ফতোয়া: হজ্ব

ফতোয়া নং: ৭৩১৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার ৩ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন আছে। সেটির ২য় তলায়...

প্রশ্ন

আমার ৩ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন আছে। সেটির ২য় তলায় আমি আমার পরিবারসহ থাকি। অন্য ২ তলা ভাড়া দেয়া আছে। সেগুলোর ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৩২,০০০/- টাকা পাই। এ আয় দিয়েই আমার সংসার চলে। মাস শেষে কখনো কিছু টাকা অবশিষ্ট থাকে। কখনো থাকে না। এ অবস্থায় আমার উপর কি হজ্ব ফরয হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, এ বাড়ি থেকে অর্জিত ভাড়ার টাকা আপনার সংসার চালানোর জন্য অপরিহার্য। বিষয়টি যদি এমনই হয়ে থাকে তাহলে ঐ বাড়ির কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয হবে না।

-রদ্দুল মুহতার ২/৪৬২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৩; আন্নাহরুল ফাইক ২/৫৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৮৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

মুহতারাম, আমার স্বামী ইন্তেকালের পরে ওয়ারিশ সূত্রে যে সম্পদ পেয়েছি...

প্রশ্ন

মুহতারাম, আমার স্বামী ইন্তেকালের পরে ওয়ারিশ সূত্রে যে সম্পদ পেয়েছি তাতে একজনের হজ্বের যাবতীয় খরচ বহন করা যায়। আর এ সম্পদ আমার প্রয়োজনীয় বিষয় থেকে অতিরিক্ত। কিন্তু আমার মাহরাম পুরুষদের কারো হজ্ব করার সামর্থ্য নাই। এমতাবস্থায় আমার জন্য করণীয় কী তা জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

আপনার নিকট যেহেতু নিজের হজ্বে যাওয়ার মত সামর্থ্য আছে তাই আপনার উপর হজ্ব ফরয। কিন্তু মাহরাম পুরুষ ছাড়া যেহেতু নারীর হজ্বে যাওয়া জায়েয নয় তাই আপনাকে মাহরাম পুরুষের অপেক্ষা করতে হবে। মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা হলে তার সাথে গিয়ে হজ্ব করবেন। অবশেষে মাহরাম পুরুষের ব্যবস্থা না হলে নিজে শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে যাওয়ার পর অন্যকে দিয়ে বদলী হজ্ব করাতে পারবেন। এবং এখন থেকেই অসিয়ত করে রাখবেন। যেন হঠাৎ মৃত্যু হয়ে গেলে ওয়ারিশগণ আপনার পক্ষ থেকে কাউকে দিয়ে বদলী হজ্ব করিয়ে নেয়।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৪; ফতহুল কাদীর ২/৩২৬,৩৩২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৯; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ২৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৮৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

সাধারণত আমি কাঁথা/কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাই। হজ্বের সময় ১০ তারিখ...

প্রশ্ন

সাধারণত আমি কাঁথা/কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমাই। হজ্বের সময় ১০ তারিখ (দিবাগত) রাতে আমি হোটেলে ঘুমাচ্ছিলাম। প্রথম দিকে শুধু গায়ের উপর কম্বল ছিল। চেহারা ও মাথা খোলা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আমার অজান্তেই কম্বল মুড়ি দিই। রাত তিনটার সময় ঘুম থেকে উঠে আমি নিজেকে এভাবেই পেলাম। জানতে চাচ্ছি, আমার অনিচ্ছাকৃত এ ভুলের কারণে কি দম দিতে হবে? নাকি এক্ষেত্রে অন্য কোনো বিধান রয়েছে?

উত্তর

ইহরামের নিষিদ্ধ কাজসমূহ অনিচ্ছাকৃত বা ভুলে করলেও জরিমানা দিতে হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু পূর্ণ বারো ঘণ্টা চেহারা ঢাকা ছিল না; বরং তার চেয়ে কম ছিল তাই আপনাকে ঐ দেশের এক সদকাতুল ফিতর সমপরিমাণ টাকা সদকা করে দিতে হবে। ঐ অর্থ হারামের এলাকায় দেওয়া জরুরি নয়, তবে উত্তম। নিজ এলাকার গরীবদেরকেও দেওয়া যাবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৩০; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৮; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ২৫৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৮৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

চুল আঁচড়ানোর সময় আমি খুব উকুন মারি। হজ্বের সময় ইহরাম...

প্রশ্ন

চুল আঁচড়ানোর সময় আমি খুব উকুন মারি। হজ্বের সময় ইহরাম অবস্থায় উকুন মারতে পারে না- এ মাসআলা আমার জানা ছিল না। হজ্বের পর এক বান্ধবীর সাথে দেখা করতে গেলে এক প্রসঙ্গে জানতে পারলাম, ইহরাম অবস্থায় উকুন মারা যায় না। কিন্তু আমি হজ্বের পাঁচ দিনেও তো অনেক উকুন মেরেছি। সে বলেছিল, আমার উপর দম ওয়াজিব হয়েছে। কিন্তু আমি তো হজ্ব শেষ করে দেশে ফিরে এসেছি। এখন এ দম কীভাবে আদায় করব। দম কি মক্কা শরীফ থাকতেই দিতে হয় নাকি পরে দেশে এসে আদায় করা যায়।

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় তিনটির অধিক উকুন মারলে জরিমানা হিসাবে এক সদকা ফিতর সমপরিমাণ মূল্য দান করা ওয়াজিব। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুসারে (তিনটির অধিক) উকুন মারার কারণে আপনাকে এক সদকাতুল ফিতরের সমপরিমাণ টাকা সদকা করে দিতে হবে। তবে আপনার উপর দম ওয়াজিব হয়নি। আর সদকা হেরেমের এলাকার গরীবকে দেওয়া উত্তম। তবে আপনি যেহেতু দেশে ফিরে এসছেন তাই দেশের কোনো গরীব-মিসকীনকে দিলেও আদায় হয়ে যাবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪২০; ফাতহুল কাদীর ৩/১৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৪৩,৫৫৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৮৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এ বছর হজ্বের সময় ৯ যিলহজ্ব মাগরিবের পর আমরা আরাফা...

প্রশ্ন

এ বছর হজ্বের সময় ৯ যিলহজ্ব মাগরিবের পর আমরা আরাফা থেকে হেঁটে মুযদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। এক জায়গায় এসে আমীর সাহেব বললেন, রাতে আমরা এখানেই অবস্থান করব। আমরা মনে করেছিলাম মুযদালিফার সীমানায় চলে এসেছি। কিন্তু হজ্বের পরে জানতে পারলাম যে, রাতে আমরা যে জায়গায় অবস্থান করেছি তা মুযদালিফার বাইরে ছিল। আমীর সাহেবকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, রাতে মুযদালিফায় অবস্থান করা জরুরি নয়। সকালে ফজরের পর কিছু সময়ের জন্য মুযদালিফায় অবস্থান করাই যথেষ্ট।

মুফতী সাহেবের কাছে প্রশ্ন হল, আমীর সাহেবের এ কথা কি ঠিক? রাতে মুযদালিফার বাইরে অবস্থানের কারণে আমাদের উপর কোনো জরিমানা ওয়াজিব হবে কি ?

এছাড়া সকালেও আমরা মুযদালিফায় অবস্থান করিনি। বরং মুযদালিফার উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে তা অতিক্রম করে গিয়েছি। এভাবে রাতে মুযদালিফার বাইরে অবস্থান করে সকালে হাঁটতে হাঁটতে মুযদালিফার সীমানা অতিক্রম করার দ্বারা মুযদালিফায় অবস্থানের ওয়াজিব আদায় হয়েছে কি? আর এ কারণে আমাদের উপর কোনো জরিমানা আসবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

১০ যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এক মুহূর্তের জন্য মুযদালিফায় অবস্থান করলেও উকূফে মুযদালিফার ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়। ওয়াজিব আদায়ের জন্য সেখানে দাঁড়ানো বা বসা জরুরি নয়; বরং পায়ে হেঁটে বা গাড়িতে মুযদালিফা অতিক্রম করলেও এ ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে।

সুতরাং আপনারা যদি সুবহে সাদিকের পর সূর্যোদয়ের পূর্বেই মুযদাফিলার সীমানায় প্রবেশ করে থাকেন তাহলে আপনাদের উকূফে মুযদালিফার ওয়াজিব আদায় হয়ে গেছে। আর যদি মুযদালিফার সীমানায় সূর্যোদয়ের পর প্রবেশ করে থাকেন তাহলে আপনাদের উকূফে মুযদালিফার ওয়াজিব আদায় হয়নি। এক্ষেত্রে মুযদালিফায় প্রবেশ করা সম্ভব হওয়া সত্ত্বেও যদি আপনারা সেখানে যথাসময়ে প্রবেশ না করে থাকেন তাহলে এ কারণে আপনাদের উপর দম ওয়াজিব হবে।

উল্লেখ্য যে, মুযদালিফায় ৯ তারিখ রাতে অবস্থান করা সুন্নাত এবং হজ্বের ফযীলতপূর্ণ আমল। তাই মুযদালিফায় পৌঁছা নিশ্চিত হয়েই অবস্থান করা উচিত। বিশেষ ওজর ছাড়া সেখানে রাতে অবস্থান ত্যাগ না করা উচিত।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৬৩, ১৬২; বাদায়েউস সনায়ে ২/৩২১, ৩৫৭; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪১-২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৫২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

গত রমযানে আমি ওমরা করেছি। আমি যখন ওমরার তাওয়াফ করছিলাম...

প্রশ্ন

গত রমযানে আমি ওমরা করেছি। আমি যখন ওমরার তাওয়াফ করছিলাম তখন মাতাফের এক পাশে এক ব্যক্তি আতরের বড় শিশি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। লোকদেরকে আতর মেখে দিচ্ছিল। আমার শরীরেও আতর মেখে দেয়। আমার হাতে ও কাঁধে অনেকটা আতর লাগে। কাপড়েও কিছু আতর লাগে। তাওয়াফ শেষ করে শরীর ও কাপড়ের যে অংশে আতর লেগেছিল সে অংশ ভালোবাভে ধুয়ে ফেলি।

মুফতী সাহেবের কাছে প্রশ্ন হল, এভাবে অনিচ্ছাকৃত অন্য আরেকজন আমার শরীরে আতর লাগিয়ে দেয়ার কারণে আমার উপর

কোনো জরিমানা ওয়াজিব হয়েছে কি না?

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ বিষয়গুলো অনিচ্ছাকৃতভাবে ঘটলেও জরিমানা ওয়াজিব হয়। তাই সুগন্ধির পরিমাণ যদি বেশি হয় তবে দম ওয়াজিব হবে। আর কম হলে জরিমানাস্বরূপ সদকা দিতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, সদাকাতুল ফিতর সমমূল্যের টাকা সদকা করতে চাইলে নিজ দেশের ফকীর-মিসকিনকে দিতে পারেবন। আবার হারামের ফকীরদরেও দিতে পারবেন।

উল্লেখ্য, ঘটনাটি যেহেতু অনিচ্ছাকৃত ঘটেছে তাই ঐ ঘটনার জন্য আপনি গুনাহগার হবেন না।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১২২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪০-১৪১; মানাসিক, মুল্লা আলী আলকারী পৃ. ৩১২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৫১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি একটি মসজিদে ইমামতি করি। গত বছর আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে...

প্রশ্ন

আমি একটি মসজিদে ইমামতি করি। গত বছর আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমি আমার ফরজ হজ্ব আদায় করেছি। এখন আমার মন চায় বারবার আল্লাহর ঘরের যিয়ারত করতে। কিন্তু পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা পারছি না। এ বছর হজ্বের অর্ধেক টাকা তথা দেড় লক্ষ টাকার ব্যবস্থা হয়েছে। একজন মুসল্লী ভাই এটা জানতে পেরে আমাকে বললেন, ‘হুজুর ! আপনি আমার বৃদ্ধ বাবার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করবেন। হজ্বের বাকী অর্ধেক টাকা তথা দেড় লক্ষ টাকা আমার বাবা আপনাকে দিবে। তিনি নিজে হজ্ব করতে অক্ষম। বর্তমানে একেবারে শয্যাশায়ী।’ তাই জানতে চাচ্ছি, এভাবে নিজের অর্ধেক এবং অন্যের অর্ধেক টাকা দিয়ে তার বদলী হজ্ব করা যাবে কি?

উত্তর

বর্তমানে দেড়লক্ষ টাকা দ্বারা হজ্বের যাতায়াত ও থাকার ন্যূনতম ব্যবস্থা হয়ে যায়। অন্তত অধিকাংশ খরচ তো হয়েই যায়। তাই এক্ষেত্রে আপনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ থেকে বাকী টাকা খরচ করে বৃদ্ধ লোকটির পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করলে তা জায়েয হবে। এবং বৃদ্ধলোকের হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১৪৭; ফাতহুল কাদীর ৩/৬৮; ফতাওয়া কাযীখান ১/৩১১; রদ্দুল মুহতার ২/৬০০; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ৩২৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এ বছর আমি ও আমার স্ত্রী হজ্ব করেছি। হজ্বের সময়...

প্রশ্ন

এ বছর আমি ও আমার স্ত্রী হজ্ব করেছি। হজ্বের সময় ১০ যিলহজ্ব মীনা থেকে কংকর নিক্ষেপ করে এসে ক্লান্ত থাকায় ঐ দিন তাওয়াফে যিয়ারত করিনি। ইচ্ছা ছিল পরের দিন আমরা তাওয়াফ করব। কিন্তু সেদিন রাতেই আমার স্ত্রীর স্রাব শুরু হয়ে যায়। প্রতিমাসের ন্যায় আট দিন তার স্রাব চলে। তার স্রাবের সময় শেষ হওয়ার পূর্বেই আমরা মদীনায় চলে যাই। মদীনায় অবস্থান করার পর ফ্লাইট বিড়ম্বনার কারণে মক্কায় এসে মাত্র চারদিন অবস্থান করি। এ সময় আমার স্ত্রী পবিত্র ছিল। তাই সে তাওয়াফে যিয়ারত করে নেয়। এরপর আর কোনো তাওয়াফ করিনি। দেশে আসার পর একজন আলেম বললেন, আপনার স্ত্রীর দম দিতে হবে।

প্রশ্ন হল, আমার স্ত্রীর হজ্ব হয়েছে কি না? এবং তার উপর দম ওয়াজিব হয়েছে কি না? যদি দম ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে এখন আমাদের কী করণীয়?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর তাওয়াফে যিয়ারত যথাযথভাবেই আদায় হয়েছে। তবে তার হজ্বেরএকটি ওয়াজিব কাজ তাওয়াফে বিদা বাকি থেকে গেছে। আপনার স্ত্রী যেহেতু ওজর ছাড়াই এইওয়াজিব ছেড়ে দিয়েছেন তাই তার উপর একটি জরিমানা দম ওয়াজিব হয়েছে।

সুতরাং এখন কর্তব্য হল, হেরেমে অবস্থানকারী অথবা গমনকারী কারো মাধ্যমে হেরেমেরএলাকায় একটি দম আদায় করে দেওয়া।

-গুনইয়াতুন নাসিক ২৭৪; রদ্দুল মুহতার ২/৫১৯, ৫২৩; মানাসিকে মোল্লা আলী কারী ২৫০, ৩৪৯, ৩৯৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭২২৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

একদিন নফল তাওয়াফ করার পর তাড়াহুড়োর কারণে তাওয়াফের দুই রাকাত...

প্রশ্ন

একদিন নফল তাওয়াফ করার পর তাড়াহুড়োর কারণে তাওয়াফের দুই রাকাত ওয়াজিব নামায পড়া হয়নি। মক্কায় থাকা অবস্থায় আর ঐ নামাযের কথা স্মরণ হয়নি। পরবর্তীতে দেশে আসার পর স্মরণ হয়। এখন কি ঐ নামাযের কাযা আদায় করতে হবে? আর এ কারণে কোনো জরিমানা বা কাফফারা দিতে হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

তাওয়াফের পর দুই রাকাত নামায পড়া ওয়াজিব। মসজিদে হারামে কিংবা হেরেমের এলাকায়পড়া মুস্তাহাব। কোনো কারণে হেরেমের এলাকায় পড়তে না পারলে অন্যত্র হলেও পড়ে নিতে হবে।তাই আপনি দেশেই ঐ দুই রাকাত নামায পড়ে নিতে পারবেন। এ কারণে কোনো জরিমানা দিতেহবে না।

আতা রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

عَنْ عَطَاءٍ ؛ فِي رَجُلٍ طَافَ بِالْبَيْتِ وَنَسِيَ أَنْ يُصَلِّيَ الرَّكْعَتَيْنِ حَتَّى مَضَى ، قَالَ : يُصَلِّيهِمَا إِذَا ذَكَرَ ، وَلَيْسَ عَلَيْهِ شَيْءٌ.

যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করার পর (তাওয়াফের) দুই রাকাত নামাযের কথা ভুলে গিয়ে চলেযায় সে পরবর্তীতে স্মরণ হওয়ামাত্র ঐ দুই রাকাত নামায পড়ে নিবে। আর এ কারণে তার উপরকোনো জরিমানা আসবে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৪৭৭৯; গুনইয়াতুন নাসিক ১১১; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ১৫৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৯২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৯৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২২৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১২৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি সরকারী চাকরিজীবী। লাখ খানেকের মতো নগদ টাকা আমার কাছে...

প্রশ্ন

আমি সরকারী চাকরিজীবী। লাখ খানেকের মতো নগদ টাকা আমার কাছে আছে। আর গ্রামের বাড়িতে পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত দেড় বিঘা জমি আছে। যার আনুমানিক মূল্য পঞ্চাশ লক্ষ টাকা হবে। এছাড়া আমার আর কোনো অর্থ-সম্পদ নেই।

আমার জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় আমার উপর হজ্ব ফরয হবে কি? অথচ হজ্বে যাওয়ার মতো টাকা আমার কাছে নেই।

উল্লেখ্য, চাকরির বেতন দিয়েই আমার সংসার চলে। আর উক্ত জমি ফসলি। বর্গাচাষের ভিত্তিতে সেখান থেকে বছরে কিছু আয় আসে।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার উপর হজ্ব ফরয। কেননা হজ্ব ফরয হওয়ার জন্য নগদ টাকা থাকা জরুরি নয়। বরং প্রয়োজন অতিরিক্ত জমি ও স্বর্ণালংকার থাকলেও তার মূল্য যদি হজ্বের খরচ এবং হজ্ব থেকে ফেরা পর্যন্ত সংসারের খরচের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেই হজ্ব ফরয হবে।

তাই বিলম্ব না করে হজ্ব করে নেওয়া কর্তব্য। হজ্ব ফরয হওয়ার পর তা আদায়ে বিলম্ব করা গুনাহ।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭১২৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এক ব্যক্তি উমরার ইহরাম করে তাওয়াফ সায়ী করেছে। এরপর সে...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি উমরার ইহরাম করে তাওয়াফ সায়ী করেছে। এরপর সে মাথার দুই তিন স্থান থেকে তিন/ চারটা চুল কেটে নেয় এবং পুনরায় মসজিদে আয়েশা থেকে উমরার ইহরাম করে আরেকটি উমরা আদায় করে এবং শেষে মাথা মুণ্ডিয়ে নেয়। এ ব্যক্তির পূর্বের উমরা এবং পরের উমরার কী হুকুম?

উত্তর

ইহরাম থেকে চুল কেটে হালাল হওয়ার জন্য পুরো মাথার অন্তত চার ভাগের এক ভাগ পরিমাণ চুল কাটা জরুরি। এর কম কাটলে ইহরাম থেকে হালাল হবে না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রথম উমরার তাওয়াফ সায়ী করার পর কেবলমাত্র তিন/ চারটা চুল কেটে নেওয়ার দ্বারা লোকটি ইহরাম-মুক্ত হয়নি।

আর এক উমরা থেকে ইহরাম মুক্ত হওয়ার আগে আরেক উমরার ইহরাম করা জায়েয নয়। তাই প্রথম উমরা থেকে হালাল না হয়ে নতুন উমরার ইহরাম করা অনিয়ম ও গুনাহ হয়েছে এবং এ কারণে তার উপর হেরেমের এলাকায় একটি জরিমানা দম দেয়া আবশ্যক হয়েছে।

অবশ্য এক্ষেত্রে দ্বিতীয় উমরার ইহরাম করা নাজায়েয হলেও লোকটি যেহেতু দ্বিতীয় উমরা সম্পন্ন করেছে এবং শেষে মাথা মুণ্ডিয়েছে তাই এর দ্বারা সে উভয় উমরার ইহরাম থেকে হালাল হয়ে গেছে এবং উভয় উমরাই আদায় হয়েছে।

-মানাসিক, মুল্লা আলী আলকারী পৃ. ২২৯; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ২৩৭; যুবদাতুল মানাসিক পৃ. ৩৩৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৬৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

গত হজ্বে আমরা কয়েকজন মিলে এক মরুভূমিতে ঘুরতে যাই। এবং...

প্রশ্ন

গত হজ্বে আমরা কয়েকজন মিলে এক মরুভূমিতে ঘুরতে যাই। এবং সেখানে এক রাত অবস্থানও করি। মরুভূমিটির আশপাশে প্রায় ৩/৪ কিলোমিটারের মধ্যে পানির কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তখন আমাদের এক সাথীর গোসলের জরুরত হয়। আর আমাদের সাথেও এত অল্প পানি ছিল, যা দিয়ে সে শুধু অযু করতে পারবে, গোসল করতে পারবে না। ফলে সে প্রথমে অযু করে এরপর তায়াম্মুম করে নামায আদায় করে নেয়।

প্রশ্ন হল, উল্লেখিত অবস্থায় এভাবে করা কি তার জন্য সঠিক হয়েছে? এবং এরপর আদায়কৃত নামাযের কী হুকুম? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের অবস্থানের জায়গা থেকে যেহেতু পানি দূরে ছিল এবং আপনাদের কাছেও পর্যাপ্ত পানি ছিল না তাই এক্ষেত্রে ফরয গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করাই নিয়ম। অযু করার প্রয়োজন ছিল না। তাই তায়াম্মুম করে নামায আদায় করার দ্বারা তা আদায় হয়ে গেছে।

عَنِ الْأَوْزَاعِيِّ، قَالَ: سَأَلْتُ الزُّهْرِيَّ، عَنِ الرَّجُلِ تُصِيبُهُ الْجَنَابَةَ وَمَعَهُ مَاءٌ يَكْفِيهِ لِلْوُضُوءِ قَالَ: يَتَيَمَّمُ .

‘আওযায়ী রাহ. বলেন, আমি যুহরী রাহ. -কে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, যার গোসলের জরুরত হয়েছে এবং তার নিকট শুধু অযু করার পানি আছে। সে তখন কী করবে? তিনি বললেন, সে শুধু তায়াম্মুম করবে’।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৭৮৭; কিতাবুল আছল ১/৮৭; মাবসূত, সারাখসী ১/১১৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৭৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৩৩; আলবাহরুর রায়েক ১/১৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৫১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এ বছর আমার হজ্বে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। শুনেছি, ইহরাম অবস্থায়...

প্রশ্ন

এ বছর আমার হজ্বে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। শুনেছি, ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার করা যায় না। জানার বিষয় হল, এমন খাবার যা সুগন্ধিযুক্ত জিনিস দিয়ে রান্না করা হয় তা খাওয়া যাবে কি না? যেমন পোলাও, বিরানী এগুলোতে এলাচ-দারচিনি ইত্যাদি সুগন্ধিযুক্ত জিনিস দেওয়া হয়। তাই তা খাওয়া যাবে কি না?

উত্তর

হাঁ, ইহরাম অবস্থায় পোলাও বিরিয়ানী খাওয়া জায়েয। কেননা খাবার রান্না করার সময় সুগন্ধি মসলা দেওয়া হলে সে খাবার ইহরাম অবস্থায় খাওয়া নিষিদ্ধ নয়। তবে রান্নার পর খাবারে জাফরান বা কোনো সুঘ্রাণ মেশানো হলে ইহরাম অবস্থায় তা খাওয়া নিষেধ।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৩৯; আলমুবসূত সারাখসী ৪/১২৩; ফাতহুল কাদীর ২/৪৪১; রদ্দুল মুহতার ২/৫৪৭; আলবাহরুল আমীক ২/৮৪১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০৪৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

ইহরাম ত্যাগ করার সময় হলক তথা মাথা মুণ্ডানোর আগে নখ-মোচ...

প্রশ্ন

ইহরাম ত্যাগ করার সময় হলক তথা মাথা মুণ্ডানোর আগে নখ-মোচ ইত্যাদি কাটা কি জায়েয? কেউ যদি এমনটি করে তবে কি তার উপর কোনো জরিমানা আসবে?

উত্তর

হজ্ব ও উমরার সকল কাজ আদায় হয়ে গেলেও মাথা মুণ্ডানোর আগে যেহেতু ইহরাম বহাল থাকে তাই মাথা মুণ্ডানোর আগে নখ-মোচ কাটা নিষিদ্ধ। মাথা মুণ্ডিয়ে বা চুল ছোট করে হালাল হয়ে যাওয়ার পর এগুলো করতে পারবে। হালাল হওয়ার আগে এসব কাজ করলে জরিমানা (দম বা সদকা) দিতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩২৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪৭; মানাসিক, মুল্লা আলী কারী পৃ. ২২৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি বাড়ি বানানোর নিয়তে কিছু টাকা সঞ্চয় করেছি। আমার নিজের...

প্রশ্ন

আমি বাড়ি বানানোর নিয়তে কিছু টাকা সঞ্চয় করেছি। আমার নিজের থাকার জন্য কোনো বাড়ি নেই। এখন হজ্বের মাস চলে এসেছে। ইচ্ছা করলে ঐ টাকা দিয়ে আমি হজ্ব করতে পারি। কিন্তু তখন আমি আর বাড়ি বানাতে পারব না। আমি জানি যে, বাড়ি হল, হাজতে আসলিয়া অর্থাৎ মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। তাই এ অবস্থায় আমার উপর কি হজ্ব ফরয হবে? ফরয হলে হাজতে আসলিয়ার অর্থ কী? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

নিজে ও পরিবার-পরিজনের বসবাসের ব্যবস্থা থাকা হাজতে আসলিয়া অর্থাৎ ব্যক্তির মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। এই প্রয়োজন ভাড়া বাসার দ্বারাও পূর্ণ হতে পারে। নিজের মালিকানাধীন হওয়া জরুরি নয়।

সুতরাং যার জন্য ভাড়া বাড়িতে থাকার সুব্যবস্থা আছে তার জন্য নিজস্ব বাড়ি বানানো মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা ভাড়া বাসা দ্বারা তো তার বসবাসের প্রয়োজন পূর্ণ হয়েই যাচ্ছে।

অতএব এমন ব্যক্তি যদি বাড়ি বানানোর নিয়তে টাকা জমা করে যা দিয়ে তার হজ্বের খরচ হয়ে যাবে তাহলে নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী এ টাকার কারণে তার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যাবে। তাই হজ্বের মৌসুমে এ টাকা দিয়ে হজ্ব করা তার জন্য আবশ্যক হয়ে যাবে। তবে হজ্বের মৌসুম আসার আগেই যদি ঐ টাকা বাড়ি বানানো বা অন্য কোনো প্রয়োজনে খরচ করে ফেলে এবং তার কাছে হজ্ব করার মতো আর টাকা না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে তার উপর হজ্ব ফরয হবে না।

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তির বসবাসের জন্য ভাড়া বাসারও ব্যবস্থা নেই এবং বসবাসের প্রয়োজন পূরণের জন্যই তাকে বাড়ি বানাতে হবে তার জন্য নিজস্ব বাড়ি মৌলিক প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। এমন ব্যক্তি যদি বাড়ি বানানোর জন্য টাকা জমা করে এবং হজ্বের মৌসুম আসার পর তার কাছে এ পরিমাণ টাকা থাকে, যা দিয়ে হজ্ব করলে বাড়ি বানানো যাবে না তাহলে তার উপর ঐ টাকার কারণে হজ্ব ফরয হবে না।

-গুনইয়াতুন নাসিক ২০; মানাসিক ৪৪; আলবাহরুল আমীক ১/৩৮২; মিনহাতুল খালিক ২/৩১৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০১৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার উপর অনেক আগে হজ্ব ফরয হয়েছে।...

প্রশ্ন

আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার উপর অনেক আগে হজ্ব ফরয হয়েছে। তখন দ্বীনের বুঝ না থাকায় অবৈধ উপার্জন দিয়ে হজ্ব করেছি। এখন আমি জানতে চাই যে, উক্ত হজ্বের মাধ্যমে আমার ফরয হজ্ব কি আদায় হয়েছে, না পুনরায় হজ্ব করতে হবে?

উত্তর

হজ্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যার মাধ্যমে শারীরিক ইবাদতের পাশাপাশি আর্থিক ইবাদতের বিষয়ও রয়েছে। অবৈধ সম্পদের দ্বারা হজ্ব করলে এর দ্বারা ফরয আদায় হয়ে গেলেও আল্লাহর দরবারে তা কবুল হবে না। তাই কবুল হজ্বের জন্য পুনরায় হালাল সম্পদ দ্বারা হজ্ব করতে হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৯; ফাতহুল কাদীর ২/৩১৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২২০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৫৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৭০১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এ বছর আমরা স্বামী-স্ত্রী হজ্বে যাব। আমাদের দু বছরের একটি...

প্রশ্ন

এ বছর আমরা স্বামী-স্ত্রী হজ্বে যাব। আমাদের দু বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। তাকেও নিয়ে যাব। প্রশ্ন হল এই শিশু ছেলের ইহরাম বা হজ্বের আমল কীভাবে হবে? তাকেও কি ইহরামের কাপড় পরাতে হবে? ঠা-ার দরুণ মাথা মুখ ঢাকতে হলে তা পারব কি না? তার ভুলের কারণে দম ওয়াজিব হবে কি? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শিশু সন্তানের পক্ষ থেকে তার পিতা ইহরাম করে নিবেন। আর এই শিশুকে ইহরামের কাপড় পরানো জরুরি নয়। সম্ভব হলে পরাবে এবং যথাসম্ভব ইহরামের নিষিদ্ধ জিনিস থেকেও তাকে বিরত রাখতে চেষ্টা করবে। প্রয়োজন হলে তাকে সেলাই করা পোশাক পরাতে পারবে এবং চেহারা ও মাথা ঢাকতেও পারবে।

শিশু-বাচ্চা ইহরামের নিষিদ্ধ কোনো কিছু করার দ্বারা তার উপর কিংবা তার অভিভাবকের উপর জরিমানা-দম বা অন্য কোনো কিছু ওয়াজিব হবে না। অভিভাবক তাকে নিয়ে তাওয়াফ-সায়ী করবে। আর তার পক্ষ থেকে তাওয়াফের দুই রাকাতও পড়তে হবে না। মিনা, আরাফায় নিজেদের সাথে সাথে রাখবে এবং তার পক্ষ থেকে কংকর নিক্ষেপ করবে। আর তার পক্ষ থেকে দমে শোকর আদায় করতে হবে না। ইহরাম ত্যাগ করার জন্য তার মাথা মুণ্ডন করে দিবে।

-মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ১১২-১১৩, ২৬৩; গুনইয়াতুন নাসিক ৮৩-৮৪; রদ্দুল মুহতার ২/৪৬৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৬৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমাদের এলাকায় কিছু লোক নিম্নোক্ত হাদীসটির ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। তাই...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় কিছু লোক নিম্নোক্ত হাদীসটির ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। তাই জনাবের সমীপে আকুল আবেদন যে, নিম্নোক্ত হাদীসটি তাহকীক করে তা আমলযোগ্য কি না তা জানানোর জন্য সুমর্জি কামনা করছি। হাদীসটি হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রা.কে বলেছেন, হে আলী! প্রত্যেক রাতে পাঁচ কাজ করে ঘুমাও। যথা : ১. চার হাজার দিনার সদকা করে ঘুমাও ২. এক খতম কুরআন পড়ে ঘুমাও ৩. জান্নাতের মূল্য আদায় করে ঘুমাও। ৪. দুজনের মাঝে বিবাদ মিটিয়ে ঘুমাও ও ৫. একটি হজ্ব আদায় করে ঘুমাও। আলী রা. বললেন, এটা তো অসম্ভব। কীভাবে আমি তা আদায় করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, চার বার সূরা ফাতিহা পড়ে ঘুমাও তাহলে চার হাজার দিনার সদকার সওয়াব পাবে। তিন মর্তবা সূরা ইখলাস পড়ে ঘুমাও তাহলে একবার কুরআন খতম করার সওয়াব পাবে। তিন বার দুরূদ পড়ে ঘুমাও তাহলে জান্নাতের মূল্য আদায় হয়ে যাবে। দশবার ইস্তেগফার পড়ে ঘুমাও তাহলে দুজনের বিবাদ মিটানোর সওয়াব পাবে। চারবার কালিমায়ে তামজীদ পড়ে ঘুমাও তাহলে একটি হজ্বের সওয়াব পাবে। হযরত আলী রা. বলেন, আমি প্রত্যহ রাতে এ আমল করে ঘুমাব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বর্ণনাটি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। হাদীসের নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবে উক্ত বর্ণনা নেই। এ ধরনের জাল ও ভিত্তিহীন কথা বর্ণনা করা এবং মানুষের মাঝে তা প্রচার করা মারাত্মক গুনাহ। আর রাসূলের হাদীস হিসেবে প্রচার করার গুনাহ তো আরো ভয়াবহ। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,নিঃসন্দেহে আমার উপর মিথ্যারোপ করা (এর ভয়াবহতা) অন্যের উপর মিথ্যারোপ করার মতো নয়। যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত আমার উপর মিথ্যারোপ করল সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামকে বানিয়ে নেয়। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৯

তাই মুসলমানের কর্তব্য হল, এ ধরনের বর্ণনা প্রচার করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকা এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করা।

প্রকাশ থাকে যে, সূরা ফাতিহা, সূরা ইখলাস, দরূদ, ইস্তেগফার ও কালিমার বিভিন্ন ফযীলত সহীহ হাদীস দ্বার প্রমাণিত আছে। সেসব ফযীলতসমূহই মানুষের মাঝে প্রচার করা কর্তব্য।

Ñফাতাওয়া লাজনায়ে দায়েমা ৩৭৮৯১; শায়েখ সালেহ আল উসাইমিন

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯৫০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার আব্বার বদলি হজ্ব করার জন্য আমরা যাকে নির্ধারণ করেছি...

প্রশ্ন

আমার আব্বার বদলি হজ্ব করার জন্য আমরা যাকে নির্ধারণ করেছি তিনি পূর্বে কখনো হজ্ব করেননি। এক লোক বলল, এমন ব্যক্তিকে দিয়ে বদলি হজ্ব করালে তা সহীহ হয় না। ঐ লোক কি ঠিক বলেছে?

উত্তর

যে ব্যক্তি নিজের হজ্ব আদায় করেনি তাকে দিয়ে বদলি হজ্ব করানো মাকরূহ। তবে এমন ব্যক্তিকে দিয়ে বদলি হজ্ব করালেও তা আদায় হয়ে যাবে। তাই প্রশ্নের ঐ কথা ঠিক নয়।

উল্লেখ্য যে, বদলি হজ্ব এমন ব্যক্তিকে দিয়ে করানো উত্তম যে ইতিপূর্বে নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেছে এবং হজ্বের মাসাইল সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে।

Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ১৫১৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩৩৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৩৫৪৪; মাবসূত, সারাখসী ৪/১৫১; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৬; ফাতহুল কাদীর ৩/৭৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬৯; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

গত বছর আমি হজ্বে গিয়েছিলাম। সেখানে এক জোড়া স্বর্ণের চুড়ি...

প্রশ্ন

গত বছর আমি হজ্বে গিয়েছিলাম। সেখানে এক জোড়া স্বর্ণের চুড়ি ক্রয় করি এবং পছন্দের জন্য হাতে পরে দেখি এবং সাথে সাথে খুলে ফেলি। প্রশ্ন হল, ইহরাম অবস্থায় স্বর্ণের চুড়ি হাতে দেওয়ার কারণে কি আমার উপর কোনো দম ওয়াজিব হয়েছে?

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় নারীদের জন্য স্বর্ণ-রূপার অলঙ্কার এবং চুড়ি পরা জায়েয। তাই চুড়ি পরার কারণে আপনার উপর কোনো দম ওয়াজিব হয়নি। হযরত নাফে রাহ. বলেন,আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর স্ত্রী ও কন্যাগণ ইহরাম অবস্থায় অলঙ্কার পরতেন।

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৪৪১৪; ফাতহুল কাদীর ২/৩৪৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪১০; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ১১৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯১৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি হজ্বে যাচ্ছেন। তার স্ত্রী ইতোপূর্বে নিজের...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি হজ্বে যাচ্ছেন। তার স্ত্রী ইতোপূর্বে নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেছেন। এখন আমি কি আমার পিতার বদলি হজ্ব ঐ মহিলাকে দিয়ে করাতে পারব? কোনো মহিলা কি পুরুষের বদলি হজ্ব করতে পারে?

উত্তর

মহিলার সাথে মাহরাম থাকলে মহিলাকে দিয়ে বদলি হজ্ব করালেও তা আদায় হয়ে যাবে। তবে ইতোপূর্বে নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেছে এবং হজ্বের বিধি বিধান সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে এমন পুরুষের মাধ্যমে বদলি হজ্ব করানোই উত্তম।

Ñসহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮৫৫; মানাসিক ৪৫৩; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৩৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৭; ফাতহুল কাদীর ৩/৭২; আদ্দররুল মুখতার ২/৬০৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৯১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার নানীর বোন হজ্বে যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন। তার ছেলেদের মধ্যে...

প্রশ্ন

আমার নানীর বোন হজ্বে যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন। তার ছেলেদের মধ্যে দ্বীনী শিক্ষায় শিক্ষিত বা পুরা দ্বীনদার কেউ নেই। তাই তিনি আমাকে সাথে করে হজ্বে যেতে চাচ্ছেন। প্রশ্ন হল, আমি কি তার মাহরাম? তিনি কি আমার সঙ্গে হজ্বে যেতে পারবেন? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

হাঁ, নানীর বোন মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। তাই তিনি আপনার সঙ্গে হজ্বে যেতে পারবেন।

Ñতাফসীরে কুরতুবী ৫/৭২; তাফসীরে রূহুল মাআনী ৪/২৫২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩০; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭৩; রদ্দুল মুহতার ৩/৩০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৭০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি ছোট বেলায় আমার আব্বার সঙ্গে হজ্ব করেছি। এখন আমি...

প্রশ্ন

আমি ছোট বেলায় আমার আব্বার সঙ্গে হজ্ব করেছি। এখন আমি বড় হয়েছি এবং আমার কাছে হজ্বে যাওয়ার মতো সম্পদ আছে। প্রশ্ন হল, আমার ছোটবেলার ঐ হজ্বটিই কি ফরয হজ্ব হিসেবে আদায় হয়ে গেছে, নাকি আবার হজ্ব করতে হবে? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

আপনার ছোটবেলার হজ্বটি নফল হিসেবে আদায় হয়েছে। তাই আপনাকে ফরয হজ্ব আদায় করতে হবে।

ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে বালক হজ্ব করবে অতপর প্রাপ্তবয়স্ক হবে তাকে আরেকটি হজ্ব করতে হবে ।

-আলমুজামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ৭২৫২; মাজমাউয যাওয়াইদ ৩/৪৭৩ (হাদীস ৫২৫৪); মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৫১০৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৩; আলবাহরুল আমীক ১/৩৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

গত বছর আমার আব্বা-আম্মার হজ্ব করার ইচ্ছা ছিল এবং টাকাও...

প্রশ্ন

গত বছর আমার আব্বা-আম্মার হজ্ব করার ইচ্ছা ছিল এবং টাকাও জমা দিয়েছিলেন। হঠাৎ রমযান মাসের শেষ দিকে আব্বা মারা যান। এ অবস্থায় আমার আম্মার হজ্বে যাওয়ার হুকুম কী? এক্ষেত্রে তার জন্য ইদ্দত পালন করাই জরুরি, না হজ্বে যাওয়া?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার আম্মার জন্য ইদ্দত পালন করা আবশ্যক। ইদ্দত অবস্থায় হজ্বে যাওয়া জায়েয নয়। খলিফায়ে রাশেদ হযরত ওমর ও ওসমান রা.সহ অনেক সাহাবী থেকে প্রমাণিত আছে যে, তাঁরা এমন অনেক মহিলাকে হজ্ব ও উমরা থেকে বারণ করেছেন, যারা ইদ্দত পালন করা অবস্থায় হজ্ব ও উমরার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৯১৭৮, ১৯১৭৯, ১৯১৮০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৯; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/৪৮৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৮৩২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

কেউ যদি হজ্বের সায়ী ১২ যিলহজ্বের ভিতর আংশিক বা পুরোই...

প্রশ্ন

কেউ যদি হজ্বের সায়ী ১২ যিলহজ্বের ভিতর আংশিক বা পুরোই আদায় না করে তাহলে তার কী করণীয়? ১২ যিলহজের পর যদি সে তা আদায় করে নেয় তবে কি তার উপর কোনো জরিমানা ওয়াজিব হবে?

উত্তর

না, হজ্বের সায়ী আংশিক বা পুরোটা ১২ যিলহজ্বের পর আদায় করলেও কোনো জরিমানা আসবে না। কেননা হজ্বের সায়ী ১২ যিলহজ্বের ভেতর করা জরুরি নয়। তবে হজ্বের সায়ীর ক্ষেত্রে সুন্নত হল,তাওয়াফে যিয়ারতের পরপরই তা আদায় করে নেওয়া এবং পুরো সায়ী একসাথে আদায় করা। তাই কোনো ওজর ছাড়া তাওয়াফে যিয়ারতের পর সায়ী করতে বিলম্ব করা অনুত্তম।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৫২; মানাসিক, মুল্লা আলি কারী পৃ. ১৭০, ১৭৯, ৩৫৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭১৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি গত বছর হজ্ব করেছি। আলহামদু লিল্লাহ। সবগুলো আমল নিজে...

প্রশ্ন

আমি গত বছর হজ্ব করেছি। আলহামদু লিল্লাহ। সবগুলো আমল নিজে সুন্দরভাবে আদায় করেছি। কিন্তু ১০ যিলহজ্ব বড় জামারায় প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে নিজে কংকর মারতে পরিনি। যে কারণে আমি স্বামীকে দিয়ে ঐ দিন কংকর নিক্ষেপ করাই। আর ১১ ও ১২ যিলহজ্বের কংকর নিজেই মারি।

দেশে আসার পর জানতে পারলাম, স্বামীকে দিয়ে কংকর মারানো নাকি বৈধ হয়নি। যদি তাই হয় তাহলে এখন আমার করণীয় কী?

উত্তর

জামারাতে (কংকর মারার স্থান) বর্তমানে কংকর মারার জন্য ব্যাপক প্রশস্ত ব্যবস্থা রয়েছে। তাই শুধু ভিড়ের অযুহাতে নিজে কংকর না মেরে অন্যকে দিয়ে তা নিক্ষেপের সুযোগ নেই। আর দিনে ভীড় থাকলেও রাতে তেমন ভিড় থাকে না। তাই রাতে খুব সহজেই কংকর মারা যায়।

অতএব উক্ত অবস্থায় অন্যকে দিয়ে কংকর মারানোর কারণে তা আদায় হয়নি। এ কারণে আপনার উপর জরিমানা দম ওয়াজিব হয়েছে। এখন আপনার কর্তব্য হল, কারো মাধ্যমে হেরেমের এলাকায় ন্যূনতম এক বছর বয়সী একটি ছাগল বা দুম্বা অথবা ভেড়া যবাই করিয়ে দেয়া।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, ১৫৩৯৪; গুনইয়াতুন নাসিক ১৮৮; যুবদাতুল মানাসিক ১৮৪; হজ্ব ওয়া উমরা কে জাদীদ মাসাইল আওর উনকা হল, ইসলামিক ফিকহ একাডেমী, ভারত, ৫৯৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৭০৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

বৃদ্ধ লোকদের জন্য কালো খেযাব বা অন্য রঙের খেযাব ব্যবহারের...

প্রশ্ন

বৃদ্ধ লোকদের জন্য কালো খেযাব বা অন্য রঙের খেযাব ব্যবহারের হুকুম কী? দলিলসহ বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব। এছাড়া যুবকদের অসুস্থতা বা কোনো কারণে চুল সাদা হয়ে গেলে তারা কালো খেযাব ব্যবহার করতে পারবে কি?

উত্তর

বার্ধক্যের কারণে চুল-দাড়ি পেকে গেলে তাতে কালো খেযাব ব্যবহার করা নাজায়েয। একাধিক হাদীসে এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ার এসেছে।

হাদীস শরীফে এসেছে, মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা.-এর পিতা আবু কুহাফা রা.-এর চুল এবং দাড়ি পাকা দেখে বললেন, এটাকে কোনো কিছু দ্বারা পরিবর্তন কর। তবে কালো থেকে বিরত থাক।Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৪৬৬

আরেক হাদীসে আছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, শেষ যমানায় কিছু লোক কবুতরের ঝুঁটির মতো কালো খেযাব ব্যবহার করবে তারা কেয়ামতের দিন জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস, ৪২০৯

অবশ্য কোনো যুবকের অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে যদি চুল-দাড়ি পাকার বয়সের আগেই সাদা হয়ে যায় তবে সে কালো খেযাব ব্যবহার করতে পারবে। আহমাদ আলী সাহারানপুরী বলেন, হাদীসে কালো খেযাব ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। এর মূল কারণ অন্যদের সামনে বয়স গোপন করা এবং অন্যকে ধোঁকা দেওয়া। Ñহাশিয়া সহীহ বুখারী ১/৫৩০

যুবকের ক্ষেত্রে ধোঁকার এই দিকটি অনুপস্থিত। তাই কোনো কোনো ফকীহ যুবকদের জন্য কালো খেযাব জায়েয হওয়ার মত দিয়েছেন। (ফায়যুল কাদীর ১/৩৩৬; ইমদাদুল আহকাম ৩/৩৭৬) তাবেয়ী ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. বলেন, আমাদের চেহারা যখন সতেজ ছিল তখন আমরা কালো খেযাব ব্যবহার করতাম। আর যখন আমাদের চেহারা মলিন হয়ে গেল এবং দাঁত নড়বড়ে হয়ে গেল তখন আমরা কালো খেযাব ছেড়ে দিয়েছি।Ñফাতহুল বারী ১০/৩৬৭

অবশ্য হাদীসে যেহেতু কালো খেযাবকে বিশেষভাবে নিষেধ করা হয়েছে তাই যুবকদের জন্যও একেবারে কালো খেযাব ব্যবহার না করে লাল কালো মিশ্রিত খেযাব ব্যবহার করাই উচিত হবে। Ñতুহফাতুল আহওয়াযী ৫/১৫৪; ফায়যুল কাদীর ১/৩৩৬

আর বার্ধক্যের কারণে চুল পেকে গেলে কালো খেযাব ছাড়া অন্য খেযাব ব্যবহার করা মুস্তাহাব। যেমন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু কুহাফা রা.কে কালো খেযাব ছাড়া অন্য খেযাব ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অন্য এক হাদীসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হলুদ রং ব্যবহার করতে দেখেছি তাই আমিও হলুদ রং ব্যবহার করতে পছন্দ করি।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৮৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমরা তো জানি, ইহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত কাপড় পরা জায়েয নয়।...

প্রশ্ন

আমরা তো জানি, ইহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত কাপড় পরা জায়েয নয়। প্রশ্ন হল, লুঙ্গির ক্ষেত্রেও কি একই হুকুম? না এক্ষেত্রে মাসআলা ভিন্ন?

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য শরীরের কোন অঙ্গের আকৃতিতে সেলাই করা পোশাক পরা নাজায়েয। যেমন, পাঞ্জাবী, পায়জামা, গেঞ্জি ও মোজা ইত্যাদি। আর লুঙ্গি যেহেতু পায়জামার মত কোনো অঙ্গের আকৃতিতে বানানো নয় তাই সেলাইযুক্ত লুঙ্গি পরা নাজায়েয নয়। তবে খোলা চাদর পরলে যাদের সতরের অঙ্গগুলো বা তার অংশবিশেষ খুলে যাওয়ার আশংকা না থাকে তাদের জন্য সেলাইযুক্ত লুঙ্গি না পরাই উচিত। কেননা ইহরামের কাপড় একেবারে সেলাইমুক্ত হওয়া উত্তম। তাই সম্ভব হলে ইহরাম অবস্থায় সেলাইবিহীন চাদরই পরবে। কিন্তু সেলাইবিহীন চাদর পরলে কারো যদি সতর খুলে যাওয়ার আশংকা থাকে তবে তার জন্য সেলাই করা লুঙ্গি ব্যবহার করা অনুত্তম হবে না।

Ñমানাসিক, পৃ. ৯৮, ১২০; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৮/৭৫; আহকামে হজ্ব, মুফতী মুহাম্মাদ শফী পৃ.৩৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৮৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

মহিলাদের জন্য কি ইহরাম অবস্থায় হাত-মোজা, পা-মোজা পরা জায়েয আছে?...

প্রশ্ন

মহিলাদের জন্য কি ইহরাম অবস্থায় হাত-মোজা, পা-মোজা পরা জায়েয আছে? দলীল-প্রমাণসহ জানালে উপকৃত হব। সহীহ বুখারীতে নাকি আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম অবস্থায় মহিলাদের হাতমোজা পরতে নিষেধ করেছেন?

উত্তর

মহিলাদের জন্য ইহরাম অবস্থায় হাতমোজা, পা-মোজা পরা জায়েয।

হাদীস শরীফে আছে, সালেম রাহ. বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. মুহরিম মহিলাদের পা-মোজা কেটে দিতেন। কিন্তু সফিয়া বিনতে আবু উবাইদা রা. তাঁর কাছে আয়েশা রা.-এর এ হাদীস যখন বর্ণনা করলেন যে, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহরিম মহিলাদের পা-মোজা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন’ এরপর থেকে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. মুহরিম মহিলাদের পা-মোজা আর কেটে দিতেন না। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৮৩১

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহিলাগণ ইহরাম অবস্থায় হাত-মোজা ও পা-মোজা পরিধান করতে পারবে। Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৪৪

সাআদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি ইহরাম অবস্থায় তার কন্যাদেরকে হাত-মোজা পরার নির্দেশ দিতেন। Ñকিতাবুল উম ২/২২৩

কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ, হাসান বসরী, হাকাম ও হাম্মাদ রাহ. প্রমুখ তাবেয়ীগণ থেকেও ইহরাম অবস্থায় মহিলাদের হাতমোজা পরা জায়েয হওয়ার কথা বর্ণিত আছে। Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১৫৯৬৭, ১৪৪৪১

আর প্রশ্নে সহীহ বুখারীর উদ্ধৃতিতে যে হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে তা মূলত মাওক‚ফ হাদীস। অর্থাৎ আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর উক্তি। (আস সুনানুল কুবরা, বাইহাকী ৪/৪৭; ফাতহুল বারী ৪/৬৪)

আর উপরে আমরা দেখেছি, একাধিক সাহাবী ও তাবেয়ীর মত এক্ষেত্রে এটিই যে, মহিলাগণ ইহরাম অবস্থায় হাতমোজা পরবে। ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম শাফেয়ী রাহ.-সহ অনেক ফকীহের মতে এ অভিমতটিই অধিক শক্তিশালী।

Ñকিতাবুল উম ২/২২৩; আলমাবসূত সারাখসী ৪/৩৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৬৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আলহামদু লিল্লাহ, আল্লাহ তাআলা গত বছর হজ্বে নিয়েছিলেন। যাওয়ার সময়...

প্রশ্ন

আলহামদু লিল্লাহ, আল্লাহ তাআলা গত বছর হজ্বে নিয়েছিলেন। যাওয়ার সময় বাসার পাশের মসজিদ থেকে ইহরাম বাধি। ইহরাম বেধে যখন এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হব তখন পাশের এক আত্মীয়ের বাসার সামনে নিম

গাছ থেকে মেসওয়াকের জন্য একটি ডাল ভাংতে যাই তখন কাফেলার এক সাথী বললেন, ইহরাম বাঁধার পর সব ধরনের গাছের ডাল ভাঙ্গা, প্রাণী শিকার করা নিষিদ্ধ।

জানার বিষয় হল, ঐ সাথীর কথা কি ঠিক? নিজ দেশ থেকে ইহরাম বাঁধলে তখন থেকেই কি প্রাণী শিকার করা ও যে কোনো ধরনের গাছের ডাল ভাঙ্গা নিষিদ্ধ হয়ে যায়?

উত্তর

আপনার সাথীর ঐ কথা ঠিক নয়। ইহরামের কারণে হারামের সীমানার বাইরে কোনো গাছ কাটা বা ডাল ভাঙ্গা নিষিদ্ধ নয়। তবে হেরেমের এলাকার গাছ কাটা বা ডাল ভাঙ্গা ইহরাম থাক বা না থাক সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ। আর একথা ঠিক যে, ইহরাম বাঁধার পর যে কোনো স্থানের প্রাণী শিকার করা নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহরাম অবস্থায় শিকারের প্রাণী হত্যা করো না।

-সূরা মায়েদা : ৯৫; গুনইয়াতুন নাসিক ২৮১, ৩০৪; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৩৮৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৫৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

ক) আমার হজ্ব করার সামর্থ্য নেই, কিন্তু ওমরাহ করার সামর্থ্য...

প্রশ্ন

ক) আমার হজ্ব করার সামর্থ্য নেই, কিন্তু ওমরাহ করার সামর্থ্য আছে। এখন আমার জন্য কি ওমরাহ করা আবশ্যক?

খ) হজ্বের মতো ওমরার জন্য কি নির্দিষ্ট সময় আছে?

গ) শুনেছি, কাবা শরীফ দেখলে নাকি হজ্ব ফরয হয়ে যায়- এ কথা কি ঠিক? তাহলে আমি ওমরাহ করলে কি আমার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যাবে?

উপরোক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে শরঈ সমাধান জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

ওমরারর সামর্থ্য থাকলে জীবনে একবার ওমরাহ করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ। অতএব এ অবস্থায় আপনার জন্য ওমরাহ করা সুন্নত। আর ওমরার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। শুধু যিলহজ্ব মাসের ৯-১৩ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দিন ওমরাহ করা মাকরূহ। এছাড়া বছরের যে কোনো সময় ওমরাহ করা জায়েয আছে। আর রমযান মাসে ওমরাহ করা সবচেয়ে উত্তম। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমযানে একটি ওমরাহ করা আমার সাথে একটি হজ্ব করার সমতুল্য। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৮৬৩

আর কাবা শরীফ দেখলেই হজ্ব ফরয হয়ে যায়- এ ধারণা ঠিক নয়। হজ্ব ফরয হওয়ার সাথে কাবা শরীফ দেখা-না দেখার কোনো সম্পর্ক নেই। বরং হজ্ব ফরয হওয়ার জন্য শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি হজ্বের মৌসুমে হজ্বে আসা-যাওয়ার খরচসহ তার অনুপস্থিতির দিনগুলোতে পরিবারের চলার মতো স্বাভাবিক খরচের ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাছাড়া বাইরে থেকে ওমরার ভিসায় গিয়ে হজ্ব করা নিষেধ। তাই ওমরাহ করতে গিয়ে হজ্ব পর্যন্ত থেকে যাওয়ারও সুযোগ নেই।

-গুনইয়াতুন নাসিক ২২, ১৯৬; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৬৩; আততাজরীদ ৪/১৬৮৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬৩৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসার মূলধন ছাড়া প্রয়োজন অতিরিক্ত হজ্ব করার...

প্রশ্ন

আমি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসার মূলধন ছাড়া প্রয়োজন অতিরিক্ত হজ্ব করার মতো সম্পদ নেই। তবে ব্যবসার মূলধন বিক্রি করে হজ্ব করতে পারব। কিন্তু পরে ব্যবসা করার জন্য কোনো মূলধন বাকি থাকবে না। ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে হবে। উল্লেখ্য যে, ব্যবসার আয় থেকেই পরিবারের খরচ নির্বাহ করি। হুযুরের নিকট জানতে চাই, এ অবস্থায় আমার উপর হজ্ব ফরয হবে কি না? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত ব্যবসার উপরই যেহেতু আপনার সংসারের ব্যয় নির্ভরশীল এবং ব্যবসার টাকা দিয়ে হজ্বে গেলে পুঁজিই শেষ হয়ে যাবে তাই এক্ষেত্রে ঐ ব্যবসার মূলধন প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত। অতএব ঐ ব্যবসার মূলধনের কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয হবে না। অবশ্য সংসারের খরচ নির্বাহ হয়ে যায়- এ পরিমাণ ব্যবসার মাল রেখে অতিরিক্ত সম্পদ দ্বারা হজ্ব করা যখন সম্ভব হবে তখন হজ্ব ফরয হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮;

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৬২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার এক বন্ধু তার নিজ খরচে আমাকে হজ্বে নিয়ে গেছে।...

প্রশ্ন

আমার এক বন্ধু তার নিজ খরচে আমাকে হজ্বে নিয়ে গেছে। আমার উপর বর্তমানে হজ্ব ফরয নয়। আমি জানতে চাই যে, পরবর্তীতে আমি যদি হজ্বের খরচ সমপরিমাণ সম্পদের মালিক হই তাহলে আমাকে কি পুনরায় হজ্ব করতে হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

ফরয হজ্ব আদায় হওয়ার জন্য নিজ খরচে হজ্ব করা জরুরি নয়। বরং অন্যের খরচে হজ্ব করলেও ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যায়। তবে যদি কেউ ইচ্ছা করে নফল হজ্ব আদায়ের নিয়ত করে থাকে সেটা ভিন্ন কথা। এক্ষেত্রে তার ফরয হজ্ব আদায় হবে না। তবে সাধারণ হজ্বের নিয়তে করলে ফরয হজ্বই আদায় হবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইহরামের সময় আপনি নফল হজ্বের নিয়ত না করে থাকলে এর দ্বারা আপনার ফরয হজ্বই আদায় হয়েছে। পরবর্তীতে সামর্থ্যবান হলেও আপনার উপর পুনরায় হজ্ব করা ফরয হবে না। পরবর্তীতে হজ্ব করলে তা নফল হিসেবেই গণ্য হবে।

- ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮১; রদ্দুল মুহতার ২/৪৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৯২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

গত বছর আমি হজ্বে গিয়েছিলাম। দেশ থেকে ইহরাম বেঁধে যাইনি।...

প্রশ্ন

গত বছর আমি হজ্বে গিয়েছিলাম। দেশ থেকে ইহরাম বেঁধে যাইনি। ইচ্ছা ছিল মীকাত অতিক্রম করার আগে ইহরাম বেঁধে নেব। কিন্তু পরে আর মনে ছিল না। ইহরাম না বেঁধে মীকাত অতিক্রম করেছি। জেদ্দা বিমান বন্দরে নামার পর আমার এক আত্মীয় জানতে পারলে বলেন, আগে মদীনায় আমার বাসায় চলে আসুন। পরে হজ্বের আগে মদীনা থেকে ইহরাম বেঁধে হজ্ব করতে পারবেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী আমি প্রথমে হারামে প্রবেশ না করে অন্য পথে সরাসরি মদীনায় গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে হজ্ব করেছি। দেশে আসার পর এক ব্যক্তি বললেন, ইহরাম না বেঁধে মীকাত অতিক্রম করার কারণে নাকি আমার উপর দম ওয়াজিব হয়েছে।

তাই জানার বিষয় হল, ইহরাম না বেঁধে মীকাত অতিক্রম করার কারণে কি আমার উপর দম ওয়াজিব হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইহরাম না বেঁধে জেদ্দায় চলে এলেও পরবর্তীতে সেখান থেকে যেহেতু আপনি সরাসরি মক্কা মুকাররমায় যাননি; বরং মদীনায় গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে হেরেমে গিয়েছেন তাই আপনার উপর দম ওয়াজিব হয়নি।

উল্লেখ্য যে, উমরাহ বা হজ্বের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার সময় নিজ এলাকা থেকেই ইহরাম বেঁধে নেওয়া উত্তম। সাহাবায়ে কেরাম সিরিয়া, বসরা, বায়তুল মাকদিস, কাদেসিয়ার মতো দূর-দূরান্ত এলাকা থেকে ইহরাম বেঁধে হজ্ব করতে আসতেন। এই মাসআলার উপর আমল করলে উক্ত জটিলতায় পড়তে হত না।

-সুনানে আবু দাউদ ২/৪১৩; মুসনাদে আহমাদ ৪৪/১৮১; আততামহীদ ১৫/১৪৫; সুনানে বায়হাকী ৫/৩১; মাবসূত, সারাখসী ৪/১৭৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৭৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/৪৮; ফাতহুল কাদীর ৩/৩৩৪; ইরশাদুস সারী আলা মানাসিকি মোল্লা আলী কারী ৯৪-৯৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৬০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি এ বছর হজ্বে যাওয়ার নিয়ত করেছি। আমার কাছে হজ্বের...

প্রশ্ন

আমি এ বছর হজ্বে যাওয়ার নিয়ত করেছি। আমার কাছে হজ্বের খরচ পরিমাণ টাকা আছে। তবে আমার উপর স্ত্রীর মোহর বাবদ ১ লক্ষ টাকা ঋণ আছে, যা বিয়ের সময় পরে আদায়ের কথা হয়েছিল। এখন মহরের ঐ টাকা আদায় করলে হজ্বের যথেষ্ট পরিমাণ টাকা অবশিষ্ট থাকবে না।

এ অবস্থায় আমার উপর কি হজ্ব করা ফরয হবে, নাকি আগে মোহর আদায় করতে হবে? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্ত্রীর মোহর বাকি থাকলেও তা আদায়ের আগে হজ্বে যেতে পারবেন এবং এর দ্বারা আপনার ফরয হজ্বই আদায় হবে। বকেয়া মোহর যেহেতু আপনাকে এখনই আদায় করতে হচ্ছে না তাই এ কারণে হজ্ব বিলম্বিত করা ঠিক হবে না। হ্যাঁ, আপনি যদি এ টাকা থেকেই স্ত্রীর মোহর আদায় করে দেন তাহলে অবশিষ্ট টাকা দ্বারা যেহেতু হজ্বের খরচ হবে না তাই এক্ষেত্রে হজ্বও ফরয হবে না। কিন্তু যদি এখন মোহর আদায়ের নিয়ত না থাকে তবে ঐ টাকার কারণে হজ্ব ফরয হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৬১; আলমানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৩; আলবাহরুল আমীক ১/৩৭৭; ইরশাদুস সারী ৫৯; আলজাওহারাতুন নাইয়্যিরাহ ১৯২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৫৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার আব্বা অনেকগুলো জমির মালিক। বেশ কিছু জমি তার এমন...

প্রশ্ন

আমার আব্বা অনেকগুলো জমির মালিক। বেশ কিছু জমি তার এমন রয়েছে, যেগুলোর ফসল ছাড়াই আমাদের খোরাকির প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায়। জমিজমা ব্যতীত আব্বার বাড়তি কোনো আয় নেই। জানতে চাই আমার আব্বার উপর কি হজ্ব ফরয?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সংসারের খরচের জন্য প্রয়োজন হয় না এমন জমিগুলো বা তার অংশবিশেষ বিক্রি করলে যদি আপনার আব্বার হজ্বের খরচ হয়ে যায় তাহলে আপনার আব্বার উপর হজ্ব করা ফরয। এক্ষেত্রে জমি বিক্রি করে হলেও তাকে হজ্বে যেতে হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫৪১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আগামী সপ্তাহে আমি জেদ্দায় একটি ব্যবসায়িক কনফারেন্সে যাব। আমার ইচ্ছা...

প্রশ্ন

আগামী সপ্তাহে আমি জেদ্দায় একটি ব্যবসায়িক কনফারেন্সে যাব। আমার ইচ্ছা হল, মিটিং শেষ হওয়র পর সুযোগ পেলে সেখান থেকে মক্কা শরীফ গিয়ে ওমরাহ করে আসব। ইহরাম বেঁধে কনফারেন্সে যাওয়া সম্ভব নয় তাই হুযুরের কাছে জানতে চাই, এ অবস্থায় আমি ইহরাম না বেঁধে জেদ্দায় কনফারেন্সে যেতে পারব কি না? এরপর কনফারেন্স শেষে সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে ওমরাহ করলে কি আমার উপর দম ওয়াজিব হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু কনফারেন্সের উদ্দেশ্যেই জেদ্দা যাচ্ছেন তাই এ অবস্থায় আপনার জন্য ইহরাম না বেঁধে জেদ্দায় যাওয়া জায়েয হবে। কনফারেন্স শেষে জেদ্দাবাসীদের মতো আপনি সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে ওমরাহ করতে পারবেন। এ কারণে আপনার উপর কোনো জরিমানা বা দম ওয়াজিব হবে না।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৭৭; আলবাহরুর রায়েক ৩/৪৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪১৫; আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১৬৮; আলবাহরুল আমীক ২/৩১৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫০৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার আববা অনেকগুলো জমির মালিক। বেশ কিছু জমি তার এমন...

প্রশ্ন

আমার আববা অনেকগুলো জমির মালিক। বেশ কিছু জমি তার এমন রয়েছে যেগুলোর ফসল ছাড়াই আমাদের খোরাকীর প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায়। জমি-জমা ব্যতীত আববার বাড়তি কোনো সম্পদ নেই। জানতে চাই যে, এমতাবস্থায় আমার আববার উপর হজ্ব ফরয হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সংসারের প্রয়োজনে আসে না এমন জমি বা তার অংশবিশেষ বিক্রি করলে যদি হজ্বের খরচ হয়ে যায় তাহলে আপনার আববার উপর হজ্ব করা ফরয। এ ক্ষেত্রে জমি বিক্রি করে হলেও তাকে হজ্বে যেতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮; কাযী খান ১/২৮২; গুনইয়াতুন নাসিক ২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৫০০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমাদের অফিসে জামাতের সাথে নামায আদায় করা হয়। এতে ইমামতির...

প্রশ্ন

আমাদের অফিসে জামাতের সাথে নামায আদায় করা হয়। এতে ইমামতির জন্য একজন হুযুরও আছেন। অসুস্থতার কারণে একদিন তিনি না আসায় আমাদের জিএম স্যার ইমামতি করেন। তিনি কয়েক বছর আগে হজ্ব করেছেন এবং তখন থেকেই দাড়ি রাখছেন। তবে কোমরে ব্যথার কারণে তিনি চেয়ারে বসে নামায আদায় করেন এবং ইশারায় রুকু-সিজদা করেন। সেদিনও তিনি চেয়ারে বসেই নামায পড়িয়েছেন। এতে আমাদের মনে কিছুটা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তাই জানার বিষয় হল, আমাদের ঐ নামায কি সহীহ হয়েছে? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

না, ঐ নামায সহীহ হয়নি। চেয়ারে বসে নামায আদায়কারীর পিছনে সুস্থ ব্যক্তির ইকতিদা করা সহীহ নয়। কারণ চেয়ারে নামায আদায়কারী ইশারায় নামায আদায়কারীর অন্তর্ভুক্ত। আর ইশারায় নামায আদায়কারীর পিছনে সুস্থ ব্যক্তির ইকতিদা সহীহ নয়। অতএব সকল মুকতাদিকে সেদিনের ফরয নামাযটি কাযা করে নিতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৮০; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৬০; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৭৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৯২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন তাই...

প্রশ্ন

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন তাই আমরাও দাঁড়িয়ে পান করি। এক আলেম হজ্ব করে যমযমের পানি নিয়ে এলে আমরা তা দাঁড়িয়ে পান করলাম। তখন তিনি ধমক দিয়ে বসিয়ে দেন এবং বলেন, আল্লাহর রাসূল ভীড় থাকার কারণে যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। তাই ভীড় থাকলে যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করা জায়েয অন্যথায় জায়েয নেই।

জানার বিষয় হল, যমযমের পানি পান করার সুন্নত তরীকা কী? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

যমযম পানি সাধারণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে-বসে দুভাবেই পান করা জায়েয। ভীড় না থাকলে দাঁড়িয়ে পান করা জায়েয নেই-প্রশ্নের এ কথা ঠিক নয়। ভীড় ছাড়াও যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করা যে জায়েয আছে এ সম্পর্কে ফিকহ-ফাতাওয়ার অনেক কিতাবে এবং হাদীসের শরাহগ্রন্থসমূহে উল্লেখ আছে। যেমন আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫; শরহুল মুনইয়াহ ৩৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৪; উমদাতুল কারী ৯/২৭৮; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/১৬৫-১৬৬

উপরন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন-এ হাদীসের ভিত্তিতে বহু ফকীহ ও মুহাদ্দিস যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম ও আদব বলেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন শামসুল আইম্মা হালওয়ানী রাহ., শাইখুল ইসলাম খাহারযাদা রাহ. (আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৯), ইবরাহীম হালাবী রাহ. (শরহুল মুনইয়াহ ৩৬), মোল্লা আলী কারী রাহ. (শরহুশ শামায়েল ১/২৫০), সহ প্রমুখ ফকীহ ও হাদীসবিশারদ।

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূলত ভীড়ের কারণেই যমযম দাঁড়িয়ে পান করেছেন এটি কোনো সুনিশ্চিত ও চূড়ান্ত কথা নয় এবং তা হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণিতও নয়; বরং ফিকহ ও হাদীসবিশারদগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাঁড়িয়ে যমযম পান করার সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে একটি ভীড়ের কারণকেও উল্লেখ করেছেন। তারা আরো যে সমস্ত কারণকে উল্লেখ করে থাকেন তা হল,

১. যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করাও যে জায়েয তা বুঝানোর জন্য।

২. বসার যথাযথ ব্যবস্থা না থাকা অর্থাৎ পান করার স্থানটি ভেজা বা স্যঁতস্যঁতে হওয়ার কারণে তিনি দাঁড়িয়ে পান করেছেন।

সুতরাং এ সব কারণের মধ্যে শুধু একটিকে গ্রহণ করে বাকিগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া আদৌ ঠিক নয়।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৬৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

গত বছর হজ্ব আদায়ের সময় আরাফার ময়দানে পাথরের সাথে হোঁচট...

প্রশ্ন

গত বছর হজ্ব আদায়ের সময় আরাফার ময়দানে পাথরের সাথে হোঁচট খেয়ে আমার বাম পায়ের একটি নখ ভেঙ্গে যায় এবং তা কোনো রকম চামড়ার সাথে লেগে থাকে। এই অবস্থায় আমার হাঁটতে প্রচ- কষ্ট হয়। তাই ভাঙ্গা নখটি কেটে ফেলি। এর ফলে কি আমার উপর কোনো দম বা সদকা ওয়াজিব হয়েছে?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ নখ কেটে ফেলার কারণে কোনো কিছু ওয়াজিব হয়নি। কেননা ইহরাম অবস্থায় হাত বা পায়ের কোনো নখ ভেঙ্গে গেলে তা কেটে ফেলা জায়েয। এ ধরনের নখ কেটে ফেললে দম বা সদকা কিছুই ওয়াজিব হয় না।

-কিতাবুল আছল ২/৪৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪২৫; মানাসিক ৩৩১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৫৮৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৪৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার কাছে হজ্বে যাওয়ার মতো টাকা আছে। কিন্তু আমার এখন...

প্রশ্ন

আমার কাছে হজ্বে যাওয়ার মতো টাকা আছে। কিন্তু আমার এখন বিয়ে করার প্রয়োজন। এ টাকা দিয়ে হজ্ব করলে বিয়ের খরচের জন্য টাকা থাকবে না। আর বিয়ে করলে হজ্ব করা যাবে না। এখন এক্ষেত্রে আমার জন্য হজ্ব করা কি জরুরি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হজ্বের টাকা জমা দেওয়া ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার শেষ সময়ের আগেই যদি আপনি বিয়ে করে ফেলেন আর বিয়েতে ঐ টাকা খরচ হয়ে যায় তবে আপনার উপর হজ্ব ফরয হবে না। কিন্তু হজ্বের প্রস্তুতি গ্রহণের শেষ সময় পর্যন্ত যদি ঐ টাকা খরচ না হয় তবে ঐ টাকার কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যাবে।

-ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭৩; ফাতহুল কাদীর ২/৩২৩; গুনইয়াতুন নাসিক ২২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৪৩০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি ৫৬ বছর বয়সের একজন বিধবা নারী। এ পৃথিবীতে আমার...

প্রশ্ন

আমি ৫৬ বছর বয়সের একজন বিধবা নারী। এ পৃথিবীতে আমার মাহরাম বলতে এক বয়োবৃদ্ধ ভাই ছাড়া কেউ নেই। আমার হজ্বে যাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। শুনেছি মহিলাদের মাহরাম ছাড়া হজ্বে যাওয়ার অনুমতি নেই। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আর্থিক সামর্থ্য থাকার কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয। তবে মাহরামের ব্যবস্থা না হলে নিজে হজ্বে যাবেন না। এক্ষেত্রে অন্যকে দিয়ে বদলী হজ্বের ব্যবস্থা করবেন। অথবা বদলী হজ্বের ওসিয়ত করে যাবেন।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬৮৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৫-৩১৬; মানাসিক ৬৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৭৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

গ্রামে বা শহরে কোনো পুরুষ বা নারী মৃত্যুবরণ করলে লাশের...

প্রশ্ন

গ্রামে বা শহরে কোনো পুরুষ বা নারী মৃত্যুবরণ করলে লাশের কাফন-দাফনে অনেক ক্ষেত্রে বেশ বিলম্ব করা হয়। গ্রাম থেকে শহরে বা শহর থেকে গ্রামে আত্মীয়স্বজন আসার অপেক্ষা করা হয়। কিংবা শহর থেকে লাশকে গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রয়োজনে হিমাগারেও রাখা হয়। আর মৃত ব্যক্তি নামি-দামি বা বিশেষ ব্যক্তি হলে বিভিন্ন স্থানে লাশ রাখা হয়, কয়েক দফা জানাযার নামায আদায় করা হয়। আবার কেউ দেশের বাইরে মারা গেলে তাকে দেশে এনে দাফন করা হয়। এতে ২, ৪, ৬ মাসও বিলম্ব হয়ে যায়। তাই জানার বিষয় হল, লাশের প্রতি এরূপ আচরণ সম্পর্কে শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি কী? দয়া করে বিস্তারিত দলিল-প্রমাণের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নে মূলত দুটি বিষয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে। এক. মৃতের জানাযা বিলম্ব করার হুকুম।

দুই. মৃত ব্যক্তি যে স্থানে মারা গেছে সেখান থেকে অন্যত্র নিয়ে দাফন করার হুকুম।

নিম্নে উভয় প্রশ্নের উত্তর প্রদত্ত হল।

এক. কোনো ব্যক্তি মারা গেলে শরীয়তের নির্দেশনা হল বিলম্ব না করে তাকে গোসল দিবে, কাফন পরাবে। অতপর জানাযা নামায পড়ে দ্রুত দাফন করে দিবে। একাধিক হাদীসে মৃত্যুর পর থেকে দাফন পর্যন্ত সকল কাজ দ্রুত আঞ্জাম দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং বিলম্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে।

যেমন, সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত হয়েছে, তালহা ইবনে বারা রা. অসুস্থ হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে দেখতে গেলেন। অতপর বললেন, আমি তালহার মধ্যে মৃত্যুর আলামত দেখতে পাচ্ছি। অতএব (সে মারা গেলে) এ সম্পর্কে আমাকে অবহিত করবে। আর তোমরা দ্রুত কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করবে। কেননা কোনো মুসলমানের মৃতদেহকে পরিবারস্থ লোকদের মাঝে আটকে রাখা উচিত নয়। হাদীস : ৩১৫৯

অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের মধ্যে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তোমরা তাকে আটকে রেখো না। তাকে দ্রুত দাফন করে দিও।-আলমুজামুল কাবীর, তাবারানী, হাদীস : ১৩৬১৩; ফাতহুল বারী ৩/২১৯

সুনানে ইবনে মাজাহ্য় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, জানাযার জন্য লাশ উপস্থিত হলে জানাযা নামায পড়তে বিলম্ব করো না।

সহীহ বুখারীর এক হাদীসে জানাযা নামাযের পর লাশ দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও বিলম্ব না করার নির্দেশ এসেছে।

যেমন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, জানাযাকে দ্রুত নিয়ে যাও। কেননা মৃত ব্যক্তি যদি নেক লোক হয় তবে তো তাকে তার শুভ পরিণতির দিকেই নিয়ে যাচ্ছ। আর যদি সে মন্দ হয় সেক্ষেত্রে তোমাদের ঘাড় থেকে আপদ সরিয়ে দিচ্ছ।-হাদীস : ১৩১৫

উল্লেখিত হাদীসের পাশাপাশি এখানে সাহাবাদের দুয়েকটি আছারও পেশ করা হল।

* আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু বকর রা. মঙ্গলবার রাতে ইন্তেকাল করেন এবং সে রাতেই তাঁকে দাফন করা হয়।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২১২৮

* উরওয়াহ রাহ. বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রা.-এর পরিবারের কেউ মারা গেলে তিনি বলতেন, জলদি কর, জলদি কর। তাকে নিয়ে চল, নিয়ে চল।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২০০২

উপরোক্ত হাদীস ও আছারে মৃত্যুর পর বিলম্ব না করে কাফন, জানাযা দ্রুত সম্পন্ন করে তাড়াতাড়ি দাফন করে দেওয়ার তাকিদ করা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত দলিলের আলোকে ফকীহগণ মৃতের গোসল, কাফন-দাফন ও জানাযা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ দ্রুত সম্পন্ন করাকে উত্তম বলেছেন এবং বিনা ওজরে বিলম্ব করাকে মাকরূহ বলেছেন।

অতএব শরীয়তের উক্ত নির্দেশনার প্রতি সকলকে যত্নবান হতে হবে।

তাই স্বাভাবিক সময়ের ভিতরে মৃতের জানাযা-দাফনের প্রস্ত্ততি সম্পন্ন হয়ে গেলে মৃতের ওলি উপস্থিত লোকদেরকে নিয়ে জানাযা পড়ে দ্রুত দাফন করে দিবে। এ সময়ের ভিতর কোনো আত্মীয়-স্বজন বা বিশেষ কোনো ব্যক্তির উপস্থিত হওয়া সম্ভব না হলে তার জন্য বিলম্ব করা সমীচীন হবে না।

অবশ্য ওলি নিজেই যদি দূরে অবস্থান করার কারণে স্বাভাবিক সময়ের ভিতরে তার উপস্থিত হওয়া সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে ওলির জন্য উচিত তো এটাই যে, তার জন্য অপেক্ষা করতে না বলে দ্রুত দাফন করে দিতে বলবে। এতে শরীয়তের হুকুমের প্রতি যথাযথ আমল হবে।

কিন্তু ওলি যদি তার জন্য অপেক্ষা করতে বলে তাহলে তার জন্য বিলম্ব করার অবকাশ রয়েছে। অবশ্য এক্ষেত্রেও এ পরিমাণ বিলম্ব করার অবকাশ নেই, যার কারণে লাশের মধ্যে পরিবর্তন হওয়ার আশংকা হয়। এত অধিক বিলম্ব করা ওলি-গায়রে ওলি কারো জন্যই জায়েয নয়।

আর দাফনে দীর্ঘ বিলম্বের উদ্দেশ্যে লাশের পরিবর্তন ও বিকৃতি রোধে লাশকে হিমাগারে রাখা, ফর্মালিন মেডিসিন ইত্যাদি পচনরোধক ঔষধ দিয়ে রাখা জায়েয নয়; বরং লাশের স্বাভাবিক অবস্থা পরিবর্তন হওয়ার পূর্বেই দাফন করে দেওয়া জরুরি। এর অধিক বিলম্ব করা গুনাহ।

এছাড়া মৃতদেহকে হিমাগারে রাখা ফর্মালিন, মেডিসিন ইত্যাদি দিয়ে রাখা সম্মানপরিপন্থী ও কষ্টদায়ক। অথচ মৃত ব্যক্তির সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করা জরুরি।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেছেন, কোনো মুমিন ব্যক্তিকে তাঁর মৃত্যুর পর কষ্ট দেওয়া তেমনই যেমন জীবিত অবস্থায় তাকে কষ্ট দেওয়া।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১১৯৯০

এ সংক্রান্ত হাদীস ও আছারের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে হাজার রাহ. বলেছেন, জীবিত ব্যক্তি যে সকল বস্ত্ত দ্বারা আরাম বোধ করে মৃত ব্যক্তি তা দ্বারা আরাম বোধ করে। ইবনুল মালাক রাহ. বলেছেন, মৃত ব্যক্তি কষ্টদায়ক বস্ত্ত দ্বারা কষ্ট পায়। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৪/১৭০) তাই মৃত ব্যক্তিকে হিমাগারে রাখা মূলত তাকে কষ্ট দেওয়ারই নামান্তর। এসব কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য।

অনুরূপ লাশ জানাযা-দাফনের জন্য প্রস্ত্তত হয়ে যাওয়ার পর সামাজিক, রাজনৈতিক বা দলীয় প্রথা পালনের উদ্দেশ্যে লাশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কর্মকান্ড করা যেমন, লাশকে স্থানে স্থানে নিয়ে প্রদর্শন করা, শ্রদ্ধা নিবেদন করা, পুষ্পস্তবক অর্পণ করা, ভিডিও করা, লাশকে সামনে রেখে দীর্ঘ সময় ধরে জীবনালোচনা করা, বিভিন্নমুখী ভাষণ-বক্তৃতা দেওয়া ইত্যাদি সবই গর্হিত। এগুলোর মধ্যে জীবিত মৃত কারোরই কোনো কল্যাণ নেই। এসব অনর্থক ও বেহুদা কর্মকান্ড পরহেয করা সকলের জন্য জরুরি।

আর মৃতের একাধিক জানাযা পড়া জায়েয নয়। মৃতের ওলি কিংবা তার অনুমতি সাপেক্ষে জানাযা নামায আদায় হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়বার ঐ মৃতের জানাযা পড়ার অবকাশ নেই। সাহাবায়ে কেরাম কোনো মৃতের একাধিক জানাযা পড়া থেকে বিরত থাকতেন। নাফে রাহ. থেকে বর্ণিত, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. কোনো জানাযায় পৌঁছতে পৌঁছতে জানাযা নামায শেষ হয়ে গেলে মৃতের জন্য দুআ করে ফিরে আসতেন। দ্বিতীয়বার জানাযা পড়তেন না।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৬৫৪

বিখ্যাত তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. এক মাইয়্যেতের একাধিক জানাযা পড়তে নিষেধ করেছেন।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস : ৬৫

এছাড়া একাধিক জানাযা পড়ার কারণে দাফনে অযথা বিলম্বও হতে থাকে। অথচ ফকীহগণ জুমার দিনের প্রারম্ভে জানাযা প্রস্ত্তত হয়ে যাওয়ার পর শুধু অধিক সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে জানাযা নামায পড়ার উদ্দেশ্যে জুমা পর্যন্ত বিলম্ব করাকেও মাকরূহ বলেছেন।

মোটকথা এসব কর্মকান্ড, রেওয়াজ-প্রথা এবং জানাযা দাফনে বিলম্ব করার প্রবণতা যতই ব্যাপক হোক না কেন তা গ্রহণযোগ্য ও অনুসরণীয় নয়। বরং সবকিছুর উর্ধ্বে শরীয়তের হুকুমকে প্রাধান্য দিতে হবে।

জেনে রাখা দরকার, মৃতের জানাযা-দাফনে অংশ নিতে পারাটাই জীবিতদের একমাত্র কর্তব্য নয়। বরং দাফনের পরও মৃত ব্যক্তির জন্য জীবিতদের অনেক করণীয় থাকে। যেমন, মৃত ব্যক্তির জন্য দুআয়ে মাগফিরাত করা, কবর যিয়ারত করা, শরয়ী-তরীকায় ইসালে সওয়াব করা ইত্যাদি।

তাই জানাযা-দাফনে উপস্থিত হতে না পারলেও এর পরবর্তী অন্যান্য করণীয় যেমন কবর যিয়ারত ইসালে সওয়াব ইত্যাদির সুযোগ তো সব সময়ই উন্মুক্ত রয়েছে।

দুই. কোনো ব্যক্তি যে এলাকায় মারা গেছে সেখানের কবরস্থানে দাফন না করে অন্যত্র দাফন করার হুকুম।

শরীয়তের নির্দেশনা হল, কোনো ব্যক্তি যে এলাকায় মারা যাবে তাকে সেখানের কবরস্থানে বা নিকটের কোনো কবরস্থানে দাফন করে দিবে।

হাদীস শরীফে এসেছে, জাবের রা. বর্ণনা করেন, উহুদ যুদ্ধের দিন আমার ফুফু আমার পিতাকে দাফন করার জন্য নিজেদের কবরস্থানে নিয়ে আসেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষ থেকে এক ঘোষণাকারী ঘোষণা করলেন, তোমরা শহীদদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রে ফেরত নিয়ে আস।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৭১৭

অন্য একটি বর্ণনায় এসেছে, আবদুর রহমান ইবনে আবু বকর রা. হুবশী নামক স্থানে ইন্তেকাল করেন, তাঁকে ঐ স্থান হতে মক্কায় এনে দাফন করা হয়। আয়েশা রা. হজ্ব বা উমরা করতে মক্কায় গমন করলে তিনি তাঁর কবরের নিকট আসেন অতপর বলেন, আমি তোমার মৃত্যুর সময় উপস্থিত থাকলে তোমাকে সে স্থানেই দাফন করতাম যেখানে তোমার মৃত্যু হয়েছে।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১১৯৩৩

উপরোক্ত দলিলের আলোকে ফকীহগণ বলেছেন, কোনো ব্যক্তি যে এলাকায় মারা যাবে তাকে সে এলাকার কবরস্থানে বা নিকটবর্তী কোনো কবরস্থানে দাফন করে দেওয়া উত্তম। ওজর ব্যতিত দূরবর্তী এলাকায় নিয়ে দাফন করা অনুত্তম।

তাই শহর বা গ্রামের মৃতকে নিজ নিজ এলাকার কবরস্থানে দাফন করে দেওয়া বাঞ্ছনীয়। সাধারণ অবস্থায় শহরের মৃতকে গ্রামে নিয়ে বা গ্রামের মৃতকে শহরে এনে দাফন করা ঠিক নয়। বরং এ ধরনের পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে। অবশ্য ওজরবশত মৃত ব্যক্তিকে অন্যত্র নিয়ে দাফন করাও জায়েয আছে। যেমন-

মৃত ব্যক্তি যে এলাকায় মারা গেছে সেখানে বা নিকটের কোথাও কবরস্থান বা দাফনের সুব্যবস্থা না থাকা।

এলাকার কবরস্থানে স্বাভাবিক সময় পর্যন্ত লাশ সংরক্ষিত না থাকার আশঙ্কা থাকা।

কোনো ব্যক্তির এমন স্থানে মৃত্যু হল, যেখানে গিয়ে আত্মীয়স্বজনের জন্য দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা কষ্টকর।

এ ধরনের ওজরের কারণে দাফনের পূর্বে লাশ অন্যত্র নিয়ে কবরস্থ করা জায়েয আছে। কোনো কোনো সাহাবীকে মৃত্যুর স্থান হতে অন্যত্র নিয়ে দাফন করা প্রমাণিত আছে। দেখুন : আলবিদায়া ওয়াননিহায়া ৫/৫৭৪

তবে ওজরবশত লাশ স্থানান্তর করার ক্ষেত্রেও নিম্নোক্ত বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা কর্তব্য-

স্থানান্তর ও দাফনকার্য ইত্যাদি দ্রুততার সাথে আঞ্জাম দিতে হবে।

লাশ স্থানান্তরকে কেন্দ্র করে একাধিক জানাযা না হয়-সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমনটি প্রায়ই হতে দেখা যায়। কেননা মৃত ব্যক্তির একাধিক জানাযা পড়ার বিধান শরীয়তে নেই।

স্থানান্তরের কারণে এমন বিলম্ব না হতে হবে, যার কারণে লাশে পরিবর্তন আসে বা বিকৃত হওয়ার আশঙ্কা হয়। এমন আশঙ্কা হলে স্থানান্তর জায়েয হবে না।

তাই প্রবাসে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তাকে সেখানেই মুসলমানদের কবরস্থানে দাফন করে দেওয়া কর্তব্য। কেননা, প্রবাস থেকে লাশ দেশে আনার ক্ষেত্রে অকারণেই তার দাফনে বিলম্বিত হয়।

-শরহুস সিয়ারিল কাবীর ১/২৩৬-২৩৭; মিরকাতুল মাফাতীহ ৪/১৬১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫, ১৮০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার উপর অনেক আগে হজ্ব ফরয হয়েছে।...

প্রশ্ন

আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার উপর অনেক আগে হজ্ব ফরয হয়েছে। তখন দ্বীনের বুঝ না থাকায় অবৈধ উপার্জন দিয়ে হজ্ব করেছি। এখন আমি জানতে চাই যে, উক্ত হজ্বের মাধ্যমে আমার ফরয হজ্ব কি আদায় হয়েছে, না পুনরায় হজ্ব করতে হবে?

উত্তর

হজ্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যার মাধ্যমে শারীরিক ইবাদতের পাশাপাশি আর্থিক ইবাদতের বিষয়ও রয়েছে। অবৈধ সম্পদের দ্বারা হজ্ব করলে এর দ্বারা ফরয আদায় হয়ে গেলেও আল্লাহর দরবারে তা কবুল হবে না। তাই কবুল হজ্বের জন্য পুনরায় হালাল সম্পদ দ্বারা হজ্ব করতে হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৯; ফাতহুল কাদীর ২/৩১৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২২০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৫৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬৩০৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আগামী বছর আমরা স্বামী-স্ত্রী হজ্বে যাব। আমাদের দু বছরের একটি...

প্রশ্ন

আগামী বছর আমরা স্বামী-স্ত্রী হজ্বে যাব। আমাদের দু বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। তাকেও নিয়ে যাব। প্রশ্ন হল এই শিশু ছেলের ইহরাম বা হজ্বের আমল কীভাবে হবে? তাকেও কি ইহরাম পরাতে হবে? ঠান্ডার দরুণ মাথা মুখ ঢাকতে হলে তা পারব কি না? তার ভুলের কারণে দম ওয়াজিব হবে কি? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শিশু সন্তানের পক্ষ থেকে তার পিতা ইহরাম করে নিবেন। আর এই শিশুকে ইহরামের কাপড় পরানো জরুরি নয়। সম্ভব হলে পরাবে এবং যথাসম্ভব ইহরামের নিষিদ্ধ জিনিস থেকেও তাকে বিরত রাখতে চেষ্টা করবে। প্রয়োজন হলে তাকে সেলাই করা পোশাক পরাতে পারবে এবং চেহারা ও মাথা ঢাকতেও পারবে।

শিশু বাচ্চা ইহরামের নিষিদ্ধ কোনো কিছু করার দ্বারা তার উপর কিংবা তার অভিভাবকের উপর জরিমানা দম বা অন্য কোনো কিছু ওয়াজিব হবে না। অভিভাবক তাকে নিয়ে তাওয়াফ-সায়ী করবে। আর তার পক্ষ থেকে তাওয়াফের দুই রাকাতও পড়তে হবে না। মিনা, আরাফায় নিজেদের সাথে সাথে রাখবে এবং তার পক্ষ থেকে কংকর নিক্ষেপ করবে। আর তার পক্ষ থেকে দমে শোকর আদায় করতে হবে না। ইহরাম ত্যাগ করার জন্য তার মাথা মুন্ডন করে দিবে।

-মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ১১২-১১৩, ২৬৩; গুনইয়াতুন নাসিক ৮৩-৮৪; রদ্দুল মুহতার ২/৪৬৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৭৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

কিছুদিন আগে আমার পিতা মারা যান। তিনি হজ্ব করেননি। ইন্তেকালের...

প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার পিতা মারা যান। তিনি হজ্ব করেননি। ইন্তেকালের আগে তিনি বদলি হজ্বের অসিয়ত করে গেছেন। কিন্তু আমার পিতার রেখে যাওয়া সম্পদের এক তৃতীয়াংশ (যার মূল্য প্রায় দুই লক্ষ টাকা) দ্বারা বর্তমানে হজ্ব করানো সম্ভব নয়। আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব হুজুর বলেছেন, আমরা যদি তাকে দুই লক্ষ টাকা দেই তাহলে তিনি নিজের পক্ষ থেকে বাকি ‘আশি হাজার’ টাকা দিয়ে বাবার বদলি হজ্ব আদায় করবেন। প্রশ্ন হল, এভাবে বদলি হজ্ব আদায় করলে আমার পিতার ফরয হজ্ব আদায় হবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

বদলী হজ্বের ক্ষেত্রে নিয়ম হল, যার বদলি হজ্ব করা হচ্ছে তার খরচেই হজ্ব করা। কিন্তু যদি অন্য কেউ স্বেচ্ছায় কিছু খরচ করে আর যার বদলি হজ্ব করা হচ্ছে অধিকাংশ টাকা তারই হয় তবেও বদলী হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেবকে দিয়ে বদলি হজ্ব করানো যাবে এবং এর দ্বারা আপনার পিতার বদলি হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।

-মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৩৬; গুনইয়াতুন নাসিক ৩২৩; ফাতহুল কাদীর ৩/৬৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩২১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬২৩৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আগামী বছর আমরা স্বামী-স্ত্রী হজ্বে যাব। আমাদের দু বছরের একটি...

প্রশ্ন

আগামী বছর আমরা স্বামী-স্ত্রী হজ্বে যাব। আমাদের দু বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। তাকেও নিয়ে যাব। প্রশ্ন হল এই শিশু ছেলের ইহরাম বা হজ্বের আমল কীভাবে হবে? তাকেও কি ইহরাম পরাতে হবে? ঠান্ডার দরুণ মাথা মুখ ঢাকতে হলে তা পারব কি না? তার ভুলের কারণে দম ওয়াজিব হবে কি? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শিশু সন্তানের পক্ষ থেকে তার পিতা ইহরাম করে নিবেন। আর এই শিশুকে ইহরামের কাপড় পরানো জরুরি নয়। সম্ভব হলে পরাবে এবং যথাসম্ভব ইহরামের নিষিদ্ধ জিনিস থেকেও তাকে বিরত রাখতে চেষ্টা করবে। প্রয়োজন হলে তাকে সেলাই করা পোশাক পরাতে পারবে এবং চেহারা ও মাথা ঢাকতেও পারবে।

শিশু-বাচ্চা ইহরামের নিষিদ্ধ কোনো কিছু করার দ্বারা তার উপর কিংবা তার অভিভাবকের উপর জরিমানা-দম বা অন্য কোনো কিছু ওয়াজিব হবে না। অভিভাবক তাকে নিয়ে তাওয়াফ-সায়ী করবে। আর তার পক্ষ থেকে তাওয়াফের দুই রাকাতও পড়তে হবে না। মিনা, আরাফায় নিজেদের সাথে সাথে রাখবে এবং তার পক্ষ থেকে কংকর নিক্ষেপ করবে। আর তার পক্ষ থেকে দমে শোকর আদায় করতে হবে না। ইহরাম ত্যাগ করার জন্য তার মাথা মুন্ডন করে দিবে।

-মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ১১২-১১৩, ২৬৩; গুনইয়াতুন নাসিক ৮৩-৮৪; রদ্দুল মুহতার ২/৪৬৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৯৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

গত বছর আমি ইহরাম অবস্থায় ভুলে আমার মোচ কেটে ফেলি।...

প্রশ্ন

গত বছর আমি ইহরাম অবস্থায় ভুলে আমার মোচ কেটে ফেলি। জানতে চাই, এ কারণে আমার উপর কি কোনো সদকা বা দম ওয়াজিব হয়েছিল? আর তা দেশে এসে আদায় করলে চলবে নাকি হেরেমে আদায় করা জরুরি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার উপর এক সদকাতুল ফিতর সমপরিমাণ নির্ধারিত খাদ্য বা তার মূল্য আদায় করা ওয়াজিব হয়েছে। আর তা দেশে আদায় করলেও চলবে। হেরেমের এলাকায় আদায় করা জরুরি নয়। তবে হেরেমে আদায় করা উত্তম।

-গুনইয়াতুন নাসিক ২৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪২৯; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৬; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৩৯৫; কিতাবুল আছল ২/৪৩২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৮৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি এক মসজিদে ইমামতি করি। দু বছর আগে আমাদের এলাকার...

প্রশ্ন

আমি এক মসজিদে ইমামতি করি। দু বছর আগে আমাদের এলাকার এক ধনাঢ্য ব্যক্তি মারা যায়। তার উপর হজ্ব ফরয ছিল। কিন্তু সে হজ্ব করেনি। তাই ওয়ারিসরা আমাকে তার বদলি হজ্ব করার জন্য অনুরোধ করছে। আর আমার উপর হজ্ব ফরয না হওয়ার কারণে আমি হজ্ব করিনি। এখন জানার বিষয় হল, আমি ঐ ব্যক্তির বদলি হজ্ব করতে পারব কি না? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

বদলি হজ্বের জন্য এমন ব্যক্তিকে প্রেরণ করা উত্তম যিনি নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেছেন এবং হজ্বের আহকামও ভালোভাবে জানেন। আর যে ব্যক্তি হজ্বে যায়নি এবং তার উপর হজ্ব ফরযও নয় তাকে বদলি হজ্বের জন্য পাঠানো মাকরূহ তানযিহি তথা অনুত্তম। তবে এমন ব্যক্তিকে দিয়ে বদলি হজ্ব করালেও হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৮/১৮৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৭; ফাতহুল কাদীর ৩/৭২; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৩; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৫২; গুনইয়াতুন নাসিক ৩৩৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৮৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

১৯৯০ সালে রমযানে আমরা প্রায় বিশজন একসাথে উমরাহ করতে গিয়েছিলাম।...

প্রশ্ন

১৯৯০ সালে রমযানে আমরা প্রায় বিশজন একসাথে উমরাহ করতে গিয়েছিলাম। আগে মদীনায় রওযা শরীফ যিয়ারত করে তারপর আমরা মক্কায় যাই। মক্কায় রওনা হওয়ার সময় দলের প্রায় সবাই মদীনা মুনাওয়ারা হতে ইহরাম বেঁধে নেন। শুধু আমরা চার/পাঁচজন ইহরাম ছাড়াই মদীনা মুনাওয়ারা থেকে বের হই। উদ্দেশ্য নির্ধারিত মীকাত হতে ইহরাম বেঁধে মক্কায় প্রবেশ করব। কিন্তু ড্রাইভার ইহরাম ছাড়া কেউ নেই মনে করে মীকাতে গাড়ি না থামিয়ে আমাদেরকে ভেতরে নিয়ে যায়। টের পাওয়ার পর আমরা সাথে সাথেই মীকাতে ফিরে এসে ইহরাম বাঁধি অতপর উমরাহ করি। প্রথমবার ইহরাম ছাড়া মক্কায় প্রবেশ করার কারণে আমাদের উপর দম ওয়াজিব হয়েছিল কি? সাথে একজন আলেম ছিলেন তিনি বলেছেন, কোনো সমস্যা নেই। তার কথা কি ঠিক?

উত্তর

হ্যাঁ, ঐ আলেম ঠিকই বলেছেন। ইহরাম ব্যতীত মীকাতের ভেতর প্রবেশ করলেও উমরার কাজ শুরু করার আগেই যেহেতু মীকাতে ফিরে গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বেঁধেছেন তাই আপনাদের ভুল সংশোধন হয়ে গেছে এবং দমও মাফ হয়ে গেছে। তাই এখন আপনাকে কোনো জরিমানা দম দিতে হবে না।

-আলবাহরুর রায়েক ৩/৪৮; ফাতহুল কাদীর ৩/৯৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৩৯৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৭১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমাদের বাড়িওয়ালা দশ বছর আগে তার ভাতিজাকে সম্পূর্ণ খরচ দিয়ে...

প্রশ্ন

আমাদের বাড়িওয়ালা দশ বছর আগে তার ভাতিজাকে সম্পূর্ণ খরচ দিয়ে হজ্বে পাঠিয়েছিলেন। ভাতিজা তখন বালেগ ছিল, কিন্তু বেকার ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছিল। এখন সে কাপড়ের ব্যবসায় দ্রুত উন্নতি করেছে। ইতিমধ্যেই সে প্রচুর অর্থের মালিক হয়ে গেছে। যা অনেক আগেই নেসাব অতিক্রম করেছে। এখন কি তার জন্য পুনরায় হজ্ব করা জরুরি, না আগের ঐ হজ্বটিই তার জন্য যথেষ্ট হবে?

প্রকাশ থাকে যে, সে হজ্ব করার সময় ফরয বা নফল কিছুই নির্দিষ্ট করেনি বরং শুধু হজ্বের নিয়ত করেছিল।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির ফরয হজ্ব আদায় হয়ে গেছে। তার জন্য পুনরায় হজ্ব করা জরুরি নয়। কারণ দরিদ্র ব্যক্তিও যদি কোনোভাবে হজ্ব আদায় করে এবং ফরয হজ্বের নিয়ত করে বা শুধু হজ্বের নিয়ত করে থাকে (অর্থাৎ নফল হজ্বের নিয়ত না করে থাকে) তাহলে সেটা তার ফরয হজ্ব বলেই গণ্য হবে। পরবর্তীতে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও দ্বিতীয়বার তার উপর হজ্ব করা ফরয হবে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৩৬৭৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৪; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪১; গুনইয়াতুন নাসিক ৩২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১২; আলবাহরুল আমীক ১/৩৮৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১৪৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার বড় ভাই স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ রিয়াদে থাকেন। ছেলে...

প্রশ্ন

আমার বড় ভাই স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ রিয়াদে থাকেন। ছেলে দুজনের বয়স যথাক্রমে দশ ও সাত বছর। এ বছর তিনি স্ত্রী সন্তানসহ হজ্ব করতে চাচ্ছেন।

প্রশ্ন হল, নাবালেগ বাচ্চাদের হজ্ব আদায়ের পদ্ধতি কী? আর ইহরাম অবস্থায় তারা যদি ইহরাম পরিপন্থী কোনো কাজ করে তবে এর হুকুম কী?

উত্তর

নাবালেগ বুঝমান হলে বালেগদের মতো তারাও যথানিয়মে ইহরাম বাঁধবে এবং হজ্বের কার্যাদি আদায় করবে। আর বুঝমান না হলে তাদের পক্ষ থেকে অভিভাবক ইহরাম করবে। তবে নাবালেগ অবস্থায় আদায়কৃত হজ্ব তাদের জন্য নফল হবে। তাই বালেগ হওয়ার পর হজ্বের সামর্থ্য হলে পুনরায় তাদের উপর হজ্ব করা ফরয হবে।

ইবনে আববাস রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কেউ নাবালেগ অবস্থায় হজ্ব করলেও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর (সামর্থ্যবান হলে) পুনরায় হজ্ব করতে হবে।

আর ইহরাম অবস্থায় নাবালেগ থেকে ইহরাম পরিপন্থী কোনো কাজ প্রকাশ পেলেও কোনো জরিমানা ওয়াজিব হবে না। তবে অভিভাবকের কর্তব্য হল তাদেরকে যথাসম্ভব ইহরামের নিষিদ্ধ কার্যাদি থেকে বিরত রাখা।-রদ্দুল মুহতার ২/৪৬৬; গুনইয়াতুন নাসিক ৮৪

(মুস্তাদরাক লিল হাকেম, হাদীস : ১৮১২; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস : ৩০৫০; আলবাহরুল আমীক ১/৩৬৩; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৬; ফাতহুল কাদীর ২/৩৩২)

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১২৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

ক) আমি ভবিষ্যতে একজন আইনজীবী (অ্যাডভোকেট) হতে ইচ্ছুক। কিন্তু কয়েকমাস...

প্রশ্ন

ক) আমি ভবিষ্যতে একজন আইনজীবী (অ্যাডভোকেট) হতে ইচ্ছুক। কিন্তু কয়েকমাস যাবত আমি এ বিষয়ে মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগছি যে, এই পেশাটি কি হালাল না হরাম? আমাদের দেশের প্রচলিত আইন সম্পর্কে আশা করি অবগত আছেন। এই আইনের বেশীরভাগই (দেওয়ানী, ফৌজদারীসহ অন্যান্য আইন) মানব রচিত এবং ইসলামী আইনের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই আমার প্রশ্নটি হচ্ছে এই সব বিষয়সহ অন্যান্য বিষয়ও বিবেচনায় রেখে জানতে চাই যে, এই পেশাটি হালাল নাকি হারাম। যদি হালাল হয় তাহলে কীভাবে এই পেশায় নিয়োজিত থেকে অর্থ উপার্জন করা যাথাযথ হালাল হবে।

খ) বর্তমানে বাংলাদেশে যেসব ইসলামী ব্যাংক রয়েছে সেখানে চাকরি করা জায়েয কি না এবং ঐ সব ব্যাংকে বিশেষ একাউণ্ট যথা-হজ্ব একাউণ্ট করা জায়েয কি না?

উত্তর

ক) দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশের প্রচলিত আইনগুলো মানবরচিত একথা সঠিক। তবে এই আইনগুলোর মধ্যে অনেক আইন এমন আছে যা শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। আপনি ঐ সকল মামলা পরিচালনা করতে পারবেন। আর যে সকল আইন ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক সেগুলোতে প্র্যাকটিস করা জায়েয হবে না।-ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৩২০

খ) ইসলামী ব্যাংকগুলোর কারবার পর্যবেক্ষণ করে এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, তারা নিজেদের বিনিয়োগ ইত্যাদিতে যথাযথ পন্থায় শরীয়ার অনুসরণ করে না। এই ব্যাংকগুলো সম্পর্কে এ অভিযোগটি অনেকেরই রয়েছে। তাই তাকওয়ার উপর চলতে চায় এমন ব্যক্তিদেরকে আমরা ব্যাংকে চাকুরির বিষয়ে নিরুৎসাহিত করে থাকি।

আর হজ্ব করা দরকার নিরঙ্কুশ হালাল সম্পদ খরচ করে। এতে সন্দেহযুক্ত কোনো অর্থ যোগ করা ঠিক নয়।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১২০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এক ব্যক্তি সুস্থ থাকা অবস্থায় তার উপর হজ্ব ফরয হয়।...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি সুস্থ থাকা অবস্থায় তার উপর হজ্ব ফরয হয়। কিন্তু সে তখন হজ্ব আদায় করেনি। পরবর্তীতে সে প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে, যা থেকে তার জন্য সুস্থতা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

প্রশ্ন হল, তার জন্য এ অবস্থায় কি অন্যকে দিয়ে বদলি হজ্ব করানো জায়েয হবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা মতে লোকটি যেহেতু শারীরিকভাবে হজ্বে যেতে সক্ষম নয় আর বাহ্যত সামনেও সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই তাই তার জন্য নিজের পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করানো জায়েয হবে। তবে বদলি হজ্ব করানোর পর মৃত্যুর পূর্বে কখনো সুস্থ হয়ে গেলে তখন সামর্থ্য হলে পুনরায় নিজের হজ্ব আদায় করতে হবে।

-সহীহ বুখারী ১/২৫০; আততাজরীদ ৪/১৬৩৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৫; ফাতহুল কাদীর ৩/৬৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬১১৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার অনেক ফসলী জমি আছে। যেগুলো থেকে উপার্জিত অর্থ সংসারের...

প্রশ্ন

আমার অনেক ফসলী জমি আছে। যেগুলো থেকে উপার্জিত অর্থ সংসারের পেছনে খরচ করার পরও অতিরিক্ত থাকে। এই জমিগুলোর কোনো একটি বিক্রি করলে হজ্বে যাওয়া-আসার খরচ হয়ে যাবে এবং বাকি জমিগুলোর উপার্জন আমার সংসারের ব্যয় নির্বাহের জন্য যথেষ্ট হবে। কিন্তু আমার কাছে নগদ অর্থ নেই। এখন কি আমার জন্য জমি বিক্রি করে হজ্ব করা জরুরি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার উপর হজ্ব ফরয। তাই যতদ্রুত সম্ভব আপনার হজ্ব আদায় করে নেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে জমি বিক্রি করে হলেও হজ্বে যেতে হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; গুনইয়াতুন নাসিক ২০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭২; রদ্দুল মুহতার ২/৪৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৬০১৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

গত বছর আমি ইহরাম অবস্থায় ভুলে আমার মোচ কাটা শুরু...

প্রশ্ন

গত বছর আমি ইহরাম অবস্থায় ভুলে আমার মোচ কাটা শুরু করি। স্মরণ হওয়া মাত্রই কাটা বন্ধ করে দিই। তখন এক চতুর্থাংশের চেয়েও কম পরিমাণ মোচ কাটা হয়েছিল। জানতে চাই, আমার উপর কি কোনো সদকা বা দম ওয়াজিব হয়েছে? যদি ওয়াজিব হয়ে থাকে তবে তা দেশে আদায় করলে কি চলবে?

উত্তর

উক্ত ভুলের কারণে আপনার উপর সদকাতুল ফিতর পরিমাণ নির্দিষ্ট খাদ্য বা ঐ দেশের হিসাবে তার মূল্য সদকা করা ওয়াজিব হয়েছে। আর তা দেশে আদায় করলেও চলবে। হেরেমের এলাকায় আদায় করা জরুরি নয়। তবে হেরেমে আদায় করা উত্তম।

-গুনইয়াতুন নাসিক ২৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪২৯; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৬; কিতাবুল আছল ২/৪৩২; ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২৭৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৯৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনেই সরকারী কর্মচারী ছিলাম। ১৯৯৭ সালে...

প্রশ্ন

আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনেই সরকারী কর্মচারী ছিলাম। ১৯৯৭ সালে আমি অবসরপ্রাপ্ত হই। আমার উপর হজ্ব ফরয। ২০০০ সালে আমি হজ্বের প্রস্ত্ততি গ্রহণ করি। কিন্তু ঐ সময় আমার স্ত্রীর উপর হজ্ব ফরয ছিল না। যে সময় আমার স্ত্রীর উপর হজ্ব ফরয হবে তখন সে কোনো মাহরাম না-ও পেতে পারে -এ আশঙ্কা করে আমি আমার টাকা দিয়ে আমার সাথে হজ্ব করিয়ে নিয়ে আসি। এবং তার হজ্ব করার খরচের টাকার দাবি আমি ছেড়ে দিয়েছি। পরবর্তীতে আমার স্ত্রীর নিকট হজ্ব ফরয হওয়ার মতো অর্থকড়ি জমা হয়। এখন আমি জানতে চাই, আমার সাথে আমার স্ত্রীর আদায় করা হজ্বটি কি ফরয হজ্ব হয়েছে? নাকি স্ত্রীকে পুনরায় ফরয হজ্ব আদায় করতে হবে।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ হজ্ব দ্বারাই আপনার স্ত্রীর ফরয হজ্ব আদায় হয়ে গেছে। অতএব এখন তাকে পুনরায় ফরয হজ্ব আদায় করতে হবে না।

-মানাসিক, পৃ. ৪১; গুনইয়াতুন নাসিক, পৃ. ১৯; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯৯৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে হজ্ব করতে গিয়েছি। ৮ যিলহজ্ব আমাদের...

প্রশ্ন

আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে হজ্ব করতে গিয়েছি। ৮ যিলহজ্ব আমাদের মিনায় যাওয়া হয়নি। মক্কা থেকে সরাসরি আরাফা গিয়েছি। কিন্তু হজ্বের ইহরামের পর উকূফে আরাফার আগে আমাদের মাঝে স্বামী-স্ত্রীসূলভ আচরণ হয়ে গেছে। তবে এর পরের সকল আমল স্বাভাবিক নিয়মেই সম্পাদন করেছি। এখন জানতে চাই, এ অবস্থায় আমাদের কৃত হজ্বটি কি যথাযথভাবে আদায় হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে তাহলে আমাদের করণীয় কী?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ভুলের কারণে আপনাদের হজ্ব নষ্ট হয়ে গেছে। অবশ্য এরপরও হজ্বের বাকি কাজ সম্পন্ন করা নিয়মসম্মতই হয়েছে। পরবর্তীতে আপনাদেরকে ঐ হজ্ব কাযা করে নিতে হবে। আর ঐ ভুলের কারণে স্বামী-স্ত্রী উভয়কে একটি করে জরিমানা-দম ছাগল/দুম্বা হেরেমের এলাকায় জবাই করতে হবে। এবং কৃত অন্যায়ের কারণে আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফারও করতে হবে।

-সুনানে বায়হাকী ৫/১৬৭; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৩২৪৪, ১৩২৫৬; কিতাবুল আছল ২/৪৭১; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৮; মানাসিক ৩৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৯২৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনৈক ব্যক্তির ওপর হজ্ব ফরয হয়েছিল। কিন্তু হজ্ব করেনি। মৃত্যুর...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তির ওপর হজ্ব ফরয হয়েছিল। কিন্তু হজ্ব করেনি। মৃত্যুর সময় অসিয়ত করে গেছে, যেকোনোভাবে যেন তার বদলি হজ্ব করানো হয়। মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ ২৫/৩০ হাজার টাকার বেশি নয়। এই টাকা দিয়ে হজ্ব করানো অসম্ভব। এক্ষেত্রে সৌদি প্রবাসী কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে হজ্ব করালে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব আদায় হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু মৃতের এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দ্বারা এদেশ থেকে বদলি হজ্বে প্রেরণ করা অসম্ভব তাই এক্ষেত্রে সৌদি থেকেও বদলি হজ্ব করানো যাবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৮-২৫৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৯৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

একজন বদলি হজ্ব আদায়কারী তার প্রেরণকারীর পক্ষ থেকে তামাত্তু হজ্বের...

প্রশ্ন

একজন বদলি হজ্ব আদায়কারী তার প্রেরণকারীর পক্ষ থেকে তামাত্তু হজ্বের নিয়তে প্রথমে দেশ থেকে উমরার ইহরাম করে মক্কা মুকাররমায় গিয়ে উমরাহ আদায় করেন। উমরাহ আদায় শেষে মদীনা মুনাওয়ারা যিয়ারত করতে যান। অতপর হজ্বের সময়ে যুলহুলাইফা থেকে প্রেরকের পক্ষ থেকে হজ্বের ইহরাম করে যথানিয়মে হজ্ব আদায় করেন।

জানার বিষয় হল, তামাত্তু হজ্বের ক্ষেত্রে উমরাহ আদায়ের পর হজ্বের আগে মীকাতের বাইরে যাওয়ার কারণে তার হজ্বের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বদলি হজ্বটি যথাযথভাবেই আদায় হয়েছে। উমরার পর হজ্বের আগে মদীনামুনাওয়ারায় যাওয়ার কারণে হজ্বের কোনো ক্ষতি হয়নি।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৩১৭২; কিতাবুল আছল ২/৫৩৭; মুখতাছারু ইখতিলাফিল উলামা ২/১৬৭; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ১/২৮৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৮৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি এলাকার এক ব্যক্তির সাথে হজ্বে যাই। সে ইহরাম অবস্থায়...

প্রশ্ন

আমি এলাকার এক ব্যক্তির সাথে হজ্বে যাই। সে ইহরাম অবস্থায় বহনের সুবিধার্থে কখনো নিজের লাগেজ মাথায় বহন করত। অথচ আমার জানা মতে, ইহরাম অবস্থায় মাথা ঢাকা নিষেধ। প্রশ্ন হল, ইহরাম অবস্থায় নিজের লাগেজ বা অন্য কোনো বোঝা মাথায় বহন করা জায়েয আছে কি? এতে কি কোনো জরিমানা আসবে? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

যে সমস্ত বস্ত্ত দ্বারা সাধারণত মাথা ঢাকা হয় যেমন-টুপি, পাগড়ি, রুমাল, কাপড় ইত্যাদি, ঐ সমস্তজিনিস দ্বারা ইহরাম অবস্থায় মাথা ঢাকা নিষেধ। কিন্তু যে বস্ত্ত দ্বারা সাধারণত মাথা ঢাকা হয় না;বরং বহনের উদ্দেশ্যে মাথায় নেওয়া হয় যেমন-ঝুড়ি, ব্যাগ ইত্যাদি ঐ সমস্ত জিনিস ইহরামঅবস্থায় মাথায় বহন করা জায়েয আছে। এতে পূর্ণ মাথা ঢেকে গেলেও কোনো জরিমানা আসবে নাএবং ইহরামের কোনো ক্ষতিও হবে না।

-মানাসিক ৩০৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪০৬; গুনইয়াতুন নাসিক ২৫৫; আলবাহরুল আমীক ২/৮০০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৪৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৮৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি এ বছর হজ্বে মুযদালিফায় যাওয়ার সময় মুযদালিফায় পৌঁছার আগেই...

প্রশ্ন

আমি এ বছর হজ্বে মুযদালিফায় যাওয়ার সময় মুযদালিফায় পৌঁছার আগেই মাগরিবের ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেছে দেখে পথেই মাগরিবের নামায আদায় করে নিই। দুই দিন পর সাথীদের সাথে আলোচনা করে জানতে পারি যে, আমার জন্য ইশার ওয়াক্তে মুযদালিফায় এসে মাগরিব ও ইশা একত্রে আদায় করা ওয়াজিব ছিল। আমি জানতে চাই, এখন আমার জন্য ওই নামায কাযা করা অথবা কোনো দম দেওয়া ওয়াজিব হবে কি না? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ঐ দিনের মাগরিবের নামায আদায় হয়ে গেছে। তা কাযা করা লাগবে নাএবং এজন্য কোনো দমও ওয়াজিব হবে না। তবে যথা সময়ে আদায় না করার কারণে ওয়াজিবছেড়ে দেওয়ার গুনাহ হয়েছে। এজন্য আল্লাহ তাআলার কাছে ইস্তেগফার করতে হবে।

উল্লেখ্য যে, হাজ্বীদের জন্য ৯ যিলহজ্ব দিবাগত রাতে মাগরিব ও ইশার নামায মুযদালিফায় এসেইশার ওয়াক্তে আদায় করা ওয়াজিব। ইশার ওয়াক্তের মধ্যে মুযদালিফায় পৌঁছা সম্ভব হলেআরাফায় অথবা পথে কোথাও পড়া নাজায়েয। এরপরও কেউ মুযদালিফার আগে মাগরিব পড়েনিলে মুযদালিফায় এসে ইশার ওয়াক্তের মধ্যে পুনরায় মাগরিব পড়ে নেওয়া ওয়াজিব। অবশ্য যদিমুযদালিফায় পৌঁছার আগেই ইশার সময় শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তবে সে ক্ষেত্রে যেখানেআছে সেখানেই মাগরিব-ইশা পড়ে নিবে।

-ফাতহুল কাদীর ৩/৩৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৫১৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫০৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩০; আলবাহরুল আমীক ৩/১৬১২; আলমাসালিক ফিলমানাসিক ১/৫৩৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৭২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার সাত একর আবাদি জমি আছে, যার মূল্য সত্তর-আশি লক্ষ...

প্রশ্ন

আমার সাত একর আবাদি জমি আছে, যার মূল্য সত্তর-আশি লক্ষ টাকা। কিন্তু প্রতি বছর জমি থেকে যে ফসল হয় তা বছরের খরচে শেষ হয়ে যায়। বছর শেষে কোনো সঞ্চয় থাকে না। আমার সমপরিমাণ জমি আছে এমন অনেকে কিছু জমি বিক্রি করে হজ্বে যাচ্ছে।

পঁচিশ-ত্রিশ শতাংশ জমি বিক্রি করলে আমার হজ্বের খরচ হয়ে যাবে এবং পরিবারের ভরণ-পোষণে আমার কোনো সমস্যা হবে না। এ অবস্থায় জমি বিক্রি করে হজ্বে যাওয়া আমার উপর ফরয

কি না?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী জমির সকল উৎপাদন যদিও পরিবারের ভরণ-পোষণে ব্যয় হয়ে যায়, কিন্তু হজ্বের খরচ পরিমাণ জমি বিক্রি করলেও যেহেতু পরিবারের স্বাভাবিক ভরণ-পোষণ ব্যাহত হবে না তাই এ পরিমাণ জমি প্রয়োজনের অতিরিক্ত বলে গণ্য হবে। এবং এ কারণে আপনার উপর হজ্ব আদায় করা ফরয হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; আলবাহরুল আমীক ১/৩৮৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮১; গুনইয়াতুন নাসিক ২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৭১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি জেদ্দায় থাকি এবং জেদ্দা টু মক্কা রুটে গাড়ি চালাই।...

প্রশ্ন

আমি জেদ্দায় থাকি এবং জেদ্দা টু মক্কা রুটে গাড়ি চালাই। সাধারণত ইহরাম ছাড়াই হারামে প্রবেশ করি। গতবার হজ্বের সময় একজন বাঙ্গালি আলেম আমাদের মতো গাড়ি চালকদের জন্য হারামে প্রবেশের পূর্বে ইহরাম বাধা জরুরি বলে দৃঢ় মত ব্যক্ত করেছেন। তার এই মত সঠিক কি না জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

জেদ্দা ‘হিল্’ অর্থাৎ মীকাতের ভিতরের এলাকা। আর হিল এ অবস্থানকারীদের জন্য হজ্ব-উমরার নিয়ত ব্যতীত অন্য প্রয়োজনে ইহরাম ছাড়াও হারামে প্রবেশের অনুমতি আছে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত বক্তব্য আপনার ক্ষেত্রে যথার্থ নয়। আপনি ইহরাম ছাড়াও হারামে প্রবেশ করতে পারবেন।

-মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ২১৯; কিতাবুল আছল ২/৫১৮; রদ্দুল মুহতার ২/৪৭৮; গুনইয়াতুন নাসিক ৫৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮৪০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনৈক বৃদ্ধা মহিলার উপর হজ্ব ফরয, কিন্তু তিনি এত দুর্বল...

প্রশ্ন

জনৈক বৃদ্ধা মহিলার উপর হজ্ব ফরয, কিন্তু তিনি এত দুর্বল যে, নিজে হজ্ব করতে সক্ষম নন। তিনি চাচ্ছেন কাউকে দিয়ে বদলি হজ্ব করাতে। এক্ষেত্রে তার আত্মীয়র মধ্যে দুই জন রয়েছে, যারা বদলি হজ্ব করতে ইচ্ছুক। এক. বৃদ্ধার ছেলে, যার উপর হজ্ব ফরয, কিন্তু এখনো সে নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেনি। আর সে আলেমও নয়। অপরজন বৃদ্ধার নাতি। তার উপর হজ্ব ফরয নয় এবং সে হজ্বও করেনি। উক্ত নাতি মেশকাত জামাতে পড়ে।

এক্ষেত্রে জানার বিষয় হল, উপরোক্ত দুই ব্যক্তি থেকে কার মাধ্যমে বদলি হজ্ব করানো ভালো হবে? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

বদলি হজ্ব এমন ব্যক্তির দ্বারা করানো উচিত, যিনি নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেছেন এবং হজ্বের আহকাম সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখেন। তিনি আত্মীয় হোন বা না হোন। নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেনি এমন কাউকে দিয়ে বদলি হজ্ব করানো মাকরূহ।

জেনে রাখা দরকার যে, সুন্দরভাবে হজ্ব আদায়ের জন্য মাসআলার জ্ঞান এং পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, ৬/১৮৭; ফাতহুল কাদীর ৩/৭৯; মানাসিক ৪৫৩; গুনইয়াতুন নাসিক ৩৩৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৮১৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

অনেকেই একাধিকবার হজ্ব করেন। প্রতিবারই ইহরামের জন্য নতুন কাপড় ক্রয়...

প্রশ্ন

অনেকেই একাধিকবার হজ্ব করেন। প্রতিবারই ইহরামের জন্য নতুন কাপড় ক্রয় করেন। প্রশ্ন হল, ইহরামের জন্য নতুন কাপড় পরিধান করা উত্তম নাকি পুরাতন কাপড় (যা পূর্বে ইহরামের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে) পরিধান করা উত্তম?

উত্তর

ইহরামের জন্য দুটি নতুন কাপড় কিংবা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ধৌত পুরাতন কাপড় পরিধাণ করা উত্তম। প্রতি বছর নতুন কাপড় পরিধান করা সুন্নত বা মুস্তাহাব নয়। আর পুরাতন কাপড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হলে তাই ইহরামের জন্য যথেষ্ট। তা মোটেও অনুত্তম নয়।

-মাবসূত, সারাখসী ৪/৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২৫০; আলবাহরুর রায়েক ২/৩২০; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৫/৭৭; শরহুল মুহাযযাব ৭/২২৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৯৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমাদের শহরে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে ঢাকা থেকে আগত জনৈক ব্যক্তি...

প্রশ্ন

আমাদের শহরে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে ঢাকা থেকে আগত জনৈক ব্যক্তি মডার্ণ পাবলিশার্স, ২৩০ নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫ কর্তৃক প্রকাশিত ও ছবির সাহায্যে পবিত্র হজ্বের দর্শণীয় স্থানসমূহ বিষয়ক মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী কর্তৃক প্রণীত একটি পুস্তক হজ্বব্রত পালনেচ্ছুক প্রশিক্ষণরত ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করেন। উক্ত পুস্তকের ৬ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে যে, ‘‘প্রথম চার চক্করে রমল বা দৌড় দিয়ে জোরে হাঁটতে হবে। বাকি তিন চক্করে স্বাভাবিকভাবে হাটতে হবে। ইহরামের কাপড় স্বাভাবিকভাবে পরা থাকবে।’’ অথচ হজ্ব বিষয়ক বিভিন্ন

পুস্তক-পুস্তিকায় যে তাওয়াফের পর সাঈ আছে তার প্রথম তিন চক্করে রমলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং ইজতিবা প্রথম চক্কর থেকে শেষ চক্কর পর্যন্ত বহাল থাকা সুন্নতে মুআক্কাদা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এভাবেই ৩ চক্করে রমল ও চার চক্করে স্বাভাবিক অবস্থায় ইজতিবাসহ তাওয়াফ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এখন আমার প্রশ্ন হল, তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করতে হবে, নাকি চার চক্করে রমল করতে হবে? আর ইজতিবা প্রথম চক্কর থেকে শেষ চক্কর পর্যন্ত থাকবে, নাকি যে চক্করগুলোতে রমল করা হবে শুধু সেগুলোতেই ইজতিবা করা হবে? সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

যে তাওয়াফের পর সাঈ আছে পুরুষের জন্য সে তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করা সুন্নত। (রমল অর্থ কাঁধ হেলিয়ে একটু দ্রুতপদে বীরদর্পে হাঁটা)। আর ঐ তাওয়াফের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ইজতিবা (অর্থাৎ গায়ের চাদর ডান বগলের নিচ দিয়ে বের করে বাম কাঁধের উপর রাখা।) অবস্থায় থাকা পৃথক একটি সুন্নত।

প্রকাশ থাকে যে, তিন চক্করে রমল করা এবং পুরো তাওয়াফে ইজতিবা করার বিষয়টি হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণিত।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বাইতুল্লাহর প্রথম তাওয়াফ (তাওয়াফে কুদুম) করেছেন তখন প্রথম তিন চক্করে রমল করেছেন। বাকি চার চক্করে স্বাভাবিকভাবে হেঁটেছেন। (সহীহ মুসলিম ১/৪১০)

ইয়ালা ইবনে উমাইয়া রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করেছেন। (পূর্ণ) তাওয়াফে ইজতিবা অবস্থায় ছিলেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস :৮৫৯)

ইবনে জুরাইজ থেকে বর্ণিত, উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ. বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করেছেন এবং (পুরো) তাওয়াফে ইজতিবা অবস্থায় ছিলেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৬১৪৬)

সুতরাং খলিলুর রহমান মাদানীর বইয়ে লিখিত প্রশ্নোক্ত বক্তব্যটি সঠিক নয়।

-আলবাহরুল আমীক ২/১১৫৯-৬৮; গুনইয়াতুন নাসিক ১১৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৬৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি এ বছর হজ্ব পালনের ইচ্ছা করেছি। সহীহ তরীকায় হজ্ব...

প্রশ্ন

আমি এ বছর হজ্ব পালনের ইচ্ছা করেছি। সহীহ তরীকায় হজ্ব পালন করার জন্য হজ্ব সংক্রান্ত সহীহ মাসায়েল জানতে আগ্রহী। তাই নিম্নোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।

ক) ৮ যিলহজ্ব মক্কা মুকাররমা থেকে মিনায় কখন গমন করা উত্তম?

খ) ৮ যিলহজ্ব যোহর থেকে ৯ যিলহজ্ব ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামায মিনায় আদায় করার শরয়ী বিধান কী?

গ) ৮ যিলহজ্ব যোহর থেকে ৯ যিলহজ্ব ফজর পর্যন্ত এক নাগাড়ে মিনায় অবস্থান করা ও ৮ যিলহজ্ব মিনায় শুধু রাত যাপন করার শরয়ী বিধান কী?

উত্তর

ক) ৮ যিলহজ্ব সূর্যোদয়ের পর মিনায় রওয়ানা করা মুস্তাহাব। তাই ৮ যিলহজ্ব সূর্যোদয়ের পূর্বে কিংবা ৭ যিলহজ্ব মিনায় চলে যাওয়া অনুত্তম। অবশ্য মুআল্লিমের পক্ষ থেকে নিতে বাধ্য করলে তখন যাওয়া দোষণীয় হবে না।-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪০২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৩৫; আলবাহরুল আমীক ৩/১৪০৭

খ) ৮ যিলহজ্ব যোহর থেকে ৯ যিলহজ্ব ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামায মিনায় আদায় করা সুন্নত। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত জাবের রা. বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৮ যিলহজ্ব মিনায় গমন করেছেন এবং সেখানে যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও ফজর নামায পড়েছেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৮/৪৭৮, হাদীস : ১৪৭৫৫; সহীহ মুসলিম ১/৩৯৬)

অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রা. বলেন, সুন্নত হল ইমাম যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও ফজর মিনায় পড়বেন। এরপর মিনা হতে আরাফায় রওয়ানা করবেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৮/৪৭৯, হাদীস : ১৪৭৬০; মানাসিক ১০৪; গুনইয়াতুন নাসিক ১৪৬; রদ্দুল মুহতার ২/৫০৩)

গ) ৮ যিলহজ্ব দিবাগত রাত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। আর এই দিনে যোহর থেকে ৯ তারিখ সকাল পর্যন্ত পুরো সময় এক নাগাড়ে সেখানে অবস্থান করা মুস্তাহাব।-গুনইয়াতুন নাসিক ১৪৬; রদ্দুল মুহতার ২/৫০৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৯৩; আততাজরীদ ৪/১৯৫৭; আলইখতিয়ার ১/১৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৪১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

কোনো মহিলা উমরার ইহরাম বেঁধে মক্কায় গিয়ে এখনো তাওয়াফ করেনি।...

প্রশ্ন

কোনো মহিলা উমরার ইহরাম বেঁধে মক্কায় গিয়ে এখনো তাওয়াফ করেনি। ইতিমধ্যে খাওয়ার পর হাতের তেল পরিষ্কার করার জন্য এবং প্লেট ইত্যাদি ধোয়ার জন্য একবার সুগন্ধি সাবান ব্যবহার করেছে। এখন তার জন্য কি দম দিতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধিযুক্ত সাবান দ্বারা হাত ধোয়ার কারণে ঐ মহিলার উপর সদকা ওয়াজিব হয়েছে, দম নয়। আর এ সদকার পরিমাণ হল একটি সদকাতুল ফিতর সমপরিমাণ মূল্য।

-মানাসিক, মোল্লা আলী ৪৫০, ৪৫৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৫২; আলবাহরুল আমীক ২/৮৪০; যুবদাতুল মানাসিক ৩৫৭; মুয়াল্লিমুল হুজ্জাজ ২৩১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭৪০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এক ব্যক্তি তামাত্তু হজ্বের ইহরাম করে। সে উমরা করে ফেলেছে,...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি তামাত্তু হজ্বের ইহরাম করে। সে উমরা করে ফেলেছে, এখন সে হজ্ব আদায় করবে। তার ইচ্ছা হল, শুরুতেই একটি নফল তাওয়াফ করে হজ্বের সাঈ আদায় করে নিবে। এখন জানার বিষয় হল, সায়ীটি আদায় করার পূর্বে কি হজ্বের ইহরাম করতে হবে, না হজ্বের ইহরাম করার পূর্বেই সাঈটি আদায় করে নিতে পারবে? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হজ্বের ইহরামের পরেই সায়ী করতে হবে। কেননা, তামাত্তু হজ্বকারী আরাফায় অবস্থানের আগে হজ্বের সাঈ করতে চাইলে শর্ত হল, প্রথমে হজ্বের ইহরাম করে নিতে হবে। অতপর নফল তাওয়াফ করে সাঈ করবে। হজ্বের ইহরাম না করে সাঈ করলে তা আদায় হবে না।

-আলবাহরু রায়েক ২/৩৬৩; গুনইয়াতুন নাসিক ১৩২; মানাসিক ১৭৪; যুবদাতুল মানাসিক ১৪৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭২৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

করীম সাহেবের ওপর হজ্ব ফরয। অনেক দিন থেকে তিনি খুব...

প্রশ্ন

করীম সাহেবের ওপর হজ্ব ফরয। অনেক দিন থেকে তিনি খুব অসুস্থ। যার কারণে তিনি নিজে হজ্ব করতে পারছেন না। তাই তিনি আরেক ব্যক্তিকে নিজের পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করার জন্য পাঠান। তিনি ঐ ব্যক্তিকে স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, যেন সে ইফরাদ হজ্ব করে। এখন ঐ ব্যক্তির জন্য তামাত্তু হজ্ব করার কি অনুমতি আছে?

উত্তর

না। ঐ ব্যক্তির জন্য হজ্বে প্রেরণকারী ব্যক্তির নির্দেশ অমান্য করে তামাত্তু হজ্ব করার অনুমতি নেই। বরং তাকে ইফরাদ হজ্বই করতে হবে।

-কিতাবুল আসল ২/৫০৬; মাবসূত, সারাখসী ৪/১৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩১০; আলবাহরুল আমীক ৪/২৩২৯; মানাসিক ৪৪৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭২৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

খালেদের বয়স ২৫ বছর। তার প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো সম্পদ নেই...

প্রশ্ন

খালেদের বয়স ২৫ বছর। তার প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো সম্পদ নেই তার ওপর হজ্ব ফরয নয়। তার পিতা অনেক সম্পদশালী। বিগত বছর তিনি ছেলে খালেদকে নিয়ে হজ্বে যান এবং খালেদের হজ্ব বাবদ যত টাকা ব্যয় হয়েছে তা তিনি নিজ হাতেই খরচ করেন। ঐ টাকা খালেদের হাতে দিয়ে তাকে এর মালিক বানিয়ে দেননি।

এখন জানার বিষয় হল, এভাবে হজ্ব করার দ্বারা কি খালেদের ফরয হজ্ব আদায় হয়েছে? নাকি এক্ষেত্রে ফরয হজ্ব আদায় হওয়ার জন্য তাকে ঐ টাকার মালিক বানিয়ে দেওয়া জরুরি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে খালেদ হজ্ব করার সময় নফল হজ্বের নিয়ত না করে থাকলে সেটি তার ফরয হজ্ব হিসেবেই আদায় হয়েছে। কেননা, ফরয আদায়ের জন্য হজ্বের খরচের মালিক হওয়া শর্ত নয়।

সুতরাং পরবর্তীতে সামর্থবান হলেও পুনরায় হজ্ব করা তার উপর ফরয হবে না।

-শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/৪৯৮; ফাতহুল কাদীর ২/৩২৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৪; মানাসিক ৪১; গুনইয়াতুন নাসিক ৩০-৩২; ইমদাদুল আহকাম ২/১৫৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭২৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি ইহরাম অবস্থায় এমন একটি কাজ করেছি, যার কারণে দম...

প্রশ্ন

আমি ইহরাম অবস্থায় এমন একটি কাজ করেছি, যার কারণে দম ওয়াজিব হয়েছে। কিন্তু তখন অর্থ সংকটের কারণে তা আদায় করতে পারিনি। এ অবস্থায় দেশে চলে এসেছি। দম না দিয়ে দেশে চলে আসার কারণে কি আমার গুনাহ হয়েছে? এখন আমি কী করতে পারি?

উত্তর

দম আদায় না করে দেশে এসে যাওয়ার কারণে গুনাহ হয়নি। কেননা, জরিমানা দম বিলম্বে আদায় করারও অবকাশ আছে। তবে কোনো ওজর না থাকলে দম আদায়ে বিলম্ব না করাই উত্তম।

স্মর্তব্য, হজ্ব ও উমরার দম হেরেমের এলাকায় যবেহ করা জরুরি। হেরেমের বাইরে যবাই করলে তা দ্বারা দম আদায় হবে না। তাই নিজে কিংবা অন্য কারো মাধ্যমে সেখানেই যবাই করার মাধ্যমে দম আদায় করতে হবে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৮/৬৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৬৫; মানাসিক ৩৮৪, ৩৯২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৯৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭০৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার এক চাচার ৫০ শতক জমি আছে। তিনি ইন্তিকালের আগে...

প্রশ্ন

আমার এক চাচার ৫০ শতক জমি আছে। তিনি ইন্তিকালের আগে বাড়ির পাশের ৪ শতক জমি তার এক সন্তানের জন্য। আর ৩ শতক জমি তার এক মামার জন্য ওসীয়ত করেছেন। তার ইন্তেকালের পর তার ওয়ারিশরা জানতে চায়, পিতার ঐ ওসীয়ত কার্যকর হবে কি না? তা পূরণ করা শরীয়তের দৃষ্টিতে জরুরি কি না?

উত্তর

কোনো ওয়ারিশের (অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির সম্পদে যারা এমনিতেই অংশ পায়) জন্য ওসীয়ত করা শরীয়তসম্মত নয়। ওসীয়ত করলেও তা কার্যকর হবে না। অবশ্য যেসব ব্যক্তি ওয়ারিশ নয় তাদের জন্য ওসীয়ত করা যাবে। কেউ করলে তা সম্পদের এক তৃতীয়াংশ থেকে কার্যকর করা জরুরি হবে। বিশিষ্ট সাহাবী আবু উমামা বাহিলী রা. বলেন, বিদায় হজ্বের ভাষণে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক হকদারকে তার হক দিয়েছেন। অতএব ওয়ারিশের জন্য ওসীয়ত করা যাবে না। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ২১২৬; মুসনাদে আহমদ ৪/১৮৬)

অন্য বর্ণনায় আছে, ওয়ারিশের জন্য ওসীয়তের বিধান নেই। (জামে তিরমিযী, হাদীস : ২০২২; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২০০৮)

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার চাচা তার মামার জন্য যে ওসীয়ত করেছেন তা সহীহ হয়েছে, কিন্তু সন্তানের জন্য ওসীয়ত করা শরীয়তসম্মত হয়নি। তাই তা কার্যকর হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, সন্তান এবং অন্যান্য ওয়ারিশের জন্য ওসীয়ত করা যদিও সহীহ নয় তা সত্ত্বেও কেউ যদি করে এবং অন্যান্য সকল ওয়ারিশ যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয় এবং তারা সকলে সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঐ ওসীয়তকে কার্যকর করতে চায় তবে তাদের জন্য তা করা জায়েয হবে।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ওয়ারিশের জন্য ওসীয়ত করা কার্যকর নয় তবে অন্যান্য ওয়ারিশরা যদি অনুমতি দেয় তবে তা বৈধ হবে। (সুনানে দারাকুতনী ৪/৯৮; সুনানে বায়হাকী ৬/২৬৩)

আরো প্রকাশ থাকে যে, ওয়ারিশের জন্য ওসীয়ত যেহেতু কার্যকর হয় না তাই সন্তানের জন্য ওসীয়তকৃত জমিটি সকল ওয়ারিশের উত্তরাধিকার সম্পত্তি বলে গণ্য হবে।

আর প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী মামার জন্য ওসীয়তকৃত জমিটি যেহেতু ওসীয়তকারীর সমুদয় সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশের কম তাই ওসীয়ত অনুযায়ী তা তারই প্রাপ্য হবে।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৭০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

১. এক ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে তামাত্তু হজ্বের নিয়তে ইহরাম বাঁধেন...

প্রশ্ন

১. এক ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে তামাত্তু হজ্বের নিয়তে ইহরাম বাঁধেন এবং হারাম শরীফে গমনের পর যথানিয়মে উমরা পালন করে হালাল অবস্থায় মক্কা মুকাররমায় অবস্থান করতে থাকেন। পরবর্তীতে হজ্বের পূর্বেই মদীনা মুনাওয়ারা যান এবং ফিরতি পথে যুলহুলাইফা থেকে ইফরাদ হজ্বের নিয়তে ইহরাম বাঁধেন এবং হারাম শরীফের যিয়ারত না করে মক্কা শহরের বাইরে অবস্থান করেন। সেখান থেকে সরাসরি মিনায় গমন করেন এবং আরাফা-মুযদালিফা ও মিনা এরপর মক্কা শরীফের যিয়ারতের মাধ্যমে যথানিয়মে হজ্বের আহকাম সম্পন্ন করেন।

জানার বিষয় হল, ক) প্রথমে তামাত্তু হজ্বের নিয়তে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় মীকাতের ভিতর প্রবেশ করা এবং উমরাহ শেষে মদীনা শরীফ গিয়ে সেখান থেকে ইফরাদ হজ্বের নিয়তে ইহরাম বাঁধা ও হজ্ব সমাপন করা কি শরীয়তের দৃষ্টিতে সঠিক পদ্ধতির অনুসরণ করা হয়েছে?

খ) যদি ঐ ব্যক্তি যুলহুলাইফা থেকে পুনরায় তামাত্তু হজ্বের নিয়তে ইহরাম বাঁধতেন এবং হারাম শরীফে প্রবেশ না করে এবং নতুন করে উমরাহ পালন না করে এবং হালাল না হয়ে ঐ একই ইহরাম অবস্থায় সরাসরি মিনায় গমন করতেন এবং হজ্বের পরবর্তী আহকামগুলো সম্পন্ন করতেন তবে কি তার এই হজ্ব সমাধা করা শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হত?

২. যারা ইতিপূর্বে হজ্ব পালন করেননি বা বদলী হজ্বের নিয়তে পবিত্র ভূমিতে আগমন করেননি শুধু নিজের ফরয হজ্ব আদায় করার জন্য গিয়েছেন তারা যদি উমরাহ পালন ব্যতিরেকে ইফরাদ হজ্ব পালন করেন তবে কি তাদের জিম্মায় যে হজ্ব ফরয ছিল তা কি আদায় হবে?

উত্তর

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মদীনা মুনাওয়ারা থেকে পুনরায় মক্কা মুকাররমা আসার সময় মীকাত যুলহুলাইফা থেকে শুধু হজ্বের ইহরাম করাও জায়েয। তবে এক্ষেত্রে তার উপর তাওয়াফে কুদুম করা সুন্নত। তাই সরাসরি মিনায় চলে যাওয়া ঠিক হবে না। অবশ্য এই তাওয়াফ বাদ দিলে কোনো জরিমানাও আসবে না। মদীনা মুনাওয়ারা থেকে ফেরার সময় শুধু উমরার ইহরাম করাও জায়েয। তবে উভয় ক্ষেত্রে তার হজ্বটি তামাত্তু হজ্বই হবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ব্যক্তি মদীনা মুনাওয়ারা থেকে ফেরার সময় ইফরাদ হজ্বের ইহরাম করলেও এর পূর্বে হজ্বের মৌসুমে (মদীনা মুনাওয়ারা যাওয়ার আগে) উমরাহ করার কারণে তার এ হজ্বটি তামাত্তু হজ্ব বলেই গণ্য হবে, ইফরাদ হজ্ব নয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি যদি পুনরায় তামাত্তুর উদ্দেশ্যে উমরার ইহরাম করে তবে নিয়ম হল সে প্রথমে এই উমরাহর কাজ সম্পন্ন করবে এরপর হজ্বের ইহরাম করে হজ্ব পালন করবে। কিন্তু এক্ষেত্রে সে যদি উমরার কার্যাদি আদায় না করে বরং হজ্বের সময় হজ্বের ইহরাম করে নেয় (অর্থাৎ হজ্বের নিয়তে তালবিয়া পড়ে নেয়) এবং উকূফে আরাফা করে ফেলে তাহলে তার উমরাহর ইহারামটি বাতিল হয়ে যাবে। তখন সে যথানিয়মে হজ্বের কার্যাদি সম্পন্ন করবে। এক্ষেত্রেও তার হজ্বটি তামাত্তু হজ্ব হবে। সে কারণে দমে শোকর আদায় করতে হবে। আর উমরার ইহরামটি বাতিল করে দেওয়ার কারণে তাকে একটি জরিমানার দমও আদায় করতে হবে। আর ১৩ যিলহজ্বের পর তাকে ঐ বাতিলকৃত উমরাহটি কাযা করে নিতে হবে।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৩৭২; আলজামিউস সগীর ১৫৭; আততারজরীদ ৪/১৭২৮; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ১/২৮৮; আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৩৫; মানাসিক ২৫৮; গুনইয়াতুন নাসিক ২০৫, ২১৫

২. তিন প্রকার হজ্বের মধ্যে কিরান ও তামাত্তু হজ্বই উত্তম। হ্যাঁ, ইফরাদ করলেও হজ্বের ফরয আদায় হয়ে যাবে। কেননা, এটিও কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত হজ্বের একটি প্রকার। ফরয হজ্বের জন্য তামাত্তু কিংবা কিরান করা জরুরি নয়। অবশ্য সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য জীবনে একবার উমরাহ আদায় করা যেহেতু সুন্নতে মুয়াক্কাদা তাই যারা ইতিপূর্বে কখনো উমরাহ করেনি তাদের জন্য সম্ভব হলে তামাত্তু বা কিরান হজ্ব আদায় করাই উচিত হবে। যেন ফরয হজ্বের সাথে উমরার সুন্নতও আদায় হয়ে যায়। অবশ্য ইফরাদ হজ্বকারী ব্যক্তিও হজ্বের কাজ শেষ করে ইচ্ছা করলে উমরাহ করে নিতে পারবে এবং এতেও উমরার সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।-আলবাহরুল আমীক ৪/২০১১; মানাসিক ৪৬৬, ২৫৬; গুনইয়াতুন নাসিক ১৯৬, ২০১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৯৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

হজ্ব-উমরাহজনৈক ব্যক্তি মদীনা থেকে ওমরার উদ্দেশ্যে মক্কায় এসেছে। কিন্তু সে...

প্রশ্ন

হজ্ব-উমরাহ

জনৈক ব্যক্তি মদীনা থেকে ওমরার উদ্দেশ্যে মক্কায় এসেছে। কিন্তু সে ইহরাম ছাড়াই মীকাত অতিক্রম করেছে। অতপর মক্কাবাসীদের মীকাত অর্থাৎ হিল্ল থেকে ওমরার ইহরাম বেঁধে ওমরা সম্পন্ন করেছে। এখন জানার বিষয় হল, তার এই ওমরা আদায় হয়েছে কি না এবং ইহরাম ছাড়া মীকাত অতিক্রম করার কারণে তার উপর কোনো দম ওয়াজিব হয়েছে কি না? যদি দম ওয়াজিব হয় তাহলে মক্কায় থাকা অবস্থায় পুনরায় মদীনাবাসীদের মীকাতে ফিরে গিয়ে সেখান থেকে ওমরার ইহরাম বেঁধে ওমরা আদায় করলে ঐ দম মাফ হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ঐ ব্যক্তির ওমরা আদায় হয়ে গেছে। তবে ইহরাম ছাড়া মীকাত অতিক্রম করার কারণে তার উপর দম ওয়াজিব হয়েছে। আর সে যেহেতু হিল্ল থেকে ইহরাম বেঁধে ওমরা সম্পন্ন করেছে তাই এখন মীকাতে ফিরে গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বাঁধলেও দম মাফ হবে না। অবশ্য ওমরার কাজ শুরু করার আগে মক্কার বাইরের মীকাতে ফিরে গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বাঁধলে দম দেওয়া লাগত না।

-হেদায়া ৩/৩৯; মানাসিক, মোল্লা আলী ৮৪-৮৫; গুনইয়াতুন নাসিক ৬২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৭৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি আমার মাহরামের সাথে হজ্বে গিয়েছি। দশ তারিখে ইহরাম থেকে...

প্রশ্ন

আমি আমার মাহরামের সাথে হজ্বে গিয়েছি। দশ তারিখে ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য মাথার চুল একত্র করে এক ইঞ্চি পরিমাণ কেটেছি। বাড়িতে আসার পর বড় ভাই বললেন, ‘মহিলারা ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য কমপক্ষে তিন ইঞ্চি পরিমাণ চুল কাটতে হয়।’ জানতে চাই, তার কথা কি ঠিক?

উত্তর

আপনার ভাইয়ের কথা ঠিক নয়। সঠিক মাসআলা হল, মাথার অন্তত এক চতুর্থাংশ থেকে হাতের আঙ্গুলের এক কর (প্রায় এক ইঞ্চি) পরিমাণ চুল কাটার দ্বারা ইহরাম থেকে হালাল হওয়া যায়। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, ‘মহিলাগণ ইহরাম অবস্থায় চুল একত্র করে তা থেকে আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ ছোট করবে।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৩০৬৫)

ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. বলেন, ‘মহিলাগণ আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ চুল ছোট করবে।’ (প্রাগুক্ত, হাদীস : ১৩০৭৩)

অতএব আপনি যে নিয়মে হালাল হয়েছেন তা ঠিক আছে।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৭১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমরা জানি, ইহরাম অবস্থায় সেলাই করা কাপড় পরা নিষেধ। কিন্তু...

প্রশ্ন

আমরা জানি, ইহরাম অবস্থায় সেলাই করা কাপড় পরা নিষেধ। কিন্তু সেলাইযুক্ত বেল্ট পরাও কি নিষেধ?

উত্তর

না, সেলাইযুক্ত বেল্ট বাঁধা নিষেধ নয়। তাউস রাহ. বলেন, ‘মুহরিম কোমরবন্দ ব্যবহার করতে পারবে।’

মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৫৬৮৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৭০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি তামাত্তু হজ্বের নিয়ত করেছি। আমি যদি মক্কায় ওমরা করার...

প্রশ্ন

আমি তামাত্তু হজ্বের নিয়ত করেছি। আমি যদি মক্কায় ওমরা করার পর হজ্বের আগে মদীনায় যাই তাহলে মদীনা থেকে ফেরার সময় শুধু হজ্বের ইহরাম করতে পারব নাকি তামাত্তু হজ্বের জন্য আবার ওমরার ইহরাম করতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি মদীনা মুনাওয়ারা থেকে ফেরার সময় শুধু হজ্বের ইহরাম করতে পারবেন, নতুন করে ওমরার ইহরাম করা জরুরি নয়। এক্ষেত্রে পূর্বের ওমরাসহ আপনি তামাত্তুকারীর অন্তর্ভুক্ত হবেন। একটি বর্ণনায় এসেছে, কূফার অধিবাসী কিছু লোক তামাত্তু করল (ওমরা করে হালাল হল)। এরপর তারা মদীনায় গেল। ফেরার সময় হজ্বের ইহরাম করল। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা.কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা তামাত্তুকারী বলে গণ্য হবে।’

আহকামুল কুরআন, তহাবী ২/২৩০; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ১/২৮৮; আলজামিউস সগীর পৃ. ১২৮; ফাতহুল কাদীর ২/৪৩৭; মুখতাসারু ইখতিলাফিল উলামা ২/১৬৭; আততাজরীদ ৪/১৭২৮; আলবাহরুল আমীক ২/৭৭৩; ইলাউস সুনান ১০/৩১৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬৪৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনৈকা মহিলার বয়স ৫৩ বছর অতিক্রম করেছে। মাথার চুল সাদা...

প্রশ্ন

জনৈকা মহিলার বয়স ৫৩ বছর অতিক্রম করেছে। মাথার চুল সাদা হয়ে যাচ্ছে তাই তিনি কালো কলপ ব্যবহার করেন। জানার বিষয় এই যে, তার জন্য কি এটা জায়েয হবে?

উত্তর

বয়সের কারণে চুল সাদা হলে কালো কলপ ব্যবহার করা জায়েয নয়। হাদীস শরীফে আছে, হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আবু কুহাফা রা. (আবু বকর রা.-এর পিতা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসলেন। তখন তার মাথার চুল ও দাঁড়ি ছিল ‘ছাগামা’ নামক উদ্ভিদের ফুলের মতো তীব্র সাদা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখে বললেন, তোমার এই চুল ও দাঁড়ির শুভ্রতা কোনো কিছু দ্বারা পরিবর্তন কর। তবে তোমরা কালো কলপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাক। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৪৬৬)

অন্য হাদীসে আছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আখেরি যামানায় কিছু লোক কবুতরের বুকের মতো কালো রংয়ের কলপ ব্যবহার করবে। তারা জান্নাতের খোশবুও পাবে না। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৪২০৯)

অতএব উক্ত মহিলার জন্য চুলে কালো কলপ ব্যবহার করা জায়েয নয়। তবে মেহেদী রং করতে পারবেন।

-শরহু মুসলিম, নববী ১৪/৮০; তাকমিলা, ফাতহুল মুলহিম ৪/১৪৯; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/২৯৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৭৫৬; আলমুগনী ১/১২৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬১৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনৈক ব্যক্তির দশ বিঘা জমি আছে। এগুলোর ফসল দ্বারা সে...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তির দশ বিঘা জমি আছে। এগুলোর ফসল দ্বারা সে তার পরিবারের খরচ চালিয়ে থাকে। অল্প কিছু জমা থাকে। কিন্তু তা খুবই অল্প। হজ্বের খরচ নেই। আর তার কাছে নগদ টাকা বা অন্য কোনো সম্পদও নেই। এখন জানতে চাই ওই জমি বিক্রি করে তার জন্য হজ্ব করা কি জরুরি?

উত্তর

হজ্বের যাতায়াত ও আনুষঙ্গিক খরচের জন্য যতটুকু জমি বিক্রি করা প্রয়োজন ঐ পরিমাণ জমি বিক্রি করার পর অবশিষ্ট জমি দ্বারা যদি তার পরিবারের খরচ ভালোভাবে চলে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে তার উপর হজ্ব ফরয। আর যদি ওই পরিমাণ জমি বিক্রি করলে অবশিষ্ট জমি দ্বারা পরিবারের খরচ চালানো কষ্টকর হয় তাহলে ঐ ব্যক্তির উপর জমি বিক্রি করে হজ্ব করা ফরয নয়।

-জামে তিরমিযী ১/১০০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; গুনইয়াতুন নাসিক ২০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৬০১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এক ব্যক্তি হজ্ব করতে যায়। সে তাওয়াফে যিয়ারত না করেই...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি হজ্ব করতে যায়। সে তাওয়াফে যিয়ারত না করেই মাথা মুন্ডিয়ে হালাল হয়ে দেশে ফিরে এসেছে। এখন তার বয়স ৮০ বছরের মতো। এমতাবস্থায় তার জন্য পুনরায় মক্কা যাওয়া অনেক কঠিন ব্যাপার। সে কি এখন অন্য কাউকে পাঠিয়ে তাওয়াফটি আদায় করিয়ে নিতে পারবে? যদি তার নিজের গিয়ে আদায় করে আসা জরুরি হয় তাহলে সে কি এর জন্য নতুন ইহরাম করবে না ইহরাম ছাড়াই তাওয়াফটি আদায় করবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অন্য কারো দ্বারা তাওয়াফটি আদায় করানোর সুযোগ নেই; বরং স্বয়ং তাকে গিয়েই তাওয়াফটি আদায় করা জরুরি। আর তাওয়াফটি আদায় করবে সাধারণ পোশাকেই। এর জন্য নতুন ইহরাম করবে না।

-আলবাহরুর রায়েক ২/৩৫৪; রদ্দুল মুহতার ২/৫১৭, ৫২৬; মানাসিক ১১১, ২৩৩, ৩৪৫; গুনয়াতুন নাসিক ৮৩, ১০৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৯১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি এক ওয়াজে শুনেছি যে, হাদীস শরীফে আছে, আখেরী যমানায়...

প্রশ্ন

আমি এক ওয়াজে শুনেছি যে, হাদীস শরীফে আছে, আখেরী যমানায় হজ্ব হবে ভ্রমণ ও চিত্ত বিনোদনের উদ্দেশ্যে। জানার বিষয় হল, হাদীস শরীফে কি এমন কথা আছে?

উত্তর

একটি অতি দুর্বল বর্ণনায় আছে যে, মানুষের উপর এমন একটি সময় আসবে যখন উম্মতের উচ্চ বিত্তরা হজ্ব করবে (ভ্রমণ) আনন্দ উপভোগের জন্য, মধ্যবিত্তরা হজ্ব করবে ব্যবসার জন্য, শিক্ষিতরা করবে সুনাম-সুখ্যাতি অর্জনের জন্য এবং গরীবরা করবে ভিক্ষার জন্য।

-তারীখে বাগদাদ ১০/২৯৬; আলইলালুল মুতানাহিয়াহ ২/৫৬৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৮১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এক ব্যক্তি হজ্ব করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাওয়াফে যিয়ারত না করেই...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি হজ্ব করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাওয়াফে যিয়ারত না করেই মাথা মুন্ডিয়ে হালাল হয়ে দেশে চলে এসেছেন। এখন তার করণীয় কী?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার কর্তব্য হল, নতুন করে কোনো ইহরাম করা ছাড়া পুনরায় মক্কা মুকাররমা গিয়ে তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করা। এছাড়া তার কোনো গত্যন্ত নেই। আর ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্তের পূর্বে তাওয়াফটি আদায় না করার কারণে একটি জরিমানা দম আদায় করা তার উপর ওয়াজিব।

উল্লেখ্য, তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করার পূর্বে স্ত্রীর সাথে মিলিত হওয়া যাবে না। মিলিত হয়ে থাকলে পৃথকভাবে আরো একটি জরিমানার দম আদায় করতে হবে।

-কিতাবুল আসল ২/৩৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩১৬; ফাতহুল কাদীর ২/৪৬৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৩৭০; আলবাহরুল আমীক ৩/১৮৩৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/২০; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৩, ৫৬০; মানাসিক পৃ. : ৩৪৫, ৩৪১; গুনয়াতুন নাসিক ২৭০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৬৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনৈক ব্যক্তি হজ্ব আদায়ের জন্য মক্কা মুকাররমায় গমন করে এবং...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি হজ্ব আদায়ের জন্য মক্কা মুকাররমায় গমন করে এবং আল্লাহর অনুগ্রহে হজ্বের কার্যাবলি যথাযথভাবে সম্পন্ন করে, কিন্তু হজ্বের শেষ পর্যায়ে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। যার কারণে আইয়্যামে নহর তথা যিলহজ্বের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করতে পারেনি। জানার বিষয় হল, তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করা কি জরুরি? না এর পরিবর্তে দম দিলেই যথেষ্ট হবে? আর তাওয়াফের নির্ধারিত সময় থেকে বিলম্বে আদায় করলে দম দেওয়া ওয়াজিব হবে কি?

উত্তর

তাওয়াফে যিয়ারত হজ্বের অন্যতম ফরয। তাই যেকোনোভাবেই হোক এবং যখনই হোক তা অবশ্যই আদায় করতে হবে। এই তাওয়াফ না করলে যত দমই দেওয়া হোক হজ্ব আদায় হবে না। অধিক অসুস্থতার কারণে পায়ে হেঁটে তাওয়াফ করতে না পারলে হুইল চেয়ার বা অন্য যে কোনো পদ্ধতিতে স্বয়ং ঐ ব্যক্তিকেই তাওয়াফ করতে হবে। কাউকে দিয়ে বদলী করানোরও সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য যে, ১২ তারিখ সূর্যাস্তের মধ্যে তাওয়াফে যিয়ারত সম্পন্ন করা ওয়াজিব। বিনা ওজরে বিলম্ব করলে দম ওয়াজিব হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু অসুস্থতা ছিল তাই বিলম্বের কারণে কোনো দম বা জরিমানা দিতে হবে না।

-সহীহ বুখারী ১/২২১; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ২৩২, ৩৪৮; সহীহ মুসলিম ১/৪১৩; মুসনাদে আহমদ ৩/৩১৭; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৮/১৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৫, ৪৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩১১-৩১৬; গুনইয়াতুন নাসিক ২৩৯, ২৭৩; মাবসূত, সারাখসী ৪/৪৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪৮

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৬০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, নবীজীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যমানায় চন্দ্র দ্বি...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, নবীজীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যমানায় চন্দ্র দ্বি খন্ডিত হয়েছিল এ সম্পর্কে কোনো সহীহ হাদীস নেই। তার এ কথা কি সহীহ? বরাতসহ জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

ঐ ব্যক্তির কথা ঠিক নয়। চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হওয়ার কথা কুরআন মজীদে ও সহীহ হাদীসে আছে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে-(তরজমা) কেয়ামত আসন্ন এবং চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে। তারা যদি কোনো নিদর্শন দেখে তবে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে, এটা তো চিরাগত যাদু। (সূরা কমর : ১-৩) আর এ সম্পর্কে অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে। আল্লামা ইবনে কাসীর রাহ. এ সম্পর্কিত হাদীসকে মুতাওয়াতির বলেছেন। (তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/২৭৬) নিম্নে কয়েকটি হাদীস উদ্ধৃত করা হল। ১. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, আমরা মিনায় রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। হঠাৎ চন্দ্র দ্বিখন্ডিত হল এবং এক খন্ড পাহাড়ের পশ্চাতে চলে গেল ও এক খন্ড পাহাড়ের উপরে রইল। তখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা সাক্ষী থেকো। (সহীহ বুখারী ১/৫৪৬; সহীহ মুসলিম ২/৩৭৩) ২. হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. বর্ণনা করেন, মক্কাবাসীরা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কোনো নিদর্শন দেখতে চাইল। তখন আল্লাহ তাআলা চন্দ্রকে দ্বিখন্ডিত করে দেখিয়ে দিলেন। তারা দেখতে পেল যে, চাঁদের দুই খন্ড হেরা পাহাড়ের দুই পার্শ্বে চলে গিয়েছে।

-সহীহ বুখারী ১/৫৪৫; সহীহ মুসলিম ২/৩৭৩; জামে তিরমিযী ৩২৮৫; মুসনাদে আহমদ ৩/১৬৫; দালাইলুন নুবুওয়াহ ২/২৬২-২৬৮; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ৩/৩৫৪, ৩৬১; ফাতহুল বারী ৭/২২১; আততাহরীর ওয়াত তানবীর ২৭/১৬৩; আদ্দুররুল মানসুর ৬/১৩২-১৩৪; তাফসীরে কুরতুবী ১৭/১২৫-১২৮; তাফসীরে মাযহারী ৯/১৩৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫৪০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমাদের হজ্ব-কাফেলার মুআল্লিম সাহেব যিলহজ্বের ১১ ও ১২ তারিখ যোহরের...

প্রশ্ন

আমাদের হজ্ব-কাফেলার মুআল্লিম সাহেব যিলহজ্বের ১১ ও ১২ তারিখ যোহরের পর বেশি ভিড় হবে বলে সকাল ৮/৯ টার সময় রমী করিয়ে আমাদের নিয়ে মক্কায় চলে যান। জানতে চাই, সকাল বেলা এভাবে রমী করার দ্বারা তা আদায় হয়েছে কি না এবং আদায় না হলে কোনো জরিমানা আসবে কি না?

উত্তর

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আমল ও আছারে সাহাবার আলোকে অধিকাংশ ফকীহ একমত যে, ১১ ও ১২ যিলহজ্ব সূর্য ঢলার আগ পর্যন্ত রমীর সময় হয় না। তাই এ সময় রমী করলে ওয়াজিব আদায় হবে না। সুতরাং কেউ আগে রমী করলে তাকে আবার সূর্য ঢলার পর রমী করতে হবে। অন্যথায় জরিমানা দম দিতে হবে।

অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের উপর জরিমানা দম ওয়াজিব হয়েছে।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১২৯৯, ১৩০০; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৪৭৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩২৪; ফাতহুল কাদীর ২/৩৯৩, ৩৯২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪৮; মানাসিকে মোল্লা আলী কারী ২৩৭; গুনইয়াতুন নাসিক ১৮১; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৫/৩২৮; আলমাজমু’ ৮/২১১; যখীরাহ ৩/২৭৫; আলবাহরুল আমীক ৪/১৮৭৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৫১৯
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এক ব্যক্তি ভুলবশত তাওয়াফে বিদা না করে দেশে চলে এসেছেন।...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি ভুলবশত তাওয়াফে বিদা না করে দেশে চলে এসেছেন। তিনি তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোনো নফল তাওয়াফও করেননি। এখন তার করণীয় কী জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

তার হজ্ব আদায় হয়ে গেছে। তবে তাওয়াফে বিদা না করার কারণে তার উপর একটি দম (কুরবানীযোগ্য পশু) ওয়াজিব হয়েছে, যা হারামের সিমানার ভিতর জবাই করা জরুরি। সুতরাং তিনি মক্কায় গমনকারী কোনো ব্যক্তি অথবা সেখানে অবস্থানকারী কারো মাধ্যমে হারামের সিমানার ভিতর একটি পশু জবাই করবেন।

সহীহ ইবনে খুযায়মা ৪/৩২৮; সহীহ ইবনে হিববান ৯/২১০; মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ পৃষ্ঠা : ২৩৯; শরহু মুখতাছারুত তহাবী ২/৫৪৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩৪; মানাসিক পৃ. ২৫৩; সুনানে দারাকুতনী ২/২৪৪; রদ্দুল মুহতার ২/৫৪৩; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৫/৩৪০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৭১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এক ব্যক্তি হজ্বের তাওয়াফ মারওয়া থেকে শুরু করেছে শেষ করেছে...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি হজ্বের তাওয়াফ মারওয়া থেকে শুরু করেছে শেষ করেছে সাফাতে। তার করণীয় কী? পরে পৃথকভাবে একটি চক্কর করে নিলে কি চলবে?

উত্তর

হ্যাঁ, আরেকটি চক্কর করে নিলেই চলবে। আর এক্ষেত্রে কোনো জরিমানা আসবে না। কিন্তু যদি আরেকটি চক্কর করা না হয় তাহলে জরিমানা হিসেবে দম ওয়াজিব হবে।

গুনইয়াতুন নাসিক ১৩১-১৩২;মানাসিক, ১৭৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫১৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩১৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৭০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

বদলী হজ্বকারীর জন্য কি ইফরাদ হজ্ব করা জরুরি? অনেকে বলেন,...

প্রশ্ন

বদলী হজ্বকারীর জন্য কি ইফরাদ হজ্ব করা জরুরি? অনেকে বলেন, ইফরাদ করা জরুরি। প্রেরক তামাত্তু বা কিরান হজ্বের অনুমতি দিলেও আদায় হবে না। ইফরাদ হজ্বই করতে হবে। মুআল্লিমুল হুজ্জাজ কিতাবেও এমনই বলা হয়েছে। আবার কোনো কোনো আলেমকে জায়েয বলতে শোনা যায়। এ বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধান বরাতসহ জানতে চাই।

উত্তর

প্রেরক অনুমতি দিলে বদলীকারী তামাত্তু ও কিরান হজ্বও করতে পারবেন। অনুমতি থাকলেও ইফরাদ করা জরুরি, তামাত্তু বা কিরান জায়েয নয়-এই কথা ঠিক নয়। মুআল্লিমুল হুজ্জাজ, ফাতাওয়া খলীলিয়্যাহসহ কিছু কিতাবে সর্বাবস্থায় ইফরাদ জরুরি বলা হলেও উপমহাদেশের অনেক মুফতী প্রেরকের অনুমতিসাপেক্ষে তামাত্তু ও কিরান করাকে জায়েয বলে ফাতওয়া দিয়েছেন। যেমন, মুফতী কেফায়াতুল্লাহ দেহলভী রাহ., মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. এবং মুফতী যফর আহমদ উছমানী রাহ., মুফতী রশীদ আহমদ লুধিয়ানভী রাহ. প্রমুখ। আর জায়েয হওয়ার পক্ষে হানাফী ফকীহদের থেকেও সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত রয়েছে। যেমন,ফাতাওয়া খানিয়া, আল্লামা সিন্ধির লুবাব, আল্লামা সাঈদ আবদুল গণী রাহ.-এর ইরশাদুস সারী এবং আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী ফাতাওয়া শামীতে এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, অনুমতি থাকলে বদলীকারী কিরান, তামাত্তু যেকোনোটি করতে পারেন। ইফরাদ হজ্ব করা জরুরি নয়। এছাড়া কিরান জায়েয হওয়ার কথা মাবসূতে সারাখসী ও হেদায়াতেও আছে।

লুবাবুল মানাসিক ৪৫৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৭; মাবসূত সারাখসী ৪/১৫৫-১৫৬; হেদায়া ১/২৯৮; রদ্দুল মুহতার ২/৬১১; ইমদাদুল আহকাম ২/১৮৩; আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৫২৩; কেফায়াতুল মুফতী ৪/৪৫; জাওয়াহিরুল ফিকহ ১/৫০৮-৫১৬; ফাতাওয়া উছমানী ২/২২২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৬৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি হজ্বে যাচ্ছেন। তাঁর স্ত্রী ইতিপূর্বে নিজের...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি হজ্বে যাচ্ছেন। তাঁর স্ত্রী ইতিপূর্বে নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেছেন। এখন আমি কি আমার পিতার বদলী হজ্ব ঐ মহিলাকে দিয়ে করাত পরব? কোনো মহিলা কি পুরুষের বদলী হজ্ব করতে পারে?

উত্তর

হ্যাঁ, মাহরাম পুরুষ সঙ্গে থাকলে মহিলাকে দিয়েও বদলী হজ্ব করানো যায়। এতে বদলী হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।

সহীহ বুখারী ১/২০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৭; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৬৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

ক) এক ব্যক্তি এক গরীব লোককে হজ্বের জন্য তিন লাখ...

প্রশ্ন

ক) এক ব্যক্তি এক গরীব লোককে হজ্বের জন্য তিন লাখ টাকা দিয়ে বলেছে, এটা তোমাকে দিলাম। বদলী হজ্ব নয়। লোকটি হঠাৎ হজ্বের ব্যবস্থা হওয়ায় ভীষণ খুশি হল। কিন্তু তাকে এক মুআল্লিম বলল, তোমার এ হজ্ব দ্বারা ফরয হজ্ব আদায় হবে না। তাই সামর্থ্যবান হলে তখন তোমাকে নিজের টাকা দিয়ে আবার হজ্ব করতে হবে। একথা কি সঠিক?

খ) আমাদের অফিস থেকে এ বছর দু’জনকে হজ্বে পাঠানো হচ্ছে। তারা প্রতিবছর পাঠায়। এটা কর্মচারীদের জন্য একটা সুযোগ। জানতে চাই, কোনো কর্মচারী যদি একেবারে গরীব হয়, যার উপর হজ্ব ফরয হয়নি সে এভাবে হজ্ব করলে তা কি ফরয হজ্ব হবে? তেমনিভাবে যাদের টাকা আছে তারা নিজ খরচে না গিয়ে এভাবে গেলে ফরয হজ্ব আদায় হবে কি?

উত্তর

ঐ মুআল্লিমের কথা ঠিক নয়। প্রশ্নোক্ত উভয় ক্ষেত্রেই তাদের ফরয হজ্ব আদায় হবে। ফরয হজ্ব আদায়ের জন্য নিজের পূর্ব মালিকানাধীন টাকা খরচ করা কিংবা পূর্ব থেকে স্বচ্ছল থাকা শর্ত নয়; কোনো গরীব ব্যক্তির উপর পূর্ব থেকে হজ্ব ফরয না থাকলেও কারো অনুদানের অর্থ দিয়ে হজ্ব করলেও ফরয হজ্ব আদায় হবে। এরূপ ব্যক্তি যখন হজ্বের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তখন তার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যায়।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৩৭; ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/২১৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৬৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনৈক ব্যক্তি প্রথম হজ্ব-ফ্লাইটে করে হজ্বে যান। তিনি একজনের বদলী...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি প্রথম হজ্ব-ফ্লাইটে করে হজ্বে যান। তিনি একজনের বদলী হজ্বে গেছেন। তিনি মক্কায় গিয়ে বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারেন যে, বদলীকারী প্রেরকের অনুমতিক্রমে তামাত্তু হজ্বও করতে পারে। এখন তিনি উমরা করে হালাল হয়ে যেতে চান। হাদীসে নাকি এমন এজাযত আছে। জানতে চাই, তার জন্য কি এমনটি করা বৈধ হবে?

উত্তর

প্রেরণকারীর অনুমতি সাপেক্ষে বদলীকারীর জন্য তামাত্তু হজ্ব করা জায়েয হলেও প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির জন্য তামাত্তু করার সুযোগ নেই। কারণ তিনি হজ্বের ইহরাম করে মক্কায় পৌঁছে গেছেন। আর হজ্বের ইহরাম বাঁধার পর হজ্ব না করে হালাল হওয়ার সুযোগ নেই। শুধু বদলীকারীর জন্য নয়; নিজের হজ্বে গেলেও একই হুকুম।

বিদায় হজ্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে উমরা করে হজ্বের ইহরাম ত্যাগ করার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা শুধু ঐ বছরের জন্য ছিল। ঐ হুকুম পরবর্তীতে প্রযোজ্য হবে না। হাদীস শরীফে তা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, এই সুযোগ কি এবছরের জন্য, না পরেও থাকবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা তোমাদের জন্য বিশেষ হুকুম।

সুনানে আবু দাউদ ১/২৫২; সুনানে ইবনে মাজাহ ২১৪; সুনানে নাসাঈ ২/১৭; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৫/২৫৩; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ১৯৭; ইলাউস সুনান ১০/২৬৬-২৭০; যুবদাহ ৩৪১; রদ্দুল মুহতার ২/৫০২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৪৫৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

সূরা হজ্বের ১৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, (তরজমা) ‘এই দুই...

প্রশ্ন

সূরা হজ্বের ১৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, (তরজমা) ‘এই দুই বাদী-বিবাদী তাদের রবের ব্যাপারে বিবাদে লিপ্ত হয়েছে।’ এই আয়াতে দুই দল বলতে কাদেরকে বোঝানো হয়েছে? তাদের নাম ও প্রেক্ষাপট সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করার অনুরোধ রইল।

উত্তর

এই আয়াতটি ওই দুই পক্ষ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা বদর যুদ্ধে রণক্ষেত্রে মুখোমুখি হয়েছিল। মুসলমানদের পক্ষ থেকে হযরত আলী রা., হামযা রা. ও ওবায়দা রা.। আর কাফেরদের পক্ষ থেকে ওতবা ইবনে রবীয়া, তার পুত্র ওলিদ ও তার ভাই শায়বা। কাফের পক্ষের তিনজনই রণক্ষেত্রে মারা গিয়েছিল। আর মুসলমানদের মধ্যে হযরত আলী রা. ও হযরত হামযাহ রা. অক্ষত অবস্থায় ফিরে এসেছিলেন। আর হযরত ওবায়দা রা. গুরুতর আহত অবস্থায় রণক্ষেত্র থেকে ফিরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে শাহাদত বরণ করেন।

-সহীহ বুখারী ২/৫৬৫; তাফসীরে ইবনে কাসীর ৩/৩৪০; মাআরিফুল কুরআন ৬/২৪৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫৩৩০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

এক ব্যক্তি দু’বছর পূর্বে তার এক আত্মীয়ের বদলী হজ্ব করেছে।...

প্রশ্ন

এক ব্যক্তি দু’বছর পূর্বে তার এক আত্মীয়ের বদলী হজ্ব করেছে। তখন তার উপর হজ্ব ফরয ছিল না। এখন তার কাছে হজ্ব করার মতো টাকা-পয়সা আছে। হজ্ব করার সামর্থ্য আছে। জানার বিষয় এই যে, এখন কি তাকে হজ্ব করতে হবে, না পূর্বে যে বদলী হজ্ব করেছিল তাই তার জন্য যথেষ্ট হবে?

উত্তর

তাকে এখন নিজের ফরয হজ্ব আদায় করতে হবে। অন্যের বদলী হজ্ব করার দ্বারা নিজের ফরয হজ্ব আদায় হয় না।

সহীহ বুখারী ১/২০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৭; মাবসূত সারাখসী ৪/১৪৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৭৩; হেদায়া ২/২৯৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৪৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৫; ফাতহুল কাদীর ৩/৬৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৯৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

শুনেছি, কিয়ামতের পূর্বে যখন দাজ্জালের আবির্ভাব হবে তখন সে গোটা...

প্রশ্ন

শুনেছি, কিয়ামতের পূর্বে যখন দাজ্জালের আবির্ভাব হবে তখন সে গোটা পৃথিবী চষে বেড়াবে। শুধু মক্কা-মদীনায় যেতে পারবে না। এ সম্পর্কিত কোনো হাদীস থাকলে তা সবিস্তারে জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত কথাটি সঠিক। দাজ্জাল মক্কা মুকাররমা এবং মদীনা মুনাওয়ারায় প্রবেশ করতে পারবে না। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত দীর্ঘ হাদীসে তা বিদ্যমান রয়েছে।

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এমন কোনো ভূখণ্ড নেই, যা দাজ্জালের পদভারে মথিত হবে না। তবে মক্কা ও মদীনায় সে প্রবেশ করতে পারবে না। সে কোনো দিক দিয়ে মদীনায় যাওয়ার সুযোগ পাবে না। যেদিকেই যাবে সেদিকেই ফেরেশতাগণকে সারিবদ্ধভাবে মদীনার হেফাযতে প্রহরারত থাকবেন। এরপর মদীনা তার অধিবাসীসহ তিনবার প্রকম্বিত হবে। যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মদীনা থেকে সকল কাফের এবং মুনাফিককে বের করে দিবেন। (সহীহ বুখারী ১/২৫৩)

আরো দেখুন : সহীহ বুখারী, হাদীস ৭১২৪; ফাযাইলুল মদীনা ১/২৫৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৯৪২; মাজমাউয যাওয়াইদ ৩/৬৬০

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনাব ইসহাক সাহেব এ বছর পবিত্র হজ্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে মক্কা...

প্রশ্ন

জনাব ইসহাক সাহেব এ বছর পবিত্র হজ্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে মক্কা মুকাররমায় গমন করেন। তিনি আল্লাহর মেহেরবানিতে হজ্বের সকল কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেন। কিন্তু সর্বশেষ তওয়াফে যিয়ারতের পূর্বে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। যার দরুণ নির্দিষ্ট সময়ে তার পক্ষে তাওয়াফ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তিনি সৌদিতে এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। কয়েক দিন পর তার দেশে ফিরতি ফ্লাইট। কিন্তু তিনি এখনও পূর্ণ সুস্থ হননি। তাকে তাওয়াফে যিয়ারত করতে হবে কি? তাওয়াফ না করে দম দেওয়া কি যথেষ্ট? বিলম্বের কারণে তার উপর দম ওয়াজিব হবে কি না?

উত্তর

তাওয়াফে যিয়ারত ফরয। তাই যেভাবেই হোক বিলম্বে হলেও তা আদায় করতে হবে। অসুস্থ অবস্থায় পায়ে হেঁটে না পারলে হুইল চেয়ারে বা যেভাবে সম্ভব আদায় করা যাবে। অন্যথায় সুস্থ হওয়ার পর আদায় করবে। আর তাওয়াফে যিয়ারতের শেষ সময় হল ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত। অসুস্থতার কারণে এ সময়ের ভিতর তাওয়াফ সম্পন্ন করা কোনোভাবে সম্ভব না হলে পরে যখন সম্ভব হয় আদায় করবে। এক্ষেত্রে বিলম্বের কারণে কোনো দম বা কিছুই দিতে হবে না। কিন্তু যদি কোনোভাবে নির্ধারিত সময়ের ভেতর আদায় করা সম্ভব হয় তাহলে সেক্ষেত্রে বিলম্বের কারণে দম দিতে হয়।

সহীহ বুখারী ১/২২১; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৮/১৩২, হাদীস ১৩৩০৩; মাবসূত সারাখসী ৪/৪৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩১১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৪৯; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী পৃ. ৩৪৮; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ২৭৩; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪৮; রদ্দুল মুহতার ২/৫১৮, ৫১৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৬২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

লটারির মাধ্যমে পাওয়া টাকা দ্বারা হজ্ব করা জায়েয আছে কি...

প্রশ্ন

লটারির মাধ্যমে পাওয়া টাকা দ্বারা হজ্ব করা জায়েয আছে কি না?

উত্তর

কোন ধরনের লটারির মাধ্যমে টাকা পেয়েছেন তা স্পষ্ট করে লিখুন। লটারির অবস্থাভেদে হুকুমের ভিন্নতা রয়েছে।

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৫০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমরা শোনেছি যে, মিনায় অবস্থিত মসজিদে খাইফে সত্তরজন নবী নামায...

প্রশ্ন

আমরা শোনেছি যে, মিনায় অবস্থিত মসজিদে খাইফে সত্তরজন নবী নামায আদায় করেছেন। একথা কি সঠিক? প্রমাণসহ জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

হ্যাঁ, একথা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে মারফূ হাদীসে এসেছে যে, মসজিদে খাইফে সত্তরজন নবী নামায আদায় করেছেন।

তাবারানী আওসাত ৬/১৯৩ হাদীস : ৫৪০৩; আখবারে মক্কা ২/১৭৪; মাজমাউয যাওয়াইদ ৩/৬৩৯

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২৪৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনৈক ব্যক্তি হজ্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এ বছর হজ্ব এজেন্সীর কাছে...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি হজ্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এ বছর হজ্ব এজেন্সীর কাছে টাকা জমা করেছিলেন। গত সপ্তাহে হঠাৎ তার ইন্তেকাল হয়ে যায়। এখন জানতে চাই, তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্বের জন্য প্রেরণ করা জরুরি কি না? ওয়ারিসগণ কাউকে দিয়ে বদলী হজ্ব না করিয়ে এ টাকা নিজেরা নিতে পারবে কি না? প্রকাশ থাকে যে, মৃত ব্যক্তি হজ্ব করার ব্যাপারে কোনো ওসিয়ত করে যাননি।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ওয়ারিসদের উপর মৃতের পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করানো জরুরি নয়। ওয়ারিসগণ মৃতের সকল পরিত্যক্ত সম্পদের এমনকি হজ্ব এজেন্সির নিকট জমা দেওয়া ঐ টাকারও মালিক হয়ে গেছে। অবশ্য সকল ওয়ারিশ স্বতঃস্ফূর্তভাবে চাইলে মৃতের পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করাতে পারে। তবে ওয়ারিশদের মধ্যে নাবালেগ থাকলে এক্ষেত্রে তার সম্পদ নেওয়া যাবে না।

রদ্দুল মুহতার ২/৫৯৯; ফাতহুল কাদীর ৩/৭৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২১৭
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি ইহরাম অবস্থায় একদিন পায়ের গোছা খুব চুলকিয়েছিলাম। এতে আমার...

প্রশ্ন

আমি ইহরাম অবস্থায় একদিন পায়ের গোছা খুব চুলকিয়েছিলাম। এতে আমার পায়ের ৬-৭টা পশম পড়ে যায়। এতে কি কোনো কাফফারা দিতে হবে?

উত্তর

ঐ কারণে আপনার উপর একটি ফেতরা পরিমাণ খাদ্য-শস্য বা তার মূল্য সদকা করা ওয়াজিব এবং তা হেরেম এলাকার গরীবদেরকে দেওয়া উত্তম।

বাদায়েউস সানায়ে ২/৪২২; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৩২৭; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ২৬৩, ২৫৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২১৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি নফল হজ্ব আদায়ের ইচ্ছা করলে আমার বৃদ্ধ পিতা বললেন,...

প্রশ্ন

আমি নফল হজ্ব আদায়ের ইচ্ছা করলে আমার বৃদ্ধ পিতা বললেন, আমি যেন তাঁর পক্ষ হতে উমরা করি। এরপর আমি তামাত্তুর নিয়তে বাবার কথামতো প্রথমে তার পক্ষ হতে উমরা আদায় করেছি এরপর যথানিয়মে হজ্ব করেছি। জানার বিষয় হল, উক্ত পদ্ধতিতে হজ্ব আদায় করা শুদ্ধ হয়েছে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ঐ হজ্বটি তামাত্তুই হয়েছে। ঐভাবে তামাত্তু করাটা দোষণীয় নয়।

গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ২১৪; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃৃ. ২৮৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫২০৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার হজ্ব করার খুব ইচ্ছা। কিন্তু হজ্ব করার মতো টাকা...

প্রশ্ন

আমার হজ্ব করার খুব ইচ্ছা। কিন্তু হজ্ব করার মতো টাকা আমার নেই। তাই আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে টাকা করয করে হজ্ব করি। আর টাকাগুলো কয়েক বছরে আদায় করে দিয়েছি। বর্তমানে আমার আর্থিক অবস্থা খুব ভালো যে, আমি হজ্ব করতে পারি। প্রশ্ন হল, অসচ্ছল অবস্থায় আদায়কৃত হজ্ব ফরয হজ্ব হিসাবে আদায় হয়েছে কি না? স্বচ্ছল অবস্থায় কি পুনরায় হজ্ব করতে হবে?

উত্তর

অস্বচ্ছল অবস্থায় আদায়কৃত হজ্বটি ফরয হজ্ব হিসাবেই আদায় হয়েছে। পরবর্তীতে হজ্ব করলে তা নফল হিসাবে আদায় হবে।

বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৪; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৪১; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৩২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৭৫
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

জনৈক ব্যক্তি হজ্বের জন্য ইহরাম বাঁধার পর বাড়িতে থাকা অবস'ায়...

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি হজ্বের জন্য ইহরাম বাঁধার পর বাড়িতে থাকা অবস'ায় একটি মুরগি যবাই করেছে। তার এক চাচা বলল, তুমি মুহরিম অবস'ায় মুরগি যবাই করার কারণে তোমার দম দেওয়া লাগবে। জানতে চাই, তার চাচার কথা কি সঠিক?

উত্তর

ঐ ব্যক্তির কথা সঠিক নয়। মুহরিম ব্যক্তির জন্য হাঁস-মুরগি তথা গৃহপালিত পশু-পাখি যবাই করা নাজায়েয নয়। ইহরাম অবস'ায় বন্য পশু-পাখি শিকার করা নিষিদ্ধ।

-আলমাবসুত সারাখসী ৪/৯৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪২৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/৩৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৯০; হাশিয়া তহতাবী আলাদ্দুর ১/৫৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৭১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৭৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

একবার আমি ও আমার এক বন্ধু হজ্ব করার জন্য রওয়ানা...

প্রশ্ন

একবার আমি ও আমার এক বন্ধু হজ্ব করার জন্য রওয়ানা হলাম এবং মক্কা শরীফে পৌঁছে হজ্বের সময় হজ্বের কাজ শুরু করলাম। ঘটনাক্রমে একদিন আমার বন্ধু এমন একটি কাজ করল যার ফলে তার উপর দম ওয়াজিব হয়, কিন' আমার বন্ধু চাচ্ছে যে, দমটা অর্থাৎ পশু যবাইটা সেখানে না দিয়ে দেশের বাড়িতে দিবে। এখন আমার জানার বিষয় হল, তার জন্য কি বাড়িতে এসে দম দেওয়া ঠিক হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

দম হরমের ভিতরে দেওয়া জরুরি। হরমের বাইরে দমের নিয়তে পশু যবাই করলে তা দ্বারা দম আদায় হবে না। এখন কারো মাধ্যমে সেখানে দম দেওয়ার ব্যবস'া করলেও চলবে। নিজের যাওয়া জরুরি নয়।

নয়।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৮/৬৯১; ফাতহুল কাদীর ২/৪৫২; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৫২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭৪; হাশিয়া তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৪০৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৫৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৭৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি গত বছর হজ্ব করার ইচ্ছা করি এবং ইহরামের কাপড়ও...

প্রশ্ন

আমি গত বছর হজ্ব করার ইচ্ছা করি এবং ইহরামের কাপড়ও খরিদ করি, কিন' আমার সে বছর হজ্ব করার তাওফীক হয়নি। এই বছর আমার হজ্ব করার তাওফীক হয় এবং আমি ঐ পুরাতন ইহরামের কাপড় দিয়েই হজ্ব আদায় করি। এখন আমার জানার বিষয় এই যে, পুরাতন ইহরামের কাপড় পরে হজ্ব আদায় করার কারণে আমার হজ্বের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

ইহরামের জন্য নতুন কাপড় জরুরি নয়। পুরাতন কাপড়ও যথেষ্ট। তাই ঐ কাপড়ে হজ্ব আদায় করা সহীহ হয়েছে। কোনো ত্রুটি হয়নি।

হয়নি।-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৪; মাবসূত সারাখসী ৪/৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৮-৯; আলবাহরুর রায়েক ২/২২০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৮১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১৬৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমাদের এলাকায় এক লোক হজ্ব ফরয হওয়ার পর তা আদায়ের...

প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় এক লোক হজ্ব ফরয হওয়ার পর তা আদায়ের আগেই ইনে-কাল করেন। এখন তার ওয়ারিশগণ তার পক্ষ থেকে হজ্ব আদায় করতে চাচ্ছেন। জানতে চাই

ক) ঐ ব্যক্তি হজ্ব আদায়ের অসিয়ত করে গেলে তার এলাকা থেকেই লোক পাঠিয়ে হজ্ব করানো জরুরি, নাকি মক্কায় অবস'ানরত কাউকে দিয়ে হজ্ব করালেও তা আদায় হয়ে যাবে?

খ) অসিয়ত না করলে ওয়ারিশগণ স্বেচ্ছায় তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে হজ্ব করাতে চাইলে হজ্ব করাতে পারবে কি না এবং এর জন্য তার এলাকা থেকে কাউকে পাঠানো জরুরি, নাকি অন্য এলাকা থেকেও কারো মাধ্যমে হজ্ব করাতে পারবে?

উত্তর

(ক) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির অনাদায়ী ঋণ থাকলে প্রথমে তার সম্পদ থেকে তা আদায় করতে হবে। এরপর অবশিষ্ট সম্পদের এক তৃতীয়াংশ থেকে বদলী হজ্বের ঐ অসিয়তটি পূর্ণ করতে হবে। এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দ্বারা মৃতের এলাকা থেকে হজ্বের জন্য প্রেরণ করা সম্ভব হলে তার এলাকা থেকেই প্রেরণ করা জরুরি। এক্ষেত্রে মক্কা কিংবা সৌদী আরবে অবস'ানরত কাউকে দিয়ে হজ্ব করালে অসিয়ত আদায় হবে না। কিন' এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দ্বারা যদি তার এলাকা থেকে হজ্ব করানো সম্ভব না হয় তাহলে ঐ টাকা দিয়ে যেখান থেকে হজ্ব করানো যায় সেখান থেকেই করাবে। অবশ্য ওয়ারিশগণ চাইলে এক্ষেত্রে নিজ সম্পদ থেকে কিছু দিয়ে মৃতের এলাকা থেকে প্রেরণের ব্যবস'া করতে পারবে।

উত্তর : (খ) মৃত ব্যক্তি হজ্বের অসিয়ত না করে থাকলেও ওয়ারিশগণ তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করাতে পারবে। এক্ষেত্রে মৃতের অবন্টিত পরিত্যক্ত সম্পদ দ্বারা বদলী হজ্ব করাতে চাইলে দু’টি শর্ত জরুরিভাবে লক্ষণীয়। ১. সকল ওয়ারিশদের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি থাকতে হবে। ২. ওয়ারিশদের কেউ নাবালেগ থাকলে কিংবা কারো সম্মতি না থাকলে তার অংশ থেকে নেওয়া যাবে না। আর অসিয়ত না করলেও মৃতের এলাকা থেকেই বদলী হজ্ব করানো উত্তম। তবে এক্ষেত্রে অন্য কোনো দেশ থেকে যেমন সৌদি আরবের কোনো এলাকা থেকেও হজ্ব করানোর সুযোগ আছে।

আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৮০; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৪৪০; মাবসূত সারাখসী ৪/১৫৪; আততাজরীদ ৪/১৬৪১; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৭; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৩২৯; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৫/৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১২২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার দাদার বয়স ষাট বছর। কয়েক বছর আগে হঠাৎ তিনি...

প্রশ্ন

আমার দাদার বয়স ষাট বছর। কয়েক বছর আগে হঠাৎ তিনি দূরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখনও তিনি ফরয হজ্ব আদায় করেননি। তাই তিনি হজ্ব নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন। বলে উঠেন, আল্লাহ যদি আমাকে সুস্থতা দান করেন তাহলে আমি আগামী বছর হজ্ব করব। সুস্থ হয়ে পরের বছর তিনি হজ্ব করেছেন। এখন তার ফরয হজ্বটি কি আদায় হয়েছে, না তাকে আবার হজ্ব করতে হবে? বিষয়টি স্পষ্ট করে জানাবেন।

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার দাদা যদি ফরয হজ্ব ব্যতীত অন্য কোনো হজ্বের নিয়ত না করে থাকেন তাহলে তা ফরয হজ্বই আদায় হয়েছে। তাকে নতুন করে ফরয হজ্ব আদায় করতে হবে না।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৯৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১১৪
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি এবং আমার স্ত্রী উভয়ে হজ্ব করার নিয়ত করেছি। আমরা...

প্রশ্ন

আমি এবং আমার স্ত্রী উভয়ে হজ্ব করার নিয়ত করেছি। আমরা জানি যে, বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করার ক্ষেত্রে প্রথম তিন তাওয়াফে রমল করতে হয়। কিন্তু এক হাজী সাহেবকে বলতে শুনেছি, মহিলারা রমল করবে না। তাই বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছি। মুফতী সাহেবের নিকট আমার বিনীত আবেদন এই যে, দয়া করে মহিলাদের রমল সম্পর্কিত হুকুম কি জানাবেন।

উত্তর

উক্ত হাজী সাহেব ঠিকই বলেছেন। তাওয়াফের মধ্যে রমল করার হুকুম শুধু পুরুষের জন্য, মহিলার জন্য নয়। মহিলারা রমল করবে না। আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করা এবং সাফা-মারওয়া সায়ী করার ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য রমল নেই।

-সুনানে দারা কুতনী ২/২৯৫; কিতাবুল আসল ২/৩৮৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৫৪; রদ্দুল মুহতার ২/৫২৭

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১১৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি একজন সরকারী চাকুরিজীবী। গত বছর আমি হজ্বে গিয়েছিলাম। হজ্বের...

প্রশ্ন

আমি একজন সরকারী চাকুরিজীবী। গত বছর আমি হজ্বে গিয়েছিলাম। হজ্বের বিভিন্ন আমল করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যাই। এরপর ১০ই যিলহজ্ব কংকর নিক্ষেপ করতে গিয়ে প্রচন্ড ভিড় দেখে বাসায় ফিরে আসি। পরবর্তীতে অলসতা করে বাকি দিনগুলোতে আর কংকর নিক্ষেপ করতে যাইনি। এখন আমার করণীয় কী? দয়া করে জানাবেন।

উত্তর

যিলহজ্ব মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ নির্ধারিত সংখ্যক কংকর নিক্ষেপ করা হজ্বের অন্যতম ওয়াজিব। ভিড়ের কারণে বা অন্য কোনো ওজরে যদি কেউ দিনে নিক্ষেপ করতে না পারে তাহলে রাতে হলেও তা নিক্ষেপ করতে হবে, অন্যথায় দম ওয়াজিব হবে।

প্রশ্নোক্ত বর্ণনা অনুযায়ী আপনার কর্তব্য ছিল ভিড় কমার পর জামারাতে গিয়ে কংকর নিক্ষেপ করা। ইচ্ছাকৃতভাবে এ ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়াটা অন্যায় হয়েছে। এজন্য আপনাকে তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে এবং হেরেমের এলাকার মধ্যে একটি দম (একটি ছাগল, দুম্বা অথবা উট বা গরুর এক সপ্তমাংশ) দিতে হবে। যদি আপনি দেশে এসে গিয়ে থাকেন তবে কারো মাধ্যমে হেরেম এলাকায় দম আদায়ের ব্যবস্থা করবেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩২৭; গুনইয়াতুন নাসিক ১৮২; মানাসিক ৩৫৮; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১০২
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি গত বছর হজ্বে গিয়েছিলাম। ইহরাম অবস্থায় একদিন হোঁচট খেয়ে...

প্রশ্ন

আমি গত বছর হজ্বে গিয়েছিলাম। ইহরাম অবস্থায় একদিন হোঁচট খেয়ে পড়ে যাই। ফলে ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখটির বেশিরভাগ ভেঙ্গে যায়। ওটা ঝুলে থাকায় খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই কেটে ফেলে দিই। এতে কি আমার উপর কোনো দম বা সদকা ওয়াজিব হয়েছিল? কুরআন-হাদীসের আলোকে জানাবেন।

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় ভেঙ্গে যাওয়া নখ কেটে ফেলার অনুমতি আছে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ভাঙ্গা নখটি কেটে ফেলার কারণে আপনার উপর কোনো কিছু ওয়াজিব হয়নি। এক বর্ণনায় এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, ইহরাম অবস্থায় নখ ভেঙ্গে গেলে কেটে ফেলবে।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৮/৫৩, হাদীস : ১২৯০৩; মুয়াত্তা মালেক ১৩৯; কিতাবুল আছল ২/৪৩৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪২৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫১০১
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে অনেক অর্থ-সম্পত্তির মালিক হয়েছি। এ বছর আমি...

প্রশ্ন

আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে অনেক অর্থ-সম্পত্তির মালিক হয়েছি। এ বছর আমি ও আমার আম্মু হজ্বে যাব। আমার এক ছোট ভাই আছে। সে এখনও সাবালক হয়নি। তবে এতটুকু বুঝমান যে, আমাদের দেখাদেখি হজ্বের সকল বিধি-বিধান পালন করতে পারবে। এখন সে আমাদের সাথে হজ্ব করলে বালেগ হওয়ার পর তাকে পুনরায় হজ্ব করতে হবে কি?

উত্তর

নাবালেগের উপর হজ্ব ফরয নয়। নাবালেগ অবস্থায় হজ্ব করলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। তাই নাবালেগ অবস্থায় হজ্ব করলে বালেগ হওয়ার পর হজ্ব করার সামর্থ্য থাকলে নিজের ফরয হজ্ব করা জরুরি হবে।

-মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ১৮১২; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ৩০৫০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৩; মানাসিক ৩৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮১

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৯৩
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার এক প্রতিবেশী বেশ অর্থ-সম্পদের মালিক। হজ্বের ইচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন...

প্রশ্ন

আমার এক প্রতিবেশী বেশ অর্থ-সম্পদের মালিক। হজ্বের ইচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তার হজ্বে যাওয়া পিছিয়ে যাচ্ছিল। গতবার ঠিক করেছিলেন হজ্বে যাবেন। কিন্তু হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে বদলি হজ্বের ওসিয়ত করে যেতে পারেননি। এখন তার ছেলে পিতার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করাতে চায়। অসিয়ত ছাড়া মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করা জায়েয আছে কি? এবং এর মাধ্যমে মাইয়্যেতের জিম্মায় থাকা ফরয হজ্ব আদায় হবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মৃত ব্যক্তি অসিয়ত না করে গেলেও তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করা জায়েয এবং এর মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির জিম্মায় থাকা ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যাওয়ার আশাও করা যায়। তবে এক্ষেত্রে যারা উদ্যোগ গ্রহণ করবে হজ্বের ব্যয়ভার তাদের জিম্মায় থাকবে। মৃত ব্যক্তির ইজমালি সম্পদ থেকে তা নেওয়া যাবে না। আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা রাহ. তার পিতা বুরাইদাহ রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এসে আরজ করলেন যে, আমার মা হজ্ব না করেই মৃত্যু বরণ করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্ব করতে পারি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, হ্যাঁ, তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব কর।-জামে তিরমিযী ২/২৫৭, হাদীস : ৯২৯

প্রকাশ থাকে যে, হজ্ব ইসলামের অন্যতম ফরয বিধান। সামর্থ্যবানদের জন্য বিলম্ব না করে তা আদায় করে নেওয়া জরুরি। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিলম্ব করা গুনাহ।

-কিতাবুল আছল ২/৫১১; রদ্দুল মুহতার ২/৫৯৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৪; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৪৩৪

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৪৬
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমার হজ্ব করার খুবই শখ কিন্তু হজ্ব করার মতো টাকা...

প্রশ্ন

আমার হজ্ব করার খুবই শখ কিন্তু হজ্ব করার মতো টাকা নেই। তাই আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে টাকা করয করে হজ্ব আদায় করি। টাকাগুলো কয়েক বছরে আদায় করে ফেলি। বর্তমানে আমার আর্থিক অবস্থা খুব ভালো যে, আমি হজ্ব করতে পারি।

মাননীয় মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই যে, আমার অস্বচ্ছল অবস্থায় আদায়কৃত হজ্ব ফরয হজ্ব হিসাবে আদায় হয়েছে কি? স্বচ্ছল অবস্থায় কি পুনরায় হজ্ব করতে হবে?

উত্তর

অস্বচ্ছল অবস্থায় আদায়কৃত হজ্বটি ফরয হজ্ব হিসাবেই আদায় হয়েছে। এখন হজ্ব করলে তা নফল হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৪; মানাসিকে মোল্লা আলী পৃ. ৪২; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ৩২

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৪০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি হজ্বের এহরাম অবস্থায় একদিন পায়ের গোছা খুব চুলকাই। এতে...

প্রশ্ন

আমি হজ্বের এহরাম অবস্থায় একদিন পায়ের গোছা খুব চুলকাই। এতে আমার ৬/৭টি পশম পড়ে যায়। জানতে চাই যে, এতে কি আমার কোনো কাফফারা দিতে হবে? দিতে হলে তা কি দেশে দেওয়া যাবে?

উত্তর

উক্ত কারণে আপনার উপর একটি ফেতরা পরিমাণ খাদ্যশস্য বা তার মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। এই সদকা আপনি এখানেও আদায় করতে পারেন। তবে ‘হরম’ এলাকায় দেওয়া উত্তম।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৪২২; মানাসিকে মুল্লা আলী পৃ. ৩২৭; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ২৬৩,২৫৬

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০৩৮
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আমি আমার বাবা-মার সাথে হজ্ব করেছি। তখন আমি নাবালেগ ছিলাম,...

প্রশ্ন

আমি আমার বাবা-মার সাথে হজ্ব করেছি। তখন আমি নাবালেগ ছিলাম, আমার বয়স নয় বছর ছিল। বর্তমানে বড় হয়েছি এবং হজ্ব করার মতো আর্থিক সঙ্গতিও আছে। জানিয়ে বাধিত করবেন যে, নাবালেগ অবস্থায় আদায়কৃত হজ্বটি ফরয হিসাবে গণ্য হয়েছে কি?

উত্তর

নাবালেগ অবস্থায় আদায়কৃত হজ্বটি নফল হয়েছে। তা দ্বারা আপনার ফরয হজ্ব আদায় হয়নি। তাই আপনাকে এখন ফরয হজ্ব আদায় করতে হবে।

-মানাসিকে মুল্লা আলী পৃ. ৩৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৫; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ১৩

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৫০১০
তারিখ: ২৭-নভেম্বর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

আসসালামু আলাইকুম। মেহেরবানী করে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোর কুরআন-হাদীস অনুযায়ী যথার্থ উত্তর...

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম। মেহেরবানী করে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোর কুরআন-হাদীস অনুযায়ী যথার্থ উত্তর প্রদানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

ক : বদলি হজ্ব করার জন্য যার পক্ষ থেকে হজ্ব করা হবে ইহরাম বাধার সময় তার পক্ষ থেকে নিয়ত করতে হবে। কিন্তু মক্কা শরীফে পৌঁছার পর কা’বা ঘর তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাঈ করা, মিনায় জামারাসমূহে কংকর নিক্ষেপ করার সময় প্রতিটি কাজেই যার পক্ষ থেকে হজ্ব করা হচ্ছে তার পক্ষ থেকে নিয়ত করতে হবে কি না? আর যদি ঐসব প্রতিটি কাজে তার পক্ষ থেকে নিয়ত করা দরকার না হয় অথচ কেউ বদলী হজ্ব করার সময় প্রতিটি কাজেই তার পক্ষ থেকে নিয়ত করে আদায় করে তবে হজ্বের কোনো ক্ষতি হবে কি না?

খ) পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন বা অন্য কারো পক্ষ থেকে বাইতুল্লাহ শরীফ (কা’বা ঘর) নফল তওয়াফ এবং নফল উমরা হজ্ব আদায় করলে যার পক্ষ থেকে আদায় করা হবে তার পক্ষ থেকেই নিয়ত করা কর্তব্য বা উচিত কি না। আর যদি এরূপ সঠিক না হয় তবে সঠিক নিয়ম বা পদ্ধতি কী? তাদের পক্ষ থেকে নিয়ত করে আদায় করলে কি ভুল হবে বা আদায় হবে না?

গ) ইহরামের কাপড় এবং ইহরাম অবস্থায় ব্যবহৃত অন্যান্য কাপড় যেমন গলায় রাখার ব্যাগ, বেল্ট, টাকা রাখার ব্যাগ ইত্যাদি জেট পাউডার, হুইল পাউডার বা এ জাতীয় কোনো সাবান বা পাউডার দ্বারা ধুয়ে হজ্বে ব্যবহার করা যাবে কি না?

ঘ) ঢাকা শহরের সাপ্লাই করা পানির স্বাদ ও রং মোটামুটি ঠিক বা কোনো কোনো সময় সামান্য ঘোলাটেও হয় এবং সামান্য দুর্গন্ধ লাগে। সেই পানি দ্বারা অযু করা, কাপড় ধোয়া ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যববহার করা কেমন? আর শহরে বসবাস করে ঐ পানি ব্যবহার করা ব্যতীত বিকল্প কোনো উপায়ও নেই। এ ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে জানানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

ঙ) বর্তমানে ঢাকা শহরে বা সব জায়গাতেই গোসল খানা ও পায়খানা একই কক্ষে বা রুমে থাকে। পায়খানা বা লেট্রিনের কাজের জন্য একটি পানির ট্যাপ এবং গোসল ও অন্যান্য কাজের জন্য আলাদা পানির ট্যাপ থাকে। আর সেই জায়গাগুলো সাধারণত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। তবে কদাচিত লেট্রিনের গ্যাসের সামান্য দুর্গন্ধ দেখা দেয়। এ অবস্থায় এরূপ গোসলখানায় অযু-গোসলের দুআ উচ্চারণ করে পড়া কেমন?

চ) অনেক মসজিদে মূল মসজিদের বাইরে বড় বারান্দা বা চত্বর থাকে। কোনো কোনো মসজিদ দোতলা বা তিন তলায়। এখন প্রশ্ন হল, মসজিদে ঢোকার দুআ কোনখানে পড়তে হবে?

ছ) গরু-ছাগল লালন-পালনের জন্য ভাগে দেওয়া কেমন? এ ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশ কী?

জ) কোনো অসুস্থ লোকের যে কোনো কারণে গোসল ফরয হলে এবং গোসল করা সম্ভব না হলে প্রতি ওয়াক্ত নামায আদায়ের জন্য ফরয গোসল ও অযুর জন্য আলাদাভাবে তায়াম্মুম করতে হবে কি না?

ঝ) মুখের থুথু বা সর্দি হাতে বা কাপড়ে লাগলে শরীয়তের বিধান কী? আঙ্গুলের মাথায় মুখের থুথু লাগিয়ে কুরআন শরীফের পাতা উল্টানো কেমন?

উত্তর

ক) শুধু ইহরামের সময় উক্ত নিয়ত করা যথেষ্ট। প্রতিটি কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রেরণকারীর পক্ষ থেকে নিয়ত করতে হবে না। তবে এভাবে নিয়ত করলেও হজ্বের কোনো ক্ষতি হবে না।-বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৯৮

খ) যে কোনো নফল আমলের সওয়াব অন্যকে দিতে চাইলে আমল করার সময়ও তাকে সওয়াব পৌঁছানোর নিয়তে করা যেতে পারে। আবার আমল সম্পন্ন করার পরও উক্ত আমলের সওয়াব তাকে পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে। সুতরাং নফল তাওয়াফ বা উমরার সওয়াবও কাউকে দিতে চাইলে তা আদায় করার সময় যেমন ঐ ব্যক্তির পক্ষ থেকে আদায়ের নিয়ত করা যাবে তেমনি আদায়ের পরও তাকে সওয়াব পৌঁছে দেওয়ার নিয়ত করা যাবে। উভয় অবস্থায়ই সে উক্ত আমলের সওয়াব পেয়ে যাবে।-আলবাহরুর রায়েক ৩/৫৯; রদ্দুল মুহতার ২/৫৯৫

গ) ইহরাম অবস্থায় মুহরিমের জন্য জেড পাউডার, হুইল পাউডার বা এ জাতীয় যে কোনো সুগন্ধিযুক্ত পাউডার কিংবা সুগন্ধিযুক্ত সাবান কোনো কাজে ব্যবহার করা জায়েয নেই। তবে ইহরামের পূর্বে এ ধরনের পাউডার বা সাবান দ্বারা ধোয়া কাপড় বা অন্যান্য আসবাবপত্র হজ্বে তথা ইহরাম অবস্থায় ব্যবহার করা যাবে।-আলবাহরুর রায়েক ৩/২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪১; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪১৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৮৭

ঘ) ওয়াসার সাপ্লাই করা পানি তখনই নাপাক বলে গণ্য হবে যখন তার দুর্গন্ধ বা রং ইত্যাদি থেকে নাপাকি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত বলে মনে হবে। অন্যথায় শুধু সামান্য দুর্গন্ধ বা সামান্য ঘোলাটে হলেই সন্দেহের ভিত্তিতে তা নাপাক বলা যাবে না। কারণ এখানে নাপাকির মিশ্রণ ছাড়াও দুর্গন্ধ বা ঘোলাটে হওয়ার ভিন্ন কারণ থাকতে পারে। সুতরাং যতক্ষণ তা নিশ্চিত নাপাকি বলে মনে না হবে ততক্ষণ তা অযু-গোসল বা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যাবে।-আলবাহরুর রায়েক ১/৮৬; হাশিয়াতুত্তাহতাবী আলালমারাকী পৃ. ১৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৮৬

ঙ) গোসলখানা যদি বড় হয় এবং টয়লেটের প্যান বা কমোড অযুর বেসিন বা ট্যাপ থেকে কিছুটা দূরত্বে থাকে তাহলে সেখানে অযু-গোসলের সময় দুআ পড়া যাবে। আর যদি একই জায়গায় হয় তবে মুখে উচ্চারণ না করে মনে মনে দুআ পড়ার অবকাশ রয়েছে।-মাআরিফুস সুনান ১/৭৭; রদ্দুল মুহতার ১/৩৪৪

চ) মসজিদে প্রবেশের দুআ যেখান থেকে মসজিদের অংশ শুরু সেখানে প্রবেশের সময়ই পড়বে। চাই তা বারান্দা বা দোতলা-তিন তলা যাই হোক না কেন। অবশ্য আমাদের দেশে বারান্দাগুলো সাধারণত মসজিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে চত্বর মসজিদের অন্তর্ভুক্ত থাকে না। তাই এর ব্যতিক্রম হলে মসজিদ কর্তৃপক্ষের উচিত হবে তারা যেন মসজিদ শুরুর সীমানা এমনভাবে চিহ্নিত করে রাখেন, যাতে সাধারণ মানুষের এ বিষয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়।-আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৫৭

ছ) গরু-ছাগল ভাগে দেওয়ার প্রচলিত অনেক পন্থাই নাজায়েয। আপনি সুনির্ধারিত কোনো পন্থার কথা উল্লেখ করেননি। তবে কারো নিকট গরু-ছাগল পালতে দিয়ে তাকে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক প্রদান করলে সে কারবার জায়েয।

জ) গোসলের জন্য তায়াম্মুম করার পর নতুন করে আবার গোসল ফরয না হলে যতক্ষণ পর্যন্ত উক্ত ওযর বিদ্যমান থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত ঐ তায়াম্মুমই যথেষ্ট। তবে উক্ত তায়াম্মুমের পর অযু ভঙ্গের কোনো কারণ পাওয়া গেলে শুধু অযু করে নিতে হবে। আর যদি অযু করতেও সক্ষম না হয় তাহলে অযুর পরিবর্তে তায়াম্মুম করে নিবে।-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩০; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৩২

ঝ) মানুষের থুথু ও সর্দি নাপাক নয়। অতএব তা শরীর বা কাপড়ে লেগে গেলে নাপাক হবে না। আর আঙ্গুলের মাথায় থুথু লাগিয়ে কুরআন শরীফের পৃষ্ঠা উল্টানো যদিও নাজায়েয নয় তবে এমনটি করা অনুচিত।-সহীহ বুখারী ১/৩৮; ফাতহুল বারী ১/৪২০; উমদাতুল কারী ৩/১৭৬; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩০৫

উত্তর দিয়েছেন : মাসিক আল-কাওসার
ফতোয়া নং: ৪৯৭৪
তারিখ: ৯-অক্টোবর-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

অযু ছাড়া ওমরা বা নফল তাওয়াফ করলে করনীয় ৷

প্রশ্ন
হুজুর! আমি গতকাল একটি ওমরা করেছি৷ আমার জানা ছিল না যে, ওমরার তাওয়াফের জন্য অযু জরুরি। তাই আমি অযু ছাড়াই উমরার তাওয়াফ করেছি এবং মাঝে আরো কিছু নফল তাওয়াফও করেছি। এর মধ্যে কিছু অযু ছাড়াও করেছি। এখন আমার করনীয়? আমাকে কি এজন্য কোনো জরিমানা দিতে হবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অযু ছাড়া উমরার তাওয়াফ করার কারণে আপনার উপর একটি দম ওয়াজিব হয়েছে। এজন্য হেরেমের সীমানায় আপনাকে একটি ছাগল বা দুম্বা জবাই করতে হবে। আর যে কয়টি নফল তাওয়াফ অযু
ছাড়া করেছেন এগুলোর প্রত্যেক চক্করের জন্য একটি করে সদকাতুল ফিতর সমপরিমাণ নির্দিষ্ট খাদ্যদ্রব্য বা এর মূল্য সদকা করতে হবে। সুতরাং আপনি যদি একটি নফল তাওয়াফ অযু ছাড়া করে থাকেন তাহলে সাত চক্করের জন্য সাতটি সদকাতুল ফিতর সমপরিমাণ নির্দিষ্ট খাদ্য বা এর মূল্য সদকা করতে হবে। এ সদকা হেরেমের এলাকায় করা উত্তম। হেরেমের বাইরে করলেও আদায় হয়ে যাবে।
-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৫৩; মানাসিক, লি মোল্লা আলী কারী ৩৫২৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী: জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া৷


উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৫৩
তারিখ: ১৪-অগাষ্ট-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

হজ্ব করেনি এমন ব্যক্তি দ্বারা বদলী হজ্ব করানো যাবে কি?

প্রশ্ন
আমি এক মসজিদের ইমাম ৷আমার মহল্লার এক ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর তার ওয়ারিসরা আমাকে তার বদলি হজ্ব করার জন্য বলছে। কিন্তু আমার উপর হজ্ব
ফরয না হওয়ার কারণে আমি নিজেই এখনো হজ্ব করিনি। জানার বিষয় হল, আমি ঐ ব্যক্তির বদলি হজ্ব
করতে পারব কি না?
উত্তর
বদলি হজ্বের জন্য উত্তম হল, এমন ব্যক্তিকে পাঠানো যিনি নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেছেন এবং হজ্বের আহকাম ভালোভাবে জানেন। আর যে ব্যক্তি হজ্বে যায়নি এবং তার উপর হজ্ব ফরযও নয় তাকে বদলি হজ্বের জন্য পাঠানো মাকরূহ তানযিহি। তবে এমন ব্যক্তিকে দ্বারা বদলি হজ্ব করালেও হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৮/১৮৯; ফাতহুল কাদীর ৩/৭২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৭; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৫২
তারিখ: ১৪-অগাষ্ট-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

প্রয়োজন অতিরিক্ত জমি থাকলে কি হজ্ব ফরয হয়?

প্রশ্ন
আমার কাছে হজ্ব করার মত কোনো টাকা-পয়সা নেই৷ তবে আমি অনেকগুলো জমির মালিক। অনেক জমি এমন রয়েছে, যা খোরাকির প্রয়োজন অতিরিক্ত। জানতে চাই আমার উপর কি হজ্ব ফরয?
উত্তর
সংসারের খরচের জন্য প্রয়োজন হয় না এমন জমি বিক্রি করলে যদি আপনার হজ্বের খরচ হয়ে যায় তাহলে আপনার উপর হজ্ব করা ফরয। অতএব হজ্ব করার মত টাকা হাতে না থাকলে জমি বিক্রি করে হলেও আপনাকে হজ্বে যেতে হবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭২৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৯৫০
তারিখ: ১৪-অগাষ্ট-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

ঘরে উপযুক্ত মেয়ে থাকলে তাকে বিয়ে না দিয়ে হজ্ব করা কি জরুরী?

প্রশ্ন
মুফতী সাহেব আমার প্রশ্ন হল, আমার কাছে হজ্বে যাওয়ার মতো টাকা আছে। কিন্তু আমার মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত, তাকে এখন বিয়ে দেয়া প্রয়োজন। এ টাকা দিয়ে হজ্ব করলে বিয়ের খরচের জন্য টাকা থাকবে না। আর বিয়ে দিলে হজ্ব করা যাবে না। এখন এক্ষেত্রে আমার জন্য হজ্ব করা কি জরুরি? জানালে উপকৃত হব৷
উত্তর
হজ্ব ফরয হয়ে গেলে আগে হজ্ব আদায় করে নেয়া আবশ্যক ৷ অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার হজ্ব করা জরুরী৷ মেয়ের বিবাহ আল্লাহ তায়ালা ইনশাল্লাহ ব্যবস্থা করবেন৷
অবশ্য, হজ্বের টাকা জমা দেওয়া ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার শেষ সময়ের আগেই যদি আপনার মেয়ে বিয়ে দিয়ে দেন আর বিয়েতে ঐ টাকা খরচ হয়ে যায় তবে আপনার উপর হজ্ব ফরয হবে না। কিন্তু হজ্বের প্রস্তুতি গ্রহণের শেষ সময় পর্যন্ত যদি ঐ টাকা খরচ না হয় তাহলে আপনার উপর হজ্ব করা ফরয। উক্ত ফরয হজ্ব আদায় করা অাবশ্যক ৷
-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০১; ফাতহুল কাদীর ২/৩২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭৩৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৯১
তারিখ: ২০-জুন-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

দাড়ি রাখা সুন্নত নাকি ওয়াজিব?

প্রশ্ন
হুজুর দাড়ি রাখা কি সুন্নত নাকি ওয়াজিব? একজন বলল গাড়ি রাখা নাকি সুন্নত ৷ এবং দাড়ি বুঝা যায় এ পরিমান রাখলেই নাকি চলবে ৷ আসলে কি তাই? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব ৷
উত্তর
হাদীস ও সুন্নাহর বিধান অনুযায়ী দাড়ি রাখা ওয়াজিব। যারা সুন্নত বলে তাদের কথা সঠিক নয় ৷ কেননা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়ি রাখার আদেশ করেছেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, ‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মোঁচ কাটার ও দাড়ি লম্বা করার আদেশ করেছেন।’
ﺇﻧﻪ ﺃﻣﺮ ﺑﺈﺣﻔﺎﺀ ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ ﻭﺇﻋﻔﺎﺀ ﺍﻟﻠﺤﻴﺔ -সহীহ মুসলিম ১/১২৯৷
বিভিন্ন হাদীসে আদেশের শব্দগুলোও বর্ণিত হয়েছে। যেমন- আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা.-এর সূত্রে
ﺧﺎﻟﻔﻮﺍ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ، ﻭﻓﺮﻭﺍ ﺍﻟﻠﺤﻰ ﻭﺍﺣﻔﻮﺍ ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ
‘মুশরিকদের বিরোধিতা কর। দাড়ি বাড়াও ও মোচ কাট।’
-বুখারী ২/৮৭৫ ৷ ইবনে ওমর রা.-এর সূত্রে মুসলিম ১/১২৯;
ﺧﺎﻟﻔﻮﺍ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ، ﻭﺍﺣﻔﻮﺍ ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ ﻭﺃﻭﻓﻮﺍ ﺍﻟﻠﺤﻰ
‘মুশরিকদের বিরোধিতা কর এবং মোচ কাট ও দাড়ি পূর্ণ কর।’
ইবনে ওমর রা.-এর সূত্রে বুখারী ২/৮৭৫, ﺍﻧﻬﻜﻮﺍ ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ ﻭﺍﻋﻔﻮﺍ ﺍﻟﻠﺤﻰ মোচ উত্তমরূপে কাট এবং দাড়ি লম্বা কর। আবু হুরায়রা রা.-এর সূত্রে মুসলিম ১/১২৯,
ﺟﺰﻭﺍ ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ ﻭﺍﺭﺧﻮﺍ ﺍ ﻟﻠﺤﻰ، ﺧﺎﻟﻔﻮﺍ ﺍﻟﻤﺠﻮﺱ
মোচ কাট ও দাড়ি ঝুলিয়ে দাও, অগ্নিপূজারীদের বিরোধিতা কর।’
উপরের হাদীসগুলোতে চারটি শব্দ পাওয়া গেল : ﺍﺭﺧﻮﺍ ـ ﺍﻋﻔﻮﺍ ـ ﺃﻭﻓﻮﺍ ـ ﻭﻓﺮﻭﺍ
এই সবগুলো শব্দ থেকে বোঝা যায়, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লম্বা ও পূর্ণ দাড়ি রাখার
আদেশ করেছেন। সুতরাং এভাবেই দাড়ি রাখা ওয়াজিব। তবে যেহেতু হাদীস বর্ননাকারী ইবনে ওমর , আবু হুরাইরা রাঃ সহ অনেক সাহাবাগন থেকে দাড়ি এক মুষ্টি হওয়ার পর কাটা প্রামানিত আছে, তাই দাড়ি এক মুষ্টি হওয়ার পর এক মুষ্টির অতিরিক্তাংশ কাটা যাবে ৷ যেমন- বুখারী শরীফে বর্ণিত হয়েছে- ইবনে উমর (রাঃ) যখন হজ্ব অথবা উমরা করতেন, তখন তিনি দাড়ি মুঠ করে ধরে মুঠের অতিরিক্ত অংশটুকু কেটে ফেলতেন।
-সহীহ বুখারী, হাদীস: ৫৮৯২; রদ্দুল মুহতার ২/৪১৭ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৬০
তারিখ: ১২-জুন-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

রাসূল সাঃ এর মে'রাজ স্বপ্নযুগে হয়েছিল নাকি স্বশরীরে জাগ্রত অবস্থায় ?

প্রশ্ন
হুজুর একটি প্রশ্ন, আমাদের নবীজি সাঃ এর মে'রাজ কি স্বশরীরে হয়েছিল নাকি স্বপ্নযুগে হয়েছিল? অনেকে বলে যে মে'রাজ স্বপ্ন এর মাধ্যমে হয়েছিল। কিন্তু আমার জানা মতে মে'রাজ হুজুর (সাঃ) এর স্বশরীরে হয়েছিল। আসলে কোনটা সঠিক? জানাবেন ৷
উত্তর
সংখ্যাগরিষ্ঠ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের মত হল, মে'রাজ নবীজি সাঃ এর জাগ্রত অবস্থায় স্বশরীরে হয়েছে। এটি ইজমায়ে উম্মত দ্বারা প্রমানিত ।
-নশরুত্তীব-৮০

আসলে রাসূল সাঃ এর ভ্রমণ দুইবার হয়েছে ৷ স্বপ্নযোগেও হয়েছে। আবার জাগ্রত অবস্থায় স্বশরীরেও
হয়েছে। প্রথমে হয়েছে স্বপ্নে। তারপর হয়েছে জাগ্রত অবস্থায় স্বশরীরে। এটাই সঠিক ৷ কারণ শুধু স্বপ্নযুগে হলে মক্কার কাফেররা আশ্চর্য হত না। কারণ স্বপ্নে মানুষ কত কিছুই দেখে ৷ এতে কেউ আশ্চর্য হয় না। সুতরাং বুঝা গেলে রাসূল সাঃ এর মে'রাজ জাগ্রত অবস্থা স্বশরীরেও হয়েছে শুধু স্বপ্নযুগে নয় ৷
-শরহুস সীরাতিন নাবাবিয়্যাহ লিইবনে হিশাম-১/২৪৪৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতী জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৪৭
তারিখ: ১৪-মে-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

কা'বা শরীফ, রওজা শরীফ ইত্যাদির ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায পড়া ৷

প্রশ্ন
হুজুর আজকাল প্রায় সব জায়নামাযেই কা‘বা শরীফ বা রওজা শরীফের ছবি আকা থাকে ৷ জানার বিষয় হলো, এসব ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামাজ পড়া
যাবে কিনা?
উত্তর
কাবা শরীফ, রওজা শরীফ, মসজিদে নববী ইত্যাদি ইসলামের সম্মানিত স্থান এবং ইসলামের নিদর্শনাবলী ৷ আর ইসলামের নিদর্শনাবলিকে কুরআনে সম্মান করতে বলা হয়েছে ৷
আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর কেউ আল্লাহর সম্মানযোগ্য বিধানাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে পালনকর্তার নিকট তা তার জন্যে উত্তম।
সূরা হজ্ব, আয়াত নং -৩০৷
কেউ আল্লাহর নামযুক্ত বস্তুসমুহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত।
সূরা হজ্ব, আয়াত নং -৩২ ৷
হে মুমিনগণ! হালাল মনে করো না আল্লাহর নিদর্শনসমূহ।
সূরা মায়িদা, আয়াত নং -২ ৷
অতএব কা'বা শরীফ, রওজা শরীফ ইত্যাদির ছবিযুক্ত জায়নামায পরিহার করা উচিত। এবং এসব জায়নামাযে নামায না পড়া উচিত ৷ কারণ অনেক সময় এসবের উপর পা রাখা হয় । ফলে এসবের অপমান করা হয় ৷
তবে এসব ছবির উপর পা না রেখে শুধু সেজদা করলে এসব জায়নামাযে নামায পড়তে কোন সমস্যা নেই ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৪৪
তারিখ: ১৪-মে-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

দেশের বাড়িতে দম তথা হজ্জে জরিমানার পশু জবাই করা ৷

প্রশ্ন
গত বছর আমার ফুফা হজ্জ করেন ৷ ঘটনাক্রমে একদিন আমার তিনি এমন একটি কাজ করলেন যার ফলে তাঁর উপর দম ওয়াজিব হয় ৷ কিন্তু ফুফা চাচ্ছেন যে, দমটা অর্থাৎ পশু যবাইটা সেখানে না দিয়ে দেশের বাড়িতে দিবে। তাই জানার বিষয় হল, তাঁর জন্য কি বাড়িতে এসে দম দেওয়া ঠিক হবে?
উত্তর
দম হরমের ভিতরে দেওয়া জরুরি। হরমের বাইরে দমের নিয়তে পশু যবাই করলে তা দ্বারা দম আদায় হয়
না। অতএহ প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ফুফার জন্য হরমের ভিতরে দম দিতে হবে ৷ তবে কারো মাধ্যমে সেখানে দম দেওয়ার ব্যবস্থা করলেও চলবে। নিজের যাওয়া জরুরি নয়।
-বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৫২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৫৭ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৪৩
তারিখ: ১৪-মে-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

দেশের বাড়িতে দম তথা হজ্জে জরিমানার পশু জবাই করা ৷

প্রশ্ন
গত বছর আমার ফুফা হজ্জ করেন ৷ ঘটনাক্রমে একদিন আমার তিনি এমন একটি কাজ করলেন যার ফলে তাঁর উপর দম ওয়াজিব হয় ৷ কিন্তু ফুফা চাচ্ছেন যে, দমটা অর্থাৎ পশু যবাইটা সেখানে না দিয়ে দেশের বাড়িতে দিবে। তাই জানার বিষয় হল, তাঁর জন্য কি বাড়িতে এসে দম দেওয়া ঠিক হবে?
উত্তর
দম হরমের ভিতরে দেওয়া জরুরি। হরমের বাইরে দমের নিয়তে পশু যবাই করলে তা দ্বারা দম আদায় হয়
না। অতএহ প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ফুফার জন্য হরমের ভিতরে দম দিতে হবে ৷ তবে কারো মাধ্যমে সেখানে দম দেওয়ার ব্যবস্থা করলেও চলবে। নিজের যাওয়া জরুরি নয়।
-বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৫২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৫৭ ৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৮৩০
তারিখ: ৪-এপ্রিল-২০১৭
বিষয়: হজ্ব

নাবালেগ অবস্থায় হজ্ব করলে বালাগ হওয়ার পর পুনরায় হজ্ব করা ফরজ কি না?

প্রশ্ন
আমি ছোট বেলায় আমার আম্মু আব্বুর সাথে হজ্ব করেছি ৷ তখন সাবালক হয়নি। তবে এতটুকু বুঝমান ছিলাম যে, তাদের দেখাদেখি হজ্বের সকল বিধি-বিধান
পালন করতে পেরেছি । জানার বিষয় হলো, বালেগ হওয়ার পর আমাকে পুনরায় হজ্ব করতে হবে কিনা?
উত্তর
নাবালেগের উপর হজ্ব ফরয নয়। তাই নাবালেগ অবস্থায় হজ্ব করলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি বালেগ হওয়ার পর হজ্ব করার সামর্থ্য থাকলে নিজের ফরয হজ্ব করা জরুরি হবে।
-সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ৩০৫০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮১; মানাসিক ৩৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৭৫২
তারিখ: ৩--২০১৬
বিষয়: হজ্ব

কুরআনে বর্ণিত ঘটনার নাটক করা৷

প্রশ্ন
বর্তমানে এস এ টিভিতে একটি সিরিয়াল চলছে যা আমাদের প্রিয় নবী হযরত ইউসুফ (আ) এর জীবন কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত। এই সিরিয়াল দেখা বা এসব নাটক বানানো জায়েজ কিনা? জানালে কৃতার্থ হব।
উত্তর
কুরআনে বর্ণিত ‍বিভিন্ন ঘটনা যেমন- ইউসুফ-যুলাইখা, বদর যুদ্ধ, মক্কাবিজয়, ফেরাউনের পানিতে ডুবে মরা ইত্যাদি ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ৷ বিশেষ করে কুরআনে বর্ণিত ঘটনাগুলো আরোও বেশি গুরুত্ব রাখে। এসব ঘটনার নাটক করা , দেখা ,দেখানো কোনভাবেই জায়েয হবেনা। কেননা, তা কুরআন অবমাননার শামিল। যার কিছু দিক নিম্নে বর্ণনা করা হলো। যেমন-
১৷ কুরআনে কারীম যে আযমত ও সম্মানের বাহক তার দাবি তো হলো তাতে বর্ণিত সকল বিষয়বস্তুকে পূর্ণ আদব ও সম্মানের সাথে তার ভাষায় পড়া, শুনা ও শুনানো। এর ‍বিপরিতে নাটকনির্মাতাদের জন্য পবিত্র
কুরআনে বর্ণিত কোনো ঘটনাকে নাটকে রূপ দিয়ে তার
ভাবার্থ বুঝানোর চেষ্টা করা কুরআনে নিষিদ্ধ আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরতকারী “ লাহউ ওয়া লাইব” এর অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এরূপ করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
২৷ কোনো নাটকই ছবি মুক্ত হয়না। আর কোনো প্রাণীর ছবি বানানো, দেখা, দেখানো সবই হারাম। আর কুরআনের বিষয়বস্তুকে ছবির মাধ্যমে পেশ করা কুরআন অবমাননা ও বটে ।
৩৷ এসব নাটকের পূর্ণতা নারীদের ছাড়া হয়না। নারী ‍দিয়ে নাটকগুলো সাজানো হয়। আর নারীদের ছবি দেখা স্পষ্ট হারাম। বলাবাহুল্য, এমন একটি নাজায়েয বিষয়কে কুরআনের বিষয়বস্তু উপস্থাপনার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা নিতান্তই কুরআনের তাচ্ছিল্যের শামিল।
৪৷ যেকোনো সত্য ঘটনার নাটকই তাতে কিছু কিছু কাল্পনিক বিষয় প্রবেশ করানো ছাড়া সম্ভব হয়না সুতরাং কাল্পনিক কিছু বিষয়কে সংযোজন করে পুরো নাটকটাই কুরআনে বর্ণিত বলে প্রচারণা চালানো যার ফলে কুরআন ও কুরআন নয় এমন বিষয় এক হয়ে যায়। উপরন্তু এটি কুরাআনের অর্থগত বিকৃতিরও শামিল। তাই তা হারাম।
৫৷ কুরআনের উল্লিখিত ঘটনার অনেক ক্ষেত্রে এমন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যার একাধিক অর্থ ও ব্যাখ্যার সুযোগ রয়েছে। অকাট্যাভাবে এর কোনো একটি অর্থকে কুরআনের আসল অর্থ বলে মত ব্যক্ত করার সুযোগ নেই। অথচ নাটকের ক্ষেত্রে সুনিশ্চিতভাবে একটি ব্যাখ্যা ও অর্থকেই নির্দিষ্ট করে নেয়া হয়। যার দ্বারা বুঝা যায়, এই আয়াতের একটিমাত্রই অর্থ । এটি একটি নাজায়েয হওয়ার কারণ।
অতএব, প্রশ্নোক্ত বিষয়ে নাটক করা, দেখা সম্পূর্ণ অবৈধ। তাই তা থেকে বিরত থাকা অবশ্য কর্তব্য।
সূরা জাসিয়া ৩৫, সহীহ বোখারী ৫৬০৬,
ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া ২/২৭০, ফতওয়া মাহমুদিয়া ২৯/৩২৬, আশরাফুল ফাতাওয়া ৩/৪৭৬৷
মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া
01756473393




উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৭১
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

রোবট তৈরী ও পুতুলের বিধান৷

প্রশ্ন
১) বর্তমানে কিছু রোবট মানুষের আকৃতিতে তৈরী করা হচ্ছে এগুলো কি মুর্তির পর্যায়ে পরে? ঘরে রাখা
যাবে?
2) শিশুদের খেলনা স্বরুপ যেসব পুতুল মানব আকৃতির বা অন্য প্রানীর আকৃতির সেগুলোর সম্পর্কে বিধান
কি?
উত্তর
রোবট মূলত একটি যন্ত্র। যদি সেটি যন্ত্রের পর্যায়ে রাখা হয়, তাহলে তা নির্মাণে কোন সমস্যা আছে বলে মনে হচ্ছে না। কিন্তু যদি তাতে মানুষের আকৃতি দেয়া হয়, তাহলে অবশ্যই তা মূর্তির আওতাধীন হয়ে হারাম হয়ে
যাবে।
বিষয়টি আরো পরিস্কার করে বললে বলা যায়, যদি রোবটের চেহারা তথা চোখ, কান নাক ইত্যাদির মাধ্যমে মুখের অবয়ব না দেয়া হয়, শুধুই শরীর ইত্যাদির আকৃতি প্রদান করা হয়, তাহলে তা পূর্ণ মানুষের আকৃতি পাচ্ছে না। একটি হাদীসে প্রাণীর ছবির মাথা কেটে ফেললে তা বৈধতার পর্যায়ভূক্ত হয় বলে পরিস্কার এসেছে। সেই হিসেবে চেহারাহীন রোবটের বৈধতার অনুমতিই অনুমেয়
হচ্ছে।
মানব বা প্রাণী আকৃতির পুতুল ঘরে ঢুকানো আর মূর্তি প্রবেশ করানো একই বিধান। এসবই হারাম। বাচ্চাদের খেলনা স্বরূপও এসব মানব আকৃতি বা প্রাণীর পুতুল ব্যবহার বৈধ
নয়।
দলীল

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা নগরীতে প্রবেশ করলেন তখন বাইতুল্লাহর আশে পাশে তিনশ ষাটটি মূর্তি বিদ্যমান ছিল। তিনি প্রত্যেক মূর্তির দিকে হাতের লাঠি দিয়ে আঘাত করছিলেন এবং বলছিলেন:
‎ﺟﺎﺀ ﺍﻟﺤﻖ ﻭﺯﻫﻖ ﺍﻟﺒﺎﻃﻞ، ﺇﻥ ﺍﻟﺒﺎﻃﻞ ﻛﺎﻥ ﺯﻫﻮﻗﺎ، ﺟﺎﺀ
‎ﺍﻟﺤﻖ ﻭﻣﺎ ﻳﺒﺪﺉ ﺍﻟﺒﺎﻃﻞ ﻭﻣﺎ ﻳﻌﻴﺪ . সত্য এসেছে, মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। সত্য আগমন করেছে আর মিথ্যা না পারে কোনো কিছু সূচনা করতে, না পারে পুনরাবৃত্তি করতে। (সহীহ বুখারী হা. ২৪৭৮, ৪২৮৭, ৪৭২০; সহীহ মুসলিম হা. ১৭৮১)

আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা.-এর বর্ণনায় এসেছে যে, লাঠির শুধু ইঙ্গিতের দ্বারাই মূর্তিগুলো ধরাশায়ী হচ্ছিল। [সীরাতে ইবনে হিশাম খ : ৭, পৃষ্ঠা : ১১৪ (আররওযুল উনুফ-এর সঙ্গে মুদ্রিত সংস্করণ) তারীখুল ইসলাম শামসুদ্দীন যাহাবী খ : ২ পৃষ্ঠা : ৩১৮ ইবনে ইসহাকের উদ্ধৃতিতে, দি লাইফ অব মোহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অনুবাদে আলফ্রেড গিয়োম পৃ. ৫৫২] এই কথাটা হযরত জাবির রা-এর হাদীসেরও এসেছে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা হাদীস : ৩৮০৬)

আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল্লাহ্য় প্রবেশ করে ইবরাহীম আ. ও মারইয়াম রা.-এর ছবি দেখলেন। তখন তিনি বললেন, এঁরা তো (যাদের চিত্র এই লোকেরা অঙ্কন করেছে) (আল্লাহর এই বিধান) শুনেছেন যে, ফেরেশতারা সে গৃহে প্রবেশ করেন না, যাতে কোনো চিত্র থাকে। (সহীহ বুখারী হা. ৩৩৫১;সহীহ ইবনে হিববান হা. ৫৮৫৮)

হযরত আমর ইবনে আবাসা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে প্রেরণ করেছেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার, মূর্তিসমূহ ভেঙ্গে ফেলার এবং এক আল্লাহর ইবাদত করার ও তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুকে শরীক না করার বিধান দিয়ে।’ (সহীহ মুসলিম
হা. ৮৩২)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
‎ﺇﻥ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻳﺼﻨﻌﻮﻥ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺼﻮﺭ ﻳﻌﺬﺑﻮﻥ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ
‎ﻳﻘﺎﻝ ﻟﻬﻢ : ﺃﺣﻴﻮﺍ ﻣﺎ ﺧﻠﻔﺘﻢ . ‘যারা এই সব প্রতিকৃতি প্রস্ত্তত করে তাদেরকে কিয়ামতের দিন আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। তাদেরকে বলা হবে, যা তোমরা সৃষ্টি করেছিলে তাতে প্রাণ সঞ্চার কর।’ (সহীহ বুখারী হা. ৫৯৫১; সহীহ মুসলিম হা.
২১০৭)

মুসলিম ইবনে সুবাইহ্ বলেন- ‘আমি মাসরূকের সঙ্গে একটি ঘরে ছিলাম যেখানে মারইয়াম রা.-এর প্রতিকৃতি ছিল। মাসরূক জিজ্ঞাসা করলেন,এটা কি কিসরার প্রতিকৃতি? আমি বললাম, না, এটি মারইয়াম রা.-এর প্রতিকৃতি। তখন মাসরুক বললেন-
‎ﺳﻤﻌﺖ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﻳﻘﻮﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
‎ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺃﺷﺪ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﺬﺍﺑﺎ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ
‎ﺍﻟﻤﺼﻮﺭﻭﻥ . আমি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদকে (রা.) বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, প্রতিকৃতি প্রস্ত্ততকারীরা কেয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন আযাবের মুখোমুখি হবে। সহীহ মুসলিম হা. ২১০৯৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৫২
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

পিতা মাতা দাড়ি কেটে ফেলার আদেশ করলে করনীয়৷

প্রশ্ন
আপনাদের প্রশ্নোত্তর পর্বে জানতে পারি একমুঠ এর কম দাড়ি ছাটা কবিরা গুনাহ । কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু বিষয়ের কারণে পরিবার হতে দাড়ি ছাটার ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ দিয়েছে ।দাড়ি ছাটতে না চাইলে অপদস্থ হতে হচ্ছে । সাম্প্রতিক এক আত্মীয়কে সম্ভবত দাড়ি দেখে পুলিশ হাজতে নিয়েছে। এছাড়া এলাকাতে কিছু মানুষ কে গ্রেফতার করা হচ্ছে ইত্যাদি… এতকিছু দেখে আব্বা-আম্মা দাড়ি ছাটতে বলেছেন। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে দাড়ি না ছাটা পর্যন্ত বিবাদ বন্ধ হবে না মনে হয় । এখন কি করতে পারি ?
উত্তর
আমাদের দেখা মতে যারা দাড়ি ছেটে ফেলে তাদেরকেই পুলিশ ধরছে জামাত ও শিবির সন্দেহে। কারণ এক মুষ্টি দাড়ি সাধারণত জামাত ও শিবিরের লোকেরা রাখে না। তারা দাড়িকে ছেটে ছোট করে রাখে। তাই বাস্তবতার দৃষ্টিতেও আপনার দাড়ি ছেটে ফেলার দাবীটি অযৌক্তিক বলেই প্রতীয়মান হয়। আরেকটি বিষয় কমপক্ষে এক মুষ্টি দাড়ি রাখা এটি ইসলামের একটি প্রতীক। মুসলমানিত্বের প্রতীক। এটি রাসূল সাঃ সহ সমস্ত সাহাবী ও উম্মতে মুসলিমার আমল। এটি রাখা ওয়াজিব।
‎ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ : ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ
‎‏( ﺧﺎﻟﻔﻮﺍ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ ﻭﻓﺮﻭﺍﺍﻟﻠﺤﻰ ﻭﺃﺣﻔﻮﺍ ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ .
‎ﻭﻛﺎﻥ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺇﺫﺍ ﺣﺞ ﺃﻭ ﺍﻋﺘﻤﺮ ﻗﺒﺾ ﻋﻠﻰ ﻟﺤﻴﺘﻪ
‎ﻓﻤﺎ ﻓﻀﻞ ﺃﺧﺬﻩ হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-তোমরা মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ি লম্বা কর। আর গোঁফকে খাট কর। আর ইবনে ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩ আর দ্বীনে শরীয়তের বিধান পালন করার ক্ষেত্রে পিতা-মাতার শরীয়ত বিরোধী কথা মানা জায়েজ নয়। হাদীসে পরিস্কার ভাষায় এসেছে-
‎ﻋَﻦْ ﻋَﻠِﻲٍّ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ” ﻟَﺎ
‎ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﺒَﺸَﺮٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠﻪِ হযরত আলী রাঃ থেকে বর্নিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর নাফরমানীর করে কোন মানুষের আনুগত্ব করা জায়েজ নয়। মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১০৬৫ সুতরাং আপনার পিতা-মাতা যতই অসন্তুষ্ট হোন না কেন, এক্ষেত্রে তাদের কথা আপনার জন্য জায়েজ হবে না। দাড়ি রাখতে হবে। আপনার পিতামাতাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন। দ্বীনের সমঝ মনে হয় খুবই কম আপনার পিতা-মাতার। তাদেরকে দ্বীনদার বানানোর জন্য চেষ্টা ফিকির করুন। বেশি বেশি করে দুআ করুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে দুনিয়া ও আখেরাতের সকল বিপদ আপদ থেকে হিফাযত করুন। আমীন। উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৬৫০
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

সহজ ভাষায় মাযহাব ও তাক্বলীদ ও লা- মাযহাবিয়্যাতের পরিচয়৷

প্রশ্ন
আজকাল মাযহাব, তাকলিদ , মুকাল্লিদ গাইরে মুকাল্লিদ লা মাযহাবী আহলে হাদীস ইত্যাদি নাম খুব বেশি শুনা যায়৷ পরস্পরে অনেক বাকযুদ্ধ হয়৷ এদের আসল পরিচয় কি? জানিয়ে বাধিত করবেন৷
উত্তর
“মাযহাব” শব্দটি একটি স্বীকৃত শব্দ ছিল। ছিল
না কোন দাগ উক্ত শব্দে। কিন্তু ইদানিং উক্ত শব্দে নানাভিদ কালিমা লেপনের চেষ্টা করছে। ”মাযহাব” বিষয়ে উদ্ভট সব প্রশ্ন তোলে স্বতসিদ্ধ একটি বিষয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এ অপচেষ্টার মূল কারণ দু’টি। যথা- অজ্ঞতা
কিংবা ফিতনা। মাযহাব বিষয়ে সমালোচনাকারীরা
হয়তো মাযহাব বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণাই রাখেন না। কিংবা জেনেশুনে মুসলিম উম্মাহকে বিভক্ত করার জন্য এ বিষয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করে যাচ্ছে। আমাদের অনেকের কাছেই মাযহাব বিষয়টি অস্পষ্ট। আমরা সরল ব্যাখ্যায় উক্ত বিষয়টি উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। এ বিষয়ে পরিস্কার ধারণা পেতে হলে আমাদের পূর্ণ আলোচনাটি ধৈর্য সহকারে, গভীর মনযোগের সাথে অধ্যয়ন করতে হবে। ইনশআল্লাহ পূর্ণ আলোচনাটি পাঠের পর আশা করি এ বিষয়টি দীবালোকের ন্যায় পরিস্কার হয়ে
যাবে।
মাযহাব কী? মাযহাব শব্দের অর্থ হল, পথ। যার গন্তব্য হল কুরআন ও সুন্নাহ। আরেক শব্দে বললে, মাযহাব হল, মাধ্যম, যার গন্তব্যের নাম হল, কুরআন ও সুন্নাহ। আমরা সবাই কুরআন ও সুন্নাহ অনুপাতে আমল করতে চাই। অর্থাৎ কুরআনে বর্ণিত অজুর ফরজ, হাদীসে বর্ণিত অযুর সুন্নত, মুস্তাহাব, অযু ভঙ্গের কারণ, কুরআনও হাদীসে বর্ণিত নামাযের আরকান, ফারায়েজ, নামাযের মাসনূনাত, কতগুলি ওয়াজিব, নামায ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট কারণ কতগুলো? আমাদের দৈনন্দীন জীবনের জীবনঘনিষ্ট মাসায়েলের শরয়ী সমাধান কি? এসব বিষয় আমরা কুরআন ও হাদীসের রীতি অনুপাতে আমল করে আল্লাহকে খুশি করতে চাই। কিন্তু আমরা গায়রে মুজতাহিদ হবার কারণে, কুরআন খুলে স্পষ্ট শব্দে অজুর ফরজ দেখতে পাই না। হাদীস খুলে নাম্বারসহ গোসলের ফরজ, নামাযের বিবিধ মাসায়েল নাম্বারসহ, নির্দিষ্ট আকারে বের করতে পারি না। তখন আমরা মুজতাহিদ ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর কুরআন ও সুন্নাহ থেকে বের করা অযুর মাসায়েল, গোসলের মাসায়েল, নামাযের মাসায়েল ইত্যাদি নাম্বারসহ, আলাদা শিরোনাম দিয়ে দিয়ে তারা যা সংকলিত করেছেন, সেই পথনির্দেশনা অনুসরণ করে আমরা আল্লাহর কুরআন ও তার নবীজী সাঃ এর সুন্নাহের অনুসরণ
করি।
তাহলে কী দাঁড়াল? আমরা মানছি কিন্তু কুরআন ও হাদীস। কিন্তু বুঝি না বলে যিনি বুঝেন, তার বের করা মাসায়েলের অনুসরণ করে মূলত কুরআন ও হাদীসেরই অনুসরণ করছি। এর নামই মাযহাবের অনুসরণ। মুজতাহিদ ইমামগণ কুরআন ও সুন্নাহ থেকে যে মাসায়েলগুলো বের করে আলাদা শিরোনাম দিয়ে দিয়ে, নাম্বার দিয়ে দিয়ে আলাদা করে লিখে যা সংকলিত করেছেন। কুরআন ও সুন্নাহ থেকে বের করা সেসব মাসআলার সংকলনের নাম হল মাযহাব। তো মাযহাব অনুসরণ করে আমরা কুরআন ও সুন্নাহই মূলত অনুসরণ করছি। মূলত কোন উম্মতীকে নয়। একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার হতে পারে। উদাহরণঃ সূর্য যখন ডুবে যায়। পৃথিবীজুড়ে নেমে আসে অন্ধকার। তখন পৃথিবীর বুকে যে বস্তুগুলো আছে তা আমাদের চোখের পাওয়ার দূর্বল হবার কারণে দেখতে পাই না। তখন আমরা হ্যারিকেন, মোমবাতী, লাইট ইত্যাদি জ্বালিয়ে উক্ত বস্তুগুলোকে দেখি। আলোর ফোকাসে আমরা যা দেখতে পাচ্ছি, তা কিন্তু উক্ত আলোর ফোকাস সৃষ্টি করেনি। বরং আমাদের চোখের পাওয়ারের দুর্বলতার কারণে আগে থেকে থাকা যে বস্তুগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম না, তা দেখি মাত্র। মোমবাতীর আলোর ফোকাস কোন কিছু তৈরী করে না, বরং দেখায়। তেমনি কুরআন ও হাদীসের ভিতরে যে মাসায়েলগুলো নাম্বার আকারে, নির্দিষ্ট আকারে লিপিবদ্ধ করা আছে, তা আমরা কুরআন ও হাদীস খুলে নিজেদের ইলমের দুর্বলতার কারণে দেখতে পাই না। যেমন অজুর ফরজ, গোসলের নির্দিষ্ট ফরজ, সুন্নাত, মাকরূহ ইত্যাদি আলাদা আলাদাভাবে নির্দিষ্ট আকারে আমরা দেখতে পাই না। কারণ আমাদের জ্ঞান কম। ইলম কম। অথচ এ মাসআলাগুলো কুরআন ও হাদীসের ভিতরে আছে। তখন আমরা মুজতাহিদ ইমামদের জ্ঞান, তাদের ইলমের প্রদীপের আলোয় কুরআন ও হাদীসের ভিতরের মাসআলাগুলোকে দেখি। যে মাসায়েলগুলো মুজতাহিদ ইমামগণ তাদের ইলম ও ফাক্বাহাতের ফোকাস দিয়ে কুরআন ও হাদীসের ভিতর থেকে বের করে উম্মতের জন্য উন্মোচিত করে দিয়েছেন। মূলত আমরা মানছি কুরআন ও সুন্নাহকে।
কিন্তু না বুঝার কারণে সহায়তা নিচ্ছি মুজতাহিদ
ইমামগণ থেকে। পরিস্কার বুঝা গেল, মাযহাবের ইমামগণ মাসআলা বানাননি, বরং তারা কুরআন ও হাদীসের ভিতর থেকে মাসআলা দেখিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে আরো পরিস্কার ধারণা রাখতে হলে আমাদের তিনটি পরিভাষা সম্পর্কে জানতে হবে। শব্দগুলো হলঃ
১-মুজতাহিদ। ২-মুকাল্লিদ। ৩-গায়রে মুকাল্লিদ।
মুজতাহিদ কাকে বলে? মুজতাহিদ ঐ ব্যক্তিকে বলে, যিনি কুরআন ও সুন্নাহ ঘেটে নিজে নিজে অজু গোসল,
নামায, হজ্ব ইত্যাদিসহ মানুষের জীবন ঘনিষ্ট
সকল মাসায়েল ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাহ, মুস্তাহাব, মাকরূহ, এসব ভেঙ্গে যাবার কারণ ইত্যাদি আলাদা আলাদা করে বের করে আমল করতে সক্ষম, উক্ত ব্যক্তিকে বলে মুজতাহিদ। অর্থাৎ যিনি নিজে নিজে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে জীবন ঘনিষ্ট যাবতীয় মাসায়েল বের করে আমল করতে পারেন, তাকে বলা হয় মুজতাহিদ। যেমন চার মাযহাবের ইমামগণ ছিলেন মুজতাহিদ। মুকাল্লিদ কাকে বলে? মুকাল্লিদ উক্ত ব্যক্তিকে বলে, যিনি নিজে নিজে কুরআন ও সুন্নাহ ঘেটে জীবন ঘনিষ্ট সকল মাসায়েল নির্দিষ্ট আকারে বের করতে পারে না, কিন্তু যিনি পারেন, সেই মুজতাহিদের বের করা মাসায়েল অনুপাতে আমল করে আল্লাহর বিধানের পাবন্দী করেন। উক্ত ব্যক্তিকে বলা হয় মুকাল্লিদ। যেমন আমরা সবাই হানাফী মাযহাবের মুকাল্লিদ। গায়রে মুকাল্লিদ কারা? যারা কুরআন ও সুন্নাহ থেকে নিজ প্রাজ্ঞতায় জীবন ঘনিষ্ঠ সমস্ত মাসায়েল নির্দিষ্ট আকারে বের করতে পারেও না, আবার যারা পারেন, সেই মুজতাহিদের উদ্ভাবিত মাসায়েল অনুসরণও করেন না, বরং নিজে নিজে পন্ডিতী করেন, তাদের বলা হয়, গায়রে মুকাল্লিদ। তাদেরই আরেক নাম (কথিত) আহলে হাদীস। কয়েকটি উপমার মাধ্যমে বিষয়টি আরো পরিস্কার হবেঃ উপমা নং-১ সমুদ্রের তলদেশে হীরা মাণিক্য জহরত রয়েছে। যা সবারই প্রয়োজন। কিন্তু সবাই ডুবুরী নয়। ডুবুরী নিজ যোগ্যতায় ডুব দিয়ে সমুদ্রের তলদেশ থেকে হীরা মাণিক্য জহরত আহরণ করে তা ব্যবহার
করে।
আর যারা ডুবুরী নয়, তারা উক্ত ডুবুরীর মাধ্যমে উক্ত হীরা মাণিক্য সংগ্রহ করে ব্যবহার করে। যারা ডুব দিতে জানে না, তারা ডুবুরীর মাধ্যমে হীরা মাণিক্য জহরত পেয়ে ডুবুরীর জন্য দুআ করে। কিন্তু শুকরিয়ায় মাথা নত করে আল্লাহর দরবারে। আরেক দল ডুবুরী নয়। আবার ডুবুরীর কাছেও যায় না, বরং ডুব না জানা সত্বেও ডুব দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তেমনি কুরআন ও হাদীসের অভ্যন্তরে মাসায়েলের হীরা মাণিক্য জহরত লুকায়িত। মুজতাহিদ স্বীয় যোগ্যতা বলে সে মাসআলা বের করে আমল করে। আর মুকাল্লিদরা মুজতাহিদের আহরিত মাসায়েলের হীরা মাণিক্য দ্বারা আমল করে। মুকাল্লিদগণ মুজতাহিদের আহরিত মাসায়েল অনুপাতে আমল করে ইবাদত করে আল্লাহর। আর মাসায়েল সংগ্রাহক মুজতাহিদের জন্য দুআ করে। আর গায়রে মুকাল্লিদরা মুজতাহিদের কাছে না গিয়ে মাসায়েল বের করার যোগ্যতা না থাকা সত্বেও গবেষণার নামে দ্বীনের মাঝে ফিতনার সৃষ্টি করে। উপমা নং-২ কোন এলাকায় নতুন নির্মিত মসজিদের সকল মুসল্লির জন্যই অযু করতে পানি প্রয়োজন। কিন্তু সবার পক্ষে জমিন খনন করে পানি বের করে অযু করা সম্ভব নয়। তখন জমিন খনন করতে সক্ষম কোন দানবীর ব্যক্তি এসে তার মুজাহাদা মেহনত ও শ্রম দিয়ে জমিনের নিচ থেকে মুসল্লিদের জন্য পানির ব্যবস্থা করে কুপ ইত্যাদি খনন করে দেয়। খননকৃত কুপের পানি আল্লাহর সৃষ্টি করা। সেই পানি কেবল দানবীর ব্যক্তিটি স্বীয় মুজাহাদা দিয়ে প্রকাশ করে দিয়ে মুসল্লিদের উপর ইহসান করে থাকে। অনেক সময় পানি প্রকাশক উক্ত ব্যক্তির নামে কুপের নামকরণও হয়ে যায়। নামকরণ ব্যক্তির নামে হলেও সবাই জানেন উক্ত পানি জমিনের নিচে জমিনের সৃষ্টি লগ্ন থেকেই ছিল এবং পানির ¯্রষ্টা আল্লাহ তাআলা। দানবীর ব্যক্তি কেবল পানির প্রকাশক। তখন উক্ত মসজিদের মুসল্লিরা কূপের পানি দ্বারা অযু করে মসজিদে প্রবেশ করে ইবাদত করে আল্লাহর। কিন্তু যেহেতু দানবীর ব্যক্তিটি জমিনের নিচ থেকে পানি প্রকাশ করে দিয়ে মুসল্লিদের উপর ইহসান করেছে, তাই মুসল্লিগণ উক্ত পানি দিয়ে অযু করে দানবীর ব্যক্তির জন্য দুআ
করে।
তেমনি কুরআন সুন্নাহের গভীরে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অযু, গোসল,
সালাত ইত্যাদিরর ফরজ, সুন্নত মুস্তাহাব ইত্যাদি
কুরআন ও হাদীসের সূচনালগ্ন থেকেই তাতে প্রবিষ্ট করিয়ে রেখেছেন। কিন্তু সবার পক্ষে কুরআন ও সুন্নাহ থেকে সেসব মাসায়েল নিজে নিজে বের করে আমল সম্ভব নয়। কিন্তু সবারই অযু করা প্রয়োজন। সবাই নামায পড়া প্রয়োজন। তখন মুজতাহিদ ইমামগণ তাদের মুজাহাদা মেহনত দিয়ে কুরআন ও হাদীসের ভিতর থেকে মাসায়েলগুলো বের করে, আলাদা আলাদা শিরোনাম দিয়ে দিয়ে, নির্দিষ্ট আকারে লিপিবদ্ধ করে উম্মতের জন্য প্রকাশ করে দিয়েছেন। তখন মুজতাহিদের অনুসারীরা সেসব মাসায়েল অনুপাতে দ্বীন পালন করে, আর মাসায়েল বের করে দিয়ে ইহসানকারী মুজতাহিদ ইমামদের জন্য দুআ করে। কিন্তু ইবাদত করে আল্লাহর। উপমা নং-৩ নামাযের ইমামগণ ইমাম হবার কারণে তারা সরাসরি আল্লাহর ইবাদত করে, আর মুসল্লিরা ইমামের অনুসরণে ইবাদত আল্লাহরই করে। কিন্তু বাহ্যিকভাবে অনুসরণ করে ইমামের। তেমনি মুজতাহিদগণ ইমাম হবার কারণে তারা সরাসরি কুরআন ও সুন্নাহ থেকে মাসায়েল বের করে আমল করেন, আর মুকাল্লিদগণ মুজতাহিদ ইমামদের অনুসরণে ইবাদত করে আল্লাহর। কিন্তু বাহ্যিকভাবে অনুসরণ করে মুজতাহিদ ইমামের। উপমা নং-৪ বাংলাদেশের সংবিধানের কোন আইনী জটিলতায় কোন ব্যক্তি আক্রান্ত হলে, উক্ত ব্যক্তি সংবিধান বিশেষজ্ঞ উকীলের কাছে গমণ করে। আর উক্ত উকীলের পথনির্দেশনায় মুআক্কিল ব্যক্তি বাংলাদেশের সংবিধান মান্য করে। এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি উকীলের নির্দেশনা মানার কারণে মুআক্কিলকে সংবিধান বিরোধী আখ্যায়িত করে না। করাটা আহমকী ছাড়া আর কী’বা হতে পারে? তেমনি কুরআন ও সুন্নাহ হল আল্লাহর দেয়া
সংবিধান। যারা এ বিষয়ে প্রাজ্ঞ নয়, তারা উক্ত
বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মুজতাহিদ ইমামদের পথনির্দেশনায় আল্লাহর সংবিধান মান্য করে
থাকে।
আশা করি মাযহাবের অনুসরণের হাকীকত পরিস্কার হয়ে গেছে। মাযহাব মানা মানে কুরআন ও হাদীসের ভিন্ন কিছু মানা নয়। বরং কুরআন ও হাদীস বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির পথনির্দেশনায় কুরআন ও হাদীস মানার নাম হল মাযহাব অনুসরণ। আর কুরআন ও হাদীস না বুঝার পরও নিজের উদ্ভট বুঝ অনুপাতে দ্বীন মানার নামই হল “লা-মাযহাব” বা গায়রে মুকাল্লিদিয়্যাত। উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৫৩১
তারিখ: ১-অক্টোবর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

চেয়ারে বসে নামায আদায় সংক্রান্ত আহকাম৷

প্রশ্ন
ইদানিং শহরের মসজিদ গুলোতে চেয়ারে নামায আদায়কারী মুসল্লীর সংখ্যা বেড়ে গেছে বরং যতবেশি অভিজাত এলাকা ততো বেশি চেয়ার দেখা যায়৷ সুতরাং আমার জানার বিষয় হলো চেয়ারে নামায আদায় করার ক্ষেত্রে শরয়ী বিধান কি? প্রমান সহ বিস্তারিত জানতে চাই৷
উত্তর
( ক) কিয়াম রুকু ও সিজদা করতে সক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য নিচে বসে বা চেয়ারে বসে নামায আদায় করা বৈধ নয়৷ করলে নামায হবে না৷ কারন নামাযে দাড়ানো, রুকু করা, সিজদা করা ফরজ৷ আর ফরজ ছেড়ে দিলে নামায হয় না৷
এমনি ভাবে যে ব্যক্তি কিছু সময় কিয়াম করতে পারে কিন্তু সে তা করে নি অথবা কোন কিছু সাথে টেক লাগিয়ে কিয়াম করতে পারে তা সত্বেও সে বসে নামায আদায় করে তাহলে তাক নামায হবে না৷ তদ্রুপ সাধারন কষ্টের কারনে কিয়াম ছাড়া যাবে না৷ ছাড়লে নামায হবে না৷
(খ) যে ব্যক্তি সিজদা করতে সক্ষম নয় তবে কিয়াম ও রুকু করতে পারে, সে কিয়াম ও রুকু করার পর জমিনে বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করবে৷ যদি পরবর্তি রাকাত গুলোতে দাড়াতে সক্ষম হয় তাহলে প্রথম রাকাতের ন্যায় আদায় করবে৷ নতুবা পরবর্তি রাকাত বসে পড়বে৷ যদি প্রথম থেকেই চেয়ারে বসে ইশারার মাধ্যমে রুকু সিজদা করে নেয় তাও বৈধ হবে৷ তবে তা অনুত্তম৷ আর যদি এমন ব্যক্তি শুরু থেকেই জমিনে বসে অথবা চেয়ারে বসে নামায আদায় করে তাহলে তা বৈধ হবে৷ তবে চেয়ারে না বসে নিচে বসে পড়াই উত্তম পদ্ধতি৷ আর নামাযের মত গুরুত্বপুর্ন ইবাদতটি উত্তম পদ্ধতিতেই আদায় করা উচিত৷
(গ) সে ব্যক্তি সিজদা করতে সক্ষম কিন্তু কিয়াম করতে অক্ষম৷, সে যদি চেয়ারে বসে ইশারায় সিজদা করে তাহলে তার নামায হবে না৷ তাকে নিচে বসে পুরোপুরি সিজদা দিয়েই নামায আদায় করতে হবে৷
( ঘ) বসে নামায আদায় করার সময় যে যেভাবে বসলে নামাযী ব্যক্তির সুবিধা হবে সেভাবেই বসবে৷ তাশাহুদ অবস্থার মত বসা আবশ্যক নয়৷
(ঙ) বসে ইশারা করার মাধ্যমে সিজদা করে নামায পড়ার ক্ষেত্রে অন্য কোন জিনিষের উপর সিজদা করার প্রয়েজন নেই, ইশারার মাধ্যমে সিজদা করাই যথেষ্ট ৷ তবে কেউ অন্য কোন বস্তুর উপর সিজদা করলে নামায হয়ে যাবে৷ এমনিভাবে চেয়ারে নামায পড়ার ক্ষেত্রে এমনটি বৈধ৷ তবে এটা জরুরী মনে করা যাবে না, এবং এটা আসল সেজদার অন্তর্ভোক্ত হবে না৷ বরং আসল সেজদা ইশারার দ্বারা আদায় হয়ে যায়৷ হ্যাঁ যদি ঐ বস্তু বসার স্থান হতে এক বিঘত থেকে কম উচু হয় তাহলে বাস্তব সেজদা হিসেবে গন্য হবে৷ অন্যথায় বাস্তব সেজদা হিসেবে গন্য হবে না৷
(চ) চেয়ারে বসে নামায আদায় কারীর পেছনে রুকু সেজদা কারী ব্যক্তির নামায সহীহ হবে না৷
(ছ) বসে বা চেয়ারে নামায আদায় করার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় লক্ষ রাখা উচিত:
(1) রুকু সিজদা উভয় অবস্থায় হাতদ্বয় উরুর উপর থাকবে৷
(2) বসে ইশারার দ্বারা রুকু সিজদা আদায় করার সময় নিতম্বকে জমিন থেকে পৃথক করতে হবে না৷ বরং সিজদার ইশারার চেয়ে রুকুর ইশারার সময় মাথাকে একটু কম ঝুকাবে৷
দলিলঃ
সুরা বাকারা আঃ ২৩৮, সুরা হজ্ব আঃ ৭৭, বুখারী হাঃ ১১১৭,১১১৮, ১১১৯, তিরমিযি হাঃ ৩৬৯, ফতোয়াযে শামি ২/,১৩২, ৫৬৬, ৫৬৭, ৫৬৮, ৫৬৯, তুহফাতুল আহওয়াযি ২/৩০৬, ইলাউস সুনাম ৭/২০৭,২০৩,, নাহরুল ফায়েক ১/৩৩৭, তাতারখানিয়া ২/৬৬৭, তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৮৯৷
বর্তমানে চেয়ারে বসে নামায পড়া প্রচলন নিম্ন বর্নিত কারনে নিন্দনিয়:
১৷ অক্ষম ব্যক্তির জমিনে বসে নামায আদায় করা উত্তম বরং এটাই সুন্নত৷ এটাই সাহাবী তাবেয়ীর আমল৷
২৷ যে ব্যক্তি দাড়িয়ে রুকু সেজদা করে নামায আদায় করতে সক্ষম তার জন্য চেয়ারে বসে ফরজ ওয়াজিব নামায পড়া জায়েয নেই৷ নামায হবে৷
৩৷ চেয়ারের কারনে কাতার সোজা করতে সমস্যা হয়৷
৪৷ মসজিদে চেয়ারের আধিক্যতা গির্জা ও ইহুদিদের ইবাদতখানার সাদৃশ্য হয়ে যায়৷ কারন তারা চেয়ারে বসে ইবাদত করে৷
৫৷ নামায বিনয় নম্রতা প্রকাশক ইবাদত, সুতরাং চেয়ারে বসে পড়ার তুলনায় মাটিতে বসে পড়া বেশি নম্রতা প্রকাশ হয়৷
৬৷ নামাযের পর লোকেরা চেয়ারে বসে দুনিয়াবি কথা বার্তা বলতে থাকে৷ যা মসজিদের আদব পরিপন্থী৷
৭৷ চেয়ারে বসে নামায পড়লে অন্তরে অহমিকা ভাব আসার প্রবল সম্ভাবনা থাকে৷
উপর উল্লেখিত বিষয় সমূহের কারনে যতদূর সম্ভব নামাযে চেয়ার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক৷ চেয়ারে ব্যবহারের উপযুক্ত শুধু ঐ ব্যক্তিই হতে পারে যে জমিনের উপর বসে নামায বসে নামায আদায় করতে পারে না৷
( বিস্তারিত ফতওয়াযে দারুল উলুম) উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৪৭
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

আমরা তো জানি, ইহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত কাপড় পরা জায়েয নয়।...

প্রশ্ন
আমরা তো জানি, ইহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত কাপড় পরা জায়েয নয়। প্রশ্ন হল , লুঙ্গির
ক্ষেত্রেও কি একই হুকুম ? না এক্ষেত্রে
মাসআলা ভিন্ন ?
উত্তর
ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য শরীরের কোন অঙ্গের আকৃতিতে সেলাই করা পোশাক পরা নাজায়েয। যেমন, পাঞ্জাবী, পায়জামা, গেঞ্জি ও মোজা ইত্যাদি। আর লুঙ্গি যেহেতু পায়জামার মত কোনো অঙ্গের আকৃতিতে বানানো নয় তাই সেলাইযুক্ত লুঙ্গি পরা নাজায়েয নয়। তবে খোলা চাদর পরলে যাদের সতরের অঙ্গগুলো বা তার অংশবিশেষ খুলে যাওয়ার
আশংকা না থাকে তাদের জন্য সেলাইযুক্ত লুঙ্গি
না পরাই উচিত। কেননা ইহরামের কাপড়
একেবারে সেলাইমুক্ত হওয়া উত্তম। তাই সম্ভব
হলে ইহরাম অবস্থায় সেলাইবিহীন চাদরই পরবে। কিন্তু সেলাইবিহীন চাদর পরলে কারো যদি সতর খুলে যাওয়ার আশংকা থাকে তবে তার জন্য সেলাই করা লুঙ্গি ব্যবহার করা অনুত্তম হবে না।
মানাসিক, পৃ. ৯৮, ১২০; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৮/৭৫;
আহকামে হজ্ব, মুফতী মুহাম্মাদ শফী পৃ.৩৪৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তারসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৪৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

মহিলাদের জন্য কি ইহরাম অবস্থায় হাত-মোজা , পা-মোজা পরা জায়েয...

প্রশ্ন
মহিলাদের জন্য কি ইহরাম অবস্থায় হাত-মোজা ,
পা-মোজা পরা জায়েয আছে? দলীল-
প্রমাণসহ জানালে উপকৃত হব। সহীহ
বুখারীতে নাকি আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম অবস্থায় মহিলাদের
হাতমোজা পরতে নিষেধ করেছেন ?
উত্তর
মহিলাদের জন্য ইহরাম অবস্থায় হাতমোজা, পা- মোজা পরা জায়েয। হাদীস শরীফে আছে, সালেম রাহ. বলেন , আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. মুহরিম মহিলাদের পা-মোজা কেটে দিতেন। কিন্তু
সফিয়া বিনতে আবু উবাইদা রা. তাঁর কাছে আয়েশা
রা.-এর এ হাদীস যখন বর্ণনা করলেন যে ,
‘ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহরিম
মহিলাদের পা-মোজা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন ’ এরপর থেকে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. মুহরিম মহিলাদের পা-মোজা আর কেটে দিতেন না। সুনানে আবু দাউদ , হাদীস
১৮৩১
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন , মহিলাগণ ইহরাম অবস্থায় হাত-মোজা ও পা-
মোজা পরিধান করতে পারবে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা , হাদীস ১৪৪ সাআদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রা. থেকে
বর্ণিত, তিনি ইহরাম অবস্থায় তার কন্যাদেরকে হাত-
মোজা পরার নির্দেশ দিতেন। কিতাবুল উম
২/২২৩
কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ , হাসান বসরী , হাকাম ও হাম্মাদ রাহ. প্রমুখ তাবেয়ীগণ থেকেও ইহরাম
অবস্থায় মহিলাদের হাতমোজা পরা জায়েয হওয়ার
কথা বর্ণিত আছে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১৫৯৬৭, ১৪৪৪১ আর প্রশ্নে সহীহ বুখারীর উদ্ধৃতিতে যে হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে তা মূলত মাওক‚ফ হাদীস। অর্থাৎ আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা.-এর
উক্তি। (আস সুনানুল কুবরা , বাইহাকী ৪/৪৭ ; ফাতহুল
বারী ৪/৬৪) আর উপরে আমরা দেখেছি , একাধিক সাহাবী ও তাবেয়ীর মত এক্ষেত্রে এটিই যে , মহিলাগণ ইহরাম অবস্থায় হাতমোজা পরবে। ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম শাফেয়ী রাহ.-সহ অনেক ফকীহের মতে এ অভিমতটিই অধিক শক্তিশালী। কিতাবুল উম ২/২২৩; আলমাবসূত সারাখসী ৪/৩৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৪৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

আমরা হজ্বের বিভিন্ন বইয়ে পড়েছি , ইহরাম করার আগে দুই...

প্রশ্ন
আমরা হজ্বের বিভিন্ন বইয়ে পড়েছি , ইহরাম
করার আগে দুই রাকাত নফল নামায পড়া সুন্নাত।
কিন্তু কিছুদিন আগে এক ভাই থেকে শুনলাম ,
ইহরামের আগে কোনো নামায নেই। বরং
তা বিদআত। কথাটি শোনার পর বিভ্রান্তিতে
পড়ে যাই। এক্ষেত্রে সঠিক মাসআলা কী ?
দলীল প্রমাণসহ জানতে চাই।
উত্তর
একাধিক হাদীসে নামাযের পর ইহরাম করার কথা এসেছে। অতএব ফরয নামায আদায় করলে
এরপর ইহরাম করবে নতুবা ইহরামের উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামায পড়ে এরপর ইহরাম করবে। এটিই সুন্নত। সহীহ বুখারীতে আছে , উমর রা. বলেন , আকীক নামক স্থানে
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে
বলতে শুনেছি , আজ রাতে আমার রবের পক্ষ থেকে আগমনকারী (অর্থাৎ জিবরীল আলাইহিস সালাম) এসেছিলেন। তিনি আমাকে বললেন , এই বরকতময় স্থানে নামায পড়ুন এবং বলুন , আমি হজ্বের সাথে উমরার ইহরাম করলাম। সহীহ বুখারী , হাদীস ১৫৩৪৷
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
হজ্বের বিবরণ সম্বলিত হাদীসগুলোতেও
আছে ,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যুলহুলাইফাতে দুই রাকাত নামায পড়ার পর ইহরাম
করেছিলেন। দেখুন সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৮৪ ; জামে তিরমিযী , হাদীস ৮১৯৷ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে এক বর্ণনায় স্পষ্টভাবে এসেছে , তিনি
বলেন , রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যুলহুলাইফার মসজিদে দুই রাকাত নামায পড়ার পর ঐ
মজলিসেই হজ্বের ইহরাম করেছিলেন। সুনানে আবু দাউদ , হাদীস ১৭৭০ ; মুসতাদরাকে হাকেম , হাদীস ১৬৯৯৷ প্রকাশ থাকে যে , এই মাসআলায় চার মাযহাবের সিদ্ধান্ত এক ও অভিন্ন। ইমাম নববী রাহ. “ আল
মাজমূ শরহুল মুহাযযাব ” লিখেছেন, ইহরাম করার
সময় দুই রাকাত নামায পড়া উত্তম। এ ব্যাপারে সবার
ঐকমত্য রয়েছে। আলমাজমূ ৭/২৩২৷
সুতরাং ইহরামের পূর্বের নামাযকে বিদআত বলা
সম্পূর্ণ ভুল ও মনগড়া কথা। উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪৩৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

আমি ছোট বেলায় আমার আব্বার সঙ্গে হজ্ব করেছি। এখন আমি...

প্রশ্ন
আমি ছোট বেলায় আমার আব্বার সঙ্গে হজ্ব করেছি। এখন আমি
বড় হয়েছি এবং আমার কাছে
হজ্বে যাওয়ার মতো সম্পদ
আছে। প্রশ্ন হল, আমার
ছোটবেলার ঐ হজ্বটিই কি ফরয
হজ্ব হিসেবে আদায় হয়ে
গেছে, নাকি আবার হজ্ব করতে
হবে? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
আপনার ছোটবেলার হজ্বটি নফল হিসেবে আদায় হয়েছে। তাই আপনাকে ফরয হজ্ব আদায় করতে হবে। ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে বালক হজ্ব করবে অতপর প্রাপ্তবয়স্ক হবে তাকে আরেকটি হজ্ব করতে হবে ।
তবারানী, হাদীস ৭২৫২; মাজমাউয যাওয়াইদ ৩/৪৭৩ (হাদীস ৫২৫৪, বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৩; আলবাহরুল আমীক ১/৩৬২৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪২৫
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

গত বছর আমি ইহরাম অবস্থায় ভুলে আমার মোচ কেটে ফেলি।...

প্রশ্ন
গত বছর আমি ইহরাম অবস্থায় ভুলে আমার মোচ কেটে ফেলি। জানতে চাই,
এ কারণে আমার উপর কি কোনো সদকা
বা দম ওয়াজিব হয়েছিল? আর তা দেশে
এসে আদায় করলে চলবে নাকি হেরেমে
আদায় করা জরুরি?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার উপর এক সদকাতুল ফিতর সমপরিমাণ নির্ধারিত খাদ্য বা তার মূল্য আদায় করা ওয়াজিব হয়েছে। আর তা দেশে আদায় করলেও চলবে। হেরেমের এলাকায় আদায় করা জরুরি নয়। তবে হেরেমে আদায় করা
উত্তম।
-গুনইয়াতুন নাসিক ২৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪২৯; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৬; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৩৯৫; কিতাবুল আছল
২/৪৩২৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪২৪
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

আমি এক মসজিদে ইমামতি করি। দু বছর আগে আমাদের এলাকার...

প্রশ্ন
আমি এক মসজিদে ইমামতি করি। দু বছর আগে আমাদের এলাকার এক ধনাঢ্য
ব্যক্তি মারা যায়। তার উপর হজ্ব ফরয
ছিল। কিন্তু সে হজ্ব করেনি। তাই
ওয়ারিসরা আমাকে তার বদলি হজ্ব
করার জন্য অনুরোধ করছে। আর আমার
উপর হজ্ব ফরয না হওয়ার কারণে আমি
হজ্ব করিনি। এখন জানার বিষয় হল,
আমি ঐ ব্যক্তির বদলি হজ্ব করতে পারব
কি না? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
বদলি হজ্বের জন্য এমন ব্যক্তিকে প্রেরণ করা উত্তম যিনি নিজের ফরয হজ্ব আদায় করেছেন এবং হজ্বের আহকামও ভালোভাবে জানেন। আর যে ব্যক্তি হজ্বে যায়নি এবং তার উপর হজ্ব ফরযও নয় তাকে বদলি হজ্বের জন্য পাঠানো মাকরূহ তানযিহি তথা অনুত্তম। তবে এমন ব্যক্তিকে দিয়ে বদলি হজ্ব করালেও হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৮/১৮৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৭; ফাতহুল কাদীর ৩/৭২; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৩; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৫২; গুনইয়াতুন নাসিক ৩৩৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪২১
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

হজ্বের মধ্যে কোনো ত্রুটির কারণে দম ওয়াজিব হলে তা কি...

প্রশ্ন
হজ্বের মধ্যে কোনো ত্রুটির কারণে দম ওয়াজিব হলে তা কি হেরেমের
ভিতরেই জবাই করতে হবে? নাকি দেশে
ফিরে জবাই করলেও চলবে? দয়া করে
জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
হজ্বের সকল প্রকার দম হেরেমের ভিতরেই জবাই করা জরুরি। হেরেমের বাইরে দমের নিয়তে জবাই করলে তা আদায় হবে না। তাই দম আদায় না করে দেশে এসে গেলে কারো মাধ্যমে দমের পশু হেরেমের মধ্যেই জবাই করাতে হবে। -তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৪৩৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৪; ফাতহুল কাদীর ২/৪৫২; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৮৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৪৪০২
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

বৃদ্ধ বা যুবকদের জন্য চুল দাড়িতে কালো বা অন্য রঙের খেযাব ব্যবহার করা৷

প্রশ্ন
বৃদ্ধ লোকদের জন্য কালো খেযাব বা অন্য রঙের খেযাব ব্যবহারের হুকুম কী ? দলিলসহ বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব। এছাড়া যুবকদের অসুস্থতা বা কোনো কারণে চুল সাদা হয়ে গেলে তারা কালো খেযাব ব্যবহার করতে পারবে কি ?
উত্তর
বার্ধক্যের কারণে চুল-দাড়ি পেকে গেলে তাতে কালো খেযাব ব্যবহার করা নাজায়েয। একাধিক হাদীসে এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ার
এসেছে। হাদীস শরীফে এসেছে, মক্কা বিজয়ের দিন
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা.-এর পিতা আবু কুহাফা রা.-এর চুল এবং দাড়ি পাকা দেখে বললেন , এটাকে কোনো কিছু দ্বারা পরিবর্তন কর। তবে কালো থেকে বিরত থাক। সহীহ মুসলিম , হাদীস : ৫৪৬৬ অবশ্য কোনো যুবকের অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে যদি চুল-দাড়ি পাকার বয়সের আগেই সাদা হয়ে যায় তবে সে কালো খেযাব ব্যবহার করতে পারবে। আহমাদ আলী সাহারানপুরী বলেন , হাদীসে কালো খেযাব ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। এর মূল কারণ অন্যদের সামনে বয়স গোপন করা এবং অন্যকে ধোঁকা দেওয়া। হাশিয়া সহীহ বুখারী ১/৫৩০
যুবকের ক্ষেত্রে ধোঁকার এই দিকটি অনুপস্থিত।
তাই কোনো কোনো ফকীহ যুবকদের জন্য কালো
খেযাব জায়েয হওয়ার মত দিয়েছেন। (ফায়যুল
কাদীর ১/৩৩৬ ; ইমদাদুল আহকাম ৩/৩৭৬) তাবেয়ী ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. বলেন , আমাদের চেহারা যখন সতেজ ছিল তখন আমরা কালো খেযাব ব্যবহার করতাম। আর যখন আমাদের চেহারা
মলিন হয়ে গেল এবং দাঁত নড়বড়ে হয়ে গেল তখন
আমরা কালো খেযাব ছেড়ে দিয়েছি। ফাতহুল বারী ১০/৩৬৭ অবশ্য হাদীসে যেহেতু কালো খেযাবকে বিশেষভাবে নিষেধ করা হয়েছে তাই যুবকদের জন্যও একেবারে কালো খেযাব ব্যবহার না করে লাল কালো মিশ্রিত খেযাব ব্যবহার করাই
উচিত হবে। তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/১৫৪ ; ফায়যুল
কাদীর ১/৩৩৬ আর বার্ধক্যের কারণে চুল পেকে গেলে কালো খেযাব ছাড়া অন্য খেযাব ব্যবহার করা
মুস্তাহাব। যেমন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু কুহাফা রা.কে কালো খেযাব ছাড়া অন্য খেযাব ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। অন্য এক হাদীসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন , আমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হলুদ রং ব্যবহার করতে
দেখেছি তাই আমিও হলুদ রং ব্যবহার করতে পছন্দ করি।
-সহীহ বুখারী, হাদীস, ১৬৬; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪/২১৫-২২০; জাওয়াহিরুল ফিকহ ৭/১৬৬-১৭০৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩৭০৫
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৬
বিষয়: হজ্ব

আমি ছোট বেলায় আমার আব্বার সঙ্গে হজ্ব করেছি। এখন আমি...

প্রশ্ন
আমি ছোট বেলায় আমার আব্বার সঙ্গে হজ্ব করেছি। এখন আমি বড় হয়েছি এবং আমার কাছে হজ্বে যাওয়ার মতো সম্পদ আছে। প্রশ্ন হল, আমার ছোটবেলার ঐ হজ্বটিই কি ফরয হজ্ব হিসেবে আদায় হয়ে গেছে, নাকি আবার হজ্ব করতে হবে? দয়া করে জানাবেন।
উত্তর
আপনার ছোটবেলার হজ্বটি নফল হিসেবে আদায় হয়েছে। তাই আপনাকে ফরয হজ্ব আদায় করতে
হবে।
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে বালক হজ্ব করবে অতপর প্রাপ্তবয়স্ক হবে তাকে আরেকটি হজ্ব করতে হবে । -আলমুজামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ৭২৫২; মাজমাউয যাওয়াইদ ৩/৪৭৩ (হাদীস ৫২৫৪); মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১৫১০৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৩; আলবাহরুল আমীক ১/৩৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৭
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৭০
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

ক) আমার হজ্ব করার সামর্থ্য নেই, কিন্তু ওমরাহ করার সামর্থ্য...

প্রশ্ন
ক) আমার হজ্ব করার সামর্থ্য নেই, কিন্তু ওমরাহ করার সামর্থ্য আছে। এখন আমার জন্য কি ওমরাহ করা আবশ্যক?
খ) হজ্বের মতো ওমরার জন্য কি নির্দিষ্ট সময় আছে?
গ) শুনেছি, কাবা শরীফ দেখলে নাকি হজ্ব ফরয হয়ে যায়- এ কথা কি ঠিক? তাহলে আমি ওমরাহ করলে কি আমার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যাবে?
উপরোক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে শরঈ সমাধান জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
ওমরারর সামর্থ্য থাকলে জীবনে একবার ওমরাহ করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ। অতএব এ অবস্থায় আপনার জন্য ওমরাহ করা সুন্নত। আর ওমরার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। শুধু যিলহজ্ব মাসের ৯-১৩ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দিন ওমরাহ করা মাকরূহ। এছাড়া বছরের যে
কোনো সময় ওমরাহ করা জায়েয আছে। আর রমযান মাসে ওমরাহ করা সবচেয়ে উত্তম। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমযানে একটি ওমরাহ করা আমার সাথে একটি হজ্ব করার সমতুল্য। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৮৬৩
আর কাবা শরীফ দেখলেই হজ্ব ফরয হয়ে যায়- এ ধারণা ঠিক নয়। হজ্ব ফরয হওয়ার সাথে কাবা শরীফ দেখা-না দেখার কোনো সম্পর্ক নেই। বরং হজ্ব ফরয হওয়ার জন্য শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশিহজ্বের মৌসুমে হজ্বে আসা-
যাওয়ার খরচসহ তার অনুপস্থিতির দিনগুলোতে পরিবারের চলার মতো স্বাভাবিক খরচের ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাছাড়া বাইরে থেকে ওমরার ভিসায় গিয়ে হজ্ব করা নিষেধ। তাই ওমরাহ করতে গিয়ে হজ্ব পর্যন্ত থেকে যাওয়ারও
সুযোগ নেই। -গুনইয়াতুন নাসিক ২২, ১৯৬; মানাসিক, মোল্লা আলী কারী ৪৬৩; আততাজরীদ ৪/১৬৮৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৬৯
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

আলহামদু লিল্লাহ, আল্লাহ তাআলা গত বছর হজ্বে নিয়েছিলেন। যাওয়ার সময়...

প্রশ্ন
আলহামদু লিল্লাহ, আল্লাহ তাআলা গত বছর হজ্বে নিয়েছিলেন। যাওয়ার সময় বাসার পাশের মসজিদ থেকে ইহরাম বাধি। ইহরাম বেধে যখন এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হব তখন পাশের এক আত্মীয়ের বাসার সামনে নিম গাছ থেকে মেসওয়াকের জন্য একটি ডাল ভাংতে যাই তখন কাফেলার এক সাথী বললেন, ইহরাম বাঁধার পর সব ধরনের গাছের ডাল ভাঙ্গা, প্রাণী শিকার করা নিষিদ্ধ। জানার বিষয় হল, ঐ সাথীর কথা কি ঠিক? নিজ দেশ থেকে ইহরাম বাঁধলে তখন থেকেই কি প্রাণী শিকার করা ও যে কোনো ধরনের গাছের ডাল ভাঙ্গা নিষিদ্ধ হয়ে যায়?
উত্তর
আপনার সাথীর ঐ কথা ঠিক নয়। ইহরামের কারণে হারামের সীমানার বাইরে কোনো গাছ কাটা বা ডাল ভাঙ্গা নিষিদ্ধ নয়। তবে হেরেমের এলাকার গাছ কাটা বা ডাল ভাঙ্গা ইহরাম থাক বা না থাক সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ। আর একথা ঠিক যে, ইহরাম বাঁধার পর যে কোনো স্থানের প্রাণী শিকার করা নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) হে
ঈমানদারগণ! তোমরা ইহরাম অবস্থায় শিকারের প্রাণী হত্যা করো না।
-সূরা মায়েদা : ৯৫; গুনইয়াতুন নাসিক ২৮১, ৩০৪; মানাসিক,
মোল্লা আলী কারী ৩৮৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৫৯
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

আমার কাছে হজ্বে যাওয়ার মতো টাকা আছে। কিন্তু আমার এখন...

প্রশ্ন
আমার কাছে হজ্বে যাওয়ার মতো টাকা আছে। কিন্তু আমার এখন বিয়ে করার প্রয়োজন। এ টাকা দিয়ে হজ্ব করলে বিয়ের খরচের জন্য টাকা থাকবে না। আর বিয়ে করলে হজ্ব করা যাবে না। এখন এক্ষেত্রে আমার জন্য হজ্ব করা কি জরুরি?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হজ্বের টাকা জমা দেওয়া ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার শেষ সময়ের আগেই যদি আপনি বিয়ে করে ফেলেন আর বিয়েতে ঐ টাকা খরচ হয়ে যায় তবে আপনার উপর হজ্ব
ফরয হবে না। কিন্তু হজ্বের প্রস্তুতি গ্রহণের
শেষ সময় পর্যন্ত যদি ঐ টাকা খরচ না হয় তবে ঐ টাকার কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যাবে। -ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭৩; ফাতহুল কাদীর ২/৩২৩; গুনইয়াতুন নাসিক ২২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০১
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৩৯
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

আমরা তো জানি, ইহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত কাপড় পরা জায়েয নয়।...

প্রশ্ন
আমরা তো জানি, ইহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত কাপড় পরা জায়েয নয়। প্রশ্ন হল, লুঙ্গির ক্ষেত্রেও কি একই হুকুম? না এক্ষেত্রে মাসআলা ভিন্ন?
উত্তর
ইহরাম অবস্থায় পুরুষের জন্য শরীরের কোন অঙ্গের আকৃতিতে সেলাই করা পোশাক পরা নাজায়েয। যেমন, পাঞ্জাবী, পায়জামা, গেঞ্জি ও মোজা ইত্যাদি। আর লুঙ্গি যেহেতু পায়জামার মত কোনো অঙ্গের আকৃতিতে বানানো নয় তাই সেলাইযুক্ত লুঙ্গি পরা নাজায়েয নয়। তবে খোলা চাদর পরলে যাদের সতরের অঙ্গগুলো বা তার অংশবিশেষ খুলে যাওয়ার আশংকা না থাকে তাদের জন্য সেলাইযুক্ত লুঙ্গি না পরাই উচিত। কেননা ইহরামের কাপড় একেবারে সেলাইমুক্ত হওয়া উত্তম। তাই সম্ভব হলে ইহরাম অবস্থায় সেলাইবিহীন চাদরই পরবে। কিন্তু সেলাইবিহীন চাদর পরলে কারো যদি সতর খুলে যাওয়ার আশংকা থাকে তবে তার জন্য সেলাই করা লুঙ্গি ব্যবহার করা অনুত্তম হবে না। মানাসিক, পৃ. ৯৮, ১২০; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৮/৭৫; আহকামে হজ্ব, মুফতী মুহাম্মাদ শফী পৃ.৩৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ৩২৩৩
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

বৃদ্ধ লোকদের জন্য কালো খেযাব বা অন্য রঙের খেযাব ব্যবহারের...

প্রশ্ন
বৃদ্ধ লোকদের জন্য কালো
খেযাব বা অন্য রঙের খেযাব ব্যবহারের হুকুম কী? দলিলসহ বিস্তারিত জানালে উপকৃত
হব। এছাড়া যুবকদের অসুস্থতা বা কোনো কারণে চুল সাদা হয়ে গেলে তারা কালো খেযাব ব্যবহার করতে পারবে কি?
উত্তর
বার্ধক্যের কারণে চুল-দাড়ি পেকে গেলে তাতে কালো খেযাব ব্যবহার করা
নাজায়েয। একাধিক হাদীসে এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ার এসেছে। হাদীস শরীফে এসেছে, মক্কা
বিজয়ের দিন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা.-এর পিতা আবু কুহাফা রা.-এর চুল এবং দাড়ি পাকা দেখে বললেন, এটাকে কোনো কিছু দ্বারা পরিবর্তন কর। তবে কালো থেকে বিরত থাক।
সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৪৬৬
অবশ্য কোনো যুবকের অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে যদি চুল-দাড়ি পাকার বয়সের আগেই সাদা হয়ে যায় তবে সে কালো খেযাব ব্যবহার করতে পারবে। আহমাদ আলী সাহারানপুরী বলেন, হাদীসে কালো খেযাব ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। এর মূল কারণ অন্যদের সামনে বয়স গোপন করা এবং অন্যকে ধোঁকা দেওয়া।
হাশিয়া সহীহ বুখারী ১/৫৩০ যুবকের ক্ষেত্রে ধোঁকার এই দিকটি অনুপস্থিত। তাই
কোনো কোনো ফকীহ যুবকদের জন্য কালো খেযাব জায়েয হওয়ার মত দিয়েছেন। (ফায়যুল
কাদীর ১/৩৩৬; ইমদাদুল আহকাম ৩/৩৭৬)
তাবেয়ী ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. বলেন, আমাদের চেহারা যখন সতেজ ছিল তখন আমরা কালো খেযাব ব্যবহার করতাম। আর যখন আমাদের চেহারা মলিন হয়ে গেল এবং দাঁত নড়বড়ে হয়ে গেল তখন আমরা কালো খেযাব ছেড়ে দিয়েছি।
ফাতহুল বারী ১০/৩৬৭
অবশ্য হাদীসে যেহেতু কালো খেযাবকে বিশেষভাবে নিষেধ করা হয়েছে তাই যুবকদের জন্যও একেবারে কালো খেযাব ব্যবহার না করে লাল কালো মিশ্রিত খেযাব ব্যবহার করাই উচিত হবে।
:তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/১৫৪; ফায়যুল কাদীর ১/৩৩৬ আর বার্ধক্যের কারণে চুল পেকে গেলে কালো খেযাব ছাড়া অন্য খেযাব ব্যবহার করা মুস্তাহাব। যেমন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু কুহাফা রা.কে কালো খেযাব ছাড়া অন্য খেযাব ব্যবহার করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। অন্য এক হাদীসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা.
বলেন, আমি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে হলুদ রং
ব্যবহার করতে দেখেছি তাই আমিও হলুদ রং ব্যবহার করতে পছন্দ করি।
-সহীহ বুখারী, হাদীস, ১৬৬; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪/২১৫-২২০; জাওয়াহিরুল ফিকহ ৭/১৬৬-১৭০
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৬০
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

আগামী সপ্তাহে আমি জেদ্দায় একটি ব্যবসায়িক কনফারেন্সে যাব। আমার ইচ্ছা...

প্রশ্ন
আগামী সপ্তাহে আমি জেদ্দায় একটি ব্যবসায়িক কনফারেন্সে যাব। আমার ইচ্ছা হল, মিটিং শেষ হওয়র পর সুযোগ পেলে সেখান থেকে মক্কা শরীফ গিয়ে ওমরাহ করে আসব। ইহরাম বেঁধে কনফারেন্সে যাওয়া সম্ভব নয় তাই হুযুরের কাছে জানতে চাই, এ অবস্থায় আমি ইহরাম না বেঁধে জেদ্দায় কনফারেন্সে যেতে পারব কি না? এরপর কনফারেন্স শেষে সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে ওমরাহ করলে কি আমার উপর দম ওয়াজিব হবে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু কনফারেন্সের উদ্দেশ্যেই জেদ্দা যাচ্ছেন তাই এ অবস্থায় আপনার জন্য ইহরাম না বেঁধে জেদ্দায় যাওয়া জায়েয হবে। কনফারেন্স শেষে জেদ্দাবাসীদের মতো আপনি সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে ওমরাহ করতে পারবেন। এ কারণে আপনার উপর কোনো জরিমানা বা দম ওয়াজিব হবে না। -আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৭৭; আলবাহরুর রায়েক ৩/৪৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪১৫; আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১৬৮; আলবাহরুল আমীক ২/৩১৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮৪০
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

আমার আব্বা অনেকগুলো জমির মালিক। বেশ কিছু জমি তার এমন...

প্রশ্ন
আমার আব্বা অনেকগুলো জমির মালিক। বেশ কিছু জমি তার এমন রয়েছে, যেগুলোর ফসল ছাড়াই আমাদের খোরাকির প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায়।
জমিজমা ব্যতীত আব্বার বাড়তি কোনো আয় নেই। জানতে চাই আমার আব্বার উপর কি হজ্ব ফরয?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সংসারের খরচের জন্য প্রয়োজন হয় না এমন জমিগুলো বা তার অংশবিশেষ বিক্রি করলে যদি আপনার আব্বার হজ্বের খরচ হয়ে যায় তাহলে আপনার আব্বার উপর হজ্ব করা ফরয। এক্ষেত্রে জমি বিক্রি করে হলেও তাকে হজ্বে যেতে হবে।
-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৮১১
তারিখ: ১-মে-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

গত বছর আমি হজ্বে গিয়েছিলাম। দেশ থেকে ইহরাম বেঁধে যাইনি।...

প্রশ্ন
গত বছর আমি হজ্বে গিয়েছিলাম। দেশ থেকে ইহরাম বেঁধে যাইনি। ইচ্ছা ছিল মীকাত অতিক্রম করার আগে ইহরাম বেঁধে নেব। কিন্তু পরে আর মনে ছিল
না। ইহরাম না বেঁধে মীকাত অতিক্রম
করেছি। জেদ্দা বিমান বন্দরে নামার পর আমার এক আত্মীয় জানতে পারলে
বলেন, আগে মদীনায় আমার বাসায় চলে আসুন। পরে হজ্বের আগে মদীনা থেকে
ইহরাম বেঁধে হজ্ব করতে পারবেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী আমি প্রথমে হারামে প্রবেশ না করে অন্য পথে সরাসরি
মদীনায় গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে হজ্ব করেছি। দেশে আসার পর এক ব্যক্তি বললেন, ইহরাম না বেঁধে মীকাত অতিক্রম করার কারণে নাকি আমার উপর দম ওয়াজিব হয়েছে।
তাই জানার বিষয় হল, ইহরাম না বেঁধে মীকাত অতিক্রম করার কারণে কি আমার উপর দম ওয়াজিব হয়েছে?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইহরাম না বেঁধে জেদ্দায় চলে এলেও পরবর্তীতে সেখান
থেকে যেহেতু আপনি সরাসরি মক্কা মুকাররমায় যাননি; বরং মদীনায় গিয়ে সেখান থেকে ইহরাম বেঁধে হেরেমে
গিয়েছেন তাই আপনার উপর দম ওয়াজিব
হয়নি। উল্লেখ্য যে, উমরাহ বা হজ্বের উদ্দেশ্যে
রওয়ানা হওয়ার সময় নিজ এলাকা থেকেই ইহরাম বেঁধে নেওয়া উত্তম। সাহাবায়ে কেরাম সিরিয়া, বসরা, বায়তুল
মাকদিস, কাদেসিয়ার মতো দূর-দূরান্ত এলাকা থেকে ইহরাম বেঁধে হজ্ব করতে
আসতেন। এই মাসআলার উপর আমল করলে উক্ত জটিলতায় পড়তে হত না।
-সুনানে আবু দাউদ ২/৪১৩; মুসনাদে আহমাদ ৪৪/১৮১; আততামহীদ ১৫/১৪৫;
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৫৬
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

গত বছর হজ্ব আদায়ের সময় আরাফার ময়দানে পাথরের সাথে হোঁচট...

প্রশ্ন
গত বছর হজ্ব আদায়ের সময় আরাফার ময়দানে পাথরের সাথে হোঁচট খেয়ে আমার বাম পায়ের একটি নখ ভেঙ্গে যায় এবং তা কোনো রকম চামড়ার সাথে লেগে থাকে। এই অবস্থায় আমার হাঁটতে প্রচ- কষ্ট হয়। তাই ভাঙ্গা নখটি কেটে ফেলি। এর ফলে কি আমার উপর কোনো দম বা সদকা ওয়াজিব হয়েছে?
উত্তর
না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ নখ কেটে ফেলার কারণে কোনো কিছু ওয়াজিব হয়নি। কেননা ইহরাম অবস্থায় হাত বা পায়ের কোনো নখ ভেঙ্গে গেলে তা কেটে ফেলা জায়েয। এ ধরনের নখ কেটে ফেললে দম বা সদকা কিছুই ওয়াজিব হয় না। -কিতাবুল আছল ২/৪৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪২৫; মানাসিক ৩৩১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৩৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৫৮৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫৩৪
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

আমার এক প্রতিবেশী বেশ অর্থ- সম্পদের মালিক। হজ্বের ইচ্ছা থাকলেও...

প্রশ্ন
আমার এক প্রতিবেশী বেশ অর্থ- সম্পদের মালিক। হজ্বের ইচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তার হজ্বে যাওয়া পিছিয়ে যাচ্ছিল। গতবার ঠিক করেছিলেন হজ্বে যাবেন। কিন্তু হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে বদলি হজ্বের ওসিয়ত করে যেতে পারেননি। এখন তার ছেলে পিতার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করাতে চায়। অসিয়ত ছাড়া মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করা জায়েয আছে কি? এবং এর মাধ্যমে মাইয়্যেতের জিম্মায় থাকা ফরয হজ্ব আদায় হবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
মৃত ব্যক্তি অসিয়ত না করে গেলেও তার পক্ষ থেকে বদলি হজ্ব করা জায়েয এবং এর মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির জিম্মায় থাকা ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যাওয়ার আশাও করা যায়। তবে এক্ষেত্রে যারা উদ্যোগ গ্রহণ করবে হজ্বের ব্যয়ভার তাদের জিম্মায় থাকবে। মৃত ব্যক্তির ইজমালি সম্পদ থেকে তা নেওয়া যাবে না। আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা রাহ. তার পিতা বুরাইদাহ রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে এসে আরজ করলেন যে, আমার মা হজ্ব না করেই মৃত্যু বরণ করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্ব করতে পারি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, হ্যাঁ, তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব কর।- জামে তিরমিযী ২/২৫৭, হাদীস : ৯২৯ প্রকাশ থাকে যে, হজ্ব ইসলামের অন্যতম ফরয বিধান। সামর্থ্যবানদের জন্য বিলম্ব না করে তা আদায় করে নেওয়া জরুরি। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিলম্ব করা গুনাহ। -কিতাবুল আছল ২/৫১১; রদ্দুল মুহতার ২/৫৯৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৪; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৪৩৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৫২৪
তারিখ: ১-ফেব্রুয়ারি-২০১৫
বিষয়: হজ্ব

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন তাই...

প্রশ্ন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন তাই আমরাও দাঁড়িয়ে পান করি। এক আলেম হজ্ব করে যমযমের পানি নিয়ে এলে আমর া তা দাঁড়িয়ে পান করলাম। তখন তিনি ধমক দিয়ে বসিয়ে দেন এবং বলেন, আল্লাহর রাসূল
ভীড় থাকার কারণে যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান
করেছেন। তাই ভীড় থাকলে যমযমের
পানি দাঁড়িয়ে পান করা জায়েয অন্যথায় জায়েয
নেই।
জানার বিষয় হল, যমযমের পানি পান করার সুন্নত তরীকা কী? দয়া করে জানালে উপকৃত
হব।
উত্তর
যমযম পানি সাধারণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে- বসে দুভাবেই পান করা জায়েয। ভীড় না থাকলে দাঁড়িয়ে পান করা জায়েয নেই- প্রশ্নের এ কথা ঠিক নয়। ভীড় ছাড়াও যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করা যে জায়েয আছে এ সম্পর্কে ফিকহ-ফাতাওয়ার অনেক
কিতাবে এবং হাদীসের শরাহগ্রন্থসমূহে উল্লেখ
আছে। যেমন আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫; শরহুল মুনইয়াহ ৩৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৪; উমদাতুল কারী ৯/২৭৮; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/১৬৫-১৬৬ উপরন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান
করেছেন-এ হাদীসের ভিত্তিতে বহু ফকীহ ও মুহাদ্দিস যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম ও আদব বলেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন শামসুল আইম্মা হালওয়ানী রাহ., শাইখুল ইসলাম খাহারযাদা রাহ. (আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৯), ইবরাহীম হালাবী রাহ. (শরহুল মুনইয়াহ ৩৬), মোল্লা আলী কারী রাহ. (শরহুশ শামায়েল ১/২৫০), সহ প্রমুখ ফকীহ ও হাদীসবিশারদ। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূলত ভীড়ের কারণেই যমযম দাঁড়িয়ে পান করেছেন এটি কোনো সুনিশ্চিত ও চূড়ান্ত কথা নয় এবং তা হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণিতও নয়; বরং ফিকহ ও হাদীসবিশারদগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দাঁড়িয়ে যমযম পান করার সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে একটি ভীড়ের কারণকেও উল্লেখ করেছেন। তারা আরো যে সমস্ত কারণকে উল্লেখ করে থাকেন তা হল, ১. যমযম পানি দাঁড়িয়ে পান করাও যে জায়েয তা বুঝানোর জন্য। ২. বসার যথাযথ ব্যবস্থা না থাকা অর্থাৎ
পান করার স্থানটি ভেজা বা স্যঁতস্যঁতে হওয়ার
কারণে তিনি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। সুতরাং এ সব কারণের মধ্যে শুধু একটিকে গ্রহণ
করে বাকিগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া আদৌ ঠিক নয়।
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩৪০
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: হজ্ব

আমি ৫৬ বছর বয়সের একজন বিধবা নারী। এ পৃথিবীতে আমার...

প্রশ্ন
আমি ৫৬ বছর বয়সের একজন বিধবা নারী। এ পৃথিবীতে আমার মাহরাম বলতে এক বয়োবৃদ্ধ ভাই ছাড়া কেউ নেই। আমার হজ্বে যাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। শুনেছি মহিলাদের মাহরাম ছাড়া হজ্বে যাওয়ার অনুমতি নেই। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আর্থিক সামর্থ্য থাকার কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয। তবে মাহরামের ব্যবস্থা না হলে নিজে হজ্বে যাবেন না। এক্ষেত্রে অন্যকে দিয়ে বদলী হজ্বের ব্যবস্থা করবেন। অথবা বদলী হজ্বের ওসিয়ত করে যাবেন। -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬৮৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৫-৩১৬; মানাসিক ৬৪
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২৩২৩
তারিখ: ১-ডিসেম্বর-২০১৪
বিষয়: হজ্ব

আমার কাছে হজ্বে যাওয়ার মতো টাকা আছে। কিন্তু আমার এখন...

প্রশ্ন
আমার কাছে হজ্বে যাওয়ার মতো টাকা আছে। কিন্তু আমার এখন বিয়ে করার প্রয়োজন। এ টাকা দিয়ে হজ্ব করলে বিয়ের খরচের জন্য টাকা থাকবে না। আর বিয়ে করলে হজ্ব করা যাবে না। এখন এক্ষেত্রে আমার জন্য হজ্ব করা কি জরুরি?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হজ্বের টাকা জমা দেওয়া ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার শেষ সময়ের আগেই যদি আপনি বিয়ে করে ফেলেন আর বিয়েতে ঐ টাকা খরচ হয়ে যায় তবে আপনার উপর হজ্ব
ফরয হবে না। কিন্তু হজ্বের প্রস্তুতি গ্রহণের
শেষ সময় পর্যন্ত যদি ঐ টাকা খরচ না হয় তবে ঐ টাকার কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয হয়ে যাবে। -ফাতাওয়াল ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২৫৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৭৩; ফাতহুল কাদীর ২/৩২৩; গুনইয়াতুন নাসিক ২২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০১
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
ফতোয়া নং: ২০৪১
তারিখ: ১-সেপ্টেম্বর-২০১৪
বিষয়: হজ্ব

আমি নাবালেগ অবস্থায় আমার মা-বাবার সাথে হজ করেছিলাম। এখন আমি...

প্রশ্ন
আমি নাবালেগ অবস্থায় আমার মা-বাবার সাথে হজ করেছিলাম। এখন আমি বালেগ এবং আমার হজ করার সামথ আছে। আমার কি আবার হজ করতে হবে?
উত্তর
হ্যাঁ, আপনাকে এখন আবার হজ করতে হবে।কারন নাবালেগ অবস্থায় যে হজ আপনি আদায় করেছেন তা নফল হিসেবে আদায় হয়েছে। এখন আপনাকে ফরজ হজ আদায় করতে হবে।
সুত্রঃ
এ’লায়ুসসুনান ১০/৪৬৮, বাদায়ে’ ২/২৯৩, কাজীখান ১/৬৮১, হেদায়া ১/২৪৩,

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন