ফতোয়া: মুফতি মেরাজ তাহসিন

ফতোয়া নং: ৪৯০৮
তারিখ: ৩-জুলাই-২০১৭
বিষয়:

রোজা অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহার বা গ্যাস নেয়া৷

প্রশ্ন
হুজুর আমার মা হাঁপানি রোগে আক্রান্ত ৷ খুব শ্বাস কষ্টে ভোগেন ৷ প্রায় সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় ৷ তখন ইনহেলার ব্যবহার করে গ্যাস নিতে হয় ৷ জানার বিষয় হল, রোজা অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহার করা যাবে কি না? একজন বললেন, ইনহেলার অতি প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয় তাই এতে রোজা ভঙ্গ হবে না৷ এটা কি সঠিক? জানালে উপকৃত হব ৷
উত্তর
ইনহেলার ব্যবহার করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে ৷ কারণ শ্বাস কষ্ট দুর করার জন্য ওষুধটি যে মুখের ভেতরে স্প্রে করা হয়৷ এতে যে জায়গায় শ্বাসরুদ্ধ হয় ঐ জায়গাটি প্রশস্ত হয়ে যায়৷ ফলে শ্বাস চলাচলে আর কোন কষ্ট থাকে না৷ ওষুধটি যে শিশিতে যে পরিমান থাকে ঐ শিশির মুখ একবার টিপলে শিশির আকারভেদে ঐ পরিমানের একশত কিংবা দুইশত ভাগের একভাগ বেরিয়ে আসে৷ অতি সল্প পরিমানে গ্যাসের ন্যায় বের হওয়ার কারনে কেউ ওষুধটিকে বাতাস জাতিয় মনে করতে পারে৷ কিন্তু বাস্তবে এমন নয় বরং ওষুধটি দেহবিশিষ্ট৷ কাঠ ইত্যাদি কোন বস্তুতে স্প্রে করলে দেখা যায় যে ঐ বস্তুটি ভিজে গেছে৷ তাই এতে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে৷
যারা বলেন, ইনহেলার অতি প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয় তাই এতে রোজা ভঙ্গ হবে না৷ তাদের এ কথাটি একেবারেই হাস্যকর৷ কেননা কেহ যদি ক্ষুধায় মৃত্যুমুখে পতিত হয় অতি প্রয়োজনে কিছু খেয়ে ফেলে তাহলে কি রোজা ভঙ্গ হবে না? অবশ্যই হবে৷ অতি প্রয়োজনে রোজা ভাঙ্গলে পরবর্তিতে রোজা কাযা করা ও গুনাহ না হওয়া ভিন্ন কথা, আর রোজা ভঙ্গ না হওয়া ভিন্ন কথা৷ সুতরাং তাদের কথা মোটেও সঠিক নয় ৷ বরং অতি প্রয়েজনে হলেও রোজা ভেঙ্গে যাবে ৷ তবে তার উক্ত রোজা কাফ্ফারা দিতে হবে না ৷ পরে কাযা করলেই চলবে ৷
অবশ্য যদি মুখে ইনহেলার স্প্রে করার পর না গিলে থুথু দিয়ে তা বাইরে ফেলে দেয়া হয়, এবং গ্যাসটি গলদকরন না হয়ে থাকে, তাহলে রোজা ভঙ্গ হবে না৷
-আল ইসলাম ওয়াত্তীব্বুল হাদীস, পৃ: ২২৩-৩২৪ ৷
উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৷

উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
এ বিষয়ে আরো ফতোয়া:
এ বিভাতের বাকি সকল ফতোয়া এখানে পাবেন : বিভাগ রোজা-ইতিকাফ