ফতোয়া: মুফতি মেরাজ তাহসিন

ফতোয়া নং: ৪৬৫৮
তারিখ: ১-নভেম্বর-২০১৬
বিষয়:

তওবা করলেই কি ধর্ষণের অপরাধ মার্জিত হয়ে যায়?

প্রশ্ন
যে লোক ধর্ষণ করেছে, সে লোক তওবা করলে তাকে যদি আল্লাহ্ ক্ষমা করে দেন, তাহলে, ধর্ষিতা কি তার উপর নির্যাতনের কোন বিচার পাবে না আখেরাতে? আমি এই সম্পর্কে চাই ? হুজুর, একজন মুসলমান হিসাবে আপনার কাছে আমার দাবি এই যে, দয়া করে আমার প্রশ্নের উত্তর গুলো দিবেন !
উত্তর
কাউকে ধর্ষণ করলে সেখানে দুইটি অপরাধ সংঘটিত হয়। একটি আল্লাহর হক। আরেকটি হল বান্দার হক। আল্লাহর হক হল জিনা করা নিষিদ্ধ। আর ধর্ষণ করার দ্বারা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের এ নির্দেশনা অমান্য করা হয়েছে। তাই এতে লোকটি কবীরা গোনাহ করেছে। আর কবীরা গোনাহ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে কায়মানো বাক্যে সহীহ পদ্ধতিতে তওবা করার দ্বারা ক্ষমা হয়ে যায়। আরেকটি হল বান্দার হক। তথা এক্ষেত্রে ধর্ষণকারী ব্যক্তি মহিলার উপর জুলুম করেছে। যদি দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় উক্ত মহিলার কাছ থেকে ক্ষমা না চেয়ে নেয়, তাহলে জুলুমের শাস্তি আখেরাতে পাবে।
‎ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟﺘَّﻮْﺑَﺔُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺴُّﻮﺀَ ﺑِﺠَﻬَﺎﻟَﺔٍ ﺛُﻢَّ
‎ﻳَﺘُﻮﺑُﻮﻥَ ﻣِﻦْ ﻗَﺮِﻳﺐٍ ﻓَﺄُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﻳَﺘُﻮﺏُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْۗ ﻭَﻛَﺎﻥَ
‎ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠِﻴﻤًﺎ ﺣَﻜِﻴﻤًﺎ ‏[ ٤ : ١٧ ‏] ﻭَﻟَﻴْﺴَﺖِ ﺍﻟﺘَّﻮْﺑَﺔُ ﻟِﻠَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ
‎ﺍﻟﺴَّﻴِّﺌَﺎﺕِ ﺣَﺘَّﻰٰ ﺇِﺫَﺍ ﺣَﻀَﺮَ ﺃَﺣَﺪَﻫُﻢُ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕُ ﻗَﺎﻝَ ﺇِﻧِّﻲ ﺗُﺒْﺖُ
‎ﺍﻟْﺂﻥَ ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻤُﻮﺗُﻮﻥَ ﻭَﻫُﻢْ ﻛُﻔَّﺎﺭٌۚ ﺃُﻭﻟَٰﺌِﻚَ ﺃَﻋْﺘَﺪْﻧَﺎ ﻟَﻬُﻢْ
‎ﻋَﺬَﺍﺑًﺎ ﺃَﻟِﻴﻤًﺎ ‏[ ٤ : ١٨ অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}
‎ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
‎ﻭ ﺳﻠﻢ ﻻ ﻳﻠﺞ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺭﺟﻞ ﺑﻜﻲ ﻣﻦ ﺧﺸﻴﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺣﺘﻰ
‎ﻳﻌﻮﺩ ﺍﻟﻠﺒﻦ ﻓﻲ ﺍﻟﻀﺮﻉ ﻭﻻ ﻳﺠﺘﻤﻊ ﻏﺒﺎﺭ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ
‎ﻭﺩﺧﺎﻥ ﺟﻨﻬﻢ হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-“যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করে সে ব্যক্তিকে (জাহান্নামের) অগ্নি স্পর্শ করা সম্ভব নয় যদিও দোহনকৃত দুধ উলানে ফিরানো সম্ভব হয়। আর জাহান্নামের ধোঁয়া এবং আল্লাহর পথে (চলার কারণে) উড়ন্ত ধুলি কখনো একসাথে হতে পারেনা। নাসায়ী শরীফ, হাদিস নং-৩১০৮, সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-১৬৩৩, ২৩১১, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪২৭৷ উত্তর প্রদানে মুফতী মেরাজ তাহসীন
01756473393
উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন
এ বিষয়ে আরো ফতোয়া:
এ বিভাতের বাকি সকল ফতোয়া এখানে পাবেন : বিভাগ মৃত্যু-জানাজা