর আদায়ের সামর্থ্য না থাকে তবে তাকে দশটি রোযা রাখতে হবে। জানতে চাই, এই দশটি রোযা রাখার সময় কখন? আরাফার দিনে কি রোযা রাখা জরুরি? আরাফার দিন পর্যন্ত নাকি তিনটি শেষ করতে হয়। তাহলে এ কথার অর্থ কী? এ রোযা কখন থেকে শুরু করা যাবে? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

তামাত্তু ও কিরানকারীর হজ্বের কুরবানী দেওয়ার সামর্থ্য না থাকলে এর পরিবর্তে তাকে দশটি রোযা রাখতে হবে। সেগুলোর তিনটি রাখতে হবে ৯ যিলহজ্বের (আরাফার) মধ্যেই। আর বাকিগুলো হজ্বের পরে রাখবে এবং তা দেশে ফেরার পরও হতে পারে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) কারো যদি কুরবানী করার সামর্থ্য না থাকে তবে সে হজ্বের দিনে তিনটি রোযা রাখবে এবং সাতটি রোযা রাখবে সে সময় যখন তোমরা বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করবে।-সূরা বাকারা : ১৯৬

উল্লেখ্য, উপরোক্ত তিনটি রোযা রাখার ক্ষেত্রে সামর্থ্যবান ও রোযা রেখে দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই এমন ব্যক্তির জন্য উত্তম হল হজ্বের ইহরাম বাঁধার পর থেকে আরাফার দিনের মধ্যেই রোযাগুলো শেষ করা। আর আরাফার দিন এ রোযা রাখা জরুরি নয়। এর আগে শেষ করলেও চলবে। অবশ্য কারও যদি রোযা রেখে হজ্বের আমল করতে কষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে সে এ সময় রোযা রাখবে না। বরং সে হজ্বের সফরে উমরার ইহরাম বাঁধার পর থেকে নিয়ে নয় তারিখ তথা আরাফার দিন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তিনটি রোযা রেখে নিবে। মোটকথা উমরার ইহরামের পর থেকে দশ তারিখের পূর্বেই ঐ তিনটি রোযা আদায় করে নিতে হবে। অন্যথায় তার জন্য দমে শোকর আদায় করা অপরিহার্য হয়ে যাবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৮/৬৩৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩০৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৮৬; আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১৮১; ফাতহুল কাদীর ২/৪১৮; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ২৬৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় প্রসিদ্ধ আছে যে, বাকিতে কুরবানীর পশু ক্রয় করলে...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় প্রসিদ্ধ আছে যে, বাকিতে কুরবানীর পশু ক্রয় করলে কুরবানী সহীহ হয় না। কুরবানীর পশু নগদমূল্যে ক্রয় করতে হবে। বাকিতে ক্রয় করলেও কুরবানীর আগে তার মূল্য পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় কুরবানী সহীহ হবে না। এই কথাটি কতটুকু সঠিক? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ও ভিত্তিহীন। বাকিতে পশু ক্রয় করলেও তা দ্বারা কুরবানী জায়েয। আর বাকিতে ক্রয় করলে কুরবানীর আগেই মূল্য পরিশোধ করতে হবে এ কথাও ঠিক নয়। নগদ বা বাকি যেভাবেই পশু ক্রয় করা হোক তা দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হবে।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২০১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি প্রতিবছরই কুরবানী করি। গত বছর কুরবানীর জন্য আঠারো হাজার...

প্রশ্ন

আমি প্রতিবছরই কুরবানী করি। গত বছর কুরবানীর জন্য আঠারো হাজার টাকা দিয়ে একটি গাভি ক্রয় করি। পরে দেখা গেল, গাভিটি অন্তসত্ত্বা। বাচ্চা হওয়ার সময় অতি নিকটবর্তী হয়ে গেছে। আমাদের কেউ কেউ গাভিটি কুরবানী করতে বাধা দিল। তখন বিশ হাজার টাকা দিয়ে আরেকটি গরু কিনে কুরবানী করি। প্রথম ক্রয়কৃত গাভিটি কুরবানী না করে নতুন গরু কিনে কুরবানী করাতে কোনো সমস্যা হয়েছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন। এছাড়া ঐ গাভি ও তার বাচ্চার মালিক কি আমি, নাকি তা সদকা করতে হবে?

উত্তর

প্রথম ক্রয়কৃত গাভিটির বাচ্চা হওয়ার সময় যেহেতু নিকটবর্তী ছিল তাই তা কুরবানী না করে অন্য গরু দ্বারা কুরবানী করা ঠিকই হয়েছে। কেননা বাচ্চা হওয়ার সময় নিকটবর্তী এমন গাভি দ্বারা কুরবানী করা মাকরূহ। তাই আপনার ঐ সিদ্ধান্ত মাসআলা সম্মতই হয়েছে। এখন ঐ গাভি ও বাছুরের মালিক আপনি। তা সদকা করতে হবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৭; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭১; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২০০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর নাড়ি-ভুঁড়ি আমরা নিজেরা পরিষ্কার করতে পারি না বলে...

প্রশ্ন

কুরবানীর পশুর নাড়ি-ভুঁড়ি আমরা নিজেরা পরিষ্কার করতে পারি না বলে সাধারণত এলাকার কোনো মহিলাকে এ ভিত্তিতে পরিষ্কার করতে দেই যে, পারিশ্রমিক হিসাবে তাকে ৫০ টাকা এবং নাড়ি-ভুঁড়ির এক তৃতীয়াংশ দেওয়া হবে। জানার বিষয় হল, এ ধরনের চুক্তি করা কি বৈধ? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

কুরবানীর পশুর কোনো অংশ বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েয নয়। আলী রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর চামড়া ছাড়ানোর পারিশ্রমিক হিসেবেও চামড়ার কোনো অংশ প্রদান করতে নিষেধ করেছেন।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৭১৭

অতএব প্রশ্নোক্ত চুক্তি সহীহ নয়। নাড়ি-ভুঁড়ি পরিষ্কারের পারিশ্রমিক হিসেবে ভুড়ির অংশবিশেষও দেওয়া যাবে না। বিগত বছরগুলোতে এমন করে থাকলে যে পরিমাণ অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হয়েছে তার ন্যায্যমূল্য সদকা করে দিতে হবে।

আর সামনে থেকে ভুঁড়ি পরিষ্কারের পারিশ্রমিক হিসেবে ভুড়ির অংশবিশেষ দেওয়ার শর্ত করবে না। বরং তার শ্রমের বিনিময়ে টাকা দিয়ে দিবে। চুক্তির সময় গোশত বা ভুড়ি দেওয়ার শর্ত না থাকলে ন্যায্য পারিশ্রমিক দেওয়ার পর কুরবানীর পশুর ভুড়ি বা গোশত হাদিয়া হিসেবে দেওয়া যাবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই।

-সহীহ মুসলিম ৩/৩৫০; সহীহ বুখারী (ফাতহুল বারী) ৩/৬৫০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৪; ইলাউস সুনান ১৭/২৬৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৯৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার আববু কুরবানীর পশু ঈদের আগের দিন ক্রয় করেন। গত...

প্রশ্ন

আমার আববু কুরবানীর পশু ঈদের আগের দিন ক্রয় করেন। গত বছর ঈদের দুদিন আগে আমাদের বাসায় ডাকাতি হয়। তাই আববু গত বছর কুরবানী দিতে পারেননি। তবে তখন আববুর হাতে নগদ টাকা না থাকলেও বাড়িতে দেড় বিঘা জমি আছে, যা থেকে বাৎসরিক আয় আসে বিশ হাজার টাকা। ঐ বিশ হাজার টাকা না হলেও আমাদের সংসার ভালোভাবেই চলে যায়। গত বছর কি আববুর উপর কুরবানী করা ওয়াজিব ছিল? যদি হয়ে থাকে তাহলে এখন কী করবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ দেড় বিঘা জমির আয় না হলেও যেহেতু আপনাদের সংসার চলে যায় তাই ঐ দেড় বিঘা জমি প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ। এ সম্পদের কারণে আপনার পিতার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। কিন্তু তিনি যেহেতু গত বছর কুরবানী করেননি তাই ঐ বছরের জন্য নূন্যতম এক বছর বয়সী একটি ছাগল বা তার মূল্য সদকা করে দিতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১২; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৯৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

একজনকে বলতে শুনেছি, ছয় মাসের ছাগল যদি এমন হৃষ্টপুষ্ট হয়...

প্রশ্ন

একজনকে বলতে শুনেছি, ছয় মাসের ছাগল যদি এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে এক বছর বয়সী ছাগলের মতো দেখায় তাহলে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এই কথাটি কতটুকু সঠিক? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

আপনার শোনা কথাটি ঠিক নয়। ছাগল দ্বারা কুরবানী সহীহ হওয়ার জন্য তা অন্তত এক বছর বয়সী হওয়া জরুরি। হৃষ্টপুষ্ট হওয়ার কারণে এক বছরের ছাগলের মতো দেখালেও ১২ মাসের কম বয়সী ছাগল দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে না। অবশ্য ছয় মাস বয়সী ভেড়া বা দুম্বা যদি হৃষ্টপুষ্ট হওয়ার কারণে এক বছর বয়সীর মতো দেখায় তাহলে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে। হাদীস শরীফে জাবের রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উট পাঁচ বছর পূর্ণ হয়ে ষষ্ঠ বছরে উপনীত না হলে আর গরু-মহিষ দু বছর পূর্ণ হয়ে তৃতীয় বছরে পদার্পণ না করলে আর ছাগল-ভেড়ার এক বছর পূর্ণ না হলে তোমরা তা দ্বারা কুরবানী করো না। তবে এ বিষয়টি যদি তোমাদের জন্য কঠিন হয় তাহলে ছয়মাসের দুম্বা, ভেড়া কুরবানী করতে পারবে।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৪৩৪৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৯৬৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত বছর আমাদের কুরবানীর পশুটি ট্রাক থেকে নামানোর সময় এক...

প্রশ্ন

গত বছর আমাদের কুরবানীর পশুটি ট্রাক থেকে নামানোর সময় এক পায়ে আঘাত পেয়ে তা ফুলে যায়। যার ফলে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে একটু কষ্ট হয় এবং হাঁটাচলার সময় ঐ পাটি তুলনামূলক কম ব্যবহার করে। আমার প্রশ্ন হল, উক্ত পশু দ্বারা আমাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হয়েছে। কেননা পশুটির পা একেবারে ভেঙ্গে যায়নি; বরং আঘাতের কারণে হাঁটতে কষ্ট হত। আর এ ধরনের পশুর কুরবানী সহীহ।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮০২; জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৪৯৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের পরিবারে আম্মা ও আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর...

প্রশ্ন

আমাদের পরিবারে আম্মা ও আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর পর সম্পদ বণ্টন করা হয়নি। ছোট ভাইদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের সকল আয়-ব্যয় অভিন্ন। এ অবস্থায় আমাদের সকলের পক্ষ থেকে কি একটি কুরবানী যথেষ্ট হবে, না প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব?

উত্তর

আপনাদের পরিবার যৌথ হলেও এবং পিতার সম্পদ এখনো বণ্টন করা না হলেও কুরবানীর ক্ষেত্রে প্রত্যেকের প্রাপ্ত অংশ হিসাবযোগ্য। অতএব এ হিসাবে যে প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্য প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপরই পৃথকভাবে কুরবানী করা ওয়াজিব হবে।

প্রাপ্ত বয়স্কদের কেউ নেসাব থেকে কম সম্পদের মালিক হলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। তদ্রূপ কেউ অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার উপরও কুরবানী ওয়াজিব নয়।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৪২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৭৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর আমরা ছয় ভাই মিলে একটি গরু কুরবানী করি।...

প্রশ্ন

প্রতি বছর আমরা ছয় ভাই মিলে একটি গরু কুরবানী করি। একটি গরুতে যেহেতু সাতজন শরিক হতে পারে তাই এবার আমরা পশুর ৭ম ভাগটি ইছালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী দিতে চাচ্ছি। এভাবে মৃত পিতার পক্ষ থেকে তা কুরবানী করলে তা সহীহ হবে কি এবং ঐ অংশের গোশত কি আমরা খেতে পারব?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ৬ জন মিলে ৭ম অংশ পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা সহীহ হবে। তবে এটি উত্তম পদ্ধতি নয়। উত্তম হল, সবাই মিলে এক অংশের টাকা এক ভাইকে মালিক বানিয়ে দিবে। অতপর সে ভাই পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করবে। এতে কাজটি নিয়মসম্মত হবে এবং সকলে সওয়াবও পেয়ে যাবে। আর উভয় অবস্থায় মৃত পিতার জন্য দেওয়া অংশের গোশত নিজেরা খেতে পারবে এবং সদকাও করতে পারবে।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় কুরবানীর সময় পশুর চামড়া ছিলা, গোশত কাটা ও...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় কুরবানীর সময় পশুর চামড়া ছিলা, গোশত কাটা ও অন্যান্য কাজ এলাকার গরীব লোকেরা করে থাকে। বিনিময় হিসেবে তাদেরকে কিছু গোশত দেওয়া হয়। টাকা দিলে তারা টাকা নিতে চায় না। বরং কিছু গোশত পাওয়ার জন্যই তারা এ কাজ করে থাকে। প্রশ্ন হল, এভাবে তাদেরকে কাজের বিনিময়ে গোশত দেওয়া জায়েয হবে কি?

উল্লেখ্য, ঐ সময় পেশাদার কসাইও পাওয়া যায় না, যারা টাকার বিনিময়ে এ কাজ করবে।

উত্তর

কুরবানীর গোশত, চামড়া বা অন্য কিছু বিনিময় হিসেবে দেওয়া জায়েয নয়। কেননা হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে। আলী রা. বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আদেশ করেছেন কুরবানীর উটের কাছে থেকে তার গোশত ও চামড়া সদকা করতে এবং কসাইকে তা থেকে কিছু না দিতে। তিনি আরও বলেছেন, আমরা কসাইকে নিজেদের পক্ষ থেকে পারিশ্রমিক দিতাম। (সহীহ বুখারী ১/২৩২)

তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাদের কাজের বিনিময়ে টাকা বা অন্য কিছু দিতে হবে। কোনো অবস্থায় কুরবানীর গোশত বিনিময় হিসেবে দেওয়া যাবে না। তবে টাকা বা অন্য কিছু দ্বারা পরিপূর্ণ পারিশ্রমিক দিয়ে দেওয়ার পর হাদিয়া হিসেবে কুরবানীর গোশত দিতে পারবে এবং দেওয়া উচিত।

-সহীহ মুসলিম ১/৪২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ...

প্রশ্ন

প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ বছরও কুরবানীর এক সপ্তাহ আগে ৫জন মিলে একটি গরু ক্রয় করি। কুরবানীর আগের দিন আমাদের এক প্রতিবেশী তাতে শরিক হতে চাইলে আমরা তাকে শরিক করে নেই। জানার বিষয় হল, এভাবে শরিক করাতে কুরবানী আদায় হয়েছে কি? জানালে উপকৃত হব।

উল্লেখ্য, কুরবানীদাতা প্রত্যেক শরিকই স্বচ্ছল ও নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে। তবে পশু ক্রয়ের পর নতুন করে শরিক নেওয়া অনুত্তম হয়েছে। এক্ষেত্রে নতুন শরিক থেকে প্রাপ্ত টাকা প্রত্যেক সদস্যের জন্য সদকা করে দেওয়া উত্তম হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি এবার হজ্বে যাচ্ছি। তামাত্তু হজ্ব করার ইচ্ছা আছে। কিন্তু...

প্রশ্ন

আমি এবার হজ্বে যাচ্ছি। তামাত্তু হজ্ব করার ইচ্ছা আছে। কিন্তু দমে শোকর দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। তাই দমের পরিবর্তে রোযা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রশ্ন হল, ক) দমের পরিবর্তে রোযা রাখলে কয়টি রোযা রাখতে হবে এবং কী নিয়মে রাখতে হবে? ঐ রোযার নিয়ত কখন করতে হবে? সুবহে সাদিকের পর ঐ রোযার নিয়ত করলে কি তা আদায় হবে?

উত্তর

কিরান ও তামাত্তুকারী দমে শোকর আদায়ের সামর্থ্য না রাখলে এর পরিবর্তে তাকে দশটি রোযা রাখতে হবে। তিনটি রোযা ইহরামের পর থেকে আরাফার দিন পর্যন্ত শেষ হতে হবে। বাকি সাতটি পরবর্তীতে সুযোগমতো রাখলেও চলবে। এই সাতটি রাখার নির্ধারিত মেয়াদ নেই। এগুলো দেশে এসেই আদায় করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, (তরজমা) অতপর যখন তোমরা নিরাপদ হয়ে যাবে তখন যে ব্যক্তি হজ্বের সাথে উমরার সুবিধাও গ্রহণ করবে সে (আল্লাহর উদ্দেশ্যে পেশ করবে) যে কুরবানী সহজলভ্য হয় তা আদায় করবে। কারও যদি সে সামর্থ্য না থাকে তবে সে হজ্বের সময়ে তিনটি রোযা রাখবে এবং সাতটি (রোযা রাখবে) যখন বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করবে। এভাবে মোট দশটি রোযা হবে। -সূরা বাকারা : ১৯৬

আর দমের পরিবর্তে রোযা রাখলে এর নিয়ত সুবহে সাদিকের পূর্বেই করতে হবে। সুবহে সাদিকের পর নিয়ত করলে ঐ রোযা দম আদায়ের জন্য যথেষ্ট হবে না।

-আলবাহরুর রায়েক ২/২৬২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৭৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী...

প্রশ্ন

আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী ক্রয় করেছি। কুরবানীর আগে সেই গাভীটার একটি বাচ্চা হয়েছে। জানার বিষয় হল, এ বাচ্চাটির ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কী?

উত্তর

উক্ত বাচ্চাকে সদকা করে দিতে হবে। অবশ্য জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি জবাই করে দেয় তবে তার গোশত সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১২৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত বছর কুরবানীর উদ্দেশ্যে আমি একাই গরু ক্রয় করি। ঈদের...

প্রশ্ন

গত বছর কুরবানীর উদ্দেশ্যে আমি একাই গরু ক্রয় করি। ঈদের নামায শেষে কয়েকজন মিলে যবেহ করার জন্য গরুটাকে শোয়াতে গেলে ধস্তাধস্তি করতে গিয়ে গরুটির একটি পা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যায়। তা সত্ত্বেও এক ভাইয়ের পরামর্শক্রমে আমরা সেটিকে যবেহ করি। এখন জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় আমার পক্ষ থেকে কুরবানীর ওয়াজিব আদায় হয়েছে কি?

উত্তর

যবহের জন্য পশু শোয়ানোর সময় পশুর পা ভেঙ্গে গেলেও তা কুরবানী করা জায়েয। সুতরাং আপনার ঐ কুরবানী সহীহ হয়েছে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০০০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি একজন আমেরিকা প্রবাসী। দীর্ঘদিন যাবত সপরিবারে এখানে আছি। কুরবানী...

প্রশ্ন

আমি একজন আমেরিকা প্রবাসী। দীর্ঘদিন যাবত সপরিবারে এখানে আছি। কুরবানী দেশেই করে থাকি। এর একটা কারণ হল আমরা জানি যে, কুরবানীর গোশত তিন ভাগে ভাগ করতে হয়। এক ভাগ নিজের, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের আর এক ভাগ মিসকিনদের। আর মিসকিনদের অংশ কুরবানীদাতারা কেউ খেতে পারবে না। যদি খেতে হয় তাহলে ঐ পরিমাণ গোশতের মূল্য সদকা করে দিতে হবে।

উল্লেখ্য, আমাদের এখানে গরীবের অংশ গ্রহণ করার মতো কেউ নেই, তাই আমি এখানে কুরবানী না করে দেশে কুরবানী করে থাকি।

একজন আলেমের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের কুরবানী তিন ভাগে ভাগ করতেন। আবার আরেক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যা ইচ্ছা দান কর, যা ইচ্ছা নিজেরা খাও। আমার জানার বিষয় হল-

ক) তিন ভাগ করাটা কি বাধ্যতামূলক?

খ) যদি বাধ্যতামূলক হয় তাহলে মিসকিনদের অংশের হুকুম কী?

গ) যদি বাধ্যতামূলক না হয় তাহলে কুরবানীদাতা কি মিসকীনদের অংশ খেতে পারবেন?

ঘ) আর উপরে উল্লেখিত উভয় হাদীসই কি সহীহ? সহীহ হলে দুই হাদীসের মাঝে সমন্বয় হবে কীভাবে?

আমার মতো এখানের অনেকেরই একই প্রশ্ন। দলীলসহ জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

কুরবানীর গোশত তিন ভাগ করে একভাগ নিজের জন্য রাখা, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনকে আর এক ভাগ ফকীর মিসকীনকে দেওয়া মুস্তাহাব। তবে এভাবে তিন ভাগে বণ্টন করা জরুরি নয়। কেউ পুরো গোশত নিজের জন্য রেখে দিলেও তার কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। তাই আপনি চাইলে যেখানে আছেন সেখানেই কুরবানী করতে পারেন। সেখানে গোশত দেওয়ার মতো কাউকে পাওয়া না গেলেও কোনো অসুবিধা হবে না।

আর প্রশ্নে যে দুটি হাদীসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে উভয় হাদীসই নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত আছে। প্রথম হাদীসটি হল : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কুরবানীর গোশত বণ্টন সম্পর্কে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর গোশত তিন ভাগ করে একভাগ নিজ পরিবারের জন্য রাখতেন, এক ভাগ গরীব প্রতিবেশীকে দিতেন আর এক ভাগ অন্যান্য গরীব-মিসকীনকে দান করতেন।-আল ওযায়েফ, আবু মুসা আলআসবাহানী, মুগনী ইবনে কুদামা ১৩/৩৭৯-৩৮০

দ্বিতীয় হাদীসটি হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা কুরবানীর গোশত যে পরিমাণ ইচ্ছা খাও, অন্যদেরকে খাওয়াও এবং যতটুকু ইচ্ছা জমা করে রাখ।-সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ১৫১০

দ্বিতীয় হাদীস দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, কুরবানীর গোশত বণ্টনের বিষয়টি কুরবানীদাতার ইচ্ছাধীন। অন্যকে না দিলেও গুনাহ হবে না। আর প্রথম হাদীসে কুরবানীর গোশত বণ্টনের উত্তম পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। তাই উভয় হাদীসের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৯৭২; মুয়াত্তা, ইমাম মুহাম্মাদ পৃ. ২৮১-২৮২; হিদায়া ৪/৪৫০; উমদাতুল কারী ১০/৫৭-৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৭-৩২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার...

প্রশ্ন

এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগেই স্ত্রীর সাথে থেকেছে এবং স্ত্রীসূলভ আচরণ করেছে। এরপর তারা তাওয়াফে যিয়ারত ও তাওয়াফে বিদা করার পর দেশে চলে আসে। এখন তাদের উক্ত ভুলের কারণে জরিমানা দিতে হবে কি? এক ব্যক্তি বলেছে, তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব। এটা কি ঠিক?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ভুলের কারণে স্বামী-স্ত্রী প্রত্যেককে একটি করে জরিমানা-দম ছাগল বা দুম্বা মক্কার হেরেম এলাকায় জবাই করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব প্রশ্নের এ মন্তব্য ঠিক নয়। কেননা মাসআলা হল, উকূফে আরাফার পর হালাল হওয়ার আগে স্ত্রী মিলন হয়ে গেলে প্রত্যেককে একটি করে উট বা গরু জরিমানা দিতে হয়। আর যদি হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগে এই ভুল হয়ে যায় তবে একটি করে ছাগল বা দুম্বা জরিমানা দিতে হয়।

-মানাসিক, পৃ. ৩৩৯; ইলাউস সুনান ১০/৩৪০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৬০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের পরিবারে আম্মু এবং আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর...

প্রশ্ন

আমাদের পরিবারে আম্মু এবং আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর পর সম্পদ বণ্টন করা হয়নি। ছোট ভাইদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের সকল আয়-ব্যয় অভিন্ন। এমন অবস্থায় আমাদের সকলের পক্ষ থেকে কি একটি ছাগল কুরবানী যথেষ্ট হবে নাকি প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব?

উত্তর

একটি ছাগল দ্বারা এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা যায়। একাধিক ব্যক্তি বা পরিবারের সকল সদস্যের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানী দিলে তা যথেষ্ট হবে না। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যৌথ সম্পত্তি যদি এ পরিমাণ হয় যে, বণ্টন করলে প্রত্যেক সদস্য প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে যায় তাহলে প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে।

অবশ্য আপনাদের কেউ নেসাব থেকে কম সম্পদের মালিক হলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। তদ্রূপ কেউ অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার উপরও কুরবানী ওয়াজিব নয়।

-মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৪২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৭৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা...

প্রশ্ন

কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা কাটা থাকলে এর দ্বারা কুরবানী সহীহ হয় না?

উত্তর

কুরবানীর পশুর কান বা লেজ অর্ধেক বা এরচেয়ে বেশি না থাকলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ নয়। যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি অংশ থাকে তাহলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হবে।

-শরহু মাআনিল আছার ২/২৭১; কিতাবুল আসল ২/৪৯৪; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; ইলাউস সুনান ১৭/২৪০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৩৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এক ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে তা...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে তা কুরবানী করতে পারেনি। এখন তার কী করণীয়? আর কেউ যদি পশু ক্রয়ই না করে এবং কুরবানীর সময় শেষ হয়ে যায় তখন তার কী করণীয়?

উত্তর

কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে কুরবানী করতে না পারলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে। আর কোনো ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও যদি সে কুরবানীর পশু ক্রয় না করে এবং কুরবানীও না করে থাকে তাহলে এভাবে কুরবানীর সময় শেষ হয়ে গেলে তার উপর কুরবানীর যোগ্য একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব। আর উভয় ব্যক্তি যথাসময়ে কুরবানী না করার কারণে তাওবা-ইস্তিগফার করবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; তুহফাতুল ফুকাহা ৩/৮৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৩৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের গ্রামের এক ব্যক্তি কুরবানী করার জন্য ঈদের দুদিন আগে...

প্রশ্ন

আমাদের গ্রামের এক ব্যক্তি কুরবানী করার জন্য ঈদের দুদিন আগে হাট থেকে একটি গাভি ক্রয় করে আনে। ঘটনাক্রমে বাড়ির আরেকটা গাভির সাথে ঐ গাভির লড়াই লেগে ক্রয়কৃত গাভির একটি শিং ভেঙ্গে যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, এমন শিং ভাঙ্গা গাভি দ্বারা কুরবানী করলে কুরবানী হবে কি না?

উত্তর

গাভিটির শিং যদি একেবারে গোড়া থেকে ভেঙ্গে যায়, যার দরুণ মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায় তাহলে এ পশু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে না। পক্ষান্তরে শিং ভাঙ্গার কারণে মস্তিষ্কে যদি আঘাত না পৌঁছে তাহলে সেই পশু দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে।

উল্লেখ্য যে, কুরবানীদাতা যদি গরিব হয় অর্থাৎ কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার মতো নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হয় তাহলে এ ত্রুটিপূর্ণ গাভিটিই সে কুরবানী করতে পারে। তার জন্য ভিন্ন পশু কুরবানী করার প্রয়োজন নেই।

-মুসনাদে আহমদ ১/৯৫, হাদীস : ৭৩৪; জামে তিরমিযী ১/২৭৬, হাদীস : ১৫০৪; ইলাউস সুনান ১৭/২৩৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৩৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি।...

প্রশ্ন

আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। বড় ভাই এক ভাগ আর আমরা দুই ভাই তিন অংশ করে মোট ছয় ভাগ নিয়েছি। আমরা দুই ভাই সমান সমান টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু বড়ভাই আমাদের মধ্যে তুলনামূলক অসচ্ছল হওয়ায় তিনি তার অংশের পুরো টাকা দেন না। আমরা দুই ভাই বলেছি, আপনি যা পারেন দেন, বাকিটা আমরা দুজনে দিয়ে দিব। অবশ্য গোশত সকলের অংশ হারেই বণ্টন করা হয়। টাকা কম-বেশির কারণে তাতে ব্যবধান করা হয় না; বরং ধরে নেওয়া হয় যে, আমরা ছোট দুই ভাই বড় ভাইয়ের টাকার আংশিক আদায় করে দিই।

জানতে চাই, উল্লেখিত পদ্ধতিতে আমাদের কুরবানী কি সহীহ হচ্ছে?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। গরু-মহিষে শরিকে কুরবানী দেওয়ার জন্য শর্ত হল, কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হওয়া। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বড় ভাই যদিও তার অংশের চেয়ে কম দিচ্ছেন কিন্তু অন্য দুই ভাই তার অংশের বাকিটা দিয়ে দিবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তাই বড় ভাইয়ের অংশ এক সপ্তমাংশের কম হয় না।

-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯২৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি গতবার হজ্ব করি। হজ্বের মূল কার্যক্রম শেষ করে বিদায়ী...

প্রশ্ন

আমি গতবার হজ্ব করি। হজ্বের মূল কার্যক্রম শেষ করে বিদায়ী তাওয়াফ না করে আমার বিভিন্ন বন্ধুর বাসায় এক মাস থাকি। অতপর কোনো তাওয়াফ না করে দেশে ফিরে আসি। আমার জানার বিষয় হল-

ক) হজ্বের মূল কাজ সম্পন্ন করার পর কেউ যদি দেশে না ফিরে কোনো উদ্দেশ্যে মক্কায় কিছুদিনের জন্য থাকে তাহলে বিদায়ী তাওয়াফ জরুরি কি না?

খ) তার জন্য বিদায়ী তাওয়াফ জরুরি হলে তা কখন আদায় করবে?

গ) তাওয়াফ না করে ফিরে আসার কারণে বর্তমানে আমার করণীয় কী? দয়া করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

ক) হজ্বের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করার পর মক্কায় কিছুদিন অবস্থান করে দেশে ফেরার ইচ্ছা থাকলেও বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাজিরা বায়তুল্লাহর সাথে শেষ সাক্ষাৎ না করে যেন ফিরে না আসে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩২৭

খ) তাওয়াফে যিয়ারত (ফরয তাওয়াফ) আদায়ের পর থেকে যে কোনো সময় বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করা যায়।তবে উত্তম হল, দেশে ফিরার আগ দিয়ে বিদায়ী তাওয়াফ করা।

হযরত উমর ইবনে আবদুল আযিয রাহ. একবার বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করে এক অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যান। এরপর তিনি আবার বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করেন।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৬০৫৮

গ) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যদি তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোনো নফল তাওয়াফ করে থাকেন তাহলে উক্ত তাওয়াফ করার দ্বারাই বিদায়ী তাওয়াফের ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বর্তমানে আপনাকে আর কিছুই করতে হবে না। কিন্তু ফরয তাওয়াফ করার পর যদি কোনো তাওয়াফ না করে থাকেন তাহলে যখন সুযোগ হয় নিজে উমরার উদ্দেশ্যে গিয়ে উমরার কাজ শেষ করে ছুটে যাওয়া তাওয়াফটি আদায় করে নিবেন। বিলম্বে করার কারণে কোনো দম ওয়াজিব হবে না। আর যদি এভাবে সেখানে গিয়ে তাওয়াফ করা সম্ভব না হয় তাহলে তিনি কারো দ্বারা হেরেম এলাকার মধ্যে একটি ছাগল/দুম্বা জরিমানা দম হিসেবে কুরবানি করতে পারেন।-ফাতহুল কাদীর ২/৩৯৭; রদ্দুল মুহতার ২/৫২৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৫৪-৪৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯০০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি...

প্রশ্ন

আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি গরুর পায়ের নিচে পা পড়ে আমার পায়ের অগ্রভাগ মারাত্মক যখম হয়। ডাক্তার ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছেন। তিনি ব্যান্ডেজ খোলা ও সেখানে পানি লাগাতে নিষেধ করেছেন। এ অবস্থায় আমি কীভাবে অযু করব?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অযু-গোসলের জন্য এ ব্যান্ডেজের উপর মাসেহ করবেন এবং পায়ের অবশিষ্ট সুস্থ অংশটুকু সম্ভব হলে অন্যান্য অঙ্গের ন্যায় ধুয়ে নিবেন। আর যদি তা ধুতে গেলে ব্যান্ডেজ ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে তার উপরও মাসেহ করবেন।

-সুনানে বায়হাকী ১/২২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯০; শরহুল মুনইয়া ১১৬-১১৭; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনৈক ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে। কিন্তু এবার কুরবানীর পশু...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে। কিন্তু এবার কুরবানীর পশু ক্রয় করতে পারেনি। এভাবেই কুরবানীর দিনগুলো চলে যায়। এমতাবস্থায় তার করণীয় কী? সে কি পশু ক্রয় করে জবাই করে দিবে?

উত্তর

যেহেতু কুরবানীর দিনগুলো অতিবাহিত হয়ে গেছে তাই এখন আর পশু জবাই করবে না। বরং এক্ষেত্রে কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৩; মাবসূত, সারাখসী ১২/১৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮২১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

খালিদ ৭ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে, যার দ্বারা মোটামুটিভাবে...

প্রশ্ন

খালিদ ৭ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে, যার দ্বারা মোটামুটিভাবে তার সংসার চলে। গত কয়েকদিন পূর্বে তার আম্মা ইন্তেকাল করেন। পিতা আগেই মারা গেছেন। মায়ের মৃত্যুর পর তার মামারা তার আম্মার পৈত্রিক সম্পত্তি (৬ শতাংশ জমি, যার প্রতি শতাংশের মূল্য প্রায় এক লক্ষ টাকা) তার ও তার তিন বোনের নামে ১.৫ শতাংশ করে সমানভাবে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। এছাড়া খালিদের উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদ নেই। তবে বর্তমানে তার কাছে নগদ ৫০ হাজার টাকা আছে। জানার বিষয় হল, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় খালিদের উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী খালিদ মীরাস সূত্রে ১.৫ শতাংশ জমির মালিক হয়েছে তা যেহেতু তার প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ এবং তার মূল্যও নেসাব পরিমাণের বেশি (অর্থাৎ প্রায় এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা) তাই তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৮৬; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯

প্রকাশ থাকে যে, মায়ের সম্পত্তি তার ছেলেমেয়ের মাঝে সমান বণ্টন করা বৈধ হয়নি। কুরআন মজীদের হুকুম হল, মেয়ের তুলনায় ছেলে দ্বিগুণ মীরাসের হকদার।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার এক পরিচিত লোক, যার উপর কুরবানী ওয়াজিব। গত কুরবানীর...

প্রশ্ন

আমার এক পরিচিত লোক, যার উপর কুরবানী ওয়াজিব। গত কুরবানীর ঈদে কুরবানীর জন্য একটি পশু ক্রয় করে বাজার থেকে আনার সময় পথিমধ্যে তা হারিয়ে যায়। এরপর তিনি আরেকটি পশু কিনেন। ঘটনাক্রমে পরে হারানো পশুটিও পাওয়া যায় এবং তিনি উভয়টি কুরবানী করেন।

এখন জানার বিষয় হল, তার উপর উভয়টি কুরবানী করা কি জরুরি ছিল? নাকি যেকোনো একটি কুরবানী করলেই যথেষ্ট হত? জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, উভয়টি কুরবানী করা তার উপর জরুরি ছিল।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উভয় পশু কুরবানী করাটা উত্তম কাজ হয়েছে। এক্ষেত্রে উভয়টি কুরবানী করা জরুরি ছিল না। যেকোনো একটি কুরবানী করলেই ওয়াজিব আদায় হয়ে যেত। প্রশ্নোক্ত লোকটির কথা ঠিক নয়।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪১৩; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৭/৩৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮০০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার একটি ছেলেসন্তান হয়েছে। জন্মের কিছুদিন পর সে অসুস্থ হয়ে...

প্রশ্ন

আমার একটি ছেলেসন্তান হয়েছে। জন্মের কিছুদিন পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই আমি মান্নত করেছিলাম, ছেলে সুস্থ হলে একটি খাশি আকীকা করব। আল্লাহর মেহেরবানিতে ছেলে সুস্থ হয়ে গেছে। এখন আমার প্রশ্ন হল, ছেলের আকীকা করতেই হবে কি না? না করার কোনো সুযোগ আছে কি? আকীকা করতে হলে খাশিই করতে হবে কি না?

উত্তর

আকীকা করা মুস্তাহাব। প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ছেলে সুস্থ হলে আকীকা করব-এ কথা বলার দ্বারা আপনার জন্য আকীকা করা জরুরি হয়ে যায়নি। তবে মুস্তাহাব হুকুম পালনের অঙ্গীকার করার দ্বারা এর গুরুত্ব আরো বেড়েছে। তাই সামর্থ্য থাকলে আল্লাহ তাআলার সাথে কৃত এই ওয়াদা পূরণ করাই বাঞ্ছনীয়।

একবছর বয়সী যেকোনো ছাগল দ্বারা আকীকা করা যাবে।

ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল আকীকা করা উত্তম। বিশিষ্ট সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসাইন রা.-এর পক্ষ থেকে দুটি করে দুম্বা আকীকা করেছেন। (সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭)

প্রকাশ থাকে যে, প্রশ্নে আকীকার অঙ্গীকারকে আমি মান্নত করেছিলাম বলে ব্যক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে বলার দ্বারাও তা মান্নত হবে না। কারণ শরীয়তে যে সমস্ত ইবাদত ফরয বা ওয়াজিব যেমন, নামায-রোযা, সদকা, কুরবানী কেবল এ ধরনের ইবাদতের মান্নত করা সহীহ। এছাড়া অন্যান্য ইবাদতের মান্নত করলেও তা মান্নত হয় না।

-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৪৭২; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮৩৫; সুনানে নাসায়ী ২/১৬৭; মুসতাদরাকে হাকেম ৫/৩৩৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪, ২২৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৩৬, ৩/৭৩৫; আলমুগনী ১৩/৩৯৩; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ইলাউস সুনান ১৭/১১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৯৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা তিনজন মিলে একটি গরু কুরবানী করেছি। গরুটির মূল্য সত্তর...

প্রশ্ন

আমরা তিনজন মিলে একটি গরু কুরবানী করেছি। গরুটির মূল্য সত্তর হাজার টাকা। মূল্যের আড়াই ভাগ টাকা আমি দিয়েছি। আড়াই ভাগ টাকা আমার বড় ভাই দিয়েছেন। বাকি দুই ভাগ টাকা আমার এক বন্ধু দিয়েছে। গোশত আমরা টাকা অনুপাতে ভাগ করে নিয়েছি। জানতে চাই, আমাদের কুরবানী কি সহীহ হয়েছে? এক ব্যক্তি বলেছে, ভগ্নাংশের কারণে আমাদের কুরবানী নাকি হয়নি।

উত্তর

কুরবানীর পশুতে এক সপ্তমাংশ বা এর অধিক অংশে অংশীদার হওয়া জায়েয। এক্ষেত্রে ভগ্নাংশ (যেমন-দেড় ভাগ, আড়াই ভাগ, সাড়ে তিন ভাগ) হলেও বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী কুরবানী সহীহ হয়ে যায়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। ভগ্নাংশের কারণে কুরবানীর ক্ষতি হয়নি।

উল্লেখ্য যে, ভগ্নাংশ যদি এক সপ্তমাংশের কম হয় যেমন কোনো শরিকের আট ভাগের এক ভাগ হয় তাহলে সেক্ষেত্রে কারো কুরবানীই সহীহ হবে না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৫৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৪৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এ বছর আমরা একটি গরু কুরবানী করেছি। যবাইয়ের জন্য যখন...

প্রশ্ন

এ বছর আমরা একটি গরু কুরবানী করেছি। যবাইয়ের জন্য যখন শোয়ানো হল তখন যবাইয়ের পূর্ব মুহূর্তে গরুটি লাফিয়ে উঠে। ফলে ছুরির আঘাতে গরুটির একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। উক্ত অবস্থায় আমরা গরুটি যবাই করেছি। জানতে চাই, এর দ্বারা আমাদের কুরবানী আদায় হয়েছে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, গরুটি দ্বারা আপনাদের কুরবানী আদায় হয়ে গেছে। কারণ যবাইয়ের সময় ছুরির আঘাত বা অন্য কোনোভাবে পশুর অঙ্গহানি হলেও তাতে কুরবানীর কোনো ক্ষতি হয় না। বরং এ পশু দ্বারা কুরবানী যথাযথভাবে আদায় হয়ে যায়।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৮৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৩২; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৪৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনাব আবদুল করীম সাহেবের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। কিন্তু তিনি...

প্রশ্ন

জনাব আবদুল করীম সাহেবের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। কিন্তু তিনি এ বছর কোনো ব্যস্ততার কারণে কুরবানীর পশু ক্রয় করতে পারেননি। এমনকি কুরবানীর তিন দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। আমার জানার বিষয় হল, এখন তার করণীয় কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার উপর কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগল বা তার মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৪৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনৈক গরিব ব্যক্তি মান্নত করেছে যে, আমি একটি পশু আল্লাহর...

প্রশ্ন

জনৈক গরিব ব্যক্তি মান্নত করেছে যে, আমি একটি পশু আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কুরবানী করব এবং সে কুরবানী করার জন্য একটি গাভী ক্রয় করে। কিন্তু কোনো কারণে সে তা ঐ বছর কুরবানী করতে পারেনি; বরং তা তার কাছেই রয়ে যায় এবং পরবর্তীতে তা থেকে কয়েকটি বাচ্চা হয় এবং সেগুলো বড় হয়ে যায়। আমার প্রশ্ন হল, উল্লেখিত অবস্থায় তার করণীয় কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির উপর ক্রয়কৃত ঐ গাভিটি এবং তার বাচ্চাগুলো জীবিত সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব।

-শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৭/৩৪২; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ৮/৪৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭২০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে।...

প্রশ্ন

কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে। যদি বিশেষ দুটি দাঁত উঠে তাহলে পছন্দ হলে কেনে, অন্যথায় ঐ গরু কেনে না। তারা মনে করে, বিশেষ দুই দাঁত না উঠলে সেই গরু দিয়ে কুরবানী করা যায় না।

এখন আমার জানার বিষয় হল, গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুটি দাঁত উঠা কি জরুরি? আর যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায়, কোনো একটি গরুর দুই বছর হয়েছে, কিন্তু এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করলে সহীহ হবে কি না?

উত্তর

গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। বিশেষ দাঁত উঠা জরুরি নয়। তবে যেহেতু বিশেষ দুটি দাঁত দুই বছর বয়স পূর্ণ হলেই উঠে থাকে তাই সাধারণত দুই দাঁত উঠাকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আলামত মনে করা হয়। এ কারণেই মানুষ কুরবানীর পশু কিনতে গেলে তা পরীক্ষা করে। এতে আপত্তির কিছু নেই। তবে যদি কোনো গরুর ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, দুই বছর পূর্ণ হলেও এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে সেই গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে।

-সহীহ মুসলিম ২/১৫৫; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬১১-১৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭১৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর চামড়া বা এর টাকা পাওয়ার প্রকৃত হকদার কারা?

প্রশ্ন

কুরবানীর পশুর চামড়া বা এর টাকা পাওয়ার প্রকৃত হকদার কারা?

উত্তর

কুরবানীর পশুর চামড়ার মালিক কুরবানীদাতা। সে ইচ্ছা করলে তা ব্যবহারও করতে পারে। সে যদি চামড়াটি দান করে দিতে চায় তবে বিক্রি না করে আস্ত দান করাই উত্তম। বিক্রি করলে এর মূল্যের হকদার হয়ে যায় ফকীর-মিসকীন তথা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত লোকজন। আর এদের মধ্যে আত্মীয়-স্বজনও দ্বীনদারগণ অগ্রাধিকারযোগ্য।

-রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৮-৯; শরহুল কানয, বদরুদ্দীন আইনী ২/২০৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭১৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কেউ যদি একটি গরুতে একভাগ আকীকা আর বাকি অংশ কুরবানীর...

প্রশ্ন

কেউ যদি একটি গরুতে একভাগ আকীকা আর বাকি অংশ কুরবানীর নিয়তে কুরবানী করে তবে তার আকীকা ও কুরবানী আদায় হবে কি না?

উত্তর

হ্যাঁ, গরু, উট, মহিষে সাত ভাগের এক ভাগ আকীকা ও বাকি অংশ কুরবানীর নিয়ত করলে আকীকা ও কুরবানী দু’টোই আদায় হয়ে যাবে।

-রদ্দুল মুহতার ২/৫৪৩, ৬/৩২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৪; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৮২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

বাজারে কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, কোনো কোনো গরুর...

প্রশ্ন

বাজারে কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, কোনো কোনো গরুর জন্মগতভাবেই শিং থাকে না, তবে কুরবানীর বয়স হয়েছে। কোনো কোনো গরুর শিং-এর অগ্রভাগ ভাঙ্গা থাকে। জানার বিষয় হল, এ দু ধরনের গরু দ্বারা কুরবানী করলে তা সহীহ হবে কি না?

উত্তর

যে পশুর শিং ওঠেনি সে পশু দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয। কুরবানী সহীহ হওয়ার জন্য শিং থাকা জরুরি নয়। তদ্রূপ যে পশুর শিংয়ের অগ্রভাগ ভেঙ্গে গেছে তা দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয। হুজ্জিয়াহ ইবনে আদী বলেন, আমি আলী রা.কে জিজ্ঞাসা করলাম, শিং ভাঙ্গা পশু দ্বারা কুরবানী করার বিধান কী? তিনি বললেন, এতে অসুবিধা নেই।

-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৫০৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কিরান বা তামাত্তু হজ্ব আদায়কারীর ওপর দমে শোকর ওয়াজিব। তার...

প্রশ্ন

কিরান বা তামাত্তু হজ্ব আদায়কারীর ওপর দমে শোকর ওয়াজিব। তার ওপর কি ঈদুল আযহার কুরবানীও ওয়াজিব হবে নাকি দমে শোকরের কুরবানীই যথেষ্ট হবে?

উত্তর

ঈদুল আযহার কুরবানী ও হজ্বের দমে শোকর দুটি আলাদা বিষয়। একটির দ্বারা অপরটি আদায় হয় না। ঈদুল আযহার কুরবানী ওয়াজিব হয় নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন বালেগ মুসলমানের উপর যদি তিনি মুকিম হন। আর দমে শোকর ওয়াজিব হয় কিরান ও তামাত্তু হজ্ব আদায়কারীর ওপর। হাজীগণ হজ্ব অবস্থায় সাধারণত মুসাফির থাকেন বলে তাদের ওপর ঈদুল আযহার কুরবানী ওয়াজিব হয় না। ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. বলেন, ‘ওমর রা. হজ্ব করতেন এবং ফিরে যাওয়া পর্যন্ত কোনো কুরবানী করতেন না।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৪৩৯৪)

অবশ্য কোনো হাজ্বী যদি ঈদুল আযহার সময় মুকীম থাকেন তবে তার ওপরও কুরবানী ওয়াজিব হবে। এ কুরবানী তিনি সেখানেও আদায় করতে পারেন অথবা নিজ বাড়িতে অন্যের মাধ্যমেও করাতে পারেন।

পারেন।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৫; গুনইয়াতুন নাসিক, পৃ. ১৭২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৪৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি গতবার কুরবানীর প্রথম দিন কুরবানী না করে দ্বিতীয় দিন...

প্রশ্ন

আমি গতবার কুরবানীর প্রথম দিন কুরবানী না করে দ্বিতীয় দিন কুরবানী করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার এক বন্ধু বলল, প্রথম দিনই কুরবানী করা উত্তম। তার কথা কি ঠিক?

উত্তর

হ্যাঁ, কোনো ওজর না থাকলে প্রথম দিনই কুরবানী করা উত্তম।

খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত আলী রা. বলেন, কুরবানী করার সময় তিনদিন। এর মধ্যে প্রথম দিন কুরবানী করা উত্তম।

-মুসনাদে আহমদ ৪/৩৫০; আলমুহাল্লা ৬/৪০; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৭/৩৩১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৩৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার কাছে কিছু টাকা আছে। কী পরিমাণ টাকা থাকলে কুরবানী...

প্রশ্ন

আমার কাছে কিছু টাকা আছে। কী পরিমাণ টাকা থাকলে কুরবানী ওয়াজিব হয়? আর কুরবানী করলে কী ফযীলত পাওয়া যায় তা জানতে চাই।

উত্তর

কুরবানীর দিনগুলোতে (১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত) সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা এর সমমূল্যের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদের মালিক হলে কুরবানী ওয়াজিব হয়। এর চেয়ে কম সম্পদের মালিক হলে কুরবানী ওয়াজিব হয় না। (আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/১২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫)

উল্লেখ্য, টাকা-পয়সা, সোনা-রুপার অলংকার, ব্যবসায়িক পণ্য, প্রয়োজন অতিরিক্ত জমি, সারা বছরেও ব্যবহার হয় না এমন অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এসব কিছুর মূল্য কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। সুতরাং আপনার নিকট জমা টাকা এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার বর্তমান মূল্য পরিমাণ থাকলে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব। অন্যথায় ওয়াজিব নয়।

হাদীসে কুরবানীর অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। যেমন এক হাদীসে আছে, কুরবানীর দিন পশু কুরবানীর চেয়ে আল্লাহ তাআলার নিকট প্রিয় কোনো আমল নেই। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১/১৮০)

অন্য হাদীসে আছে, হযরত আলী রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতেমাকে তার কুরবানীর নিকট উপস্থিত থাকতে বললেন এবং ইরশাদ করলেন, এই কুরবানীর প্রথম রক্তবিন্দু প্রবাহিত হওয়ার সাথে সাথেই আল্লাহ তাআলা তোমার গুনাহসমুহ মাফ করে দিবেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কি শুধু আহলে বাইতের জন্য? না সকল মুসলমানের জন্য? তিনি বললেন, এই ফযীলত সকল মুসলমানের জন্য।

-আলমুততাজিরুর রাবেহ ৩১৬; মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/১৭; আততারগীব ওয়াততারহীব ১/১৭৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৩৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকার কুরবানীর পশু যবাই, গোশত বানানো ইত্যাদি কাজের বিনিময়ে...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকার কুরবানীর পশু যবাই, গোশত বানানো ইত্যাদি কাজের বিনিময়ে কসাইরা কুরবানীর গোশত ও চামড়া নেওয়ার শর্ত করে থাকে। কাজের বিনিময়ে গোশত দেওয়ার চুক্তি করা বৈধ কি না?

উত্তর

কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েয নেই। সুতরাং আপনাদের এলাকার ঐ প্রচলনটি নাজায়েয। এক্ষেত্রে করণীয় হল, কসাইয়ের সাথে কাজের বিনিময়ে টাকা বা অন্য কিছু দেওয়ার চুক্তি করবে। কুরবানীর পশুর কোনো অংশ দেওয়ার চুক্তি করবে না। হ্যাঁ, চুক্তি অনুযায়ী পূর্ণ পারিশ্রমিক দেওয়ার পর অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন বা গরীবদের যেমনিভাবে কুরবানীর গোশত বা চামড়া দেওয়া হয় তেমনি কোনো রূপ চুক্তি ব্যতিত কসাইকেও হাদিয়া হিসেবে কুরবানীর চামড়া বা গোশত দেওয়া যাবে। শর্ত বা চুক্তি করে কুরবানীর কোনো অংশ দেওয়া যাবে না।

হযরত আলী রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উট নহর করতে আদেশ করেছেন এবং কসাইকে (পারিমশ্রমিক হিসেবে) কুরবানীর পশুর কোনো কিছু দিতে নিষেধ করেছেন। আলী রা. বলেন, আমরা তাদেরকে নিজেদের অংশ থেকে (এমনিই) দিয়ে থাকি। (পারিশ্রমিক হিসেবে নয়)।

-সহীহ বুখারী ১/২৩২; সহীহ মুসলিম ১/৪২৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬২১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার বাসার ড্রয়িংরুমে শো কেসে সৌন্দর্যের জন্য কাঁচের প্লেট, জগ...

প্রশ্ন

আমার বাসার ড্রয়িংরুমে শো কেসে সৌন্দর্যের জন্য কাঁচের প্লেট, জগ ও গ্লাস ইত্যাদি কিছু সামান রাখা আছে। এগুলোর মূল্য নেসাব পরিমাণ এবং পুরো বছরে কোনো দিন ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। জানতে চাই, এগুলোর যাকাত দিতে হবে কি?

উত্তর

না, ঐগুলোর যাকাত দিতে হবে না। ব্যবহারিক আসবাব প্রয়োজন অতিরিক্ত হলেও তার উপর যাকাত আসে না। তবে কুরবানী এবং সাদাকাতুল ফিতরের নেসাবের ক্ষেত্রে এগুলোর মূল্য ধর্তব্য হবে।

-কিতাবুল আসল ২/৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯১-৯২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৫৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি একজন চাকরিজীবি। গত কুরবানীর সময় আমার বেতনের ৩০ হাজার...

প্রশ্ন

আমি একজন চাকরিজীবি। গত কুরবানীর সময় আমার বেতনের ৩০ হাজার টাকা আমার প্রতিষ্ঠানের নিকট বকেয়া ছিল। কুরবানীর সময় আমার নিকট কুরবানী দেওয়ার মতো কোনো নগদ অর্থ বা অন্য কোনো সম্পদ ছিল না। তখন আমি একজন আলেমের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলাম। তিনি আমাকে বললেন, উক্ত বকেয়া বেতনের কারণে আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব। কিন্তু তারপরও তখন আমার নিকট টাকা না থাকার কারণে আমি কুরবানী করিনি।

এখন জানার বিষয় এই যে, উক্ত বকেয়া বেতনের কারণে কি আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব ছিল? ওয়াজিব হয়ে থাকলে গত কুরবানীর সময় কুরবানী না করার কারণে আমার কি গুনাহ হয়েছে? বর্তমানে আমার করণীয় কি? আশা করি, সঠিক বিষয়টি জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার বেতনের বকেয়া ৩০ হাজার টাকার কারণে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়নি। উক্ত বেতন উসূল হওয়ার পর থেকেই কেবল তার উপর যাকাত-কুরবানী ইত্যাদি বিধান প্রযোজ্য হবে। উসূলের আগে নয়। অতএব বিগত কুরবানীর সময় কুরবানী না করার করারণে আপনি গুনাগার হবেন না। উল্লেখ্য যে, বেতন উসূল হওয়ার আগ পর্যন্ত তা কর্মচারীর একটি হক তথা প্রাপ্য হিসেবে গণ্য হয়। তাতে কর্মচারীর মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। আর যাকাত-কুরবানী ইত্যাদির সম্পর্ক মালিকানার সাথে। হক্বের সাথে নয়।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৯, ৪/৬১; মাবসূত, সারাখসী ২/১৯৬; হেদায়া ৩/২৭৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৮, ৭/৩০০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০৬; রদ্দুল মুহতার ৬/১০; জাদীদ মাসায়েল কে শরঈ আহকাম, মুফতী শফী রাহ. ৬৪-৬৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৩২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

তামাত্তু হজ্বকারী উকুফে আরাফার আগে উমরা সম্পন্ন করতে পারেনি। এক্ষেত্রে...

প্রশ্ন

তামাত্তু হজ্বকারী উকুফে আরাফার আগে উমরা সম্পন্ন করতে পারেনি। এক্ষেত্রে তার করণীয় কী? সে কি উমরার ইহরাম নিয়েই আরাফায় চলে যাবে, না তা ভেঙ্গে হজ্বের ইহরাম বাঁধবে? ইহরাম ভাঙ্গলে কি এর কারণে দম আদায় করতে হবে এবং পরবর্তীতে ঐ উমরা কাযা করতে হবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

তামাত্তু হজ্বকারী উকুফে আরাফার আগে যদি উমরার তাওয়াফের অন্তত চার চক্কর আদায় করতে না পারে তাহলে উমরার ইহরামটি এমনিতেই বাতিল হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সে হজ্বের ইহরাম করে হজ্বের আমল করে যাবে এবং তার হজ্বটি ইফরাদ হবে। তাই দমে শোকর ওয়াজিব হবে না। তবে উমরার ইহরাম বাতিল হওয়ার কারণে তার উপর জরিমানা দম ওয়াজিব হবে এবং ১৩ তারিখের পর বাতিল হয়ে যাওয়া উমরাটি কাযা করে নিবে। আর যদি উকুফে আরাফার আগে তাওয়াফের চার চক্কর বা আরো বেশি আদায় করতে পারে তাহলে উমরার ইহরাম বাতিল হবে না। অবশ্য সে এখন উমরার কোনো কাজ করবে না; বরং (হজ্বের ইহরাম করে) হজ্বের আমলগুলি আদায় করবে। এক্ষেত্রে এটি কিরান হজ্ব বলে গণ্য হবে এবং হজ্বের কুরবানী (দমে শোকর) দিতে হবে। এ ব্যক্তি উমরার অবশিষ্ট কাজগুলো ১০ থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্তের ভেতর তাওয়াফে যিয়ারতের পূর্বে আদায় করে নিবে। এরপর ইহরাম ত্যাগ করবে।

সহীহ বুখারী ১/৪৫; মুয়াত্তা, ইমাম মুহাম্মাদ, পৃ : ২২১; আলহুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনা ১/৪২৫; মুসনাদে ইমাম আযম পৃ. : ১১৩; ফাতহুল মুলহিম ৩/২৪৭; ইলাউস সুনান ১০/৩২৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৭৭; আলবাহরুল আমীক ২/৭৩৩; মানাসিক পৃ. : ২৫৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫১৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনৈক ব্যক্তি তামাত্তু হজ্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে মীকাতের আগে থেকে উমরার...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি তামাত্তু হজ্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে মীকাতের আগে থেকে উমরার ইহরাম করে রওনা হন এবং যথারীতি তাওয়াফ ও সাঈ করেন। কিন্তু এরপর হলক বা কসর না করে ইহরামের হালতেই মক্কায় অবস্থান করেন এবং ৮ তারিখ হজ্বের ইহরাম করে মিনায় রওনা হন। এরপর আরাফা, মুযদালিফায় উকূফ করে মিনায় রমী, কুরবানী ও হলক করেন। এরপর তাওয়াফে যিয়ারত, সাঈ, তাওয়াফুল বিদা সম্পন্ন করেন এবং ঘোষণা দেন যে, তিনি কিরান হজ্ব আদায় করেছেন। শরীয়তের দৃষ্টিতে তার এ হজ্ব ক্বি কিরান হজ্ব হয়েছে? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার হজ্বটি তামাত্তু হজ্বই হয়েছে। কিরান হয়নি। কেননা, কিরান হওয়ার জন্য শর্ত হল, অন্তত উমরার তাওয়াফের অধিকাংশ চক্কর দেওয়ার পূর্বেই হজ্বের ইহরাম করে নেওয়া। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু উমরার তাওয়াফ, সাঈ সম্পন্ন করার পর হজ্বের ইহরাম করা হয়েছে তাই তা কিরান হয়নি, তামাত্তু হয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উমরার তাওয়াফ ও সাঈ করার পর যেহেতু মাথা মুন্ডানো হয়নি তাই হজ্বের ইহরামের পূর্ব পর্যন্ত তিনি উমরার ইহরাম অবস্থায় ছিলেন। তাই এ অবস্থায় থাকাকালীন ইহরাম সংক্রান্ত নিষিদ্ধ কোনো কাজ করে ফেললে তার উপর দম/জরিমানা (ক্ষেত্রবিশেষ) ওয়াজিব হবে। আর যেসব ভুলের কারণে কিরানকারীর উপর দুটি দম ওয়াজিব হয়, হজ্বের ইহরাম করার পর এমন কোনো নিষিদ্ধ কাজ করে থাকলে তার উপরও দুটি দম ওয়াজিব হবে। কেননা, সে বাস্তবে কিরানকারী না হলেও উমরার ইহরাম ত্যাগ না করার কারণে তার ইহরাম এখন দুটি : হজ্বের ইহরাম ও উমরার ইহরাম।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৭৮; মানাসেক পৃ. ২৭১, ২৮৭, ২৮৯, ২৯০, ২৯৪; রদ্দুল মুহতার ২/৫৩৫; গুনইয়াতুন নাসিক ২০৩, ২১২, ২১৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫১৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

হজ্বের মধ্যে যদি কেউ ১১ তারিখে কুরবানী করে এবং ১১...

প্রশ্ন

হজ্বের মধ্যে যদি কেউ ১১ তারিখে কুরবানী করে এবং ১১ তারিখেই হালাল হয়ে যায় তাহলে তার উপর দম ওয়াজিব হবে কি?

উত্তর

না, এগারো তারিখ কুরবানী করার পর হালাল হলে দম দিতে হবে না। কারণ যিলহজ্বের ১০ থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত তিন দিনের যেকোনো দিন কুরবানী করা যায়। তবে যে দিনই কুরবানী করুক কুরবানীর আগে মাথা মুন্ডানো যাবে না। কুরবানীর পর মাথার চুল মুন্ডিয়ে বা ছেঁটে হালাল হতে পারবে।

গুনইয়াতুন নাসিক পৃষ্ঠা : ১৭৫; রদ্দুল মুহতার ২/৫৩৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫০৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা জানি যে, কারো নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ...

প্রশ্ন

আমরা জানি যে, কারো নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে যাকাত (১ বছর অতিক্রম হলে) ও কুরবানী ওয়াজিব। এখন আমার জানার বিষয় হল, আমার এমন অনেক আত্মীয়স্বজন আছেন, যারা বাহ্যত গরীব। কষ্ট করে সংসার চলে। কিন্তু তারা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে যেমন মেয়ের বিবাহ দেওয়া, ঘরবাড়ি বানানো ইত্যাদির জন্য বিভিন্ন বীমা ও ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে টাকা জমা দিয়ে আসছেন। যা ইতোমধ্যেই নিসাব পরিমাণ হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, এই টাকা কিন্তু বর্তমানে তাদের প্রয়োজন অতিরিক্ত। এমতাবস্থায় তাদের উপর কুরবানী ও যাকাত ওয়াজিব হবে কি না এবং তাদের জন্য যাকাতের মাল খাওয়া বৈধ হবে কি না? সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

জমা টাকা নেসাব পরিমাণ হলে তা যে উদ্দেশ্যেই রাখা হোক তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে এবং বছরান্তে উক্ত সম্পদের যাকাতও দিতে হবে। এমন ব্যক্তি যাকাত গ্রহণ করতে পারবে না। উল্লেখ্য, প্রচলিত বীমা কোম্পানিগুলোর লেনদেন সুদ ও জুয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত। তাই এতে অংশগ্রহণ করা সম্পূর্ণ হারাম।

মাবসূত সারাখসী ২/১৮৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৫৬, ৮/৪৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৫৯, ৬/৩১২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের গ্রামে কুরবানীর গরুতে সাত ভাগের এক ভাগ তিন/চার জন...

প্রশ্ন

আমাদের গ্রামে কুরবানীর গরুতে সাত ভাগের এক ভাগ তিন/চার জন গরীব ব্যক্তি মিলে দিয়ে থাকে। তাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। শুনেছি, যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তারা নাকি এভাবে কুরবানীর পশুতে শরীক হতে পারে। সঠিক মাসআলা জানতে চাই।

উত্তর

আপনার শোনা কথাটি ঠিক নয়। এক গরুতে সাত জনের বেশি শরীক হওয়া বৈধ নয়। সাত জনের বেশি শরীক হলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না। চাই অংশিদারগণ গরীব হোক বা ধনী। তাই কুরবানীর পশুতে ঐভাবে শরীক নেওয়া যাবে না। একান্ত কখনো এমন করতে চাইলে এক ভাগের সকল অংশিদারগণ একজনকে মালিক বানিয়ে দিবে। অতপর ঐ ব্যক্তি নিজের পক্ষ থেকে ঐ অংশ কুরবানী দিবে। গোশত পাওয়ার পর অংশিদারদের মধ্যে গোশত বণ্টন করে দিতে পারবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৬; মাজমাউল আনহুর ৪/১৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; মাবসূত সারাখসী ১২/১২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৯৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকার মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত সাড়ে সাতটায় শুরু হয়েছে।...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকার মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত সাড়ে সাতটায় শুরু হয়েছে। আর মাঠে শুরু হয়েছে আটটায়। যারা ঈদগাহে নামায পড়েছেন তারা প্রায় সকলেই মাঠের জামাত শেষে কুরবানী করেছেন। কিন্তু দু চার জনের কুরবানী এলাকার মসজিদের জামাতের পর তাদের ছেলে ও আত্মীয়দের পরামর্শে মাঠের জামাত শেষ হওয়ার আগেই জবাই করা হয়েছে। এখন অনেকেই বলছে, যেহেতু কুরবানীদাতাদের নামাযের আগে জবাই হয়েছে তাই তাদের কুরবানী আদায় হয়নি। এভাবে কিছু শরীকানা কুরবানী ঈদগাহে নামায আদায়কারী শরীকের নামায শেষ হওয়ার আগেই মসজিদের জামাতের পর জবাই করা হয়েছে।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে। কুরবানীদাতা ঈদের নামায না পড়ে থাকলেও এলাকার যেকোনো স্থানে ঈদের জামাত হয়ে গেলেই কুরবানীর পশু জবাই করা যায়। তবে ঈদের নামায পড়েই কুরবানী করা উত্তম।

মাবসূত, সারাখসী ১২/১১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১১; মাজমাউল আনহুর ৪/১৭০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৮; ফাতাওয়া রহীমিয়া ১০/৩৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৮৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এই কুরবানীর ঈদের নামাযে ইমাম সাহেব রুকুর আগে দাড়িয়ে তিনটি...

প্রশ্ন

এই কুরবানীর ঈদের নামাযে ইমাম সাহেব রুকুর আগে দাড়িয়ে তিনটি তাকবীর দেন এরপর ভুলে রুকুর তাকবীর না বলে রুকুতে চলে যান। ইমামের মতো মুক্তাদিগণও তিন তাকবীর দাড়িয়ে বলেন। এরপর রুকুতে চলে যান। নামাযের পর মুসল্লীদের মধ্যে হট্টগোল লেগে যায়। এরপর ইমাম সাহেব পুনরায় নামায আদায়ের এলান করেন। মুসল্লীদের একজন দ্বিতীয় জামাতের ইমামতী করেন। আমাদের নামায কি হয়েছে? দ্বিতীয় জামাত করা কি ঠিক হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী ইমাম সাহেব যেহেতু রুকুতে যাওয়ার আগেই দাড়িয়ে তিন তাকবীর সমাপ্ত করেছেন তাই ঈদের নামযের অতিরিক্ত ওয়াজিব তাকবীরগুলো আদায় হয়ে গেছে। শুধু রুকুর তাকবীর ছুটেছে। রুকুর তাকবীর বলা সুন্নত। এটা ছুটে গেলে সাহু সিজদাও আসে না, নামাযও নষ্ট হয় না। তাই প্রথম জামাতের নামাযই শুদ্ধ হয়েছে। দ্বিতীয় জামাত করা ঠিক হয়নি। এরকম পরিসি'তিতে কোনো বিজ্ঞ আলেম/মুফতী থেকে মাসআলা জেনে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭২; শরহুল মুনইয়াহ ১৩, ৩৮২; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৮৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৮৩; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৭৬, ৪৭৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৮৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এক ব্যক্তির একটি গরু আছে। সে মান্নত করেছে যে, আমি...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তির একটি গরু আছে। সে মান্নত করেছে যে, আমি আল্লাহর ওয়াস্তে এ বছর গরুটি কুরবানী করব। লোকটি গরীব। বর্তমানে সে চাচ্ছে উক্ত গরুর পরিবর্তে আরেকটি গরু কিনে কুরবানী করবে। তার জন্য কি ওই গরুটির পরিবর্তে অন্য গরু কুরবানী করা জায়েয হবে?

উত্তর

তাকে ওই গরুটিই কুরবানী করতে হবে। এটা রেখে অন্য গরু কুরবানী করা জাযেয় হবে না।

বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২; মাজমাউল আনহুর ৪/১৭০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৭২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরুতে আকীকার জন্য অংশ দেওয়া যাবে কি? আমরা স্বামী-স্ত্রীর...

প্রশ্ন

কুরবানীর গরুতে আকীকার জন্য অংশ দেওয়া যাবে কি? আমরা স্বামী-স্ত্রীর পক্ষ থেকে কুরবানীর দুই অংশ, মৃত বাবা-মার দুই অংশ এবং মেয়ে ও ছেলের আকীকার তিন অংশ-এভাবে এক গরুতে কুরবানী ও আকীকা করতে চাই। এটা জায়েয হবে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, কুরবানীর গরুর সাত ভাগে আকীকার অংশ দেওয়া জায়েয। এতে কুরবানী ও আকীকা দু’টোই আদায় হবে। আপনি প্রশ্নে যেভাবে বলেছেন সেভাবে কুরবানী ও আকীকা করতে পারবেন।

ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫০; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৮/২৪৪; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৩১-৩৩৩; শরহুল মুহাযযাব ৮/৪০৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪০৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

ক) কোনো ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়নি। কিন্তু সে কুরবানীর...

প্রশ্ন

ক) কোনো ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়নি। কিন্তু সে কুরবানীর দিন আকীকা দিতে চায়। তার জন্য আকীকা দেওয়া বৈধ হবে কি না? একজন আলিম বলেছেন, কুরবানীর দিনের ভিতর আকীকা দেওয়া এমন ব্যক্তির জন্য বৈধ নয়। প্রমাণসহ জানালে কৃতজ্ঞ হব।

খ) ডেকোরেটরের জিনিসপত্রে কীভাবে যাকাত আসে? ধরুন, কারো দুই লক্ষ টাকার ডেকোরেটর সামগ্রী আছে। আবার পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণও আছে। তার আয় খুব কম। সংসার চালানোই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। নগদ কোনো অর্থ নেই। এমন ব্যক্তির উপরও কি যাকাত আসবে? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

ক) কুরবানীর দিন আকীকা করা নিষিদ্ধ নয়। এমনকি কুরবানীর পশুতেও আকীকার অংশ দেওয়া জায়েয। অতএব কুরবানী ওয়াজিব নয় এমন ব্যক্তিও কুরবানীর দিনগুলিতে আকীকা করতে পারবে।

বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬

উত্তর : খ) ডেকোরেটর সামগ্রী যদি বিক্রয়ের জন্য না হয়; বরং তা ভাড়ার জন্য তবে সেগুলোতে যাকাত আসবে না। তাই ঐ সামগ্রীর কারণে মালিককে যাকাত দিতে হবে না।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৯; ফিকহি মাকালাত ৩/১৫৫; রদ্দুল মুহতার ২/২৬৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৮৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি গত বছর একটি গাভী ক্রয় করি। এটাই আমার একমাত্র...

প্রশ্ন

আমি গত বছর একটি গাভী ক্রয় করি। এটাই আমার একমাত্র সম্পদ। গাভীটি ক্রয় করার কয়েক দিন পর আমি নিয়ত করি যে, কিছু দিন আমি দুধপান করার পর কুরবানী করে দিব।

জানার বিষয় হল, গাভীটি কুরবানী করা কি আমার জন্য জরুরি হয়ে গেছে? না প্রয়োজনের সময় তা বিক্রি করতে পারব?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বর্ণনা অনুযায়ী আপনি চাইলে ঐ গরুটি বিক্রি করতে পারবেন। কোনো পশু ক্রয় করার পর এভাবে নিয়ত করলে তা কুরবানী করা জরুরি হয়ে যায় না।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৩; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; ফাতাওয়া সিরাজিয়া পৃ. ৮৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৮০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনৈকা মহিলার কাছে ৩ ভরি স্বর্ণালংকার আছে এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত...

প্রশ্ন

জনৈকা মহিলার কাছে ৩ ভরি স্বর্ণালংকার আছে এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু কাপড় আছে, যার মূল্য আনুমানিক পাঁচ হাজার টাকা। সে ঋণগ্রস্থও নয়। তার উপর কি কুরবানী ওয়াজিব হবে?

খ) কুরবানীর পশুকে জবাই করার জন্য শোয়ানোর সময় তার মাথা কোন দিকে থাকবে? উত্তর দিকে নাকি দক্ষিণ দিকে এবং পশুর পা কোন দিকে থাকবে? পূর্ব দিকে নাকি পশ্চিম দিকে?

উত্তর

ঐ মহিলার উপর কুরবানী ওয়াজিব। কারণ তার নিকট বিদ্যমান স্বর্ণ ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাপড়ের মূল্য এক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। যা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের চেয়ে বেশি। অতএব নেসবা পূর্ণ হওয়ায় তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।-বাদায়েউস সানায়ে ২/১৫৮, ২০৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯১; হেদায়া ১/২০৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৭; ফাতহুল কাদীর ২/২১৮

খ) পশুকে জবাই করার সময় মাথা দক্ষিণ দিকে ও সীনা কিবলামুখী থাকবে। এতে পা পশ্চিম দিকে থাকবে। এভাবে শোয়ানো উত্তম।-উমদাতুল কারী ২১/১৫৭; ফাতহুল বারী ১০/২১; ইলাউস সুনান ১৭/১০০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৭৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমরা জানি, হযরত ইবরাহীম আ.-এর কুরবানীর ঘটনা তাঁর পুত্র হযরত...

প্রশ্ন

আমরা জানি, হযরত ইবরাহীম আ.-এর কুরবানীর ঘটনা তাঁর পুত্র হযরত ইসমাঈল আ.-এর সাথে হয়েছিল। কিন' ক’দিন আগে আমাদের এক স্যার যিনি ধর্ম পড়ান, বললেন যে, হযরত ইবরাহীম আ.কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁর পুত্র ইসহাক আ.কে যবেহ করার জন্য। জানতে চাই, এক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য বক্তব্য কোনটি?

উত্তর

তাফসীরবিদ, হাদীস-বিশারদ ও ঐতিহাসিকগণের মতে নির্ভরযোগ্য মত হল হযরত ইবরাহীম আ.-এর কুরবানীর ঘটনা তাঁর স্ত্রী হযরত হাজেরা রা.-এর গর্ভের পুত্র হযরত ইসমাঈল আ.-এর সাথে হয়েছিল। আলকুরআনের বর্ণনাভঙ্গি এদিকেই ইঙ্গিত করে। কুরআন মজীদের একটি আয়াত (তরজমা) আমি তাকে ইসহাকের জন্মলাভের সুসংবাদ দিলাম এবং ইসহাকের পরবর্তীতে ইয়াকুবেরও। (সূরা হুদ : ৭১)

উক্ত আয়াতে এ কথার ইঙ্গিত রয়েছে যে, যার ব্যাপারে কুরবানীর আদেশ করা হয়েছিল তিনি হযরত ইসহাক আ. নন। কারণ উক্ত আয়াতে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে যে, ইসহাক আ. জীবিত থাকবেন। তাঁর ঔরসে ইয়াকুব আ. জন্ম লাভ করবেন। যদি ইসহাক আ.-এর সাথে কুরবানীর ঘটনা ঘটত তাহলে তাঁর সম্পর্কে উক্ত কথা বলা হত না। কেননা, যার ব্যাপারে কুরবানী করার আদেশ করা হয়েছে তাঁর ব্যাপারে উক্ত কথা বললে কুরবানীর মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো অর্থ থাকে না। এছাড়া আরো বহু দলীল-প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত যে, কুরবানীর ঘটনা ইসমাঈল আ.-এর সাথে হয়েছিল। ইসহাক আ.-এর সাথে নয়। এটিকে ইসহাক আ.-এর সাথে যুক্ত করা ঠিক নয়।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু ক্রয় করার পর যদি মারা যায় অথবা চুরি...

প্রশ্ন

কুরবানীর পশু ক্রয় করার পর যদি মারা যায় অথবা চুরি হয়ে যায় তাহলে কি আরেকটি পশু ক্রয় করে কুরবানী করতে হবে?

উত্তর

ঐ ব্যক্তি যদি ধনী হয়ে থাকে যার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয় তাহলে তাকে অন্য পশু ব্যবস্থা করে কুরবানীর সময়ের মধ্যে কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। আর যদি সে এমন গরীব হয় যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় সেক্ষেত্রে তাকে আর কিছুই করতে হবে না।

সুনানে কুবরা বায়হাকী ৯/২৮৯; মাজমাউল আনহুর ৪/১৭৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৬৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

এক বিত্তবান ব্যক্তি কুরবানীর এক মাস পূর্বে একটি কুরবানী মান্নত...

প্রশ্ন

এক বিত্তবান ব্যক্তি কুরবানীর এক মাস পূর্বে একটি কুরবানী মান্নত করে। কুরবানীর দিন সে শুধু একটি কুরবানী করে। জানার বিষয় হল, উক্ত কুরবানীর দ্বারা তার মান্নত আদায় হয়েছে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির উপর দুটি কুরবানী করা জরুরি ছিল। ১. সাধারণ ওয়াজিব কুরবানী ও ২. মান্নতের ওয়াজিব কুরবানী। যেহেতু সে একটি কুরবানী করেছে তাই এখন কুরবানীর উপযুক্ত একটি পশুর মূল্য সদকা করে দিতে হবে। আর সময়মতো কুরবানী না করার কারণে ইস্তিগফার করতে হবে।

বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৪-১৯৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৮; মাবসূত সারাখসী ১২/৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৪২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর সময় আমার মরহুম আব্বার পক্ষ থেকেও কুরবানী দিতে...

প্রশ্ন

আমি কুরবানীর সময় আমার মরহুম আব্বার পক্ষ থেকেও কুরবানী দিতে ইচ্ছুক। প্রশ্ন হচ্ছে, এ কুরবানীর গোশত কি সদকা করে দিতে হবে?

উত্তর

না। মৃতের রূহে ছওয়াব পৌঁছানোর জন্য যে কুরবানী করা হয় এর গোশত সদকা করে দেওয়া জরুরি নয়। এ গোশত নিজের কুরবানীর মতো নিজে খেতে পারবে এবং অন্যকেও দিতে পারবে।

ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫১; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৫; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২২১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনৈক আলেম বলেছেন, সূরা বাকারার ১৯৬ নং আয়াত শুধু তামাত্তু...

প্রশ্ন

জনৈক আলেম বলেছেন, সূরা বাকারার ১৯৬ নং আয়াত শুধু তামাত্তু হজ্বকারীর জন্য প্রযোজ্য। তার কথা কতটুকু সঠিক জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

আয়াতটিতে হজ্বে তামাত্তু ও হজ্বে কিরান দু’টোরই হুকুম বলা হয়েছে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে-(তরজমা) যে ব্যক্তি হজ্বের প্রাক্কালে উমরা দ্বারা লাভবান হতে চায়, সে যা সহজলভ্য তা দ্বারা কুরবানী করবে।-সূরা বাকারা : ১৯৬

হজ্বের প্রাক্কালে উমরার দ্বারা লাভবান হওয়ার সুযোগ কিরান এবং তামাত্তু উভয় ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়। কেননা উভয় ক্ষেত্রেই একই সফরে উমরা ও হজ্ব আদায় করা হচ্ছে। নির্ভরযোগ্য সকল তাফসীরগ্রনে' হজ্বে কিরানকেও ওই আয়াতের মর্মার্থের অন-র্ভুক্ত করা হয়েছে। অতএব শুধু তামাত্তু হজ্বকে একমাত্র মর্মার্থ বলা ঠিক হবে না।

তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/২৫০; তাফসীরে মাযহারী ১/২২৬; তাফসীরে তাবারী ২/২৫৫; আহকামুল কুরআন মুফতী শফী রাহ. ১/৩১৮; মাআরিফুল কুরআন ১/৪৮২; তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ১/৩৪০; তাফসীরে আবুস সাউদ ১/২৫০; আদ্দুররুল মানছূর ১/২১৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২১০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকে চুল, নখ ইত্যাদি না কাটার নির্দেশ...

প্রশ্ন

যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকে চুল, নখ ইত্যাদি না কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন হল, দশ তারিখ কখন কাটবে? কুরবানীর আগে নাকি পরে?

উত্তর

নিজের কুরবানী সম্পন্ন হওয়ার পর নখ, চুল কাটবে। হাদীসে বিষয়টি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। নিম্নে উদ্ধৃতি পেশ করা হল।

সহীহ মুসলিম হাদীস : ১৯৭৭; সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ২৭৯১; সুনানে নাসাঈ হাদীস : ৪৩৬২-৪৩৬৪; মিরকাত ৩/৩০৬; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১২; শরহুল মুহাযযাব ৮/৩৬২; আলইনসাফ ৪/১০৯; আশশরহুল কাবীর ২/৩০০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২০৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনৈকা মহিলার যিলহজ্ব মাসের তিন তারিখে মাসিক শুরু হয়েছে। মোট...

প্রশ্ন

জনৈকা মহিলার যিলহজ্ব মাসের তিন তারিখে মাসিক শুরু হয়েছে। মোট দশ দিন মাসিক থাকে। এ অবস্থায় তার হজ্বে যাওয়ার ফ্লাইটের তারিখও এসে গেছে। এখন সে কীভাবে হজ্ব আদায় করবে?

উত্তর

উক্ত মহিলা গোসল করে ইফরাদ হজ্বের ইহরাম বাঁধবে। তবে ইহরামের নামায পড়বে না এবং কোনো প্রকার তাওয়াফ করবে না। আট তারিখের আগে মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে মিনায় যাওয়ার আগে তাওয়াফে কুদূম করে নিবে। কিন্তু যদি তখনও বন্ধ না হয় তবে এ অবস্থায় মিনায় চলে যাবে এবং হজ্বের সকল আমল যথাযথভাবে করতে থাকবে। ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্তের আগে যদি এতটুকু পূর্বে হায়েয বন্ধ হয়ে যায় যে, গোসল করে তাওয়াফের চার চক্কর দিতে পারবে তাহলে ঐ সময়ই তাওয়াফ করা ওয়াজিব। যদি এতটুকু সময় পাওয়ার পরও সে সময় তাওয়াফ না করে তাহলে তার উপর দম (পশু কুরবানী করা) ওয়াজিব হবে। কিন্তু যদি এতটুকু পূর্বে বন্ধ না হয় তাহলে পবিত্র হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারত করবে। এক্ষেত্রে বিলম্বে আদায় করার কারনে দম ওয়াজিব হবে না।

সহীহ বুখারী ১/৪৪; সহীহ মুসলিম ১/৩৮৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৭১; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫১৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৯৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছে যে, তার অমুক কাজটি পূর্ণ হলে...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি মান্নত করেছে যে, তার অমুক কাজটি পূর্ণ হলে এতীমখানায় একটি বকরী দিবে। ফলে তার কাংখিত কাজটি পূর্ণ হওয়ার পর সে একটি বকরীর বাচ্চা, যার বয়স আনুমানিক তিন-চার মাস, এতীমখানায় দান করেছে। তার এই মান্নত আদায় হয়েছে কি না? আর পশুর মান্নত পুরা হওয়ার জন্য সেগুলো কুরবানীর বয়সের হওয়া জরুরি কি না?

উত্তর

ছাগলের ঐ বাচ্চা দেওয়ার দ্বারা মান্নত আদায় হয়নি। কারণ মান্নতের জন্যও কুরবানীর যোগ্য পশু হওয়া শর্ত। অর্থাৎ ছাগল দিলে অন্তত এক বছর বয়সী হওয়া জরুরি।

বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৩৩; হাশিয়া তাহতাবী আলাদ্দুর ২/৩৪০; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১২৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/২৭১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১২৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব? কী পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে একজনের...

প্রশ্ন

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব? কী পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে একজনের উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়?

উত্তর

প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্ত্ত মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১২৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ...

প্রশ্ন

প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ বছরও কুরবানীর এক সপ্তাহ আগে ৫জন মিলে একটি গরু ক্রয় করি। কুরবানীর আগের দিন আমাদের এক প্রতিবেশী তাতে শরিক হতে চাইলে আমরা তাকে শরিক করে নিই। জানার বিষয় হল, এভাবে শরিক করার কারণে আমাদের কুরবানী আদায়ে কোনো ত্রুটি হয়েছে কি না? জানালে উপকৃত হব।

উল্লেখ্য, কুরবানী দাতা প্রত্যেক শরিকই সচ্ছল এবং নেসাব পরিমাণ মালের মালিক।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে। তবে পাঁচ জনে মিলে কুরবানী দেওয়ার নিয়তে পশু ক্রয়ের পর নতুন করে শরিক নেওয়া অনুত্তম হয়েছে। এক্ষেত্রে ঐ শরিক থেকে প্রাপ্য টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। অবশ্য সদকা না করলেও কোনো সমস্যা নেই।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১৭; মাবসূত, সারাখসী ১২/১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১২৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর আমরা ছয় ভাই একটি গরু কুরবানী করি। একটি...

প্রশ্ন

প্রতি বছর আমরা ছয় ভাই একটি গরু কুরবানী করি। একটি গরুতে যেহেতু সাতজন শরিক হতে পারে তাই এবার আমরা পশুর ৭ম ভাগটি ইছালে ছওয়াবের উদ্দেশে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী দিতে চাচ্ছি। এভাবে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা সহীহ হবে কি এবং ঐ অংশের গোশত কি আমরা খেতে পারব?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ৬ জন মিলে ৭ম অংশ পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা সহীহ হবে এবং আপনারা ঐ অংশের গোশত খেতে পারবেন। তবে এটি উত্তম পদ্ধতি নয়। এক্ষেত্রে উত্তম হল, সবাই মিলে এক অংশের টাকা এক ভাইকে মালিক বানিয়ে দিবে। আর ঐ ভাই পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করবে। এতে কাজটি নিয়মসম্মত হবে এবং সকলে সওয়াবও পেয়ে যাবে। আর এ অবস্থায়ও মৃত পিতার পক্ষ থেকে দেওয়া অংশের গোশত কুরবানীদাতার হবে। সে তা নিজেও খেতে পারবে, সদকাও করবে পারবে এবং অন্য শরিককে হাদিয়াও দিতে পারবে।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১১৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

১. কোনো কিরানকারী মহিলার উমরার তাওয়াফ করার পূর্বে বা তাওয়াফের...

প্রশ্ন

১. কোনো কিরানকারী মহিলার উমরার তাওয়াফ করার পূর্বে বা তাওয়াফের মাঝে যদি মাসিক শুরু হয়ে যায় এবং হজ্বের পূর্বে পাক হতে না পারে তবে হজ্বের পর উমরার কাযা আদায় করলে দম লাগবে কি না? উজরের কারণে পূর্বে উমরা করতে না পারায় হেরেমের সীমানার ভিতরে হজ্বের নিয়ত করে ইফরাদ হজ্ব আদায় করতে পারবে কি না? এক্ষেত্রে কোনো দম লাগবে কি না?

২. উমরার তাওয়াফ করার পূর্বে বা মাঝে তামাত্তুকারী মহিলার যদি মাসিক শুরু হয়ে যায় এবং হজ্বের পূর্বে পাক হতে না পারে তবে উমরাহ সম্পন্ন না করে ইফরাদ হজ্বের ইহরাম করতে পারবে কি না? এই মহিলা যদি হজ্বের পরে উমরার কাযা করে নেয় তবে সে তামাত্তুকারী হবে কি না? উভয়ক্ষেত্রে কোনো দম দিতে হবে কি না?

৩. হজ্বের মাসসমূহে কেউ যদি নফল উমরার ইহরাম করে উমরা সমাপ্ত করার পর হালাল হয়ে হজ্বের পূর্বে মদীনায় চলে যায় তবে মদীনা থেকে আসার সময় কিরান বা ইফরাদ হজ্বের নিয়ত করতে পারবে কি না?

৪. কোনো তামাত্তুকারী যদি উমরা সমাপ্ত করে হজ্বের পূর্বে মদীনায় চলে যায় তবে মদীনা থেকে আসার সময় ইফরাদ বা কিরান হজ্বের নিয়ত করতে পারবে কি না?

উত্তর

১. কিরান হজ্বের নিয়তে ইহরাম করার পর কোনো মহিলা যদি উমরার তাওয়াফের অন্তত চার চক্কর আদায় করতে পারে এবং এরপর ঋতুস্রাবের কারণে আরাফায় অবস্থানের পূর্বে তাওয়াফের অবশিষ্ট চক্করগুলো আদায় করতে না পারে তাহলে সে হজ্বের কার্যাদি যথানিয়মে আদায় করতে থাকবে। অতপর তাওয়াফে যিয়ারতের পূর্বে উমরার তাওয়াফের অবশিষ্ট চক্করগুলো এবং উমরার সায়ী আদায় করে নিবে। এরপর তাওয়াফে যিয়ারতসহ হজ্বের কাজগুলো সম্পন্ন করবে। এক্ষেত্রে তার হজ্বটি কিরান হজ্বই হবে। তাই তাকে হজ্বের কুরবানিও (দমে শোকর) দিতে হবে। আর এক্ষেত্রে কোনো জরিমানা দম দিতে হবে না।

কিন্তু আরাফায় অবস্থানের পূর্বে যদি উমরার তাওয়াফের অন্তত চার চক্কর আদায় করতে না পারে তাহলে তার উমরার ইহরামটি বাতিল হয়ে যাবে এবং তার হজ্বটি ইফরাদ হজ্ব হবে। কিরান হবে না। অবশ্য এ ক্ষেত্রে ইফরাদ হজ্বের জন্য নতুন করে ইহরাম করতে হবে না; বরং পূর্বের ইহরামই যথেষ্ট হবে। আর এ অবস্থায় তার উপর দমে শোকর (হজ্বের কুরবানী) ওয়াজিব হবে না। তবে উমরার ইহরামটি বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে একটি জরিমানা দম দিতে হবে। এবং হজ্ব সম্পন্ন করার পর ১৩ যিলহজ্বের পরে ঐ উমরাটির কাযা করে নিতে হবে।

২. তামাত্তু হজ্বকারী মহিলা উমরার ইহরাম করার পর তাওয়াফের তিন চক্কর বা এর কম আদায়ের পর যদি ঋতুস্রাব আসে এবং আরাফায় অবস্থানের পূর্বে তাওয়াফের অবশিষ্ট চক্করগুলো আদায় করা সম্ভব না হয় তাহলে তার উমরার ইহরামটি বাতিল হয়ে যাবে। এখন সে হজ্বের ইহরাম করে যথানিয়মে হজ্বের কার্যাদি সম্পন্ন করবে। এক্ষেত্রে তার হজ্বটি ইফরাদ হজ্ব হবে। হজ্বের পরে উমরা আদায় করলেও তামাত্তুকারী বলে গণ্য হবে না। তাই এক্ষেত্রে তার উপর দমে শোকর (হজ্বের কুরবানী) ওয়াজিব হবে না। তবে উমরার ইহরামটি বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে একটি জরিমানা দম দিতে হবে এবং হজ্ব সম্পন্ন করার পর ১৩ যিলহজ্বের পরে ঐ উমরাটির কাযা আদায় করে নিতে হবে।

আর আরাফায় অবস্থানের পূর্বে যদি উমরার তাওয়াফের অন্তত চার চক্কর আদায় করে নিতে পারে তাহলে সে উমরার ইহরামটি বহাল রেখেই হেরেম থেকে হজ্বের ইহরাম করে নিয়ে যথানিয়মে হজ্বের কার্যাদি আদায় করবে। অতপর তাওয়াফে যিয়ারতের পূর্বে উমরার তাওয়াফের অবশিষ্ট চক্কর আদায় করে উমরার সায়ী করে নিবে। এরপর তাওয়াফে যিয়ারতসহ হজ্বের বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করবে। এক্ষেত্রে তার হজ্বটি তামাত্তু হজ্বই হবে। অতএব তাকে দমে শোকর (হজ্বের কুরবানী) আদায় করতে হবে। তবে কোনো জরিমানা দম আদায় করতে হবে না।-সহীহ বুখারী ১/৪৫; গুনইয়াতুন নাসিক ২০৩, ২০৫, ২১২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৭৭; আলমাসালিক ফিলমানাসিক ১/৬৪৮; আলবাহরুল আমীক ২/৭৩৩; মানাসিক ২৫৮

৩-৪. হজ্বের মাসসমূহে নফল উমরার নিয়তে কিংবা তামাত্তু হজ্বের নিয়তে উমরা আদায় করার পর মদীনা গিয়ে সেখান থেকে কিরান হজ্বের ইহরাম করা জায়েয নয়। বরং এমন ব্যক্তি সেখান থেকে শুধু হজ্ব বা শুধু উমরার ইহরাম করবে। যদি সে মদীনা থেকে কিরান হজ্বের ইহরাম করে ফেলে তাহলে উমরার ইহরামটি বাতিল করে দেওয়া জরুরি। তাই সে মনে মনে উমরার ইহরামটি ছেড়ে দিবে এবং হজ্বের সময় যথানিয়মে হজ্বের কার্যাদি আদায় করবে। এক্ষেত্রে উমরার ইহরামটি বাতিল করার কারণে তাকে একটি জরিমানা দম আদায় করতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, ঐ ব্যক্তি যেহেতু মদীনা মুনাওয়ারা যাওয়ার আগে হজ্বের মৌসুমেই উমরা করেছে তাই উপরোক্ত সকল ক্ষেত্রে ঐ উমরাসহ তার হজ্বটি তামাত্তু হজ্ব হবে। তাই তাকে দমে শোকর (হজ্বের কুরবানী) আদায় করতে হবে।

উল্লেখ্য, ঐ ব্যক্তি মদীনা থেকে আসার সময় যদি ইফরাদ হজ্বেরও ইহরাম করে তাহলেও তার হজ্বটি তামাত্তু হজ্বই হবে। তাই এক্ষেত্রেও তাকে দমে শোকর (হজ্বের কুরবানী) আদায় করতে হবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ইফরাদ হজ্বের নিয়ত গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৩৭২; আহকামুল কুরআন জাসসাস ১/২৮৮; আলজামিউস সগীর ১৫৭; ইলাউস সুনান ১০/৩১৮; গুনইয়াতুন নাসিক ২১৫; মানাসিক ২৯৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১১১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার একটি গাভী আছে। কয়েক মাস আগে মারাত্মক অসুস্থ হয়।...

প্রশ্ন

আমার একটি গাভী আছে। কয়েক মাস আগে মারাত্মক অসুস্থ হয়। তখন আমি মান্নত করলাম যে, গাভীটি সুস্থ হলে আল্লাহর ওয়াস্তে কুরবানী করব। আল্লাহর রহমতে গাভীটি সুস্থ হয়। কিছুদিন পর একটি বাচ্চা দেয়। আমার জানার বিষয় হল এই বাছুরটি কী করব? তা আমি নিজের জন্য রাখতে পারব কি? আর গাভীটি কুরবানী করার পর তার গোশত আমি খেতে পারব কি না? উল্লেখ্য, আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শর্তপূর্ণ হওয়ার কারণে গাভীটি মান্নতের পশু হয়ে গেছে। অতএব এর বাছুরটি আপনি নিজের জন্য রাখতে পারবেন না। বরং তা সদকা করে দিবেন। এক্ষেত্রে বাছুরটির মূল্য দান করে দিলেও চলবে। তবে সরাসরি বাছুরটি দান করা উত্তম। আর গাভীটি কুরবানী করার পর তার গোশত, চামড়া ইত্যাদিও সদকা করে দিতে হবে। এ থেকে আপনি, আপনার স্ত্রী ও সন্তানাদি এবং অন্য কোনো ধনী লোক খেতে পারবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯২; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১১০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

গত বছর আমাদের কুরবানী পশুটির ট্রাক থেকে নামানোর সময় এক...

প্রশ্ন

গত বছর আমাদের কুরবানী পশুটির ট্রাক থেকে নামানোর সময় এক পায়ে আঘাত পেয়ে ফুলে যায়। যার ফলে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে একটু কষ্ট হত। এবং হাঁটাচলার সময় ঐ পাটি তুলনামূলক কম ব্যবহার করত। আমার প্রশ্ন হল, উক্ত পশু দ্বারা আমাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, উক্ত পশু দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হয়েছে। তবে পশুর কোনো পা যদি একেবারে অচল হয়ে যায়, যার ফলে পশু হাঁটতেই পারে না সেক্ষেত্রে তা দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে না।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৮০২; জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৪৯৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৬; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৬ আরো জানতে দেখুন : তাফসীরে তবারী ৭/৫৫৪; তাফসীরে কুরতুবী ১০/৪২-৪৩; তাফসীরে ফখরে রাযী ১৯/২২১; তাফসীরে রূহুল মাআনী ১৪/৮৭; তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন ৫/৩১৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৮৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি...

প্রশ্ন

আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি গরুর পায়ের নিচে পা পড়ে আমার পায়ের অগ্রভাগ মারাত্মক জখম হয়। ডাক্তার ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছেন। তিনি ব্যান্ডেজ খোলা ও সেখানে পানি লাগাতে নিষেধ করেছেন। এ অবস্থায় আমি কীভাবে অযু করব?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অযু-গোসলের জন্য ব্যান্ডেজের উপর মাসেহ করবেন এবং পায়ের অবশিষ্ট সুস্থ অংশটুকু সম্ভব হলে অন্যান্য অঙ্গের ন্যায় ধুয়ে নিবেন। আর যদি তা ধুতে গেলে ব্যান্ডেজ ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে পায়ের এ অংশও মাসেহ করতে পারবেন।

-সুনানে বায়হাকী ১/২২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯০; শরহুল মুনইয়া ১১৬-১১৭; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০২০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় কুরবানীর পশু সাধারণত ইমাম সাহেব বা অন্য কোনো...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় কুরবানীর পশু সাধারণত ইমাম সাহেব বা অন্য কোনো হুজুরকে দিয়ে জবাই করানো হয়। ইমাম সাহেব একটু কাটার পরই বাকিটুকু কসাই জবাই করে। এখানে আমার প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে উভয়কেই বিসমিল্লাহ বলতে হবে নাকি শুধু ইমাম সাহেব বললেই চলবে?

উত্তর

জবাইকারী একাধিক হলে প্রত্যেককে পৃথক পৃথক বিসমিল্লাহ বলতে হবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব জবাই সম্পন্ন না করে কসাই বা অন্য কাউকে দিয়ে দিলে দ্বিতীয় ব্যক্তিকেও বিসমিল্লাহ বলতে হবে। এক্ষেত্রে দ্বিতীয়জন ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ না বললে জবাই সহীহ হবে না এবং এ পশুর গোশত খাওয়া যাবে না। কুরবানীর ও সহীহ হবে না। অবশ্য প্রথম ব্যক্তিই যদি জবাইয়ের মৌলিক পর্ব শেষ করে ফেলে (অর্থাৎ খাদ্যনালী, শ্বাসনালী এবং শাহরগের কোনো একটি কেটে ফেলে) তাহলে এরপর অন্য কেউ ছুরি চালালে তার বিসমিল্লাহ বলা জরুরি নয়, তবে বলে নেওয়া ভালো।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৫৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০১৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

আমার একটা ছাগল আছে। সামনের ঈদে ১০/১১ মাস পূর্ণ হবে।...

প্রশ্ন

আমার একটা ছাগল আছে। সামনের ঈদে ১০/১১ মাস পূর্ণ হবে। আমার প্রশ্ন হল মোটাতাজা হওয়ার কারণে দেখতে ১ বছর ছাগলের মতো লাগলে। সামনের ঈদে কুরবানী দিতে পারব কি?

উত্তর

ছাগল কুরবানীর যোগ্য হওয়ার জন্য পূর্ণ এক বছর বয়স হওয়া জরুরি। এক বছরের কম বয়সের ছাগল মোটাতাজা হওয়ার কারণে দেখতে এক বছর বয়সী মনে হলেও তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না। অতএব প্রশ্নোক্ত ছাগল দ্বারা আগামী ঈদে কুরবানী সহীহ হবে না।

-সহীহ মুসলিম ২/১৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৮৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনাব,আমি কুরবানির সময় আমার মরহুম বাবার নামেও কুরবানি দিয়ে থাকি।...

প্রশ্ন

জনাব,আমি কুরবানির সময় আমার মরহুম বাবার নামেও কুরবানি দিয়ে থাকি। প্রশ্ন হচ্ছে, এ কুরবানির গোশত কি সদকা করে দিতে হবে?

উত্তর

না, সদকা করা জরুরি নয়। মৃত ব্যক্তির ছওয়াবের উদ্দেশ্যে যে নফল কুরবানি করা হয় তার গোশত সাধারণ কুরবানির মতোই। নিজেরাও খেতে পারবেন এবং অন্যকেও দিতে পারবেন।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫২; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৮৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

জনাব, আমি কুরবানির সময় সফরে ছিলাম। সে সময় আমার নির্দেশেই...

প্রশ্ন

জনাব, আমি কুরবানির সময় সফরে ছিলাম। সে সময় আমার নির্দেশেই বাড়িতে কুরবানি করা হয়। ঈদের দ্বিতীয় দিনে আমি সফর থেকে ফিরে আসি। স্থানীয় এক আলেমের কাছে শুনলাম, সফর অবস্থায় কুরবানি ওয়াজিব নয়, কিন্তু কুরবানির সময়ের ভিতরে মুকীম হলে (আর্থিক সঙ্গতি থাকলে) কুরবানি ওয়াজিব হয়। জানতে চাই, সফরে থাকা অবস্থায় যে কুরবানী দেওয়া হয়েছে তা ধারা আমার ওয়াজিব কুরবানি আদায় হয়েছে কি না?

উত্তর

হাঁ, সফরে থাকা অবস্থায় যে কুরবানি করা হয়েছে তা দ্বারা আপনার ওয়াজিব কুরবানি আদায় হয়ে গেছে। তাই পুনরায় কুরবানি করা জরুরি নয়।

-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১২, ৩১৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৮১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৭৩
তারিখ: ৯-অক্টোবর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

নবীজী সাঃ এর পক্ষ থেকে কুরবানী করা৷

প্রশ্ন
হযরত! আমাদের এলাকায় দেখা যায় অনেকেই আমাদের নবীজী সাঃ এর নামে কুরবানী করেন ৷ জানার বিষয় হল, এটা কতটুকু শরীয়তসম্মত?
উত্তর
সামর্থ্যবান ব্যক্তির রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নামে কুরবানী করা উত্তম। এটি বড় সৌভাগ্যের বিষয়ও। হাদীস শরীফে বর্নিত আছে, নবী কারীম সাঃ হযরত আলী রা.কে তাঁর পক্ষ থেকে কুরবানী করার ওসিয়্যত করেছিলেন। তাই তিনি প্রতি বছর নিজের কুরবানীর পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পক্ষ থেকেও কুরবানী দিতেন।
-সুনানে আবু দাউদ ২/২৯, ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৭২
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুতে আকীকার অংশ নেওয়া ৷

প্রশ্ন
হযরত আমার জানার বিষয় হল, কুরবানীর পশুতে আকীকার নাম দেয়া যাবে কিনা? যদি দেয়া যায় তাহলে উক্ত গোশতের হুকুম কি?
উত্তর
গরু, মহিষ ও উটের মধ্যে কুরবানী সাথে আকীকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কুরবানী ও আকীকা উভয়টিই সহীহ হবে। দুটির গোশতের হুকুমও একই ৷
-রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২; তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৭১
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গোশত কতদিন জমিয়ে রেখে খেতে পারবে?

প্রশ্ন
হুজুর! কুরবানীর গোশত কতদিন পর্যন্ত রেখে খাওয়া যাবে? কেউ বলে তিনদিন কেউ বলে সাতদিন৷ আবার অনেককেই দেখা যায় ফ্রীজে বহুদিন যাবৎ রেখে খায় ৷ এ বিষয়ে শরীয়তের সঠিক বিধান জানতে চাই৷
উত্তর
কুরবানীর গোশত যতদিন ইচ্ছা ততদিন জমিয়ে রেখে খাওয়া জায়েয ৷
তিনদিন সাতদিন এমন কোনো নির্দিষ্ট সময় নেয় যার পর আর খাওয়া যাবে না ৷ বরং সাত দিনেরও অধিক জমিয়ে রেখে খাওয়া জায়েয।
-সহীহ মুসলিম ২/১৫৯, ইলাউস সুনান ১৭/২৭০বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৭০
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানী করা ৷

প্রশ্ন
মুফতী সাহেব! মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানী দেয়ার হুকুম কি? এবং উক্ত গোশতের বিধান কি?
উত্তর
মৃত ব্যক্তির নামে কুরবানী করা জায়েয। মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তাহলে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে। এমতাবস্থায় কুরবানীর অন্য গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয় স্বজনকেও দিতে পারবে। তবে যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তাহলে উক্ত গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব- মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।
-মুসনাদে আহমদ ১/১০৭, হাদীস ৮৪৫, ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮, কাযীখান ৩/৩৫২; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৯
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর দুধ দোহন করা বা তা দ্বারা হালচাষ করা৷

প্রশ্ন
কুরবানীর পশুর দুধ দোহন করা বা তা দ্বারা হালচাষ করার বিধান কি? যদি এমন করে ফেলে তাহলে করনীয় কি? জানালে উপকৃত হব
উত্তর
কুরবানীর পশু কেনার পর বা নির্দিষ্ট করার পর তা থেকে কোনো ধরনের উপকৃত হওয়া জায়েয নয়। যেমন হালচাষ করা, দুধ দোহন করা আরোহণ করা, পশম কাটা ইত্যাদি। সুতরাং কুরবানীর পশু দ্বারা এসব করা যাবে না। যদি করে তাহলে দুধের বা তার মুল্য, হালচাষের মূল্য ইত্যাদি সদকা করে দিতে হবে।
-ইলাউস সুনান ১৭/২৭৭, কাযীখান ৩/৩৫৪, আলমগীরী ৫/৩০০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৮
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কোনো অংশীদারের শুধু গোশত খাওয়ার নিয়ত হলে, অথবা কারো উপার্জন হারাম হলে কুরবানীর হুকুম৷

প্রশ্ন
হুজুর! কুরবানীর পশুতে কোনো অংশীদারের নিয়ত যদি হয় গোশত খাওয়া অথবা শরীকদের কারো উপার্জন হারাম হলে, তার ও অন্য শরীকের কুরবানীর হুকুম কি?
উত্তর
যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না৷ এমন ব্যক্তিকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তেমনিভাবে শরীকদের কারো পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয় তাহলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে।
-কাযীখান ৩/৩৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৭
তারিখ: ৩১-সেপ্টেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কেমন পশু দ্বারা কুরবানী করা উত্তম?

প্রশ্ন
হযরত! আমার একটি প্রশ্ন, আজকাল মানুষ কুরবানীর পশু ক্রয় করতে গিয়ে কেউ সুন্দর দেখে কেউ বড় খুজে ৷ জানার বিষয় শরীয়তে কেমন পশু দ্বারা কুরবানী করা উত্তম?
উত্তর
উট গরু মহিষ, ভেড়া দুম্বা ছাগলের মধ্যে যেকোনো পশু দিয়েই কুরবানী জায়েয ৷ তবে কুরবানীর পশু হৃষ্টপুষ্ট হওয়া দেখতে সুন্দর হওয়া যার প্রতি মুহাব্বত সৃষ্টি হয় এমন হওয়া উত্তম।
-মুসনাদে আহমদ,৬/১৩৬, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩; আলমগীরী ৫/৩০০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৬
তারিখ: ৩১-সেপ্টেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

ক্রয়ের পর পানাহার ছেড়ে দেয়ার কারণে দুর্বল হয়ে যাওয়া পশুর কুরবানী৷

প্রশ্ন
হুজুর গত চার দিন আগে কুরবানীর জন্য গরু ক্রয় করেছি ৷ কিন্তু কিনে আনার পর বাড়িতে গরুটি কিছু খাচ্ছে না ৷ না খেয়ে খেয়ে শুকিয়ে গেছে এবং খুব দুর্বল হয়ে যাচ্ছে ৷ জানার বিষয় হল, উক্ত গরু দ্বারা কুরবানী করতে কোনো সমস্যা আছে কি না?
উত্তর
এমন শুকনো দুর্বল পশু, যা জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার গরুটি যদি কুরবানীর দিন এমন দুর্বল হয়ে যায় যে, হেঁটে জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত যেতে অক্ষম, তাহলে তা দ্বারা ওয়াজিব কুরবানী জায়েয হবে না ৷ এমন দুর্বল না হলে কুরবানী করতে কোনো সমস্যা নেই৷
-জামে তিরমিযী ১/২৭৫,বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪; আলমগীরী ৫/২৯৭৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৫
তারিখ: ৩১-সেপ্টেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর জন্য নির্দিষ্ট পশুতে পরে কাউকে শরীক করা৷

প্রশ্ন
আমার বাবা গত এক বছর যাবত একা কুরবানী দেয়ার জন্য একটি গরু পালন করেছিল, পরে সেই গরুতে দুই চাচাকে শরীক করতে চাচ্ছে৷ জানার বিষয় হলো, এভাবে শরীক করলে কুরবানী সহীহ হবে কি?
উত্তর
হ্যা, কুরবানী সহীহ হবে, তবে উত্তম ছিল কুরবানীর জন্য নির্ধারন করার আগে কিংবা ক্রয় করার আগে শরীক নির্ধারন করা।
-হেদায়া ৪/৩৪৫; ফতওয়া খানিয়া ৩/২৯০; ফতওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৪৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৪
তারিখ: ৩১-সেপ্টেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু কুরবানীর সময়ের পুর্বে বাচ্চা জন্ম দিলে করনীয় ৷

প্রশ্ন
আমার বাবা ও চাচা মিলে কুরবানী দেয় ৷ বাবার উপর কুরবানী ওয়াজিব ৷ কিন্তু চাচার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় ৷ তারা দুজন শরীক হয়ে একটি গাভী ক্রয় করেছে। গাভীটি একটি বাছুর জন্ম দেয়। জানার বিষয় হলো, বাছুর কি গাভীর সাথে কুরবানী দিবে, নাকি রেখে দিবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাছুরটি গাভীর সাথে কুরবানী দিয়ে দিবে। এবং তার গোশত সদকা করে দিবে৷
-আল মাবসুত লিসসারাখসী ১২/১৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া, ৪/৩২২; মওসুয়াতুল ফিকহিয়া, ৪/৯৭৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬৩
তারিখ: ৩১-সেপ্টেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর দিন হাঁস-মুরগী যবাই করার বিধান৷

প্রশ্ন
হযরত একটি প্রশ্ন ! লোকমুখে শোনা যায় কুরবানীর দিন হাস মুরগী যবাই করা যাবে ৷ আবা কেউ কুরবানী করতে সামর্থ না থাকায় কুরবানীর দিন মুরগী বা হাঁস যবাই করে থাকে৷ জানার বিষয় হল, কুরবানীর দিন হাঁস- মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয আছে কি?
উত্তর
কুরবানীর দিন কুরবানীর নিয়ত করে কিংবা কুরবানীর সাদৃশ্য অবলম্বনের উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী যবাই
করা বৈধ হবে না। তবে কুরবানীর নিয়ত ব্যতিত কেবল খাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয। এতে দোষের কিছু নেই।
-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৩/২৯০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬২
তারিখ: ৩১-সেপ্টেম্বর-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু যবাই করে বিনিময় গ্রহন করা ৷ মাদরাসার পক্ষ থেকে পাঠালে উক্ত টাকার হকদার ৷

প্রশ্ন
আমি মাদরাসার ছাত্র ৷ কুরবানীর সময় এলাকায় মাদরাসার জন্য চামড়া কিংবা চামড়ার টাকা কালেকশন করতে হয় ৷ ঈদের দিন মাদরাসার পক্ষ থেকে প্রত্যেকের হাতে ছরি দেয়া হয় মহল্লায় গরু যবাই করার জন্য ৷ গরু যবাইয়ের পর মানুষ চামড়া কিংবা চামড়ার টাকা দেয়া ছাড়াও গরু যবাইয়ের বিনিময় হিসেবে এক/দুইশ টাকা করে আমাদের কে দেয় ৷ জানতে চাই, কুরবানীর পশু যবাই করে বিনিময় নেওয়া
জায়েয হবে কিনা? এবং উক্ত টাকার হকদার আমরা নাকি মাদরাসা?
উত্তর
কুরবানীর পশু যবাই করে এর বিনিময় নেওয়া জায়েয আছে। এবং উক্ত টাকার হকদার যবাই কারী নিজেই৷ তবে মাদরাসা যেহেতু আপনাকে ছরি দিয়েছে গরু যবাই করে মাদরাসার জন্য চামড়া কিংবা চামড়ার টাকা মাদরাসার জন্য কালেকশন করে আনার উদ্দেশ্যে৷ তাই সেই উদ্দেশ্য যেন পরিপুর্ন লক্ষ রাখা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ৷
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৬৪; কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৪৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬১
তারিখ: ২৮-অগাষ্ট-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কখন কার উপর ওয়াজিব হয়?

প্রশ্ন
হুজুর! কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? এবং
কি পরিমান ও কি ধরনের সম্পদ থাকলে কুরবানী ওয়াজিব হয়? জমি কিংবা ঘরের আসবাবপত্র কি কুরবানী নেসাবের অন্তর্ভোক্ত হবে? এ বিষয়ে স্ববিস্তারে জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
যে সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন, প্রাপ্তবয়ষ্ক, মুকীম মুসলমান নর-নারী ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বাসস্থান ব্যবহার্য দ্রব্যাদি ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। কুরবানী নেসাব হল, সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি স্বর্ন অথবা সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি রূপা অথবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তাহলে উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য পন্যের মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে।
উল্লেখ্য যে, স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত সবধরনের আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫ ৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৬০
তারিখ: ২৮-অগাষ্ট-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরুর বিশেষ দুটি দাঁত না উঠলে কি কুরবানী হবে না?

প্রশ্ন
অনেক লোককে দেখা যায় কুরবানীর পশু ক্রয়ের সময় পশুর দাঁত দেখে ৷ বিশেষ দুই দাঁত থাকলে গরু দামধর করে নয়ত করে না৷ আমার জানার বিষয় হল, গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুটি দাঁত উঠা কি জরুরি? যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে,গরুর দুই বছর পুর্ন হয়েছে, কিন্তু এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করলে সহীহ হবে কি না?
উত্তর
গরু, মহিষ কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। বিশেষ দাঁত উঠা জরুরি নয়।
তবে যেহেতু স্বাধারনত বিশেষ দুটি দাঁত দুই বছর পূর্ণ হলেই উঠে থাকে তাই দুই দাঁত উঠাকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আলামত মনে করা হয়। এ কারণেই মানুষ কুরবানীর পশু কিনতে গেলে তা পরীক্ষা করে। এতে দোষের কিছু নেই।
অবশ্য যদি কোনো গরুর ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, দুই বছর পূর্ণ হয়ে গেছে কিন্তু বিশেষ দুটি দাঁত এখনো উঠেনি তাহলে সেই গরু দ্বারা কুরবানী হয়ে যাবে।
-মুসলিম শরীফ ২/১৫৫; ফাতাওয়ায়ে খানিয়া ৩/৩৪৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬১১৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৫১
তারিখ: ১৪-অগাষ্ট-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

কার উপর কি পরিমান মাল থাকলে হজ্ব ফরয হয়?

প্রশ্ন
হুজুর আমার কাছে প্রায় তিন লক্ষ টাকা আছে ৷ আমি যাকাত আদায় করি, কুরবানী দেই৷ এছাড়া আমার ঘর বাড়ি ও কিছু চাষী জমি ছাড়া আর কিছুই নেই ৷ চাকরির বেতন সাংসারিক কাজে ব্যয় হয়ে যায় ৷ জানার বিষয় হল, আমার উপর হজ্ব ফরয কি না? কার উপর কি পরিমান মাল থাকলে হজ্ব ফরয হয়? জানিয়ে বাধিত করবেন ৷
উত্তর
হজ্ব ফরয হয় এমন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ সবল ব্যক্তির উপর যার দৈনন্দিন নিত্য প্রয়জনীয় খরচ বাদে হজ্ব করতে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা আছে। যাকাতের মত হজ্বের নির্ধারিত পরিমান কোনো নেসাব নেই ৷
অতএব দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগে। সে পরিমান টাকা যদি আপনার নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত থাকে তাহলে আপনার উপর হজ্ব করা আবশ্যক হবে ৷ অন্যথায় আবশ্যক হবে না ৷
-সূরা আল ইমরান, আয়াত: নং ৯৭; সহীহ বুখারী, হাদীস নং; ৮; সহীহ মুসলিম হাদীস নং: ১৬; বাদায়েউস সানায়ে,২/২৯৭; রদ্দুল মুহতার, ৩/৪৬০; বাহরুর রায়েক ২/৫৪৪৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৪২
তারিখ: ২৭-জুলাই-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

মু্ল্য দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করলে কি ফিতরা আদায় হবে না?

প্রশ্ন
হযরতজ্বী! আমাদের সমাজে কিছু সংখক লোক বলছে গম জব খিজুর ইত্যাদির মু্ল্য দ্বারা সদকাতুল ফিতর আদায় করলে নাকি আদায় হবে না ৷ অথচ আমরা সারা জীবন মুল্য দ্বারা ই আদায় করে আসছি ৷ এ বিষয়ে দলিল সহ জানালে উপকৃত হব৷
উত্তর
সদকাতুল ফিতর যেমনভাবে গম,জব, খিজুর, কিসমিস ইত্যাদি দ্বারা আদায় করা যায়, তেমনি তার মু্ল্য দ্বারাও আদায় করা যায় ৷ কারণ সদকাতুল ফিতরে নির্ধারিত বস্তু উদ্দেশ্য নয়৷ যেমন কুরবানীতে নির্দিষ্ট প্রানী উদ্দেশ্য৷ বরং খাদ্য উদ্দেশ্য ৷ কেননা আল্লাহ তায়ালা কফ্ফারা সম্পর্কে কুরআনে ইরশাদ করেন,
ﻣِﻦْﺃَﻭْﺳَﻂِ ﻣَﺎ ﺗُﻄْﻌِﻤُﻮﻥَ ﺃَﻫْﻠِﻴﻜُﻢ
অনুবাদ: যা তোমরা তোমাদের পরিজনদেরকে খেতে দাও৷
সূরা মায়েদা, আয়াত:৮৯৷
আর খাদ্য যেমনভাবে উল্যেখিত বস্তুও হতে পারে অন্য বস্তুও হতে পারে৷
অন্যত্রে ইরশাদ করেছেন,
ﺧُﺬْ ﻣِﻦْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟِﻬِﻢْ ﺻَﺪَﻗَﺔً ﺗُﻄَﻬِّﺮُﻫُﻢْ ﻭَﺗُﺰَﻛِّﻴﻬِﻢْ ﺑِﻬَﺎ
অনুবাদ: তুমি তাদের ধন-সম্পদ হতে সাদাকাহ গ্রহণ কর, যার দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশোধিত করে দেবে।
সূরা তওবা, আয়াত:১০৩৷
মাল বা ধন-সম্পদ দ্বারা শুধু গম, খিজুর ই নির্দিষ্ট নয়৷ বরং স্বর্ন-রুপা, টাকা পয়সা মাল, ধন-সম্পদ৷
হাদীস শরীফে নবী করীম সাঃ ইরশাদ করেছেন, ﺃﻏﻨﻮﻫﻢ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﻓﻲ ﻣﺜﻞ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻴﻮﻡ
এই দিনে (ঈদুল ফিতর) তাদেরকে অন্যের নিকট হাত পাতা থেকে অমুখাপেক্ষি করে দাও৷
সুনানে দারাকুতনি, ২/১৫২; নসবুর রায়া, ২/৪৩১৷
আর মানুষ তখনি অমুখাপেক্ষি হবে যখন তাকে এমন জিনিষ দেয়া হবে যা দিয়ে তার সরল প্রকার প্রয়োজন পুরন করতে পারবে ৷ যেমন টাকা-পয়সা ৷ টাকা-পয়সা দিয়ে মানুষ তার সবধরনের প্রয়োজন পুরন করতে পারে৷ খাদ্যের প্রয়জোন হলে খাদ্য কিনে খেতে পারবে৷ পোশাকের প্রয়োজন হলে, পোশাক কিনতে পারবে৷ বাসস্থানের প্রয়োজন হলে তারও ব্যবস্থা করতে পারবে৷
আতা রহঃ উমর রাঃ থেকে বর্ণনা করেন,
ﻋَﻦْ ﻋَﻄَﺎﺀٍ ؛ ﺃَﻥَّ ﻋُﻤَﺮَ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺄْﺧُﺬُ ﺍﻟْﻌُﺮُﻭﺽَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪَﻗَﺔِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻮَﺭِﻕِ ﻭَﻏَﻴْﺮِﻫَﺎ
অনুবাদ: উমর রাঃ সদকার ক্ষেত্রে টাকা ইত্যাদি গ্রহণ করতেন।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদীস:১০৫৩৯৷
প্রসিদ্ধ তাবেয়ী হাসান বসরী রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন:
ﻋﻦ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻗﺎﻝ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺃﻥ ﺗﻌﻄﻰ ﺍﻟﺪﺭﺍﻫﻢ ﻓﻲ ﺻﺪﻗﺔ ﺍﻟﻔﻄﺮ
অনুবাদ: সদকায়ে ফিতর দিরহাম দ্বারা প্রদান করতে কোন সমস্যা নেই।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, ১০৪৭১৷
যোবায়ের রঃ থেকে বর্নিত তিনি বলেন, আমি আবু ইসহাককে বলতে শুনেছি,
ﺃﺩﺭﻛﺘﻬﻢ ﻭﻫﻢ ﻳﻌﻄﻮﻥ ﻓﻲ ﺻﺪﻗﺔ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﺍﻟﺪﺭﺍﻫﻢ ﺑﻘﻴﻤﺔ ﺍﻟﻄﻌﺎﻡ
অনুবাদ: আমি সাহাবায়ে কেরামকে পেয়েছি, তারা রমযানের সদকাতে খাদ্যের মূল্য পরিমাণ দিরহাম আদায় করেছেন।
মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদীস: ১০৪৭২৷
অতএব গম, জব খিজুর ইত্যাদি দিয়েই সদকা আদায় করা জরুরী নয়৷ তার মুল্য দিয়েও আদায় করা যাবে ৷
অবশ্য হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাঃ যেসব বস্তু নির্ধারন করেছেন তা শুধু তাদের সহজতার জন্য ছিল৷ নির্দিষ্ট করার লক্ষে নয় ৷ তবে যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাঃ গম খেজুর ইত্যাদির পরিমান নির্ধারন করেছেন ৷ মু্ল্যের কোনো পরিমান নির্ধারন করা হয় নি৷ তাই মু্ল্যের পরিমান নির্ধারন করার ক্ষেত্রে সেসব বস্তু দ্বারা নির্ধারন করতে হবে, যেসব বস্তু দ্বারা নবীজী সাঃ নির্ধারন করেছেন৷ যেমন গম, আটা জব খেজুর ইত্যাদি৷
-বাদায়েউস সানায়ে,২/২০৫; আল বাহরুর রায়েক, ২/৪৪৩; রদ্দুল মুহতার, ২/২৮৬; ফতহুল কদীর, ২/২১৯৷ ফতওয়া মাহমুদীয়া, ১৫/১৭১; ফতওয়া রহীমীয়া, ৬/৩০৬৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৩৯
তারিখ: ২৭-জুলাই-২০১৭
বিষয়: কুরবানী

বিক্রির উদ্দেশ্যে পালিত গরুর যাকাতের বিধান ৷

প্রশ্ন
হুজুর! গত বছর কুরবানীর আগে আমি তিনটি গরু কিনেছিলাম বিক্রি করার জন্য ৷ গত বছর দুইটি বিক্রি করেছি ৷ একটি বিক্রি করতে পারি নাই৷ ঈদের পরও আর বিক্রি করি নাই৷ আগামি কুরবানীর ঈদে বিক্রির উদ্দেশ্যে পালতে থাকি ৷ গরুর মু্ল্য বর্তমানে এক লক্ষাধিক হবে ৷ জানার বিষয় হল, আমার উক্ত গরুর যাকাত দিতে হবে কি না?
উত্তর
সাধারনত গৃহপালিত পশুর যাকাত আসে না ৷ কিন্তু তা যদি ক্রয় করা হয় ব্যবসার উদ্দেশ্যে ৷ তাহলে তা অন্যান্য ব্যবসায়িক পন্যের মত হয়ে তার যাকাত দেয়া আবশ্যক হয়ে যায় ৷ সুতরাং প্রশ্নে বর্নিত সুরতে আপনার গরুর যাকাত দিতে হবে ৷ গরুর বর্তমান মুল্য হিসাব করে উক্ত মু্ল্যের শতকরা আড়াই পার্সেন্ট যাকাত আদায় করতে হবে ৷
-বাদায়েউস সানায়ে ২/১২৬ ; ফাতহুল কাদীর, ২/১৮০; আল বাহরুর রায়েক, ২/৩৭২; আদ দররুল মুখতার, ৩/১৯৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৭
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কান বা লেজ কাটা পশু দিয়ে কুরবানি৷

প্রশ্ন
কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা কাটা থাকলে এর দ্বারা কুরবানী সহীহ হয় না?
উত্তর
কুরবানীর পশুর কান বা লেজ অর্ধেক বা এরচেয়ে বেশি না থাকলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ নয়। যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি অংশ থাকে তাহলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ
হবে।
-শরহু মাআনিল আছার ২/২৭১; কিতাবুল আসল ২/৪৯৪; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; ইলাউস সুনান ১৭/২৪০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৬
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

অন্ধ বা এক চোখ নষ্ট পশু দ্বারা কোরবানি৷

প্রশ্ন
বরাবর, মাননী মুফতী সাহেব৷ আমাদের ঘরে পালিত একটি গরু আছে৷ আমরা চেয়ছিলাম এ বছর গরুটি কুরবানি দিতে৷ কিন্তু গরুটির একটি চোখ নষ্ট৷ তাই মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চাই, এই গরুটি দিয়ে কুরবানি শুদ্ধ হবে কিনা?
উত্তর
যে পশুর দুটি চোখই অন্ধ বা এক চোখ পুরো নষ্ট সে পশু কুরবানী করা
জায়েয নয়। অতএব প্রশ্নে বর্নিত গরুটি দিয়ে
আপনার কুরবানি শুদ্ধ হবে না৷ -জামে তিরমিযী ১/২৭৫, কাযীখান ৩/৩৫২, আলমগীরী ২৯৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৫
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

ভাঙ্গা শিং বিশিষ্ট পশু দিয়ে কুরবানি৷

প্রশ্ন
আমি এ বছর কুরবানির জন্য যে গরুটি কিনেছি তার শিং বড়৷ হাট থেকে কিনে আনার সময় এক গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে একটি শিংয়ের অর্ধেক ভেঙ্গে গেছে৷ মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হলো, উক্ত গরু দিয়ে কুরবানি শুদ্ধ হবে কিনা?
উত্তর
যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙ্গে গেছে, যে কারণে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে পশুর কুরবানী জায়েয নয়। পক্ষান্তরে যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙ্গে গেছে বা শিং একেবারে উঠেইনি সে পশু কুরবানী করা জায়েয।
অতএব প্রশ্নে বর্নিত গরু দিয়ে কুরবানি জায়েয হবে৷
জামে তিরমিযী ১/২৭৬, সুনানে আবু দাউদ ৩৮৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৪, আলমগীরী ৫/২৯৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৪
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

শরিকে কুরবানীতে এক অংশ নিয়ে টাকা কম দেয়া ও নেয়া৷

প্রশ্ন
আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। বড় ভাই এক ভাগ আর আমরা দুই ভাই তিন অংশ করে মোট ছয় ভাগ নিয়েছি। আমরা দুই ভাই সমান সমান টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু বড়ভাই আমাদের মধ্যে তুলনামূলক অসচ্ছল হওয়ায় তিনি তার অংশের পুরো টাকা দেন না। আমরা দুই ভাই বলেছি, আপনি যা পারেন দেন, বাকিটা আমরা দুজনে দিয়ে দিব। অবশ্য গোশত সকলের অংশ হারেই বণ্টন করা হয়। টাকা কম- বেশির কারণে তাতে ব্যবধান করা হয় না; বরং ধরে নেওয়া হয় যে, আমরা ছোট দুই ভাই বড় ভাইয়ের টাকার আংশিক আদায় করে দিই। জানতে চাই, উল্লেখিত পদ্ধতিতে আমাদের কুরবানী কি সহীহ হচ্ছে?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। গরু-মহিষে শরিকে কুরবানী দেওয়ার জন্য শর্ত হল, কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হওয়া। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বড় ভাই যদিও তার অংশের চেয়ে কম দিচ্ছেন কিন্তু অন্য দুই ভাই তার অংশের বাকিটা দিয়ে দিবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তাই বড় ভাইয়ের অংশ এক সপ্তমাংশের কম হয় না। -ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬৩
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব৷

প্রশ্ন
কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক
মুসলমান নর-নারী মুকীম ব্যক্তি, যে ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। নেসাব হল : স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর
অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন
ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার
কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তবে স্বর্ণ-রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন- অতিরিক্ত অন্য বস্ত্তর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে। স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, নগদ অর্থ, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্র-এ সবই কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬,আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া
১৭/৪০৫৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬২
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পত্বি থাকলে কুরবানি ওয়াজিব হবে কিনা?

প্রশ্ন
খালিদ বিশ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করে, যার দ্বারা তার সংসার চলে। গত কয়েকদিন পূর্বে তার আম্মা ইন্তেকাল করেন। পিতা আগেই মারা গেছেন। মায়ের মৃত্যুর পর তার মামারা তার আম্মার পৈত্রিক সম্পত্তি (৬ শতাংশ জমি, যার প্রতি শতাংশের মূল্য প্রায় এক লক্ষ টাকা) তার ও তার তিন বোনের নামে ১.৫ শতাংশ করে সমানভাবে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। এছাড়া খালিদের উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদ নেই। বর্তমানে তার কাছে ত্রিশ হাজার টাকা নগদ জমা আছে৷ জানার বিষয় হল, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় খালিদের উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে কি না?
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী খালিদ মীরাস সূত্রে ১.৫ শতাংশ জমির মালিক হয়েছে তা যেহেতু তার প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ এবং তার মূল্যও নেসাব পরিমাণের বেশি (অর্থাৎ প্রায় এক লক্ষ ৫০ হাজার টাকা) তাই তার উপর কুরবানী ওয়াজিব। ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৮৬; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯ প্রকাশ থাকে যে, মায়ের সম্পত্তি তার ছেলেমেয়ের মাঝে সমানহারে বণ্টন করা বৈধ হয়নি। কুরআন মজীদের হুকুম হল, মেয়ের তুলনায় ছেলে দ্বিগুণ মীরাসের
হকদার।
-সূরা নিসা ৪ : ১১৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬১
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরুর বিশেষ দাত না উঠলে কুবরানী৷

প্রশ্ন
কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে। যদি বিশেষ দুটি দাঁত উঠে তাহলে পছন্দ হলে কেনে, অন্যথায় ঐ গরু কেনে না। তারা মনে করে, বিশেষ দুই দাঁত না উঠলে সেই গরু দিয়ে কুরবানী করা যায় না। এখন আমার জানার বিষয় হল, গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুটি দাঁত উঠা কি জরুরি? আর যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায়, কোনো একটি গরুর দুই বছর হয়েছে, কিন্তু এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করলে সহীহ হবে কি না?
উত্তর
গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুই বছর পূর্ণ হওয়া জরুরি। বিশেষ দাঁত উঠা জরুরি নয়। তবে যেহেতু বিশেষ দুটি দাঁত দুই বছর বয়স পূর্ণ হলেই উঠে থাকে তাই সাধারণত দুই দাঁত উঠাকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আলামত মনে করা হয়। এ কারণেই মানুষ কুরবানীর পশু কিনতে গেলে তা পরীক্ষা করে। এতে আপত্তির কিছু নেই। তবে যদি কোনো গরুর ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, দুই বছর পূর্ণ হলেও এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে সেই গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ হবে। -সহীহ মুসলিম ২/১৫৫; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬১১-১৩৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৬০
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর জন্য ক্রয়কৃত পশুর বাচ্চা হলে করনীয়৷

প্রশ্ন
আমি কুরবানীর ঈদের তিন মাস আগে কুরবানীর উদ্দেশ্যে একটি গাভী ক্রয় করেছি। কুরবানীর আগে সেই গাভীটির একটি বাচ্চা হয়েছে। জানার বিষয় হল, এ বাচ্চাটির ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম
কী?
উত্তর
উক্ত বাচ্চাটি সদকা করে দিতে হবে। অবশ্য জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি জবাই করে দেয় তবে তার গোশত সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব হবে। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৯
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানির নিয়তে পশু ক্রয় করে পরবর্তিতে শরীক করা৷

প্রশ্ন
প্রতি বছর আমরা নির্দিষ্ট পাঁচ শরিক মিলে কুরবানী করি। এ বছরও কুরবানীর এক সপ্তাহ আগে ৫জন মিলে একটি গরু ক্রয় করি। কুরবানীর আগের দিন আমাদের এক প্রতিবেশী তাতে শরিক হতে চাইলে আমরা তাকে শরিক করে নিই। জানার বিষয় হল, এভাবে শরিক করার কারণে আমাদের কুরবানী আদায়ে কোনো ত্রুটি হয়েছে কি না? জানালে উপকৃত হব। উল্লেখ্য, কুরবানী দাতা প্রত্যেক শরিকই সচ্ছল এবং নেসাব পরিমাণ মালের মালিক।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সকলের কুরবানী সহীহ হয়েছে। তবে পাঁচ জনে মিলে কুরবানী দেওয়ার নিয়তে পশু ক্রয়ের পর নতুন করে শরিক নেওয়া অনুত্তম হয়েছে। এক্ষেত্রে ঐ শরিক থেকে প্রাপ্য টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। অবশ্য সদকা না করলেও কোনো সমস্যা নেই। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১৭; মাবসূত, সারাখসী ১২/১৫৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৮
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুতে আকীকা৷

প্রশ্ন
আমি এ বছর একা একটি গরু কিনে আমার এক নাম আমার স্ত্রীর এক নাম ও এক ছেলের এক নাম কুরবানীর জন্য দিয়ে, এক ছেলের আকীকার দুই নাম দিতে চাই৷ জানার বিষয় হলো, কুরবানীর পশু অংশ দিয়ে আকীকা করা যাবে কিনা? এবং তার গোস্তের বিধান কি?
উত্তর
কুরবানীর গরু, মহিষ ও উটের অংশ দিয়ে আকীকা করা যাবে৷ এতে কুরবানী ও আকীকা দুটোই সহীহ হবে। এবং কুরবানী ও আকীকার গোস্তের একই বিধান৷ -তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৭
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

ছয়জন মিলে মৃত বাবার পক্ষ থেকে এক ভাগ দিয়ে কুরবানী৷

প্রশ্ন
প্রতি বছর আমরা ছয় ভাই একটি গরু কুরবানী করি। একটি গরুতে যেহেতু সাতজন শরিক হতে পারে তাই এবার আমরা পশুর ৭ম ভাগটি ইছালে ছওয়াবের উদ্দেশে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী দিতে চাচ্ছি। এভাবে মৃত পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা সহীহ হবে কি এবং ঐ অংশের গোশত কি আমরা খেতে পারব?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ৬ জন মিলে ৭ম অংশ পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা সহীহ হবে এবং আপনারা ঐ অংশের গোশত খেতে পারবেন। তবে এটি উত্তম পদ্ধতি নয়। এক্ষেত্রে উত্তম হল, সবাই মিলে এক অংশের টাকা এক ভাইকে মালিক বানিয়ে দিবে। আর ঐ ভাই পিতার পক্ষ থেকে কুরবানী করবে। এতে কাজটি নিয়মসম্মত হবে এবং সকলে সওয়াবও পেয়ে যাবে। আর এ অবস্থায়ও মৃত পিতার পক্ষ থেকে দেওয়া অংশের গোশত কুরবানীদাতার হবে। সে তা নিজেও খেতে পারবে, সদকাও করবে পারবে এবং অন্য শরিককে হাদিয়াও দিতে পারবে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তারসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৬
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্বেও ক্রয় না করা বা পশু ক্রয় করে 12 যিলহজ্বের ভিতরে জবাই না করলে৷

প্রশ্ন
এক ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে তা কুরবানী করতে পারেনি। এখন তার কী করণীয়? আর কেউ যদি পশু ক্রয়ই না করে এবং কুরবানীর সময় শেষ হয়ে যায় তখন তার কী করণীয়?
উত্তর
কুরবানীর পশু ক্রয়ের পর ১২ যিলহজ্বের মধ্যে কুরবানী করতে না পারলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে। আর কোনো
ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও
যদি সে কুরবানীর পশু ক্রয় না করে এবং কুরবানীও না করে থাকে তাহলে এভাবে কুরবানীর সময় শেষ হয়ে গেলে তার উপর কুরবানীর যোগ্য একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব। আর উভয় ব্যক্তি যথাসময়ে কুরবানী না করার কারণে তাওবা- ইস্তিগফার করবে।
-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; তুহফাতুল ফুকাহা ৩/৮৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৫
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

শরীকে কুরবানীতে এক অংশ নিয়ে এক সপ্তমাংশের কম টাকা দেওয়া ও অন্য শরীক বাকি টাকা আদায় করে দেওয়া ৷

প্রশ্ন
আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। বড় ভাই এক ভাগ আর আমরা দুই ভাই তিন অংশ করে মোট ছয় ভাগ নিয়েছি।
আমরা দুই ভাই সমান সমান টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ
করি। কিন্তু বড়ভাই আমাদের মধ্যে তুলনামূলক
অসচ্ছল হওয়ায় তিনি তার অংশের পুরো টাকা দেন না। আমরা দুই ভাই বলেছি, আপনি যা পারেন দেন, বাকিটা আমরা দুজনে দিয়ে দিব। অবশ্য গোশত সকলের অংশ হারেই বণ্টন করা হয়। টাকা কম-বেশির কারণে তাতে ব্যবধান করা হয় না; বরং ধরে নেওয়া হয় যে, আমরা ছোট দুই ভাই বড় ভাইয়ের টাকার আংশিক আদায় করে দিই। জানতে চাই, উল্লেখিত পদ্ধতিতে আমাদের কুরবানী কি সহীহ হচ্ছে?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। গরু-মহিষে শরিকে কুরবানী দেওয়ার জন্য শর্ত হল, কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হওয়া। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বড় ভাই যদিও তার অংশের চেয়ে কম
দিচ্ছেন কিন্তু অন্য দুই ভাই তার অংশের বাকিটা
দিয়ে দিবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তাই বড় ভাইয়ের অংশ এক সপ্তমাংশের কম হয় না।
-ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; আলমুহীতুল বুরহানী
৮/৪৭৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৫৪
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানী৷

প্রশ্ন
আমাদের পরিবারে আম্মু এবং আমরা তিন ভাই আছি। পিতার মৃত্যুর পর সম্পদ বণ্টন করা হয়নি। ছোট ভাইদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের সকল আয়-ব্যয় অভিন্ন। এমন অবস্থায় আমাদের সকলের পক্ষ থেকে কি একটি ছাগল কুরবানী যথেষ্ট হবে নাকি প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব?
উত্তর
একটি ছাগল দ্বারা এক ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানী করা যায়। একাধিক ব্যক্তি বা পরিবারের সকল সদস্যের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানী দিলে তা যথেষ্ট হবে না। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যৌথ সম্পত্তি যদি এ পরিমাণ হয় যে, বণ্টন করলে প্রত্যেক সদস্য প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে যায় তাহলে প্রত্যেকের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। অবশ্য আপনাদের কেউ নেসাব থেকে কম সম্পদের মালিক হলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। তদ্রূপ কেউ অপ্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার উপরও কুরবানী ওয়াজিব নয়। -মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৭৬৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৪২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৭৫৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৪৯
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু নর হওয়া উত্তম নাকি মাদি হওয়া উত্তম?

প্রশ্ন
কুরবানীর পশু নর হওয়া উত্তম নাকি মাদি হওয়া উত্তম?
উত্তর
‎ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ নর ও মাদী জানোয়ারের মাঝে যদি উভয়টির দাম একই হয়,তাহলে এক্ষেত্রে নর প্রাণীর চেয়ে মাদী জানোয়ার কুরবানী দেয়া উত্তম।
‎ﻭَﺍﻟْﺄُﻧْﺜَﻰ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺈِﺑِﻞِ ﻭَﺍﻟْﺒَﻘَﺮِ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﺣَﺎﻭِﻱٌّ . ﻭَﻓِﻲ
‎ﺍﻟْﻮَﻫْﺒَﺎﻧِﻴَّﺔِ ﺃَﻥَّ ﺍﻟْﺄُﻧْﺜَﻰ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺬَّﻛَﺮِ ﺇﺫَﺍ ﺍﺳْﺘَﻮَﻳَﺎ
‎ﻗِﻴﻤَﺔً، ﻭَﺍَﻟﻠَّﻪُ ﺃَﻋْﻠَﻢُ . ‏( ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ، ﻛﺘﺎﺏ
‎ﺍﻻﺿﺤﻴﺔ - 9/467 ، ﻗﺎﺿﻲ ﺧﺎﻥ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ - 3/349 ، ‎ﺍﻟﻔﺘﺎﻭﻯ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻻﺿﺤﻴﺔ، ﺍﻟﺒﺎﺏ ‎ﺍﻟﺨﺎﻣﺲ - 5/299 উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৪৮
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর দিন পশু জবাই করার আগ পর্যন্ত রোজা রাখা৷

প্রশ্ন
একজন মহিলাকে বলতে শুনেছি , কুরবানীর দিন পশু জবাই করার আগ পর্যন্ত রোযা রাখতে হয়। শরীয়তে এরূপ কিছু আছে কি না?
উত্তর
কুরবানী দিনের অংশ বিশেষে রোযা রাখতে হবে এ কথা ঠিক নয়। ঈদের দিনে রোযা রাখার বিধান নেই। তবে এক্ষেত্রে মাসআলা হল, কুরবানীর দিন কুরবানীর গোশত দিয়ে
খাবার শুরু করা মুস্তাহাব। তাই এর আগ পর্যন্ত
যথাসম্ভব খানাপিনা থেকে বিরত থাকা উত্তম।
হযরত বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন , ঈদুল
আযহার দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কুরবানীর গোশত খাওয়ার আগ পর্যন্ত অন্য কিছু খেতেন না।
মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ১১২৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩২৪; আলবাহরুর রায়েক
২/১৬৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন৷
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৪৭
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু ক্রয় করে জবাই করার আগেই মালিক মারা গেলে করনীয়৷

প্রশ্ন
আমার পিতা একজন মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। তার কুরবানী করার সামার্থ্য ছিলো। গত ঈদে তিনি কুরবানীর জন্য একটি গরুও কিনেছিলেন। কিন্তু সেটি কুরবানী করার সুযোগ তার আর হয়নি। ঈদের নামায পড়ে আসার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় ইন্তেকাল হয়। তার মৃত্যুতে পরিবারের সকলে শোকাহত ছিল। তাই কুরবানীর তিনদিনের ভেতর গরুটি আর কুরবানী করা হয়নি। এখন আমরা ঐ গরুটি কী করব? সেটি কি সদকা করে দিতে হবে? অথবা আগামী কুরবানীর ঈদে যবেহ করার জন্য রেখে দিতে হবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতা যেহেতু
কুরবানীর সময় (১২ যিলহজ্ব) শেষ হওয়ার আগেই ইন্তেকাল করেছেন, তাই এ বছরের কুরবানী তার উপর ওয়াজিব থাকেনি। সুতরাং তার ক্রয়কৃত ঐ পশুটিরও কুরবানী করা বা সদকা করা লাগবে না। বরং এই পশু এখন তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তি হিসাবে ধর্তব্য হবে। ওয়ারিশরা চাইলে সেটা বিক্রি করে দিয়ে এর মূল্য সকলের অংশ অনুযায়ী ভাগ করে নিতে পারেন। আবার
চাইলে যবেহ করে এর গোশতও বণ্টন করে নিতে পারেন আর যদি সকল ওয়ারিশ বালেগ হয় এবং তারা একমত হয় তাহলে তারা গরুটি বা এর মূল্য সদকাও করে দিতে পারবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; আদ দুররুল মুখতার
৬/৩১৯৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৩৮
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

সফর অবস্থায় কুরবানী৷

প্রশ্ন
জনাব, আমি কুরবানির সময় সফরে ছিলাম। সে সময় আমার নির্দেশেই বাড়িতে কুরবানি করা হয়। ঈদের দ্বিতীয় দিনে আমি সফর থেকে ফিরে আসি। স্থানীয় এক আলেমের কাছে শুনলাম, সফর অবস্থায় কুরবানি ওয়াজিব নয়, কিন্তু কুরবানির সময়ের ভিতরে মুকীম হলে (আর্থিক সঙ্গতি থাকলে) কুরবানি ওয়াজিব হয়। জানতে চাই, সফরে থাকা অবস্থায় যে কুরবানী দেওয়া হয়েছে তা ধারা আমার ওয়াজিব কুরবানি আদায় হয়েছে কি
না?
উত্তর
হাঁ, সফরে থাকা অবস্থায় যে কুরবানি করা হয়েছে তা দ্বারা আপনার ওয়াজিব কুরবানি আদায় হয়ে গেছে। তাই পুনরায় কুরবানি করা জরুরি নয়। আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১২, ৩১৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৮১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯২৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৪৬
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

হাবীবা জান্নাত বুশরা হজ্বের সফরে আমি একটি সমস্যায় পড়ে থাকি।...

প্রশ্ন
হাবীবা জান্নাত বুশরা হজ্বের সফরে আমি একটি সমস্যায় পড়ে
থাকি। তা হল , হজ্বের সময় কখনও কখনও
ঋতুস্রাব এসে যায়। এ নিয়ে খুব পেরেশান
হয়ে যাই। মুফতী ছাহেবের নিকট আমার
জিজ্ঞাসা হল , হজ্বের সময় যদি আমার স্রাব
এসে যায় তাহলে হজ্বের আমলগুলো
আদায়ের ক্ষেত্রে আমার কী হুকুম
হবে। কোনটি স্রাব অবস্থায় আদায় করা
যাবে আর কোনটি আদায় করা যাবে না।
সুস্পষ্টভাবে জানালে আমি
পেরেশানীমুক্ত হব। আল্লাহ আপনাদের
খেদমতকে কবুল করুন।
উত্তর
স্রাব অবস্থায় কেবল বাইতুল্লাহর তাওয়াফ এবং
মসজিদে হারামে প্রবেশ করা নিষেধ।
বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ব্যতীত হজ্ব ও উমরার ইহরাম
করা থেকে নিয়ে হালাল হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য
সকল আমল আপনি স্রাব অবস্থায় আদায় করতে
পারবেন। যেমন, মিনায় থাকা,মুযদালিফা ও আরাফার
উকুফ, মিনার পাথর নিক্ষেপ, কুরবানী ইত্যাদি কাজ
এ সময়েও আঞ্জাম দেওয়া যাবে। এমনকি উমরার তাওয়াফের পর স্রাব আসলে এ অবস্থায় সায়ীও করতে পারবেন। আর স্রাবের দরুন তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করতে বিলম্ব হয়ে গেলেও কোনো জরিমানা দম আসবে না। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩০৫; রদ্দুল মুহতার
২/৫১৯৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৩৬
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

একজন মহিলাকে বলতে শুনেছি , কুরবানীর দিন পশু জবাই করার...

প্রশ্ন
একজন মহিলাকে বলতে শুনেছি , কুরবানীর দিন পশু জবাই করার আগ
পর্যন্ত রোযা রাখতে হয়। শরীয়তে এরূপ
কিছু আছে কি না ?
উত্তর
কুরবানী দিনের অংশ বিশেষে রোযা রাখতে হবে এ কথা ঠিক নয়। ঈদের দিনে রোযা রাখার বিধান নেই। তবে এক্ষেত্রে মাসআলা হল , কুরবানীর দিন কুরবানীর গোশত দিয়ে খাবার শুরু করা মুস্তাহাব। তাই এর আগ পর্যন্ত যথাসম্ভব খানাপিনা থেকে বিরত থাকা উত্তম। হযরত বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন , ঈদুল আযহার দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর গোশত খাওয়ার আগ পর্যন্ত অন্য কিছু খেতেন না। সুনানে দারাকুতনী ২/৪৫; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ১১২৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস ২২৯৮৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩২৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৩৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৩৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

গরু-ছাগলের যদি অধিকাংশ দাঁতই না থাকে , এমনকি দু-একটি ছাড়া...

প্রশ্ন
গরু-ছাগলের যদি অধিকাংশ দাঁতই না থাকে , এমনকি দু-একটি ছাড়া সবগুলো
পড়ে যায় তবে তা দ্বারা কুরবানী করা
কি সহীহ হবে ?
উত্তর
গরু-ছাগলের অধিকাংশ দাঁত না থাকলেও যে কয়টি দাঁত আছে তা দ্বারা যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে তবে সেটি দ্বারা কুরবানী সহীহ হয়ে যায়। কিন্তু দাঁত পড়ে যাওয়ার কারণে যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে না পারে তবে ঐ পশু কুরবানীর উপযুক্ত নয়। সুতরাং দু-একটি ছাড়া সব দাঁত পড়ে গেলে সে পশু ঘাস চিবিয়ে খেতে না পারার সম্ভাবনাই যেহেতু বেশি তাই এমন জন্তু দ্বারা কুরবানী না করাই বাঞ্ছনীয়। শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; ফাতাওয়া কাযী খান ৯৩/৩৫৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৩৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় দেখি যে , অনেক সময় কুরবানীর পশুকে মাটিতে...

প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় দেখি যে , অনেক সময় কুরবানীর পশুকে মাটিতে
শোয়ানোর সময় ধস্তাধস্তির
একপর্যায়ে পশুর পা ভেঙ্গে যায়।
এমতাবস্থায় কেউ বলে যে , এ পশু দ্বারা
কুরবানী করা যাবে না। কেউ বলে
যাবে। মুফতী সাহেবের নিকট সঠিক
মাসআলা জানতে চাই।
উত্তর
কুরবানীর পশু জবাইর সময় শোয়াতে গিয়ে পা ভেঙ্গে গেলে তা দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হবে। আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; মাজমাউল আনহুর ৪/১৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৫৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৩১
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কোন কোন প্রাণী দ্বারা কুরবানী করা যায় এবং ঐ প্রাণীসমূহের...

প্রশ্ন
কোন কোন প্রাণী দ্বারা কুরবানী করা যায় এবং ঐ প্রাণীসমূহের বয়সসীমা সম্পর্কে জানালে উপকৃত হব।
উত্তর
গৃহপালিত পশু তথা উট , গরু, মহিষ, দুম্বা , ভেড়া ও ছাগল দ্বারা কুরবানী করা যায়। উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর হতে হবে। গরু বা মহিষ কমপক্ষে দু ’ বছরের হতে হবে। আর দুম্বা , ভেড়া বা ছাগল এক বছরের হতে হবে। তবে কোনো ভেড়া যদি ছয়মাস বা তদুর্ধ্ব বয়সের হয় কিন্তু শরীরের গঠনের দিক থেকে এক বছরের ভেড়ার মত হৃষ্টপুষ্ট হয়ে যায় তাহলে সেটি দ্বারাও কুরবানী সহীহ হবে। বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৩০
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর সময় আমাদের এলাকার অনেককেই এমন করতে দেখা যায় ,...

প্রশ্ন
কুরবানীর সময় আমাদের এলাকার অনেককেই এমন করতে দেখা যায় , ৬
শরীক মিলে একটি পশু কুরবানী করে। ঐ
পশুতে নিজেদের ৬ অংশ আর ৭ম
অংশ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের জন্য রাখে। এ ৭ম
অংশের টাকা তারা সকলে মিলে
দিয়ে থাকে। আমি জানতে চাই , এমনটি
করা সহীহ কী না ?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে কুরবানী করা সহীহ। কেননা এ ক্ষেত্রে কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম নয়। প্রত্যেকের অংশ পুরো হওয়ার পর সপ্তমাংশ শরীকদের নফল কুরবানী হিসাবে গণ্য হবে এবং সকলের কুরবানী সহীহ হয়ে যাবে। বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৬ ৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪২৯
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমরা তিন ভাই। মা জীবিত আছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর...

প্রশ্ন
আমরা তিন ভাই। মা জীবিত আছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর তার রেখে
যাওয়া সম্পত্তি বণ্টন করা হয়নি। অবশ্য
বাবা খুব বেশি সম্পত্তি রেখে যাননি।
আমরা তিন ভাই চাকুরি করি।
প্রত্যেকের নিজস্ব কিছু কিছু সম্পদ
আছে। কুরবানীর সময় আমরা তিনভাই
মিলে মায়ের নামে একটি ছাগল
কুরবানী করে থাকি। আমি জানতে চাই ,
এভাবে আমাদের কুরবানী করা সহীহ
হচ্ছে কি না ?
উত্তর
আপনার বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি বণ্টন করলে আপনারা প্রত্যেকে যে পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হবেন তার সাথে প্রত্যেকের নিজস্ব মালিকানাধীন সম্পত্তি যোগ করলে যার মালিকানায় মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্য সমপরিমাণ সোনা-রূপা, টাকা পয়সা বা অন্যান্য সম্পত্তি থাকবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। সে হিসেবে যার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে তাকে পৃথকভাবে অন্তত: একটি ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা অথবা বড় পশুতে এক সপ্তমাংশে শরীক হয়ে নিজের কুরবানী আদায় করতে হবে। কয়েক ভাই মিলে মায়ের নামে ছাগল কুরবানী করার দ্বারা আপনাদের ওয়াজিব কুরবানী আদায় হবে না। অবশ্য যদি আপনাদের কারো উপরোক্ত পরিমাণে সম্পদ না থাকে সেক্ষেত্রে কুরবানী ওয়াজিব হবে না। কেউ করলে তা নফল হিসাবে আদায় হবে। -ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/১৮১; এলাউস সুনান
১৭/২১০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪২২
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমাদের পরিবারে কুরবানীর গোশত দিয়ে গরীব মহিলাদেরকে দাওয়াত খাওয়ানোর রেওয়াজ...

প্রশ্ন
আমাদের পরিবারে কুরবানীর গোশত দিয়ে গরীব মহিলাদেরকে দাওয়াত
খাওয়ানোর রেওয়াজ আছে। কিন্তু
আমি ছোট বেলা থেকে লক্ষ্য করেছি,
হিন্দু মহিলাদেরকে কুরবানীর গোশত
দেওয়া হয় না। তাদের জন্য পৃথক গোশত
আনিয়ে নেওয়া হয়। জানতে চাই,
হিন্দুদেরকে কুরবানীর গোশত দিতে
অসুবিধা আছে কি?
উত্তর
কুরবানীর গোশত হিন্দু বা অমুসলিমকেও দেওয়া জায়েয। এতে অসুবিধার কিছু
নেই।
আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৩৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; ইমদাদুল আহকাম ৪/২০৬৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪১৭
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমার আববু কুরবানীর পশু ঈদের আগের দিন ক্রয় করেন। গত...

প্রশ্ন
আমার আববু কুরবানীর পশু ঈদের আগের দিন ক্রয় করেন। গত বছর ঈদের দুদিন
আগে আমাদের বাসায় ডাকাতি হয়।
তাই আববু গত বছর কুরবানী দিতে
পারেননি। তবে তখন আববুর হাতে নগদ
টাকা না থাকলেও বাড়িতে দেড় বিঘা
জমি আছে, যা থেকে বাৎসরিক আয়
আসে বিশ হাজার টাকা। ঐ বিশ হাজার
টাকা না হলেও আমাদের সংসার
ভালোভাবেই চলে যায়। গত বছর কি
আববুর উপর কুরবানী করা ওয়াজিব ছিল?
যদি হয়ে থাকে তাহলে এখন কী করবে?
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ দেড় বিঘা জমির আয় না হলেও যেহেতু আপনাদের সংসার চলে যায় তাই ঐ দেড় বিঘা জমি প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ। এ সম্পদের কারণে আপনার পিতার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। কিন্তু তিনি যেহেতু গত বছর কুরবানী করেননি তাই ঐ বছরের জন্য নূন্যতম এক বছর বয়সী একটি ছাগল বা তার মূল্য সদকা করে দিতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩০৯; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১২; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৬৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪১৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

একজনকে বলতে শুনেছি, ছয় মাসের ছাগল যদি এমন হৃষ্টপুষ্ট হয়...

প্রশ্ন
একজনকে বলতে শুনেছি, ছয় মাসের ছাগল যদি এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে এক
বছর বয়সী ছাগলের মতো দেখায় তাহলে
তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এই কথাটি কতটুকু
সঠিক? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
আপনার শোনা কথাটি ঠিক নয়। ছাগল দ্বারা কুরবানী সহীহ হওয়ার জন্য তা অন্তত এক বছর বয়সী
হওয়া জরুরি। হৃষ্টপুষ্ট হওয়ার কারণে এক বছরের
ছাগলের মতো দেখালেও ১২ মাসের কম
বয়সী ছাগল দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে না।
অবশ্য ছয় মাস বয়সী ভেড়া বা দুম্বা যদি হৃষ্টপুষ্ট
হওয়ার কারণে এক বছর বয়সীর মতো দেখায় তাহলে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয হবে। হাদীস শরীফে জাবের রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উট পাঁচ বছর পূর্ণ হয়ে
ষষ্ঠ বছরে উপনীত না হলে আর গরু-মহিষ দু বছর পূর্ণ হয়ে তৃতীয় বছরে পদার্পণ না করলে আর ছাগল-ভেড়ার এক বছর পূর্ণ না হলে তোমরা তা দ্বারা কুরবানী করো না। তবে এ বিষয়টি যদি তোমাদের জন্য কঠিন হয়
তাহলে ছয়মাসের দুম্বা, ভেড়া কুরবানী করতে
পারবে।
মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৪৩৪৮; সহীহ
মুসলিম, হাদীস : ১৯৬৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া
১৭/৪২৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭; আদ্দুররুল মুখতার
৬/৩২২৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪১৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় প্রসিদ্ধ আছে যে, বাকিতে কুরবানীর পশু ক্রয় করলে...

প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় প্রসিদ্ধ আছে যে, বাকিতে কুরবানীর পশু ক্রয় করলে কুরবানী
সহীহ হয় না। কুরবানীর পশু নগদমূল্যে ক্রয়
করতে হবে। বাকিতে ক্রয় করলেও কুরবানীর আগে তার মূল্য পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় কুরবানী সহীহ হবে না। এই কথাটি কতটুকু সঠিক? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ও ভিত্তিহীন।
বাকিতে পশু ক্রয় করলেও তা দ্বারা কুরবানী জায়েয। আর বাকিতে ক্রয় করলে কুরবানীর আগেই মূল্য পরিশোধ করতে হবে এ কথাও
ঠিক নয়। নগদ বা বাকি যেভাবেই পশু ক্রয় করা
হোক তা দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হবে। উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন প্রয়োজনে: 01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪১২
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমি প্রতিবছরই কুরবানী করি। গত বছর কুরবানীর জন্য আঠারো হাজার...

প্রশ্ন
আমি প্রতিবছরই কুরবানী করি। গত বছর কুরবানীর জন্য আঠারো হাজার টাকা দিয়ে
একটি গাভি ক্রয় করি। পরে দেখা গেল, গাভিটি
অন্তসত্ত্বা। বাচ্চা হওয়ার সময় অতি নিকটবর্তী
হয়ে গেছে। আমাদের কেউ কেউ গাভিটি
কুরবানী করতে বাধা দিল। তখন বিশ হাজার টাকা
দিয়ে আরেকটি গরু কিনে কুরবানী করি।
প্রথম ক্রয়কৃত গাভিটি কুরবানী না করে নতুন
গরু কিনে কুরবানী করাতে কোনো
সমস্যা হয়েছে কি না? জানিয়ে বাধিত
করবেন। এছাড়া ঐ গাভি ও তার বাচ্চার মালিক কি
আমি, নাকি তা সদকা করতে হবে?
উত্তর
প্রথম ক্রয়কৃত গাভিটির বাচ্চা হওয়ার সময় যেহেতু
নিকটবর্তী ছিল তাই তা কুরবানী না করে অন্য
গরু দ্বারা কুরবানী করা ঠিকই হয়েছে। কেননা
বাচ্চা হওয়ার সময় নিকটবর্তী এমন গাভি দ্বারা
কুরবানী করা মাকরূহ। তাই আপনার ঐ সিদ্ধান্ত
মাসআলা সম্মতই হয়েছে। এখন ঐ গাভি ও বাছুরের মালিক আপনি। তা সদকা করতে হবে না।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৭; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭১; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন প্রয়োজনেঃ 01756473393

প্রসঙ্গ: কোরবানির পশু বাকিতে কিনলে কোরবানি হবে কিনা?
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪১১
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর নাড়ি-ভুঁড়ি আমরা নিজেরা
পরিষ্কার করতে পারি না বলে সাধারণত...

প্রশ্ন
কুরবানীর পশুর নাড়ি-ভুঁড়ি আমরা নিজেরা
পরিষ্কার করতে পারি না বলে সাধারণত এলাকার
কোনো মহিলাকে এ ভিত্তিতে পরিষ্কার
করতে দেই যে, পারিশ্রমিক হিসাবে তাকে
৫০ টাকা এবং নাড়ি-ভুঁড়ির এক তৃতীয়াংশ দেওয়া
হবে। জানার বিষয় হল, এ ধরনের চুক্তি করা কি
বৈধ? জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
কুরবানীর পশুর কোনো অংশ বিনিময় বা
পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েয নয়। আলী
রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর চামড়া ছাড়ানোর
পারিশ্রমিক হিসেবেও চামড়ার কোনো অংশ প্রদান করতে নিষেধ করেছেন।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৭১৭
অতএব প্রশ্নোক্ত চুক্তি সহীহ নয়। নাড়ি-ভুঁড়ি
পরিষ্কারের পারিশ্রমিক হিসেবে ভুড়ির অংশবিশেষও দেওয়া যাবে না। বিগত বছরগুলোতে এমন করে থাকলে যে পরিমাণ অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হয়েছে তার ন্যায্যমূল্য সদকা করে দিতে হবে।
আর সামনে থেকে ভুঁড়ি পরিষ্কারের পারিশ্রমিক
হিসেবে ভুড়ির অংশবিশেষ দেওয়ার শর্ত
করবে না। বরং তার শ্রমের বিনিময়ে টাকা দিয়ে
দিবে। চুক্তির সময় গোশত বা ভুড়ি দেওয়ার
শর্ত না থাকলে ন্যায্য পারিশ্রমিক দেওয়ার পর
কুরবানীর পশুর ভুড়ি বা গোশত হাদিয়া হিসেবে
দেওয়া যাবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই। -সহীহ মুসলিম ৩/৩৫০; সহীহ বুখারী (ফাতহুল
বারী) ৩/৬৫০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮; ফাতাওয়া
খানিয়া ৩/৩৫৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৪; ইলাউস সুনান
১৭/২৬৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন প্রয়োজনেঃ 01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪১০
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

এক ব্যক্তির একটি গরু আছে। সে মান্নত
করেছে যে, আমি আল্লাহর...

প্রশ্ন
এক ব্যক্তির একটি গরু আছে। সে মান্নত
করেছে যে, আমি আল্লাহর ওয়াস্তে এ
বছর গরুটি কুরবানী করব। লোকটি গরীব।
বর্তমানে সে চাচ্ছে উক্ত গরুর পরিবর্তে
আরেকটি গরু কিনে কুরবানী করবে। তার
জন্য কি ওই গরুটির পরিবর্তে অন্য গরু
কুরবানী করা জায়েয হবে?
উত্তর
তাকে ওই গরুটিই কুরবানী করতে হবে। এটা রেখে অন্য গরু কুরবানী করা জাযেয় হবে না। বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২; মাজমাউল আনহুর ৪/১৭০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393


প্রসঙ্গঃ কোরবানির পশুর নাড়ি-ভুঁড়ি বিনিময়ে পরিস্কার করা৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪০৯
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমাদের গ্রামে কুরবানীর গরুতে সাত
ভাগের এক ভাগ তিন/চার জন গরীব...

প্রশ্ন
আমাদের গ্রামে কুরবানীর গরুতে সাত
ভাগের এক ভাগ তিন/চার জন গরীব ব্যক্তি
মিলে দিয়ে থাকে। তাদের উপর কুরবানী
ওয়াজিব নয়। শুনেছি, যাদের উপর কুরবানী
ওয়াজিব নয় তারা নাকি এভাবে কুরবানীর
পশুতে শরীক হতে পারে। সঠিক মাসআলা
জানতে চাই।
উত্তর
আপনার শোনা কথাটি ঠিক নয়। এক গরুতে সাত জনের বেশি শরীক হওয়া বৈধ নয়। সাত জনের বেশি শরীক হলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না। চাই অংশিদারগণ গরীব হোক বা ধনী। তাই কুরবানীর পশুতে ঐভাবে শরীক নেওয়া যাবে না। একান্ত কখনো এমন করতে চাইলে এক ভাগের সকল অংশিদারগণ একজনকে মালিক বানিয়ে দিবে। অতপর ঐ ব্যক্তি নিজের পক্ষ থেকে ঐ অংশ কুরবানী দিবে। গোশত পাওয়ার পর অংশিদারদের মধ্যে গোশত বণ্টন করে দিতে
পারবে।
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৬;
মাজমাউল আনহুর ৪/১৬৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫;
মাবসূত সারাখসী ১২/১২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

প্রসঙ্গঃ নির্দিষ্ট গরু কোরবানির মান্নত৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪০৮
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

মুরগী জবাই করার সময় আল্লাহু আকবার বলা
এবং উত্তর-দক্ষিণ দিকে দাঁড়ানো...

প্রশ্ন
মুরগী জবাই করার সময় আল্লাহু আকবার বলা
এবং উত্তর-দক্ষিণ দিকে দাঁড়ানো জরুরি কি
না? এই শর্ত না মানলে মুরগী খাওয়া যাবে
কি?
উত্তর
পশু-পাখি যবাইয়ের সময় যবাইকারীর জন্য আল্লাহ তাআলার নাম বলা জরুরি। হাদীস শরীফে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলার কথা উল্লেখ আছে। যদি যবাইয়ের সময় ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহ তাআলার নাম না বলে তাহলে উক্ত পশু খাওয়া জায়েয হবে না।
-সূরা আনআম : ১২১; সহীহ বুখারী ২/৮২৭; ইলাউস সুনান ১৭/৫৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০১; ফাতাওয়া
হিন্দিয়া ৫/২৮৫; ফাতহুল কাদীর ৮/৪০৯ আর জবাইয়ের সময় পশুর মাথা কিবলামুখী
করে বাম কাতে শোয়ানো মুস্তাহাব, জরুরি নয়। অবশ্য
ডান কাতে শোয়ালেও জবাই সহীহ হয়ে যাবে। জবাইকারীর কিবলামুখী হওয়া সুন্নত। জবাই সহীহ হওয়ার জন্য এটিও শর্ত নয়। -শরহু মুসলিম,নববী ১৩/১২১; তাকমিলা ফাতহুল
মুলহিম ৩/৫৬৩; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১৪;বাদায়েউস
সানায়ে ৪/১৮৮; মাজমাউল আনহুর ৪/১৫৯; আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া ১৪৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393


প্রলঙ্গঃ কোরবানির পশুতে সাত ভাগের এক ভাগে কয়েকজন গরীব অংশিদার হওয়া৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪০৭
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকার সাধারণ লোকজন
মনে করে , একটা গরু বা একটা...

প্রশ্ন
আমাদের এলাকার সাধারণ লোকজন
মনে করে , একটা গরু বা একটা মহিষে
কুরবানী আকীকা ইত্যাদি সাত ভাগই
করা লাগে। সাত ভাগের কম হলে
কুরবানী সহীহ হয় না। তাই তারা কখনো
পশুতে শরীক কম হয়ে গেলে বাকি
অংশগুলো তাদের মৃত আত্মীয়-স্বজনের
নামে দিয়ে সাত ভাগ পূর্ণ করে থাকে।
এখন আমার জানার বিষয় হল , তাদের
উক্ত ধারণা কি সঠিক ? একটি পশুতে কি
সাত ভাগই পূর্ণ করা লাগে এবং মৃত
ব্যক্তির জন্য ইসালে সাওয়াবের
নিয়তে কুরবানী করা যাবে কি ? করা
জায়েয হলে এ ভাগের গোশত কি সদকা
করে দিতে হবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ধারণাটি ঠিক নয়। গরু, মহিষ এ ধরনের পশু সাত ভাগে এবং তার কম যে কোনো অংশে কুরবানী বা আকীকা ইত্যাদি করা জায়েয। তবে কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হতে হবে। এক সপ্তমাংশের কম হলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না। আর এ ধরনের পশুতে মৃত ব্যক্তির জন্যও ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে অংশ নেওয়া যাবে এবং এই অংশ সদকা করা জরুরি নয়। বরং এর হুকুম নিজের সাধারণ কুরবানীর মতই। তা থেকে নিজেরাও খেতে পারবে এবং সদকাও করতে পারবে। বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৩৭৪,৮৭৪; রদ্দুল মুহতার ৬/২৬৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫৩১, ৩১৬, ৩৩৫৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

প্রসঙ্গঃ মুরগী জবাই করার সময় বিসমিল্লাহ বলা ও উত্তর দক্ষিনে দাড়ানো৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪০৬
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমাদের বাড়ির পাশেই এক হিন্দুর
বাড়ি। খুব গরীব মানুষ তারা। কুরবানীর
সময়...

প্রশ্ন
আমাদের বাড়ির পাশেই এক হিন্দুর
বাড়ি। খুব গরীব মানুষ তারা। কুরবানীর
সময় যখন গরীবদেরকে গোশত বণ্টন করি
তখন সেও কখনো কখনো গোশত চায়। আর
না চাইলেও সে যেহেতু আমাদের
পাশেই থাকে আবার গরীব মানুষ তাই
না দিতেও খারাপ লাগে। তাই আমি
জানতে চাই ঐ হিন্দুকে কুরবানীর গোশত
দেওয়া যাবে কি না ?
উত্তর
কুরবানীর গোশত অমুসলিমদের দেওয়া জায়েয আছে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি আপনার পড়শী হিন্দুকে কুরবানীর গোশত দিতে পারবেন। ইলাউস সুনান ১৭/২৫৮; ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৩০০৷

প্রসঙ্গঃ গরু বা মহিষে সাত ভাগের কম করা৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪০৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কসাই বা গোস্ত বানানে ওয়ালাকে কুরবানির গোস্ত বিনিময় দেয়া৷

প্রশ্ন
আমাদের গ্রামে অনেক বাড়িতে এরকম
প্রচলন আছে যে, কুরবানীর সময় কসাইয়ের
সাথে তারা এভাবে চুক্তি করে, এই গরুটা
বানিয়ে দিলে এত টাকা পাবা আর এত
কেজি গোশত পাবা।
প্রশ্ন হল , এভাবে টাকা ও গোশতের বিনিময়ে
চুক্তি করা কি বৈধ ? কেউ যদি এমনটি করে
তাহলে সেক্ষেত্রে তার করণীয় কী ?
উত্তর
কুরবানীর পশুর গোশত বা অন্য কোনো অংশ পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া বৈধ নয়। সহীহ মুসলিমে আলী রা. থেকে বর্ণিত আছে , তিনি বলেন , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আদেশ করেছেন , যেন আমি তাঁর উটের দায়িত্ব গ্রহণ করি এবং তার গোশত, চামড়া ও আনুষাঙ্গিক আচ্ছাদনবস্ত্র সদকা করি এবং (তিনি আদেশ করেছেন) এসব থেকে কোনো কিছু যেন কসাইকে না দেই। তিনি বলেছেন , তাকে (কসাইকে) তো আমরা নিজেদের থেকেই পারিশ্রমিক দিব। সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩১৭ সুতরাং কেউ যদি না জেনে এভাবে গোশতের মাধ্যমে পারিশ্রমিক আদায় করে দেয় তাহলে যে পরিমাণ গোশত পারিশ্রমিক হিসাবে দিয়েছে তার মূল্য গরীবদের মাঝে সদকা করা ওয়াজিব হবে।
বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

প্রসঙ্গঃ অমুসলিমকে কুরবানির গোস্ত দেয়া৷
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪০৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানির গোস্ত দিয়ে অলিমা বা বিবাহ অনুষ্ঠানের দাওয়াত খাওয়ানো৷

প্রশ্ন
কোনো কোনো গ্রামে দেখা যায় , ঈদুল আযহার দ্বিতীয় দিন অথবা তৃতীয় দিন বিবাহ বা ওলিমা অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হয় এবং কুরবানীর গোশত দিয়েই এসব অনুষ্ঠানের দাওয়াত খাওয়ানো হয়। আমার প্রশ্ন হল , কুরবানীর গোশত দিয়ে বিবাহ বা ওলিমা অনুষ্ঠানের দাওয়াত খাওয়ানো কি জায়েয হবে এবং এ উদ্দেশ্যে কুরবানি করা কি বৈধ হবে ?
উত্তর
কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তা কেবল
আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই
হতে হবে। বিবাহ বা ওলিমার গোশত লাভের উদ্দেশ্যে কুরবানী করা সহীহ নয়। অবশ্য
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরবানী
করে সেই গোশত নিজে খেতে পারবে। অন্যকেও খাওয়াতে পারবে। তদ্রুপ সেই গোশত দিয়ে বিবাহ বা ওলিমা অনুষ্ঠানে দাওয়াতও খাওয়াতে পারবে। এতে কোনো বাধা নেই।
আলবাহরুর রায়েক ৩/৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৯৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪০৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

কুরবানির গোস্ত তিন ভাগ করা৷

প্রশ্ন
আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ মনে করে, কুরবানীর গোশত তিনভাগে বণ্টন করা জরুরি এবং এতে সামান্য ত্র æ টি করলেও কুরবানী হবে না। অথচ অনেক সময় এমন হয় , বিশেষ করে পরিবারের লোকজন বেশি হলে এবং অভাবী হলে নিজের অংশ থেকে এক ভাগ রেখে দুই ভাগ দিয়ে দিলে সে তার পরিবার-পরিজন নিয়ে তৃপ্তির সাথে খেতেই পারে না। আবার
দূরের আত্মীয়-স্বজন , বন্ধু-বান্ধবকে দাওয়াত
করে খাওয়াতে বা তাদের জন্য কিছু গোশত পাঠাতে হিমশিম খেতে হয়। তাই প্রশ্ন হল , এভাবে প্রথমেই গোশত মেপে মেপে তিনভাগ করে এক ভাগ রেখে বাকি দুই ভাগ বিলিয়ে দেওয়া কতটুকু জরুরি ? এতে কমবেশি করার
হুকুম কী ? বিস্তারিত দলিল-প্রমাণসহ জানতে চাই।
উত্তর
কুরবানী করা এবং কুরবানীর গোশত দান করা
ভিন্ন ভিন্ন দুটি আমল। আল্লাহর সন্তুষ্টির
উদ্দেশ্যে ইখলাসের সাথে পশু জবাই করার
দ্বারাই কুরবানীর ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়।
আর কুরবানীকারীর জন্য তার কুরবানীর
গোশতের ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা হল, সে
নিজ পরিবার-পরিজনকে নিয়ে খাবে এবং পাড়া-প্রতিবেশী , আত্মীয়-স্বজন , যারা কুরবানীর সামর্থ্য রাখে না তাদেরও দান
করবে। সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন , ... ( কুরবানীর গোশত) তোমরা খাও , জমা করে রাখো এবং (গরীব-অসহায়দেরও) দান করো। হাদীস : ১৯৭১ অন্য বর্ণনায় আছে, তোমরা খাবে এবং অন্যদেরও খাওয়াবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস :
১৯৭৩
তবে দানের ব্যাপারে কুরবানীকারীর উপর শরীয়ত কোনো বাধ্যবাধকতা আরোপ করেনি ; বরং প্রত্যেককে তার অবস্থা অনুপাতে
দান করতে বলা হয়েছে। অবশ্য সামর্থ্যবানদের
জন্য স্বাভাবিক অবস্থায় উত্তম হল , মোটামুটি
তিন ভাগ করে এক অংশ গরিব-মিসকিন ও অসহায়দেরকে দান করা , এক অংশ গরীব
আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া।
আর এক অংশ নিজের জন্য রাখা।
উল্লেখ্য, এ বণ্টন উত্তম জরুরি বা আবশ্যক নয়।
তেমনি একেবারে ওজন করে তিন ভাগ করাও আবশ্যক নয়। বরং কুরবানীকারীর জন্য এতে তারতম্য করার অবকাশ আছে।
আরো উল্লেখ্য যে, এটি যেহেতু একটি মুস্তাহাব
আমল তাই সামর্থ্যবানদের এর উপর আমল করা উচিত। আর কারো পরিবারের সদস্য বেশি হলে কিংবা নিজেদের প্রয়োজন বেশি থাকলে সেক্ষেত্রে তারা নিজেদের প্রয়োজন পরিমাণ গোশত রাখতে পারবে , এটা তাদের জন্য অনুত্তম
হবে না।
ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৩৭; বযলুল মাজহূদ ১৩/৪৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৮৬; ইলাউস সুনান ১৭/২৬২৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪১৪৪
তারিখ: ১-জুন-২০১৬
বিষয়: কুরবানী

আমার এক ভাই সৌদী আরব থাকে। গত কুরবানীর সময় সে...

প্রশ্ন
আমার এক ভাই সৌদী আরব থাকে। গত কুরবানীর সময় সে তার পক্ষ থেকে কুরবানী
করার জন্য ৫০ হাজার টাকা পাঠায়। আমরা আমাদের কুরবানী প্রথম দিনেই করে ফেলি।
কিন্তু তার কুরবানীটা করেছি তৃতীয় দিনে। প্রশ্ন হল, আমাদের তৃতীয় দিনে তো
সৌদী আরবে কুরবানীর সময় ছিল না। এ অবস্থায় আমার ভাইয়ের কুরবানী আদায়
হয়েছে কি?
উত্তর
যেখানে কুরবানী দেওয়া হয় মূলত ঐ স্থানের সময়ই ধর্তব্য হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে
বাংলাদেশে যেহেতু কুরবানীর সময়েই হয়েছে তাই ঐ কুরবানী সহীহ হয়েছে। অবশ্য
যার পক্ষ থেকে কুরবানী করা হচ্ছে তার ওখানেও কুরবানীর সময় থাকে- এটা লক্ষ রেখে
কুরবানী করা ভালো।
ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৬; ফাতাওয়া শরইয়্যাহ ১১/১৫৯
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৭৮
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

গত কুরবানীর ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকেট কিনেছিলাম। পরে...

প্রশ্ন
গত কুরবানীর ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকেট কিনেছিলাম।
পরে ঐ সময় আর বাড়িতে যাওয়া হচ্ছে না বিধায় ঐ টিকেট আরেক ব্যক্তিকে পঞ্চাশ টাকা বেশিতে
বিক্রি করেছি। হুজুরের নিকট জানতে চাই, আমার জন্য ঐ টিকেট অধিক
মূল্যে বিক্রি করা জায়েয হয়েছে কি?
উত্তর
টিকেট বিক্রি করে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়া জায়েয হয়নি। তাই অতিরিক্ত
পঞ্চাশ টাকা ঐ ব্যক্তিকে ফেরত দিবে। যদি তাকে পাওয়া সম্ভব না হয় তবে তা সদকা করে দিতে হবে।
-কিতাবুল আছল ৩/৪৬৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৬৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১১৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২৬৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/৫০

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৫৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

স্বামীর নিকট স্ত্রী মোহরের কিছু টাকা পাবে। কিছু টাকা নগদ...

প্রশ্ন
স্বামীর নিকট স্ত্রী মোহরের কিছু টাকা পাবে। কিছু টাকা নগদ আদায় করেছে। যে টাকা বাকী আছে তার পরিমাণ কুরবানীর নেসাবের চেয়ে অধিক। স্বামী এ টাকা এ বছর কুরবানীর আগে দিতে পারছে না। বরং সামনের বছর আদায় করবে বলে সম্ভাবনা রয়েছে। এখন এ মহিলার উপর কি ঐ পাওনা টাকার কারণে এ বছর কুরবানী ওয়াজিব হবে? প্রকাশ থাকে যে, স্ত্রীর কাছে এছাড়া কোনো নগদ টাকা বা স্বর্ণ বা অন্য কোনো সম্পদ নেই।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মহিলার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। কেননা তার কাছে কোনো সম্পদই নেই। আর সে যে মহর পাবে সে কারণেও তার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। কারণ, মহরের টাকা হস্তগত হওয়ার আগে তাতে স্ত্রীর পূর্ণ মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। সুতরাং ভবিষ্যতে মোহর পাবে এ কারণে স্ত্রীর উপর এখন কুরবানী ওয়াজিব হবে না
-রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯২
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৫৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমাদের একটি গরু আছে। সেটির অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে...

প্রশ্ন
আমাদের একটি গরু আছে। সেটির অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে দুতিনটি দাঁত ছাড়া এর প্রায় সবকটি দাঁতই পড়ে গেছে। তবে যে পরিমাণ দাঁত অবশিষ্ট আছে তা দ্বারা ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে। এবছর এ গরুটিকে কুরবানী করতে চাচ্ছি। প্রশ্ন হল, এর দ্বারা কুরবানী করা কি সহীহ হবে?
উত্তর
এ অবস্থায়ও গরুটি যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে। -শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫; ফাতওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৩
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৫৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমার পিতা একজন মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। তার কুরবানী করার সামার্থ্য...

প্রশ্ন
আমার পিতা একজন মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। তার কুরবানী করার সামার্থ্য ছিলো। গত
ঈদে তিনি কুরবানীর জন্য
একটি গরুও কিনেছিলেন। কিন্তু সেটি কুরবানী করার সুযোগ তার আর হয়নি। ঈদের নামায পড়ে আসার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় ইন্তেকাল হয়। তার মৃত্যুতে পরিবারের সকলে শোকাহত ছিল। তাই কুরবানীর তিনদিনের ভেতর গরুটি আর কুরবানী করা হয়নি। এখন আমরা ঐ গরুটি কী করব?
সেটি কি সদকা করে দিতে হবে? অথবা আগামী কুরবানীর ঈদে যবেহ করার জন্য রেখে দিতে হবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতা যেহেতু কুরবানীর সময় (১২ যিলহজ্ব) শেষ হওয়ার আগেই ইন্তেকাল করেছেন,
তাই এ বছরের কুরবানী তার উপর ওয়াজিব থাকেনি। সুতরাং তার ক্রয়কৃত ঐ পশুটিরও কুরবানী করা বা সদকা করা
লাগবে না। বরং এই পশু এখন তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তি হিসাবে ধর্তব্য হবে। ওয়ারিশরা চাইলে সেটা বিক্রি করে দিয়ে এর মূল্য সকলের অংশ অনুযায়ী ভাগ
করে নিতে পারেন। আবার
চাইলে যবেহ করে এর গোশতও বণ্টন করে নিতে পারেন আর যদি সকল ওয়ারিশ বালেগ হয় এবং তারা একমত হয়
তাহলে তারা গরুটি বা এর মূল্য সদকাও করে দিতে পারবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; আদ দুররুল মুখতার
৬/৩১৯;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৫২
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর কুরবানীর পর আমাদের বাসায় প্রচুর পরিমাণে চর্বি জমা...

প্রশ্ন
প্রতি বছর কুরবানীর পর আমাদের বাসায় প্রচুর পরিমাণে চর্বি জমা হয়। এসকল চর্বি উত্তমরূপে না নিজে ব্যবহার করা যায় না অন্যকে দেওয়া যায়। আমার প্রতিবেশী মহিলারা চর্বি কিনতে আসা ব্যক্তিদের নিকট তা বিক্রি করে দেন। কিন্তু আমার স্বামী একথা বলে আমাকে চর্বি বিক্রি থেকে বিরত রেখেছেন যে, ‘কুরবানীর পশুর চর্বি বিক্রি করা নাজায়েয।’
আমি জানতে চাচ্ছি যে, তার উক্ত কথা কি ঠিক? আর যেহেতু সুষ্ঠুভাবে চর্বিগুলোকে ব্যবহার না করার কারণে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় তাই তা বিক্রি করে গরীবদেরকে এর অর্থ দেওয়ার সুযোগ আছে কি না?
উত্তর
আপনার স্বামী ঠিকই বলেছেন। কুরবানীর গোশত, চর্বি,
হাড্ডি ইত্যাদি বিক্রি করা নাজায়েয। এ ব্যাপারে একাধিক হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। তাই নিজে ব্যবহার
করতে না পারলে গরীব-
মিসকীনকে দিয়ে দিবে। অবশ্য কাউকে দেওয়ার সুযোগ না থাকার
কারণে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা হলে বিক্রি করা যাবে। অতপর প্রাপ্ত অর্থ সদকা করে দিতে হবে। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৬২১১; মাজমাউয যাওয়াইদ, ৪/২৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫, শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৩৯, আলখানিয়া ৩/৩৫৪ খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৪৯
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

জনাব, আমি কুরবানির সময় সফরে ছিলাম। সে সময় আমার নির্দেশেই...

প্রশ্ন
জনাব, আমি কুরবানির সময় সফরে ছিলাম। সে সময় আমার নির্দেশেই বাড়িতে কুরবানি করা হয়। ঈদের দ্বিতীয় দিনে আমি সফর থেকে ফিরে আসি। স্থানীয় এক আলেমের কাছে শুনলাম, সফর অবস্থায় কুরবানি ওয়াজিব নয়, কিন্তু কুরবানির সময়ের ভিতরে মুকীম হলে (আর্থিক সঙ্গতি থাকলে) কুরবানি ওয়াজিব হয়। জানতে চাই, সফরে থাকা অবস্থায় যে কুরবানী দেওয়া হয়েছে তা ধারা আমার ওয়াজিব কুরবানি আদায় হয়েছে কি না?
উত্তর
হাঁ, সফরে থাকা অবস্থায় যে কুরবানি করা হয়েছে তা দ্বারা আপনার ওয়াজিব কুরবানি আদায় হয়ে গেছে। তাই পুনরায় কুরবানি করা জরুরি নয়। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১২, ৩১৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৮১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯২
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৪৭
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

জনাব,আমি কুরবানির সময় আমার মরহুম বাবার নামেও কুরবানি দিয়ে থাকি।...

প্রশ্ন
জনাব,আমি কুরবানির সময় আমার মরহুম বাবার নামেও কুরবানি দিয়ে থাকি। প্রশ্ন হচ্ছে, এ কুরবানির গোশত কি সদকা করে দিতে হবে?
উত্তর
না, সদকা করা জরুরি নয়। মৃত ব্যক্তির ছওয়াবের উদ্দেশ্যে যে নফল কুরবানি করা হয় তার গোশত সাধারণ কুরবানির মতোই। নিজেরাও খেতে পারবেন এবং অন্যকেও দিতে পারবেন। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫২; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৩; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৪৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমাদের একটি গরু আছে। সেটির অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে...

প্রশ্ন
আমাদের একটি গরু আছে। সেটির
অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে দুতিনটি দাঁত ছাড়া এর প্রায় সবকটি দাঁতই পড়ে গেছে। তবে যে পরিমাণ দাঁত অবশিষ্ট আছে তা দ্বারা ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে। এবছর এ গরুটিকে কুরবানী করতে চাচ্ছি। প্রশ্ন হল, এর দ্বারা কুরবানী করা কি সহীহ হবে?
উত্তর
এ অবস্থায়ও গরুটি যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে। -শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫; ফাতওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৩
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৩৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমাদের বাড়ির পাশেই এক হিন্দুর বাড়ি। খুব গরীব মানুষ তারা।...

প্রশ্ন
আমাদের বাড়ির পাশেই এক হিন্দুর বাড়ি। খুব গরীব মানুষ তারা। কুরবানীর সময় যখন গরীবদেরকে গোশত বণ্টন করি তখন সেও কখনো কখনো গোশত চায়। আর না চাইলেও সে
যেহেতু আমাদের পাশেই
থাকে আবার গরীব মানুষ তাই না দিতেও খারাপ লাগে। তাই আমি জানতে চাই ঐ হিন্দুকে কুরবানীর গোশত দেওয়া যাবে কি না?
উত্তর
কুরবানীর গোশত অমুসলিমদের দেওয়া জায়েয আছে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি আপনার পড়শী হিন্দুকে কুরবানীর গোশত দিতে পারবেন। ইলাউস সুনান ১৭/২৫৮; ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৩০০
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৩৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

কোনো কোনো গ্রামে দেখা যায়, ঈদুল আযহার দ্বিতীয় দিন অথবা...

প্রশ্ন
কোনো কোনো গ্রামে দেখা যায়, ঈদুল আযহার দ্বিতীয় দিন অথবা তৃতীয় দিন বিবাহ বা ওলিমা অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করা হয় এবং কুরবানীর গোশত দিয়েই এসব অনুষ্ঠানের দাওয়াত খাওয়ানো হয়। আমার প্রশ্ন হল, কুরবানীর গোশত দিয়ে বিবাহ বা ওলিমা অনুষ্ঠানের দাওয়াত খাওয়ানো কি জায়েয হবে এবং এ উদ্দেশ্যে কুরবানি করা কি বৈধ হবে?
উত্তর
কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তা কেবল আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই হতে হবে। বিবাহ বা ওলিমার গোশত লাভের উদ্দেশ্যে কুরবানী করা সহীহ নয়। অবশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরবানী করে সেই গোশত নিজে খেতে পারবে। অন্যকেও খাওয়াতে পারবে। তদ্রƒপ সেই গোশত দিয়ে বিবাহ বা ওলিমা অনুষ্ঠানে দাওয়াতও খাওয়াতে পারবে। এতে কোনো বাধা
নেই।
আলবাহরুর রায়েক ৩/৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৯
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩০৫৬
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশু কেনার সময় এর সাথে অনেক সময় মোবাইল সেট,...

প্রশ্ন
কুরবানীর পশু কেনার সময় এর সাথে অনেক সময় মোবাইল সেট, কখনো ফ্রিজ ফ্রি দেয়। আমার জানার বিষয় হল, উক্ত মোবাইল বা ফ্রিজ কি ব্যবহার করা যাবে, নাকি সদকা করে দিতে হবে? দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ
হব।
উত্তর
কুরবানীর পশুর সাথে মোবাইল, ফ্রিজ বা অন্য কিছু ফ্রি দিলে তা নিজে ব্যবহার করতে পারবে। তা সদকা করে দেওয়া জরুরি নয়। কারণ এটা কুরবানীর পশুর সাথে পেলেও তা কুরবানীর অংশ বা সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় নয়; বরং তা পৃথক ক্রয়কৃত পণ্যের
মতোই।
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩০৫৫
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমার ছেলের বয়স ৫ বছর। এখন তার আকীকা করতে চাচ্ছি।...

প্রশ্ন
আমার ছেলের বয়স ৫ বছর। এখন তার আকীকা করতে চাচ্ছি। আকীকার হুকুম কী? অর্থাৎ কী দিয়ে আকীকা করতে হবে এবং এর বণ্টন বিধি কী? আকীকার গোশত কে কে খেতে পারবে? বাবা-মাও কি সে গোশত খেতে পারবে? আর আকীকা কি কুরবানীর সাথে দেওয়া যাবে? যদি যায় তাহলে কীভাবে ? দয়া করে বিস্তারিত জানিয়ে উপকৃত
করবেন।
উত্তর
আকীকা করা মুস্তাহাব। পুত্রসন্তানের জন্য দুটি ছাগল আর কন্যার জন্য একটি ছাগল। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম ছেলের পক্ষ থেকে দুটি ছাগল আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি ছাগল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৫১৩ আর কুরবানীর পশুতে আকীকার নিয়তে
শরিক হওয়াও জায়েয। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য
রাখতে হবে যেন আকীকা ও কুরবানীর কোনো অংশ পশুর এক সপ্তমাংশের কম না
হয়।
আকীকার গোশত সন্তানের মা-বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন এবং ধনী-গরীব সকলেই খেতে পারবে। আকীকার গোশতের বণ্টন ও ব্যবহার কুরবানীর মতোই। কিছু গোশত নিজেদের জন্য রাখা, কিছু আত্মীয়-স্বজনকে দেওয়া এবং কিছু গোশত গরীবদেরকে সদকা করা উত্তম। -আততালীকুল মুমাজজাদ ২৮৯, ২৯০; ইলাউস সুনান ১৭/১১৮; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৩৯৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৪;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩০৫১
তারিখ: ১-জুলাই-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমার বাড়ি কক্সবাজার। আমি চট্টগ্রামে লেখাপড়া করি। মাদরাসায় আসা-যাওয়ার সময়...

প্রশ্ন
আমার বাড়ি কক্সবাজার। আমি চট্টগ্রামে লেখাপড়া করি। মাদরাসায় আসা-যাওয়ার সময় গাড়িগুলোতে সাধারণত গান ছেড়ে দেওয়া হয়। তাই আমি গাড়িতে গান ছেড়ে দেওয়া হলে গান যেন শুনতে না হয় সেজন্য কুরআন তিলাওয়াত করতে থাকি। গত কুরবানীর বন্ধের পর মাদরাসায় আসার সময়ও গাড়িতে গান ছেড়ে দেওয়া হলে আমি তিলাওয়াত শুরু করি। আমার সাথে আমার এক সাথী ছিল। সে আমাকে বলে যে, গান চলাকালীন কুরআন তিলাওয়াত করলে আবার কুরআনের বেহুরমতি হবে না তো? তার এ কথা শুনে আমার দিলেও এ ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ জাগে। দয়া করে উক্ত অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত বা যিকির করার হুকুম জানিয়ে বাধিত
করবেন।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত পরিস্থিতিতে গান শোনা থেকে বিরত থাকার উদ্দেশ্যে কুরআন তিলাওয়াত করা বা যিকির আযকার করা জায়েয হবে। এতে কুরআন শরীফ বা যিকিরের অসম্মান হবে না; বরং এ অবস্থায় তিলাওয়াত ও যিকিরে ব্যস্ত থাকা আরো প্রশংসনীয় ও অধিক সওয়াবের কাজ হবে। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩১৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৭/৫০৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৫০
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

গত বছর আমি হজ্ব করতে গিয়েছিলাম। তখন কুরবানীর জন্য টাকা...

প্রশ্ন
গত বছর আমি হজ্ব করতে গিয়েছিলাম। তখন
কুরবানীর জন্য টাকা ব্যাংকে দিয়ে দিই। পরে আমার
এক সাথীকে বলতে শুনেছি, ব্যাংকের মাধ্যমে
কুরবানী করলে নাকি কুরবানী সহীহ হয় না। কারণ
ব্যাংককে কুরবানী করার জন্য যতজন হাজ্বী টাকা
দেয় ততটা কুরবানী তো করা হয় তবে পশু কোনটা
কার জন্য তা নির্দিষ্ট করা হয় না। আর নির্দিষ্ট
না করার কারণে তাদের কুরবানী সহীহ হয় না। তাই
ব্যাংকের মাধ্যমে কুরবানী করা যাবে না।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত বক্তব্য সঠিক নয়। কুরবানী সহীহ
হওয়ার জন্য প্রত্যেকের পশু নির্দিষ্ট করা জরুরি
নয়। বরং যতজন হাজ্বী টাকা জমা করবে ততটা পশু
যবাই করলেই প্রত্যেকের কুরবানী আদায় হয়ে
যাবে। সুতরাং হাজ্বীদের জন্য সৌদি সরকারের
ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ব্যাংকের মাধ্যমে
কুরবানী করা জায়েয। অবশ্য যারা ব্যাংকের
মাধ্যমে দমে শোকর আদায় করবে তারা নির্দিষ্ট
সময় থেকে বিলম্ব করে হলক করবে যেন হলক কুরবানীর পর হয়। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৫৫; আলমুহীতুল বুরহানী
৮/৪৮০
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮২৬
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমাদের মহল্লা মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ...

প্রশ্ন
আমাদের মহল্লা মসজিদের নির্মাণ কাজ চলছে।
নির্মাণ কাজে অনেক অর্থ প্রয়োজন। তাই মসজিদ
কমিটি এ মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, আমরা এ
বারের কুরবানীতে এলাকার মানুষকে অনুরোধ করব,
সকলেই যেন তাদের কুরবানীর পশুর চামড়ার পুরো
না হলেও অন্তত অর্ধেক মূল্য যেন মসজিদের নির্মাণ কাজের জন্য দান করেন। আমার জানার বিষয় হল, মসজিদ কমিটির উক্ত
সিদ্ধান্ত কি সঠিক হয়েছে? চামড়ার মূল্য কি
মসজিদ নির্মাণ কাজে লাগানো যাবে? শরীয়তের নির্দেশনা জানাতে অনুরোধ রইল।
উত্তর
মসজিদ কমিটির উক্ত সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি।
কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য মসজিদে দান করা
জায়েয নয়। এ টাকা মসজিদ নির্মাণের জন্য ব্যয়
করা কিংবা মসজিদের অন্য কোনো কাজে লাগানো
নাজায়েয। কেননা কুরবানীর পশুর চামড়ার টাকা
গরীব-মিসকীনের হক। তা যাকাত গ্রহণের উপযুক্তদেরকেই দিতে হবে। আর মসজিদ মুসলমানদের স্বতঃস্ফ‚র্ত নফল দান দ্বারাই নির্মাণ করতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৮; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৫৭
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮২৫
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর সময় আমরা কুরবানীর পশু কিনতে হাটে যাই। প্রত্যেক পশু...

প্রশ্ন
কুরবানীর সময় আমরা কুরবানীর পশু কিনতে হাটে যাই। প্রত্যেক পশু কেনার পর হাসিল দিতে হয়। এখন জানার বিষয় হল, হাসিল কুরবানীর পশুর হক, নাকি হাটের ট্যাক্স? কেউ যদি হাসিলের টাকা না দিয়ে চলে আসে তাহলে তার কুরবানীতে কোনো
সমস্যা হবে কি না?
উত্তর
হাসিল হাটের ভাড়া। এটি হাট কর্তৃপক্ষের হক। যা
হাটের সুবিধা গ্রহণের বিনিময়ে নেওয়া হয়। তাই এ টাকা পরিশোধ করা জরুরি। হাসিল না দিলে হাট কর্তৃপক্ষের হক নষ্ট করার গুনাহ হবে। তাই কেউ হাসিল না দিয়ে থাকলে হাট কর্তৃপক্ষের নিকট তা পৌঁছে দিতে হবে। অবশ্য হাসিল না দেওয়ার কারণে কুরবানী নাজায়েয হয়ে যাবে না।
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৪২
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমি কুমিল্লায় থাকি। গত বছর কুরবানীর জন্য একটি খাসী ক্রয়...

প্রশ্ন
আমি কুমিল্লায় থাকি। গত বছর কুরবানীর জন্য একটি খাসী ক্রয় করি। ঈদের দিন বাড়িতে যাওয়ার প্রোগ্রাম থাকায় ফজরের পরপরই তা যবাই করে ফেলি তখনো কোথাও ঈদের নামায হয়নি। সপ্তাহখানেক পর জনৈক ব্যক্তি আমাকে বললেন আমার কুরবানী সহীহ হয়নি। প্রশ্ন হল, আমার উক্ত কুরবানী সহীহ হয়েছে কি না? যদি না হয় তাহলে এখন আমার করণীয় কী? দয়া করে বিস্তারিত দলিলপ্রমাণসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
ঐ ব্যক্তি ঠিকই বলেছে। আপনার উক্ত কুরবানী আদায় হয়নি। কেননা এলাকার কোথাও ঈদের নামায হওয়ার আগে কুরবানী করলে তা আদায় হয় না। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঈদের নামাযের আগে কুরবানীর পশু যবাই করবে সেটা তার নিজের জন্য হব ে (কুরবানী হবে না।) আর যে ব্যক্তি ঈদের নামাযের পর কুরবানী করবে তার কুরবানী আদায় হবে এবং সে মুসলমানদের পথ অনুসরণ করেছে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস :
৫০৩১
হযরত বারা’ রা. থেকে বর্ণিত অন্য হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈদের দিন আমরা প্রথমে ঈদের নামায আদায় করি তারপর এসে কুরবানী করি। যে ব্যক্তি এভাবে আদায় করবে সে আমাদের তরীকা মোতাবেক করল। আর যে নামাযের আগেই পশু যবাই করল সেটা তার পরিবারের গোশতের প্রয়োজন পূরণ করবে। এটা নুসুক (কুরবানী) হবে না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫০৩৫ সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কুরবানী যেহেতু আদায় হয়নি তাই এখন করণীয় হল, কুরবানীর যোগ্য একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে,
রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ করেছেন, যে নামাযের আগে পশু যবাই করেছে সে যেন (নামাযের পর) অন্য আরেকটি পশু যবাই করে। -সহীহ বুখারী ২/৮৩৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৪১
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমার এক ভাই কুরবানীর ঈদের পরপরই ওলিমার তারিখ নির্ধারণ করে।...

প্রশ্ন
আমার এক ভাই কুরবানীর ঈদের পরপরই ওলিমার তারিখ নির্ধারণ করে। এরপর কুরবানীর গোশত দিয়ে ওলিমার দাওয়াতে খানা খাওয়ায়। জানতে চাই, এভ াবে কুরবানীর গোশত দিয়ে ওলিমার দাওয়াত খাওয়ালে কুরবানী আদায় হবে কি?
উত্তর
একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কুরবানী করার পর তা নিজে খাওয়া বা অন্যকে খাওয়ানো উভয়টিই জায়েয। তাই খালেস নিয়তে কুরবানী করার পর সে গোশত দ্বারা ওলিমার মেহমানদারি করলেও কুরবানীর কোনো সমস্যা হবে না। তবে যদি কুরবানী দ্বারা ওলিমার গোশত লাভ করাই উদ্দেশ্য হয় তাহলে তা দ্বারা কুরবানী আদায় হবে না। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৯; ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮, ২২৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৩৮
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

খালেদ এবং তার ছোট চার ভাই মোট পাঁচ জন মিলে...

প্রশ্ন
খালেদ এবং তার ছোট চার ভাই মোট পাঁচ জন মিলে প্রতিবছরই একটি গরু কুরবানী করে থাকে। খালেদ বলছে, কুরবানীর পশুর অর্ধেক মূল্য সে একাই দেয়। আর বাকি অর্ধেক মূল্য বাকি চারজন মিলে পরিশোধ করে। যার ফলে বাকি চারজনকে পূর্ণ এক সপ্তমাংশের কম মূল্য আদায় করতে হয়। খালেদ টাকা বেশি দিলেও গোশত বেশি দাবি করে না। সকলের মাঝে সমান বণ্টনই হয়। বরং এক ভাইয়ের পরিবারের সদস্য বেশি বিধায় তাকে সবচেয়ে বেশি গোশত দেওয়া হয়। এখন জানতে চাই এভাবে কুরবানী করা কি সহীহ হবে?
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে,
যিনি টাকা বেশি দেন তিনি অন্য ভাইদের অংশের অবশিষ্ট টাকা নিজ থেকে পরিশোধ করে দেন তাই এমনটি হলে তাদের সকলের কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রে যদি প্রত্যেকের টাকা অনুযায়ী অংশ বণ্টন করা এবং সে অনুপাতে গোশত নেওয়া উদ্দেশ্য হয় তাহলে কারো কুরবানীই সহীহ হবে না। কারণ এক্ষেত্রে চারজনের প্রত্যেকের অংশ পশুর এক সপ্তমাংশের কম হয়ে যায়। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫২২
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: কুরবানী

আমি ২১ দিনের মধ্যেই আমার ছেলেসন্তানের আকীকা করতে মনস্থ করেছি।...

প্রশ্ন
আমি ২১ দিনের মধ্যেই আমার ছেলেসন্তানের আকীকা করতে মনস্থ করেছি। কিন্তু আমার কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় কোনো অনুষ্ঠান করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে আকীকার নিয়তে আমি কোনো এতিমখানায় দুটি ছাগল দিতে চাই। আমার পিতামাতা ও শ্বশুর- শাশুড়িও এতে একমত হয়েছেন। তাই জানার বিষয় হল, এভাবে ছাগল দিলে কি আকীকা আদায় হবে? দয়া করে বিস্তারিত দলিল- প্রমাণের আলোকে জানাবেন।
উত্তর
আকীকার পশু কোনো প্রতিষ্ঠানে দিলে এবং আকীকার জন্য
তা যবাই
করা হলে আকীকা আদায় হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, আকীকার জন্য অনুষ্ঠান করা জরুরি নয়; বরং আকীকার উদ্দেশ্যে পশু যবাই করলেই তা আদায় হয়ে যায়। আর আকীকার গোশতের ব্যবহার ও বণ্টনের নিয়ম কুরবানীর গোশতের মতোই।
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৪৪
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

গত বছর আল্লাহর রহমতে পবিত্র হজ্ব আদায় করেছি। যিলহজ্বের ১০...

প্রশ্ন
গত বছর আল্লাহর রহমতে পবিত্র হজ্ব আদায় করেছি। যিলহজ্বের ১০ তারিখ আমরা কংকর নিক্ষেপ ও কুরবানী করার পর
কাফেলার এক হাজ্বী ভাইয়ের মাথা মুণ্ডিয়ে
দিই। তারপর তিনি আমার মাথা মুণ্ডিয়ে দেন। জানার বিষয় হল, ইহরাম অবস্থায় মাথা মুণ্ডানোর কারণে আমার উপর কি দম বা সদকা ওয়াজিব হয়েছিল?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অন্যের মাথা মুণ্ডিয়ে
দেওয়া অন্যায় হয়নি এবং আপনার উপর এ কারণে কোনো কিছু ওয়াজিবও হয়নি। হলকের পূর্বের সকল কার্যাদী সম্পন্ন করার পর
অন্যের মাথার চুল মুণ্ডিয়ে দেওয়া জায়েয।
তাবেয়ী হযরত ইবনে জুরাইজ রাহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হযরত আতা রাহ.- কে জিজ্ঞাসা করলাম, এক ব্যক্তি কংকর নি ক্ষেপ করেছে কিন্তু হলক করেনি সে কি অন্যকে হলক করে দিতে পারবে? তিনি জবাবে বললেন, হ্যাঁ পারবে। - মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, আসার নং ১৬১৩৯; মানসিক পৃ. ২৩০; যুবদাতুল মানাসিক ৩৭; গুনইয়াতুন নাসিক ১৭৪

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৩৫
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

প্রতি বছর কুরবানীর পর আমাদের বাসায় প্রচুর পরিমাণে চর্বি জমা...

প্রশ্ন
প্রতি বছর কুরবানীর পর আমাদের বাসায় প্রচুর পরিমাণে চর্বি জমা হয়। এসকল চর্বি উত্তমরূপে না নিজে ব্যবহার করা যায় না অন্যকে দেওয়া যায়।
আমার
প্রতিবেশী মহিলারা চর্বি কিনতে আসা ব্যক্তিদের নিকট তা বিক্রি করে দেন। কিন্তু আমার স্বামী একথা বলে আমাকে চর্বি বিক্রি থেকে বিরত রেখেছেন যে, ‘কুরবানীর পশুর চর্বি বিক্রি করা নাজায়েয।’ আমি জানতে চাচ্ছি যে, তার উক্ত কথা কি ঠিক? আর যেহেতু সুষ্ঠুভাবে চর্বিগুলোকে ব্যবহার না করার কারণে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় তাই তা বিক্রি করে গরীবদেরকে এর অর্থ দেওয়ার সুযোগ আছে কি না?
উত্তর
আপনার স্বামী ঠিকই বলেছেন। কুরবানীর গোশত, চর্বি, হাড্ডি ইত্যাদি বিক্রি করা নাজায়েয। এ ব্যাপারে একাধিক হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। তাই নিজে ব্যবহার করতে না পারলে গরীব- মিসকীনকে দিয়ে দিবে। অবশ্য কাউকে দেওয়ার সুযোগ না থাকার কারণে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা হলে বিক্রি করা যাবে। অতপর প্রাপ্ত অর্থ সদকা করে দিতে হবে। -মুসনাদে আহমদ, হাদীস ১৬২১১; মাজমাউয যাওয়াইদ, ৪/২৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫, শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৩৯, আলখানিয়া ৩/৩৫৪ খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২২
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৩৪
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমার পিতা একজন মাদরাসার শি ক্ষক ছিলেন। তার কুরবানী করার...

প্রশ্ন
আমার পিতা একজন মাদরাসার শি ক্ষক ছিলেন। তার কুরবানী করার সামার্থ্য ছিলো। গত ঈদে তিনি কুরবানীর জন্য একটি গরুও কিনেছিলেন। কিন্তু সেটি কুরবানী করার সুযোগ তার আর হয়নি। ঈদের নামায পড়ে আসার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় ইন্তেকাল হয়। তার মৃত্যুতে পরিবারের সকলে শোকাহত ছিল। তাই কুরবানীর তিনদিনের ভেতর গরুটি আর কুরবানী করা হয়নি। এখন আমরা ঐ গরুটি কী করব? সেটি কি সদকা করে দিতে হবে? অথবা আগামী কুরবানীর ঈদে যবেহ করার জন্য রেখে দিতে হবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতা যেহেতু কুরবানীর সময় (১২ যিলহজ্ব) শেষ হওয়ার আগেই ইন্তেকাল করেছেন, তাই এ বছরের কুরবানী তার উপর ওয়াজিব থাকেনি। সুতরাং তার ক্রয়কৃত ঐ পশুটিরও কুরবানী করা বা সদকা করা লাগবে না। বরং এই পশু এখন তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তি হিসাবে ধর্তব্য হবে। ওয়ারিশরা চাইলে সেটা বিক্রি করে দিয়ে এর মূল্য সকলের অংশ অনুযায়ী ভাগ করে নিতে পারেন। আবার চাইলে যবেহ করে এর গোশতও বণ্টন করে নিতে পারেন আর যদি সকল ওয়ারিশ বালেগ হয় এবং তারা একমত হয় তাহলে তারা গরুটি বা এর মূল্য সদকাও করে দিতে পারবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; আদ দুররুল মুখতার
৬/৩১৯;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৩৩
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমাদের একটি গরু আছে। সেটির অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে...

প্রশ্ন
আমাদের একটি গরু আছে। সেটির অনেক বয়স হয়েছে। যার ফলে দুতিনটি দাঁত ছাড়া এর প্রায় সবকটি দাঁতই পড়ে গেছে। তবে যে পরিমাণ দাঁত অবশিষ্ট আছে তা দ্বারা ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে। এবছর এ গরুটিকে কুরবানী করতে চাচ্ছি। প্রশ্ন হল, এর দ্বারা কুরবানী করা কি সহীহ
হবে?
উত্তর
এ অবস্থায়ও গরুটি যদি ঘাস চিবিয়ে খেতে পারে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে। -শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫; ফাতওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯৩
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৩২
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

স্বামীর নিকট স্ত্রী মোহরের কিছু টাকা পাবে। কিছু টাকা নগদ...

প্রশ্ন
স্বামীর নিকট স্ত্রী মোহরের কিছু টাকা পাবে। কিছু টাকা নগদ আদায় করেছে। যে টাকা বাকী আছে তার পরিমাণ কুরবানীর নেসাবের চেয়ে অধিক। স্বামী এ টাকা এ বছর কুরবানীর আগে দিতে পারছে না। বরং সামনের বছর আদায় করবে বলে সম্ভাবনা রয়েছে। এখন এ মহিলার উপর কি ঐ পাওনা টাকার কারণে এ বছর কুরবানী ওয়াজিব হবে? প্রকাশ থাকে যে, স্ত্রীর কাছে এছাড়া কোনো নগদ টাকা বা স্বর্ণ বা অন্য কোনো সম্পদ
নেই।
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মহিলার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। কেননা তার কাছে কোনো সম্পদই নেই। আর সে যে মহর পাবে সে কারণেও তার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। কারণ, মহরের টাকা হস্তগত হওয়ার আগে তাতে স্ত্রীর পূর্ণ মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। সুতরাং ভবিষ্যতে মোহর পাবে এ কারণে স্ত্রীর উপর এখন কুরবানী ওয়াজিব হবে না -রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯২
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩১১
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি...

প্রশ্ন
আমি কুরবানীর পশু খরিদ করার জন্য হাটে যাই। অসতর্কতাবশত একটি গরুর পায়ের নিচে পা পড়ে আমার পায়ের অগ্রভাগ মারাত্মক যখম হয়। ডাক্তার ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছেন। তিনি ব্যান্ডেজ
খোলা ও
সেখানে পানি লাগাতে নিষেধ করেছেন। এ অবস্থায় আমি কীভাবে অযু করব?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সুস্থ হওয়া পর্যন্ত অযু-গোসলের জন্য এ ব্যান্ডেজের উপর মাসেহ করবেন এবং পায়ের অবশিষ্ট সুস্থ
অংশটুকু সম্ভব হলে অন্যান্য অঙ্গের ন্যায়
ধুয়ে নিবেন। আর যদি তা ধুতে গেলে ব্যান্ডেজ ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে তার উপরও মাসেহ করবেন। -সুনানে বায়হাকী ১/২২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯০; শরহুল মুনইয়া ১১৬-১১৭; আলবাহরুর রায়েক
১/১৮৭
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩০৭
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

খালেদ এবং তার ছোট চার ভাই মোট পাঁচ জন মিলে...

প্রশ্ন
খালেদ এবং তার ছোট চার ভাই মোট পাঁচ জন মিলে প্রতিবছরই একটি গরু কুরবানী করে থাকে। খালেদ বলছে, কুরবানীর পশুর অর্ধেক মূল্য সে একাই দেয়। আর বাকি অর্ধেক মূল্য বাকি চারজন মিলে পরিশোধ করে। যার ফলে বাকি চারজনকে পূর্ণ এক সপ্তমাংশের কম মূল্য আদায় করতে হয়। খালেদ টাকা বেশি দিলেও গোশত বেশি দাবি করে না। সকলের মাঝে সমান বণ্টনই হয়। বরং এক ভাইয়ের পরিবারের সদস্য বেশি বিধায় তাকে সবচেয়ে বেশি গোশত দেওয়া হয়। এখন জানতে চাই এভাবে কুরবানী করা কি সহীহ
হবে?
উত্তর
প্রশ্নের বর্ণনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, যিনি টাকা বেশি দেন তিনি অন্য ভাইদের অংশের অবশিষ্ট টাকা নিজ থেকে পরিশোধ করে দেন তাই এমনটি হলে তাদের সকলের কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। তবে এক্ষেত্রে যদি প্রত্যেকের টাকা অনুযায়ী অংশ বণ্টন করা এবং সে অনুপাতে গোশত নেওয়া উদ্দেশ্য হয় তাহলে কারো কুরবানীই সহীহ হবে না। কারণ এক্ষেত্রে চারজনের প্রত্যেকের অংশ পশুর এক সপ্তমাংশের কম হয়ে যায়। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০২৬
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার...

প্রশ্ন
এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগেই স্ত্রীর সাথে থেকেছে এবং স্ত্রীসূলভ আচরণ করেছে। এরপর তারা তাওয়াফে যিয়ারত ও তাওয়াফে বিদা করার পর দেশে চলে আসে। এখন তাদের উক্ত ভুলের কারণে জরিমানা দিতে হবে কি? এক ব্যক্তি বলেছে, তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব। এটা কি ঠিক?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ভুলের কারণে স্বামী- স্ত্রী প্রত্যেককে একটি করে জরিমানা-দম ছাগল বা দুম্বা মক্কার হেরেম এলাকায় জবাই করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের উপর উট
কুরবানী করা ওয়াজিব প্রশ্নের এ মন্তব্য ঠিক
নয়। কেননা মাসআলা হল, উকূফে আরাফার পর হালাল হওয়ার আগে স্ত্রী মিলন হয়ে গেলে প্রত্যেককে একটি করে উট বা গরু জরিমানা দিতে হয়। আর যদি হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগে এই ভুল হয়ে যায় তবে একটি করে ছাগল বা দুম্বা জরিমানা দিতে হয়। -মানাসিক, পৃ. ৩৩৯; ইলাউস সুনান
১০/৩৪০

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০২৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমাদের সমাজে কোরবানীর পশুর চামড়া, পশু থেকে ছাড়ানোর আগেই বিক্রি...

প্রশ্ন
আমাদের সমাজে কোরবানীর পশুর চামড়া, পশু থেকে ছাড়ানোর আগেই বিক্রি করা হয়। অনেক সময় দেখা যায় মালিকরা চামড়া ছাড়াতে গিয়ে কেটে ফেলে, যে কারনে অনেক সময় ক্রেতা বিক্রেতার মাঝে ঝগড়া হয়। আমার জানার বিষয় হলো, চামড়া ছাড়ানোর আগে বিক্রি করা জায়েয হবে কি?
উত্তর
না। পশুর চামড়া ছাড়ানোর আগে চামড়া বিক্রি করা জায়েয নাই।
দলিলঃ-
তিরমিযি, হাদিস নং ১২৩০; ফতওয়ায়ে শামী ৭/১৫; আলমগীরি ৩/১৯.

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০২৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

একজন গরিব লোক ধনী লোকের সাথে শরীক হয়ে একটি গাভী...

প্রশ্ন
একজন গরিব লোক ধনী লোকের সাথে শরীক হয়ে একটি গাভী ক্রয় করেছে। কুরবানীর কিছুদিন আগে গাভীটি একটি বাছুর জন্ম দেয়। জানার বিষয় হলো, বাছুর কি গাভীর সাথে কুরবানী দিবে, নাকি রেখে দিবে?
উত্তর
বাছুরটি গাভীর সাথে কুরবানী দিয়ে দিবে।
দলিলঃ-
মাবসুত ১২/১৪; খুলাসা ৪/৩২২; মওসুয়া ৪/৯৭.

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০২৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমরা প্রতিবছর কোরবানীর সময় পশু জবাই করার জন্য একটি জমি...

প্রশ্ন
আমরা প্রতিবছর কোরবানীর সময় পশু জবাই করার জন্য একটি জমি ভাড়া নেই। ঐ জমিতে পশু জবাই করি। এ বাবদ জমির মালিক কে ৫০০০ টাকা দেই। জানার বিষয় হলো, এভাবে জমি ভাড়া নেয়া জায়েয আছে কি?
উত্তর
হ্যা, বর্নিত পদ্ধতিতে কোরবানীর পশু জবাই করার জন্য জমি ভাড়া নেওয়া জায়েয।
দলিলঃ-
বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪; হিন্দিয়া ৪/৪১০; মুহিত ৯/৮৩; মাজাল্লা ৮৬.


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০২২
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমি গত বছর একা কুরবানী দেয়ার জন্য ৪২ হাজার টাকা...

প্রশ্ন
আমি গত বছর একা কুরবানী দেয়ার জন্য ৪২ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু ক্রয় করেছিলাম, পরে সেই গরুতে আরো দুইজন শরীক করেছিলাম, জানার বিষয় হলো, আমার ঐ কুরবানী হয়েছে কি?
উত্তর
হ্যা, আপনার কুরবানী সহীহ হয়েছে, তবে উত্তম ছিল ক্রয় করার আগে শরীক নির্ধারন করা।
দলিলঃ-
হেদায়া ৪/৩৪৫; খানিয়া ৩/২৯০; হিন্দিয়া ৫/৩০৪.

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০২০
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমি কোরবানীক গোস্ত নিয়ে আমার এক আত্বীয়ের বাসায় যাচ্ছিলাম। গোস্তের...

প্রশ্ন
আমি কোরবানীক গোস্ত নিয়ে আমার এক আত্বীয়ের বাসায় যাচ্ছিলাম। গোস্তের ব্যাগ থেকে চুষে রক্ত আমার কাপরে লেগে যায়। জানার বিষয় হল, গোস্তে লেগে থাকা রক্ত কি নাপাক? এই কাপড় পড়ে কি আমি নামাজ পড়তে পারব?
উত্তর
না, গোস্তে লেগে থাকা রক্ত নাপাক নয়। সুতরাং এই কাপড় পড়ে আপনি নামাজ পড়তে পারবেন।
দলিলঃ-
বাহরুর রায়েক ১/৩৯৮; নাহরুল ফায়েক ১/১৪৭; মুহিতুল বুরহানি ১/২১২.

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০১৭
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার...

প্রশ্ন
এ বছর হজ্বের কাফেলায় এক ব্যক্তি হলক করে হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগেই স্ত্রীর সাথে থেকেছে এবং স্ত্রীসূলভ আচরণ করেছে। এরপর তারা তাওয়াফে যিয়ারত ও তাওয়াফে বিদা করার পর দেশে চলে আসে। এখন তাদের উক্ত
ভুলের
কারণে জরিমানা দিতে হবে কি? এক ব্যক্তি বলেছে, তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব। এটা কি ঠিক?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ভুলের কারণে স্বামী- স্ত্রী প্রত্যেককে একটি করে জরিমানা- দম ছাগল বা দুম্বা মক্কার হেরেম এলাকায় জবাই করতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের উপর উট কুরবানী করা ওয়াজিব প্রশ্নের এ মন্তব্য ঠিক নয়। কেননা মাসআলা হল, উকূফে আরাফার পর হালাল হওয়ার আগে স্ত্রী মিলন হয়ে গেলে প্রত্যেককে একটি করে উট বা গরু জরিমানা দিতে হয়। আর যদি হালাল হওয়ার পর তাওয়াফে যিয়ারতের আগে এই ভুল হয়ে যায় তবে একটি করে ছাগল বা দুম্বা জরিমানা দিতে হয়। -মানাসিক, পৃ. ৩৩৯; ইলাউস সুনান
১০/৩৪০

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০১৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমাদের এলাকায় কিছু লোক আছে, যারা সামর্থ্য না থাকার কারণে...

প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় কিছু লোক আছে, যারা সামর্থ্য না থাকার কারণে কুরবানী দিতে পারে না। তাদের মধ্যে কিছু লোক এমন আছে, যারা কুরবানীর দিন মুরগী বা হাঁস যবাই করে থাকে। আমি জানতে চাই, কুরবানীর দিন হাঁস- মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয
আছে কি?
উত্তর
কুরবানীর দিনেও কুরবানীর নিয়ত না করে কেবল খাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী ইত্যাদি যবাই করা জায়েয। এতে দোষের কিছু নেই। তবে কুরবানীর নিয়তে কিংবা কুরবানীর সাদৃশ্য অবলম্বনের উদ্দেশ্যে হাঁস, মুরগী যবাই করা যাবে না। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৩/২৯০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬০

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০১০
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা...

প্রশ্ন
কুরবানীর পশুর কান বা লেজ কী পরিমাণ না থাকলে বা কাটা থাকলে এর দ্বারা কুরবানী সহীহ হয় না?
উত্তর
কুরবানীর পশুর কান বা লেজ অর্ধেক বা এরচেয়ে বেশি না থাকলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ নয়। যদি অর্ধেকের চেয়ে বেশি অংশ থাকে তাহলে এর দ্বারা কুরবানী করা সহীহ হবে। -শরহু মাআনিল আছার ২/২৭১; কিতাবুল আসল ২/৪৯৪; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৭/৩৫৫; ইলাউস সুনান
১৭/২৪০

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০০৯
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি।...

প্রশ্ন
আমরা সহোদর তিনভাই মিলে প্রতি বছর একটি গরু কুরবানী করি। বড় ভাই এক ভাগ আর আমরা দুই ভাই তিন অংশ করে মোট ছয় ভাগ নিয়েছি। আমরা দুই ভাই সমান সমান টাকা দিয়ে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু বড়ভাই আমাদের মধ্যে তুলনামূলক অসচ্ছল হওয়ায় তিনি তার অংশের পুরো টাকা দেন না। আমরা দুই ভাই বলেছি, আপনি যা পারেন দেন, বাকিটা আমরা দুজনে দিয়ে দিব। অবশ্য গোশত সকলের অংশ হারেই বণ্টন করা হয়। টাকা কম-বেশির কারণে তাতে ব্যবধান করা হয় না; বরং ধরে নেওয়া হয় যে, আমরা ছোট দুই ভাই বড় ভাইয়ের টাকার আংশিক আদায় করে দিই। জানতে চাই, উল্লেখিত পদ্ধতিতে আমাদের কুরবানী কি সহীহ হচ্ছে?
উত্তর
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের কুরবানী সহীহ হয়েছে। গরু- মহিষে শরিকে কুরবানী দেওয়ার জন্য শর্ত হল, কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম না হওয়া। প্রশ্নোক্ত অবস্থায় বড় ভাই যদিও তার অংশের চেয়ে কম দিচ্ছেন কিন্তু অন্য দুই ভাই তার অংশের বাকিটা দিয়ে দিবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তাই বড় ভাইয়ের অংশ এক সপ্তমাংশের কম হয় না। -ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭৮

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০০৮
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

প্রশ্ন
কুরবানী কার উপর ওয়াজিব হয়? জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
প্রাপ্তবয়ষ্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী মুকীম ব্যক্তি, যে ১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব হবে। নেসাব হল : স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ। স্বর্ণ বা রুপার কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না হয় তবে স্বর্ণ- রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সাথে প্রয়োজন-অতিরিক্ত অন্য বস্ত্তর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় সেক্ষেত্রেও কুরবানী ওয়াজিব হবে। স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার, নগদ অর্থ, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত আসবাবপত্র-এ সবই কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬,আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০০৭
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

আমি একটি মসজিদের মুয়াযযিন। আমাদের এলাকার প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যে...

প্রশ্ন
আমি একটি মসজিদের মুয়াযযিন। আমাদের এলাকার প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যে কুরবানীর পশু যবাই করে দেয় তাকে এর বিনিময়ে কিছু হাদিয়াও দেওয়া হয়। জানতে চাই, কুরবানীর পশু যবাই করে বিনিময় নেওয়া জায়েয হবে কি?
উত্তর
হ্যাঁ, কুরবানীর পশু যবাই করে এর বিনিময় নেওয়া জায়েয আছে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২; ইমদাদুল আহকাম ৪/২৬৪; কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৪৩

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০০৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে।...

প্রশ্ন
কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়,
লোকেরা গরুর দাঁত দেখে। যদি বিশেষ দুটি দাঁত
উঠে তাহলে পছন্দ হলে কেনে, অন্যথায় ঐ গরু কেনে না। তারা মনে করে, বিশেষ দুই দাঁত না উঠলে সেই গরু দিয়ে কুরবানী করা যায় না। এখন আমার জানার বিষয় হল, গরু কুরবানীর
উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুটি দাঁত উঠা কি জরুরি?
আর যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায়, কোনো একটি গরুর দুই বছর হয়েছে, কিন্তু এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করলে সহীহ হবে কি না?
উত্তর
গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুই বছর
পূর্ণ হওয়া জরুরি। বিশেষ দাঁত উঠা জরুরি নয়।
তবে যেহেতু বিশেষ দুটি দাঁত দুই বছর বয়স পূর্ণ
হলেই উঠে থাকে তাই সাধারণত দুই দাঁত উঠাকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আলামত মনে করা হয়। এ কারণেই মানুষ কুরবানীর পশু কিনতে গেলে তা পরীক্ষা করে। এতে আপত্তির কিছু নেই। তবে যদি কোনো গরুর ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, দুই বছর পূর্ণ হলেও এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে সেই গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ
হবে।
-সহীহ মুসলিম ২/১৫৫; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬১১-১৩


প্রশ্ন: একদিন আমার বোনের মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে তার রক্তের প্রয়োজন দেখা দেয়। ঘটনাক্রমে তার রক্তের গ্রুপের সাথে আমার রক্তের গ্রুপও মিলে যায়। আমি রক্ত দেওয়ার জন্য প্রস্ত্তত হয়ে যাই। কিন্তু আমার বোনের সাথে আমার মায়ের ব্যক্তিগত বৈরিতা থাকায় তিনি আমাকে রক্ত দিতে নিষেধ করেন। কিন্তু জীবন বাঁচানোর তাকিদে মায়ের কথা উপেক্ষা করে রক্ত দিতে যাই। এখন প্রশ্ন হল, আমার এ কাজটি কি ভালো হয়েছে, নাকি মায়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার কারণে আমি গুনাহগার হব।
উত্তর: এ কারণে আপনি গুনাহগার হবেন না। বোনের এই প্রয়োজনের মুহূর্তে ভাই হিসেবে সহযোগিতা করা আপনার দায়িত্ব ছিল। এমন ক্ষেত্রে তার সাহায্য করতে বাধা দেওয়া মায়ের জন্যও ঠিক নয়। তাই আপনি রক্ত দিয়ে ঠিকই করেছেন। অবশ্য আপনার মায়ের নিষেধাজ্ঞার প্রতি খেয়াল রেখে আপনি নিজে রক্ত না দিয়ে অন্যের থেকেও ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতে পারতেন।
-ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকীন ৬/৩২১; ফযলুল্লাহিস সামাদ ১/৫১

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০০১
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: কুরবানী

কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়, লোকেরা গরুর দাঁত দেখে।...

প্রশ্ন
কুরবানীর গরু কিনতে গেলে দেখা যায়,
লোকেরা গরুর দাঁত দেখে। যদি বিশেষ দুটি দাঁত
উঠে তাহলে পছন্দ হলে কেনে, অন্যথায় ঐ গরু কেনে না। তারা মনে করে, বিশেষ দুই দাঁত না উঠলে সেই গরু দিয়ে কুরবানী করা যায় না। এখন আমার জানার বিষয় হল, গরু কুরবানীর
উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুটি দাঁত উঠা কি জরুরি?
আর যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায়, কোনো একটি গরুর দুই বছর হয়েছে, কিন্তু এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করলে সহীহ হবে কি না?
উত্তর
গরু কুরবানীর উপযুক্ত হওয়ার জন্য দুই বছর
পূর্ণ হওয়া জরুরি। বিশেষ দাঁত উঠা জরুরি নয়।
তবে যেহেতু বিশেষ দুটি দাঁত দুই বছর বয়স পূর্ণ
হলেই উঠে থাকে তাই সাধারণত দুই দাঁত উঠাকে দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আলামত মনে করা হয়। এ কারণেই মানুষ কুরবানীর পশু কিনতে গেলে তা পরীক্ষা করে। এতে আপত্তির কিছু নেই। তবে যদি কোনো গরুর ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, দুই বছর পূর্ণ হলেও এখনও বিশেষ দুটি দাঁত উঠেনি তাহলে সেই গরু দ্বারা কুরবানী সহীহ
হবে।
-সহীহ মুসলিম ২/১৫৫; বাযলুল মাজহূদ ১৩/১৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৬১১-১৩

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন